মিয়ানমারের অভ্যন্তরে হওয়া গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দে আবারও কেঁপেছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সীমান্ত এলাকা। গত মঙ্গলবার (২৬ জুন) রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার এ সময় পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তের হ্নীলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম, টেকনাফ পৌরসভাসহ সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকা থেকে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
অন্যদিকে মিয়ানমারের মংডু শহরের হারি পাড়ার রশিদ উল্লাহর বাড়িতে জান্তা সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় প্রায় ১০ জন নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মিয়ানমার মুন্ডি পাড়ার বাসিন্দা ফয়সাল। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ নারী ও শিশু বলে জানিয়েছেন ফয়সাল। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে এ বিমান হামলার ঘটনা ঘটে।
মিয়ানমার মংডু মুন্ডি পাড়ার রোহিঙ্গা চুরি করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ইকরাম বলেন, ‘মিয়ানমার মংডু শহরের জান্তা বাহিনীর চৌকির দখলকে কেন্দ্র করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে বৃহস্পতিবার ৩টার দিকে মংডু শহরের আশিক্ষা পাড়া, গইন্যা পাড়া ও গর্জনিয়া পাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে বিমান হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী। এতে অনেক রোহিঙ্গা নিহত হচ্ছে। অনেক রোহিঙ্গা প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা ১৫ জন রোহিঙ্গা ছোট নৌকা নিয়ে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ নাফ নদী দিয়ে এখানে আসি। আমাদের আত্মীয়-স্বজন নিয়ে আসার জন্য খবর নিচ্ছি।
মঙ্গলবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত রাখাইনের মংডুতে তুমুল সংঘর্ষে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তজুড়ে কেঁপে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার (মংডুতে) রোহিঙ্গারা টিকতে না পেরে প্রাণে বাঁচতে এদিক-সেদিক যাওয়ার চেষ্টা করেছে। আবার অনেকে সীমান্ত দিয়ে এপারে প্রবেশের অপেক্ষা করছে। তবে রোহিঙ্গারা যাতে নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সীমান্ত-নাফনদে বিজিবি-কোস্ট গার্ড সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের জের ধরে নাফ নদীর ওপারে মংডু শহরের কয়েকটি এলাকার আশপাশে রোহিঙ্গারা জড়ো হয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে টেকনাফে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সীমান্তের লোকজন।
বিস্ফোরণের শব্দে আবারও কাঁপছে সীমান্ত
জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হ্নীলার চৌধুরীপাড়া ও সাবরাংয়ের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির পাশাপাশি অন্তত ১০০ থেকে ২০০টি মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
সীমান্তে কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলেও শুনেছি উল্লেখ করে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে থেমে থেমে গোলা চলছে ওপারে। ফলে বিজিবি ও কোস্টগার্ড রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তৎপর রয়েছে। তাছাড়া সেখানে কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে কিন্তু কিছু রোহিঙ্গা পুশব্যাক করলেও কিছু রোহিঙ্গা দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মো. ইউনুছ জানান, দুই পক্ষের গোলাগুলিতে অনেক রোহিঙ্গা মারা যাচ্ছে। এখন প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ছাড়া তাদের আশ্রয় নেওয়ার মতো কোনো পথ নেই। তাই যেকোনো সময় তারা বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে ছুটতে পারে। কিন্তু যারা এপারে আসার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, তাদের এখানে না আসতে নিষেধ করা হচ্ছে।
বিজিবির ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে ৩ হাজার ৩৫৪ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। পরে তাদের মিয়ানমারে (স্বদেশে) ফেরত পাঠায় বিজিবি। তাদের মধ্যে ৮৪৮ জন নারী, ৭৪৯ শিশু ও ১৭৫৭ জন পুরুষ। আর তিন রোহিঙ্গাকে থানায় দেওয়া হয়।
বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ওপারে সংঘাতের কারণে মাঝে মাঝে এপারে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। তবে রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে বিজিবি। বিশেষ করে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। সব ধরনের সবজির দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে, যার প্রভাব গতকাল শুক্রবারও রাজধানীর বাজারে দেখা গেছে। কোনো সবজির দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে নাই। চলতি মাসের শুরুতে ডিমের দাম কম ছিল। কিন্তু এখন ডিমের দাম ডজনপ্রতি ৩০ টাকা বেড়েছে। মাস দেড়েক আগে দাম কম থাকলেও বাজারে চড়া চালের দামও। পাশাপাশি গত দুই সপ্তাহ ধরেই দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, আদা ও এলাচের। বাড়তি দামে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস।
সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত।
সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ভালো মানের গোল বেগুন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম দ্বিগুণ, বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৫০ টাকা কেজিতে। লম্বা জাতের বেগুনের দাম ১৬০-১৮০ টাকা এবং সাদা জাতের বেগুন কেজিপ্রতি ১২০-১৪০ টাকা।
ঝিঙা, ধুন্দল, শসা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে; ঢেঁড়স, পটোল, কাকরোল কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। ৮০ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে শুধু পেঁপে—৪০ টাকা কেজি। প্রতি পিস জালি কুমড়া ১০০-১২০ টাকা, লাউ ১০০-১৫০ টাকা।
বাজারে বরবটি প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুমুখী ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দাম বেড়েছে কাঁচামরিচেও—কেজিপ্রতি ২২০-২৪০ টাকা। পাইকারি বাজারে পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।
বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, সবজির এমন নাগালবিহীন দামে খরচ মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। খরচের ধাক্কা সামলাতে পরিমাণ কমিয়ে কিনতে হচ্ছে সবজি।
উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা একজন কর্তা বলেন, ‘বেগুনের দাম শুনে রীতিমতো আকাশ থেকে পড়লাম। এক সপ্তাহে বেগুনের দাম কেজিতে ১০০ টাকা কী করে বাড়ে! বেগুন না কিনে পেঁপে কিনে বাসায় যাচ্ছি।’
আরেক ক্রেতা বলেন, ‘সাধারণত এক কেজির নিচে কোনো সবজি কেনা হয় না। আজকে তিন রকমের সবজি আধা কেজি করে কিনে নিয়ে যাচ্ছি। সবজির দাম শুনে মানতেই পারছি না। গত এক বছরের মধ্যে এবারই সবজির দাম এত বেশি।’
বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। এতে করে অনেক ক্রেতাই সবজি না কিনে ফিরে যাচ্ছেন, অনেকে কিনছেন আধা কেজি বা ২৫০ গ্রাম করে। সব মিলিয়ে তাদেরও মুনাফা কম হচ্ছে।
রাজধানীর কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল শুক্রবার ভোরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা সবজির প্রতিটির দাম ছিল বাড়তি। মৌসুমের এ সময়ে ফলন কম হওয়ায় সবজির দাম বেড়েছে বলে দাবি করেন বিক্রেতারা।
কাওরান বাজার সবজির আড়তের বিক্রেতা নূর ইসলাম জানান, পাল্লাপ্রতি সবজির দাম বেড়েছে ১০০-২০০ টাকা। এতে করে প্রতি কেজি সবজিতে খরচ বাড়ছে। অক্টোবর মাস আসলে সবজির দাম আবার কমে আসবে বলে জানান তিনি।
আরেক ব্যবসায়ী আবদুস সালাম বলেন, মার্চ থেকে মাঠে সবজির পরিমাণ কমতে থাকলেও চাহিদা আগের মতোই থাকে। তাই সবজির দাম বাড়ে এ সময়ে। এ ছাড়া রাস্তায় গত বছরের তুলনায় এ বছর বাড়তি খরচ বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
শুধু সবজি নয়, উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজও। গত সপ্তাহের ৭৫ টাকা কেজির পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯০ টাকায়। পাইকারি বাজারে পাল্লাপ্রতি পেঁয়াজের দাম ৪০০-৪৩০ টাকা।
এর বাইরে দাম বেড়েছে ডিমের। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। সাদা ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৩০-১৩৫ টাকা।
স্থানভেদে সোনালি এবং ফার্মের মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। সোনালি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৪০ টাকায়, ফার্ম ১৭০-১৮৫ টাকা। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস—কেজি ৭৫০-৮০০ টাকা; খাসির মাংস কেজিপ্রতি ১১০০-১২০০ টাকা।
বাজারে দাম বেড়েছে প্রতিটি মাছের; কেজিতে ৫০-২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। কাঁচকি মাছের দাম গত সপ্তাহে ৫০০ টাকা থাকলেও এ সপ্তাহে ৬০০ টাকা। চাপিলা মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা। পোয়া মাছ সাইজভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৭০০ টাকায়। শিং-মাগুর কেজিপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা।
বড় মাছের মধ্যে রুই কেজিপ্রতি ৩৮০-৪২০ টাকা, কাতল ৪০০-৪৮০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০-২৮০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২৫০ টাকা, নদীর পাঙাশ ৮০০-১০০০ টাকা, বোয়াল ৮০০-১২০০ টাকা, আঁড় মাছ ১ হাজার টাকা।
গত সপ্তাহের তুলনায় দাম বেড়েছে ইলিশ মাছেরও। এক কেজির নিচে মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকায়, ছোট সাইজের ইলিশ ১২০০-১৬০০ টাকা। এক কেজির ওপরে ইলিশের দাম ২০০০-২৫০০ টাকা পর্যন্ত।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবজি এবং পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে বাজারের প্রতিটি পণ্যের দামে। দাম কমাতে সিন্ডিকেটের কারসাজি, পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি এবং বাজার মনিটরিংয়ের ওপর জোর দেন তারা।
