ঈদে পঞ্চগড়ের বিনোদনের স্থানগুলো থেকে অবৈধ স্থাপনাসমূহ সরিয়ে নিয়ে পর্যটকদের ভ্রমণ স্বাচ্ছন্দময় করতে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সমাজের সচেতন মহল।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষজন ছুটে এসেছেন বাড়িতে। উৎসবের এই আয়োজনকে ঘরে ছুটিকালীন পরিবার-পরিজন নিয়ে জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণ করেন সবাই। কিন্তু একটি সুবিধাভোগী মহল জেলার এসব পর্যটন কেন্দ্রে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করেছে। তারা পর্যটকদের জিন্মি করে প্রতারণাসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় ফেলে। এলোমেলো পার্কিং, রাস্তা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, স্থানীয় ক্লাব সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজি করে সাধারণ মানুষকে করা হয় হয়রানি। বিশেষ করে সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের মহারাজার দিঘি, চাওয়াই অববাহিকা, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো শহরের তুলারডাঙ্গা হিমালয় পার্ক, বোদার টাঙ্গন ব্যারেজ এলাকায় ঘটে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা। ফলে এসব পর্যটন কেন্দ্রে আসতে আগ্রহ হারাচ্ছেন পর্যটকরা।
জেলা নাগরিক কিমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এরশাদ হোসেন সরকার বলেন, ‘দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। প্রকৃতির অপরূপ সাজে সজ্জিত এই সীমান্ত নগরী। অসংখ্য নদনদী, সমতলের চা, মাল্টা, আমের বাগান, মহানন্দর তীরে বসে ভারতীয় সার্চ লাইটের তীর্যক আলোকরশ্মি, বাংলাবান্ধা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের যৌথ প্যারেড, রওশনপুরে কাজী অ্যান্ড কাজীর আনন্দধারাসহ মহানন্দা থেকে নীল নুড়ি পাথর সংগ্রহের অপরুপ সৌন্দর্য দেখার জন্যে ছুটে আসে মানুষ। জেলা সদর থেকে সোজা উত্তরে ১৫ কিলোমিটার দূরে পঞ্চগড় বাংলাবান্ধা জাতীয় মহাসড়ক ঘেঁষে চাওয়াই নদীর পাড়ে ‘৭১ এর মুক্তাঞ্চল’। প্রশাসনের উচিত এসব পর্যটনস্থল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’
মুক্তিযুদ্ধের সময় চাওয়াই নদীর ওপর সেতুটি বিধ্বস্ত করে দেয় মুক্তিবাহিনী। ফলে পাক বাহিনী প্রবেশ করতে পারেনি এ এলাকায়। যুদ্ধের পুরোটা সময় তাই মুক্ত ছিল এ অঞ্চ। স্বাধীনতার পর চাওয়াই এর ওপর নির্মিত হয়েছে নতুন সেতু। চাওয়াই এর অববাহিকায় কংক্রিটের সুন্দর স্থাপনায় তৈরি হয়েছে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। উপজেলা প্রশাসন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এখানে গড়ে তুলেছে শিশুদের জন্যে পার্ক, ভ্রমণকারীদের জন্য নদীর তীর ঘেঁষে বসার ব্যবস্থা, সীমান্ত জেলার নামকরণ ফলক। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত পর্যটকদের পদচারণায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠে এ এলাকা। শীত মৌসুমে এখানে দাঁড়িয়ে সোজা উত্তরে তাকালে চোখে পড়ে সুনীল আকাশ আর হিমালয় দাঁড়িয়ে আছে পাশাপাশি। প্রতি বছর শীত মৌসুমে দেশের নানা স্থান থেকে তেঁতুলিয়ায় ছুটে আসে অসংখ্য পর্যটক। এই অববাহিকায় সড়ক বিভাগের পরিত্যক্ত সড়কের বিশাল অংশে পর্যটকদের জন্য খোলা স্থানে পার্কিংসহ শিশুদের জন্যে খাবার দোকান, খেলনার দোকানসহ নানা স্থাপনা গড়ে উঠেছে। পর্যটকরা স্বচ্ছন্দেই সেই জায়গাটি ব্যবহার করে আসছে। হঠাৎ করেই স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী সেটি দখল করে পুরো জায়গাটিতে স্তূপ করে রেখেছে বালি পাথর। ফলে বিড়ম্বনায় পড়েছে সাধারণ পর্যটকরা।
জেলা সদর থেকে বেড়াতে আসা পুলিশ কর্মকর্তা কাইয়ুম আলী বলেন, ‘শহরের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে মানুষ অবসরে পরিবার-পরিজন নিয়ে চাওয়াই নদীর মুক্ত বাতসে ছুটে আসে। সড়ক বিভাগের পরিত্যাক্ত সড়কের ওপর পার্কিং করে এলাকা ভ্রমণ করে। হঠাৎ করেই কিছু বালি ব্যবসায়ী জায়গাটি দখলে নিয়ে বালি পাথরের স্তূপ করেছে। এতে সমস্যায় পড়েছে সকলে।’
জেলা শহরের ব্যবসায়ী হাজী আকতারুল ইসলাম বলেন, শহরে শিশুদের বিনোদনের কোন জায়গা নেই। চাওয়াই অববাহিকায় মানুষজন পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে আসে। সুন্দর নান্দনিক এই পরিবেশটি এখন অবৈধ বালি ব্যবসায়ীদের দখলে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। স্থানীয় অমরখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘মহানন্দা, করতোয়া, চাওয়াই, ডাহুক, গবরা, তিরনইসহ অসংখ্য ছোট নদ নদীর পানিপ্রবাহ, সমতলের চা বাগান, শুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘা, রুপ লাবণ্যে ভরা টিউলিপ, সীমান্ত নদীর নীল নুড়ি পাথর পর্যটকদের নানা ভাবে বিমোহিত করে আসছে। সামনে ঈদে এখানে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটবে। পরিষদের পক্ষ থেকে এলাকাটি দখলমুক্ত করতে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুলাই আন্দোলনে দেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী জনতাকে হত্যা করেছে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়েছে সরকারের গণহত্যার চিত্র। তাই জুলাই হত্যাকারীদের ফিরিয়ে আনাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) মাগুরায় আন্ত:কলেজ ফুটবল টুর্নামেন্ট এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ১৫ ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হবে ইনশাআল্লাহ, এই নির্বাচন কে বানচাল করতে কোন কনোসপ্রেসি কাজ করবে না।
