পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে সারাদেশে যখন আনন্দমুখর পরিবেশ তখন বিপরীত চিত্র সিলেট বিভাগের চার জেলায়। এখানে ঈদে কোরবানি পালন হয়েছে ঠিকই কিন্তু, ঈদের দুই তিন দিন থেকে পাহাড়ি ঢল আর অতিবর্ষণে নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় প্লাবিত হয়ে পড়ে নিম্নাঞ্চল। সেই পানি বাড়তে বাড়তে এখন টইটম্বুর হয়ে বিপৎসীমার ওপরে চলে গেছে শহরের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী সুরমা নদী। পুরো জেলায় শুকনো মাঠ খুঁজে পাওয়া এখন দায়। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পর ঈদের দিন থেকেই সিলেট শহরে ঢুকে গেছে বন্যার পানি। গত ২০ দিনের মধ্যে সিলেটে এটি দ্বিতীয় দফায় প্লাবিত হওয়ার ঘটনা।
সিলেট ব্যুরো প্রধান দেবাশীষ দেবু জানান, এদিকে সৃষ্ট বন্যায় ঝুঁকিতে পড়েছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকার বিদ্যুতের সাবস্টেশন। সুরমা নদী ছাপিয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এটি প্লাবিত হলে দক্ষিণ সুরমার প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়তে পারেন।
গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষায় কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। তাদের সহায়তা করছে সিলেট সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগ। নদীর পাড়ে বালির বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করছে তারা।
এদিকে, পানি বেড়ে যাওয়ায় সিলেটের প্রায় সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। এসব পর্যটন কেন্দ্রে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ওইদিন বিকেলে সেনাবাহিনীর এক টিম নিয়ে সাব-স্টেশনটি পরিদর্শন করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এ সময় তিনি বলেন- এই সাব-স্টেশনে কোনো সমস্যা হলে চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হবে। এ ছাড়া যাতে পানি না উঠে সে জন্যও কাজ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি উপ-কেন্দ্রটি সিলেটে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেট-৩ এর অধীনস্থ। এই উপ-কেন্দ্রের মাধ্যমে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন, বরইকান্দি, কামালবাজার, মাসুকগঞ্জ, বিসিক, লালাবাজার, শিববাড়ী ও কদমতলীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
বিউবো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেট-৩ নির্বাহী প্রকৌশলী শ্যামল চন্দ্র সরকার বলেন, উপকেন্দ্রটি ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি উঠার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখনো উঠেনি। আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। সেনাবাহিনীও সাহায্য করছে।
এর আগে ২০২২ সালের বন্যায়ও তলিয়ে গিয়েছিলো এ বিদ্যুৎকেন্দ্র।
উল্লেখ্য, ২০ দিনের মাথায় দ্বিতীয় দফা পানিতে ভাসছে সিলেট। সোমবার ঈদের দিন সকাল থেকে সিলেটের অধিকাংশ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়।
সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ
সিলেটের বেশির ভাগ পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থান গোয়াইনঘাট উপজেলায়। এ উপজেলায় উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি ঘটায় জননিরাপত্তা বিবেচনায় জাফলং, জলারবন রাতারগুল, বিছনাকান্দি ও পান্থুমাই পর্যটন স্পট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এসব স্পটে পর্যটকরা আসতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক ও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম।
এছাড়া কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্রেও পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সিসিকের ছুটি বাতিল
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর।
তিনি জানান, গত মঙ্গলবার দুপুর ১টায় দক্ষিণ সুরমায় সিটি করপোরেশনের ২৮ ও ২৯ নং ওয়ার্ডের আশ্রয়কেন্দ্রে যান সিসিক মেয়র। এ সময় তিনি বন্যা দুর্গতদের জন্য সিসিকের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এরপর দক্ষিণ সুরমায় সিসিকের ২৬নং ওয়ার্ডের টেকনিক্যাল কলেজ রোডসহ কয়েকটি বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
সিলেট জেলায় আক্রান্ত প্রায় চার লাখ
সিলেটের জেলা প্রশাসন থেকে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে জেলার কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও জকিগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে। বন্যার্তদের জন্য জেলায় ৬১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান।