রাজশাহীর পবা উপজেলায় একটি বাড়িতে দুই সন্তানসহ এক দম্পতির লাশ পাওয়া গেছে। পারিলা ইউনিয়নের বামনশিকড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। | বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) গভীর রাত থেকে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ভোরের মধ্যে যেকোনো সময় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত ৪ জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহের পাশে পাওয়া একটি চিরকুটে লেখা আছে, ‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে।’
ঘটনা জানাজানি হয় শুক্রবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে। তারপর দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন- ওই এলাকার বাসিন্দা মিনারুল ইসলাম (৩৫), স্ত্রী মনিরা বেগম (২৮) এবং তাদের ছেলে মাহিন (১৩) ও মেয়ে মিথিলা (২)। মাহিন খড়খড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। আর মিনারুল কৃষি কাজ করতেন।
পরিবারের সদস্য, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিনারুল আগে একসময় জুয়া খেলতেন। পরে ছেড়ে দেন। এ জন্য তিনি ঋণগ্রস্ত ছিলেন। দেড় বছর আগে বাবা রুস্তম আলী ধানিজমি বিক্রি করে ঋণের একটা অংশ দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এরপরও তার দুই লাখ টাকা ঋণ ছিল। এই ঋণের জন্য প্রতি সপ্তাহে তাকে ২ হাজার ৭০০ টাকার বেশি কিস্তি পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু কিস্তি চালাতে পারছিলেন না মিনারুল। বাবাকে মিনারুল আর কিছু জমি বিক্রি করে পুরো টাকা পরিশোধ করতে বলেছিলেন। কিন্তু বাবা জমি বিক্রি করতে চাননি। এ নিয়ে মা–বাবার সঙ্গে মিনারুল কথা বলা বন্ধ করে দেন। এমনকি ছেলেমেয়েদেরও মিশতে দিতেন না।
চিঠিতে লেখা হয়, ‘আমি মিয়ারুল যেসব লেখা লেখব, সব আমার নিজের কথা। লিখে যাচ্ছি এই কারণে আমরা চারজন আজ রাতে মারা যাব। এই মরার জন্য কারো দোষ নাই। কারণ লেখে না গেলে বাংলার পুলিশ কাকে না কাকে ফাসা টাকা খাবে। আমি মিনারুল প্রথমে আমার বোকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিমকে মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলাতে ফাঁস দিয়ে মরেছি। আমাদের ৪ জনের মরা মুখ যেন বাপের বড় ছেলে ও তার বো বাচ্চা না দেখে এবং বাপের বড় ছেলে যেন জানাজায় না যায়। আমাদের ৪ জনকে কাপন দিয়ে ঢাকতে আমার বাবা টাকা যেন না দেয়। এটা আমার কসম। ইতি মিনারুল, আসসালামু আলাইকুম।’
অপর একটি চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘আমি নিজ হাতে সবাকে মারলাম। এই কারণে যে আমি একা যদি মরে যাই,আমার বো, ছেলে, মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে। আমরা মরে গেল ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমাদের বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভালো হলো। কারো কাছে কিছু চাইতে হবে না। আমার জন্য কাউকে মানুষের কাছে ছোট হতে হবে না। আমার বাবা আমার জন্য লোকের কাছে ছোট হয়েছে। আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’
এই দুটি চিঠি লাশের পাশে পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার পর সোয়া ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে যান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, মিনারুল স্ত্রী-সন্তানদের শ্বাস রোধ করে হত্যা করে নিজে ‘আত্মহত্যা’করেছেন। মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ঘটনায় মামলা হবে। তিনি বলেন, একটা চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে তিনি ঋণগ্রস্ত ও আর্থিক অনটনের কথা লেখেছেন। সিআইডির ফরেনসিক টিম ও পিবিআই এসেছে। তারা ক্রাইম সিনের আলামতগুলো সংগ্রহ করবে। পরে বিস্তারিত জানাতে পারবেন।
স্থানীয় পারিলা ইউপির চেয়ারম্যান মো. সাহেদ আলী বলেন, মিনারুল ঋণগ্রস্ত ছিলেন। তাকে সপ্তাহে ২ হাজার ৭০০ টাকার বেশি কিস্তি দিতে হতো। তিন দিন আগে তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে চালসহ অন্যান্য জিনিসপত্র কিনেছেন। বর্ষাকালে কাজকর্ম ছিল না। এ জন্য চাপে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সকালে ঘটনা জানার পর দ্রুত এখানে আসি। পরে পুলিশকে জানাই। সে আগে জুয়া খেলত, পরে আর খেলেনি। ঋণের একটি টাকা মিনারুলের বাবা পরিশোধ করেছেন। এ জন্য পাঁচ কাটা জমিও বিক্রি করেছিলেন। আরেকটি ঋণ টানছিল মিনারুল।’
মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী বলেন, ‘ছেলের কিছু ঋণ ছিল। সেটা খুব বেশি না। নতুন করে কোনো ঋণ আছে কি না, তা জানি না। আগে যেটা ঋণ করেছিল, সেটা ধানিজমি বিক্রি করে দিয়েছি। পরে আর কবে কবে ঋণ করেছিল, সেটা জানি না।’
