টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বিশ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোর নিন্মাঞ্চল। ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশংকা করা হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন অবস্থায় আছে নগরও। নগরের অনেক রাস্তাঘাট ও বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার পরও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বেড়েই চলছে পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে সিলেটের ৪টি নদীর পানি ৬ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত সিলেট জেলায় প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। তবে মঙ্গলবার স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, জেলায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদের দিন কোরবানির পশুর মাংস, শুকনো খাবার, সেলাইন ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ শাহ মো সজিব জানান, সিলেটে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৪৪ মি.মি বৃষ্টি হয়েছে। আর ৯ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১২ মিলিমিটার। আগামী দুইদিন সিলেটে টানা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত ২৭ মে ঢলে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। এতে জেলার সব উপজেলায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হন। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই ফের বন্যা কবলিত হয়েছে সিলেট।
সোমবার রাতে সিলেট জেলা প্রশাসন জানায়, জেলার ১৩টির মধ্যে ১০টি উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ পানিবন্দী। তবে বৃষ্টি ও ঢল অব্যাহত থাকায় বাড়ছে প্লাবিত এলাকা। ইতোমধ্যে জেলার কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও জকিগঞ্জ উপজেলার বিস্তৃর্ন এলাকা তলিয়ে গেছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলার মামার দোকার এলাকার ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রবল বেগে ঢল নামছে। এলাকার অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে।
এদিকে, গতকাল সোমবার ঈদের দিন সকালে টানা বৃষ্টিতে নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে ঈদের জামাত ও কোরবানি নিয়ে বিপাকে পড়েন নগরবাসী। তবে দুপুরের পর বৃষ্টি থামলে নামতে শুরু করে নগরের পানি। কিন্তু মঙ্গলবার ভোররাত থেকে ফের শুরু হয় সিলেটে বৃষ্টিপাত। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও বাড়তে শুরু করেছে সিলেট নগরের পানি। ফলে আবারও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে নগরে।
নগরের উপশহর এলাকার বাসিন্দা কাইয়ুম আহমদ বলেন, পানিতে বাসা ও সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় গতকাল কোরবানি দিতে পারিনি। গতকাল থেকে আজ পরিস্থিতি আরও খারাপ। পানি দ্রুত বেগে বাড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগরের সব নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে শাহজালাল উপশহর প্রায় পুরোটাই পানির নিচে। অনেকের বাসার নিচতলায় গলা পর্যন্ত পানি। এছাড়া যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়া ও মেজরটিলাসহ মহানগরের অধিকাংশ এলাকা বন্যা কবলিত।
এছাড়া নগরের মধ্যে অনেক সড়কে পানি রয়েছে। এয়ারপোর্ট সড়ক, সিলেট-তাবিল সড়ক, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোডসহ বিভিন্ন সড়কের বেশ কয়েকটি স্থান পানির নিচে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট কার্যালয় মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জানায়, এ সময় পর্যন্ত সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা থেকে ১৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীটির সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার এবং নদীর সারিগোয়াইন পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ইন্ডিয়া মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের তথ্যমতে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত ৩৯৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে দ্রুত বাড়ছে সিলেটের নদ-নদীর পানি। সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। জেলায় ৫৩৮ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুর সদর উপজেলা শিক্ষক সমিত ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। বুধবার বেলা ১২টায় ফরিদপুর সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুশান্ত কুমার সরকারের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেনের সঞ্চালনায় ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ফুসরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাসান আহমেদ, ডোমরাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিনা জানান, সহকারী শিক্ষক মলি আক্তার, গোলাপবাগ লতিফুন্নেসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, মধ্য চরটেপাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দেবাশীষ ব্যানার্জি।
এছাড়াও এ সময় বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম, দয়ারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ ফরহাদ শেখ, মুরারীদাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমি হায়দার, মোতালেব হোসেন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শামীম ইকবাল, খালিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি শিক্ষক মোহাম্মদ ফরিদ শেখ, টেপাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজমুল হোসেনসহ ফরিদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষকরা জানান তাদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এবং কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
