আষাঢ়ের শেষ সপ্তাহে টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজার শহরে আবারও পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক শিশু ও দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাজার ও এবিসি ঘোনা এলাকা এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন শহরের এবিসি ঘোনা এলাকার মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা আক্তার (৩০), সিকদার বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হাসান (৫) এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকার বজল আহমদের স্ত্রী লায়লা বেগম (৩৫)। কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রকিবুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে গত তিন সপ্তায় কক্সবাজারে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এক দিনে ১০ জনের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, বুধবার মধ্যরাত থেকে কক্সবাজার শহরে টানা মাঝারি ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সিকদার বাজার এলাকায় বসবাসকারি সাইফুল ইসলামের বাড়ির উপর আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়ে। এতে মাটির দেয়াল ভেঙে সাইফুলের ঘুমন্ত শিশু চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে মাটি সরিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
এদিকে ভোরে শহরের এবিসি ঘোনা এলাকায় পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় জমিলা আক্তার নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসি।
জমিলার পরিবারকে উদ্ধৃত করে রকিবুজ্জামান বলেন, ভোরে জমিলা আক্তার রান্না ঘরের পাশে ঘুমিয়ে ছিলেন। তার স্বামী আরেক কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়লে জমিলা মাটি চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্য চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের লাশ নিজেদের বাড়িতে রয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় লায়লা বেগম নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান রকিবুজ্জামান।
নিহত লায়লা বেগমের স্বজনদের বরাতে তিনি বলেন, দুপুরে খাবার খাওয়ার সময় লায়লা বেগম ছেলে জোনায়েদকে কোলে নিয়ে পাহাড়ের মাটি ভাঙছে কি না দেখতে বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছিল। এ সময় আকস্মিক পাহাড় ধসে বসতবাড়ির ওপর মাটিচাপা পড়ে। এতে তার স্বামী ও অপর ২ মেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেও লায়লা বেগম ও এক শিশুসন্তান মাটির নিচে চাপা পড়ে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা শিশুটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলেও তার মা ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
এ ছাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি এলাকায় পাহাড়ধসে সকাল থেকে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। কক্সবাজার শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসতে প্রচারণা চালাচ্ছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ৩৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এর আগে গত ৩ জুলাই উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের দুইটি ক্যাম্পে পাহাড় ধসে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৯ জুন উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ও আশপাশের কয়েকটি জায়গায় পাহাড় ধসে ৮ জন রোহিঙ্গা ও দুই বাংলাদেশি নিহত হন। এ ঘটনার দুদিন পর ২১ জুন ভোরে কক্সবাজার শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে ঘুমন্ত স্বামী-স্ত্রী নিহত হন।
শনিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি, আরও পাহাড়ধসের সতর্কতা জারি
এদিকে, আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আগামী শনিবার পর্যন্ত দেশের পাঁচ বিভাগে ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান এক বার্তায় বলেন, বাংলাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারি (২৪ ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হতে পারে।
ভারী বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে ওই বার্তায় সতর্ক করা হয়েছে।
উত্তরে নদীর পানি বাড়ছে
