বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিত হলেন যারা

ফাইল ছবি
সারা বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
সারা বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২২ মে, ২০২৪ ০০:২৭

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। ভোট গণনা শেষে রাতে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। সারা দেশের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর থেকে জানা যায়-

ফরিদপুর

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরকান্দা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহসম্পাদক কাজী শাহ জামান বাবুল। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৭ হাজার ২০৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার পেয়েছেন ২৫ হাজার ২৩৭ ভোট।

অন্যদিকে সালথা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৪৫ ভোট তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মো. ওহিদুজ্জামান পেয়েছেন ৫ হাজার ৩৪২ ভোট।

নারায়ণগঞ্জ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ঘোড়া প্রতীকে তিনি পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ২৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহজালাল মিয়া পেয়েছেন ১৩ হাজার ১৩২ ভোট।

বিজয়ী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। তিনি কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. শাহজালাল মিয়া আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও আখাউড়ায় উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কসবা উপজেলায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই ছাইদুর রহমান ও আখাউড়ায় মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাাচিত হয়েছেন।

ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, কসবা উপজেলায় ছায়েদুর রহমান স্বপন কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৮৬ হাজার ৬৯৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কুটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব রাশেদুল কাউসার ভূইয়া আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫৯ ভোট।

অন্যদিকে আখাউড়া উপজেলায় মনির হোসেন ঘোড়া প্রতীকে ২৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬৩ ভোট।

রাঙামাটি

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে রাঙামাটির রাজস্থলী, কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রাজস্থলী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবাচ মারমা আনারস প্রতীকে ৭ হাজার ৭৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. রিয়াজ উদ্দীন রানা দোয়াত কলম প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১৮ ভোট।

অন্যদিকে কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. নাছির উদ্দিন দোয়াত কলম প্রতীকে ৭ হাজার ৩৬২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৭৩ ভোট।

অপরদিকে বিলাইছড়ি উপজেলায় মোট ১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫টি হেলিসর্টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ফলাফল না আসায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো ফলাফল ঘোষণা করেননি। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সমর্থিত দোয়াত কলম প্রতীকের বিরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দুই উপজেলায় মধ্যে আদিতমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ফারুক ইমরুল কায়েস ও কালীগঞ্জ উপজেলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ বিজয়ী হয়েছেন।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা লুৎফর কবির তাদেরকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।

আদিতমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ফারুক ইমরুল কায়েস মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩ হাজার ১৩৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৯ হাজার ১৮টি ভোট

কালীগঞ্জ উপজেলায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ হাজার ৩০৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তার চাচা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৩৫০ ভোট।

পিরোজপুর

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে পিরোজপুর জেলার দুই উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার পিরোজপুরের নেছারাবাদ ও কাউখালী উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মোট ১২২টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

কাউখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. আবু সাঈদ মিঞা ও নেছারাবাদ উপজেলায় আব্দুল হক নির্বাচিত হয়েছেন। রাতে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ শফিকুল হক বেসরকারিভাবে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করেন।

নেছারাবাদ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আব্দুল হক আনারস প্রতীকে ৩৮ হাজার ৬১২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এস এম মুইদুল ইসলাম মোটরসাইল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫২০ ভোট।

অন্যদিকে কাউখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. আবু সাঈদ মিঞা ঘোড়া প্রতীকে ১১ হাজার ২৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার পল্টন কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ২৯৪ ভোট।

ঝালকাঠি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঝালকাঠি সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি খান আরিফুর রহমান। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৯৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. সুলতান খান পেয়েছেন ২৫ হাজার ৯৭১ ভোট।

অন্যদিকে নলছিটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন খান সেলিম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৩ হাজার ৯৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র তছলিম উদ্দিন চৌধুরী আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৭৮৪ ভোট।

বাগেরহাট

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে বাগেরহাটে ফকিরহাট, মোল্লাহাট,ও চিতলমারী উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফকিরহাট উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন শেখ ওহিদুজ্জামান বাবু। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৬৫৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনরস প্রতীকের প্রার্থী বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন দাস পেয়েছেন ২৯ হাজার ৪৩৭ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৬২.৫০ শতাংশ।

চিতলমারী উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আলমগীর হোসেন সিদ্দিকী। দোয়াত কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৮৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অশোক কুমার বড়াল মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২২ হাজার ৭৬৩ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৪৫.৭৫ শতাংশ।

অন্যদিকে মোল্লাহাট উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহিনুর আলম ছানা। দোয়াত কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯০২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা শেখ নাসির উদ্দীন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৯৫৪ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৫৩.৭৭ শতাংশ। জেলায় গড় ভোট কাস্টিং হয়েছে ৫৪ শতাংশ।

যশোর

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে যশোরের ঝিকরগাছা, শার্শা ও চৌগাছা উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন উপজেলাগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

চৌগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম হাবিবুর রহমান। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৫৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান পেয়েছেন ২৮ হাজার ৯৮০ ভোট।

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুম্মিতা সাহা রাত সাড়ে ৯টায় এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

ঝিকরগাছা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম। আনারস প্রতীকে মনিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৪০ হাজার ৬৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম রেজা ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৮ হাজার ৪৪৩ ভোট।

অন্যদিকে শার্শা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. সোহরাব হোসেন দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে ৩৭ হাজার ৫৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. অহিদুজ্জামান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১২ হাজার ২৯১ ভোট।

রাজশাহী

দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহীর বাগমারা, দুর্গাপুর ও পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাগমারা উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জাকিরুল ইসলাম সান্টু। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৩২২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুর রাজ্জাক সরকার ওরফে আর্ট বাবু পেয়েছেন ৪ হাজার ৩২১ ভোট।

পুঠিয়া উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আবদুস সামাদ মোল্লা। তিনি আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৬ হাজার ৬৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৬৭৯ ভোট।

অন্যদিকে দুর্গাপুর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন শরীফুজ্জামান শরীফ। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৪২ হাজার ১১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল মজিদ সরদার পেয়েছেন ২৭ হাজার ৩৩২ ভোট।

সাতক্ষীরা

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সাতক্ষীরার আশাশুনি, তালা ও দেবহাটা উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আশাশুনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি চিংড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৫১ হাজার ৬৬২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহনেওয়াজ ডালিম ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৭০৭ ভোট।