‘প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ি’ সামাজিক অগ্রগতি তরান্বিত করি’ প্রতিপাদ্যে বুধবার নীলফামারীতে জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজ সেবা কার্যালয় এবং প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের উদ্যোগে দিবসটি পালন করা হয়।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল র্যালি, আলোচনা সভা, ঋণের চেক ও কম্বল বিতরণ।
এছাড়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে সেলাই মেশিন, হুইল চেয়ার, ট্রাই সাইকেল বিতরণ করা হয়।
সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শুরু করে একটি র্যালি বের হয়ে জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে গিয়ে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকীকের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সহকারী পরিচালক নুসরাত ফাতেমা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার আতিউর রহমান শেখ বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, প্রতিবন্ধীরা আমাদের বোঝা নয়। আমাদের সম্পদ। তাদের কাজে লাগাতে হবে। তাদের মূল স্রোতে টানতে হবে। তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে পারে।
সরকার প্রতিবন্ধীদের কাজে লাগাতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা চাই তারাও সমাজে ভূমিকা রাখুক।
অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে সেলাই মেশিন, হুইল চেয়ার, ট্রাই সাইকেল ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায় জানান, ৯৬জনকে সেলাই মেশিন, ৯০জনকে হুইল চেয়ার, ২০জনকে ট্রাই সাইকেল ও ১’শ জনকে কম্বল প্রদান করা হচ্ছে।
নিয়োগবিধি ২০২৪ বাস্তবায়নের দাবি, বেতন বৈষম্য নিরসন এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানসহ ৬ দফা দাবিতে সারাদেশের ন্যায় যশোরের শার্শা উপজেলা হাসপাতালে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। বুধবার সকালে শার্শা উপজেলা হাসপাতালের সামনে তারা এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীরা জানিয়েছেন, জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত করে তারা কর্মবিরতিতে যেতে চাননি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদাসীনতা এবং বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণেই তারা বাধ্য হয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে নেমেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ও প্রস্তাব অনুযায়ী দাবিগুলো প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করেন, তবে তারা অবিলম্বে কর্মস্থলে ফিরে যাবেন।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া স্বাস্থ্য সহকারীরা জানান, তারা মূলত প্রান্তিক পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচিসহ জনস্বাস্থ্যের সেবায় সম্মুখসারির কর্মী হিসেবে কাজ করেন। জন্মের পর শিশুর সুস্বাস্থ্য ও সুরক্ষার জন্য ১০টি মারাত্মক রোগের প্রতিষেধক টিকা প্রদান করাও তাদের দায়িত্ব।
তাদের কাজের ফলে বাংলাদেশ বিশ্বে টিকাদানের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। দেশ থেকে গুটি বসন্ত দূর হয়েছে, মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হ্রাস পেয়েছে এবং পোলিও মুক্ত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া গেছে। এছাড়া হাম, রুবেলা, করোনা, জরায়ূমুখের ক্যান্সার (এইটপিভি) এবং সর্বশেষ প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে টাইফয়েড (টিসিভি) টিকা সাফল্যের সঙ্গে তারা প্রদান করেছেন।
পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আকলিমা খাতুন বলেন, আমাদের কাজের ফলে দেশে গড় আয়ু বৃদ্ধি হয়েছে এবং আন্তজার্তিক অঙ্গনে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত সুপিরচিতি লাভ করেছে। আমাদের কাজের বিনিময়ে স্বাস্থ্য বিভাগ গর্বিত। আজ আমরাই অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, এফপিআই আবুল খায়ের, আলাউদ্দিন আল আজাদ, এফডব্লিভি মিতা খাতুন, শিরিন সুলতানা, নাসিমা খাতুন, এফডব্লিএ সাফিয়া খাতুন, নাজমা খাতুনসহ আরও অনেকে।
ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা হাইওয়ে রোড থেকে নেমে মিনিট দুয়েক হাঁটার পরই শোনা যেতে থাকে পাখির কিচিরমিচির শব্দ। এরপর সামনের দিকে আরও এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে ব্যস্ততা শহর, আর বাড়তে থাকে পাখির কিচিরমিচির শব্দ। কাঁচা সড়কটির দুই পাশে একটু পরপর বড় বড় জাম গাছ। গাছগুলোতে ঝুলানো আছে মাটির পাত্র। ওইসব পাত্রে বাসা বেঁধে বাস করে অসংখ্য পাখি।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ভোরে আর আর সন্ধ্যায় সবচেয়ে বেশি পাখি চোখে পড়ে। পাখির কিচিরমিচির শব্দে তাদের বেলা করে ঘুম থেকে ওঠার সুযোগ নেই। ভোরে পুরো গ্রামের মানুষদের ঘুম ভাঙে কিচিরমিটির শব্দে।
এটি ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার সাধুপাড়া গ্রামের কথা। ২০১৩ সাল থেকে এ গ্রামটি যেন পাখির অভয় আশ্রম হিসেবে গড়ে ওঠেছে। গ্রামের যুবকরা পরিকল্পিতভাবেই সড়কটির দুই পাশে এবং অনেকের বাড়ির সীমানায় জামগাছ লাগিয়েছিল, যেন পাখি বাস করতে পারে।
এখানেই শেষ হয় সাধুপাড়া গ্রাম নিয়ে পুলকিত হওয়ার গল্প। গ্রামটি যেন গল্পের মতো। সব কিছুই পরিকল্পিত আর গোছানো। হাঁটতে হাঁটতে পথচারীর চোখ আটকে যাবে সাধুপাড়া কৃষক সংগঠনের ঘরটি দেখে। জামগাছের ছায়ায় ছোট আধাপাকা ঘর। সাইনবোর্ডে লেখা ‘ফসলের হাসপাতাল।’ লেখা পড়ে মনে কৌতূহল জাগে। কৌতূহল মেটাতে কথা হয় গ্রামের কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে।
