ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে ভোট গণনার কাজ।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
১৫৬টি উপজেলায় ১৩ হাজার ১৫৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০ হাজার কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম এ তথ্য জানান।
রাজশাহী, রাজবাড়ী, লক্ষ্মীপুর, লালমনিরহাট, ফরিদপুর, কুমিল্লা, পটুয়াখালী, নেত্রকোণা, জামালপুরসহ অধিকাংশ জেলার উপজেলায় সারা দিন ভোটার উপস্থিতি দেখা গেছে।
দুপুর ১টার দিকে সাংবাদিকদের দেওয়া এক বক্তব্যে ইসি সচিব বলেন, ‘সারা দেশে চলমান দ্বিতীয় ধাপের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। ভোটকেন্দ্রের বাইরে ছোটখাটো দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। যার সংখ্যা মাত্র ১৮টি। এ ছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে দুটি ঘটনা ঘটেছে। রাজবাড়ীতে একজন ভোটার ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো থাকা অবস্থায় সম্ভবত স্ট্রোক করেছেন। ৫৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। আর রাজশাহীতেও একজন আনসার ভিডিপি কর্মী স্ট্রোক করে মারা গেছেন। এসব মৃত্যুর সঙ্গে নির্বাচনী সহিংসতার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই।’
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৮ মে। আজ দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলার ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এরপর তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলায় আগামী ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫টি উপজেলায় আগামী ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১টি ও চতুর্থ ধাপে ২টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে, তৃতীয় ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে ১১১টি উপজেলা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় আগামী ২৯ মে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের চাহিদা মোতাবেক ১১১টি উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন উপলকক্ষে ভোটগ্রহণের দিন অর্থাৎ ২৯ মে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর, মথুরাপুর, পাহাড়পুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমির খাজনা ও অন্য সেবা ঘিরে চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ। সরকারি নিয়মে খাজনার হার অটোমেটিক সফটওয়্যার অনুযায়ী নির্ধারিত হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে সেটি কার্যকর নয় বলে দাবি করেছেন সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। বরং অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে খাজনার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে ওই অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রাসেল হোসেনের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অফিসটিতে একটি সক্রিয় দালালচক্রকে ব্যবহার করে নিয়মিত ঘুষ আদায় করা হয়। জমির খারিজ, নামজারি, রেকর্ড সংশোধন, খাজনা প্রদান, যে সেবাই প্রয়োজন হোক না কেন, টাকা ছাড়া নাকি মিলছে না কোনো কাজ। ফলে কর্মব্যস্ত কৃষক থেকে শুরু করে সাধারণ ভূমি মালিক, সবাইকে বারবার অফিসে ঘুরতে হচ্ছে, পোহাতে হচ্ছে অব্যাহত হয়রানি।
স্থানীয় সুজাউল হোসেন জানান, ‘তার শ্বশুরের তিনটি খতিয়ানের ১৫ শতাংশ জমির জন্য প্রথমে ৬৯ হাজার ৪১৪ টাকার খাজনা রশিদ দেন তহশিলদার রাসেল হোসেন। পরে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিলে অনলাইনে সেই একই খতিয়ানের জন্য ৫ হাজার ৮৪২ টাকার রশিদ পাই। সফটওয়্যারে খাজনা কমানো-বাড়ানোর সুযোগ নেই, অথচ ঘুষ দিলে টাকাই কমে যায়, এটা কীভাবে সম্ভব। প্রতিদিন আমাদের মতো কৃষকদের কাছ থেকে লাখ টাকার মতো অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তিনি তার বিচার চান।’
ফাতেমা বেগম বলেন, ‘চেক তুলতে গেলে প্রথমে ২৮ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। দিতে না পেরে ফিরে আসি। দ্বিতীয়বার গিয়ে ২০ হাজার টাকা দিলে ৫৭১ টাকা চেক তুলে দেয়। পরে বাকি টাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে বলে এটাই কমিয়ে দিয়েছি। আমার সেই টাকা আজও ফেরত পাইনি।’
গত ১৪ জুলাই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহেল রানা এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মিঠাপুর ভূমি অফিস পরিদর্শনে গেলে উপস্থিত মানুষের তোপের মুখে পড়েন অভিযুক্ত কর্মকর্তা রাসেল হোসেন। সেই তদন্তের প্রায় দুই মাস পার হলেও এখনো তার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।
তৌহিদ হোসেন নামের এক কৃষক জানান, ‘তিনটি খতিয়ানের জন্য প্রথমে ৪ লাখ টাকার রশিদ দেওয়া হয়। পরে এক মহুরীর মাধ্যমে ২ লাখ টাকা ঘুষ দিলে মাত্র ২ হাজার ২০০ টাকার রশিদ হাতে পান।’
আলেপ উদ্দিন, যিনি ৪০ বছর ধরে পাহাড়পুর বাজারে ব্যবসা করছেন। তিনি জানান, ‘দোকানের ডিসিয়ার কাটার জন্য ১ লাখ টাকার চুক্তি করে ৪০ হাজার টাকা নেওয়া হলেও ছয় মাসেও কাজ হয়নি। টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা করা হচ্ছে।’
এনামুল হক অভিযোগ করেন, ‘খারিজ করে দেওয়ার আশ্বাসে ৩ হাজার টাকা নিলেও চার মাসেও তার খারিজ হয়নি বরং আবেদনটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয় ফজলে মওলা বলেন, ‘খাজনার বিষয়ে মৌখিকভাবে এক রকম কথা বলে, পরে চেকে কম টাকার রশিদ দিলেও পুরো টাকা নেয়। প্রশাসন কঠোর নজরদারি দিলে এসব বন্ধ হবে।’
