রোববার, ৩ আগস্ট ২০২৫
১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

বিমানের এমডির কক্ষ থেকে প্রশ্ন ফাঁস 

আপডেটেড
৩ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:৩২
নুরুজ্জামান লাবু ও আহমেদ দীপ্ত
প্রকাশিত
নুরুজ্জামান লাবু ও আহমেদ দীপ্ত
প্রকাশিত : ৩ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:৩২

বিমানের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল খোদ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. যাহিদ হোসেনের কক্ষ থেকে। তিনি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক প্রশাসন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। নিয়োগ পরীক্ষার আগে ওই কক্ষেই প্রশ্নগুলো ফটোকপি করা হয়। ফটোকপির দায়িত্বে ছিলেন এমডির দপ্তরের কর্মী জাহিদ হাসান। ফটোকপির ফাঁকে তিনি মোবাইল ফোনে প্রশ্নপত্রের একটি ছবি তুলে নেন। পরবর্তী সময়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী সেই প্রশ্ন ফাঁস করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তবে বিমানের এমডি মো. যাহিদ হোসেন দৈনিক বাংলার কাছে দাবি করেছেন, তার কক্ষ থেকে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কথা ঠিক না।

মামলার তদন্ত ও আদালত সূত্র বলছে, বিমানের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের মধ্যে ৯ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে তারা ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তার নাম বলেছেন।

তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ার কারণে এ নিয়ে কেউ সরাসরি মন্তব্য করেননি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে ব্রিফিং করা হবে।’

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তির মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। পরে তা বিশ্লেষণ করে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠানোর প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। মামলার এজাহারেও বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সেই প্রশ্নগুলো বিমানের মহাব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) তাইজ ইবনে আনোয়ারের ব্যক্তিগত ও দাপ্তরিক নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে ও এমএলএসএস জাকিরের কাছে পাঠানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া জাফি ও মাহাবুব আলী নামে দুই ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেও ওই প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়। মাহাবুব আলী এমডির গাড়িচালক হিসেবে কাজ করেন। বক্তব্য জানতে এমএলএসএস জাকির ও গাড়িচালক মাহাবুবের মোবাইল নম্বরে ফোন করলে দুজনের নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকেই তারা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত দুই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) তাইজ ইবনে আনোয়ার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমার মোবাইলে এমন কোনো প্রশ্ন আসেনি। প্রশ্নপত্র ফটোকপি করার সময় আমি ওই কক্ষে ছিলামও না।’

প্রশ্নপত্র প্রস্তুতে ছিল না পর্যাপ্ত নিরাপত্তা

বিমানের একটি সূত্র বলছে, বিমানের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি, ফটোকপি ও বিতরণের কোনো অংশেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বিমানের এমডি নিজ কক্ষে নিয়মিত বসলেও প্রশাসন বিভাগের পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের কারণে প্রশাসন পরিচালকের কক্ষেও তিনি মাঝে মাঝে বসতেন। ওই কক্ষেই নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফটোকপি করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেখানেও নিরাপত্তাব্যবস্থায় ঘাটতি ছিল।

বিমানের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য পাঁচ সদস্যের যে কমিটি করা হয় তার প্রধান ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. যাহিদ হোসেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ, বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ট্রেনিং সেন্টারের (বিএটিসি) অধ্যক্ষ এ বি এম নাজমুল হুদা, মহাব্যবস্থাপক (জিএসই) তাইজ ইবনে আনোয়ার, মহাব্যবস্থাপক আইটি (ভারপ্রাপ্ত) মো. আনোয়ারুল হক।

জানা গেছে, প্রশ্নপত্র তৈরির পর পরীক্ষায় ব্যবহারের জন্য ফটোকপি করার সময় কমিটির দুই সদস্য সেখানে ছিলেন না। তাদের পরিবর্তে অন্য দুজন কর্মকর্তাকে সেই কক্ষে প্রবেশ এবং অবস্থানের অনুমতি দেয়া হয়। এ ছাড়া কমিটির সদস্যসহ কর্মচারীদের কাউকেই দেহ তল্লাশি বা মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে সেখানে আছেন কি না তাও যাচাই করা হয়নি।

নিয়োগ কমিটির অন্যতম সদস্য মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে মুঠোফোন সঙ্গে নিয়ে আসা নিষেধ ছিল। এ কারণে নতুন করে চেক করা হয়নি। ফটোকপির সময় আমরা উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু এর ফাঁকেই ফটোকপির দায়িত্বে থাকা জাহিদ হয়তো ছবি তুলতে পারে।’

কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতেই কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস হলো জানতে চাইলে মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।’

কমিটির আরেক সদস্য এ বি এম নাজমুল হুদা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সদস্য মো. আনোয়ারুল হক দাবি করেন, তিনি কমিটির সদস্যই ছিলেন না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. যাহিদ হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি পরিচালক প্রশাসনের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করলেও কক্ষটিতে নিয়মিত বসি না। মাঝেমধ্যে দাপ্তরিক কাজে যেতে হয়। ফলে সরাসরি আমার কক্ষ থেকেই প্রশ্নটি ফাঁস হয়েছে তা ঠিক না।’

প্রশ্নপত্র প্রণয়নে যথাযথ নিরাপত্তাব্যবস্থার অভাব প্রসঙ্গে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার বিমানের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘সেখানে মহাব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) উপস্থিত ছিলেন। নিরাপত্তার বিষয়টি তার দেখার কথা।’ প্রশ্নপত্র ফটোকপি করার সময় মহাব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) উপস্থিত ছিলেন না জানালে এমডি বলেন, ‘তার তো থাকার কথা। এ বিষয়ে আমরাও একটি ইনকোয়ারি করছি। ইনকোয়ারির পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।’

তবে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, প্রশ্ন ফাঁসে যারা সরাসরি জড়িত, তাদের পাশাপাশি তদারকির দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের দায়ও পর্যালোচনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে কেউ দায় এড়াতে পারবেন না।