এদিকে, ভারী বৃষ্টির প্রভাবে দেশের উত্তরাঞ্চলের নদীর পানি বাড়ার আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এর ফলে কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির ‘সামান্য অবনতি’ হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় দেশের ৯টি নদীর পানি ১৯টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছিল।
ওই সময় বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের ১১০টি স্টেশনের মধ্যে ৪৭টি পয়েন্টে পানি কমার প্রবণতা দেখা গেলেও ৬১ পয়েন্টে বাড়ছিল আর অপরিবর্তিত ছিল দুই পয়েন্টে।
বুলেটিনে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীর পানি ‘সময় বিশেষে’ বাড়তে পারে।
তাতে ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে এবং ধরলা ও দুধকুমার নদী-সংলগ্ন কুড়িগ্রাম জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে।
এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের মহানন্দা, যমুনাশ্বরী, আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, পুর্নভবা, টাঙ্গন এবং ইছামতি- যমুনা নদীর পানি সময় বিশেষে বাড়তে পারে।
এদিকে গঙ্গা নদীর পানিও বাড়ছে, এ পরিস্থিতি আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
ব্রহ্মপুত্রের পানিও বাড়ছে, অন্যদিকে যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে; আগামী ২৪ ঘণ্টায় দুই নদীর পানিই স্থিতিশীল থাকতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে বুলেটিনে।
সেখানে বলা হয়, পদ্মা নদীর পানি এবং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুশিয়ারা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে; তবে সুরমা নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
এ সময় দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়ী পয়েন্টে কমে নদী সংলগ্ন সিরাজগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
কৃষি নির্ভর মেহেরপুরে জাতীয় রসালো ফল কাঠাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এবারে কাঠালের ফলন ভালো হলেও বাজারে দাম না থাকায় গাছেই পেকে নষ্ট হচ্ছে কাঠাল। ব্যাবহৃত হচ্ছে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে।
কৃষি বিভাগ বলছে স্থানীয় ভাবে বাজার সৃষ্টি করা গেলে এই সমস্য থাকবে না।
জেলার গ্রাম অঞ্চলের সড়কের দুপাশসহ বিভিন্ন এলাকার কাঠাল বাগানের প্রতিটি গাছেই ঝুলে আছে বড় বড় কাঠাল। স্থানীয় ভাবে বাজার না থাকায় এসব কাঠাল বিক্রি করতে পারছে না চাষিরা। চাহিদা না থাকাকে পুজি করে ভ্রাম্যমান কাঠাল ব্যবসায়ীরা কম দামে চাষিদের কাছ থেকে কিনছে এসব ছোট বড় কাঠাল।
স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, একটি ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের বড় আকারের প্রতিটি কাঠাল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। অনেকে দাম না পেয়ে কাঠাল কেটে গরু ছাগলের খাবার হিসেবে দিচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, গত বছর যে কাঠাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কিনেছি সেই কাঠাল এবারে কিনছি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। তাও বিক্রি করতে কষ্ট হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে জেলায় ১৬৫ হেক্টর জমির কাঠাল বাগান থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩শ মেট্রিকটন।
জামাল হোসেন বলেন, আমার বাড়ির উঠানে থাকা একটি কাঠাল গাছে প্রায় শতাধিক কাঠাল ধরে ছিলো।যার মধ্যে আমি সাতটা কাঠাল শুরুর দিকে বিক্রি করে ছিলাম ২"শ ৫০ টাকা করে। আর বতর্মানে প্রতি পিচ কাঠালের দাম দিতে চাইছে ১৫ টাকা করে। তাই বিক্রি না করে কাঠাল কেটে গরুর নাইন্দে খাদ্য হিসেবে দিচ্ছি। এই দামে কাঠাল বেচে পড়তা হয়।
আরেক বাগানি আমজাদ হোসেন বলেন,গাছে প্রচুর কাঠাল ধরেছে। গাছের কাছে ব্যাপারী গেলে ঘুরে আসছে। নেওয়ার লোক নাই ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের কাঠাল দাম বলছে কম এখন গাছেই কাঠাল পেকে পোচে যাচ্ছে।
ইউপি সদস্য শাহিন আহমেদ বলেন,
এত বড় বড় কাঠাল গাছে পেকে পড়ে নষ্ট হচ্ছে গরুকে খাওয়াইছি। নেয়ার লোক নাই ২০ টাকা ৩০ টাকা দাম বলছে। এখন কি হবে নষ্ট হচ্ছে পচে। অথচ এই কাঠাল এমন একটি ফল যার পাতা থেকে শুরু করে সবকিছুর ব্যাবহার হয়। তাছাড়া একটি সময় ছিলো প্রতিটি বাড়িতেই কাঠাল গাছ ছিলো। বতর্মানে তেমনটির আর দেখা মিলছে না। বরং এখন কাঠাল বাগান কেটে ফেলা হচ্ছে।