জানা যায়, সাধুপাড়া গ্রামের কৃষকদের নানা কৃতিত্বপূর্ণ গল্পের কথা। এ গ্রামে চাষ হয় বিষমুক্ত সবজি। বেশির ভাগ কৃষক নিজেদের বাড়ির সামনে তৈরি করে কেঁচো কম্পোস্ট সার। আর তাদের গর্ব করার মতো বিষয় হচ্ছে ‘হেকিম ধান’। ধানের জাতের নাম শোনে বিষ্ময় জাগে।
পরে জানা যায়, সাধুপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হেকিমের নামে এ ধান। হেকিম ধানের গল্প শোনা যায় স্বয়ং কৃষক আব্দুল হেকিমের মুখ থেকে। তিনি জানান, ১৫ বছর আগে আব্দুল হেকিমের চাচাতো ভাই আব্দুল জব্বার নেত্রকোনা জেলা থেকে ২০ জাতের ধান সংগ্রহ করে আনেন। সেসব ধান চাষ করে তিনি সবচেয়ে উচ্চফলনশীল ধানের জাত চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেন। কিন্তু কয়েক বছর পর জব্বার মারা যান। আব্দুল জব্বার মারা যাওয়ার পর ধানের জাত বাছাইয়ের কাজটি শুরু করেন আব্দুল হেকিম। হেকিম একটি এনজিওর সহায়তায় এ কাজ শুরু করেন।
টানা কয়েক বছর ধরে ওইসব জাতের ধান নিজের জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে আবাদ করতে থাকেন। এভাবে তিনি একটি জাতকে সবচেয়ে বেশি ফলনশীল ধান হিসেবে চিহ্নিত করেন। কিন্তু ততদিনে ধানটির জাতের নাম ভুলে যান। হেকিমের বাছাই করা ওই জাতটি পরের বছর অনেকেই চাষ করেন। ফলনও পান ভালো। কয়েক বছরে ওই জাতটি আশাপাশের কয়েকটি গ্রামেও ছড়িয়ে পরে। কিন্তু ধানটির নাম কেউ বলতে পারে না। ওই সময় একদিন গ্রামের কৃষকরা মিলে নাম দেন হেকিম ধান। গত চার বছর ধরে প্রতি বছর আনুষ্ঠাকিভাবে হেকিম ধানের মাঠ দিবস পালন করেন গ্রামের কৃষকরা। ওইদিন বেশ ধুমধাম করে খাওয়া-দাওয়া হয়।
হেকিম ধানের গল্প শোনার পর জানতে চাওয়া হয় ফসলের হাসপাতালের কথা। কৃষক আব্দুল বারিসহ আরও কয়েকজন মিলে জানায়, গ্রামের কোনো কৃষকের ধান খেতে রোগবালাই বা পোকার আক্রমণ দেখা দিলে শুরুতেই গ্রামের সব কৃষক মিলে সংগঠনের কার্যালয়ে পরামর্শ সভা করে। সেখানে ধানের রোগ বা পোকার আক্রমণ নিয়ে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। বিশেষ পরামর্শ দেন কৃষক আব্দুল বারি।
কারণ তিনি এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় তিনটি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। যদি কখনো নিজেদের চেষ্টায় সমস্যার সমাধান না মেলে তাহলে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ে যান।
আরও জানা যায়, ফসলের মাঠে পোকার আক্রমণ ঠেকানোর জন্যই গ্রামে প্রচুর জামগাছ লাগানো হয়েছে। জামের মৌসুমে জাম খেতে আসে নানা ধরনের পাখি। সেসব পাখি জাম গাছে যাতে বাসা বাঁধতে পারে, সে জন্য গাছে উঁচু ডালে মাটির ছোট ছোট পাত্র ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ঝুলানো পাত্রে পাখি বাসা বাঁধে। এভাবে গ্রামটি এখন পাখির গ্রাম হয়ে গেছে।
সাধুপাড়া গ্রামের কৃষকরা নিজেদের সবজি চাষে কেনা সার ব্যবহার করেন না। প্রত্যেক কৃষকের বাড়ির সামনে নিজেরাই তৈরি করছেন কেঁচো কম্পোস্ট। এ সার ব্যবহার করছেন নিজেদের প্রয়োজনে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সার বিক্রিও করছেন অনেক কৃষক। তবে কৃষকরা জানায়, পর্যাপ্ত গোবর না থাকায় চাহিদার সমানুপাতে সার তৈরি করা যাচ্ছে না। যে কারণে ধান চাষে রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হচ্ছে।
সাধুপাড়া কৃষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নরুল হক বলেন, ‘২০০৯ সালে আমাদের সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ সংগঠন কৃষকদের সব ধরনের সমস্যায় পাশে দাঁড়ায়। আমাদের সংগঠন দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আশপাশের অনেক গ্রামেই এখন কৃষকরা একত্রিত হচ্ছে। গ্রামের তরুণরা সংগঠন করছে।’
কুড়িগ্রাম জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রকল্প সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে বেসরকারি সংস্থা ‘অ্যাসোশিয়েন ফর অল্টারনেটিভ ডেভলপমেন্ট’ এর আয়োজনে শহরের আলমাস মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আফাদ এর চেয়ারম্যান মোর্শেদা পারভীন এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপপরিচালক এএম মনিরুজ্জামান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন, সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কামরুল ইসলাম, পাঁচগাছী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার, ঘোগাদহ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক, অ্যাসিল্যান্ড আরিফুল ইসলাম, সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমান, কৃষি কর্মকর্তা নাহিদা আফরিন, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহীন মিয়া, সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সরকার, আফাদ এর সমন্বয়কারী রেশমা সুলতানা, প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। মাল্টেসার ইন্টারন্যাশনাল বিএমজেড-পিটি এর সহযোগিতায় বিএমজেড-পি আফাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে শিক্ষক, কৃষক, কৃষাণী, জনপ্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধি, দলিত সম্প্রদায়, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি এবং ঘোগাদহ ইউনিয়নে রেজিলেন্স স্ট্রেন্দেনিং অফ ভার্নারেবল পপুলেশন ইন নর্দান ওয়েস্টার্ন অ্যান্ড ইস্টার্ন বাংলাদেশ থ্রো এ নেটওয়ার্ক এপ্রোচ অফ ফাইভ পার্টনার অর্গানাইজেসন, বিএম জেড পিটি প্রজেক্টটি ২০২২সালের ১ নভেম্বর শুরু হয়ে ২০২৫সালের ৩১ডিসেম্বর শেষ হবে। প্রকল্পের মোট সুবিধাভোগী ৯হাজার ৬৯জন। এরমধ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ১২ জন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিবারের সদস্য ৪৬ জন, দলিত সদস্য ৩০জন, ট্রান্সজেন্ডার ২২জন, নারী প্রধান পরিবার ২৭ জন, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবার ৩৪৩ জন, ৪৮০ জন প্রত্যক্ষ সদস্য এবং পরোক্ষ সদস্য ৮৫৮৯ জন। এদের মধ্যে প্রায় ৫ শতাধিক প্রত্যক্ষ সদস্যদের নিয়ে প্রজেক্টের সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। তাদেরকে আম, মাল্টা, পেয়ারা গাছ বিতরণ করা হয়েছে।
পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুরছানা বস্তাবন্দি করে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত নিশি রহমান (৩৮) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় মামলাটি করেন।
ঈশ্বরদী থানার ওসি আ স ম আব্দুন নূর জানান, ‘প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯’ এর ৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ঈশ্বরদী উপজেলা ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি রহমানকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পরপরই রাতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত নিশি রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার জানান, মামলার পর গত মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলা সদরের রহিমপুর গার্লস স্কুলের পাশে একটি চারতলা বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ও সমালোচিত হয়েছে। যে কারণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ও মহাপরিচালক স্যারও ফোন করে তার পক্ষে মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নকে গত সোমবার গেজেটেড কোয়ার্টার ছাড়তে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারা সেদিনই বিকালে বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
নয়নের স্ত্রী নিশি রহমান গত মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাচ্চাগুলো তাদের বাসার সিঁড়ির পাশে থাকতো এবং খুব বিরক্ত করত। তাই তিনি বাজারের ব্যাগে ভরে পুকুরের পাশে একটি সজিনা গাছের গোড়ায় রেখে এসেছিল। কীভাবে পুকুরে পড়েছে সেটি তিনি জানেন না। তিনি নিজে ছানাগুলোকে পুকুরে ফেলেননি বলে দাবি করেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের একটি কোনায় থাকতো টম নামের একটি কুকুর। এক সপ্তাহ আগে সে আটটি বাচ্চা প্রসব করে। গত সোমবার সকাল থেকে তার ছানাগুলো না পেয়ে, পাগলপ্রায় অবস্থায় ছুটাছুটি করতে দেখা যায় মা কুকুর টমকে। পরে, উপজেলা পরিষদের কর্মচারীরা জানতে পারেন, কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ও তার স্ত্রী জীবন্ত আটটি কুকুর ছানাকে বস্তার মধ্যে বেঁধে, গত রোববার রাতে কোন একসময় ফেলে দেন উপজেলা পরিষদের পুকুরে। একদিন পর গত সোমবার সকালে পাওয়া যায় কুকুর ছানাগুলোর মরদেহ। দুপুরের পর মৃত কুকুর ছানাগুলোকে ইউএনওর বাসভবনের পাশে মাটি চাপা দেয়া হয়।
বৈশ্বিক এআই ডিভাইস ইকোসিস্টেমের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড অনার বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অত্যাধুনিক কারখানা উদ্বোধন করেছে। এর মাধ্যমে দেশের ভেতরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় উৎপাদন কার্যক্রমের সূচনা করল ব্র্যান্ডটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্কে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, অনারের নেতৃত্ববৃন্দ এবং স্মার্ট টেকনোলজিসের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ কারখানার উদ্বোধনের মাধ্যমে অনার বাংলাদেশে তাদের পণ্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ নিল। এখানে সংযোজিত ডিভাইসগুলো খুব শিগগিরই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেবেল নিয়ে দেশের বাজারে আসবে।
বাংলাদেশে বৈশ্বিক এআই উদ্ভাবন ও স্থানীয় উৎপাদন সক্ষমতার সমন্বয়ে উৎপাদন উৎকর্ষের নতুন এক মানদণ্ড স্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে স্থাপন করেছে অনার।
নিজেদের স্মার্ট ডিভাইসগুলোতে উন্নত এআই প্রযুক্তি সংযোজনের জন্য বাজারে পরিচিতি রয়েছে অনারের। বাংলাদেশে উৎপাদনের ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে ব্র্যান্ডটি। কারখানায় যন্ত্রাংশ সংযোজনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলোতে এআই প্রযুক্তিচালিত অটোমেশন ব্যবহার করা হয়েছে, যা সামগ্রিকভাবে নির্ভুলভাবে ও কার্যকরী উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব উপস্থিত ছিলেন। বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, বিটিআরসি-এর পরিচালক মোঃ নূরন্নবী, এসইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি., বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া এবং স্মার্ট টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
অন্যদিকে, অনুষ্ঠানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জর্জ ঝেং এবং গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের প্রেসিডেন্ট ডেরিক ডেং অনারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। তার সাথে ছিলেন বাংলাদেশে অনারের কান্ট্রি ম্যানেজার ল্যাং গুও, হেড অব বিজনেস আবদুল্লাহ আল মামুন ও ডেপুটি কান্ট্রি ম্যানেজার মুজাহিদুল ইসলাম।
প্রারম্ভিক পর্যায়ে কারখানাটি একটি প্রোডাকশন লাইন দিয়ে প্রতিদিন ১,৫০০ ইউনিট উৎপাদন সক্ষমতা নিয়ে পরিচালিত হবে। এছাড়া, প্রথম বছরের মধ্যেই অনার চারটি প্রোডাকশন লাইন চালুর পরিকল্পনা করেছে, যা ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে উৎপাদন সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে।
অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব দেশের চলমান ডিজিটাল রূপান্তরের গুরুত্ব এবং ডিভাইস ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে ডিজিটাল রূপান্তর যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। এখন আমাদের নিজেদের দক্ষতার যে ঘাটতি রয়েছে, তা কমাতে হবে। ডিভাইসের সহজলভ্যতা আরও বাড়াতে হবে, পাশাপাশি তরুণদের জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান তৈরির দিকেও নজর দিতে হবে। এই উদ্বোধনের মাধ্যমে স্মার্ট ও অনার বাংলাদেশে অর্থবহ কর্মসংস্থান তৈরির যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা বাস্তবায়নের দিকে সত্যিকার অর্থেই একটি বড় পদক্ষেপ নিল।”