তদন্তে অসহযোগিতা বিমানের

এদিকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা তদন্তে অসহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে খোদ বিমানের বিরুদ্ধে। তদন্তসংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, তারা একাধিকবার তদন্তের বিষয়ে কথা বলার জন্য বিমানের এমডির সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি। উল্টো তিনি পুলিশি তদন্ত বাধাগ্রস্ত করতে নানা জায়গায় তদবির করেছেন।

গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাকে পুরো প্রক্রিয়াটি জানানো এবং জানার জন্য গোয়েন্দা কার্যালয়ে আসার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি কোনোভাবেই গোয়েন্দা কার্যালয়ে আসতে রাজি হননি।’

তবে বিমানের এমডি অসহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা নিয়মিত তদন্তসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছি। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গেই তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’

তদন্তসংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আগেও একবার তারা নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করেছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তার পরও ‘সুনাম ক্ষুণ্ন হবে’ মনে করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে বর্তমানে অনেকেই বিমানের বিভিন্ন পদে চাকরি করছেন।

গত ২১ অক্টোবর বেলা ৩টায় বিমানের ১০ পদের বিপরীতে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে প্রথমে দক্ষিণখান এলাকা থেকে বিমানের অফিস সহায়ক হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এমটি অপারেটর মোহাম্মদ মাহফুজুল আলম ও এনামুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন পৃথক অভিযানে দক্ষিণখানের মধুবাগ এলাকা থেকে এমটি অপারেটর জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বিমানের প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অফিস সহায়ক আওলাদ হোসেনকে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনকে ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করে ছয় দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে দুই দিন পর প্রশ্ন ফাঁসের মূল হোতা জাহিদ হাসান ও সামজু ওরফে সোবহানকে গ্রেপ্তার করেন গোয়েন্দারা। ২৪ অক্টোবর ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মাসুদকে। তাদেরও প্রথমে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ। পরবর্তী সময়ে জাভেদসহ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বিমান ও গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, জাহিদ ও আওলাদ এমডির দপ্তরের অফিস সহায়ক হিসেবে কাজ করতেন। সোবহান ও জাভেদ পরিচালক প্রশাসনের দপ্তরের অফিস সহায়ক। বাকিরা এমটি অপারেটর (গাড়িচালক) হিসেবে কাজ করতেন। গ্রেপ্তার মাসুদ বিমানের মহাব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) তাইজ ইবনে আনোয়ারের গাড়ি চালান। জাহাঙ্গীর আলম আগে তাইজ ইবনে আনোয়ারের গাড়ি চালাতেন।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, বিমানের এমডির বর্তমান গাড়িচালক মাহবুব আলী এই চক্রের অন্যতম একজন হোতা। ঘটনার পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে আছেন। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।


ভৈরবে রাতভর পুলিশের অভিযানে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ২৩ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজীবুল হাসান, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পুলিশের অভিযানে ২৩ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা শহরে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত ছিলো । আজ রোববার বিকাল সাড়ে ৪ টায় তাদেরকে কিশোরগঞ্জ আদালতে চালান দেয়া হয়।

গতকাল শনিবার রাত ১০ টা থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত শহর এলাকায় এই অভিযান চলে। শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সবুজ (২৩) হেলাল (২৫), নাঈম (২৩), রায়হান (২০), আরাফাত (৩৩), ওসমান (১৮), সোহেল মিয়া (২৮), মো. ফুল মিয়া (৩৬), হৃদয় (২৫), রনি মিয়া (৩২), বিল্লাল মিয়া (২০), সানি (৩৩), বিজয় (২৮), সুমন (২০), মাহিন (২১), নামিন (২০), মনির হোসেন (২৮), ফরহাদ (২৫), আকাশ (৩২), গোলাম মোস্তফা (৪২), জনি (২৬), দুলাল (৪৫)।

এবিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফূয়াদ রুহানী জানান, শহরে চুরি, ছিনতাই, মাদক বৃদ্ধি পাওয়ায় শনিবার রাতভর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৬ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্য কারো কারো নামে থানায় ছিনতাই মামলা আছে, একজন ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী। কয়েকজনের নামে নতুন মামলাও হয়েছে। ভৈরব শহরের আইন শৃংখলা ঠিক রাখতেই অভিযান চালানো হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।


পূর্বাচলে হাঁসের মাংস দিয়ে পিঠা বিক্রি করে স্বাবলম্বী নারীরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

সন্ধ্যা হলেই বালু নদের তীরে, নীলা মার্কেঠে জলে ওঠে লাল নীল বাতি। মাটির চুলায় লাকড়ি দিয়ে রান্না শুরু হয় হাঁসের মাংস আর বিভিন্ন ধরনের পিঠা। আর এগুলো তৈরি করেন নারীরা এবং পরিবেশনও করেন নারীরা। স্থানীয়রা বলেন, শুধু শীতেই এখানে কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। মাংস দিয়ে পিঠা বিক্রি করে এখানে শতাধিক নারী স্বাবলম্বী।

শীত, গ্রীস্ম, শরৎ আর হেমন্ত সব মৌসুম বাঙালি জাতির বিলাসী আহার-বিহারের মৌসুমও। বছরজুড়ে হাজারো ধরনের পিঠাপুলি তৈরির ধুম পড়ে যায়। অঞ্চলভেদে ঘরে ঘরে তৈরি করা হয় কত রংবেরঙের পিঠাপুলি। তবে সময় এবং মানুষের রুচির মধ্যে অনেক পার্থক্য এসেছে। এক সময় বাহিরের খাবাওে অরুচি থাকলেও এখন ঘরে তৈরি খাবার খেয়ে আভ্যন্ত বাঙালি ক্রমেই ঘরের বাইরে তৈরি খাবার খেতেও অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। বাঙালির এই খাদ্য রুচি পরিবর্তনের কথা ভেবে অঞ্চলভেদে গড়ে উঠেছে বিশেষ খাবারের বিশেষ রেস্টুরেন্ট। তেমনি কয়েক বছর ধরে শীত মৌসুমে শীতের খাবারের মেন্যুর শীর্ষ পর্যায়ে স্থান পেতে শুরু করেছে হাঁসের মাংস। এসব হাঁসের মাংস রান্নার ধরন ও স্বাদও আলাদা।

