সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় রাসেলস ভাইপার সাপ যেন এক নতুন আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে। গত কয়েক মাস ধরে এই বিষধর সাপটি নিয়ে ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে নেতিবাচক খবর দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও এই সাপের কারণে মানুষ মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। যে সাপ চরাঞ্চলসহ জনমানবহীন এলাকায় থাকার কথা, সেই সাপ লোকালয়ে বেশি দেখা যাওয়ার খবরে উদ্বেগের কারণ হচ্ছে বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন। কয়েক দিন আগে ভোলার এক বাড়িতে রাসেলস ভাইপারের বসবাস করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
গতকাল শুক্রবার ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেলের দুর্গম চরে বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে একজন কৃষকের মৃত্যর খবর পাওয়া গেছে। ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া কৃষকের নাম হোসেন বেপারী (৫১)। তিনি সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পরেশউল্লা ব্যাপারীর ছেলে।
এদিকে জেলার পার্শ্ববর্তী ডিক্রিরচর ইউনিয়নে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুদিনে দুটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পেয়ে সেগুলো পিটিয়ে মেরেছে গ্রামবাসী।
শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের আইজউদ্দীন মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামে ক্ষেতে কাজ করার সময় একটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পান ওই গ্রামের তোতা মোল্লার ছেলে মুরাদ মোল্লা (৪৫)। মুরাদ মোল্লা বলেন, সকালে বাদামের জমিতে কাজ করার সময় সাপটি নজরে পড়ে। এরপর লাঠি এনে তিন-চারটি বাড়ি মেরে সাপটি মেরে ফেলি।
এর আগের দিন (বৃহস্পতিবার) ওই গ্রামের হারুন শেখের ছেলে ইউসুফ আরও একটি রাসেলস ভাইপার সাপ পিটিয়ে মেরে ফেলেন বলে জানান।
সম্প্রতি বিষাক্ত সাপ রাসেলস ভাইপারকে কেন্দ্র করে সারা দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আবার বলছেন, এসব নাকি গুজব। কেউ আবার এই সাপ মারতে পারলে পুরস্কারও ঘোষণা করেছেন। সব মিলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
ফরিদপুরে রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ মারতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকেলে শহরের রাসেল স্কয়ারে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ইশতিয়াক আরিফ তার বক্তব্যের একপর্যায়ে রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ নিয়ে বলেন, ফরিদপুর কোতোয়ালি এলাকায় কেউ যদি রাসেলস ভাইপার সাপ মারতে পারেন তাহলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া জানান, যেকোনো বন্যপ্রাণী নিধন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। রাসেলস ভাইপার এ দেশ থেকে বিলুপ্ত হওয়ার পরে ২০১৪ সাল থেকে আবার সাপটির দেখা যাচ্ছে। এ সাপের বংশবৃদ্ধির হার বেশি। একবারে একটি মা সাপ ৬০-৭০টি বাচ্চা দেয় এবং প্রায় সবকটি বাচ্চা বেঁচে যায়। এ সাপ সাধারণত চর এলাকায় থাকে। এদের খাবার ব্যাঙ ও ইঁদুর।
তিনি আরও বলেন, ‘পুরস্কারের এ ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ যদি রাসেলস ভাইপার সাপ ধরতে অথবা মারতে গিয়ে সাপের কামড়ে মারা যান, তাহলে এর দায় কে নেবে?’
জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে বেড়ে যাওয়া মারাত্মক বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপারের উপদ্রবে ও দংশনে বাড়ছে মৃত্যুও। বিশেষ করে ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহীসহ পদ্মা নদী-তীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
পদ্মা-তীরবর্তী মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা। এই এলাকার মূল ভূখণ্ড থেকে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামে যেতে হয় নৌকায়, সময় লাগে ১ ঘণ্টা। এই চরেই জেঁকে বসেছে রাসেলস ভাইপারের আতঙ্ক। কেননা গত ৩ মাসে এই সাপের কামড়ে মারা গেছেন ৫ জন। স্থানীয়রা পিটিয়ে মেরেছেন অন্তত ৩৫ থেকে ৪০টি সাপ।
ভুক্তভোগীর একজন স্বজন জানান, তার বোনজামাই ভুট্টা আনতে গিয়ে সাপের কামড় খান। সেই সাপটি রাসেলস ভাইপার ছিল। পরে তার বোন জামাইকে ফরিদপুর মেডিকেলে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে ১০টি ভ্যাকসিন দিলে বিষ নামেনি। পরে ঢাকায় আনার পথে তার বোন জামাইয়ের মৃত্যু হয়।
শুধু মানিকগঞ্জ নয়, ফরিদপুর জেলার পদ্মা তীরবর্তী চরাঞ্চলেও দেখা মিলছে রাসেলস ভাইপারের। ফলে আতঙ্কে চরে কৃষি কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
কৃষকরা জানান, এই সাপের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কারণ কৃষকরা আতঙ্কে জমিতে কাজ করতে পারছেন না। সব সময় তাদের ভয়ের মধ্যে থাকতে হচ্ছে।
রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। যাকে বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলেও পদ্মা-তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় আবারও দেখা মিলছে বিষধর এই সাপের। গবেষকরা বলছে, প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে স্বভাব পরিবর্তন করছে রাসেলস ভাইপার।
