স্বজনদের সঙ্গে ঈদুল আজহার ছুটি কাটিয়ে ফের কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন উত্তরবঙ্গের মানুষ। ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে বৃদ্ধি পাচ্ছে যানবাহনের চাপ। বাড়ি যাওয়ার পথে কখনো যানজট, কখনো ভোগান্তি, আবার কখনো স্বস্তিও ছিল। তবে ফেরার সময় ব্যাপক স্বস্তি অনুভব করেছেন কর্মজীবীরা।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রেলস্টেশন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সেতুর পূর্ব টোলপ্লাজা থেকে হাতিয়া পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ ছিল। তবে স্বাভাবিক গতিতেই যানবাহন চলাচল করছে। কোথাও যানবাহনের যানজট ছিল না। অন্যদিকে অসংখ্য ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে।
কর্মস্থলে যাওয়ার পথ স্বস্তিদায়ক হলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার দিকে বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এলাকাভিত্তিক চলাচলকারী তিন চাকার পরিবহনগুলো। বিশেষ করে ভাড়ায়চালিত সিএনজি চালকরা কয়েক গুণ ভাড়া আদায় করছে। এতে করে হয়রানি ও অস্বস্তি প্রকাশ করেন কর্মজীবীরা।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ভূঞাপুরের মোতালেব মিয়া। তিনি বলেন, ছুটি শেষ, শনিবার সকাল থেকে অফিস। তাই আজই চলে যেতে হচ্ছে। কিন্তু সেতু পূর্ব থেকে গাজীপুর চন্দ্রা পর্যন্ত ভাড়া চাচ্ছে ৫০০ টাকা। কী আর করার, যেতে হবেই। স্বাভাবিকের তুলনায় ৩০০ টাকা বেশি। তবে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও কোনো যানজট দেখতে পাচ্ছি না।
কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী দেশ ট্রাভেলের চালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ছুটছে মানুষ। ঈদের আগে মহাসড়কের সেতু পূর্ব থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের কাজ চলমান থাকায় কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কিন্তু ঢাকায় ফিরতে পথে এই অংশে কোনো ধরনের যানজট নেই। তবে মহাসড়কে কিছু কিছু এলাকায় ধীরগতিতে চলাচল করতে হচ্ছে। তা ছাড়া স্বস্তিতেই গাড়ি চালাচ্ছি।’
বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ছুটছে মানুষ। মহাসড়কে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী সব যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলছে। এ ছাড়া মহাসড়কে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সার্বক্ষণিকভাবে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, দুপুরের পর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সেতু পূর্ব ও পশ্চিমে ২৪ হাজার ৯৭৩টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং বিপরীতে ১ কোটি ৭১ লাখ ২৭ হাজার ৬৫০ টাকা টোল আদায় করা হয়।
মেহেরপুরে প্রেমিকের সাথে ঘুরতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক প্রেমিকা। ঘটনায় সাথে জড়িত দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার রাজাপুর মাঠে গত বুধবার সন্ধ্যায়। আটক দুই ধর্ষক হলেন, রাজাপুর গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম, জুমাত আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলাম। আরেক ধর্ষক নজরুল ইসলামের ছেলে মিনারুল পালাতক রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই আসামিকে সদর থানা পুলিশের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আর গত বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। আটক দুই ধর্ষককে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, গত বুধবার বিকালে মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্রী তার প্রেমিক সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্রের সাথে মোটরসাইকেলযোগে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরে সন্ধ্যার দিকে সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মাঠের রাস্তা দিয়ে আসার সময় তিন যুবক তাদের পথরোধ করে একপর্যায়ে তারা প্রেমিকের গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ইউপি সদস্য চঞ্চলের ভাটার পেছনে আম বাগানে নিয়ে যায়। এ সময় তারা প্রেমিকের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে তাদের দুজনকে বিবস্ত্র করে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিতে থাকেন। এ সময় প্রেমিক তার প্রেমিকাকে তিন যুবকের কাছে রেখে টাকা নিতে মেহেরপুর শহরে আসেন। টাকা নিয়ে ফিরে গিয়ে দেখেন তার প্রেমিকা কান্নাকাটি করছে। পরে প্রেমিকা জানান, তাকে জোর করে তিনজন ধর্ষণ করে। এ সময় সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে বাড়ি পাঠায়।
