ঝিনাইদহ-১ শূন্য আসনের উপনির্বাচন আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এই আসনে নির্বাচনের সময়সূচি পুনর্নিধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে নতুন সময়সূচি নির্ধারণের বিষয়টি জানানো হয়।
এর আগে গত ৮ মে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা) আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। ফলে ওই আসনে উপনির্বাচনে বাধা কেটে যায়।
গত ১৬ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। পরে এই আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
তবে গত ৬ মে আসনটির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নজরুল ইসলামের এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে আদেশ দেন বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ। ওইদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। পরে তিনি সাংবাদিকদের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২১ দিনের জন্য এ নির্বাচন স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
সবশেষ গত ৮ মে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন। এতে আসনটিতে নির্বাচনের বাধা কেটে যায়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অনুমোদিত বাজেট প্রকাশের অনুষ্ঠান আজ নগর ভবন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ডিএসসিসি প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
ডিএসসিসি পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদিত হয়। বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৩২০.৪৩ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় ৬৩৫.৩৩ কোটি টাকা, ডিএসসিসির নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন ব্যয় ৮৭৬.৬৪ কোটি টাকা এবং মোট ডিএসসিসি, সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তায় উন্নয়ন ব্যয় বাবদ ১৪৬৯.২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
বাজেটের প্রধান খাতসমূহের মধ্যে সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো খাতে ৩৬৫.১১ কোটি, খাল উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা নিরসন খাতে ১১৫.০০ কোটি, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে ৫৭.২০ কোটি, মশক নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্য খাতে ৫৭.৪৪ কোটি, বৃক্ষরোপন ও পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ৫.২৬ কোটি এবং কল্যাণমূলক খাতে ১৩.৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় প্রশাসক বলেন, "ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাজেট কেবল গাণিতিক সংখ্যা নয়। এটি আমাদের কাছে সম্মানিত করদাতাদের আমানত।" উচ্চাভিলাষী বড় অঙ্কের বাজেট প্রণয়ন না করে বাস্তবায়নযোগ্য যৌক্তিক বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন নগরবাসীর অতিরিক্ত করারোপ বা কর হার বৃদ্ধি না করে ক্ষেত্রমত বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচন করা হয়েছে।
বাজেট উপস্থাপন অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঐতিহাসিক ৩৬ জুলাই স্মরণে শহীদ ও আহতদের উৎসর্গ করে ৩৬ কিলোমিটার ম্যারাথন করেছেন ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থী।
ভোরে পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে ম্যারাথনটি শুরু করে ৩৬ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়ে আবারো একই স্থানে এসে শেষ করেন তারা।
ম্যারাথনে অংশ নিয়েছেন সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তামিম ইসলাম মিরাজ এবং নবম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী সজিব ও মুনতাসির বিল্লা ।