তেমনি রান্না করা হাঁসের মাংসের জন্য বিশেষ দ্রষ্টব্য স্থান হয়ে উঠেছে ৩০০ ফিট ঘিরে পূর্বাচলে বালু নদের পাশের ময়েজ উদ্দিন চতুর ও নীলা মার্কেট। ঢাকা-রূপগঞ্জ সড়কের ৩০০ ফিট এলাকায় স্টেডিয়ামের পাশে বালু নদের তীর ঘেঁষে গ্রামীণ এ বাজারের অবস্থান। প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলে তরুণ-তরুণীরা, বন্ধু-বান্ধব কিংবা অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখানে হাজির হন রান্না করা হাঁসের মাংস দিয়ে চাপটি খেতে।

রাজধানী বাড্ডা থেকে এসেছেন শামিম-মুন্নি দম্পতি। তাঁরা বলেন, হাঁস তো বাসায় বসেই খাওয়া যায়। কিন্তু পূর্বাচলে খাওয়ার মজাই আলাদা। গ্রামীণ পরিবেশে খাওয়া ও ঘোরাঘুরি দুটোই হয়। ডেমড়ার মীরপাড়া থেকে এসেছেন আবিদ হাসান ও তাঁর বন্ধুরা। আবিদ বলেন, 'আমরা সব বন্ধু মোটরবাইকে করে পূর্বাচলে এসেছি হাঁসের মাংস খেতে। শুনেছি এখানকার হাঁসের মাংস খুবই স্বাদ।

গ্রামীণ আবহে সেখানকার দোকানগুলোয় হাঁসের মাংস রান্না করা হয় মাটির চুলায়। রান্নায় ব্যবহার করা হয় স্থানীয় উপকরণ। অনেক ভোজনরসিক মাটির চুলায় এই হাঁস রান্নার ঘ্রাণে বিমোহিত হন। দল বেঁধে হাঁসের মাংস দিয়ে চাপটি, রুটিসহ বিভিন্ন পিঠা খেতে পূর্বাচলে ৩০০ ফিটের ময়েজ উদ্দিন চত্বর ও নীলা মার্কেট ভোজনরসিকদের কাছে বিশেষ স্থান হয়ে উঠেছে।

সপ্তাহের ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার ছাড়াও যেকোনো বন্ধের দিন যেখানে ভোজনরসিকদের ভিড় লেগে যায়। বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভোজনরসিকদের এই ভিড় অব্যাহত থাকে। গ্রামীণ পরিবেশে দেশি হাঁসের মাংসের সঙ্গে আতপ চালের চাপটি কিংবা চিতই পিঠা ভোজনরসিকদের কাছে বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শীত আসলেই শীতের খাবারের নতুন এই ট্রেন্ড হাঁসের মাংস খেতে দলে দলে ভোজনরসিকরা ছুটে যান নীলা মার্কেট এলাকায়।

৩০০ ফিট এক্সপ্রেসওয়ের পাশে পূর্বাচল সেক্টর-১-এ বিশাল এলাকাজুড়ে মার্কেকটির অবস্থান। ৩০০ ফিট এক্সপ্রেসওয়ে এমনিতেই রাজধানীবাসীর কাছে দর্শনীয় স্থান। তার পাশে নীলা মার্কেটের মজাদার হাঁসের মাংস মানুষের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে তুলেছে। এর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায় রাজধানীর আশপাশের এলাকাগুলো থেকেও আনকে দল বেঁধে সেখানে হাঁসের মাংসের স্বাদ নিতে চলে আসেন। সেখানকার অসংখ্য দোকানের যেকোনো একটায় ইচ্ছামতো বসে উপভোগ করা যায় দেশি হাঁসের বিচিত্র স্বাদ। সঙ্গে রয়েছে বাহারি পিঠাও।

নীলা মার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের দুই পাশে সারি সারি দোকান, যার প্রায় প্রতিটি দোকানেই পাওয়া যায় গরু, মুরগীসহ হাঁসের মাংস। রান্নার জন্য প্রতিদিন দুপুরের মধ্যেই শেষ করা হয় হাঁস কেটে মাংস ধোয়ার কাজ। সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় মাটির চুলায় রান্না। তখন সেখানকার চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে হাঁস রান্নার ঘ্রাণ। দেখা গেছে ছুটির দিনে সেখানে আলেয়ার পিঠাঘরে রান্না হচ্ছে ২৫টি হাঁস। আরো ১০টি মজুদ করা আছে। শিউলি আক্তার তাঁর পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় প্রায় আড়াই বছর ধরে সেখানে ব্যবসা করছেন। খাবার মজাদার হওয়ায় শুরু থেকেই তিনি ভোজনরসিকদের কাছে জনপ্রিয়। কথায় কথায় জানালেন, ছুটির দিনগুলোতে বিকেল থেকে রাত ১টা পর্যন্ত তাঁর দোকানে বেচাবিক্রি চলে। ২৫০ টাকার এক প্লে¬ট মাংসে থাকে একটি লেগ পিসসহ মোট পাঁচ পিস মাংস, সাথে ঝোল। নীলা মার্কেটের বিশেষত্ব হলো সেখানকার মাংস রান্না হয় মাটির চুলায়। আর জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় শুকনা কাঠ। এ কারণে খাবারের স্বাদ ভিন্ন হয় বলে জানালেন সেখানকার দোকানিরা।

ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে অনেকে দোকানের সাইন বোর্ডে লিখে রেখেছেন 'লাকড়ি দিয়ে মাটির চুলায় রান্না হয়।' 'নিমন্ত্রণ পিঠা ঘরে' রান্না করছিলেন খালেদা আক্তার। মাটির চুলার বিশেষত্ব সম্পর্কে তিনি বললেন, 'মাটির চুলায় কাঠ দিয়া রান্নাডা হইতে টাইম লাগে। আস্তে আস্তে রান্না হয়। এ জন্য খাবারডা মজা হয়। আর হাঁসের মাংস তো অনেক সময় নিয়া রান্না করা লাগে। মাংস শক্ত থাকলে খাইয়া মজা নাই।