এ নিয়ে ৩ যুবককে আসামি করে মেহেরপুর সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে।
সদর থানার ওসি অপারেশন জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত দুই জনকে আটক করা হয়েছে। পালাতক আসামিকে আটকে পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে।
তারুণ্যের উৎসব, খেলাধুলার প্রাণচাঞ্চল্য এবং জুলাই শহীদদের স্মরণে মাগুরায় শুরু হয়েছে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি মাগুরা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ ২০২৫’। শুক্রবার সকালে মাগুরা জেলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত এ লিগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক মো. অহিদুল ইসলাম।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক জুলফিকার আলী খান, মাগুরার পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মাগুরার ১০ শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
মাগুরা জেলা পরিষদ এবং চিকিৎসক সিমিন মজিদ আখতারের পৃষ্ঠপোষকতায় জেলা ক্রীড়া সংস্থা এ লিগের আয়োজন করেছে। ১৬ ক্লাবের অংশগ্রহণে শুরু হওয়া টুর্নামেন্টটি চলবে এক মাসেরও বেশি সময়। সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও জাতীয়, জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং বিসিবির পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী পর্ব শুরু হয়। পরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অতিথিরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিগের সফলতা এবং মাগুরার ক্রিকেট অগ্রগতির প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
শহীদ সোহান শাহের বাবা শাহ সেকেন্দার বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মাগুরার তরুণরা দেশের গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিয়েছিল। সেই শহীদদের নামে এই লিগ আমাদের পরিবারের জন্য সম্মান ও আবেগের বিষয়।’
বিসিবির পরিচালক জুলফিকার আলী খান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথম জেলা হিসেবে মাগুরায় এ বছর প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ মাঠে গড়াল। স্থানীয় ক্রিকেট উন্নয়নে মাগুরার এই উদ্যোগ অন্য জেলার জন্য উদাহরণ।’
পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, ‘মাগুরা তরুণদের শহর- এই লিগ তরুণদের সুস্থ ধারার সম্পৃক্ততায় আনবে এবং শহীদদের আদর্শ নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেবে।’
জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাইয়ের শহীদদের স্মরণ করে আমরা শুধু ইতিহাসই নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। এই লিগ মাগুরার ক্রিকেটে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে।’
ক্রীড়া সংস্থা সূত্র জানায়, মাগুরায় সর্বশেষ ২০২২ সালে দ্বিতীয় বিভাগ ও ২০২১ সালে প্রথম বিভাগ লিগ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে মাগুরা প্রেসক্লাব।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রকার ফলের চারা বিতরণ করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১০টায় কোটালীপাড়া থানা সদর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব ফলের চারা বিতরণ করেন গোপালগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির ও গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসনে জামায়াতের প্রার্থী রেজাউল করিম।