মৌলভীবাজারে ডুবল ৩৩২ গ্রাম, দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি:
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, গত কয়েকদিনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যায় মৌলভীবাজারের ছয় উপজেলার ৩৭ ইউনিয়নের ৩৩২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে এক লাখ ৯৩ হাজার ৯৯০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে বড়লেখা উপজেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে তালিমপুর ইউনিয়নের টেকাহালী উচ্চ বিদ্যালয় ও হাকালুকি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা কয়েকটি পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার ও স্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলোর মধ্যে বড়লেখার ১০টি, জুড়ীর ছয়টি, কুলাউড়ার ছয়টি, সদরের চারটি ও রাজনগর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন, শ্রীমঙ্গল পাঁচটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম বুধবার (১৯ জুন) সকালে জানিয়েছেন, জেলার ৬টি উপজেলায় মোট ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৭১টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। ৫৬টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পানিবন্দি লোকদের উদ্ধারের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় তৎপরতা চালানো হচ্ছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়গুলোতে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।
সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যার্তদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান ও উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবক টিম (স্কাউট, রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, যুব রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পুরো জেলায় বন্যা পরিস্থিতির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
মৌলভীবাজার পওর বিভাগ, বাপাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জানান, বুধবার সকাল ৯টায় ধলাই নদী (রেলওয়ে ব্রিজ) এলাকায় পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর মনু নদী (চাঁদনীঘাট) এলাকায় পানি বিপৎসীমার আট সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ১৯৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর (শেরপুর) পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুলাউড়া প্রতিনিধি জানান, টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ঈদের দিন ভোররাত থেকে শুরু হওয়া ভারি বর্ষণ এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। পাহাড়ি ঢল ও তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলা পরিষদ এলাকা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পৌর শহরের মাগুরা, সাদেকপুর, বিহালা, সোনাপুর, কাদিপুর ইউনিয়নের ছকাপন, মৈন্তাম, ভাগমতপুর, গুপ্তগ্রাম, তিলকপুর, ভূকশিমইল ইউনিয়নের সাদিপুর, কোরবানপুর, মুক্তাজিপুর, জাবদা, কালেশার, কাইরচক, চিলারকান্দি, কানেহাত, জয়চণ্ডী ইউনিয়নের ঘাগটিয়া, মিরবক্সপুর, কামারকান্দি, কুটাগাঁও, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের দেখিয়ারপুর, কুলাউড়া গ্রাম, বনগাঁও, গাজীপুর আংশিকসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও প্লাবিত হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত কুলাউড়ার ৬০টি গ্রাম ও এলাকা প্লাবিত। এসব গ্রাম ও এলাকার লক্ষাধিক মানুষ বন্যা আক্রান্ত। এ ছাড়া ২২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে ১৯৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ১৪টি মেডিকেল টিম গঠন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার দিনব্যাপী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে খাবার বিতরণ করেন মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য, স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) সাদরুল আহমেদ খান।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, জেলার সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জ শহরে আশ্রয়কেন্দ্রে এসে খাবারের কষ্টে পড়েছেন সুনামগঞ্জের বন্যার্তরা। শিশুদের নিয়ে মায়েরাও রয়েছেন কষ্টে। ক্ষিদে সহ্য করতে না পেরে কান্নাকাটি করছে শিশুরা। বুধবার বেলা আড়াইটায় শহরের এইচএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।