'বউ-শাশুড়ি পিঠা ঘর'-এর মালিক বন্যা আক্তার বলেন, 'আমাদের লোক আছে। ওরা ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা থেকে হাঁস দিয়ে যায়। একদম দেশি হাঁস। হাওরে যেগুলো পালা হয়। আমাদের দোকানে প্রতিদিন রান্না করা ৫০ থেকে ৬০টি হাঁসের মাংস বিক্রি হয়।'

শীতে একটু বেশি জমে ব্যবসা। 'অনন্যা খাবারঘর'-এর মালিক জাকির মিয়া বললেন, 'নীলা মার্কেটে দেড় শ থেকে দুই শ দোকান রয়েছে। যারা হাঁসের মাংস। বিক্রি করে। শীতে সবচেয়ে বেশি জমজমাট হয় এই বাবসা। শীতে হাঁস ভুনা দিয়ে পিঠা খেতে অনেকে পছন্দ করে। এই মৌসুমে এক মাসে আমার প্রায় দুই শ থেকে আড়াই শ হাঁস লাগে'।


নারায়ণগঞ্জে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার পর ভাসুরের আত্মসমর্পণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এম এস ডালিম, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে নদী আক্তার নীলা(২৫) নামে এক গৃহবধূ কে কুপিয়ে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পণ করেছে ভাসুর রবিউল হাসান আবির (৩৫)।

রবিবার সকালে উপজেলার কুশিয়ারা এলাকার একটি নির্জন বিলে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত গৃহবধূ নদী আক্তার নীলা ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার কানুরামপুর এলাকার শাহজাহান দেওয়ানের মেয়ে ও কুশিয়ারা এলাকার প্রবাসী রাসেল মিয়ার স্ত্রী।

আত্মসমর্পণকারি রবিউল হাসান আবির উপজেলার কুশিয়ারা এলাকার মৃত আবুল হোসেন মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত গৃহবধূ নদী আক্তার নীলা পূর্বে ৩টি বিয়ে হয়ে ছিল। কুশিয়ারা এলাকার প্রবাসী রাসেল ছিল তার ৪ নাম্বার স্বামী। এদিকে ঘাতক রবিউল হাসান ওরফে আবিরের মা বেশ কিছু দিন পূর্বে ব্যবসার জন্য ব্রাক ব্যাংক থেকে ৪ লাখ টাকা উত্তেলন করে তার ছোট ছেলে রাসেল ও তার স্ত্রী নীলার হাতে তুলে দেন। রাসেল ঋণ পরিশোধ না করে প্রবাসে পাড়ি জমায়। এ ঘটনায় ব্রাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জিম্মাদার ভাসুর রবিউল হাসান আবিরকে টাকা পরিশোধের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এ নিয়ে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী নীলার সাথে ভাসুর রবিউল হাসান আবির সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার জের ধরে রোববার সকালে ভাসুর রবিউল হাসান আবির তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী নদী আক্তার নীলাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে কুশিয়ারা এলাকার একটি নির্জন বিলে নিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। হত্যকান্ডের ২ ঘন্টা পর সকাল ৯টায় ভাসুর রবিউল হত্যাকান্ডের ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র নিয়ে বন্দর থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হত্যার পর নিহতের ভাসুর থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।


স্বৈরাচারের বিচার চাই, তাদের ফাঁসিতে ঝুলাতে চাই- শহিদ সবুজের স্ত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাকিব আসলাম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

শহিদ সবুজের স্ত্রী বলেছেন, আমরা শহিদ পরিবার ও আহত পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ থাকবে আপনারা আমাদেরকে সুনজরে দেখবেন। আমার স্বামীর হত্যায় মামলা করেছি এবং ১৩ জন আসামী গ্রেফতার হয়েছে কিন্তু তাদের এখনো বিচার করা হয়নি। আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই, স্বৈরাচারের বিচার চাই। আ.লীগ ফ্যাসিস্টদের বিচার চাই। তাদের ফাঁসি ঝুলাতে চাই।

রবিবার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ছাত্র-শিক্ষক সংহতি দিবস উপলক্ষে শহিদ পরিবারের সাথে মতবিনিময় ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে শহিদ সবুজের স্ত্রী এসব কথা বলেন।

শহিদ সবুজের স্ত্রী বলেন, আমার পরিবারের উপার্জন কর্তা একজনই ছিল তিনি আমার স্বামী। তিনি যখন আন্দোলনে গিয়েছিলেন তখন আমার ১ মাসের বাচ্চা ছিল। তিনি আমাদের পরিবারে ও বাচ্চার কথা চিন্তা না করে আন্দোলনে যোগদান করেছিল। আমার স্বামী দেশের জন্য লড়েছেন, জাতির জন্য লড়েছেন। ৫ আগস্টে বিজয় মিছিলের পর বাসায় অনেকে ফিরেছিল তখন আমার স্বামী ফিরে নাই। তিনি শহিদ হয়েছিলেন কিন্তু আমি দেখতে পারিনি। এই না দেখার বেদনা আমি বলে বুঝাতে পারবো না।

শহিদ রাকিবের পিতা বলেন, আমি অনুরোধ করছি শহিদদের স্মরণের জন্য এমন ব্যবস্থা যদি রাখা হয় তাহলে আমাদের সন্তানদের স্মরণ করতে পারবো সন্তুষ্ট হবো এবং কৃতজ্ঞ থাকবো আপনাদের কাছে।

শহিদ ইউসুফের মা বলেন, আমার বাবা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। আমি হাসপাতালে ছুটে যাই। তিনটা লাশ ছিল। আমার বাবার পা দেখে সনাক্ত করি। কিন্তু ওই যন্ত্রনা সহ্য করতে পারি নাই। এরপরও ছাত্র ভাইদের ডাকে সাড়া দিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করি আন্দোলনে।

শহিদ পরিবারের আরেক সদস্য বলেন, আছরের নামাজের পর হঠাৎ শুনতে পাই আমার ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হয়েছেন। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার মা অস্বাভাবিক ভাবে কাঁদতে থাকেন। এই বেদনা নিয়ে বলতে চাই, ফ্যাস্টিটের অত্যাচার দেখে যাচ্ছি, থামছে না। এগুলো প্রথমত থামাতে হবে। থামানোর জন্য পদ্ধতি বের করতে হবে। কেউ অন্যায় করলে সেটা বিচার পাই না। ফেজবুকে ছেড়ে দেই, বিচার চাই, ফাসি চাই স্লোগানে সীমাবদ্ধ থাকি। আমরা এগুলো চাই না। আমরা কঠোর বিচার চাই, বিচার বিভাগীয় সংস্কার চাই।

উল্লেখ্য, জুলাই বিপ্লব প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।


নেত্রকোনায় এসইডিপি'র আয়োজনে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এ বি চৌধুরী নাদিম, জেলা প্রতিনিধি

নেত্রকোনায় ৩ আগষ্ট ২০২৫ তারিখ রবিবার সকালে জেলা সদর উপজেলার হলরুমে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা ও জেলা শিক্ষা অফিসের আয়োজনে পারফরমেন্স বেইজড গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারী ইন্সটিটিউশনস স্কিল -এসইডিপি'র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে । সারা দেশে শিক্ষার মান উন্নয়নে ও শিক্ষার্থীদের আলোকিত মানুষ রূপে গড়ার লক্ষ্যে সচেতনতামূলক এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । নেত্রকোনা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আসমা বিনতে রফিক এর সভাপতিত্বে ও একাডেমিক সুপারভাইজার মো: আব্দুল আউয়ালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস ,বিশেষ অতিথির মধ্যে ছিলেন, নেত্রকোনার অতিথির জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমিন , নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা অফিসার স্বপ্না রাণী সরকার । শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কৃতি শিক্ষার্থী , অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তিন ক্যাটাগরিতে ৩০ জন পুরস্কার প্রদান করা হয় । এসইডিপি'র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন , জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমিন , সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা বিনতে রফিক,নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা অফিসার স্বপ্না রানী সরকার , রাজুর বাজার কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক, লোক গবেষক গোলাম মোস্তফা , আবু আব্বাস কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ, মৌজে বালী দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এমদাদুল হক ,আব্বাসিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি লতিফ হায়দার টিটু আব্বাস , অভিভাবক শিক্ষক হারুন অর রশিদ, দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী অর্পিতা হক ঐশী , এন আকন্দ আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী আশরাফুজ্জামান প্রমূখ । প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন , শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করলেই হবে না, আমাদের কে মানুষের মত মানুষ হতে হবে । একজন ভালো মানুষ হয়ে পরিবার ,সমাজ , রাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য কাজ করতে হবে। প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে । তিনি সকল কে সকল প্রকার মাদকাসক্ত থেকে বেরিয়ে এসে দেশের উন্নয়ন ও মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকার আহ্বান জানান । বিশেষ অতিথির মধ্যে ছিলেন, নেত্রকোনার অতিথির জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমিন , নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা অফিসার স্বপ্না রাণী সরকার।


নেত্রকোণায় ঝুঁকিপূর্ণ খুটিঁ সরিয়ে নতুন উন্নত বৈদ্যুতিক  খুটিঁ স্থাপন করার দাবী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এ বি চৌধুরী নাদিম,জেলা প্রতিনিধি

নেত্রকোনা সদর উপজেলার বাংলা ইউনিয়নের সহিলপুর থেকে নয়াপাড়া বাংলা এলাকায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বৈদ্যুতিক লাইনের বেহাল দশা জনমনে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী দ্রুত এই ঝুঁকিপূর্ণ লাইন সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।নয়াপাড়া বাংলা এলাকার এই বিদ্যুৎ লাইনে কোনো বৈদ্যুতিক খুঁটি নেই, বরং নিম্নমানের বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করা হয়েছে। এই লাইনটি বাঁশঝাড় ও লোকজনের চলাচলের রাস্তার পাশ দিয়ে গেছে। বিশেষ করে, বীণাপাণি বিদ্যাপীঠ স্কুলের ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই ঝুঁকিপূর্ণ লাইনের পাশ দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। বীণাপাণি বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ অজিত কুমার সিংহ বলেন, "এই নিম্নমানের বৈদ্যুতিক খুঁটি দ্রুত সংস্কার করে নতুন বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি। এটি এলাকাবাসীকে চরম বিপদের হাত থেকে রক্ষা করবে।"

এলাকাবাসীর আশঙ্কা, যেকোনো সময় একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, বিশেষ করে ঝড়-তুফানের এই মৌসুমে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। বাংলা নয়াপাড়া এলাকায় অবস্থিত রায়বাড়ী ও ঐতিহ্যবাহী বীণাপাণি বিদ্যাপীঠের প্রতিষ্ঠাতা জনাব অসীম কুমার রায়ও এই সমস্যার দ্রুত সমাধানে গুরুত্বারোপ করেছেন। জানমালের নিরাপত্তার কথা ভেবে এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অবিলম্বে জরাজীর্ণ ও চিকন বাঁশের খুঁটি দিয়ে নির্মিত এই লাইনের বেহাল দশা থেকে উত্তরণের মাধ্যমে সকল দুর্ঘটনা থেকে জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানিয়েছেন। নেত্রকোনা পিডিবি কর্তৃপক্ষ যাতে দ্রুত বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে বৈদ্যুতিক লাইন সংস্কার করে নতুন খুঁটির ব্যবস্থা নেয়, সে বিষয়ে এলাকাবাসী সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।


নড়াইলে ৮৫ বছরের বৃদ্ধার জমি লিখে নিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইল সদর উপজেলার চরশালিখা গ্রামে ৮৫ বছরের বৃদ্ধা ছিয়ারন নেসার জমি লিখে নিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামবাসীর আয়োজনে শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে চরশালিখা গ্রামীণ রাস্তার তিনমাথায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন-বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাখা কাজী, ভুক্তভোগী ছিয়ারন নেসা ও তার ছেলে বাবু মোল্যা, মশিয়ার রহমান, নবীর হোসেন, লিটন শেখ, আব্দুর রহমান, মুরাদ হোসেনসহ অনেকে।

বক্তারা জানান, নাতনি কমলা বেগম চরশালিখা গ্রামে প্রায় ৪২ শতক বসতভিটার জমি লিখে নিয়ে নানী ছিয়ারন নেসাকে বাড়ি থেকে প্রায় এক সপ্তাহ আগে তাড়িয়ে দিয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন ছিয়ারন নেসার একমাত্র ছেলে বাবু মোল্যাসহ গ্রামবাসী।

প্রতিবেশিরা জানান, আড়াই মাসের সন্তান কমলাকে রেখে তার মা আনজিরা বেগম মারা যান। এরপর নানী ছিয়ারন নাতনি কমলাকে নিজের বুকের দুধ খাইয়ে বড় করেন। আদরের নাতনি কমলাকে নিজ গ্রাম চরশালিখায় বিয়ে দেন। এরপর নাতজামাইকে প্রায় সাত শতক জমি বিক্রি করে আট বছর আগে বিদেশ পাঠান। নাতনি কমলা বেগমের আবদারে বসতভিটার পাঁচ শতক জমি লিখে দিতে রাজি হন নানী ছিয়ারন। কিন্তু কমলা বেগম অপকৌশলে নানীর কাছ থেকে ৪২ শতক জমি লিখে নেন। প্রায় এক সপ্তাহ আগে বৃদ্ধা ছিয়ারন বেগমকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে উল্টো নানিসহ প্রতিবেশিদের নামে সংবাদ সম্মেলন করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন কমলা বেগম। কমলা দাবি করে জানান, তিনি নানীর কাছ থেকে ফাঁকি দিয়ে জমি লিখে নেননি।

তবে গ্রামবাসী বলেন, ছিয়ারন নেসার অনেক জমিজমা থাকতেও আদরের নাতিকে সব জমি লিখে দিয়ে আজ পথে পথে ঘুরছেন। বাড়িতে উঠতে পারছেন না। নিজের ঘরে মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে গ্রামে এ-বাড়ি, ও-বাড়ি খেতে হচ্ছে ছিয়ারন নেসাকে। অনেক কষ্টে বিভিন্ন জায়গায় থাকতে হচ্ছে। ছিয়ারন নেসা ছেলে বাবুকেও মাথা গোঁজার মতো একটু জমি দিতে পারেননি। সব জমি তার নাতনি লিখে নিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে ছিয়ারন নেসার ছেলে বাবুর সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই। ঘটনাটি নড়াইল সদর থানা পুলিশ তদন্ত করছে। বৃদ্ধা ছিয়ারন নেসা যেন ন্যায়বিচার পান এই প্রত্যাশা করছেন গ্রামবাসী।

এদিকে সদর থানার এসআই সুকান্ত ও এএসআই জাবেদ বলেন, শুক্রবার বিকেলে আমরা সরেজমিন তদন্ত করেছি। ভুক্তভোগীসহ গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি। বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।


পল্লীকবি জসীম উদদীন স্মরণে "শতবর্ষে কবর" গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

আবহমান গ্রাম বাংলার মাটি ও মানুষের কবি পল্লীকবি জসীম উদদীন স্মরণে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে "শতবর্ষে কবর" গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ফরিদপুরের সাবেক ডিসি ও ফরিদপুর ফাউন্ডেশনের সভাপতি জালাল আহমদ এর সভাপতিত্বে- ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলনের সঞ্চালনায় অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর আবরার।

এসময় পল্লীকবি জসীম উদদীন এর কবর কবিতা ও তার সাহিত্যকর্ম নিয়ে অলোচনায় অংশ নেন কথা সাহিত্যিক ও গবেষক আন্দালিব রাশদী, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা পাখি বিশেষজ্ঞ, ইনাম আল হক, ভ্রমণ লেখক ও কথা সাহিত্যিক ফারুক মঈনুদ্দীন, নয়নজুলি প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী ড. মোহাম্মদ আলী খান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুস সামাদ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. কাকলী মুখোপাধ্যায়, ডেইলী স্টারের সাহিত্য সম্পাদক ইমরান মাহফুজ, ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি প্রফেসর আলতাফ হোসেন, জুলাই যোদ্ধা ইমরান মাহফুজ সহ লেখক,সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিকগণ।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ অতিথিদেরকে ফুলেল শুভেচছা জানান ফরিদপুর মুসলিম মিশন প্রাক্তন ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন ও সদস্য মোঃ কামাল উদ্দিন মিয়াসহ অন্যান্যরা।


কুমিল্লার গোমতী নদীর সব অবৈধ স্থাপনা ৬ মাসের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ হাইকোর্টের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার গোমতী নদীর দুই তীরে গড়ে ওঠা সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা ছয় (০৬) মাসের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রবিবার (০৩ আগষ্ট) দুপুরে বিচারপতি মজিবুর রহমান ও বিচারপতি বশির উল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ প্রদান করেন।

আদালত আদেশে বলেছেন, গোমতী নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ রক্ষায় যেকোনো ধরনের দখলদারিত্ব কঠোরভাবে দমন করতে হবে। আদালত আরও বলেন, এই নদীর তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং জনস্বার্থের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে।

এই রিটের আবেদনকারী ছিলেন নদী রক্ষা ও পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূইয়া। রিটকারীর পক্ষে শুনানী করেন, সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোর্শেদ।

তিনি বলেন, "গোমতী নদী এখন দখলদারদের দখলে চলে গেছে। নদী চিহ্নিত করে সীমানা নির্ধারণ সত্ত্বেও সেখানে গড়ে ওঠেছে অবৈধ দোকানপাট, স্থাপনা ও বাড়িঘর।

তিনি আরও বলেন, "আদালতের এই রায় শুধু গোমতী নয়, দেশের সব নদী রক্ষায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা আশা করছি প্রশাসন এখন আর দখলদারদের সঙ্গে আপস না করে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করবে।"

আদালতের নির্দেশে, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, অন্যান্য সরকারি দপ্তরগুলোকে এই ছয় মাসের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, আমি এখনো নির্দেশনা হাতে পাইনি। তবে আমরা নিয়মিত ভাবে ই গোমতীর দুই পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চালিয়ে থাকি।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়সার বলেন, আমি রিটকারী আইনজীবীর সাথে কথা বলেছি এবং মহামান্য আদালতকে জানিয়েছি নদীর দুই তীরে সাড়ে পাঁচশোর বেশি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এগুলো উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ব্যয় বাজেট পাঠানো হয়েছে। আমরা অর্থ বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করব।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আমরা ইতিমধ্যে সদর উপজেলার গোমতী নদীর দুই তীরের বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।


কুষ্টিয়ায় ১৫ লক্ষ টাকার জাল ও মাদক উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আতিয়ার রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় পৃথক অভিযানে ১৫ লক্ষ টাকার জাল ও মাদক উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। এসময় মালিকবিহীন অবস্থায় ভারতীয় ৩০০ কেজি অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল, ১০০ গ্রাম হেরোইন এবং ৩০০ পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট আটক করা হয় । রবিবার (৩ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজিবি সূত্র জানান, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মিরপুর উপজেলার কাতলামারী এলাকায় ভোর ৫টার দিকে ব্যাটালিয়ন সদরের বিশেষ টহল দল অভিযান চালিয়ে মালিকবিহীন অবস্থায় ৩০০ কেজি অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল উদ্ধার করে, যার আনুমানিক মূল্য ১২,০০,০০০ টাকা।

এর আগে গত ২ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার জামালপুর এলাকায় মাদক চোরাচালান বিরোধী অভিযান চালিয়ে মালিকবিহীন অবস্থায় ভারতীয় ১০০ গ্রাম হেরোইন এবং ৩০০ পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট আটক করেন বিজিবি। যার আনুমানিক মূল্য- ২,৯০,০০০ টাকা। আটককৃত মাদক ও জালের সর্বমোট মূল্য- ১৪,৯০,০০০ টাকা।

আটককৃত এসকল অবৈধ জাল এবং মাদকদ্রব্য ধ্বংসের জন্য ব্যাটালিয়ন মাদক স্টোরে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান বিজিবি সূত্র।

কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি’র) অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ মাহবুব মুর্শেদ রহমান পিএসসি বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং মাদক পাচারসহ সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে ৪৭ বিজিবি। ভবিষ্যতেও এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।


পরমাণু বিজ্ঞানী শমশের আলীর মৃত্যুতে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার শোকপ্রকাশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সচিবালয় প্রতিবেদক

পরমাণু বিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ড. এম শমশের আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম।

এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহ আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে পরমাণু বিজ্ঞানী শমশের আলীর অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তাঁর মৃত্যু দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।

উল্লেখ্য, পরমাণু বিজ্ঞানী শমশের আলী শনিবার (২রা আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।


ভরা মৌসুমে ইলিশের আকাল,চিন্তিত লক্ষাধিক জেলে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
 মাহবুবুর রহমান,নোয়াখালী

বর্ষার ভরা মৌসুমে মিলছেনা ইলিশের দেখা। শুন্য হাতে ফিরছে জেলে নৌকা গুলো। ফলে মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা হাতিয়ার লক্ষাধিক জেলে পরিবারকে। চোখে মূখে হতাশা ও চিন্তার ছাপ। জেলে, শ্রমিক, ব্যাপারী ও আড়ৎদার সবার একই অবস্থা।

হাতিয়া উপজেলায় নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজারের মতো জেলে রয়েছে। যাদের জীবিকা সরাসরি জড়িত মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা ও বিক্রির সাথে। এই জেলেদের মধ্যে প্রায় ৮০% ভাগ নির্ভর করে শুধুমাত্র ইলিশের মৌসুমের উপর। অথচ চলতি মৌসুমে জেলেরা বলছেন, মাছ ধরতে গিয়ে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে।

এপ্রিল থেকে আগষ্ট পর্যন্ত ইলিশের ভরা মৌসুম। এসময় জেলেরা পুরোপুরি ভাবে ব্যাস্ত সময় পার করে ইলিশ শিকারে। প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে ব্যাস্ত সময় পার করছে। নিঝুমদ্বীপ, বন্দরটিলা, সুইজের ঘাট, মোক্তারিয়া, দানারদোল, সূর্যমূখী, কাজিরবাজার বাংলাবাজার ও চেয়ারম্যানঘাট সহ দ্বীপের বড় ২০ টি ঘাটের ছোট বড় প্রায় ১০ হাজার জেলে নৌকা নদীতে বিচরণ করছে। কিন্তু হতাশার বিষয় হলো জেলেদের জালে মিলছে না কাংখিত ইলিশ। প্রতিদিনই শুন্য হাতে ঘাটে ফিরতে হচ্ছে তাদের। মৌসুমের বেশিরভাগ সময় ফেরিয়ে গেলেও এখনো লাভের মুখ দেখেনি তারা। অন্যদিকে নদীতে যেতে প্রতিদিনই যে ব্যয় হচ্ছে তাতে আর্থিক দেনার পরিমান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকে পরিবারের দৈনন্দিন ব্যয় মিটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। ঘাট গুলোতে হাঁকডাক নেই, দেখা দিয়েছে নিরব নিস্তব্দতা ও হতাশা।

সরেজমিনে উপজেলার সূর্যমূখী ঘাটে গিয়ে দেখাযায়, দক্ষিন পাশে খাল পাড়ে বসে আছেন করিম মাঝি (৫৮) নামে এক জেলে। কুশল বিনিময়ের এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।মূখের দাড়ি বেয়ে পড়তে থাকে চোখের পানি। করিম মাঝি বলেন, সিজনের শুরুতে ধার দেনা করে নদীতে নামি। যা মাছ পাই তা বিক্রি করে তেল খরচও মিটাতে পারিনা। এজন্য গত চারদিন নদীতে না গিয়ে ঘাটে বেকার বসে আছি। প্রতি সপ্তাহে এনজিও থেকে কিস্তির জন্য লোকজন আসেন। পরিবারের খরচ চলেনা। সমুদ্রে মাছ নেই চুলায় আগুন নেই।

করিম মাঝির মত অনেকে খাল পাড়ে দাড়িয়ে থেকে বসে সময় কাটাচ্ছেন। সবার মূখে হতাশার চাপ। কথা হয় সূর্যমূখী ঘাটের আব্দুর রব মাঝির সাথে । তিনি জানান, তার ইঞ্জিন চালিত নৌকায় ৮জন লোক কাজ করেন। গত দুই মাসে একটাকাও ভাগে পায়নি কেউ। একদিকে নৌকার খরচ অন্যদিকে সংসারের ব্যয় । সবমিলে দু মাসে একলাখ ৫০ হাজার টাকা দেনার মধ্যে পড়ে আছেন। এর মধ্যে দুজন লোক কাউকে না বলে গোপনে চট্রগ্রাম চলে গেছেন। এখন নৌকাটি ঘাটে পড়ে আছে। লোকের অভাবে নদীতে যেতে পারছেন না। তিনি আরো জানান, এই ঘাটে স্থানীয় ও বাহিরের মিলে ৫ শতাধিক ট্রলার রয়েছে। সব মিলে ৩০-৪০ টি ট্রলার নদীতে যায়। অন্যরা সবাই ঘাটে বেকার সময় পার করছে। মাছ না থাকায় কেউ এখন নদীতে যায়না।

সূযমূখী মাছ ঘাটের শ্রমিক সর্দার নুর ইসলাম জানান, তার অধিনে এই ঘাটে ৮৫ জন শ্রমিক কাজ করে। খালে কোন নৌকা বা ট্রলার এলে তারা টুরকিতে করে সেই মাছ ডাকের বাক্সে এনে দেয়। প্রতিদিন যে টাকা পায় তা ভাগ করে নেয়। এই বছর প্রথম থেকে মাছ নেই নদীতে। প্রতিদিন কাজ শেষে ভাগে ৩০-৪০ টাকা করে পায় শ্রমিকরা। এতে নিজেদের চা নাস্তাও হয় না। সংসার চালাতে হয় দেনা করে।

সূর্যমূখী ঘাটের মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক মো: ফয়েজুর রহমান নান্টু বলেন, ৯৩ সাল থেকে মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত। এই বছরের মতো এতো কঠিন অবস্থা আর কখনো দেখিনি। মৌসুমের প্রথম থেকে মাছ নেই। অনেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে অন্যত্র চলে গেছে। ঘাটে পড়ে থাকা অসংখ্য জেলে নৌকার জেলেরা পালিয়ে গেছে। ঘাটে সবার মূখে হতাশা। একধরনের নিরব হাহাকার চলেছে জেলে পল্লী ও মাছ ঘাটে। তিনি আরো বলেন, শুধু সূর্যমূখী ঘাটে নয় একই অবস্থা হাতিয়ার ২০টি ঘাটে। মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত সবাই অনেকটা দেউলিয়া হয়ে পড়েছে।

এছাড়াও জেলেদের অভিযোগ , বরাদ্দকৃত প্রণোদনা ও চাল বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়ম রয়েছে। প্রকৃত জেলেরা বঞ্চিত হচ্ছেন সহায়তা থেকে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান দৈনিক বাংলাকে বলেন, 'এখনতো আমাবস্যা চলতেছে,এখন আগের তুলনায় মাছ পাওয়া যাচ্ছে। জেলেরা যদি বলে মাছ পায়না এটা ঠিক না। আমিতো এখানে একবছর যাবৎ চাকুরী করি, জেলেরা সবসময় বলে মাছ পায়না। অনেকের লাভ লোকসানের বিষয় থাকতেই পারে। এটাতো নদীর মাছ চাষের না, এখানেতো আর পুরোপুরি হাত নাই।'

তিনি ভরা মৌসুমে ইলিশ না পাওয়ার কারন হিসাবে জাটকা নিধন, মা ইলিশ ধরা ছাড়াও ডুবো চর, জলবায়ুর পরিবর্তন। এছাড়াও উপকূলীয় এলাকায় কলকারখানার বর্জ্য নদীতে আসাতে মাছের বিচরণ অনিরাপদ হয়ে উঠছে বলে উল্লেখ করেন ।

নোয়াখালী জেলা মৎস কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ' আমি গত পরশু চেয়ারম্যানঘাট, নিঝুম দ্বীপ ও সূর্যমুখী ঘাটে গিয়েছি। জেলেরা ইলিশ পাচ্ছে তবে তাদের আশানুরূপ পাচ্ছেনা। ইলিশ পরিপূর্ণভাবে আসে আগষ্টের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরে। আশাকরি সামনের এসময়ে তারা পর্যাপ্ত ইলিশ ধরতে পারবে।'


হাটহাজারীতে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাবলু দাশ,হাটহাজারী( চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সালিশি বৈঠকে ফখরুল ইসলাম (৫৮) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে । এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা পুলিশ নুর আলম (৪২) ও মো.মুসলিম (৪৫) নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে।

শুক্রবার দিবাগত রাতে হাটহাজারী থানাধীন ১নং চসিকস্থ সন্দীপ কলোনির আমতলী এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ফখরুল ইসলাম উল্লেখিত এলাকার ফয়জল মাওলার পুত্র।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মাসের ২৭ জুলাই স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে উল্লেখিত এলাকার জান্নাতুল মায়মুনা রুমিকে ওই এলাকার রিফাত ও তার সহযোগী জাহিদ,বাদল,রিপন,আব্দুর রহমান জোরপূর্বক তুলে নিয়ে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নিয়ে যায়। পরে সেখানে রিফাত জোরপূর্বক তাকে বিয়ের রেজিস্টারে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এদিকে ভিক্টিমের পরিবার জান্নাতুল মাইমুনা রুমিকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ঘটনারদিন রাতেই হাটহাজারী মডেল থানায় জিডি করেন। এরপর হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ নোয়াখালীর সুবর্ণচর থেকে সেখানকার থানা পুলিশের সহযোগিতায় জান্নাতুল মাইমুনা রুমিকে উদ্ধার করে হাটহাজারী এনে তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। পরে শুক্রবার রাতে ছেলে মেয়ে উভয় পক্ষ একটি সমাধানের জন্য সন্দীপ কলোনীর আমতলী এলাকায় সালিশে বৈঠকে বসে। সেখানে এলাকার সমাজ প্রতিনিধি মেয়ের কাছ থেকে ঘটনা সম্পর্কে জানার সময় ছেলে পক্ষ এবং মেয়ে পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ লেগে যায়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে মেয়ের বাবা ফখরুল ইসলামের উপর হামলা চালালে তিনি অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাটহাজারী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ইমরান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।


banner close