এ সময় উপজেলা জামায়াতের আমির সোলায়মান বিশ্বাস, নায়েবে আমীর সেকেন্দার আলী, সেক্রেটারি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, বায়তুলমাল সম্পাদক মো. মহিবউল্লাহ, পৌর সভাপতি আক্তার দাড়ীয়া, সেক্রেটারি শাহাদাত হোসেন, রাধাগঞ্জ ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা মামুনুর রশিদ, শুয়াগ্রাম সভাপতি ফরিদুজ্জামান ও আমতলী সেক্রেটারি মাওলানা আসলাম উদ্দিন সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেজাউল করিম বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী তথাকথিত রাজনৈতিক প্রোগাম নিয়েই শুধু মাঠে থাকে না। মানুষের কীভাবে কল্যাণ হবে সেটা বিবেচনা করেই জামায়াত কর্মসূচি দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য জেলাটি বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে গাছ লাগানোসহ বিভিন্ন পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়নমূলক বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে জামায়াত। এরই ফলে আজকে গাছের চারা বিতরণ করা হচ্ছে।’
রেজাউল করিম বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে, ভয় বা প্রলোভনে নয়। আমরা নিজেরা দুর্নীতি করব না, কাউকেও করতে দেব না। জামায়াতে ইসলামী জয়ী হলে সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ হবে। এ জন্য আগামী সংসদ নির্বাচনে সবাইকে দাড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দিয়ে দেশের শন্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও দেশের উন্নয়নে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাই।’
দিনের তাপমাত্রা খুব একটা পরিবর্তন না হলেও শেষ বেলায় তৈরি হয় শীতের আবহ। ফলে ক্রমেই কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় চাহিদা বাড়ছে শীত নিবারণ সামগ্রীর। বছরের এ সময়টায় ব্যস্ততা বাড়ে লেপ তোশক কারিগরদের। বাকী ৮ মাস তাদের কাটাতে হয় অলস সময়। তবে শীত নিবারণ তৈরি সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধিতে কিছুটা বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। নদী বেষ্টিত হওয়ায় এ এলাকায় শীতের প্রকোপ কিছুটা বেশি। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ক্রেতারা ভীড় করছেন লেপ তোশকের দোকানে।
তুলা, কাপড় ও কারিগরদের মূল্য গতবারের চেয়ে এবার কিছুটা বেশি। ক্রেতা বিক্রেতারা বলছেন এ বছর প্রতি লেপ তোশকে দাম বেড়েছে দুই থেকে তিনশত টাকা। অনেক ক্রেতা মেরামত করছেন তাদের পুরানো লেপ তোশক। মূলত মধ্য ও নিম্ম মধ্যবিত্ত মানুষের ভিড় বেশি লেপ তোশকের দোকানে। আধুনিক শীত নিবারণ সামগ্রীর দাপটে আগের চেয়ে কমেছে এ শিল্পের জৌলুস।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, তুলাধুনা, সেলাই, নকশা আকতে ব্যস্ত কারিগর। দম ফেলার নেই ফুসরৎ।
বর্তমানে গার্মেন্টস ঝুট দিয়ে তৈরি সিঙ্গেল তোশক ৫ শত থেকে ৮ শত টাকা এবং ডবল তোশক ১৫ শত থেকে ২৫ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর শিমুল তুলার দাম ছিল ৫ শত টাকা কেজি, এবার তা ৬ শত ৫০ থেকে ৭৫০ টাকা। গার্মেন্টস ঝুটও কেজিপ্রতি ৬০থেকে ৮০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১শত থেকে ১শত ৪০ টাকায়।
দাউদকান্দি বাজারের খাজা বোডিং এর মালিক খাজা হোসেন বলেন, প্রতি লেপ তোশক তৈরিতে কারিগরিদের মজুরি দিতে ৪শত থেকে ৫শত টাকা। দুই মাস আগ থেকেই ব্যস্ততা শুরু হয়েছে তার দোকানে। শীতের প্রকোপ বাড়লে শীত বস্ত্রের চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশা তার।
আক্তার হোসেন নামে এক ক্রেতা জানান, তার একটি লেপ বানাতে এবার ১৬ শত টাকা খরচ হচ্ছে। যা গতবারের চেয়ে প্রায় তিন থেকে চারশত টাকা বেশি। তবে খরচ বাড়লেও শীত নিবারণে তার পছন্দ লেপ।
লেপ তোশক তৈরির কারিগর স্বপন জানান, লেপ তোশক বানানো মৌসুমি ব্যবসা। মৌসুমের এ সময় তাদের কাজের চাপ অনেক বেশি থাকে। বাকী সময়ে তাদের তেমন একটা কাজ থাকে না। এ সময়ের আয়ের উপর তারা নির্ভরশীল থাকে।
শীতের প্রকোপ আরও বাড়লে চাহিদা বাড়বে বহু গুণ। এমনটি মনে করছেন ব্যবসায়ী ও কারিগররা। তাই এখনই ব্যস্ততার মধ্যেও ক্রেতাদের অর্ডার মেটাতে দিন রাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
