প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ দেশের উপকূল অঞ্চলসহ এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। ঝড়ের শেষে দেখা দিতে শুরু করেছে ক্ষতের চিহ্নগুলো। গত রোববার রাতে উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এর তাণ্ডবে বাড়িঘর ও গাচপলার নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান ১১ জন। বিধ্বস্ত হয়েছে উপকূলসহ বিভিন্ন এলাকার দেড় লাখ বাড়িঘর। উপড়ে ও ভেঙে গেছে হাজার হাজার গাছপালা। ৬১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভেসে গেছে হাজার হাজার মৎস্যঘের। প্রাণ হারিয়েছে বিপুল পরিমাণ গবাদি পশু। এছাড়া স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জলোচ্ছ্বাসের কারণে নোনা পানি দীর্ঘক্ষণ জমে থাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের।
প্রচণ্ড আকারের এই ঝড় বুক দিয়ে আগলে আরও ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়-ক্ষতি ঠেকিয়ে দিয়েছে দেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন। এখানে গাছপালার ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জলোচ্ছ্বাস বেশিক্ষণ অবস্থান করায় প্রাণ হারিয়েছে বনচর প্রাণী হরিণ ও শূকর। গত তিন দিনে বন থেকে উদ্ধার হয়েছে ৪০টি হরিণের মৃতদেহ। এরমধ্যে গতকাল উদ্ধার হয় আরও ১০টি হরিণের মরদেহ। বনের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল এসব মৃতদেহ।
সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানা যায়, সেখানে ঝড়ে উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা। বন বিভাগের জেটি, মিষ্টি পানির পুকুরসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অবকাঠামোও।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘রেমালের বিষয়ে আমরা আগে থেকেই সতর্ক ছিলাম। যার কারণে মানুষের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে অবকাঠামোর বেশকিছু ক্ষতি হয়েছে। সুন্দরবন মায়ের মতো বুক পেতেই আমাদেরকে রক্ষা করে চলেছে। ঝড়ে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হলদেবুনিয়া, কচিকাটাসহ অভয়ারণ্যের ক্যাম্পগুলোর রাস্তা ভেঙে গেছে। পুকুর ডুবে গেছে, পাড় ভেঙে গেছে। বেশ কিছু ক্যাম্পেরও অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি ৫ থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পায়। ফলে লোকালয়ে ভেসে আসা বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরা, চুনকুড়ি নামক এলাকা থেকে ৩টি হরিণ উদ্ধার করা হয়। পরে সেগুলো সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিতে অবমুক্ত করা হয়েছে।’
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন বিভাগের জেটি, স্বাদু পানির পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, ‘পূর্ব বন বিভাগের দুবলার চর, শেলার চর, কচিখালী, কটকা, শরণখোলা ও বরগুনা জেলার পাথরঘাটা স্টেশনের টিনের চালা উড়ে গেছে। কটকা কেন্দ্রের কাঠের জেটি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। বনকর্মী, জেলে, বাওয়ালি ও বন্যপ্রাণীদের জন্য সুপেয় পানির যে আধার ছিল, সেগুলো পানিতে প্লাবিত হয়ে নোনা পানি ঢুকে গেছে। কটকায় সুপেয় পানির যে পুকুরটি ছিল, সেটি সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
আমাদের ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম অনেক জায়গায় নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে ছোট ছোট যে ট্রলারগুলো ছিল, সেগুলো জলোচ্ছ্বাসের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক কাঠ ভেসে গেছে। প্রবল বাতাসের ফলে বনের গাছ-গাছালি ভেঙেছে। বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর খবরও পেয়েছি।’
খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৩৯টি মৃত হরিণ ও একটি মৃত বন্য শূকর উদ্ধার করা হয়েছে। শতাধিক মিষ্টি পানির পুকুর নোনা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। আর ৭০টিরও বেশি জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১৭টি হরিণ জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।’
প্রাথমিকভাবে সুন্দরবনে বন বিভাগের ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এখনও বিদ্যুৎ পাননি ২ লাখ গ্রাহক
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বাগেরহাটে ঝোড়ো বাতাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির তিন দিন পর বিদ্যুৎহীন তিন লাখের বেশি গ্রাহকের সংযোগ পুনঃস্থাপন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ। বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত এসব বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাগেরহাট কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) সুশান্ত রায় জানান। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০০-এর বেশি শ্রমিক নিয়ে কাজ করে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়।