সুনামগঞ্জ শহরের ময়নার পয়েন্টে ভাড়া বাসায় থাকেন আরিফুলন্নেছা। তিনি জানালেন, ঘরে কোমর সমান পানি। গত কয়েকদিন বন্যার জন্য তার গাড়ী চালক স্বামীর কোন রোজগার হয়নি। দুই দিন আগে এখানে এলেও তারা কোন সহায়তা পান নি। রান্না-বান্না করার সুযোগও নেই। কোন রকম দিন কাটছে তাদের। তিনি জানান, আজ সকালে একজন এসে পাউরুটি ও কলা দিয়েছে।
আরিফুলন্নেছার কথার সমর্থন জানালের পাশে থাকা তাসলিমা। এ সময় খাবারের জন্য ছোট্ট শিশু কান্না করায় শাসন করতে দেখা যায় তাসলিমাকে।
আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মিনা লাল, রিতা লাল, সাম, রাবেয়া, সাজন বললেন, মঙ্গলবার থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে আছি। কেউ আমাদের এখনও সাহায্য করেনি। হাতে টাকাও নেই, তাই কিছু কিনতেও পারছি না। বললেন, আপনারা দয়া করে কিছু করুন।
শান্তিবাগের বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক (একজন নাইট ডিউটি করেন ও অন্যজন দিনমজুর) বললেন, ঘরে কোমর পানি। ঘরের জিনিসপত্র কিছু আসার সময় নিয়ে এসেছি, কিছু পাশের আরেক বাসায় রেখেছি। অন্যান্য সব কিছু পানির নীচে। বললেন, এখানে বাথরুম ও খাবার পানির সুবিধা থাকলেও খাবার কষ্টে আছি আমরা। সরকারি কোন ধরনের সহযোগিতা পাইনি। মঙ্গলবার রাতে আমরা আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছি। আজ (বুধবার) সকালে এক বোতল পানি ও নাটি বিস্কুট দিয়ে গেছে একজন।
এদিকে তেঘরিয়ার বাসিন্দা পত্রিকা বিপণন কর্মী নুর হোসেন বললেন, তেঘরিয়া মসজিদে আশ্রয় নিয়েছি। আমাদের পাড়ার ২০ ঘর এখানে আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ সহায়তা করেনি। তিনি বলেন, বন্যার পানির সঙ্গে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা ঘর-বাড়িতে গিয়ে ঢুকছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বললেন, ৫৪১ টি আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেছেন ১৮ হাজার ৪২৯ জন বন্যার্ত মানুষ। যারা আশ্রয় কন্দ্রে এসেছেন সকলেই খাবার নিয়ে উঠেছেন। যারা খাবার নিয়ে উঠেননি তারা চাইলেই শুকনো খাবারসহ খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
শুষ্ক মৌসুমে কখনো গলা, কখনো কোমর, কখনোবা হাঁটুপানি থাকে বমুখালে। এ পানি পেরিয়ে শিশুদের যেতে হয় বিদ্যালয়ে। খাল পার হওয়ার সময় পানিতে ভিজে যায় কাপড়, বই খাতাও। এই অবস্থা চলছে কয়েক বছর। আবার বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টিতে খাল ভরপুর হয়ে গেলে ওপারের সব শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেয়। এতে শিক্ষায় পিঁছিয়ে পড়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিক্ষার্থীরা। একান্ত আলাপকালে এমনটিই জানালেন-লামার বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি দাশ।
শ্যামল কান্তি দাশ বলেন, ব্রিজ না থাকায় এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে শিশুদের সাঁতার শিখতে হয়। না হয় বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। অনেক সময় খাল পারাপারের ভয়ে অধিকাংশ অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠান না। শুধু তায় নয়, বটতলীপাড়া থেকে গজালিয়া উচ্চবিদ্যালয়েও প্রায় দুইশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন এ খাল পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করে।
শিক্ষক শ্যামল কান্তি দাশ জানান, গত ১৫ নভেম্বর পারাপারের সময় এক শিক্ষার্থী পানিতে ভেসে গেলে সহপাঠীদের চিৎকারে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। যদি বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের এই বমুখালে একটি ব্রিজ নির্মিত হতো, তাহলে শিশু শিক্ষার্থীরা এই ঝুঁকি থেকে রেহাই পেত, পাশাপাশি যাতায়াতের সুবিধা পেত দুইপারের কয়েক হাজার স্থানীয় বাসিন্দাও।
জানা যায়, উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বটতলীপাড়া বমুখালের এক পাড়ে বটতলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭০টি বসতি পরিবার। অন্য পাড়ে রয়েছে পূর্ববটতলীপাড়া, তুলাতলী হামিদচরপাড়া, তুলাতলী মুরুংপাড়া, চিন্তাবরপাড়াসহ ৯টি পাড়ার প্রায় ৫ হাজার পাহাড়ি-বাঙালি জনবসতি। প্রতিদিন বটতলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গজালিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীসহ সহস্রাধিক স্থানীয় বাসিন্দা এই খাল পার হয়ে বটতলী-গজালিয়া বাজারে যাতায়াত করে আসছেন। বিশেষ করে ব্রিজ না থাকায় কৃষিপণ্য বাজারজাতে চরমভাবে বিঘ্ন ঘটছে। এতে কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়েন।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য খাল পার হচ্ছিল। দুই-একজন ক্লান্তও, নিচ্ছিল দম। তীরে উঠেই রোদে ভেজা জামা- কাপড় শুকাচ্ছিল কয়েকজন।