অনার স্মার্ট কারখানাগুলো কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এই কারখানা লাইনগুলো বাস্তবিক অর্থেই কর্মসংস্থানবান্ধব করে পরিকল্পনা করা হয়েছে। । একটি লাইন ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে এবং আগামী বছরে চারটি লাইন চালু হবে। এর মাধ্যমে দেশে উল্লেখযোগ্য দক্ষ জনবল তৈরি হবে, দক্ষতা-বিনিময়ের সুযোগ বাড়বে, এবং এই শিল্পকে ঘিরে নতুন উদ্যোক্তারা ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিংকেজ তৈরিতে উৎসাহিত হবেন”।
এছাড়া নীতিগত সংস্কার বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার স্থানীয় মোবাইল/ স্মার্টফোন বাজারকে শক্তিশালী করতে একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে।
“আমরা শিগগিরই অবৈধ স্মার্টফোন আমদানি মোকাবিলায় ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)এর কাজ শুরু করছি এবং শুল্ক কাঠামো সংস্কার করছি, যাতে স্থানীয় উৎপাদন আমদানির তুলনায় আরও আকর্ষণীয় হয়। এদিকে তৃতীয় ও চতুর্থ সাবমেরিন কেবল যুক্ত হওয়ায় ডেটার দামও কমে যাবে”, বলেন তিনি।
ডিজিটাল গভর্নেন্স কাঠামো বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে এবং স্মার্টফোন ব্যবহারের হার বৃদ্ধি করবে বলে তিনি মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের সাইবার নীতি, ডেটা সুরক্ষা নীতি এবং ডেটা গভর্নেন্স/ নিয়ন্ত্রণ কাঠামো আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য নিশ্চিত করবে এবং ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে জনগণের আস্থাকে আরও দৃঢ় করবে। সঠিক প্রণোদনা থাকলে স্মার্টফোন ব্যবহার ৪০ শতাংশ থেকে ৭০ এমনকি ৮০ শতাংশেও পৌঁছাতে পারে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জর্জ ঝেং বাংলাদেশ নিয়ে অনারের লক্ষ্য তুলে ধরে বলেন, “এই কারখানা শুধুই একটি অবকাঠামো নয়। এটি অনার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে এক অংশীদারিত্বের প্রতীক—যেখানে বৈশ্বিক দক্ষতা ও স্থানীয় সক্ষমতার সম্মিলন ঘটেছে। আমাদের লক্ষ্য শুধু কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা নয়; এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে স্থানীয় পেশাজীবিদের দক্ষতা বিকশিত হবে, প্রযুক্তি অগ্রসর হবে এবং সম্প্রদায় আরও সমৃদ্ধ হবে। আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমরা উৎপাদনে নিরাপত্তা, স্থায়িত্ব এবং সততার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখার আমাদের অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করছি।”
স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের বাজারে অনার ফোন ইতিমধ্যে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছে। তবে ব্যবহারকারীরা আরও সাশ্রয়ী দামে অনারের ফোন কিনতে চান। স্থানীয় এ চাহিদা মেটাতেই আমরা এই কারখানা স্থাপন করেছি। আমাদের প্রাথমিক উৎপাদনক্ষমতা ৬০ হাজার ইউনিট, এবং চাহিদা বাড়লে তা আরও বৃদ্ধি করা হবে। নতুন স্থাপিত হওয়া কারখানা শুধুই একটি কারখানা বা ইটের স্থাপনা নয়; এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীক। এটি প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ ডিজিটাল রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং একক রপ্তানিমুখী শিল্পের ওপর নির্ভরতা কমাচ্ছে।পাশাপাশি, ভবিষ্যতে বৈশ্বিক প্রযুক্তি উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বাংলাদেশের সক্ষমতারও প্রমাণ এটি"
২০২৩ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে অনার। এরপর থেকে ব্র্যান্ডটি দ্রুতই জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর একটি হিসেবে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করে। বর্তমানে, ব্র্যান্ডটির দেশের বাজারে প্রায় ৩ শতাংশ বাজারহিস্যা রয়েছে, যা আগামী বছর ১০ শতাংশে পৌঁছাবে বলে প্রত্যাশা করছে অনার।
অনারের এই এআই প্রযুক্তিনির্ভর কারখানাটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পাশাপাশি স্থানীয় কর্মীদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে এবং প্রযুক্তি স্থানান্তর ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখবে। দেশের মধ্যেই এমন একটি উদ্যোগ আমদানি নির্ভরতা কমাতে এবং বৈশ্বিক ইলেকট্রনিকস সাপ্লাই চেইনে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতেও ভূমিকা রাখবে।
আট বছর আগে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত যশোরের বেনাপোল পৌরবাস টার্মিনালটি কোন কাজে আসছে না। সেখানে যাত্রীবাহী কোন বাস না থাকায় টার্মিনালটি খাঁখাঁ করছে।বিগত আওয়ামীলীগ সরকার ২০১৭ সালে বাসটার্মিনালটি নির্মাণের পর দুইবার উদ্বোধন করা হলেও এখান থেকে কোনো বাস ছাড়া হয়না, কোনো বাস দাঁড়ায়ও না। যে কারণে কাজে আসছে না মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নির্মিত এই টার্মিনাল।
আর এই টার্মিনালটি চালু না হওয়ায় মাদকসেবীরা ও মাদক ব্যবসায়িরা এই ভবনটিকে নিরাপদ স্থান করে নিয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে সন্ধ্যার পর পর চলে এই টার্মিনালের মধ্যে চলে মাদক সেবন ও মাদক বিক্রি। এখানে দুর দুরান্ত থেকে মাদক সেবীরা এসে সেবন করে যায়। এর সাথে স্থানীয় অনেক উঠতি বয়সের তরুনরাও ঝুকে বসেছে মাদক সেবনে। বাস চালূ হলে এখানে রাত দিন লোক সমাগম থাকলে মাদক সেবীরা ও মাদক ব্যবসায়িরা হয়ত আর আড্ডা দিতে পারত না।
বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কাগজপুকুর পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট মুক্ত রাখতে টার্মিনালটি নির্মাণ করেছিল বেনাপোল পৌরসভা। কিন্তু বাসমালিক ও শ্রমিকসহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সার্থের কারনে সফল হচ্ছে না। ফলে যাত্রী ও সাধারণ নাগরিকের সীমাহীন ভোগান্তি রয়েই গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রধান স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট বেনাপোলে অবস্থিত। এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দিনে হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করে। প্রধান সড়কের শেষ প্রান্তে নোম্যান্সল্যান্ড-সংলগ্ন স্থানে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হওয়ায় যাত্রী ও পরিবহনের চাপে সেখানে এবং যশোর রোডের বেনাপোল বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেনাপোল পৌরসভা শহরের প্রবেশমুখে কাগজপুকুর এলাকায় মহাসড়কের ধারে নতুন টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন টার্মিনালটি ২০১৭ সালে উদ্বোধন করেন তখনকার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু সেই থেকে এখনও পর্যন্ত টার্মিনালটি ব্যবহৃত হয়নি।
মালিক-শ্রমিকরা তাদের যানবাহন আগের মতোই নোম্যান্সল্যান্ডের কাছাকাছি চেকপোস্ট বাস টার্মিনাল পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. কাজী নাজিব হাসান। যশোর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আজাহারুল ইসলামের নির্দেশনায় তিনি গত বছর ৭ নভেম্বর টার্মিনালটি নতুন করে চালুর উদ্যোগ নেন। কিন্তু এ দফায়ও মাত্র সাত দিনের মতো সচল ছিল টার্মিনালটি। পরে যানবাহন মালিক-শ্রমিকরা টার্মিনালে গাড়ি না ঢুকিয়ে আগের মতো ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকায় নিয়ে যান। মালিক-শ্রমিকরা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে সব সময় টার্মিনালে দু-একটি বাস রাখছেন।
অভিযোগ রয়েছে, নতুন টার্মিনালটি যাতে ব্যবহৃত না হয়, তার পেছন থেকে যারা কলকাঠি নাড়েন, তাদের শীর্ষে আছেন বেনাপোল এর এক শ্রেনীর প্রভাবশালী ব্যবসায়ি সংগঠন’। এসব সংগঠন কারন দেখিয়ে বলছে পৃথিবীর কোনো দেশের সীমান্তের চেকপোস্ট থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে টার্মিনাল নেই। এত দূরে টার্মিনাল নির্মাণ করা অবাস্তব চিন্তা। সে কারণে টার্মিনালটি ব্যবহৃত হচ্ছে না।’স্থানীয় অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চেকপোস্ট থেকে দূরবর্তী স্থানে টার্মিনাল করার সিদ্ধান্তটি কতটা যুক্তিপূর্ণ ছিল- তা নিয়ে তাদের মধ্যে সন্দেহ আছে।
জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক ডা.কাজী নাজিব হাসান বলেন, ‘গত বছর এর ৭ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নতুন বাসটার্মিনালটি চালু করেছি। সেখানে নামাজের স্থান,ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, আনসারদের থাকার ব্যবস্থাসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাসমালিকরা এই টার্মিনাল ব্যবহার না করে নোম্যান্সল্যান্ডের কাছে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপ পরিচালিত টার্মিনালে বাস নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ ওই টার্মিনালটি শুধু আন্তঃদেশীয় বাস প্রবেশের জন্য নির্ধারিত।
বুধবার ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ দুপুরে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
ব্যাংকিং খাতের ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মোকাবেলায় আরও শক্তিশালী গভার্ন্যান্স, কঠোর কমপ্লায়েন্স এবং আগাম প্রস্তুতিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছেন ব্র্যাক ব্যাংকের নেতৃবৃন্দরা। ব্যাংকটির অ্যানুয়াল রিস্ক কনফারেন্স ২০২৫-এ এই আহ্বান জানানো হয়।
আয়োজনে অভিজ্ঞ ব্যাংকার ও ঝুঁকি বিশেষজ্ঞরা মানিলন্ডারিং এবং ডিজিটাল ব্যাংকিং ইকোসিস্টেমে বাড়তে থাকা ঝুঁকি নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যে দ্রুত পরিবর্তনশীল রিস্ক ল্যান্ডস্কেপের মুখোমুখি হচ্ছে, সেই বিষয়গুলোও নিয়েও কথা বলেন। অংশগ্রহণকারীরা বর্তমান ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি পুনর্মূল্যায়নের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ সমস্যা মোকাবেলায় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ফ্রেমওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
ব্র্যাক ব্যাংকের দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যক্রমে ঝুঁকি সম্পর্কে সহকর্মীদের জ্ঞান বাড়ানো এবং কার্যকর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা তৈরির ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
২৯ নভেম্বর ২০২৫ ঢাকায় ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সরাসরি ও ভার্চুয়ালি হাইব্রিড ফরম্যাটে আয়োজিত দিনব্যাপী এই কনফারেন্সে ১,০০০-এরও বেশি ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, ব্রাঞ্চ অপারেশনস ম্যানেজার এবং সাব-ব্রাঞ্চ ইন-চার্জ উপস্থিত ছিলেন।
ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। আয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক সুরভী ঘোষ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ব্র্যাক ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও বোর্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হোসেন ‘ম্যাক্রোইকোনমিক আউটলুক – এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন অ্যান্ড ট্রেড ট্যারিফ’ বিষয়ে একটি প্রেজেন্টেশন দেন। এ সময় স্বতন্ত্র পরিচালক আনিতা গাজী রহমান এবং লীলা রশীদ উপস্থিত ছিলেন।
ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন মেহেরিয়ার এম হাসান, সিএফএ সোসাইটি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও ইডিজিই এএমসি লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফ খান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান ‘ইকোনমিক ফরকাস্টিং অ্যান্ড ব্যাংক’স রেডিনেস— আ রোডম্যাপ ফর ২০২৬’ বিষয়ে একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। সেশনটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিআরও আহমেদ রশীদ জয়।
ব্র্যাক ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও বোর্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারপারসন সালেক আহমেদ আবুল মাসরুর, স্বতন্ত্র পরিচালক ও বোর্ড অডিট কমিটির চেয়ারপারসন চৌধুরী এমএকিউ সারোয়ার এবং ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক শেখ মোহাম্মদ আশফাক ‘বিল্ডিং আ ডেটা-ড্রিভেন, পিপল-পাওয়ার্ড এএমএল ফ্রেমওয়ার্ক’ বিষয়ক প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড ক্যামলকো চৌধুরী মঈনুল ইসলাম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের যুগ্মপরিচালক মাহমুদা হক ‘ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক উদ্যোগ’ বিষয়ে একটি সেশন পরিচালনা করেন। ভার্চুয়াল প্ল্য্যাটফর্মে যুক্ত হয়ে দুবাই ইসলামিক ব্যাংকের হেড অব ক্রেডিট–রিটেইল, এসএমই অ্যান্ড ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট কাজী ফারুক কামাল ‘রিস্ক ল্যান্ডস্কেপ—রিটেইল লেন্ডিং’ বিষয়ে নিজের প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন।
কাজী ফারুক কামাল বলেন, “রিস্ক কালচার এবং স্ট্রেস টেস্টিং একটি প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি সচেতনতা এবং টেকসইতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয়। স্ট্রেস টেস্টিং পিরিয়ডিক ভিত্তিতে না করে ধারাবাহিকভাবে করা উচিত, যাতে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিজের দুর্বলতাগুলো সহজেই চিহ্নিত করতে পারে। একটি শক্তিশালী রিস্ক কালচার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ঝুঁকি চিহ্নিত করতে এবং সমাধান করতে উৎসাহিত করে। এর ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয় এবং টেকসইতা বৃদ্ধি পায়।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক সুরভী ঘোষ বলেন, “ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি একটি স্বাভাবিক বিষয়, যা বিভিন্ন উৎস থেকে আসতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই সমস্যাগুলো আরও কার্যকরভাবে মোকাবেলার জন্য নতুন নীতিমালা এবং সুপারভিশন ডিপার্টমেন্টের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে কাজ করছে।”
সম্মেলনে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন মেহেরিয়ার এম হাসান বলেন, “প্রতিদিনই ব্যাংকগুলো নানা ধরনের ঝুঁকির মুখোমুখি হয়, যা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন। আমাদের ফ্রন্টলাইন সহকর্মীদের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা আজকের এই সম্মেলনটি ঝুঁকি ও এর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তাঁদের জ্ঞান বৃদ্ধি করবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আজকের আয়োজন থেকে অর্জিত জ্ঞান তাঁরা কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঝুঁকি মোকাবেলা করতে পারবেন।”
ব্র্যাক ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও বোর্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারপারসন সালেক আহমেদ আবুল মাসরুর বলেন, “একটি মূল্যবোধনির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা উন্নত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও সুশাসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিই। আমাদের এ যাত্রায় বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকনির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা আমাদের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে এবং দায়িত্বশীল ব্যাংকিংয়ে নতুন মানদণ্ড তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
বিএনপির মনোনীত সর্ব কনিষ্ঠ এমপি প্রার্থী, ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেত্রী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা বলেছেন, ‘আমাদের গণতন্ত্রের মা, সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও জাতীয় ঐক্যের প্রতিক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর অন্যায়ভাবে জুলুম নির্যাতন করায় এবং চিকিৎসা করতে না দেয়ায়, আজ তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আমরা আমাদের মায়ের রোগমুক্তির জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
তিনি আরও বলেন, শেরপুর-১ আসনে এর আগে চারদলীয় জোটের প্রার্থী ছিলেন মরহুম কামারুজ্জামান চাচা। তিনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তার ফাঁসি দেয়া নিয়ে সত্য-মিথ্যার বেড়াজাল রয়েছে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী বিষয়টি নিয়ে কিছু বলছে না। তারা কামারুজ্জামান চাচাকে ভুলেই গেছে। আমি এমপি হতে পারলে কামরুজ্জামান চাচার স্বপ্ন চক্ষু হাসপাতালসহ সবগুলো পূরণ করার চেষ্টা করব। তিনি আরও বলেন উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকাগুলোতে অবশ্যই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করব। ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা ২ ও ৩ ডিসেম্বর শেরপুর পৌরসভার তাতালপুর এবং নওহাটা এলাকায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এ সময় শেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যক্ষ এবিএম মামুনুর রশীদ পলাশ, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপন, সাবেক কোষাধ্যক্ষ এমদাদুল হক মাস্টারসহ স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জামালপুর সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান নওশাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, হামলার শিকার রাশেদুল হাসানের ছেলে তানভীর আল হাসান, স্ত্রী চামেলী আক্তার, ভাই এরশাদ হোসেন, জাহিদ হাসান জুয়েল, বোন নাদিয়া ইসলামসহ এলাকাবাসী।