ঘূর্ণিঝড়ে পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনে গাছপালা পড়ে জেলার প্রায় পৌনে পাঁচ লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন।
সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তার ওয়ার্ডে তিনটি গ্রামে চার হাজারের অধিক পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। ঝড়ের দিন (রোববার) বিকেলে বিদ্যুৎ চলে যায়। কয়েক দিন কাজ করে তারের ওপর পড়ে যাওয়া গাছপালা সরিয়ে ছিঁড়ে যাওয়া তার পরিবর্তন করে নতুন সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
কচুয়া উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম বুলু বলেন, উপজেলা সদরের থানা, হাসপাতাল, উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনে ছিঁড়ে যাওয়া তার মেরামত করে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা সুশান্ত রায় বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বাগেরহাটের নয়টি উপজেলায় বিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঝড়ে পৌনে পাঁচ লাখের বেশি গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঝড় থেমে যাওয়ার পর কাজ শুরু করি।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) “অনলাইন ট্যাক্স রিটার্ন এন্ড রেকর্ড কিপিং” শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ আজ ১১ আগস্ট সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় কৃষি অনুষদের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর আয়োজনে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইকিউএসি পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহবুব রব্বানীর সভাপতিত্বে এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. আমিনুল ইসলাম টিটোর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল লতিফ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকিউএসি’র অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল মাসুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বিশিস্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, “এ প্রশিক্ষণ সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয়। পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনই একজন কর্মকর্তা বা শিক্ষকের প্রকৃত সাফল্য।” তিনি অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ থেকে অর্জিত জ্ঞান কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান বলেন, “ডিজিটাল যুগে ট্যাক্স ব্যবস্থাপনা ও রেকর্ড সংরক্ষণে আধুনিক পদ্ধতি জানা অত্যন্ত জরুরি। এ ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তাদের কাজের মানোন্নয়নে সহায়ক হবে।”
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল লতিফ বলেন, “কর সংক্রান্ত সঠিক ধারণা আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। এ প্রশিক্ষণ অংশগ্রহণকারীদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।”
প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী জেলার ট্যাক্স পরিদর্শক কৃষিবিদ শেখ সালামত উল্লাহ। দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ৫০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) এন্টি-র্যাগিং ভিজিলেন্স কমিটি এবং উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধকল্পে পুনর্গঠিত কমিটির যৌথ এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের দ্বিতীয় তলায় উপাচার্য সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ’র সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল হক, এন্টি-র্যাগিং ভিজিলেন্স কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ শাহীনুজ্জামান, কমিটির সদস্য ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোঃ ওবায়দুল ইসলাম, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী, ফাইন আর্টস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুল হাসান এবং সদস্য-সচিব উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ সালাউদ্দিন মোল্লা, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধকল্পে পুনর্গঠিত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি, কমিটির সদস্য আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহা. শরিফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোছা. খোদেজা খাতুন, অধ্যাপক ড. মোছা. হামিদা খাতুন, তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ অফিসের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সাহেদ হাসান।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, আমাদের সমাজে যৌন নির্যাতনের বিষয়ে অনেকেই অভিযোগ করতে চায় না। ফলে অপরাধীরা ছাড় পেয়ে যায়। অভিযোগ করলেও, তা করে চূড়ান্ত মুহূর্তে। যে সময় অভিযোগ করলে জাতীয় পত্রিকায় আসবে, এসময় অভিযোগ করে। তখন কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে আর কিছু থাকে না।
