বঙ্গোবসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ায় তা ‘রেমালে’ পরিণত হয়েছে। আজ রোববার মধ্যরাতে এটি আঘাত হানার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। এ জন্য দেশের ছয় জেলাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। এ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও ভূমি অতিক্রমের সম্ভাব্য এলাকার ভিত্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা।
গতকাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ঘূর্ণিঝড়সহ সব দুর্যোগে তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় আমরা যথাসময়ে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের দুর্দশা লাঘব এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কমাতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘূর্ণিঝড়টিও যাতে একই ধারাবাহিকতায় সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারি তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’
প্রতিমন্ত্রী মুহিববুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। উপকূলবর্তী সব জেলাকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও সম্ভাব্য ভূমি অতিক্রম এলাকার ভিত্তিতে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা জেলাসমূহকে অধিকতর প্রস্তুত থাকার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে এই ঝড়টির বিষয়ে আমরা খোঁজখবর রাখছি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিয়মিতভাবে পূর্বাভাস দিচ্ছে এবং আগাম কার্যাবলি (অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন) ও সাড়া প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করছে। আমরা ভারতে অবস্থিত আঞ্চলিক বিশেষায়িত আবহওয়া কেন্দ্রের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এর পাশাপাশি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক পূর্বাভাস মডেল নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সময়োপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করছি।’
সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়টি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এনডিআরসিসি ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ কার্যক্রম প্রেরণ শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৭৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কয়েক দিন যাবৎ মাঠে আগাম সতর্কবার্তা প্রচারসহ আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন ও প্রস্তুতের কাজ করছে। মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ও সাইক্লোন আর্লি অ্যাকশন প্রটোকল অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক আগাম কার্যক্রম শুরু করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের গতি-প্রকৃতি এবং আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক বিপদ সংকেত জারি করা মাত্র মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে। দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি অনুযায়ী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো কার্যকর হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সভায় কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেগুলো হলো আগাম সতর্কতার বিজ্ঞপ্তি প্রচার ও জনগণকে সচেতন করা, আগাম মানবিক কার্যাবলি গ্রহণ করা, মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় ও বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিসমূহের সভা অনুষ্ঠান, সব পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা, আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য এবং গো-খাদ্যের ব্যবস্থা করা, জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ। দুর্যোগ তথ্য পাওয়ার জন্য টোল ফ্রি ১০৯০ ব্যবহারের কথা বলা হয় সভায়। দৈনিক বাংলার বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানোর সংবাদের ভিত্তিতে ‘রেমাল’ নিয়ে বিভিন্ন জেলার প্রস্তুতির সম্পর্কে জানা গেছে নানা তথ্য।
পিরোজপুর: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর জন্য পিরোজপুরে প্রস্তুত করা হয়েছে ৫৬১ টি ঘূর্ণিঝড়ের আশ্রয়কেন্দ্র। যার মধ্যে ২৯৫ টি সাইক্লোন শেল্টার এবং ২৬৬ টি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এই আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক সাইফ-মিজান সভাকক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান এ তথ্য দেন।
সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান আরও জানান, ঘূর্নিঝড় রেমাল মোকাবিলায় একটি জেলা প্রশাসন থেকে একটি কন্টোলরুমসহ প্রতিটি উপজেলায় একটি টিম করা হয়েছে, ৬৫ টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে, ২ লাখ ৬৩ হাজার পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেজ মজুত রাখা হয়েছে, ঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ১৩৫০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ৬১১ মে. ট. চাল ও নগদ ৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও দুর্যোগ পরিবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর মেরামতের জন্য ৯৭ বান্ডিল টিন রয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় রেডক্রিসেন্টের ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক ও সিপিপি ২৪২০ জন সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। রেমালের প্রভাবে পিরোজপুরের নদীসমূহে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি পানি দেখা গেছে এবং জেলার কয়েক স্থানে হালাকা বৃষ্টি পড়েছে।
