গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের আউটার সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা তেলের মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বেলা ১১টার দিকে সংঘটিত এ দুর্ঘটনার পর উভয় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হলে ঢাকাসহ দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।
জয়দেবপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক সেতাফুর রহমান বলেন, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে স্টেশনের দক্ষিণ প্রান্তে সিগন্যালম্যানের ভুলের কারণে ঢাকাগামী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি গাজীপুরগামী মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় কমিউটার ট্রেনের চারটি বগি এবং মালবাহী ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে কমিউটার ট্রেনের লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হন।
তিনি বলেন, লাইনচ্যুত বগিগুলো রেললাইন থেকে সরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সারা দেশে শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীর দিনে নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাজধানীসহ সারা দেশের নদী ও পুকুরে চলে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই মণ্ডপগুলোতে ভক্তদের ভিড় দেখা যায়। ভক্তরা দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়ে বিজয়ার প্রার্থনা করেন। এরপর শোভাযাত্রা করে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় বিসর্জন স্থলে। ঢাক-ঢোল, উলুধ্বনি আর শঙ্খধ্বনিতে মুখর ছিল পরিবেশ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য। বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ বলছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর আনন্দ, শান্তিতে পূজা উদযাপন হয়েছে।
সারাদেশে এ বছর ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৫৮ টি। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা এবং স্বেচ্ছাসেবক কমিটি করা হয় মণ্ডপ পাহারার জন্য।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে শুরু হয় একে একে প্রতিমা বিসর্জন। এ সময় বিসর্জন দেখতে মানুষের ঢল নামে। বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের অংশগ্রহণে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল।
তবে বৈরী আহাওয়া থাকায় প্রতিমা বিসর্জনে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে ভক্তদের। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ছাড়াও নগরীর পাথরঘাটা গঙ্গাবাড়ি এলাকায় কর্ণফুলীতে, কালুরঘাট এলাকায়, কাট্টলী রানী রাসমনি ঘাটেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বৃহম্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ থেকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ট্রাকবাহী প্রতিমা নিয়ে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে পূজারী ও ভক্তরা জড়ো হতে শুরু করেন পতেঙ্গা সৈকতে। এরপর শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জনের পালা।
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. সুলতান আহসান উদ্দীন জানান, শান্তিপূর্ণভাবে সাগরে প্রতিমা বিসর্জন দিচ্ছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। নির্বিঘ্নে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ও আশপাশ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে গত রোববার সকালে মণ্ডপে মণ্ডপে বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এদিন ধূপধুনচি, পঞ্চপ্রদীপ আর ঢাকের বাদ্যের তালে আসনে অধিষ্ঠিত হন দেবী দুর্গা। বোধনের ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়েই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ৫ দিনব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা।
এবার নগরীর প্রধান পূজামণ্ডপ জেএমসেন হলসহ ১৬টি থানায় ব্যক্তিগত, ঘটপূজাসহ ২৯২টি পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় মোট পূজামন্ডপের সংখ্যা ২ হাজার ২০২টি। এর মধ্যে প্রতিমা পূজামন্ডপের সংখ্যা এক হাজার ৫৮৫টি এবং ঘট পূজার সংখ্যা ছিল ৬১৭টি।
গাংনী প্রতিনিধি জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উসৎব দুর্গা পুজা। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি এবারে নির্বিঘ্নে পুজা উদযাপনের লক্ষে সীমান্ত এলাকার পুজামন্ডব গুলোতে টহল সহ নিরাপত্তায় কাজ করছে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন ৪৭ বিজিবি ।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিজয়া দশমীতে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভোমরদহ পূজামণ্ডব পরিদর্শন করেন কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি)র সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল আহসান হাবীব পিএসসি, জি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, লেঃ কর্ণেল মো. মাহবুব মোর্শেদ রহমান পিএসসি, অধিনায়ক কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন ৪৭ বিজিবি, মেজর মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম অতিরিক্ত পরিচালক, কুষ্টিয়া সেক্টর।
পরির্দশনকালে পূজা কমিটির সদস্যদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তাদের হাতে উপহার তুলে দেন।
কর্ণেল আহসান হাবীব পিএসসি, জি, সেক্টর কমান্ডার কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) জানিয়েছেন, বিজিরি মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনা ছিল, আমরা বিজিবি সদস্যরা সিমান্তের নিকটবর্তী এবং দায়িত্বপূর্ণ এলাকা আছে। সেই জায়গাগুলোতে সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করব যাতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই বোনেরা উৎসবমুখর পরিবেশে নিবিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে পারে। আপনারা জানেন বাংলাদেশে আবহমান কাল থেকেই সুন্দর একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে চলেছে। এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের যে উৎসব আছে সেগুলো উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে পালন করি। ঠিক একই ভাবে এবারো পালন করছি। আমাদের মহাপরিচালকের নির্দেশনা আছে বিজিবি হবে সিমান্তের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক। সেই আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক আমরা সবার সাথে মিলে মিশে আপনাদের পাশে আছি। যে কোনো অনুষ্ঠানে দুর্যোগ কিংবা কল্যানে জনগনের সাথে আছি।
নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোণায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজার মহানবমী অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার ৫১৪টি পূজামনণ্ডপে দুর্গাপূজার মহানবমীতে ভক্তরা দেবীর পায়ে ফুল, বেরপাতা দিয়ে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করেন। ঢাকেরবাদ্য, উলুধনি, চন্ডীপাঠ, পূজাঅর্চনা ও ভক্তদের উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল মণ্ডপগুলো। এ ছাড়াও প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দেবীর প্রতি অঞ্জলি নিবেদনের সময় দেশ ও সমাজের শান্তি, রক্ষায় প্রার্থনা করেন। নেত্রকোনা জেলা শহরসহ উপজেলাগুলোতেও একইভাবে ছিল উৎসবে সরব। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান ও পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। এছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী ড্যানি, জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. আনোয়ারুল হক, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম হিলালিসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। অপরদিকে বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীবৃন্দ বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন। পূজাণ্ডপের নিরাপত্তায়, আনসার, সেনা বাহিনী, র্যাব ও বিজিবির টহল দল কাজ করছে।
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষদিন বিজয়া দশমীতে প্রতীমা বিসর্জনকে ঘিরে লাখো মানুষের পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। বৃহস্পতিবার সৈকতের লাবণী পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের উন্মুক্ত মঞ্চে বিজয়া সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা।
জেলার সাত উপজেলার মণ্ডপের প্রতীমা ট্রাকে করে সৈকতে আনা হয়। পাশাপাশি পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকেও প্রতিমা বহর যোগ দেয়। অন্যদিকে চকরিয়া ও পেকুয়ার প্রতিমাগুলো বিসর্জন দেওয়া হয় মাতামুহুরী নদীতে। বিকেল পাঁচটার দিকে মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে প্রতিমাগুলো সাগরে বিসর্জন দেওয়া হয়।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠু বলেন, ‘প্রশাসনের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দূর-দূরান্ত থেকে আসা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সাগর তীরে একত্রিত হয়ে মা দুর্গাকে বিদায় জানিয়েছেন।’
তিন স্তরের নিরাপত্তা: আয়োজনকে ঘিরে সৈকতে ছিল কঠোর নিরাপত্তা। সকাল থেকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা টহল দেন। জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসন একটি কন্ট্রোল রুমও চালু করে।
জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটকদের নির্বিঘ্ন ভ্রমণ নিশ্চিতে প্রশাসন সবসময় সচেষ্ট রয়েছে।’
পর্যটকের ঢল: বিজয়া দশমী ও চার দিনের ছুটি ঘিরে কক্সবাজারে পাঁচ লাখের বেশি মানুষের সমাগম ঘটবে বলে জানিয়েছে হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি। সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘হোটেলগুলোর শতভাগ রুম আগেই বুক হয়ে গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার জন্য মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রতীমা বিসর্জন দেখতে আসা ব্যবসায়ী রাতুল দে বলেন, ‘কক্সবাজারের আয়োজনটাই দেশের সবচেয়ে বড়। মা-কে বিদায় দিতে এসেছি। প্রশাসনের সেবা প্রশংসনীয়।’
এদিকে সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করেছে।