সাপ ও সরীসৃপ গবেষক বোরহান বিশ্বাস রমন বলেন, সঠিক সার্ভে না করেই বাংলাদেশ থেকে রাসেলস ভাইপার বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের বিভিন্ন অঞ্চলে এই সাপটি টিকে ছিল। পরবর্তীতে গঙ্গা হয়ে পদ্মা দিয়ে ২০০৯-১০ সালে ভেসে এসে পদ্মার চরাঞ্চলে অবস্থান নেয়। তারা বংশ বিস্তার করে এবং বন্যায় এগুলো বিভিন্ন জেলায় ভেসে যায়। বর্তমানে এই সাপ দেশের ২৮টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। অন্য সাপ যেমন পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে সেখানে এই সাপগুলো এটা করে না। এ ধরনের সাপগুলোর কাছাকাছি যখন মানুষ চলে আসে তারা শব্দ করতে থাকে আবার যখন তার রেঞ্জে মানুষ চলে যায় তখনই আতঙ্কিত হয়ে কামড় দিয়ে বসে।
চন্দ্রবোড়া সাপের দেখা মিলছে যেসব এলাকায়, সেখানকার সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানালেন, সংকট আছে অ্যান্টি ভেনমের। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, অ্যান্টি ভেনেমের কোনো সংকট নেই।
স্বাস্থ্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই সাপগুলোর প্রভাব আগে ছিল না। ভারত থেকে এসেছে বলেই এটি বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের কাছে রাসেলস ভাইপারের যে ন্যাচারাল ক্যারেক্টার আছে এখন এই ক্যারেক্টার অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। ফলে যে অ্যান্টি ভেনম আমরা পুশ করি, সেটি এখন কার্যকর হচ্ছে না।
ছোবল দিলে কী করতে হবে
প্রায় ৪০০০-এর বেশি সর্প দংশনের রোগীর চিকিৎসা দেওয়া ডা. ফরহাদ উদ্দীন হাসান চৌধুরী। এই সাপে ছোবল দিলে কী করতে হবে তা তিনি তার এক পোস্টে লেখেন-
বাংলাদেশের প্রধান ৩টি বিষাক্ত সাপ হলো গোখরা (কোবরা), কেউটে (ক্রেইট) এবং রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া। রাসেলস ভাইপার অপেক্ষাকৃত বেশি বিষধর। অতিসম্প্রতি এই সাপটির প্রকোপ বেড়ে গেছে। তবে এই সাপটি নিজ থেকে তাঁড়া করে কাউকে দংশন করে না। মূলত অসাবধানতাবশত কেউ এই সাপের গায়ে পাড়া দিলে এই সাপটি ছোবল দেয়।
তিনি বলেন, এই সাপের বিষ শরীরে প্রবেশ করলে মূলত শরীরের রক্ত পাতলা হয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বতঃস্ফূর্ত রক্তক্ষরণ হতে পারে, কিডনি বিকল হতে পারে, স্নায়ু অবশ হয়ে ফুসফুসের কার্যকারিতা হারিয়ে যেতে পারে এমনকি হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে। বাংলাদেশে সর্প দংশন প্রতিরোধী যে অ্যান্টিভেনম রয়েছে সেগুলো কোবরা এবং ক্রেইটের বিপরীতে ভালোভাবে কাজ করলেও রাসেলস ভাইপারের বিরুদ্ধে ভালোমতো কাজ করে না। এই এন্টিভেনমটিতে ভারতীয় রাসেলস ভাইপারের বিরুদ্ধে উপাদান রয়েছে। ভারতীয় রাসেলস ভাইপারের বিষ এবং বাংলাদেশের রাসেলস ভাইপারের বিষের ভেতরে উপাদানগত বৈসাদৃশ্য বেশি হওয়ায় এটি পুরাপুরি কাজ করে না।
ডা. ফরহাদ বলেন, আমাদের দেশের এই সাপটির বিরুদ্ধে একটি কার্যকরী অ্যান্টিভেনম তৈরি করার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসা বিজ্ঞানী অধ্যাপক অনিরুদ্ধ ঘোষের নেতৃত্বে একদল গবেষক বিগত প্রায় ৪-৫ বছর নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আশা করি আমরা অদূর ভবিষ্যতে রাসেলস ভাইপারের বিরুদ্ধে কার্যকরী দেশীয় একটি অ্যান্টিভেনম পেতে পারি। বিষাক্ত আর অবিষাক্ত মিলিয়ে আমি জীবনে ৩০০০-৪০০০ এর বেশি সর্প দংশনের রোগী নিজেই চিকিৎসা করেছি। কোবরা, ক্রেইট, রাসেলস ভাইপার সব ধরনের সাপের কামড়ের চিকিৎসা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রাসেলস ভাইপারের ক্ষেত্রে ৫০%-এর বেশি রোগীকে বাঁচাতে পারিনি। তবে আক্রান্ত হওয়ার পরপরই দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে এলে অতিদ্রুত অ্যান্টিভেনম শুরু করলে ও সাপোর্টিভ চিকিৎসা যেমন ডায়ালাইসি, ভেন্টিলেশন ইত্যাদি দিলে রোগী বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করি।
নবম গ্রেড বাস্তবায়ন নিয়ে প্রহসনের প্রতিবাদে ও ১৫ ডিসেম্বর-এর মধ্যে বৈষম্য নিরসনপূর্বক নবম গ্রেড পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মচারীরা। বুধবার প্রশাসন ভবনের সামনে বাংলাদেশ আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বানে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে ১১-২০ (গ্রেড) এর সব কর্মচারী অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন করে আসলেও এখনও তা কার্যকর হয়নি। এতে কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রেড বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক ও ইবি জিয়া পরিষদের সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের ২০ লাখ কর্মচারীরা ফ্যাসিস্টের আমলে সঠিক পে-স্কেলে বেতন পায়নি। ফ্যাসিস্ট নির্মূলের পরও একই নিয়ম চলমান রয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে বলতে চাই, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে নবম গ্রেড পে-স্কেলে বেতন প্রদানের জন্য।’
তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘সঠিক সময়ের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে আমরা সকল কর্মচারীরা সম্মিলিত হয়ে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিব। দ্রুত দাবি মেনে নেয়ার জন্য আমরা একটি স্মারকলিপি সরকারের কাছে আমাদের উপাচার্য স্যারের মাধ্যমে পৌঁছে দিব।’
চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গা দখল করে দীর্ঘদিনের অঘোষিত বা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ৬০ লট পণ্যের অনলাইন নিলাম অনুষ্ঠিত হবে কাল বৃহস্পতিবার। একই দিনে শেষ হবে নিলামের আরেক সেটের ৪৯ লট পণ্যের পরিদর্শন। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে নিলামের প্রস্তাবিত মূল্য গ্রহণ শুরু হয়। প্রস্তাবিত মূল্য নেওয়া হবে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ৬০ লট পণ্যের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ প্লান্টের যন্ত্রপাতি, হেভি ডিউটি বুলডোজার, লেডার ও ভারী যন্ত্রপাতির স্পেয়ার পার্টস, বিভিন্ন ধরনের ক্যাটারপিলার যন্ত্রাংশ, কলারড কোয়াগুলাম পাউডার, ব্যাটারি কার্বন, ডিটারজেন্ট কাঁচামাল, পোশাকশিল্পে ব্যবহৃত ফ্লিস কাপড়, পলিয়েস্টার ফেব্রিক, নন–ওভেন ফেব্রিক, ফিনিশিং এজেন্ট ও টেক্সটাইল কেমিক্যাল, নন–ইউনিফর্ম চামড়া ও লেদার স্ক্র্যাপ, বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্স, স্টিকার, লেবেল, মার্কিং পেপার, এলুমিনাস সিমেন্ট, ডোলোমাইট লাম্পস, কাঠ ও কাঠের বোর্ড, হাইজিন আয়রনিং স্টার্চ ও হাইজিন ফ্রেশনার সলিউশন, রাবার শিট ও ফোম শিট, নেইল পলিশ, প্রসাধনী সামগ্রী, বিভিন্ন আকারের প্লাস্টিক বোতল, বোতলজাত দ্রব্যের কাঁচামাল পলিপ্রোপিলিন, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত টাইটেনিয়াম ডাই–অঙাইড, জিপসাম সার, মেশিনারি পার্টস, কম্পিউটার কুলিং ইকুইপমেন্ট, এয়ার হ্যান্ডলিং ইউনিট, ওয়েস্ট এন্ড স্ক্র্যাপ মেটাল, যানবাহন সংশ্লিষ্ট মোটরসাইকেল/ কার কভার, স্পিকার, রেডিও যন্ত্রাংশ, শিশুদের খেলনা বেবি টয়স, পোশাক পণ্যে ব্যবহৃত রং, ডাই ও কেমিকেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় ও শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত আরও বহু ধরনের স্ক্র্যাপ, কাঁচামাল ও প্রস্তুত পণ্য রয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসাইন বলেন, ‘আমদানিকারকরা সময়মতো পণ্য না তুললে তা ইয়ার্ডে পড়ে থাকে। নিলাম ছাড়া এসব পণ্য নিষ্পত্তির আর কার্যকর উপায় নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘এ নিলামের পাশাপাশি ৪৯ লট পণ্যের আরেকটি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে ২৭ নভেম্বর। এই পণ্যগুলো প্রদর্শনের সময়ে আজ বৃহস্পতিবার শেষ হবে। এতে কাপড়, মেশিনারির বিভিন্ন গার্মেন্টস খাতের পণ্য রাখা হয়েছে ‘
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেইনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।
আবাসিক এলাকায় রাস্তার পাশে লাইসেন্সবিহীন পুরোনো টায়ার পোড়ানোর ফ্যাক্টরি গড়ে উঠার কারণে এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে এবং পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নরসিংদী সদর উপজেলার শালিধা এলাকায় নরসিংদী মদনগঞ্জ সড়কের পাশে ডায়নামিক পাইরোল পাইবোলাইসিস ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লি. নামে একটি পুরোনো টায়ার ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। এখানে প্রতিদিন শত শত মেট্রিক টন পুরোনো টায়ার পোড়ানো হচ্ছে। পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া অবলম্বন করে দিনরাত ২৪ ঘণ্টাব্যাপী উন্মুক্ত স্থানে পুরোনো টায়ার জ্বালিয়ে বিটুমিন এবং পোড়া তেল তৈরি করা হচ্ছে।
ফলে এ টায়ার ফ্যাক্টরি থেকে নির্গত ক্ষতিকর দাহ্য পদার্থ ও বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে এবং এ ফ্যাক্টরির পাশে প্রতিষ্ঠিত আমানত শাহ উইভিং প্রসেসিং লি. এ কর্মরত শত শত কর্মচারীসহ এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এখানকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে আমানত শাহ গ্রুপের স্বত্বাধিকারী মো. হেলাল মিয়া জানান, গত ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর পরিবেশ-বন ও জলবায়ু বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করলে বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরেজমিনে তদন্ত করে এবং ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। কথায় বলে ‘চোর নাহি শুনে কোনো দিন ধর্মের কাহিনী’। এ ফ্যাক্টরির বেলায়ও ঠিক তেমনটি ঘটেছে। ২ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার পর এ ফ্যাক্টরির মালিক আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েছে এবং আরও বেশি করে পুরোনো টায়ার জ্বালাতে থাকে।
পরবর্তীতে মো. হেলাল মিয়া অতিষ্ঠ হয়ে ফের গত ৩ নভেম্বর নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও নরসিংদী প্রেসক্লাব বরাবর এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে এ টায়ার ফ্যাক্টরিতে পুরোনো টায়ার পোড়ানোর ফলে এগুলো থেকে বিষাক্ত কার্বন মিশ্রিত স্ফুলিঙ্গের সৃষ্টি হয় যা আমানত শাহ উইভিং প্রসেসিং লি. এ কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী ও এলাকার মানুষসহ প্রাণিকুলের স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের মারাত্মক ঝুঁকি বাড়ায়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালের রাত আনুমানিক ৩টার সময় এ টায়ার ফ্যাক্টরিতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। এতে করে এলাকার মানুষের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে। এ ব্যাপারে তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমার পক্ষ থেকে সকল প্রকার চেষ্টা করা হবে। তবে লাইসেন্স ছাড়া এ প্রতিষ্ঠানটি চলতে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। কারণ মানুষের ক্ষতি হবে এমন কাজ করতে দেওয়া হবে না।