মিনারুলের মা আঞ্জুয়ারা বলেন, ‘কোনো গন্ডগোল ছিল না। ভরণপোষণ আমিই দিই। ধারদেনা ছিল, মাটি (জমি) বিক্রি করে আমি দিয়েছি। আবার নতুন করে ধার করেছে। আজ সকালে মাছ কিনে আনলে ডাকাডাকি করি। পরে দেখি ছেলে ঝুলে আছে। নাতিকে আমিই মানুষ করেছি। আমার ওখানেই থাকত। কীভাবে কী হয়ে গেল।’ একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বাজিতপুর থেকে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ভৈরবে মেঘনা নদী থেকে রাকিব (২৭) নামের এক যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ থানা পুলিশ।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ভৈরবের লুন্দিয়া এলাকায় নদীতে মরদেহটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে ভৈরব নৌ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের স্বজনরা জানান, গত ১০ আগস্ট বিকেলে রাকিব বাড়ি থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে একই উপজেলার কুকরাই গ্রামের বন্ধু শাওনের বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হন। এরপর থেকে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও না পাওয়ায় নিহতের ভাই রিয়াজ মিয়া বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বাজিতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তীতে ভৈরবের মেঘনায় লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে তাকে সনাক্ত করি।
এ বিষয়ে ভৈরব নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, লুন্দিয়া এলাকা থেকে রাকিবের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা নদীতে ফেলে দিয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে হত্যাসহ ডাকাতি মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী গোলাম হোসেন মিয়া (৩৭) কে গ্রেপ্তার করেছে সিপিসি-২, র্যাব-১৪, ভৈরব ক্যাম্প।
সে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার কালিপুর মধ্যপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে।
শুক্রবার দুপুরের দিকে শহরের কালিপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা যায়, সিপিসি-২, র্যাব-১৪, ভৈরব ক্যাম্প এর আভিযানিক দল নরসিংদী জেলার বেলাবো থানা এলাকায় সিএনজি ডাকাতির পর সিএনজি ড্রাইভারকে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনায় নরসিংদীর বেলাবো থানার মামলা নং-০১(০১)১৫, ধারা-৩৯৬/২০১ এর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী গোলাম হোসেন মিয়াকে শুক্রবার শহরের কালিপুর মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভৈরব র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মুহিত কবির জানান, হত্যাসহ ডাকাতি মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী গোলাম হোসেন মিয়াকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেলেও শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করেছে পানি। ফলে কিছুটা স্বস্থিতে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা। শুক্রবার হঠাৎ করে দুধকুমার নদীর পানি ১৬ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কমতে শুরু করেছে তিস্তা, ব্রহ্মপূত্রনদসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি।
এদিকে পানি কমলেও তিস্তা নদী অববাহিকায় ৪টি ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে পরেছে। জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন এবং উলিপুর উপজেলার থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বজরা ইউনিয়নের কালপানি বজরা ও সাধুয়াদামারহাট গ্রামে তীব্র ভাঙন শুরু হওয়ায় লোকজন বাড়ি সড়াতে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকেও জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।
বজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাইয়ুম সর্দার জানান, ভাঙন প্রতিরোধে বজরা ইউনিয়নে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ শুরু না করায় চলতি সপ্তাহে ৬টি বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। হুমকীতে রয়েছে ১০টি বাড়িসহ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।এরমধ্যে কালপানি বজরা ও সাধুয়াদামারহাট গ্রামের শাহজাদি, আশরাফুল, হান্নান, মুকুল, মজিদা ও রোসনার বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে।
ওই এলাকার সাতালষ্কার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ারা জানান, কাল যে রাস্তা দিয়ে স্কুলে গেছি, আজ সেই জায়গা নদীগর্ভে চলে গেছে। যে কোন সময় দুটি স্কুল নদীগর্ভে চলে যেতে পারে।
সাধুয়াদামারহাট গ্রামের ফুলবাবু জানান, নদী আমার ২ বিঘা জমি খেয়ে গেছে। আমার মতো মোফাজ্জল ও আশরাফুলের বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে। সরকারিভাবে আমরা নদী ভাঙন রোধে কাজ চাই।
