বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৯ আশ্বিন ১৪৩২

যে ছাদ বনসাইয়ের

মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা
প্রকাশিত
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা
প্রকাশিত : ৩ নভেম্বর, ২০২২ ০৮:১৪

দোতলা বাড়ি। ছাদজুড়ে অসংখ্য ছোট গাছ। নানা ধরনের টবে শোভা পাচ্ছে বাঁশঝাড়, বটবৃক্ষ, কৃষ্ণচূড়া। কোনো কোনো গাছের বয়স ৩৫ বছরেরও বেশি। এই গাছগুলো হাতে নিয়েও দেখা যায়। ছাদের এ পাশ-ও পাশ সব জায়গা দখল করে রেখেছে এসব বনসাই। এ ছাদ বনসাইয়ের।

কুমিল্লা নগরীর শুভপুর এলাকার সহোদরা ভবনের ছাদ এটি। এখানে নানা আকৃতির তিন শতাধিক বনসাই শোভা পাচ্ছে। কোনোটির আকৃতি সর্পিল, কোনোটির আকৃতি হৃদয়ের মতো। কোনোটি আবার মহান আল্লাহ ও তার রাসুলের নাম, কোনোটিকে দেখলে মনে হবে দৌড়বিদ দৌড়ানোর ভঙ্গিমায় আছে। কুমিল্লাসহ আশপাশের জেলার কোনো বাড়ির ছাদে এত বনসাই নেই।

স্থানীয়রা এ ভবনটিকে বনসাইয়ের জাদুঘর বলে ডাকেন। সহোদরা ভবনের মালিক হাসান ফিরোজ। বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক পরিচালক। জানালেন বনসাই তৈরির পেছনের কথা। ১৯৮৬ সালের ঘটনা। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে কর্মরত অবস্থায় বনসাইয়ের শখ মাথায় চাপে। সেই থেকে শুরু। দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিয়েছেন নিজের পেশা আর বনসাইয়ের প্রেমে।

হাসান ফিরোজ এখন সকাল-বিকেল ছাদে বনসাইয়ের যত্নে ব্যস্ত সময় পার করেন। তিনি বলেন, ‘বনসাই করা একটি নেশা। দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়। যার ভেতর সৌন্দর্য অবলোকন করার ক্ষমতা আছে, তার বনসাই ভালো লাগবে।’

বনসাইপ্রেমিক হাসান ফিরোজ বলেন, তার কাছে ফাইকাস, চায়না বট, পাকুড়, কাঁঠালি বট, অশ্বত্থ, লোভ্যাবট, কামিনিবট, কালিবট, নিম, অডিনিয়াম, জুনিপারাস, ঝাউ, পাস্তা, শিমুল, জেডবট, খেজুর, বাঁশ, কৃষ্ণচন্দন, তেঁতুলবট, লালবট, সালঙ্কান, জামবট, অর্জুনবট, সাইকাছ বেশি আছে।

নিজের জীবনের কথা বলতে গিয়ে হাসান ফিরোজ বলেন, ‘চাকরি অবস্থায় বহু বনসাই বিভিন্ন জনকে উপহার দিয়েছি। অনেকগুলো বিক্রি করেছি। আমার দুটি একক বনসাই প্রদর্শনী হয়েছিল চট্টগ্রামে। একটি ২০০৩ সালে, আরেকটি ২০০৬ সালে। সে সময় অনেকগুলো বনসাই বিক্রি করেছি।’

বনসাইয়ের ওপর তিনি বইও লিখেছেন। বইয়ের নাম দিয়েছেন ‘বনসাই নির্মাণ’।

যারা বনসাই করতে চায় তাদের উদ্দেশে হাসান ফিরোজ বলেন, শক্ত কাণ্ডবিশিষ্ট গাছকে নান্দনিকভাবে খর্বাকৃতি করার যে শিল্প, তা হলো বনসাই। বনসাই পদ্ধতিতে গাছটিকে ছোট রাখা হলেও তা ফল ও ফুল ধারণ করতে সক্ষম। বনসাই করা ধৈর্যের ব্যাপার। এ জন্য কোন গাছ উপযুক্ত সে বিষয়ে জানতে হবে। প্রয়োজনে যারা বনসাই করেছেন তাদের থেকে অভিজ্ঞতা নিতে হবে। তারপর বনসাই করার জন্য একটি ভালো জায়গা পছন্দ করতে হবে।

জানা যায়, চার হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতায় পাথর কেটে সেখানে গাছের চারা রোপণ করা হতো। প্রাচীন ভারতেও ওষুধের জন্য টবে বা পাত্রে ঔষধি গাছ লাগানোর প্রচলন ছিল। পরবর্তী সময়ে থাইল্যান্ড, জাপান, কোরিয়া ও ভিয়েতনামে ভিন্ন আকারে এর চর্চা বিস্তার লাভ করে। বনসাইশিল্পে জাপানিরা এখনো তাদের শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুণ্ন রেখেছে।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেরুন্নেচ্ছা বলেন, বনসাই হলো জীবন্ত ভাস্কর্য। প্রচুর শ্রম, মেধা দিয়ে বনসাই তৈরি করতে হয়। বনসাই শুধু সৌন্দর্যের প্রতীকই না, এর অর্থনৈতিক মূল্যও অনেক। বিপন্ন বা বিলুপ্তপ্রায় গাছগুলো বনসাইয়ের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখলে গাছ নিয়ে যারা গবেষণা করেন, তারা উপকৃত হবেন।


নিরাপদ পানি, স্যানিটেশনের পরিকল্পিত উন্নয়নে চট্টগ্রামে ব্যাপক পরিবর্তন

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম জেলা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা, যেখানে নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন সুবিধা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, যা স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মানকে উন্নত করেছে।

সরাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগ, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য প্রায় ২৫ হাজার সাবমার্সিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। চট্টগ্রাম জেলার উপজেলাসমূহে জলস্তরের (Water table) উচ্চতা খুবই নিচে চলে যাওয়ায় এবং নদী-নালা শুকিয়ে যাওয়ার কারণে টিউবওয়েলের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলশ্রুতিতে জনগণ সুপেয় পানি হতে বঞ্চিত হচ্ছে এবং দূষিত পানি পান করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার মানুষ। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তদারকিতে স্থাপিত গভীর নলকূপসমূহ জনগণের মাঝে সুপেয় পানি সরবরাহ করে যাচ্ছে।

বিশেষ করে সীতাকুন্ড উপজেলায় মাটির নিচে পাথরের স্তর থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবে নলকূপ স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চরম পানি সংকটের সম্মুখিন হয়েছে ওই এলাকার মানুষ। বর্তমানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর ব্যবস্থাপনায় উন্নত প্রযুক্তি Hydraulic Rig পদ্ধতি ব্যবহার করে সীতাকুন্ড উপজেলায় গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। এতে জনগণের সুপেয় পানির অভাব পূরণ হয়েছে এবং উক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নলকূপ স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।

তাছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় কমিউনিটি বেসড ওয়াটার সাপ্লাই স্কীম এবং রুরাল পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কীমের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ কাজ চলমান রয়েছে। সর্বোপরি এ প্রকল্পের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম জনগণের জন্য সহজলভ্য এবং নিরাপদ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে।

পিইডিপি-৪ প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০০টি ওয়াশব্লক নির্মাণ এবং ১,১৩৫টি সাবমার্সিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় মাটির নিচে পাথুরে স্তর থাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা সম্ভব ছিল না। এতে করে বিদ্যালয়ে সুপেয় পানি বা স্যানিটেশন ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ী থেকে পানি নিয়ে আসতে হত। এ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর ব্যবস্থাপনায় Hydraulic জরম পদ্ধতি ব্যবহার করে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়।

তছাড়া বিভিন্ন উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এবং বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সন্দ্বীপেও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ওয়াশব্লক নির্মাণ ও গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কোমলমতি শিশুদের স্যানিটেশন সুবিধা উন্নত করার জন্য এবং নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর তদারকিতে উক্ত কাজসমূহ সম্পন্ন করা হয়।

মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প-এর আওতায় ১৪,৭০০টি টুইনপিট ল্যাট্রিন নির্মাণ করা হয়েছে, যা স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছে এবং জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে। তাছাড়া ৫টি Large Piped Water Supply Scheme এর কাজ চলমান রয়েছে এবং ২৬৬ Small Piped Water Supply Scheme এর মাধ্যমে জনগণের মাঝে সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রতিটি Small Piped Water Supply Scheme এর মাধ্যমে ৩০-৪০ টি পরিবার পানি পাচ্ছে। তাছাড়া জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে ৪২ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে নতুন টয়লেট নির্মাণ, ২৮টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ এবং ৬৩ টি হ্যান্ড ওয়াশিং বেসিন নির্মাণ করে।

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে ৬,৩৩৬টি রেইন ওয়াটার হার্ভোস্টিং ও ৬৩০ টি রেইন ওয়াটার ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্মাণ করা হয়েছে। এটি বৃষ্টির পানি সঞ্চয়ের মাধ্যমে পানি সংকট মোকাবেলা করতে সহায়তা করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উপকূলীয় জনগণের পানির অভাব দূর করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলার জনগণের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে, যা পানিবাহিত রোগের প্রতিরোধ এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

৩২ পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও মানব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় সাতকানিয়া পৌরসভায় জনগণের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে ৪০টি কমিউনিটি ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ৪৭টি কমিউনিটি বিন নির্মাণ, ড্রেন নির্মাণ, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও পাম্প হাউজ নির্মাণ করেছে।

বাংলাদেশে ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় বাঁশখালী ও চন্দনাইশ পৌরসভায় ইমপ্রুভড হাউসহোল্ড টয়লেট নির্মাণ করা হয়। এতে জনগণের স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি হয়। তাছাড়া উক্ত পৌরসভাসমূহে ড্রেন নির্মাণের কাজ ও চলমান রয়েছে। তাছাড়া খুব অল্প সময়ের মধ্যে এ দুটি পৌরসভার জনগণের মাঝে পানি সরবরাহ আরম্ভ হবে।

প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রামকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে, যেমন দূরবর্তী অঞ্চলে টিউবওয়েল স্থাপন এবং স্যানিটেশন সুবিধার জন্য অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি। তবে এসব প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন চট্টগ্রাম জেলার জনগণের জীবনযাত্রায় একটি বড় পরিবর্তন এনে দিয়েছে। নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এ অঞ্চলের জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সাধারণ জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে।


রঙিন মাছ চাষে স্বপ্ন বুনছেন কুমিল্লার তরুণ উদ্যোক্তারা

পোনা উৎপাদন করে লাখপতি কুমিল্লার জয়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা

শতাধিক চৌবাচ্চায় লাল, নীল, হলুদ, সাদা, কালো আর কমলা রঙের মাছের ঝলকানি। রঙিন এই মাছের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন আগত দর্শনার্থীরা। শখের বশে শুরু হলেও আজ সেটিই পরিণত হয়েছে এক সফলতার গল্পে। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার প্রজেশ্বর চন্দ্র জয় এখন রঙিন মাছ চাষ করে হয়েছেন লাখপতি। জয়ের সাফল্য দেখে রঙিন মাছ চাষে স্বপ্ন দেখছেন কুমিল্লার তরুণরা।

পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে জয় বেছে নেন ভিন্ন পথ। ইউটিউব দেখে ২০১৯ সালে মাত্র ১ হাজার ৩০০ টাকা ব্যয়ে দুটি ড্রামে শুরু করেন রঙিন মাছ চাষ। প্রথমে ছিল শুধু শখ, কিন্তু বর্তমানে তা রূপ নিয়েছে বাণিজ্যিক খামারে। বুড়িচং উপজেলার মণিপুর ও নাঙ্গলকোটে তার রয়েছে তিনটি খামার, ‘আর বি ফিস ফার্ম’ নামে, যেখানে চাষ হচ্ছে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি মাছ।