ম্যারাথন শেষে তারা জানান, ৩৬ জুলাই আমাদের কাছে আবেগের। গত বছর ৩৬ জুলাইয়ে স্বৈরাচার খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। ৩৬ জুলাইকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা ৩৬ কিলোমিটার ম্যারাথন সম্পন্ন করেছি। দৌড়ের মধ্যে হাঁটুতে কিছুটা পেইন হলেও সবশেষে ঠিকঠাক সম্পন্ন করতে পেরেছি।
পরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও সকল আহতদের সুস্থতা কামনা করেন তারা।
বরিশাল ও দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীগুলো আজ দখল ও দূষণের থাবায় অস্তিত্ব সংকটে। নদীর স্বাভাবিক গতি-প্রবাহ, পরিবেশ ও জনজীবনে প্রভাব পড়ছে মারাত্মকভাবে। একদিকে প্রশাসনের নীরবতা, অন্যদিকে প্রভাবশালী দখলদারদের বেপরোয়া দখল সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে নিঃশেষ হতে চলেছে নদীমাতৃক বাংলার অস্তিত্ব। বরিশালের প্রাণ কীর্তনখোলা নদী আজ চরম হুমকির মুখে। বিশেষ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দপদপিয়া ও চরবাড়িয়া এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধের দুই পাশে চলছে দখলের প্রতিযোগিতা। দোকানপাট, স-মিল, ইট-বালুর ডিপো, অফিস, ঘরবাড়ি এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে নদীর বুক দখল করে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৭টি বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান এই নদীদূষণ ও দখলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। কালিজিরা, কর্নকাঠী, রসুলপুর ও পলাশপুর এলাকায় নদীর দুই তীরে গড়ে উঠেছে ডকইয়ার্ড, গোডাউন ও কারখানা। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব দখলের পেছনে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগী এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,এখানে আগে মাছ ধরতাম, এখন শুধু বালু আর কংক্রিট দেখি। আমাদের চলাফেরাও বন্ধ হয়ে গেছে।
একটি তালিকায় দেখা গেছে,কীর্তনখোলায় ২১৪ জন,পটুয়াখালী নদীতে ৩৫৫ জন,ভোলার জাঙ্গালিয়া নদীতে ৩৫জন,পিরোজপুরের বেলুয়া নদীতে ৮৮ জন,বরগুনার পায়রা নদীতে ১১০জন,ঝালকাঠির ধানসিঁড়ি নদীতে ২৩ জন দখলদার চিহ্নিত করা হয়েছে।
পিরোজপুরের দামোদর নদের ব্রিজ এলাকাও দখলের কবলে। নদীর জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বলেশ্বরসহ অন্যান্য নদীরও একই দশা ব্রিজ ও স্থাপনা নির্মাণে হারিয়েছে নাব্যতা।এলাকাবাসীর দাবি,নদী বাঁচান, আমাদের ভবিষ্যৎ বাঁচান। প্রশাসনের উচিত এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলো ছিল এক সময়ের প্রাণ। আজ সেই প্রাণ যাচ্ছে নিভে। নদী রক্ষায় প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা। বিআইডব্লিউটিএ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলমান জরিপ শেষে শুরু হবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান।
বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের উপ-পরিচালক মো. সেলিম রেজা জানান,আমরা কীর্তনখোলা নদীর ৪ হাজার ৩২০ জন অবৈধ দখলদারের খসড়া তালিকা তৈরি করেছি। জরিপ শেষে দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। বরিশাল জেলার ২৩টি নদীর দুই তীর দখলে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। শুধু কীর্তনখোলা নয়, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য নদ-নদীগুলোর অবস্থাও শোচনীয়।
এ বিষয়ে বরিশাল অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আহসান হাবীব জানান,আমরা প্রত্যেকটি নদীর দখলদারদের তালিকা তৈরি করছি। উচ্ছেদের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