ঘুষের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সাংবাদিকরা রাসেল হোসেনের কার্যালয়ে গেলে তিনি উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত মোটরসাইকেলে করে অফিস ত্যাগ করেন। পরে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বদলগাছী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলাশ উদ্দিন বলেন, ‘রাসেল হোসেনের বিরুদ্ধে কিছু মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান ছনি বলেন, ‘অভিযোগগুলো নওগাঁ জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তদন্তাধীন। লিখিত অভিযোগ পেলে উপজেলা প্রশাসন থেকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব ) সোহেল রানা বলেন, ‘রাসেল হোসেনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশনা এলে সে অনুযায়ী পরবর্তী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
বুলবুল আহমেদ ক্যাশিয়ার পদে কর্মরত আছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তবে দুই-তিন বছর নয়, ১১ বছরের বেশি সময় একই কর্মস্থলে রয়েছেন তিনি। যদিও নিয়ম অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী তিন বছরের বেশি সময় একই কর্মস্থলে থাকতে পারেন না। সে দীর্ঘ ১১ বছরেও বেশি একই কর্মস্থলে কীভাবে রয়েছেন এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে জনসাধারণের মুখে। তিনি দীর্ঘদিন থাকায় হাসপাতালটি তার হাতে মুঠো করে নিয়েছেন। বর্তমানে তার হুকুমে হাসপাতালটি চলছে।
একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন ডালপালা মেলেছে। অনেকেই বলছেন, এখানে ক্যাশিয়ার পদে কী এত মধু যে, চেয়ার আঁকড়ে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুলবুল আহমেদ অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে প্রথম চাকরিতে যোগদান করেন কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০১৩ সালে ৯ জানুয়ারি। সেখান থেকে তিনি স্বৈরাচার সরকারের আমলে আওয়ামী নেতা ও কর্মকর্তার সঙ্গে আতাত করে ক্যাশিয়ার পদে প্রমোশন নিয়ে পঞ্চগড় জেলার দেবিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি হন ২০১৮ সালে ১৫ মে। তবে তিনি সেখানে মাত্র ১ বছর কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি ২০১৯ সালে ডিপোটিউশনের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করা অবস্থায় এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে ৪ মে ২০২১ সালে বদলি নিয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই রয়ে যান এবং এখনো রয়েছেন। এতে বোঝা যায় ২০১৩ সাল থেকে ২০২৫ পর্যন্ত মোট ১২ বছরের মধ্যে মাত্র ১ বছর দেবিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছিলেন। অবশিষ্ট ১১ বছরেও বেশি একই কর্মস্থলে রয়েছেন। যোগদানের পর থেকে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় বুলবুল আহমেদ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিজস্ব একটি বলয় গড়ে তুলেছেন। অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করে হাসপাতালের উন্নয়নকাজসহ যাবতীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছেন। স্থানীয় অদৃশ্য শক্তির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে গড়ে তুলেছেন ‘একচেটিয়া রাজত্ব’। তাকে ম্যানেজ করা ছাড়া ঠিকাদারির কাজ পাওয়া অসম্ভব। পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার কাছে জিম্মি। তাকে কেউ বদলি করানোর ক্ষমতা রাখে না উল্লেখ করে বুলবুল প্রায়ই দম্ভোক্তি করেন বলে জানিয়েছেন তার একাধিক সহকর্মী। আর এতে করে বুলবুলের অনিয়মগুলো দেখার পরও সহকর্মীরা চুপ থাকেন।
বুলবুলের বিস্তর অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরে কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি জানান, সরকারি কর্মচারী হয়েও বুলবুল আহমেদ স্বৈরাচার সরকারের সময় বিভিন্ন ঠিকাদারের লাইসেন্স ব্যবহার করে হাসপাতালে, রোগীদের খাদ্য ও পথ্যসামগ্রী সরবরাহের ব্যবসায় সম্পৃক্ত ছিলেন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এখনো কি সেই স্বৈরাচার সরকারের ক্ষমতা রয়েছে। কেন এখনো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাসহ অতি দ্রুত বদলি চাই।
ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে মোটা অঙ্কের উৎকোচ আদায়, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে কার্যাদেশের অনেক মালামাল সরবরাহ না নিয়ে অর্থ ভাগাভাগি, প্রতিদিনের নগদ টাকা হিসাব করে তা ব্যাংকে জমা দেওয়ার নিয়ম থাকলে তিনি তা না করে নিজের কাজের জন্য রেখে দেন। পরে তার সময়মতো জমা করেন। এছাড়া হাসপাতালের বাসা বরাদ্দের ফাইল নিজ হাতে রেখে যা ইচ্ছা তাই করছেন। তাকে ম্যানেজ করা না গেলে হাসপাতালের বাসা বরাদ্দ পাওয়াও মুশকিল। একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও হাসপাতালের এমটি ইপিআইয়ের জন্য নির্ধারিত মোটরসাইকেল নিজে ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে বুলবুলের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার বলেন, বুলবুল বিভিন্ন ঠিকাদারের লাইসেন্স ব্যবহার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এমএসআর, খাদ্য ও পথ্যসামগ্রী সরবরাহের ব্যবসায় সম্পৃক্ত। কিন্তু ২ বছর আগে টেন্ডারের মাধ্যমে আমি কাজ পেয়ে হাসপাতালে রোগীদের খাদ্য দিতাম। কিন্তু তার ঠিকাদার না পাওয়ায়, আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতেন। আমার কাছে টাকা চাইতেন। টাকা না দিলে আমাকে নানা ধরনের হয়রানি করেছিল। বাধ্য করে আমার কাছে মাস মাস টাকা নিয়েছে।
ক্যাশিয়ার বুলবুল আহমেদ বিষয়গুলো অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ভুয়া ও মিথ্যা আমাকে হয়রানি করার জন্য এসব অভিযোগ আপনার কাছে করেছে।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা ডা. নীল রতন দেব বলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর চেয়ে ভালো হয় হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিকট কেউ অভিযোগ করলে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারবে। এছাড়া ৩ বছরেরও বেশি একই কর্মস্থলে এই বিষয়টি সরকারের বিষয়। সরকার মনে করলে ৩ বছরের আগেও বদলি বা ৩ বছরের পরেও বদলি করতে পারে।