এজন্য তিনি কমিটির সদস্যদের মাঝে বিভিন্ন জায়গা ভিত্তিক দায়িত্ব ভাগ করে দেয়ার নির্দেশনা দেন। সেই সাথে তিনি কমিটি দু্ইটির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদা অফিস রুমের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই রোধে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১) এর বিশেষ অভিযানে ৬ জন আসামী গ্রেফতার হয়েছে। অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র এবং মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব-১১ এর গোয়েন্দা টিম দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার উপর নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহ করে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় ১১ আগস্ট ভোর ৫টায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানাধীন পাঁচকানির কান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাত ও ছিনতাই চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন— মফিজুল ইসলাম ওরফে জামিল বাবু (২৮), সাইফুল ইসলাম ওরফে সাকিব (২৫), মোঃ মানিক (৩১), সাদ্দাম (৩২), সহিদ (৩৭) এবং মনির হোসেন (৫৭)। তাদের কাছ থেকে ৫টি চাপাতি, ২টি চাইনিজ কুড়াল, ৫টি ছুরি, ১টি সুইচ গিয়ার এবং ১টি হাশুয়া (বড় দা) উদ্ধার করা হয়। এছাড়া, একই দিনে পৃথক অভিযানে সোনারগাঁওয়ের মেঘনা টু বটতলাগামী রোড থেকে ১০১ কেজি গাঁজাসহ একটি মিনি ট্রাক জব্দ করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা মেঘনা ব্রিজের টোলপ্লাজা এলাকায় কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করে যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়িতে হামলা চালাত। তারা দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করত। কখনো গাছের গুঁড়ি ফেলে যানজট তৈরি করে এবং গাড়ির গ্লাস ভেঙে লুটপাট চালাত।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক, ডাকাতি, নাশকতা, চুরি ও মারামারির একাধিক মামলা রয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, আসামী সাদ্দামের (৩২) নামে ১৮টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ১০টি ডাকাতি ও ২টি হত্যা মামলা।
র্যাব-১১ জানিয়েছে, চক্রের অবশিষ্ট সদস্যদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন এবং উদ্ধারকৃত মাদক সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম চলছে।
পিআর পদ্ধতির গুরুত্ব তুলে ধরে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, উচ্চকক্ষে যদি আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়, প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব উচ্চকক্ষে থাকবে। একটি কার্যকর পারলামেন্ট হবে। সেজন্য আমরা বলেছি, নিম্ন কক্ষে না হলেও উচ্চকক্ষে আগামী নির্বাচন এবং আগামীর সংসদেই যেন পিআর পদ্ধতিতে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়। সোমবার বিকেলে রাজশাহীতে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিধির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ছাত্র, যুব গণঅধিকার পরিষদ রাজশাহী জেলা ও মহানগর এই সমাবেশের আয়োজন করে।
এসময় তিনি রাষ্ট্রসংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই দেশের মেহনতি মানুষ ভ্যাট দেয় ট্যাক্স দেয় আর সেই ভ্যাট-ট্যাক্সের টাকা উন্নয়নের নামে লুটপাট করে রাজনীতিবিদ, এমপি, মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিরা বাইরে পাচার করে। বাইরে চিকিৎসা নেয়, ছেলে মেয়েদেরকে উন্নত শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে পাঠায়। আর এই দেশের মানুষের ভাগ্যে জোটে দুর্ভাগ্য।
৪৮ শতাংশ ভোটার এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নাই উল্লেখ করে নূর বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, বায়তুলমোকাররমের মসজিদের খতিব সব একযোগে পালাইছে। এই উদাহরণ থাকার পরও যদি কারও শিক্ষা না হয় তাহলে তাদের জন্যও ভবিষ্যতে নির্মম পরিণতি অপেক্ষা করছে। তাই আমরা সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে বলতে চাই, এই দেশের মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে। ৪৮ শতাংশ মানুষ সিদ্ধান নেয়নাই তারা কাকে ভোট দিবে। কাজেই ১০ টা হুন্ডা ২০ টা গুন্ডার ভয় দেখিয়ে, প্রশাসন দিয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে কেউ এমপি হবেন, মন্ত্রী হবেন, সরকার গঠন করবেন; সেই ইতিহাস ভুলে যান। আগের দিন নাই।
স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম, রোগীদের হয়রানি ও সিন্ডিকেট ভাঙার দাবিতে বরিশালের ছাত্র-জনতা দুই সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম) পরিদর্শনে না আসায় তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনের প্রধান সংগঠক মহিউদ্দিন রনি। তিনি বলেন,দুই সপ্তাহ ধরে সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা ও রোগীদের ওপর হয়রানির বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচি পালন করছি। রোববার ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরিশালে আসেননি। তাই আজ থেকে বরিশালে মহাসড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি শুরু করছি।