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার সাহা জানান, আমি ভাঙন কবলিত বজরা ও থেতরাই ইউনিয়ন পরিদর্শন করেছি। জনপ্রতিনিধিদের তালিকা তৈরির জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদের কাছে ৩২০টি শুকনা খাবার প্যাকেট রয়েছে। এছাড়াও জিআর’র চাহিদা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে দুধকুমার নদীতে পানিবৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে। তবে শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করেছে পানি। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত দুধকুমার নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও শুক্রবার পানি ১৬ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে পানি কমলেও জলাবদ্ধতার কারণে নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের কাস ইউনিয়নের ফান্দের চরে ৪ থেকে ৫টি নীচু বাড়িতে পানি উঠেছে বলে স্থানীয়রা জনিয়েছে। একইভাবে ওই উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের কুটি বামনডাঙ্গা চরে নীচু এলাকায় অবস্থিত দুটি বাড়িতে পানি উঠছে বলে স্থানীয় যুবক আশরাফুল ও কাদের জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ জানান, আমরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ খবর নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে কিছু নিচু বাড়ি জলবন্দী রয়েছে বলে জেনেছি। তিনি আরও জানান, যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ও নদী ভাঙন বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন সরকার জানান, প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের কাছে ২ হাজার ৫শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৪৪০ মে.টন জিআর চাল মজুদ রয়েছে। নগদ টাকা রয়েছে ১৪লাখ। তালিকা পেলেই আমরা সাথে সাথে উপজেলাগুলোতে বরাদ্দ দিয়ে দিবো। তারপরও প্রতি উপজেলায় ৩২০ প্যাকেট করে শুকনো খাবার সরবরাহ করা আছে।
প্রথম থেকে চতুর্থ সাইকেল পর্যন্ত "সামগ্রিক দক্ষতা" মূল্যায়নে সারা দেশের ৬৪টি টিটিসির মধ্যে ঝালকাঠি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) শতকরা ৮৭ শতাংশ দক্ষতা অর্জন করে সারাদেশে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে।
বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় কারিগরি শিক্ষা বিষয়ক এসেট (ASSET) প্রকল্পের ৫ম সাইকেল সমাপনী ও ৬ষ্ঠ সাইকেল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান গত ১৪ আগষ্ট অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সচিবসহ বিএমইটি'র (BMET) সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠি টিটিসির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামীম হোসাইন বলেন, 'এই প্রতিষ্ঠানের সাফল্য অর্জনের জন্য এখানে কর্মরত সকল ট্রেড ইনচার্জ, প্রশিক্ষক, অতিথি প্রশিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আগামীতে আরও ভালো ফলাফল অর্জনের লক্ষ্যে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই।'
উল্লেথ্য, 'ঝালকাঠির সরকারী টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) এই জেলার একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এটি মূলত দক্ষ জনশক্তি তৈরীর জন্য বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। এখানে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, সেলাই প্রশিক্ষণ, ওয়েল্ডিং সহ বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং নারীরাও বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। ঝালকাঠি টিটিসি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখছে।
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।
শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের সিংগোয়ারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে গ্রামের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, তাড়াইল উপজেলার কাজলা গ্রামটিতে কিছুদিন আগেও মাদক সেবনকারী বা মাদক ব্যবসায়ী ছিল না। কিন্তুু বর্তমানে হাত বাড়ালেই খুব সহজে মিলছে মাদকদ্রব্য। মাদক সরবরাহকারী একটি চক্র এই এলাকায় শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। মাদকে ছেয়ে গেছে এখানকার বিভিন্ন অলিগলি। এসব মাদকদ্রব্যের বেশির ভাগ ক্রেতাই হচ্ছে বেকার যুবক। এতে এলাকায় বাড়ছে চুরি ও ছিনতাই। অনেকে প্রকাশ্যেই মাদক গ্রহণ করছে এবং বিক্রি করছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের যুবসমাজ ধ্বংস হতে বেশি সময় লাগবে না। মাদকের এত ছড়াছড়ি থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
দামিহা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রুহুল আমিন বলেন, কিছুদিন আগেও কাজলা গ্রামটিতে মাদকসেবী বা ব্যবসায়ী কেউ ছিল না। কিন্তুু বর্তমানে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। যেমন বেড়েছে মাদকসেবী, তেমনি বেড়েছে ব্যবসায়ীর সংখ্যাও। তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
মানবন্ধনে তাসলিমা-হাসেম ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান ও সমাজকর্মী অ্যাডভোকেট মাহফুজুল হক বলেন, শুধু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একক প্রচেষ্টায় মাদক নির্মূল করা যাবে না। পরিবার থেকে সচেতনতা শুরু করতে হবে, সন্তানদের পারিবারিক বন্ধন বাড়াতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে তরুণ সমাজ রক্ষা করতে হবে। অন্ধকার গহীন অরণ্যে হারিয়ে যাবে আগামীর ভবিষ্যৎ। মাদকসেবী একটি মারাত্মক সমস্যা তবে সম্মিলিত প্রয়াসে সমাধান সম্ভব।