মাগুরায় বিআরটিএ ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার সংগঠিত সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত ও আহত পরিবারের মাঝে চেক বিতরণ করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা ১১ টায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিআরটিএ মাগুরা। অনুষ্ঠানে বিআরটিএ চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহাম্মেদ প্রধান অতিথি হিসেবে আহত ও নিহত পরিবারের হাতে চেক তুলে দেন। চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ অহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বিআরটিএ খুলনা বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউল হাসান, ঝিনাইদহ বিআরটিএ সহকারী পরিচালক লিটন বিশ্বাস, মাগুরা বিআরটিএ সহকারী পরিচালক কেশব কুমার দাস, মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক সাইদুর রহমান, মাগুরা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবু মিয়া, জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি কাজল মিয়া ও জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের উপদেষ্টা ফুরকানুল হামিদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে দুটি ক্যাটাগরিতে ১ কোটি ৬১ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়। এর মধ্যে নিহতের পরিবারের মাঝে ৫ লাখ টাকা, আহতদের পরিবারের মাঝে ৩ লাখ ও ১ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নানা সুপারিশ তুলে ধরেন বক্তারা।
চট্টগ্রাম বোয়ালখালী পৌরসদরের তুলতলা এলাকায় রেল লাইনের উপরে বসেছে বাজার। চলছিল বেচাকেনা। প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার বাজারটি বসে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকেও জমজমাট ছিল বাজার। তুলাতলা ক্রসিং দিয়ে পারাপার হচ্ছিল যানবাহন। এরই মধ্যে সারাশব্দ ছাড়া এসে পড়ে ওয়াগন ট্রেন। তবে অল্পের জন্য রক্ষা পায় শত শত মানুষের প্রাণ।
এ নিয়ে ক্ষুব্ধ মানুষ বলছেন, রেলওয়ের লোকের গাফিলতিতে (বৃহস্পতিবার) অনেক মানুষের প্রাণহানি হতো।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা রেলক্রসিং দিয়ে তখন পার হচ্ছিলেন সংগীত শিল্পী জুসি বড়ুয়া। তিনি বলেন, আমাদের গাড়িটি রেল লাইনের উপরে যাবে এমন সময় সামনে দিয়ে ট্রেন ছুটে গেল। একটু ঊনিশ-বিশ হলেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেত। বাজারেও ছিল প্রচুর লোক।
জুসি অভিযোগ করে বলেন, ‘ট্রেন আসার আগে ফেলা হয়নি রেলগেটের ব্যারিকেড, উন্মুক্ত ছিল যান চলাচল। ট্রেনটির আলোও দেখা যায়নি। দেয়নি সাইরেন।’
এ বিষয়ে গোমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তুলাতল রেল গেটের দায়িত্বরত গেটম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন ট্রেন আসার আগে মোবাইল গ্রুপে মেসেজ আসে। সন্ধ্যায় নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে মেসেজটি দেরিতে পাই। ফলে এ সমস্যা হয়েছে।’
গোমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শরীফ বলেন, ‘এবিষয়ে জুসি বড়ুয়া নামের একজন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ট্রেনটি দোহাজারীতে ফার্নেস অয়েল খালাস করে চট্টগ্রাম ফিরছিল।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহমত উল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে ইতিমধ্যে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগপূর্বক অবহিত করা হয়েছে।’
দেশের সর্বউত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়। শান্তশিষ্ট মানুষের প্রাণের জনপদ হিসেবেও পরিচিত এই জেলাটি।
শুধু চা উৎপাদনেই নয়, দুগ্ধ উৎপাদনেও এ জেলা এখন দেশের অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
জাতীয়ভাবে চা উৎপাদনে ৩য় স্থানে থাকা পঞ্চগড় জেলাটি এখন দুধ উৎপাদনেও ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে।
জেলার পাঁচটি উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে প্রায় ১৫ হাজারেরও অধিক খামার। এর মধ্যে প্রায় চারশ বড় খামারি নিয়মিতভাবে বৃহৎ পরিসরে দুধ উৎপাদন করছেন।
