শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
১১ পৌষ ১৪৩২

কক্সবাজারে পাহাড়ধসে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১ জুলাই, ২০২৪ ২২:০০

আষাঢ়ের শেষ সপ্তাহে টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজার শহরে আবারও পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক শিশু ও দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাজার ও এবিসি ঘোনা এলাকা এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন শহরের এবিসি ঘোনা এলাকার মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা আক্তার (৩০), সিকদার বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হাসান (৫) এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকার বজল আহমদের স্ত্রী লায়লা বেগম (৩৫)। কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রকিবুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ নিয়ে গত তিন সপ্তায় কক্সবাজারে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এক দিনে ১০ জনের মৃত্যু হয়।

স্থানীয়দের বরাতে ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, বুধবার মধ্যরাত থেকে কক্সবাজার শহরে টানা মাঝারি ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সিকদার বাজার এলাকায় বসবাসকারি সাইফুল ইসলামের বাড়ির উপর আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়ে। এতে মাটির দেয়াল ভেঙে সাইফুলের ঘুমন্ত শিশু চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে মাটি সরিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

এদিকে ভোরে শহরের এবিসি ঘোনা এলাকায় পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় জমিলা আক্তার নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসি।

জমিলার পরিবারকে উদ্ধৃত করে রকিবুজ্জামান বলেন, ভোরে জমিলা আক্তার রান্না ঘরের পাশে ঘুমিয়ে ছিলেন। তার স্বামী আরেক কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়লে জমিলা মাটি চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্য চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের লাশ নিজেদের বাড়িতে রয়েছে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় লায়লা বেগম নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান রকিবুজ্জামান।

নিহত লায়লা বেগমের স্বজনদের বরাতে তিনি বলেন, দুপুরে খাবার খাওয়ার সময় লায়লা বেগম ছেলে জোনায়েদকে কোলে নিয়ে পাহাড়ের মাটি ভাঙছে কি না দেখতে বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছিল। এ সময় আকস্মিক পাহাড় ধসে বসতবাড়ির ওপর মাটিচাপা পড়ে। এতে তার স্বামী ও অপর ২ মেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেও লায়লা বেগম ও এক শিশুসন্তান মাটির নিচে চাপা পড়ে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা শিশুটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলেও তার মা ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

এ ছাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি এলাকায় পাহাড়ধসে সকাল থেকে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। কক্সবাজার শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসতে প্রচারণা চালাচ্ছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ৩৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এর আগে গত ৩ জুলাই উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের দুইটি ক্যাম্পে পাহাড় ধসে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৯ জুন উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ও আশপাশের কয়েকটি জায়গায় পাহাড় ধসে ৮ জন রোহিঙ্গা ও দুই বাংলাদেশি নিহত হন। এ ঘটনার দুদিন পর ২১ জুন ভোরে কক্সবাজার শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে ঘুমন্ত স্বামী-স্ত্রী নিহত হন।

শনিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি, আরও পাহাড়ধসের সতর্কতা জারি

এদিকে, আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আগামী শনিবার পর্যন্ত দেশের পাঁচ বিভাগে ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান এক বার্তায় বলেন, বাংলাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারি (২৪ ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হতে পারে।

ভারী বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে ওই বার্তায় সতর্ক করা হয়েছে।

উত্তরে নদীর পানি বাড়ছে

এদিকে, ভারী বৃষ্টির প্রভাবে দেশের উত্তরাঞ্চলের নদীর পানি বাড়ার আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এর ফলে কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির ‘সামান্য অবনতি’ হতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় দেশের ৯টি নদীর পানি ১৯টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছিল।

ওই সময় বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের ১১০টি স্টেশনের মধ্যে ৪৭টি পয়েন্টে পানি কমার প্রবণতা দেখা গেলেও ৬১ পয়েন্টে বাড়ছিল আর অপরিবর্তিত ছিল দুই পয়েন্টে।

বুলেটিনে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীর পানি ‘সময় বিশেষে’ বাড়তে পারে।

তাতে ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে এবং ধরলা ও দুধকুমার নদী-সংলগ্ন কুড়িগ্রাম জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে।

এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের মহানন্দা, যমুনাশ্বরী, আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, পুর্নভবা, টাঙ্গন এবং ইছামতি- যমুনা নদীর পানি সময় বিশেষে বাড়তে পারে।

এদিকে গঙ্গা নদীর পানিও বাড়ছে, এ পরিস্থিতি আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

ব্রহ্মপুত্রের পানিও বাড়ছে, অন্যদিকে যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে; আগামী ২৪ ঘণ্টায় দুই নদীর পানিই স্থিতিশীল থাকতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে বুলেটিনে।

সেখানে বলা হয়, পদ্মা নদীর পানি এবং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুশিয়ারা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে; তবে সুরমা নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।

পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

এ সময় দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়ী পয়েন্টে কমে নদী সংলগ্ন সিরাজগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।


হাসিনার আমলে আমদানি করা ৩০ গাড়ি গেল পরিবহন পুলে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শেখ হাসিনার শেষ মেয়াদে শুল্কমুক্ত সুবিধায় দ্বাদশ সংসদের এমপিদের আমদানি করা ৩০টি বিলাসবহুল গাড়ি শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন যানবাহন অধিদপ্তরের পরিবহন পুলে হস্তান্তর করা হয়েছে। শুল্ক-কর ছাড়াই গাড়িগুলো দেওয়া হলেও ভবিষ্যৎ জটিলতা এড়াতে শর্ত যুক্ত করা হয়েছে।

নিলামে প্রত্যাশিত দর না ওঠায় গত সেপ্টেম্বরে দ্বাদশ সংসদের ৩১ জন সংসদ সদস্যের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি পরিবহন পুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে সংসদ সদস্যদের আমদানি করা গাড়ি এভাবে সরকারের কাছে নেওয়ার কোনো নজির না থাকায় বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। পরে যানবাহন অধিদপ্তর, কাস্টমস ও বিআরটিএর সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।

সবশেষ ১২ নভেম্বর প্রায় ২৭০ কোটি টাকা মূল্যের গাড়িগুলো শর্তসাপেক্ষে পরিবহন পুলে দেওয়ার বিশেষ আদেশ দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড—এনবিআর। আদেশ অনুযায়ী, ভবিষ্যতে আমদানিকারক অর্থাৎ সাবেক এমপিরা চাইলে নির্ধারিত শুল্ক-কর পরিশোধ করে গাড়িগুলো ফেরত নিতে পারবেন।

এরইমধ্যে যানবাহন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা চট্টগ্রাম বন্দরে সংরক্ষিত গাড়িগুলো পরিদর্শন করেছেন। সব প্রক্রিয়া শেষে ৩০টি গাড়ি হস্তান্তরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার শরিফ আল আমিন বলেন, ‘এরইমধ্যে গাড়ি খালাসকরণের জন্য সব প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন করা হয়েছে। জনপ্রশাসন ও পরিবহন পুলের কর্তাব্যক্তি যারা আছেন তারা এরইমধ্যে গাড়িগুলো বুঝে নেওয়ার জন্য এসেছেন।’

গাড়ি আমদানিকারকদের মতে, উচ্চ মূল্য ও প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে এসব গাড়ি নিলামে বিক্রি করা কঠিন হতো। বন্দরের শেডে ফেলে রেখে নষ্ট হওয়ার ঝুঁকির চেয়ে পরিবহন পুলে দেওয়াই ছিল বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত। তবে সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় বিলাসবহুল গাড়ি আমদানির আইন সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বারভিডা।

বারভিডার সাবেক সহ-সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আপনি এমপিদের জন্য গাড়িই দেন তাহলে ৩ হাজার সিসি পেট্রোল কেন করবেন আপনি? অন্তত সাড়ে ৩ হাজার সিসি পেট্রোল করতে হবে। একটা স্ল্যাট ভাগ করে দিতে হবে যাতে যেকোনো জায়গা থেকে গাড়ি নামতে পারে।

সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত সুবিধা চালু হয় এরশাদ সরকারের আমলে। দ্বাদশ সংসদের পর এ সুবিধায় ৫১টি গাড়ি আমদানি করা হলেও সংসদ বিলুপ্তির পর বেশিরভাগ গাড়ি খালাস হয়নি। এর অধিকাংশই টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার।


রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়

সরকারের বিবৃতি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে গণপিটুনিতে একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার বলছে, প্রাথমিক তদন্ত ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী ঘটনাটি কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা এবং চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশের বরাতে সরকার জানিয়েছে, পুলিশ ঘটনাস্থল হতে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল ও একটি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতোমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যে কোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একইসঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্য প্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকার সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ—দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা কঠোর হাতে দমন করা হবে।

সূত্র : বাসস


শীতের সবজিতে স্বস্তি তেল-ডালে অস্থিরতা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কাঁচাবাজারে সরবরাহ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজির দাম। এছাড়া স্বস্তি মিলেছে পেঁয়াজের দামেও। মাত্র দুই-তিন সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে আসায় মধ্য ও নিম্নবিত্ত ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। তবে সবজি ও পেঁয়াজের দামে পতন ঘটলেও তেল, ডাল এবং মাছ, মাংস ও নিত্যপণ্যের বাজারে আগের মতোই অস্থিরতা দেখা গেছে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর রায়সাহেব বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের সবজিতে বাজার এখন ভরপুর। নতুন আলু, শিম ও টমেটোর দাম গত সপ্তাহের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজের কেজিও এখন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। গত দু-তিন সপ্তাহ আগের চেয়ে পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেক কমেছে। এতে ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তবে বাজারে মুরগি, ডিম, মাছ ও অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল।

পরিবর্তন নেই মাছ, মাংস, ডিম ও নিত্য প্রয়োজনীয় মসলার দামে। রুই-কাতলা ৪০০, পাঙাশ ২০০ টাকা কেজি, পোলট্রি মুরগি কেজিপ্রতি ১৭০ টাকা, ডিমের ডজন ১২০ টাকা, খাসি মাংস ১৩০০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। দোকানিরা জানান, দাম আগের মতোই আছে।

তবে প্রতিকেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে পাকিস্তানি মুরগির দাম। যা গত কয়েক সপ্তাহ আগে ছিল ৩০০ টাকার ওপরে, তা এখন ২৮০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগি বিক্রেতা জব্বার জানান, মুরগি সরবরাহ বেশি আছে এখন। এ জন্য কিছুটা দাম কমেছে।

সবজির মধ্যে টমেটোর দাম কেজিপ্রতি কমেছে ২০ টাকা। আগে ছিল ১২০ টাকা কেজি। লাউয়ের পিস ৫০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, ফুলকপি ৩০, বাঁধাকপি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রায়সাহেব বাজারের সবজি বিক্রেতা জয়নাল জানান, এসব সবজির দাম গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকায় বেশ শীত অনুভূত হওয়ায় বাজারগুলোতে ক্রেতা উপস্থিতি কিছুটা কম। বিক্রেতারা বলছেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা সমাগম বাড়বে। সবজি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাম কমে গ্রাহকের নাগালে এসেছে। এতে ক্রেতাদের মধ্যে শীতের সবজি কেনায় স্বস্তি দেখা গেছে।

বাজারে দেখা গেছে, প্রতিটি দোকানে এখন থরে থরে সাজানো নতুন সবজি। দাম নাগালের মধ্যে থাকায় ক্রেতারাও প্রয়োজন মতো সবজি কিনতে পারছেন।

রায়সাহেব বাজারে ক্রেতা ছত্তার আলী বলেন, গত বছর প্রায় পুরো সময় সবজির দাম বেশি ছিল। ৬০ টাকা কেজির কম সবজি কেনা যায়নি। এখন ৩০-৪০ টাকা কেজি দরে অনেক সবজি কেনা যাচ্ছে। ১০০ টাকার সবজি কিনলে দু-চার দিনের জন্য যথেষ্ট।

বাজারে কমেছে শীতের সবজি শিমের দাম। এখন বিভিন্ন বাজারে অনেক ধরনের শিম পাওয়া যাচ্ছে। তার মধ্যে নতুন আসা বিচিওয়ালা শিম ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য জাতের শিম ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে।

মাত্র দু-তিন সপ্তাহ আগেই প্রতিকেজি নতুন আলু ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন তা কমে ২০-২৫ টাকায় নেমেছে। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়।

পাকা টমেটোর দাম কমলেও এখনো ক্রেতার নাগালে আসেনি। প্রতি কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকার মধ্যে। তবে শাকের দাম কমেছে। পালং শাক, লাল শাক ও মুলা শাকের আঁটি এখন বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকার মধ্যে।

রায়সাহেব বাজারের নিয়মিত ক্রেতা কাদের বলেন, কয়েক দিন একটু দাম কম যাচ্ছে কাঁচাবাজারে। আজকে আমি মোটামুটি প্রয়োজনীয় সব কিছু এক হাজারের মধ্যে কিনলাম। যা অন্য সময় ১২০০ থেকে ১৩০০ লেগে যায়। তবে দাম আরও কমা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

আরেক ক্রেতা সজীব বলেন, বাজার দর কমেছে না বেড়েছে বোঝা মুশকিল। শুধু কিছু পণ্যের দাম ওঠানামা করলেই বাজারে স্বস্তি ফিরেছে বলা যায় না। দাম কমছে না বিভিন্ন অরাজকতার কারণে। দাম কিছু জিনিসের কমেছে বলতে হবে, কিন্তু সরকার যদি আরও দাম কমাতে পারে তাহলে সব শ্রেণির মানুষের নাগালে আসবে।

কাঁচাবাজারের অধিকাংশ জিনিসের দাম কিছুটা কমলেও অপরিবর্তিত আছে নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদিপণ্যের দাম।

বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটার ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৯০ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৪৫০-১৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা, খোলা চিনি ৯৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৩০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এলাচি ৪ হাজার ৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ২৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১ হাজার ৩৫০ টাকা ও কালো গোল মরিচ ১ হাজার ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতিকেজি প্যাকেট পোলাও চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ৯০-১৩০ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৫৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৯০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচাবাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় সাধারণ মানুষের নাগালে এসেছে অনেক পণ্য। বিশেষ করে পেঁয়াজ ও নতুন আলুর দাম দ্রুত কমে আসায় নিম্ন আয়ের মানুষের খরচ কিছুটা কমেছে। তবে ক্রেতাদের মতে, কেবল কয়েকটি পণ্যের দাম কমলেই বাজারে পূর্ণ স্বস্তি ফেরা সম্ভব নয়। তারা মনে করেন, বাজার মনিটরিং জোরদার করে চাল, ডাল, তেলসহ মুদিপণ্যের দাম কমাতে পারলে সব শ্রেণির মানুষের জন্য তা সুফল বয়ে আনবে।


আলফাডাঙ্গায় বাড়িতে ঢুকে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাইফুল সরদার (৪৫) নামে এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোর চারটার দিকে সদর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ জাটিগ্রামে নিজ বাড়িতে হত্যার শিকার হন তিনি।

নিহত সাইফুল ব্রাহ্মণ জাটিগ্রামের হবি সরদারের ছেলে। তিনি সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাহিত্য ও সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

হামলায় একই দলের সমর্থক ইসমাইল মোল্যা (২৬) নামের এক যুবককে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তাকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। উভয়পক্ষের অনন্ত ১০টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত শফিকুল মিয়া ও আইয়ুব মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। মরদেহ ফরিদপুর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলফাডাঙ্গার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান।

নিহতের পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণ জাটিগ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম ও বিদ্যাধর গ্রামের শাহাদৎ হোসেন খোকন মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার ভোর রাতে জুয়েল মিয়া ও তার ছোট ভাই হাসিব মিয়ার নেতৃত্বে অনন্ত ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শরিফুল ইসলামের সমর্থক সাইফুল সরদারের বাড়িতে প্রবেশ করে। থানা থেকে পুলিশ এসেছে বলে দরজা খুলতে বলে। দরজা খুলতেই সাইফুলকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এসময় হামলাকারীরা সাইফুলের বাড়িতে থাকা আসবাবপত্র ও ইলেকট্রিক মালামাল ভাঙচুর করে। এরপর ইসমাইল মোল্যার বাড়িতে ঢুকে তাকে কুপিয়ে জখম করে। পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা কাশিয়ানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থার বেগতিক দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠায়।

শরিফুল মেম্বারের সমর্থক দবীর শরীফের স্ত্রী আলেয়া বেগম জানান, স্থানীয় জুয়েল মিয়া, হাসিব মিয়া ও সবুজ মিয়াসহ অনেক লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ঘরে থাকা ৫ লাখ টাকা, দুটি ইজিবাইক ভাঙচুর ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করে নিয়ে যায়।

আলফাডাঙ্গা থানার ওসি আবুল হাসনাত খান বলেন, স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। রাতে পুলিশ পরিচয়ে ঘরে ঢুকে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে সাইফুল নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। অন্য একজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


তারেক রহমানের বাসার সামনে নেতা-কর্মীরা

‘গণসংবর্ধনায় নেতাকে দেখতে পাইনি, তাই  বাসার সামনে এসেছি’ 
গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বরে তারেক রহমানের বাসার সামনে কয়েকজন নেতা-কর্মী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেখতে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই বাসার সামনে আসেন নেতা-কর্মীরা। সকালে গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়ির সামনে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বাসার সামনে আসা নেতা-কর্মীদের অনেকে বলছেন, গণসংবর্ধনায় লাখ লাখ মানুষের মাঝে তারেক রহমানকে ভালোভাবে দেখতে পাননি। এ জন্যই সকালে গুলশানের বাসার সামনে এসেছেন তারা। দীর্ঘ ১৭ বছর পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফিরেছেন। এতে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে খুশির আমেজ বিরাজ করছে।

মো. ইসমাইল এসেছেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার গণসংবর্ধনায় এসেছিলাম। নেতাকে ভালোভাবে দেখতে পাইনি। এ জন্য বাসার সামনে এসেছি। নেতার প্রতি ভালোবাসা থেকেই এখানে এসেছি।

সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাসার সামনে অবস্থান করে দেখা যায়, চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ) সদস্যদের পাশাপাশি পুলিশ, র‍্যাব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাসাটির নিরাপত্তায় রয়েছেন। বাসার সামনেই রাখা হয়েছে তারেক রহমানকে বহনকারী লাল–সবুজ রঙের বাসটি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নেতা-কর্মীরা বাসার সামনে আসছেন। বাসার বিপরীত পাশের সড়কে অবস্থান করছেন তারা। কেউ কেউ মুঠোফোনে ছবি তুলছেন। গণমাধ্যমকর্মীরাও ভিড় করেছেন।

তারেক রহমানকে দেখতে সকালে বাসার সামনে আসেন ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য মো. মাঈনুদ্দিন। তিনি বলেন, সংবর্ধনায় অংশ নিতে দুই দিন আগে ঢাকায় এসেছি। চেয়ারম্যান সাহেবের বাসার সামনে ভিড় না করার জন্য দলীয় নির্দেশনা আছে। তারপরও একনজর দেখার জন্য এসেছি।

তারেক রহমান শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বাদ জুমা বেলা ২টার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করেন। পরে তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য এবং তারেক রহমানের সপরিবার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে ঢাকাসহ দেশের মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া হয়।

দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে লন্ডন থেকে তারেক রহমান ঢাকায় আসেন। তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান সঙ্গে এসেছেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়েতে (৩০০ ফিট) গণসংবর্ধনাস্থলে চলে যান। পুরো পথে বিপুল নেতা-কর্মী তাকে স্বাগত জানান। গণসংবর্ধনায় বক্তব্য দেন তারেক রহমান। এরপর অসুস্থ মা খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বের হয়ে গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসায় আসেন। এখানেই সপরিবার থাকছেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য গুলশান অ্যাভিনিউর এই বাড়ি আগেই প্রস্তুত করা ছিল। ১৯৬ নম্বর বাড়িটি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের বাসভবন ‘ফিরোজা’র পাশে অবস্থিত।


নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন নিয়ে সংশয় দূর হয়েছে : প্রেসসচিব

আপডেটেড ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:১৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে হওয়া নিয়ে যে সংশয় ছিল তা দূর হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রেসসচিব তার পোস্টে লিখেছেন, ‘সাধারণ নির্বাচন এবং গণভোট এখন আর মাত্র সাত সপ্তাহ বাকি —৪৯ দিন। আমি কখনো সন্দেহ করিনি যে নির্বাচন ঠিক সময়ে হবে, যদিও এমন কিছু মুহূর্ত ছিল যখন আমার উদ্দীপনার উদ্দীপনা কাটিয়ে উঠতে হয়েছিল।

গত বৃহস্পতিবারের ঘটনা, যাহোক, ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন নির্ধারিত হবে কি না, তা নিয়ে সমালোচকদের যত সংশয় ছিল তা মুছে দিয়েছে।’

তিনি আরও লিখেন, ‘রেকর্ড ভঙ্গকারী জনতা সিজনের নিকৃষ্টতম কোন্দলকে উপেক্ষা করে ৩০০ ফুট উচ্চতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানাতে জড়ো হয়। এটি একটি নির্বাচনের জন্য দেশের প্রস্তুতির একটি স্পষ্ট প্রমাণ ছিল। দুয়েক দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করা হবে।

হাজার হাজার প্রার্থী তারপর দেশে ফিরবেন। প্রিন্টিং প্রেসগুলো কাজে গর্জন করবে। টেলিভিশন স্টেশনগুলোতে নির্বাচনী বিতর্ক শুরু হবে, যা গ্রামস্তরে পৌঁছে যাবে।’

বাংলাদেশ গভীর ক্ষত বহন করে—একটি চির-বিস্তৃত ফ্র্যাকচার, যা শুধুম একটি সত্যিকারের বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সারিয়ে তুলতে পারে।


১৫ বছর আগে সংসদে বলেছিলাম তারেক রহমান আসবেন : আন্দালিব রহমান পার্থ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেছেন, আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম ‘তারেক রহমান আসবেন’, আর বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবেন তারেক রহমানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর এখন বাংলাদেশে। আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম তারেক রহমান আসবেন, আর বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবেন তারেক রহমানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। সেই সময় দাঁড়িয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সামনে কথাটা বলা সহজ ছিল না। আমি গণনা করে বলিনি, ভবিষ্যদ্বাণীও করিনি, কেবল দৃঢ় বিশ্বাস থেকে বলেছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল যে, তারেক রহমানের মতো জনগণের এক নেতার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন জজ সাহেবের কলমের খোঁচা দিয়ে নির্ধারিত হয় না, সেটা নির্ধারিত হয় আল্লাহর ইচ্ছায়, জনগণের মাধ্যমে সঠিক সময়ে।’

‘আজ সেই সময়- অভিনন্দন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। অভিনন্দন সারা বাংলাদেশের বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীকে। অভিনন্দন বাংলাদেশের জনগণকে।’


চাইনিজ লিটারেচার রিডার্স ক্লাবের যাত্রা শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চীন ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি বা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে চাইনিজ লিটারেচার রিডার্স ক্লাব।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বারিধারার আপন ফ্রেন্ডশিপ এক্সচেঞ্জ সেন্টারে ক্লাবটির উদ্বোধন করা হয়।

চীনের রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-আয়োজনে এবং আপন ফ্রেন্ডশিপ এক্সচেঞ্জ সেন্টারের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে দুদেশের সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় আরও গভীর ও গতিশীল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বক্তারা।

অনুষ্ঠানে চাইনিজ লিটারেচার রিডার্স ক্লাবের ফলক উন্মোচন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লি শাওফেং এবং চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-এর বাংলা বিভাগের পরিচালক ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী।

বাংলাদেশের খ্যাতনামা লেখক, প্রকাশক, গবেষক ও সাহিত্যপ্রেমীরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী বলেন, ‘চীনের রয়েছে ৫ হাজার বছরের দীর্ঘ ইতিহাস ও সমৃদ্ধ সাহিত্য ঐতিহ্য। এই ক্লাবের মাধ্যমে বাংলাদেশের পাঠকদের চীনা সাহিত্য সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি হবে।

এতে উভয় দেশের মধ্যে সাহিত্য বিনিময় আরও বাড়বে। এ উদ্যোগে চীনা দূতাবাস সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’

চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লি শাওফেং বলেন, ‘সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ভান্ডারকে ভিত্তি করে চাইনিজ লিটারেচার রিডার্স ক্লাব প্রতিষ্ঠা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। এই প্ল্যাটফর্মে চীন-বাংলাদেশের লেখক, গবেষক ও পাঠকরা গভীর সংলাপে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।

তিনি আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উভয় দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের কৌশলগত দিক নির্দেশনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌছেছে। জনগণের মধ্যে বিনিময়- বিশেষ করে সাহিত্য ও চিন্তার আদান-প্রদান এই সম্পর্কের ভিত্তিকে আরও মজবুত করবে। বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের আওতায় ‘জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযোগ’-এর একটি উজ্জ্বল উদাহরণ এই রিডার্স ক্লাব।’

জাতীয় গ্রন্থাগারের চাইনিজ বুক কর্নারে বাংলাদেশি লেখকদের অংশগ্রহণে নিয়মিত পাঠচক্র আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন কালচারাল কাউন্সেলর।


কুষ্টিয়ায় বিজিবির তৎপরতায় ‘১৪ ভারতীয় নাগরিক’ পুশ ইনে ব্যর্থ বিএসএফ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চলছে, ঠিক সেই সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তৎপরতায় ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ ভারতীয় নাগরিককে জিরো লাইন থেকে ফেরত নিয়ে যায় বিএসএফ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, বিএসএফের আহ্বানে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীন মহিষকুন্ডি বিওপিতে কর্মরত সুবেদার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধিদল এবং ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ উদয় কোম্পানি কমান্ডার এসি অনিল কুমারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিএসএফ প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের মেইন পিলার ১৫৪/০৭ এস-সংলগ্ন ভারতের অভ্যন্তরে চাইডোবা মাঠে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাদের ফেরত নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

পুশ ইনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০); শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।

এই ঘটনায় সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকালীন স্পর্শকাতর সময়ে ভারতের এমন পুশ ইন চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নানা আলোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’


শাহবাগে হাদি হত্যার বিচার দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের অবরোধ

আপডেটেড ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৬:৫৮

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান হাদি হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে সংগঠনের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নিলে ওই এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এই কর্মসূচিতে ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন।

এর আগে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে সংগঠনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের মাধ্যমে দেশব্যাপী দোয়া-মোনাজাত ও বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। শাহবাগে অবস্থানকালে আন্দোলনকারীরা ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা করার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন। এ সময় তারা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। অবরোধ চলাকালে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের ঘোষণা দেন যে, হাদি হত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে এবং প্রয়োজনে তারা শাহবাগেই রাত্রিযাপন করবেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা শেষে রিকশাযোগে ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ১৫ ডিসেম্বর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার এই মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে এবং দেশজুড়ে বিচারের দাবিতে আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে।


ঘন কুয়াশায় লঞ্চ চলাচল বন্ধের নির্দেশ, দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে নৌ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে দুই লঞ্চের ভয়াবহ সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার প্রেক্ষিতে ঘন কুয়াশার মধ্যে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) এই নির্দেশনা প্রদান করেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয় যে, কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিটি লঞ্চে ফগ লাইট ও সাইড লাইটের উপস্থিতি নিশ্চিত করার পাশাপাশি সব নৌযানের ফিটনেস ও লাইসেন্স তদারকি করতে নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন উপদেষ্টা।

গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ঢাকা থেকে ঝালকাঠিগামী ‘অ্যাডভেঞ্চার-৯’ এবং ঘোষের হাট থেকে ঢাকাগামী ‘এমভি জাকির সম্রাট-৩’ লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। চাঁদপুরের হাইমচর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে রাত আড়াইটার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে, যাতে জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চারজন যাত্রী নিহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের ৫ জন কর্মীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করতে ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে যাদের আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সদরঘাটে দুর্ঘটনাকবলিত এমভি জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চটি পরিদর্শন করেন নৌ উপদেষ্টা ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন। পরিদর্শনকালে তিনি নিহতের স্বজন ও আহতদের সঙ্গে কথা বলে গভীর সমবেদনা জানান। তিনি ঘোষণা করেন যে, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া দোষী মালিকপক্ষকেও তলব করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তাদের পক্ষ থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান নিশ্চিত করা যায়।


ঝালকাঠিতে হাদির স্মরণে দেওয়ালে দেওয়ালে গ্রাফিতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঝালকাঠি প্রতিনিধি

নিজ জেলা ঝালকাঠিতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন দেওয়ালে গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তার সাহসী সংগ্রাম, প্রতিবাদী চেতনা ও আত্মত্যাগের গল্প। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী এই গ্রাফিতি কর্মসূচির আয়োজন করেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।

শহরের বিভিন্ন স্থানে আঁকা গ্রাফিতিগুলোতে উঠে আসে প্রতিবাদী স্লোগান ও মানবিক বার্তা। কোথাও লেখা ছিল—‌‘জান দেব, জুলাই দেব না’, ‘আবার কোথাও ‘আমি আমার শত্রুর সাথেও ন্যূনতম ইনসাফ করতে চাই’।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, ‘শহীদ ওসমান হাদির রেখে যাওয়া সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চ থেকে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবেই এই গ্রাফিতি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সামনে আরও এমন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওসমান হাদি ছিলেন আগ্রাসন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন কণ্ঠ। ভারতের আধিপত্যবাদী নীতির বিরুদ্ধেও তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন। তার সেই প্রতিবাদী আদর্শ ও স্মৃতি নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ।’


রাজশাহীতে মাসব্যাপী কুটিরশিল্প মেলা শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজশাহী প্রতিনিধি

রাজশাহীতে মাসব্যাপী ১৮তম বস্ত্র ও কুটিরশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) নগরীর কেন্দ্রীয় বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানার উত্তর পাশের মাঠে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করা হয়। উইমেন এন্টারপ্রিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ওয়েব)-এর ২২তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ওয়েব রাজশাহীর উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলা চলবে আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়েব রাজশাহী শাখার সভাপতি মোসা. আঞ্জুমান আরা পারভীন লিপি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পপতি হাসেন আলী, জাতীয় দৈনিকের পত্রিকার সম্পাদক লিয়াকত আলী, জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক পরিচালক জিয়া উদ্দিন আহমেদ, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান এবং বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি রাজশাহীর সভাপতি মরিয়ম বেগম।

এ ছাড়া ওয়েব রাজশাহী শাখার সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা আক্তার, প্রচার সম্পাদক মৌসুমী খাতুন, প্রচার সম্পাদক শামীমা সুলতানা মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক সততা খাতুন, সদস্য বিপাশা দাসসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা ও নারী উদ্যোক্তা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবারের মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে মোট ৪৫টি স্টল বসানো হয়েছে। মেলায় বেত ও বাঁশের তৈরি সামগ্রী, সিরাজগঞ্জের তাঁতবস্ত্র, গার্মেন্ট পণ্য, ক্রোকারিজ, বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী, গিফট আইটেম ও ভ্যারাইটিস পণ্যসহ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের নানা পণ্য স্থান পেয়েছে। দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পণ্যের পাশাপাশি আধুনিক নকশার পণ্যও দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, তাঁতবস্ত্র ও কুটিরশিল্প মেলা মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই উদ্যোক্তাদের সরাসরি ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি করে। এতে উদ্যোক্তারা ন্যায্যমূল্য পান এবং কারিগররাও উৎসাহিত হন। একই সঙ্গে দেশীয় পণ্যের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বাড়ে এবং বিদেশি পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমে।

দর্শনার্থীরাও মেলাকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তাদের মতে, এক জায়গায় দেশীয় হস্তশিল্প ও তাঁত পণ্যের সমাহার থাকায় কেনাকাটা সহজ হচ্ছে। পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সঙ্গে আধুনিক নকশার সমন্বয় নতুন প্রজন্মকেও আকৃষ্ট করছে। মাসব্যাপী এই তাঁতবস্ত্র ও কুটিরশিল্প মেলা রাজশাহী অঞ্চলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।


banner close