মিয়ানমারের চরমপন্থি সশস্ত্র সংগঠন আরসার আগের নাম ছিল আল ইয়াকিন বা ইসলামি সংগঠন। রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিয়ে কাজ করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। ২০১৩ সালের দিকে সংগঠনের নাম পাল্টে রাখা হয় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা, যদিও দলের একাংশ এখনো আল ইয়াকিন নামেই পুরোনো সংগঠনকে আকড়ে ধরে আছে। আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি সেসময়ে হন স্যালভেশন আর্মির (আরসা) কমান্ডার ইন চিফ। এই আতাউল্লাহর জন্ম সৌদি আরবে, তার বাবা-মা আরাকান থেকে গিয়ে সৌদি আরবে স্থায়ী হন। কিন্তু জন্ম সৌদি আরবে হলেও আতাউল্লাহ পরে পাকিস্তানের করাচিতে এসে বসবাস করতেন।
রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় করতে ঠিক কবে মিয়ানমারে তিনি ফিরে আসেন, তা জানা যায় না। তবে তা ২০১৩ সালের আগেই অর্থাৎ আল ইয়াকিন থেকে আরসার যাত্রা শুরুর আগেই হয়েছে, তা নিশ্চিত। সংগঠনটি সশস্ত্র হয়ে উঠেছে, তা প্রথম বোঝা যায় ২০১৫-১৬ সালের দিকে। লক্ষ্য ছিল, মিয়ানমারের মুসলিম অধ্যুষিত আরাকান প্রদেশ দখল। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি মিয়ানমারের থানায় হামলা, পুলিশের অস্ত্র লুটের ঘটনার পর সংগঠনটির বিরুদ্ধে প্রথম মনোযোগ দেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তবে ওই বছরেই আগস্টে তার নির্দেশে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে আরকান দখল ও অস্ত্র লুট করার জন্য আবার হামলা চালায় আরসা। এ ঘটনায় ভীষণ ক্ষুব্ধ সেনাবাহিনী আরসা নির্মূলের উদ্দেশে আরকান প্রদেশে হামলা শুরু করে। তখন উত্তপ্ত হয়ে পড়ে মিয়ানমারে মুসলমানদের গ্রামগুলোর পরিস্থিতি। ওই দেশের সেনাবাহিনী ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে চড়াও হয়ে অভিযান ও রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন, হামলা ও গণধর্ষণের ঘটনা শুরুর পর নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। সম্পূর্ণ মানবিক কারণে তাদের তখন আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ সরকার। আর বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আরসার সদস্যদের সম্পর্কে তথ্য না থাকার সুযোগে এসব রোহিঙ্গার সঙ্গে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশে চলে আসে আরসার কিছু সদস্য আর সমর্থকও।
উদ্দেশ্য তাদের মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করা হলেও অস্ত্র তৈরি ও সংগ্রহ, বাহিনীর জন্য সদস্য সংগ্রহ, সদস্যদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া ইত্যাদি কাজে তারা তখন থেকেই গোপনে বাংলাদেশের পাহাড়ি নির্জন এলাকাগুলো ব্যবহার শুরু করে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলোতে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে তারা সেগুলোতে আধিপত্য বিস্তার শুরু করে। রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির সর্দার বা মাঝিদের করায়ত্ত করা বা ভয় দেখানো দিয়েই এর শুরু। একই সঙ্গে নিজেদের অর্থভাণ্ডার ঠিক রাখতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের অরক্ষিত সীমান্ত অঞ্চলকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে এদেশে মাদক চোরাচালান আরও বাড়িয়ে দেয়।
শুরুতে আরসা সম্পর্কে অন্ধকারে থাকলেও দিনের পর দিন রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলোতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে হামলা, গুলি, হত্যার ঘটনা বাড়তে থাকায় এবং বিপুল পরিমাণ মাদকসহ রোহিঙ্গা ও তাদের প্ররোচনায় স্থানীয়দের আটক বা গ্রেপ্তাদের মধ্য দিয়ে এই চরমপন্থি সংগঠন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে শুরু করে বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। র্যাব, এপিবিএন আরসা দমনে কঠোর অভিযান চালাচ্ছে মাঝেমধ্যেই। তার পরও তাদের গোপন তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়া এবং বেশির ভাগ রোহিঙ্গা সশস্ত্র যুদ্ধে জড়িত হতে না চাওয়ায় আরসার নেতাসহ সদস্যরা বরাবরই আছে উৎকণ্ঠায়। রোহিঙ্গাদের মধ্যে আরসা ছাড়াও আছে আরও কিছু সশস্ত্র গ্রুপ। তবে তারা পরস্পর যেন পরস্পরের শত্রু। আরাকানে যে বিদ্রোহী সশস্ত্র গ্রুপ আরাকানের স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র লড়াই করে যাচ্ছে, আরাকান আর্মি, ওদের সঙ্গেও এসব গ্রুপের শত্রুতা রয়েছে। আরাকান আর্মি সাধারণভাবে সব আরাকানির জন্যে স্বাধীন আরাকান চায়, কিন্তু আরসাকে ওরা চিহ্নিত করে মুসলিম সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে। সব মিলিয়ে অস্থির হয়ে উঠছে রোহিঙ্গা শিবির।