বিধবা রওশনারা বলেন,বাগানে কাঠাল পড়ে আছে নেয়ার লোক নাই। গরু ছাগলে খাইছে মানুষ খাইছে না। পাকা কাঠাল পইড়ি নষ্ট হইছে।
কাঠাল বিক্রেতা রইচ উদ্দিন বলেন,গত বার যে কাঠাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কিনেছি সেই কাঠাল এবারে কিনছি ২০ টাকা করে। আর আমাদের খরচ যোগ হচ্ছে ১০ টাকা। অথচ সেই কাঠাল হাটে বিক্রি করতে গেলে ২০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে না। আবার কিছু বাগান মালিক আছে কম দামে কাঠাল বিক্রি না করে ঘাসের বিকল্প হিসেবে গরু ছাগলকে খেতে দিচ্ছে।
আমরা যে ১০ টাকা লাভ করবো তা করতে পারছিনি। বাগান থেকে ঘুরতে হচ্ছে ওখানে বেচতে পারছিনি।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ সামসুল আলম বলেন, মেহেরপুর জেলায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে কাঠাল বাগান আছে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩শ মেট্রিকটন। যে পরিমান উৎপাদন হয়েছে সে পরিমান চাহিদা নেই। মেহেরপুরে বাজার না থাকার কারনে কাঠাল বিপনন করতে সমস্যা হচ্ছে। এই ব্যাপারে কৃষি বিপনন কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং ডিসির সাথে কথা বলেছি এখানে স্থানীয় ভাবে বাজার করা যায় কি না। যদি করা যায় তাহলে সমস্যা থাকবে না। আমরা কৃষদের পরামর্শ দেব, দেশের যে এলাকায় কাঠালের চাহিদা আছে সেখানে বিক্রি করতে পারলে লাভবান হবে।
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার (সাইলো) নির্মাণের কাজটি অনিশ্চিত। গত বছরের ৫ আগস্টের পর মাটি ভরাটের কাজ অসম্পূর্ন রেখেই লাপাত্তা ঠিকাদার। সাইলোটি আলোর মুখ দেখবে কিনা না নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। তবে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের অর্থ লোপাটের চেষ্টা বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। সাইলো নির্মাণ করা না হলে সেখানে অন্য যেকোনো উন্নয়ন কাজে জায়গাটি ব্যবহারের দাবি স্থানীয়দের। আর সাইলোটি নির্মিত হলে উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত জেলার ১১ টি উপজেলাসহ আশেপাশের জেলায় উৎপাদিত উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য সরকারিভাবে সংগ্রহ করা সহজ হবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খাদ্যশস্যে উদ্বৃত্ত উত্তরের বৃহৎজেলা নওগাঁ। জেলায় খাদ্য শস্য সংরক্ষণে ২০ টি খাদ্য গুদাম রয়েছে। যার ধারণক্ষমতা ৫৮ হাজার ৪৭৫ টন। এরমধ্যে অধিকাংশ খাদ্য গুদাম বছরের বেশিরভাগ সময় ফাঁকা থাকে। এরপরও ৪৮ হাজার টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন খাদ্য সংরক্ষণাগার (সাইলো) নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার।
খাদ্য বিভাগের তথ্যমতে, সাইলোটি সম্পূর্ণ স্টিল দিয়ে নির্মাণ করা হবে। এতে সরকারের ব্যয় ধরা হয় ১০ কোটি ৫৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা। এরমধ্যে শুধু মাটি ভরাটের বরাদ্দ ৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। প্রকল্পের ভূমি উন্নয়নের জন্য যৌথভাবে কার্যাদেশ পেয়েছে ঢাকার মেসার্স চন্দ্রদ্বীপ কনট্রাকশন, রাজশাহীর মেসার্স ডন এন্টারপ্রাইজ ও নওগাঁর মেসার্স ইথেন এন্টারপ্রাইজ। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ভূমি উন্নয়ন কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
২০২২ সালের শেষ দিকে নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম পাশে জেলার মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর এলাকায় ১৫ একর (৪৫ বিঘা) জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এরপর মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়। মাটি ভরাটের কাজ ৯৫ শতাংশ হলেও প্রায় ৩ বছর থেকে তা পড়ে রয়েছে। যেখানে স্থানীয়দের গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। একই সাথে স্থানীয়দের ফুটবল খেলার কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গা ঢাকা দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও। এরপর থেকে সাইলো নির্মাণের কাজটি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সাইলোটি আলোর মুখ দেখবে কিনা না নিয়েও রয়েছে শঙ্কা।
