সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

তাপমাত্রা নামতেই বিদ্যুতে স্বস্তি

আপডেটেড
২ নভেম্বর, ২০২২ ১১:১৭
আরিফুজ্জামান তুহিন
প্রকাশিত
আরিফুজ্জামান তুহিন
প্রকাশিত : ২ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:৪০

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং চলে যাওয়ার পর থেকেই সাইবেরিয়ার বাতাস হিমালয় হয়ে পঞ্চগড় দিয়ে দেশে ঢুকতে শুরু করেছে। এতে গত দুই দিন শীত পড়েছে উত্তরের কিছু জেলায়। আর গড় তাপমাত্রাও কমে গেছে। ফলে এসি, ফ্যানের ব্যবহার কমায় চলমান লোডশেডিং কমে গেছে। আগামী ১২-১৫ দিনের মধ্যে লোডশেডিং আরও কমে যাবে, কোথাও কোথাও একেবারেই থাকবে না। এই অবস্থা চলবে মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, মধ্য ফেব্রুয়ারির পর সেচে বিদ্যুৎ ও গ্রীষ্মের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। চাহিদা বাড়লে ওই সময় প্রথমে দুই হাজার মেগাওয়াট এবং জুনের মধ্যে আরও দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলোকে এই সময়ে উৎপাদনে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি প্রতিষ্ঠান পাওয়ারসেলের কর্মকর্তারা বলছেন, সব পরিকল্পনা ঠিকমতো কাজ করলে আগামী বছরে লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি এবারের মতো এতটা থাকবে না।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মধ্য নভেম্বর থেকে শীত পুরোদমে পড়তে শুরু করবে। তবে এখনই রাতের বেলায় তাপমাত্রা অনেক কমে যাচ্ছে। দিনের বেলায়ও সেই গরম নেই। শীতের আগমনী বার্তার মধ্যেই বিদ্যুৎ বিভাগে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, লোডশেডিং নিয়ে সাধারণ মানুষের যে ক্ষোভ-কষ্ট সেটি অনেকটাই কেটে যাবে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ টেলিফোনে গত সোমবার দৈনিক বাংলাকে বলেন, লোডশেডিং অনেকটাই কমে গেছে, শিগগিরই সারা দেশ লোডশেডিং মুক্ত হবে। আগামী গ্রীষ্মে লোডশেডিং না করার জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদনে আনা এবং নিজস্ব গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানো। এসব পরিকল্পনা ঠিকমতো কাজ করলে গ্রীষ্মে লোডশেডিং থাকবে না। তিনি বলেন, অল্প সময়ও বিদ্যুৎ না থাকলে মানুষের কষ্ট হয়। মানুষ বিদ্যুতের নানা ব্যবহার করে অর্থনৈতিক উন্নতি করছে। এসব বিষয়কে আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি। কিন্তু একই সময়ে বৈশ্বিক সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং জ্বালানির বাজার অস্থির হয়ে পড়ার বিষয়টিও মনে রাখতে হবে।

তাপমাত্রা নামছে, কমছে লোডশেডিং

গত বছরের ৩০ অক্টোবর সারা দিন ২৪ ঘণ্টার প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল ৯ হাজার ৩৭০ মেগাওয়াট। ওই দিন দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন দেশে লোডশেডিং ছিল না। আর চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর দিনে প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল ৯ হাজার ৫৪৫ মেগাওয়াট। এদিন লোডশেডিং গত কয়েক মাসের মতো তীব্র না থাকলেও খোদ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ ছিল না। এদিন গত বছরের তুলনায় তাপমাত্রা বেশি ছিল। এদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সিলেটে ছিল ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

উত্তরে শীতের বাতাস শুরু হওয়া এবং রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে বিদ্যুতের চাহিদা কমতে শুরু করেছে। দেশে অন্তত সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের দরকার পড়ে শুধু এসি যন্ত্রের পেছনে। এই এসি চালু করার দরকার না হলে এ পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না। সারা দেশে গতকালসহ তিন দিন লোডশেডিং কম ছিল। সরকারের নীতিনির্ধারকরা দাবি করেছেন, মধ্য নভেম্বর থেকে সারা দেশে লোডশেডিং থাকবে না।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং চলে যাওয়ার পর আকাশে মেঘ নেই। এর সঙ্গে গত দুই দিন সাইবেরিয়ার ঠান্ডা বাতাস হিমালয় হয়ে পঞ্চগড় দিয়ে দেশে ঢুকছে। এতে পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম এলাকায় শীত পড়তে শুরু করেছে।

তারা বলছেন, ঢাকার উত্তরা ও মিরপুর এলাকায় ইতিমধ্যে রাতে শীত পড়ে গেছে। সন্ধ্যার পর থেকে তাপমাত্রা নিচে নামতে থাকে। ঢাকার অনেক এলাকাতেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) রাতে চালানো হচ্ছে না। এমনকি মিরপুর ও উত্তরা এলাকায় রাত ১১টার পর ফ্যানও বন্ধ থাকে। রাজধানীর তাপমাত্রা আরও নামতে অন্তত ১০ থেকে ১২ দিন লাগবে।

৪৫০০ মেগাওয়াট উৎপাদনে এলে স্বস্তি

ভারতের বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপ একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে ভারতের ঝাড়খণ্ডের কোড্ডায়। এ কেন্দ্রটি বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য পুরোপুরি তৈরি। কেন্দ্রটি থেকে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি রয়েছে পিডিবির সঙ্গে। দুই দেশের দুই পাশেই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ আনার জন্য সঞ্চালন লাইন নির্মাণও শেষ। বাংলাদেশ অংশে বিদ্যুতের একটি উপকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শেষের দিকে। তবে এ কেন্দ্রটি থেকে এখনই সরকার বিদ্যুৎ আনতে চায় না, কারণ শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায় দেশে। আদানির বিদ্যুৎ এখনই আমদানি শুরু করলে কেন্দ্রটিকে বসিয়ে রেখে বিপুল আকারে কেন্দ্র ভাড়া দিতে হবে। আগামী গ্রীষ্মের শুরুতে আদানির বিদ্যুৎ আনার কথা জানিয়েছেন সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র। তারা বলছেন, দুটি ইউনিটে মোট ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি ইউনিটের বিদ্যুৎ আসবে মার্চে, দ্বিতীয়টি থেকে জুনে।

বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবনের পাশে কয়লাভিত্তিক ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও নির্মাণ শেষ। কেন্দ্রটি শিগগিরই উৎপাদনে আসবে। এটিও আগামী গ্রীষ্মের আগেই উৎপাদনে আসার কথা। বরগুনায় ৩৫০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকাজও শেষ। চট্টগ্রামের কয়লাভিত্তিক এস আলমের ৬৬০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটে মোট ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি নির্মাণ শেষ পর্যায়ে। এটির ৬৬০ মেগাওয়াট ইউনিটটি এ বছরেই উৎপাদনে আনতে চায় এস আলম। তবে পিডিবি আগামী গ্রীষ্ম থেকে এটি উৎপাদনে আনার কথা ভাবছে।

পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়েক বছর আগেই চালু হয়েছে। তবে ঢাকার সঙ্গে সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়ায় এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ ঢাকায় আনা যাচ্ছিল না। ফলে কেন্দ্রটি এখন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন লাইন দিয়ে খুলনায় এবং অন্য আরেকটি লাইনের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ-বরিশাল অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এতে কেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতার পুরোটা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন লাইন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এই সঞ্চালন লাইন দিয়ে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকায় বিদ্যুৎ আসবে।

এ ছাড়া আগামী বছরে পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের মধ্যে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র উৎপাদনে আসার কথা। তবে এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সরবরাহের সঞ্চালন লাইন নির্মাণের ৩০ শতাংশেরও কাজ হয়নি। সে কারণে কেন্দ্র নির্মাণ শেষ হলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে না।

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ বাদেই নতুন করে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ। এসব বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচও কম হবে। সে কারণে কেন্দ্রগুলো লোডশেডিং কমাতে সহায়তা করবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের দাবি।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী গ্রীষ্ম মোকাবিলা করার জন্য কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আনার পাশাপাশি অন্তত ১ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার সারা দেশে স্থাপিত সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদনে আসবে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র দিনের বেলা বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। তাতে দিনের পিক লোডে সৌরবিদ্যুৎ চাহিদার একটি অংশ পূরণ করবে বলে তাদের মত।

বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেইন টেলিফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, আগামী গ্রীষ্ম মোকাবিলা করার জন্য আমরা বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। এর মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে দুই হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসার কথা। আরও আড়াই হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র গ্রীষ্মের মধ্যে আসবে। এ ছাড়া ১ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ এই সময়ের মধ্যে উৎপাদনে আসার কথা।


চুয়াডাঙ্গায় ৯ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড

তীব্র গরমে ছাতা হাতে ভ্যান চালাচ্ছেন এক ব্যক্তি। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১৬:৩১
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

তাপমাত্রার আগের সব রেকর্ড ভেঙে আজ সোমবার চুয়াডাঙ্গায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে। আজ বিকেল ৩টার দিকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এখানে রেকর্ডে করা হয় বলে জানিয়েছে চু্য়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস।

বৈশাখের টানা খরতাপে জেলায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টানা দাবদাহে ওষ্ঠাগত এ জেলার মানুষ। দিন রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য থাকছে কম। দিনের বেলায় প্রচণ্ড রোদ আর সন্ধ্যার পর ভ্যাপসা গরম নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গার জনজীবনে। সকাল থেকে বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সাথে বাড়ছে তাপমাত্রার পারদ।

বেলা ১২ থেকে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। দুপুরে মরুভূমির মতো তাপ অনুভূত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকূল। চলমান দাবদাহে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন শ্রমজীবিরা।

আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্কুল-মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের

চু্য়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্বরের ভ্যানচালক খোরশেদ আলম বলেন, ‘এই গরমে খুব কষ্ট হচ্চি (হচ্ছে)। ঘন ঘন পানি তিষ্টা (তৃষ্ণা) লাগচি (লাগছে)। গরমে মানুষ রাস্তায় বের হচ্চি (হচ্ছে) না। তাই ভাড়াও কমি গিচে (কমে গেছে)।’

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘গত ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ল চুয়াডাঙ্গা। এর আগে ২০১৪ সালের ২১ মে এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী দুই দিন এমন অবস্থা বিরাজ করতে পারে।’


কুমিল্লায় স্কুলগুলোতে পানিঘণ্টা চালু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:৪৫
কুমিল্লা প্রতিনিধি

তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই গতকাল রোববার থেকে স্কুল, কলেজে ক্লাশ শুরু হয়েছে। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান পানিঘণ্টা চালু করেছেন।

প্রচণ্ড গরমে শিশুদের সুস্থ রাখতে প্রতিটি ক্লাশ শেষে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে।

কুমিল্লা নবাব ফয়জুনেচ্ছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা আক্তার বলেন, ‘সকাল থেকেই ক্লাশ শুরু হয়েছে। প্রতি ৪৫ মিনিট পরপর আমাদের ক্লাশ শেষ হয়। তারপর পানিঘণ্টা বাজানো হয়। সে সময় শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করে। ছোট শিশুরা অনেক বেশি চঞ্চল। তা ছাড়া এই গরমে তারা ঠিকমতো পানি পানের গুরুত্বও বোঝে না। ফলে গরমে শরীর পানিশূন্য হয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। পানিঘণ্টা বাজলে সব শিশু একসঙ্গে পানি পান করতে শুরু করে। এতে বেশ একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং বাচ্চারাও আনন্দ পায়।’

কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাহমিদা মুস্তাফা জানান, তিনি কুমিল্লা নগরীর স্কুলগুলোতে খোঁজ নিয়েছেন। সকাল থেকে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের পানি পানের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। শিশুরাও এ ব্যাপারে বেশ উৎসাহী।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষার্থীরা যেন অসুস্থ হয়ে না পড়ে সেজন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর তাদের পানি পানের ব্যবস্থা করার জন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছি। সকাল থেকে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খবর নিয়েছি। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিবার ক্লাশ শেষে পানি পান করছে।’


গাজীপুরে আঙুর চাষে বাজিমাত সবুজের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোতাহার খান, শ্রীপুর (গাজীপুর)

গাজীপুরের শ্রীপুরে নিজ জমিতে বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা সবুজ। তিনি ইউটিউবে আঙুর চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। পরবর্তীতে পরিকল্পনা করেন বাড়ির আঙ্গিনার পতিত জায়গায় আঙুর চাষ করার। ২০ শতাংশের জমিতে প্রথমে ২৫টি আঙুরের চারা রোপণ করেন। শুরু করেন আঙুর চাষ, প্রথমবারেই এ ফল চাষে বাজিমাত করেন সবুজ ।

এদিকে আঙুর চাষে তার সফলতা দেখে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার মানুষ আঙুর বাগান দেখতে আসছেন। এমন বাগান করতে আগ্রহী হচ্ছেন নতুন নতুন উদ্যোক্তা।

থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। দুই পাশে সারি সারি গাছে ধরেছে আঙুর, মাথার ওপর বাঁশের মাচায় ঝুলছে সবুজ আঙুর। একেক থোকায় শ-খানেক আঙুর। শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর পশ্চিমপাড়া গ্রামের সবুজের বাগানে ফলেছে মিষ্টি আঙুর। সাড়া ফেলে দিয়েছেন তরুণ ওই কৃষক।

এ অঞ্চলের মাটিতে আঙুর চাষ করতে দেখে একসময় যারা সবুজকে নিয়ে উপহাস করেছিলেন; এখন তারাই হতবাক হয়ে তার গুণগান করছেন।

২০২৩ সালে প্রথমবার ঝিনাইদহের মহেশপুরের জগিহুদা গ্রামের আব্দুর রশিদের কাছ থেকে প্রতি পিস ৫৫০ টাকায় ভারতীয় সুপার সনিকা জাতের ২৫টি চারা কিনে আনেন। শুরু করেন আঙুর চাষ, তবে শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি। তাই বলে আশাও ছাড়েননি। তারপর মিলে কাঙ্ক্ষিত সফলতা। রোপণের এগারো মাসের মধ্যে গাছে ফল আসা শুরু করে। সবুজ আঙুর চাষের পাশাপাশি চারা উৎপাদনও করছেন। তার আঙুরের বাম্পার ফলন দেখে আশপাশের কৃষকরাও ভীষণ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। স্থানীয় বিভিন্ন নার্সারির মালিক ও ব্যক্তি তার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করতে আসছেন। তিনি প্রতিটি আঙুরের কলম চারা মাত্র ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

সবুজ জানান, প্রথমবার ১১ মাসের মাথায় গাছগুলোয় আঙুর ধরেছে এবং ৩ থেকে ৪শ কেজি ফল পাওয়ার আশা করছেন। গাছে প্রচুর পরিমাণ ফল হয়েছে। এ আঙুর গাছে ৩০ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। আঙুর গাছ ৮ ফুট দূরত্বে লাগানো হয়েছে। এ গাছ লাগানোর আগে জমি প্রস্তুত করে প্রতিটি গর্তে পাঁচ কেজি বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করেছেন। ৩ ফুট গর্ত করে ইটের গুঁড়া, মোটা বালু ও জৈব সার মাটির সঙ্গে মিশ্রণ করে দিয়েছেন। প্রতিটি গাছের গোড়া মাটি দিয়ে উঁচু করেছেন, যাতে পানি না জমে। আঙুর গাছ যাতে দ্রুত লম্বা হতে পারে তার জন্য উঁচু করে সিমেন্টের খুঁটি এবং বাঁশ দিয়ে মাচা তৈরি করেছেন। ফলে ঝড়-বৃষ্টি এলে গাছ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা কম থাকে।

সবুজ নিজের আঙুর বাগানকে উপজেলার একমাত্র বাগান দাবি করে আরও বলেন, ‘আশা করি এ বছর ভালো ফল পাব। সাধারণত ৮০-৮৫ দিনে ফল খাওয়ার উপযোগী হয়। এখন যে ফল দেখছেন, তা আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে খাওয়া যাবে। সবচেয়ে বড় কষ্টের বিষয় হলো, এর চাষ যখন শুরু করি; তখন আশপাশের মানুষ বিভিন্নভাবে উপহাস করতে থাকে। অনেকে পাগলও বলেন।’

তিনি বলেন, ‘দোকানে তো বসতেই পারতাম না। এখন আমার আনন্দ ধরে না। প্রতিদিন আঙুর দেখার জন্য অনেকের সাক্ষাৎ মিলছে। আশা করি এ বছর অনেক লাভবান হতে পারব। কোনো মানুষের কাছ থেকে সহযোগিতা পাইনি। এখন স্থানীয় কৃষি অফিসসহ সব সময় মানুষ পাশে থাকছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে এখন আর তেমন বেশি খরচ নেই।

স্থানীয়রা জানান, আঙুর বাগান নিয়ে সবুজ প্রচুর খাটাখাটনি করেন। প্রচণ্ড খরায়ও বাগানে ২ ঘণ্টা পানি দেওয়ার কাজ করেন। সবুজ একাই বাগানে কাজ করতেন। তার স্ত্রী তাকে মাঝেমধ্যে সহযোগিতা করেন। আঙুর বাগান করে এবার তিনি লাভবান হবেন।

শ্রীপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা দৈনিক বাংলাকে বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় সার ব্যবস্থাপনা, পানি ব্যবস্থাপনা এবং বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আরও বৃহদাকারে শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সবুজ এখানে জৈবিক বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কোনো প্রকার কীটনাশক ছাড়াই আঙুরের চাষ করছেন।


গোয়ালন্দে বেপরোয়া মাটি বালু ব্যবসায়ী চক্র

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০৪:০৩
মইনুল হক মৃধা, (গোয়ালন্দ) রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাটি ব্যবসায়ী চক্র। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হলেও আবার সবকিছু ম্যানেজ করে মাটি কাটা শুরু করে মাটি খেকোর দল। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন, সামান্য জরিমানা করে চক্রকে আটকে রাখা সম্ভব নয়। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

গত শনিবার সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নতুন সেতুর ডানপাশে এক কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী হতে বালু তোলা হচ্ছে। নদীতে ড্রেজার বসিয়ে দিনরাত দেদারছে মাটি তুলছেন মাটি খেকোরা। এ নিয়ে জমির মালিকরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাতে তোয়াক্কা করছেন না। তাদের নানাভাবে ভয়ভীতিও দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ আছে।

উজানচর ইউনিয়নের স্থানীয় লিপু মেম্বারের তত্ত্বাবধানে কাবিখা প্রকল্পের একটি সরকারি রাস্তা নির্মাণের জন্য মাটি তুলছেন। এতে প্রশাসনের অনুমতি আছে।

মরা পদ্মায় ইসমাইল হোসেন ও মনোয়ার হোসেন মনা দাবি করেন, তারা জমির মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় করেই মাটি তুলছেন। তবে প্রশাসনের কোন অনুমতি নেই।

একইভাবে দেবগ্রাম পিয়ার আলীর মোড়ে লাল্টু, দৌলতদিয়া ক্যানালঘাটে কাদের ফকির, জিয়া, শহীদসহ বিভিন্ন স্থানে নদী ও পুকুর থেকে মাটি ব্যবসায়ীরা ড্রেজার ও ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি-বালি তুলছেন। উত্তোলিত বালি-মাটি বিভিন্ন ইটভাটা ও ব্যাক্তি-প্রতিষ্টানে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।

তাছাড়া গ্রামীণ সড়কে এসব মাটি-বালি বহনকারী ট্রাক বেপরোয়া গতিতে চলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে প্রায়ই।

জানা গেছে, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা-৪ এর (খ) অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্য সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হলে অথবা আবাসিক এলাকা থেকে কমপক্ষে ১ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘সরকারি বা বেসরকারি কোন কাজের জন্যই কাউকে নদী হতে মাটি-বালি উত্তোলনের অনুমতি দেয়া হয়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ইতিপূর্বে এ ধরনের দুটি ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে। ভেকু্ ও ড্রাম ট্রাকের চালককে জরিমানা করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’


চট্টগ্রামে দিনভর ভোগান্তির পর পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

একই সভায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত ও এক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় তিনটি বাস পুড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেন শ্রমিক নেতারা। চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের অনুরোধে এবং জনস্বার্থে আমাদের ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।’

জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে সংগঠনের পক্ষ থেকে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে গাড়ি চলাচলে নিরাপত্তা প্রদান, গাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ, অবৈধ গাড়ির বিষয়ে ব্যবস্থা, শ্রমিকের ওপর অকারণে মামলা না করার দাবি উপস্থাপন করা হয়।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া বাসের ক্ষতিপূরণ এবং বাসে অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেপ্তারসহ চার দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রতিনিধি, বিআরটিসির সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থি প্রমুখ।

দিনভর জনভোগান্তি

চার দফা দাবিতে রোববার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয় পরিবহন ধর্মঘট। শনিবার বিকেলে ঘোষণা দেওয়া এই ধর্মঘটে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। তীব্র গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গণপরিবহন পায়নি লোকজন।

চট্টগ্রাম নগরীর রাস্তায় বাসসহ কোনো ধরনের গণপরিবহন ছিল না। এ ছাড়া তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাগামী রুটেও বাস চলাচল বন্ধ ছিল। মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন গন্তব্যমুখী মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।

অক্সিজেন মোড়ে অপেক্ষারত তরুণ সাদিক খান জানান, এই গরমের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো যানবাহন পাননি। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে গেছেন অনেকে। এতে সময় দুই থেকে তিন ঘণ্টা বেশি লাগে।

চট্টগ্রাম নগর থেকে দিনভর বিভিন্ন উপজেলা, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার উদ্দেশে কোনো বাস ছাড়েনি। ওইসব এলাকা থেকে কোনো বাসও চট্টগ্রাম নগরীতে আসেনি। জেলাগুলোর শহর এলাকায়ও চলেনি কোনো গণপরিবহন।

সকালে অক্সিজেন এলাকায় গিয়ে কয়েকশ যাত্রীকে গণপরিবহন ও দূরপাল্লার বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। অক্সিজেন এলাকা থেকে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার উদ্দেশে বাস ছাড়ে।

পার্বত্য জেলা ছাড়াও চট্টগ্রামের কোনো উপজেলায় চলেনি যানবাহন। সিএনজিচালিত অটোরিকশা চললেও ভাড়া হাঁকা হয় তিন থেকে চার গুণ বেশি। অনেকে বাড়তি ভাড়া দিয়েই রওনা হয়েছেন গন্তব্যে।

নগরীর মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ, জিইসি এলাকায় শত শত মানুষ যানবাহনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন সকালের দিকে। এই জনদুর্ভোগকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে রিকশা, যাত্রী টানা মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা বাড়তি ভাড়া দাবি করে বসেন।

গণপরিবহন না থাকায় যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে। নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে সাধারণত কক্সবাজারগামী বাস ছেড়ে যায়। তবে সকালে কাউন্টারগুলোর সামনে কোনো বাস ছিল না। অধিকাংশ কাউন্টার ছিল বন্ধ। সকালের দিকে বহদ্দারহাট এলাকায় কয়েকটি বাস আটকে দেন পরিবহন শ্রমিকরা।

চান্দগাঁও থানার ওসি জাহিদুল কবীর বলেন, ‘কর্মবিরতির সমর্থকরা নগরে চলাচলকারী বাস আটকে রেখেছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’


সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:০৪
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে রেললাইনের ওপর গাছ পড়ায় সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। আজ রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যার দিকে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কী ঘটেছিল

স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে হঠাৎ করেই মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে হয় কালবৈশাখী ঝড়। এতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে যাওয়া আখাউড়া-সিলেট রেলপথের একাধিক স্থানে গাছ ভেঙে পড়ে। ফলে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন এই রুটের ট্রেনের যাত্রীরা।

কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার বলেন, ঝড়ে সিলেট-শ্রীমঙ্গলের মাঝে রেললাইনের ওপর কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে। এতে বিকেল থেকে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়।

কবির আহমেদ আরও বলেন, শ্রীমঙ্গল স্টেশনে জয়ন্তীকা এক্সপ্রেস ট্রেন ৫টা ২০ মিনিটে আটকা পড়ে। এ ছাড়া ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনে ৫টা ৩৭ মিনিটে আটকা পড়ে।

বিষয়:

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:১৬
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি ও বাসস

অতি তীব্র দাবদাহে চুয়াডাঙ্গায় মানুষের জনজীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে মাঝারি, তীব্র ও অতি তীব্র দাবদাহ চলছে চুয়াডাঙ্গায়। এর মধ্যে ৭ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়।

আজ রোববার বিকেল ৩ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। এরপর সন্ধ্যা ছয়টায় জেলার তাপমাত্রা একই থাকে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪১ শতাংশ। গতকাল সন্ধ্যা ৬ টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র দাবদাহের কারনে প্রশাসনের তরফ থেকে জনসাধারণকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগীর চাপ অস্বাভাবিকহারে বেড়ে গেছে।

প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেই সঙ্গে বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। তাপদাহে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্বত্র লু হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। জেলায় দুপুরের পর ঘরে থাকা দুরূহ হয়ে পড়েছে। তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানায়, আগামী ৫-৬ দিনের মধ্যে তাপমাত্রা কমার লক্ষণ নেই। আরো বাড়তে পারে। এদিকে আবহাওয়া অফিস থেকে সিলেট অঞ্চল বাদে সারা দেশে নতুন করে চতুর্থ দফায় ৭২ ঘন্টার হিট এলার্ট জারি করেছে।


বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে ২ কেএনএফ সদস্য নিহত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:৫৬
থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি

বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। এ অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও ওয়াকিটকিসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদিও জব্দ করা হয়।

আজ রোববার সকালে রুমা ও থানচি উপজেলার সীমান্তের দুর্গম বাকলাই পাড়া এলাকায় অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। তবে নিহতদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপি আর) সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

তিনি বলেন, ‘বান্দরবানের জেলার রুমা ও থানচি দুই সীমান্তে উপজেলার দুর্গম বাকলাই পাড়া এলাকায় সেনাবাহিনী অভিযানের কুকি-চিনের দুইজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমান গোলাবারুদ, ওয়াকিটকিসহ অনান্য সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে।’

স্থানীয়রা জানায়, রোববার সকালে রুমা ও থানচির দুই উপজেলা সীমান্তের বাকলাই পাড়া এলাকায় দুটি মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। তবে তারা কে বা কারা সে বিষয়ে কেউ না জানলেও তাদের গায়ে কেএনএফের পোশাক দেখা যায়।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয়রা বাকলাই এলাকায় দুটি মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার পুলিশ। মরদেহ দুটি থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে।

বিষয়:

মুন্সীগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

মুন্সীগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে রোকেয়া বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়, মাদ্রাসা পড়ুয়া নাতিকে মাদ্রাসায় দিয়ে ফিরে আসার পথে তিনি সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ট্রেনে কাটা পড়েন।

আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে জেলার শ্রীনগর উপজেলার পাটাভোগ ইউনিয়নের কামারখোলা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত রোকেয়া একই উপজেলার পূর্ব কামারখোলা গ্রামের প্রয়াত ইয়াকুব শিকদারের স্ত্রী।

স্থানীয়দের ভাষ্য, রোকেয়া আজ সকালে তার নাতিকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পৌঁছে দেয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। সকালে তাকে মাদ্রাসায় পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে অসতর্ক অবস্থায় ট্রেন লাইনে অবস্থান করলে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে নিচে কাটা পড়েন তিনি।

মাওয়া রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার সাইফুল ইসলাম জানান, সকালে সুন্দরবন এক্সপ্রেস নামে ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে খুলনা যাচ্ছিল। ট্রেনটি জেলার শ্রীনগর উপজেলার কামারখোলা অতিক্রম করছিল। এ সময় কামারখোলা দারুস সুন্নাহ জিনিয়া সালেহিয়া মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের পূর্বপাশে বৃদ্ধা রোকেয়া অসাবধানতাবশত রেললাইন পারাপার হতে গেলে ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন।

শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, নিহতের বাড়ি দুর্ঘটনাস্থলের কাছে হওয়ায় ঘটনার পরপরই স্বজনরা মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে শ্রীনগর থানা ও রেল পুলিশ আইনি পদক্ষেপ নেবে।


উখিয়ায় অস্ত্র ও গুলিসহ ৫ রোহিঙ্গা আটক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৪:৫৯
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবির থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও গুলিসহ পাঁচজন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। রোববার ভোর রাতের দিকে উপজেলার কুতুপালং ২-ওয়েস্ট নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৯ ব্লকে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন এপিবিএনের অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিআইজি) মোহাম্মদ ইকবাল।

আটকরা হলেন- ক্যাম্পের ডি-৯ ব্লকের মোহাম্মদ জোবায়ের (২২)। একই ক্যাম্পের সি-২ ব্লকের দিল মোহাম্মদ (৩৫)। সি-৭ ব্লকের মোহাম্মদ খলিল (৩৪)। সি-২ ব্লকের মোহাম্মদ ইদ্রিছ (২৮) ও এ-৬ ব্লকের মোহাম্মদুল্লাহ (২৫)।

আটকরা সকলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে এপিবিএন পুলিশ।

এডিআইজি ইকবাল বলেন, ‘রোববার ভোর রাতে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ২-ওয়েস্ট নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৯ ব্লকের একটি ঘরে কতিপয় লোকজন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশে সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান করছিল। খবরে এপিবিএন পুলিশের একটি দল অভিযানে নামে। পরে ঘরটি ঘিরে ফেললে ১০ থেকে ১২ জন লোক পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় তাদের পিছেু নিয়ে ৫ জনকে আটক করা সম্ভব হলেও অন্যরা পালায়। পরে আটকদের দেহ এবং ওই ঘরটি তল্লাশি করে পাওয়া যায় বিদেশি ৫টি পিস্তল, দেশিয় তৈরি ২টি বন্দুক ও ১৮টি গুলি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আটকরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।’

আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে উখিয়া থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

বিষয়:

বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

তীব্র গরম থেকে বাঁচতে ও বৃষ্টির আশায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় নেচে- গেয়ে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেছে স্থানীয় লোকজন। গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ব্যাঙের বিয়ের অনুষ্ঠান চলে উপজেলার চন্দ্রখানা বালাটারি গ্রামে।

ওই এলাকার বাসিন্দা সাহাপুর আলীর স্ত্রী মল্লিকা বেগমের আয়োজনে বিয়েতে অসংখ্য নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। নাচ-গানের মধ্যদিয়ে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া শেষে বরণ ডালায় ব্যাঙ দুটিকে নিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়ান তারা। এ সময় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চাল-ডাল সংগ্রহ করে ব্যাঙের বিয়েতে অংশগ্রহণকারীদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।

ব্যাঙের বিয়ের আয়োজনকারী মল্লিকা বেগম জানান, কিছুদিন ধরে তীব্র গরম। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে আমরা কষ্টে রয়েছি। গ্রামের মানুষজন অস্বস্তিতে আছেন। কোনো কাজ-কামাই করতে পারছেন না। তারা বিশ্বাস করেন ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই আজ তারা ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেন।

ব্যাঙের বিয়ে দেখতে আসা জাহিদ নামে একজন বলেন, ‘আমার জীবনে প্রথম ব্যাঙের বিয়ে দেখলাম। খুবই ভালো লেগেছে।’

এলাকার বৃদ্ধ আজিজুল হক বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আবাদে ক্ষতি হচ্ছে। তাই বৃষ্টির আসায় ব্যাঙের বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছি।’

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, কুড়িগ্রামে বেশকিছু দিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে। গতকাল জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি নাথান বমের স্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০৬:২১
মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান

বান্দরবানের রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রধান নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বমকে গত ৮ এপ্রিল লালমনিরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বদলির নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি এখনো চাকরিতে যোগদান করেননি। এদিকে রুমা সদরের ২নং ওয়ার্ডে তার নিজ বাসাতেও তিনি অবস্থান করছেন না। তাহলে তিনি কোথায় রয়েছেন তা নিয়ে এমন প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মাঝেও। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়া প্রশাসনের কাছেও কোনো তথ্য নেই বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে কেএনএফের নেতৃত্বে ব্যাংক ডাকাতি ও সন্ত্রাসী হামলার পর ওই গোষ্ঠীর প্রধান নাথান বমসহ বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে পাহাড়ে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বধীন যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ জন নারী সদস্য রয়েছে।

কেএনএফের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ফলে আলোচনায় আসে নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বমের নাম। জানা যায়, রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বম নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে নাথান বমের স্ত্রী হিসেবে লাল সমকিম বম আলোচনায় এলে সেখান থেকে তাকে গেল ৮ এপ্রিল লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে তিনি এখনো (২৭ মার্চ পর্যন্ত) সেখানে যোগদান করেননি। এবং নিজ বাড়িতেও তার সন্ধান মিলছে না। সর্বশেষ ৮ এপ্রিল লাল সমকিম বম রুমা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওইদিন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের উপসচিব (পরিচালক প্রশাসন) মো. নাসির উদ্দিন স্বাক্ষরিত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, নার্সিং সেবা ১ শাখার এক স্মারকের আলোকে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লাল সমকিমকে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বদলি করা হয়। তবে বদলি আদেশের পর লাল সমকিম বম বদলিকৃত কর্মস্থলে উপস্থিত হননি বলে জানা গেছে। বদলির পরিপত্রে ৯ এপ্রিলের মধ্যে কর্মস্থলে আবশ্যিকভাবে যোগদানের কথা বলা হয়। অন্যথায় ৯ এপ্রিল তারিখের অপরাহ্ণে স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য করা হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এদিকে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বামংপ্রু মারমা বলেন, ‘নার্স লাল সমকিম বমকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে তিনি আর হাসপাতালে আসেননি। তিনি কোথায় আছেন সেই তথ্যও তাদের কাছে নেই বলেও জানান ডা. বামংপ্রু মারমা। বদলির বিষয়ে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রমজান আলী বলেন, নার্স লাল সমকিম বম এখনো যোগদান করেননি। তবে তার এখানে যোগদান করার কথা ছিল। কবে যোগদান করতে পারে সেই বিষয়ে তার কাছে আর কোনো তথ্য নেই বলেও যোগ করেন ডা. রমজান আলী।