আরসার শীর্ষ নেতা অলি আকিজ দীর্ঘদিন মিয়ানমারে আত্মগোপনে থাকলেও গত ১৯ মে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফিরেছেন। আরসার শীর্ষ কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি এবং সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ওস্তাদ খালেদের নির্দেশে ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারের নতুন পরিকল্পনা নিয়ে অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গ্রুপ আরসার প্রশিক্ষণ। অস্ত্র তৈরি, আত্মগোপন, মিটিংসহ নানা কর্মকাণ্ড সেখানে সংগঠিত হতো। গত রোববার মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে ক্যাম্প-৪-এ গোপন বৈঠক থেকে আকিজসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশীয় তৈরি এলজি, একটি ওয়ানশুটার গান, ১০ রাউন্ড কার্তুজ, দুই কেজি বিস্ফোরকদ্রব্য, তিনটি মোবাইল এবং নগদ ২ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়।
র্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত ১১২ জনের ওপরে আরসার ভিন্ন পদবিধারী নেতা গ্রেপ্তার করেছি। গত রোববারের আরসার শীর্ষ নেতা আকিজসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করি। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
২০১৭ সালে সীমান্ত পার হয়ে ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসে ক্যাম্প-৫-এ সপরিবারে বসবাস শুরু করেন মৌলভী আকিজ। পরে আরসার হয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর ক্যাম্প-৫-এ আরসার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান। নেটওয়ার্ক গ্রুপে কাজ করতেন। ক্যাম্পের বিভিন্ন তথ্য আরসা কমান্ডারদের কাছে পৌঁছে দিতেন। এভাবে শীর্ষ নেতৃত্বে পৌঁছান। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পক্ষে কাজ করায় ওস্তাদ খালেদের নির্দেশে রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন আকিজ। তা ছাড়া মতাদর্শিক দ্বন্দ্বে ক্যাম্পে সেভেন মার্ডারে সরাসরি অংশ নেন। তাদের নেতা-কর্মী আটক হলে কিছুটা দুর্বল হয়ে যায় কিন্তু আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশাল এই জনগোষ্ঠীতে আরসা, আল-ইয়াকিনসহ অন্তত ১৫টি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সক্রিয়। ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয় বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ৩০০ জন নিহত হয়েছে। মামলা হয়েছে পাঁচ হাজারের অধিক। এসব মামলার বেশির ভাগই হয়েছে মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে।
রোহিঙ্গা নেতা ড. জোবায়ের বলেন, আরসা রোহিঙ্গা ক্যাম্প দখল করে রাজত্ব কায়েম করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত তাদের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী আটক হয়েছেন। আটক করলেও তারা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে, তার কারণ তাদের রোহিঙ্গা সরকার মদদ দিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যাবাসন বন্ধ রাখার জন্য মিয়ানমার সরকার তাদের ব্যবহার করে যাচ্ছে, যে কারণে তারা এতটা শক্তিশালী।
গত রোববার রাতে উখিয়ার মধুরছড়া ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আরসার শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে। সে জায়গায় ভোরে ৪০-৪৫ জন আরসা সন্ত্রাসী পাহাড় থেকে সীমানার কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে ৪ নম্বর ক্যাম্পে আসে। ঘটনাস্থলে এসে ক্যাম্পে পাহারারত রোহিঙ্গা ইলিয়াছকে তারা গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাতে, পায়ে ও তলপেটে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এতে ইলিয়াস ঘটনাস্থলেই মারা যান।
১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে এপিবিএন সদস্যদেরও লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন করে সংগঠিত এবং নাশকতা করার চেষ্টা করছে আরসা। মূলত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালায় আরসা সন্ত্রাসীরা। এতে তারা গুলি এবং কুপিয়ে তিন রোহিঙ্গাকে হত্যা করে। আর গুরুতর আহত হয় সাতজন। হতাহতরা আরএসও সদস্য বলে জানা গেছে।