এ ব্যাপারে ডায়নামিক পাইরোল পাইবোলাইসিস ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লি. এর স্বত্বাধিকারী বাবুল চন্দ্র বর্মন বলেন, আপনারা যা পারেন লেখেন, এতে আমার কিছু আসে যায় না। আমার ফ্যাক্টরি চলবে। একদিনের জন্যও বন্ধ হবে না। লাইসেন্স নবায়নের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে বাবুল চন্দ্র বলেন, আমার ফ্যাক্টরি চালাতে হলে লাইসেন্সের দরকার নেই। যদি কারও ক্ষমতা থাকে তাহলে আমার ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে বলুন।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. বজলুল হুদা জানান, এ বিষয়ে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ফ্যাক্টরি থেকে আলামত সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষা শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে এ প্রতিষ্ঠানের মালিকের নিকট থেকে ২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এলাকাবাসীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে জরিমানা প্রদান করার পরও ফ্যাক্টরির মালিক নিয়মনীতির প্রতি তোয়াক্কা না করে তার পেশিশক্তির বলে একটি ভাড়াকৃত জায়গায় পুনরায় পূর্বের ন্যায় পুরোনো টায়ার প্রজ্বলন করে আসছে। এতে করে প্রতিষ্ঠানের নির্গত গ্যাসের কারণে এলাকার মানুষ শ্বাস-প্রশাসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছে এবং এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক জনস্বার্থে জনসাধারণের সৃষ্ঠ জীবন ও স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে পরিত্রাণ, আবাদ যোগ্য জমি রক্ষা এবং আমানতশাহ গ্রুপের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে রক্ষিত কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও মালামাল ক্ষতির হাত থেকে সুরক্ষার জন্য এবং পাশাপাশি এলাকার পরিবেশ মানুষের জীবন, প্রাণিকুলের স্বাস্থ্য এবং জীবন রক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে এ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ অথবা এখান থেকে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে।
নওগাঁর রাণীনগরে আন্তঃকলেজ ফুটবল খেলা নিয়ে এক পক্ষের ওপর আরেক পক্ষের হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে নওগাঁ জেলা স্টেডিয়াম মাঠে এ কর্মসূচি পালিত হয়। নওগাঁ জেলা দল ও স্থানীয় বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলের খেলোয়াড়রা এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, আত্রাই মোল্লা আজাদ কলেজের প্রভাষক শাহাদাত হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, নওগাঁ জেলা দলের ফুটবল খেলোয়াড় সাজু, রায়হান, জিহাদ, সাজেদুর রহমান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নওগাঁর রাণীনগরে আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলায় সোমবার বিকেলে রাণীনগর উপজেলার সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ ও আত্রাই উপজেলার মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এই খেলায় ৩-০ গোলে সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ দলকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়ে মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজ দল। খেলা শেষে ফেরার পথে রাণীনগর রেল স্টেশন এলাকায় সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজের সমর্থকরা হামলা চালায়। হামলায় অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার সময় তিনটি ইজিবাইকও ভাঙচুর করা হয় এবং মোল্লা আজাদ কলেজের খেলোয়াড়দের ১০-১২টি মুঠোফোন ছিনতাই করা হয়।
বক্তারা বলেন, পরাজয়ের ক্ষোভ থেকে সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজের খেলোয়াড়দের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও লজ্জাজনক। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে এ ধরনের ঘটতেই থাকবে। খেলোয়াড়দের ওপর হামলায় যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।
বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত না করে কোনো খেলার উন্নয়ন চিন্তা করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন, বয়সভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক আসিফ আকবর। গত মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের খেলার মাঠগুলোর মানোন্নয়ন ও ব্যবহারযোগ্যতা বাড়াতে ৩ দিনের পরিদর্শনে নীলফামারী জেলা স্টেডিয়াম ও মিনি স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, যারা অ্যাকাডেমির সুবিধা পাচ্ছে না, তারা স্বেচ্ছাসেবীভাবে খেলায় নিয়োজিত। আমরা চাই কোয়ালিফাইং রাউন্ড চালু হোক, নতুন টিম যুক্ত হোক, নতুন সংগঠক ও বিনিয়োগকারীর জন্ম হোক। বেসরকারি খাতকে উৎসাহ না দিলে ৪৭ সালের পরের ক্লাবগুলোর ওপর নির্ভর করে কোনো খেলার উন্নয়ন সম্ভব নয়।
আসিফ আকবর বলেন, নীলফামারী স্টেডিয়ামকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে খেলাধুলার উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে। এখানে কোনো ফুটবল টুর্নামেন্ট, ঢাকার কোনো লীগ বা ন্যাশনাল খেলা না হওয়ায় এত সুন্দর একটি মাঠ ফেলে রাখার মানে নেই। এনএসসি ও ডিএফএর ফুটবল ক্যালেন্ডার মিলিয়ে মাঠ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
ফুটবল ও ক্রিকেট একই স্টেডিয়ামের আয়োজনের বিষয়ে তিনি বলেন, স্থায়ী উইকেটে ফুটবল খেললে উইকেটের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। এজন্য সিনথেটিক টার্ফ বসানো হলে ফুটবল ও ক্রিকেট দুই খেলারই অসুবিধা হবে না। নীলফামারী ভেন্যুর ডরমিটরি, প্রেসবক্স, গ্যালারি, প্র্যাকটিস সুবিধাসহ জাতীয় লিগ বা বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের সব সুযোগই রয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দর কাছে থাকায় প্রয়োজনীয় ফ্যাসিলিটিও সহজ।
