উপজেলা নির্বাচনের চতুর্থ ও শেষ ধাপ উপলক্ষে আগামী ৫ জুন দেশের ৫৮টি উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রজ্ঞাপন থেকে বিষয়টি জানা গেছে। প্রজ্ঞাপনটি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামানের স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামং দ্য ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিজ অ্যান্ড ডিভিশনসের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অংশে ৩৭ নম্বর ক্রমিকের অনুবলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের চাহিদা মোতাবেক ৫৮টি উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ভোটগ্রহণের দিন অর্থাৎ ৫ জুন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো।’
ইতোমধ্যে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তিন ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ৫ জুন চতুর্থ ও শেষ ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে স্থগিত হওয়া ২০ উপজেলার ভোট আগামী ৯ জুন অনুষ্ঠিত হবে।
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে উজানের পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে, হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙামাটির আইকন খ্যাত ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে পানি ছুই ছুই। মঙ্গলবার দুপুর ২ টা দিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সেতুর পাটাতনের অনেক স্থানে ২-৩ ইঞ্চি পানি উঠতে শুরু করেছে।
রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরতে আসা পর্যটক নাসির বলেন, বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটির প্রকৃতি অনেক সুন্দর তাই ঘুরতে আসলাম কিন্তু এসে কিছুটা মন খারাপ হয়ে গেলো ব্রীজের উপর পানি আসতে শুরু করেছে।
রাঙামাটি পর্যটন বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, কাপ্তাই লেকের পানি বৃদ্ধি পেলে প্রতি বছর ঝুলন্ত সেতু পানিতে ডুবে যায়। আজকে সকাল থেকে সেতুর পাটাতনে পানি ছুই ছুই অবস্থা। যেকোন সময় সেতু পানিতে তলিয়ে যাবে। তিনি বলেন, সেতু ডুবে গেলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায় ,পর্যটকরা আর ঝুলন্ত সেতুতে বেড়াতে আসেনা।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, এই বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টির কারনে উজানের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লেকের পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারনে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে পানি প্রায় ছুই ছুই।মনে হচ্ছে শীঘ্রই পাটাতন ডুবে যাবে। তিনি বলেন,যদি সেতু ডুবে যায় নিরাপত্তার স্বার্থে কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দর্শনার্থীদের চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখবো।
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য মতে, এ সময় হ্রদে পানি থাকার কথা ৮৯ এমএসএল। হ্রদে পানি রয়েছে ১০৫.২৪ এমএসএল। ৫টি ইউনিট দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২২২ মেগাওয়াট।
উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল হলেও ১০৫ এমএসএল হলেই প্রতি বছর ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যায়। বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগের কথা বললেও কার্যকর কোনও ভূমিকা চোখে পড়েনি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেছেন, “জুলাই বিপ্লব আমাদের একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের পথ দেখিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু পদক্ষেপের কারণে এ অর্জন বিতর্কিত করার প্রচেষ্টা চলছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের আয়োজনে এবং সোশ্যাল ওয়ার্ক ডিবেটিং ক্লাবের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত “জুলাই স্মৃতি প্রথম আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫”-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপাচার্য বলেন,“যে প্রজন্ম ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক আন্দোলনে যুক্তি, বুদ্ধিমত্তা এবং ত্যাগের মাধ্যমে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল আজকের এই বিতার্কিক তরুণরাই সেই চেতনার ধারক। আমরা চাই, যুক্তির চর্চা ও মুক্তবুদ্ধির আলোয় শিক্ষার্থীরা গড়ে উঠুক মানবিক ও সাহসী নেতৃত্বে।”
এর আগে ফার্মেসি বিভাগ ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মধ্যকার ফাইনাল প্রতিযোগিতায় ফার্মেসি বিভাগ চ্যাম্পিয়ন এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ রানার আপ হয়। তানজিম পাটোয়ারী ‘ডিবেটার অব দ্য ফাইনাল’ এবং আশিকুর রহমান আকাশ ‘ডিবেটার অব দ্য টুর্নামেন্ট’ নির্বাচিত হন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নূরুল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ক্লাবের মডারেটর ড. বুশরা জামান। সভাপতিত্ব করেন ক্লাব সভাপতি নাহিদ হাসান রাসেল এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৮ জুলাই (সোমবার) ২০২৫ তারিখে জনাব মনিজা খাতুন, সিনিয়র সহকারী সচিব ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সোনারগাঁও, জোবিঅ-সোনারগাঁও আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার বেইলর এবং নয়াপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ০৪ টি স্পটে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ৬.৫ কি.মি এলাকার প্রায় ২০০০ টি আবাসিক বার্ণারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়ে, ২”ডায়া বিশিষ্ট ২১৫ ফিট, ১.৫" ডায়া বিশিষ্ট ৫০ ফিট, ১.২৫" ডায়া বিশিষ্ট ৭০ ফিট এমএস লাইন/পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও প্লাস্টিক পাইপ উৎসস্থলে বিনষ্ট করা হয়। অবৈধ বিতরণ/সার্ভিস লাইন উচ্ছেদপূর্বক উৎস পয়েন্ট হতে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।
একই দিনে, আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ-নারায়ণগঞ্জ এর সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ টীম কর্তৃক আবিবি-নারায়ণগঞ্জ এর অধীনস্থ জোবিঅ-মুন্সীগঞ্জ এবং আবিবি-সোনারগাঁও এর আওতাধীন জোবিঅ-মেঘনাঘাট এলাকায় ভোর ৬.০০ টা থেকে পর্যায়ক্রমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনাকালে ১. আপন বোর্ড মিলস (৩৭০-০০০০২৯) (হাউস লাইনে অতিরিক্ত পোর্ট পরিলক্ষিত হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে পোর্টগুলো কিলিং এবং ওয়েল্ডিং করা হয়)। ২.স্টার ফিশিং এন্ড টুয়াইন ফ্যাক্টরী (৮৭০-০০০০৪৬) পরিদর্শনকালে পরিলক্ষিত অতিরিক্ত পাজিং পয়েন্ট কেটে ওয়েল্ডিং করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়। ৩. আইডিয়াল টেক্সটাইল মিলস লিঃ (৩৭০-০০০০০৯) (হাউস লাইনে অতিরিক্ত পোর্ট পরিলক্ষিত হওয়ায় পোর্টগুলা কেটে ওয়েল্ডিং করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়। ৪. এভারেস্ট পাওয়ার জেনারেশন লিঃ-এর গ্রাহক আঙ্গিনা পরিদর্শনকালে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি এবং ৫. মেসার্স তন্ময় ফিসিং নেট ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ পূর্বের বিচ্ছিন্নকৃত গ্রাহক। পরিদর্শনের লক্ষ্যে গ্রাহক আঙ্গিনায় প্রবেশ করলে গ্রাহক প্রতিনিধি কর্তৃক বাধা প্রদান করায় পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি।
১২ দফা মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথ সুগম করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ভালো কিছু ঘটছে। আমি আজ (মঙ্গলবার) পত্রিকায় দেখেছি, সব রাজনৈতিক দল ১২ দফা সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।’
তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ ও তার দলের কঠোর পরিশ্রমের জন্য প্রশংসা করেন, যারা সংস্কার ইস্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে কাছাকাছি আনতে কাজ করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—সংস্কারগুলো বিলম্ব না করে সম্পন্ন করুন এবং অবিলম্বে (জুলাই জাতীয়) সনদ ঘোষণা করুন। দয়া করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যে তারিখে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সেই অনুযায়ী নির্বাচন দিন। জাতি সেখানে আশার আলো দেখেছে, অনুপ্রেরণা পেয়েছে। জনগণকে তাদের ভোটাধিকারসহ অন্যান্য অধিকার ফিরিয়ে দিন।’
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শফিউল বারী বাবু স্মৃতি সংসদ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, অনেকে বিএনপিকে সমালোচনা করে বলেন, দলটি নাকি সংস্কার চায় না। ‘কিন্তু সংস্কারের ধারণা আমাদের কাছ থেকেই এসেছে—আমরাই এটা শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাকশালের একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন এবং গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন, যা ছিল তার রাজনৈতিক সংস্কারের অংশ।
অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রুদ্ধ ও ব্যর্থ অর্থনৈতিক মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন, যার ফলে মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও প্রবর্তন করেন এবং নারী ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন করেন।
‘তাই বিএনপি কখনো সংস্কারকে ভয় পায়নি—আমরা সবসময় সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছি,’ বলেন ফখরুল।
১২টি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐকমত্য গঠনে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে কিছু প্রস্তাব নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে, যেমন—আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি। এটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে অপরিচিত।’
তিনি বলেন, ‘সংসদের নিম্নকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মতো প্রস্তাব এসেছে—যা আমাদের জনগণ বোঝে না। তারা এখনো ইভিএম ভোটিং নিয়ে বিভ্রান্ত—তাহলে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বুঝবে?’
