ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। ভোট গণনা শেষে রাতে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। সারা দেশের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর থেকে জানা যায়-
ফরিদপুর
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরকান্দা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহসম্পাদক কাজী শাহ জামান বাবুল। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৭ হাজার ২০৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার পেয়েছেন ২৫ হাজার ২৩৭ ভোট।
অন্যদিকে সালথা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৪৫ ভোট তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মো. ওহিদুজ্জামান পেয়েছেন ৫ হাজার ৩৪২ ভোট।
নারায়ণগঞ্জ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ঘোড়া প্রতীকে তিনি পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ২৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহজালাল মিয়া পেয়েছেন ১৩ হাজার ১৩২ ভোট।
বিজয়ী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। তিনি কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. শাহজালাল মিয়া আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও আখাউড়ায় উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কসবা উপজেলায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই ছাইদুর রহমান ও আখাউড়ায় মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাাচিত হয়েছেন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, কসবা উপজেলায় ছায়েদুর রহমান স্বপন কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৮৬ হাজার ৬৯৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কুটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব রাশেদুল কাউসার ভূইয়া আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫৯ ভোট।
অন্যদিকে আখাউড়া উপজেলায় মনির হোসেন ঘোড়া প্রতীকে ২৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬৩ ভোট।
রাঙামাটি
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে রাঙামাটির রাজস্থলী, কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রাজস্থলী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবাচ মারমা আনারস প্রতীকে ৭ হাজার ৭৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. রিয়াজ উদ্দীন রানা দোয়াত কলম প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১৮ ভোট।
অন্যদিকে কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. নাছির উদ্দিন দোয়াত কলম প্রতীকে ৭ হাজার ৩৬২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৭৩ ভোট।
অপরদিকে বিলাইছড়ি উপজেলায় মোট ১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫টি হেলিসর্টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ফলাফল না আসায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো ফলাফল ঘোষণা করেননি। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সমর্থিত দোয়াত কলম প্রতীকের বিরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লালমনিরহাট
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দুই উপজেলায় মধ্যে আদিতমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ফারুক ইমরুল কায়েস ও কালীগঞ্জ উপজেলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ বিজয়ী হয়েছেন।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা লুৎফর কবির তাদেরকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
আদিতমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ফারুক ইমরুল কায়েস মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩ হাজার ১৩৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৯ হাজার ১৮টি ভোট
কালীগঞ্জ উপজেলায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ হাজার ৩০৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তার চাচা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৩৫০ ভোট।
পিরোজপুর
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে পিরোজপুর জেলার দুই উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার পিরোজপুরের নেছারাবাদ ও কাউখালী উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মোট ১২২টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
কাউখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. আবু সাঈদ মিঞা ও নেছারাবাদ উপজেলায় আব্দুল হক নির্বাচিত হয়েছেন। রাতে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ শফিকুল হক বেসরকারিভাবে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করেন।
নেছারাবাদ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আব্দুল হক আনারস প্রতীকে ৩৮ হাজার ৬১২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এস এম মুইদুল ইসলাম মোটরসাইল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫২০ ভোট।
অন্যদিকে কাউখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. আবু সাঈদ মিঞা ঘোড়া প্রতীকে ১১ হাজার ২৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার পল্টন কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ২৯৪ ভোট।
ঝালকাঠি
