বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
৯ পৌষ ১৪৩২

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় জেলায় জেলায় প্রস্তুতি

মোংলায় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সচেতন করতে কোস্টগার্ডের মাইকিং। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
২৬ মে, ২০২৪ ০৫:১৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০২৪ ০৫:১৮

বঙ্গোবসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ায় তা ‘রেমালে’ পরিণত হয়েছে। আজ রোববার মধ্যরাতে এটি আঘাত হানার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। এ জন্য দেশের ছয় জেলাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। এ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও ভূমি অতিক্রমের সম্ভাব্য এলাকার ভিত্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা।

গতকাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ঘূর্ণিঝড়সহ সব দুর্যোগে তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় আমরা যথাসময়ে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের দুর্দশা লাঘব এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কমাতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘূর্ণিঝড়টিও যাতে একই ধারাবাহিকতায় সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারি তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’

প্রতিমন্ত্রী মুহিববুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। উপকূলবর্তী সব জেলাকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও সম্ভাব্য ভূমি অতিক্রম এলাকার ভিত্তিতে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা জেলাসমূহকে অধিকতর প্রস্তুত থাকার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে এই ঝড়টির বিষয়ে আমরা খোঁজখবর রাখছি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিয়মিতভাবে পূর্বাভাস দিচ্ছে এবং আগাম কার্যাবলি (অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন) ও সাড়া প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করছে। আমরা ভারতে অবস্থিত আঞ্চলিক বিশেষায়িত আবহওয়া কেন্দ্রের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এর পাশাপাশি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক পূর্বাভাস মডেল নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সময়োপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করছি।’

সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়টি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এনডিআরসিসি ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ কার্যক্রম প্রেরণ শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৭৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কয়েক দিন যাবৎ মাঠে আগাম সতর্কবার্তা প্রচারসহ আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন ও প্রস্তুতের কাজ করছে। মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ও সাইক্লোন আর্লি অ্যাকশন প্রটোকল অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক আগাম কার্যক্রম শুরু করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের গতি-প্রকৃতি এবং আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক বিপদ সংকেত জারি করা মাত্র মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে। দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি অনুযায়ী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো কার্যকর হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সভায় কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেগুলো হলো আগাম সতর্কতার বিজ্ঞপ্তি প্রচার ও জনগণকে সচেতন করা, আগাম মানবিক কার্যাবলি গ্রহণ করা, মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় ও বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিসমূহের সভা অনুষ্ঠান, সব পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা, আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য এবং গো-খাদ্যের ব্যবস্থা করা, জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ। দুর্যোগ তথ্য পাওয়ার জন্য টোল ফ্রি ১০৯০ ব্যবহারের কথা বলা হয় সভায়। দৈনিক বাংলার বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানোর সংবাদের ভিত্তিতে ‘রেমাল’ নিয়ে বিভিন্ন জেলার প্রস্তুতির সম্পর্কে জানা গেছে নানা তথ্য।

পিরোজপুর: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর জন্য পিরোজপুরে প্রস্তুত করা হয়েছে ৫৬১ টি ঘূর্ণিঝড়ের আশ্রয়কেন্দ্র। যার মধ্যে ২৯৫ টি সাইক্লোন শেল্টার এবং ২৬৬ টি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এই আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।

শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক সাইফ-মিজান সভাকক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান এ তথ্য দেন।

সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান আরও জানান, ঘূর্নিঝড় রেমাল মোকাবিলায় একটি জেলা প্রশাসন থেকে একটি কন্টোলরুমসহ প্রতিটি উপজেলায় একটি টিম করা হয়েছে, ৬৫ টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে, ২ লাখ ৬৩ হাজার পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেজ মজুত রাখা হয়েছে, ঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ১৩৫০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ৬১১ মে. ট. চাল ও নগদ ৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও দুর্যোগ পরিবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর মেরামতের জন্য ৯৭ বান্ডিল টিন রয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় রেডক্রিসেন্টের ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক ও সিপিপি ২৪২০ জন সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। রেমালের প্রভাবে পিরোজপুরের নদীসমূহে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি পানি দেখা গেছে এবং জেলার কয়েক স্থানে হালাকা বৃষ্টি পড়েছে।