বরগুনা: বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গোমট আবহাওয়া বিরাজসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরের বাসিন্দারা। শনিবার জেলার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত তিন ফুট বেড়েছে বলে জানান নদী তীরের বাসিন্দারা। বরগুনা সদর উপজেলার বড়ইতলা এলাকায় গেলে দেখা যায়, পানিতে এখানকার বেড়িবাঁধের বাহিরের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এখানে আশ্রয়কেন্দ্রের স্বল্পতা রয়েছে। তাই যা আছে তাতে সকলের স্থান সংকুলান হয় না। বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। সভার মাধ্যমে আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এদিকে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ড জেলার বিভিন্ন স্থানে এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এবং এসব বাঁধ ভেঙ্গে গেলে তা তাৎক্ষণিকভাবে মেরামতের জন্য ৮০০ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জানানো হয়েছে। জেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় বরগুনায় ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা মোহা. রফিকুল ইসলাম। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনসহ সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বরগুনায় ৩টি মুজিব কেল্লা, ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যারা ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করবেন। এ ছাড়া ৪২২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য, ৩৭ লাখ নগদ অর্থ প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৪২ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। দুর্যোগ প্রস্তুতি সভায় জেলা এনজিও ফোরামের সভাপতি মোতালেব মৃধা, প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তফা কাদের, রেডক্রিসেন্ট, দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাদের প্রস্তুতির বিষয় তুলে ধরেন।
মোংলা: ‘রেমাল’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে রোববার সন্ধ্যায় সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মোংলা আবাহওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ জানান, এটি বর্তমান যেই অবস্থান দেখাচ্ছে তাতে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি বাংলাদেশের ওপর দিয়েই অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সুন্দরবন এলাকা এবং বরিশালের পটুয়াখালী, বরগুনা, ও ভোলা জেলায় রেমাল এর আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় এরই মধ্যে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সব রকম সতর্কমূলক প্রস্তুতি নিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। কোস্ট গার্ড, নৌ বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে শনিবার দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে জরুরি বৈঠক করা হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার সাইফুর রহমান বলেন, মোংলা বন্দরে এই মুহূর্তে সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার, সার, পাথর ও গ্যাসবাহী ছয়টি জাহাজ অবস্থান করেছে। সেগুলোকে নিরাপদে নোঙ্গর করতে বলা হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় সব রকম প্রস্ততি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসনও। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, ১০৩ টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ১৩২০জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকে ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের কার্যক্রমের গতি বাড়ানো হবে। কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।
এদিকে মোংলা উপকূলে সচেতনতামূলক মাইকিং করেছে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। শনিবার সকাল থেকে ঘণ্টাব্যাপী মোংলার পশুর বিভিন্ন স্থানে এ প্রচার মাইকিং করা হয়।
মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. মুনতাসীর ইবনে মহসীন জানান, সকাল থেকে সুন্দরবন লাঘোয়া মোংলা উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় প্রচার মাইকিং করেন কোস্ট গার্ড সদস্যরা।
বাগেরহাট: ঘূর্ণিঝড় রেমাল ধেয়ে আসার খবরে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাস করা মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। তবে সকাল থেকে আকাশ কখনো রোদ আবার কখনো মেঘাচ্ছন্ন হচ্ছে। নদীতে থাকা মাছ ধরা ট্রলার গুলো উপকূলের ছোট ছোট খালে আশ্রয় নিয়েছে। কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে জনসচেতনামূলক প্রচার-প্রচারণা। এরই মধ্যে রেমাল মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় বাগেরহাটে ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ও ৩ হাজার ৫শ ৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৬৪৩ মেট্রিকটন চাল ও ৫লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিলের পাশাপাশি উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেরিবাধ এলাকায় গুলো নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
পটুয়াখালী: জেলায় রেমাল মোকাবেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতি মূলক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের দরবার হলে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক যাদব সরকার। জেলা সিভিল সার্জন ডা. এসএম কবির হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার যোবায়ের আহাম্মেদ।