রোহিঙ্গা গবেষক অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় করতে আরসা ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের দিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালায়। কিন্তু এটার কারণে নির্যাতনের তীব্রতায় নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা। সে কারণে আরসা রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব হয়ে উঠতে পারে নাই। বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, রোহিঙ্গাদের এ দুর্দশার জন্য আরসা দায়ী। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আরসার একটা বড় গ্রুপ বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশে ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের অবস্থান ধরে রাখার জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে এবং যখন কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার চেষ্টা করেছে তখন তারা তাদের দমন করেছে। এর মধ্যে একজন ছিলেন মুহিব উল্লাহ। মুহিব উল্লাহ যখন রোহিঙ্গাদের নেতা হয়ে ওঠে বিশ্বের কাছে পরিচিত হন এবং আন্তর্জাতিকভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য আন্দোলন করেন তখন তাকে নেতা হিসেবে গ্রহণ করে রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশ যখন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করে তখন রোহিঙ্গাদের রাজি করানোর জন্য মুহিব উল্লাহ সোর্স ছিল। ধীরে ধীরে মুহিব উল্লাহ প্রধান পাঁচ রোহিঙ্গা নেতার একজন হয়ে ওঠেন। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ৩ থেকে ৫ লাখ রোহিঙ্গার মহাসমাবেশ করে তাক লাগিয়ে দেন এবং আনন্দে আত্মহারা করে দেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে লেগে থাকা বিদেশি এনজিওগুলোকে। এসব কারণে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ভেঙে দেওয়ার জন্য মুহিব উল্লাহকে হত্যা করা হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শত্রু হচ্ছে আরাকান আর্মি। আরাকান আর্মির শত্রু হচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। আবার মিয়ানমারের শত্রুও আরসা। মিয়ানমার নৌবাহিনী ঘোষণা দিয়ে বলছে আরকান আর্মি ও আরসা মিলে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু মিয়ানমার আরাকানে আরকান আর্মি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। সে কারণে আরসা ও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে ড. রাহমান নাসির বলেন, দুই শতাধিক আরসার নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার করাতেই আরসা দুর্বল হয়ে পড়েছে এমন যুক্তি হয়তো সঠিক নয়। এই চরমপন্থি দলে আরও অনেক সদস্য ও সমর্থক রয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ তাদের আধিপত্য বিস্তার করার জন্য এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে থাকে। আগুন নাশকতা এসব মাঝেমধ্যে বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু ঘটনা আমরা সন্দেহ করি এগুলো নাশকতা। আমরা আরসা বলে কিছু পাইনি। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী গ্রুপ আছে। যারা উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে জড়াবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সমন্বিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
রোহিঙ্গা ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা খিন মং বলেন, রোহিঙ্গাদের অধিকারের জন্য লড়াই করার দাবি করেছিল আরসা। তখন তাদের বিশ্বাস করেছিল রোহিঙ্গারা। কিন্তু এখন সাধারণ রোহিঙ্গারাও মনে করে আরসা মিয়ানমারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। যারা প্রত্যাবাসনের কথা বলছেন তাদের হত্যা করা হচ্ছে। তাই আরসার ওপর তাদের আর বিশ্বাস নেই।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ উপস্থিত সকলের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যে গতিতে এগোচ্ছে আরও গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই। আমি সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যাবতীয় সেবা দরিদ্র, দুঃস্থ, অসহায়, অসচ্ছল মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে সকলের সহযোগিতা চাই। এজন্য আমরা সবাই একসাথে কাজ করবো।
তিনি আজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
নতুন সচিব বলেন,