এ সময় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা মো. ছগির উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন- গত ১৫ নভেম্বর দুই শিশু সাঁতার কেটে পশ্চিমপাড়া আসছিল। কিন্তু খালের মাঝখান থেকে নাজিম উদ্দিন নামে এক শিশু ভেসে যায়। সঙ্গে থাকা শিশুটির চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে এসে প্রায় তিনশ ফুট দূর থেকে ভেসে যাওয়া ওই শিশুটিকে উদ্ধার করেন।
বটতলীপাড়ার গ্রাম সরদার মো. মনির উদ্দিন জানান, আমাদের কাছে এই দৃশ্য নতুন কিছু নয়। দীর্ঘবছর ধরে এ অবস্থা চললেও খালে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ স্থানীয় প্রশাসন নিয়েছে কি না, জানি না।
চতুর্থ শ্রেণির রোকশানা আক্তার (৯) বলে, বাড়ি তুলাতলী হামিদ চরপাড়া গ্রামে। পড়ালেখাকরি বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। দুই পাড়ার মাঝখানে বয়ে যাওয়া বমু নামক এই খাল সাঁতরে আমার যেতে হয় বিদ্যালয়ে। ‘খাল পার হতে আমার অনেক ভয় হয়। শিশু শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত অনেক কষ্ট করেছি। আমরা এই খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের দাবি করছি।
একই কথা জানায় তৃতীয় শ্রেণির শফিকুল ইসলাম, আনিশা আক্তার ও পঞ্চম শ্রেণির মো. রাহান মিয়াও।
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শামসুল হক বলেন, ‘আমার দুই ছেলে এই বিদ্যালয়ে পড়ে। সপ্তাহখানেক আগে আমার এক ছেলে খাল পার হতে গিয়ে খালের কুমে পড়েছিল, আমি এসে উঠিয়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিয়েছি। বমুখালের ওপর একটি ব্রিজ হলে ভালো হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশিষ বিশ্বাস বলেন, বমুখালের বটতলীপাড়া বিদ্যালয়-সংলগ্ন স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উসাচিং মার্মা জানান, বমুখাল পাড়ি দিয়ে বটতলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ গজালিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এলাকার লোকজন দীর্ঘদিন ধরে বমুখালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের দাবি করে আসছেন। ব্রিজটি নির্মাণ হলে কৃষকরাও উপকৃত হবেন।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা প্রকৌশলী আবু হানিফ বলেন, শিশু শিক্ষার্থী এবং জনস্বার্থে ওই খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ জরুরি। আমরা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বটতলী ও পূর্ব বাইশফাঁড়িতে ব্রিজ স্থাপনের জন্য প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করব।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মিয়াপুর ক্ষেতুপাড়া শাখার গ্রামীণ ব্যাংকের সাইনবোর্ডে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার রাতের যেকোনো সময় আগুন দেওয়া হয়। স্থানীয়দের ধারণা ব্যাংকে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল দুর্বৃত্তরা। কিন্ত সাইনবোর্ডের আগুন দেখেই স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে।
জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় আগুন দেওয়ার ঘটনার জের ধরে সাঁথিয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের একটি শাখায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার গভীর রাতে উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের মিয়াপুর ক্ষেতুপাড়া শাখায় দুর্বৃত্তরা ব্যাংকের সাইনবোর্ডে তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় সাইনবোর্ডের অংশ পুড়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আগুনের ভিডিওতে দেখা যায় কে বা কারা প্রথমে সাইনবোর্ডে তেল জাতীয় কিছু ঢালছে। পরে তাতে আগুল লাগিয়ে দেয়।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনিসুর রহমান জানান, গ্রামীণ ব্যাংকে আগুন দেওয়ার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা রুজু হবে।
চট্টগ্রামের হালদা নদীতে অবৈধভাবে ইঞ্জিনচালিত ড্রেজার চালনার মাধ্যমে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের অপরাধে তিনজনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার বিকালে হালদা নদীর মদুনাঘাট এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শাহেদ আরমান বলেন, হালদা নদীতে অভিযান পরিচালনা করার সময় অবৈধভাবে ইঞ্জিনচালিত ড্রেজার চালনার মাধ্যমে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের অপরাধে মো. ইব্রাহিম, মো. হান্নান ও মো. সবুজকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযান পরিচালনাকালে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শওকত আলী, নৌপুলিশ এবং হালদার সংশ্লিষ্ট পাহারাদার সহযোগিতা করেন।
