সারা দেশে চলমান তীব্র দাবদাহের মধ্যেই সারা দেশে বজ্রাঘাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বজ্রাঘাতে পাঁচ জেলায় নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুজন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল অব্দি এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
কক্সবাজার
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বজ্রপাতে দুই লবণচাষির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কোদাইল্যাদিয়া ও রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া এলাকার জমিরের ছেলে দিদারুল ইসলাম (৩৫) ও রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়া এলাকার জামালের ছেলে মো. আরমান (২৫)। তাদের দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুছ চৌধুরী জানান, মগনামার কোদাইল্যাদিয়ায় ভোরে লবণ মাঠ পরিচর্যা করতে গেলে বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই দিদারুলের মৃত্যু হয়।
রাজাখালীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার জানান, বুধবার রাতে প্রচুর বজ্রপাত হয়। ভোরেও বজ্রপাত অব্যাহত থাকে। রাতের বৃষ্টিতে লবণমাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হলে চাষি আরমান তা পরিচর্যা করতে যান। ওই সময় বজ্রাঘাতে তার মৃত্যু হয়।
রাঙামাটি
রাঙামাটিতে পৃথক দুই স্থানে বজ্রাঘাতে দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সকালে জেলার শহরের তবলছড়ির সিলেটিপাড়া এলাকায় এবং বাঘাইছড়ি উপজেলার রুপকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রপাতের সময় বাঘাইছড়ি উপজেলার রুপকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক এলাকার বাসিন্দা বাহারজান (৬০) ঘরের বাইরে অবস্থান করছিলেন। ওই বজ্রাঘাতে তার মৃত্যু হয়। একই সময় বজ্রাঘাতে রাঙামাটি শহরের তবলছড়ির সিলেটি পাড়ায় মো. নাজির হোসেন (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তিনি ঘরের কাজ করছিলেন বলে জানা গেছে।
রাঙামাটি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. শওকত আকবর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে জানান, নিহত নাজির হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাঘাইছড়ি থানার ওসি ইশতিয়াক আহমেদ বজ্রাঘাতে প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিলেট
সিলেটের কানাইঘাটে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রাঘাতে বাবুল আহমদ (৪৮) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। ওই সময় আরও দুই কৃষক গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে উপজেলার দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের শফিক হাওরে এ ঘটনা ঘটে। মৃত বাবুল কানাইঘাটের দক্ষিণ কুয়রের মাটি এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।
ওই সময় বজ্রাঘাতে ঝলসে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন বাবুলের ভাতিজা ফাহিম আহমদ (১৭) এবং মানিকপুর গ্রামের বাবু বিশ্বাসের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাস (২০)।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাবুল আহমদসহ কয়েকজন স্থানীয় শফিক হাওরে বোরো ধান কাটতে যান। হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঝলসে গিয়ে গুরুতর আহত হন তারা। ওই সময় আশপাশের লোকজন তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বাবুল আহমদকে মৃত ঘোষণা করেন। ঝলসে যাওয়া দুজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী জানান, বজ্রাঘাতে মারা যাওয়া বাবুল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন।
কুমিল্লা
কুমিল্লার চার উপজেলায় বজ্রাঘাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পৃথক সময়ে জেলার চান্দিনা, সদর দক্ষিণ, বুড়িচং ও দেবিদ্বারে এ চারজনের মৃত্যু হয়।
মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- চান্দিনা উপজেলার বরকইট ইউনিয়নের কিছমত-শ্রীমন্তপুর গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে দৌলতুর রহমান (৪৭), সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ার ইউনিয়নের উত্তর সূর্যনগর গ্রামের আতিকুল ইসলাম (৫০), কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী গ্রামের মোখলেছুর রহমান (৫৮) এবং বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পাচোরা গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার আলম হোসেন।
সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ও স্থানীয় সূত্রে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মাদারীপুরে অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না, অন্য বিভাগে যাব না-ব্যানার ও স্লোগানে এক উম্মুক্ত আলোচনা সভা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মাদারীপুর পৌর কমিনিউটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী, মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ ৪ উপজেলার মানুষ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মাদারীপুর জেলাকে ঢাকা বিভাগ থেকে নবগঠিত ফরিদপুর জেলার সাথে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন গণমাধ্যম, পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন উম্মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মাদারীপুর জেলা বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা থেকে ১৯৮৪ সালে স্বতন্ত্র একটি আলাদা জেলা হিসেবে গঠিত হয়েছিল। তখন থেকে মাদারীপুর একটি সম্পূর্ণ আলাদা জেলা। এ জেলার মানুষের চলাচল, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিসিয়াল কাজ-কর্ম, সংস্কৃতি সবই ঢাকার সাথে হয়ে থাকে। মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরে এ জেলার মানুষের তেমন কোনো চলাচল নেই। পদ্মা ব্রিজ মাদারীপুর অংশ থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ৩৭ কি. মি. এবং মাদারীপুরের শেষাংশ টেকেরহাট বন্দর থেকে ফরিদপুরের দূরত্ব ৫০ কি.মি.। আলোচনায় বক্তারা আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই আমরা মাদারীপুরবাসী ফরিদপুর বিভাগে যাব না, আমরা ঢাকা বিভাগেই থাকব, প্রয়োজনে এ জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত। তারা আরও বলেন, এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না এলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব, প্রয়োজনে রক্তও যদি দিতে হয় তবে তাই দেব- ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুই পরিবারের স্বেচ্ছাচারিতায় রাস্তা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক পরিবার। বাধ্য হয়ে রাস্তা খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহাম্মদ আলী প্রধান প্লাজার সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিল। মানববন্ধন শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি আব্দুল্লাহপুর গ্রাম থেকে শুরু হয়ে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডে এসে শেষ হয়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা দোলোয়ার হোসেন, শুধু দুটি পরিবারের জন্য আমরা প্রায় একশটি পরিবারের ছয় শতাধিক সদস্য অবর্ণীয় দুর্ভোগে রয়েছি। বারবার তাদের রাস্তার জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হলেও তারা আমাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন জনগণের রাস্তার জায়গা বন্ধ করে ওই জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে তাই বাধ্য হয়ে আমাদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি।
স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মাত্র দুটি পরিবারের জন্য একশ পরিবারের মানুষ জিম্মি হয়ে রয়েছে। দুটি পরিবারে আপত্তিতে ১০০০ ফুট রাস্তার ৮২ ফুট বাদে বাকি অংশের কাজ শেষ হয়েছে দীর্ঘদিন। আমাদের অবস্থা এ রকম একজন মানুষ মারা গেলে তার খাটিয়া বের করা যায় না। একজন লোক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাস্তার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।’
প্রসঙ্গত ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাউশিয়া বহুমুখী উন্নয়ন সমিতি মার্কেটের পিছনে যারা বসতি তৈরি করেছেন তারা মূলত বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা মানুষ। শুরুতে বিক্ষিপ্তভাবে বসতি তৈরি করলেও বর্তমানে এটি একটি গ্রাম যার নাম আব্দুল্লাহপুর। সম্প্রতি ওই দুই পরিবারের সদস্যরা রাস্তাটির এই অংশ দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে থাকলে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫ দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকের বাদ্য আর গান-বাজনা ছাড়া বিদায়ের করুণ ছায়ায় সারিবদ্ধভাবে একে একে বুড়িগঙ্গা নদীতে বিসর্জন দেয়া হয় প্রতিমা। একই সময়ে তুরাগ নদীতে চলে বিসর্জন। সড়কে পুলিশের টহল ও নদীতে ছিল নৌপুলিশের টহল। ফায়ার সার্ভিসের টিমও দায়িত্ব পালন করে।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও শহর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসীম উদ্দীন (৫৬) মারা গেছেন।
তার অকাল মৃত্যুতে জেলা বিএনপি ও মহানগর বিএনপি শোক প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সাবেরা আলাউদ্দিন। ভিপি জসীম উদ্দীন তার দেবর।
তিনি জানান, গত রোববার রাত ১১টার দিকে কুমিল্লা সদর উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে ব্রেনস্ট্রোক করলে দ্রুত তাকে নগরীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান তিনি।
মৃত্যুকালে ভিপি জসীম উদ্দীন এক ছেলে, এক মেয়ে, স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিন,বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাকারিয়া তাহের সুমন, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু ও সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, সাবেক মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মাহবুবুল আলম চপল, বিএনপির কুমিল্লা দঃজেলার নব কমিটির সদস্য মোজাহিদ চৌধুরী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব) এর মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, সারাদেশে ৩৩ হাজারের উপরে পূজামণ্ডপ রয়েছে। আমরা তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এটা শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ না। আপনারা যারা সুধী সমাজের ও রাজনৈতিক নেতারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, পূজামণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মোটামোটি ভালোভাবেই পূজা সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের সম্প্রীতির বাংলাদেশ ও সকল ধর্মের বাংলাদেশে কোনো নাশকতাকারীকে আমরা কোনোভাবে ছাড় দেব না।
