মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১৫ আশ্বিন ১৪৩২

রুমিনকে যতটা স্মার্ট আশা করেছিলাম, ততটা নন: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১ নভেম্বর, ২০২২ ২০:০০

ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের রূপপুর পরমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ব্যয় বেশি নিয়ে সংসদে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে প্রশ্ন করেন বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা।

জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তার মন্ত্রণালয়ের অধীনে নয়। তিনি রুমিনকে সঠিক তথ্য জেনে প্রশ্ন করার পরামর্শ দেন।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রুমিন ফারহানা তার প্রশ্নে বলেন, আমাদের মন্ত্রীরা অতীত নিয়ে আলোচনা করতে দক্ষ। যে জবাবদিহিতা আমরা চাই সেই ব্যাপারে উত্তর দিতে তারা ততটা দক্ষ না।

রুমিন হিন্দুস্তান টাইমসের উদ্ধৃতি দিয়ে রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্রের নির্মাণ খরচ ভারতের তুলনায় চারগুণ বেশি বলে জানান। সেটার কারণ জানতে চান। জ্বালানি তেল দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে না কিনে স্পট মার্কেট থেকে কেনার ঝুঁকি নেওয়ার কারণও জানতে চান তিনি।

জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, আমি ওনাকে যতটা স্মার্ট আশা করেছিলাম, তিনি ততটা স্মার্ট নন। তার তথ্য জানার ক্ষেত্রে যে ধরনের উপাত্ত থাকার দরকার সেটাও নেই। কারণ উনি বুঝতে পারছে না পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আমার মন্ত্রণালয়ের (বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়) অধীনে নয়। প্রশ্নটা করা উচিত ছিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর কাছে। আপনি বুঝতে পারছেন সংসদ সদস্যরা কী পরিমাণ তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রশ্ন করেন। সংসদ সদস্যকে অনুরোধ করব, উনি সঠিক তথ্য জেনে আসেন, কোন মন্ত্রণালয়ের জন্য কী প্রশ্ন করবেন।

জ্বালানি তেল দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে না কিনে স্পট মার্কেট থেকে কেনার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগে আমরা যখনই দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করেছি সকলেই মিলে সমালোচনা করেছেন। কেন স্পট মার্কেট থেকে ৫ ডলারে না কিনে, দীর্ঘমেয়াদে গেলাম। এখন আবার সেটাকে উল্টিয়ে বলতে চাচ্ছেন, কেন আমরা দীর্ঘমেয়াদে গেলাম না।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।


সপ্তাহ ব্যবধানে কাঁচামরিচ দ্বিগুন দাম, খুশিতে চাষিরা

প্রতি কেজি কাঁচামরিচের দাম বেড়ে হয়েছে ১৩০ টাকা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি

মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে কৃষি নির্ভর মেহেরপুরের গাংনীতে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। দামে চড়া হওয়ায় খুঁসিতে মরিচ চাষিরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুর্গাপূজার ছুটির কারণে বন্ধ থাকবে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই মেহেরপুরের পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে ১৩০ টাকা পর্যন্ত। অথচ আমাদের এই অঞ্চলে কাঁচা আমদানি করা লাগেন।

গত এক মাস ধরে এমনকি আজ থেকে চারদিন আগেও মেহেরপুর জেলার পাইকারী বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৯০-১১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। সেই মরিচ আজ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারেও পড়েছে এর প্রভাব। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৭০-২৯০ টাকা কেজি।

মেহেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় কাঁচামরিচের বাজার গাংনী উপজেলার দেবীপুর বাজারে আজ মঙ্গলবার কাঁচামরিচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪৫ টাকা পযর্ন্ত। আর জেলার ঐতিহ্যবাহী বামন্দী কাচা বাজারে খুচরা কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকা করে। আর পাইকারি গেছে ২১০ পযর্ন্ত। অথচ তা পাইকারি ২৩০ টাকা, খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা করে।

দেবিপুর কাঁচামরিচ বাজারের ইজারাদার তারিখ আহমেদ জানান, আমাদের এলাকায় চলতি বছরে ব্যাপক বৃষ্টি হওআই জলাবদ্ধতায় মরিচ গাছ মরে গেছে। যার ফলে উৎপাদন কমে গেছে। এর শুরু হয়েছে পূজার ছুটি। যার কারণে স্থলবন্দরগুলো দিয়ে ভারত থেকে আসছে না কাঁচামরিচ। চাষিরাও চালাক। এমন সংবাদে চাষিরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

মরিচ চাষি জাহাঙ্গীর বলেন, আমার দুই বিঘা জমিতে কাঁচামরিচ ছিল, যার মধ্য পানি ওঠাতে এক বিঘা জমির গাছ মরে গেছে। আর এক বিঘা জমির গাছ টিকে আছে। এবার আমাদের মাঠে মরিচ গাছ কম টিকে আছে। ভাবছিলাম এবছর পুরাই লোকশান হবে। তবে সপ্তাহ খানেক হবে কাঁচামরিচের ভালো দাম পাচ্ছি। গত তিনদিন আগে যে মরিচ ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। তা বিক্রি করেছি ২০০ টাকা করে। আজ আবার দাম আরো ভালো, আজ বিক্রি করলাম ২৪০ টাকা করে।

