মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় জেলায় জেলায় প্রস্তুতি

মোংলায় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সচেতন করতে কোস্টগার্ডের মাইকিং। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
২৬ মে, ২০২৪ ০৫:১৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০২৪ ০৫:১৮

বঙ্গোবসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ায় তা ‘রেমালে’ পরিণত হয়েছে। আজ রোববার মধ্যরাতে এটি আঘাত হানার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। এ জন্য দেশের ছয় জেলাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। এ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও ভূমি অতিক্রমের সম্ভাব্য এলাকার ভিত্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা।

গতকাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ঘূর্ণিঝড়সহ সব দুর্যোগে তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় আমরা যথাসময়ে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের দুর্দশা লাঘব এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কমাতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘূর্ণিঝড়টিও যাতে একই ধারাবাহিকতায় সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারি তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’

প্রতিমন্ত্রী মুহিববুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। উপকূলবর্তী সব জেলাকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও সম্ভাব্য ভূমি অতিক্রম এলাকার ভিত্তিতে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা জেলাসমূহকে অধিকতর প্রস্তুত থাকার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে এই ঝড়টির বিষয়ে আমরা খোঁজখবর রাখছি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিয়মিতভাবে পূর্বাভাস দিচ্ছে এবং আগাম কার্যাবলি (অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন) ও সাড়া প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করছে। আমরা ভারতে অবস্থিত আঞ্চলিক বিশেষায়িত আবহওয়া কেন্দ্রের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এর পাশাপাশি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক পূর্বাভাস মডেল নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সময়োপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করছি।’

সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়টি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এনডিআরসিসি ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ কার্যক্রম প্রেরণ শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৭৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কয়েক দিন যাবৎ মাঠে আগাম সতর্কবার্তা প্রচারসহ আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন ও প্রস্তুতের কাজ করছে। মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ও সাইক্লোন আর্লি অ্যাকশন প্রটোকল অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক আগাম কার্যক্রম শুরু করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের গতি-প্রকৃতি এবং আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক বিপদ সংকেত জারি করা মাত্র মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে। দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি অনুযায়ী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো কার্যকর হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সভায় কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেগুলো হলো আগাম সতর্কতার বিজ্ঞপ্তি প্রচার ও জনগণকে সচেতন করা, আগাম মানবিক কার্যাবলি গ্রহণ করা, মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় ও বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিসমূহের সভা অনুষ্ঠান, সব পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা, আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য এবং গো-খাদ্যের ব্যবস্থা করা, জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ। দুর্যোগ তথ্য পাওয়ার জন্য টোল ফ্রি ১০৯০ ব্যবহারের কথা বলা হয় সভায়। দৈনিক বাংলার বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানোর সংবাদের ভিত্তিতে ‘রেমাল’ নিয়ে বিভিন্ন জেলার প্রস্তুতির সম্পর্কে জানা গেছে নানা তথ্য।

পিরোজপুর: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর জন্য পিরোজপুরে প্রস্তুত করা হয়েছে ৫৬১ টি ঘূর্ণিঝড়ের আশ্রয়কেন্দ্র। যার মধ্যে ২৯৫ টি সাইক্লোন শেল্টার এবং ২৬৬ টি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এই আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।

শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক সাইফ-মিজান সভাকক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান এ তথ্য দেন।

সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান আরও জানান, ঘূর্নিঝড় রেমাল মোকাবিলায় একটি জেলা প্রশাসন থেকে একটি কন্টোলরুমসহ প্রতিটি উপজেলায় একটি টিম করা হয়েছে, ৬৫ টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে, ২ লাখ ৬৩ হাজার পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেজ মজুত রাখা হয়েছে, ঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ১৩৫০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ৬১১ মে. ট. চাল ও নগদ ৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও দুর্যোগ পরিবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর মেরামতের জন্য ৯৭ বান্ডিল টিন রয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় রেডক্রিসেন্টের ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক ও সিপিপি ২৪২০ জন সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। রেমালের প্রভাবে পিরোজপুরের নদীসমূহে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি পানি দেখা গেছে এবং জেলার কয়েক স্থানে হালাকা বৃষ্টি পড়েছে।

বরগুনা: বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গোমট আবহাওয়া বিরাজসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরের বাসিন্দারা। শনিবার জেলার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত তিন ফুট বেড়েছে বলে জানান নদী তীরের বাসিন্দারা। বরগুনা সদর উপজেলার বড়ইতলা এলাকায় গেলে দেখা যায়, পানিতে এখানকার বেড়িবাঁধের বাহিরের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এখানে আশ্রয়কেন্দ্রের স্বল্পতা রয়েছে। তাই যা আছে তাতে সকলের স্থান সংকুলান হয় না। বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। সভার মাধ্যমে আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এদিকে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ড জেলার বিভিন্ন স্থানে এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এবং এসব বাঁধ ভেঙ্গে গেলে তা তাৎক্ষণিকভাবে মেরামতের জন্য ৮০০ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জানানো হয়েছে। জেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় বরগুনায় ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা মোহা. রফিকুল ইসলাম। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনসহ সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বরগুনায় ৩টি মুজিব কেল্লা, ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যারা ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করবেন। এ ছাড়া ৪২২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য, ৩৭ লাখ নগদ অর্থ প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৪২ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। দুর্যোগ প্রস্তুতি সভায় জেলা এনজিও ফোরামের সভাপতি মোতালেব মৃধা, প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তফা কাদের, রেডক্রিসেন্ট, দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাদের প্রস্তুতির বিষয় তুলে ধরেন।

মোংলা: ‘রেমাল’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে রোববার সন্ধ্যায় সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মোংলা আবাহওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ জানান, এটি বর্তমান যেই অবস্থান দেখাচ্ছে তাতে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি বাংলাদেশের ওপর দিয়েই অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সুন্দরবন এলাকা এবং বরিশালের পটুয়াখালী, বরগুনা, ও ভোলা জেলায় রেমাল এর আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় এরই মধ্যে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সব রকম সতর্কমূলক প্রস্তুতি নিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। কোস্ট গার্ড, নৌ বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে শনিবার দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে জরুরি বৈঠক করা হয়েছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার সাইফুর রহমান বলেন, মোংলা বন্দরে এই মুহূর্তে সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার, সার, পাথর ও গ্যাসবাহী ছয়টি জাহাজ অবস্থান করেছে। সেগুলোকে নিরাপদে নোঙ্গর করতে বলা হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় সব রকম প্রস্ততি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসনও। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, ১০৩ টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ১৩২০জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকে ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের কার্যক্রমের গতি বাড়ানো হবে। কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।