এ সময় আসিফ আকবর, উপস্থিত খুদে ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে তুলে ধরা বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত লজিস্টিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। অনুষ্ঠানে বিসিবি পরিচালক হাসানুজ্জামান, সদস্য সচিব আরমানুল ইসলাম, আম্পায়ার শাকির, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য জহুরুল আলম, অ্যাড. আবু মো. সোয়েমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে গত ৪ মাসে বেনাপোল বন্দরে এসেছে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন চাল। গত ২১ আগস্ট ৯টি ট্রাকে ৩১৫ মেট্রিক টন চালের প্রথম চালান বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। ২১ আগস্ট থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ৪ মাসে প্রায় ১৪৫টি চালানের বিপরীতে ৩৯৫টি ট্রাকে করে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন মোটা চাল বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে।
দেশে চালের অস্থিতিশীল বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ সরকার দেশের সব বন্দর দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ আগস্ট বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়। অর্থাৎ আগস্ট মাসে ১২৬০ মেট্রিক টন, সেপ্টেম্বর মাসে ৫ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন, অক্টোবর মাসে ৫ হাজার ১৮৮ মেট্রিক টন এবং নভেম্বরে ১ হাজার ৬৪৫ মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানি হয়েছে। আমদানি করা চাল ছাড় করণের জন্য বেনাপোল কাস্টমস হাউজে চার থেকে পাঁচটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কাজ করছে। বন্দরের ৩১ নম্বর শেডে আমদানি করা চালের খালাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধি বাবলুর রহমান বলেন, ‘চাল আমদানির শুরু থেকে আমরা কাস্টমস হাউজে চাল ছাড়করণের জন্য কাজ করে আসছি। চার মাস পর গত ২১ আগস্ট থেকে পুনরায় ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, গত ২১ আগস্ট থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। কিছুদিন বাদে বাদে এ সমস্ত চালের চালান বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। প্রতিদিন চালের চালান আসেনা। গত আগস্ট মাসে চাল আমদানি শুরুর দিকে চাল আমদানির পরিমান বেশি থাকলেও বর্তমানে অনেকাংশে কমে গেছে। তবে দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হওয়ায় চালের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি অব্যাহত থাকলে চালের দামে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না বলে তিনি মনে করেন।
বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, “চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সবশেষ চাল আমদানি হয়েছিল। খাদ্য মন্ত্রণালয় চাল আমদানির জন্য বরাদ্দপত্র ইস্যু করে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য চিঠি পাঠায়।
“বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের ভিত্তিতে আমদানিকারকদের ‘ইমপোর্ট পারমিট’ বা আমদানি অনুমতিপত্র জারি করে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর অনেক প্রতিষ্ঠান এলসি খুলে ২১ অগাস্ট থেকে আবার চাল আমদানি শুরু করে।”
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৩ হাজার ৫২৮ টন চাল আমদানি হয়েছে। বর্তমানে আমদানি কমে গেলেও তেমন সমস্যা হবে না। এর মধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ ধান বাজারে আসলে চালের দাম কমে আসবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সর্বশেষ চাল আমদানি হয়েছিল। পুনরায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর অনেক প্রতিষ্ঠান এলসি খুলে গত ২১ আগস্ট থেকে আবার চাল আমদানি শুরু করে। অর্থ্যাৎ ২১ আগস্ট থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। বর্তমানে চাল আমদানি কমে গেলে ও তেমন সমস্যা হবে না। ইতোমধ্যে কৃষকরা আমন ধান কাটতে শুরু করেছে। এ ধান বাজারে আসলে চালের দাম কমে আসবে এবং দেশে চালের ঘাটতি পূরণ হবে।
বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ জানান, ৪ মাসে ভারত থেকে ১৪৫টি চালানে ৩৯৫টি ট্রাকে করে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন চাল বেনাপোল বন্দরে আমদানি হয়েছে। আমদানি করা চাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ১৮ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ২০২৫ তারিখে জনাব মিল্টন রায়, সিনিয়র সহকারী সচিব ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর জোবিঅ-সোনারগাঁও আওতাধীন ইছাপাড়া ও সোনারগাঁও থানা সংলগ্ন এলাকা, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, অবৈধ ১টি চুনা কারখানা, ১টি ঢালাই কারখানা ও ১টি খানাঢুলি কারখানা এবং ১টি আবাসিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের এমএস পাইপ -৩৫ফুট, ৩টি বার্নার, ১টি ডিজেল ইঞ্জিনসহ জেনারেটর (১০কি.