উপজেলার নওহাটা এলাকার বাসীন্দা শাহজাহান বলেন- জেলায় পর্যাপ্ত খাদ্যগুদাম আছে এবং সংরক্ষণ করা যায়। তারপরও তৎকালিন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে সাইলোটি নির্মানের উদ্যোগ নেয়। এখানে সাইলো প্রকল্পটি দেখিয়ে অনেকের চোখে ধুলো দিয়ে তার নিজের প্রত্যন্ত এলাকায় নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছিল। বর্তমানে সাইলো প্রকল্পটির কাজ বন্ধ রয়েছে। আদ্যো সাইলো হবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। তবে সাইলো যদি না হয় সেখানে অন্য যেকোনো উন্নয়ন কাজে জায়গাটি ব্যবহার করা হোক।
ভীমপুর গ্রামের আরমান আলী অভিযোগ করে বলেন- তিন ফসলি জমিকে এক ফসলি দেখিয়ে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আবার ভরাটের সময় বালুর পরিবর্তে এঁটেল মাটি ব্যবহার করা হয়েছে। অনিয়ম ও দূর্নীতির সাথে জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাই।
একই গ্রামের আব্দুল মান্নান বলেন- সাইলো নির্মাণ হবে গত ৩ বছর থেকে এই কথা শুনে আসছি। এজন্য মাটিও ভরাট করা হয়েছে। এতে খাদ্য-শস্য সংরক্ষণ হবে এবং এলাকার উন্নয়ন হবে। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে। সেখানে গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে এবং ফুটবল খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাইলো হবে কিনা তা আমরা বুঝতেও পারছি না।
নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন- এ জেলায় প্রায় ২৭ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়। সরকারি ভাবে খাদ্য-শস্য সংগ্রহের সময় জেলার খাদ্য গুদামগুলো খালি করে সংগ্রহ করতে হয়। পাশের বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার (সাইলো) ও কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদাম (সিএসডি) সহ চারটি খাদ্য শস্য সংগ্রহ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করতে হয়। এতে ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ। এ কারণে কৃষক ও ব্যবসায়িদের ধান-চালের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সাইলো নির্মাণ প্রয়োজন।
নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ ফরহাদ খন্দকার বলেন- সাইলো নির্মাণে মাটি ভরাটের কাজ ইতোমধ্যে ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। কাজের এখনো ১০ শতাংশ টাকা জামানত হিসেবে রক্ষিত রয়েছে। তবে অজ্ঞাত কারণে ঠিকাদার কাজ বন্ধ রেখে লাপাত্তা। গত ৫ আগস্টের পর থেকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে কি ধরণের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে তা অধিদপ্তর ভাল বলতে পারবেন। তবে খালি জায়গায় ফলজ গাছের চারা রোপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে জেলায় সংরক্ষণ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত রয়েছে।
রংপুর নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে মাহীগঞ্জ সাতমাথা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে, খোয়া বের হয়েছে, স্থানে স্থানে বড় গর্ত; বৃষ্টি হলেই জমে কাদা। এই দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে আবারও প্রতীকী কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সাতমাথা রেলগেটসংলগ্ন ভাঙা সড়কের ওপর ধানের চারা রোপণ ও রংপুর সিটি করপোরেশনকে ‘লাল কার্ড’ দেখানো হয়।
স্থানীয়রা বলেন, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের সঙ্গে রংপুরের যোগাযোগের অন্যতম রুট সাতমাথা-জাহাজ কোম্পানি সড়ক। এ সড়কের ৫ কিলোমিটার দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দে ভরা। প্রতিদিনই মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশা, সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন সেখানে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
চলতি বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়েছে। ফলে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকার রোগী ও গর্ভবতী নারীদের রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে যেতে অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলা হলেও তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তাই এর আগে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের গায়েবানা জানাজার নামাজ পড়া হয়েছিল। শুক্রবার সড়কে প্রতীকী ধানের চারা রোপণসহ সিটি করপোরেশনকে লালকার্ড প্রদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে এ ধরনের কর্মসূচি অব্যহত থাকবে।