আমি এই মন্ত্রণালয়ের সুনাম কাজের মাধ্যমে, আইন কানুন মেনে মানুষের সেবা দ্রুত নিশ্চিত করতে আপনাদের সহযোগিতা চাই। তিনি বলেন, সচিবের রুম আপনাদের জন্য সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে এবং ফাইল দ্রুত নিষ্পত্তি করে কাজের যথার্থতা নিশ্চিত করবেন। আপনারা নির্ভয়ে কাজ করবেন, আমার সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আমিও আপনাদের থেকে শিখতে চাই এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ফেনীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ'র আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে পুনরায় ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে না। ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ কমবে, সংলাপের সংস্কৃতি গড়ে উঠবে ও প্রতিটি ভোটারের ভোট কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হবে। ফলে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠাও সম্ভব হবে।
বুধবার (২০ আগষ্ট) বিকেলে ফেনী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেনী জেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা গাজী এনামুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ফেনীতে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নুরুল করিম আকরাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ইসলাম, কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি প্রকৌশলী আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আল মোবারক, ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা একরামুল হক ভূঁইয়া, ফেনী-৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাইফ উদ্দিন শিপন, জেলা জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নান ও জেলা হেফাজতের সেক্রেটারী মাওলানা ওমর ফারুক।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরের পতিত ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত ছোঁয়া এখনও দেশকে অস্থিতিশীল করে রেখেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণের সময় শিষ্টাচার মানা জরুরি, কারণ কোনো অবস্থাতেই ফ্যাসিবাদকে ফের সুযোগ দেওয়া যাবে না। প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি আরো বলেন, ৫ আগস্টের পর রাষ্ট্র কাঠামো ও আইনী সংস্কারের কিছুটা অগ্রগতি হলেও রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আসেনি। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, এমনকি রাজনৈতিক পরিচয়ে ধর্ষণের মতো অপরাধও বেড়েছে। মিডফোর্ট হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জনতার স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হলেও তা রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে আড়াল করা হয়েছে। এসব অপরাধের সাথে বিএনপির সম্পৃক্ততা ও তাদের দলীয়দের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত তা প্রমাণিত হয়েছে। তাই বিএনপিকে এর দায় নিতে হবে। বিএনপির ভেতরের অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।জুলাই বিপ্লব ছিল নতুন বাংলাদেশ আবিষ্কারের সূচনা। বিপ্লবীদের শ্লোগান ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক বাক্সে ব্যালেটের মাধ্যমে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবো ইনশাআল্লাহ।
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের কাউটাইল এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীর দখল করে নির্মিত সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বাংলোবাড়ি উচ্ছেদ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ। বুধবার সকালে নদীর জায়গা দখলমুক্ত করতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান নদীর জমি দখল করে অবৈধভাবে বাংলোবাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিল যা দীর্ঘদিন ধরে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছিল।
অভিযানে তিনটি ভবন টং ঘর এবং বিভিন্ন গাছপালা উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ, র্যাব-১০, ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার সদস্যরা সহায়তা করে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টও পরিচালিত হয়।
বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন নদী রক্ষায় নিয়মিত এ ধরনের উচ্ছেদ অভিযান চলবে। প্রভাবশালী বা পরিচিতি কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আলোচিত স্যুটার মান্নান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জুয়েল প্রধানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেল পাঁচটায় যশোরের বেনাপোল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা যায়।