এদিকে মোংলা উপকূলে সচেতনতামূলক মাইকিং করেছে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। শনিবার সকাল থেকে ঘণ্টাব্যাপী মোংলার পশুর বিভিন্ন স্থানে এ প্রচার মাইকিং করা হয়।

মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. মুনতাসীর ইবনে মহসীন জানান, সকাল থেকে সুন্দরবন লাঘোয়া মোংলা উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় প্রচার মাইকিং করেন কোস্ট গার্ড সদস্যরা।

বাগেরহাট: ঘূর্ণিঝড় রেমাল ধেয়ে আসার খবরে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাস করা মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। তবে সকাল থেকে আকাশ কখনো রোদ আবার কখনো মেঘাচ্ছন্ন হচ্ছে। নদীতে থাকা মাছ ধরা ট্রলার গুলো উপকূলের ছোট ছোট খালে আশ্রয় নিয়েছে। কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে জনসচেতনামূলক প্রচার-প্রচারণা। এরই মধ্যে রেমাল মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় বাগেরহাটে ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ও ৩ হাজার ৫শ ৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৬৪৩ মেট্রিকটন চাল ও ৫লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিলের পাশাপাশি উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেরিবাধ এলাকায় গুলো নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

পটুয়াখালী: জেলায় রেমাল মোকা‌বেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তু‌তি মূলক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের দরবার হলে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক যাদব সরকার। জেলা সিভিল সার্জন ডা. এসএম কবির হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার যোবায়ের আহাম্মেদ।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া রিদয়, সিপিপি, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক জানান দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় ৭০৩ টি সাইক্লোন শেল্টার ৩৫টি মুজিব কিল্লা, ৭৩০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লক্ষ টাকার শিশু খাদ‌্য, ১০ লাখ টাকার গোখাদ‌্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড় শুকনা খাবার র‌য়ে‌ছে ১৫০০ প‌্যা‌কেট। নগদ টাকা র‌য়ে‌ছে ২৪ লাখ ৭ হাজার টাকা ৫০০ টাকা।

এ সময় মানুষকে সচেতন ও দুর্যোগে উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপির ৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকাসহ বিদ্যুৎ বিভাগ সড়ক বিভাগ ফায়ার সার্ভিসকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।

জেলায় মোট ৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন, ঔষধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সংরক্ষিত রয়েছে। জেলায় ১৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দুর্যোগের সময় কোথাও ভাঙন দেখা দিলে তা মেরামতের জন্য ১৬ হাজার জিও ব্যাগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এদিকে জেলায় ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে রয়েছে মুগ ডাল এবং ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়ের বলেন গুজোব মোকাবেলার জন্যে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

এদিকে কলাপাড়া উপকূলীয় অঞ্চলের জনগন, মৎস্যজীবি ও নৌযান সমূহকে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম শুরু করেছে নিজামপুর কোষ্টগার্ড। শনিবার সকাল নয়টায় মৎস্য বন্দর আলীপুর- মহিপুরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরন করে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। এসময় তারা খাপড়াভাঙ্গা নদীতে অবস্থানরত ট্রলার সমূহে থাকা জেলেদের ঘূর্নিঝড়ের সময় করনীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেন।

ঝালকাঠি: জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম। এ সভায় পুলিশ সুপার, স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য, শিক্ষা, দপ্তরের প্রধানগন এবং বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ, রেডক্রিসেন্টসহ জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যোগ দেন।

সভায় জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। এই কয় দিন সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্টেশন ত্যাগ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় নির্ধারিত সাইক্লোন শেল্টারসহ আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য সহ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে।


৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত দুদকের 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ শিকদারের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানিয়েছেন।

শিগগিরই দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করবেন।

দুদক জানায়, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রশিদ শিকদার সম্পদ বিবরণীতে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩২ টাকা সম্পদের তথ্য দেখান। কিন্তু অনুসন্ধানে তার নামে পাওয়া যায় ৯ কোটি ৩৬ লাখ ৪২ হাজার ৯০৩ টাকা সম্পদ (স্ত্রীর সম্পদ বাদে)। এ ছাড়া তার পারিবারিক ব্যয় পাওয়া যায় ৮৯ লাখ ১৫ হাজার ১৩৪ টাকা। সব মিলিয়ে তার মোট ব্যয়সহ সম্পদ দাঁড়ায় ১০ কোটি ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩৭ টাকা। ওই সম্পদ অর্জনের বিপরীতে বৈধ আয় পাওয়া গেছে মাত্র ৩ কোটি ২৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩১ টাকা। ফলে রশিদ শিকদারের ৭ কোটি ২ লাখ ১৪ হাজার ৪০৬ টাকার কোন বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানায়।

জ্ঞাত আয়ের বাইরে এই বিপুল সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪–এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়।


চার ডিগ্রিতে নামবে তাপমাত্রা, আসছে ৮ শৈত্যপ্রবাহ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এখনো সেভাবে জেঁকে বসেনি শীত। বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের অর্ধেক পার হলেও প্রকৃতিতে এখনো হালকা শীত। সাধারণ ডিসেম্বর মাসে এমন শীতই থাকে। তবে কয়েকদিন পরই শীতের তীব্রতা বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এবারের শীত মৌসুমে তাপমাত্রা নামতে পারে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মোট আটটি শৈত্যপ্রবাহ হবে, এর মধ্যে তীব্র হতে পারে তিনটি।
গতকাল সোমবার এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ মো. নূরুল করিম তিন মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে। এ সময় ৩ থেকে ৮টি মৃদু (৮-১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে এর মধ্যে ২-৩টি তীব্র শৈত্য প্রবাহে (৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রূপ নিতে পারে।
এ সময়ের মধ্যে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদ-নদী অববাহিকাসহ দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। তবে কখনো কখনো কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে দিন এবং রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে শীতের অনুভূতি বৃদ্ধি পেতে পারে।
এ ছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসের শেষার্ধে দেশের কোথাও কোথাও ১-২ দিন শিলাবৃষ্টিসহ বজ্রঝড় হতে পারে বলেও জানান আবহাওয়াবিদ নূরুল করিম।
এদিকে ডিসেম্বরেই দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বঙ্গোপসাগরে, যার মধ্যে একটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে।