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঝালকাঠি সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি খান আরিফুর রহমান। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৯৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. সুলতান খান পেয়েছেন ২৫ হাজার ৯৭১ ভোট।
অন্যদিকে নলছিটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন খান সেলিম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৩ হাজার ৯৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র তছলিম উদ্দিন চৌধুরী আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৭৮৪ ভোট।
বাগেরহাট
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে বাগেরহাটে ফকিরহাট, মোল্লাহাট,ও চিতলমারী উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফকিরহাট উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন শেখ ওহিদুজ্জামান বাবু। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৬৫৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনরস প্রতীকের প্রার্থী বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন দাস পেয়েছেন ২৯ হাজার ৪৩৭ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৬২.৫০ শতাংশ।
চিতলমারী উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আলমগীর হোসেন সিদ্দিকী। দোয়াত কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৮৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অশোক কুমার বড়াল মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২২ হাজার ৭৬৩ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৪৫.৭৫ শতাংশ।
অন্যদিকে মোল্লাহাট উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহিনুর আলম ছানা। দোয়াত কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯০২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা শেখ নাসির উদ্দীন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৯৫৪ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৫৩.৭৭ শতাংশ। জেলায় গড় ভোট কাস্টিং হয়েছে ৫৪ শতাংশ।
যশোর
দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে যশোরের ঝিকরগাছা, শার্শা ও চৌগাছা উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন উপজেলাগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
চৌগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম হাবিবুর রহমান। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৫৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান পেয়েছেন ২৮ হাজার ৯৮০ ভোট।
নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুম্মিতা সাহা রাত সাড়ে ৯টায় এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
ঝিকরগাছা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম। আনারস প্রতীকে মনিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৪০ হাজার ৬৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম রেজা ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৮ হাজার ৪৪৩ ভোট।
অন্যদিকে শার্শা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. সোহরাব হোসেন দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে ৩৭ হাজার ৫৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. অহিদুজ্জামান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১২ হাজার ২৯১ ভোট।
রাজশাহী
দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহীর বাগমারা, দুর্গাপুর ও পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাগমারা উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জাকিরুল ইসলাম সান্টু। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৩২২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুর রাজ্জাক সরকার ওরফে আর্ট বাবু পেয়েছেন ৪ হাজার ৩২১ ভোট।
পুঠিয়া উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আবদুস সামাদ মোল্লা। তিনি আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৬ হাজার ৬৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৬৭৯ ভোট।
অন্যদিকে দুর্গাপুর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন শরীফুজ্জামান শরীফ। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৪২ হাজার ১১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল মজিদ সরদার পেয়েছেন ২৭ হাজার ৩৩২ ভোট।
সাতক্ষীরা
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সাতক্ষীরার আশাশুনি, তালা ও দেবহাটা উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি চিংড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৫১ হাজার ৬৬২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহনেওয়াজ ডালিম ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৭০৭ ভোট।
অপরদিকে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা নির্বাচনে মো. আল ফেরদাউস বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি হেলিকপ্টার প্রতীকে ২৬ হাজার ৩৭৭ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মজিবুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ হাজার ১৫২ ভোট।
এ ছাড়া সাতক্ষীরার তালা উপজেলা নির্বাচনে ঘোষ সনৎ কুমার বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি কাপ পিরিচ প্রতীকে ৪৬ হাজার ৪৫৮ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সরদার মশিয়ার চিংড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ৪১৩ ভোট।