অপরদিকে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা নির্বাচনে মো. আল ফেরদাউস বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি হেলিকপ্টার প্রতীকে ২৬ হাজার ৩৭৭ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মজিবুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ হাজার ১৫২ ভোট।

এ ছাড়া সাতক্ষীরার তালা উপজেলা নির্বাচনে ঘোষ সনৎ কুমার বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি কাপ পিরিচ প্রতীকে ৪৬ হাজার ৪৫৮ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সরদার মশিয়ার চিংড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ৪১৩ ভোট।

বিষয়:

তারেক রহমানের জন্মদিনে শেরপুরে ফ্রি চিকিৎসা ও ওষুধ দিল বিএনপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শেরপুর প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে শেরপুরে দরিদ্র অসহায় মানুষের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে।

ড্যাবের সহযোগিতায় শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপি এ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ওষুধ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ। উদ্বোধক ছিলেন শেরপুর-১ আসনের বিএনপির মনোনীত এমপি প্রার্থী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা।

সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ মো. হযরত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মেডিকেল ক্যাম্পে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, সদস্য সচিব, অধ্যক্ষ এবিএম মামুনুর রশিদ পলাশ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, অধ্যাপক ডা. খালেকুজ্জামান দিপু, কোষাধক্ষ্য ডা. মো. মেহেদী হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সায়েম মনোয়ার, শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. সাইফুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. হারুন আল রশীদ বলেন, দেশে ৩৬টি মেডিকেল কলেজে দলীয় লোক বসানো ও আত্মীকরণের কারণে মানসম্পন্ন শিক্ষা নেই। বিএনপি সরকারে এলে শেরপুরে মানসম্মত মেডিকেল কলেজ করতে অনুরোধ করব।

ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা বলেন, শেরপুরের মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। আমরা দরিদ্র অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবা প্রদান করার জন্য পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সামনের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আমরা শেরপুরে হাসপাতালের যত সমস্যা আছে তা চিহ্নিত করে দূর করে মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করব। তিনি জানান, আজকের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে পাঁচ হাজারের বেশি রোগীকে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে চিকিৎসা নিতে আসা বৃদ্ধ রহিম মিয়া বলেন, ‘আমি বিনা টেহায় চিকিৎসা পাইলাম, ওষুধ পাইলাম, খুব খুশি হইছি। দোয়া করি তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হোক।’ সফুরা বেগম বলেন, ‘এর আগে এত বড় ডাক্তার দেহাবার পাইনেই। আজকে দেহাইলাম, প্রিয়াঙ্কা আমগরে ওষুধ দিল, দোয়া করি মেয়েডা এমপি হোক।’


দুর্নীতিতে ডুবছে শাহ ওয়ালীউল্লাহ ইনস্টিটিউট, দুদকে চিঠি

কয়েকজন শিক্ষকের অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শাহ ওয়ালীউল্লাহ ইনস্টিটিউট প্রায় এক দশক ধরে কয়েকজন শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতিতে ডুবতে বসেছে। নিয়ম না মেনে বিভিন্ন খাতে বিপুল অর্থ ব্যয়, আয়কর ফাঁকি, প্রশ্নপত্র প্রুফ ও মডারেশন খাতে অস্বচ্ছ ব্যয়সহ একাধিক অভিযোগ ওঠেছে এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তাদের এসব অনিয়মের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর দুদকে জমা দেওয়া ওই অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আবু সোলেমান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল আল আমিনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের নানা তথ্য তুলে ধরেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দরপত্র ছাড়াই কোটি টাকার কাজ অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছর পর্যন্ত নিয়মনীতি উপেক্ষা করে দরপত্র ছাড়াই বিদ্যালয়ের ভবনের ৪র্থ ও ৫ম তলার নির্মাণ ও সংস্কারকাজ সম্পন্ন করা হয়। এসব কাজে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয় দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে। ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার টাকা। এসব ব্যয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন বা নিরীক্ষা রেকর্ড নেই।

ট্রাস্ট পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে আগে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিনিধিদের নির্বাচন করা হলেও ২০২৪-২৬ মেয়াদে প্রধান শিক্ষক নিজ পছন্দের সদস্যদের তালিকা তৈরি করে সভাপতির অনুমোদন নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে শিক্ষক-অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ২০২৪ সাল থেকে প্রতিটি পরীক্ষায় ‘প্রশ্নপত্র প্রুফ ও মডারেশন’ খাতে প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করে উত্তোলন করা হচ্ছে। পরীক্ষার খাতায় ‘কোডিং’ নামে ভাউচার তৈরি করে এই অর্থ তোলা হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দিয়ে কাজ করিয়ে তাদের নামে বড় অঙ্কের ভাউচার তৈরি করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে বিদ্যালয়ের নির্বাচনী পরীক্ষা, শিক্ষা সফর ও বিদায় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হলেও এসব টাকা প্রতিষ্ঠানের তহবিলে জমা হয়নি। কিছু শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাত উদ্দেশে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) নিতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। ২০১৫ সালে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই একাধিক চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় এবং ২০২২ সালে তাদের স্থায়ী করা হয়। ওই তালিকায় রয়েছেন রাহিমা খানম (দিবা শাখা), অহিদুল্লাহ (প্রাতঃশাখা), রওশন আক্তার ও আশরাফ আলী। কারও নিয়োগ বা যোগদানপত্র নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষক দুই শিফট থেকে বছরে প্রায় ১৭ লাখ টাকা আয় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে, কিন্তু তিনি এসব আয়ের কোনো কর পরিশোধ করেননি। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ঘরভাড়া ৩ হাজার ও নন-এমপিও শিক্ষকদের ৪ হাজার টাকা হলেও প্রধান শিক্ষক উভয় শিফট থেকে ১৬ হাজার টাকা করে ঘরভাড়া নেন। সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ‘বিশেষ ভাতা’ হিসেবে অতিরিক্ত ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। ২০১৬ সাল থেকে অনুমোদন ছাড়া প্রতি বছর টিউশন ফি বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মাসিক ফি এক হাজার টাকা, যা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অনুমোদনবিহীন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রধান শিক্ষক আবু সোলেমান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোনো সরকারি বরাদ্দের আবেদন করেননি; বরং নিজ আস্থাভাজন ব্যক্তিদের নিয়ে উন্নয়ন কমিটি গঠন করে বিভিন্ন খাতে অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগরীর জামালখান রোডে অবস্থিত শাহ ওয়ালীউল্লাহ ইনস্টিটিউট ১৯৭৯ সালের ১ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। মুসলিম চিন্তাবিদ শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভীর নামে প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়। ১৯৯৩ সালে এটি এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে দুই শিফটে অন্তত ৫০ জন শিক্ষক পাঠদান করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী জানান, বিভিন্ন নির্মাণকাজের ব্যয় সংক্রান্ত ভাউচারে তাদের জোর করে স্বাক্ষর করানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক নাকি তাঁদের বলেছেন, ‘এটা চাকরিরই অংশ; স্বাক্ষর না করলে চাকরি থাকবে না।’