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, লাল কার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে তারা শেষবারের মতো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান সংস্কারকাজ শুরু না হলে ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখে ধর্মঘট করবেন। এমনকি রংপুর-ঢাকা রেলপথও অবরোধ করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাতমাথার বাসিন্দা রাজিমুজ্জামান হৃদয়, আসিফ মাহমুদ, মো. প্রান্ত, ছিয়াম হোসেন সাকিব, হাসান আলী, হোসেন আলী, সুমন হোসেন বিজয়, আরাফাত হোসেন, সাগর হাসান, হীরা হক, সেলিম হোসেন, হীরা, মোস্তাফিজার রহমান প্রমুখ। তারা সিটি করপোরশনকে লালকার্ড প্রদর্শন করেন।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) গভীর রাতে সীমান্তের বড় আঁচড়া বটতলা এলাকা থেকে এ ট্যাবলেটগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করে বিজিবির বেনাপোল ক্যাম্পের সদস্যরা।
বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাচালানীরা পালিয়ে যায়। জব্দকৃত ট্যাবলেটগুলো ধ্বংস করার জন্য যশোর ব্যাটালিয়নে জমা করা হবে। ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় চোরাচালানীরা ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট এনে বড় আঁচড়া বটতলা মোড়ে মজুদ করেছে। পরে বেনাপোল বিওপির হাবিলদার মো. মামুনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টহলদল সেখানে অভিযান চালিয়ে ২৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ৯ হাজার ৮০০ পিস ভারতীয় সুপার ভিডালিস্টা নামের যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট জব্দ করে।
বিচার, সংস্কার ও নতুন বাংলাদেশ গঠনে ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সবাইকে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র নিশ্চিত করা হবে।
তিনি বলেন, আগামীর নতুন বাংলাদেশে সিলেট এনসিপির অন্যতম দুর্গ হবে। সিলেটবাসী আজ তা দেখিয়ে দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা শেষে পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, যুগযুগ ধরে সিলেট বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এবং বাংলাদশের স্বাধীনতার পক্ষে সিলেট বুক চিতিয়ে লড়াই করেছে। জনগণের মুক্তির লড়াইয়ে সিলেট ছিল অগ্রগামী। ৪৭ সালে সিলেটবাসী পূর্ববঙ্গের সঙ্গে থাকার রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু সিলেটবাসীকে সেই ব্রিটিশ থেকে শুরু করে পাকিস্তান এবং আওয়ামী লীগ আমলেও ঠকানো হয়েছিল। গ্যাস, বালু পাথরসহ সিলেটের খনিজ সম্পদ থেকে সিলেটবাসীকেই বঞ্চিত করা হয়েছে।
তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সিলেটবাসীর মূল্যবান অবদানের কথা স্বীকার করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সাংবাদিক এটিএম তুরাবসহ এই সিলেট জেলার ১৭ জন মানুষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন। আমরা সেইসব শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে এসেছি এই সিলেটে।
তিনি বলেন, লন্ডনে বাঙ্গালিদের অধিকাংশই হচ্ছেন সিলেটী। আপনারা যেমন লন্ডনকে জয় করেছেন তেমনি জয় করেছেন এই সিলেটকে। আমাদের প্রবাসী ভাইদের ঘামে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরে। আমরা তাদের ভোটাধিকারের জন্য কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি প্রবাসীরা বাংলাদেশের নীতি নির্ধারণের অংশী হবেন।
বিচার, সংস্কার ও নতুন বাংলাদেশ গঠনে ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সবাইকে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বলেন, সেখান থেকে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র নিশ্চিত করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, 'এনসিপি বিএনপিবিরোধী বলে যে প্রচার করা হচ্ছে —তা ঠিক নয়। তবে বাংলাদেশে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট চলতে দেওয়া হবে না।'
তিনি বলেন, 'সিলেটের চা বাগানের শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের ঠিকমতো মজুরি দেওয়া হয় না। চা বাগানের লাভ শুধু মালিক নয়, শ্রমিকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করবে এনসিপি।'
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, 'আমাদের দেশ কখনো প্রশাসনের, কখনো ব্যবসায়ীর, আবার কখনো সেনাবাহিনীর হয়েছে, জনতার হয়নি। আমরা জনতার বাংলাদেশ গঠন করতে চাই।'