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৩৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে বিভিন্ন মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ৯৯০ জন এবং অন্যান্য ঘটনায় আরও ৩৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘অভিযানকালে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, সাত রাউন্ড গুলি, দুটি চায়নিজ কুড়াল, দুটি বার্মিজ চাকু, একটি খুর, চারটি হাঁসুয়া, দুটি রামদা, দুটি চাপাতি, একটি চাকু, দুটি ককটেল, দুটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটারগান, একটি বিদেশি রিভলভার এবং দুটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
ফেনীতে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে দরিদ্র বর্গাচাষিদের ধান কাটা, মাড়াই করে ঘরে তুলে দিয়েছে কৃষকদল নেতা-কর্মীরা। ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব।
এ সময় ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া, জেলা কৃষকদল নেতা আমির হোসেন বাদশা, সদর উপজেলা কৃষকদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আব্দুল গনি, পৌর সদস্য সচিব বেলায়েত হোসেন ভূঁইয়া, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূর নবী, ফেনী জেলা যুবদলের সদস্য মদুদ আহাম্মদ রনিসহ দলীয় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন।
পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামের কৃষক আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমি একজন বর্গাচাষী। শ্রমিকের মূল্য বেশি ধান কাটতে পারছি না। তাই চাষাবাদ করা চুয়ান্ন শতাংশ জমির ধান বিএনপি ও কৃষকদলের নেতা-কর্মীরা এসে কেটে দিয়েছে। তাতে আমার উপকার হয়েছে।’
ইলাশপুর গ্রামের জামাল উদ্দিন, মাথিয়ারা গ্রামে মুসলিমপাড়া এলাকার বাচ্চু মিয়া ও বগই এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম জানায়, বাজার থেকে শ্রমিক এনে ধান কেটে ঘরে তুলতে অনেক খরচ পড়ে। তবে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলতে সময় ও অর্থ দুটিই কম লাগে। কৃষকদলের নেতারা ধান কেটে দেওয়ায় বাড়তি সুবিধা পাওয়া গেছে।
ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘শ্রমিকের উচ্চ মূল্যের কারণে যে সকল কৃষক ধান কাটতে পারছে না তাদের পাশে কৃষকদল দাড়িয়েছে। আমরা নবান্নের শুরু থেকে দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছি। কৃষকদলের কার্যক্রম চলমান থাকবে।’
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের সহযোগিতা করার জন্য ধান কেটে ঘরে তুলে দেওয়ার জন্য আমরা মাঠে এসেছি। সারাদেশে দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দেওয়ার কৃষকদল কর্মসূচি নিয়েছে। দরিদ্র কৃষকরা ধান চাষাবাদ করে ঘরে তুলতে যে খরচ হয় এটা বহন করে তাদের পক্ষে চাষাবাদ করে ধান ঘরে তুলে লাভবান হওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। আমরা যে প্রযুক্তিতে ধান কাটার পদক্ষেপ নিয়েছি ধান কাটা, মাড়াই ও ঝেরে একেবারে পরিচ্ছন্ন ধান ঘরে তোলার ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যয় অনেক কম আসবে এবং কৃষকরা লাভবান হবেন। আগামীতে কৃষকরা ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত ও উদ্যোগী হবেন। যা আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে, খাদ্য সংকট দুর করবে এবং খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করবে।’
দিনাজপুরে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপার মো. জেদান আল মুসার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হহয়েছে।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মো. জেদান আল মুসা
বলেন, ‘মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘দিনাজপুরের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূর উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে।’ তিনি দিনাজপুরকে যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
মতবিনিময় সভায় দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রফিকুল আলম, অতিরিক্ত পুলিম সুপার (সদর সার্কেল) আব্দুল হালিম, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মুরুল হুদা দুলাল, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রঞ্জু, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও জাতীয় দৈনিকের দিনাজপুর প্রতিনিধি, সাদাকাত আলী খান,
সাংবাদিক ইউনিয়ন অপর অংশের সভাপতি মোফাসসিলুল মাজেদ, দিনাজপুর টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েনের সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ, জাতীয় দৈনিকের দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধ মাহবুবুল হক খান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট দিনাজপুর প্রতিনিধি এসএম আলমগীর হোসেন, দৈনিক বাংলা জেলা প্রতিনিধ মিজানুর রহমান. মানবজমিন পত্রিকারজেলা প্রতিনিধি কামরুজ্জামানসহ দিনাজপুর জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের কবর কবিতা প্রকাশের ১০০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ‘কবর কবিতার শতবর্ষ গ্রন্থে’ প্রকাশনা উৎসব ও মোরক উন্মোচন অনুষ্ঠান শনিবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কবি লেখক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ আলী খান সম্পাদিত কবর কবিতার শতবর্ষ গ্রন্থের প্রকাশনা ও মোরক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ।
ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এম এ সামাদ, সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান, ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কাকলী মুখোপাধ্যায়, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হালিম, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ওবায়দুর রহমান, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়ালসহ কবি ও সাহিত্যিকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে গ্রন্থের সম্পাদক কবি লেখক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ আলী খান বলেন, ভারতের কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘কল্লোল’ পত্রিকার পেছনের পাতায় একটি ‘গ্রাম্যকবিতা’ নামে ‘পল্লী কবি জসীম উদ্দীনের’ এই কবর কবিতাটি সেই ১৯২৫ সালে ছাপা হয়।
তারপরের ইতিহাস আলোয় ভরা, সোনা দিয়ে মোড়া ‘কবর’ কবিতা স্কুলের পাঠ্য হয়ে বাঙালি তরুণ-তরুণীর হৃদয়ে যেমন স্থান করে নিয়েছে, তেমনি বাংলা সাহিত্যে পেয়েছে স্থায়ী আসন। কবিতার শব্দে ছন্দে ঝরে পড়ে বেদনার অশ্রুবিন্দু।
সেই কবিতা প্রকাশের শত বছর পার হলো এই ২০২৫ সালে। শতবর্ষ পরেও ‘কবর’ কবিতা আজো পাঠকের হৃদয়ে আলোড়ন তোলে, আবৃত্তিকারের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় তার মহিমা। একজন কবির কবিতা ১০০ বছর পরেও হয়ে ওঠে প্রিয় কবিতা, যাকে বারে বারে স্পর্শ করা যায় অন্তরের গহীন কোণে।
সাতক্ষীরায় শ্যামনগর শীতকালের অন্যতম জনপ্রিয় একটি সুস্বাদু ও পরিচিত খাবার কুমড়োর বড়ি। তরকারির সাথে এই কুমড়োর বড়ি রান্না করে খাওয়ার প্রচলন বহু বছরের। শীতের মৌসুম এলেই সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে শুরু হয় কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর শীতের শুরু থেকেই কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম পড়ে যায় এবং এখন পর্যন্ত বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্যামনগরের গৃহিণীরা। গ্রাম থেকে শহরের অনেকেই নিজেদের খাওয়ার পাশাপাশি জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে এই কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ। শ্যামনগর উপজেলায় প্রায় প্রতিটা বাড়িতে দেখা যায় শীত এলেই মাষকলাই ডালের সাথে চাল কুমড়া দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে বড়ি তৈরি করা হয়।
শীতের কাকডাকা ভোরে মহিলারা বিশেষ পদ্ধতিতে দলবেঁধে কুমড়োর বড়ি দেওয়া শুরু করলেও মূলত আগের দিন থেকে শুরু করতে হয় মূল কর্মযজ্ঞ। শ্যামনগর মূলত অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলে কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কেউ কেউ নিজেরা মিলে আবার কেউ পাড়ার সবাই একসাথে তৈরি করে এই বিশেষ সুস্বাদু কুমড়ার বড়ি।
গৃহবধূ মিনারা পারভীন জানান, গ্রাম বাংলায় আবহমান কাল ধরে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি অত্যন্ত সুস্বাদু এই কুমড়োর বড়ি তরকারিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। ছোট বড় সকলের প্রিয় সুস্বাদু এই বড়ির চাহিদা সারা বছর থাকলেও শীতকালে শুধু তৈরি করা হয়। পরিবারের সারা বছরের চাহিদা অনুযায়ী সংরক্ষণের পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও কুমড়োর বড়ি দিয়ে থাকি। আসলে কুমড়ার বড়ি তৈরি গ্রাম বাংলার পুরানো ঐতিহ্য।
তিনি আরও জানান, তার ৩৮ বছরের জীবনে ছোট থেকে দেখে আসছেন শীতকাল পড়লে গ্রামের মা-বোন ও চাচিরা মিলে কুমড়া দিয়ে বড়ি তৈরি করতে। এটা খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়। এই কুমড়ার বড়ি বিভিন্ন রকম তরকারির সাথে দিয়ে রান্না করলে তরকারিতে অন্য রকম মজাদার ও লোভনীয় স্বাদ আসে। আগে যেমন তারা দেখতেন মা-চাচিরা বাড়িতে শীল-নোড়া, হিজিড়-মালশায় ফেলে ডাল বাটা-কুটার কাজ করতো।
কিন্তু এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় ডাল ও কুমড়া বাটা-কুটার মেশিন বের হয়েছে। মেশিনে কুটার কারণে এখন তাদের অনেক কষ্ট কম হয় এবং সময়ও তুলনামূলক অনেক কম লাগে। নিজেদের পরিবারের চাহিদা মতো বড়ি তৈরির পাশাপাশি প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে দেওয়া হয় বলে আমাদের একটু বেশি তৈরি করতে হয় বলে জানান তিনি।
এছাড়া বর্তমানে গ্রামের অনেক গৃহিণীরা আর্থিক লাভবান হওয়ার আশায় নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি কিছু উপার্জনের আশায় কুমড়োর বড়ি বানিয়ে বাজারে বিক্রি করেন। এই কুমড়া বড়ি গ্রাম থেকে কিনে অনেকে আবার শহরে নিয়ে যান বিক্রি করতে।
এই বড়ি কেজি প্রতি দুশ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। যার কারণে অনেক মহিলারা এটাকে আবার পেশা হিসেবেও বেছে নিয়েছেন। সারাদেশে পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় এবং কুমড়োর বড়ি তৈরির উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় শ্যামনগর অত্যন্ত সুস্বাদু ও জনপ্রিয় খাবারটিকে ঘিরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অনেকেরই কর্মসংস্থান গড়ে তোলা সম্ভব বলে অভিজ্ঞমহলের ধারণা।
নাটোরে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ না হতেই ১ কোটি ৪১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা প্রদান করেছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
অভিযোগ উঠেছে, এই অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে কাজ অসমাপ্ত থাকার পরও ৯০ ভাগ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এক বছরে সকল কাজ শেষ করার কথা থাকলে তা শেষ হয়নি চার বছরেও। ঘটনা জানাজানি হওয়ায় সেই কাজ তড়িঘড়ি করে শেষ করতে গিয়ে কাজের মান খারাপ হওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে নাটোরের লালপুর উপজেলার বিলমাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, চিরচেনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কলরব নেই এখানে। সুনসান নীরবতায় ঘেরা প্রতিষ্ঠানটিতে নেই শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি একটি সাইনবোর্ডও। কয়েকজন রাজমিস্ত্রী নির্মাণাধীন ভবনের প্লাস্টারের কাজ করছেন। একপাশে চলছে টয়লেট নির্মাণের কাজ। পাশের টিনশেড মাদ্রাসাটির একটি ঘরে ভবনের চালা নেই। অপর একটি ছোট টিনশেড ঘর তালাবদ্ধ। সুমন আলী নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, এক সময় এই মাদ্রাসাটির থেকে আড়াইশ ছাত্র নিয়মিত ক্লাশ করত। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হয়নি। বলেন ২০২১ সালে নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পরে টিনশেড ঘরটির চালা ঝড়ে উড়ে যায়। এরপর ক্লাসরুমের অভাবে মাদ্রাসাটি বন্ধ হয়ে যায়। আশা ছিল অল্পদিনের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হলে মাদ্রাসাটির ক্লাস শুরু হবে। কিন্তু দীর্ঘ ৪ বছরেও কাজ শেষ না হওয়ায় আমাদের মাদ্রাসাটি বন্ধই রয়েছে। কাজের মান ভালো নয়।
জানা যায়, ২০২১ সালের জুন মাসে এখানে ভবন নির্মাণে বরাদ্দ হয় ৭৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মাদ্রাসাটির ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ পায় যশোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুল মান্নান। ৯ মাসের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ৪ বছরেও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। অথচ ৩০ শতাংশ কাজ বাকি থাকলেও ২০২৩ সালের ২১ জুন ওই কাজের জন্য ৭০ লাখ টাকা প্রদান করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে। এরপর চলমান কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদার। ঘটনা জানাজানি হওয়ায় সম্প্রতি তড়িঘড়ি করে অসমাপ্ত কাজগুলো করা হচ্ছে। এ নিয়ে তেমন সদুত্তর নেই উপসহকারী প্রকৌশলীর কাছে। ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান মিষ্টু বলেন, ‘মাদ্রাসাটির কাজ সময়মতো না হওয়া খুব দুঃখজনক ঘটনা। এ কারণে বিলমাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসার অনেক ক্ষতি হয়েছে।’
লালপুরের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সেলিম রেজা জানান, ঠিকাদার যতটুকু কাজ করেছেন সেই অনুপাতে বিল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভবনের দরজা-জানালা প্লাস্টার ও টয়লেটের কাজ শেষ না করেই কীভাবে তাকে ৯০ ভাগ বিল প্রদান করা হয়েছে সে বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
একই চিত্র নাটোরের সদর উপজেলার বারঘরিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে। ভবন নির্মাণকাজের জন্য ২০২২ সালের মার্চ মাসে ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ পায় নাটোরের মেসার্স সিফাত এন্টার প্রাইজ। এখানে ৪৫ শতাংশ কাজ বাকি থাকলেও একই সময়ে (২০২৩ সালের ২১ জুন) ৭১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বিল নিয়ে ঠিকাদার কাজ বন্ধ রাখে। সম্প্রতি দিন-রাত একাকার করে কাজ করা হচ্ছে।
সরেজিমেন দেখা যায়, বিল্ডিংয়ের ঢালাই, প্লাস্টার, রং, দরজা-জানালা তৈরির জন্য কাঠমিস্ত্রি, ইলেকটিক মিস্ত্রি এবং টাইলস মিস্ত্রি এক দ্রুত কাজ করছেন। ঢালাইয়ের ব্যবহৃত পানিতে কর্দমাক্ত উচ্চবিদ্যালয়ের ভেতরের মাঠ। এর মধ্যে শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে ক্লাস করছেন।
বারঘরিয়া উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘কাজের মান খুব নিম্নমানের। আমরা প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।’
এ বিষয়ে বিলমাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসার সাব ঠিকাদার ও বারঘরিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের মূল ঠিকাদার মিজানুর রহমান জানান, বরাদ্দ না থাকায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। নতুন করে বরাদ্দ পাওয়ার পর এখন বাকি কাজ করা হচ্ছে।
কাজ শেষ না করেই তৎকালীন নাটোর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বর্তমান প্রধান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-২ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যতটুকু কাজ হয়েছে অতটুকই বিল প্রদান করা হয়েছে। কোনো অনিয়ম করা হয়নি।’
তবে বর্তমান শিক্ষা প্রকৌশল নাটোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাতোয়ারা পারভীন ঠিকাদারদের গাফিলতি অকপটে স্বীকার করে জানান, আগস্ট বিপ্লবের পরে অনেক ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় অনেক কাজে বিলম্ব হয়েছে। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর বন্ধ থাকা কাজ বুঝে নেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে গত ২৩ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ মো. আসাদুজ্জামানসহ মোট পাঁচজন প্রকৌশলী ও ১১ জন ঠিকাদারের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্ত করতে ইইডির প্রধান প্রকৌশলীকে চিঠি দেয়। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পূর্বেই তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন ঠিকাদার।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখার জন্য সরকার সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, শুরুতে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। পুলিশ বাহিনীও নিজেদের গুছিয়ে নিতে পেরেছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য একটি বড় পরীক্ষা।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই নির্বাচন হবে ‘আদর্শ নির্বাচন’। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-এই দুই খাতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। ডাক্তার-নার্স সংকট নিরসনে স্বল্প সময়ে সাড়ে তিন হাজার নার্স ও তিন হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আলু রপ্তানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্বে নিয়মিত আলু আমদানি করে এমন দেশ খুবই কম। বিশেষ পরিস্থিতি না হলে রপ্তানির সুযোগও সীমিত।
বিদেশে মানবসম্পদ রপ্তানি বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, দক্ষতা না থাকায় দেশের কর্মীরা বিদেশে কম বেতন পান। নার্সিং পেশায় বিদেশে বিপুল চাহিদা রয়েছে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে পারলে দেশ উপকৃত হবে।
এছাড়া রংপুরে পালন করা ছোট জাতের দেশি গরুর মাংসের প্রশংসা করে এর বাণিজ্যিক উৎপাদনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসানের সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মারুফাত হুসাইনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।
চার দিনের সফরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রংপুরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করছেন। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি রংপুর ক্যাডেট কলেজ পরিদর্শন করবেন এবং আগামীকাল রোববার কিশোরগঞ্জের মাগুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি সৈয়দপুর হয়ে ঢাকায় ফিরবেন।
ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুরে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ছনুয়া-ফাজিলপুর উচ্চবিদ্যালয়ে এই প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছে। দীর্ঘ ৫২ বছর পর বিদ্যালয় মাঠে ঢাকার শমরিতা হাসপাতাল লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর, সমাজসেবক ডা. এ বি এম হারুন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন। এ সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণ নবনির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। গত শুক্রবার বিকেলে বিদ্যালয় সভাপতি এবিএম ইমরানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার খানম, সাবেক ব্যাংকার এম এম আলমগীর, বায়ো ডট বাংলাদেশের সিইও আব্দুল লতিফ মীর ও সংগীতশিল্পী ডা. আরিফ আহমেদ।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যে ভাষা আন্দোলনবিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সেরা তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করেন ৮ম শ্রেণির আছমিনা ইয়াসমিন, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান তাসফিয়া ও তৃতীয় স্থান নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহসান উদ্দিন আবির। পরে ভাষা আন্দোলনবিষয়ক সংগীতের আয়োজন করা হয়। সংগীতশিল্পী ডা. আরিফ আহমেদ ভাষা আন্দোলন নিয়ে মনমুগ্ধকর সংগীত পরিবেশন করেন।
প্রধান অতিথি ডা. এবিএম হারুন বলেন, ‘দীর্ঘ ৫২ বছর পর ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ হয়েছে, এতে আমি খুশি। শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের স্মরণ করতে পারবে এবং শ্রদ্ধা জানাতে পারবে। আমি এ এলাকারে সন্তান। আমি চাই এ বিদ্যালায়ের শিক্ষার্থীরা ভালো পড়ালেখা করুক, ভালো ফলাফল করুক। স্বপ্ন দেখুক ভালো কিছু করার। আমি আশা করি, শিক্ষার্থীরা দেশকে ভালোবাসবে, দেশের জন্য কাজ করবে।’
অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে অবশেষে তার দেশেই ফিরিয়ে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিএসএফের অমানবিক ‘পুশইন’-এর শিকার হয়ে আলোচনায় আসা সোনালী খাতুন ও তার আট বছর বয়সি ছেলে মো. সাব্বির শেখকে গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ আইসিপিতে অনুষ্ঠিত আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
হস্তান্তর শেষে মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএসএফের এই অমানবিক ‘পুশইন’ কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড এবং দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুশইনের এই কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় মানবিক সংকটের সৃষ্টি করছে এবং উভয় দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘বিএসএফের অমানবিক আচরণের বিপরীতে বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজিবি মানবিক মূল্যবোধ, আন্তর্জাতিক আইন ও প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছে।’
বিজিবি আশা প্রকাশ করেছে, পুশইনসহ এ ধরনের অমানবিক ও আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী কার্যক্রম বিএসএফ বন্ধ করবে এবং ভবিষ্যতে সীমান্তে সৌহার্দ্যপূর্ণ, মানবিক ও আইনসম্মত প্রক্রিয়া বজায় রাখবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন বিএসএফ কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে মোট ৬ ভারতীয় নাগরিককে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশইন করে। এদের মধ্যে ৩৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুন ও তার নাবালক শিশুও ছিলেন। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে এবং গত ২২ আগস্ট আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠায়।
পরে মানবিক বিবেচনায় আদালত ২ ডিসেম্বর তাদের স্থানীয় জিম্মায় দিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশনা দেন।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে আল আমিন (২৫) নামে এক মাদ্রাসার শিক্ষককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাকে আটক দেখানো হয়।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আক্কেলপুর-বদলগাছী সড়কে আক্কেলপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে ওই ঘটনাটি ঘটে। গ্রেপ্তারকৃত মাদ্রাসা শিক্ষক আল আমিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বারইছা গ্রামের জাফর হোসেনের ছেলে।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর সাথে বলাৎকারের কথা অভিযুক্ত শিক্ষক স্বীকার করেছেন, তিনি ওই মাদ্রাসার হেফজখানার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন, এবং তিনি কোরআনের হাফেজ বলে আমাকে জানিয়েছেন।’
শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে আমার সন্তানকে কোরআনের হাফেজ তৈরি করার জন্য ভর্তি করিয়েছিলাম। রাতে আমার ছেলে ওই মাদ্রাসাতেই থাকত। গত ১ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে আল আমিন (শিক্ষক) আমার ছেলেকে ওই কাজ করেছে। এরপর থেকে ছেলের চলাফেরায় সন্দেহ হলে ছেলেকে জিজ্ঞেস করলে ছেলে আমার কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। এরপর আমার পরিবারের লোকজন নিয়ে ওই মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষককে ধরি, তখন উপস্থিত লোকজনের সামনে ছেলের সাথে ওই কাজ করার কথা স্বীকার করে। আমার ছেলের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার চেয়ে থানার আশ্রয় নিয়েছি।’
জানতে চাইলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আল-আমিন বলেন, ‘আমি কোরআনের হাফেজ, ওই দিন শয়তানের পাল্লায় পড়ে আমি অ্যাকাম করেছিলাম। আমি দোষ স্বীকার করেছি, আল্লাহর কাছে তওবা করেছি আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। মানুষ মাত্রয় ভুল হয়। পরিবারকে বলেছিলাম ঘটনাটি কাউকে না জানাতে, আমার মানসম্মান সব শেষ।’
আক্কেলপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর রউফ মাজেদ বলেন, ‘ছেলেটিকে কোরআনের হাফেজ বানানোর জন্য মাদ্রাসার আবাসিকে রেখেছিল আসহায় গরিব পরিবারটি। সেখানেও নিরাপদ নেই শিশুরা। আক্কেলপুরে অসংখ্য মাদ্রাসা তৈরি হয়েছে ও হচ্ছে। এখনি প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না বাড়ানো গেলে এই রকম ন্যক্কারজনক ঘটনা আগামী দিনগুলোতেও ঘটতে থাকবে বলে আমি মনে করি।’
আক্কেলপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু রয়েছে। তাকে শনিবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে কর্মরত টেলিভিশন চিত্রসাংবাদিকদের সংগঠন টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (টিসিজেএ), চট্টগ্রাম আয়োজিত নিয়মিত দ্বিবার্ষিক উদ্যোগ ‘লেন্সের ভেতর সত্য, প্রতিবেদনে দায়িত্ব’ শীর্ষক টিসিজেএ ইস্পাহানি বেস্ট রিপোর্টিং ও ডকুমেন্টারি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫-এর বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর জামাল খান এলাকার মোমিন রোডের একটি হলরুমে বিচারকার্যের সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক রওশন সোমা, নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুবীর মহাজন, এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্যামেরা অপারেটর ও ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি সৌমেন গুহ। তাদের মূল্যায়নের ভিত্তিতেই বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা প্রতিবেদন ও সেরা ডকুমেন্টারি নির্বাচন করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, টিসিজেএ সভাপতি শফিক আহমেদ সাজীব, সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল আলম চৌধুরী মামুন, অ্যাওয়ার্ড পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী আকবর, এবং সদস্য দীপংকর দাশ, সুমন গোস্বামী ও রবিউল হোসেন টিপু। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক জানান, এবারের প্রতিযোগিতায় ১৫ জন রিপোর্টারের ১৫টি প্রতিবেদন এবং ১৪ জন ক্যামেরা পার্সনের ১৪টি ডকুমেন্টারি জমা পড়ে, যা মানসম্মত সাংবাদিকতার ইতিবাচক প্রতিফলন।
পুরো আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে ইস্পাহানি মির্জাপুর চা। আগামী ২১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার প্রদান করা হবে।
কুড়িগ্রামে এক সপ্তাহ ধরে পড়ছে ঘন কুয়াশা। বইছে হিমেল হাওয়া। ফলে বেড়েছে শীতের তিব্রতা। শনিবার তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল চারদিক।
ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। কুয়াশার সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় সন্ধ্যার পর থেকে সকাল ১০/১১টা পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে ঠান্ডা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তনে শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে নারী, শিশু-বৃদ্ধরা।
শীতের তীব্রতা ও ঠান্ডার বাড়ায় জেলার বিভিন্ন শপিংমল ও ছোট বড় দোকানগুলোতে দিন-রাত গরম কাপড় কেনার ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের।