সী সেইফ লাইফ গার্ডের কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘লাইফগার্ড সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। তবে গুপ্তখাল এলাকায় গোসল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পর্যটকদের সচেতন থাকা জরুরি।’
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ‘পূজা এখন সার্বজনিন। সবাই মিলে মিশে বাঙালিয়ানা উৎসব পারন করেছি। এখানে কোনো বেধাবেদ ছিল না, বাঙালি উৎসব পেলেই মাতে। হোক সেটা পূজা কিংবা ঈদ। এবার নিরাপদে নির্বিঘ্নে দূর্গাপূজা পালন হয়েছে। আজসহ বিগত দুই দিনে ২৫টি পূজামণ্ডপ পরিদশর্ন শেষে এসব কথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রিয় কমিটির সদেস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুইয়া। বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জ উপজেলা কায়েত পাড়া ইউনিয়ন নয়া মাটি,দেল পাড়া নাওড়া সহ কয়েকটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন সভাপতি রূপগঞ্জ থানা বিএনপি, কায়েত পাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট গোলজার হোসেন ভুইয়া, আনোয়ার মোল্লা, বকতিয়ার উদ্দিন আহমেদ, ফরিদ আহমেদ যুবরাজ, আমিনুল ইসলাম প্রিন্স ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রূপগঞ্জ থানা যুবদল,নুর হাসান বাবুল সদস্য সচিব রূপগঞ্জ থানা যুবদল, হাজী সেলিম সভাপতি কায়েত পাড়া ইউনিয়ন বিএনপি, মো. কামাল নাছের সভাপতি কায়েত পাড়া ইউনিয়ন যুবদল, মো. মামুন মিয়া সাধারণ সম্পাদক কায়েত পাড়া ইউনিয়ন যুবদল, শিপলু জাহান শান্ত, মো. আবু বকর ছিদ্দিক ভূইয়া সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক কায়েত পাড়া ইউনিয়ন যুবদল,আকতার হোসেন সভাপতি ৫ নং ওয়ার্ড যুবদল,সাধারণ সম্পাদক মো. তারেক, মো. নাসির উদ্দিন সিনিয়র সহ সভাপতি ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি, ফারুক ভূইয়া সাধারণ সম্পাদক কায়েত পাড়া ইউনিয়ন কৃষক দল,দীল মোহাম্মদ দিলু সাংগঠনিক সম্পাদক ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি,আলি আহমেদ সহ সাধারণ সম্পাদক ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপিসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন, এবং দিপু ভূইয়ার পক্ষ থেকে পূজামণ্ডপগুলোতে নগদ আর্থিক সহযোগিতা করেন মো. মামুন মিয়া।
সিলেট ব্যুরো জানান, পাঁচ দিনের পূজা-অর্চনার আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুরমা নদীর তীরে হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে দেবী দুর্গার প্রতিমা বির্সজন দেওয়া হয়। সুরমার তীরজুড়ে ছিল বিষাদের সুর।
গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই বিকেল থেকে ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টার বাজনার তালে তালে বিভিন্ন মন্দির, পাড়া ও মহল্লা থেকে শোভাযাত্রা নেওয়া হয় সুরমার তীরে। পরে নৌকায় নদীর মাঝখানে দেওয়া হয় বিসর্জন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম, এসএমপি পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালিক, নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মৃত্যঞ্জয় ধর ভোলা, হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সিলেট জেলার আহ্বায়ক ও কল্যাণ ফ্রন্টের ট্রাস্ট্রি সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, সিলেট জেলা হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সিলেট জেলার সদস্য সচিব কল্লোল জ্যোতি বিশ্বাস, মহানগর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মলয় লাল ধর, মুন্না ঘোষ, হিরন্ময় দেব, রনি পাল, বাপ্পি বড়ুয়া।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সিলেট জেলা ও মহানগরে ৬১৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সিলেট নগরে সার্বজনীন ১৪২টি ও পারিবারিক ২০টি পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া জেলায় সার্বজনীন ৪২৭টি ও পারিবারিক ২৯টি পূজা হয়।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, ময়মনসিংহ নগরীর কাচারিঘাট সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদে আনন্দঘন পরিবেশে মহানগরের সব প্রতিমার বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে। এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ।
প্রতিমা বিসর্জন ঘাটে এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতারু উল আলম, র্যাব-১৪ এর মহাপরিচালক মহিবুল ইসলাম খান, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনা আল মজিদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
বিসর্জনকে ঘিরে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করে। র্যাব সদস্যরা নৌকা নিয়ে নদীতে বিশেষ টহল দেয়।
এ বছর ময়মনসিংহ জেলায় ৭৮১টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই জেলার প্রতিটি উপজেলায় পূজা সম্পন্ন হয়।
ইসরায়েলের জলসীমা থেকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌকা আটকের ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ইউরোপের দেশ ইতালি, গ্রিস, স্পেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড এবং তুরস্ক ছাড়াও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মালয়েশিয়া, আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশ্ব নেতারা।
ইতালির শহর রোম, নেপলস, মিলান ও তুরিনে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ ও ‘সবকিছু বন্ধ করো’ ইত্যাদি স্লোগানে আন্দোলন শুরু হলে রোম এবং নেপলসে মেট্রো স্টেশন এবং রেলস্টেশন বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
গ্রিসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যে, তারা যেন আটক ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং কনস্যুলার সুরক্ষার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেয়।
আটক হওয়া আদারা নৌকায় থাকা নবনির্বাচিত আইনপ্রণেতা সেলেস্টে ফিয়েরোকে মুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সের বিক্ষোভকারীরা।
বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রেভো ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন,আমাদের নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করা, নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেওয়া এবং দ্রুত দেশে ফেরানোই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মাইকেল ডি হিগিনস বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় জরুরি সহায়তা পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে। মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমে যুক্তদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা আমাদের সকলের জন্যই উদ্বেগের বিষয়।
ফ্লোটিলায় থাকা ফরাসি নাগরিকদের কনস্যুলার সেবা দিতে এবং বিলম্ব ছাড়াই ফ্রান্সে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ফ্লোটিলায় আটক মালয়েশীয় নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
তিনি বলেন, ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনতে সব ধরনের বৈধ ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইসরায়েল শুধু ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার অগ্রাহ্য করেনি, বরং বৈশ্বিক বিবেককেও পদদলিত করেছে।
একটি ছাড়া ফ্লোটিলার সব জাহাজ আটক, গ্রেপ্তার ৩১৭ স্বেচ্ছাসেবী
গাজা উপত্যকার উদ্দেশে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। অন্তত ৩১৭ জন কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা।
ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজাগামী ত্রাণবাহী ৪৪টি জাহাজের মধ্যে একটি জাহাজ ছাড়া সবগুলোকে আটক করা হয়েছে।
আটক হওয়া কর্মীরা এসেছেন নানা দেশ থেকে—স্পেন, ইতালি, ব্রাজিল, তুরস্ক, গ্রিস, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ ৩৭টি দেশের নাগরিক রয়েছেন তাদের মধ্যে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছে, আটককৃতদের ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে নেওয়া হচ্ছে, সেখান থেকে তাদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে।
ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, মিকেনো নামের একটি জাহাজ গাজার আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশ করেছিল। তবে উপকূল থেকে মাত্র ৯.৩ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকতেই এর সিগন্যাল হারিয়ে যায়।
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, বহু বছরের ইসরায়েলি অবরোধ চ্যালেঞ্জ করতে তারা গাজা অভিমুখে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী তাদের জাহাজ ঘিরে ফেলে।
অ্যাক্টিভিস্টরা জানান, জ্যামিংয়ের কারণে জাহাজগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর জাহাজ বহরের কাছে পৌঁছে দিক পরিবর্তনের নির্দেশ দিচ্ছে।
‘ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর ব্রেকিং দ্য সিজ অন গাজা’ জানায়, আমরা এখন জায়নিস্ট (ইসরায়েলি) সেনাদের হামলার শিকার।
তারা আরও জানায়, আমাদের জাহাজগুলোকে অবৈধভাবে আটকে দেওয়া হচ্ছে। ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সামরিক বাহিনী জাহাজে প্রবেশ করেছে।
ফ্লোটিলার নৌযানগুলোর মধ্যে মাত্র চারটির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে
ইসরায়েলের নৌবাহিনী ১৩টি নৌযান আটকের পর বাকি যে ৩০টি নৌযান গাজার উপকূলের উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছিল, সেগুলোর মধ্যে বর্তমানে মাত্র ৪টির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
এই নৌযানগুলো হলো শিরিন, সামারটাইম জং, মিকেনো এবং মেরিনেত্তি। বাকি ২৬টি নৌযান কী অবস্থায় আছে, সেগুলো যাত্রা অব্যাহত রেখেছে না কি ইসরায়েলের নৌবাহিনীর হাতে আটক হয়েছে— সেসব তথ্য কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ট্র্যাকার সিস্টেম ফ্লোটিলা ট্র্যাকারের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
শিরিন এবং সামারটাইম জং বহরের নৌযান হলেও সেগুলোতে ত্রাণসামগ্রী ছিল না। এ দুটি নৌযানে ছিলেন আইনজীবীরা। গত ৩১ আগস্ট গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার মিশন শুরু হওয়ার পর আইনি সাহায্যের জন্য এই দুটি নৌকায় আইনজীবীদের রাখা হয়েছিল।