সীতাকুণ্ডে সিকিউর সিটি শপিংয়ে মেলা শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

সীতাকুণ্ডের সিকিউর সিটি শপিংয়ে দোকান বিক্রির উৎসব উপলক্ষে মাসব্যাপী মেলার উদ্বোধন হয়েছে। সোমবার সকালে সীতাকুণ্ডের প্রাণকেন্দ্রে অত্যাধুনিক শপিংমল সিকিউর সিটির মাসব্যাপী দোকান ভাড়া ও বিক্রয় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন হয়।

পৌরসভার সাবেক কমিশনার রায়হান উদ্দিনের সঞ্চালনায় এ সময় বেলুন ও ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন সিকিউর সিটি প্রপার্টি ম্যানেজম্যান্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোরশেদুল হাসান, এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, ভাইস-চেয়ারম্যান আখতার হোসাইন মামুন, পৌরসদর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নাছির উদ্দীন ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন রফিক, সীতাকুণ্ড কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওসমান গণি, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী, জামায়াতের সেক্রেটারি মো. তাহের, পৌর বিএনপির সেক্রেটারি সালে আহমেদ সলু, সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ ফোরকান আবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুলাহ আল কাইয়ুমসহ সিকিউর সিটি ব্যবসায়িক কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীরা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সিকিউর সিটি দোকানগুলোর বিক্রি বৃদ্ধি, স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা এবং ক্রেতাদের জন্য একটি নিরাপদ কেনাকাটার পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তারা আরও বলেন, মেলার মাধ্যমে একদিকে যেমন ক্রেতারা প্রয়োজনীয় পণ্য স্বল্পমূল্যে ক্রয় করতে পারবে, অন্যদিকে উদ্যোক্তারা নিজেদের পণ্য ও সেবা আরও ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন ।

মেলায় ইলেকট্রনিক্স, হোম সিকিউরিটি ডিভাইস, নজরদারি ক্যামেরা, গ্যাজেট, স্মার্ট লকসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জামের স্টল স্থান পেয়েছে। ছাড়, বিশেষ অফার, ডেমো প্রদর্শনী, এবং ক্রেতা-সেবা কাউন্টার মেলাকে আরও প্রাণবন্ত করেছে।

আয়োজক কমিটি জানায়, পুরো মাসজুড়ে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে থাকবে বিশেষ ছাড় ও লটারি ড্রসহ আকর্ষণীয় ইভেন্ট।

উদ্বোধনী দিনেই স্থানীয় ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে মেলা প্রাঙ্গণ জমে ওঠেছে।


পার্বত্য চুক্তি বাতিলের দাবিতে নাগরিক পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাঙামাটি প্রতিনিধি

সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অভিযোগ তুলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি)। সোমবার বেলা ১১টায় রাঙামাটির বনরূপায়ি স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি উত্থাপন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে, পিসিএনপি কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান বলেন, চুক্তির ২৮ বছর অতিক্রম হলেও পার্বত্য অঞ্চলে প্রত্যাশিত শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং চুক্তির বেশ কিছু ধারা বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক কাঠামো, সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক অধিকারের পরিপন্থি। তিনি অভিযোগ করেন, চুক্তির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিশেষ স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে, আঞ্চলিক পরিষদের অনির্বাচিত নেতৃত্ব টিকে আছে, ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈষম্যমূলক বিধান কার্যকর রয়েছে এবং ভোটার তালিকা তৈরিতে অতিরিক্ত শর্তারোপ করা হয়েছে- যা সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সংগঠনটির দাবি, চুক্তির বেশ কিছু ধারায় জমি ক্রয়-বিক্রয়ে স্থানীয় পরিষদের একক সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, নতুন আইন প্রণয়নে পরিষদের মতামত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং ভোটার হতে ‘স্থায়ী বাসিন্দা সনদ’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে- যা দেশব্যাপী প্রযোজ্য নাগরিক অধিকার কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া চুক্তিকে অভিযোগ করা হয় কেবল নির্দিষ্ট একটি জাতিগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় প্রণীত, যেখানে সমতল বা পার্বত্য এলাকার বাঙালি জনগোষ্ঠীর দাবি-অধিকার উপেক্ষিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পিসিএনপি নিম্নোক্ত চারদফা দাবি উত্থাপন করে: ১. সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিল করতে হবে।

২. পাহাড়ের সব নাগরিকের সমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা।

৩. সক্রিয় সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র উদ্ধার ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ।

৪. জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রত্যাহারকৃত নিরাপত্তা ক্যাম্পগুলো পুনঃস্থাপন।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব শাব্বির আহমেদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র সহসভাপতি প্রফেসর আবু তাহের, রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. সোলায়মান, সহসভাপতি মাওলানা আবু বক্কর, খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি মো. লোকমান হোসাইন, স্থায়ী কমিটির সদস্য এম. রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজালাল, রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মদ ইব্রাহিম, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য হাবীব আজম, যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুর হোসেন প্রমুখ।


কালীগঞ্জ খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল

আপডেটেড ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২১:০৫
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল হয়েছে। সোমবার বাদ মাগরিব কালীগঞ্জ কেন্দ্রীয় পার্টি অফিসে পৌরশাখা কৃষক দলের উদ্যোগে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, কালীগঞ্জ পৌর কৃষক দলের সভাপতি মো. হায়দার আলী শেখ। সঞ্চালনায় ছিলেন পৌর বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ। এতে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান আলম, খায়রুল আহসান মিন্টু, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ইব্রাহীম প্রধান, পৌর বিএনপির সদস্য মনির উদ্দিন পাঠান মিঠু, খুরসেদ আলম কাজল, গাজীপুর জেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, পৌর কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অন্য নেতারা। এছাড়া কৃষক সমাজের প্রতিনিধি ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া মাহফিলে বক্তারা আবেগাপ্লুত হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবদান ও দেশের জন্য তার ত্যাগের কথা তুলে ধরেন। কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে ও অশ্রুসিক্ত নয়নে তারা বলেন- তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিই নন, তিনি একজন জনমাতা, গণতন্ত্রের প্রতীক এবং বঞ্চিত মানুষের আশার বাতিঘর। দেশবাসীর কাছে তার রোগমুক্তি কামনায় আন্তরিকভাবে দোয়ার আহ্বান জানান তারা।

পরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি, দীর্ঘায়ু এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারসহ সকল অসুস্থ নেতা-কর্মীর জন্য দোয়া করা হয়। দোয়া মাহফিল শেষে তবারক বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।


শীতের আমেজ পড়তেই তলানিতে গোমতীর পানি

*অন্য বছর এ সময় টইটম্বুর পানি থাকলেও এবার নদীর বুকে খরা *বহু জমি অনাবাদি থেকে যাওয়ার শঙ্কা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তরুন, বুড়িচং (কুমিল্লা) 

শীত মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন গোমতীর দুপাড় ও চরাঞ্চলের হাজারও কৃষক। হাজার হাজার একর আবাদি জমিতে নানা প্রকার শীতকালীন সবজি, ভুট্টা, আখ ও ধানের চাষ হলেও সেচ ব্যবস্থার ওপর ভরসা করা কৃষকদের সামনে দেখা দিয়েছে সংকট।

গোমতীর দুই পাড়ে বিশাল চরজমি এখন অনেক জায়গায় শুকনো বালুচরে পরিণত হয়েছে। যে জমিতে শীতকালীন সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে, সে জমিই এখন আতঙ্কের কারণ। কৃষকরা বলছেন, প্রতি বছর শীতের দিকে পানি কমলেও এবার অস্বাভাবিকভাবে আগেই পানি নেমে যাচ্ছে। এমনভাবে পানি শুকাতে থাকলে অচিরেই সেচযন্ত্র বসানোই অসম্ভব হয়ে পড়বে। এতে বহু জমি অনাবাদি থেকে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চরাঞ্চলের জমিতে এ বছর ফলন ভালো হলেও নদীর পানির হঠাৎ সংকট যেন কৃষকদের দোরগোড়ায় নতুন দুর্ভাগ্যের বার্তা নিয়ে এসেছে। বিগত বছরগুলোতে এ সময় গোমতীতে টইটম্বুর পানি থাকলেও এখন নদীর বুকে দেখা দিচ্ছে খরা আর চরভূমির উত্থান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের উজানে বাঁধ ও স্লুইচগেট বন্ধ রাখা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, অনিয়মিত বৃষ্টি এবং নদীর প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। নাব্যতা কমে যাওয়ায় নদী দীর্ঘসময় পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

গোমতীনির্ভর সেচব্যবস্থার ওপর পুরো কুমিল্লা অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন টিকে আছে। পানি না থাকলে শাক-সবজির ফলন কমে যেতে পারে, ব্যাহত হতে পারে রবি মৌসুমের পুরো ফসল চক্র। প্রয়োজনে বিকল্প সেচের বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে- তবে এ সম্পর্কে স্থানীয় কৃষকরা চায় সরকারি দিকনির্দেশনা।

কৃষকদের সমস্যার কথা জানতে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আমতলী এলাকার কৃষক মো. শাহআলমের কাছে গেলে তিনি বলেন, দুইশত শতক জমিতে সবজি চাষ করেছি। এবার পানি আগেভাগেই অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। শুধু আমতলী চরেই কয়েক একর সবজি চাষ হয়। নদীতে পানি না থাকলে এসব জমিতে চাষ করা সম্ভব না। সরকারের এখনই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বুড়িচং উপজেলার বাবুবাজার শিমাইশখাড়া গ্রামের কৃষক মফিজুল ইসলাম বলেন, চরে টমেটো আর ফুলকপি করছি। পানি না থাকলে এসব ফসল বাঁচানো যাবে না।

আদর্শ সদর উপজেলার সুবর্ণপুর এলাকার কৃষক আবু সাঈদ বলেন, গোমতীর পানি ছাড়া সবজি উৎপাদন অসম্ভব। নদীতে পানি রাখার ব্যবস্থা সরকার না করলে আমরা অনেক বিপদে পড়ে যাব। ভারতে বর্ষায় পানি ছাড়ে, শুকনো মৌসুমে আটকে রাখে- এটা কোনো নিয়ম হতে পারে না।

পাঁচথুবী ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, এবার নদীতে পানি অনেক কম। গোমতীর পানি ছাড়া শীতকালীন ফসল উৎপাদন কঠিন হয়ে যাবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, ৯৭ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে গোমতী নদী কুমিল্লার সাতটি উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মেঘনায় মিশেছে। শীতে গোমতীর পানি কমে যাওয়া স্বাভাবিক, তবে এবার পরিস্থিতি বেশি খারাপ। বিকল্প হিসেবে টিউবওয়েল আছে, তবে ভারতের সঙ্গে পানি নিশ্চয়তার বিষয়ে আলোচনা জরুরি।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, ভারতের ভেতরে ডাম্বুর বাঁধ বন্ধ করে দেওয়ায় পানি কমে গেছে। অনেকে নিজস্ব ব্যবস্থায় সেচ নিয়ে থাকেন; কৃষকদের বিকল্প পদ্ধতির বিষয়ে কৃষি অফিস পরামর্শ দেবে।

শীতের আগেই গোমতী নদীতে এমন পানি সংকট কুমিল্লার কৃষির ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর প্রশ্ন তৈরি করেছে। এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সেচ সংকটের কারণে ফসল উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা প্রকট আকার ধারণ করতে পারে- এমনটাই মনে করছেন পরিবেশ, কৃষি ও পানি বিশেষজ্ঞরা।


নওগাঁয় দাম কমে হতাশ কৃষক

আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। তবে পোকার উপদ্রব ও নভেম্বরের বৃষ্টিতে মাটিতে ধান শুয়ে পড়ায় ফলন কম হচ্ছে। এছাড়া শ্রমিক সংকটে বাড়তি মজুরি ও ধানের দাম কম হওয়ায় উৎপাদন খচর ওঠা নিয়ে শঙ্কায় কৃষক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ১৪১ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছিল। যা থেকে ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭৩০ টন ধান উৎপাদনের আশা। তবে নভেম্বরের বৃষ্টিতে অন্তত ২ হাজার ৮৬১ হেক্টর আবাদ নষ্ট হয়। যা থেকে প্রায় ১০ হাজার টনের বেশি ধান উৎপাদন হতো।