নীলফামারী জেলা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিষয়গুলো জেনে ও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ শিকদারের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানিয়েছেন।
শিগগিরই দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করবেন।
দুদক জানায়, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রশিদ শিকদার সম্পদ বিবরণীতে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩২ টাকা সম্পদের তথ্য দেখান। কিন্তু অনুসন্ধানে তার নামে পাওয়া যায় ৯ কোটি ৩৬ লাখ ৪২ হাজার ৯০৩ টাকা সম্পদ (স্ত্রীর সম্পদ বাদে)। এ ছাড়া তার পারিবারিক ব্যয় পাওয়া যায় ৮৯ লাখ ১৫ হাজার ১৩৪ টাকা। সব মিলিয়ে তার মোট ব্যয়সহ সম্পদ দাঁড়ায় ১০ কোটি ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩৭ টাকা। ওই সম্পদ অর্জনের বিপরীতে বৈধ আয় পাওয়া গেছে মাত্র ৩ কোটি ২৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩১ টাকা। ফলে রশিদ শিকদারের ৭ কোটি ২ লাখ ১৪ হাজার ৪০৬ টাকার কোন বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানায়।
জ্ঞাত আয়ের বাইরে এই বিপুল সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪–এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়।
এখনো সেভাবে জেঁকে বসেনি শীত। বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের অর্ধেক পার হলেও প্রকৃতিতে এখনো হালকা শীত। সাধারণ ডিসেম্বর মাসে এমন শীতই থাকে। তবে কয়েকদিন পরই শীতের তীব্রতা বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এবারের শীত মৌসুমে তাপমাত্রা নামতে পারে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মোট আটটি শৈত্যপ্রবাহ হবে, এর মধ্যে তীব্র হতে পারে তিনটি।
গতকাল সোমবার এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ মো. নূরুল করিম তিন মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে। এ সময় ৩ থেকে ৮টি মৃদু (৮-১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে এর মধ্যে ২-৩টি তীব্র শৈত্য প্রবাহে (৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রূপ নিতে পারে।
এ সময়ের মধ্যে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদ-নদী অববাহিকাসহ দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। তবে কখনো কখনো কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে দিন এবং রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে শীতের অনুভূতি বৃদ্ধি পেতে পারে।
এ ছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসের শেষার্ধে দেশের কোথাও কোথাও ১-২ দিন শিলাবৃষ্টিসহ বজ্রঝড় হতে পারে বলেও জানান আবহাওয়াবিদ নূরুল করিম।
এদিকে ডিসেম্বরেই দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বঙ্গোপসাগরে, যার মধ্যে একটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে।
সীতাকুণ্ডের সিকিউর সিটি শপিংয়ে দোকান বিক্রির উৎসব উপলক্ষে মাসব্যাপী মেলার উদ্বোধন হয়েছে। সোমবার সকালে সীতাকুণ্ডের প্রাণকেন্দ্রে অত্যাধুনিক শপিংমল সিকিউর সিটির মাসব্যাপী দোকান ভাড়া ও বিক্রয় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন হয়।
পৌরসভার সাবেক কমিশনার রায়হান উদ্দিনের সঞ্চালনায় এ সময় বেলুন ও ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন সিকিউর সিটি প্রপার্টি ম্যানেজম্যান্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোরশেদুল হাসান, এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, ভাইস-চেয়ারম্যান আখতার হোসাইন মামুন, পৌরসদর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নাছির উদ্দীন ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন রফিক, সীতাকুণ্ড কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওসমান গণি, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী, জামায়াতের সেক্রেটারি মো. তাহের, পৌর বিএনপির সেক্রেটারি সালে আহমেদ সলু, সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ ফোরকান আবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুলাহ আল কাইয়ুমসহ সিকিউর সিটি ব্যবসায়িক কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সিকিউর সিটি দোকানগুলোর বিক্রি বৃদ্ধি, স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা এবং ক্রেতাদের জন্য একটি নিরাপদ কেনাকাটার পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তারা আরও বলেন, মেলার মাধ্যমে একদিকে যেমন ক্রেতারা প্রয়োজনীয় পণ্য স্বল্পমূল্যে ক্রয় করতে পারবে, অন্যদিকে উদ্যোক্তারা নিজেদের পণ্য ও সেবা আরও ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন ।
মেলায় ইলেকট্রনিক্স, হোম সিকিউরিটি ডিভাইস, নজরদারি ক্যামেরা, গ্যাজেট, স্মার্ট লকসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জামের স্টল স্থান পেয়েছে। ছাড়, বিশেষ অফার, ডেমো প্রদর্শনী, এবং ক্রেতা-সেবা কাউন্টার মেলাকে আরও প্রাণবন্ত করেছে।
আয়োজক কমিটি জানায়, পুরো মাসজুড়ে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে থাকবে বিশেষ ছাড় ও লটারি ড্রসহ আকর্ষণীয় ইভেন্ট।
উদ্বোধনী দিনেই স্থানীয় ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে মেলা প্রাঙ্গণ জমে ওঠেছে।
সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অভিযোগ তুলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি)। সোমবার বেলা ১১টায় রাঙামাটির বনরূপায়ি স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি উত্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে, পিসিএনপি কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান বলেন, চুক্তির ২৮ বছর অতিক্রম হলেও পার্বত্য অঞ্চলে প্রত্যাশিত শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং চুক্তির বেশ কিছু ধারা বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক কাঠামো, সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক অধিকারের পরিপন্থি। তিনি অভিযোগ করেন, চুক্তির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিশেষ স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে, আঞ্চলিক পরিষদের অনির্বাচিত নেতৃত্ব টিকে আছে, ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈষম্যমূলক বিধান কার্যকর রয়েছে এবং ভোটার তালিকা তৈরিতে অতিরিক্ত শর্তারোপ করা হয়েছে- যা সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সংগঠনটির দাবি, চুক্তির বেশ কিছু ধারায় জমি ক্রয়-বিক্রয়ে স্থানীয় পরিষদের একক সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, নতুন আইন প্রণয়নে পরিষদের মতামত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং ভোটার হতে ‘স্থায়ী বাসিন্দা সনদ’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে- যা দেশব্যাপী প্রযোজ্য নাগরিক অধিকার কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া চুক্তিকে অভিযোগ করা হয় কেবল নির্দিষ্ট একটি জাতিগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় প্রণীত, যেখানে সমতল বা পার্বত্য এলাকার বাঙালি জনগোষ্ঠীর দাবি-অধিকার উপেক্ষিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পিসিএনপি নিম্নোক্ত চারদফা দাবি উত্থাপন করে: ১. সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিল করতে হবে।
২. পাহাড়ের সব নাগরিকের সমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা।
৩. সক্রিয় সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র উদ্ধার ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ।
৪. জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রত্যাহারকৃত নিরাপত্তা ক্যাম্পগুলো পুনঃস্থাপন।
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব শাব্বির আহমেদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র সহসভাপতি প্রফেসর আবু তাহের, রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. সোলায়মান, সহসভাপতি মাওলানা আবু বক্কর, খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি মো. লোকমান হোসাইন, স্থায়ী কমিটির সদস্য এম. রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজালাল, রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মদ ইব্রাহিম, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য হাবীব আজম, যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুর হোসেন প্রমুখ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল হয়েছে। সোমবার বাদ মাগরিব কালীগঞ্জ কেন্দ্রীয় পার্টি অফিসে পৌরশাখা কৃষক দলের উদ্যোগে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, কালীগঞ্জ পৌর কৃষক দলের সভাপতি মো. হায়দার আলী শেখ। সঞ্চালনায় ছিলেন পৌর বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ। এতে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান আলম, খায়রুল আহসান মিন্টু, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ইব্রাহীম প্রধান, পৌর বিএনপির সদস্য মনির উদ্দিন পাঠান মিঠু, খুরসেদ আলম কাজল, গাজীপুর জেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, পৌর কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অন্য নেতারা। এছাড়া কৃষক সমাজের প্রতিনিধি ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দোয়া মাহফিলে বক্তারা আবেগাপ্লুত হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবদান ও দেশের জন্য তার ত্যাগের কথা তুলে ধরেন। কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে ও অশ্রুসিক্ত নয়নে তারা বলেন- তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিই নন, তিনি একজন জনমাতা, গণতন্ত্রের প্রতীক এবং বঞ্চিত মানুষের আশার বাতিঘর। দেশবাসীর কাছে তার রোগমুক্তি কামনায় আন্তরিকভাবে দোয়ার আহ্বান জানান তারা।
পরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি, দীর্ঘায়ু এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারসহ সকল অসুস্থ নেতা-কর্মীর জন্য দোয়া করা হয়। দোয়া মাহফিল শেষে তবারক বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
শীত মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন গোমতীর দুপাড় ও চরাঞ্চলের হাজারও কৃষক। হাজার হাজার একর আবাদি জমিতে নানা প্রকার শীতকালীন সবজি, ভুট্টা, আখ ও ধানের চাষ হলেও সেচ ব্যবস্থার ওপর ভরসা করা কৃষকদের সামনে দেখা দিয়েছে সংকট।
গোমতীর দুই পাড়ে বিশাল চরজমি এখন অনেক জায়গায় শুকনো বালুচরে পরিণত হয়েছে। যে জমিতে শীতকালীন সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে, সে জমিই এখন আতঙ্কের কারণ। কৃষকরা বলছেন, প্রতি বছর শীতের দিকে পানি কমলেও এবার অস্বাভাবিকভাবে আগেই পানি নেমে যাচ্ছে। এমনভাবে পানি শুকাতে থাকলে অচিরেই সেচযন্ত্র বসানোই অসম্ভব হয়ে পড়বে। এতে বহু জমি অনাবাদি থেকে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চরাঞ্চলের জমিতে এ বছর ফলন ভালো হলেও নদীর পানির হঠাৎ সংকট যেন কৃষকদের দোরগোড়ায় নতুন দুর্ভাগ্যের বার্তা নিয়ে এসেছে। বিগত বছরগুলোতে এ সময় গোমতীতে টইটম্বুর পানি থাকলেও এখন নদীর বুকে দেখা দিচ্ছে খরা আর চরভূমির উত্থান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের উজানে বাঁধ ও স্লুইচগেট বন্ধ রাখা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, অনিয়মিত বৃষ্টি এবং নদীর প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। নাব্যতা কমে যাওয়ায় নদী দীর্ঘসময় পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
গোমতীনির্ভর সেচব্যবস্থার ওপর পুরো কুমিল্লা অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন টিকে আছে। পানি না থাকলে শাক-সবজির ফলন কমে যেতে পারে, ব্যাহত হতে পারে রবি মৌসুমের পুরো ফসল চক্র। প্রয়োজনে বিকল্প সেচের বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে- তবে এ সম্পর্কে স্থানীয় কৃষকরা চায় সরকারি দিকনির্দেশনা।