এ সময় তিনি আরোও বলেন, খালেদা জিয়া এখন শুধু বিএনপি নেত্রী নয় তিনি এখন ন্যাশনাল লিডার হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত। তারেক রহমানের দেশে আসতে সরকারের কোন বাধা নেই, এটি তার এবং তাদের দলের ব্যাপার।
শফিকুল আলম আরো বলেন, আর ৭০ দিনের মতো আমরা আছি এর মধ্যে যদি ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয় তাহলে যারা ক্ষমতায় আসবে তারা ফিরিয়ে আনার কাজ টি অব্যাহত রাখবেন আশা করি।
এ সময় তিনি জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে আখ্যা দেন। বাউল শিল্পীদের উপর হামলাসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন।
যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে মাগুরা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে অনুষ্ঠিত আন্ত: কলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনীতে জেলা ক্রিড়া কর্মকর্তা বিএম এ সাজিন ইসরাত সভাপতিত্ব করেন।
এ খেলায় ৯ টি দল অংশ গ্রহণ করেছে। আগামী ১২ ডিসেম্বর ফাইনাল খেলার মধ্যে দিয়ে আন্ত: কলেজ ফুটবল টুর্নামেন্ট শেষ হবে।
বরিশাল বিসিক শিল্পনগরীর খানসন্স টেক্সটাইল মিলের সুতা তৈরির একটি কারখানায় হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। মুহূর্তেই আগুন কারখানার বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কে দেড় শতাধিক শ্রমিক বাইরে বের হয়ে আসেন।
শ্রমিক আসমা জানান, কারখানার ভেতরে এসি মেরামতের সময় একটি তারে শর্ট সার্কিট হয়। এরপর দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একই অভিযোগ করেন আরেক শ্রমিক নাদিম। তিনি বলেন, দুপুরের বিরতির আগে আগুন লাগে, কিন্তু অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র অচল থাকায় আগুন নেভাতে প্রথমদিকে চরম বেগ পেতে হয়।
খবর পেয়ে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় আধা ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন জানান, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে সময় লাগবে।
কারখানার ম্যানেজার যতীন্দ্রনাথ মিস্ত্রি জানান, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।
মাগুরা সদর উপজেলার কুল্লিয়া গ্রামে সামাজিক দলাদলি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ভোর ৬টার দিকে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষের লোকজন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গুরুতর অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহেল রানা জানান, কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আজহার আলী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সামাজিক আধিপত্যকে কেন্দ্র করেই দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষের বিরোধ চলছিল। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার জের ধরে সকালে বড় ধরনের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ডা. মো. মামুন উর রশীদ বলেন, “গ্রাম্য সামাজিক দলাদলিকে কেন্দ্র করে সকালে প্রায় ৩৫ জন আহত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। তবে কারো শরীরে গুরুতর জখমের চিহ্ন নেই। সবাই চিকিৎসা নিচ্ছেন ও আশঙ্কামুক্ত।”
সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পরিস্থিতি তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আয়ুব আলী জানান, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত পুলিশ পাঠাই। বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের না হলেও তদন্ত চলছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) আট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) রদবদল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) জিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বদলিকৃত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে জিএমপি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসানকে টঙ্গী পূর্ব থানায়, টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন-অর-রশিদকে বাসন