জেলায় প্রতিদিন উৎপাদিত হয় প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার লিটার দুধ। কিন্তু স্থানীয় চাহিদা তুলনামূলক কম প্রায় ৭-৮ হাজার লিটার। ফলে বিপুল পরিমাণ দুধ অবিক্রীত থেকে যাওয়ার আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে খামারিরা। ঠিক এ জায়গাটিই শক্তভাবে দখল করে নিয়েছে দেশের সবচেয়ে পুরোনো দুগ্ধ সংগ্রহ ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটা।
মিল্কভিটা যাত্রা শুরু করেন ২০১০ সালের ১৪ নভেম্বর। এরপর নিয়মিত খামারিদের কাছ থেকে দুধ নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিল্কভিটার দুধ সংগ্রকারী সমিতির সংগঠক মহসিন আলম জানান, আমাদের ৫ উপজেলায় মোট ৪৮টি খামার রয়েছে। যা থেকে প্রতিনিয়ত দুধ আসছে আমাদের কাছে। আমাদের কাছে আসা দুধের ফ্যাট অনুয়ায়ী আমরা দাম দেই। সাধারণত ৩.৬০/৩.৭০% ফ্যাটের দুধ আমরা ৪৬/৪৭ টাকায় ক্রয় করি। ফ্যাট এর কম হলে দাম ও কম হয়।
দাম কম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, হেড অফিস থেকে লিটার প্রতি ৫ টাকা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা কম নিতে বাধ্য হচ্ছি।
গরু খামারি বাবুল জানান, আমি সমিতির ম্যানেজার। আমার সমিতিতে মোট ৪০ জন সদস্য আছে। সবার দুধ সংগ্রহ করে আমি মিল্কভিটায় নিয়ে আসি। এখানে লিটার প্রতি এক টাকা করে পাই আমি। টাকা প্রতি সপ্তাহে ব্যাংকের মাধ্যমে পেয়ে যাই।
আরাজি শিকারপুরের খামারি আজিজুল জানান, আমার সমিতির ১০-১২ জন খামারি দুধ দেই। দুধের দাম ৪৬ থেকে ৪৭ টাকা প্রতি লিটার। তাও আবার ফ্যাটের উপর নির্ভর করে।
পুর্ব জালাসীর খামারি আব্দুল মালেক জানান, আমরা ডেইলি ৮০ থেকে ১০০ লিটার দুধ মিল্ক ভিটার কাছে দেই। আগে দাম বেশি ছিল। এখন প্রতি লিটার দুধ ৫ টাকা কমে বিক্রি করতে হয়। মিল্ক ভিটার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারেও দুধ বিক্রি করি।
দুধ নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কমেছে এবং দুধ উৎপাদন বাড়াতে উৎসাহ পেয়েছেন অনেকেই। অনেক পরিবার নতুনভাবে খামার গড়ে তুলছেন, আবার কেউ কেউ ছোট খামারকে বড় পরিসরে নিয়ে যাচ্ছেন। দুধ উৎপাদনকে কেন্দ্র করে জেলার পশুখাদ্য ব্যবসা, পশু চিকিৎসা সেবা এবং পরিবহন খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগও বেড়েছে।
পঞ্চগড়ের উপব্যবস্থাপক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান খান জানান, এখন দুধ উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীল পঞ্চগড়কে সামনে রেখে মিল্কভিটা আরও উন্নত সংগ্রহ ব্যবস্থা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রক্রিয়াজাত পণ্য উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা বাড়লে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পঞ্চগড় দেশের অন্যতম বৃহৎ দুগ্ধ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করবে।
উল্লেখ্য যে, গত ২ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সমবায়ী খামারিরা ছয় দফা দাবিতে মিল্কভিটায় দুধ সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল। তারা দুধের দাম ৪৮-৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন।
খামারিদের দাবি, ক্রমাগতভাবে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও সেই অনুপাতে দুধের দাম বাড়ায়নি মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ দুধের দাম দিচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষের কাছে দুধের দাম ৬০ টাকা করার দাবি জানায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ঘাটতি মেটাতে গো-খাদ্যের বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণে নজর রাখার পাশাপাশি সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন হলে স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