ফরিদপুরে তারুণ্যের আইডিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদদের স্মরনে মঞ্চস্থ হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নাটক "অতঃপর একটি জুলাই "।
জেলা পরিষদ ফরিদপুরের আয়োজনে স্থানীয় কবি জসীমউদ্দীন হল মঞ্চে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নাটক "অতঃপর একটি জুলাই "মঞ্চস্থ করা হয়।
জেলা পরিষদ ফরিদপুরের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা মো:বাকাহীদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহরাব হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রামানন্দ পাল, সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ শামসুল আজম, যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর ফরিদপুরের উপ-পরিচালক মো:মউনুল হোসেন,সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
জুলাই শহীদদের স্মরনে নাটকটি রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন তরুন নাট্যকার নিরব ইমতিয়াজ শান্ত।
নাটকটিতে ৩০ জন নতুন মুখ অভিনয় করেছেন, যারা ফরিদপুরে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী। নাটকটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিরব ইমতিয়াজ শান্ত। এছাড়া নাটকে অভিনয় করেন মোঃ সোহেল রানা, কাজী জেবা তাহসিন,জান্নাতি খানম, চয়ন সাহা, আরিয়ান শাহ, শাহরিয়ার রাফিন, সিনহা আহমেদ সহ আরো এক ঝাক তরুন অভিনেতা।
জুলাই বিপ্লবের পুরো ঘটনাটিকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই নাটকে।স্বৈরাচারী হাসিনার জুলুম ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজের রুখে দাঁড়ানোর ও রক্ত দিয়ে লেখা জুলাই শহীদের নিয়ে নাটক "অতঃপর একটি জুলাই হলভর্তি দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
বিদ্যালয়ে হঠাৎ শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল ব্যাগ নিয়ে হাজির হলেন ইউএনও। এতে প্রতিটি শিশু শিক্ষার্থীর মুখেই হাসি আর মনে অপার আনন্দ ফুটে উঠলো। ইউএনওর হাত থেকে ব্যাগ উপহার পেয়ে সকলে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন।
আজ বুধবার (৬ আগষ্ট) সকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মাসুম বিল্লাহ বিদ্যালয়টির ২শত ৫০ জন শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেন নতুন স্কুল ব্যাগ।
এ সময় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ, পল্লী উন্নয়ন অফিসার আবু তাহের হেলাল, সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বাসুদেব বিশ্বাস, বিদ্যালয়ের পিটিএ কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকবৃন্দ।
বিদ্যায়লয়টির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী শ্রেষ্ঠা রত্ন বলেন, এতোদিন একই রংয়ের শার্ট-প্যান্ট, জুতা, টাই পড়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে এলেও ব্যাগগুলো ছিল আলাদা আলাদা। আবার কারো কারো স্কুল ব্যাগ ছিলো না। শ্রেণি কক্ষে কেমন যেন বৈষম্য মনে হতো। আমরা ভাবতাম ইস যদি সকলের ব্যাগ একই হতো তাহলে খুব মজা হতো। আজ আমাদের সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন ইউএনও স্যার।
নতুন স্কুল ব্যাগ পেয়ে আনন্দে আত্মহারা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রাফি বলেন, ‘আমার পুরনো ব্যাগ ছিঁড়ে গিয়েছিল। আজ নতুন ব্যাগ পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।’
এদিকে,অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া ছিল ইতিবাচক। তারা জানান, গ্রামে অনেক পরিবারই দরিদ্র। স্কুল ব্যাগ বা টিফিন বক্স কেনা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। ইউএনও’র এই উদ্যোগে তাদের সন্তানরা নতুন উদ্যমে স্কুলে যাচ্ছে। উপস্থিতিও বেড়েছে।
চরকাটিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরব আলী বলেন,’এই সহায়তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দের সৃষ্টি করেছে। আগে কেউ কেউ ছেঁড়া ব্যাগ নিয়ে আসত, অনেকের স্কুল ব্যাগও ছিলোনা। এখন তারা গুছিয়ে স্কুলে আসছে।
সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বাসুদেব বিশ্বাস বলেন,’ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে এই উপহার বিতরণ শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করে তুলবে। এতে এ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা আরও এগিয়ে যাবে।’
ইউএনও মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে এবং পড়ালেখায় আগ্রহ বাড়াতে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, কেউ যেন শুধু অভাবে স্কুলছুট না হয়।
তিনি আরও বলেন’ প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের স্কুল জীবন শুরু হয়। প্রাথমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। শিক্ষা উপকরণ বিতরণের এই উদ্যোগ একটি চলমান প্রক্রিয়ার অংশ এবং ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত আকারে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টা থেকে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬ টি জলকপাট দিয়ে ৬ ইঞ্চি থেকে বাড়িয়ে দেড়ফুট করে পানি ছাড়া হচ্ছে।
এতে প্রতি সেকেন্ডে কাপ্তাই হ্রদ থেকে প্রায় ৩০ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে।
বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান।
তিনি জানান, গতরাত সাড়ে ১০টায় পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১৬ টি জলকপাট দিয়ে ৬ ইঞ্চি থেকে বাড়িয়ে দেড়ফুট করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আরও জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টায় ছিল ১০৮ দশমিক ৫৫ ফুট এমএসএল, যা বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। ফলে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা যাতে বিপদসীমা অতিক্রম না করে সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫ টি ইউনিট সচল থাকায় বর্তমানে মোট ২১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী-পাটুয়ারটেক এলাকায় সমুদ্রসৈকত থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বুধবার সকাল ৮ টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, মেরিন ড্রাইভের ইনানী পাটুয়ারটেক সৈকত থেকে অনুমান ৫০০ মিটার পূর্ব দিকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত দেহ ভেসে আসে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে ইনানী পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে ঘটনাস্থলে ইনানী ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে মৃত দেহের সুরতহাল প্রস্তুত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন, এখন পর্যন্ত মৃত দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয় নাই।
পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির আনুমানিক বয়স ৩০ বছর। তাঁর পরনে কোনো কাপড় ছিল না। মুখে তিনটি ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। সৈকতের বালিয়াড়িতে লাশটি পড়ে ছিল।
ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দুর্জয় সরকার বলেন, সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তেরও চেষ্টা করা হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সড়ক নির্মাণের কার্যাদেশ পাওয়ার দেড় বছর পার হলেও গাছ কর্তনের অজুহাতে নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বন বিভাগ নির্মাণ কাজ শুরু করার দায় নিচ্ছেন না। ফলে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাওয়ার পথে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, সব মহলে ধর্ণা দিয়েও কাজ শুরু করতে পারেছেনা তারা। উপজেলা প্রশাসন ও প্রকৌশল বিভাগের গাফিলতির কারনেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এই প্রকল্প। শুধুমাত্র ১৩০টি গাছ কর্তনের কারণে নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। গাছগুলো কর্তনের উদ্যোগ নেয়নি কোনো দপ্তর। দেড় বছর পার হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তারা বলছেন সড়ক নির্মাণ হয় কি না সন্দেহ রয়েছে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে তেঁতুলিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়নের বুড়িমুটকি গ্রামে তেঁতুলিয়া-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের পাশে ১৫২০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০ ফুট প্রস্থের সড়ক নির্মাণের জন্য এক কোটি উনপঞ্চাশ লাখ পঁচাশি হাজার চারশত আট টাকা চুক্তি মূল্যে গত ১০/০১/২০২৪ তারিখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবু তোয়বুর রহমানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ১১ মাসের মধ্যে অর্থাৎ গত বছর ০৫/১২/২০২৫ তারিখের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেন তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রকৌশলী। কিন্তু কার্যাদেশে নির্মাণ কাজের সময় শেষ হওয়ার আট মাস পেরুলেও অদ্যবধি নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি।
পরবর্তীতে আবু তোয়বুর রহমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাওজুল করিমের কাছে নির্মাণ কাজটি বিক্রি করে দেন। এ বিষয়ে ঠিকাদার রাওজুল করিম জানান, দেড় বছর থেকে উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ঘুরছি, কিন্তু গাছ কর্তন করে না দেওয়ায় কাজ শুরু করতে পারিনি। আমি এই নির্মাণ কাজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রকৌশলী ঈদ্রিস আলী খান সাংবাদিকদের জানান, তিনি চলতি বছরে জানুয়ারি মাসে সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু করতে ১৩০টি গাছ কর্তনের জন্য বারবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৩/০২/২০২৫ তারিখে দিনাজপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বরাবর গাছ কর্তনের বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু বন বিভাগ গাছ কর্তনের কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেয়নি। গাছ কর্তনের পর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহিন খসরু জানান, আসলে ওই সড়কের গাছগুলো সামাজিক বনায়ন বিভাগের হওয়ায় গাছ কর্তনের উদ্যোগ নিতে পারেননি। তবে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তাগাদা দিয়েছেন সড়কটির গাছ কর্তনের জন্য। আসলে গাছ কর্তনের বিষয়টি বন বিভাগ উদ্যোগ নেবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পঞ্চগড়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান ওই সড়ক নির্মাণ বিষয়ে জানান, গাছ কর্তনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, খুব শিগগিরই গাছ কর্তন করে বুড়িমুটকি সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
একদিকে সিঙাড়া নিয়ে গ্রামের যাওয়ার প্রস্তুতি, অন্যদিকে ছোট্ট দুই শিশুকে স্কুলে পাঠানোর চিন্তা। আবার ছোট বোনের কিনতে হবে ওষুধ। হাতে নিয়ে ঘুরছে ভাতিজার প্রেসক্রিপশন। টাকা না থাকায় কিনতে পারেনি ওষুধ। সব দায়িত্ব যেন তার কাঁধে। জীবনের ভারের চেয়ে দায়িত্বের ভারই এখন তার বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অসহায়ের এই এই করুন গল্পটা নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কুজাইল হিন্দু পাড়া গ্রামের পলাশ চন্দ্র প্রামানিক ও দুই ছোট্ট শিশু ১১ বছরের প্রীতম এবং ৭ বছরের প্রিয়সী'র।