থানায়, কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানকে গাছা থানায়, পূবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খালিদ হাসানকে কাশিমপুর থানায়, বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহীন খানকে টঙ্গী পশ্চিম থানায়, গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলামকে সদর থানায়, ডিবি (উত্তর) বিভাগ মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন মাহমুদকে কোনাবাড়ী থানায়, টঙ্গী পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুর রহমানকে পূবাইল থানায়, টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ওহিদুজ্জামানকে ডিবি উত্তর এবং কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিনকে ডিবি দক্ষিণে বদলি করা হয়েছে।
শ্রমিকদের অধিকার ও কর্মস্থলের নিরাপত্তা জোরদার করতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তিনটি কনভেনশন অনুসমর্থন এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তিনটি কনভেনশন একসঙ্গে অনুসমর্থন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্যাপন করলো শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইএলও বাংলাদেশ।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইএলও বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমি স্টেট গেস্ট হাউস ‘সুগন্ধা’ তে এই উদ্যাপন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এ অর্জন কেবল একটি আইনি মাইলফলক নয়-এটি বিশ্বের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা যে আমাদের শ্রমিকদের মর্যাদা, নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।’
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের প্রস্তুতির সময়ে এই সিদ্ধান্তটি কৌশলগত ও দূরদর্শী, যা বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের নৈতিক ও টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে।
উপদেষ্টা জানান, তিনটি কনভেনশনের মধ্যে কনভেনশন নং ১৫৫ (পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য) ও কনভেনশন নং ১৮৭ (পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রচারমূলক কাঠামো) আইএলও’র মৌলিক কনভেনশন। এর সঙ্গে কনভেনশন নং ১৯০ (কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ) অনুসমর্থনের মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে আইএলও’র ১০টি মৌলিক কনভেনশন অনুস্বাক্ষরকারী দেশে পরিণত হয়েছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া কনভেনশন বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে, যাতে শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর মাইকেল মিলার বলেন, বাংলাদেশের তিনটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুসমর্থন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বৃহৎ বাজার তৈরির উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশ বৈশ্বিক বাজারে তার সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে সক্ষম হবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও সহযোগিতার ক্ষেত্রকে সুদৃঢ় করতে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা ইউরোপীয় ইউনিয়ন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে।
তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে উভয় পক্ষের সম্মিলিত উদ্যোগ অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. ম্যাক্স টুনোন এই অনুসমর্থনকে ‘একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ আখ্যায়িত করেন।
উল্লেখ্য, গত ২২ অক্টোবর যমুনা স্টেট গেস্ট হাউসে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে শ্রম উপদেষ্টা তিনটি কনভেনশনের অনুসমর্থনপত্রে স্বাক্ষর করেন।
পরবর্তীতে ২১ নভেম্বর আইএলও’র জেনেভাস্থ সদর দপ্তরে ৩৫৫তম গভর্নিং বডি অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে আইএলও মহাপরিচালকের কাছে অনুস্বাক্ষরের এ দলিল হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিষয়ক অ্যাটাসে লিনা খান, টিসিসির সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সচিব ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশে যখনই ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখনই তরুণরা সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এমন মন্তব্য করেছেন।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত ষষ্ঠ জেসাপ কর্মশালার উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন।
এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের আবাসিক আইন উপদেষ্টা সেরা সেথলিকাই, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. ডেভ ডাওল্যান্ড, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ল-এর সহকারী অধ্যাপক মো. মোস্তফা হোসেন, আন্তর্জাতিক আইন ছাত্র সমিতির (আইএলএসএ) জাতীয় সমন্বয়কারী নূরান চৌধুরী, হার্থ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক পরব নাসের সিদ্দিক এবং জেসাপ বাংলাদেশের জাতীয় প্রশাসক মাইমুনা সৈয়দ আহমেদ।
আইন উপদেষ্টা বলেন, মহান জুলাই অভ্যুত্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তা গর্বের সঙ্গে স্মরণ করছি। তবে এটি নতুন নয়; আমাদের তরুণরা সবসময় দেশে ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিল।
তিনি আরও বলেন, এখানে সমবেত হয়ে তারা প্রমাণ করেছে যে কেবল অধিকার রক্ষায় নয়, বরং আদালত কক্ষে এবং বিশ্ব মঞ্চে ন্যায়বিচারের পক্ষে ওকালতি করতেও সক্ষম।
ড. আসিফ বলেন, এ বছর ৫২টি বিশ্ববিদ্যালয় এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে। আন্তর্জাতিক আইন শেখা এবং বিতর্কের জন্য জাতীয় যে আবেগের প্রতিফলন এটি। জেসাপ বাংলাদেশ এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জেসাপ যোগ্যতা অর্জনকারী প্রতিযোগিতা। এই অর্জন আমাদের শিক্ষার্থী, কোচ, আয়োজক এবং প্রাণবন্ত মুট কোর্ট সমাজের নিষ্ঠার প্রতিফলন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, জেসাপ কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়। এটি কঠোর গবেষণা দক্ষতা, স্পষ্ট লেখা, প্ররোচনামূলক অ্যাডভোকেসি এবং কার্যকর দলবদ্ধতা তৈরি করে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, কর্মশালা তরুণদের দক্ষতা আরও তীক্ষ্ণ করবে এবং ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের অঙ্গীকারকে আরও শক্তিশালী করবে।
জেসাপ বাংলাদেশ এবং ইন্টারন্যাশনাল ল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আইএলএসএ), মার্কিন বিচার বিভাগ, বিদেশি প্রসিকিউটরিয়াল ডেভেলপমেন্ট, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ল এবং হার্থ বাংলাদেশের সহযোগিতায় ‘মে ইট প্লিজ দ্য কোর্ট: দ্য কেস কনসার্নিং দ্য ক্রাফট অফ জেসাপ অ্যাডভোকেসি’ শীর্ষক দুদিনব্যাপী ষষ্ঠ জেসাপ কর্মশালা আয়োজন করেছে।
কর্মশালাটি অ্যাডভোকেসি দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ফিলিপ সি জেসাপ আন্তর্জাতিক আইন মুট কোর্ট প্রতিযোগিতার (জেসাপ) ১০ম বাংলাদেশ যোগ্যতা অর্জনের রাউন্ডে সফলভাবে অংশগ্রহণের জন্যশিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জেসাপ মুটিংকে আন্তর্জাতিক আইন মুট কোর্টের ‘বিশ্বকাপ’ হিসেবে পরিচিত।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের পচাভিটা এলাকার একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় রফিককে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুটি মোটরসাইকেলে আসা কয়েকজন অস্ত্রধারী রফিককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলি করার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় চায়ের দোকানে থাকা লোকজন তাদের ধাওয়া করলে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলেই রফিক ইসলামের মৃত্যু হয়।
নিহত রফিক ইসলাম ওই গ্রামের মতআলী মন্ডলের ছেলে। আহতরা হলেন—একই গ্রামের রবজেল ফরাজি (৫২) ও ইউসুফ হোসেন (৫৫)।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, “দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে রফিক নামের একজন নিহত হয়েছেন এবং দুইজন আহত হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্ত শেষে জানানো হবে।”
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় বাইশ, কুডি চিকুন, চৌত্রিশ, পাইজম ও আমন জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে এসব জাতের ধানের বাম্পার ফলনে মুখরিত হয়েছে গ্রামের মাঠ-ঘাট। সোনালি ধানে ভরে উঠেছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঠ থেকে ধান কেটে ঘরে তোলার ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ধান কাটার পর একই জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদেও নেমে পড়েছেন তারা। কৃষিবিভাগ স্বল্পমেয়াদি ফসল চাষে কৃষকদের উৎসাহ ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
কৃষি অফিসারদের মাধ্যমে জানা গেছে, কুমিল্লা সদর উপজেলার পাচথুবী, আমড়াতলী, দুর্গাপুর উত্তর-দক্ষিণ, কালিরবাজার, জগন্নাতপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রোপা আমন ধানের শোভায় রঙিন হয়ে উঠেছে বিস্তীর্ণ খেত। জেলার মাটি নানা ধরনের ফসল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বিশেষ করে স্বল্পমেয়াদি ফসল চাষ করে অতিরিক্ত লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। দেবিদ্বার, চান্দিনা, দাউদকান্দি, বরুড়া, মুরাদনগর, বুড়িচং, মনোহরগঞ্জ, লাকসাম, মেঘনা, হোমনা, তিতাস, লাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রাম, সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলার হাজার হাজার হেক্টর জমিতে এবার চোখে পড়ার মতো সোনালি ধান পাকার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।