এ বিষয়ে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীল এক অফিসার বলেন, লাল সমকিম বমকে বদলির পর তার আর কোনো সন্ধান মিলছে না। বদলি কার্যকর হওয়ার পর বদলির কাগজ নিয়ে তার বাড়িতে গিয়েও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তারা তাকে পায়নি বলেও জানান তিনি।

এ ছাড়া মোবাইলেও নার্স লাল সমকিম বমকে পাওয়া যায়নি বলেও যোগ করেন তিনি। রুমা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য (সংরক্ষিত) কল্যানি চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন ধরে নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বমকে নিজ বাড়িতে দেখা যাচ্ছে না। তিনি কোথায় আছেন সঠিক তথ্যও জানা নেই বলেও জানান তিনি।

এদিকে লাল সমকিম বমের বাড়িতে নাথান বমের যাতায়াত ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কল্যানি চৌধুরী জানান, ‘প্রায় দুই বছরেও নাথান বম এই বাড়িতে আসার কোনো খবর কেউ পাননি। রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি এই উপজেলায়। তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছি তিনি (লাল সমকিম বম) এলাকাতে নেই। তিনি আরও বলেন, তাকে (লাল সমকিম বম) যদি প্রশাসন গ্রেপ্তার করত তাহলেও সবাই বিষয়টা জানত। তবে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি। রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমাদের কাছে নাথান বমের স্ত্রীর কোনো তথ্য নেই। তিনি এলাকায় আছেন কি নেই তাও পুলিশের জানা নেই।’

রিমান্ড শেষে কেএনএফের ১০ আসামিকে কারাগারে প্রেরণ

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) আটককৃত ৭৮ জন আসামির মধ্যে আরও ১০ জনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রেরণ করেছে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গতকাল শনিবার আসামিদের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজির হলে শুনানি শেষে আসামিদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক নুরুল হক।

আসামিরা হলেন, ভানলাল কিম বম, সাইরাজ বম, রুয়াল কমলিয়ান বম, গিলবার্ট বম, তিয়াম বম, লিয়ান নোয়াই থাং বম, নল থন বম, পেনাল বম, লাল মুন লিয়ান বম ও জাসোয়া বম। তারা সবাই রুমার বেথেল পাড়ার বাসিন্দা। আদালত সূত্র জানা যায়, রুমা ও থানচি দুই উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতির এবং অস্ত্র লুটপাটের ঘটনায় ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী। গ্রেপ্তারের পর তাদের আদালতের হাজির করা হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দুই দিনের জন্য রিমান্ড আবেদন করলে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। দুই দিন রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে কেএনএফের সদস্য ১০ জনকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন আদালত।

উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, মসজিদে হামলা, পুলিশের অস্ত্র লুটের ঘটনায় রুমা থানায় ৫টি মামলা দায়ের করা হয় এবং পরে ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে আর এই ঘটনায় ৪টি মামলা দায়ের হওয়ার পর পুলিশ অভিযান শুরু করে এই পর্যন্ত মোট ৯টি মামলায় ২২ জন নারীসহ ৭৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।


বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শিশুসন্তানসহ মায়ের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল প্রতিনিধি

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ঢালমাড়া গ্রামে পল্লি বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশুসন্তানসহ মায়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত ব্যক্তিরা হলেন- ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. রিয়াজ মোল্লার স্ত্রী সোনিয়া বেগম (৩০), মেয়ে রেজবি আক্তার (৯) ও ছেলে সালমান মোল্লা (৫)।

স্থানীয়রা জানান, বসতঘরের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিঁড়ে গেলে প্রথমে শিশু সালমান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে প্রথমে সোনিয়া ও পরে রেজবি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। আশপাশের লোকজন বাকেরগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে খবর দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হলেও, তার আগেই মৃত্যু হয় ৩ জনের।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন বলেন, ছিঁড়ে পড়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও তার দুই শিশুসন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পানির মধ্যে পড়ে রয়েছে। পাশে লেবুগাছ রয়েছে। প্রথমে শিশু ছেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তাকে রক্ষা করতে মা ও বোন গিয়ে তারাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। দায়িত্বে অবহেলায় এ ঘটনা ঘটলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা জানান, বিদ্যুতের লোকদের বলা হয়েছিল লেবু বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া তার যেকোনো সময় ছিঁড়ে পড়তে পারে; কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ বাকেরগঞ্জ জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, ঘটনা তদন্তে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের আজ রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


banner close