আওয়ামী লীগের সুবিধা নিয়ে যারা লেখক হয়েছেন, যারা আওয়ামী লীগ আমলে মিডিয়া খুলেছে—তাদের দিকে বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, 'এনসিপি কোনো চাঁদাবাজ দল নয়। আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ক্লোজ করে এনসিপি ওঠে এসেছে।'
এর আগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকাল ৫টায় সিলেট নগরীর চৌহাট্টা থেকে পদযাত্রা শুরু করে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গরমের কারণে নির্ধারিত পদযাত্রার পথ কিছুটা সংক্ষিপ্ত করে পুনরায় চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে তারা পথসভায় মিলিত হন।
উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় পথসভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর, যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশামুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, কেন্দ্রিয় সমন্বয়ক গোলাম মর্তুজা সেলিমসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মাগুরায় প্রতিবন্ধীদের মাঝে ৮০ টি হুইলচেয়ারসহ বিভিন্ন সহায়ক উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে ।
মাগুরা প্রতিবন্ধী সেবা ও উন্নয়ন কেন্দ্রের সহায়তায় এবং জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভার প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইলচেয়ারসহ বিভিন্ন সহায়ক উপকরণ বিতরণ করা হয়।
মাগুরা জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব উপকরণ বিতরণ করেন। এ সময় সাথে ছিলেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ জাকির হোসেন।
মাগুরা সদর উপজেলায় ৩২টি হুইল চেয়ার, শ্রীপুরে ১০টি হুইল চেয়ার, মহম্মদপুরে ২০টি হুইল চেয়ার ও ১টি সাদাছড়ি, শালিখায় ১০টি হুইল চেয়ার এবং পৌরসভায় হুইল চেয়ার, ট্রাইসাইকেল, ওয়াকার, সাদাছড়ি, ক্র্যাস ও কর্ণার চেয়ারসহ বিভিন্ন উপকরণ দেয়া হয়।
মোট বিতরণকৃত উপকরণের মধ্যে ছিল ৮০টি হুইল চেয়ার, ১০টি ট্রাইসাইকেল, ৪টি অক্সালারি ক্র্যাস, ২টি স্মার্ট সাদাছড়ি, ১টি এলবোক্র্যাচ, ১টি কর্ণার চেয়ার ও ১টি ফোল্ডিং ওয়াকার।
এসময় জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন , প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং এই সহায়তা তাদের জীবনযাপনকে স্বাভাবিক করতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের রুকন সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের সংকটকালে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জামায়াতের নেতারা বিদেশ থেকে দেশে এসে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আধিপাত্যবাদের দোসর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন।
তিনি বলেন, ‘জামায়াতের নেতাদের বেগম পাড়া কিংবা পিসি পাড়া নাই। জামায়াতের কোনো নেতা কখনোই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি —যাবেও না। যারা দেশ ও জনগণকে ভালোবাসে না তারাই বিদেশে নিজেদের দ্বিতীয় ঠিকানা গড়ে তুলেছেন। তারা নিজেদের স্বার্থে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।’
জামায়াতের এমন অবস্থঅনের কারণে শীর্ষ নেতাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিচারিক হত্যা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন জামায়াতপ্রধান।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে দলটির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত ৫৪ বছরে জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশের একজন নাগরিকের প্রতিও অবিচার করেনি, জুলুম করেনি। জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী চাঁদাবাজি কিংবা সন্ত্রাসী করেনি, করবেও না। জামায়াত দল নিয়ন্ত্রণ করেছে, দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। যারা দলই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না—তারা দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সার্বিক পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