এক দুগ্ধ খামারি বলেন, এক লিটার দুধ উৎপাদনে যে ব্যয় হয়, তার ৭০ শতাংশই যায় গো-খাদ্যে। এর বাইরে শ্রমমূল্য এবং অন্য নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ও রয়েছে। দেশি গরু খায় কম, তাই দুধ উৎপাদন কম, সংকর জাতের গরু খায় বেশি, তাই দুধ উৎপাদন অনেক বেশি। সংকর জাতের খামারের তুলনায় দেশি গরুর খামারে এত বেশি দুধ উৎপাদন সম্ভব নয়। গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় দেশি খামারে মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমানের ফ্ল্যাটে ঢুকে তার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এক দুর্বৃত্ত। বিচাকরের ছেলের নাম তাওসিফ রহমান সুমন। এ ঘটনায় বিচারকের স্ত্রী ও হামলাকারী যুবকও আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে নগরের ডাবতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্পার্ক ভিউ নামের দশতলা ভবনের পাঁচ তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন বিচারক।
আবদুর রহমানের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলায়। তিনি পরিবার নিয়ে নগরের ডাবতলা এলাকায় ভাড়া বসবাস করতেন। তাওসিফ রহমান নবম শ্রেণিতে পড়ত বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, তাসমিন নাহারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে অস্ত্রপচার করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে একজন দুর্বৃত্তকে আটক করা হয়েছে। আহত হওয়ায় তাকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারী হিসেবে আটক ব্যক্তির নাম ইমন। তার বাড়ি গাইবান্ধায়। ভবনে ঢোকার সময় ওই যুবক দারোয়ানের কাছে থাকা খাতায় নিজের নাম লিখেছেন লিমন। ‘বিচারকের ভাই’ পরিচয় দিয়ে তিনি পাঁচ তলার ফ্ল্যাটে যান।
ভবনটির দারোয়ান মেসের আলী বলেন, ওই যুবককে তিনি আগে কখনো দেখেননি। বিচারককে ভাই পরিচয় দেওয়ায় তিনি ঢুকতে দেন। তবে তার আগে নাম ও মুঠোফোন নম্বর লিখিয়ে নেন। দুপুর আড়াইটার দিকে ওই যুবক ফ্ল্যাটে যান। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী তাকে এসে জানান, ফ্ল্যাটে বিচারকের ছেলেকে ও স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও চলে আসেন। তারা সবাই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনজনকেই আহত পান। এরপর তিনজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। আর হামলকারী যুবক ও বিচারকের স্ত্রীকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে যাওয়াা হয়েছে।
খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারী ব্যক্তির পকেটে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি চালক। তার সঙ্গে পূর্ববিরোধ থাকতে পারে।
পুলিশ কমিশনার জানান, সিলেটের সুরমা থানায় এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন তাসমিন নাহার। কেন এই ঘটনা ঘটেছে তা তারা এখনো বিস্তারিত জানেন না।
কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনের ছেড়াদ্বীপের দক্ষিণ-সংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ খাদ্য ও নির্মাণ সামগ্রীসহ ২২ জন পাচারকারীকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর বিকেলে কোস্ট গার্ড পূর্ব জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট বিএন শাকিব মেহবুব এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়- একটি চক্র বাংলাদেশি পণ্যের বিনিময়ে ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য মিয়ানমার থেকে দেশে আনার পরিকল্পনা করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার রাত ১টার দিকে কোস্ট গার্ডের জাহাজ জয় বাংলা সেন্টমার্টিন ছেড়াদ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম সংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে সন্দেহজনক দুটি ফিশিং ট্রলার থামিয়ে তল্লাশি চালানো হলে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে নেওয়া প্রায় ৩৩ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ৬০০ বস্তা মটর ডাল ও ৬৫০ বস্তা সিমেন্ট জব্দ করা হয়। এ সময় পাচারে জড়িত ২২ জনকে আটক করা হয়। জব্দকৃত মালামাল, ট্রলার ও আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোস্ট গার্ডের ওই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, পাচার ও চোরাচালান রোধে কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে দিনব্যাপী আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এই আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আবুল বাশার মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর-৩ সদর আসনের বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজ সেবক মো. হানিফ মনণ্ডল, ফরিদপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গি, ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বেনজীর আহমেদ তাবরিজ, সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম মিয়াসহ অন্যান্যরা।