কুড়িগ্রাম পৌর শহরের সুপার মার্কেট, নছর উদ্দিন মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে। গত ৬ দিন ধরে হিমাঙ্কের কাটা নিম্নমুখী হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে কয়েকগুণ। শীত নিবারণের জন্য মানুষ ছুটছেন বিপণী বিতানগুলোতে।
সল্প আয়ের মানুষের ভরসা পুরোনো কাপড় বিক্রির দোকানগুলো। সাধ্যমত তারা কিনছেন গরম কাপড়। প্রকারভেদে সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ৩০০- ৫০০ টাকা, জ্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৭০০-১২০০ টাকা।
গরম কাপড় কিনতে আসা যাত্রপুর ইউনিয়নের আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডায় কাজ কাম করতে পারি নাই। হাতে টাকা নাই তাই ধার দেনা করে বাচ্চাদের জন্য কাপড় কিনতে এসেছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর কাপড়ের দাম বেশি। ছোট বাচ্চার একটা সোয়েটার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনলাম অথচ আগে এই সোয়েটার ছিল ২০০-৩০০ টাকা।
তেতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামল ১০.৫ ডিগ্রি: সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে তিন দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। সেখানে দিন দিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা। রাতভর ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চারদিক।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল চারদিক। সকাল সাড়ে আটটার পর কুয়াশা ভেদ করে হালকা রোদ উঠলেও তেমন বাড়েনি রোদের তীব্রতা। এতে দিনের বেলায়ও শীত অনুভূত হচ্ছে।
এর আগে গত শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল তেঁতুলিয়া ও শ্রীমঙ্গলে। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল তেঁতুলিয়া ও নওগাঁর বদলগাছীতে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় মুঠোফোনে বলেন, আজ তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং মৃদু শৈত্যপ্রবাহের আভাস। উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবেশ করায় এই জনপদে দিন দিন শীতের তীব্রতা বাড়ছে।
হেমন্তের শুরু থেকেই উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে সন্ধ্যার পর থেকেই হালকা শীত অনুভূত হচ্ছিল। এর মাঝে কুয়াশার পরিমাণ কম থাকায় দিনের বেলায় ঝলমলে রোদের দেখা মিলত। তবে কয়েক দিন ধরেই জনপদে সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ছে কুয়াশার দাপট। সেই সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় রাতভর অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। তবে দিনের বেলায় ঝলমলে রোদ থাকায় দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ছে। শুক্রবার বিকেলে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশায় ছেয়ে আছে চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছেন অনেকে। শীতের শাকসবজি নিয়ে বাজারে যাচ্ছেন কৃষকেরা। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্বাকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই রোদের তীব্রতা।
সকাল পৌনে আটটার দিকে জেলা শহরে কথা হয় ইজিবাইক চালক এনামুল হকের (৪০) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আইজকা সারা রাতি খুপে ঠান্ডা (শীত) নাগিছে। সকালে বাইর হওয়ার সময় খুপে কুয়াশা ছিল, এ্যালা কনেক (একটু) কমিছে। আইজকার ঠান্ডাখানোত হাত-পাও পটপটাছে।’
এ ব্যাপারে শনিবার সকালে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, সকাল ৬টায় তেতুলিয়া তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা ও কাজলী নদী থেকে এক নারী ও এক পুরুষের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে মেঘনা নদীর ডুবারচর ও কাজলী নদীর মধ্য বাউশিয়া (দাস পাড়া) এলাকা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার হয়। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
জানা যায়, শনিবার গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ডুবারচর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ৪-৫ দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। শারীরিক অবয়ব দেখে তার বয়স ৩২ এর কাছাকাছি হতে পারে অনুমান করা যাচ্ছে। এদিকে একই দিনে দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্য বাউশিয়া (দাস পাড়া) এলাকা থেকে এক পুরুষের লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। তার দুই পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ছিল। শারীরিক গঠন থেকে ধারণা করা হচ্ছে তার বয়স ৩৫ এর কাছাকাছি হতে পারে।
মধ্য বাউশিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাউসার হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন শিশু প্রথমে লাশটি দেখতে পায়। খবর পেয়ে উৎসুক জনতা লাশটি দেখতে ভিড় করে। অবস্থা দেখে মনে হয়েছে রাত বা একদিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশটি উপুড় হয়ে পড়ে আছে তবে পায়ে রশি বাঁধা বলে জানতে পেরেছি।’
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাব্বির হোসেন বলেন, ‘দুই ক্ষেত্রেই নদীতে লাশ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নৌপুলিশ দেখছে।’
গজারিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, ‘দুপুরে হোসেন্দী ইউনিয়নের ডুবার চর থেকে আমরা এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছি। বাউশিয়া ইউনিয়নের কাজলী নদীতে এক পুরুষের লাশ দেখতে পেয়েছে স্থানীয়রা। আমরা সেখানে যাচ্ছি। এখনো পর্যন্ত লাশ দুটির পরিচয় পাওয়া যায়নি।’