মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিত হলেন যারা

ফাইল ছবি
সারা বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
সারা বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২২ মে, ২০২৪ ০০:২৭

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। ভোট গণনা শেষে রাতে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। সারা দেশের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর থেকে জানা যায়-

ফরিদপুর

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরকান্দা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহসম্পাদক কাজী শাহ জামান বাবুল। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৭ হাজার ২০৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার পেয়েছেন ২৫ হাজার ২৩৭ ভোট।

অন্যদিকে সালথা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৪৫ ভোট তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মো. ওহিদুজ্জামান পেয়েছেন ৫ হাজার ৩৪২ ভোট।

নারায়ণগঞ্জ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ঘোড়া প্রতীকে তিনি পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ২৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহজালাল মিয়া পেয়েছেন ১৩ হাজার ১৩২ ভোট।

বিজয়ী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। তিনি কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. শাহজালাল মিয়া আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও আখাউড়ায় উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কসবা উপজেলায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই ছাইদুর রহমান ও আখাউড়ায় মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাাচিত হয়েছেন।

ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, কসবা উপজেলায় ছায়েদুর রহমান স্বপন কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৮৬ হাজার ৬৯৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কুটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব রাশেদুল কাউসার ভূইয়া আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫৯ ভোট।

অন্যদিকে আখাউড়া উপজেলায় মনির হোসেন ঘোড়া প্রতীকে ২৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬৩ ভোট।

রাঙামাটি

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে রাঙামাটির রাজস্থলী, কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রাজস্থলী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবাচ মারমা আনারস প্রতীকে ৭ হাজার ৭৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. রিয়াজ উদ্দীন রানা দোয়াত কলম প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১৮ ভোট।

অন্যদিকে কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. নাছির উদ্দিন দোয়াত কলম প্রতীকে ৭ হাজার ৩৬২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৭৩ ভোট।

অপরদিকে বিলাইছড়ি উপজেলায় মোট ১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫টি হেলিসর্টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ফলাফল না আসায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো ফলাফল ঘোষণা করেননি। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সমর্থিত দোয়াত কলম প্রতীকের বিরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দুই উপজেলায় মধ্যে আদিতমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ফারুক ইমরুল কায়েস ও কালীগঞ্জ উপজেলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ বিজয়ী হয়েছেন।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা লুৎফর কবির তাদেরকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।

আদিতমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ফারুক ইমরুল কায়েস মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩ হাজার ১৩৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৯ হাজার ১৮টি ভোট

কালীগঞ্জ উপজেলায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ হাজার ৩০৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তার চাচা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৩৫০ ভোট।

পিরোজপুর

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে পিরোজপুর জেলার দুই উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার পিরোজপুরের নেছারাবাদ ও কাউখালী উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মোট ১২২টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

কাউখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. আবু সাঈদ মিঞা ও নেছারাবাদ উপজেলায় আব্দুল হক নির্বাচিত হয়েছেন। রাতে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ শফিকুল হক বেসরকারিভাবে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করেন।

নেছারাবাদ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আব্দুল হক আনারস প্রতীকে ৩৮ হাজার ৬১২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এস এম মুইদুল ইসলাম মোটরসাইল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫২০ ভোট।

অন্যদিকে কাউখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. আবু সাঈদ মিঞা ঘোড়া প্রতীকে ১১ হাজার ২৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার পল্টন কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ২৯৪ ভোট।

ঝালকাঠি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঝালকাঠি সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি খান আরিফুর রহমান। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৯৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. সুলতান খান পেয়েছেন ২৫ হাজার ৯৭১ ভোট।

অন্যদিকে নলছিটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন খান সেলিম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৩ হাজার ৯৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র তছলিম উদ্দিন চৌধুরী আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৭৮৪ ভোট।

বাগেরহাট

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে বাগেরহাটে ফকিরহাট, মোল্লাহাট,ও চিতলমারী উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফকিরহাট উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন শেখ ওহিদুজ্জামান বাবু। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৬৫৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনরস প্রতীকের প্রার্থী বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন দাস পেয়েছেন ২৯ হাজার ৪৩৭ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৬২.৫০ শতাংশ।

চিতলমারী উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আলমগীর হোসেন সিদ্দিকী। দোয়াত কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৮৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অশোক কুমার বড়াল মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২২ হাজার ৭৬৩ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৪৫.৭৫ শতাংশ।

অন্যদিকে মোল্লাহাট উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহিনুর আলম ছানা। দোয়াত কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯০২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা শেখ নাসির উদ্দীন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৯৫৪ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৫৩.৭৭ শতাংশ। জেলায় গড় ভোট কাস্টিং হয়েছে ৫৪ শতাংশ।

যশোর

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে যশোরের ঝিকরগাছা, শার্শা ও চৌগাছা উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন উপজেলাগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

চৌগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম হাবিবুর রহমান। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৫৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান পেয়েছেন ২৮ হাজার ৯৮০ ভোট।

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুম্মিতা সাহা রাত সাড়ে ৯টায় এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

ঝিকরগাছা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম। আনারস প্রতীকে মনিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৪০ হাজার ৬৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম রেজা ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৮ হাজার ৪৪৩ ভোট।

অন্যদিকে শার্শা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. সোহরাব হোসেন দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে ৩৭ হাজার ৫৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. অহিদুজ্জামান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১২ হাজার ২৯১ ভোট।

রাজশাহী

দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহীর বাগমারা, দুর্গাপুর ও পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাগমারা উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জাকিরুল ইসলাম সান্টু। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৩২২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুর রাজ্জাক সরকার ওরফে আর্ট বাবু পেয়েছেন ৪ হাজার ৩২১ ভোট।

পুঠিয়া উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আবদুস সামাদ মোল্লা। তিনি আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৬ হাজার ৬৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৬৭৯ ভোট।

অন্যদিকে দুর্গাপুর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন শরীফুজ্জামান শরীফ। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৪২ হাজার ১১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল মজিদ সরদার পেয়েছেন ২৭ হাজার ৩৩২ ভোট।

সাতক্ষীরা

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সাতক্ষীরার আশাশুনি, তালা ও দেবহাটা উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আশাশুনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি চিংড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৫১ হাজার ৬৬২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহনেওয়াজ ডালিম ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৭০৭ ভোট।

অপরদিকে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা নির্বাচনে মো. আল ফেরদাউস বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি হেলিকপ্টার প্রতীকে ২৬ হাজার ৩৭৭ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মজিবুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ হাজার ১৫২ ভোট।

এ ছাড়া সাতক্ষীরার তালা উপজেলা নির্বাচনে ঘোষ সনৎ কুমার বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি কাপ পিরিচ প্রতীকে ৪৬ হাজার ৪৫৮ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সরদার মশিয়ার চিংড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ৪১৩ ভোট।

বিষয়:

লিয়াকৈরে পোশাক কারখানার ৩ শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দুই দিনে একটি কারখানার প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা ঢাকা মহাখালী কলেরা হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত উপজেলার পূর্ব চান্দরা কাঠালতলী এলাকার ওই কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী ও কারখানার শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্ব চান্দরা কাঠালতলী এলাকায় ময়েজ উদ্দিন টেক্সটাইল নামক একটি পোশাক তৈরি কারখানা রয়েছে। প্রতিদিনের মতো গত সোমবার সকালে ওই কারখানায় কাজে যোগদান করেন শ্রমিকরা। কিন্তু ওইদিন সন্ধ্যার পরেই ওই কারখানার কয়েকজন শ্রমিক হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ শ্রমিকদের উদ্ধার করে স্থানীয় সফিপুর তানহা হেল্থ কেয়ার নামে একটি হাসপাতালে ভর্তি করে তাদের সহকর্মীরা। তবুও কারখানা ছুটি দেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিনের মতো পরের দিন মঙ্গলবার সকালে কাজে যোগ দেন ওই কারখানার শ্রমিকরা। ওইদিনও আরও বেশ কিছু শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ শ্রমিকদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এদিকে গত দুই দিনে ওই কারখানার প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই ঢাকা মহাখালী কলেরা হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে ওই কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। তবে তাৎক্ষণিকভাবে অসুস্থ হওয়ার কারণ জানাতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ।

ওই কারখানার ডেপুটি ম্যানেজার মমিনুল ইসলাম জানান, ‘আমাদের শ্রমিকরা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন সুস্থ আছেন। তবে এ ঘটনায় শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লে ইতোমধ্যেই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম ফখরুল ইসলাম জানান, ‘এখানে আমি নতুন যোগদান করেছি। এ জন্য বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


ফরিদপুরে জামায়াতের গণ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুরের অম্বিকা ময়দানে ওই সমাবেশে জেলা জামায়াত ইসলামীর আমির মাওলানা মোহাম্মদ বদরুদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম, বক্তব্য রাখেন ,কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও অঞ্চল সহকারী আবু হারিস মোল্লা, ফরিদপুর অঞ্চল টিম সদস্য শামসুল ইসলাম আল বরাটি, জামায়াত ইসলাম মনোনীত ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কেন্দ্রীয় সূরা সদস্য অধ্যাপক আবদুত তাওয়াব ফরিদপুর-১ আসনের জামায়াত ইসলাম মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডাক্তার মো. ইলিয়াস মোল্লা ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, মাওলানা সোহরাব হোসেন, ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মওলানা মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি আমজাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মুফতি আবু নাসির মুফতি মোস্তফা কামাল, সভাপতি বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন, মাওলানা মো. মিজানুর রহমান আমির খেলাফত আন্দোলন, আবু হারেস মোল্লা নায়েবে আমির বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সভায় বক্তারা বিগত দিনের ফ্যাসিবাদী সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, বিগত সরকার আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মীদের উপর জুলুম নির্যাতন করেছে। ফরিদপুরের দুজন শীর্ষস্থানীয় নেতাকে ফাঁসি দিয়েছেন। অসংখ্য নেতাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। তারা ভেবেছিলেন জামায়াতের নেতা কমিটির ফাঁসি দিয়ে ইসলামের কণ্ঠ রোধ করা যাবে। আসলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।

বাংলাদেশে ইসলামিক ঝান্ডা উঠবে। ইসলামিক সমাজ কায়েম হবে। আমরা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন চাই। আমরা চাঁদাবাজ মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমরা আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করব। আমার দেশকে কোনো অশুভ শক্তির হাতে তুলে দেব না, কোনো আধিপত্য শক্তির হাতে মাথা নত করব না। আমরা ইসলামিক দলগুলো নিয়ে আন্দোলন করছি। ভোটকেন্দ্রে সমস্ত ভোটার উপস্থিতি মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দাবি করছি। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য আমরা স্বাক্ষর করেছি। নির্বাচনের পূর্বে গণভোটের আয়োজন করতে হবে।


রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮তম বর্ষপূর্তিতে আলোচনা সভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি

দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে পাহাড়ি জনগণ যেভাবে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদন করেছে ঠিক তেমন করে এই চুক্তি বাস্তবায়ন করে ছাড়ব বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির শীর্ষ নেতা ও রাঙামাটি সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিনি মঙ্গলবার রাঙামাটি জিমনেসিয়াম মাঠে আয়োজিত বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। পার্বত্য চুক্তির ২৮ বছরপূর্তি উপলক্ষে রাঙামাটি জেলা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এই গণ-সমাবেশের আয়োজন করে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণবাস্তবায়নের দাবিতে রাঙামাটির বিভিন্ন স্থান থেকে পাহাড়ি নারী-পুরুষ মিছিল সমাবেশ করে সমাবেশ স্থলে যোগ দেয়।

গণ-সমাবেশে উষাতন তালুকদার বলেন, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে দেশে সাধারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। যদি আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে তিনি ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশ নিয়ে পাহাড়ে জনগণের নিজের অধিকার নিজেদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা নিতে হবে।

উষাতন তালুকদার পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো শক্তিশালী করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পাহাড়ের স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকার মাধ্যমে জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচন দিন। পরিষদগুলোকে শক্তিশালী করতে পাহাড়ের মানুষ জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচন চাই। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হলেই জেলা পরিষদগুলো শক্তিশালী হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

রাঙামাটি শহরের কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম মাঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি ডা. গঙ্গা মানিক চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণ-সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, এমএন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহসভাপতি ভবতোষ দেওয়ান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রুমেন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নগেন্দ্র চাকমা বক্তব্য রাখেন।


ভেড়ামারা স্কুল মিল্ক ফিডিং কার্যক্রমের উদ্বোধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) এর আওতায় ভেড়ামারা উপজেলার ভেড়ামারা সাতবাড়ীয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল মিল্ক ফিডিং কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন। এই ফিডিং কর্মসূচির ভেতরে ছিল বাচ্চাদের পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য বাচ্চাদের মধ্যে দুধ খাওয়ানো। এই ফিডিং কর্মসূচিতে স্কুলের প্রত্যেক বাচ্চাদের ১ প্যাকেট করে দুধ খাওয়ানো হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গাজী আশিক বাহার, অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কানিস ফারজানা,

এসব উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দিন, অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আরিফুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক, স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সরকারি কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় দুধের পুষ্টিগুণ ও খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেন। দুধ পেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসাহ ও আনন্দের ছাপ দেখা যায়। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে তারা দুধ গ্রহণ করে এবং এ ধরণের উদ্যোগ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে।


পাটি বুনন শিল্পের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন সুনামগঞ্জের নারীরা

*দেড়শ বছর ধরে হাতের কারুকার্যে টিকে আছে শিল্পটি *যথাযথ মূল্য না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের কদমতলী গ্রাম। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসা পাটি বুনন শিল্পকে পেশা নয়, নিজের ঐতিহ্য হিসেবে লালন করে আসছেন তারা। পরিবারের প্রবীণ নারীদের কাছ থেকে শেখা এই দক্ষতা আজও সমান গুরুত্ব নিয়ে টিকে আছে তাদের হাতের কারুকার্যে। আধুনিক যন্ত্রপাতি, বাজারজাত প্লাস্টিকের মাদুর কিংবা দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের ঘর সাজানোর পণ্যের সহজলভ্যতার ভিড়েও এই গ্রামের নারীরা এখনো ধরে রেখেছেন এক প্রাচীন ঐতিহ্য পাটি বুনন।

কদমতলী গ্রামের অনেক নারী জানিয়েছেন, পাটি বিক্রি করে তারা সংসারের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খরচে সহায়তা করতে পারেন। যদিও বাজারে প্রতিযোগিতা বেড়েছে, তবুও স্থানীয়ভাবে এ পণ্যের চাহিদা এখনো রয়েছে। বিশেষ করে উৎসব, বিয়ে বা নতুন বাসায় ওঠার সময় অনেকের পছন্দের তালিকায় আছে হাতে তৈরি বেতের পাটি।

এই গ্রামের অধিকাংশ নারীই এখনো পাটি বুননকে নিজেদের জীবনের অংশ হিসেবে ধরে রেখেছেন। ভোরে ঘরের কাজ সেরে তারা বসে পড়েন পাটি তৈরির কাজে। বেতসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আর নিপুণ হাতের স্পর্শে তৈরি হয় নানা ধরনের পাটি। গ্রামের পরিবেশে হাঁটলে দেখা যায় অনেক বাড়ির বারান্দায় বা উঠানে নারীরা মনোযোগ দিয়ে এই কাজ করছেন।

একেকটি পাটি তৈরি করতে সময় লাগে নকশা অনুযায়ী ৭ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত জানান গ্রামের নারীরা। পরিশ্রমসাধ্য হলেও তারা এই কাজ ছাড়তে চান না। তবে শিল্পটি টিকে থাকলেও রয়েছে নানা বাধা। প্রয়োজনীয় কাঁচামালের দাম বেড়েছে। বাজারজাত করার মতো সঠিক প্ল্যাটফর্ম না থাকায় ন্যায্য দাম পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। যদি তাদের প্রশিক্ষণ, আর্থিক সহায়তা বা বাজার সম্প্রসারণে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে, তাহলে এই পেশা আরও অনেক নারীকে স্বাবলম্বী করতে পারবে। একই সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পও আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে।

স্থানীয় প্রবীণদের মতে, যথাযথ উদ্যোগ থাকলে কদমতলী গ্রাম জেলার জন্য একটি মডেল হতে পারে। কারণ এখানে শুধু পাটি নয়, নারীদের আত্মনির্ভরশীলতারও শক্তিশালী গল্প লুকিয়ে আছে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, প্রদর্শনী আয়োজন, অনলাইনে বিক্রির সুযোগ এবং সরকারি দিকনির্দেশনা পেলে এই শিল্প নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।

একটি শীতলপাটি তৈরি করতে প্রায় ১,২০০ টাকার মুরতা বেত ও ১০০ টাকার রং লাগে। বেত সিদ্ধ করা থেকে বোনা পর্যন্ত একজন নারীকে অন্তত ১৫ দিন শ্রম দিতে হয়। সব মিলিয়ে একটি শীতলপাটি তারা প্রায় ১,৫০০ টাকায় বিক্রি করলেও শ্রমের যথাযথ মূল্য মেলে না।

জামদানি পাটি তৈরিতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মুরতা বেত, রং এবং ৮ থেকে ৯ দিনের পরিশ্রম প্রয়োজন হয়। প্রস্তুত হলে এটি প্রায় ১ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। সাধারণ পাটি এক সপ্তাহ সময় ও মাত্র ৩০০ টাকার মুরতা বেত লাগে বানাতে। তবে বাজারে এর দাম মাত্র ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। সব মিলিয়ে পাটি বুনন গ্রামের নারীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস হলেও শ্রমের তুলনায় লাভ খুবই সামান্য।

সুশিলা রানী কর বলেন, ‘মুরতা গাছের বেত এখন আগের মতো পাওয়া যায় না। মোহনগঞ্জ সিলেট থেকে কিনতে হয়। যাদের জায়গা আছে তারা মুরতা গাছ লাগায়। তাদের আর কিনতে হয় না। বাড়িতে থেকে কিছু না করার চেয়ে পাটি বানালে কিছু টাকা রোজগার করা যায়। সেই নেশা থেকেই পাটি তৈরি করি।’

কদমতলী গ্রামের আরেক বাসিন্দা নারায়ন নন্দী বলেন, ‘আমার বাবা-মা এই পাটি বানাতেন। তাদের কাছ থেকেই শিখেছি। এখন আমি কৃষি কাজ করি। রাতে এসে মুরতা গাছ থেকে বেত তৈরি করে দেই। পরে মহিলারা এটি শুকিয়ে, সিদ্ধ করে পাটি তৈরি করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগের মতো খেতে এখন মুরতা গাছ চাষ করি না। পাটি বানানোর পরিমাণ আস্তে আস্তে কমিয়েছি। কারণ কোনো বাজার না থাকায় তেমন লাভ নেই। এতে পাইকারের কাছে বিক্রি করতে হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই শিল্পটা আবারও ঘুরে দাড়াবে।’

পার্শ্ববর্তী রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা শ্রী রতন কুমার ঘুস্বামী বলেন, ‘এই শিল্পটি প্রায় দেড়শ’ বছরের পুরোনো। মুরতা গাছের দাম ও পরিশ্রমের সঙ্গে বিক্রয় মূল্য ঠিক নেই। এ জন্য এখন পাটি বানিয়ে পুষে না। আমাদের শ্রমের মূল্য না দিয়েই বিক্রি করতে হয়।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশ (বিসিক)-এর সুনামগঞ্জ শিল্পনগরী কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘কদমতলীতে আমাদের কোনো কাজ নেই। জামালগঞ্জে কাজ করার সময় আমি জানতাম। কিন্তু তারা আমাদের কাছে কখনো আসেনি, আমরাও এ বিষয়ে কিছু জানি না। এই বিষয়ে কোনো তথ্যও আমার জানা নেই।


টঙ্গীতে দোয়া-মোনাজাতে পাঁচ দিনের ‘জোড় ইজতেমা’ শেষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ শুরায়ী নেজামের উদ্যোগে আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী ‘পুরানাদের জোড় ইজতেমা’ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা, গাজীপুরসহ আশপাশের জেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে ইজতেমা ময়দানে। দোয়ায় অংশ নেন প্রায় আড়াই লক্ষাধিক মুসল্লি।

মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫১ মিনিটে দোয়া শুরু হয়ে ৯টা ১৩ মিনিটে শেষ হয়। ‘আমিন… আমিন…’ ধ্বনিতে কম্পিত হতে থাকে সমগ্র টঙ্গী ময়দান। দোয়ার মুহূর্তে মাঠজুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়। দোয়া পরিচালনা করেন পাকিস্তানের মাওলানা আহমেদ বাটলা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ শুরায়ী নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।

তিনি আরও জানান, এবারের জোড়ে ২৭টি দেশ থেকে ৭৩২ জন বিদেশি মেহমান অংশগ্রহণ করেছেন। অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ হলো- পাকিস্তান, ভারত, সৌদি আরব, ইয়েমেন, কানাডা, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, তিউনিসিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, নাইজার, আফগানিস্তান, জার্মানি, জাপান, চাঁদ, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, মিশর, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়া।

হাবিবুল্লাহ রায়হান আরও জানান, জোড় চলাকালে মোট ৬ জন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে।

দোয়া শেষে কয়েক হাজার চিল্লার জামাত ও ৩ চিল্লার জামাত আগামী ০২, ০৩ ও ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য খুরুযের জোড়ের প্রস্তুতির জন্য আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে যান। বাকি মুসল্লিরা মোকামি কাজ ও আনেওয়ালা জোড়ের মেহনত নিয়ে নিজ নিজ মহল্লায় ফিরে যান।

এদিকে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পর টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।


নরসিংদীতে যুবলীগ নেতার কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীর পলাশে যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলুর প্রায় সাত কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ক্রোক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত সোমবার দুপুরে দুদকের সম্মিলিত জেলা কার্যালয় গাজীপুরের সহকারী পরিচালক এনামুল হকের নেতৃত্বে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজিরচরে আদালতের নির্দেশনায় দেলুর অবৈধসম্পদ ক্রোক করা হয়। এ সময় পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুবক্কর সিদ্দিকীকে রিসিভার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দেলোয়ার হোসেন দেলু পলাশ উপজেলার কাজিরচর গ্রামের মো. সুরুজ আলীর ছেলে। তিনি ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি।

দুদক জানায়, যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলু আয় বহির্ভূত ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ দখলে রাখার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গাজীপুরের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক মামলা দায়ের করেন। মামলায় তদন্তকালে কর্মকর্তারা জানতে পারে দেলোয়ারের অবৈধ সম্পদের ৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার সম্পদ হস্তান্তর ও বিক্রির চেষ্টা করছেন। পরে দুদক সম্পদ বেহাত হয়ে যাবে আশায় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। পরে নরসিংদীর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ হুমায়ুন কবীর সম্পদগুলো ক্রোক ও রিসিভার নিয়োগের আদেশ দেন। ক্রোককৃত সম্পদ হলো, পলাশের কাজিরচর গ্রামে ২৭ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত ২ হাজার ৩০৪ বর্গফুটের তিনতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি। যার মূল্য ৩ কোটি ১৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৪ টাকা। আর একই গ্রামে ৬ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত তিন হাজার ৬৫০ বর্গফুটের পাঁচতলা ভবন। যার মূল্য ৩ কোটি ৬৮ লাখ ৮ হাজার ২৫৭ টাকা। দেলুর মোট ৬ কোটি ৮১ লাখ ৩৫ হাজার ৩০১ টাকার সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে।

অভিযানে দুদকের সম্মিলিত জেলা কার্যালয় গাজীপুরের সহকারী পরিচালক সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান, পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুবক্কর সিদ্দিকী, নরসিংদী জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সিনিয়র সদস্য হলধর দাসসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুবক্কর সিদ্দিকী বলেন, আদালতের নির্দেশনায় দুইটি ভবন আমরা ক্রোক করেছি ও রিসিভার হিসেবে আমি দায়িত্ব নিয়েছি। মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই সম্পদ যেন বেহাত ও বিক্রি না হয় সেজন্য আমরা ক্রোক করেছি।


ফেনীবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করব

সাংবাদিকদের সাথে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীতে নবাগত পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমার কাছে এসে ফুল দিয়ে ছবি তুলে বিশেষ সংখ্যতা পাবেন না। যে কয়দিন থাকব ফেনীবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ভালো রাখতে কাজ করব। মহান আল্লাহ যেন আমাকে সেই পথে রাখেন ও হেফাজত করেন, সেজন্য সকলের সহযোগিতা চাই।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ভোটার অত্যন্ত নিরাপদে কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিগত সময়ে নির্বাচনগুলোতে যেভাবে প্রভাবিত করা হয়েছিল সেখান থেকে বের হয়ে এবার নির্বাচনে পুলিশ সক্ষমতা প্রমাণ করতে চায়। পুলিশের সম্পর্ক হবে নির্বাচনী নিরাপত্তার সঙ্গে, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে নয়-এটিও আমরা এবার প্রমাণ করতে চাই। গত সোমবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিয় সভায় এসব কথা বলেন পুলিশ সুপার।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে টাকা আদায়ের অভিযোগ দুঃখজনক উল্লেখ করে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশের অর্থনীতি যারা সচল রাখেন সেই প্রবাসীদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে টাকা আদায়ের অভিযোগ অত্যন্ত দুঃখজনক । প্রথমদিনে এমন কিছু শুনব আশা করিনি। এ বিষয়ে আমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব। এছাড়া টাকা দিয়ে কেউ নেগেটিভ রিপোর্টকে পজিটিভ করার সুযোগ নেই। যদি কখনো কোন থানা থেকে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কথা বলা হয় সেই বিষয়ে আমাকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনলাইনের মাধ্যমে যেসব আবেদন করা হয় সেগুলোও যথাযথ প্রক্রিয়ায় হচ্ছে কি না তা যাচাই করা হবে।

পুলিশ সুপার বলেন, থানায় গিয়ে সেবা পেতে ঘুষ বা এ ধরনের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে চাই। ঘুষ না দিলে সেবা না পাওয়ার এমন ঘটনা ঘটলে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও জেলা পুলিশের আওতাধীন সকল কার্যক্রম অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে। সবমিলিয়ে ফেনীবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকলের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করব।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সাইদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নিশাত তাবাসসুমসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ফেনীতে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম ২৭ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে ২০০৮ সালে প্রথম গোপালগঞ্জ জেলায় সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।


অগ্রগতি নেই চট্টগ্রাম নগরীর স্মার্ট সিটি ও মেট্রোরেল প্রকল্পের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নগর বিন্যাসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম একটি মহাপরিকল্পনা তিন বছর ধরে অন্ধকারে পড়ে আছে। ২০২২ সালে চারটি চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি নিজেদের অর্থায়নে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের পাশাপাশি মিরসরাই উপকূলে সাগর ভরাট করে একটি অত্যাধুনিক ‘স্মার্ট সিটি’ গড়ে তোলার প্রস্তাব দেয় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ)-এর কাছে। সিডিএ প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয়ে পাঠালেও রহস্যজনক কারণে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্তে প্রকল্পটি আটকে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ১৩ মাস পরও প্রকল্পটি একইভাবে ফাইলবন্দি পড়ে আছে।

সিডিএ সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামের নগরায়ণ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা হতো। পাশাপাশি সাগরতীরে নতুন একটি আধুনিক শহর গড়ে উঠত, যেখানে হাজার হাজার মানুষের জন্য মনোমুগ্ধকর আবাসন ব্যবস্থা তৈরি করা যেত। বে-টার্মিনালের নির্ধারিত স্থান থেকে মিরসরাই পর্যন্ত সাগরের ভেতরে দীর্ঘ এলাকাজুড়ে যে চরসদৃশ অংশ রয়েছে, সেটি রিক্লেইম করে বিশাল টাউনশিপ নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করে কোম্পানিগুলো। বিনিময়ে তারা মেট্রোরেল প্রকল্পে সম্পূর্ণ অর্থায়ন করবে- বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ কাজে কোনো ব্যয় লাগবে না বলেও জানায় তারা।

চীনের প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়, উদ্ধার করা সাগরের জমিতে পূর্ণাঙ্গ স্মার্ট সিটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা তাদের দায়িত্বেই থাকবে। সেখানে সৃষ্টি হওয়া প্লট বিক্রির আয় সরকার ও চীনা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ভাগ হবে। বে-টার্মিনাল থেকে মিরসরাই ইকোনমিক জোন পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় ভূমি উদ্ধার করা হবে; তবে জাহাজভাঙা শিল্পসহ মাঝখানের কিছু প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্পের বাইরে রাখা হবে। চীনা কোম্পানিগুলোর দাবি, এটি সাগরের ‘ডেড অ্যান্ড’ হওয়ায় ভূমি উদ্ধার প্রক্রিয়ায় পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। তারা জানায়, সাগরের পানিকে স্বচ্ছ রাখার বিশেষ প্রযুক্তিও তাদের রয়েছে। সিঙ্গাপুর, দুবাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাগরভূমি উদ্ধার করে যেভাবে টাউনশিপ গড়ে তোলা হয়েছে, তাদেরও সে অভিজ্ঞতা রয়েছে।

এদিকে বিগত সময়ে যখন কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মেট্রোরেল প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য প্রায় ৭০ কোটি টাকার প্রস্তাব দেয়, তখনই চীনা কোম্পানি সিসিসি পুরো সমীক্ষা বিনা খরচে করার প্রস্তাব দেয়। শুধু সমীক্ষাই নয়-৮০ হাজার কোটি থেকে এক লাখ কোটি টাকার পুরো মেট্রোরেল প্রকল্প তাদের নিজেদের অর্থায়নে বাস্তবায়নের আগ্রহও জানায়। মিরসরাই ইকোনমিক জোন থেকে বিমানবন্দরসহ চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ গ্রোথ সেন্টারগুলো সংযুক্ত করে মেট্রোরেল রুট নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সমীক্ষাও সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থে করার আশ্বাস দেয় তারা। এই মেট্রোরেল প্রকল্পের বিনিময়ে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো পতেঙ্গার বে-টার্মিনালের পাশ থেকে মিরসরাই ইকোনমিক জোন পর্যন্ত সন্দ্বীপ চ্যানেলের অংশবিশেষ ভরাট করে দুবাই ও সিঙ্গাপুরের আদলে একটি স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে চায়। তারা অন্তত ৫০ হাজার একর নতুন ভূমি উদ্ধারের পরিকল্পনা দিয়েছে। সাগরের এই অংশ ভরাট করলে পরিবেশগত ক্ষতির ঝুঁকি নেই বলে চীনা কোম্পানিগুলো দাবি করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাগরভূমি উদ্ধার করে যেমন বিমানবন্দর, বন্দর, স্মার্ট সিটি তৈরি হয়েছে- সেই মডেলেই সীতাকুণ্ড উপকূলে নতুন উপশহর তৈরি করার প্রস্তাব দেয় তারা। নতুন শহর থেকে আয় সরকার ও কোম্পানি যৌথভাবে ভাগাভাগি করবে বলেও জানানো হয়।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী (নির্মাণ বিভাগ-২) মো. শামিম বলেন, ‘চীনের প্রস্তাবনাটা আমরা ২০২২-২৩ সালে পেয়েছিলাম। প্রস্তাবটি যথারীতি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি ভালো ছিল। বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে আবাসনে ব্যাপক পরিবর্তন আসত। তবে কেন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলো না, সেটি মন্ত্রণালয় বলতে পারবে।


পঞ্চগড়ে বেড়েছে শীতের অনুভূতি

*তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ১১.৭ ডিগ্রি *পাঁচ দিন ধরে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়া প্রতিনিধি

মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে উত্তরের জনপদ তেঁতুলিয়া। এক দিনের ব্যবধানে ১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমে গেছে। গত কয়েক দিন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঘর থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে নেমে গেছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। এর ৩ ঘণ্টা আগে, সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরের হিমেল বাতাসের প্রভাবে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা ওঠানামা করার ফলে বেড়েছে মানুষের ভোগান্তি। এক কথায় হিমালয়ের কন্যা খ্যাত পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। স্থানীয়রা জানান, হিমালয় পাদদেশে অবস্থানের কারণে প্রতি বছরই এ জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়।

এদিকে উত্তরের হিমেল বাতাসের সঙ্গে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে থাকে পুরো এলাকা। সকালের দিকে সূর্যের দেখা মিললেও বিকেল ৪টা বাজতে না বাজতেই ফের হারিয়ে যায়। পঞ্চগড়ের আশপাশের জেলায় কয়েকদিন থেকে হিমালয়ের হিমেল বাতাসে ঠাণ্ডা অব্যাহত রয়েছে। সকাল সকাল রোদের ঝলমলে রোদের দেখা মিললেও তেমন উত্তাপ নেই। রাতে ও সকালে ঠাণ্ডার কারণে গ্রাম-গঞ্জের মানুষ শীতের গরম কাপড় পরিধান করছে। তবে গত কয়েকদিন থেকেই শীতের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। এছাড়া দিনের বেলা রোদের দেখা মিললেও কমেনি শীতের তীব্রতা। সারাদিন ঠাণ্ডা আবহাওয়া আর শেষ বিকালে শীতের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পায়।

এছাড়া শীতের তীব্রতা বাড়ায় হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে প্রতিদিন শীতজনিত রোগীর ভিড় থাকছেই। হাসপাতালে প্রতিদিন রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের বেশির ভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। যারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারাই কেবল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। ফলে শীতে দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায়। বিশেষ করে পাথর শ্রমিক, ভ্যানচালকসহ শ্রমজীবী মানুষরা ঠাণ্ডার কারণে সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না এবং কাজেও অসুবিধা হয়। হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিনই।

মহনন্দা নদীতে পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিক মহসিন ইসলাম জানান, ‘কয়েকদিন ধরে শীত বাড়ছে। ঠাণ্ডা পানিতে কাজ করতে কষ্ট হয়।’

ভ্যানচালক জব্বার বলেন, ‘সকাল-সন্ধ্যায় কুয়াশা ও ঠাণ্ডার দাপট বেশি। তিনি জানান, শীতবস্ত্র সহায়তা পেলে গরিব মানুষদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে।’

তেঁতুলীয়া এলাকার আরেক রিকশাচালক বলেন, ‘ভোরে রাস্তায় নামলেই হাত-পা ঠাণ্ডায় অবশ হয়ে আসে। কুয়াশায় কিছুই দেখা যায় না, হেডলাইট জ্বালিয়ে খুব ধীরে চালাতে হয়। শীতের কারণে আগের মতো যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না, আয় কমে গেছে।’

তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ বলেন, ‘মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৭ ডিগ্রির ঘরে নেমে গেছে। উত্তর হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ার কারণে তীব্র ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।’

এর আগের দিন সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের কয়েকদিন তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ২ থেকে ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে। যদিও দিনে রোদ থাকে; কিন্তু ভোর ও সকালের ঠাণ্ডা বাতাস শীতের অনুভূতিকে আরও তীব্র করে তুলছে।

এদিকে পঞ্চগড়ের আশপাশের জেলায় কয়েকদিন থেকে হিমালয়ের হিমেল বাতাসে ঠাণ্ডা অব্যাহত রয়েছে। সকাল সকাল ঝলমলে রোদের দেখা মিললেও তেমন উত্তাপ নেই। রাতে ও সকালে ঠাণ্ডার কারণে গ্রাম-গঞ্জের মানুষ শীতের গরম কাপড় পরিধান করছে। তবে গত কয়েকদিন থেকেই শীতের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষগুলো। এছাড়াও দিনের বেলা রোদের দেখা মিললেও কমেনি শীতের তীব্রতা। সারাদিন ঠাণ্ডা আবহাওয়া থাকলেও শেষ বিকেলে শীতের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পায়।

এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে প্রতিদিন শীতজনিত রোগীর ভিড় থাকছেই। হাসপাতালে প্রতিদিন নতুন নতুন রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের বেশির ভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। যারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারাই কেবল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।


পাংশায় নবাগত ইউএনও রিফাতুল হকের যোগদান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মো. রিফাতুল হক। মঙ্গলবার (০২ ডিসেম্বর) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি নতুন দায়িত্বে যোগদান করেন।

তিনি ৩৭তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। ঢাকা জেলার রমনা থানার বড় মগবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. রিফাতুল হক পূর্বে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তিনি সকালে পাংশা উপজেলা পরিষদে পৌঁছালে উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তাগণ তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

ইউএনও মো. রিফাতুল হক নতুন কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনে পাংশা উপজেলার জনপ্রতিনিধি, সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।


চার মাসে ভারত থেকে এলো ১৮ হাজার মেট্রিক টন চাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর) সংবাদদাতা

সরকার ঘোষিত চাল আমদানির সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে গত ৩০ নভেম্বর। ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে চার মাসের মধ্যে ৫৫ কার্যদিবসে বেনাপোল বন্দরে এসেছে ১৮ হাজার ১১ মেট্রিক টন চাল। গত ২১ আগস্ট ৯টি ট্রাকে ৩১৫ মেট্রিক টন চালের প্রথম চালান বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। ২১ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৫৫ দিনে প্রায় ১৫৫টি চালানের বিপরীতে ৫৮০টি ট্রাকে করে ১৮ হাজার ১১ মেট্রিক টন মোটা চাল বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।

দেশে চালের অস্থিতিশীল বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ সরকার দেশের সব বন্দর দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ আগস্ট বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়। অর্থাৎ আগস্ট মাসে ১,২৬০ মেট্রিক টন, সেপ্টেম্বর মাসে ৫ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন, অক্টোবর মাসে ৫ হাজার ১৮৮ মেট্রিক টন এবং নভেম্বরে ৬ হাজার ১২৮ মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানি হয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সর্বশেষ চাল আমদানি হয়েছিল। পুনরায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর অনেক প্রতিষ্ঠান এলসি খুলে গত ২১ আগস্ট থেকে আবার চাল আমদানি শুরু করে। অর্থাৎ ২১ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসের মধ্যে মধ্যে ৫৫ দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৮ হাজার ১১ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা আমন ধান কাটতে শুরু করেছে। এ ধান বাজারে এলে চালের দাম কমে আসবে এবং দেশে চালের ঘাটতি পূরণ হবে।

বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ জানান, চার মাসে ভারত থেকে ১৫৫টি চালানে প্রায় ৫৮০টি ট্রাকে করে ১৮ হাজার ১১ মেট্রিক টন চাল বেনাপোল বন্দরে আমদানি হয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর সরকার ঘোষিত শেষদিনে ৬ হাজার ১২৮ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে।


১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু

জয়পুরহাট এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

বিকেল তখন গড়িয়ে গেছে। জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের বড় মাঝিপাড়া গ্রামের বাড়িতে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা। স্বজনদের চাপা কান্নায় ভারী হয়ে আছে পরিবেশ। উঠানে পাশাপাশি রাখা দুটি খাটিয়ার একটিতে নিথর হয়ে শুয়ে আছেন মা সালেহা বেগম (৬২), আর ঠিক হাতছোঁয়া দূরত্বে অন্য খাটিয়ায় শুয়ে আছেন তার মেয়ে বিলকিস বেগম (৪০)।

এই মৃত্যুর দৃশ্য দেখে স্তব্ধ হয়ে গেছেন বিলকিসের স্বামী ছানোয়ার হোসেন। প্রিয়তমা স্ত্রী ও শাশুড়ির মরদেহের পাশে বসে তিনি বাকরুদ্ধ। পাশে চলছে কবর খোঁড়ার কাজ, যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন মা ও মেয়ে। এর আগে গত রোববার রাতে সালেহা বেগমের নাতি তুহিন হোসাইন (২৬) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মাত্র সাড়ে ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

সালেহা বেগম বড়মাঝিপাড়া গ্রামের মৃত খাজামদ্দিনের স্ত্রী। বিলকিস বেগম জর্ডান প্রবাসী ছিলেন এবং তিন বছর আগে দেশে ফিরেন। আর জয়পুরহাট সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তুহিন দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

গ্রামবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শনিবার বিলকিসের শাশুড়ি শেফালী বেগম ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। বিলকিস তাকে দেখাশোনা করতে গিয়ে নিজেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন এবং গত রোববার সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই বিলকিসের মা সালেহা বেগমও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একই ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসকের দাবি তারা ডায়রিয়ায় নয় শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন।

এদিকে সালেহা বেগমের নাতি তুহিন হোসাইন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত রোববার রাত ৮টার দিকে তিনি মারা যান এবং সোমবার সকালে তাকে দাফন করা হয়। এরপর সোমবার দুপুর পৌনে ১টায় সালেহা বেগম হাসপাতালে মারা যান। মায়ের মৃত্যুর মাত্র ৩৫ মিনিট পর বিলকিস বেগমও মৃত্যুবরণ করেন। বিকেলে মা-মেয়ের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়।

প্রতিবেশী রুবেল হোসেন বলেন, মাত্র ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারের তিনজন মারা গেছেন। এর মধ্যে দুজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

নিহত বিলকিসের স্বামী ছানোয়ার হোসেন বলেন, আমার মা, স্ত্রী ও শাশুড়ি তিনজনই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমার মা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু আজ আমার শাশুড়ি ও স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৫ মিনিটের ব্যবধানে মারা গেলেন। এর আগে রোববার রাতে হাসপাতালে আমার স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলে তুহিন মারা গেছেন।

জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক বলেন, ‘হাসপাতালে যে দুজন মারা গেছেন, তারা মা ও মেয়ে। তারা ডায়রিয়ায় নয়, শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। তারা ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন না।’


banner close