শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

কক্সবাজারে পাহাড়ধসে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১ জুলাই, ২০২৪ ২২:০০

আষাঢ়ের শেষ সপ্তাহে টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজার শহরে আবারও পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক শিশু ও দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাজার ও এবিসি ঘোনা এলাকা এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন শহরের এবিসি ঘোনা এলাকার মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা আক্তার (৩০), সিকদার বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হাসান (৫) এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকার বজল আহমদের স্ত্রী লায়লা বেগম (৩৫)। কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রকিবুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ নিয়ে গত তিন সপ্তায় কক্সবাজারে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এক দিনে ১০ জনের মৃত্যু হয়।

স্থানীয়দের বরাতে ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, বুধবার মধ্যরাত থেকে কক্সবাজার শহরে টানা মাঝারি ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সিকদার বাজার এলাকায় বসবাসকারি সাইফুল ইসলামের বাড়ির উপর আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়ে। এতে মাটির দেয়াল ভেঙে সাইফুলের ঘুমন্ত শিশু চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে মাটি সরিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

এদিকে ভোরে শহরের এবিসি ঘোনা এলাকায় পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় জমিলা আক্তার নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসি।

জমিলার পরিবারকে উদ্ধৃত করে রকিবুজ্জামান বলেন, ভোরে জমিলা আক্তার রান্না ঘরের পাশে ঘুমিয়ে ছিলেন। তার স্বামী আরেক কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়লে জমিলা মাটি চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্য চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের লাশ নিজেদের বাড়িতে রয়েছে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় লায়লা বেগম নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান রকিবুজ্জামান।

নিহত লায়লা বেগমের স্বজনদের বরাতে তিনি বলেন, দুপুরে খাবার খাওয়ার সময় লায়লা বেগম ছেলে জোনায়েদকে কোলে নিয়ে পাহাড়ের মাটি ভাঙছে কি না দেখতে বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছিল। এ সময় আকস্মিক পাহাড় ধসে বসতবাড়ির ওপর মাটিচাপা পড়ে। এতে তার স্বামী ও অপর ২ মেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেও লায়লা বেগম ও এক শিশুসন্তান মাটির নিচে চাপা পড়ে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা শিশুটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলেও তার মা ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

এ ছাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি এলাকায় পাহাড়ধসে সকাল থেকে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। কক্সবাজার শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসতে প্রচারণা চালাচ্ছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ৩৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এর আগে গত ৩ জুলাই উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের দুইটি ক্যাম্পে পাহাড় ধসে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৯ জুন উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ও আশপাশের কয়েকটি জায়গায় পাহাড় ধসে ৮ জন রোহিঙ্গা ও দুই বাংলাদেশি নিহত হন। এ ঘটনার দুদিন পর ২১ জুন ভোরে কক্সবাজার শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে ঘুমন্ত স্বামী-স্ত্রী নিহত হন।

শনিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি, আরও পাহাড়ধসের সতর্কতা জারি

এদিকে, আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আগামী শনিবার পর্যন্ত দেশের পাঁচ বিভাগে ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান এক বার্তায় বলেন, বাংলাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারি (২৪ ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হতে পারে।

ভারী বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে ওই বার্তায় সতর্ক করা হয়েছে।

উত্তরে নদীর পানি বাড়ছে

এদিকে, ভারী বৃষ্টির প্রভাবে দেশের উত্তরাঞ্চলের নদীর পানি বাড়ার আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এর ফলে কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির ‘সামান্য অবনতি’ হতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় দেশের ৯টি নদীর পানি ১৯টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছিল।

ওই সময় বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের ১১০টি স্টেশনের মধ্যে ৪৭টি পয়েন্টে পানি কমার প্রবণতা দেখা গেলেও ৬১ পয়েন্টে বাড়ছিল আর অপরিবর্তিত ছিল দুই পয়েন্টে।

বুলেটিনে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীর পানি ‘সময় বিশেষে’ বাড়তে পারে।

তাতে ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে এবং ধরলা ও দুধকুমার নদী-সংলগ্ন কুড়িগ্রাম জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে।

এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের মহানন্দা, যমুনাশ্বরী, আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, পুর্নভবা, টাঙ্গন এবং ইছামতি- যমুনা নদীর পানি সময় বিশেষে বাড়তে পারে।

এদিকে গঙ্গা নদীর পানিও বাড়ছে, এ পরিস্থিতি আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

ব্রহ্মপুত্রের পানিও বাড়ছে, অন্যদিকে যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে; আগামী ২৪ ঘণ্টায় দুই নদীর পানিই স্থিতিশীল থাকতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে বুলেটিনে।

সেখানে বলা হয়, পদ্মা নদীর পানি এবং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুশিয়ারা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে; তবে সুরমা নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।

পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

এ সময় দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়ী পয়েন্টে কমে নদী সংলগ্ন সিরাজগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।


৪ বছরেও শেষ হয়নি নাটোরের দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণকাজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল হাসান, নাটোর

নাটোরে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ না হতেই ১ কোটি ৪১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা প্রদান করেছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।

অভিযোগ উঠেছে, এই অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে কাজ অসমাপ্ত থাকার পরও ৯০ ভাগ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এক বছরে সকল কাজ শেষ করার কথা থাকলে তা শেষ হয়নি চার বছরেও। ঘটনা জানাজানি হওয়ায় সেই কাজ তড়িঘড়ি করে শেষ করতে গিয়ে কাজের মান খারাপ হওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে নাটোরের লালপুর উপজেলার বিলমাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, চিরচেনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কলরব নেই এখানে। সুনসান নীরবতায় ঘেরা প্রতিষ্ঠানটিতে নেই শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি একটি সাইনবোর্ডও। কয়েকজন রাজমিস্ত্রী নির্মাণাধীন ভবনের প্লাস্টারের কাজ করছেন। একপাশে চলছে টয়লেট নির্মাণের কাজ। পাশের টিনশেড মাদ্রাসাটির একটি ঘরে ভবনের চালা নেই। অপর একটি ছোট টিনশেড ঘর তালাবদ্ধ। সুমন আলী নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, এক সময় এই মাদ্রাসাটির থেকে আড়াইশ ছাত্র নিয়মিত ক্লাশ করত। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হয়নি। বলেন ২০২১ সালে নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পরে টিনশেড ঘরটির চালা ঝড়ে উড়ে যায়। এরপর ক্লাসরুমের অভাবে মাদ্রাসাটি বন্ধ হয়ে যায়। আশা ছিল অল্পদিনের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হলে মাদ্রাসাটির ক্লাস শুরু হবে। কিন্তু দীর্ঘ ৪ বছরেও কাজ শেষ না হওয়ায় আমাদের মাদ্রাসাটি বন্ধই রয়েছে। কাজের মান ভালো নয়।

জানা যায়, ২০২১ সালের জুন মাসে এখানে ভবন নির্মাণে বরাদ্দ হয় ৭৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মাদ্রাসাটির ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ পায় যশোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুল মান্নান। ৯ মাসের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ৪ বছরেও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। অথচ ৩০ শতাংশ কাজ বাকি থাকলেও ২০২৩ সালের ২১ জুন ওই কাজের জন্য ৭০ লাখ টাকা প্রদান করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে। এরপর চলমান কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদার। ঘটনা জানাজানি হওয়ায় সম্প্রতি তড়িঘড়ি করে অসমাপ্ত কাজগুলো করা হচ্ছে। এ নিয়ে তেমন সদুত্তর নেই উপসহকারী প্রকৌশলীর কাছে। ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান মিষ্টু বলেন, ‘মাদ্রাসাটির কাজ সময়মতো না হওয়া খুব দুঃখজনক ঘটনা। এ কারণে বিলমাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসার অনেক ক্ষতি হয়েছে।’

লালপুরের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সেলিম রেজা জানান, ঠিকাদার যতটুকু কাজ করেছেন সেই অনুপাতে বিল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভবনের দরজা-জানালা প্লাস্টার ও টয়লেটের কাজ শেষ না করেই কীভাবে তাকে ৯০ ভাগ বিল প্রদান করা হয়েছে সে বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

একই চিত্র নাটোরের সদর উপজেলার বারঘরিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে। ভবন নির্মাণকাজের জন্য ২০২২ সালের মার্চ মাসে ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ পায় নাটোরের মেসার্স সিফাত এন্টার প্রাইজ। এখানে ৪৫ শতাংশ কাজ বাকি থাকলেও একই সময়ে (২০২৩ সালের ২১ জুন) ৭১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বিল নিয়ে ঠিকাদার কাজ বন্ধ রাখে। সম্প্রতি দিন-রাত একাকার করে কাজ করা হচ্ছে।

সরেজিমেন দেখা যায়, বিল্ডিংয়ের ঢালাই, প্লাস্টার, রং, দরজা-জানালা তৈরির জন্য কাঠমিস্ত্রি, ইলেকটিক মিস্ত্রি এবং টাইলস মিস্ত্রি এক দ্রুত কাজ করছেন। ঢালাইয়ের ব্যবহৃত পানিতে কর্দমাক্ত উচ্চবিদ্যালয়ের ভেতরের মাঠ। এর মধ্যে শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে ক্লাস করছেন।

বারঘরিয়া উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘কাজের মান খুব নিম্নমানের। আমরা প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।’

এ বিষয়ে বিলমাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসার সাব ঠিকাদার ও বারঘরিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের মূল ঠিকাদার মিজানুর রহমান জানান, বরাদ্দ না থাকায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। নতুন করে বরাদ্দ পাওয়ার পর এখন বাকি কাজ করা হচ্ছে।

কাজ শেষ না করেই তৎকালীন নাটোর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বর্তমান প্রধান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-২ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যতটুকু কাজ হয়েছে অতটুকই বিল প্রদান করা হয়েছে। কোনো অনিয়ম করা হয়নি।’

তবে বর্তমান শিক্ষা প্রকৌশল নাটোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাতোয়ারা পারভীন ঠিকাদারদের গাফিলতি অকপটে স্বীকার করে জানান, আগস্ট বিপ্লবের পরে অনেক ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় অনেক কাজে বিলম্ব হয়েছে। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর বন্ধ থাকা কাজ বুঝে নেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে গত ২৩ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ মো. আসাদুজ্জামানসহ মোট পাঁচজন প্রকৌশলী ও ১১ জন ঠিকাদারের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্ত করতে ইইডির প্রধান প্রকৌশলীকে চিঠি দেয়। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পূর্বেই তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন ঠিকাদার।


আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে সরকার সর্তক অবস্থানে রয়েছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২০:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখার জন্য সরকার সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, শুরুতে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। পুলিশ বাহিনীও নিজেদের গুছিয়ে নিতে পেরেছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য একটি বড় পরীক্ষা।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই নির্বাচন হবে ‘আদর্শ নির্বাচন’। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-এই দুই খাতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। ডাক্তার-নার্স সংকট নিরসনে স্বল্প সময়ে সাড়ে তিন হাজার নার্স ও তিন হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আলু রপ্তানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্বে নিয়মিত আলু আমদানি করে এমন দেশ খুবই কম। বিশেষ পরিস্থিতি না হলে রপ্তানির সুযোগও সীমিত।

বিদেশে মানবসম্পদ রপ্তানি বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, দক্ষতা না থাকায় দেশের কর্মীরা বিদেশে কম বেতন পান। নার্সিং পেশায় বিদেশে বিপুল চাহিদা রয়েছে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে পারলে দেশ উপকৃত হবে।

এছাড়া রংপুরে পালন করা ছোট জাতের দেশি গরুর মাংসের প্রশংসা করে এর বাণিজ্যিক উৎপাদনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসানের সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মারুফাত হুসাইনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।

চার দিনের সফরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রংপুরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করছেন। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি রংপুর ক্যাডেট কলেজ পরিদর্শন করবেন এবং আগামীকাল রোববার কিশোরগঞ্জের মাগুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি সৈয়দপুর হয়ে ঢাকায় ফিরবেন।


ফেনীতে ৫২ বছর পর ছনুয়া-ফাজিলপুর উচ্চবিদ্যালয়ে শহীদ মিনার উদ্বোধন

আপডেটেড ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২০:১০
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুরে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ছনুয়া-ফাজিলপুর উচ্চবিদ্যালয়ে এই প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছে। দীর্ঘ ৫২ বছর পর বিদ্যালয় মাঠে ঢাকার শমরিতা হাসপাতাল লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর, সমাজসেবক ডা. এ বি এম হারুন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন। এ সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণ নবনির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। গত শুক্রবার বিকেলে বিদ্যালয় সভাপতি এবিএম ইমরানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার খানম, সাবেক ব্যাংকার এম এম আলমগীর, বায়ো ডট বাংলাদেশের সিইও আব্দুল লতিফ মীর ও সংগীতশিল্পী ডা. আরিফ আহমেদ।

এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যে ভাষা আন্দোলনবিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সেরা তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করেন ৮ম শ্রেণির আছমিনা ইয়াসমিন, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান তাসফিয়া ও তৃতীয় স্থান নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহসান উদ্দিন আবির। পরে ভাষা আন্দোলনবিষয়ক সংগীতের আয়োজন করা হয়। সংগীতশিল্পী ডা. আরিফ আহমেদ ভাষা আন্দোলন নিয়ে মনমুগ্ধকর সংগীত পরিবেশন করেন।

প্রধান অতিথি ডা. এবিএম হারুন বলেন, ‘দীর্ঘ ৫২ বছর পর ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ হয়েছে, এতে আমি খুশি। শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের স্মরণ করতে পারবে এবং শ্রদ্ধা জানাতে পারবে। আমি এ এলাকারে সন্তান। আমি চাই এ বিদ্যালায়ের শিক্ষার্থীরা ভালো পড়ালেখা করুক, ভালো ফলাফল করুক। স্বপ্ন দেখুক ভালো কিছু করার। আমি আশা করি, শিক্ষার্থীরা দেশকে ভালোবাসবে, দেশের জন্য কাজ করবে।’


জোরপূর্বক সীমান্তে পুশইনের শিকার সোনালী খাতুন ফিরলেন ভারতে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে অবশেষে তার দেশেই ফিরিয়ে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিএসএফের অমানবিক ‘পুশইন’-এর শিকার হয়ে আলোচনায় আসা সোনালী খাতুন ও তার আট বছর বয়সি ছেলে মো. সাব্বির শেখকে গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ আইসিপিতে অনুষ্ঠিত আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

হস্তান্তর শেষে মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএসএফের এই অমানবিক ‘পুশইন’ কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড এবং দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুশইনের এই কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় মানবিক সংকটের সৃষ্টি করছে এবং উভয় দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘বিএসএফের অমানবিক আচরণের বিপরীতে বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজিবি মানবিক মূল্যবোধ, আন্তর্জাতিক আইন ও প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছে।’

বিজিবি আশা প্রকাশ করেছে, পুশইনসহ এ ধরনের অমানবিক ও আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী কার্যক্রম বিএসএফ বন্ধ করবে এবং ভবিষ্যতে সীমান্তে সৌহার্দ্যপূর্ণ, মানবিক ও আইনসম্মত প্রক্রিয়া বজায় রাখবে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন বিএসএফ কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে মোট ৬ ভারতীয় নাগরিককে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশইন করে। এদের মধ্যে ৩৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুন ও তার নাবালক শিশুও ছিলেন। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে এবং গত ২২ আগস্ট আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠায়।

পরে মানবিক বিবেচনায় আদালত ২ ডিসেম্বর তাদের স্থানীয় জিম্মায় দিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশনা দেন।


জয়পুরহাটে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষককে গণধোলাই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে আল আমিন (২৫) নামে এক মাদ্রাসার শিক্ষককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাকে আটক দেখানো হয়।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আক্কেলপুর-বদলগাছী সড়কে আক্কেলপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে ওই ঘটনাটি ঘটে। গ্রেপ্তারকৃত মাদ্রাসা শিক্ষক আল আমিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বারইছা গ্রামের জাফর হোসেনের ছেলে।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর সাথে বলাৎকারের কথা অভিযুক্ত শিক্ষক স্বীকার করেছেন, তিনি ওই মাদ্রাসার হেফজখানার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন, এবং তিনি কোরআনের হাফেজ বলে আমাকে জানিয়েছেন।’

শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে আমার সন্তানকে কোরআনের হাফেজ তৈরি করার জন্য ভর্তি করিয়েছিলাম। রাতে আমার ছেলে ওই মাদ্রাসাতেই থাকত। গত ১ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে আল আমিন (শিক্ষক) আমার ছেলেকে ওই কাজ করেছে। এরপর থেকে ছেলের চলাফেরায় সন্দেহ হলে ছেলেকে জিজ্ঞেস করলে ছেলে আমার কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। এরপর আমার পরিবারের লোকজন নিয়ে ওই মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষককে ধরি, তখন উপস্থিত লোকজনের সামনে ছেলের সাথে ওই কাজ করার কথা স্বীকার করে। আমার ছেলের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার চেয়ে থানার আশ্রয় নিয়েছি।’

জানতে চাইলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আল-আমিন বলেন, ‘আমি কোরআনের হাফেজ, ওই দিন শয়তানের পাল্লায় পড়ে আমি অ্যাকাম করেছিলাম। আমি দোষ স্বীকার করেছি, আল্লাহর কাছে তওবা করেছি আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। মানুষ মাত্রয় ভুল হয়। পরিবারকে বলেছিলাম ঘটনাটি কাউকে না জানাতে, আমার মানসম্মান সব শেষ।’

আক্কেলপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর রউফ মাজেদ বলেন, ‘ছেলেটিকে কোরআনের হাফেজ বানানোর জন্য মাদ্রাসার আবাসিকে রেখেছিল আসহায় গরিব পরিবারটি। সেখানেও নিরাপদ নেই শিশুরা। আক্কেলপুরে অসংখ্য মাদ্রাসা তৈরি হয়েছে ও হচ্ছে। এখনি প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না বাড়ানো গেলে এই রকম ন্যক্কারজনক ঘটনা আগামী দিনগুলোতেও ঘটতে থাকবে বলে আমি মনে করি।’

আক্কেলপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু রয়েছে। তাকে শনিবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।


টিসিজেএ-ইস্পাহানি বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ডের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে কর্মরত টেলিভিশন চিত্রসাংবাদিকদের সংগঠন টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (টিসিজেএ), চট্টগ্রাম আয়োজিত নিয়মিত দ্বিবার্ষিক উদ্যোগ ‘লেন্সের ভেতর সত্য, প্রতিবেদনে দায়িত্ব’ শীর্ষক টিসিজেএ ইস্পাহানি বেস্ট রিপোর্টিং ও ডকুমেন্টারি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫-এর বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর জামাল খান এলাকার মোমিন রোডের একটি হলরুমে বিচারকার্যের সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

এবারের প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক রওশন সোমা, নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুবীর মহাজন, এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্যামেরা অপারেটর ও ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি সৌমেন গুহ। তাদের মূল্যায়নের ভিত্তিতেই বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা প্রতিবেদন ও সেরা ডকুমেন্টারি নির্বাচন করা হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, টিসিজেএ সভাপতি শফিক আহমেদ সাজীব, সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল আলম চৌধুরী মামুন, অ্যাওয়ার্ড পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী আকবর, এবং সদস্য দীপংকর দাশ, সুমন গোস্বামী ও রবিউল হোসেন টিপু। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক জানান, এবারের প্রতিযোগিতায় ১৫ জন রিপোর্টারের ১৫টি প্রতিবেদন এবং ১৪ জন ক্যামেরা পার্সনের ১৪টি ডকুমেন্টারি জমা পড়ে, যা মানসম্মত সাংবাদিকতার ইতিবাচক প্রতিফলন।

পুরো আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে ইস্পাহানি মির্জাপুর চা। আগামী ২১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার প্রদান করা হবে।


কুড়িগ্রামে বাড়ছে শীতের তীব্রতা

তেঁতুলিয়ায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম ও তেতুলিয়া প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে এক সপ্তাহ ধরে পড়ছে ঘন কুয়াশা। বইছে হিমেল হাওয়া। ফলে বেড়েছে শীতের তিব্রতা। শনিবার তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল চারদিক।

ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। কুয়াশার সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় সন্ধ্যার পর থেকে সকাল ১০/১১টা পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে ঠান্ডা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তনে শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে নারী, শিশু-বৃদ্ধরা।

শীতের তীব্রতা ও ঠান্ডার বাড়ায় জেলার বিভিন্ন শপিংমল ও ছোট বড় দোকানগুলোতে দিন-রাত গরম কাপড় কেনার ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের।

কুড়িগ্রাম পৌর শহরের সুপার মার্কেট, নছর উদ্দিন মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে। গত ৬ দিন ধরে হিমাঙ্কের কাটা নিম্নমুখী হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে কয়েকগুণ। শীত নিবারণের জন্য মানুষ ছুটছেন বিপণী বিতানগুলোতে।

সল্প আয়ের মানুষের ভরসা পুরোনো কাপড় বিক্রির দোকানগুলো। সাধ্যমত তারা কিনছেন গরম কাপড়। প্রকারভেদে সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ৩০০- ৫০০ টাকা, জ্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৭০০-১২০০ টাকা।

গরম কাপড় কিনতে আসা যাত্রপুর ইউনিয়নের আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডায় কাজ কাম করতে পারি নাই। হাতে টাকা নাই তাই ধার দেনা করে বাচ্চাদের জন্য কাপড় কিনতে এসেছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর কাপড়ের দাম বেশি। ছোট বাচ্চার একটা সোয়েটার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনলাম অথচ আগে এই সোয়েটার ছিল ২০০-৩০০ টাকা।

তেতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামল ১০.৫ ডিগ্রি: সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে তিন দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। সেখানে দিন দিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা। রাতভর ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চারদিক।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল চারদিক। সকাল সাড়ে আটটার পর কুয়াশা ভেদ করে হালকা রোদ উঠলেও তেমন বাড়েনি রোদের তীব্রতা। এতে দিনের বেলায়ও শীত অনুভূত হচ্ছে।

এর আগে গত শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল তেঁতুলিয়া ও শ্রীমঙ্গলে। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল তেঁতুলিয়া ও নওগাঁর বদলগাছীতে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় মুঠোফোনে বলেন, আজ তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং মৃদু শৈত্যপ্রবাহের আভাস। উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবেশ করায় এই জনপদে দিন দিন শীতের তীব্রতা বাড়ছে।

হেমন্তের শুরু থেকেই উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে সন্ধ্যার পর থেকেই হালকা শীত অনুভূত হচ্ছিল। এর মাঝে কুয়াশার পরিমাণ কম থাকায় দিনের বেলায় ঝলমলে রোদের দেখা মিলত। তবে কয়েক দিন ধরেই জনপদে সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ছে কুয়াশার দাপট। সেই সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় রাতভর অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। তবে দিনের বেলায় ঝলমলে রোদ থাকায় দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ছে। শুক্রবার বিকেলে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশায় ছেয়ে আছে চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছেন অনেকে। শীতের শাকসবজি নিয়ে বাজারে যাচ্ছেন কৃষকেরা। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্বাকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই রোদের তীব্রতা।

সকাল পৌনে আটটার দিকে জেলা শহরে কথা হয় ইজিবাইক চালক এনামুল হকের (৪০) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আইজকা সারা রাতি খুপে ঠান্ডা (শীত) নাগিছে। সকালে বাইর হওয়ার সময় খুপে কুয়াশা ছিল, এ্যালা কনেক (একটু) কমিছে। আইজকার ঠান্ডাখানোত হাত-পাও পটপটাছে।’

এ ব্যাপারে শনিবার সকালে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, সকাল ৬টায় তেতুলিয়া তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি।


গজারিয়ায় এক দিনে নদী থেকে ২ লাশ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা ও কাজলী নদী থেকে এক নারী ও এক পুরুষের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে মেঘনা নদীর ডুবারচর ও কাজলী নদীর মধ্য বাউশিয়া (দাস পাড়া) এলাকা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার হয়। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।

জানা যায়, শনিবার গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ডুবারচর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ৪-৫ দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। শারীরিক অবয়ব দেখে তার বয়স ৩২ এর কাছাকাছি হতে পারে অনুমান করা যাচ্ছে। এদিকে একই দিনে দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্য বাউশিয়া (দাস পাড়া) এলাকা থেকে এক পুরুষের লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। তার দুই পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ছিল। শারীরিক গঠন থেকে ধারণা করা হচ্ছে তার বয়স ৩৫ এর কাছাকাছি হতে পারে।

মধ্য বাউশিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাউসার হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন শিশু প্রথমে লাশটি দেখতে পায়। খবর পেয়ে উৎসুক জনতা লাশটি দেখতে ভিড় করে। অবস্থা দেখে মনে হয়েছে রাত বা একদিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশটি উপুড় হয়ে পড়ে আছে তবে পায়ে রশি বাঁধা বলে জানতে পেরেছি।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাব্বির হোসেন বলেন, ‘দুই ক্ষেত্রেই নদীতে লাশ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নৌপুলিশ দেখছে।’

গজারিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, ‘দুপুরে হোসেন্দী ইউনিয়নের ডুবার চর থেকে আমরা এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছি। বাউশিয়া ইউনিয়নের কাজলী নদীতে এক পুরুষের লাশ দেখতে পেয়েছে স্থানীয়রা। আমরা সেখানে যাচ্ছি। এখনো পর্যন্ত লাশ দুটির পরিচয় পাওয়া যায়নি।’


অযত্ন-অবহেলায় বেহাল দশা নওগাঁ জেলা পরিষদ পার্কের

সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সবুজ হোসেন, নওগাঁ

নওগাঁ জেলা পরিষদ পার্কটি প্রায় দুই বছর ধরে অযত্ন-অবহেলায় বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। শিশুদের বিনোদনের রাইডগুলো ভাঙাচোরা, নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে সাপ-পোকামাকড়ের আতঙ্কে থাকেন দর্শনার্থীরা। দ্রুত সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে পার্কটি আবারও বিনোদনের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

শহরের প্রাণকেন্দ্র মুক্তির মোড়ে শতবর্ষ আগে ২ দশমিক ৪৬ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ পার্কটি দীর্ঘদিন ধরে জেলার একমাত্র জনবিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় প্রবীণ ও মধ্যবয়সিরা হাঁটাহাঁটি করতে আসেন এখানে। বিকেলে উন্মুক্ত থাকে সবার জন্য। ছুটির দিনে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সি মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে পার্কটি।

বর্তমানে পার্কের শিশুদের রাইডগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। তিনটি ঢেঁকির সবগুলোই ভাঙা, অধিকাংশ দোলনা অচল, দুটি স্লিপার থাকলেও তাতে মরিচা ধরেছে এবং যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দোলনার নিচে গর্ত হয়ে বৃষ্টির পানি জমে থাকে, ফলে শিশুরা পড়ে কাদা-ময়লায় নোংরা হয়ে যায়। এসব কারণে শিশুদের বিনোদন ব্যাহত হচ্ছে। তা ছাড়া মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের।

গত দুই বছর ধরে পার্কের বাতিগুলো নষ্ট থাকায় সন্ধ্যার পর পুরো এলাকা অন্ধকারে ঢেকে যায়। এতে হাঁটতে গিয়ে প্রবীণদের প্রায়ই বিপদে পড়তে হয়। অনেকেই সাপ-পোকামাকড়ের ভয়ে সন্ধ্যার পর পার্কে প্রবেশ করেন না। স্থানীয়দের অভিযোগ পার্কটি যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।

এছাড়া পার্কের প্রধান ফটকের সামনে মোটরসাইকেল রাখা এবং ফুটপাতে ফাস্টফুডের দোকান বসানোর কারণে পথচারীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি তৈরি হয়েছে। দর্শনার্থীরা এসব দোকান নির্দিষ্ট স্থানে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

উকিলপাড়ার গৃহবধূ মরিয়ম বেগম বলেন, ‘ছুটির দিনে বাচ্চারা পার্কে আসার জন্য জেদ করে। কিন্তু দোলনায় বৃষ্টির পানি জমে থাকে, মইগুলো ভাঙা, স্লিপারেও জং। বছরের পর বছর এমন অবস্থায় রয়েছে। কেউ যেন দেখার নেই।

সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব খাদেমুল ইসলাম ক্যাপ্টেন বলেন, ‘পার্কটি জেলার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র হলেও কোনো উন্নয়ন নেই। রাইডগুলো নষ্ট, পুকুরের পাড় ভাঙছে, পানি অপরিষ্কার, ফুলের গাছ নেই। যে পরিবেশে মানুষ বিনোদন পাবে তার কিছুই নেই।’

নিয়মিত ব্যায়াম করতে আসা সুমন চৌধুরী জানান, বছরের পর বছর পার্কে কোনো আলো নেই। অন্ধকারে কয়েকবার সাপের মুখোমুখি পড়েছি। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম জাকির হোসেন বলেন, ‘গত তিন বছরে ওয়ার্কওয়ে ও কিছু রাইডের কাজ করা হয়েছে। তবে শিশুদের রাইডগুলো বেশি ব্যবহারের কারণে দ্রুত নষ্ট হয়েছে। দোলনার নিচে ফুট টাইলস বসানোসহ আরও কিছু উন্নয়ন পরিকল্পনায় রয়েছে। পার্কটি দ্রুত সংস্কার ও আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান গেটের সামনে দোকান ও মোটরসাইকেল রাখার বিষয়টি নজরদারিতে রাখা হবে, যাতে দর্শনার্থীদের স্বাভাবিক চলাচলে আর সমস্যা না হয়।’


নীলফামারীতে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বিশেষ সভা ও কমিটি গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নীলফামারী প্রতিনিধি

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি নীলফামারী ইউনিটের বিশেষ সাধারণ সভা গতকার শনিবার দুপুরে ইউনিট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভা শেষে ২০২৫-২৭ মেয়াদে কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি নীলফামারী ইউনিটের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।

এর আগে ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম উপস্থাপন করেন সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র।

বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মীর সেলিম ফারুক, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা হক প্রধান বাচ্চু, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সোহেল পারভেজ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসলি অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ সোয়েম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে নীলফামারী ইউনিটের আজীবন সদস্য মারুফ খান।

সভা শেষে সাত সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করেন ২০২৫-২৭ মেয়াদে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নীলফামারী পৌরসভার প্রশাসক সাইদুল ইসলাম।

নির্বাচিতরা হলেন, বজলুল করিম চৌধুরী (সহসভাপতি), মীর সেলিম ফারুক (সাধারণ সম্পাদক), সৈয়দ মেহেদী হাসান আশিক, আলিফ সিদ্দিকী প্রান্তর, অধ্যাপক সেতারা সুলতানা চৌধুরী, মোস্তফা হক প্রধান বাচ্চু ও অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান খান রিনো (কার্যনির্বাহী সদস্য)।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় পতাকা ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় বিশেষ সাধারণ সভার কার্যক্রম। পরে মৃত্যুবরণকারী আজীবন সদস্যের আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, নীলফামারী রেড ক্রিসেন্ট ভবনের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব জমি এবং বহুতল ভবন নির্মাণ করে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা আনা হবে।

প্রশাসক বলেন, নতুন নির্বাচিত কমিটি এখন থেকে নিবেদিত হয়ে কাজ করবে। কাজে প্রশাসন ও জেলা পরিষদ সার্বিকভাবে সহায়তা করবে।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক রইসুল আলম চৌধুরী, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি নীলফামারী ইউনিটের আজীবন সদস্য আতাউর রহমান মুকুল বক্তব্য দেন।


নওগাঁয় শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর বদলগাছীতে শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টায় উপজেলার লাবণ্য প্রভা পাইলট ও কমিউনিটি গার্লস হাইস্কুল প্রাঙ্গণে এই শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বদলগাছী উপজেলার সর্বস্তরের শিক্ষকদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং বিএনপির মনোনীত নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনে এমপি পদপ্রার্থী ফজলে হুদা বাবুল। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. হারুন অর রশীদ।

বদলগাছী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাদী চৌধুরী টিপু, নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক আবুল হাসনাত চৌধুরী, বদলগাছী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাসুদ রানা, সহসভাপতি শাম্মী আকতার, মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান, উপদেষ্টা ও ফতেজঙ্গেপুর দাখিল মাদ্রাসা সুপার আবুল গাফফার, বেসরকারি কলেজ ও শিক্ষক-কর্মচারী সমিতির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত প্রায় দুই হাজার শিক্ষক ও শিক্ষিকা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্যে শিক্ষকরা বলেন, বরাবরই আমরা শিক্ষকরা অবহেলিত। আমরা শিক্ষক সমাজে আর অবহেলিত থাকতে চাই না। আমরা জানি আপনি একজন শিক্ষিত ও সুযোগ্য ব্যক্তি এবং টকশো লিডার। আপনি চান না আমাদের শিক্ষক সমাবেশ অবহেলায় থাকুক। আপনি সর্বদা চান শিক্ষক সমাবেশ যথাযথ মর্যাদা পেয়ে থাকুক। তাই আপনি যেহেতু শিক্ষকদের নিয়ে ভাবেন, তাহলে আমাদেরও আপনাকে নিয়ে ভাবতে সমস্যা নেই। এই জন্য শিক্ষক সমাজের অধিকার ফিরিয়ে নিতে ভেদাভেদ ভুলে ফজলে হুদা বাবুলকে আমরা নির্বাচিত করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তারা। পরিশেষে প্রধান অতিথির কাছে মাদকমুক্ত ও মডেল উপজেলা হিসেবে এই বদলগাছী যেন গড়ে উঠে সেই দাবি জানান উপস্থিত সকল শিক্ষকরা।

এছাড়া উপস্থিত শিক্ষকরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন প্রধান অতিথির কাছে।

এর আগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এবং অসুস্থ খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়। পাশাপাশি তারেক রহমানের জন্যও চাওয়া হয় দোয়া।


ওস্তাদ হাসান আলী খান স্মরণে নবীনগরে আলোচনা সভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক ওস্তাদ হাসান আলী খানের স্মরণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় নবীনগর মহিলা ডিগ্রি কলেজ অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠান হয়।

ওস্তাদের ছেলে খুরশিদ হাসান খানের সভাপতিত্বে এবং আব্বাস উদ্দিন হেলাল ও রিপা আক্তারের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত নজরুল সংগীতশিল্পী খাইরুল আলম শাকিল। মুখ্য আলোচক ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সুরকার ও সংগীত পরিচালক শেখ সাদী খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নজরুল সংগীতশিল্পী মাসুদা আনাম কল্পনা, লোকসংগীতশিল্পী আব্দুল আলীমের সন্তান আজগর আলীম, চলচ্চিত্র ও নাট্য অভিনেতা ইকবাল আহমেদ, নবীনগর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অঞ্জন কুমার নাগ, উপাধ্যক্ষ গোলাম মাওলা খান দিপু ও করিম হাসান খান।

আলোচনায় শেখ সাদী খান বলেন, ‘সঙ্গীত হলো এক ধরনের জাদু। ভালোবেসে করলে সংগীত মানুষকে মোহিত করতে পারে।’

খাইরুল আলম শাকিল বলেন, ‘যে জাতি সংস্কৃতিতে অগ্রসর হয় না, সে জাতি মানবিকতাও হারায়।’

অনুষ্ঠানে দুজন একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য শিল্পীর উপস্থিতি এবং আব্দুল আলীমের সন্তান আজগর আলীমের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিশেষ মাত্রা যোগ করে।

বুলবুল ললিতকলা একাডেমির লোকসংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী এই সংগীতজ্ঞ ১৯৪৪ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে নিজের সংগীতজীবন শুরু করেন।

সমসাময়িক শিল্পীদের মধ্যে তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম- একাধারে লোকসংগীত, উচ্চাঙ্গসংগীত, আধুনিক গান ও নজরুলসংগীত পরিবেশন করতেন সমান দক্ষতায়।

তিনি তালিম নিয়েছিলেন পণ্ডিত মনোরঞ্জন চক্রবর্তী, মোহাম্মদ হোসেন খসরু, ওস্তাদ ছোটে খাঁ এবং ওস্তাদ আয়েত আলী খানের কাছে। তার গুণী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে আছেন- ড. সনজিদা খাতুন, ইন্দ্র মোহন রাজবংশী, নীনা হামিদ, মুজিব পরদেশি প্রমুখ। ১৯৯৩ সালের ১২ জানুয়ারি এই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মৃত্যুবরণ করেন।


সবজির চারা উৎপাদন করে মাসে আয় ৭০ হাজার টাকা

৩০ শতক জমিতে শুরু করে বুড়িচংয়ের কৃষক কামাল
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. তরিকুল ইসলাম তরুন, কুমিল্লা

বৃহত্তর কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা উত্তরপাড়ার রমজান আলীর ছেলে মো. কামাল অভাব-অনটনের কারণে বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেননি। তবে ইচ্ছাশক্তি, পরিশ্রম ও সাহসকে পুঁজি করে তিনি আজ বৃহত্তর কুমিল্লার সবচেয়ে বড় সবজির চারা উৎপাদনকারী হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করে তিনি গ্রামবাসীকে চমকে দিয়েছেন।

ভারেল্লা গ্রামের এই কামাল প্রথমে মাত্র ৩০ শতক জমিতে চারা উৎপাদন শুরু করেন। প্রথম বছরেই খরচের দ্বিগুণ লাভ পেয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে ৬০ শতক করেন। জমিটি নিজের না হলেও বংশের তাজু মিয়ার কাছ থেকে বছরে ১ লাখ টাকা ভাড়ায় নিয়ে তিনি ২০২০ সালে বড় আকারে চারা উৎপাদন শুরু করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সুশৃঙ্খল সারিতে সাজানো বিভিন্ন প্রজাতির সবজির চারা, পরিচর্যার আধুনিক ব্যবস্থা এবং শ্রমঘন সমন্বিত কাজের এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।

কামাল বলেন, ‘প্রতিষ্ঠিত হতে হলে মেধা, শ্রম আর অর্থ- এই তিনটাই দরকার। করোনাকালে ৬০ শতক জমি ভাড়া নিয়ে পাঁচ লাখ টাকা মূলধনে চারা উৎপাদন শুরু করি। চার ধাপে চারা উৎপাদন করে বছরে দ্বিগুণ লাভ করেছি। বৃহত্তর কুমিল্লায় এত বড় চারা উৎপাদন কেন্দ্র আর নেই।’

তার উৎপাদিত চারার মধ্যে রয়েছে; লম্বা বেগুন, তাল বেগুন, টমেটো, বাহুবলী টমোটো, ফুলকপি, ফেস কপি, সাতাত্তর কপি, চুন হোয়াইট কপি, হোয়াইট এক্সেল কপি, ১,৭০১ মরিচ, জুমকা মরিচ, কালো মরিচসহ আরও বহু প্রজাতির সবজির চারা। শ্রাবণ মাসে বীজ রোপণ করে বছরজুড়ে চার ধাপে চারা উৎপাদন ও সরবরাহ করেন তিনি। কামালের উৎপাদিত চারা শুধু কুমিল্লা জেলাতেই নয়, বরং চট্টগ্রাম, সিলেট, খাগড়াছড়ি ও কুমিল্লা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিপুল চাহিদা পাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরিন আক্তার বলেন, ‘চারা উৎপাদন কৃষি খাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সরকারি বরাদ্দ পেলে আমরা অবশ্যই কামালের চারা উৎপাদন কেন্দ্রসহ সমেশপুরের অন্যান্য কেন্দ্রগুলোকে সহায়তা করব। জেলা পর্যায়েও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।’


banner close