ইসলামকে পৃথিবীর একমাত্র অসাম্প্রদায়িক ধর্ম উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, ধর্ষক, খুনি, লুটেরাদের ভয়ের কারণ আছে—এজন্য তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। যারা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে তাদের মা-বোন যদি প্রয়োজনে বাজারে যেতে পারে, হাসপাতালে যেতে পারে, প্রয়োজনীয় মৌলিক সব কাজ করতে পারে—তাহলে কেন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে নারীদের চলাফেরায় বাঁধা সৃষ্টি হবে এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সকল ধর্মের নারী-পুরুষ সকলেই রাষ্ট্রের কাছে সমান। রাষ্ট্র ধর্মের কিংবা লিঙ্গের বৈষম্য করতে পারে না। ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সকলের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ইসলাম ও দেশপ্রেমিক সকলকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলতে চায় জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের রাজনীতি হবে কেবলই মানুষ ও মানবতার কল্যাণে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, জেনারেল মাওলানা এটিএম মা'ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগীয় সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান ও মো. শামছুর রহমান।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় হঠাৎ করে ভাইরাল ফ্লো জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার শত শত মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ রোগী শুধুমাত্র জ্বর, গলা ব্যথা, কাশি ও শরীর ব্যথার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন। তাদের অনেকেই আবার কয়েকদিন ধরে উচ্চমাত্রার জ্বরে ভুগছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ স্থানীয় ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ সরাসরি ক্লিনিক বা হাসপাতালে যাচ্ছেন।
জানা যায়,উপজেলার কালাইয়া, ধুলিয়া, কেশবপুর, নাজিরপুর, ও কনকদিয়া ইউনিয়নসহ পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। অনেক স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে বলে জানা গেছে।স্থানীয় ফার্মেসিগুলোতেও সর্দি-কাশি ও জ্বরের ওষুধের চাহিদা বেড়ে গেছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা ধুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. জসিম উদ্দিন বলেন,আমার ৭ বছরের ছেলের দুই দিন ধরে জ্বর, কাশি আর গলা ব্যথা। ওষুধ খাওয়ালেও জ্বর কমছে না। চিন্তায় আছি, তাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
অন্যদিকে কালাইয়া ইউনিয়নের গৃহবধূ রাবেয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী, শ্বশুর আর মেয়ে—তিনজনই জ্বরে ভুগছে। ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিয়েছিলাম, কিন্তু তেমন কাজ না হওয়ায় আজ হাসপাতালে এসেছি। প্রতিদিনই কেউ না কেউ অসুস্থ হচ্ছে আশেপাশে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রউফ বলেন,“এটি সাধারণত মৌসুমি ভাইরাল জ্বর, তবে উপসর্গ তীব্র থাকায় অনেকেই আতঙ্কিত হচ্ছেন। আমরা রোগীদের বিশ্রাম, পানিসমৃদ্ধ খাবার ও প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। তবে যদি শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, বা দীর্ঘমেয়াদি জ্বর হয়, দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশইন থামছেই না। এবার শেরপুরে নালিতাবাড়ীর নাকুগাঁও সীমান্ত দিয়ে রাতের আাঁধারে ২১ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দিবাগত রাত ১টার দিকে নাকুগাঁও সীমান্ত এলাকার ১৪১৬ নম্বর সীমানা পিলারের মাঝখানের ৩ নম্বর সীমান্ত গেইট দিয়ে তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়।
পুশইন করা সবাই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। তাদের মধ্যে ৫ জন বয়স্ক পুরুষ, ৫ জন নারী ও ১১টি শিশু রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন ৩৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদি হাসান।
তিনি জানিয়েছেন, পুশইন হওয়া আটককৃতদের নাকুগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। প্রথমকিভাবে তারা রোহিঙ্গা নাগরিক বলে জানা গেছে। তাদের বিষয়ে আরও যাচাই-বাছাই এবং পরবর্তী কার্যক্রমের প্রক্রিয়া চলছে।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ভারতের মেঘালয়ের কিল্লাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা গতকাল গভীর রাতে ২১ জন রোহিঙ্গাকে পুশইন করেন। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের হাতিপাগার বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের আটক করে নাকুগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখেন।
বিজিবি জানিয়েছে, আটককৃতরা ৬টি পরিবারের সদস্য। তারা ২০১৭ সালে কক্সবাজারের উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প থেকে পালিয়ে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে যায় এবং সেখানে শ্রমিক হিসেবে হোটেলে ও বাসাবাড়িতে কাজ করতে শুরু করে। এক মাস আগে ভারতীয় পুলিশের অভিযানে অবৈধভাবে ভারতে বসবাসের অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে ছিল বলে পরিচয় দেয়। ভারতীয় পুলিশ পরে তাদের বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তাদের মেঘালয়ের ডালু সীমান্তে কিল্লাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পে আনা হয় এবং মধ্যরাতে রাতে নাকুগাঁও স্থলবন্দর এলাকার ৩ নম্বর সীমান্ত গেইট দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই একইভাবে নালিতাবাড়ী উপজেলার পানিহাতা সীমান্ত দিয়ে শিশুসহ ১০ নারী-পুরুষকে পুশইন করে বিএসএফ।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২১ জুলাই বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর উদ্ধার কার্যক্রম চালায় ফায়ার সার্ভিস ও বিমান বাহিনী।
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মাকিন (১৭) নামের ওই শিশুটি ৭০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিল।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুর ১টা ৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখন পর্যন্ত ১৫ জন মারা গেল।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন জানান, চিকিৎসাধীন ৪২ জনের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মাকিন মারা যাওয়ার পর এখনও বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আরও ৪০ জনকে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ এলাকায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বা বজ্র বৃষ্টি হতে পারে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা জানানো হয়েছে।
এতে আরও জানানো হয়, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী ও অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা কিছুটা কমে আসতে পারে।
সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বান্দরবানে, ২০ দশমিক ৫ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ২৫ মিনিটে।
আবহাওয়ার সিনপটিক চিত্রে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তার আশপাশের এলাকায় লঘুচাপটি পশ্চিম থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে আগাচ্ছে এবং ঘণীভূত হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও পরে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আজ সকাল ৬টায় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলবর্তী এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি আরও পশ্চিম থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে আজ বিকেলে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
মৌসুমি বায়ুর অক্ষ ভারতের রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণ থেকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় আছে।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির পথসভাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জের সদর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, জানমালের ক্ষয়ক্ষতি ও নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার বিষয় এবং অন্যান্য ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করবে এই কমিটি।
তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি ও মুক্তিযোদ্ধা ড. মো. আবু তারিককে। এছাড়া কমিটির সদস্য রয়েছেন- স্বরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, যশোরের ২১ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহীদুর রহমান ওসমানী, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক ও পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক সরদার নূরুল আমিন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী।
কমিটিকে রাজনৈতিক সভায় আক্রমণ ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ করবে কমিটি। আর কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
তদন্ত কমিটি আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুস্পষ্ট মতামত ও সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।