অন্যদিকে ত্রাণবাহী নৌযান মিকেনো এবং মেরিনেত্তি গাজার জলসীমার কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিল। যাত্রা অব্যাহত থাকলে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুরের মধ্যে গাজার উপকূলে নোঙ্গর ফেলার কথা ছিল নৌযান দুটির।
কিন্তু বাংলাদেশ সময় ১১টা ২১ মিনিটের পর থেকে মিকেনো, মেরিনেত্তি, শিরিন এবং সামারটাইম জং-এর কোনো খবর পাচ্ছে না ফ্লোটিলা ট্র্যাকার।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা—এই চার আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ঐক্যমঞ্চ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে খাদ্য ও ওষুধে পূর্ণ ৪৩টি নৌযানের বহর নিয়ে গাজার উদ্দেশে রওনা দেয় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। জাহাজগুলোতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আছেন সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা এবং তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক। এই নাগরিকদের কেউ পার্লামেন্টারিয়ান, কেউ আইনজীবী, কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং কেউ বা স্বেচ্ছাসেবী।
বুধবার ভূমধ্যসাগরের গাজা উপকূলের কাছাকাছি চলে এসেছিল গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহর। সেদিন সন্ধ্যার পর গাজা উপকূল থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় নৌবহরের চারপাশ ঘিরে ধরে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ এবং বহরের ১৩টি নৌযান আটক করে। আটক নৌযানগুলোর মধ্যে কয়েকটির নাম জানা গেছে— স্পেক্টার, অ্যালমা, সাইরাস, হুগা, মালি প্রভৃতি।
আটক নৌযানগুলোতে ছিলেন দুই শতাধিক যাত্রী এবং ক্রু। তাদের সবাইকে ইসরায়েলের বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কিন্তু ১৩টি নৌযান আটকের পরও গাজার উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল বাকি ৩০টি নৌযান।
দীর্ঘ আড়াই বছর পর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত কেওক্রাডং। ফলে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যটক সমাগম ঘটেছে এই পর্বতশৃঙ্গে। বৃহস্পতিবার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কেওক্রাডং পর্বতের অবস্থান বান্দরবানের রুমায়। নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রায় আড়াই বছর অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী ভ্রমণ পিপাসুরা এই পর্যটন কেন্দ্রটি ভ্রমণ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ১ অক্টোবর থেকে উন্মুক্ত হওয়ায় ব্যাপক পর্যটকের সমাগম ঘটে কেন্দ্রটিতে।
রুমা টুরিস্ট গাইডের লাইনম্যান লাল রৌকল বম জানান, ‘কেওক্রাডং পর্বত ভ্রমণ করতে ৬৩০ জন পর্যটক গিয়েছিলেন। আজ দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫০০’র বেশি পর্যটক গমন করেছে। দিনের বাকি অংশে এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, কেওক্রাডং পর্বত কেন্দ্রটি আরও জনপ্রিয় এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ওই এলাকায় বিশ্রামাগার, শৌচাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার সীমিত ও বগালেক পরবর্তী অংশে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধকরণে বর্তমান ছুটি পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
ভোলার লালমোহনে একটি ব্রিজের জন্য দুই ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। দেড় বছর ধরে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
সরেজমিনে জানা যায়, ৩০ বছর আগে উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তরুল্লা সেন্টার ও বিশ্বাসের পাড় এলাকার মধ্যবর্তী নাজিরপুর খালের ওপর প্রায় ৩০ মিটার লম্বা আয়রন ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় দেড় বছর আগে ব্রিজটির সামনের অংশ ভেঙে গেছে। আর এতে করে চরমভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কালমা ইউনিয়নের চর ছকিনা, তরুল্লা সেন্টার, বিশ্বাসের পাড় ও বদরপুর ইউনিয়নের চর টিটিয়া গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
কালমা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শাহ আলম জানান, এ ব্রিজ দিয়ে অনেক ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে। বিশেষ করে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল বোরাক, টেম্পু ও নসিমন। কয়েক বছর আগে ব্রিজটির মধ্যবর্তী দুটি অংশ ভেঙে বড় গর্তে পরিণত হয়। পরে স্থানীয়রা কাঠ দিয়ে গর্ত আটকে দেয়। ব্রিজের রেলিং ভেঙে গেছে। প্রায় দেড় বছর আগে ব্রিজটির সামনের অংশ ভেঙে গেছে। এখন ব্রিজ দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
তারা আরো জানান, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার এখন মানুষ পায়ে হেঁটে পারাপারও ঝুঁকি হয়ে পড়েছে। অনেকে ব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে পরে গিয়ে আহত হয়েছেন।
বিশ্বাসের পাড় গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসমাইল বিশ্বাস জানান, লালমোহন থেকে তাদের এলাকায় যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি। ব্রিজ পার হয়ে আমাদের যাতায়াত করতে যেতে হয়। কিন্তু ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার তারা এখন ব্রিজের কাছে এসে পায়ে হেঁটে বাড়িতে যেতে হয়। বাড়ির জন্য বাজার ও চাউলের বস্তা নিয়ে যেতে তাদের অনেক কষ্ট হয়।
একই এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল হক জানান, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার তাদের গ্রামের রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়। কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে না পারায় ভোগান্তিতে পরতে হয়। অনেক সময় রোগীদের বাড়িতে থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে ভাঙা ব্রিজ পার হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়।
স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তার জানায়, প্রতিদিন ভাঙা ব্রিজ পার হয় স্কুলে যেতে হয়। ভয় নিয়েও ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় আমাদের।
মো. মানিক হাওলাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি ভাঙা অবস্থায় মরণফাঁদে পরিণত হলেও সংস্কার কিংবা নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের। দ্রুত ভাঙা ব্রিজটি অপসরণ করে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলার এলজিইডির উপজেলার প্রকৌশলী রাজীব সাহা জানান, ওই আয়রন ব্রিজসহ লালমোহন উপজেলার আরও কয়েকটি ব্রিজ নতুন করে নির্মাণের জন্য তারা প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণ করে জনগণের ভোগান্তি দূর করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে বজ্রপাতে নজর আলী মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্ত্রী জুলেখা বেগম (৪০) গুরুতর আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার মোক্তারামপুর কান্দাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মাঝে বাড়ির পাশে ডোবা থেকে নজর আলী ও তার স্ত্রী কচুরিপানা তুলছিলেন। ওইসময় বজ্রপাতে তারা দুজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে সলিমগঞ্জ অলিউর রহমান জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নজর আলী মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। তার স্ত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান জানান, নিহত ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। তার স্ত্রীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
টানা বর্ষণ ও উত্তাল সাগরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিরামহীন বৃষ্টিপাতে দ্বীপটির পাঁচটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত দুই শতাধিক ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় সংকট, খাদ্য সংকট ও পানিবন্দি দুর্ভোগে পড়েছেন। গত বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। জোয়ারের পানির সঙ্গে ঢেউ বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের পূর্বপাড়া, পশ্চিমপাড়া, মাঝেরপাড়া, নজরুলপাড়া ও কোনাপাড়া পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে গেছে।
মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা ফাহমিদা বলেন, ‘আমাদের ঘর পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে পানিবন্দি অবস্থায় আছি। রান্নার সুযোগ নেই, পরিবারের কেউ খেয়ে উঠতে পারেনি। ঘর ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ারও জায়গা নেই। এমন দুর্ভোগের কথা জানান দ্বীপের আরও অনেকে।’
সেন্টমার্টিন ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম জানান, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে টানা দুদিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দ্বীপের মানুষ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘টানা বর্ষণে দ্বীপের পাঁচটি গ্রামে কয়েকশ ঘর পানিবন্দি হয়েছে। পাশাপাশি জোয়ারের ধাক্কায় ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং ট্রলারও ডুবে গেছে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কালাম বলেন, ‘আমি কোনো স্লুইসগেট বন্ধ করিনি। আমার পাশের বাড়ির খলিল নামের এক ব্যক্তি সীমানা দেওয়ার সময় গেট বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা দ্রুত তা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
দ্বীপবাসীরা বলছেন, ঝড়-বৃষ্টি বা জলোচ্ছ্বাস এলেই এমন পানিবন্দি দুর্ভোগ নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। তবে এবার স্লুইসগেট বন্ধ থাকায় অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে সেন্টমার্টিনে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। মূলত স্লুইসগেট বন্ধ থাকায় এ ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে গেট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। বৃষ্টি থামলে আশা করি পানি নেমে যাবে।’
মাদারীপুরে অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না, অন্য বিভাগে যাব না-ব্যানার ও স্লোগানে এক উম্মুক্ত আলোচনা সভা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মাদারীপুর পৌর কমিনিউটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী, মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ ৪ উপজেলার মানুষ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মাদারীপুর জেলাকে ঢাকা বিভাগ থেকে নবগঠিত ফরিদপুর জেলার সাথে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন গণমাধ্যম, পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন উম্মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মাদারীপুর জেলা বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা থেকে ১৯৮৪ সালে স্বতন্ত্র একটি আলাদা জেলা হিসেবে গঠিত হয়েছিল। তখন থেকে মাদারীপুর একটি সম্পূর্ণ আলাদা জেলা। এ জেলার মানুষের চলাচল, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিসিয়াল কাজ-কর্ম, সংস্কৃতি সবই ঢাকার সাথে হয়ে থাকে। মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরে এ জেলার মানুষের তেমন কোনো চলাচল নেই। পদ্মা ব্রিজ মাদারীপুর অংশ থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ৩৭ কি. মি. এবং মাদারীপুরের শেষাংশ টেকেরহাট বন্দর থেকে ফরিদপুরের দূরত্ব ৫০ কি.মি.। আলোচনায় বক্তারা আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই আমরা মাদারীপুরবাসী ফরিদপুর বিভাগে যাব না, আমরা ঢাকা বিভাগেই থাকব, প্রয়োজনে এ জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত। তারা আরও বলেন, এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না এলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব, প্রয়োজনে রক্তও যদি দিতে হয় তবে তাই দেব- ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুই পরিবারের স্বেচ্ছাচারিতায় রাস্তা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক পরিবার। বাধ্য হয়ে রাস্তা খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহাম্মদ আলী প্রধান প্লাজার সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিল। মানববন্ধন শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি আব্দুল্লাহপুর গ্রাম থেকে শুরু হয়ে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডে এসে শেষ হয়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা দোলোয়ার হোসেন, শুধু দুটি পরিবারের জন্য আমরা প্রায় একশটি পরিবারের ছয় শতাধিক সদস্য অবর্ণীয় দুর্ভোগে রয়েছি। বারবার তাদের রাস্তার জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হলেও তারা আমাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন জনগণের রাস্তার জায়গা বন্ধ করে ওই জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে তাই বাধ্য হয়ে আমাদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি।
স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মাত্র দুটি পরিবারের জন্য একশ পরিবারের মানুষ জিম্মি হয়ে রয়েছে। দুটি পরিবারে আপত্তিতে ১০০০ ফুট রাস্তার ৮২ ফুট বাদে বাকি অংশের কাজ শেষ হয়েছে দীর্ঘদিন। আমাদের অবস্থা এ রকম একজন মানুষ মারা গেলে তার খাটিয়া বের করা যায় না। একজন লোক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাস্তার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।’
প্রসঙ্গত ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাউশিয়া বহুমুখী উন্নয়ন সমিতি মার্কেটের পিছনে যারা বসতি তৈরি করেছেন তারা মূলত বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা মানুষ। শুরুতে বিক্ষিপ্তভাবে বসতি তৈরি করলেও বর্তমানে এটি একটি গ্রাম যার নাম আব্দুল্লাহপুর। সম্প্রতি ওই দুই পরিবারের সদস্যরা রাস্তাটির এই অংশ দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে থাকলে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫ দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকের বাদ্য আর গান-বাজনা ছাড়া বিদায়ের করুণ ছায়ায় সারিবদ্ধভাবে একে একে বুড়িগঙ্গা নদীতে বিসর্জন দেয়া হয় প্রতিমা। একই সময়ে তুরাগ নদীতে চলে বিসর্জন। সড়কে পুলিশের টহল ও নদীতে ছিল নৌপুলিশের টহল। ফায়ার সার্ভিসের টিমও দায়িত্ব পালন করে।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও শহর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসীম উদ্দীন (৫৬) মারা গেছেন।
তার অকাল মৃত্যুতে জেলা বিএনপি ও মহানগর বিএনপি শোক প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সাবেরা আলাউদ্দিন। ভিপি জসীম উদ্দীন তার দেবর।
তিনি জানান, গত রোববার রাত ১১টার দিকে কুমিল্লা সদর উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে ব্রেনস্ট্রোক করলে দ্রুত তাকে নগরীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান তিনি।
মৃত্যুকালে ভিপি জসীম উদ্দীন এক ছেলে, এক মেয়ে, স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিন,বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাকারিয়া তাহের সুমন, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু ও সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, সাবেক মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মাহবুবুল আলম চপল, বিএনপির কুমিল্লা দঃজেলার নব কমিটির সদস্য মোজাহিদ চৌধুরী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব) এর মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, সারাদেশে ৩৩ হাজারের উপরে পূজামণ্ডপ রয়েছে। আমরা তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এটা শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ না। আপনারা যারা সুধী সমাজের ও রাজনৈতিক নেতারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, পূজামণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মোটামোটি ভালোভাবেই পূজা সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের সম্প্রীতির বাংলাদেশ ও সকল ধর্মের বাংলাদেশে কোনো নাশকতাকারীকে আমরা কোনোভাবে ছাড় দেব না।
গত বুধবার বিকেলে নারাণগঞ্জ শহরের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার পূজামণ্ডপের মধ্যে ৪৯টি মণ্ডপে কিছু নাশকতাকারী বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছিল। তবে আমরা প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ পর্যন্ত ১৯ জনের বেশি নাশকতাকারীকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব এখন পর্যন্ত যেভাবে চলেছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সবচেয়ে ভালো হতো যদি এই ধরণের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর বেষ্টনীর মধ্যে না থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যেদিন আমরা পালন করতে পারবো, সেদিনই প্রকৃত আনন্দ হবে। এখন আমাদের এভাবেই করতে হচ্ছে। আশা করি, সেদিন আসবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বিএনপি নেতা আবু জাফর আহমেদ বাবুল, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপনসহ প্রমুখ।
ফেনী ডায়াবেটিক সমিতির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমিতির সম্মেলন কক্ষে কেক কেটে আলোচনা সভার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। গত বুধবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির এডহক কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইসমাইল হোসেন।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুছের সঞ্চালনায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই বর্ণীল আয়োজনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সমিতির উপদেষ্টা পরিষদের সহসভাপতি ও সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম, এডহক কমিটির সদস্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠাকালীন গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরেন বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. তবারক উল্ল্যা চৌধুরী বায়েজিদ, আজীবন সদস্য মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, সাহাব উদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন মোর্শেদ ও মো. শাহ আলম বাদল। বক্তব্যে সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন কার্যনির্বাহী পরিষদ ও উপদেষ্টা পরিষদসহ সকল পর্যায়ের সদস্যদের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করা হয়। প্রয়াত সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
এছাড়া বক্তারা সামাজিক প্রতিষ্ঠানটির সেবামূলক কার্যক্রম যাতে অক্ষুন্ন থাকে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
এডহক কমিটির কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট মো. নুরুল আমিন খান এবং সদস্য ডা. নুর মোহাম্মদ ও মোহাং নাছির উদ্দিন (তছলিম), নবীন ও প্রবীণ আজীবন সদস্যরা এবং এই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থানীয় সরকার বিসয়ক সম্পাদক কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন। তিনি শহরের গোপীনাথ জিউর মন্দির, বৈশাখী সংঘ, আমলাপাড়া সর্বজনীন পূজা মন্দিরসহ একাধিক পূজামণ্ডপে গিয়ে দুর্গাপূজার সার্বিক আয়োজন ঘুরে দেখেন এবং ভক্তদের সঙ্গে পূজার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এ সময় সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া সদর -৩ আসনের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে গিয়ে তারেক রহমানের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি এবং সেই সঙ্গে তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমান বলেছেন, ধর্ম যার যার কিন্তু দেশটা সবার। এ সময় তিনি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান।’
স্থানীয় সাধারণ মানুষ সাবেক সংসদ সদস্যকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তাদের মতে, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি সবসময় মানুষের পাশে থেকেছেন এবং সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করেছেন।
এ সময় কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ফুহাদ রেজা ফাহিম, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোজাক্কির রহমান রাব্বি, বিএনপি নেতা আশরাফুল করিম শাওন, জব্বার মিলন, আরাফাত জুবায়ের নয়নসহ জেলা ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।