মহিউদ্দিন আরো বলেন, বরিশালবাসীর কষ্ট এখনো মন্ত্রণালয় পর্যন্ত পৌঁছায়নি। যদি শেবাচিম হাসপাতালে দুর্নীতি ও অবহেলা অব্যাহত থাকে, আন্দোলন কঠোর হবে।
অপরদিকে, শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর সংবাদ সম্মেলনে বলেন,আমরা হাসপাতালের সেবা মান উন্নয়নে কাজ করছি। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটানো হবে। আগামী মাসে নতুন ৩২শ নার্স ও ৩ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে। এছাড়া এমআরআই মেশিন, ক্যাথল্যাব ও সি-আম মেশিন সরবরাহ করা হবে।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন সিকদার জানান, আজও শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছিল। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত জুলাই-২০২৫ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৭৪ কোটি ২৮ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৯ কেজি ২৬৭ গ্রাম স্বর্ণ, ১৯ কেজি ৮৩৮ গ্রাম রূপা, ১৫,০৪১টি শাড়ী, ৮,৮১১টি থ্রিপিসশার্টপিসচাদরকম্বল, ২,২৯৬টি তৈরী পোশাক, ২,৯৪১ মিটার থান কাপড়, ২,৮৯,০৬১টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ১০,৯১,২৭২টি আতশবাজি, ৩,৯২১ ঘনফুট কাঠ, ৩,৩৪৫ কেজি চা পাতা, ৬৮,১২৯ কেজি সুপারি, ১৬,১৩৪ কেজি সার, ১০,৮৭৫ কেজি কয়লা, ৪০,৩৭৩ কেজি সুতাকারেন্ট জাল, ৩৪৩টি মোবাইল, ৪৬৮টি মোবাইল ব্যাটারি, ৭,৮৬১টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৪৬,৬৪৪টি চশমা, ৬,০২৪ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৬০৭ লিটার ভোজ্য তেল, ৯৫১ লিটার ডিজেল, ৭,৮৩৫ কেজি জিরা, ৫৯১ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ১৯১ ব্যাগ চিংড়ি মাছের পোনা, ১,৯৬৩ কেজি কফি, ২,২২,৮৯৯ পিস চকোলেট, ৯৪৩টি গরুমহিষ, ২টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ৫টি ট্রাককাভার্ড ভ্যান, ৭টি পিকআপমাহেন্দ্র, ৭টি প্রাইভেটকারমাইক্রোবাস, ২০৬টি নৌকা, ৫৭টি সিএনজিইজিবাইকরিক্সা, ৫৩টি মোটরসাইকেল এবং ৪২টি বাইসাইকেলভ্যান।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ১০টি দেশীয়বিদেশী পিস্তল, ১টি রিভলবার, ১টি এসএমজি, ২টি রাইফেল, ৪টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ৫টি ম্যাগাজিন, ৭৫টি গোলাবারুদ, ৫০০ গ্রাম গান পাউডার এবং ১১টি অন্যান্য অস্ত্র গুলি।
এছাড়াও গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৯,৮৯,৫৮৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৮১৬ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ৩ কেজি ৪৫০ গ্রাম হেরোইন, ১৪০ গ্রাম কোকেন, ১০,৬৮৭ বোতল ফেনসিডিল, ৭,৮৭০ বোতল বিদেশী মদ, ৩৩৪ লিটার বাংলা মদ, ৯৪১ বোতল ক্যান বিয়ার, ২,০২১ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা, ৪,০৬,৬৩৭ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৪৫৫ কেজি তামাক পাতা, ৮০,৬৯৯টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেটইনজেকশন, ৪,৯৫৯ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৯,২৯৮টি এ্যানেগ্রাসেনেগ্রা ট্যাবলেট এবং ৩৭,৭৩,২১২ টি বিভিন্ন প্রকার ঔষধ ও অন্যান্য ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১৩ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ২০৪ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ৯ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৫৪০ জন মায়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার রাজশাহী আঞ্চলিক লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘সোশ্যাল একাউন্ট্যাবিলিটি টুলস’ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকরেন স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক পারভেজ রায়হান।
একাউন্ট্যাবিলিটি বা জবাবদিহিতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে পারভেজ রায়হান বলেন, বাংলাদেশের সমসাময়িক অনেক দেশ উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিতকরণে যে অগ্রগতি দেখিয়েছে সে অনুযায়ী আমাদের দেশ এখনও পিছিয়ে আছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য তিনি দেশের কর্মক্ষমতা সূচক বৃদ্ধির উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় মূল প্রবন্ধে তিনি জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা, তথ্য অধিকার আইন, নাগরিক সনদ ও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