চারিদিকে সোনালি রঙের নতুন আমন ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ। বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। অবারিত প্রান্তরে শস্যের দোলা হাসি ফোটায় কৃষকের মুখে। উত্তরের জেলায় নওগাঁর মাঠে মাঠে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। কাস্তে হাতে ধান কাটছে কৃষক। আর পেছনে শালিক পাখি ঝাঁক বেঁধে খুঁজছে আহার। নতুন ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের আনন্দের বদলে মলিন মুখ।

কৃষকরা জানান- গত বছরের তুলনায় এ বছর ধানের আবাদে সার-কীটনাশক ও শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিঘাতে ২-৩ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হয়েছে। ধানে মাজরা পোকার আক্রমণ ঠেকাতে বাড়তি কীটনাশক-স্প্রে করতে হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টিতে ধান মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিঘাতে ফলন কমেছে ৪-৫ মণ। এতে বিঘাতে খরচ পড়েছে অন্তত ১৫ হাজার টাকা।

সোমবার সকালে জেলার মহাদেবপু উপজেলার চকগৌরি সাপ্তাহিক হাটবার। সপ্তাহের ব্যবধানে এ হাটে মণে ৭০ টাকা পর্যন্ত কমেছে দাম। তবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মণে অন্তত ১০০ টাকা কমেছে। এদিন হাটে আমন ব্রি-৭৫ ধান ১ হাজার ৫০ টাকা মণ, স্বর্ণা-৫ ধান ১ হাজার ১৩০ টাকা থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকা, ব্রি-৪৯ ধান ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা এবং ব্রি-৯০ ধান ২ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়। তবে বোরো মৌসুমের পুরোনো ধান সুবর্ণলতা ১ হাজার ৪০০ টাকা এবং কাটারিভোগ ও জিরাশাইল ধান ১ হাজার ৬৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়।

হাটে ধান বিক্রি করতে আসা সদর উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের কৃষক আলামিন বলেন, ‘১৪ বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ ধানের আবাদ করা হয়। প্রতি বিঘায় গড় ফলন হয়েছে ২০ মণ। বিঘাতে খরচ পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। ২৩ মণ ধান ১ হাজার ১৪০ টাকা মণ দরে বিক্রি করা হয়েছে। এ দামে ধান বিক্রি করে বিঘায় ৬-৮ হাজার টাকা লাভ দিয়ে কোনো সুবিধা হবে না। অন্তত ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ হলে খরচ বাদে কিছুটা লাভ থাকবে।’

জেলার মহাদেবপুর উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের কৃষক ফেরদৌস আলম বলেন, ‘এ বছর ৩ বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ ধানের আবাদ করা হয়। শুরুতে আবাদ ভালো হয়েছিল। তবে নভেম্বরের বৃষ্টিতে ১০ কাঠা জমির ধান পুরোটা নষ্ট হয়ে যায়। এতে অন্তত ১২ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লোকসানে পড়তে হয়েছে।’

একই উপজেলার আখেড়া গ্রামের কৃষক প্রদীপ কুমার বলেন, ‘ধানে প্রচুর পোকার উপদ্রব হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৩-বার বাড়তি কীটনাশক-স্প্রে করতে হয়েছে। এতে বিঘায় ৫০০ টাকার কীটনাশক-স্প্রে করতে হয়েছে। ধানে পোকার উপদ্রব হওয়ায় ফলনের পরিমাণ কম হবে।’

মান্দা উপজেলার মৈনম গ্রামের কৃষক আফসার আলী বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ ধানের আবাদ করেছিলাম। বৃষ্টিতে পাকা ধান মাটিতে শুয়ে পড়ে। এদিকে শ্রমিক সংকট হওয়ায় মজুরিও বাড়তি। তাই নিজেই ধান কাটতে হয়েছে। ধান মাটিতে পড়ে যাওয়ায় কাটতে সময় বেশি লেগেছে এবং ফলন পেয়েছি ১৬ মণ। ধান খাড়া থাকলে ফলন আরও বেশি হতো।’

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হোমায়রা মণ্ডল বলেন, ‘বৃষ্টিতে ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও পোকার উপদ্রব কমেছে। এ বছর ৯ লাখ ৮৫ হাজার টনের বেশি ধান উৎপাদন হবে। ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রভাব পড়বে না।’


রাজবাড়ী আ. লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ পরিবারের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী এবং স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও জামাতাসহ পরিবারের ৫ সদস্যের অবৈধভাবে অর্জিত ৬৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৬৩ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছে রাজবাড়ীর বিশেষ জজ আদালত।

সোমবার দুপুরে রাজবাড়ী জজ আদালত প্রাঙ্গণে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদক পিপি বিজন কুমার বোস।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বিজন কুমার বোসের পক্ষে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজবাড়ীর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আনিসুর রহমান এ আদেশ দেন। এর আগে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ফরিদপুরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে কাজী ইরাদত আলীসহ তার পরিবারের সদস্যদের অনুসন্ধান শুরু করে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে কাজী ইরাদত আলী, স্ত্রী রাবেয়া পারভীন, পুত্র কাজী রাকিবুল ইসলাম শান্তনু, কন্যা কাজী সিরাজুম মনিরা ও জামাতা মো. নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ৬৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৬৩ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পায় দুদক। অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের মধ্যে রাজবাড়ী গোল্ডেশিয়া জুট মিল, পেট্রোল পাম্প, রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে।

দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তার প্রাথমিক অনুসন্ধানে কাজী ইরাদত আলী সহপরিবারের সদস্যদের নামে অবৈধ সম্পদ হস্তান্তর করে অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপনের উদ্দেশ্যে স্থানান্তর বা রূপান্তর বা হস্তান্তর করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন,২০১২-এর শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। আরও উল্লেখ করা হয়েছে দুদকের অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের নামে উপায়ে অর্জিত ব্যাংক হিসাবগুলো নগদায়ন করার চেষ্টা করছেন ও স্থাবর সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন মর্মে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, কাজী ইরাদত আলীর নিজ নামে ঢাকা ও রাজবাড়ীর ১০টি হিসাবে ১ কোটি ৬৫ লাখ ৮৭ হাজার ৮২২ টাকা, স্ত্রী রাবেয়া পারভীনের ৭টি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ২৮ লাখ ৪২ হাজার ৪৯৪ টাকা, পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক কাজী রাকিবুল ইসলাম শান্তনুর ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ৪৬ লাখ ৬৫ হাজার ২১৮ টাকা, পুত্রবধূ আফসানা নওমী তাকিনার ৮টি হিসাবে ১১ আখ ১১ হাজার ১১১ টাকা, কন্যা কাজী সিরাজুম মুনিরার ১১টি ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ৩ লাখ ৮১ হাজার ২১২ টাকা এবং জামাতা নুরুল ইসলামের ১০টি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ৯০ লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৫ টাকা গচ্ছিত রয়েছে।