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া রিদয়, সিপিপি, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক জানান দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় ৭০৩ টি সাইক্লোন শেল্টার ৩৫টি মুজিব কিল্লা, ৭৩০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লক্ষ টাকার শিশু খাদ্য, ১০ লাখ টাকার গোখাদ্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড় শুকনা খাবার রয়েছে ১৫০০ প্যাকেট। নগদ টাকা রয়েছে ২৪ লাখ ৭ হাজার টাকা ৫০০ টাকা।
এ সময় মানুষকে সচেতন ও দুর্যোগে উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপির ৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকাসহ বিদ্যুৎ বিভাগ সড়ক বিভাগ ফায়ার সার্ভিসকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।
জেলায় মোট ৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন, ঔষধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সংরক্ষিত রয়েছে। জেলায় ১৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দুর্যোগের সময় কোথাও ভাঙন দেখা দিলে তা মেরামতের জন্য ১৬ হাজার জিও ব্যাগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে জেলায় ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে রয়েছে মুগ ডাল এবং ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়ের বলেন গুজোব মোকাবেলার জন্যে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
এদিকে কলাপাড়া উপকূলীয় অঞ্চলের জনগন, মৎস্যজীবি ও নৌযান সমূহকে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম শুরু করেছে নিজামপুর কোষ্টগার্ড। শনিবার সকাল নয়টায় মৎস্য বন্দর আলীপুর- মহিপুরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরন করে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। এসময় তারা খাপড়াভাঙ্গা নদীতে অবস্থানরত ট্রলার সমূহে থাকা জেলেদের ঘূর্নিঝড়ের সময় করনীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেন।
ঝালকাঠি: জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম। এ সভায় পুলিশ সুপার, স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য, শিক্ষা, দপ্তরের প্রধানগন এবং বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ, রেডক্রিসেন্টসহ জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যোগ দেন।
সভায় জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। এই কয় দিন সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্টেশন ত্যাগ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় নির্ধারিত সাইক্লোন শেল্টারসহ আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য সহ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে কৃষকের চাহিদা কম থাকায় ডিলারদের ঘরে দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ইউরিয়া সার। এতে তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন।
কিন্তু ডাই এনোমোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও প্রয়োজনীয় সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে ডিলার ও কৃষকদের মাঝে এক প্রকার হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা সহ নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, খানিকটা উঁচু এলাকা হওয়ায় গোয়ালন্দ উপজেলায় রবি মৌসুম শুরু হয়েছে চলতি বছরের অক্টোবর মাস থেকে। যা চলবে আগামী ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। এ অঞ্চলের কৃষকরা সবজি, মাছের খামার, কলা বাগান সহ নানা ধরনের ফসলের আবাদে ডিএপি সার বেশি ব্যবহার করছেন।
কৃষকরা জানান, জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগের পর কার্যকারিতা থাকে সর্বোচ্চ ১০দিন। এ সারে থাকে শুধু নাইট্রোজেন। সেখানে ডিএপি সারের কার্যকারিতা থাকে অন্তত ৩ মাস। এ সারের মধ্যে ইউরিয়া ও টিএসপির সংমিশ্রণ থাকে। যে কারনে তারা এই সার ব্যবহার করতে অধিক আগ্রহী।
গোয়ালন্দ উপজেলায় সরকার নিযুক্ত বিসিআইসি ডিলাররা জানান, কৃষকের চাহিদা বিবেচনায় এনে তারা গত সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলার ৫ জন বিসিআইসি ডিলারের জন্য ৫০০ মেট্রিক টন এবং বিএডিসি'র ৪ জন ডিলারের জন্য ২০০ মেট্রিক টন ডিএপি সারের চাহিদা জানিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে রাজবাড়ীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিডি'র কাছে লিখিত আবেদন করেন।
বিষয়টি অক্টোবর মাসের জেলা সার ও বিজ মনিটরিং সভায় আলোচনা ও রেজুলেশন ভুক্ত করা হয়।
কিন্তু অক্টোবর মাসে তাদের চাহিদা অনুযায়ী সার না দিয়ে কতৃপক্ষ তাদের ৯ ডিলারকে সমবন্টন করে সর্বমোট মাত্র ২১২.৭৫ মেট্রিক টন ডিএপি সার বরাদ্দ দেয়।
ঘাটতি মেটাতে আশপাশের কম চাহিদা সম্পন্ন উপজেলা হতে এনে বিক্রির অনুমতি চাইলেও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাতে সায় দেননি। তারপর থেকে এভাবেই ডিএপি'র সংকট চলছে।
এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে খুচরো পর্যায়ে কোন কোন বিক্রেতা অধিক মূল্যে ডিএপি বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তার দায়ভারও বিসিআইসি ডিলারদের উপর চাপানোর চেষ্টা চলছে।
ডিলাররা জানান, প্রয়োজন না থাকলেও তাদের ৫ জন বিসিআইসি ডিলারকে প্রতি মাসে মোট ২৭৭ মেট্রিকটন করে ইউরিয়া সার দেয়া হচ্ছে। এর অন্তত ৩০ শতাংশ সার অবিক্রীত অবস্হায় প্রতিমাসে গুদামে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
সরেজমিন আলাপকালে গোয়ালন্দ বাজারের বিসিআইসি ডিলার মেসার্স নুরুজ্জামান মিয়ার স্বত্বাধিকারী হোসনে জামান বলেন, নভেম্বর মাসে তার বরাদ্দ ১২৪০ বস্তা হতে এখনো পর্যন্ত অবিক্রীত পড়ে রয়েছে ৯৮৪ বস্তা।
মেসার্স হোসেন আলী বেপারির প্রতিনিধি (ছেলে) ওহিদুল ইসলাম বলেন, নভেম্বর মাসে তার ইউরিয়ার সরবরাহ ছিল ৬২ মেট্রিক টন। বিক্রি বাদে এখনো ৭০০ বস্তা বা ৩৫ টন গুদামে পড়ে রয়েছে।
মেসার্স সপ্তবর্ণা ট্রেডার্স এর প্রতিনিধি প্রনব কুমার দাস জানান, গত ৪ মাসে তাদের গুদামে ৭৬ বস্তা অবিক্রীত ইউরিয়া সার দলা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। খুচরো হিসেবে ১৩২৫ টাকা বস্তা দরে এতে তাদের লোকসান হয়েছে ১ লক্ষাধিক টাকা।
মেসার্স স্বপন কুমার সাহার স্বাত্তাধিকারী পলাশ কুমার সাহা বলেন, ইউরিয়া সারের সরকারী ডিলার মূল্য ১২৫০ টাকা বস্তা। সাব ডিলারদের কাছে আমাদের ১৩২৫ টাকা বস্তা বিক্রি করার কথা। কিন্তু গুদামে থেকে নষ্ট হওয়ার ভয়ে বিক্রি করছি ১২৮০ টাকা করে । অথচ ডিএপির ব্যাপক চাহিদা থাকলেও দিতে পারছি না।
ডিলাররা আরও জানান, এভাবে প্রত্যেক ডিলারের ঘরেই ইউরিয়া সার অবিক্রিত অবস্হায় পড়ে আছে।
এর মধ্যে নতুন করে আবার ডিসেম্বরের জন্য ডিলার প্রতি ১১২০ বস্তা করে ৫৬০০ বস্তা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এমতাবস্থায় তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। প্রতি মাসে বরাদ্দকৃত সার না তুললে তাদের লাইসেন্স বাতিলেরও ঝুঁকি রয়েছে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রায়হানুল হায়দার বলেন, এ উপজেলায় মোট আবাদি জমি ও তাতে সার ব্যবহারের নির্দিষ্ট পরিমান হিসেব করে সরকার বিভিন্ন ধরনের সারের বরাদ্দ দিয়ে থাকে। গোয়ালন্দের অনেক কৃষক কৃষি বিভাগের অনুমোদিত পরিমানের চাইতে বেশি পরিমানে ডিএপি সার ব্যবহার করে। যে কারনে এখানে ডিএপি'র ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কৃষকদের আরো সচেতন হতে হবে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) ড. মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, এ জেলায় ডিএপি সারের কোন ঘাটতি নেই। সারের চাহিদা উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে নেয়া হয়। গোয়ালন্দে ডিএপি'র ঘাটতির বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিলারের গুদামে পড়ে থাকা ইউরিয়া সার চলমান রবি মৌসুমে শেষ হয়ে যাবে আশা করছি।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে দ্বিতীয় দিন কর্মবিরতি পালন করছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সরজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি ও ফার্মেসির সামনে রোগীদের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে আগত রোগীরা। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে প্যাথলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা সকাল ৮ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত কর্মদিবস বন্ধ ঘোষণা করে ব্যানার টাঙ্গিয়ে অর্ধদিবস পালন করছে।
বেশ কয়েকজন রোগী আক্ষেপ করে বলেন, সকাল ৯টার পর হাসপাতালে এসেছি। টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে ডাক্তার দেখানোর পর পরীক্ষা দিলে প্যাথলজিতে গিয়ে পরীক্ষা করাতে পারছি না। প্যাথলজিতে লোক নেই। প্যাথলজির লোক হাসপাতালের বাইরে ব্যানার টাঙ্গিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে। তারা আরো বলেন, মেডিসিন কর্নারে গিয়েও কোন লোক পাওয়া যায়নি। দরজা তালাবন্ধ।এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদের। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এমনকি সেবা না পেয়ে সকাল থেকে নিরলস বসে থাকতে হয় হাসপাতাল চত্বরে অনেক রোগীকে।
কর্মবিরতি পালন সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আমিরুল ইসলাম রনী ও ফার্মাসিস্ট প্রদীপ দাস বলেন, আমরা নিরলসভাবে উপজেলার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছি। সেই তুলনায় আমাদের মূল্যায়ন করা হয় না। আমরা ১০ম গ্রেড পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য। এজন্য ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। ৩০ নভেম্বর থেকে নির্ধারিত সময় ধরে আমাদের কর্মবিরতি চলছে। ৩ নভেম্বর আমরা অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছি।
মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা বলেন, আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা ৪ ডিসেম্বর থেকে শাট ডাউন কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সারা দেশের মতো কুমিল্লার মুরাদনগরেও তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছেন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলার সব স্কুলে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষকরা উপজেলা শিক্ষা অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এসময় শিক্ষকরা ঘোষণা দেন, তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত এই শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।
তিন দফা দাবিগুলো হলো - বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান সংশ্লিষ্ট জটিলতার সমাধান ও সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, মুরাদনগরের সভাপতি
জামাল হোসেন, উপজেলা মডেল সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেন, দৌলতপুর পূর্ব সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন- সহকারী শিক্ষক সৈকত জামান দোলন, আব্দুল জলিল, সামছুন্নাহার, শারমিন ফাতেমা, জান্নাতুল ফেরদৌস, মাসুমা আক্তার, ওমর ফারুক, রঞ্জন কুমার পোদ্দার।
উপস্থিত ছিলেন— প্রশিক্ষক মহিউদ্দিন, ফাইজুর মনির, মনির শিকদার, বাবুল আক্তার, মোশাররফ হোসেন, মজিবুর রহমান, কামরুল হাসান, রায়হান, আলাউদ্দীন, সুমন, শফিকুল ইসলাম, আব্দুল বাতেন, আতিকুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, নির্মল, আলেকজান্ডার, তাসলিমা আক্তার, লুৎফা বেগম, রহিমা আক্তার, কানন, সৈয়দা নার্গিস, রাখি প্রমুখ।
শিক্ষকরা জানান, ২০৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সব শিক্ষকই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।
তাদের ভাষ্য, দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়নে যখনই গড়িমসি দেখা যায়, তখনই আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হই। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত শাটডাউন চলবে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় চোরাচালানবিরোধী অভিযান চালিয়ে মালিকবিহীন অবস্থায় ৩ লাখ ২ হাজার টাকার ভারতীয় সিগারেট আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার সীমান্তবর্তী দত্তগ্রাম এলাকা থেকে সিগারেটগুলো জব্দ করে শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি)।
শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দত্তগ্রাম সীমান্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় মালিকবিহীনভাবে ফেলে রাখা অবস্থায় ভারতীয় এসব সিগারেট উদ্ধার করা হয়।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় চোরাচালানবিরোধী অভিযান চালিয়ে মালিকবিহীন অবস্থায় ৩ লাখ ২ হাজার টাকার ভারতীয় সিগারেট আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার সীমান্তবর্তী দত্তগ্রাম এলাকা থেকে সিগারেটগুলো জব্দ করে শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি)।
শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দত্তগ্রাম সীমান্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় মালিকবিহীনভাবে ফেলে রাখা অবস্থায় ভারতীয় এসব সিগারেট উদ্ধার করা হয়।
নীলফামারীতে রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ছকত আলী (৬৭) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
৩ ডিসেম্বর (বুধবার) ভোর চারটায় নীলফামারী-সৈয়দপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের বনফুল মোড়ে এই দূর্ঘটনা ঘটে। নিহত ছকত আলী সদর উপজেলার পুর্ব কুখাপাড়া এলাকার মৃত. জসির উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, শহরের একটি আবাসিক হোটেলের নাইট ডিউটি শেষে বাড়ি ফিরছিলেন ছকত আলী (৬৭)। রাতের অন্ধকারে বনফুল এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম.আর সাঈদ বলেন, দুর্ঘটনার পর চালক ট্রাকটি নিয়ে পালিয়ে যায়। ট্রাকটি শনাক্তের চেষ্টা চলছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে রাতের আধারে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৩০ জন বাংলাদেশিকে পুশ-ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
৩ ডিসেম্বর (বুধবার) রাতে সিমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করে হেফাজতে নেয় বিজিবি। পুশ-ইন হয়ে আসা ব্যক্তিরা দেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।
পরে তাদের পরিচয় যাচাই বাছাই শেষে গাংনী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
গাংনী থানার ওসি বানি ইসরাইল জানিয়েছেন, ৩ ডিসেম্বর (বুধবার) রাতে তেঁতুলবাড়িয়া সিমান্ত এলাকার ১৪০/৬ এস পিলারের আনুমানিক ১০০ গজ ভেতরে ৩০ জন বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। সিমান্ত এলাকা থেকে রাতেই তাদের হেফাজতে নেয় বিজিবি।
আটককৃত ব্যক্তিরা দালালের মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে বসবাস করছিল।
পরবর্তীতে ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়ে কলকাতা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ফিরিয়ে দেয় বিএসএফ।
পুশ-ইন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ, ১০ নারী ও ৪ শিশু রয়েছে। বিজিবি ৩০ জনকে থানায় সৌপর্দ করেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পুশ-ইন হয়ে আসা ব্যক্তিদের স্ব-স্ব পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
‘প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তিমূলক, সামাজক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে নওগাঁয় ৩৪তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস এবং ২৭তম জাতীয় প্রতিবন্ধী পালিত হয়েছে।
৩ ডিসেম্বর (বুধবার) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি র্যালি বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নূর মোহাম্মদ এর সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাসুদুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এহসানুর রহমান ভূঁইয়া, ডেপুটি সিভিল সার্জন মুনির আলী আকন্দ, নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রায়হান আলম, আশার আলো অটিষ্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. অছিম উদ্দিন।
পরে প্রতিবন্ধী শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ ও হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়।
ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশের অভিযোগে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের উপকূলীয় এলাকা থেকে বাংলাদেশি মাছ ধরার দুটি ট্রলার আটক করেছে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। এই দুটি ট্রলার থেকে মোট ২৮ বাংলাদেশি জেলেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত বাংলাদেশি জেলেরা দুটি ট্রলারে টানা ১৫ দিন ধরে সমুদ্রে ভাসছিলেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ৩০ নভেম্বর (রোববার) রাতে ‘এফ বি আল্লাহ মালিক’ নামের একটি বাংলাদেশি ট্রলার ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশ করার অভিযোগ উঠে। পরে ট্রলারের জেলেদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। এই ঘটনায় নথিপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বাংলাদেশি ট্রলার ও জেলেদের আটক করা হয়।