জন্মের পর থেকেই তাদের জীবনের পথে শুধু হারের গল্প। ছোট্ট দুই শিশুর মা পূর্ণিমা চিকিৎসার অভাবে গত ১১ এপ্রিল নিজ বাড়িতে মারা গেছে। বাবা থেকেও নেই। মাকে হারিয়ে পৃথিবীটা যেন একেবারে অন্ধকার হয়ে গেছে তাদের জন্য।
অপরদিকে পলাশের জীবনের গল্প আরও করুন। তার ভাগ্যেও কখনও জোটেনি ভালো কিছু খাবার, হয়নি সামর্থ্য নতুন পোশাক কেনার। পলাশের যে ঘরে রাত কাটে হয়তো সেই ঘর থেকে কারো কারো গবাদি পশুর থাকার ঘরও এর চেয়ে ভালো হয়ে থাকে। তবুও রাত কাটছে তার। একই ঘরের মধ্যে খাওয়া, আছে জঙ্গল।
প্রীতম ও প্রিয়সী কম বুদ্ধিসম্পন্ন ডাবলু প্রামাণিকের সন্তান। আর পলাশ প্রামাণিক শিশু দুটির কাকা (চাচা)।
এদিকে প্রীতম গত দুই দিন থেকে জ্বরে ভুগছে। আধা পাগল বাবা ছেলের চিকিৎসার জন্য পাগলপ্রায় হয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে করে নিয়েছে প্রেসক্রিপশন। কিন্তু ওষুধ কিনতে না পেরে প্রেসক্রিপশন ধরে দিয়েছে ছোট ভাই পলাশের হাতে। পলাশ হয়তো আজ কিনবে ভাতিজার ওষুধ।
মৃত্যুর একদিন আগেও প্রীতম ও প্রিয়সীর মা'র ইচ্ছে ছিল তার দুই সন্তানকে পড়াশোনা করানোর, তার স্বপ্ন যেন থমকে যেতে বসেছে। এখনই হাত পেতে কিনতে হচ্ছে ছেলের ৭ম শ্রেণির গাইড বই। তবে মৃত বৌদির (ভাবির) স্বপ্ন পূরণের আশায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেবর পলাশ চন্দ্র প্রামাণিক।
তাইতো সংসারের চিন্তায় কাকা পলাশ সাইকেলে ছুটলেন সিঙাড়া নিয়ে। তা বিক্রি করে যা আয় হবে সেটা দিয়েই চলবে সংসারের খরচ।
বুদ্ধির পর থেকেই সুখ নামক শব্দটি তার কপালে জোটেনি। পড়াশোনার পাশাপাশিই কাঁধ তুলে নিতে হয়েছে ব্যবসার ভাড়।
এদিকে মা হারা হয়েও থামেনি ছোট্ট দুই শিশুর স্বপ্ন। সকালে পুরোনো ব্যাগ কাঁধে তুলে নিয়ে তারা স্কুলে যায়। অন্যদের মতো নতুন পোশাক, দামি খাতা কলম নেই। অনেক সময় না খেয়েই ক্লাস করতে হয়। তবুও স্কুলে গিয়ে পড়তে চায়, বন্ধুদের মতো স্বপ্ন দেখতে চায় প্রিতম-প্রেয়সী। তাদের একমাত্র ভরসা কাকা পলাশ, যিনি গ্রাজুয়েশন শেষ করেও চাকরির পিছনে না ছুটে গ্রামে গ্রামে সিঙ্গাড়া বিক্রি করে কোনোমতে সংসার চালান। নিজের সংসারে চাল-চুল না থাকা সত্ত্বেও ছোট্ট দু’ভাই বোনকে আগলে রেখেছেন মায়ের মতো করে। তাই তাদের চোখে আশা—একদিন মানুষ হবো, পরিবার আর সমাজের মুখ উজ্জ্বল করবো।
কিন্তু এই লড়াইয়ে কাকা পলাশ একা। অভাবের ঘূর্ণিপাকে হয়তো যেকোনো সময় থেমে যেতে পারে প্রীতম আর প্রিয়সীর স্কুলে যাওয়ার স্বপ্ন। সমাজের এগিয়ে আসা ছাড়া হয়তো স্বপ্নগুলো স্বপ্নই থেকে যাবে, ঝরে যাবে নিমিষেই।
হতাশা নিয়ে কাকা পলাশ কণ্ঠ কাঁপিয়ে বলেন, "নিজের সংসারও চলে না ঠিকমতো। তবু ওদের চোখের দিকে তাকিয়ে বলি, স্কুলে যেও, মানুষ হইও। ওদের পড়াশোনা থেমে গেলে আমার মন ভেঙে যাবে। কষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত ওদের পাশে থাকবো।" আজ দুই দিন থেকে ভাতিজা জ্বরে ভুগছে, বোনও দুই মাস থেকে অসুস্থ। তাই মনটা খারাপ।
তিনি আরও বলেন, এলাকায় যেকোনো একটা চাকরির সুযোগ পেলে আমার জন্য খুব ভালো হতো। জীবনে নিজের জন্য কখনও পোশাক কিনতে পারিনি। দাদার মাধ্যমে একবার দুই বান্ডিল দিন ও কিছু টাকা পেয়ছিলাম, সেই টিন দিয়ে ঘর ঠিক করেছি। তারপরও স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা, বেঁচে আছি।
ডাবলু প্রামাণিক বলেন, আমি তেমন কাজ কাম করতে পারিনা। একসময় পেডেল আলা ভ্যান চালাতাম, খুব কষ্ট হতো। এখন মাঝে মাঝে গুড় ও মুড়ি নিয়ে গ্রামে গ্রামে যাই। ব্যাট্যা আমার জ্বরে পড়ে আছে। খুব খারাপ লাগছে। ওষুধই কিনতে পারছি না। পড়াশোনা করামু কেমন করে?