মানববন্ধনে শিক্ষক হাসিবুর রহমান, ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল রানা, সাবেক সেনা সদস্য ইসহাক মিয়া, ইউপি সদস্য রুহুল আমিন ও সাবেক ইউপি সদস্য খোকন মিয়া, ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সাত বছরের একমাত্র ছেলের জন্য মাদ্রাসায় নাস্তা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেছে প্রবাসীর স্ত্রী। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল গ্রামে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে ওই গ্রামের বাসিন্দা কাঞ্চন শরীফের ছেলে ও দুবাই প্রবাসী মিরাজ শরীফ জানান, তিনি ও তার মা দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে কর্মের সুবাধে দুবাইতে থাকেন। গত নয় বছর পূর্বে একই বংশের সিরাজ শরীফের মেয়ে শান্তা আক্তার মনিকে (২৭) সামাজিকভাবে তিনি (মিরাজ) বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের আয়ান ইসলাম নামের সাত বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
প্রবাসী মিরাজ শরীফ আরও জানান, চলতি বছরের ৯ জুন তিনি ছুটিতে বাড়িতে এসে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন মোবাইল ফোনের পরিচয়ের সূত্রধরে তার স্ত্রী শান্ত আক্তার মনির সাথে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মাইজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলামের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ইতোমধ্যে একাধিকবার আরিফুল ইসলামের সাথে তার স্ত্রী শান্তা কুয়াকাটা ও বরিশালে একাধিকবার রাত্রীযাপন করেছে। যা তার স্ত্রী শান্তা অকপটে স্বীকার করলেও জীবনে আর কোনদিন এ ভুল করবে না মর্মে উভয়পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে লিখিত মুচলেকা দেয়। পরবর্তীতে তারা ভাল ভাবেই সংসার করছিলেন।
মিরাজ শরীফ বলেন, গত ৭ আগস্ট সকালে সরিকল বন্দরের মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত তাদের একমাত্র ছেলের জন্য সকালের নাস্তা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় শান্তা। এরপর দীর্ঘসময়ে সে (শান্তা) বাড়িতে না ফেরায় অনেক খোঁজাখুজি করেও তার কোন সন্ধ্যান মেলেনি।
পরবর্তীতে ওইদিন দুপুরে শান্তা তার বাবা সিরাজ শরীফকে ফোন দিয়ে জানায় সে মুন্সীগঞ্জে আরিফুলের কাছে রয়েছে। তাকে যেন খোঁজাখুজি করা না হয়। পরবর্তীতে বাসায় তল্লাশী চালিয়ে ঘরে থাকা চার ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৬০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোনের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় প্রবাসী মিরাজ শরীফ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
নেত্রকোনা জেলা সদরের মোক্তারপাড়া মাঠে আয়োজিত এক বিশাল গনসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমীর (শায়েখে চরমোনাই) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম প্রধান অতিথির হিসাবে উপস্থিত ছিলেন । প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশব্যাপী চাাঁদাবাজি, লুটপাট, দখলবাজি, জুলুম, অত্যাচার-নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এই বাংলাদেশ দেখার জন্য আমরা রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়িনাই। এমন কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান নাই, যা দখল করা হয়নি। বিচারালয়গুলোকেও দখল করা হয়েছে। এই বাংলাদেশ দেখার জন্য মুগ্ধ জীবন দেয় নাই, আবু সাঈদ তার বুক পেতে দেয় নাই। বাংলাদেশে আমরা আর চাাঁদাবাজ, জুলমবাজ ও দখলবাজ দেখতে চাই না। যদি শেখ হাসিনার বুলেটের সামনে, ট্যাঙ্কের সামনে বুক পেতে দিতে পারি, তাহলে আজকেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেনো বুক পেতে দিতে পারবো না? যদি শেখ হাসিনার জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি, তাহলে আজকেও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কেনো কথা বলবো না? তিনি আরও বলেন, মুসলিম লীগ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছেন। তাদের শাসনে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এর মূল কারণ খুঁজতে হবে। দেশ, দল ও নেতা পরিবর্তন করে শান্তি আসবে না, শান্তি তখনই আসবে, যখন আমরা নীতি আদর্শের পরিবর্তন আনতে পারবো। প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সারা দেশে খুন, লুণ্ঠন ও চাঁদাবাজি বন্ধ এবং পিআর পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ইসলাম বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর জেলা কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে। মুফতি নুরুল ইসলাম হাকিমীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা ওয়ালীউল্লাহ্ এবং মুফতি ওমর ফারুক