ও.) ও ২টি পাথর ওজন করার যন্ত্র অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। উক্ত অভিযানে চুন কারখানার মালিককে ৫০,০০০/- জরিমানা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি স্পটের অবৈধ বিতরণ লাইন উৎস পয়েন্টে কিলিং/ক্যাপিং করা হয়েছে। চুন এবং ঢালাই কারখানাগুলোর স্থাপনা এক্সক্যাভেটর মেশিনের সাহায্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে এবং পানি স্প্রে করে চুন বিনষ্ট করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব মো: তারিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর জোবিঅ- এনায়েতনগর-কাশীপুর আওতাধীন মর্ডাণ হাউজিং, পঞ্চবটি, ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, মডার্ণ হাউজিং এলাকায় অনুমোদন অতিরিক্ত স্থাপনায় গ্যাস ব্যবহারের কারণে ০৩টি আবাসিক গ্রাহকের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের কারণে ১৬টি আবাসিক সংযোগের প্রায় ৩০০ টি ডাবল চুলা সংযোগ বিচ্ছিন্নপূর্বক কিলিং করা হয়েছে। উক্ত অভিযানে ৩/৪" ব্যাস প্রায় ৩৫০ ফুট বিতরণ পাইপ জব্দ করা হয়েছে। অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে ২,২০,০০০/- জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এছাড়া, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ -৬, মিরপুর বিক্রয় শাখা আওতাধীন এলাকায় অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ন্যাশনাল ওয়াশিং প্লান্ট, ঠিকানা: ২৩/৮/১, শাহ আলিবাগ, মিরপুর-১, ঢাকা -নামক প্রতিষ্ঠানে গ্যাসবিহীন পরিত্যক্ত একটি সার্ভিস লাইনের অস্তিত্ব পাওয়া যায় এবং অবৈধ গ্যাস ব্যবহারের আলামতের প্রেক্ষিতে ড্রেনের আরসিসি ব্লক অপসারণ করে অবৈধ সার্ভিস লাইন গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে আরসিসি ঢালাই ও বিটুমিনাস রড ভেঙে মাটি খনন করে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতঃ সোর্স লাইন হতে সার্ভিস লাইন কিল করা হয়েছে। এ সময় ৭৫ ফুট এমএস পাইপ ও ০১টি রেগুলেটর অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়াও, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর জোবিঅ -চন্দ্রা আওতাধীন সফিপুর পূর্ব পাড়া, এবং মন্ডলপাড়া, চন্দ্রা, গাজীপুর এলাকায় অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, মো আহসান, সফিকুল সোহাগ, নাজমুল হোসেন মৃধা, মো কবির, মো আকবর, মো রমজান আলী ও মো: শামিম নামক অবৈধ আবাসিক গ্যাস ব্যবহারকারীর মোট ৯৪টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ০৪টি রেগুলেটর অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়াও, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর রাজস্ব উপশাখা টাঙ্গাইল ও বিক্রয় শাখার যৌথ উদ্যোগে অনুমোদন অতিরিক্ত চুলার কারনে বিচ্ছিন্ন ০৯টি ও অতিরিক্ত চুলার সংখ্যা ১৭টি ডাবল ও ০৩ সিঙ্গেল আবাসিক সংযোগ হতে বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস ব্যবহারের কারণে ০১(এক) টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
অধিকন্তু, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সাভার, জোবিঅ- আশুলিয়া আওতাধীন ধনাইদ ইউসুফ মার্কেট, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা এলাকায় অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ বিহীন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ইউসুফ মার্কেট এলাকায় ৫ টি গলিতে প্রায় ২৫ টি বাড়িতে আনুমানিক ২০০ টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের ৩০০ ফুট এমএস পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ২,১৬,৪০০/- টাকার গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হয়েছে। উল্লেখ্য যে, উক্ত এলাকায় ইতিপূর্বেও ( গত সপ্তাহে) অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করায় হাউজলাইল অপসারণ করে সোর্স কিল করা হয়েছিল। এ ছাড়াও জামগড়া, আশুলিয়াতে মিজান সি এন জি তে বকেয়ার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় টেকনিক্যাল সাপোর্ট প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ১৩ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ৪১৯টি শিল্প, ৫৪৪টি বাণিজ্যিক ও ৭৫,৩৪৮টি আবাসিকসহ মোট ৭৬,৩১১টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ১,৬৩,৬৭৫টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ৩১৭ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।
সম্প্রতি বাজারে গোলাপজল ও কেওড়া জল নামক সুগন্ধির প্যাকেটের লেবেলে ‘খাবার উপযোগী’, ‘ফুড গ্রেড’, ‘খাদ্য আইন অনুসরণ করে প্রস্তুতকৃত’, ভেজিটেরিয়ান খাদ্য মর্মে ‘সবুজ চিহ্ন’ ইত্যাদি অভিব্যক্তি ব্যবহার করে উক্ত সুগন্ধি খাদ্যে ব্যবহার উপযোগী মর্মে প্রচার করা হচ্ছে। এরূপ পণ্যের লেবেলে উক্ত সুগন্ধির উপাদান হিসেবে বিশুদ্ধ পানি ও গোলাপ/কেওড়া ফ্লেভার বা শুধু ফ্লেভার (Flavour) মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে উক্ত সুগন্ধি কীসের তৈরি তা নির্ণয় করা যাচ্ছে না এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। খাদ্যে অননুমোদিতভাবে কোন খাদ্য সংযোজন দ্রব্য ব্যবহার অথবা যথাযথভাবে লেবেলিং না করা নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এর ২৭ ও ৩২ ধারা অনুযায়ী অপরাধ। সম্প্রতি গোলাপজল ও কেওড়া জল উৎপাদনকারী কয়েকটি কারখানায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় দেখা যায় অননুমোদিত রাসায়নিক (এমনকি কিডনি ডায়ালাইসিসের জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক) ব্যবহার করে এরূপ সুগন্ধি প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এমতাবস্থায় খাদ্যে ব্যবহার উপযোগী হিসেবে ঘোষিত যে সকল সুগন্ধির লেবেলে মোড়কাবদ্ধ খাদ্য লেবেলিং প্রবিধানমালা, ২০১৭ অনুযায়ী ‘অনুমোদিত প্রাকৃতিক’, ‘অনুমোদিত কৃত্রিম’ অথবা ‘অনুমোদিত প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম’ সুগন্ধি অভিব্যক্তি ব্যবহার করা হয়নি এবং কৃত্রিম সুগন্ধির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সুগন্ধি দ্রব্যের সাধারণ নাম ও, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, ইনডেক্স (আইএনএস) নম্বর উল্লেখ করা হয়নি এ রূপ সুগন্ধি দ্রব্যের উৎপাদন ও বিপণন থেকে বিরত থাকার এবং বাজার থেকে প্রত্যাহারের জন্য সকল খাদ্য ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