তবে কোথাও কোথাও কৃষকের মুখে উদ্বেগও রয়েছে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশিদলের কৃষক তাজু মেম্বার ও তার ছেলে মাসুদ রানা অপু জানান, ইঁদুরের আক্রমণে তাদের সোনার ফসলের প্রায় অর্ধেক নষ্ট হয়েছে।
স্থানীয় তাজু মেম্বারের জমিতে কাজ করা নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের শ্রমিক সম্রাট, হৃদয়, রাছেল ও তাজুল জানায়, ৩০০ শতকের মধ্যে ২৫০ শতকে বাম্পার ফলন হলেও ৫০ শতক জমির ধান ইঁদুর নষ্ট করে দিয়েছে। তবুও গড়ে লাভ থাকবে বলে তারা আশা করছেন।
প্রতি একরে ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ হলেও বাম্পার ফলন ও ভালো বিক্রয়মূল্য কৃষকদের মুখে হাসি এনেছে।
এই অঞ্চলে এবার রোপা আমন, বাইশ, চৌত্রিশ, কুডি চিকুন ও পাইজম জাতের ধানের চাষ খুব ভালো হয়েছে বলে কৃষকরা জানান।
জেলা কৃষিবিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে বন্যা বা বড় কোনো দুর্যোগ না থাকায় কৃষকরা আমনসহ অন্যান্য জাতের ধানে বাম্পার ফলনের আশায় উজ্জীবিত। ইতোমধ্যে ধানিগোল্ড, সেন্টু পাজাম, ব্রিধান-১০৩, রঞ্জিত, কুডি চিকুন, পাইজম, চৌত্রিশসহ আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা জানাচ্ছেন, প্রতি ৫ শতাংশ জমিতে ৩ মণের বেশি ধান মিলছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশিদল ইউনিয়নের কৃষক তাজু মেম্বার, তার ছেলে অপু, আশরাফ মিয়া, ঈসমাইল, আবুল কাশেম, খালেক ও মানরার রেজাউল জানায়, তারা এ বছর রোপা আমন, পাইজম, কুডি চিকুন ও চৌত্রিশ জাতের ধান চাষ করেছেন। এ জাতের ধান অন্যান্য জাতের তুলনায় ১৫-২০ দিন আগে কাটা যায় এবং ফলনও আশানুরূপ পাওয়া যাচ্ছে- প্রতি ৫ শতাংশে প্রায় ৩ মণ।
হরিমঙ্গল এলাকার কৃষকরাও জানান, আগাম ধান কাটার পরই তারা খেতে সরিষার বীজ বপন করেছেন।
জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘দেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও উদ্বৃত্ত জেলাগুলোর মধ্যে কুমিল্লা অন্যতম। চলতি মৌসুমে জেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১,১৪,৮৩০ হেক্টর; আবাদ হয়েছে ১,১৪,৯৭৫ হেক্টরে।’
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, এ বছর উপজেলায় ৭ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ হাজার হেক্টরের বেশি জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। রোগ-পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় ফলন অত্যন্ত ভালো।
তিনি আরও বলেন, স্বল্পমেয়াদি ধানের আবাদ বেশি হওয়ায় ধান কাটার পর একই জমিতে সরিষা, আলু ও শাকসবজি চাষের সুযোগ পাচ্ছেন কৃষকরা। এতে কৃষকের বাড়তি লাভ যেমন নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি কৃষিতে আসছে বৈচিত্র্য।
বাম্পার ফলনে উচ্ছ্বসিত ব্রাহ্মণপাড়ার কৃষকরা নতুন ফসলের আশায় আবারও মাঠমুখী হয়ে উঠেছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানায়, এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকা, সময়মতো বৃষ্টি এবং আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে ফলন বাড়িয়েছে। অনেক কৃষক জানিয়েছেন, গত বছরের বর্ষার প্লাবনে জমিতে কোনো ধান ছিল না তাই এবার তাদের উৎপাদন তুলনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ। এতে তাদের মনে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
আরেক কৃষক বলেন, এইবার আল্লাহর রহমতে ধানের ফলন বাম্পার হয়েছে। যদি সরকার সহযোগিতা করে আর আমরা ধানের প্রকৃত দাম পাই, তাহলে এই অঞ্চলে কৃষিতে এক নতুন বিপ্লব ঘটবে।
কৃষি বিভাগও মাঠ পর্যায়ে সুখবর নিশ্চিত করেছে। তারা বলছে, সার, বীজ ও পরামর্শ সরবরাহের ফলে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে এবং ফলনও তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তবে কৃষকদের প্রধান দাবি উৎপাদনের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। বাজারে সঠিক দাম না পেলে চাষাবাদের আগ্রহ কমে যাওয়া এবং ঋণের বোঝা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে, স্থানীয় বিজয়পুর বাজারে নতুন ধান উঠতে শুরু করায় আমন মৌসুম ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ধান ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা। ক্রয়-বিক্রয়ের জমজমাট পরিবেশ অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক দুপুরে মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ বাজার এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ অভিযানে তেল, চাউল, বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য, সার-কীটনাশক এবং মুদি দোকানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়।