মিয়ানমার থেকে মাদকের বিনিময়ে বাংলাদেশি সিমেন্ট পাচারের সময় ৯ চোরাকারবারিকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। সোমবার বিকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, একটি চক্র মিয়ানমার থেকে ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য এনে তার বিনিময়ে বাংলাদেশি পণ্য পাচার করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার সকাল ৯টার দিকে কোস্ট গার্ড জাহাজ কামরুজ্জামান সেন্টমার্টিনের ছেড়াদ্বীপের দক্ষিণ–পূর্ব-সংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে একটি সন্দেহজনক ফিশিং ট্রলার থামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় ট্রলার থেকে শুল্ককর ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে বহন করা প্রায় ২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা মূল্যের ৪৫০ বস্তা সিমেন্ট জব্দ করা হয়। আটক করা হয় ৯ চোরাকারবারিকে।
জব্দ করা মালামাল, ট্রলার ও আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোস্ট গার্ডের ওই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, ‘পাচার ও চোরাচালান রোধে কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
নওগাঁর মান্দায় ৬০ বস্তা রাসায়নিক সার জব্দ করেছে উপজেলার প্রশাসন। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ভারশোঁ বাজারের পাশ থেকে সারগুলো জব্দ করা হয়। এর আগে স্থানীয়রা সারগুলো তিনটি ভটভটিতে করে পরিবহনের সময় আটক করে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন মান্দা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাবিল নওরোজ বৈশাখ ও উপজেলা কৃষি অফিসার শায়লা শারমিন।
কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মান্দা উপজেলার দেলুয়াবাড়ি বাজারে ডিলারের কাছ থেকে ২০ বস্তা টিএসপি ও ৪০ বস্তা এমওপি সার কিনে পলেথিন দিয়ে ঢেকে তিনটি ভটভটিতে করে চৌবাড়িয়া হাটের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। দেলুয়াবাড়ি-চৌবাড়িয়া সড়কের মাঝামাঝি ভারশোঁ গ্রামের বাজারের পাশে স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহ হলে ভটভটি আটকিয়ে চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে সারগুলো দেলুয়াবাড়ি বাজারে ডিলারের কাছ থেকে কিনে রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার তালান্দো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানা যায়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ সময় টহলরত সেনাবাহিনীও সেখানে উপস্থিত হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অফিসারকে জানানো হলে ঘটনাস্থলে তারা আসেন। তবে সারের মালিকদের এ সময় পাওয়া যায়নি। পরে সারগুলো জব্দ করা হয়।
কৃষকদের অভিযোগ- ডিলারদের কাছে তারা চাহিদা মতো সার পান না। অথচ বেশি দাম দিয়ে কালোবাজারে বাইরের উপজেলার কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। কৃষি অফিসের নজরদারি না থাকায় ডিলাররা সুযোগ নিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
মান্দা উপজেলা কৃষি অফিসার শায়লা শারমিন বলেন, সারগুলো দেলুয়াবাড়ি বাজারে তিনজন ডিলারের কাছ থেকে বাইরের উপজেলার কৃষকরা কিনেছিল বলে জানতে পেরেছি। তবে ঘটনাস্থলে ক্রেতারা ছিলেন না। পরে সারগুলো জব্দকরে কুসুম্বা ইউনিয়নের পরিষদে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের মাঝে সারগুলো বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।
পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের ঘটখালী এলাকায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে একদল ডাকাত লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। পরে স্থানীয় জনতার হাতে একজন ডাকাত আটক হয়।
জানা গেছে, গত রোববার রাতে ঘটখালী বিএম অটো গ্যাস পাম্পের পাশে মঞ্জুগাজীর মেশিনারিক দোকানে ৭-৮ সদস্যের একটি ডাকাত দল ডাকাতি করে। খবর পেয়ে আমতলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদের ধাওয়া করে।
পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ডাকাতরা প্রথমে মহিপুরে যায়, সেখানে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ডাকাতদল আবারও আমতলীর দিকে ফিরে আসে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ পুনরায় তাদের ধাওয়া দিলে ডাকাতরা কুকুয়া ইউনিয়নের হাজারটাকার বাঁধ এলাকায় প্রবেশ করে।
এ সময় স্থানীয় জনতা ডাকাত আমিরুল ইসলামকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
আমিরুল ইসলাম পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার রাধানগর এলাকার ফোরকান শেখের ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতদের ব্যবহৃত একটি পিকআপ গাড়ি জব্দ করেছে।