তাদের অভিযোগ, একসময় সুনাম থাকা এ প্রতিষ্ঠানকে অনিয়মের কারণে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জায়গায় পরিণত করা হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আবু সোলেমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তী সময়ে পাঠানো ক্ষুদে বার্তারও কোনো জবাব মেলেনি।

অতিরিক্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ও শাহ ওয়ালীউল্লাহ ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের সভাপতি মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী বলেন, ‘আমি এখন দায়িত্বে নেই। এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’ তবে নথিপত্রে দেখা যায়, গত ২ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির অক্টোবর মাসের ব্যয়ের হিসাব খাতায় তার স্বাক্ষর রয়েছে।


ফটিকছড়িতে আবারও পুড়িয়ে দিল কৃষকের পাকা ধান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে আবারও খেতের ধান পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এবার সেলিম নামের এক বর্গা চাষির দুই শতক জমির পাকা ধান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা।

২০ নভেম্বর রাত ৩ টার দিকে ফটিকছড়ি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ রাঙামাটিয়া বাগমারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলায় বিগত এক সপ্তাহে তিনটি এলাকায় খেতে ধান পোড়ানোর ঘটনায় স্থানীয় কৃষকের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কৃষক সেলিম জানান, দুই শতক জমির পাকা ধান কেটে বৃহস্পতিবার মড়াই করার জন্য স্তূপ করে রেখছিলাম। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কে বা কারা আমার পাকা ধানে আগুন ধরিয়ে দেয়।

আমি অসহায় মানুষ অন্যের জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি। এসব জমি চাষাবাদ করতে বিভিন্ন মানুষ থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। এখন আমি কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।

এর আগে গত শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের মহাজনপাড়ায় ৪ একর ও মঙ্গলবার রাতে নাজিরহাট পৌরসভার দৌলতপুর গ্রামে এনাম নামে এক কৃষকের দুই জমির পাকা ধান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুষ্কৃতকারীরা।


ডিমলায় ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেল ভাই-বোনের!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি

নীলফামারী ডিমলায় ট্রাক-চার্জার অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে আপন ভাই-বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার শেষ বিকেলে উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের জলঢাকা-ডালিয়া সড়কের তালতলা নামক স্থানে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত আশরাফ আলী (৪০) ও রুপিয়া বেগম (৪৩) পার্শ্ববর্তী ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ছাতুনামা গ্রামের সোনাউল্লাহর ছেলে-মেয়ে। নিহতরা সম্পর্কে আপন ভাই-বোন।

এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে অটোচালক ও নিহতদের পরিবারের চারজনসহ আরও পাচঁজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা যায়, ঘটনার দিন শেষ বিকেলে আশরাফ আলী, তার স্ত্রী জামফুল বেগম (৩৫), ছেলে লিমন ইসলাম (৫), মেয়ে আঁখি আক্তার (১২), বড় বোন রুপিয়া বেগম ও বড় বোনের ছেলে ভাগনে সুজন আলী (১২) নিয়ে চাপানী বাজার থেকে ওই এলাকার মঈনুল ইসলামের অটোরিকশাতে করে ডালিয়া ভাগনি জামাইয়ের (রুপিয়ার মেয়ে জামাই) বাড়িতে নবজাতক সন্তান দেখতে যাচ্ছিলেন।

পথিমধ্যে তালতলা নামক স্থানে বিপরিত দিক থেকে আসা মেসার্স এস, এম এন্টারপ্রাইজ নামের ঢাকা মেট্রো-ট ২৪-৫৫৮৩ নম্বরের একটি বেপরোয়া গতির ট্রাক অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিলে মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই আশরাফ আলী মারা যান।

পরে রংপুর নেওয়ার পথিমধ্যে আশরাফের বড় বোন রুপিয়া বেগমও মৃত্যুবরণ করেন। খবর পেয়ে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা হাইওয়ে পুলিশ, ডিমলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই চালক ট্রাকটি রেখে পালিয়ে যাওয়ায় ঘাতক ট্রাকটি ও ক্ষতিগ্রস্ত অটোরিকশাটিকে নিজেদের হেফাজতে নেয় হাতিবান্ধা হাইওয়ে থানা পুলিশ। পরে এ ঘটনায় নিহতদের চাচাতো ভাই বাদী হয়ে সড়ক পরিবহন আইনে ডিমলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

হাতিবান্ধা হাইওয়ে থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, সুরতহাল শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হাতিবান্ধা হাইওয়ের সিমানায় সড়ক দুর্ঘটনাটি হওয়ায় ঘাতক ট্রাক ও ক্ষতিগ্রস্ত অটোরিকশাটি আমাদের হেফাজতে রয়েছে। ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলে এলাহী বলেন, এ ঘটনায় নিহতদের চাচাতো ভাই বাদী হয়ে সড়ক আইনে মামলা নম্বর-১১ তারিখ ২০/১১/২০২৫ দায়ের করেছেন। মামলাটি হাতিবান্ধা হাইওয়ে থানা পুলিশ তদন্ত করবেন।


কেশবপুরে প্রতিবন্ধী শিশুদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে সেমিনার অনুষ্ঠিত