ওফার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন: জতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা জসিম উদ্দিন পাঠান, ইসলামী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট এনামূল হক মুর্শেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু সায়েম, সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাসুম মোস্তফা,জামায়েতে ইসলামীর জেলা সেক্রেটারী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা মামুনুর রশিদ রব্বানী, মুফতি তাজুল ইসলাম কাশেমী, মুফতি ওয়ালী উল্লাহ প্রমুখ। সমাবেশে শায়েখে চরমনোই সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম নেত্রকোনার পাঁচটি আসনের জন্য দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন: নেত্রকোনা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনে মাওলানা মামুনুর রশিদ রব্বানী, নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনে হযরত মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনে জাকির হোসেন সুলতান, নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) আসনে হাফেজ মাওলানা মুখলেছুর রহমান ও নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনে মুফতি নূরুল ইসলাম হাকিমী।
পটুয়াখালীর বাউফল থানা হাজতে কম্বল ছিঁড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন রাকিব সিকদার (২০) নামে এক আসামী। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাত ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সিসি ক্যামেরায় বিষয়টি ধরা পড়লে পুলিশ দ্রুত তাকে উদ্ধার করে।
বাউফল পৌর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন সিকদারের ছেলে রাকিব সিকদার ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একই দিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে পৌর শহরের চন্দ্রপাড়া সড়কের পাশে জেলা বারের সদস্য অ্যাডভোকেট এনামুল হকের বাড়িতে চুরির অভিযোগে স্থানীয়দের সহায়তায় রাকিবকে আটক করে থানায় আনা হয়। পরে এসআই মাসুদ খলিফা তাকে হাজতে রাখেন।
ডিউটিরত এএসআই মো. শাহীন হাওলাদার জানান, রাত ৯টার দিকে সিসি ক্যামেরায় নজর দিতে গিয়ে তিনি দেখতে পান রাকিব কম্বল ছিঁড়ে হাজতের গ্রিলে গলায় ফাঁস দিচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দরজা খুলে তাকে উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে রাকিব বলেন, আমাকে যে অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই অপরাধ আমি করিনি। আমাকে ডেকে নিয়ে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। আমি এই মিথ্যা অপবাদ সহ্য করতে পারছিলাম না, তাই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি।
বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আক্তারুজ্জামান সরকার বলেন , চুরির অভিযোগে আটক রাকিবকে শুক্রবার আদালতে পাঠানোর কথা ছিল। আত্মহত্যার চেষ্টার পর তাকে ডিউটি অফিসারের কক্ষে রাখা হয়েছে।
সিলেটের ভোলাগঞ্জ থেকে লুটকৃত ৪০ হাজার ঘনফুট সাদা খনিজ পাথর উদ্ধার করেছে র্যাব-১১।বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে কাঁচপুর ব্রীজ সংলগ্ন ডেমরার সারুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে এই পাথর উদ্ধার করা হয়।
অভিযান শেষে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, অবৈধভাবে উত্তোলিত এসব বিপুল পরিমাণ পাথরের অনেকাংশ মেশিনে ক্রাশ করা হয়েছে। ৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে এসব পাথর জব্দ করা হয়েছে। তাদের মালিকপক্ষের তালিকা করা হয়েছে। অভিযানের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত শিগগিরই জানানো হবে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ২ লক্ষ ঘনফুট পাথর লুটপাট করা হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ কোটি টাকা। এছাড়াও সাদা পাথর এলাকা থেকে প্রায় ৬ লক্ষ ঘনফুট বালু লুটপাট করা হয়েছে যার বাজার মূল্য ২৪০ কোটি টাকার মত। অবৈধভাবে উত্তলন করে সাদা পাথর স্থানীয় দয়ার বাজার, কলাবাড়ি ও ভোলাগঞ্জ ১০নং ঘাটে কালেকশন করে বিভিন্ন ক্রাশার মেশিনে প্রেরণ করা হয়৷ এদিকে র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ সাদা খনিজ পাথর উদ্ধারে ঢাকা জেলার ডেমরার সারুলিয়ায় যৌথ অভিযান চালানো হয়। এতে আনুমানিক ৪০ হাজার ঘনফুট আস্ত ও ক্রাশড পাথর উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে পনের জন গাড়ী চালকের নামে বিধিমালার ব্যত্যয় করে নিয়ম বর্হিভুতভাবে সাময়িক বরাদ্দকৃত প্লটসমূহের বরাদ্দ বাতিল করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণলয়।
যাদের প্লট বাতিল করা হয়েছে:- গাড়ী চালক মোঃ বোরহান উদ্দিন এবং মোঃ বেলাল হোসেনের নামে বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট; গাড়ী চালক মোঃ সাইফুল ইসলাম ও মোঃ সফিকুল ইসলামের বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট; গাড়ী চালক মোঃ মতিউর রহমান ও মোঃ নুর হোসেন ব্যাপারীর নামে বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট; গাড়ী চালক মোঃ মাহবুব হোসেন ও মোঃ শাহীনের নামে বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট; গাড়ী চালক মোঃ মিজানুর রহমান ও মোঃ বাচ্চু হাওলাদারের নামে বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট; গাড়ী চালক মোঃ নুরুল ইসলাম ও মোঃ রাজন মাদবরের নামে বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট এবং গাড়ী চালক মোঃ নুরুল আলম, মোঃ নুর নবী ও মোঃ শাহীনের নামে বরাদ্দকৃত ৫ কাঠার প্লট।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ১৫ গাড়িচালকের নামে নিয়মবর্হিভুতভাবে প্লট বরাদ্দ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে গঠিত দু’টি তদন্ত কমিটি তাঁদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। তাঁদের দাখিলকৃত প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, আলোচ্য আবেদনকারীগণ ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে প্লট বরাদ্দের আবেদন না করেও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের লিখিত নির্দেশনা অনুযায়ী ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে নির্ধারিত কোটার সীমা অতিক্রম করে এবং বিধিমালার ব্যত্যয় করে নিয়ম বর্হিভুতভাবে তাদের নামে প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। দু’টি তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে আলোচ্য ১৫ (পনের) জন গাড়ী চালকের নামে প্রদত্ত সাময়িক বরাদ্দের আদেশ বাতিলের সুপারিশ করেছে।
আজ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণলয়ের উপসচিব ড. মোঃ নুরুল আমিনের স্বাক্ষরিত পত্রে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে জরুরীভিত্তিতে এসকল প্লট বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা শহরে খাদিজা সেবা ক্লিনিকে একজন প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট)উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগের একটি দল তদন্ত সাপেক্ষে ওই ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারসহ ক্লিনিক সিলগালা করেছেন ।
ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে,বুধবার (১৩ আগষ্ট)সকালে উপজেলার কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের কামাল শেখের প্রসূতি স্ত্রী লাবনী আক্তারকে খাদিজা সেবা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় । ওইদিন বিকেলে রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশন করা হলে জমজ সন্তানের জন্ম দেন ।
অপারেশনের পর লাবনী আক্তার গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তড়িঘড়ি করে রোগীকে খুলনার একটি হাসপাতালে রেফার করেন ক্লিনিক পরিচালক খাদিজা পারভিন । হাসপাতালে নেওয়ার পথে লাবনী আক্তারের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ।
লাবনী আক্তারের দেবর মো.আসলাম হোসেনের অভিযোগ ক্লিনিকে কোন অ্যানেথেসিয়া চিকিৎসক ছিল না । কোন রকমে অজ্ঞান করেই রোগীকে অপারেশন করা হয় । যে কারণে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে আমার ভাবীর মৃত্যু হয়েছে । তিনি বলেন,জমজ সন্তান দুইটি বর্তমানে খুলনা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে । এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,আমার ভাই মা বাবা সকলেই নবজাতকের চিকিৎসার জন্য খুলনায় অবস্থান করছে । তারা বাড়ীতে আসলে পরে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো.শোয়াইব হোসেন বলেন,ওই ক্লিনিকে সেবিকা ও ডিউটি চিকিৎসক নেই । এছাড়া মানসম্মত অপারেশন থিয়েটারও নেই । তিনি বলেন,সিভিল সার্জন মহোদয়ের নির্দেশ ক্রমে আমিসহ কালিয়া উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম বিশ্বাস,মেডিকেল কর্মকর্তা মো.হাসিবুর রহমান,ডেন্টাল সার্জন মো.সরোয়ার হোসেন,উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর মো.মঈনুদ্দীন ওই ক্লিনিক তদন্তে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পাই ।
উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম বিশ্বাস বলেন,এর আগেও খাদিজা সেবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ পাওয়া গেছে । ক্লিনিকে মেয়াদোত্তীর্ণ অসুধ ব্যবহারের জন্য ভ্রাম্যমান আদালত বেশ কয়েকবার জেল জরিমানা করেছে । কিন্তু তারপরও ওই ক্লিনিক চালু রয়েছে ।
জানতে চাইলে ক্লিনিক পরিচালক খাদিজা পারভিন সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন । তিনি মামলা করারও হুমকী দেন ।
সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুর রশীদ বলেন,ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাবার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ একটি তদন্ত টিম পাঠানো হয়েছিল । তিনি বলেন,প্রাথমিক পর্যায়ে ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছে । আগামি তিন কর্মদিবসের মধ্যে একটি তদন্ত টিম গঠন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।