স্থানীয়দের দাবি, পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ডাকাতদল গাড়ি ফেলে পালিয়ে যাচ্ছিল। এলাকাবাসী ধাওয়া দিয়ে একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, আমতলী ও মহিপুর থানায় দুজন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া অন্য ডাকাতদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
কেশবপুরের উন্নয়ন, জনসেবা, সুসমন্বয় ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার বিষয়ে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন যশোরের নতুন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশেক হাসান। তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন আগামী জাতীয় নির্বাচনকে। তিনি বলেছেন, আগমী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরাপেক্ষ করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রশাসন দায়িত্ব পালন করবেন, তবে সমাজের সব স্তরের মানুষের সম্মিলিত ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সোমবার সকালে কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারী, গণ্যমান্য ব্যক্তি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই বক্তব্য তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে এ মতবিনিময় হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেশবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ নেওয়াজ, কেশবপুর থানা ওসি মো. আনোয়ার হোসেন, কেশবপুরের সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস ছামাদ বিশ্বাস, উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মোক্তার আলী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুর রাজ্জাক, পল্লী বিদ্যুৎ কেশবপুরের ডিজিএম মো. আব্দুর রব, জামায়াতের আমীর জাকির হোসেন, কেশবপুর নিউজ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনার রশীদ বুলবুল, প্রেসক্লাব কেশবপুরের সভাপতি ওয়াজেদ খান ডবলু, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রকোনুজ্জামান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. ফিরোজ খান, এনপিপির সম্রাট হোসেনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় নেতারা।
বরগুনার নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক তাসলিমা আক্তার বলেছেন, সামনে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে কোন দল বা ব্যক্তির আলাদা সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রশাসনের কারো দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনকে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে।
সোমবার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়ন পরিষদ, পাথরঘাটা থানা, পাথরঘাটা পৌরসভা এবং উপজেলা পরিষদ- পরিদর্শন করে এ কথা বলেন তিনি।
পরিদর্শন শেষে তিনি উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে সর্বস্তরের জনসাধারণ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সভায় বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক তাসলিমা আক্তার। বক্তারা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এলাকার সমস্যা, সম্ভাবনা ও উন্নয়ন অগ্রগতির নানা বিষয় উপস্থাপন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস- উদযাপন উপলক্ষে নান্দাইল উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১২টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা জান্নাত । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনাব রেবেকা সুলতানা ডলি। জনাব শামীমা সুলতানা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবাব পরিকল্পনা কর্মকর্তা। নান্দাইল, ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুর থানার ইনচার্জ মেজর মুর্শেদ আলী।
নান্দাইল থানা অফিসার ইনচার্জ জনাব খন্দকার জালাল উদ্দীন মাহমুদ।
রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত জনাব মিজানুর রহমান লিটন , যুগ্ম আহবায়ক উপজেলা বি.এন.পি, জনাব নজরুল ইসলাম ফকির যুগ্ম আহবায়ক নান্দাইল পৌর বিএনপি, মনিরুজ্জামান মনির সদস্য সচিব নান্দাইল পৌর বিএনপি।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কালোব্যাজ ধারণ, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এছাড়া ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস- যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য প্রভাতফেরি, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, উপজেলা পরিষদ চত্বরে আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান, কুচকাওয়াজ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠান সুন্দর ভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন উপ - কমিটি গঠিত হয়।সভায় উপস্থিত ছিলেন , বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক সমাজ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সভায় বক্তারা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগ ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “জাতীয় দিবসগুলোকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সবার সহযোগিতায় অনুষ্ঠানগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।”