আটক জুয়েল প্রধান (৩৫) গজারিয়া উপজেলার ষোলআনী গ্রামের শহীদুল্লাহ প্রধানের ছেলে।
খবর নিয়ে জানা যায়, স্যুটার মান্নান হত্যাকাণ্ডের পরও জুয়েল এলাকায় অবস্থান করছিল। এলাকার অবস্থান করে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে এমন খবরের ভিত্তিতে ০৯ আগস্ট ভোর ছয়টার দিকে ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনীতে জুয়েলের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় জুয়েলসহ কয়েকজন পালিয়ে গেলেও পাঁচ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি পিস্তলসহ শাহ আজিজুর রহমান পলাশ নামে জুয়েলের এক সহযোগী আটক হয়। এ ঘটনার পর থেকে জুয়েলকে গ্রপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো পুলিশ। সর্বশেষ বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেল পাঁচটায় যশোরের বেনাপোল থেকে তাকে আটক করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ' বিকাল পাঁচটার দিকে আমি খবরটি পাই। আটকের পর তাকে গজারিয়া থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে'।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দুদকের তৃতীয় দফায় অভিযানে খাবারে অনিয়ম, ঔষধে ঘাটতি, রোগীদের চিকিৎসা অবহেলা, নোংরা পরিবেশ সহ বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা মিলেছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) সকাল ১১ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দুর্ণীতি দমণ কমিশন ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে।
দুর্ণীতি দমণ কমিশন ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ মুস্তাফিজ বলেন, রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রদানে হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুর কর্তৃক একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে হাসপাতালের বহি:বিভাগ, জরুরি বিভাগ, সার্জারি বিভাগসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং রোগীদের খাবারের মান পরিদর্শন করা হয়। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা ও রোগীদের সাথে আলাপচারিতায় প্রতীয়মান হয় যে, হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা প্রকট। রোগীর তুলনায় চিকিৎসকের সংকটও অত্যন্ত দৃশ্যমান। হাসপাতালের ওয়াশরুমগুলো অপরিচ্ছন্ন এবং ভর্তি রোগীদের সকলকে নিয়মিত খাবার সরবরাহ করা হয় না মর্মে টিম পরিলক্ষিত করে। অভিযানকালে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে জরুরি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক কর্তব্যরত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা, হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও খাবারের মান উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করে এনফোর্সমেন্ট টিম। অভিযানকালে খাবারে অনিয়ম, ঔষধে ঘাটতি, রোগীদের চিকিৎসা অবহেলা, নোংরা পরিবেশ সহ বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যায়। প্রাপ্ত তথ্যাবলির প্রেক্ষিতে টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
তিনি আরও বলেন, অভিযানচালে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. এসএম আব্দুল হান্নান কাঙ্খিত সহযোগিতা করেনি। তিনি অভিযান চলাকালে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান।
অভিযানে সহযোগিতা করেন, দুর্ণীতি দমন কমিশন ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক কামরুল হাসান, সহকারী পরিদর্শক শামীম।
অভিযান চলাকালে রাজবাড়ী জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের একটি টিম হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। তারা দীর্ঘ সময় তত্বাবধায়কের অফিসে বসে থাকলেও তাকে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব তুহিনুর রহমান বলেন, আমরা জেলা, সদর ও পৌর স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতারা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে হাসপাতাল পরিদর্শন করি। চিকিৎসায় অবহেলা, নোংরা পরিবেশ, দালালদের দৌরাত্ব সহ নানা অনিয়ম পাই। বিষয়টি তত্বাবধায়ককে অবগত করতে ও সেবার মান বাড়াতে কথা বলতে গেলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না।