বরগুনা: বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গোমট আবহাওয়া বিরাজসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরের বাসিন্দারা। শনিবার জেলার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত তিন ফুট বেড়েছে বলে জানান নদী তীরের বাসিন্দারা। বরগুনা সদর উপজেলার বড়ইতলা এলাকায় গেলে দেখা যায়, পানিতে এখানকার বেড়িবাঁধের বাহিরের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এখানে আশ্রয়কেন্দ্রের স্বল্পতা রয়েছে। তাই যা আছে তাতে সকলের স্থান সংকুলান হয় না। বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। সভার মাধ্যমে আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এদিকে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ড জেলার বিভিন্ন স্থানে এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এবং এসব বাঁধ ভেঙ্গে গেলে তা তাৎক্ষণিকভাবে মেরামতের জন্য ৮০০ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জানানো হয়েছে। জেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় বরগুনায় ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা মোহা. রফিকুল ইসলাম। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনসহ সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বরগুনায় ৩টি মুজিব কেল্লা, ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যারা ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করবেন। এ ছাড়া ৪২২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য, ৩৭ লাখ নগদ অর্থ প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৪২ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। দুর্যোগ প্রস্তুতি সভায় জেলা এনজিও ফোরামের সভাপতি মোতালেব মৃধা, প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তফা কাদের, রেডক্রিসেন্ট, দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাদের প্রস্তুতির বিষয় তুলে ধরেন।

মোংলা: ‘রেমাল’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে রোববার সন্ধ্যায় সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মোংলা আবাহওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ জানান, এটি বর্তমান যেই অবস্থান দেখাচ্ছে তাতে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি বাংলাদেশের ওপর দিয়েই অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সুন্দরবন এলাকা এবং বরিশালের পটুয়াখালী, বরগুনা, ও ভোলা জেলায় রেমাল এর আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় এরই মধ্যে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সব রকম সতর্কমূলক প্রস্তুতি নিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। কোস্ট গার্ড, নৌ বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে শনিবার দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে জরুরি বৈঠক করা হয়েছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার সাইফুর রহমান বলেন, মোংলা বন্দরে এই মুহূর্তে সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার, সার, পাথর ও গ্যাসবাহী ছয়টি জাহাজ অবস্থান করেছে। সেগুলোকে নিরাপদে নোঙ্গর করতে বলা হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় সব রকম প্রস্ততি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসনও। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, ১০৩ টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ১৩২০জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকে ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের কার্যক্রমের গতি বাড়ানো হবে। কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।

এদিকে মোংলা উপকূলে সচেতনতামূলক মাইকিং করেছে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। শনিবার সকাল থেকে ঘণ্টাব্যাপী মোংলার পশুর বিভিন্ন স্থানে এ প্রচার মাইকিং করা হয়।

মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. মুনতাসীর ইবনে মহসীন জানান, সকাল থেকে সুন্দরবন লাঘোয়া মোংলা উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় প্রচার মাইকিং করেন কোস্ট গার্ড সদস্যরা।

বাগেরহাট: ঘূর্ণিঝড় রেমাল ধেয়ে আসার খবরে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাস করা মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। তবে সকাল থেকে আকাশ কখনো রোদ আবার কখনো মেঘাচ্ছন্ন হচ্ছে। নদীতে থাকা মাছ ধরা ট্রলার গুলো উপকূলের ছোট ছোট খালে আশ্রয় নিয়েছে। কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে জনসচেতনামূলক প্রচার-প্রচারণা। এরই মধ্যে রেমাল মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় বাগেরহাটে ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ও ৩ হাজার ৫শ ৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৬৪৩ মেট্রিকটন চাল ও ৫লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিলের পাশাপাশি উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেরিবাধ এলাকায় গুলো নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