ভাই-বোন প্রীতম ও প্রিয়সীর আজ একটাই আকুতি—"আমরা পড়তে চাই… মানুষ হতে চাই। আমাদের স্বপ্ন যেন না মরে যায়।"
প্রীতম প্রামাণিক বলেন, আমরা দুই ভাই বোন পড়াশোনা করতে চাই। কিন্তু কিভাবে করব জানিনা, আমার একটা গাইড কিনতে হয়েছে সাহায্য নিয়ে। আমার মা বেঁচে থাকলে তেমন চিন্তা হতো না।
একই ওয়ার্ডের মেম্বার হাফিজুর রহমান বলেন, ডাবলু প্রামাণিকের স্ত্রী মারা যাওয়ায় তার দুটো সন্তান অসহায় হয়ে পড়েছে। তার স্ত্রী মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতো। আমার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের একটা লাট্রিন (পায়খানা) দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। আর তার দুই ছোট্ট সন্তানের জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ। পাশাপাশি পলাশ খুব ভালো ছেলে। সে পড়াশোনা অবস্থায় একসময় গ্রামে গ্রামে পায়ে হেঁটে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করতো। এখনও কষ্ট করছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাকিবুল হাসান বলেন, আমি তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিবো। এরপর তাদের জন্য যেভাবে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় আমি চেষ্টা করবো।
পূর্ণিমার মৃত্যুতে পার্শ্ববর্তীদের হৃদয় কেড়েছে ছোট্ট এই দুই ভাই-বোন। প্রতিবেশীরা জানান, এখন ছোট্ট দুই শিশুর কি হবে? কেমনে চলবে তাদের পড়াশোনা। পূর্ণিমা অন্যের বাড়িতে কাজ করেই সংসার ও দুই সন্তানের পড়াশোনা চালাচ্ছিলেন।
তাদের এই গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয় বটবৃক্ষ নামক বাবা-মা কাউকে যেন অল্প বয়সে হারাতে না হয়। তাহলে এরকম হাজার হাজার প্রীতম-প্রিয়সীর জীবন অকালে ঝরে যাবে, থেমে যাবে স্বপ্ন। তারপরও তাদের জীবন সুন্দর হোক এই প্রত্যাশা প্রতিবেশীদের।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পিকনিকের লঞ্চে দুবৃর্ত্তদের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী। এসময় প্রায় ৩০ মিনিট মহাসড়কে সকল যান চলাচল বন্ধ ছিলো। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকরা।
আজ বুধবার বেলা ১১ টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাড়কের ভৈরব দুর্জয় মোড়ে ঘন্টাব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা যায়, গত ২রা আগস্ট ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকাবাসী ভৈরব বাজার লঞ্চঘাট থেকে একটি লঞ্চযোগে ২শত জন লোক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর এলাকায় পিকনিকের জন্য রওনা দেন। পথিমধ্যে নরসিংদী জেলার রায়পুরার মেঘনা নদী এলাকায় পৌঁচ্ছালে একদল দুবৃর্ত্তকারীর দল স্পিডবোর্ড যোগে এসে পিকনিকের লঞ্চে অস্ত্র নিয়ে হামলায় চালায়। এসময় এলোপাতারিভাবে লঞ্চে থাকা লোকজনের উপর গুলি ছুঁড়েন। পরবর্তীতে হামলাকারীরা লঞ্চে উঠে যাত্রীদের মারধোর করে তাদের কাছ থেকে মুঠোফোন, নগদ টাকাসহ সাউন্ড সিস্টেমের সরঞ্জাম, দুটি সাউন্ডবক্স লুট করে নিয়ে যায়।
এবিষয়ে কমলপুর এলাকার ব্যবসায়ী শাহারিয়ার জিসান বলেন, আমাদের এলাকাবাসী গত ২রা আগস্ট নবীনগরে পিকনিকে যাবার সময়ে রায়পুরা এলাকায় বালু মহলের পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে একদল দুবৃর্ত্তকারীরা হঠাৎ স্পিডবোর্ড যোগে অস্ত্রসহ।হামলা চালায়। এসময় তারা এলোপাতারিভাবে গুলি ছুড়ে লঞ্চে উঠে মারধোর করে মোবাইল ফোনসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার ৭২ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত।ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাই রায়পুরা প্রশাসন ও ওসির নিকট দাবি জানান দ্রুত সময়ের মধ্য বালু মহলের সাথে জড়িত ও হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করার দাবিতে গাজীপুরের কালীগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) সকাল ১১টায় কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে প্রধান সড়কে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড হাতে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও আমরা এখনো বৈষম্যের শিকার। দেশে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করা হলেও কেন আজো কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার বাইরে রাখা হচ্ছে, তা সরকারের কাছে জানতে চাই।”
তারা আরও বলেন, “কোমলমতি এসব শিশুদের মেধা যাচাইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা কেন এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না, এটি আমাদের কাছে একটি বড় প্রশ্ন। শিক্ষার সকল স্তরে সমতা ও ন্যায় নিশ্চিত করতেই আমাদের এই আন্দোলন।”