তার হ্যাচারিতে এখন ৯০ প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন হয়। দূর-দূরান্ত থেকে শৌখিন মানুষ এসে রঙিন মাছের পোনা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের ঘরের অ্যাকুরিয়ামে শোভা পায় জয়ের হ্যাচারির রঙিন মাছ।

তখন অনেকেই জয়ের কাজ দেখে হাসাহাসি করে। তবে দীর্ঘ পরিশ্রম আর একাগ্রতায় তিনটি হ্যাচারির মালিক হন জয়। দুটি তার গ্রামের বাড়ি নাঙলকোটে। আরেকটি বুড়িচং উপজেলার কাবিলা-মণিপুর এলাকায়। তার হ্যাচারিতে রঙিন মাছের পোনার মধ্যে রয়েছে এলবাইনো ব্লুটুপাস, গ্রীন বেনবেল্ট, ডাম্বু মোজাইক, এলবাইনো পিঙ্ক মোজাইক, গ্লুকই, ফরকে গোল্ড, ব্লু মেটাল, ব্লু হেড সামুরাই, রেড ড্রাগন, গ্রীন ড্রাগন, আরটিপি, লবস্টার বা ক্রে ফিস, মুনটেল বেলুনমলি।

জয় বলেন, ‘হ্যাচারির মধ্যে ৪৪টি হাউসে নিয়ম করে মাছের পোনাকে যত্নআত্তি করতে হয়। সকাল-বিকেল অক্সিজেন চেক করে খাবার দিতে হয়।’ পোনা পরিচর্যাকারী রাকিব উল্লাহ জানান, ‘নিয়ম করে হ্যাচারিতে অক্সিজেন দিতে হয়। তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে পোনার খাবার দিতে হয়। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে পোনা মরে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।’

স্থানীয় আবদুর রশীদ নামে এক বাসিন্দা জানান, ‘দূর-দূরান্ত থেকে শৌখিন লোকজন এসে মাছের পোনা কিনে নিয়ে যায়।’ ক্রেতা আবুল খায়ের জানান, ‘তিনি মাছের পোনা কিনে নিয়েছেন। সাশ্রয়ী দামে পোনা কিনেছেন। বাড়তি হিসেবে হ্যাচারি থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হয়।’ জয়ের এমন সাফল্য দেখে তরুণরা এখন রঙিন মাছের পোনা উৎপাদনে উৎসাহিত হচ্ছে।

আরেক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, ‘কুমিল্লা ছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা যেমন; চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহীতে যা তার এই উৎপাদিত মাছের পোনা। এছাড় অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও বিক্রি হচ্ছে তার মাছ।’

রঙিন মাছের প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। বাসার অ্যাকুরিয়াম সাজাতে প্রতিদিনই ক্রেতারা ভিড় করছেন জয়ের খামারে। উদ্যোক্তা হিসেবে জয়ের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় অনেক তরুণ এখন নতুন খামার গড়ে তোলার কথা ভাবছেন।

হ্যাচারির মালিক প্রজেশ্বর চন্দ্র জয় বলেন, শুরুতে অনেকেই হাসাহাসি করেন। ধীরে ধীরে যখন সফলতা এসে ধরা দিতে লাগল তখন সমালোচনাকারীরা আমার হ্যাচারিতে এসে বিনিয়োগ করতে চায়। তবে রঙিন মাছের পোনা উৎপাদনে শেখার কোনো শেষ নেই বললেন হ্যাচারির মালিক জয়। তাই শুধু হ্যাচারি করলেই হবে না, প্রতিনিয়ত শেখতে হবে।

রঙিন মাছের পোনা উৎপাদনে শুধু সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেনি বরং জয় এখন এলাকার তরুণদের কাছে হয়ে উঠেছেন অনুপ্রেরণার প্রতিক।

এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, কুমিল্লা দেশের মৎস্য উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রঙিন মাছ চাষের সম্ভাবনা।

মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, জয় একটি অসাধারণ উদ্যোগ নিয়েছে। তরুণরা চাইলে খুব সহজেই এ খাত থেকে লাভবান হতে পারবেন। সে জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পরমার্শ দিতে প্রস্তুত আছে মৎস্য কর্মকর্তারা।

শখের বশে শুরু হলেও আজ রঙিন মাছ চাষ প্রজেশ্বর চন্দ্র জয়ের জীবনে এনেছে সাফল্য। শুধু নিজেই নয়, আশপাশের তরুণদেরও অনুপ্রাণিত করছেন তিনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনা ও সরকারি সহায়তা পেলে রঙিন মাছ চাষে দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় রপ্তানি শিল্পে পরিণত হতে পারে।


কৃষিকাজের আড়ালে তৈরি হতো মদ, বিপদগামী যুবকরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শামসুল ইসলাম সনেট, কেরানীগঞ্জ

কৃষিকাজের আড়ালে বাংলা মদ উৎপাদন ও বিক্রি করে নিজের নাম লিখিয়েছেন কালো তালিকায়। এলাকার ছোট থেকে বড় সর্ব মহলে পরিচিত নাম কামাল হোসেন। কেরানীগঞ্জ উপজেলার রোহিতপুর ইউনিয়নের পোড়াহাটি গ্রামের ফয়েজ উদ্দীনের ছেলে কামাল যিনি দীর্ঘদিন ধরে একই পেশায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে শুধু নামেই পরিচিতি পাননি হয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। মদের টাকায় পারিবারিকভাবে সচ্ছলতার পাশাপাশি বাড়িতে গড়ে তুলেছেন আলিসান ভবন। মদের কারখানার সামনেই নির্মিত ভবন থেকেই দেখভাল করেন নিজ সাম্রাজ্যের।