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর উদ্যোগে সিভিল এভিয়েশন একাডেমিতে আজ ২৪ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে Boarding Bridge Operation Course (Batch-02) এর সনদ প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে Boarding Bridge Operator হিসেবে কর্মরত ১০ জন অংশগ্রহণকারী ১০ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত চলমান এই কোর্সে অংশগ্রহণ করেন।
দুই সপ্তাহব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজ পরিচালনার দক্ষতা বৃদ্ধি, নিরাপদ অপারেশন নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী যাত্রী সেবা উন্নত করা। উল্লেখ্য, বোর্ডিং ব্রিজ বিমান ও যাত্রীর সংযোগ তৈরি করে—যা নিরাপত্তা, সময়ানুবর্তিতা এবং যাত্রীসেবার মানের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। তাই এই প্রশিক্ষণ কোর্স অপারেশনাল কার্যক্রমকে আরও কার্যকর ও নির্ভুল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে সিভিল এভিয়েশন একাডেমির পরিচালক জনাব প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী বলেন “Boarding Bridge Operation Course বিমানবন্দরের নির্বিঘ্ন যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার একটি অপরিহার্য প্রশিক্ষণ। যাত্রীদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময ভ্রমন নিশ্চিত করতে বোর্ডিং ব্রিজের সঠিক ও দক্ষ ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক মান অনুসারে বোর্ডিং ব্রিজ পরিচালনা করতে হলে অপারেটরদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা, মনোযোগ এবং পরিস্থিতি মূল্যায়নের সক্ষমতা থাকতে হয়—এবং এই কোর্স সেই দক্ষতা অর্জনে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জনাব শাহরিয়ার মোর্শেদ সিদ্দিকী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী(ই/এম) চঃদাঃ, জনাব জাহাঙ্গীর আরিফ, নির্বাহী প্রকৌশলী(ই/এম) চঃদাঃ ও জনাব মোঃ খোরশেদুল ইসলাম , নির্বাহী প্রকৌশলী(ই/এম)চঃদাঃ ।
বাগেরহাটের সার্বিক উন্নয়ন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন বাগেরহাটের নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন। তিনি বলেছেন, সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। তাই উন্নয়ন ও সুশাসনের যাত্রায় আপনাদের সমর্থন, পরামর্শ বাগেরহাটকে এগিয়ে নিতে সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে উঠবে। গত রোববার মতবিনিময় সভায় মিলিত হন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে এটিই ছিল জেলা প্রশাসকের প্রথম আনুষ্ঠানিক মতবিনিময়।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সভায় জেলার শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি এবং উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) জয়দেব চক্রবর্তী।
সাংবাদিকরা বাগেরহাটের দীর্ঘদিনের চলমান সমস্যা, সম্ভাবনা, উন্নয়ন প্রকল্প এবং সমস্যা প্রতিকারমূলক উদ্যোগ নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন।
সভায় বক্তব্য দেন প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক তরফদার রবিউল ইসলাম, আমিরুল হক বাবু, সিনিয়র সাংবাদিক বাবুল সরদার, মোয়াজ্জেম হোসেন মজনু, মো. ইয়ামিন আলী, মো. আরিফুল ইসলাম, এসএস সোহান, তানজিম আহম্মেদ প্রমুখ।
শীতের শুরুতে কুমিল্লার বাজারে নানা শীতকালীন সবজির আমদানি বেড়েছে। ক্রেতাদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। তবে আশানুরূপ সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও সবজির দাম কমছে না; বরং এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ভোক্তারা।