কর্মশালায় আলোচকবৃন্দ বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমরা নিজে যদি শুদ্ধাচারী না হই কোনো প্রক্রিয়াই আমাদের শুদ্ধাচারী বানাতে পারবে না। সেজন্য ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের উন্নতি করতে হবে। জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আলোচকবৃন্দ স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ইমেইল আপডেট ও তথ্য হালনাগাদকরণের জন্য আহ্বান জানান।
আরপিএটিসি’র উপপরিচালক তামান্না নাসরীন ঊর্মি এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক মো. তারেক মাহমুদ। কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নেন।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে প্রতিটি বিভাগ বরণ করেছে। সোমবার (১১ আগস্ট) প্রতিটি বিভাগ নিজ শ্রেণীকক্ষে নবীনদের বরণ করে নেয়। এদিকে নবীনদের ক্লাস শুরু হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ৪৩ আসন ফাঁকা রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, বিগত বছরের তুলনায় এবার সর্বোচ্চ আসন পূরণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৪৩টি আসন ফাঁকা আছে। ‘২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ৮টি অনুষদের অধীনে ৩৬টি বিভাগে মোট আসনসংখ্যা ২ হাজার ৪৪৭টি। তন্মধ্যে ২ হাজার ৪০৪ শিক্ষার্থী চূড়ান্ত ভর্তি সম্পন্ন করেছেন।
একাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার শহীদুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় টেকনিক্যাল কমিটি ও জিএসটি কমিটি ফাঁকা আসনের বিষয়ে মিটিং করে জানাবে। পরবর্তীতে সেখানে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে জানাতে পারবো।’
নবীন শিক্ষার্থীদের আগমনে বিশ্ববিদ্যালয়কে র্যাগিংমুক্ত রাখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যে মাইকিং করে র্যাগিং-বিরোধী প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, র্যাগিং বিরোধী প্রচারে আমরা বেশ কিছু কাজ হাতে নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং জিরো-টলারেন্স। র্যাগিং এর সাথে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পিরোজপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১১ আগস্ট) সকাল ১০.৩০ মিনিটে সিও অফিস জেলা প্রেস ক্লাব পিরোজপুর এর অস্থায়ী কার্যালয়ে জেলা প্রেসক্লাব পিরোজপুর এর উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
জেলা প্রেসক্লাব পিরোজপুরের সভাপতি এম এ জলিল এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু জাফর এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন-সহ-সভাপতি মোঃ নাসির উদ্দিন, হাসনেয়ারা হক,যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাইনুল ইসলাম মামুন,কোষাধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন পলাশ প্রমুখ।
এছাড়াও সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম সোহেল বিল্লাহ কাজল , সহ-সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেল,সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাহিন ফকির,দপ্তর সম্পাদক এম এ নকিব নাসরুল্লাহসহ প্রায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা দেশের সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাহীনতার প্রমাণ। শুধু গাজীপুর নয়, সারা দেশেই সাংবাদিকেরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন।
বক্তারা আরও বলেন, “সাংবাদিকরা সত্য ও ন্যায়বিচারের কণ্ঠস্বর। তাদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত না হলে তথ্যপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে, যা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনবে।”
তারা তুহিন হত্যার দ্রুত বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। পাশাপাশি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
এ সময় বক্তারা দেশে সাংবাদিকদের ওপর ক্রমবর্ধমান হামলা ও সহিংসতা ঠেকাতে কার্যকর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবি জানান এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বক্তব্যে বক্তারা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তুহিন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রসাশনকে ধন্যবাদ জানান।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। ভোর রাত (সোমবার) ৩টার দিকে উপজেলার আওনা ইউনিয়নের কাবারিয়াবাড়ী এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ অভিযান পরিচালনা করেন ২৬ বীর সরিষাবাড়ী অস্থায়ী ক্যাম্প এর ক্যাপ্টেন অর্ণব কবির প্রাপন।
জানা যায়, সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সরিষাবাড়ী উপজেলায় কাবারিয়াবাড়ী এলাকায় মাদক বেচাকেনা হচ্ছে এমন সংবাদে অভিযান চালানো হয়। যৌথ বাহিনী কাবারিয়াবাড়ী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে সাদ্দাম মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার বাড়ীপোটল গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে নাসির উদ্দিন (২৪), রুবেল মিয়া (৩৪), ও সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের কাবারিয়াবাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে সাদ্দাম মিয়া (৩৬)। আটককালে তাদের কাছ থেকে ১৮ পিস ইয়াবা, ১ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা, ৫টি বার্টন মোবাইল ফোন, নগদ ৭ হাজার ৮শ ৯০ টাকা এবং একটি কুড়াল জব্দ করা হয়। পরে সকাল সাড়ে ৫ টার দিকে আটককৃতদের তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ জসিম উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী।