ফের ৬ ইঞ্চি করে ছাড়া হলো রাঙামাটির কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের (কপাবিকে) ১৬ টি জলকপাট। বিষয়টি নিশ্চিত করে কপাবিকে এর ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বলেন, হঠাৎ করে গত কয়েকদিন ধরে কাপ্তাই লেকের তীরবর্তী অঞ্চলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় মুহূর্তে মুহূর্তে লেকের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় অথাৎ বিপদ সীমার উপর অতিক্রম করায় ফের দ্বিতীয় বারের মতো আজ বুধবার (২০ আগস্ট) রাত ৮ টার কিছু সময় পর কেন্দ্রের ১৬ টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে করে কাপ্তাই লেক হতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে। তিনি আরোও জানান বুধবার ( ২০ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭ টায় কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা ছিল ১০৮. ৩৫ ফুট মীনস সি লেভেল। লেকে পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট মীনস সি লেভেল।
প্রসঙ্গত: রাঙামাটির কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা বীপদ সীমার উপর অতিক্রম করায় অথাৎ ১০৯ ফুটের প্রায় কাছাকাছি চলে আসায় চলতি মাসের গত ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২ টা ৫ মিনিটে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের( কপাবিকে) ১৬ টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ড ৯ হাজার কিউসেক পানি কাপ্তাই লেক হতে কর্ণফুলি নদীতে নিষ্কাশন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় উজান হতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লেকের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় এরপর কেন্দ্রের জলকপাট দেড় ফুট, পরবর্তীতে আড়াই ফুট এবং সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ ফুট পর্যন্ত করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। অবশেষে পানি ছাড়ার ৭ দিন পর লেকে পানির উচ্চতা কমে আসায় গত ১২ আগস্ট সকাল ৯ টায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল রাঙামাটির কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১৬ টি জলকপাট।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাদখানা ইউনিয়নে গাঁজা সেবনের সময় গাঁজাসহ ৩ জনকে আটক করে প্রত্যেককে ১৫ দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫শত টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রীতম সাহা এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, চাঁদখানা ইউনিয়নের কেল্লাবাড়ী হাট সংলগ্ন ক্যানেলের পাশে তিন ব্যাক্তি মাদক (গাঁজা) সেবন করছেন-এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী আটককৃত প্রত্যেককে ১৫ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০/- করে অর্থদণ্ড প্রদান করে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বগুলাগাড়ী বাবুপাড়া গ্রামের আইনাল চন্দ্র রায়ের ছেলে শ্রী জীবন রায় (২৫), কেল্ল্যাবাড়ী গ্রামের শ্রী কালিচরনের ছেলে শ্রী সুজন রবিদাস (২২) কাটগাড়ী গ্রামের রমজান আলীর ছেলে নবাব (২০)।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, গাঁজা সেবনের অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ৩ ব্যক্তিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা থানায় হস্তান্তর করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোজাম্মেল (২৩) নামে এক যুবককে তার বন্ধু কাউসার নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ২০ আগস্ট সকালে নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নস্থ হাজীপুর গ্রামের মদিনা ওয়ার্কশপের সন্নিকটে। নিহতের স্ত্রী আমেনা বেগম জানায় তার স্বামী নরসিংদী শহরের সিএন্ডবি রোডস্থ একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করতো। তার বন্ধু কাউসার পাশের দোকানে চাকরি করতো। ঘটনার আগের দিন মঙ্গলবার রাতে দুই বন্ধু খাবার খেতে বসে একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে দেয়। পানি ছিটিয়ে দেওয়ার কারনে কাউসার এর মোবাইল ফোন নষ্ট হয়ে যায়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। পরে কাউসার মোজাম্মেলকে দেখে নিবে বলে হুমকি দেয়। এরই জের হিসেবে বুধবার সকাল ১১টায় মোজাম্মেল তার বাসা থেকে দোকানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। পথে কাউসার ও তার অপর বন্ধু রাকিব মোজাম্মেলকে ডেকে উল্লেখিত স্থানে নিয়ে গিয়ে দা দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে মারাত্বক রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে আশপাশের লোকজন মোজাম্মেলকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। নিহত মোজাম্মেল এর বাড়ি রায়পুরা উপজেলার চরসুবুদ্দি ইউনিয়নের বল্লবপুর গ্রামে। তার পিতার নাম মো: চাঁন মিয়া। নরসিংদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমদাদুল হক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চলমান জাতীয় সংকট থেকে উত্তরণের জন্য তওহীদভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা’র প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে হেযবুত তওহীদ।
বুধবার (২০ আগস্ট) সকাল ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সংগঠনটি তাদের প্রস্তাবিত আল্লাহর হুকুমের ভিত্তিতে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তুলে ধরে।
সভার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাহিত্য সম্পাদক রিয়াদুল হাসান। তিনি সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতা হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম রচিত তওহীদভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গ্রন্থের ওপর ভিত্তি করে একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রকাঠামোর ধারণা উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরে সংবিধানে ১৭ বার সংশোধনী আনা হয়েছে, অসংখ্য নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু জাতির মৌলিক সংকটের টেকসই সমাধান হয়নি। কারণ, আমরা মানবরচিত আইন ও জীবনব্যবস্থা দ্বারা পরিচালিত হচ্ছি। এই ব্যবস্থায় শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা আজও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আইন দ্বারা শাসিত হচ্ছি। অথচ অনেকে কোরআনের বিধানকে ১৪০০ বছরের পুরোনো বলে অচল মনে করেন। ব্রিটিশ আইনের অন্ধ অনুসরণে দেশে মামলার জট বাড়ছে, সমাজে বাড়ছে অন্যায়-অবিচার।
তিনি উল্লেখ করেন, ইসলামে আধুনিক গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার সাথে কোনো সাংঘর্ষিকতা নেই। যেমন ইমাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে মুসল্লিদের সমর্থন জরুরি, তেমনি রাষ্ট্র নেতৃত্বও হতে হবে জনগণের সমর্থিত। তিনি আরও বলেন, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি সংসদে গিয়ে আইন প্রণয়ন করে। অথচ বিধানদাতা হতে পারেন একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহকে আংশিক মানা বা মান্য করা শিরক।
সভায় সভাপতিত্ব করেন হেযবুত তওহীদের বরিশাল জেলা সভাপতি লোকমান হোসেন।
বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ, বরিশাল বিভাগীয় সভাপতি শফিকুল আলম উখবাহ, আঞ্চলিক সভাপতি রুহুল আমিন মৃধা, ঢাকা বিভাগের সহ-সভাপতি আল আমিন সবুজ, নারী বিভাগের যুগ্ম সম্পাদক আয়েশা সিদ্দিকা এবং বরিশাল মহানগর সভাপতি নুর মোহাম্মদ আরিফ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থার আলোকে একটি আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই শিক্ষাকে অনুসরণ করেই একটি তওহীদভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্রনীতি, বিচারব্যবস্থা, প্রতিরক্ষা, গণমাধ্যম, নারীর মর্যাদা, আইনসভা এবং সামাজিক সুরক্ষা কার্যকরভাবে গড়ে তোলা সম্ভব।
সভায় উপস্থিত সাংবাদিক, শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন। বক্তারা মনে করেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় আল্লাহর হুকুম অনুসরণ করলেই ন্যায়ভিত্তিক শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
উল্লেখ্য, হেযবুত তওহীদ সারাদেশে সেমিনার, গোলটেবিল বৈঠক, আলোচনা সভা ও মতবিনিময় সভার মাধ্যমে তাদের প্রস্তাবিত রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপরেখা তুলে ধরছে।
কুমিল্লা শহরের আদর্শ সদর উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে এক মানবপাচারকারী ও পাসপোর্টের দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০ আগস্ট মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে কুমিল্লা আদর্শ সদর ক্যাম্পের সেনা টহল দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেপ্তারকৃত মো. সাজেদুল ইসলাম (৩৫) কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার হালিমা নগর নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে ৫২ টি পাসপোর্ট, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ৩টি, বাটন মোবাইল ফোন ১টি উদ্ধার করা হয়।
সাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানবপাচার, পাসপোর্ট জালিয়াতি, চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং অস্ত্র রাখাসহ নানা অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যেই তার বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনী জানায়, অভিযান শেষে গ্রেপ্তারকৃত আসামি ও জব্দকৃত সামগ্রী কুমিল্লা কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
কোতয়ালী থানার ওসি মাহিনুল ইসলাম জানান, সাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগে অপহরণ ও ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে। সেনাবাহিনী বিপুল পরিমান পাসপোর্টসহ তাকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে।
চুয়াডাঙ্গায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ম্যাগনেসিয়াম সার বিক্রি ও মেয়াদ উত্তীর্ণ, মানহীন ও নিন্মমানের শিশু খাদ্য বিক্রির অপরাধে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আজ বুধবার দুপুরে আলমডাঙ্গা উপজেলার আনন্দধাম এলাকায় ওই অভিযান চালানো হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মামুনুল হাসান জানান, আলমডাঙ্গা উপজেলার আনন্দধাম এলাকায় অভিযান চালানো হয়।এ সময় মেয়াদ উত্তীর্ণ ম্যাগনেসিয়াম সার বিক্রির অপরাধে বিসিআইসি সার ডিলার আব্দুল বারীকে ৫০ হাজার টাকা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ, মানহীন ও নিন্মমানের শিশু খাদ্য বিক্রির অপরাধে মেসার্স ফাতেমা স্টোরকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মো. ফয়সল বলেছেন, দেশে নির্বাচনের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন খুব শিগগিরই রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। তবে এবার আর “হাসিনা স্টাইলে” দিনের ভোট রাতে হবে না। এবারের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছর দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এবার জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে। বিএনপি ও ছাত্র জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশ রাহুমুক্ত হয়েছে। যারা বিগত আন্দোলনে দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন তাদের প্রতি তিনি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।
বুধবার সকালে মনতলা শাহজালাল কলেজ মাঠে গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে “এসএম ফয়সল শিক্ষাবৃত্তি” প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অপরূপা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যায়তনের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বাহারের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সায়হাম গ্রুপের উপ-মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন (অব.) লিয়াকত হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন শিক্ষক আবিদুর রহমান ও রুহুল আমিন সোহাগ। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. শাহজাহান, সদ্য সাবেক মেয়র আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মানিক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ, উপজেলা বিএনপি সভাপতি শামছুল ইসলাম কামাল, সহ-সভাপতি চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন চৌধুরী, উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান, সাবেক অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক, পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আলাউদ্দিন আল রনি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, বিএনপি নেতা এডভোকেট নিজাম খান, প্রমুখ।
"পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি" এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও সামাজিক বনায়ন জোনের সহযোগিতায় মাগুরায় ১৪ দিন ব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলা শুরু হয়েছে।
বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালি শেষে কালেক্টরেট ময়দানে ফিতা কেটে বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাগুরা সামাজিক বনায়ন জোনের সহকারী বন সংরক্ষক খন্দকার মোঃ গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলাম, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ শামীম কবির, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ তাজুল ইসলাম।
এ সময় শিক্ষার্থীদের মাঝে ফলজ ও ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করা হয়। মেলায় ১৫টি স্টলে বিভিন্ন ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা বিক্রয় করা হবে।