কৃষকদের সমস্যার কথা জানতে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আমতলী এলাকার কৃষক মো. শাহআলমের কাছে গেলে তিনি বলেন, দুইশত শতক জমিতে সবজি চাষ করেছি। এবার পানি আগেভাগেই অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। শুধু আমতলী চরেই কয়েক একর সবজি চাষ হয়। নদীতে পানি না থাকলে এসব জমিতে চাষ করা সম্ভব না। সরকারের এখনই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
বুড়িচং উপজেলার বাবুবাজার শিমাইশখাড়া গ্রামের কৃষক মফিজুল ইসলাম বলেন, চরে টমেটো আর ফুলকপি করছি। পানি না থাকলে এসব ফসল বাঁচানো যাবে না।
আদর্শ সদর উপজেলার সুবর্ণপুর এলাকার কৃষক আবু সাঈদ বলেন, গোমতীর পানি ছাড়া সবজি উৎপাদন অসম্ভব। নদীতে পানি রাখার ব্যবস্থা সরকার না করলে আমরা অনেক বিপদে পড়ে যাব। ভারতে বর্ষায় পানি ছাড়ে, শুকনো মৌসুমে আটকে রাখে- এটা কোনো নিয়ম হতে পারে না।
পাঁচথুবী ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, এবার নদীতে পানি অনেক কম। গোমতীর পানি ছাড়া শীতকালীন ফসল উৎপাদন কঠিন হয়ে যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, ৯৭ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে গোমতী নদী কুমিল্লার সাতটি উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মেঘনায় মিশেছে। শীতে গোমতীর পানি কমে যাওয়া স্বাভাবিক, তবে এবার পরিস্থিতি বেশি খারাপ। বিকল্প হিসেবে টিউবওয়েল আছে, তবে ভারতের সঙ্গে পানি নিশ্চয়তার বিষয়ে আলোচনা জরুরি।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, ভারতের ভেতরে ডাম্বুর বাঁধ বন্ধ করে দেওয়ায় পানি কমে গেছে। অনেকে নিজস্ব ব্যবস্থায় সেচ নিয়ে থাকেন; কৃষকদের বিকল্প পদ্ধতির বিষয়ে কৃষি অফিস পরামর্শ দেবে।
শীতের আগেই গোমতী নদীতে এমন পানি সংকট কুমিল্লার কৃষির ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর প্রশ্ন তৈরি করেছে। এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সেচ সংকটের কারণে ফসল উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা প্রকট আকার ধারণ করতে পারে- এমনটাই মনে করছেন পরিবেশ, কৃষি ও পানি বিশেষজ্ঞরা।
নওগাঁয় আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। তবে পোকার উপদ্রব ও নভেম্বরের বৃষ্টিতে মাটিতে ধান শুয়ে পড়ায় ফলন কম হচ্ছে। এছাড়া শ্রমিক সংকটে বাড়তি মজুরি ও ধানের দাম কম হওয়ায় উৎপাদন খচর ওঠা নিয়ে শঙ্কায় কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ১৪১ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছিল। যা থেকে ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭৩০ টন ধান উৎপাদনের আশা। তবে নভেম্বরের বৃষ্টিতে অন্তত ২ হাজার ৮৬১ হেক্টর আবাদ নষ্ট হয়। যা থেকে প্রায় ১০ হাজার টনের বেশি ধান উৎপাদন হতো।
চারিদিকে সোনালি রঙের নতুন আমন ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ। বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। অবারিত প্রান্তরে শস্যের দোলা হাসি ফোটায় কৃষকের মুখে। উত্তরের জেলায় নওগাঁর মাঠে মাঠে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। কাস্তে হাতে ধান কাটছে কৃষক। আর পেছনে শালিক পাখি ঝাঁক বেঁধে খুঁজছে আহার। নতুন ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের আনন্দের বদলে মলিন মুখ।
কৃষকরা জানান- গত বছরের তুলনায় এ বছর ধানের আবাদে সার-কীটনাশক ও শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিঘাতে ২-৩ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হয়েছে। ধানে মাজরা পোকার আক্রমণ ঠেকাতে বাড়তি কীটনাশক-স্প্রে করতে হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টিতে ধান মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিঘাতে ফলন কমেছে ৪-৫ মণ। এতে বিঘাতে খরচ পড়েছে অন্তত ১৫ হাজার টাকা।
সোমবার সকালে জেলার মহাদেবপু উপজেলার চকগৌরি সাপ্তাহিক হাটবার। সপ্তাহের ব্যবধানে এ হাটে মণে ৭০ টাকা পর্যন্ত কমেছে দাম। তবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মণে অন্তত ১০০ টাকা কমেছে। এদিন হাটে আমন ব্রি-৭৫ ধান ১ হাজার ৫০ টাকা মণ, স্বর্ণা-৫ ধান ১ হাজার ১৩০ টাকা থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকা, ব্রি-৪৯ ধান ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা এবং ব্রি-৯০ ধান ২ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়। তবে বোরো মৌসুমের পুরোনো ধান সুবর্ণলতা ১ হাজার ৪০০ টাকা এবং কাটারিভোগ ও জিরাশাইল ধান ১ হাজার ৬৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়।
হাটে ধান বিক্রি করতে আসা সদর উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের কৃষক আলামিন বলেন, ‘১৪ বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ ধানের আবাদ করা হয়। প্রতি বিঘায় গড় ফলন হয়েছে ২০ মণ। বিঘাতে খরচ পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। ২৩ মণ ধান ১ হাজার ১৪০ টাকা মণ দরে বিক্রি করা হয়েছে। এ দামে ধান বিক্রি করে বিঘায় ৬-৮ হাজার টাকা লাভ দিয়ে কোনো সুবিধা হবে না। অন্তত ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ হলে খরচ বাদে কিছুটা লাভ থাকবে।’
জেলার মহাদেবপুর উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের কৃষক ফেরদৌস আলম বলেন, ‘এ বছর ৩ বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ ধানের আবাদ করা হয়। শুরুতে আবাদ ভালো হয়েছিল। তবে নভেম্বরের বৃষ্টিতে ১০ কাঠা জমির ধান পুরোটা নষ্ট হয়ে যায়। এতে অন্তত ১২ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লোকসানে পড়তে হয়েছে।’
একই উপজেলার আখেড়া গ্রামের কৃষক প্রদীপ কুমার বলেন, ‘ধানে প্রচুর পোকার উপদ্রব হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৩-বার বাড়তি কীটনাশক-স্প্রে করতে হয়েছে। এতে বিঘায় ৫০০ টাকার কীটনাশক-স্প্রে করতে হয়েছে। ধানে পোকার উপদ্রব হওয়ায় ফলনের পরিমাণ কম হবে।’