পটুয়াখালী: জেলায় রেমাল মোকা‌বেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তু‌তি মূলক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের দরবার হলে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক যাদব সরকার। জেলা সিভিল সার্জন ডা. এসএম কবির হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার যোবায়ের আহাম্মেদ।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া রিদয়, সিপিপি, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক জানান দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় ৭০৩ টি সাইক্লোন শেল্টার ৩৫টি মুজিব কিল্লা, ৭৩০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লক্ষ টাকার শিশু খাদ‌্য, ১০ লাখ টাকার গোখাদ‌্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড় শুকনা খাবার র‌য়ে‌ছে ১৫০০ প‌্যা‌কেট। নগদ টাকা র‌য়ে‌ছে ২৪ লাখ ৭ হাজার টাকা ৫০০ টাকা।

এ সময় মানুষকে সচেতন ও দুর্যোগে উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপির ৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকাসহ বিদ্যুৎ বিভাগ সড়ক বিভাগ ফায়ার সার্ভিসকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।

জেলায় মোট ৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন, ঔষধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সংরক্ষিত রয়েছে। জেলায় ১৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দুর্যোগের সময় কোথাও ভাঙন দেখা দিলে তা মেরামতের জন্য ১৬ হাজার জিও ব্যাগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এদিকে জেলায় ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে রয়েছে মুগ ডাল এবং ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়ের বলেন গুজোব মোকাবেলার জন্যে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

এদিকে কলাপাড়া উপকূলীয় অঞ্চলের জনগন, মৎস্যজীবি ও নৌযান সমূহকে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম শুরু করেছে নিজামপুর কোষ্টগার্ড। শনিবার সকাল নয়টায় মৎস্য বন্দর আলীপুর- মহিপুরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরন করে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। এসময় তারা খাপড়াভাঙ্গা নদীতে অবস্থানরত ট্রলার সমূহে থাকা জেলেদের ঘূর্নিঝড়ের সময় করনীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেন।

ঝালকাঠি: জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম। এ সভায় পুলিশ সুপার, স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য, শিক্ষা, দপ্তরের প্রধানগন এবং বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ, রেডক্রিসেন্টসহ জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যোগ দেন।

সভায় জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। এই কয় দিন সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্টেশন ত্যাগ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় নির্ধারিত সাইক্লোন শেল্টারসহ আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য সহ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে।


তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে দৌলতপুরে আবেগের জোয়ার, ঢাকার পথে দুই হাজার নেতাকর্মী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

প্রায় ১৭ বছরের দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বইছে আবেগের জোয়ার। এ ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে উপজেলা থেকে অন্তত দুই হাজার নেতাকর্মী ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

দৌলতপুর উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে অর্ধশত বাস, মাইক্রোবাস, হাইস ও প্রাইভেট কারে নেতাকর্মীরা রাজধানীর পথে যাত্রা করেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয়। আজ বুধবার সকালেও একাধিক বহর রওনা হয়েছে, আবার কেউ কেউ সন্ধ্যায় যাত্রা করবেন। অনেকে ট্রেন ও নিজস্ব ব্যবস্থায় ঢাকায় যাচ্ছেন। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রিয় নেতার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের চোখেমুখে উচ্ছ্বাস ও আবেগ স্পষ্ট। অনেকেই একে আন্দোলন-সংগ্রামের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন।

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদুজ্জামান রুবেল বলেন,

“১৭ বছর পর আমাদের নেতা দেশে ফিরছেন—এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। দৌলতপুর থেকে পাঁচটি বাস ও অন্তত ৩০টি যানবাহনে নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাচ্ছেন। সবার ভেতরেই এক অন্যরকম আবেগ কাজ করছে।”

দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী রেজা আহমেদ বাচ্চু বলেন,

“তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য শুধু রাজনৈতিক নয়, আবেগেরও একটি বিষয়। এটি গণতন্ত্রকামী মানুষের জন্য আশার বার্তা।”


সীমান্ত এলাকায় বিজিবির বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই বাজার এলাকায় শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি)-এর উদ্যোগে একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। সীমান্ত অঞ্চলের জনগণের আর্থ-সামাজিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে আয়োজিত এ মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন ৪৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম জাকারিয়া।

মেডিকেল ক্যাম্পে মোট ৫১০ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এ সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা বিভিন্ন জটিল রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সুস্থ জীবনধারা বজায় রাখার বিষয়ে পরামর্শ দেন।

শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি) কর্তৃপক্ষ জানায়, সীমান্ত এলাকার মানুষের কল্যাণে এ ধরনের মানবিক ও জনসেবামূলক কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।


ঠাকুরগাঁওয়ে সচেতন নাগরিক সমাজের বিক্ষোভ সমাবেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ে শরীফ ওসমান হাদী হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার এবং সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর সন্ত্রাসী হামলা ভাঙচুর ও অগ্নীসংযোগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল তিনটার দিকে শহর চৌরাস্তায় ঠাকুরগাঁও নাগরিক বৃন্দের ব্যানারে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে, রাজনীতিক ছাত্র-শ্রমিক, জনতা, কৃষক মজুর, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার কর্মী সহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, তেল গ্যাস খণিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ঠাকুরগাঁও শাখার সদস্য সচিব মাহাবুব আলম রুবেল, সংবাদকর্মী, মজিবর রহমান খাঁন, শিক্ষক ফজলে ইমাম বুলবুল, সাংস্কৃতিক কর্মী এস এম জসিমউদ্দীন, সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু, মানবাধিকার কর্মী নূর আফতাব রুপম, তরুণ সাংবাদিক সোহেল রানা, জয় মোহন্ত অলক, ছাত্র ফারহান সাদাত জাহেদি প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা ওসমান হাদী হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন এবং সারা দেশে যারা নৈরাজ্য ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর চেষ্টা করছে, যারা দিপু দাসদের আগুনে পুড়িয়ে মারছে, পিটিয়ে মারছে তাদের প্রতি নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি করেন। সেই সাথে উগ্রবাদ যেন বাংলাদেশে কায়েম না হয় সে জন্য বাংলাদেশী সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান আসে মানববন্ধন থেকে। বক্তারা আরও বলেন, যারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবিদের টার্গেট করে হত্যা করতে চাইবে এবং বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে মব সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।


৬৫ কোটি টাকার সেতু এখন ১৩৬ কোটি টাকা

নড়াইলের নবগঙ্গা সেতু
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইলের নবগঙ্গা নদীর ওপর সেতুর নির্মাণ ব্যয় ছিল মাত্র ৬৫ কোটি টাকা। নকশা জটিলতার কারণে নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যয় বেড়ে দাড়িয়েছে ১৩৬ কোটি টাকায়। দেড় বছরে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। সেই কাজ ৮ বছরেও শেষ হয়নি। এতে জন দুর্ভোগের কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন পথচারীসহ নদী পাড়ের মানুষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলা শহরের সঙ্গে কালিয়া উপজেলাসহ পাশের ৩ টি জেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করতে কালিয়া উপজেলার নবগঙ্গা নদীর ওপর বারইপাড়া সেতু নির্মাণ কাজ ২০১৮ সালে শুরু হয়। ৬৫১ দশমিক ৮৩ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থ্যের সেতু নির্মাণে প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয় ৬৫ কোটি টাকা। মেসার্স জামিল ইকবাল অ্যান্ড মঈনুদ্দীনবাসি কনস্ট্রাকশন ফার্ম সেতু নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হয়।

নির্মাণ কাজ ধীর গতির পাশাপাশি বাল্কহেডের ধাক্কায় সেতুর ৯ নাম্বার পিলারটি ২ বার ভেঙে নদীতে বিলীণ হয়। এক পর্যায়ে সেতুর মুল অংশের ৪টি পায়ার ও তিনটি স্প্যান বসানোর কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণ কাজের ব্যয় হিসেবে ৬১ কোটি টাকা প্রদান করে চুক্তি শেষ করে। দফায় দফায় কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি আর সেতুর নকশা জটিলতার কোপানলে পড়ে নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাড়ায় ১৩৫ কোটি ৯২ লাখ ৪৬ হাজার টাকায়।

দ্বিতীয় মেয়াদে কংক্রিট অ্যান্ড ‍স্টিল টেকনোলজিস্ট লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতুর বাকি অংশ নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হয়।

নদী পাড়ের বাসিন্দা হেনরী বলেন, বছরের পর বছর চলছে সেতুর নির্মাণ কাজ। শেষ কবে হবে জানা নেই। তিনি বলেন, আগে এক ঠিকাদার কাজ করে গেছে। এখন দেখছি আরেক ঠিকাদারকে। কাজের কাজ কিছু না, এখানে চলছে শুধু ঠিকাদার বদলের কাজ। তিনি বলেন, শুনছি এখন এই সেতু নির্মাণ করতে প্রায় ৩ গুন টাকা বেশি লাগছে। মনে হয় অফিসের লোকজন আর ঠিকদারের কারসাজিতে এমনটি হচ্ছে।

কালিয়া বাজারের ব্যবসায়ী শমসের আলী বলেন, জেলা শহর থেকে মালামাল এনে ব্যবসা করতাম। এখন সেই কায়দা নেই। দূর পথে এখন যেতে হচ্ছে খুলনা শহরে। এতে টাকা খরচ হচ্ছে বেশি। জানিনা কবে শেষ হবে নির্মাণ কাজ।

বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ খান লিটন বলেন, নদীর দুপাড়ের সংযোগ সড়কসহ ১১টি পায়ার, ১১টি স্প্যান এবং নদীর মধ্যবর্তী অংশে তিনটি পিলার ও ৩টি স্টিল স্প্যান বসানোর কাজ বাকি। তিনি বলেন, চলতি মাসে দুইটি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হবে। নির্দ্দিষ্ট মেয়াদের আগেই নদীর মধ্যবর্তী আর্চ্চস্প্যানটি বসাতে পারবো বলে আশা করছি।

জানতে চাইলে নড়াইল সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নজরুল ইসলাম বলেন, নকশার ত্রুটি সংশোধনের মাধ্যমে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তিনি দাবি করেন আগামী বছর জুনের মধ্যেই সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করে সেতু ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।


ঘন কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে চার যানবাহনের সংঘর্ষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সীগঞ্জ অংশে তিনটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি কাভার্ডভ্যানের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া কলেজ গেট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হলেও হাইওয়ে পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে কারও আঘাতই গুরুতর নয়। দুর্ঘটনার পরপরই এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হয় এবং প্রায় আধঘণ্টা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এটিএম মাহমুদুল হক জানান, খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলো রাস্তা থেকে সরিয়ে নেওয়ায় বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে এলেও চালকদের বেপরোয়া গতি এবং কাঙ্ক্ষিত সতর্কতার অভাবেই এই চারমুখী সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। শীতকালীন এই সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সকল চালককে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন এবং নিরাপদ গতিতে গাড়ি চালানোর বিশেষ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


গাড়ি ভর্তি মদ ফেলে পালাল মাদক পাচারকারী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে র‍্যাবের তাড়া খেয়ে গাড়িভর্তি বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মদ ফেলে পালিয়ে যায় মাদক পাচারকারীর দল ।