আনন্দ উৎসবকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কুচকাওয়াজ ও মনোঙ্গ ডিসপ্লে প্রদর্শন ও নানা খেলার অয়োজন করে। পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে আনন্দ উৎসবের সূচনা হয়।
এ সময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, গত বছরেই ফ্যাসিবাদীর শাসন শেষ হয়েছে। আমরা একটি নতুন সময়ে পর্দাপন করেছি, নতুন একটি ফরিদপুর পেয়েছি। কিন্তু আমাদের মাঝে এখনো সেই ফ্যাসিবাদী পেতাত্বারা রয়েছে। তাদের ব্যাপারে আমাদের সবসময়ই সচেতন থাকতে হবে। দেশে অনেক ষরযন্ত্র চলছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে। এ মুহূর্তে আমাদের নির্বাচনটি হওয়া খুবই জরুরি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। এ সময় চৌধুরী নায়াব ইউসুফ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের ফেজবুক ও অনলাইন ছেড়ে পড়াশোনা বিশেষভাবে মনোনিবেশ করতে হবে। পড়াশোনার জন্য সময় ব্যয় করতে হবে। কারণ আগামীতে তোমাদেরই দেশের জন্য বড় ভূমিকা রাখতে হবে।
মাগুরা জেলা প্রশাসককে বিদায় জানাতে প্রেসক্লাব সম্মেলন কক্ষে এক শুভেচ্ছা বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার বিকালে এ সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় ফুল এবং ক্রেস্ট দিয়ে জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলামকে বিদায় শুভেচ্ছা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে জেলা প্রশাসক মো. ওহিদুল ইসলাম মাগুরার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের দিক তুলে ধরে বলেন ৫ আগস্টের পর মাগুরার প্রশাসনিক পরিস্থিতি দুর্বল হয়ে পড়েছিল তারপর আমি জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে আসার পর সর্বস্তরের মানুষের সমন্বয়ে মাগুরাকে একটি উন্নত জেলা হিসেবে গড়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। তিনি আরও বলেন, মাগুরা ডায়াবেটিস হাসপাতালের উন্নয়ন মেডিকেল কলেজের ভূমি অধিগ্রহণের সমস্যার সমাধান করেছি।
এছাড়া তিনি মাগুরার চক্ষু হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালের উন্নতি এবং মাগুরা কালেক্টরেট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ও সূর্যমুখী শিশু বিদ্যালয়ের মেধাবী ও গরিব ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বৃত্তি কল্যাণ ফান্ড গঠন করেন। মাগুরায় খেলাধুলার মান উন্নত করতে বিভিন্ন ইভেন্টে টুর্নামেন্ট চালু করা হয়। মাগুরা শিল্পকলা একাডেমির উন্নয়নে তার যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া জুলাই আগস্টে শহীদ পরিবার ও আহতদের সঠিক তালিকা করে তাদের আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। তিনি বিভিন্নভাবে মাগুরায় উন্নয়নের চেষ্টা করে গেছেন এবং এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ সময় মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ কলিন্স, দপ্তর সম্পাদক শেখ ইলিয়াস মিথুন, সাংবাদিক শরীফ তেহেরান টুটুলসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা তার কাজের প্রশংসা করে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন।