বক্তারা অবিলম্বে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান এবং এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
জাপানের হিরোশিমায় বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলার ৮০ বছর পূর্ণ হলো আজ। ১৯৪৫ সালের এই দিনে আমেরিকার 'লিটল বয়' নামের পারমাণবিক বোমাটি শহরটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল।
এ দিনটি উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় এ বছর ১২০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রতিনিধিসহ অন্তত ৫৫ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন। ১৯৪৫ সালের মার্কিন বি-২৯ বোমারু বিমান থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ‘লিটল বয়’ নামক বোমাটি ফেলা হয়েছিল। সেকারণে এই দিনের ওই সময়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং শান্তির ঘণ্টা বাজানো হয়।
হিরোশিমার মেয়র তার বক্তব্যে বলেন, "আমরা বিশ্বকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে পারমাণবিক অস্ত্র মানবতার অস্তিত্বের জন্য হুমকি।" এই হামলায় প্রাথমিকভাবে ৭০ হাজার মানুষ নিহত হন এবং পরবর্তীকালে বিকিরণের প্রভাবে আরও ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ
এবারের অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো তাইওয়ান ও ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়া এবং চীন অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিল। যুক্তরাষ্ট্র থেকে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রদূত রাহম ইমানুয়েল।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, "পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গঠনে জাপান নেতৃত্ব দেবে।" তিনি হিরোশিমা-নাগাসাকির ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বিশ্ববাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন।
এই অনুষ্ঠানে হিরোশিমায় মৃত ব্যক্তিদের স্মরণে শান্তি ঘণ্টা বাজানো হয় এবং শান্তির প্রতীক হিসেবে সাদা কবুতর উড়িয়ে দেওয়া হয়। শহরজুড়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে, যা আগামী এক সপ্তাহ ধরে চলবে।
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) নিয়ে রিভিউয়ের রায় আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ঘোষণা করা হবে।
আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ শুনানি শেষে গত ৩০ জুলাই জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ রায়ের জন্য ৬ আগস্ট দিন ধার্য করেন। তবে আজ (মঙ্গলবার) সর্বোচ্চ আদালত রায়ের জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করে আদেশ দেন।
আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সালাহ উদ্দিন দোলন। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের রিভিউ আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার নিহাদ কবির ও অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার এম. আবদুল কাইয়ূম। এছাড়া ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল)।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘রুলস অব বিজনেস’ অনুযায়ী ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে এটি সংশোধন করা হয়। তবে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ ও সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচে রাখা হয়েছে-এ অভিযোগ এনে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।
২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের (সংশোধিত) ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সকে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। সে আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সেই রায়ে হাইকোর্টের দেওয়া আট দফা নির্দেশনার কিছুটা সংশোধন করে তিন দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেগুলো হল: যেহেতু সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন, তাই বিরোধপূর্ণ প্রিসিডেন্সে সাংবিধানিক পদধারীরা অগ্রাধিকার পাবেন; জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্য হিসেবে জেলা জজ ও সমপদমর্যাদাসম্পন্নরা সরকারের সচিবদের সঙ্গে ১৬ নম্বরে অবস্থান করবেন এবং জেলা জজদের পরেই অতিরিক্ত সচিবরা ১৭ নম্বর ক্রমিকে থাকবেন।
একপর্যায়ে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। পরবর্তীতে রিভিউ আবেদনে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলরাও পক্ষভুক্ত হন।