এসময় একটি গাড়ি থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১ হাজার ৬৪৮ বোতল মদ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত মদের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫৪ লাখ টাকা বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে ভৈরব উপজেলার ভৈরবপুর উত্তরপাড়া এলাকায় এঘটনা ঘটে।
র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় একটি বড় মদের চালান ঢাকার দিকে পাচার করা হবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের নাটাল মোড়ে একটি চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি কার্যক্রম শুরু করে। এসময় সন্দেহভাজন একটি গাড়ি দ্রুতগতিতে চেকপোস্টে আসে। গাড়িটিকে থামার সংকেত দেওয়া হলেও চালক তা অমান্য করে পালানোর চেষ্টা করে। র‍্যাব সদস্যরা গাড়িটিকে ধাওয়া করলে একপর্যায়ে চালকসহ দুজন ব্যক্তি গাড়িটি একটি গ্রামের ভেতরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

এবিষয়ে ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার সিনিয়র সহকারী এএসপি তপন সরকার জানান, অভিযানে পরিত্যক্ত গাড়িটি র‍্যাব ক্যাম্পে এনে তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১ হাজার ৬৪৮ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।


নোয়াখালীতে চর দখল নিয়ে গোলাগুলি, নিহত ৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নোয়াখালী উত্তর প্রতিনিধি

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জাগলার চরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় গুলিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮-১০জন। তাৎক্ষণিক পুলিশ নিহত একজনের নাম ঠিকানা জানাতে পারলেও অপর ৪ জনের নাম ঠিকানা জানাতে পারেনি। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চর গ্রামে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে, আলাউদ্দিন (৪০) উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর আমান উল্যাহ গ্রামের ছেরাং বাড়ির মহিউদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জাগলার চরের জমি সরকার এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেয়নি। এ সুযোগে ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী জাগলার চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী জাগলার চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরও বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর দুটি গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়। অভিযোগ রয়েছে, চর দখলে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার, বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ।

তারা কোপা সামছু বাহিনীকে চর থেকে বিতাড়িত করে চরের জমি দখলে নিতে ডাকাত আলাউদ্দিনের বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে দুটি গ্রুপ একাধিকবার বিরোধে জড়ায়। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুক যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে অপর পক্ষের ছোড়া গুলিতে আলাউদ্দিনসহ ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ৪ জনের মরদেহ ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তেও পারে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিমের মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, একটি মরদেহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ময়না তদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।


নাশকতার উদ্দেশে সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে আগ্নেয়াস্ত্র  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি ম্যাগাজিন ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে বিজিবি। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো একটি পক্ষ দেশে নাশকতার উদ্দেশে এসব অস্ত্র নিয়ে আসছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩ বিজিবির সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা বিওপির রাঘববাটি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে এসব আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান জানান, দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল, অতিরিক্ত চেকপোস্ট স্থাপন ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হয়। সীমান্ত থেকে প্রায় ৯০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রাঘববাটি এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে বিদেশি অস্ত্র প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে সকালে রাঘববাটি এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবির একটি টহল দল।

অভিযানকালে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তি বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। তাকে ধাওয়া করলে তার সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ ফেলে দ্রুত সীমান্তের দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ব্যাগটি উদ্ধার করা হয়। ব্যাগের ভেতর কালো পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ২টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি ম্যাগাজিন ও ৫ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়। তিনি আরও জানান, এর আগেও গত ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে পৃথক একটি বিশেষ অভিযানে ৫৩ বিজিবি ৪টি বিদেশি পিস্তল, ৯টি ম্যাগাজিন এবং ২৪ রাউন্ড গুলি জব্দ করেছিল।

বিজিবি অধিনায়ক আরও জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো একটি পক্ষ দেশে নাশকতার উদ্দেশে অস্ত্র নিয়ে আসছে।


ঈশ্বরদীতে ৮ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজটে ভোগান্তি

* পুলিশ-সেনাবাহিনীর ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

ঈশ্বরদীতে ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য স্বতন্ত্র পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ ৮ দফা দাবিতে দফায় দফায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এতে পুরো শহরজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েছিল শহরবাসী। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত পৌর শহরের আলহাজ মোড়ের প্রধান ফটক ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করে তারা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। এতে যানজটে পুরো শহর অচলাবস্থা হলে তাৎক্ষণিক পুলিশ-সেনাবাহিনী এসে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন ও দাবি পূরনে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে বলে জানালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনীর ধাওয়াতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিতে বললে শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। মূহুর্তের মধ্যে পুরো এলাকা উত্তেজিত হয়ে পড়লে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন। এতে শিক্ষার্থীরা সেখানে উপস্থিতি ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমারকে ধাক্কা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে দৌড়ে পালানোর সময় সড়কে পড়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশবাহিনী লাঠিচার্জ করে প্রায় ১০-১৫ জন শিক্ষার্থীকে আহত করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সেই সঙ্গে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার এবং ঈশ্বরদী কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করছি।

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, তারা প্রায় ৩ ঘণ্টা শহরের মূল পয়েন্ট অবরোধ করে তীব্র যানজট সৃষ্টি করে। তাৎক্ষণিক আমরা গিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলে কয়েকজন শিক্ষার্থী স্লোগান দিয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। এ সময় উপস্থিত পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে যানজট নিরসন করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও শিক্ষার্থীরা নিজ প্রতিষ্ঠানে ফিরে গেছে।


তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে কুমিল্লায় স্বাগত মিছিল

আপডেটেড ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০০:১৩
কুমিল্লা (দক্ষিণ) প্রতিনিধি

দেশনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এক বিশাল স্বাগত মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর মো. বিল্লাল মিয়া তার নিজ এলাকা কুমিল্লা নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের ছোটরা এলাকায় এই স্বাগত মিছিলের আয়োজন করেন।

মিছিলটি ফৌজদারি আমগাছের মোড় থেকে শুরু হয়ে ছোটরা পশ্চিম পাড়া, উত্তর পাড়া ও পূর্ব পাড়া প্রদক্ষিণ করে আদালত চত্বর অতিক্রম করে পুনরায় ফৌজদারি মোড়ে এসে শেষ হয়।

মিছিলে নেতৃত্ব দেন ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাহিদা আক্তার মুন্নী এবং কুমিল্লা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. বিল্লাল মিয়া।

এ সময় মিছিলে শতশত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। তারা তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে নগরীর পরিবেশ মুখরিত করে তোলেন।

স্বাগত মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় এবং এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।


দেবিদ্বারে হাসনাত আব্দুল্লাহর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) সংসদীয় আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনোনীত প্রার্থী ও দলটির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন স্থানীয় এনসিপি নেতারা এবং শহিদ পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাকিবুল ইসলামের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌর এলাকার ভিংলাবাড়ি গ্রামের শহিদ সাব্বিরের মা রিনা আক্তার, এলাহাবাদ গ্রামের শহিদ তন্ময়ের বাবা মো. সফিকুল ইসলাম, এনসিপির উপ‌জেলা ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী মো. জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্ম সমন্বয়কারী শামীম কায়সার, সাইফুল ইসলাম শামীম, রায়হান সিদ্দিকসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শেষে নেতারা বলেন, হাসনাত আব্দুল্লাহর পক্ষে শহিদ পরিবারের সদস্যদের দ্বারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এটি প্রমাণ করে যে তিনি আজ জনগণের আস্থা, ভালোবাসা ও নৈতিক সমর্থনের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। শহিদ পরিবারগুলোর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ তার রাজনীতির প্রতি মানুষের গভীর বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ।

তারা আরও বলেন, ন্যায়ভিত্তিক রাজনীতি, ত্যাগের আদর্শ এবং গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে হাসনাত আব্দুল্লাহর এই মনোনয়ন ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক ও দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা রাখবে। জনগণের পাশে থেকে তিনি দেশ ও সমাজ গঠনে কার্যকর নেতৃত্ব প্রদান করবেন- এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেন নেতারা।


বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়নে বেনাপোলে গণশুনানি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