সচেতন নাগরিক কমিটি, ইয়েসগ্রুপ (সনাক) ও এসিজি মাদারীপুর শাখার সদস্যদের সমন্বয়ে টিআইবির সহায়তায় মাদারীপুরে স্থানীয় পর্যায়ে দর্নীতিবিরোধী অভিজ্ঞতা বিনিময়ে বৃহস্পতিবার সরকারি সমন্বিত অফিস ভবনের মাল্টিপারপাস হল রুমে এক আলোচনা সভা ও মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়। সচেতন নাগরিক কমিটি মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি খান মো. শহীদের সভাপতিত্বে ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শাহাদাত হোসেন লিটনের সঞ্চালনায় এসময় দুর্নীতি প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বক্তব্য রাখেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর জেলা শাখার সভাপতি মো. এনায়েত হোসেন নান্নু, ইয়েস গ্রুপ (সনাক)-এর জেলা শাখার আহ্বায়ক আঞ্জুমান জুলিয়া, জেলা সনাকের সহসভাপতি আন্না আক্তার, সুজনের সদস্য কুমার লাভলুসহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশাল বাংলাদেশের ঢাকাস্থ কো-অর্ডিনেটর মো. আতিকুর রহমান, ক্লাস্টার কো-অর্ডিনেটর মাহান-উল-হক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রবীণ শিক্ষক মহাদেব বর্মন, প্রফেসর (অব.) মো. মকবুল হোসেনসহ মাদারীপুর জেলা শাখার অন্যান্য প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দুর্নীতি আজ সমাজে এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত কোনো প্রতিষ্ঠান আর বাকি নাই। এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলে দুর্নীতিবাজরা অপ্রতিরোধ্যভাবে দুর্নীতি চালিয়ে যাবে। টিআইবি এ জন্য ২০০১ সাল থেকে প্রথমে ৯ জন সদস্য নিয়ে ঢাকায় কাজ শুরু করলেও সারাদেশে আজ এর সদস্য সংখ্যা ১২ হাজারেরে উপরে। দুর্নীতিবিরুদ্ধে ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে, সামাজিক, সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও আন্দোলন গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নাই। রন্ধ্রে-রন্ধ্রে আজ দুর্নীতি ছেয়ে গেছে। দেশ থেকে ২৮ লাক কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। লন্ডনে বিগত সরকারের একজন মন্ত্রীর ৩৬০টি ফ্লাট বাড়ির খবর পাওয়া গেছে।
বক্তারা আরও বলেন, ভূমি অফিস, বিআরটিএ, রেজিস্ট্রি অফিস, পাসপোর্ট অফিসসহ সকল অফিসে দুর্নীতির খবর হরহামেশা পাওয়া যায়। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক বাংলার মাদারীপুর প্রতিনিধি শরীফ মো. ফায়েজুল কবীরসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে যাওয়ার পথে কক্সবাজারের চকরিয়ায় বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে গুরুতর আহত কলেজ ছাত্র শাহেদ মজুমদার লিশান বুধবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন। ঢাকার নিউরো সাইন্স হসপিটালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। লিশান বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজির অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ফালগুনকরা গ্রামের আবদুল মন্নান মজুমদারের একমাত্র ছেলে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নিহতের জেঠাতো ভাই সৈকত মজুমদার
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ফাঁসিয়াখালী ঢালা এলাকায় গত ৫ নভেম্বর বুধবার সকালে চট্টগ্রামমুখী মারসা পরিবহনের একটি বাসের সাথে কক্সবাজারমুখী মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মারা যান লিশাসনের বোন ফারজানা মজুমদার লিজা, ফারহানা মজুমদার টিজা, মা রিজওয়ানা মজুমদার শিল্পী, বোনের শাশুড়ী রুমি বেগম ও ননদ সাদিয়া পাটোয়ারী। আহত হন লিশান মজুমদার, দুলাভাই উদয় পাটোয়ারী ও ভাগিনা সানাদ পাটোয়ারী। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন, ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও প্রশাসন আহতদেরকে উদ্ধার শেষে চকরিয়া ও কক্সবাজারের হাসপাতালে ভর্তি করায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য লিশান মজুমদারকে প্রথম দুইদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় লিশান মজুমদারকে বুধবার সকালে ঢাকার নিউরো সাইন্স হসপিটালে প্রেরণ করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়। আগে স্ত্রী ও দুই মেয়ের পর একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পিতা আবদুল মন্নান মজুমদার বাকরুদ্ধ।
বুধবার সন্ধ্যায় নিহতের প্রতিবেশি সাংবাদিক আবু বকর সুজন বলেন, একটি দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জন সদস্য মারা যাওয়ায় একা হয়ে পড়েছেন আবদুল মন্নান মজুমদার।