১ ডিসেম্বর (সোমবার) সকালের দিকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানা পুলিশের কাছে বাংলাদেশি ওই জেলেদের হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ বলছে, আটক বাংলাদেশি জেলেরা সুস্থ আছেন।
অন্যদিকে, দেশটির অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার এচেরলা মণ্ডলের মোসাভানিপেটা উপকূলের কাছে বাংলাদেশি ১৩ জেলেকে আটক করেছে শ্রীকাকুলাম জেলার উপকূলরক্ষী বাহিনী। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, বাংলাদেশের ভোলা জেলার এই ১৩ জেলে সমুদ্রে মাছ ধরতে বের হন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভুলবশত সমুদ্রসীমা অতিক্রম করে ট্রলারসহ ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়েন তারা।
৩০ নভেম্বর (রোববার) স্থানীয় জেলেরা মোসাভানিপেটা উপকূলের কাছে তাদের নৌকা নোঙর করার পর এই বাংলাদেশি জেলেদের দেখতে পান এবং তারা স্থানীয়দের কাছে সাহায্য চান। স্থানীয়রা প্রথমে অভুক্ত জেলেদের উদ্ধার করে খাবার, পানি, ওষুধ সরবরাহ করেন এবং পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে মেরিন পুলিশ সার্কেল ইন্সপেক্টর পি প্রসাদ রাও এবং স্থানীয় পুলিশের উপপরিদর্শক জি. লক্ষ্মণ রাও দ্রুত উপকূলে পৌঁছান। প্রাথমিকভাবে তাদের ভাষা ও পোশাক দেখে বাংলাদেশি বলে শনাক্ত করা হয়। ভাষাগত সমস্যার কারণে যোগাযোগের অসুবিধা হলেও স্থানীয় কয়েকজন জেলের সহায়তায় পুলিশ তাদের কাছ থেকে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। মাঝ-সমুদ্রে গত প্রায় ১৫ দিন ধরে তারা ভাসছিলেন বলে জানিয়েছেন।
পরে উপকূলরক্ষী বাহিনী এই জেলেদের আটক করে পরবর্তী তদন্তের জন্য কলিঙ্গপত্তনম থানায় হস্তান্তর করে। ভারতীয় জলসীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে কলিঙ্গপত্তনম থানা পুলিশ জানিয়েছে।
আটক জেলেরা হলেন, সজীব (২১), জাহাঙ্গীর (৩৫), সাব্বির (২৫), খোকন (৩২), মাকসুদ (৪০), মালিক (৮০), মো. ফারুক (৫৫), মাকসুদ (৫০), নাসির (৬৫), হেলাল (২৮), ফারুক (৫০), আলম (৪৬) ও শামীম (২১)। তাদের সবাই বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলার বাসিন্দা।
কলিঙ্গপত্তনম মেরিন সার্কেল ইন্সপেক্টর বি. প্রসাদ রাও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশি নাগরিক। ট্রলারে কারিগরি ত্রুটির কারণে তারা আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমা অতিক্রম করেছিলেন।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে খাবারের অভাবে শারীরিকভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েছেন ওই বাংলাদেশিরা। আমরা তাদের আটক করে প্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করেছি এবং পরে মেরিন থানায় হস্তান্তর করেছি।
চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর বিএমএ স্পেশাল কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সেনাবাহিনীকে একটি প্রশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল এবং আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। প্রশিক্ষণ সমাপনকারী ক্যাডেটদের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেছেন, ‘শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে সদ্য কমিশন পাওয়া অফিসারদের ওপর ন্যস্ত হলো দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব।’
বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমির (বিএমএ) ৮৯তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্স এবং ৬০তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ২ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) চট্টগ্রামের ভাটিয়ারির বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। সেনাবাহিনী প্রধান, এসবিপি, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও প্যারেডের অভিবাদন গ্রহণ করেন। পাশাপাশি কৃতী ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। শেষে অ্যাকাডেমির কমান্ড্যান্ট, সংশ্লিষ্ট সকল অফিসার, জেসিও, এনসিও, সৈনিক এবং অসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
কুচকাওয়াজের মাধ্যমে ৮৯তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সর্বমোট ১৮৪ জন অফিসার ক্যাডেট ও ৬০তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সের ২০ জন অফিসার ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। কমিশনপ্রাপ্ত নবীন সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৮৩ জন পুরুষ ও ২১ জন নারী। কোম্পানি সিনিয়র আন্ডার অফিসার আজমাইন ইশরাক ৮৯তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সেরা চৌকস ক্যাডেট হিসেবে অসামান্য গৌরবমণ্ডিত ‘সোর্ড অব অনার’ এবং সামরিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য ‘সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক’ অর্জন করেন। পরে প্রশিক্ষণ সমাপনকারী ক্যাডেটরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ করেন। এরপর অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দ এবং প্রশিক্ষণ সমাপনকারী ক্যাডেটদের বাবা-মা ও অভিভাবকরা নবীন অফিসারদের র্যাঙ্ক-ব্যাজ পরিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছালে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড; জিওসি ২৪ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার চট্টগ্রাম এরিয়া এবং বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমির কমান্ড্যান্ট তাকে অভ্যর্থনা জানান। অনুষ্ঠানে উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের বাবা-মা ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
সেনাবাহিনীই পারে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। এ মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, আদিবাসী বা পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার মূল চাবিকাঠি আমি মনে করি সেনাবাহিনীর হাতে। পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্তৃত্বাধীন। তারাই (সেনাবাহিনী) পারে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে।
২ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুরে ধানমন্ডির মাইডাস ভবনে টিআইবির নিজ কার্যালয়ে ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
সেনাবাহিনীর উদ্দেশে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা দেখতে চাই, তারা (সেনাবাহিনী) চেষ্টা করে দেখাক যে, তারা শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। যে বিভাজন ও শাসন চলমান রয়েছে, সেটা থেকে সরে এসে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সত্যিকারের অঙ্গীকার এবং ফ্যাক্ট বা ঘটনাভিত্তিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে যদি তারা উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে তাদের দ্বারা সম্ভব।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এখন যে প্রচারণা দেখছেন, সম্প্রতি এক বা একাধিকবার বলেছি, সরকারকে সুনির্দিষ্টভাবে ও লিখিতভাবে অবহিত করেছি যে, এখন হচ্ছে সময় তাদের (সেনাবাহিনী) আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের পরীক্ষা করা, পরীক্ষা দেওয়া। সারা বিশ্বে ১৬৯টা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রমে অত্যন্ত গৌরবের সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভূমিকা রেখেছে। এটার জন্য আমিসহ পুরো দেশের জনগণ গর্বিত। এই মুহূর্তে অন্তত ১০টা দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শান্তি প্রতিষ্ঠায় কর্মরত আছে এবং উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছে।
তাহলে এখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মূলত তাদের কর্তৃত্বাধীন একটা অঞ্চলে (বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল) কেন শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হবে না– এমন প্রশ্ন তুলে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সেই প্রশ্নের জবাব সেনাবাহিনীকেই দেওয়া উচিত। নিজেদের জন্য, তাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা, ক্রেডিবিলিটি, মর্যাদা ও সম্মানকে আরও উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার একটা সুযোগ।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, তারা (সেনাবাহিনী) সরকারের সহায়তায় নয়, নিজেদের উদ্যোগেই পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, যদি তাদের (সেনাবাহিনী) সে সদিচ্ছা থাকে তাহলে পার্বত্য শান্তিচুক্তির প্রতিটি ধারা বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে আমি মনে করি। সর্বশেষ ক্ষমতাধর ও ইতিহাসে সবচেয়ে কর্তৃত্ববাদী সরকার গত ১৫ বছর ছিল বাংলাদেশের ক্ষমতায়, তারাও পারেনি। তাদের দ্বারা সেটা সম্ভবও ছিল না।
তিনি সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা রেখে বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সে সক্ষমতা আছে। তারা চাইলে সত্যিকার অর্থে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে দেশ-বিদেশে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গবেষণা ফেলো রাজিয়া সুলতানা। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা ও নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) মুহাম্মদ বদিউজ্জামান, পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) তৌহিদুল ইসলাম।
উৎপাদনে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এবার পেঁয়াজ আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ভারতীয় রপ্তানিকারকরা। সেই সঙ্গে বছরের শেষ সময়ে এসে নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলা জাতীয় এ পণ্যটি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে যারা ব্যবসায় করে আসছিলেন তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ভেঙে গেছে সিন্ডিকেট চক্রের ব্যবসাও।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সীমান্তে অন্তত ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ এখন পচনের মুখে। বিশাল ক্ষতি এড়াতে ২ রুপি কেজিতে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এর সত্যতা মিলেছে আমদানিকারকদের বক্তব্যেও। তারা বলছেন, এতে শুধু ভারতের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, বাংলাদেশের অন্তত ৩০-৪০ জন বড় ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক বলেন, ক্ষতির কথা বলে শেষ করা যাবে না। কেন যে সরকার ব্যবসায়ীদের এমন ক্ষতির মধ্যে ফেলেছে তা বোধগম্য নয়।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সহ-সভাপতি ও আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে। কেননা, তারা অগ্রিম অর্ডার করে সীমান্তেও নিয়ে এসেছিল হাজার হাজার টন পেঁয়াজ। শেষ পর্যন্ত সরকার আইপি না দেওয়ায় তা খালাস করতে পারেনি। ভবিষ্যতের জন্য এটা খুব খারাপ নজির স্থাপন হয়েছে।
তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এটা উভয় দেশের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্রের জন্য বড় বার্তা। ভবিষ্যতে ইচ্ছা করলেই কোনো বিশেষ গোষ্ঠী দেশের সাধারণ ভোক্তাকে জিম্মি করতে পারবে না।
এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (মনিটরিং ও বাস্তবায়ন) ড. জামাল উদ্দীন বলেন, এর আগে ঢাকার শ্যামবাজার, বাবুবাজার, দিনাজপুরের হিলি ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বেশকিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বছরের শেষ সময়ে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে ভারত থেকে আমদানিতে বাধ্য করত। এক্ষেত্রে ভারতেও এক ধরনের রপ্তানি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল। কিন্তু এবার আমাদের দেশের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের হাতে ছিল বাজার নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি। সিন্ডিকেট যখনই দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেছে তখনই কৃষকরা তাদের হাতের পেঁয়াজ ছেড়ে দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করেছে।
জামাল উদ্দীন বলেন, এখন আমরা উৎপাদনে স্বাবলম্বী, ফলে আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের অনেক চাপ থাকলেও আমরা এ বিষয়ে দৃঢ় ছিলাম। শেষ পর্যন্ত প্রমাণ হলো সিন্ডিকেট চক্র কৃত্রিম সংকট তৈরি করেই পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা করেছিল।
জামাল উদ্দীন আরও বলেন, ২৮ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে গত মৌসুমে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৪৪ লাখ টন; এখনো মার্কেট প্রসেসে ও কৃষকের হাতে তিন লাখেরও বেশি পুরাতন পেঁয়াজ রয়েছে। এরই মধ্যে ৭০-৮০ হাজার টন গ্রীষ্মকালীন বাজারে এসেছে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আরো আড়াই লাখ টন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসবে। ফেব্রুয়ারিতে তো মৌসুমের পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে।
গত বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, আমদানিকারকদের চাপ থাকলেও কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় এবার পেঁয়াজ আমদানি না করার সিদ্ধান্ত বদল করা হবে না। যদিও এর আগেই পেঁয়াজ আমদানির জন্য দুই হাজার ৮০০টি আবেদন পড়েছিল কৃষি মন্ত্রণালয়ে। তবে কোনো আবেদনই আমলে নেওয়া হয়নি। শেষপর্যায়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও কৃষি মন্ত্রণালয়কে আমদানির জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয় অনঢ় অবস্থানে থাকায় আমদানির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার।
ফলে ঘোজাডাঙ্গা, পেট্রাপোল, মাহাদিপুর ও হিলি সীমান্তে কোটি কোটি টাকার পেঁয়াজ পচতে শুরু করেছে। হিলি ও সোনা মসজিদ এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার মাহাদিপুর-সোনামসজিদ সীমান্তে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র দুই রুপিতে। ৫০ কেজির এক বস্তা পেঁয়াজ মিলছে মাত্র ১০০ রুপিতে। অথচ নাসিক থেকে ১৬ রুপি দরে কেনা এসব পেঁয়াজ পরিবহন ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে সীমান্তে পৌঁছাতে খরচ পড়েছিল ২২ রুপি। সে পেঁয়াজ এখন প্রায় বিনামূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে। রপ্তানিকারকদের দাবি, বাংলাদেশ হঠাৎ আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশি আমদানি-রপ্তানি গ্রুপ এক নোটিসে জানায়, বাংলাদেশের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভারতীয় পেঁয়াজের ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) সীমিত করেছে। অথচ বছরের এ সময়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা সব সময় বেশি থাকে এবং বর্তমানে দেশে প্রতি কেজি পেঁয়াজ প্রায় ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দুই দিনে একটি কারখানার প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা ঢাকা মহাখালী কলেরা হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত উপজেলার পূর্ব চান্দরা কাঠালতলী এলাকার ওই কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও কারখানার শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্ব চান্দরা কাঠালতলী এলাকায় ময়েজ উদ্দিন টেক্সটাইল নামক একটি পোশাক তৈরি কারখানা রয়েছে। প্রতিদিনের মতো গত সোমবার সকালে ওই কারখানায় কাজে যোগদান করেন শ্রমিকরা। কিন্তু ওইদিন সন্ধ্যার পরেই ওই কারখানার কয়েকজন শ্রমিক হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ শ্রমিকদের উদ্ধার করে স্থানীয় সফিপুর তানহা হেল্থ কেয়ার নামে একটি হাসপাতালে ভর্তি করে তাদের সহকর্মীরা। তবুও কারখানা ছুটি দেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিনের মতো পরের দিন মঙ্গলবার সকালে কাজে যোগ দেন ওই কারখানার শ্রমিকরা। ওইদিনও আরও বেশ কিছু শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ শ্রমিকদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এদিকে গত দুই দিনে ওই কারখানার প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই ঢাকা মহাখালী কলেরা হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে ওই কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। তবে তাৎক্ষণিকভাবে অসুস্থ হওয়ার কারণ জানাতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ।
ওই কারখানার ডেপুটি ম্যানেজার মমিনুল ইসলাম জানান, ‘আমাদের শ্রমিকরা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন সুস্থ আছেন। তবে এ ঘটনায় শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লে ইতোমধ্যেই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম ফখরুল ইসলাম জানান, ‘এখানে আমি নতুন যোগদান করেছি। এ জন্য বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’