কিছু রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার শর্ত দেওয়ায় ফখরুল সমালোচনা করে বলেন, ‘এই ধরনের বিভ্রান্তিকর ধারণা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। জনগণকে এমন একটি ভোটিং ব্যবস্থা দিতে হবে, যা তারা বোঝে এবং যা তাদের যথার্থ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিদেশি ধারণা দিয়ে দেশের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত নয়।
নওগাঁর নিয়ামতপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে খাটিয়া (গরু বা ছাগল বেঁধে রাখার খুটিতে আঘাত করার বস্তু) দিয়ে আঘাত করে হত্যার দায়ে মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থ দন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইকবাল জামিল চৌধুরী লাকি রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ওই গৃহবধুর নাম রানী বেগম। তিনি জেলার মান্দা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আনিসুর রহমান সাকিদারের মেয়ে।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) নিয়ামতপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে।
আদলত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মোস্তাফিজুর তার নিজ বাড়িতে স্ত্রী রানী বেগমের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে কাঠের খাটিয়া দ্বারা মাথায় আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত এবং জখম করে হত্যা করেন। উক্ত ঘটনায় রানীর বাবা আনিসুর রহমান বাদী হয়ে নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৪ জন সাক্ষী এবং আসামি পক্ষ থেকে ২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলায় মামলায় আসামি মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের রায় প্রদান করেন। এ রায়ে বাদী পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ।
পাবনার সাঁথিয়ায় খেলনা পিস্তল নিয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে জনতার হাতে দুই ডাকাত আটক হয়েছে।আটককৃতরা হলেন সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পুণ্ডুরিয়া গ্রামের সুজন (২২) ও একই গ্রামের বেলানন ব্যাপারীর ছেলে রাজীব হোসেন (২০)।
তাদের সাঁথিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেছে জনতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কাশিনাথপুর বাজারের চাউল পট্টিতে হানা দেয় দুই যুবক। তারা চাউল পট্টিতে খান রাইস মিলের মালিক শামসুর রহমানের দোকানে ঢুকে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করেন। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী ও জনতা এগিয়ে এসে ডাকাতদের হাতেনাতে খেলনা পিস্তলসহ আটক করে। আটকৃত ডাকাতদের জনতা সাঁথিয়া থানা পুলিশর কাছে হস্তান্তর করেছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,ডাকাত দুইজনকে সাঁথিয়া থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে আইননানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাগুরা শহরে স্কুল ও হাসপাতালের সামনে ফেলা হচ্ছে বাসা বাড়ির ময়লা -আবর্জনা, মানা হচ্ছে না কোন বিধি নিষেধ। ফলে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়েছে কোমলমতি শিশুসহ সাধারণ মানুষ।
মাগুরা শহরের পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় , পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের সামনে মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে এসব ময়লা- আবর্জনা। এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলার কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিদিন শতশত ছেলে মেয়েরা এই সড়ক দিয়ে স্কুলে যায় এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে।
বিশেষ করে, পিটিআই স্কুলের সামনে ময়লার স্তূপ থেকে বেশি দুর্গন্ধ ছড়ায় যার কারনে আশেপাশের মানুষ নানা রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ।
পি টিআই স্কুলের এক অভিভাবক তামান্না তাবাসসুম বলেন , প্রতিদিন বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় নাকে কাপড় চেপে ধরেও এই দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় না।
এরকম আরও অনেক অভিভাবকের দাবি স্কুলের পাশে ময়লা ফেলা বন্ধ করা হোক।
দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে ময়লা ফেলার কারণে সেটা এখন ভাঙারে পরিণত হয়েছে , একটু বৃষ্টি নামলেই ময়লাগুলো মহাসড়কের উপর চলে আসে ফলে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলেও অসুবিধা হয়। এছাড়াও ময়লার স্তুপের পাশ দিয়েই পিটিআই পাড়া ঢোকার রাস্তা মহল্লা বাসীরাও পড়েছেন বিপাকে।
এ ব্যাপারে মাগুরা পৌরসভার প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আব্দুল কাদের দৈনিক বাংলা কে জানান , পৌরসভার ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট ভ্যান গাড়ি এবং ড্রামের ব্যবস্থা আছে কিন্তু শহরের কিছু ভদ্র সমাজের লোকজন টাকা খরচের ভয়ে নিজেরাই পলিথিনের ব্যাগে করে এই ময়লা গুলো ফেলেন, ফলে জনসাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এটা বন্ধ করা পৌর কর্তৃপক্ষের একার দ্বারা সম্ভব নয় ,আগে জনসাধারণকে সচেতন হতে হবে ।সবাইকে একসঙ্গে এটাকে প্রতিরোধ করতে হবে ।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এসব স্থান থেকে দ্রুত ময়লা অপসারণ ও ময়লা ফেলা বন্ধ করতে পৌর কর্তৃপক্ষকে মাইকিং ও জরিমানা সহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে বলেছেন ,অন্যথায় মানববন্ধন সহ নানা কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন।
গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ জুলাই মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জনাবা তনিমা আফ্রাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনাবা নূরী তাসমিন উর্মি, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।
সভায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, চলমান সামাজিক সমস্যা এবং সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। সকলের অংশগ্রহণে আগামী দিনে অপরাধ দমন, সামাজিক সম্প্রীতি ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে করণীয় নির্ধারণ করা হয়।সভায় বক্তারা বলেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সাধারণ জনগণকে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। মাদক, কিশোর গ্যাং, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহসহ সামাজিক অপরাধ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
সকলে সম্মিলিতভাবে একটি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও সচেতন সমাজ গঠনে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সভা শেষে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা উপজেলা প্রশাসনের এই কার্যক্রমকে স্বাগত জানান এবং ইতিবাচক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পাইপ কারখানায় ডাকাতির সময় স্থানীয়দের সহায়তায় ধাওয়া করে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২৮ জুলাই) রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর গ্রামের পিপিএস নামক পাইপ কারখানায়।
গ্রেপ্তাররা হলেন— ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার ভাঘটিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সোহেল মিয়া (৩২), একই জেলার তারাকান্দা থানার এমদাদুল হক (৪৫), বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম থানার কামুলা গ্রামের ফারুক (৩২), নওগা জেলার রাণীনগর থানার রাজাপুর গ্রামের আরিফ (৩০), নরসিংদী জেলার মাধবদি থানার বালুর মাঠ এলাকার শিমান্ত (২১) ও চাঁদপুর জেলার মতলবপুর গ্রামের ইব্রাহীম (২৩)।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি ট্রাক নিয়ে ৯ থেকে ১০ জনের একটি ডাকাত দল ওই কারখানায় ডাকাতি করতে যায়। এ সময় তিন ডাকাত ট্রাক নিয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করে। বাকি ছয়জন কারখানার ফটক টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ডাকাতরা নিরাপত্তা প্রহরী মকুবল হোসেনকে হাত-পা বেঁধে মারপিট করে ফেলে রাখে।
কারখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের কমকর্তা আব্দুস ছালাম তিনতলা থেকে ডাকাতির ঘটনাটি প্রথমে দেখতে পান। এসময় তিনি কারখানা কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও স্থানীয়দের বিষয়টি জানান। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহায়তায় ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
স্থানীয়রা জানান, কারখানাটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। রাত পৌনে১১টার দিকে কয়েকজন অপরিচিত লোক প্রধান ফটক টপকে পিপিএস পাইপ কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে। বিষয়টি জেনে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে কারখানার ভেতেরে প্রবেশ করেন। এরপর নিরাপত্তা প্রহরীকে বেঁধে ডাকাতির বিষয়টি টের পান তারা।
এ সময় পুলিশ ও স্থানীয়দের দেখে ডাকাতরা কারখানার পেছন দিক দিয়ে দেওয়াল টপকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে তাদের ধাওয়া করে ছয়জনকে ধরতে করতে সক্ষম হন স্থানীয়রা। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাক নিয়ে অপেক্ষমান তিন ডাকাত পালিয়ে যায়। পরে আহত ছয় ডাকাতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
কারখানার নিরাপত্তা প্রহরী মকবুল হোসেন বলেন, ‘অপরিচিত কিছু লোক গেটের উপর দিয়ে ভেতরে ডুকে আমার হাত-পা বেঁধে মারপিট করে। আমাকে ফেলে রেখে তারা ডাকাতি করতে শুরু করে। লোকজন চলে এলে ডাকাতরা সীমানা দেওয়াল টপকে বাহিরে চলে যায়।’
আব্দুস ছালাম বলেন, ‘তিনতলা থেকে দেখতে পাই নিরাপত্তা প্রহরীকে কারা যেন মারছে। পরে বুঝতে পারি যে কারখানায় ডাকাত ডুকেছে। তাৎক্ষণিক স্থনীয়দের, পুলিশ এবং কর্তৃপক্ষকে জানাই। দ্রুত সময়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি পুলিশও এসে পড়ে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাক ডা. আজগর হোসেন সোহাগ জানান, রাত বারোটার দিকে পুলিশ আহত ছয় ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুরুতর আহত সোহেল ও এমদাদুলকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বারিক জানান, ডাকাতরা কারখানাটির মালপত্র লুট করতে এসেছিল। খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জ্বালানি অপচয় রোধ এবং অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণে সৃষ্ট জননিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মনিজা খাতুনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সোমবার রাতে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, অভিযানে বেইলর ও নয়াপুর এলাকার মোট চারটি স্পটে কার্যক্রম চালানো হয়। সেসময় প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস বিতরণ লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং আনুমানিক ২ হাজারটি অবৈধ আবাসিক বার্নার উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়াও অবৈধ সংযোগের জন্য ব্যবহৃত ৩৩৫ ফুট পাইপ অপসারণ করা হয়। প্লাস্টিক পাইপগুলো উৎসস্থলেই বিনষ্ট করা হয়।
সোমবারের অভিযানে প্রথম স্পটটি ছিল নয়াপুর বাজার সংলগ্ন বেইলরে। সেখানে প্রায় ২ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। আনুমানিক ২৫০টি বাড়ির ৪শ’টি আবাসিক চুলা এবং প্রায় ২শ’ ফুট ২ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ উচ্ছেদ করা হয়।
পরের অভিযানটি চলে রিয়ামহল সিনেমা হলের বিপরীত পাশে নয়াপুরে। সেখানে ২ কিলোমিটার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭শ’টি অবৈধ আবাসিক চুলা বিচ্ছিন্ন করা হয়। উদ্ধার করা হয় ১৫ ফুট ২ ইঞ্চি ব্যাসের এবং ৫০ ফুট ১.৫ ইঞ্চি ব্যাসের এমএস পাইপ।
চাঁন সূর্য ফিলিং স্টেশনের পশ্চিম পাশের হাতুরাপাড়ার ১ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৫শ’টি অবৈধ আবাসিক চুলা উচ্ছেদ করা হয়। সঙ্গে ৭০ ফুট ১.২৫ ইঞ্চি ব্যাসের এমএস পাইপ উদ্ধার করা হয়।
চতুর্থ স্পটটি ছিল চাঁন সূর্য ফিলিং স্টেশনের পূর্ব পাশের প্রায় ১.৫ কিলোমিটার এলাকা। উচ্ছেদের খবর পেয়ে দুষ্কৃতকারীরা প্রায় ৪শ’টি আবাসিক চুলার জন্য ব্যবহৃত পাইপ খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।
মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ অভিযান সোনারগাঁও এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিস্তার রোধে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। কারণ এর মাধ্যমে প্রতিটি অবৈধ বিতরণ লাইন উৎস পয়েন্ট হতে ‘কিলিং/ক্যাপিং’ করে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ ধরনের অভিযান একদিকে যেমন গ্যাসের অপচয় রোধ করবে, তেমনি অবৈধ সংযোগের কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনা ও জনজীবনের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এটি সরকারের জ্বালানি খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার অংশ। অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা জনস্বার্থে অত্যন্ত জরুরি বলেও দাবী করা হয়।
একইসঙ্গে আশা প্রকাশ করা হয়, এ ধরনের ধারাবাহিক অভিযান ভবিষ্যতে অবৈধ সংযোগ নির্মূল করতে সহায়ক হবে এবং জ্বালানি খাতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে।
সোমবার (২৮ জুলাই) অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় জীববিজ্ঞান বিষয়ের খাতায় রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ভুল লিখে হতাশ হয়ে ভোলার তজুমদ্দিন মহিলা কলেজের এক পরীক্ষার্থী বিষপানে আত্নহত্যা করেছে।
নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম তনু চন্দ্র দাস (১৮)। তিনি তজুমদ্দিন মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তিনি তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শায়েস্তাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক বিতিস চন্দ্র দাস ও গৃহিনী উজ্জলা রাণী দাস দম্পতির একমাত্র মেয়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.মো.জুনায়েদ হোসেন।
তিনি বলেন, ওই তরুণীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনার পর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেছি। তাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল,কিটনাশক পানে তার মৃত্যু হয়েছে।
জানা যায়, সোমবার (২৮ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ওই পরীক্ষার্থীকে ভোলা সদর হাসপাতালে স্বজনরা নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোমবার রাত ৯টার দিকে ওই পরীক্ষার্থী কিটনাশক পান করেছেন বলে জানায় তার স্বজনরা।
তনুর মা উজ্জলা রাণী জানান, সোমবার (২৮ জুলাই) আমার মেয়ে তনুর জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে বাসায় এসেই সে অস্থির হয়ে পড়েন,আমাকে জানায় পরীক্ষার খাতায় রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ভুল লিখেছি, এবং বার বার বলে আমি আর পাশ করব না,পড়ে তাকে সান্ত্বনা দেই। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেও সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু রাত ৯টার দিকে তার চিৎকারের শব্দ শুনে রুমে গিয়ে দেখি পানের বরজের জন্য ঘরে এনে রাখা কিটনাশক খেয়ে ছটপট করতেছে। পরে তনুকে চিকিৎসার জন্য তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক জানায় তনু মারা গেছে।
ঢাকা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার শিক্ষার্থী উক্যছাইং মারমা(এরিকশন) এর পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন বিমান বাহিনী প্রধানের পক্ষ থেকে উইং কমান্ডার আব্দুল্লাহ মোঃ ফারাবী।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১২ টায় রাজস্থলী উপজেলার ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের কিউংধং পাড়ায় এসে তিনি উক্যছাইং মারমার পিতা উসাইমং মারমা এর সাথে দেখা করেন এবং পরিবারটির প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। এছাড়া মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র উক্যছাইং মারমা(এরিকশন) এর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
এসময় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার আব্দুল্লাহ মোঃ ফারাবী বলেন, মাইলস্টোনে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক দূর্ঘটনা সত্যি হৃদয় বিদারক। আমরা এর জন্য গভীর শোক প্রকাশ করছি। এই ঘটনায় শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং যারা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছে তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আজ আমরা এসেছি মাইলস্টোন দূর্ঘটনায় নিহত ছোট শিশু উক্যছাইং এর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে। আমরা তার এমন মৃত্যুতে বিমান বাহিনী প্রধানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি। এই দুর্ঘটনায় বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করছি। বিমান বাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং ভবিষ্যতেও জনগনের সেবায় কাজ করে যাবে। এই শোকাহত পরিবারগুলোর পাশে সবসময় বিমান বাহিনীর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১টায় ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনী একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্থ হয়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। সেখানেই স্কুলে অবস্থান করছিলো রাঙামাটির ছেলে উক্যছাইং মারমা(এরিকশন)। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে ঢাকা বার্ণ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে সে মৃত্যুবরণ করে।
পটুয়াখালী-কুয়াকাটা ৭১ কিলোমিটার মহাসড়ক খানাখন্দে ভরপুর। গত দেরমাস ধরে বিরামহীণ বর্ষণে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। চালকরা জানান, বৃষ্টির পানিতে সড়কের পীচ আলগা হয়ে গাড়ির চাকার সাথে উঠে খানাখন্দ হয়েছে। এতে গাড়ি চালাতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ১০ লাখ মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। দ্রুত সংস্কারের দাবী ভুক্তভোগীদের।
জানাগেছে, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা ৭১ কিলোমিটার সড়ক। ২০০০ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ সড়ক নির্মাণ করেন । অভিযোগ রয়েছে নির্মাণ কালেই যথেষ্ট অনিয়মের আশ্রায় নিয়ে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ সড়কের কিছু স্থানে দায়সারা সংস্কার করে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৯’শ থেকে ১২’শ টি যানবাহন চলাচল করে। এর মধ্যে পরিবহন বাস, লোকাল বাস, ডিস্ট্রিক্ট ট্রাক, মিনি ট্রাক, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার। এর বাহিরেও সহস্রাধিক অবৈধ মাহেন্দ্র, ট্রলি, সিএনজি ও ব্যাটারীচালিত অটোগাড়ী চলাচল করে বলে জানান পটুয়খালী সেতুর টোল আদায় কর্তৃপক্ষ।
গত দেরমাস ধরে বিরামহীণ বর্ষণে সড়কের পীচ নড়বড়ে হয়ে গেছে। ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত দুই হাজার যানবাহন চলাচল করছে। গাড়ির চাকার চাপায় সড়কের পীচ উঠে খানাখন্দে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে যানবাহন চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান চালকরা। চালকরা জানান, ভারী বর্ষণে সড়কের পীচ নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় গাড়ীর চাকায় নির্মাণ সামগ্রী উঠে খানাখন্দ হচ্ছে। খানাখন্দের কারনে প্রায়ই সড়কে ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া সড়কে সময় নিয়ন্ত্রণ করে গাড়ি চালাতে পারছেন না চালকরা। পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা থেকে দ্বিগুণ সময় লেগে যাচ্ছে। এতে যাত্রীদের যথেষ্ট সময় ব্যয় হচ্ছে। ফলে ভোগান্তিতে পরেছে আমতলী, তালতলী, কলাপাড়া, পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা ও মহিপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ১০ লাখ মানুষ। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী ভুক্তভোগীদের।
সোমবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা ৭১ কিলোমিটার সড়কের প্রায় স্থানেই ছোট ও মাঝারি ধরনের খানাখন্দ রয়েছে। প্রতি ৫০ গজ দুরে দুরে খানাখন্দ। আবার সড়কের এক এক স্থানে ডজনখানেক খানাখন্দ রয়েছে। সড়কের আমতলী চৌরাস্তা, মানিকঝুড়ি, শাখারিয়া, মহিষকাটা, চুনাখালী, সাহেববাড়ী, আমড়াগাছিয়া, পাটুখালী, বান্দ্রা ও পখিয়ায় মহাসড়ক জুড়েই রয়েছে খানাখন্দ।
যাত্রী মোঃ জিয়া উদ্দিন জুয়েল মৃধা, এনামুল হক ও রিপা বলেন, সড়কে খানাখন্দের কারনে পটুয়াখালী- কুয়াকাটার দুই ঘন্টার পথ যেতে সময় লাগেছে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা। তার ওপরে জীবনের ঝুঁকিতো রয়েছেই। দ্রুত সড়ক সংস্কার করা প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন।
শ্যামলী এনআর পরিবহনের চালক কেরামত আলী বলেন, সড়কে খানাখন্দের কারনে গাড়ী চালাতে সমস্যা হচ্ছে। সড়কে এতো খানাখন্দ যে, গাড়ীর নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কষ্টকর।
তুহিন পরিবহন গাড়ীর চালক কাওসার হাওলাদার বলেন, অবিরাম বৃষ্টির কারণে সড়কের পীচ নরবড়ে হয়ে গেছে। পীচ গাড়ির চাকার সঙ্গে উঠে যাচ্ছে। ফলে খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে।
পটুয়াখালী সেতুর টোল ইনচার্জ মোঃ আল আমিন বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৯ শতাধিক বৈধ যানবাহন চলাচল করে। তার বাহিরে অবৈধ যানবাহনতো রয়েছেই। তিনি আরো বলেন, সড়কে যানবাহনের চাপ অনেক বেশী।
আমতলী বাস মালিক সমিতির লাইন সম্পাদক অহিদুজ্জামান স্বজল মৃধা বলেন, পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা যেতে সময় লাগে দুই ঘন্টা ১০ মিনিট। সড়কে খানাখন্দ থাকায় এখন সময় লাগে সাড়ে তিন ঘন্টা। এতো সময় লাগায় যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, যাত্রীরা বিরক্ত হয়ে বাস উঠতে চাচ্ছে না। তারা বিকল্প পথে গন্তব্যে যাচ্ছেন। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী তার।
পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ইমাম হোসেন নাশির বলেন, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের বেহাল অবস্থা। সড়কের এ অবস্থার কারনে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। পর্যটন এলাকা কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসাসহ দক্ষিণাণঞ্চলের অন্তত ১০ লাখ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
বরগুনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কুমারেশ বিশ্বাস বলেন, গত দেরমাস ধরে অবিরাম বৃষ্টিতে সড়কের পীচ নড়বড়ে হয়ে গেছে। তার ওপর দিয়ে গাড়ী চলাচল করায় চাকার চাপে সড়কে খানাখন্দ হচ্ছে । প্রাথমিকভাবে মোবাইল টিম ওই খানাখন্দগুলো সংস্কার করছে। তিনি আরো বলেন, চলতি অর্থ বছরে বরাদ্দ পেলে পুরোদমে সংস্কার করা হবে।