আরেক চাষি জিল্লুর রহমান বলেন, আমার মাত্র দশ কাঠা জমিতে কাঁচামরিচের গাছ টিকে আছে। আজ মরিচ উঠিয়ে বাজারে ২৩৫ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করলাম। তাতে আজকেই ২২ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি হলো। এমন দাম যদি থাকে তাহলেতো বাম্পার।

কাঁচামরিচ বিক্রেতা মিনারুল বলেন, আমি মূলত চাষিদের মাঠ থেকেই মরিচ কিনে থাকে আমরা চাষিদের কাছ থেকে ২৪০ টাকা পযর্ন্ত কেজি কিনেছি। আমাদের কিছু খরচ আছে। আমরা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ২৫০ টাকা করে বিক্রি করছি। অথচ এই মরিচ কেজি ছিলো ১৮০ টাকা করে।

খুচরা ব্যবসায়ী মনোয়ার বলেন, আমরা মহাজনদের কাছ থেকে প্রকারভেদে প্রতি কেজি মরিচ ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা পযর্ন্ত। আমরা খুচরা বাজার বিক্রি করছি ২৯০ টাকা পযর্ন্ত।


জামালপুরে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে সড়কের সংস্কার কাজ বন্ধ

সড়কটির দ্রুত সংস্কারে সংশ্লিষ্ট উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ না কামনা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে দুই পক্ষের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ৯ মাস ধরে বন্ধ কাঠার বিল সানন্দবাড়ি সড়কের লংকারচর সকাল বাজার অংশের ৭০ মিটার সড়ক সংস্কার কাজ। সড়কটি কাঠার বিল থেকে সানন্দবাড়ী হয়ে রাজীবপুর রৌমারী যাতায়াতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়ছেন এ সড়কে পথচারীরা। এলাকাবাসী দ্রুত সড়কটির সংস্কার চায়।

জানা গেছে, কাঠারবিল-সানন্দবাড়ি সড়কের সংস্কার কাজের দায়িত্ব পায় ‘মেসার্স দুর্গা এন্টারপ্রাইজ’ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। এলজিইডির ম্যাপ অনুযায়ী সড়কটির সকাল বাজারের অংশে কিছুটা বাঁকা রয়েছে। ওই বাঁকা অংশের জমি নিয়ে স্থানীয় হাসান মাহমুদ ও আমানতদের মধ্যে বিবাদ চলে আসছে। সে কারণে সড়কটির পূর্বের ম্যাপ অনুযায়ী ওই স্থানে কাজ করতে গেলে হাসান মাহমুদের লোকজন বাঁধা দেয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় সড়কটির সংস্কার কাজ। হাসান মাহমুদ গ্রুপের দাবি সড়কটি পূর্বে থেকে যে দিক দিয়ে গেছে সেই গতি পথ পাল্টিয়ে সোজা করতে। যা এলজিইডির নকশায় নেই এবং নকশার বিকল্প গতিপথ খোঁজা সম্পূর্ণ বিআইনি। আমানত গ্রুপের দাবি, এলজিইডি নকশা অনুযায়ী সড়কটি মেরামত হওয়া উচিত। এতে স্থানীয় কোনো পক্ষ বাঁধা দিলে তা সম্পূর্ণ বেআইনী হবে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি সংস্কার কাজ দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ছেন পথচারীসহ এলাকার।

সরেজমিন দেখা যায়, কিছুটা বাঁকানো সড়কের ওপর ঘর তোলা হয়েছে। পরিবর্তে জোর পূর্বক অন্যের জমি দিয়ে করা হয়েছে সড়ক। সে সড়কে চলাচল করছে মানুষ ও যানবাহন। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সড়কটি কাদায় ভরে আছে। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে প্রায়। তাতে ভোগান্তি নিয়ে পথচারী ও যানবাহন চলাচল করছে।

লংকারচর গ্রামের হায়দার আলী বলেন, লংকারচর সকাল বাজারের জমির মালিকানা নিয়ে হাসান গ্রুপ ও আমানত গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ দীর্ঘ দিনের। হাসান মাহমুদ গ্রুপের দাবি সড়কটির গতি পথ পাল্টিয়ে ব্যক্তিমালিকানা জমির ওপর দিনে নেওয়া। আমানত গ্রুপের দাবি সড়কটি পূর্বের ম্যাপ অনুযায়ী রেখে সংস্কার করা। হঠাৎ ম্যাপ পালিয়ে সড়কটি সোজা করা সম্পূর্ণ বেআইনী বলে মনে করছেন আমানত গ্রুপ। এটি বিধি লংঘনের মতো অপরাধও।

লংকারচরের হযরত আলীর ভাষ্য, সকাল বাজারের ওই অংশের সংস্কার কাজ নিয়ে ইতোমধ্যে দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে কয়েকবার। মীমাংসার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে কয়েক বার শালিস-বৈঠক হয়েছে। এমনকি প্রশাসনের মধ্যস্থতায়ও বিরোধের মীমাংসা হয়নি। বিরোধের বিষয়টি দ্রুত মিমাংসা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবার শঙ্কা রয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। অন্যদিকে সড়কটির ওই স্থান চলাচলের খুব অনুপোযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত বিরোধ নিস্পত্তি করে সড়কটি সংস্কার করা প্রয়োজন।