এ বিষয়ে তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ জমিন উদ্দিন বলেন, মাদকসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে, ড্রেস কোড ও গ্লাভস ছাড়াই খাবার তৈরীর দায়ে ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। পাশাপাশি জানিয়ে দেওয়া হয়, ভবিষ্যতে একই অবস্থা পাওয়া গেলে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরের শহরের পাইকপাড়া এলাকায় এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী।
তিনি জানান, জেলা প্রশাসকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় পরিচালিত এই তদারকি কার্যক্রমে স্টোর রুমসহ রান্নাঘরের অবস্থা দেখে বিস্মিত হন তারা। খাদ্যসামগ্রী এলোমেলোভাবে রাখা, অপরিচ্ছন্ন উপকরণ ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতির চরম অভাব সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ছিল ভোক্তা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টে গ্রাহকদের জন্য খাবার প্রস্তুতের দৃশ্য ছিল হতাশাজনক।
অভিযানে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহীন এবং সদর উপজেলার নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকও উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার (১১ আগষ্ট) সকালে মাদারীপুর পৌর শহরের চরমুগরিয়া বন্দরে এই কর্মসূচী পালন করে বেসরকারি সংস্থা রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক)।
কর্মসূচীর অংশ হিসেবে চরমুগুরিয়া বন্দরের গরুর হাট-বাজার এলাকায় রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক) এর মাদারীপুর জেলায় কর্মরত কর্মকর্তারা সড়কের পাশে বিভিন্ন প্রকারের ফলজ ও বনজ গাছের চারা রোপন করেন।
এসময় রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক) এর মাদারীপুরের মনিটরিং কর্মকর্তা ওয়াদুদ খান বলেন, জুলাই পুনর্জাগরণ ও তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষ্যে আমাদের প্রতিষ্ঠান রিক সারাদেশে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পালন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় মাদারীপুর যোনাল অফিসের অধীনস্থ সকল শাখা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৃক্ষ রোপনের এ কর্মসূচী পালন করছি। আশা করছি, এ কর্মসূচীর আওতায় আমরা যে সকল বৃক্ষ রোপন করেছি, এসব বৃক্ষ থেকে ভবিষ্যতে মানুষ ও পশুপাখিরা ফল খেতে পারবে, গাছগুলো একসময় বড় হয়ে কাঠের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ছায়া ও অক্সিজেন দিবে, প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে এই বৃক্ষ বড় ভূমিকা পালন করবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক) এর মাদারীপুরের মনিটরিং কর্মকর্তা ওয়াদুদ খান, যোনাল ম্যানেজার এ,বি,এম জাহিদুল কবির, এরিয়া ম্যানেজার শেখ নাহিদ হাসান, শাখা ব্যবস্থাপক মো.বাবুর আলী, মাদারীপুর জেলা সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক রিপনচন্দ্র মল্লিক, দৈনিক বাংলার সাংবাদিক মোঃ ফায়েজুল কবীর সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যম কর্মীরা।
টাঙ্গাইলের সখীপুরে আগুনে পুড়ে এক কৃষকের ৪ টি গরু মারা গেছে। সোমবার(১১ আগস্ট) ভোররাতে উপজেলার আড়াইপাড়া বেগবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী কৃষক শাহ আলম বেগ জানান, মশার উপদ্রব থেকে গরুকে রক্ষা করতে তিনি নিয়মিত মশার কয়েল ব্যবহার করে থাকেন। আজ ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তার ঘুম ভাঙলে তিনি গোয়ালঘরের চারপাশে আগুন দেখতে পান। দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে চিৎকার করতে থাকলে প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ততক্ষণে তার সব শেষ হয়ে যায়। এর মধ্যেই চারটি গরু পুড়ে মারা গেছে। একটি গাভি দগ্ধ হয়ে গোয়ালঘর থেকে বাইরে চলে যায়। গুরুতর দগ্ধ আরেকটি গরুকে স্থানীয় লোকজন জবাই করেন। আগুন নেভাতে গিয়ে শাহ আলমও আহত হন। তাঁর দুহাত পুড়ে যায়।
কৃষক শাহ আলম আরও জানান, আমি সম্প্রতি দুটি ব্যাংক থেকে প্রায় দুই লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে গরু কিনে লালন পালন শুরু করেছিলাম। গোয়ালঘরসহ ৪টি গরু পুড়ে যাওয়ায় তার অন্তত ৭/৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মশার কয়েল থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শাহ আলমের পাশে দাঁড়িয়ে যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার, আমরা তা করব।’