অভিযানকালে মেসার্স মা কালী স্টোর–এ মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ ও বিক্রয়, সঠিকভাবে মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য রাখা, এবং মেয়াদ ও মূল্যবিহীন পণ্য বিক্রয়সহ বিভিন্ন অপরাধ প্রমাণিত হয়। এ কারণে দোকানটির মালিক অমল কুন্ডুকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৩৭ ও ৪৩ ধারায় ৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
একই ধরনের অপরাধে মেসার্স অনন্ত কুন্ডু অ্যান্ড সন্স–এর মালিক অসীম কুমার কুন্ডুকে আইনটির ৪৩ ও ৫১ ধারায় ৫,০০০ টাকা এবং মেসার্স অমিত স্টোর–এর মালিক অমিত কুন্ডুকে ৩৮ ও ৪৩ ধারায় ৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এতে মোট ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম না করার জন্য সবাইকে সতর্ক করা হয়।
পরবর্তীতে অন্যান্য দোকান ও প্রতিষ্ঠানের তদারকি করা হয়। এ সময় ব্যবসায়ীদের ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয়, মূল্যতালিকা প্রদর্শন, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাদ্যপণ্য সংরক্ষণ এবং ক্রয়-বিক্রয় ভাউচার সংরক্ষণ সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মাগুরা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ।
সার্বিক সহযোগিতা করেন মো. রবিউল ইসলাম, জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা, মাগুরা, এবং মাগুরা জেলা পুলিশের একটি টিম।
শেরপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দাবি আদায়ে শ্রেণিকক্ষের দরজায় তালা ঝুলিয়ে পরীক্ষাবর্জন করেন শিক্ষকরা। বাইরে তখন পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছিল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে শ্রীবরদী উপজেলার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে পরীক্ষার কার্যক্রম চালু করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনীষা আহমেদ। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে পরীক্ষা শুরু করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নূরন নবী অনেকেই।
জানা গেছে, শেরপুর জেলার ৭৪১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গত বুধবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন এবং বৃহস্পতিবারও তা অব্যাহত রেখেছে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা, শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন কার্যকর করা, টাইম স্কেল–সিলেকশন গ্রেড বকেয়া পরিশোধ এবং আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের অগ্রিম বেতন সুবিধা পুনর্বহাল। শিক্ষকদের এমন হঠাৎ কর্মবিরতি ও শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবক হালিম মিয়া বলেন, হুট-হাট করে শিক্ষকরা পরীক্ষা বন্ধ করবে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলনে শিশুরা মানসিক চাপে পড়ে। শিক্ষকরা মানুষ তৈরির কারিগর বলা হলেও পরীক্ষাবর্জন করে আন্দোলন চলতেই পারে এবং এটা উচিতও না।
আরেক অভিভাবক ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি বলবো এটা আন্দোলন না, এটা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা। সরকারকে কঠোর হতে হবে। কিছু হলেই আন্দোলন তা ঠিক না। এমন অবস্থা চলেতে থাকলে প্রয়োজন নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করা এটা কেমন আন্দোলন আপনারাই বলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনীষা আহমেদ বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জরুরি নির্দেশনা দিয়ে শিক্ষকদের অবিলম্বে পরীক্ষায় ফিরতে বলেছে। একইসাথে শাটডাউন বা কর্মবিরতি অব্যাহত থাকলে সরকারি চাকরি আইন, আচরণবিধি ও ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে।
নওগাঁয় বাড়ছে শীতের প্রকোপ আর তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় মেহেরপুরে জেঁকে বসেছে শীত। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে শীতের প্রকোপ। শীতের প্রকোপ নিয়ে মেহেরপুর প্রতিনিধি জুলফিকার আলী কানন ও নওগাঁ প্রতিনিধি সবুজ হোসেনের পাঠানো খবরে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো;
মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান: মেহেরপুরে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। এর আগে, সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জামিনুর রহমান জানান, সকাল ৯টায় মেহেরপুর অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। আগামী কয়েকদিন রাত ও ভোরের তাপমাত্রা আরো কমতে পারে। এই শীত মৌসুমে এটাই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। যদিও এটা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা না।