গত বুধবার বিকেলে নারাণগঞ্জ শহরের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার পূজামণ্ডপের মধ্যে ৪৯টি মণ্ডপে কিছু নাশকতাকারী বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছিল। তবে আমরা প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ পর্যন্ত ১৯ জনের বেশি নাশকতাকারীকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব এখন পর্যন্ত যেভাবে চলেছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সবচেয়ে ভালো হতো যদি এই ধরণের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর বেষ্টনীর মধ্যে না থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যেদিন আমরা পালন করতে পারবো, সেদিনই প্রকৃত আনন্দ হবে। এখন আমাদের এভাবেই করতে হচ্ছে। আশা করি, সেদিন আসবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বিএনপি নেতা আবু জাফর আহমেদ বাবুল, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপনসহ প্রমুখ।
ফেনী ডায়াবেটিক সমিতির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমিতির সম্মেলন কক্ষে কেক কেটে আলোচনা সভার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। গত বুধবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির এডহক কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইসমাইল হোসেন।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুছের সঞ্চালনায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই বর্ণীল আয়োজনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সমিতির উপদেষ্টা পরিষদের সহসভাপতি ও সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম, এডহক কমিটির সদস্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠাকালীন গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরেন বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. তবারক উল্ল্যা চৌধুরী বায়েজিদ, আজীবন সদস্য মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, সাহাব উদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন মোর্শেদ ও মো. শাহ আলম বাদল। বক্তব্যে সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন কার্যনির্বাহী পরিষদ ও উপদেষ্টা পরিষদসহ সকল পর্যায়ের সদস্যদের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করা হয়। প্রয়াত সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
এছাড়া বক্তারা সামাজিক প্রতিষ্ঠানটির সেবামূলক কার্যক্রম যাতে অক্ষুন্ন থাকে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
এডহক কমিটির কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট মো. নুরুল আমিন খান এবং সদস্য ডা. নুর মোহাম্মদ ও মোহাং নাছির উদ্দিন (তছলিম), নবীন ও প্রবীণ আজীবন সদস্যরা এবং এই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থানীয় সরকার বিসয়ক সম্পাদক কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন। তিনি শহরের গোপীনাথ জিউর মন্দির, বৈশাখী সংঘ, আমলাপাড়া সর্বজনীন পূজা মন্দিরসহ একাধিক পূজামণ্ডপে গিয়ে দুর্গাপূজার সার্বিক আয়োজন ঘুরে দেখেন এবং ভক্তদের সঙ্গে পূজার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এ সময় সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া সদর -৩ আসনের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে গিয়ে তারেক রহমানের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি এবং সেই সঙ্গে তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমান বলেছেন, ধর্ম যার যার কিন্তু দেশটা সবার। এ সময় তিনি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান।’
স্থানীয় সাধারণ মানুষ সাবেক সংসদ সদস্যকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তাদের মতে, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি সবসময় মানুষের পাশে থেকেছেন এবং সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করেছেন।
এ সময় কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ফুহাদ রেজা ফাহিম, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোজাক্কির রহমান রাব্বি, বিএনপি নেতা আশরাফুল করিম শাওন, জব্বার মিলন, আরাফাত জুবায়ের নয়নসহ জেলা ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝিনাইদহের মহেশপুরে মাত্র ৩ টাকায় মেলে সুস্বাদু রসগোল্লা। শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি। আর এ মিষ্টির স্বাদ একবার নিলে আবারও কিনতে হয়। আকারে ছোট হলেও স্বাদের দিক দিয়ে অনেক বড় দোকানের মিষ্টিকেও হার মানায় এই রসগোল্লা। খাঁটি ছানার তৈরি হওয়ায় মুখে দিলেই গলে যায়। নেই কোনো ভেজাল, কৃত্রিম রঙ বা অতিরিক্ত ঘ্রাণ। শুধুই খাঁটি দুধের মিষ্টতা।
জানা যায়, উপজেলার শিবানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমাল ঘোষ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজ হাতে তৈরি করে মিষ্টি বিক্রি করছেন। প্রতিদিন সকালে বাইসাইকেলে করে বের হন তিনি। মহেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফেরি করে বিক্রি করেন নিজের বানানো রসগোল্লা।
আগে প্রতি পিস বিক্রি হতো ২ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ টাকা করে। তবে দাম সামান্য বাড়লেও ক্রেতার চাহিদা কমেনি, বরং দিন দিন বাড়ছেই। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় এক হাজার পিস রসগোল্লা বিক্রি করেন তিনি। সারাদিন রসগোল্লা বিক্রি করে যে টাকা আয় করেন, সেই টাকা দিয়েই চলে তার সংসার।
স্থানীয় ক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান বাজার মূল্যে মাত্র ৩ টাকায় এত সুস্বাদু রসগোল্লা পাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমরা প্রতিদিনই তার কাছ থেকে রসগোল্লা কিনি। দাম কম, স্বাদও অসাধারণ।
আরেক ক্রেতা কলেজ শিক্ষক মতলেবুর রহমান বলেন, বড় দোকানের রসগোল্লার চেয়ে সুমাল ঘোষের বানানো রসগোল্লা অনেক বেশি খাঁটি ও সুস্বাদু। তাই বাজারে যত মিষ্টির দোকানই থাকুক, মানুষ ওনার কাছেই ভিড় জমায়। আর আমি নিয়মিত তার রসগোল্লা খেয়ে থাকি। এমনকি বাসায়ও নিয়ে জায়।
মহেশপুরের বাসিন্দা অনিক হাসান বলেন, উপজেলাজুড়ে সুমাল ঘোষের রসগোল্লা এখন এলাকার একটি জনপ্রিয় নাম। কম দামে মানসম্মত মিষ্টি পাওয়ায় প্রতিদিনই তার ক্রেতা বাড়ছে। আর সারাদিন রসগোল্লা বিক্রি করে যে টাকা আয় করে সেই টাকা দিয়েই চলে তার সংসার।
এ ব্যাপারে মিষ্টি বিক্রেতা সুমাল ঘোষ বলেন, কম লাভ, বেশি বিক্রিই আমার ব্যবসার নীতি। দিনে এক হাজার পিস বিক্রি করতে পারলেই সংসার চলে যায়। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় মানুষ আমার মিষ্টির স্বাদ পছন্দ করছে, এটিই আমার বড় পাওয়া।
কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের কংশনগর এলাকায় একটি পণ্যবাহী ট্রাক বিকল হওয়ায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল ৮টার পর দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ছগুরা এলাকা থেকে বুড়িচং উপজেলার দেবপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ৮টার দিকে সিলেটগামী পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক কংশনগর এলাকায় সড়কের মাঝে বিকল হয়ে যায়।
এতে সড়কের দুই পাশেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়কজুড়ে খানাখন্দের কারণে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা যায়। একপর্যায়ে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ট্রাকটির পেছনের দুই চাকা খুলে মেরামতের চেষ্টা করছেন চালক, হেলপার ও স্থানীয় কয়েকজন।
পাশে সড়কের ভাঙা অংশ দিয়ে সীমিত পরিসরে যান চলছে। তবে সড়কের দুই পাশে সৃষ্টি হয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।
বিকল ট্রাকের হেলপার সিরাজ আলী বলেন, কুমিল্লা সিলেট মহাসড়কের অধিকাংশ এলাকা ভাঙ্গাচোরা। সকালে তেমনই একটি গর্তে চাকা পড়ে গাড়ি বিকল হয়ে যায়।
চাকা খুলে এখন মেরামত করছি। আরো প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগতে পারে।
সুগন্ধা পরিবহনের বাস চালক জসিম উদ্দিন বলেন, এই সড়কটি মানুষের জন্য ভোগান্তির আরেক নাম। ভাঙা রাস্তার কারণে যাত্রীদের কষ্ট হয়, সময়মত গন্তব্য পৌঁছাতে পারি না। এটি শুধু নামেই মহাসড়ক, কাজে নয়।
মিরপুর হাইওয়ে থানার ইনচার্জ পারভেজ আলী বলেন, কংশনগর বাজার এলাকায় প্রায় সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। এই যানজট কংশনগর ছাড়িয়ে দেবিদ্বার পর্যন্ত চলে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লা ময়নামতি হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, কংশনগর এলাকায় একটি ট্রাকের চাকা বিকল হওয়ায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে আমাদের একটি টিম কাজ করছে। রাস্তাটি দুই লেনের হওয়ায় কোন গাড়ি বিকল হলেই যানজটের সৃষ্টি হয়। ট্রাকটি মেরামত করা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে।
খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় সহিংসতার ঘটনায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। এসব মামলায় হাজারের বেশি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে গুইমারা থানায় হত্যা মামলাসহ দুইটি এবং খাগড়ছড়ির সদর থানায় অপর মামলাটি করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মহাজন পাড়া, স্বনির্ভর ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সংঘর্ষের ঘটনায় খাগড়াছড়ি সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। এ মামলায় ৬০০-৭০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহরিয়ার এ মামলা করেন।
এ দিকে গুইমারা থানার ওসি মো. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকালে ৪টা পর্যন্ত গুইমারায় প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং পরবর্তীতে ধানক্ষেত থেকে তিন ব্যক্তি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুই থেকে আড়াই’শ জনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে গত শনিবার ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা জনতা’র ডাকা অবরোধের সময় প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ, অগ্নি সংযোগ, দাঙ্গা ও হত্যার ঘটনা ঘটে।
পাবনার ঈশ্বরদীতে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে সবুজ প্রামানিক (৩৫) নামে এক ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের পৌর এলাকার অরণকোলা হারুখালির মাঠসংলগ্ন বটতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সবুজ প্রামানিক পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের টেবুনিয়া বড়মাটিয়া গ্রামের খোকন প্রামানিকের ছেলে। আহতরা হলেন ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার চুকাই গ্রামের নাজমুল হোসেন (৩০), একই উপজেলার কৃষ্টপুর গ্রামের বাবু মিয়া (৩০) এবং মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার আশরাফুল ইসলাম (৩৫)।
সংবাদ পাওয়ার পর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন থেকে তিনটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে উদ্ধার কাজ শুরু হয় এবং প্রায় এক ঘণ্টা চলার পর সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয়। উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব দেন স্টেশনের ওয়্যারহাউজ ইনস্পেক্টর মীর আমিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, ঈশ্বরদী ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি খালি ট্রাক পাবনাগামী ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ঢাকা থেকে আসা একটি পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীতমুখী ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে ট্রাকচালক সবুজ প্রামানিক ঘটনাস্থলে নিহত হন এবং অন্য ট্রাকের চালক-হেলপারসহ তিনজন আহত হন। আটকে পড়া সকলকে উদ্ধার করে আহতদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয় এবং নিহত সবুজের মরদেহ ট্রাকের ভেতর থেকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুন নূর বলেন, “দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক চালক নিহত হয়েছেন এবং তিনজন আহত হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা হয়েছে।”
সড়কের এই অংশটি (পাবনা-লালপুর হাইওয়ে) দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। যানবাহনের অতিরিক্ত গতি ও ঢিলেঢালা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ট্রাক চালক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তারা দুজন একই মালিকের দুটি ট্রাক চালান। ঢাকামুখী দুটি ট্রাকের একটি মহাসড়কের উপর বিকল হয়ে পড়লে অপর ট্রাক সেটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে ট্রাকটি সেতুর ওপর ঢাকামুখী লেনের সড়ক বিভাজকে আটকে যায়। ধারণা করা হচ্ছে তখন দুই ট্রাকের চালক সড়কে নেমে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তখনই অজ্ঞাত কোনো গাড়ি তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, ভোর ৪টা থেকে পৌনে ৬টার মধ্যে যেকোনো সময় ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, নিহতদের বয়স ২৪ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এদের একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি হলেন ময়মনসিংহের রহমতপুর এলাকার রাকিব, যিনি সচল ট্রাকটির চালক ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর ট্রাক মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিলোনিয়া বাজারে যাত্রীবাহী বাস উল্টে তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- দাগনভূঞা উপজেলার জায়ালস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ জায়ালস্কর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মো. শ্রাবণ (২০), একই ইউনিয়নের খুশিপুর গ্রামের মো. শহীদুল্লাহর স্ত্রী শামীম আরা বেগম (৫০) ও অজ্ঞাত যুবক (৩০) পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সুগন্ধা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ফেনী থেকে নোয়াখালীর দিকে যাচ্ছিল। সিলোনিয়া বাজারে পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা দিয়ে উল্টে যায়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্থানীয়রা বাস থেকে আহতদের উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
২৫০ শয্যা ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শোয়েব ইমতিয়াজ নিলয় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মহিপাল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন উর রশিদ জানান, মৃত্যু ও গুরুতর আহতের খবর পেয়েছি, তবে এর সংখ্যা এখনো জানতে পারিনি। আমাদের পুলিশ কাজ করছে। কী কারণে এমন দুর্ঘটনা হতে পারে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।