সকল খাদ্য প্রস্তুতকারী/সরবরাহকারীদের (যেমন- রেস্টুরেন্ট, বেকারি, কমিউনিটি সেন্টার, ক্যাটারিং সার্ভিস ইত্যাদি) উপরের বিবরণ অনুযায়ী অভিব্যক্তি উল্লেখ করা হয়নি এ রূপ কোন সুগন্ধি খাদ্যে ব্যবহার না করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
সর্বসাধারণকে এ ধরনের যথাযথ লেবেলিং ব্যতীত সুগন্ধি দ্রব্য খাদ্যে ব্যবহার বা ক্রয় থেকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দেয়া হলো।
তেতুলিয়া সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে বাংলাবান্দা স্থলবন্দরে ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে বাংলাবান্দা এলাকায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের সহযোগীতায় এ ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে উদ্ধার করে। পরে অভিযুক্ত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা সকলে বাংলাবান্দা স্থলবন্দরে আমদানি, রপ্তানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাক চালক।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-বগুড়া জেলার মানিকচর মিন্টু মিয়া ছেলে হাসান আলী(২০), বগুড়া জেলার থানা বগুড়া ডাকঘর নামুজা পলাশ ছেলে মো. রাজিব (২৮), বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার হরিপুরের মানিকের ছেলে হানিফ (২০), বগুড়া জেলা শিবগঞ্জ থানার সাং চাদিনা দক্ষিণ পাড়া মালেক ছেলে সোহেল (৩৫) বাংলাবান্দা স্থলবন্দর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভিকটিম তরুণী বর্তমান তেতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
জানা যায়, তেতুলিয়া উপজেলার মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণী (১৯)রাতে পাগলিডাঙ্গি বাজার থেকে ধরে নিয়ে যান। এরপর বাংলাবান্দা স্থলবন্দর এলাকা নিয়ে আসেন ৪ জন। ওই তরুণীকে একটি দোকানের পাশে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এরপর ওই চার যুবক ওই তরুণীকে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করে। এরপর সকালে অভিযুক্ত চার যুবককে আটক করা হয়।
তেতুলিয়া থানার ওসি মুসা মিয়া জানান, ওই তরুণীকে ভুল বুঝিয়ে আসামি বাংলাবান্দা স্থলবন্দরে নিয়ে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় জড়িত চার জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
‘গাছেরও জীবন আছে, পেরেক ঠুকে আঘাত বন্ধ করুন’ এই স্লোগান তুলে মানববন্ধনে বক্তারা পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তি, ডাক্তার, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক, কোচিং ও স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে গাছে সাইনবোর্ড, ফেস্টুন ঝুলানো বন্ধকরণ এবং অবিলম্বে সেগুলো সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে পরিবেশবাদী যুব সংগঠন ‘গ্রিন ভয়েস’ একটি মানববন্ধন করে।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, গ্রিন ভয়েসের রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক রাইসুল ইসলাম নোমান, কুড়িগ্রাম সরকারি শাখার সভাপতি তহ্নি বণিক, সাধারণ সম্পাদক সাদমান হাফিজ স্বপ্ন, অর্থ সম্পাদক আবু রায়হান জাকারিয়া, উলিপুর উপজেলা শাখার সভাপতি সারফরাজ সৌরভ, রোমিও রায়হান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পেরেকের আঘাতে গাছের কাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রসক্ষরণ বন্ধ হয় এবং গাছ ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে মারা যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। এটি শুধু পরিবেশ নয়, শহরের সামগ্রিক সৌন্দর্য নষ্ট করে।
গাছের গায়ে পেরেক ঠুকে ব্যানার, পোস্টার, সাইনবোর্ড ও বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সামগ্রী ঝুলানোর প্রতিবাদে জানানো হয়।
গাছের গায়ে পেরেক ঠুকার মতো পরিবেশবিরোধী আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করতে কঠোর আইন প্রয়োগ দাবি জানান।
কর্মসূচিতে গ্রিন ভয়েসের সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন অংশ নেন।
নাশকতার উদ্দেশে ময়মনসিংহ রেলস্টেশনের ওয়াশপিটে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনের বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার ভোর রাতে এ ঘটনা ঘটে। তবে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই দ্রুততার সাথে তা নিয়ন্ত্রণে আনেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
এ ঘটনার পর দুর্বৃত্তদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে য়ায়। রেলওয়ের নিরাপত্তা কর্মীদের ধারণা, আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগুন পার্শ্ববর্তী কোচ, ট্রেনের ইঞ্জিন এবং স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের অন্যান্য অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়ত।
আগুন নেভানোর পর দেখা যায়, একটি বগির কয়েকটি সিটের বেশকিছু অংশ পুড়ে গেছে এবং অন্যান্য আরও কয়েকটি সিটে গান পাউডার জাতীয় দ্রব্য ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। এগুলোতে পেট্রলজাতীয় তরল পদার্থ ঢালা হয়েছিল, যেন দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তবে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) তাৎক্ষণিক সাহসি ভূমিকার কারণে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনার পর ময়মনসিংহ জংশন রেলস্টেশনের ট্রেন চলাচল এবং সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলে জানান স্টেশন সুপার আব্দুল্লাহ আল হারুন।
আগুনের বিষয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ময়মনসিংহ কার্যালয়ের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের বাইরের অংশে জারিয়া লোকাল ট্রেনের কোচগুলো ধোয়া-মোছা করার জন্য ওয়াশপিটে দাঁড় করানো ছিল। সেখানে এমনিতেই রাতে অনেক অন্ধকার থাকে। এই সুযোগে নাশকতার উদ্দেশে ভোররাতে একদল দুর্বৃত্ত অপকৌশলে গানপাউডার এবং পেট্রল দিয়ে ট্রেনে আগুন দেয়।
আগুন জ্বলতে শুরু করলে আরএনবির তিন সদস্য দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করে এবং কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা এক দুর্বৃত্তকে ধাওয়া দেয়। তবে অন্ধকার থাকায় দৌড়ে তাকে ধরা সম্ভব হয়নি। পরে আরএনবি সদস্যরা দ্রুত পানি ছিটিয়ে আগুন নেভায়। যার ফলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রেলওয়ের জানমাল রক্ষা পায়। এ ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।
২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রবি মৌসুমে রাউজানে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার উপজেলা কৃষি বিভাগীয় প্রশিক্ষণ হলে এ সার ও বীজ বিতরণ করা হয়। রাউজান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় সার ও বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুম কবিরের সভাপতিত্বে ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সনজীব কুমার সুশীলের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংছিং মারমা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সীকু কুমার বড়ুয়া, মিল্টন দাশ, মো. জিয়া উদ্দীন মামুন, অসিম বিকাশ সেন, বলরাম দে, আহমদ শাহ, মোজাম্মেল হক, জুয়েল দাশ প্রমুখ।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৪ ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৬৩০ জন কৃষক-কৃষাণীকে দেওয়া হয়েছে গম ৪ শত কেজি, সরিষা ৩ শত ৩০ কেজি, চিনা বাদাম ৫ শত কেজি, সূর্যমুখী হাইব্রীট শস্য ১০ কেজি, মুগ ডাল ৪ শত কেজি, ফেলন ৭ শত কেজি, অড়হর ২০ কেজি। এছাড়াও ডিএসপি সার ৭৫ বস্তা, এমওপি সার ৬০ বস্তা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ বলেন, সরকার কৃষকদের জন্য প্রণোদনা প্রদান একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। আমরা যেহেতু কৃষি নির্ভরশীল দেশ। সেহেতু কৃষকের অধিক ফলন বৃদ্ধি করতে হবে। সার, বীজ ও কৃষি কাজের আধুনিক সরঞ্জাম বিতরণ করে সরকার কৃষকদের উৎসাহিত করে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুম কবির বলেন, প্রান্তিক কৃষকরা আমাদের সহায়ক শক্তি। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে শস্য ফলাতে পারলে একদিকে কৃষক উপকৃত হবে অন্যদিকে দেশ হবে কৃষিবান্ধব।
গাংনী উপজেলার কাথুলী সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ২৪ জন বাংলাদেশিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর কাছে হস্তান্তর করেছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ১৩২/৩ এস এর সামনে টেইপুর এলাকায় এ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, হস্তান্তর হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে।
তারা হলেন শরিফুল ইসলাম (৪৭), নিলিমা বেগম (৪১), আব্দুর রহিম (১৪), আদুরী খাতুন (৮), আশিক বিশ্বাস (১৬), রাতুল হোসেন (২১), কুলছুম খাতুন (১৮), উজ্জ্বল হোসেন (২), রেজাউল (৪০), জনি আহম্মেদ (১৮), রকিব হোসেন (২১), জিহাদ (২০), আবুবক্কর সিদ্দিক (২৪), হাসান আলী (২৬), জিন্নাত আলী (৩৪), জাফর চাপরাশি (৩৯), রাছেল হাওলাদার (২৭), আকতার হোসেন (৩২), রাজু (৩১), সিমা বেগম (৩১), শান্তা আক্তার (২৭), কাজী জসিম উদ্দিন (৪৭), লিলি খাতুন (৪৩) ও আছিয়া আক্তার (৮)।
পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে কাথুলী কোম্পানির দপ্তর কমান্ডার নায়েক সুবেদার মো. কামরুজ্জামান এবং বিএসএফের পক্ষ থেকে ভারতের নদীয়া জেলার তেহট্টার ৫৬ ব্যাটালিয়নের টেইপুর কোম্পানি কমান্ডার এসি আনচ কুমার উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি জানায়, এসব ব্যক্তি দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে শ্রমিকের কাজ করছিলেন। সেখানে ভারতীয় পুলিশ তাদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিএসএফ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিজিবির কাছে ফেরত দেয়।
কাথুলী বিজিবির দপ্তর কমান্ডার নায়েক সুবেদার কামরুজ্জামান বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে সবাইকে গাংনী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
গাংনী থানার ওসি (তদন্ত) আল মামুন জানান, হস্তান্তর হওয়া ২৪ জনকে থানায় রাখা হয়েছে। যাচাই বাছাই শেষে তাদের পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।