অভিভাবক শিক্ষকদের সচেতনতার ওপর জোর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের কেশবপুরে প্রতিবন্ধী শিশুদের মূলস্রোতধারায় অন্তর্ভুক্তি, তাদের শিক্ষা–সুবিধা নিশ্চিত করা ও সমাজে সমান মর্যাদায় বেড়ে উঠতে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে এক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের হলরুমে এ সেমিনারের আয়োজন করে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক (সমাজসেবা) মো. হুসাইন শওকত। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুরা সমাজের ওপর বোঝা নয়, তারা দেশের মূল্যবান সম্পদ। সঠিক শিক্ষা, পরিচর্যা ও সুযোগ পেলে তারাও মূলধারার শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের মতো নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে। তিনি আরও জানান, সরকার প্রতিবন্ধী শিশুদের অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি, পুনর্বাসন প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রেকসোনা খাতুন।

তিনি বলেন, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের মূল লক্ষ্যই হলো- সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে বাস্তব সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। আজ যারা হুইল চেয়ার বা সেলাই মেশিন পাচ্ছেন, তাদের জীবনমান উন্নয়নে এই সামগ্রীগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তার বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল উন্নয়নের স্রোতকে সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে প্রশাসনের অঙ্গীকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ নেওয়াজ। আরও বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সমাজসেবার কর্মকর্তা মো. রোকনউজ্জামান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এস এম মাজেদুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ ফিরোজ আহমেদ, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, প্রেসক্লাব কেশবপুরের সভাপতি ওয়াজেদ খান ডবলু। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রোকনউজ্জামান জানান, কেশবপুর উপজেলায় বর্তমানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কসহ মোট ৩১ জন প্রতিবন্ধী উপকারভোগী নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে তালিকা আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে।


বেগুনগ্রামের চিশতীয়ায় নবান্ন উৎসব

*একসঙ্গে ২৯টি চুলায় রান্না হয় ক্ষীর *৪৯ মণ গুড়, ৭০ মণ চাল, দুধ ও নারিকেলের মিশ্রণে তৈরি হয় ক্ষীর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট

বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব নবান্ন অনুষ্ঠান। আর এই নবান্ন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আয়োজনের দিক থেকে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বেগুনগ্রামের আস্তানায়ে চিশতীয়ার নবান্নের আয়োজন। প্রতি বছর বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার এখানে নবান্ন উৎসব উদযাপন করা হয়। একদিন ব্যাপী চলে এই নবান্ন উৎসব। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়ে চলবে মধ্যরাত পর্যন্ত।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, এই ক্ষীর রান্নার প্রধান উপকরণ চাল, গুড়, দুধ, নারিকেল। আর ক্ষীর রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশাল দুটি বড় হাউস। এই কাজে সহযোগিতার জন্য গুড় ভাঙা ও নারিকেল ভাঙার কাজে রয়েছেন ৩৫ জন, রান্নার কাজে ২৫০ জন, খাবার পরিবেশনের জন্য থাকবেন ১৭০ জন স্বেচ্ছাসেবী ও স্বেচ্ছাশ্রমের কাজে থাকবেন ৩০০ জন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেগুনগ্রাম আস্তানায়ে চিশতীয়ায় পীর আব্দুল গফুর চিশতী (রা.) তার অনুসারীদের যেন ব্যস্ততার শেষ নেই। সকাল থেকে দূর দূরান্ত থেকে আসতে শুরু করেছে তার হাজার হাজার অনুসারী। একসঙ্গে ২৯টি চুলায় রান্না করা হচ্ছে ক্ষীর। সকাল থেকে এই ক্ষীর রান্না শুরু হলেও ক্ষীর রান্না চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। এতোক্ষণ শুধু চলবে ক্ষীর রান্না। এসময় যেন স্বেচ্ছাসেবী ও স্বেচ্ছাশ্রমে কাজে নিয়োজিতদের দম ফেলানোর সময় নেই। কেউ গুড় ভাঙছেন, কেউ নারিকেল ভাঙছেন, কেউ রান্না করছেন। ক্ষীর রান্না হয়ে গেলে হাউসে রাখা হচ্ছে সেই ক্ষীর।

আর এই নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে আস্তানায় বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, গ্রাম ও এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছে। আবার নবান্ন উপলক্ষে এই গ্রামের মানুষ তাদের জামাই-মেয়েসহ আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দেন। আবার এই উৎসবকে কেন্দ্র করে চলে নবান্ন মেলা। প্রতিটি ঘরে ঘরে চলছে ক্ষীর, পায়েস, মাছ ও মাংস রান্না। এই মেলাকে ঘিরে রাস্তার দুই পাশে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে বসেছে বিভিন্ন খাবার সামগ্রী ও মিষ্টান্নের দোকান। মিষ্টির দোকানে রয়েছে নানা পদের মিষ্টি, জিলাপি, নিমকি, চিনির ছাঁচ, চিনির রস কড়াই, লাড্ডু। এছাড়া বসেছে আচারের দোকান, বাহারি পান-মসলার দোকান। বাঁশিওয়ালা বসেছেন বাঁশি নিয়ে।

সাংসারিক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। সেখানে রয়েছে থৈ-চালা, চাঙারি, চালুন, কুলা, ঢালা, কাঠের টুল, কাঠের পিড়া, হাতপাখা, কাঠের হাতা, শিশুদের খেলনা, কাঠের ঘোড়া, করপা, ঢালিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। মৃৎশিল্পীরা বসেছেন মাটির তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে। তারা সেখানে মাটির তৈরি খেলনা পুতুল, তাল, ফলমূল, হরিণ, বাঘ, হাতি, হাঁড়ি-পাতিল, মাটির ব্যাংকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসে রয়েছেন। বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, চরকিসহ বসেছে প্রসাধনীর বিভিন্ন দোকান।

বেগুনগ্রামে আস্তানায়ে চিশতীয়া গড়ে ওঠার কাহিনীটা অন্যরকম। মুজাহিদ পাথর দিয়ে তৈরি আস্তানা বাংলা ১৩৭২ সালের ৬ কার্তিক উদ্বোধন করা হয়। আস্তানাটি ৩৭ শতক জায়গার ওপরে অবস্থিত।

স্থানীয় বেগুনগ্রামের চৌধুরী পাড়ার তোতা চৌধুরী বলেন, প্রায় শত বছর আগে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশে ভারতবর্ষ থাকা অবস্থায় কুমিল্লা জেলা থেকে তৎকালীন বগুড়া জেলার ক্ষেতলাল থানার বেগুনগ্রামে আসেন হযরত খাজা শাহ মাওলানা মো. আব্দুল গফুর চিশতী (রা.)।

সেসময় এই এলাকার মানুষেরা অভাবগ্রস্থ ছিল। বছরে প্রতি বিঘায় আমন ধান হতো ৬-৮ মণ। তিনি এই এলাকার মানুষের রহমত ও বরকতের জন্য অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার হালকায়ে জিকিরের আয়োজন করেন। হালকায়ে জিকির শেষে এলাকার মানুষের মাঝে নতুন চাল ও গুড় দিয়ে তৈরি ক্ষীর সবার মাঝে বিতরণ করেন। সেই থেকে এই নবান্ন উৎসবে ক্ষীর রান্নার আয়োজন চলে আসছে।

বেগুনগ্রাম আস্তানায়ে চিশতীয়ার সহসম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসে ঘরে প্রথম ধান তোলার পর সেই ধানের নতুন চাল ৭০ মণ, গুড় ৪৯ মণ, নারিকেল ১ হাজার ৪০০ টি, দুধ ৩৫ মণ দিয়ে আস্তানাতে এই ক্ষীর রান্নার আয়োজন চলছে। এছাড়া দুপুরে খাবারের জন্য ৪০ মণ চালের ভাত, ২৫০ কেজি খাসির মাংস ও ৪৫ মণ আলু দিয়ে রানা করা হচ্ছে আলু ঘাটি। আর এই ক্ষীর পরিবেশন করা হবে রাতে হালকায়ে জিকিরের বিশেষ মোনাজাতের পরে।

বেগুনগ্রাম আস্তানায়ে চিশতীয়ার সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেন, আমার পূর্ব পুরুষের কাছে থেকে শুনেছি হযরত খাজা শাহ মাওলানা মো. আব্দুল গফুর চিশতী (রা.) বাংলা ১৩২৮ সালে বেগুনগ্রামে আসেন। তার আগমনের তিন বছর পরে থেকে এখন পর্যন্ত এই নবান্ন উৎসব চলমান রয়েছে। পীর কেবলার সকল মুরিদান, আশেকান ও ভক্তদের অনুদানের অর্থে আস্তানাটি পরিচালিত হয়ে থাকে।

কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, এই নবান্ন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র আইনশৃংখলা পরিস্থতি ঠিক রাখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


সরিষাবাড়ীতে টিসিবির ট্রাকে দীর্ঘ লাইন, ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে

প্রতিটি ট্রাকে ৫০০ জনের স্থলে দিচ্ছে ৩০০ জনকে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষের মাঝে স্বল্প মূল্যের টিসিবির ট্রাকের পেছনে দীর্ঘ লাইন দেখা গিয়েছে। এ সময় পণ্যের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় সারিতে দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফেরত যেতে হয়েছে অনেককে। প্রতিটি ট্রাকে ৫০০ জনের জন্য পণ্য ছিল। তবে অধিকাংশ জায়গাতেই ২ গুণ বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, এ উপজেলায় ১২ হাজার ৪০৫ জন টিসিবির কার্ডধারী উপকারভোগী রয়েছে। এছাড়া ১৮টি ডিলারের মাধ্যমে বিভিন্ন পয়েন্টে ৫০০টি প্যাকেজ বিক্রি করা হয়। সব মিলিয়ে এ উপজেলায় ২১ হাজার ৪০৫ জন মানুষ টিসিবি পণ্য পায়। উপজেলার জগন্নাথগঞ্জ ঘাট এলাকায় দেখা যায়, টিসিবির ট্রাক দেখেই শত শত মানুষ এসে লাইনে দাঁড়াচ্ছে। ট্রাক এসে দাঁড়ানোর সাথে সাথে মুহূর্তেই শেষ হচ্ছে পণ্য। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য না পেয়ে হতাশ হয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে অধিকাংশ মানুষকে। চাহিদার তুলনায় পণ্য একে বারেই কম থাকায় অনেকেই পণ্য পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ডিলাররা।

পণ্য না পাওয়া আনোয়ার হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন, হোসনেআরা বেওয়াসহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কাজ বাদ দিয়ে অনেকক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে থেকেও মাল পাইলাম না। ট্রাক আসার পর পণ্য কেনার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এই অবস্থায় দুর্বল ও বয়স্ক মানুষরা এই পরিস্থিতিতে পণ্য কেনার জন্য ট্রাক পর্যন্ত পৌঁছাতেই পারে না। যদিও ট্রাকের কাছাকাছি যাওয়া যায় তখন শুনি পণ্য নেই। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা।’

একাধিক স্থানীয়দের অভিযোগ বলেন, প্রতিটি ট্রাকে ৫০০ জনের জন্য প্যাকেজ দেওয়ার কথা থাকলেও ট্রাকে ২৫০ থেকে ৩০০ জনের প্যাকেজ নিয়ে আসে। ২০-৩০ মিনিট দেওয়ার পরই বলে যে মাল নাই। এতে করে বাকি মালগুলো তারা বাহিরে বিক্রি করে দেয়। ৩০ মিনিটের মধ্যে কীভাবে ৫০০ মানুষকে পণ্য দেওয়া সম্ভব। তাই অধিকাংশ মানুষই পণ্য না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি যাচ্ছে।

লাইনে দাড়ানো ৭০ বছরের বৃদ্ধা জমিরন বেওয়া বলেন, ‘অনেক কষ্টে লাইনে দাঁড়ায়ে ট্রাকের সামনে গেলেও মাল দিল না। বলে নাই শেষ। এত করে অনুরোধ করলাম হাত-পা ধরলাম তাও দিল না। মহিলা মানুষ হইয়াও এত ভিড় ঠেইলা ধাক্কাধাক্কির মধ্যে দাঁড়াইয়া থাকলাম। কিন্তু কিছুই পাইলাম না। আমাদের গরিবদের দেখার কেও নেই।’