এ সময় বক্তারা বলেন, গত ২৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে শহরের বুড়ির দোকান মোড় এলাকায় একদল সন্ত্রাসী রাশেদুল হাসানের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় রাশেদুল হাসানের ছেলে তানভীর আল হাসান বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করে।
তানভীর আল হাসান বলেন, হত্যার উদ্দেশে আমার বাবার মাথায় একাধিক আঘাত করা হয়েছে। এখনো তিনি মৃত্যুশয্যায় হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ ঘটনায় জামালপুর সদর থানার ওসি নাজমুস সাকিব বলেন, আজকের মানববন্ধনের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পারলাম। আদালতের কোন আদেশ এখনো হাতে পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গৌরবময় মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্মরণীয় দিন ৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবস। দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে ঠাকুরগাঁওয়ের সর্বস্তরের মানুষ। বুধবার সকালে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব মাঠে স্থাপিত শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সংবলিত স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়।
১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর দখল থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয় সীমান্তবর্তী এই জেলা। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী লড়াই এবং সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় শত্রুবাহিনীকে পরাজিত করে ঠাকুরগাঁওয়ে উড়ে যায় বিজয়ের লাল-সবুজ পতাকা।
ঐতিহাসিক এই দিনটিকে সকালে স্মরণ করে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের উদ্যোগে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সংবলিত স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। আলোচনা সভা, র্যালি, দোয়া মাহফিলসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলাজুড়ে পালিত হচ্ছে মুক্ত দিবস।
জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, ‘৩ ডিসেম্বর কেবল একটি তারিখ নয় এটি ঠাকুরগাঁওবাসীর আত্মমর্যাদা গৌরব এবং স্বাধীনতার স্বাক্ষর। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এ দিনের গুরুত্ব অপরিসীম।’
দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বর্ণিলভাবে উদযাপিত হচ্ছে ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবস, আর সর্বস্তরের মানুষের মাঝে বিরাজ করছে আনন্দ ও গর্বের আবহ।
স্থানীয় সূত্রে জানায়, ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় জেলার ১০টি থানা মিলে ওই মহকুমা ছিল। এ অঞ্চলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণান্তকর লড়াই আর মুক্তিকামী জনগণের দুর্বার প্রতিরোধে নভেম্বরের শেষ দিক থেকেই পিছু হটতে শুরু করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। চূড়ান্ত বিজয় আসে ৩ ডিসেম্বর এই দিনটিতে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাক হানাদাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠাকুরগাঁওয়ের নিরীহ মানুষের ওপর। এ সময় হানাদাররা গ্রামে গ্রামে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এরপর ১৫ এপ্রিল আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকবাহিনীর দখলে চলে যায় ঠাকুরগাঁও। ঠাকুরগাঁওয়ের ইসলামনগর থেকে ছাত্রনেতা আহাম্মদ আলী, ইয়াকুব আলী, মাজারুল, দবিরুল ইসলাম, নুরুজ্জামান ও সিরাজউদ্দীনকে ধরে এনে হানাদার বাহিনী ঠাকুরগাঁও ক্যাম্পে আটক করে রাখে। পরে তাদের হত্যা করে টাঙ্গন নদীর পাড়ে ফেলে রাখা হয়। যেখানে বর্তমানে বধ্যভূমি গড়ে তোলা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও তখন ছিল ৬ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। কমান্ডার ছিলেন বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার এম খাদেমুল বাশার। এ সেক্টরে প্রায় ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ছিল। ২৯ নভেম্বর এ মহকুমার পঞ্চগড় থানা প্রথম শক্রমুক্ত হয়। পঞ্চগড় হাত ছাড়া হওয়ার পর হানাদার বাহিনীর মনোবল ভেঙে যায়। এরপর তারা প্রবেশ করে ঠাকুরগাঁওয়ে।
২ ডিসেম্বর রাতে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচুর গোলাগুলি শুরু হয়। ওই রাতেই শক্রবাহিনী ঠাকুরগাঁও থেকে পিছু হটে ২৫ মাইল নামক স্থানে অবস্থান নেয়। ৩ ডিসেম্বর ভোরে ঠাকুরগাঁও শহর শক্রমুক্ত হয়। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ফাড়াবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধার বাবা শেখ শহর আলী ও তার ভাই শেখ বহর আলীসহ ১৯ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরে এনে হত্যা করে। তাদের মরদেহ আব্দুর রশিদ ডিগ্রি কলেজের পাশের একটি কূপে ফেলে দেয়। হানাদার বাহিনী ও তার দোসররা গণহত্যা চালায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জাঠিভাঙ্গা গ্রামে। সেখানে স্থানীয় কিছু লোকের সহায়তায় আশ-পাশের অনেক গ্রামের প্রায় ৩ হাজার নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরে এনে হানাদার বাহিনী গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। পরে তাদের মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়। ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক স্থানে গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসররা।