ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে গত দুদিনে পাচার হওয়া সাড়ে ১৪ কেজি সোনা উদ্ধার করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ সময় ৮ চোরা কারবারিকে আটক করেছে তারা। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার এসব অভিযান চালানো হয়। বিএসএফের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গতকাল শনিবার (৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে বিএসএফ জানিয়েছে, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বিএসএফের ৮ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গে নদিয়া জেলার পুট্টিখালীর সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকার মথুরাপুর গ্রামে তল্লাশি চালান। এ সময় মথুর দাস নামে এক সন্দেহভাজনকে চ্যালেঞ্জ করে তল্লাশি করলে তার কাছ থেকে ২০টি সোনার বার ও দুটি সোনার ইট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা সোনার ওজন প্রায় ৪ দশমিক ৭ কেজি। এর ভারতীয় বাজারমূল্য ৩ দশমিক ৩ কোটি রুপির বেশি। বিএসএফের দাবি, উদ্ধার করা সোনা বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করা হয়েছে।
বিএসএফ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি ঠাকুরী গ্রাম থেকে একটি স্কুটিতে করে মথুরাপুর গ্রামের দিকে আসছে। পথেই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পরে তাকে সীমান্ত ফাঁড়িতে এনে তল্লাশি চালিয়ে স্কুটির সিটের নিচে রাখা প্যাকেট থেকে ২০টি সোনার বার ও দুটি সোনার ইট উদ্ধার করা হয়। সব মিলিয়ে ৪ দশমিক ৭ কেজি সোনা উদ্ধার করেছে বিএসএফ। আটক মথুর দাস পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে, মথুর স্বীকার করেছেন, সোনার চালানটি তিনি বনগাঁয় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। দীর্ঘদিন এ কাজ করে ভালো অর্থ উপার্জন করেছেন বলেও জিজ্ঞসাবাদে স্বীকার করেছেন মথুর। আটক ব্যক্তি এবং উদ্ধার করা সোনা পরবর্তী আইনি ব্যবস্থার জন্য রাজস্ব গোয়েন্দা অধিদপ্তর (ডিআরআই) কলকাতার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে, গত শুক্রবার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার সীমানগরের ১১ নম্বর রাজ্য সড়কে পর পর ৪টি অনুসন্ধান চালিয়ে ১০ কেজি সোনা উদ্ধার করেছে বিএসএফের ৬৮ ব্যাটালিয়ন এবং কলকাতার রাজস্ব গোয়েন্দা অধিদপ্তর (ডিআরআই)। এ সময় ৭ জন চোরাকারবারি গ্রেপ্তার হয়েছে। সেদিন উদ্ধার করা সোনার মধ্যে রয়েছে ১টি সোনার ইট এবং সাড়ে ৯ কেজির বেশি ওজনের সোনার বিস্কুট। জব্দকৃত সোনার দাম পৌনে সাত কোটি রুপির বেশি। একই সঙ্গে জব্দ করা হয়েছে ১১ লাখ ৫৮ হাজর ৫০০ রুপি নগদ এবং সোনা ডেলিভারিতে ব্যবহৃত একটি মারুতি ইকো গাড়ি। দেশটির যৌথ বাহিনী দাবি করেছে, এসব সোনা বাংলাদেশ থেকে ভারতে আনা হয়েছিল। সংস্থাটি জানায়, বৃহস্পতিবার সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বিএসএফের ৬৮ ব্যাটালিয়ন এবং ডিআরআই-এর একটি যৌথ দল সীমানগর এলাকায় ১১ নম্বর রাজ্য সড়কে যানবাহনে ব্যাপক তল্লাশি চালায়। ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ বাহিনীর সদস্যরা একটি সন্দেহজনক মারুতি ইকো গাড়ি থামায়। সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করার পর তল্লাশির সময় ৪ দশমিক ৮ কেজি সোনাসহ দুই পাচারকারীকে আটক করা হয়।
একইভাবে ওই সড়কে সকাল ৭টা নাগাদ একটি বাস থামিয়ে তল্লাশিকালে ১ দশমিক ২ কেজি সোনাসহ একজনকে আটক করা হয়। কিছুক্ষণ পর সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ আরেকটি বাস থামিয়ে তল্লাশিকালে ৩ দশমিক ৬২ কেজি সোনাসহ তিনজনকে আটক করা হয়। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অপর একটি অভিযানে ওই জেলার করিমপুরের রামনগর গ্রামে একটি সন্দেহজনক বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ১টি সোনার বিস্কুট ও সাড়ে ১১ লাখ অবৈধ নগদ টাকাসহ একজনকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তার প্রধান পাচারকারীর নাম রফিক মণ্ডল, নদীয়া জেলার টেপুরের বাসিন্দা তিনি। এ ছাড়া লাল, রবি, প্রদীপ, দাউদ, সীমান্ত ও বিট্টু নামের পাচারকারীরা সবাই নদীয়া (পশ্চিমবঙ্গ) জেলার বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে রফিক মণ্ডল জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত এবং এবার তিনি কৃষ্ণনগরে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে সোনার চালান পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া অন্যান্য পাচারকারী জানিয়েছে যে, তারা করিমপুরের সীমান্ত এলাকা থেকে সোনা নিয়ে কলকাতার দমদম রেলস্টেশনে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। গ্রেপ্তার চোরাকারবারিদের সোনাসহ পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডিআরআই, কলকাতার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিএসএফ বাংলাদেশ থেকে এসব সোনা পাচার হয়েছে বলে দাবি করলেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কী বলা হচ্ছে, তা জানার জন্য ইউক্রেনের খারকিভ শহরে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকেন স্থানীয় বাসিন্দা পাভলো নেব্রোয়েভ।
খারকিভ থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে চলা রাশিয়ার হামলার ব্যাপারে আলোচনার জন্য ট্রাম্প ও পুতিন আলাস্কায় বৈঠকে বসেন।
তবে, বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। উল্টো এই সময়ে ইউক্রেনের খারকিভে শক্তিশালী আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। অবশ্য বৈঠকের আগে থেকেই এই আয়োজনকে পুতিনের জন্য চূড়ান্ত বিজয় হিসেবে বিবেচনা করছিলেন অনেকে।
৩৮ বছর বয়সী থিয়েটার ম্যানেজার পাভলো বলেন, ‘আমি দেখলাম, প্রত্যাশা অনুযায়ীই (বৈঠকের) ফলাফল এসেছে। আমি মনে করি, এটা পুতিনের জন্য কূটনৈতিকভাবে বড় ধরনের বিজয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (পুতিন) নিজের বৈধতা সম্পূর্ণরূপে আদায় করেছেন।’
২০২২ সালে হামলা চালানো শুরুর পর থেকে রুশ নেতাকে পশ্চিমা বিশ্বে এড়িয়ে চলার যে প্রবণতা ছিল, ট্রাম্প এবার পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে সেটির অবসান হলো।
শীর্ষ বৈঠকে আমন্ত্রণ না পাওয়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটাকে পুতিনের একার বিজয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বৈঠকে ইউক্রেনকে না রাখায় নেব্রোয়েভ শুধু ক্ষুব্ধই হননি, বরং এই বৈঠককে সময়ের অপচয় মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটা অর্থহীন একটি বৈঠক ছিল। ইউক্রেন সম্পর্কিত সমস্যাগুলো ইউক্রেনের সঙ্গে, ইউক্রেনীয়দের অংশগ্রহণে এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে সমাধান করা উচিত।’
সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মতিথি ও শুভ জন্মাষ্টমীতে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেছেন। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে পূজা-অর্চনা, ধর্মালোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
এর পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের থানা গেটসংলগ্ন স্থানে পূজা ও প্রার্থনা সম্পন্ন হয়।
আলোচনা সভায় হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে চুয়াডাঙ্গা’র অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নয়ন কুমার রাজবংশী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রসাশক এ্যাড. সুব্রত কুমার চক্রবর্তী, ঝিনাইদহ জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এবং উপসচিব রথীন্দ্রনাথ রায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার রায়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহা. শাহীনুজ্জামান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে বরাবরই স্পেশাল। পবিত্র কুরআনেই বলা হয়েছে কেউ অন্য ধর্মের অবতারকে গালি দিবে না তাহলে তোমার ধর্মকে গালি দিবে না। মদিনা সনদেও রাসুলুল্লাহ (সা.) অন্যান্য ধর্ম পালনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে আপনাদের মধ্যে যেন কোনো সংকীর্ণতা না আসে। সমান মর্যাদা সহকারে আপনারা আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারবেন এই নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি। সকল ধর্মের মূলমন্ত্র হলো মানবিকতা। আমি এখানে আসার পর ইসলামিক এন্ড কম্পারেটিভ রিলিজিয়ন নামে একটি নতুন ফ্যাকাল্টি চালু করেছি। এই ফ্যাকাল্টি চালু হলে হিন্দুধর্ম ও অন্যান্য ধর্মের গবেষণা চালু করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, হিন্দু ধর্ম মতে, যখন পৃথিবীতে অধর্মের চর্চা বেড়ে যায়, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন যখন দূর্বিষহ হয়ে যায় তখন দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের লালনের জন্য শ্রী কৃষ্ণ অবতার হিসেবে আগমন করেন। কুরআন ব্যক্তিমানুষ এবং সমাজকে এড্রেস করেছে। উপমহাদেশের ভক্তিবাদের জন্য বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সাজশ আছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র ধর্মীয় পরিচয় ভুলে মানুষ পরিচয় নিয়ে তারা পাশাপাশি থাকবে এই চেতনা লালন করতে হবে। সনাতন ধর্মীয় অনুভূতিতে কেউ আঘাত করলে মানববন্ধন না করে আমার কাছে আসলে আমি সমাধান করে দিবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ যদি এথিজম চর্চা করে এবং কোনো ধর্মকে স্ট্রাইক করে তাহলে তাকে যুক্তি দিয়ে দমন করতে হবে কারণ বর্তমান পৃথিবী হলো যুক্তিতর্কের পৃথিবী। আধুনিক পৃথিবী শক্তির পৃথিবী না বরং যুক্তির পৃথিবী।”
উল্লেখ্য, ধর্মালোচনা অনুষ্ঠানে উপাচার্যের নিকট একটি স্থায়ী মন্দিরের দাবি জানান অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন থামছে না। বরং আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দীন রনি এই ঘোষণা দেন।
রনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু দুঃখজনক হলো, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে শান্তিপূর্ণ অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ বারবার হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে হাসপাতালের পরিচালকসহ প্রশাসন-সমর্থিত একটি চক্র জড়িত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরিশালে এসে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পরই ন্যাক্কারজনক এই হামলার ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও জানান, হামলার পর সংশ্লিষ্টরা উল্লাস করে খিচুড়ি পার্টি” এবং ১৫ আগস্ট উপলক্ষে কাঙালীর ভোজের আয়োজন করেছে যা দেখে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে।
রনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, এই আন্দোলন থামবে না। যতদিন না দালালচক্র ভেঙে প্রকৃত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, ততদিন আমরা রাজপথ ছাড়ব না। ছাত্র আন্দোলন বন্ধ হয়ে গেছে এমন অপপ্রচার চালানো হলেও বাস্তবে আন্দোলন চলছে এবং চলমান থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আগামীকাল (রোববার) সকাল ১১টায় বরিশাল সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হল টাউন হল চত্বর থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। এ কর্মসূচিতে বরিশালবাসীসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসা সেবায় অব্যবস্থাপনা, সিন্ডিকেট ও দালালচক্র ভেঙে সাধারণ মানুষের জন্য দালালমুক্ত ও মানসম্মত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমিক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। তবে আন্দোলনকারীরা প্রায়ই হামলা ও বাধার মুখে পড়ছেন।
বৃষ্টি আর প্রচণ্ড রোদ হলেই প্রয়োজন হয় ছাতার। ঝমঝম আর টিপটিপ বৃষ্টি যেটাই বলেন, বৃষ্টিতে ছাতার কোনো জুড়ি নাই।
একসময় দেখা যেতো গ্রামে গ্রামে ফেরী করে ছাতা মেরামত করতে আসতো কারিগররা। আর মুহূর্তেই অস্থায়ী এই দোকানগুলোতে থাকতো উপচে পড়া ভিড়। এই পেশাতে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্ত সভ্যতার বিকাশের মাধ্যমে আজ আর চোখেই পরে না ছাতা মেরামত কারিগরদের। যেন পেশাটি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে।
সরেজমিনে দেখা যায় পঞ্চগড় জগদল বাজার এলাকায় ছাতা মেরামত করছিলেন এনামুল। তিনি একটি দোকানের সামনে অস্থায়ী বসেছেন। হরেকরকমের ভাঙ্গা ছাতা মেরামত করছেন। আর কাজ বুঝে বেশ দামও নিচ্ছেন।
ছাতা মেরামত করতে আসা দুলাল বলেন, আমার বয়স ৪০বছর। ছোটবেলায় দেখতাম মোড়ে মোড়ে ছাতা মেরামতের মিস্ত্রি পাওয়া যেতো। কিন্ত এখন আর ছাতা মিস্ত্রিদের চোখেই পড়ে না। তাছাড়া, ছাতা মেরামত করতে যে টাকা লাগে, তার সাথে কিছু টাকা দিয়ে নতুন ছাতা কেনা যায়।
ছাতা মিস্ত্রি এনামুল বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমাদের কাজের হিড়িক পরে যেতো। আর এক মৌসুমে কাজ করেই চলতাম সারাবছর। কিন্ত আজকাল মানুষের রুচি বিদেশীদের মতো হয়ে গেছে।
ছাতার কোনো অংশ নষ্ট বা ছিঁড়ে গেলে এখন আর মেরামত করতে চান না। আগে মানুষ এতটা সৌখিন ছিল না। একটা ছাতা দিয়ে যুগ পার করে ফেলত। আর এখন মানুষ একটা ছাতা বেশী দিন ব্যবহার করে না। একটু থেকে একটু সমস্যা হলেই নতুন ছাতা কিনে নেয়।
যেখানে আগে মোরে মোরে ছাতা মেরামত করার কারিগর পাওয়া যেত, সেখানে এখন ৪ থেকে ৫ টা বাজার বা এলাকা ঘুরলে একজন ছাতা মেরামত করার কারিগর পাওয়া যায়। দিন যত যাচ্ছে ততই বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে এই পেশা।
নওগাঁর রাণীনগর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনে কাটা পড়ে বাবু প্রামানিক (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকালে রাজশাহী থেকে চিলাহাটিগামী তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেনে এই দূর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত বাবু প্রামানিক নওগাঁ সদর উপজেলার শিমুলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত শমসের প্রামানিকের ছেলে।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে বাবু প্রামানিক স্ত্রীর ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। গ্রাম থেকে কিছু দুরে রাণীনগর রেলওয়ে স্টেশন। তাই অভিমানে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যেতে পারে। পরে পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে মরদেহ বাড়ি নিয়ে আসে।
রাণীনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আব্দুল খালেক বলেন, তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজশাহী থেকে চিলাহাটি যাচ্ছিল। এসময় সকালে বাবু প্রামানিক রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেন দূর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ বলেন, তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেনটি রানীনগর রেলওয়ে স্টেশনে উত্তরপাশে আসলে বাবু প্রামানিক নামে ওই ব্যক্তি অসাবধানতাবসত রেললাইন পার হচ্ছিলেন। ট্রেন আসলেও স্থানীয়রা তাকে অনেকবার ডাকলেও তিনি কোন কর্নপাত করেননি। এতে ট্রেনের ধাক্কায় রেললাইনে কাটা পড়ে মারা যান তিনি। মরদহে উদ্ধার করা হয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে নিহতের স্বজনরা মরদেহ নিয়ে গেছে।
মাগুরায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শহরে বর্ণাঢ্য রেলি ও ধর্মীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জন্মাষ্টমী উদযাপন কমিটির আয়োজনে শনিবার দুপুরে মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য রেলি বের হয়। র্যালিটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে সাতদোয়া লেংটা বাবার আশ্রম প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় সমাবেশে শেষ হয়।
অ্যাডভোকেট কুমুদ রঞ্জন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং মেহের কান্তি বিশ্বাসের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মো: অহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাগুরা পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা।
রেলি ও ধর্মীয় সমাবেশে হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অংশগ্রহণ করে।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শাহ্ সুফি মৌলানা আব্দুল গফুর শাহ্ আল মাইজভান্ডারী (র.) মাজারের পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
গতকাল শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের ২ নাম্বার ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটেছে।
পুকুরের মালিক শাহজাদা মো.হাসান বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা মাজারের পুকুরের বিষ দিয়ে প্রায় ৭ থেকে ৮ মণ মাছ লুট করে নিয়ে গেছে। বিষ প্রয়োগের ফলে পুকুরের সব মাছ মরে ভেসে উঠেছে। এতে আনুমানিক ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি জানান, পুকুরটিতে ৪ বছর আগে জাল দেওয়া হয়েছিলো। এরপর আর মাছ ধরা হয়নি। এর আগে গত ২০০৭ সালেও দুর্বৃত্তরা পুকুরটিতে বিষ দিয়ে মাছ লুট করে নিয়ে গিয়েছিলো।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুড়িগ্রামে রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের কালোর ও জিঞ্জিরাম নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন সীমান্তবর্তি ভন্দুরচর গ্রামে পরিকল্পিত ভাবে একই পরিবারের তিনজনক হত্যা করা হয় গত ২৪জুলাই। এই ঘটনার প্রতিবাদে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬জুলাই শনিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলার সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে এই কর্মসূচি করা হয়। রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপি বিক্ষোভ ও মানববন্ধন পালন করে স্বজন ও এলাকাবাসী। এসময় বক্তব্য রাখেন, ওয়াজেদ আলী,ইকতার হোসেন, আনোয়ার হোসেন,নিহত বুলু মিয়ার স্ত্রী আসকেতারা বেওয়া,কন্যা শাপলা বেগম,ফুলবাবুর স্ত্রী ফুলোরানী বেওয়া এবং নুরুল আমিনের স্ত্রী আনজু আরা বেওয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য,গত ১৯ জুলাই ভন্দুর চরের রাজু আহমেদের গরু প্রতিবেশি শাহজামালের বীজতলার ধানের চারা খেয়ে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজামালের লোকজন গরু বেঁধে রাখতে বলে। এরই জেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় ২০/২৫জনের একটি দল শাহজামালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহিলাদেরকে মারধর করে ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ২০জুলাই আহত নুরজাহান বাদী হয়ে রৌমারী থানায় একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু সেই অভিযোগ আমলে না নিয়ে বাদীপক্ষকে মীমাংসা করে নিতে বলে পুলিশ। থানায় অভিযোগ দেবার জের ধরে গত ২৪জুলাই আবারও রাজু আহমেদের গ্রপের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ শাহজামালদের উপর। দিনদুপুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একই পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যা করে। নিহতরা হলেন,শাহজামালের দুই ভাই ফুলবাবু,বুলু মিয়া এবং ভাতিজা নুরুল আমিন। উভয় পক্ষের প্রায় ১০জন আহত হয়। এই ঘটনায় গত ২৬ জুলাই নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী রৌমারী থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে।
পরে শাহজামাল বাদী হয়ে ২৪জুলাই ৩৪জনের নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৮/১০জনকে আসামী করে রৌমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮জনকে গ্রেফতার করেছে।
এই বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিশেষ অভিযানে ৪৩ পিস ইয়াবাসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, ভালুকা মডেল থানার একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চারজনকে হাতেনাতে আটক করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—জামিরদিয়ার মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ সজিব মিয়া (২৬), একই এলাকার মোঃ নাবিল হোসেন নবীর ছেলে মোঃ আলী হোসেন ওরফে নাজমুল (২৫), গাজীপুরের শ্রীপুরের উদয়খালী এলাকার মোঃ মফিজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম (২৭) এবং ডুমবারিরচালা এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাঈম খান (২৫)।
এসময় সময় তাদের কাছ থেকে ৪৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, মাদক নির্মূলে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হবে।
নওগাঁর আত্রাই নদীর একটি স্থানে কয়েক সেন্টিমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে ঢুকছে পানি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে মান্দা উপজেলার কসব ইউনিয়নের তালপাতিলা এলাকায় এই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে তালপাতিলা গ্রামসহ আশেপাশের চকবালু, চকরামপুরসহ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। পানি বন্দী হয়ে পড়েন কয়েকশ পরিবার।
স্থানীয়রা বলছে, এই একই স্থানে গেলো বছর ভেঙ্গে যায়। এরপর মাসখানেক আগে বেড়িবাঁধের এই অংশটুকু মেরামত করা হয়। কিন্তু নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার ভেঙে গেছে।
বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী। এসময় তিনি উক্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে দেওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী আত্রাই নদীর মান্দা উপজেলার জোত বাজার পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও নওগাঁর ছোট যমুনা ও পুনর্ভবা নদীর পানি বিদসীমার নিচে থাকলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হওযায় মান্দা উপজেলার চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, জোকাহাট, দ্বারিয়াপুর, নুরুল্লাবাদ, পারনুরুল্লাবাদ ও তালপাতিলা এলাকার অন্তত ১০টি বেড়িবাঁধকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাধের লক্ষ্মীরামপুর, আয়াপুর, পাঁজরভাঙ্গা, পলাশবাড়ী, মিঠাপুর, নিখিরাপাড়া ও গোয়ালমান্দাসহ অন্তত ২০টি পয়েন্টকে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও লুটের ঘটনায় মামলা করেছে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিএমডি মহাপরিচালক আনোয়ারুল হাবিব বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা কিছু দুষ্কৃতিকারীর মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময় থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গেজেভুক্ত পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধ বা অননুমোদিতভাবে সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার পাথর লুট করা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, পাথর লুটপাটে অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ ব্যক্তি জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়নি। সরকারের গেজেটভুক্ত কোয়ারি থেকে লুট বা চুরি এ ধরনের কর্মকাণ্ড খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২-এর ধারা ৪(২) (ঞ) এবং খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা ২০১২-এর বিধি ৯৩ (১)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় মৌখিক নির্দেশনায় খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২ এর ৫ ধারা অপরাধে ও দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৩৭৯ নম্বর ধারা ও ৪৩১ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় সরকারি স্বার্থে ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে পাথর লুট ও চুরির ঘটনায় দায়ী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি সিলেটের দুই পর্যটনকেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং থেকে পাথর লুটের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করা এ ঘটনায় হাইকোর্ট পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপন এবং লুটেরাদের তালিকা আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।
এরপর সিলেটসহ সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযানে নামে র্যাব, পুলিশসহ যৌথবাহিনী। গত তিন দিনে জাফলং ও সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথরের মধ্যে মোট ১ লাখ ৯ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে অবশ্য নারায়ণগঞ্জ থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার হওয়া ৪০ হাজার টন পাথরও রয়েছে।
সর্বশেষ সিলেট জেলার জৈন্তাপুর থানাধীন আসাম পাড়া এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর উদ্ধার করেছে র্যাব। র্যাব-৯-এর টহল দল, সাদা পোশাকধারী সদস্য এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের সহায়তায় একটি যৌথ আভিযানিক দল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আসাম পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
মেহেরপুরে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মোঃ ইমান আলী ওরফে ইমান ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তার ইমান আলী শিবপুর গ্রামের মৃত আমির শেখের ছেলে। সেনা ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর একটি দল মোনাখালী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে তার বাড়ি ঘেরাও করে। পরে তল্লাশির সময় তার কাছ থেকে মার্কিন তৈরি একটি ৭.৬৫ মি.মি. পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
ইমান আলীর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, চোরাচালান, বিস্ফোরক ও নাশকতাসহ মোট ১১টি মামলা রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
খুলনায় কৃষি ব্যাংকের পূর্ব রূপসা শাখা থেকে লকার ভেঙে প্রায় ১৬ লাখ টাকা লুট করার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে যেকোনো সময়ে এ লুটের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ব্যাংক বন্ধ ছিল। রাতে পাহারাদার ছিল না। এরপর গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নিরাপত্তা প্রহরী ব্যাংকের কলাপসিবল গেটের তালা কাটা দেখে চিৎকার করতে থাকেন। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে বিষয়টি বুঝে রূপসা থানায় জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
স্থানীয়রা বলছেন, ব্যাংকের ওই শাখায় প্রায় ২০ লাখ টাকা ছিল। সেখান থেকে ১৬ লাখ টাকা গায়েব হয়ে গেছে।
রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্যাংক বন্ধ হওয়ার পর থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে যেকোনো সময়ে ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা ব্যাংক থেকে এবং আশপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের কোনোপ্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতরাতে (বৃহস্পতিবার) ব্যাংকে কোনো প্রহরী ছিল না। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে।’