এদিকে, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় জেঁকে বসেছে শীত। সকাল ৯টার পর ঝলমলে রোদের দেখা মিললেও শীতের প্রভাব কাটছে না। হিমেল বাতাস বইতে থাকায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। শীত বৃদ্ধির কারণে মেহেরপুর, গাংনী উপজেলা শহরে সকাল থেকে মানুষের চলাফেরা ছিল কম। সকালে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হয়নি। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিসগামী লোকজনের। সমস্যায় পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে শ্রমিক, ভ্যানচালক ও রিকশাচালকরা।
এদিকে শীত পড়ার সাথে সাথে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে হাঁপানি, টাইফয়েড, সর্দি, জ্বর, কাশিসহ বিভিন্ন রোগ বালাই বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর ভীড়ে গাদাগাদি ঠাঁসা ঠাঁসি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. সৈয়দ এনামুল কবীর জানান, চলতি শীত মৌসুমে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে। এসব কম্বলের মধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায় ৩৮ শত, গাংনী উপজেলায় ১৮ শত ও মুজিবনগর উপজেলায় ৮৭৫ টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর এসব কম্বলের মধ্যে কিছু কম্বল ছিন্নমূল, হতদরিদ্র্য শীতার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
নওগাঁয় বাড়ছে শীতের প্রকোপ:
নওগাঁ প্রতিনিধি: দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয় দিন দিন শীতের দাপট স্পষ্টভাবে অনুভূত হচ্ছে। কমছে তাপমাত্রাও। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে স্বাভাবিক কার্যক্রম।
সকাল ৯টায় জেলায় র্সনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র; যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। এর আগে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্থানীয়রা বলেছেন, সন্ধ্যার পর থেকে হালকা কুয়াশার সঙ্গে বেশ শীত অনুভূত হয়। রাতভর হালকা কুয়াশার ঢেকে থাকে এলাকা। সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায় ঠান্ডার অনুভূতি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রোদের কারণে গরম অনুভূত হয়। প্রতিদিনের মতো গত রোববার তাপমাত্রা কম থাকলেও সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিলেছে। ঝলমলে রোদ ছিল। সদর উপজেলার বর্ষাইল এলাকার খোরশেদ আলম রাজু বলেন, দিনের বেলা রোদ ঝলমলে ও গরম আবহাওয়া থাকে। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই গায়ে পড়তে হয় শীতের কাপড়। ঘুমোতে গেলে কম্বল ছাড়া উপায় থাকে না। সদর উপজেলার কাঁদোয়া গ্রামের ভ্যানচালক মুন্টু মিয়া বলেন, ‘সন্ধ্যা পর হালকা বাতাস ও শীতের কারণে রিকশা চালানো কষ্ট হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত কুয়াশা ছিল। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ভ্যান চালানোই কষ্ট। সকালে যাত্রীও পাওয়া যায় না।’ বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, গত বুধবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকালের তুলনায় তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা কমতে পারে।’
এদিকে, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: ডিসেম্বরের শুরু থেকেই দেশজুড়ে বাড়তে শুরু করেছে শৈত্যপ্রবাহ। এরই ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জ জেলা জুড়ে জেঁকে বসেছে কনকনে শীত। গত কয়েকদিন ধরে হিমেল হাওয়ার দাপটে এখানকার নদী চরাঞ্চলের মানুষের জনজীবন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বাতাসের তীব্রতা অনেকটাই বেশি থাকছে। তীব্র শীতে শিশু ও বয়স্করা মারাত্মকভাবে কষ্ট পাচ্ছেন।
মানিকগঞ্জের গ্রামীণ জনপদগুলোতে শীতের প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। এখানকার খেটে খাওয়া মানুষ, যারা দিন আনে দিন খায়- তাদের রোজগারে নেমেছে চরম দুর্ভোগ। বিশেষকরে পদ্মা ও যমুনা চরের মানুষের জীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তীব্র শীতের কারণে ভোরে কাজে বের হতে পারছেন না। ফলে কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় তাদের দৈনিক আয় মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। শীতবস্ত্রের অভাবে তাদের কাজে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে সামান্য উষ্ণতা খোঁজার চেষ্টা করছেন। তীব্র শীতের কারণে ভোরবেলার গ্রামীণ হাট-বাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি অনেক কমে গেছে।
বিশেষ করে সবজির পাইকারি বাজারগুলোতে লেনদেন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেক গ্রামীণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিতি কমেছে।