আমানত আলী বলেন, সকাল বাজারের বাঁকানো রাস্তাটি বহু পুরাতন। হাসান মাহমুদের পক্ষ পেশি শক্তি দেখিয়ে ওই রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। আগের রাস্তায় ঘর তুলে সংস্কারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। তারা নতুন করে যে সোজা রাস্তা করতে বলছে সেটা কবরস্থানের ওপর দিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে আদালতে মামলা করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে আদালত আগের রাস্তায় অবৈধ স্থাপনা অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন। এলাকাবাসীদের দাবি, দ্রুত সড়কটি আগের স্থানে হোক।

হাসান মাহমুদ বলেন, আগের বাঁকানো রাস্তাটি সোজা করা হলে কয়েকটি পরিবারের দ্বন্দ্ব নিরসন হয়। দুই সীমানার মাঝ বরাবর রাস্তা সোজা করলে আর কোন বিরোধ থাকবে না। আমরা চাই সড়কটির গতিপথ সোজা করে সংস্কার করা হোক।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মঞ্জু হোসেন জানান, এলজিইডির নির্দেশেই রাস্তার কাজটি শুরু করা হয়েছিল। বাঁধার মুখে সড়ক সংস্কার কাজ করা যায়নি। একপক্ষ বলছে আগের সড়কটি সংস্কার করতে, অন্যপক্ষ বলছে সড়কটি নতুন করে সোজা করতে হবে। এ নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দে দীর্ঘদিন ধরে সড়কের সংস্কার কাজ স্থগিত থাকায় আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ঠিকাদারের।

এলজিইডির দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, লংকারচর সকাল বাজারের সড়কের সংস্কার কাজে বাঁধা আসায় কাজটি বন্ধ রয়েছে। দুই পক্ষ দুই রকম দাবি করছে। তাদের দাবি মেনে কাজ করা সম্ভব নয়। মূলত ম্যাপ অনুযায়ী সড়ক সংস্কার কাজ করতে হবে। সে অনুযায়ী বাজেট করা হয়েছে। বিষয়টি মিমাংসার জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টা চলছে। দুই পক্ষের সাথেই কথা বলা হয়েছে। এতে বরাদ্দ রয়েছে কেবল রাস্তা সংস্কারের। সে মোতাবেক আগের বাঁকানো সড়ক মেরামত করতে পারবে এলজিইডি। নতুন সড়ক নির্মাণের বরাদ্দ নেই।


নবীনগরে পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যু, ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পুলিশ হেফাজতে আব্দুল্লাহ (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। নিহত আব্দুল্লাহ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর ছলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়াইল গ্রামে নগদ অর্থ চুরির অভিযোগ ওঠে। এর জের ধরে ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে সলিমগঞ্জ বাজার সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে মাস্ক পরা অবস্থায় আব্দুল্লাহকে আটক করে কয়েকজন স্থানীয়। তারা প্রথমে তাকে মারধর করে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় সলিমগঞ্জ অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়।

পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ফাঁড়িতে নেওয়ার পরও নির্যাতন অব্যাহত থাকে। তার হাতের নখ উপড়ে ফেলা হয় এবং কপালে আঘাত করা হয়। আরও জানা যায়, নবীনগর থানার ওসি ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে অবহিত না করেই চারদিন ফাঁড়িতে আটক রাখা হয় তাকে। এ সময়ে অন্য আসামিদের জেলা হাজতে পাঠানো হলেও আব্দুল্লাহকে গোপনে ফাঁড়িতেই আটকে রাখা হয়।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে সলিমগঞ্জ অলিউর রহমান জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। তিনদিন চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আব্দুল্লাহ মারা যান।

এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই সাকিল মিয়া বাদী হয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর নবীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মহিউদ্দিনসহ চারজনকে নামীয় আসামি এবং আরও ২০–২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে আব্দুল্লাহকে নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেন।

মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ জনতা সোমবার সকালে সলিমগঞ্জ ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কায় প্রশাসন ফাঁড়িটি বন্ধ করে দেয় এবং পরে সেনা মোতায়েন করা হয়।

এদিকে ঘটনার পর পুলিশ সুপার মো. এহতেশামুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, গতকাল সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর)এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মহিউদ্দিনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।


পদ্মার বিলুপ্ত এক ঢাই অর্ধলক্ষ টাকায় বিক্রি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মইনুল হক মৃধা, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে বিলুপ্ত প্রজাতির সাড়ে ১৪ কেজি ওজনের একটি ঢাই মাছ।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে দৌলতদিয়া মৎস্য আড়তে উন্মুক্ত নিলামে উঠলে মাছটি দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরিঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী মো. চান্দু মোল্লা কিনে নেন। এসময় মাছটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করে।

তিনি জানান, প্রতিদিনের মতো জাফরগঞ্জরের জেলে সুনাই হালদার মধ্যরাতে তার ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও তার সহযোগীদের নিয়ে পদ্মা নদীর উজানে মাছ ধরতে যায়। ভোররাতে জাল তুলতেই দেখতে পায় বড় একটি ঢাই মাছ ধরা পড়েছে। পরে সাড়ে ১৪ কেজি ওজনের ঢাই মাছটি সকালে দৌলতদিয়া আনো খাঁর মৎস্য আড়তে আনলে উন্মুক্ত নিলাম উঠলে চান্দু মোল্লা প্রতি কেজি ৪১০০'শ টাকা কেজি দরে কিনে নেন নিয়ে ফেরিঘাটে তার আড়তঘরে নিয়ে আসেন।