এছাড়া কাজী ইরাদত আলীর পারিবারিক ডেভেলপার কোম্পানি মিডল্যান্ড লিমিটেডের নামে ৬টি ব্যাংকে ২ কোটি ৮ লাখ ৯১ হাজার ৬৭৫ টাকা, ব্যবসায়িক হিসাবে ১০ লাক ৩৭ হাজার ১৩৯ টাকা, পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন মেয়াদে ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, পরিবারের সদস্যদের নামে ২ কোটি ২০ লাখ ৭৮ হাজার টাকা মূল্যের ৭টি গাড়ি রয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে কাজী ইরাদত আলী ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্টদের নামে স্থাবর সম্পদের মধ্যে ভূমি, দালান, ফিলিং স্টেশনসহ ৫২ কোটি ৩৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৫৭ টাকার সম্পদের উল্লেখ করা হয়েছে।


ওয়াহিদা বেগমের হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে রাকাব

*অসততা, দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্স *গেল জুলাই থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ১,৬২৩ কোটি ঋণ বিতরণ *আগামী জুন পর্যন্ত আরও ৩,০০০ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্য
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আমিনুল ইসলাম বনি, রাজশাহী

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন রাকাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওয়াহিদা বেগম। তার হাত ধরে পুরোনো কালিমা মুছে নতুন উদ্যোমে চলছে প্রকৃত প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে ঋণ বিতরণের কার্যক্রম। ইতোমধ্যে চলতি বছরের জুলাই থেকে গত ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ১,৬২৩ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ, সিএমএসএমই এবং অন্য খাতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এ খাতে আরও ৩,০০০ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ওয়াহিদা বেগম যোগদানের পর থেকে অসততা, দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ব্যাংকের কাজে গতি আনয়ন, প্রত্যেক কর্মকর্তাকে দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে তিন বছর এবং তদূর্ধ্ব সময়ে একই স্থানে কর্মরত কর্মকর্তাকে অন্য কর্মস্থলে বদলি করেছেন।

পুরোনো অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে সেই স্বার্থান্বেষী মহল রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওয়াহিদা বেগমের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের চালাচ্ছে। তার পূর্বের কর্মস্থল ও রাজনৈতিক ট্যাগ ব্যবহার করে একটি মহল তাকে হয়রানি করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করেছেন ব্যাংকের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। এ ঘটনায় রাকাবের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় ও ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ওয়াহিদা বেগমের পূর্বের কর্মস্থল অগ্রণী ব্যাংক পিএলসিকে কেন্দ্র করে একটি মহল ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে’।

সূত্র জানায়, অগ্রণী ব্যাংকে তিনি দায়িত্বে না থাকার পরেও ব্যাংকের সূত্র ধরে পূর্বে তার নামে একটি মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় আদালত তাকে তিন মাসের সাজা প্রদান করলেও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষ বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের জন্য মামলার স্থগিতাদেশ দেন।

বর্তমানে মামলাটি শুনানির জন্য উচ্চ আদালতের আদেশের অপেক্ষায় রয়েছে। এ আবস্থায়, আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই একটি পক্ষ ভুল তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন পরিসরে অপপ্রচার চালাচ্ছে। রাকাবের একাধিক কর্মকর্তার দাবি, একটি স্বার্থান্বেষী মহল অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে এই নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে।

ব্যাংকের একাধিক ক্লিন ইমেজের কর্মকর্তা জানান, এমডি হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। তাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতেই এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

এদিকে রাকাব এমডি হিসেবে ওয়াহিদা বেগমের নিয়োগ চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ নভেম্বর উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের (বিআরপিডি) ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির সার্কুলার অনুযায়ী তার নিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। একইসঙ্গে তিন সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে, গত ২২ অক্টোবর রাকাবের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আব্দুল মালেক এমডির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থ সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

আব্দুল মালেকের অভিযোগের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানান, এমন অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। সরকার ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে সময় নষ্ট করে না।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রাকাবের এমডিকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে উল্লেখ করে যে ভাষায় অভিযোগ করা হয়েছে, তা সত্যিই দুঃখজনক। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পদোন্নতি পেয়ে রাকাবে যোগদানের পর তার বিরুদ্ধে কোনো আর্থিক কেলেঙ্কারি বা অনিয়মের অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।

অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের একজন ডিজিএম জানান, সেখানে উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে ওয়াহিদা বেগম অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদা বেগম বলেন, আমরা সর্বদা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। একটি পক্ষ আদালতে মামলা করেছে এবং আদালত একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। আমিও আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছি। বিশ্বাস করি, খুব শিগগিরই এর একটি সমাধান মিলবে।


বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া, আলোচনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ভৈরব প্রেসক্লাবের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হয়েছে।

আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিগত সরকার ১৭ বছর শাসনামলে আপসহীন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র করেছে তাকে রাজনীতি থেকে সরাতে। শুধু তাই নয় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে নিয়ে স্লো-পয়জন দিয়ে তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। স্লো- পয়জন শরীরে ঢুকে তার শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বেঁধেছে। আজ তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই তার সুস্থতার জন্য তিনি দেশবাসী সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন। আলোচনা সভা শেষে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হয়েছে।

আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন, প্রেসক্লাব সদস্য সচিব মো. সোহেলুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রেসক্লাব সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান আমিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মারুকী শাহীন, সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি সাইফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি মুজিবুর রহমান, যুবদল সভাপতি আল মামুন, ভৈরব চেম্বার অব কমার্স সভাপতি জাহিদুল হক জাবেদ, পৌর যুবদল সভাপতি হানিফ মাহমুদ, উপজলা শ্রমিক দল সভাপতি মো. আদিলুজ্জামান প্রমুখ।


বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির ৩৮তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত

স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে কল্যাণমুখী রূপান্তরে কাজ করছে সরকার: অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির ২ দিনব্যাপী ৩৮তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন (এ্যানুয়াল সাইন্টিফিক কংগ্রেস) ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর ২০২৫ইং তারিখ সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিযুক্ত মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদ মর্যাদা) অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির জন্য দেশের চিকিৎসকদের প্রতি তাকিয়ে থাকেন। দেশের জনগণ ও রোগীদের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে সরকার সমগ্র স্বাস্থ্যবস্থাকে কল্যাণমুখী রূপান্তরে কাজ করছে। যার লক্ষ্য দেশের সকল মানুষ যেনো তার প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা পান। বর্তমান স্বাস্থ্যব্যবস্থা দেশের সকল জনগণ ও রোগীর ন্যায্যতা নিশ্চিত করছে না। তাই সেদিকে সরকার যেমন নজর দিয়েছে, চিকিৎসকদেরও এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনার দায় রয়েছে। কি করলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় রোগীদের চাহিদা পূরণ হবে সেটা তো আর সাধারণ মানুষ, রোগীরা করতে পারবেন না। নীতিনির্ধারকদের উপর প্রভাব ফেলাসহ এই বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে অবদান রাখতে পারবেন বিজ্ঞজনেরা, সম্মিলিতভাবে চিকিৎসকরা। একটি আইসিইউ প্রাপ্তির জন্য, রেডিওথেরাপি সেবা প্রাপ্তির জন্য, সঠিক চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির জন্য, প্রয়োজনীয় ওষুধের জন্য রোগীদের কত অপেক্ষা, কত হাহাকার সেটা চিকিৎসকদেরই অনুধাবন করতে হবে। সাধারণ রোগীদের জন্য, দরিদ্র মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণে কি কি করা যায় সে বিষয়ে আমাদের সকলেরই বিশেষ করে চিকিৎসকদের দায় রয়েছে। যা আমি একজন চিকিৎসক হিসেবে অনুধাবন করি। তিনি তার বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা যেনো বাণিজ্যের কাছে আত্মসমর্পণ না করে সেদিকেও দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি তার বক্তব্যে জুলাই আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় অবদান রাখার জন্য দেশের অর্থোপেডিক সার্জনবৃন্দ ও চক্ষু রোগ চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির মেম্বার সেক্রেটারি (সদস্য সচিব) ডা. এরফানুল সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটি কনফারেন্স ২০২৫-এ ফ্যাকাল্টি, সিনিয়র ও তরুণ সার্জনবৃন্দ, ১৪ জন বিদেশি বিশেষজ্ঞসহ মোট ১ হাজার ৫ শত ৭৫ জন অংশগ্রহণ করেছেন। সম্মেলনে ২০২টি বৈজ্ঞানিক পেপার উপস্থাপন করা হয়, ৩০টি উচ্চমানের বৈজ্ঞানিক সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনটি দেশের অর্থোপেডিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠেছে। গুরুত্বপূর্ণ এই কনফারেন্সের মূল লক্ষ্য হলো এমন একটি জ্ঞান বিনিময়ের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যেখানে উদ্ভাবন ও অভিজ্ঞতার মিলন ঘটবে, আন্তর্জাতিক অগ্রগতি বাংলাদেশের স্থানীয় প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সংযুক্ত হবে এবং যেখানে নতুন ধারণা বাস্তব চর্চায় রূপ নেবে। অস্থি-সংক্রান্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রতিনিয়ত অগ্রগতি হচ্ছে- ট্রমা কেয়ার, আর্থ্রোপ্লাস্টি, স্পাইন সার্জারি, অঙ্কোলজি, স্পোর্টস মেডিসিন, পেডিয়াট্রিক অর্থোপেডিকস এবং রিহ্যাবিলিটেশনের উন্নতি প্রতিদিনের চিকিৎসা পদ্ধতিকে বদলে দিচ্ছে। তাই বাংলাদেশকে এই বৈশ্বিক অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করতে হবে। সে ক্ষেত্রে এই সম্মেলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ডা. এরফানুল সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের অর্থোপেডিক সার্জনদের জন্য এই সম্মেলন অসাধারণ শিক্ষামূলক সুযোগ এনে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা, গবেষণা উপস্থাপন, আধুনিক সার্জিকাল কৌশল এবং আন্তঃক্রিয়ামূলক আলোচনার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা তাদের ক্লিনিক্যাল জ্ঞান, সার্জিকাল দক্ষতা এবং ডিসিশন মেকিং আরও উন্নত করতে পারবেন। একই সঙ্গে সহযোগিতা, পরামর্শ এবং দীর্ঘমেয়াদি একাডেমিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগও তৈরি হবে। একই সাথে এই সম্মেলনের প্রকৃত উপকারভোগী হবেন বাংলাদেশের রোগীরা। উন্নত সার্জিক্যাল পদ্ধতি, উন্নত পেরি-অপারেটিভ কেয়ার এবং চিকিৎসা পরবর্তী পুনর্বাসন সমস্যার গভীরতর বোঝাপড়া রোগীদের আরও নিরাপদ, কার্যকর এবং মানবিক সেবা নিশ্চিত করবে। রোগীর দ্রুত আরোগ্য, কম জটিলতা এবং উন্নত ফাংশনাল আউটকামই এই সম্মেলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য। তাই এই কনফারেন্স শুধু একটি একাডেমিক অনুষ্ঠান নয় বরং এটি উৎকর্ষের প্রতি একটি প্রতিশ্রুতি, অগ্রগতির উদযাপন এবং একটি সুস্থ বাংলাদেশের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
কনফারেন্সে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব মোঃ সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, ড্যাব এর মহাসচিব ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল। সভাপতিত্ব করেন নিটোর এর পরিচালক ও বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কেনান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. ওয়াকিল আহমেদ, ডা. এরফানুল সিদ্দিকী, ডা. শাহ মোহাম্মদ আমান উল্লাহ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডা. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিএমইউ এর প্রক্টর অর্থোপেডিশিয়ান ডা. শেখ ফরহাদ প্রমুখসহ দেড় হাজারেরও বেশি অর্থোপেডিক সার্জনবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কনফারেন্সে বিশেষ অতিথিগণ বলেন, বাংলাদেশে বিষয়ভিত্তিক যে কয়টি বিষয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে অগ্রগতি লাভ করেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো অর্থোপেডিক। দেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ও স্বাধীনতা পরবর্তী অনেক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিয়েছেন দেশের অর্থোপেডিক সার্জনবৃন্দ। বর্তমান সময়েও অর্থোপেডিক চিকিৎসকগণ রোগীদের সেবায় অসামান্য অবদান রেখে চলছেন। বর্তমান ও আগামী দিনে দেশের রোগীদের প্রয়োজনেই অর্থোপেডিক বিষয়ের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ নিশ্চিত করার মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।


হশাআবিতে ০৪ জন ডমেস্টিক/অভ্যন্তরীণ যাত্রীর কাছ থেকে ফোন আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স (BG-148) দুবাই-চট্টগ্রাম-ঢাকা ফ্লাইটে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় অবতরণ করলে বিমানবন্দর গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর কাস্টমস এবং এ্যাভসেক এর বিমান বাহিনীর সদস্যগণ যৌথভাবে উক্ত ফ্লাইটের অভ্যন্তরের সকল যাত্রীদের বিশেষ নজরদারিতে রাখেন। গ্রীন চ্যানেল অতিক্রম করার সময় তল্লাশী করে ০৪ জন মহিলা যাত্রী, সামিয়া সুলতানা, শামিমা আক্তার, জয়নব বেগম এবং নুসরাত তাদের শরীরে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত ভাবে রাখা ৩৫ টি আইফোন ১৭ প্র ম্যাক্স, ৫৫ টি আইফোন ফিফটিন এবং ১২ টি গুগল পিক্সেল ফোন সর্বমোট ১০২ টি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে উক্ত যাত্রীগণ ফোন সম্পর্কে কোন তথ্য না দিতে পারায় বিমানবন্দর কাস্টমস ৯৮ টি মোবাইল ফোন ডিএম করেন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য সর্বমোট =১,৭৬,৪০,০০০/= (এক কোটি ছিয়াত্তর লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা)।

উল্লেখ্য যে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিনিয়ত চোরাকারবারিরা বিভিন্ন সময় স্বর্ণ, মোবাইল, সিগারেট পাচার করে থাকেন। যেসব বিমান দুবাই শারজাহ থেকে ঢাকায় আগমন করেন সেসব বিমানেই বেশী হয়ে থাকে। বিভিন্ন সময় বিমানবন্দরের কাষ্টমস ও অন্য সংস্থা কর্তৃক এদেরকে চেক দেওয়া হলে চোরাকারবারি তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে। দুবাই, শারজাহর যে সব বিমান চট্রগাম হয়ে আসে সেসব বিমানে চোরাকারবারিরা চট্রগাম থেকে তাদের নিজস্ব কিছু লোক ঢাকা আসার জন্য ওঠে এবং বিমানের মধ্যেই কৌশলে স্বর্ণ, মোবইল হস্তান্তর করেন।


শাহ মখদুম বিমানবন্দরে এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি এক্সারসাইজ ২০২৫ অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শাহ মখদুম বিমানবন্দর, রাজশাহীতে এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি এক্সারসাইজ ২০২৫ শীর্ষক একটি পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।

ICAO Standards and Recommended Practices (SARPs) এবং National Civil Aviation Security Programme (NCASP) এর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি বিমানবন্দরে প্রতি দুই (০২) বছরের মধ্যে একবার Airport Security Exercise আয়োজন করা আবশ্যক। তারই ধারাবাহিকতায় হাইজ্যাক, বোমা হামলাসহ নানাবিধ ঝুঁকি মোকাবেলার সক্ষমতা যাচাই এবং অংশীজনদের প্রস্তুতি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই মহড়ার আয়োজন করা হয়।

মহড়ার দৃশ্যপটে দেখা যায়, যশোর বিমানবন্দর থেকে একটি চার্টার্ড ফ্লাইট গলফ ফক্সট্রট আলফা ওয়ান টু থ্রি দুই জন যাত্রী নিয়ে শাহ মখদুম বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। শাহ মখদুম বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসে এবং জানায় যে যশোর বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসা চার্টার্ড ফ্লাইটটিতে একটি বোমা রাখা আছে এবং যেকোনো সময়ে এটি বিস্ফোরিত হতে পারে। কন্ট্রোল টাওয়ার তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক ও সিকিউরিটি অফিসারকে জানালে বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক রিস্ক এডভাইজরি গ্রুপ (RAG) কমিটির সাথে আলোচনা করে ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার Emergency Operations Center অ্যাক্টিভ করার নির্দেশ দেন। পরে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে Emergency Responding Activities পরিচালনা করেন।

এ মহড়ায় অংশগ্রহণ করেন বেবিচক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র‍্যাব, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ, এপিবিএন, আনসার, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, ইসলামী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সংস্থা।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি (Air Vice Marshal Md Mostafa Mahmood Siddiq, BSP, GUP, ndc, afwc, acsc, psc) প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানের চিফ কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমডোর মোঃ আসিফ ইকবাল, বিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, জিডি(পি) (Air Commodore Md Asif Iqbal, BUP, ndc, afwc, psc, GD(P))। উক্ত অনুষ্ঠানের অনসীন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শাহ মখদুম বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মোসাঃ দিলারা পারভীন (Mst. Dilara Pervin)।

শাহ মখদুম বিমানবন্দরে আয়োজিত “এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি এক্সারসাইজ–২০২৫”-এ প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই সকল অংশীজনকে মহড়ায় অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এ ধরনের মহড়া শুধু দুর্বলতা শনাক্তের সুযোগই সৃষ্টি করে না, বরং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় বৃদ্ধি করে যাত্রীসেবায় আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মহড়ার সফলতা সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও দায়িত্বশীলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন এর মাধ্যমে যেকোনো অনভিপ্রেত পরিস্থিতি দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মহড়ায় অংশগ্রহণকারী সকল সংস্থার প্রস্তুতি ও দক্ষতা প্রত্যক্ষ করে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেন, প্রতিটি সংস্থা প্রশংসনীয় পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। সমাপনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি জাতীয় স্বার্থে আরও আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান।

মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের সদস্য (প্রশাসন) এস এম লাবলুর রহমান (S M Lablur Rahman) ও সদস্য (অর্থ) মোহাম্মাদ নাজমুল হক (Mohammad Nazmul Haque)। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের কর্মকর্তাবৃন্দ, অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিবৃন্দ এবং গণমাধ্যমের ব্যক্তিবর্গ।


banner close