মান্দা উপজেলার মৈনম গ্রামের কৃষক আফসার আলী বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ ধানের আবাদ করেছিলাম। বৃষ্টিতে পাকা ধান মাটিতে শুয়ে পড়ে। এদিকে শ্রমিক সংকট হওয়ায় মজুরিও বাড়তি। তাই নিজেই ধান কাটতে হয়েছে। ধান মাটিতে পড়ে যাওয়ায় কাটতে সময় বেশি লেগেছে এবং ফলন পেয়েছি ১৬ মণ। ধান খাড়া থাকলে ফলন আরও বেশি হতো।’
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হোমায়রা মণ্ডল বলেন, ‘বৃষ্টিতে ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও পোকার উপদ্রব কমেছে। এ বছর ৯ লাখ ৮৫ হাজার টনের বেশি ধান উৎপাদন হবে। ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রভাব পড়বে না।’
রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী এবং স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও জামাতাসহ পরিবারের ৫ সদস্যের অবৈধভাবে অর্জিত ৬৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৬৩ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছে রাজবাড়ীর বিশেষ জজ আদালত।
সোমবার দুপুরে রাজবাড়ী জজ আদালত প্রাঙ্গণে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদক পিপি বিজন কুমার বোস।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বিজন কুমার বোসের পক্ষে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজবাড়ীর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আনিসুর রহমান এ আদেশ দেন। এর আগে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ফরিদপুরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে কাজী ইরাদত আলীসহ তার পরিবারের সদস্যদের অনুসন্ধান শুরু করে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে কাজী ইরাদত আলী, স্ত্রী রাবেয়া পারভীন, পুত্র কাজী রাকিবুল ইসলাম শান্তনু, কন্যা কাজী সিরাজুম মনিরা ও জামাতা মো. নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ৬৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৬৩ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পায় দুদক। অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের মধ্যে রাজবাড়ী গোল্ডেশিয়া জুট মিল, পেট্রোল পাম্প, রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে।
দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তার প্রাথমিক অনুসন্ধানে কাজী ইরাদত আলী সহপরিবারের সদস্যদের নামে অবৈধ সম্পদ হস্তান্তর করে অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপনের উদ্দেশ্যে স্থানান্তর বা রূপান্তর বা হস্তান্তর করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন,২০১২-এর শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। আরও উল্লেখ করা হয়েছে দুদকের অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের নামে উপায়ে অর্জিত ব্যাংক হিসাবগুলো নগদায়ন করার চেষ্টা করছেন ও স্থাবর সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন মর্মে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, কাজী ইরাদত আলীর নিজ নামে ঢাকা ও রাজবাড়ীর ১০টি হিসাবে ১ কোটি ৬৫ লাখ ৮৭ হাজার ৮২২ টাকা, স্ত্রী রাবেয়া পারভীনের ৭টি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ২৮ লাখ ৪২ হাজার ৪৯৪ টাকা, পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক কাজী রাকিবুল ইসলাম শান্তনুর ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ৪৬ লাখ ৬৫ হাজার ২১৮ টাকা, পুত্রবধূ আফসানা নওমী তাকিনার ৮টি হিসাবে ১১ আখ ১১ হাজার ১১১ টাকা, কন্যা কাজী সিরাজুম মুনিরার ১১টি ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ৩ লাখ ৮১ হাজার ২১২ টাকা এবং জামাতা নুরুল ইসলামের ১০টি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ৯০ লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৫ টাকা গচ্ছিত রয়েছে।
এছাড়া কাজী ইরাদত আলীর পারিবারিক ডেভেলপার কোম্পানি মিডল্যান্ড লিমিটেডের নামে ৬টি ব্যাংকে ২ কোটি ৮ লাখ ৯১ হাজার ৬৭৫ টাকা, ব্যবসায়িক হিসাবে ১০ লাক ৩৭ হাজার ১৩৯ টাকা, পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন মেয়াদে ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, পরিবারের সদস্যদের নামে ২ কোটি ২০ লাখ ৭৮ হাজার টাকা মূল্যের ৭টি গাড়ি রয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানে কাজী ইরাদত আলী ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্টদের নামে স্থাবর সম্পদের মধ্যে ভূমি, দালান, ফিলিং স্টেশনসহ ৫২ কোটি ৩৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৫৭ টাকার সম্পদের উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন রাকাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওয়াহিদা বেগম। তার হাত ধরে পুরোনো কালিমা মুছে নতুন উদ্যোমে চলছে প্রকৃত প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে ঋণ বিতরণের কার্যক্রম। ইতোমধ্যে চলতি বছরের জুলাই থেকে গত ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ১,৬২৩ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ, সিএমএসএমই এবং অন্য খাতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এ খাতে আরও ৩,০০০ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ওয়াহিদা বেগম যোগদানের পর থেকে অসততা, দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ব্যাংকের কাজে গতি আনয়ন, প্রত্যেক কর্মকর্তাকে দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে তিন বছর এবং তদূর্ধ্ব সময়ে একই স্থানে কর্মরত কর্মকর্তাকে অন্য কর্মস্থলে বদলি করেছেন।