তিনি আরও বলেন, মাছটি সর্বমোট আমি ৫৯ হাজার ৪৫০ টাকায় কিনে নেই। মাছটি বিক্রয়ের জন্য আমি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করছি। আজ মাছটি কিনতে পেরে আমার সবচেয়ে ভালো লাগছে। মাছটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা লাভে বিক্রি করে দিবো।

দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের স্থানীয়া মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, পদ্মার এ ধরনের বড় মাছ নিলামে উঠলে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে যায়। দাম যতোই বেশি হোক, মাছটি কেনার চেস্টা করে সবাই। তাছাড়া ঢাই মাছ অনেক সুস্বাদু।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা বলেন, ঢাই মাছ এখন খুবই কম দেখা যায়, তাছাড়া এটি বিলুপ্তির পথে। মাছগুলো খেতেও অনেক সুস্বাদু। পদ্মার এ ধরনের মাছ আকারে বড় হয়ে থাকে। এই মাছের দামও তুলনামূলক বেশি। এ ধরনের মাছ কিনতে বড় বড় ব্যবসায়ী, প্রবাসীদের চাহিদা থাকে।


১ অক্টোবর থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে কেওক্রাডং পর্বত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র কেওক্রাডং পর্বত আগামী ১ অক্টোবর ২০২৫ থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে। গতকাল বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, জেলা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সমন্বয় সংক্রান্ত কোর কমিটির ২১ সেপ্টেম্বরের সভার সিদ্ধান্ত, রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের চিঠি এবং বান্দরবান রিজিয়নের সেনানিবাস থেকে প্রেরিত চিঠির আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় রুমা উপজেলার কেওক্রাডংসহ যেসব পর্যটন কেন্দ্র উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে, শুধুমাত্র সেসব জায়গায় পর্যটকদের ভ্রমণের অনুমতি থাকবে। এর বাইরে অন্যান্য স্থানে পর্যটকদের যাতায়াত নিষিদ্ধ।

গণবিজ্ঞপ্তিতে পর্যটকদের জন্য নিম্নলিখিত শর্তসমূহ আরোপ করা হয়, ক. সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় রুমা উপজেলার যে সকল পর্যটন কেন্দ্র উন্মুক্ত করা হয়েছে সেসব পর্যটন কেন্দ্র ব্যতীত উপজেলার অন্য জায়গায় পর্যটকদের গমনাগমন নিষিদ্ধ থাকবে। খ. জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিবন্ধিত ট্যুর গাইড ব্যতীত ভ্রমণ করা যাবে না। গ. পর্যটন কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট চেকপোস্ট ও পর্যটন তথ্য সেবা কেন্দ্রে চাহিত তথ্য অবশ্যই সরবরাহ করতে হবে। ঘ. পর্যটক কর্তৃক উপর্যুক্ত নির্দেশনাসমূহ অমান্য করা হলে তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অথবা নিকটবর্তী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করতে হবে। ঙ. পাহাড়ি রাস্তায় চলাচলের অনুপযোগী ও ফিটনেসবিহীন সকল যানবাহন উল্লিখিত পর্যটন কেন্দ্রসমূহে চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। পর্যটকবাহী সকল যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রশাসন বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। চ. অযাচিত যেকোনো ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট পর্যটন সংস্থার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং পর্যটন শিল্পের উপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।


চুরি ঠেকাতে দরজায় বিদ্যুৎ সংযোগ, তাতেই প্রাণ গেল মা ও মেয়ের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের সিকদার হাট গ্রামে ঘর থেকে মা ও মেয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে এ ঘটনা জানা যায়। নিহতরা হলেন ওই গ্রামের জগদীশ রায়ের স্ত্রী সুমনা রানী (৪২) ও তাঁর বাক্‌প্রতিবন্ধী ও মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে শাপলা রানী (১৮)।

স্থানীয়রা জানান, সুমনা রানী ঝাড়ফুঁক ও কবিরাজি চিকিৎসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁর স্বামী কয়েক বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস শুরু করেন। সোমবার সকালে একটি এনজিওর কর্মী ঋণের টাকা নিতে তাঁর বাড়ি যান। তখন তাঁকে না পেয়ে ফিরে আসেন। সন্ধ্যায় আবার গেলে ঘরের ভেতর থেকে কোনো শব্দ না পেয়ে উঁকি দেন। তখনই তীব্র দুর্গন্ধ পেয়ে এলাকাবাসীকে খবর দেন তিনি। পরে ইউপি সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছান।

ইউপি সদস্য হোসেন আলী বলেন, ‘ঘরে ঢুকতে পারছিলাম না। দরজা বন্ধ ছিল। পুলিশ এসে পেছনের টিন কেটে ভেতরে উঁকি দিলে মা-মেয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।’

পুলিশ ও এলাকাবাসীর ধারণা, সুমনা রানী বাড়ি রক্ষার জন্য দরজায় বিদ্যুতের তার জড়িয়ে রাখতেন। এতে চুরি ঠেকানো ও মেয়েকে নিরাপদে রাখাই ছিল উদ্দেশ্য। তবে রাতে ঘুমানোর আগে সুইচ বন্ধ করতে ভুলে যাওয়ায় মা-মেয়ের মৃত্যু ঘটে। পরে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন, দরজার লোহার নেটে তখনো বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছিল।

এ বিষয়ে ভূল্লী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, ‘ঘরের দরজার নেটে বিদ্যুতের সংযোগ ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, বিদ্যুতায়িত হয়ে দুই-তিন দিন আগে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।’ বাড়িটা অনেকটাই ভুতুড়ে বাড়ির মত পরিত্যক্ত দেখা যায়।

এদিকে নিহতের ঘরে থাকা তিনটি ছাগলও অনাহারে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।


ফটিকছড়ি - মীরসরাই সড়কে চলাচলে ভোগান্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

পাহাড় ধসের মাটির প্রতিবন্ধকতায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ফটিকছড়ির নারায়ণহাট - মীরসরাই সড়ক।

প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে শতশত যানবাহন যাতায়াত করে । বিশেষ করে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজি ও মৎস্য পরিবহণে ব্যাপক অবদান রেখে থাকে সড়কটি।

বর্তমানে সড়কের এমন বেহাল দশার কারনে যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি যেমন বেড়েছে তেমনিভাবে পণ্য পরিবহনেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যানবাহন চালকদের।
২৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের সড়কটি ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়নহাট বাজার থেকে পশ্চিম দিকে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে মীরসরাই সদরে গিয়ে যুক্ত হয়েছে।

এর মধ্যে সড়কটির একাধিক স্থানে রয়েছে গভীর খাদ। খাদগুলোর প্রায় প্রতিটি স্থানে রাস্তা ধসে গিয়ে চলাচলের পথ সংকোচিত হয়ে পড়েছে।

এদিকে,সড়কটির সবকটি বিপদজনক স্থানে সাবধানতা অবলম্বনে ব্যক্তি উদ্যোগে লাল কাপড় টানিয়ে দিতে দেখা গেলেও সড়ক বিভাগের কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

তবে ধসে পড়া স্থানগুলোতে গাড়ি থেকে নেমে যাত্রী সাধারণ পারাপার হলেও পন্য বোঝাই গাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে চালকদের।

এ সময় নারায়নহাট থেকে মীরসরাইগামী পিকআপ চালক জয়নাল আবেদীন বলেন, সড়কটি এমনিতেই সরু। এর মধ্যে সড়কের উপর পাহাড় ভেঙ্গে পড়েছে। কয়েকটি স্থানে রাস্তা ধসে যাওয়ায় ছোট হয়ে গেছে চলাচলের পথ।তারপরেও দূরত্ব কম হওয়ায় ভয় নিয়ে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছি।

একই রকম অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে স্থানীয় লেবু ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন বলেন, দুই দিন আগে এ সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।

এনজিও কর্মকর্তা ইকবাল কবির বলেন বিকল্প রাস্তা না থাকায় প্রতিদিন এ সড়ক ব্যবহার করে অফিসে যেতে হয়। ওই সময়টা বেশ ঝুঁকির মধ্যে থাকি।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ চট্টগ্রাম অফিসের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারহান জানান, অতি বৃষ্টির কারণে এ সড়কের কয়েকটি অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় এনে ১০ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।


জয়পুরহাটে চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ শিক্ষার্থীদের 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট 

জয়পুরহাটের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে প্রতিষ্ঠানটির আবাসিক শিক্ষার্থীদের ২২ জনকে বেত্রাঘাত করার পর সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হয় বলে জানিয়েছেন জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশেদুল ইসলাম।

জয়পুরহাট জেলা শহরের প্রফেসরপাড়া এলাকায় নর্থ বেঙ্গল মডেল স্কুল অ্যান্ড ক্যাডেট একাডেমি নামের ওই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন ধরে আবাসিক ও অনাবাসিক ব্যাচে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হচ্ছে। পাশ্ববর্তী কয়েকটি জেলার অনেক শিক্ষার্থীও প্রতিষ্ঠানটিতে লেখাপড়া করতে আসে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক আশিকুর রহমান, এমদাদ হোসেন, আবুল বাশার ও ওমর ফারুক শিক্ষার্থীদের অমানবিক মারধর করে আসছিলেন।

এর মধ্যে গত শুক্রবার রাতে গান গাওয়া ও টেলিভিশন দেখার সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র আবাসিক শিক্ষার্থীদের ২২ জনকে বেত্রাঘাত করেন তারা। পরে রাতেই এক শিক্ষার্থী পালিয়ে বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়।

ওই অভিভাবক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে অভিযোগ জানান । তখন অন্য শিক্ষার্থীরাও তাদের উপর দীর্ঘদিন ধরে চলা অমানবিক ও ধারাবাহিক নির্যাতনের বিষয়টি তাদের পরিবারকে জানায়।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রেজাউন জান্নাত বলেন, সকালে শিক্ষক আসতে দেরি করায় আমি গান গাইছিলাম। হঠাৎ এমদাদ স্যার এসে আমাকে বেদম মারধর করেন।

একই শ্রেণির শিক্ষার্থী আনাম হাসান বলেন, একবার স্যার ক্লাসে ঢুকে ‘হু আর ইউ’ বলেই তাদের মারতে শুরু করেন। কেন মারা হলো তাও তারা জানেন না।

শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, এক বন্ধুর সঙ্গে কথাকাটাকাটির ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদেরকেও পেটানো হয়েছে।

শিক্ষার্থী সোহান ফারদিন অভিযোগ করে বলেন, আমি বেতন কিছুটা কম দেই। এজন্য স্যার আমাকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মারধর করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এসব ব্যাপারে পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের কাছে অভিযোগ দিলেও তিনি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি প্রধান শিক্ষক।

অভিভাবকরা বলেন, তাদের বাচ্চাদের শিক্ষকরা শাসন করতেই পারেন কিন্তু ধারাবাহিক নির্যাতন মেনে নেওয়ার মত না। তারা খবর পেয়ে দ্রুত এসে দেখেন তাদের বাচ্চাদের শাসন নয়, হিংস্রতার সঙ্গে মারধর করা হয়েছে। প্রায়ই এভাবে নির্যাতন চলে। আমরা শিক্ষার্থী নির্যাতনের সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।

এদিকে অভিযোগ ওঠা শিক্ষকরা পালিয়ে গেলেও অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ গিয়ে পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে থানায় নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা দিয়ে তিনি বাসায় ফিরে যান বলে জানান জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তামবিরুল ইসলাম।

নর্থ বেঙ্গল মডেল স্কুল অ্যান্ড ক্যাডেট একাডেমির পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশেদুল ইসলাম বলেন, আঘাতকারীদের ঘটনাস্থলে গিয়ে না পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যায়নি। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান জড়িত শিক্ষকদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিবেন মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এছাড়া একটা তদন্ত কমিটিও গঠন করে দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে কমিটির সুপারিশে নিয়মিত মামলা করা যাবে।


দুষ্কৃতিকারী পূজার বিরাজমান পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করলে তাকে প্রতিহত করা হবে: পুলিশ সুপার নরসিংদী

বক্তব্য রাখছেন পুলিশ সুপার। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম বলেছেন, দুর্গাপূজায় কোনো দুষ্কৃতিকারী পূজার পরিবেশ বিরাজমান পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করলে তাকে যেকোনো মূল্যের বিনিময়ে প্রতিহত করা হবে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা নরসিংদী। উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের লক্ষ্যে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এবারের পূজায় কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই।

তিনি আরও বলেন, এ বছর নরসিংদী জেলায় মোট ৩৫১টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এসব মণ্ডপে দিনরাত পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত থাকবে। সিসিক্যামেরার মাধ্যমে মণ্ডপ ও আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূর্ববর্তী যেকোনো সময়ের তুলনায় এ বছর অধিকতর সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে নরসিংদীতে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি গত রোববার রাতে নরসিংদী শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কলিমুল্লাহ, বিপিএম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন, নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক দীপক কুমার বর্মন প্রিন্স, সদস্য সচিব মিঠু রঞ্জন ধর, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজল সাহা, কৃষ্ণকান্ত সাহা, আসিস চক্রবর্তী প্রমুখ।

এ সময় নরসিংদী শহরেরর মধ্যকান্দা পাড়ার বাগবিতান ক্লাব, অগ্রবাণী এবং সেবা সংঘ দুর্গাবাড়ির পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন।


দিনাজপুরে ৯৩৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুর জেলায় ১ হাজার ৮৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯৩৮টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলার পাশাপাশি মানসম্মত শিক্ষাদানও ব্যাহত হচ্ছে। সহকারি শিক্ষকরা এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ক্লাসে পাঠদানে মনোযোগ হারাচ্ছেন।

দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৩টি উপজেলায় ১ হাজার ৮৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৯৩৮টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সদর উপজেলায় ১৮৬টির মধ্যে ৫৪টি, কাহারোল উপজেলার ১২০টির মধ্যে ৭১টি, খানাসামা উপজেলায় ১৪৩টির মধ্যে ৬৭টি, ঘোড়াঘাট উপজেলায় ৬৭টির মধ্যে ৪১টি, চিরিরবন্দর উপজেলায় ১৯৮টির মধ্যে ১১৫টি, নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১৪৯টির মধ্যে ৭৫টি, পার্বতীপুর উপজেলায় ২০৬টির মধ্যে ১০৫টি, ফুলবাড়ী উপজেলায় ১০৯টির মধ্যে ৬৫টি, বিরল উপজেলায় ১৬৭টির মধ্যে ৮০টি, বিরামপুর উপজেলায় ১১৬টির মধ্যে ৬৮টি, বীরগঞ্জ উপজেলার ২৩০টির মধ্যে ১১৮টি, বোচাগঞ্জ উপজেলায় ১৩২টির মধ্যে ৫৯টি ও হাকিমপুর উপজেলায় ৪৬টির মধ্যে ২০টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালা অনুযায়ী ৩৫ শতাংশ প্রধান শিক্ষক সরাসরি নিয়োগ হয় ও ৬৫ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে হয়। বর্তমানে সরাসরি নিয়োগ হওয়া প্রধান শিক্ষকের মধ্যে অনেকেই অবসরে চলে গেছেন। অপরদিকে মামলার কারণে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় থাকায় ২০০৯ সাল থেকে পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণ করা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন থেকে পদোন্নতি বন্ধ থাকায় শিক্ষকরাও পাঠদান কার্যক্রমে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। আবার ৩৫ শতাংশ সরাসরি নিয়োগ পক্রিয়াতে রয়েছে গাফিলতি।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি দিনাজপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মো. মতিয়ার রহমান জানান, যারা ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করছেন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের পদোন্নতি না দিয়ে নতুনদের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। আইনি জটিলতার কারণে চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান ব্যাহত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সদিচ্ছাই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এরই মধ্যে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় সহকারী শিক্ষকরা হতাশ হয়েছেন। তার মতে অবিলম্বে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে শতভাগ পদোন্নতি দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি দিনাজপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. গোলাম ফারুক জানান, চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের কথা অন্য শিক্ষকরা মানতে চান না। কারণ সবাই একই পদমর্যাদার সহকারী শিক্ষক হিসেবে গণ্য। এতে করে পাঠদান ব্যাহত হয় ও প্রশাসনিক কাজেও জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যার সমাধানে দ্রুত প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা জরুরি।

দিনাজপুর শহরের পুলহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন জানান, মামলাজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নতুনভাবে পদোন্নতিও বন্ধ। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার মান চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। তাদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে।

সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি এটিএম তোফায়েল হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। আর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা কেউই মানতে চান না। উভয়ই একই পদে হওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া জরুরি।

এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিমা আক্তার বলে, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে আমি কোনো দিন হেড স্যার দেখিনি। হেড স্যার না থাকায় আমাদের সমস্যা হয়। আমাদের বিদ্যালয়ে একজন হেড স্যার থাকলে আমাদের পড়ালেখা আরও ভালো হবে।’

দিনাজপুর সদরের স্টাফ কোয়ার্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রের অভিভাবক সাবিনা আলী হোসেন বলেন, এই স্কুলের ৫টি পদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এই বিদ্যালয়ে মাত্র ৪ জন শিক্ষকের পক্ষে প্রতিটি ক্লাস পরিচালনা করা কষ্টকর। এছাড়া এখানে মাত্র ৩টি শ্রেণিকক্ষ। বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান উন্নয়নের জন্য দ্রুত শিক্ষক-স্বল্পতা দূর করা দরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুজ্জামান জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্রধান শিক্ষকের পদে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মামলা নিষ্পত্তি হলে পদোন্নতির মাধ্যমে এসব শূন্যপদ পূরণ করা যাবে।


পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত পরিবারের মাঝে ৬৮ লাখ টাকার আর্থিক অনুদান প্রদান

পাবনায় আর্থিক অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা প্রতিনিধি

পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে পাবনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ১৬টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে মোট ৬৮ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে তাবাসসুম, বিআরটিএ পাবনা সার্কেলের সহকারী পরিচালক আলতাফ হোসেন, মোটরযান পরিদর্শক এস এম ফরিদুর রহিমসহ জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩ জনের পরিবারের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা এবং আহত ৩ জনের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান হিসেবে প্রদান করা হয়। এই অনুদান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি তাদের মানসিক শক্তি ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপস্থিত কর্মকর্তারা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা একটি জাতীয় সমস্যা। এ ধরনের দুর্ঘটনা কমাতে সকলের সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রয়োজন। তবে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এই আর্থিক সহায়তা তাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।’

বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক আলতাফ হোসেন জানান, বিআরটিএ ট্রাস্টি বোর্ড নিয়মিতভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান করে আসছে। তিনি সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল চালক ও পথচারীদের সতর্কতার সাথে চলাচলের আহ্বান জানান।

অনুদান গ্রহণকারী পরিবারগুলো এই সহায়তার জন্য সরকার ও বিআরটিএ’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা এই অর্থ তাদের জীবনযাত্রা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যয় করবেন বলে জানান। বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক আরও বলেন আমরা সড়কের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। ফলে আমরা যানবাহন তথা চলাচলকারীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি ও অবৈধ যানবাহনের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। আশা করি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা নিরাপদ সড়কের পাশাপাশি দুর্ঘটনা রোধ করতে পারব বলে মনে করি।


কিশোরগঞ্জে পূজার চালে সিন্ডিকেটের থাবা

স্থানীয় সরকারি খাদ্য গুদাম, কটিয়াদী
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

এবারের দুর্গাপূজায় কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পূজামণ্ডপগুলোতে মিলেনি সরকারি বরাদ্দের চাল, মিলেছে চাল বিক্রির অর্ধেক টাকা। আর বাকি টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে গেছে সিন্ডিকেট। এমন অভিযোগ প্রায় প্রতিটি পূজামণ্ডপ থেকেই পাওয়া গেছে।

১৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার প্রতিটি পূজামণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয় প্রশাসন। বাজারমূল্য অনুযায়ী বরাদ্দের ৫০০ কেজি চাল থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু সিন্ডিকেটের থাবায় তারা পেয়েছেন মাত্র ১৫ হাজার টাকা। এতে করে ৪২টি পূজামণ্ডপ থেকে সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রশাসন ১৪ সেপ্টেম্বর চাল বরাদ্দ দিলেও খাদ্য কর্মকর্তারা কালোবাজারিদের সঙ্গে মিলে ইচ্ছাকৃতভাবে চাল বিতরণে বিলম্ব করেছেন। পরে তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন মণ্ডপের সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদককে খাদ্যগুদামে ডেকে এনে ফাঁকা রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর রেখে ডিও প্রতি ১৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন। এ কাজে খাদ্য কর্মকর্তা ও কালোবাজারিদের হয়ে কাজ করেছেন পূজা উদযাপন কমিটির বেশ কয়েকজন ব্যক্তি।

বর্মনপাড়া পূজামণ্ডপের সভাপতি শীতল চন্দ্র বর্মণ বলেন, বরাদ্দের ডিও নিয়ে খাদ্য গুদামে যাওয়ার পরে কর্মকর্তা বলেন স্বাক্ষর করে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে যান। এ সময় উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিমাই বাবুও তাই বললেন। তখন টাকা নেওয়া ছাড়া কোন উপায় ছিল না। বরাদ্দের চালগুলো তাকে দেখার সুযোগও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আনন্দময়ী যুব সংঘের সভাপতি উষা রঞ্জন সরকার বলেন, পূজার ব্যস্ততার মাঝেই বরাদ্দ আসে। এমন সময় চাল বুঝে নেওয়া কঠিন, তাই বাধ্য হয়েই বিক্রি করে দেন বলে জানান তিনি।

ফুটন্ত কলি যুব সংঘের সভাপতি লিটন রবি দাস বলেন, ‘ইউএনও সাহেব মিটিংয়ে চাল বরাদ্দের কথা জানান। পরে গুদামে গিয়ে দেখি কিছু লোক ১৫ হাজার টাকা ধরে সবার ডিও কিনে নিচ্ছে। পাশের জেলায় একই চাল ২২-২৫ হাজারে বিক্রি হলেও, আমরা ১৫ হাজারেই দিতে বাধ্য হই।’

কটিয়াদী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রতিটি পূজামণ্ডপে আগত ভক্তদের আহার্য (খাবার) বাবৎ বিতরণের জন্য ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পূজামণ্ডপের সভাপতি/সম্পাদক এসে বরাদ্দকৃত চালের ডিও সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। এরপর বাকি কাজ খাদ্য বিভাগের।

খাদ্যগুদামের ভিতরে চালের পরিবর্তে টাকা লেনদেনের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কনক কান্তি দেবনাথ।

কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি পূজামণ্ডপে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চালের পরিবর্তে টাকা দেওয়ার কোন সুযোগ নেই বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।

উল্লেখ্য, জেলায় ৩৯৪টি পূজামণ্ডপে এবার ১৯৭ মেট্রিক চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। এরমধ্যে কটিয়াদী উপজেলার ৪২টি পূজামণ্ডপে বরাদ্দ সাড়ে ২১ মেট্রিক টন চাল।

পূজার পবিত্রতায় সিন্ডিকেটের এই থাবা রোধে প্রশাসনের আরও কঠোর ভূমিকা কামনা করছেন এলাকাবাসী।


মাগুরায় ভূমিদস্যু বিপ্লবের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাগুরা প্রতিনিধি

মাগুরায় ভূমিদস্যু বিপ্লবের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভায়না চোপদার পাড়া এলাকাবাসী।

সোমবার দুপুরে গোরস্থান রোডে ভায়না চোপদারপাড়ার এলাকাবাসী মানববন্ধনে অংশ নেয়। মানববন্ধনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ বক্তব্য রাখেন হাজি নওয়াবুল ইসলাম, শাওন চোপদার ও হাসিনা বেগম। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে কিছু দুষ্কৃতির সহযোগিতায় ভূমিদস্যু বিপ্লব এলাকায় বিভিন্ন সময় ত্রাসের সৃষ্টি করে। বিপ্লব ভুয়া জমির কাগজপত্র তৈরি করে চোপদার পাড়ার বিভিন্ন মানুষের জমি দখল করে আসছে।

ভুক্তভোগী হাজি নওয়াবুল ইসলাম বলেন, ভূমিদস্যু বিপ্লব ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে আমার ২৭ শতক জমি দখল করেছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভূমিদস্যু বিপ্লব বিভিন্ন সময় আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে। আমার পরিবার নিয়ে আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। দুদিন আগে রাতে আমার বাড়িতে ভূমিধসে বিপ্লব ইট মেরে হামলা চালিয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে তার সঠিক বিচার চাই।

ভুক্তভোগী হাসিনা বেগম বলেন, বিপ্লব আমার বড় ভাসুরের ছেলে। সে আমার কাছ থেকে দুই শতক জমি জোর জবরদস্তি করে লিখে নিয়েছে। বিভিন্ন সময় এলাকার মানুষের উপর করছে নানা ধরনের অত্যাচার ও নির্যাতন। আমি এ ভূমিদস্যু বিপ্লবের বিচার চাই।


banner close