আবুল সরকারের মুক্তি ও বাউলদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গান গেয়ে মানববন্ধন করলেন মেহেরপুরের বাউল সম্প্রদায়ের লোকজন। এ সময় তাদের হাতে একতারা, দোতারা, হারমোনিয়াম, ঢোল আর নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্র ছিল।
বৃহস্পতিবার বেলা ২ টার সময় গাংনী উপজেলা শহরের কাঁচাবাজার এলাকায় এই মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে গান পরিবেশন করেন, আব্দুস সামাদ বাউল, ছন্নত বাউল, ভিকু বাউল ও মহিবুল বাউল।
মানববন্ধনে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের নিশর্ত মুক্তি ও বাউলদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করেন।
আবুল সরকারের নিশর্ত মুক্তি দাবি করে বাউল সম্প্রদায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মজনুল হক বলেন, বাউল সম্প্রদায় শুরের মানুষ। আমরা কোন ফ্যাসাদ বুঝিনা, ভালবাসার মানবিক সমাজ বুঝি। আমরা মনের মানুষের সাথে মনের মিলন ঘটনাতে চাই। আমরা ভাই ভাই, জাতিগোত্র সম্প্রদায় মিলে আমরা সম্প্রীতির রাস্ট্র চাই। সমাজে কোন ধরণের অমানবিক কর্মকাণ্ড হোক আমরা চাইনা। আমাদের এই দেশ বহুজাতী, বহু মতের দেশ, বহু চেতনার দেশ। আমরা লালন করি বাউল দর্শন। আবুল সরকার তার গানের মধ্য দিয়ে অভিনয় করছিলেন, সেই গানের অভিনয়ের মধ্য দিয়ে যদি ভাষার ভুলত্রুটি হয়, তাহলে তাকে ক্ষমা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারপরেও বাউল আবুল সরকারের ক্ষমা হয়নি। তারপরেও তাকে আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি এগুলো একটি ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড আমরা এই ষঢ়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তি চাই। মানববন্ধনে বিভিন্ন এলাকার ৩৫ জন বাউল অংশ নেন।
আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালে কিলিং মিশনের মাধ্যমে মানুষ হত্যা শুরু করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভপতি জাহিদুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাইবান্ধা স্বাধীনতা প্রাঙ্গণে ছাত্র–যুব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অতীতে রাজনৈতিক ইতিহাসে যে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসন কাঠামো গড়ে উঠেছিল, তা বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করার এক ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ছিল। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের ‘লগি-বৈঠা’ ঘটনা, পিলখানা হত্যা এবং শাপলা চত্বরের রাতের অভিযানসহ বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন-এগুলো ছিল রাজনৈতিক নিপীড়নের ধারাবাহিকতা।
তার দাবি, বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক শীর্ষ নেতা, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের ‘জুডিশিয়াল কিলিং’–এর মাধ্যমে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। সাম্প্রতিক ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমনের সময়ও ছাত্র–জনতা, কৃষক–শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ গুলিতে নিহত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘২০২৪-এর জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে বাংলাদেশের ছাত্র–জনতা প্রমাণ করেছে- আমরা কোন কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচার বা ফ্যাসিস্টের কাছে মাথা নত করব না। এই জাতি আবারো জানিয়ে দিয়েছে, জুলুমের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যই সবচেয়ে শক্তিশালী।’
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের পর অনেকেই ভেবেছিলেন দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে; কিন্তু দুঃখজনকহলেও সত্য অতীতে যারা ফ্যাসিস্ট ছিল তাদের কাজগুলো বাংলাদেশের একটি দল সমাপ্ত করতে নিজের কাধে তুলে নিয়েছে।
আমরা চাই নীতি ও মূল্যবোধের রাজনীতি। চাই সম্মান ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে নতুন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়ে উঠুক। হত্যা–দখলদারিত্বের, চাঁদাবাজির রাজনীতি আমরা চাই না।
সমাবেশে জেলা ও উপজেলার জামায়াতে ইসলামী যুব বিভাগ ও ছাত্র শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ মাঠে নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন কেন্দ্রীয় এই শিবির নেতা। অনুষ্ঠানে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের এক হাজার ২০০ শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেন। প্রোগ্রামে অংশ নেন প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী। দীর্ঘ ২০ বছর পর কলেজ মাঠে উন্মুক্তভাবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।