এলাকাবাসী বলছে তার কারণে এলাকার যুবকরা বিপদগামী হচ্ছে। এলাকাবাসী প্রশাসন সবাই যেনেও বাধা দেওয়া হয় না এই অবৈধ কাজে। তার কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন একই এলাকার রবি, হান্নান ও গফফার। পুলিশ ফাঁড়ির পেছনেই বিশাল মদের কারখানা দীর্ঘদিন যাবত কী করে চলছে এর উপযুক্ত জবাব নেই ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কর্মকর্তার। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ (সার্কেল) মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন কবির জানান, পুলিশ ফাঁড়ির কাছে কিংবা দূরে মদের কারখানা কোথাও থাকবে না। তথ্য পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নতুন সোনাকান্দা আদর্শ পুলিশ ফাঁড়ির ৫০০ গজের ভেতরে পোড়াহাটি এলাকায় একটি ধইঞ্চা খেতে দুটি ড্রামের চুলায় জ্বাল দেওয়া হচ্ছে মদ। পাশেই বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছে কাঁচা মদ ভর্তি ২০-২৫টি ড্রাম। কোথাও কম পচা কোথাও আবার বেশি। কিছু পলিথিন ভর্তি রেডি বাংলা মদ। স্থানীয় যুবসমাজ খেতের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করছে মদের ড্রাম।

স্থানীয় যুবক জহিরুল ইসলাম জানান, কামাল ও তার সহযোগীরা প্রায় ৮-১০ বছর যাবত এ কাজ করে আসছে। এলাকাবাসী ও প্রশাসনের অসহযোগীয় আমরা চক্রটিকে ধরতে পারছিলাম না। অবশেষে গ্রামের যুবসমাজ একত্র হয়ে ১৫-২০ ড্রাম মদ উদ্ধার করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সামনে ধ্বংস করেছি। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সরকারি ইস্পাহানি কলেজের শিক্ষক আসকর আলী জানান, এমন জঘন্য ব্যক্তি কোনো এলাকায় থাকলে সে এলাকা ভালো থাকতে পারে না। আমরা মাদক কারবারি কামালের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।

তবে অভিযুক্ত কামালের ছেলে জানিয়েছেন, বাবাকে বারবার বলার পরও তাকে ফেরানো যায়নি। আর বাড়ি বাবার নয় নিজেদের টাকায় করেছেন বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক ডাবলু জানান, স্থানীয় লোকজন কিছু বাংলা মদ উদ্ধার করে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করতে আসেনি। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


নওগাঁ শহরের এক সময়ের ‘ক্রিং ক্রিং’ শব্দ আর নেই!

আধিপত্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

একসময় নওগাঁ শহরের অলিগলিতে প্রতিদিন ভেসে আসত প্যাডেল চালিত রিকশার পরিচিত ‘ক্রিং ক্রিং’ আর ‘টুং টাং’ বেলের শব্দ। সেই রিকশার চাকা ঘুরে চলত শত শত পরিবারের জীবনযাপন। কিন্তু সময়ের পালাবদলে সেই ঐতিহ্য প্রায় বিলুপ্তির পথে।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও লাভজনক আয়ের আশায় শহরের প্রায় সব রিকশাচালকই এখন ঝুঁকছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দিকে।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার প্রতি ঝুঁকছে চালকরা:

প্যাডেল রিকশায় পরিশ্রম বেশি হলেও আয় কম। পক্ষান্তরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে কম শ্রমে বেশি আয়ের সুযোগ থাকায় অনেকেই বদলে ফেলেছেন পেশার ধরন। ফলে শহর ও গ্রামাঞ্চলে অটোরিকশার সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।

প্যাডেল রিকশার চালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মানুষ এখন আর প্যাডেলের রিকশায় উঠতে চায় না। তাই বেশির ভাগ সময় অলস বসে থাকতে হয়। আগে দিনে ২০০-৩০০ টাকা আয় হতো, এখন সেটা ৮০-১০০ টাকায় নেমে এসেছে। এত অল্প আয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে গেছে।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক মিঠু হোসেন জানান, রিকশায় খাটুনি বেশি, অথচ আয় কম। অটোরিকশা চালিয়ে দিনে ৫০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। কিস্তিতে কেনা যায় বলেও অনেকের পক্ষে এটি সহজলভ্য।

উৎপাদন বাড়ছে, ব্যয়ও বাড়ছে:

নওগাঁয় বর্তমানে প্রায় ৫০টি কারখানায় প্রতি মাসে গড়ে ২৫০টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা তৈরি হচ্ছে। তবে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে অনেক গুণ। রড ও শিটের দাম বিগত দুই বছরে বেড়েছে ৩০-৪০ শতাংশ।

শরিফুল ইসলাম নামের একজন কারখানা মালিক জানান, একটি অটোরিকশার ফ্রেম বা বডি তৈরিতে খরচ পড়ে অন্তত ৮০ হাজার টাকা। ব্যাটারিসহ পুরো অটোরিকশার খরচ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অনেক সময় এনজিও থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে কাজ করতে হয়, কারণ ব্যাংক ঋণ পেতে হলে জমি বা ঘরের কাগজ লাগে, যা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না।

কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত:

নওগাঁ বিসিক শিল্প নগরীর উপব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চাহিদা বাড়ায় নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কারখানার সংখ্যাও বেড়েছে। শিল্প সম্ভাবনা আরও বাড়াতে কারিগরি প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বিসিক।’

হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্য:

যেখানে এক সময় অভ্যন্তরীণ যাতায়াতে একমাত্র ভরসা ছিল প্যাডেল চালিত রিকশা, সেখানে এখন তা অতীত হতে চলেছে। শহরে বর্তমানে হাতে গোনা মাত্র ৩টি প্যাডেল রিকশা দেখা যায়, যার চালকরাও অধিকাংশই বয়সে প্রবীণ। একসময় যে রিকশাগুলোর নির্মাণে ব্যস্ত ছিল ৫০টিরও বেশি কারখানা, যার মাসিক উৎপাদন ব্যয় প্রায় ২ কোটি টাকা। এখন সেগুলোও ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে স্মৃতিতে।

এক সময়ের অপরিহার্য বাহন হয়তো আগামী প্রজন্মের কাছে রয়ে যাবে কেবল ইতিহাসের পাতায় কিংবা জাদুঘরের প্রদর্শনীতে।


বিশ্ব খ্যাত কিউনির সাথে কাজ করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও বিগ ডাটা অ্যানালিটিক্স এবং জলবায়ু পরিবর্তন, রিমোট সেন্সিং ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশ্ব খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক (কিউনি) এবং সিটি কলেজ অব নিউইয়র্ক (সিসিএনওয়াইর) সাথে কাজ করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের অনলাইন ট্রেনিং প্রোগ্রাম, জয়েন্ট ডিগ্রি প্রোগ্রাম, বিভিন্ন ধরনের গবেষণা এবং ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের যৌথ এক্সপোজার সফর নিয়ে কাজ করবে দুই বিশ্ববিদ্যালয়।

যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সম্প্রতি সিটি কলেজ অব নিউইয়র্কের প্রেসিডেন্ট ভিনসেন্ট বউড্রেউর সাথে এসব বিষয়ে যৌথ অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। এ সময় সিটি কলেজ অব নিউইয়র্কের প্রেসিডেন্ট, ডিন ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রফেসর আমানুল্লাহ বলেন, দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ ভূগোল, পরিবেশ বিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্য বিভাগ এবং বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণার সুযোগ তৈরি করবে।

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা নিয়ে সিটি কলেজ অব নিউইয়র্ক কর্তৃপক্ষের আগ্রহের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই যৌথ অংশীদারিত্ব শুধু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নয় বাংলাদেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্যও ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, উচ্চশিক্ষায় প্রচুর বিনিয়োগ লাগে, যা সরকারের পক্ষে বহন করা কঠিন। তাই উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সাবেক শিক্ষার্থীদের অ্যালামনাই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি জানান, সিটি কলেজ অব নিউইয়র্কের সাবেক শিক্ষার্থীরা প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বা ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কলেজের পদার্থবিজ্ঞান ল্যাব সংস্কার করেছে। সেখানে এখন ফোটন নিয়ে গবেষণা চলছে।

প্রফেসর আমানুল্লাহ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য সাবেক শিক্ষার্থী বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছেন। তাদের সবাইকে একত্র করতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এটি আলোর মুখ দেখবে। এই সংগঠন ভবিষ্যতে দেশের উচ্চশিক্ষায় বড় অবদান রাখবে বলে আশা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের।


জয়পুরহাটে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের ছাগল বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির আর্থসামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জয়পুরহাটে সুফলভোগীদের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে এ হাসপাতাল চত্বরে বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মহির উদ্দিন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফসিয়া জাহান, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা জানান, সরকারের এ উদ্যোগ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে ২০০ জন সুফলভোগীদের মাঝে ছাগল তুলে দেন অতিথিরা।


প্রবাসীর স্ত্রী ও যুবককে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাকিবুল হাসান রোকেল, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পরকীয়ার অভিযোগ এনে প্রবাসীর স্ত্রী ও এক যুবককে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগ রয়েছে, তাদেরকে রাতভর ঘরে আটকিয়ে নির্যাতনের পর সকালে আবারও বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর এ ঘটনার একাধিক ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরেই বোরহান উদ্দিন ও কুলসুম আক্তার নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে।

কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ তরিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে এক নারী (২৮) ও এক যুবককে (২৯) পেটাচ্ছেন একই এলাকার হাবিবুর রহমান (৬৫)। এ সময় চারপাশে ভিড় করে এ ঘটনা উপভোগ করছিলেন উৎসুক জনতা। হাবিবুর রহমান প্রথমে একটি কঞ্চি দিয়ে দুজনকেই পেটানোর পর পাশ থেকে আরেকজন আরও তিনটি কঞ্চি এগিয়ে দেন। সেগুলো একসঙ্গে করে পেটাতে থাকেন হাবিবুর। এ সময় নির্যাতনের শিকার নারী-পুরুষকে চিৎকার করতে শোনা যায়। অবশ্য এর মধ্যে কেউ কেউ মারতে নিষেধ করার কথাও শোনা গেছে। তারপরেও থামেননি হাবিবুর। আরেকটি ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি কঞ্চি একসঙ্গে করে তাদেরকে পেটাচ্ছেন কুলসুম আক্তার নামে আরেক নারী।

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, ২০ সেপ্টেম্বর রাত ৩ টার দিকে পরিকল্পিতভাবে তার স্বামীর বসতে ঢুকে পড়ে আসামিরা। এসময় তার ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেন তারা। পরে তার পাশের রুম থেকে তার পূর্বপরিচিত এক যুবককে ডেকে এনে দুজনকে একসঙ্গে মারধর করা হয়। পরে আবার বাড়ির সামনে বিদ্যুতের খুঁটিতে তাদেরকে একসঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে সেই ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী ওই নারীর খালাতো ভাই হাবিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

অপরদিকে নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী যুবকের পরিবারের সদস্যরা বলেন, তার যদি কোন অপরাধ থেকে থাকে তবে সেজন্য আইন আছে, সমাজ আছে। কিন্তুু আসামিরা তা না করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।

১০ বছর আগে কটিয়াদী পৌর এলাকায় এক যুবকের সাথে বিয়ে হয় নির্যাতনের শিকার ওই নারীর। বিয়ের ৪ বছর পরে সৌদিআরবে পাড়ি জমান তার স্বামী। পরে একই উপজেলার চারিয়া গ্রামের এক যুবকের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে বলে দাবি স্থানীয়দের।

নির্যাতনের শিকার ওই নারী বর্তমানে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে তার শারীরীক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত হলেও আরোও কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ডা: সৈয়দ মোঃ শাহরিয়ার।

কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নজরে আসার পরেই তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।


নিখোঁজের ৩দিন পরে ফতুল্লার বুড়িগঙ্গা থেকে ইদ্রিস মাঝির লাশ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা সরকারী তেল ডিপো যমুনা ঘাট এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ইদ্রিস আলী ব্যাপারী (৪৫) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার বেলা ১২ টার দিকে তেল ডিপো যমুনা ঘাটের পেছনে ভাসমানঅবস্থায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করে।

নিহত ইদ্রিস আলী ব্যাপারী শরিয়তপুর জেলার শখিপুর থানার চরজিন কিং গ্রামের মৃত সিদ্দিক আলী ব্যাপারীর ছেলে। সে ঢাকার শ্যামপুর তেলঘাট এলাকায় বসবাস করতো।

পাগলা নৌ পুলিশের উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, নিহত ইদ্রিস আলী একজন নৌকার মাঝি ছিলেন। গত তিন দিন পূর্বে (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর একটার দিকে নৌকা চালানোর সময় অসাবধানতাবশতঃ বুড়িগঙ্গা মাঝ নদীতে নৌকা থেকে পানিতে পরে যায়। এতে করে সে নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। পরে বুধবার বেলা ১২ দিকে লোক মারফত সংবাদ পেয়ে তিনি সহ নিহতের পরিবারের স্বজনেরা ফতুল্লার যমুনা ঘাটে এসে ভাসমান লাশটি নিখোঁজ ইদ্রিস আলীর মৃতদেহ উদ্ধার করে।


প্রাকৃতিক পানি শোধন ফিল্টার নামক প্রাণি শামুক নিধন করা হচ্ছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হারুনার রশীদ বুলবুল; কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের কেশবপুর ও আশপাশ এলাকা থেকে অবাধে কৃষকের অগোচরে বন্ধুর ভূমিকা পালনকারী প্রাকৃতিক পানি শোধন ফিল্টার নামক প্রাণি শামুক নিধন করা হচ্ছে। এর ফলে মৎস্য ও কৃষি বিভাগও এখন হয়ে পড়েছে চিন্তিত। দাবি উঠেছে এখনি শামুক নিধনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এলাকা থেকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে পড়বে।

ভবদহ অঞ্চলের কেশবপুর উপজেলায় ৫৫ হাজার ৮৬৭বিঘাতে ৪ হাজার ৬৫৮টি ঘের ও ৫ হাজার ৮৮৭ বিঘায় ৬ হাজার ৯৯৫টি পুকুর ও দিঘী রয়েছে। মনিরামপুর উপজেলায় রয়েছে ৬৮ হাজার ৬১০ বিঘায় ৪ হাজার ৮৮৯টি ঘের ও ৩৪ হাজার ২৩৭ বিঘায় আছে ১১ হাজার ৬৪৩টি পুকুর ও দিঘী এবং অভয়নগর উপজেলায় রয়েছে ৩৪ হাজার ৪২৫ বিঘা জমিতে ১ হাজার ২০৫টি ঘের ও ২৫ হাজার ৮৯০ বিঘায় ৪ হাজার ৮১০টি পুকুর ও দিঘী। এ ছাড়াও তিনটি উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য উন্মুক্ত জলাবদ্ধ বিল যা ঘের হিসেবে ব্যবহার করা হয় না। এলাকার দরিদ্র নারী পুরুষ ও শিশুরা এ সব ঘের, পুকুর, দিঘী ও উন্মুক্ত জলাবদ্ধ বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ৭থেকে ৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে থাকে। ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন সড়কের পয়েন্টে পয়েন্টে পাইকাররা ভ্যান, সাইকেল, দাঁড়িপাল্লা নিয়ে বসে থাকে। সকাল থেকেই ওই সব পয়েন্টে গিয়ে নারী-পুরুষ ও শিশুরা শামুক-ঝিনুক বিক্রি করে থাকে। এ সব পাইকারি ব্যবসায়ীরা শামুক-ঝিনুক থেকে মাংস বের করে ঘের মালিকদের কাছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন। আবার শামুক ঝিনুকের খোলা বস্তা প্রতি ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছে চুন তৈরির কারখানায়। মূলত ঘের ও চুন কারখানার মালিকরাই অস্বচ্ছল পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুদের উদ্বুদ্ধ করে শামুক-ঝিনুক ধরতে। চুন কারখানার মালিকরা পাইকারদের কাছে অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখে শামুক-ঝিনুক কেনার জন্য। মনিরামপুরের গোপালপুরে ২টি ও চেচুড়িয়ায় ১টি মোট ৩টি বড় ধরণের চুন তৈরির কারখানা রয়েছে। উপজেলার আড়য়া গ্রামের ফতেমা বেগম জানান, তার পরিবারের ৩-৪ জন বিল খুকখিয়াসহ অন্যান্য জলাবদ্ধ বিল পুকুর ও দিঘী থেকে শামুক-ঝিনুক এনে ৭ থেকে ৮ টাকা কেজিতে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে থাকি। প্রতিদিন এক থেকে দেড় মন শামুক-ঝিনুক তারা সংগ্রহ করে। সাগরদত্তকাটি গ্রামের শামুক ব্যবসায়ী জয়দেব বলেন, জলাবদ্ধ বিল এলাকা থেকে শামুক কিনে কপালিয়া এলাকার মাছের ঘের মালিকদের নিকট বিক্রি করে থাকি। এতে তাদের প্রতি কেজিতে ২০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত লাভ থাকে। চুন তৈরির কারখানার মালিক সমিরন দাস জানান, তার কারখানায় যে চুন তৈরি হয় তার তিন ভাগের দুই ভাগ চুন ঘের মালিকদের কাছে ৫০ কেজি বস্তা প্রতি ১ হাজার ৯০০ শত টাকায় বিক্রি করে থাকে। আর এক ভাগ চুন পান ও অন্যান্য কাজে ব্যবহারে বিক্রি করে দেয়। সে আরো জানান, শামুক-ঝিনুক কেনার জন্য পাইকারদের কাছে অগ্রিম টাকা দিয়েও রাখেন। ঘের মালিক আকবর হোসেন ও মোস্তাক হোসেন জানান, ঘেরের মাছ মোটাতাজা করা ও খাদ্য হিসেবে তারা শামুক-ঝিনুকের মাংস কিনে ঘেরে দেয়।এলাকা থেকে অবাদে শামুক নিধন হওয়ায় সচেতন মহল মৎস্য ও কৃষি অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট শামুক নিধনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শামুক মারা গেলে মাংস পঁচে ও খোলায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশ জাতীয় বস্তু মাটিতে তৈরি হয়। এর ফলে যে ক্ষেতে বেশি শামুক থাকে সেখানে ফসল ভাল উৎপাদন হয়। শামুকের কারণে ক্ষেতের উর্বরতা শক্তি বাড়ে।

এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস বলেন, শামুকের শরীরে রয়েছে প্রাকৃতিক জল শোধন ব্যবস্থা (ফিল্টার)। এরা ময়লা যুক্ত পানি পান করে ময়লা খাদ্য হিসেবে ভেতরে রেখে যে পানিটা বাইরে ছেড়ে দেয় সেটা বিশুদ্ধ। শামুকের বিশুদ্ধ পানির কারণে বিলে কই, শোল, শিং ও কার্প জাতীয় মাছ শামুক ও শামুকের ডিম খেয়ে বেঁচে থাকে। জলাবদ্ধ বিল থেকে শামুক কমে গেলে পানি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পানির রং পরিবর্তন হয়ে রোগ জীবাণু বেড়ে যায়।তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালে ১০ জুলাই প্রকাশিত সরকারি প্রজ্ঞাপনে শামুককে বন্য প্রাণি হিসেবে গণ্য করা হয়। সে হিসেবে অবৈধ ভাবে শামুক ধরা ও বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিষয়টি তিনি উপজেলা সমন্বয় সভায় উত্থাপন করে প্রতিকারের দাবি করবেন। শামুক কৃষকের অগোচরে ক্ষেত খামারে বন্ধুর ভূমিকা পালন করে থাকে জানান তিনি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরকার মুহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, শামুক-ঝিনুক প্রকৃতির খাদ্য শৃঙ্খলার সাথে ওৎপ্রতভাবে জড়িত। কেউ শামুক ঝিনুক ধরে মাছ বা অন্য কোন প্রাণির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও বিপর্যয় ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। যারা শামুক-ঝিনুক ধরে পরিবেশ নষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ মৎস্য আইনে নেই। এ কারণে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না।


দুর্গাপূজায় বেনাপোল বন্দর গিয়ে ৫ দিন আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি 

বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে পাঁচ দিন যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে।

এ সময়ে বেনাপোল বন্দরে পণ্য উঠানামা,খালাস এবং বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে জানান বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সি।

ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী বলেন, “পূজায় ২৮ সেপ্টেম্বর (রোববার) থেকে ০২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে। টানা ৫ দিন বন্ধ থাকার কারণে পেট্রাপোল বন্ধরে পন্য জটের সৃষ্টি হয়েছে।

৪ অক্টোবর শনিবার পুনরায় আমদানি-রপ্তানি চালু হবে বলে জানান কার্তিক চক্রবর্তী।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, “পাঁচদিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকার বিষয়টি ওপারের সিঅ্যান্ডএফ থেকে চিঠি দিয়ে আমাদের জানিয়েছে।” ভারতে দুর্গাপূজার উপলক্ষে পাঁচ দিন ছুটি থাকার কারণে পেট্রাপোল বন্দরে আটকা পড়বে শত শত পন্যবাহি ট্রাক। যার অধিকাংশই বাংলাদেশের শতভাগ রপ্তানি মুখী গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল থাকবে বলে তিনি জানান।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সি বলেন বলেন, “ছুটিতে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলেও পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।”

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. শামীম হোসেন বলেন, আমাদের সরকারী ছুটি ১ ও ২ অক্টোবর। তবে বাংলাদেশে আমদানি রপ্তানি কাজে সংশ্লিষ্টরা এবং ভারতীয় রপ্তানিকারকরা ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত আমদানি রপ্তানি বন্ধ থাকবে বলে পত্রের মাধ্যমে জানিয়েছেন।

ভারতে ”দুর্গা পূজার পাঁচ দিনের ছুটি থাকায় দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তবে বেনাপোল বন্দর ও শুল্ক ভবনের কাজকর্ম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। বন্দরে পণ্য খালাস করে ভারতীয় খালি ট্রাক সেদেশে ফিরে যেতে পারবে।”


গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

হত‍্যার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে 
আপডেটেড ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:৫৬
মেহেরপুর প্রতিনিধি  

মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামে দুই সন্তানের জননী টলি খাতুন নামের এক গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর ) সকাল নয়টার দিকে গৃহবধুর নিজ ঘরে ঝুলন্ত মরদেহ স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে নিহতের বসত ঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

সায়ত্রিশ বছর বয়সি নিহত গৃহবধু টলি খাতুন কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের সবেদ আলীর মেয়ে এবং বিগত ত্রিশ বছর পূর্বে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার কাজিপুর সর্দ্দার পাড়ার অফেজ উদ্দিনের ছেলে তাজুল ইসলামের সাথে বিবাহ হয়।

নিহত গৃহবধুর পরিবারের অভিযোগ, টলি খাতুন কে তার স্বামী তাজুল ইসলাম রাতের আধারে নির্যাতন করে মেরে ফেলে দড়ি দিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে এখন আত্মহত্যার কথা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। আমরা এই হত‍্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোশির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দাবি করছি। সে যদি অপরাধী নাই হবে তাহলে বাড়িতে বৌয়ের মরদেহ রেখে পালিয়ে গেছে কেনো?

নিহতের ফুফু মুর্শিদা খাতুন বলেন, আমার ভাইয়ের মেয়ে টলির শরীরে অনেক ক্ষতের দাগ আছে। গলাই নির্যাতনের চিন্হ আছে। পেটে মারার দাগ আছে। আমি নিশ্চিত তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি তাজুলের ফাসি চাই।

নিহতের স্বামী তাজুল ইসলামের চাচা এনামুল হক বলেন, তাজুল তার স্ত্রী টলিকে খুব ভালো বাসে। তাজুল বছর খানেক আগে তার মায়ের নামে থাকা জমি তার স্ত্রী টলি খাতুনের নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। অথচ সেই শাশুড়িকে গতকাল ভাত খেতে দেয়নি টলি খাতুন। আর তাতেই তাজুল রেগে গিয়ে টলি খাতুন কে বকাবকি করে। আর সেই সময় টলি একটা দড়ি নিয়ে এসে বালিসের নিচে রেখে বাহিরে বলে বেড়াই আমি আত্মহত্যা করে তোকে জেলের ভাত খাওয়াবো।

গাংনী থানা পুলিশের ভবানীপুর পুলিশ ক‍্যাম্প ইনচার্জ এস আই আব্দুল করিম বলেন, মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমারা আজ সকালে সংবাদ পেয়ে ঘটনা স্থলে এসে গৃহবধু টলি খাতুনের ঝুলন্ত মরদেহ তার বসত ঘরে আড়া থেকে উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্ত শেষ নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন‍্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তাছাড়া নিহতের পরিবারের মামলা দায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান।


বিয়ে করলে হলুদ ফ্রি!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

স্বনামধন্য ইভেন্ট ভেন্যু ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার লিমিটেড (আইসিসিএল) গ্রাহকদের জন্য বিশেষ ‘সেপ্টেম্বর অফার’ নিয়ে এসেছে। এ মাসের শেষ পর্যন্ত গ্রাহকরা আইসিসিএলে একটি ইভেন্ট বুক করলে অপর একটি ইভেন্টের জন্য ভেন্যু ফ্রিতে উপভোগ করতে পারবেন। বলা চলে, আপনি যদি বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য আইসিসিএল বুক করেন, তাহলে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানটির ক্ষেত্রে ভেন্যু ভাড়া ফ্রি উপভোগ করার সুযোগ পাবেন! এই বিশেষ অফারটি আইসিসিএলের পক্ষ থেকে পরিবার, কর্পোরেট এবং বিভিন্ন কমিউনিটির জন্য অনন্য সুযোগ হিসেবে এসেছে।

এই অফারটি কেবল ভেন্যু ভাড়ার ওপর প্রযোজ্য; কেটারিং, ডেকোর বা অন্যান্য ইভেন্ট সংক্রান্ত সেবা এই অফারটির আওতাভুক্ত নয়। এই উদ্যোগটি উন্নত পরিবেশ এবং নিখুঁত সেবার জন্য পরিচিত আইসিসিএলের চমৎকার ভেন্যুতে উৎসব উদযাপনে গ্রাহকদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। ‘এলিগ্যান্ট ভেন্যু, ডেলেক্টেবল ডাইনিং’ – এই স্লোগান নিয়ে আইসিসিএল, এক্সিলেন্স ও সেবার এক অনন্য সমন্বয় নিয়ে এসেছে।

এ বিষয়ে আইসিসিএলের সেলস ও মার্কেটিং কনসালট্যান্ট জোশিতা সানজানা রিজভান বলেন, “গ্রাহকদের জন্য আইসিসিএলকে আরও সহজলভ্য করে তুলতে এবং তাদের প্রতি আরও বেশি গুরুত্বারোপ করতে পেরে আমরা অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। আমাদের বিশ্বমানের ভেন্যুতে পরিবার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর জন্য বিশেষ মূল্য উপভোগ করার এ এক অনন্য সুযোগ।”

উন্নত মানের ডাইনিং এবং বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা সহ আইসিসিএল প্রতিটি গ্রাহকের জন্য অবিস্মরণীয় ইভেন্ট তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই অফারটি পরিবারিক জমায়েত থেকে শুরু করে কর্পোরেট ইভেন্ট পর্যন্ত যে কোনো অনুষ্ঠান শহরের অন্যতম সেরা ভেন্যুতে আয়োজন করার এক সুবর্ণ সুযোগ।

বিস্তারিত জানতে আইসিসিএলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://iccldhk.com/ অথবা অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/conventioncenterbd/ ভিজিট করুন


কুমিল্লায় টাস্কফোর্সের  অভিযান বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য জব্দ 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর রেলওয়ে স্টেশনে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লা দশ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর আলী এজাজ।

বিজিজির এই কর্মকর্তা জানান, বুধবার দিবাগত রাতে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর রেলওয়ে স্টেশনে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে চোরা কারবারিরা ভারতীয় ১৫৮ বোতল অলিভ অয়েল তেল, ১,১২০ পিস ডেরোবিন ক্রিম, ৮৬০ পিস স্কিন সাইন ক্রিম, ১,৩৩০ পিস জনসন বেবী লোশন এবং বাজি ৩,৪০,৬০০ পিস ফেলে পালিয়ে যায়।

পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সরোয়ার জাহানের উপস্থিতিতে ভারতীয় পণ্যগুলো জব্দ করা হয়। যার বাজার মূল্য ৮৭ লাখ ৭ হাজার টাকা।

পরে জব্দকৃত মালামাল গুলো আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে কাস্টমসে জমা করা হয়।


banner close