পুরোনো অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে সেই স্বার্থান্বেষী মহল রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওয়াহিদা বেগমের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের চালাচ্ছে। তার পূর্বের কর্মস্থল ও রাজনৈতিক ট্যাগ ব্যবহার করে একটি মহল তাকে হয়রানি করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করেছেন ব্যাংকের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। এ ঘটনায় রাকাবের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ও ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ওয়াহিদা বেগমের পূর্বের কর্মস্থল অগ্রণী ব্যাংক পিএলসিকে কেন্দ্র করে একটি মহল ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে’।
সূত্র জানায়, অগ্রণী ব্যাংকে তিনি দায়িত্বে না থাকার পরেও ব্যাংকের সূত্র ধরে পূর্বে তার নামে একটি মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় আদালত তাকে তিন মাসের সাজা প্রদান করলেও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষ বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের জন্য মামলার স্থগিতাদেশ দেন।
বর্তমানে মামলাটি শুনানির জন্য উচ্চ আদালতের আদেশের অপেক্ষায় রয়েছে। এ আবস্থায়, আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই একটি পক্ষ ভুল তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন পরিসরে অপপ্রচার চালাচ্ছে। রাকাবের একাধিক কর্মকর্তার দাবি, একটি স্বার্থান্বেষী মহল অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে এই নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে।
ব্যাংকের একাধিক ক্লিন ইমেজের কর্মকর্তা জানান, এমডি হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। তাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতেই এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
এদিকে রাকাব এমডি হিসেবে ওয়াহিদা বেগমের নিয়োগ চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ নভেম্বর উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের (বিআরপিডি) ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির সার্কুলার অনুযায়ী তার নিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। একইসঙ্গে তিন সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে, গত ২২ অক্টোবর রাকাবের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আব্দুল মালেক এমডির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থ সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
আব্দুল মালেকের অভিযোগের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানান, এমন অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। সরকার ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে সময় নষ্ট করে না।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রাকাবের এমডিকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে উল্লেখ করে যে ভাষায় অভিযোগ করা হয়েছে, তা সত্যিই দুঃখজনক। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পদোন্নতি পেয়ে রাকাবে যোগদানের পর তার বিরুদ্ধে কোনো আর্থিক কেলেঙ্কারি বা অনিয়মের অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।
অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের একজন ডিজিএম জানান, সেখানে উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে ওয়াহিদা বেগম অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদা বেগম বলেন, আমরা সর্বদা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। একটি পক্ষ আদালতে মামলা করেছে এবং আদালত একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। আমিও আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছি। বিশ্বাস করি, খুব শিগগিরই এর একটি সমাধান মিলবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ভৈরব প্রেসক্লাবের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হয়েছে।
আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিগত সরকার ১৭ বছর শাসনামলে আপসহীন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র করেছে তাকে রাজনীতি থেকে সরাতে। শুধু তাই নয় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে নিয়ে স্লো-পয়জন দিয়ে তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। স্লো- পয়জন শরীরে ঢুকে তার শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বেঁধেছে। আজ তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই তার সুস্থতার জন্য তিনি দেশবাসী সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন। আলোচনা সভা শেষে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হয়েছে।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন, প্রেসক্লাব সদস্য সচিব মো. সোহেলুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রেসক্লাব সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান আমিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মারুকী শাহীন, সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি সাইফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি মুজিবুর রহমান, যুবদল সভাপতি আল মামুন, ভৈরব চেম্বার অব কমার্স সভাপতি জাহিদুল হক জাবেদ, পৌর যুবদল সভাপতি হানিফ মাহমুদ, উপজলা শ্রমিক দল সভাপতি মো. আদিলুজ্জামান প্রমুখ।
বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির ২ দিনব্যাপী ৩৮তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন (এ্যানুয়াল সাইন্টিফিক কংগ্রেস) ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর ২০২৫ইং তারিখ সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিযুক্ত মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদ মর্যাদা) অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির জন্য দেশের চিকিৎসকদের প্রতি তাকিয়ে থাকেন। দেশের জনগণ ও রোগীদের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে সরকার সমগ্র স্বাস্থ্যবস্থাকে কল্যাণমুখী রূপান্তরে কাজ করছে। যার লক্ষ্য দেশের সকল মানুষ যেনো তার প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা পান। বর্তমান স্বাস্থ্যব্যবস্থা দেশের সকল জনগণ ও রোগীর ন্যায্যতা নিশ্চিত করছে না। তাই সেদিকে সরকার যেমন নজর দিয়েছে, চিকিৎসকদেরও এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনার দায় রয়েছে। কি করলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় রোগীদের চাহিদা পূরণ হবে সেটা তো আর সাধারণ মানুষ, রোগীরা করতে পারবেন না। নীতিনির্ধারকদের উপর প্রভাব ফেলাসহ এই বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে অবদান রাখতে পারবেন বিজ্ঞজনেরা, সম্মিলিতভাবে চিকিৎসকরা। একটি আইসিইউ প্রাপ্তির জন্য, রেডিওথেরাপি সেবা প্রাপ্তির জন্য, সঠিক চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির জন্য, প্রয়োজনীয় ওষুধের জন্য রোগীদের কত অপেক্ষা, কত হাহাকার সেটা চিকিৎসকদেরই অনুধাবন করতে হবে। সাধারণ রোগীদের জন্য, দরিদ্র মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণে কি কি করা যায় সে বিষয়ে আমাদের সকলেরই বিশেষ করে চিকিৎসকদের দায় রয়েছে। যা আমি একজন চিকিৎসক হিসেবে অনুধাবন করি। তিনি তার বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা যেনো বাণিজ্যের কাছে আত্মসমর্পণ না করে সেদিকেও দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি তার বক্তব্যে জুলাই আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় অবদান রাখার জন্য দেশের অর্থোপেডিক সার্জনবৃন্দ ও চক্ষু রোগ চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির মেম্বার সেক্রেটারি (সদস্য সচিব) ডা. এরফানুল সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটি কনফারেন্স ২০২৫-এ ফ্যাকাল্টি, সিনিয়র ও তরুণ সার্জনবৃন্দ, ১৪ জন বিদেশি বিশেষজ্ঞসহ মোট ১ হাজার ৫ শত ৭৫ জন অংশগ্রহণ করেছেন। সম্মেলনে ২০২টি বৈজ্ঞানিক পেপার উপস্থাপন করা হয়, ৩০টি উচ্চমানের বৈজ্ঞানিক সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনটি দেশের অর্থোপেডিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠেছে। গুরুত্বপূর্ণ এই কনফারেন্সের মূল লক্ষ্য হলো এমন একটি জ্ঞান বিনিময়ের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যেখানে উদ্ভাবন ও অভিজ্ঞতার মিলন ঘটবে, আন্তর্জাতিক অগ্রগতি বাংলাদেশের স্থানীয় প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সংযুক্ত হবে এবং যেখানে নতুন ধারণা বাস্তব চর্চায় রূপ নেবে। অস্থি-সংক্রান্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রতিনিয়ত অগ্রগতি হচ্ছে- ট্রমা কেয়ার, আর্থ্রোপ্লাস্টি, স্পাইন সার্জারি, অঙ্কোলজি, স্পোর্টস মেডিসিন, পেডিয়াট্রিক অর্থোপেডিকস এবং রিহ্যাবিলিটেশনের উন্নতি প্রতিদিনের চিকিৎসা পদ্ধতিকে বদলে দিচ্ছে। তাই বাংলাদেশকে এই বৈশ্বিক অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করতে হবে। সে ক্ষেত্রে এই সম্মেলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ডা. এরফানুল সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের অর্থোপেডিক সার্জনদের জন্য এই সম্মেলন অসাধারণ শিক্ষামূলক সুযোগ এনে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা, গবেষণা উপস্থাপন, আধুনিক সার্জিকাল কৌশল এবং আন্তঃক্রিয়ামূলক আলোচনার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা তাদের ক্লিনিক্যাল জ্ঞান, সার্জিকাল দক্ষতা এবং ডিসিশন মেকিং আরও উন্নত করতে পারবেন। একই সঙ্গে সহযোগিতা, পরামর্শ এবং দীর্ঘমেয়াদি একাডেমিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগও তৈরি হবে। একই সাথে এই সম্মেলনের প্রকৃত উপকারভোগী হবেন বাংলাদেশের রোগীরা। উন্নত সার্জিক্যাল পদ্ধতি, উন্নত পেরি-অপারেটিভ কেয়ার এবং চিকিৎসা পরবর্তী পুনর্বাসন সমস্যার গভীরতর বোঝাপড়া রোগীদের আরও নিরাপদ, কার্যকর এবং মানবিক সেবা নিশ্চিত করবে। রোগীর দ্রুত আরোগ্য, কম জটিলতা এবং উন্নত ফাংশনাল আউটকামই এই সম্মেলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য। তাই এই কনফারেন্স শুধু একটি একাডেমিক অনুষ্ঠান নয় বরং এটি উৎকর্ষের প্রতি একটি প্রতিশ্রুতি, অগ্রগতির উদযাপন এবং একটি সুস্থ বাংলাদেশের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
কনফারেন্সে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব মোঃ সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, ড্যাব এর মহাসচিব ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল। সভাপতিত্ব করেন নিটোর এর পরিচালক ও বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কেনান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. ওয়াকিল আহমেদ, ডা. এরফানুল সিদ্দিকী, ডা. শাহ মোহাম্মদ আমান উল্লাহ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডা. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিএমইউ এর প্রক্টর অর্থোপেডিশিয়ান ডা. শেখ ফরহাদ প্রমুখসহ দেড় হাজারেরও বেশি অর্থোপেডিক সার্জনবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কনফারেন্সে বিশেষ অতিথিগণ বলেন, বাংলাদেশে বিষয়ভিত্তিক যে কয়টি বিষয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে অগ্রগতি লাভ করেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো অর্থোপেডিক। দেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ও স্বাধীনতা পরবর্তী অনেক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিয়েছেন দেশের অর্থোপেডিক সার্জনবৃন্দ। বর্তমান সময়েও অর্থোপেডিক চিকিৎসকগণ রোগীদের সেবায় অসামান্য অবদান রেখে চলছেন। বর্তমান ও আগামী দিনে দেশের রোগীদের প্রয়োজনেই অর্থোপেডিক বিষয়ের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ নিশ্চিত করার মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।