বেনাপোলে বাংলাদেশ রেলওয়ে যশোর অঞ্চলের সেবা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সেবার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের ইমিগ্রেশন ভবনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ময়েনউদ্দীন সর্দার বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো), হানিফ হোসেন ডিইএন-১ পাকশী, হাসিনা আক্তার ডিটিও পাকশী, শ্রী গৌতম কুমার কুন্ডু ডিসিও পাকশী, রিফাত শাকিল ডিইই পাকশী, বেনাপোল ইমিগ্রেশনের পরিদর্শক মোর্ত্তজা, বেনাপোল সিএন্ডএফ সভাপতি - শামসুর রহমান, সহসভাপতি খায়রুজ্জামান মধু, সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সহিদ আলী, প্রেসক্লাব বেনাপোলের সাধারণ সম্পাদক বকুল মাহবুবসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেবাগ্রহীতা ও সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

গণশুনানিতে সেবাগ্রহীতা ও ভুক্তভোগী নাগরিকেরা রেলওয়ে সেবা সংক্রান্ত নানা সমস্যা, দুর্ভোগ ও প্রস্তাব তুলে ধরেন। ট্রেনের সময়সূচি ঠিক রাখা, স্টেশন এলাকার নিরাপত্তা, প্ল্যাটফর্ম উন্নয়ন সহ বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করেন।

বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ। বলেন, গণশুনানির মাধ্যমে জনগণের সমস্যা ও প্রত্যাশা সরাসরি শোনা যায়, এতে দ্রুত সমাধানের পথ খুলে যায়। তিনি আরও জানান, নিয়মিত এ ধরনের উদ্যোগ চালু থাকলে রেলওয়ে আরও জনবান্ধব, কার্যকর ও সেবামুখী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।

এ সময় অন্যান্য বক্তারা বেনাপোল থেকে চলাচলরত রূপসি বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের আদলে আরও একটি ট্রেন চালুর দাবি করে বলেন, সেবার মান বাড়াতে কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। জনগণের অর্থে পরিচালিত রেলওয়ের প্রতিটি সেবা যেন সরাসরি সেবাগ্রহীতার কাছে পৌঁছে এটা নিশ্চিত করাই এখন মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

গণশুনানি শেষে সাধারণ মানুষ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আগে অনেক সমস্যার কথা জানানোর সুযোগ ছিল না, এখন সরাসরি কর্মকর্তাদের সামনে তুলে ধরতে পারছেন-যা সমস্যা-সমাধানকে দ্রুত ও সহজ করে তুলবে।


আবার দুই ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মাছ শিকারে গিয়ে দুইটি ট্রলারসহ ১৩ জন জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটক হওয়া ট্রলার দুটি টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া নৌঘাট এবং পৌরসভার কায়ুকখালিয়া ঘাটের বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালিয়া ঘাট ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ।

তিনি বলেন, গভীর সাগরে মাছ শিকার শেষে জেলেরা টেকনাফের দিকে ফিরছিলেন সকালে। এ সময় বঙ্গোপসাগরের মোহনা এলাকা থেকে আরাকান আর্মির একটি দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুইটি ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের একটি খালে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আটক জেলেদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জেলে পল্লিগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

একটি মাছ ধরার ট্রলারের মালিক আব্দুল জলিল বলেন, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে মাছ ধরে ফেরার পথে নাফ নদীর মোহনা থেকে মাঝিসহ ৭জন জেলেসহ তার ট্রলারটি ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এ ঘটনায় জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। অনেকেই সাগরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমামুল হাফিজ নাদিম বলেন, দুইটি ট্রলারসহ ১৩ জন জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

এদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানায়, গত ১০ মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাফ নদী ও সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ৩৫০ জন জেলেকে অপহরণ করেছে আরাকান আর্মি। বিজিবির সহায়তায় তাদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনো প্রায় ১৫০ জন জেলে তাদের হাতে আটক রয়েছে। এর ফলে উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের মধ্যে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে।


banner close