টিসিবি ডিলার রেদওয়ান আহমেদ সুমন বলেন, ‘অল্প বরাদ্দকৃত পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে আমাদের মানুষের জনরোষের মুখে পড়তে হচ্ছে, গালাগালও শুনতে হয়। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অপ্রতুল হওয়ার কারণে ট্রাক দাঁড়ানোর পর মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায় পণ্য। এ অবস্থায় বরাদ্দ বাড়াতে পারলে আরও বেশি মানুষ পণ্য পাবে। ভোক্তাদের চাহিদার কারণে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোহছেন উদ্দিন জানান, ‘টিসিবির কার্ডধারীদের ছাড়াও যাতে সাধারণ মানুষ টিসিবি পণ্য পায় সে লক্ষ্যে ৫০০টি করে প্যাকেজ ১৮টি ডিলারের মাধ্যমে ট্রাকযোগে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে।’


আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠানকে ৩ ল্যান্ডিং ক্র্যাফট হস্তান্তর করল ওয়েস্টার্ন মেরিন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দেশের রপ্তানিমুখী জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানি মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের কাছে তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজ হস্তান্তর করেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে নবনির্মিত ল্যান্ডিং ক্রাফট ‘মায়া’-তে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাহাজ তিনটি হস্তান্তর করা হয়।

এদিন ‘মায়া’, ‘এসএমএস এমি’ ও ‘মুনা’ নামের তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট হস্তান্তর করা হয়েছে।

ল্যান্ডিং ক্রাফটগুলো সাগরের জ্বালানি ক্ষেত্রে যন্ত্র পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ আলহমৌদি বলেন, ‘দুই দেশের দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আমাদের মধ্যকার বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে। আশা করি, ভবিষতে বাংলাদেশ থেকে আরও জাহাজ আরব আমিরাতে রপ্তানি হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক আব্দুর রহিম খান বলেন, ‘ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড দীর্ঘদিন ধরে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে ভূমিকা রাখছে, যা বাংলাদেশের রপ্তানি বহুমুখীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন,

জাহাজ নির্মাণ একটি শ্রম ঘন ও উচ্চ প্রযুক্তির ভারী শিল্প। জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা সম্ভব।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান বলেন, ‘আমাদের আছে এই খাতের দক্ষ জনবল। দেশে এই শিল্পের বিকাশের জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি বরাদ্দ। এটা পেলেই বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং দেশের রপ্তানি বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।

২০২৩ সালে আটটি জাহাজ নির্মাণে মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড। এর মধ্যে রয়েছে দুটি টাগবোট, চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং দুটি ট্যাংকার।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ‘রায়ান’ নামের একটি ল্যান্ড ক্রাফট এবং জুলাই মাসে ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’ নামের দুটি টাগবোট মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

প্রসঙ্গত; ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১১টি দেশে ৩৬টি জাহাজ রপ্তানি করেছে, যেগুলোর বাজার মূল্য ১৩৮ মিলিয়ন ডলার।


বড়াইগ্রামে অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রামে বৃহস্পতিবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলা খাদ্য বিভাগের আয়োজনে স্থানীয় খাদ্যগুদামে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ডালিম কাজী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন খাদ্যগুদামের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ, স্থানীয় কৃষক প্রতিনিধি, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা, গুদাম কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ডালিম কাজী বলেন, এ বছরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ও চাল সংগ্রহ করা হবে। বড়াইগ্রামে এ বছরের সংগ্রহ কার্যক্রম গতিশীলভাবে পরিচালিত হবে। সংগ্রহের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ধান: ১,৭৯,০০০ মেট্রিক টন (মূল্য প্রতি কেজি ৩৪ টাকা) চাল: ৪,৯০,৪০০ মেট্রিক টন (মূল্য প্রতি কেজি ৫০ টাকা) এই মৌসুমে ২০ নভেম্বর ২০২৫ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত চলবে। উপজেলা খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান ও চাল সংগ্রহ করা হবে এবং কোনো প্রকার হয়রানি বা অনিয়ম সহ্য করা হবে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, সরকার প্রতি বছর কৃষকদের সহায়তা এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই অভ্যন্তরীণ ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করে। বড়াইগ্রামের কৃষকরা আমাদের দেশের খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাই আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন প্রত্যেক কৃষক তার উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পান। এ সময় কোনো ধরনের হয়রানি বা অনিয়ম যেন না হয়, তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। আমরা আশা করি, কৃষকরা স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে নিজেদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারবে, যা তাদের আয়ের নিরাপত্তা বাড়াবে এবং দেশের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে। এছাড়া স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন খাদ্যগুদামের এই উদ্যোগ কৃষকদের নির্দিষ্ট মূল্য দেওয়ার পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।


কমলগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্ভোগে মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

সাইনবোর্ড স্থাপন করে লেখা ‘এই জমি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজার উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতাধীন, সরকারি জায়গা। এখানে লেখা আছে ‘সরকারি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিষেধ’ আদেশ ক্রমে: কর্তৃপক্ষ। তবুও ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। সাইনবোর্ড টানিয়েই যেন দায় শেষ। নেই কোনো তদারকি। এই ময়লার স্তূপ কমলগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়ক ঘেঁষে উপজেলার মুন্সিবাজার এলাকার বাজারের পাশেই অবস্থিত মুন্সিবাজার উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে খালি জায়গা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যার দুর্গন্ধে চরম বিপাকে পড়ছেন স্কুল, কলেজ, পথচারীসহ এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই স্থানে একটি টিনের সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, সরকারি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে ময়লা-আর্বজনা ফেলা নিষেধ’ আদেশ ক্রমে: কতৃপক্ষ। এই জমি কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতাধীন, সরকারি জায়গা। এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা নিষেধ। আদেশক্রমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নামে সাইন বোর্ড থাকলেও, কাজে উল্টো চিত্র দেখা গেল। যার প্রতিটি স্থানেই রয়েছে বড় বড় সব ময়লার স্তূপ। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক। এর গেটে রয়েছে একটি বড় ময়লার স্তূপ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী যানবাহনসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা ও পথচারী আসা-যাওয়া করেন। কিন্তু মুন্সিবাজার উপস্বাস্থ কমপ্লেক্সের কাছে এলেই দুর্গন্ধের সম্মুখীন হতে হয় তাদের। কারণ ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন স্থানীয় বাজার পরিষ্কার করে ময়লা-আবর্জনা সড়কের পাশে ফেলেন। এসব পচে সৃষ্টি হয় দুর্গন্ধ।

রহিম মিয়া নামে এক পথচারী বলেন, ‘রাস্তার পাশে আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নোংরা করে রাখা হয়েছে। এখানে একটি হাসপাতালও। এটা কোনোভাবেই সহ্য করার মতো নয়।’

এই এলাকার শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদ মিয়া বলেন, ‘অসুস্থ হলেই এলাকার মানুষ আসা-যাওয়া করত এই হাসপাতালে। বর্তমানে হাসপাতালই অসুস্থ। তার কারণ হাসপাতালের সামনে ময়লার ভাগার। ময়লার গন্ধে রোগী আসা তো দূরের কথা সাধারণ মানুষ এদিকে আসে না। আমরা এলাকাবাসীরা প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার করতে পারিনি।’

এই এলাকার স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজীজ আহমদ বলেন, ‘রাস্তার পাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে ওই স্থানে থাকা অনেক কষ্টকর। এ বিষয়ে বেশ কয়েক জায়গায় অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।’

স্থানীয় মুন্সিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হিমেল চৌধুরী জানান, ‘ময়লা ফেলার জায়গা না থাকায় এখানে ফেলা হচ্ছে। আমাদের কিছু করার নেই। সরকারি জায়গায় আমরা যেমন দোকানদারী করছি, ঠিক এটাও সরকারি জায়গা তাই এখানে ফেলা হচ্ছে।’

এ বিষয় স্থানীয় মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ আহমদ তরফদার বলেন, ‘আমি ময়লার বিষয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বিষয়টি তুলেছি। দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও সাহেব।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন,‘ ময়লা অপসারণের জন্য বাজার কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি। কিন্তু ফলাফল পাইনি।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘যে স্থানে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, সেই জায়গাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জায়গা। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’


ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র পাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে ভ্রমণ পিপাসুদের

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালাকে ঘিরেই গড়েছে এ উদ্যান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কামরান পারভেজ, ময়মনসিংহ ব্যুরো

ময়মনসিংহের ব্র্যান্ডিং হচ্ছে সিটি অব আর্ট অ্যান্ড কালচার বা শিল্প-সাহিত্যের নগরী। শিল্প-সাহিত্য চর্চার ধারাবাহিক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কারণে এমন ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। এ জনপদের শিল্প চর্চার প্রাচীনকাল থেকেই প্রভাব রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন যেমন ব্রহ্মপুত্র পাড়ে বসে ছবি এঁকে বিখ্যাত হয়েছেন, তেমনি বিখ্যাত হওয়ার স্বপ্নে বিভোর তরুণেরাও শিল্প-সাহিত্য চর্চার জন্য রোজ জড়ো হয় ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে।

প্রাচীন আমলে ব্রহ্মপুত্রকে নিয়ে একটি কথা সাধারণ মানুষের মধ্যে খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সেটি হচ্ছে, ব্রহ্মপুত্র যেন ময়মনসিংহ নগরের ‘ফুসফুস’। হাজারও কাজে ব্যস্ত মানুষ সমান্য সময় পেলেই স্বস্তির নিশ্বাস নিতে ছুটে যায় ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে। ময়মনসিংহ নগরের পাশ ঘেঁষে বয়ে চলা ব্রহ্মপুত্র এখন আর বর্ষায় উপচায় না। তবে শরতে কাশফুল ঠিকই ফুটে। শরৎ শেষে এখন চলছে হেমন্তকাল। হেমন্ত মানেই মৃদু আর কোমল। কাজেই যেন নতুন রূপে সেজেছে ব্রহ্মপুত্রের পাড়। সকালে হালকা কুয়াশার আস্তরণ ছড়িয়ে থাকে ব্রহ্মপুত্রের বুকে। দুপুরেও রোদ থাকে নরম। নরম রোদে চকচক করছে নদের পাড়ের বালু আর এক চিলতে পানির প্রবাহ।

নদের পাড়েই রয়েছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা।

সংগ্রহশালাকে ঘিরে নদের পাড়ে দীর্ঘ উদ্যান। উদ্যানের নামও শিল্পির নামেই। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যান। প্রতিদিন হাজারও মানুষ বেড়াতে যায় সংগ্রহশালর পাশের উদ্যানে। যার এক পাশে বয়ে চলছে ব্রহ্মপুত্র।

ময়মনসিংহ শহর থেকে তিনটি পথে যাওয়া যায় এ সংগ্রহশালা ও উদ্যানে। একটি পথ হচ্ছে কাচিঝুঁলি মোড় থেকে মেহগনি রোড দিয়ে। এ পথে যেতে যেতে চোখে পড়বে শতবর্ষী অসংখ্য গাছ। গাছগুলো দারুণ শীতল ছায়া ছড়িয়ে রেখেছে। এ ছায়ার নিচ ধরেই চলে যাওয়া যায় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালার সামনে। সেখানে দাঁড়াতেই হঠাৎ চোখে পরে ব্রহ্মপুত্র। যেন বালুচরের মধ্যে এক চিলতে স্রোতধারা। দুই পাশে বালুর স্তর জমে ব্রহ্মপুত্র ক্ষীণকায় হয়ে পড়েছে। তবে এ হেমন্তে ব্রহ্মপুত্রের ক্ষীণ ধারাও পর্যটককে দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। শান্ত নদের বুকে প্রচণ্ড শব্দে মাঝে মাঝেই চলছে ইঞ্জিনচালিত নৌযান। এছাড়া নদের কূলে উদ্যানের দিকে পর্যটকদের জন্য অপেক্ষা করে রঙিন কাপড়ের পাল তোলা ছোট ছোট নৌকা। পর্যটকরা নৌকা ভাড়া নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য ঘুরে আসতে পারেন। অথবা ব্রহ্মপুত্র নদের চরে বসে সময় কাটাতে পারে।

শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ বা হেমন্ত, সব ঋতুতেই ময়মনসিংহের মানুষ ছুটে যায় ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। একেক ঋতুতে ব্রহ্মপুত্রের যেন একেক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। শীতে জবুথবু হয়ে চায়ের দোকানে বসে গল্প করা যেমন আনন্দের তেমনি বসন্তে অসংখ্য গাছের পাতাঝরা দেখতে যেন আরও ভালো লাগে। বর্ষার সময় গাছের তলে বসে বৃষ্টি দেখার সময়টাও হয় আনন্দের। আর হেমন্তে প্রকৃতি হঠাৎ বদলে যাওয়া রূপ যেন আগন্তৃককে করে তুলে ভাবুক। প্রতিদিন নানা বয়সি অসংখ্য মানুষ যায় ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে।

প্রতিদিন সূর্যোদয়ের আগে থেকেই ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের এ উদ্যানে মানুষ যেতে থাকে। এ উদ্যানের ঘুম ভাঙে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের আনাগোনায়। এরপর ভর দুপুরের নীরবতা ভাঙতে আসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিকালে ও সন্ধ্যায় এখানে নানা বয়সি ও শ্রেণির মানুষে প্রচণ্ড ভিড় করে। সপ্তাহের ছুটি দিনে যেন হাটবারের ভিড়।

মূলত শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালাকে ঘিরেই গড়ে ওঠেছে এ উদ্যান। জয়নুল ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে যে জায়গায় বসে ছবি আঁকতেন সেখানে রয়েছে তার একটি প্রতিকৃতি ও সংগ্রহশালা। সংগ্রহশালায় রয়েছে জয়নুলের আঁকা অসংখ্য ছবি, ছবি আঁকার উপকরণ ও তাঁর ব্যবহার্য হরেক জিনিস। সংগ্রাহশালাটি সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন। সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিনই খোলা থাকে। দর্শনার্থীদের জন্য এটি শুক্রবারও বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

ঢাকাসহ সারাদেশের মানুষই এখানে সময় পেলেই ছুটে যায় ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্রে পাড়ে। ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন বা বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশায় খুব সহজেই যাওয়ায় ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের এ উদ্যানে।


কাল সশস্ত্রবাহিনী দিবস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আগামীকাল শুক্রবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হবে। দেশের সব সেনানিবাস, নৌ-ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী খাঁটির মসজিদগুলো দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক পৃথক বাণী দেবেন।

গতকাল বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শুক্রবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়া তিন বাহিনী প্রধানরা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এবং বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ১০১ জন নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের মধ্যে শুভেচ্ছা স্মারক বিতরণ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক), প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টিটিভ), সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অসামরিক ও সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ২১ নভেম্বর বিকেল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এ সংবর্ধনায় উল্লেখযোগ্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতিরা, সাবেক প্রধান উপদেষ্টারা, উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা, বিচারপতিরা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মুখ্য সচিব, বাহিনীগুলোর সাবেক প্রধানরা, সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা, স্বাধীনতা যুদ্ধের সব বীরশ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারীরা, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা তাদের উত্তরাধিকারীরা, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শহীদ সেনাসদস্যদের পত্নীরা উত্তরাধিকারীরা, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা, ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা, উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তারা এবং তিন বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ঢাকা ছাড়াও বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস খাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

এদিকে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ-জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী খাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনীর জাহাজগুলো ২১ নভেম্বর দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাটগুলো অবস্থান নোঙর করা অবস্থায় রাখা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। বাংলাদেশ বেতার ২১ নভেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘বিশেষ দুর্বার’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোতে পরে পর্যায়ক্রমে সম্প্রচারিত হবে।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলা ও ইংরেজি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।


চিরকুট লিখে ব্যবসায়ী নিখোঁজ, রেললাইনে মিলল লাশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা জেলা প্রতিনিধি

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় চিরকুট লিখে নিখোঁজ হন জিয়াউর রহমান (৪৫) নামে স্থায়ীয় এক টেইলার্স ব্যবসায়ী। পরে তার লাশ পাওয়া গেছে পার্শ্ববর্তী আটঘরিয়া উপজেলার মাঝপাড়া রেলওয়ে ট্র্যাকের ৯ নম্বর ব্রীজ এলাকায়।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর থেকে নিখোঁজ থাকার পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ট্রেনে কাটা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

জিয়াউর রহমান ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের উত্তর সারুটিয়া ওয়াবদা এলাকার মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ভাঙ্গুড়া বাজারে সেঞ্চুরি টেইলার্স নামে একটি টেইলারিং ব্যবসা পরিচালনা করতেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সকালেই দোকানে যান জিয়াউর রহমান। দুপুরে তার ছোট ছেলে মো. ইজাজ হোসেন খাবার নিয়ে দোকানে গিয়ে বাবাকে সেখানে পাননি। আশেপাশে খোঁজ নিয়েও কোনো তথ্য মেলেনি। পরে দোকানের টেবিলে ভাঁজ করে রাখা একটি কাগজে চোখ যায় তার। কাগজটি ছিল একটি চিরকুট, তাতে লেখা ছিল— ‘দোকান-সংসার চালাইতে পারলাম না, তাই দুনিয়া ত্যাগ করিলাম। কেউ দায়ী নয়’। নিচে লেখা ছিল তার নাম ও তারিখ ১৯/১১/২০২৫।

এই চিরকুট পাওয়ার পর পরিবার ও স্বজনরা চারদিকে খোঁজ চালিয়েও কোনো তথ্য পায়নি। মুহূর্তেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ, আতঙ্ক ও শোকের ছায়া।

মৃত জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ একজন ব্যবসায়ী জানান, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে দুর্বল ছিলেন। টেইলারিংয়ের কাজ করতে সময় লাগত বেশি। এ কারণে তার ছোট ছেলে তাকে প্রায়ই বকাঝকা ও মারধর করত বলে অভিযোগ করেন তিনি। এতে তিনি আরও ভেঙে পড়েছিলেন বলে ধারণা তার।

নিখোঁজের প্রায় তিন ঘণ্টা পর বিকাল সোয়া ৫টার দিকে মাঝপাড়া রেলওয়ে ব্রীজ এলাকায় ট্রেনে কাটা অবস্থায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। পরে তা দেখে পরিবার ও পুলিশ গিয়ে লাশটি জিয়াউর রহমানের বলে শনাক্ত করে।

ভাঙ্গুড়া থানার (ওসি) বলেন, জিয়াউর রহমান দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। এর আগেও তিনি আত্মহননের চেষ্টা করেছিলেন। নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছিল। তদন্ত চলমান থাকা অবস্থায় আটঘরিয়া থেকে তার লাশ পাওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, ঘটনাটি রেলপথ-সংক্রান্ত হওয়ায় লাশের তত্ত্বাবধান সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।


banner close