সাধারণত শীতের মৌসুমে সবজির দাম কমে আসে। কিন্তু এবার তার উল্টো চিত্র। কুমিল্লার নিউমার্কেট, রাজাগঞ্জ, রানীরবাজার, চকবাজার, মগবাড়ী চৌমুহনী, বাদশামিয়া বাজার, টমছমব্রিজ, ইয়াছিন মার্কেট, ক্যান্টনমেন্ট, কংসনগর, দেবিদ্বার ও কোম্পানীগঞ্জসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়- সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বাজারে যেসব সবজির দাম বেড়েছে : ঢেঁড়স ও পটোল: ১০০ টাকা কেজি (গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা), শিম: ১১০–১৪০ টাকা কেজি, বেগুন: ৮০–১২০ টাকা কেজি, করলা: ১২০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা: ৮০–১০০ টাকা কেজি, লাউ (লম্বা): ৮০–৯০ টাকা পিস, ফুলকপি: ৫০–১০০ টাকা পিস, বাঁধাকপি: ৫০–৬০ টাকা পিস, মিষ্টিকুমড়া: ৫০–৬০ টাকা, কাঁচামরিচ: ১৬০–২০০ টাকা, বরবটি: ১০০ টাকা,মুলা: ৭০–৮০ টাকা, পেঁপে: ৫০ টাকা, কচুর লতি: ৮০ টাকা, পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও এখনো চড়া, পেঁয়াজের কেজি ১০৫–১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজকলির দাম ৭০–৯০ টাকা কেজি।
আলুর বাজারেও অস্বাভাবিক চিত্র: সাধারণত এই সময়ে আলুর দাম ৫০–৬০ টাকা কেজি থাকে। কিন্তু এখন ৫ কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০ টাকায়, যা উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
এনাম, রিহাদসহ একাধিক বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজারগুলোতে সবজির ঢল থাকলেও এ বছর সরবরাহ কমেছে। উৎপাদন এলাকায় বৃষ্টির কারণে ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে আড়তে দাম বাড়ছে, আমরাও বেশি দামে কিনে আনতে বাধ্য হচ্ছি।
দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা: স্কুলশিক্ষক হাসিনা, মুন্নী, সাংবাদিক আবদুর রহমান, এম হাসানসহ কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বছর শীত এলেই সবজির দাম কমে যায়। কিন্তু এবার উল্টো- সব কিছুর দামই দ্বিগুণ। সাধারণ মানুষের অবস্থার কথা কেউ ভাবছে না।
ক্রেতারা বলছেন, সরকার দ্রুত পাইকারি ও খুচরা বাজারে তদারকি বাড়ালে দাম স্বাভাবিক হবে। তা না হলে শীতের মৌসুমেও সবজি কিনতে স্বস্তি পাওয়া যাবে না।
তিতাস গ্যাস প্রধান কার্যালয়ের অডিটরিয়ামে "তিতাস গ্যাস" জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) এর অভিষেক ও শপথ অনুষ্ঠান, ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি -এর জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, প্রধান বক্তা হিসেবে জনাব এ্যাড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল -এর প্রধান সমন্বয়ক ও বিশেষ অতিথি হিসেবে জনাব সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা -১২ -এর বিএনপি কর্তৃক মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও প্রকৌ. শাহনেওয়াজ পারভেজ, মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর এবং খন্দকার জুলফিকার মতিন, সভাপতি, তিতাস গ্যাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) সহ শ্রমিক দলের জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
তিতাস গ্যাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ, রেজিঃ নং বি-১৯৪০)-এর সভাপতি, জনাব খন্দকার জুলফিকার মতিন উক্ত অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সভা শুরু করেন। তিনি তিতাস গ্যাসের সিস্টেম লস হ্রাসে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলেন। এছাড়া, তিতাস গ্যাসের কর্মপরিবেশ ঠিক রাখতে সকলে মিলিমিশে কাজ করার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌ. শাহনেওয়াজ পারভেজ নবনির্বাচিত শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ)-এর কমিটিকে অভিনন্দন জানান। তিনি জ্বালানী সেক্টরের সর্ববৃহৎ গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তিতাস গ্যাসের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া, তিতাস গ্যাসের সিস্টেম লস হ্রাসকল্পে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ ও এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে গুরুত্বআরোপ করেন। তিনি তিতাসের শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এ সম্পর্ক আরো উন্নতিকল্পে তাঁর দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথা ব্যক্ত করেন।
উক্ত অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) -এর জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, জনাব নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান ও তিতাস গ্যাসের অতীত উজ্জল ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করেন। জ্বালানী সেক্টরের অন্যতম প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাসের ভাবমূর্তি উজ্জল করার বিষয়ে গুরুত্বআরোপ করেন।
পরিশেষে তিতাস গ্যাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ, রেজিঃ নং বি-১৯৪০)-এর সভাপতি, জনাব খন্দকার জুলফিকার মতিন সবাইকে আবারও ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন।