শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
২৭ আষাঢ় ১৪৩২

ছয় স্টেশনের কাজ শেষ পর্যায়ে, পিছিয়ে তিনটি

ডিসেম্বরে চালু হতে পারে মেট্রোরেল। সেই লক্ষ্যে স্টেশন তৈরির কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তিনটি স্টেশনের কাজ প্রায় শেষ। এক নম্বর স্টেশনের ছবিটি গত মঙ্গলবার উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে তোলা। ছবি : সুদীপ্ত সালাম
তৌফিকুল ইসলাম
প্রকাশিত
তৌফিকুল ইসলাম
প্রকাশিত : ৫ নভেম্বর, ২০২২ ০৮:২১

ডিসেম্বরে বাণিজ্যিক যাত্রার জন্য মেট্রোরেলের একাংশ অনেকটাই প্রস্তুত। উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে ৯৪ দশমিক ২২ শতাংশ কাজ শেষ। চলছে ট্রেনের নিয়মিত ট্রায়াল। এই অংশের নয়টি স্টেশনের মধ্যে প্রথম তিনটি স্টেশন পুরোপুরি প্রস্তুত। বাকি ছয়টি স্টেশনের মধ্যে কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশনের কাজ পিছিয়ে আছে। অন্য তিনটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অবশ্য কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব স্টেশনের কাজ শেষ করা।

উত্তরা প্রান্তের মেট্রোরেলের তিন স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, প্রথম তিনটি স্টেশন উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার এবং উত্তরা দক্ষিণের কাজ পুরোপুরি শেষ। শুধু খুঁটিনাটি কাজ চলছে। তবে প্রথম স্টেশন উত্তরা উত্তর একেবারেই প্রস্তুত। স্টেশনটির বাইরের অবকাঠামো, ভেতরের টিকিট কাউন্টার, অটোমেটিক টিকিট কাটার মেশিন, লিফট, সিঁড়ি, এস্কেলেটর সবই প্রস্তুত। স্টেশন মাস্টারসহ কর্মকর্তাদের বসার জায়গা তৈরি। স্টেশনের তিনতলায় প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসা-যাওয়ার জায়গাও প্রস্তুত। অপেক্ষা কেবল যাত্রী পরিবহনের। তবে সেখানে কিছু স্ক্রিন বসানোর কাজ বাকি, যেগুলোয় দেখানো হবে বিভিন্ন নির্দেশনা। স্টেশনটির ভেতরের কন্ট্রোল রুমও প্রস্তুত হয়ে আছে।

স্টেশনের ভেতরে ডিজিটাল স্ক্রিনের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব স্ক্রিনে বিভিন্ন ধরনের সাইনেজ বা নির্দেশনা থাকবে। কোন দিকে যেতে হবে, কোন দিক দিয়ে উঠতে হবে, কোন দিক দিয়ে নামতে হবে, কীভাবে টিকিট কাটতে হবে। এগুলো দেশের বাইরে তৈরি হচ্ছে, যা বাণিজ্যিক যাত্রার আগেই চলে আসবে। আসার পর পরই যুক্ত হয়ে যাবে স্টেশনে।

এদিকে ছয়টি স্টেশনের ওঠানামার পথের কাজ শেষ হয়েছে এবং তিনটি স্টেশনের ওঠানামার পথ নির্মাণের কাজ চলছে। এর মধ্যে মিরপুরের কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশনের কাজ কিছুটা পিছিয়ে আছে। এগুলোতে ওঠানামার পথ এখনো তৈরি হয়নি, লিফট স্থাপনের কাজ বাকি। আর স্টেশনের ভেতরে কারিগরি কাজও চলছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি স্টেশনের ৩৬টি লিফটের মধ্যে ২৫টি মেক্যানিক্যাল ও ইলেকট্রনিক কাজ শেষ হয়েছে এবং ৫৪টি এস্কেলেটরের মধ্যে ৪৮টি বসানো হয়েছে।

এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের উপব্যবস্থাপক মো. মাহফুজুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘নয়টি স্টেশনের মধ্যে কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ার স্টেশনের কাজে কিছুটা ধীরগতি আছে। কারণ এখানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্য একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। দুই কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কিছু বাধা তৈরি হচ্ছে। ফলে এই দুটি স্টেশনের কাজ শেষ করতে কিছুটা দেরি হতেও পারে। তবে আমাদের লক্ষ্য নভেম্বরের মধ্যেই সব স্টেশনের কাজ শেষ করা।’

সরেজমিন দেখা যায়, মিরপুর স্টেশনে যাত্রীদের ওঠানামার সিঁড়ির জায়গা অনেক কম রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, উত্তরার স্টেশনগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা রাখা হলেও মিরপুরের স্টেশনগুলো একটু ছোট করা হয়েছে জায়গা না পাওয়ার কারণে। তবে তা যাত্রীদের চাহিদা মেটাতে পারবে।

এই অংশের পাশাপাশি আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের কাজও চলছে। প্রায় ৮৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ কাজ হয়েছে এই অংশে। এই অংশে সাতটি স্টেশন বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিলে নির্মাণকাজ চলছে। তবে উত্তরা-আগারগাঁও অংশের তুলনায় এই অংশের কাজ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে।

উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের প্রথম মেট্রোরেলে নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে আছে ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। তারা উত্তরা থেকে আগারগাঁও ১১ দশমিক ২২ কিলোমিটার চলতি বছরের ডিসেম্বরে চালু করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

শেষ মুহূর্তে নিয়মিত চলছে ট্রেনের ট্রায়াল
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সিগন্যালিং সিস্টেমের পরীক্ষাও চলছে। ইতিমধ্যে ট্রেনের ডাইনামিক টেস্টিং ও সিগন্যালিং পিএসডি ইন্টারফেস পরীক্ষা শেষ হয়েছে। বিভিন্ন ধাপে ট্রেনের ট্রায়াল রান হচ্ছে। অনেকগুলো ধাপ শেষ করার পরই যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত হবে ট্রেন। তাই নিয়মিতই চলছে ট্রেনগুলো। সেপ্টেম্বর থেকে সমন্বিত পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে দেখা হচ্ছে, প্রতিটি ট্রেনের গতি, সময়মতো স্টেশনে থামছে কি না। অর্থাৎ সিস্টেমের সঙ্গে ট্রেনটি চলতে পারছে কি না সে বিষয়গুলো ঝালিয়ে নেয়া হচ্ছে।

উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১০ সেট মেট্রো ট্রেন দিয়ে যাত্রা শুরু হবে। ইতিমধ্যেই সেসব ট্রেন প্রস্তুত হয়েছে। ২৪ সেট ট্রেনের মধ্যে জাপান থেকে ঢাকার উত্তরার মেট্রোরেলের ডিপোতে ১৭ সেট চলে এসেছে। আরও ২ সেট এই মাসেই আসার কথা।

কী আছে মেট্রো স্টেশনে
মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে ওঠানামার জন্য তিন ধরনের ব্যবস্থা আছে। এগুলো হচ্ছে লিফট, এস্কেলেটর ও সিঁড়ি। প্রতিটি স্টেশনেই লিফট থাকছে পাঁচটি, এস্কেলেটর ছয়টি আর সিঁড়ি আটটি। প্রতিটি স্টেশনেই টিকিট কাটার জন্য দুই পাশে তিনটি করে ছয়টি বুথ আছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য আছে আলাদা টিকিট কাউন্টার। স্টেশনের ভেতরে আছে স্টেশন মাস্টারের কক্ষ। টিকিট ছাড়া নির্দিষ্ট গন্তব্যের বেশি ভ্রমণ করলে, ট্রেন থেকে নামার পর স্টেশন থেকে টিকিট কেটে বের হওয়ার ব্যবস্থাও থাকছে। স্টেশনের দ্বিতীয় তলায় দুই পাশেই থাকছে বাণিজ্যিক জায়গা, যেখানে বসবে এটিএম বুথ, খাবারের দোকানসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

এদিকে স্টেশনে বাণিজ্যিক জায়গা ভাড়া দেয়ার জন্য নীতিমালার কাজ এখনো চলছে। ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘নীতিমালা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এটি চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’

গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা করা হচ্ছে আগারগাঁও
উত্তরা ১ নম্বর স্টেশনের দুপাশে যে জায়গা আছে সেখানে স্টেশন প্লাজা নির্মাণ হবে। স্টেশন প্লাজা নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে। ডিসেম্বরে মেট্রোরেল চালু হলে স্টেশনের পাশে ফাঁকা জায়গায় গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এই সুবিধা প্রথম তিনটি স্টেশনে থাকবে। এ ছাড়া আগারগাঁও স্টেশনের পাশেই নির্মাণ করা হচ্ছে স্টেশন প্লাজা। যাত্রীরা সেখানে নামার পর বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বিআরটিসি বাস রাখার জায়গা থাকবে। এই স্টেশনের পাশেই আরও কিছু ছোট জায়গা তৈরি করা হচ্ছে, যেগুলোতে বিশেষ যানবাহন রাখার ব্যবস্থা করা হবে।

ডিসেম্বরেই কি চলবে মেট্রোরেল?
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময় বলেছেন, মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ এই বছরের বিজয়ের মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর আগেই সব কাজ পুরোপুরি শেষ করা চ্যালেঞ্জ হতে পারে। বিশেষ করে কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া স্টেশনের কাজ।

তবে প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘কবে উদ্বোধন হবে সরকারিভাবে এমন কোনো ধরনের নির্দেশনা আসেনি। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ডিসেম্বরে উদ্বোধন করার জন্য প্রস্তুত থাকতে। সেই অনুযায়ী কাজ চলছে। তবে কখন কোন দিন উদ্বোধন করা হবে, সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত।’

এ প্রসঙ্গে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়া স্টেশনের কাজ চলমান। অন্য স্টেশনগুলোতে শেষ মুহূর্তের কাজগুলো দেখে নেয়া হচ্ছে। আশা করছি আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যেই সব কাজ গুছিয়ে আসবে। এখন পর্যন্ত আমরা ডিসেম্বরকে লক্ষ্য ধরেই অগ্রসর হচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য এর আগেই কাজগুলো শেষ করা। তবে এর পরও কিছু ‘ইনডাইরেক্ট ফ্যাক্টর’ থাকবে, সেগুলো আমাদের হাতে না। সেটি নিয়ে আমরা এখনই কিছু বলতে পারছি না।’

রাজধানীর যানজট কমাতে ও নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক করতে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের। তবে ডিপিপির দ্বিতীয় সংশোধন প্রস্তাবে ব্যয় ধরা হয় ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা।


রাজধানীর মিরপুর থেকে ৫০টি দেশীয় বন্যপ্রাণী উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মিরপুর-১ এলাকার কাঁচাবাজার ও পাখির দোকানগুলোতে অভিযান চালিয়ে ৫০টি দেশীয় বন্যপ্রাণী জব্দ করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট (ঢাকা) শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে এ অভিযান চালানো হয়।

উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে- তিনটি পাহাড়ি ময়না, দু’টি ঝুঁটি শালিক, দু’টি টি গাঙ শালিক, দু’টি তিলা ঘুঘু, ১৪টি শালিক, দু’টি হিরামন তোতা, ২৩টি টিয়া, একটি বাজপাখি ও একটি কড়ি কাইট্টা।

বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি অভিজ্ঞ দল সকাল থেকে বাজারের একাধিক দোকান ও স্থানে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে সহযোগিতা করে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিবেদিত সংগঠন ‘সোয়ান’।

অভিযানে উদ্ধারকৃত অধিকাংশ বন্যপ্রাণীকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরে নিরাপদ ও উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হয়েছে। তবে অসুস্থ বন্যপ্রাণীদের আপাতত অফিসে নিরাপদভাবে সংরক্ষণে রাখা হয়েছে এবং পরে তাদেরকেও মুক্ত প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হবে।

বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী, দেশীয় যেকোনো বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, লালনপালন, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনত নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে পাখিবাজারে এ ধরনের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।


আমরা ইতিহাসের বিশেষ একটি সময় অতিবাহিত করছি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আমরা ইতিহাসের বিশেষ একটি সময় অতিবাহিত করছি। আমাদের ত্রয়োদশ নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করতে হবে। শহীদের রক্তস্নাত বাংলায় ইসলামী পতাকা উত্তোলন এবং ইসলামী ঐক্যের কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সবার চাওয়া-পাওয়া।

শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত বিশেষ সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমার জীবন, চিন্তা-চেতনা, অনুভূতি সবই আল্লাহর জন্য। সব কিছুর মালিক আল্লাহ। সব কিছু আল্লাহর নিয়ম-বিধিতে চলবে, এটাই চিরন্তন বাস্তবতা। আর শপথের মাধ্যমে আমাদের জীবনকে সেই মহান সত্তার কাছে সোপর্দ করেছি। মহান আল্লাহর নির্দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না।

সব জনশক্তিকে ১৯ জুলাই জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় সমাবেশ হলো তার টার্নিং পয়েন্ট। তার সফল বাস্তবায়নে এখন থেকে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। সমাবেশে ১০ হাজার পুরুষ ও মহিলা রুকন অংশ গ্রহণ করবেন।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগর সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন— কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির আ. রহমান মুসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগর সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক ও ইয়াসিন আরাফাত।


অস্ত্র মামলায় রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাজধানীর বনানী থানার অস্ত্র আইনের মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

আজ দুই দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিবুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ৭ জুলাই এ মামলায় তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ২৫ আগস্ট জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য প্রদত্ত সকল আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়। স্থগিতকৃত লাইসেন্সভুক্ত আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দানের নির্দেশ প্রদান করা হয়। এ তারিখের মধ্যে কোনো অস্ত্র ও গোলাবারুদ থানায় জমা না দেওয়া হলে তা অবৈধ অস্ত্র হিসেবে গণ্য করে অস্ত্র আইনে মামলা হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসামি আনিসুল হক তার একটি আগ্নেয়াস্ত্র নিজে অথবা অন্য কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে বনানী থানায় বা অন্য কোনো থানায় জমা দিয়েছেন কিনা সে বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে থানাকে অবহিতও করেননি। তার অস্ত্রের লাইসেন্সে উল্লেখিত ঠিকানায় উপস্থিত হয়ে বাসায় কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় গত ২৪ মে অস্ত্র আইনের ১৯(১) ধারায় আনিসুল হকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বনানী থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. জানে আলম দুলাল।

উল্লেখ গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়।


আকাশচুম্বী মূল্য নিয়ন্ত্রণে হিলি স্থলবন্দরে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দীর্ঘ আট মাস পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচামরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। এদিকে ঢাকায় ৩০০ টাকা এবং জেলা শহর দিনাজপুরে ১৫০ টাকা কেজিতে উঠেছে কাঁচা মরিচের দাম।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে হিলি স্থলবন্দরে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ নিয়৷ দুটি ট্রাক প্রবেশ করেছে। গঙ্গেস্বরি ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ভরাতীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ঝাড়খান রাজ্য থেকে মরিচ বাংলাদেশে রপ্তানি করেছে বলে জানা গেছে। আমদানিকারক বাংলাদেশের হিলি বন্দরের এনপি ইন্টারন্যাশনাল।

কয়েকদিনের মধ্যে দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের সংকট দেখা দেওয়ায় ৪০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচের দাম রাজধানী ঢাকায় ৩০০ এবং জেলা শহরে দেড়শ টাকায় উঠেছে।

জানা গেছে গত বছরের ১৫ নভেম্বর এই বন্দর দিয়ে সর্বশেষ কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয়েছিল। দেশী মরিচ বাজারে উঠায় দাম কমে যাওয়ায় আমদানি বন্ধ করা হয়েছিল।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে দেশে অতিবৃষ্টি এবং কোথাও কোথাও ও বন্যার কারণে মরিচ খেত নষ্টের কারণে সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে দাম নিয়ন্ত্রণহীণ হয়ে পড়েছে। তাই ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে আমদানি শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে আমদানি শুরু হবে। এতে দেশের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছেন তারা।


কবি আল মাহমুদের ৯০তম জন্মদিন আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তর হয়ে রক্তক্ষয়ী জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, বিপ্লবী এ পথপরিক্রমায় যার কবিতা মুক্তিকামী গণমানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে, তিনি সবুজের কবি আল মাহমুদ। দ্রোহ, প্রেম, প্রকৃতি ও প্রার্থনার কবি আল মাহমুদের ৯০তম জন্মদিন আজ শুক্রবার ।

১৯৩৬ সালের এদিন ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মৌরাইলে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আর সাহিত্যের ষোলোকলা পূর্ণ করে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মারা যান এ কবি।

কবি আল মাহমুদের ৯০ তম জন্মদিন উপলক্ষে পৃথক আয়োজনে দিনটি পালন করবেন ভক্ত-অনুরাগীরা। এ দিন বিকেল ৪ টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে কবিকে ঘিরে আলোচনা, স্মরণ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কালের কলস ও কালের ধ্বনি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শিল্প-সাহিত্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন। একই দিন সকালে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদ, ময়মনসিংহে আয়োজন করেছে 'আমাদের আল মাহমুদ' শীর্ষক সেমিনার।

আগামী ১২ জুলাই শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ভবনে বিকেল ৪ টায় কবিতা, স্মৃতিচারণ ও আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে।

এদিকে, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবির জন্মবার্ষিকী পালনের দাবি জানিয়েছে কবি ভক্তরা। তারা জানিয়েছেন, ‘বিগত স্বৈরাচারী সময়ে আল মাহমুদকে তুমুল অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবে আল মাহমুদের অনেক কবিতা ছাত্র-জনতাকে দারুণভাবে উদ্বুব্ধ করেছে। তিনি বাংলা ভাষার ফসলি জমিনকে জাদুকরী দক্ষতায় উর্বর করে গেছেন। জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের পাশাপাশি তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্মরণ করার দাবি জানিয়েছেন কবি ভক্তবৃন্দ। অবিলম্বে তার লেখনী পাঠ্যপুস্তকে পুনর্বহালসহ সাহিত্য গবেষণায় কবি আল মাহমুদ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠারও দাবি জানানো হয়।


টানা বৃষ্টিতে সড়ক-মহাসড়কে ভাঙন, দ্রুত সংস্কারের দাবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে শুরু করে নড়াইল, মুন্সীগঞ্জ, সাতক্ষীরা, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলা ও মহাসড়কে টানা বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে সড়ক ও সেতুর সংযোগ অংশ, গর্ত আর খানাখন্দে ভরেছে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলো। এতে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল, কোথাও সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট, কোথাও আবার ক্ষুব্ধ জনতা নেমেছে রাস্তায়। দৈনিক বাংলার ব্যুরো, জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;

মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) থেকে জানান,

একটানা প্রবল বর্ষণের ফলে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে একটি সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ায় যানবাহন চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে।

মাঝবাড়ি-মান্দ্রা সড়কের পূর্ব মাঝবাড়ি নতুন মসজিদ সংলগ্ন ব্রিজের দুপাশ ভেঙে পড়ায় যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা হাজার হাজার জনসাধারণ।

জানাগেছে, গত কয়েকদিন ধরে একটানা বৃষ্টির ফলে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ফাটল ও খানাখন্দ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গোপালগঞ্জ-পয়সার হাট আঞ্চলিক সড়কের কোটালীপাড়া জিরো পয়েন্টে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। মাঝবাড়ি-রাধাগঞ্জ সড়ক, ধারাবাশাইল-তরুর বাজার সড়ক কোটালীপাড়া-রাজৈর সড়ক মারাত্নকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

ব্যবসায়ী দিদার দাড়িয়া বলেন, ‘মাঝবাড়ি-মান্দ্রা সড়কের পূর্ব মাঝবাড়ি নতুন মসজিদের সামনের বেইলী ব্রিজের দুপাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপদে পড়েছে হাজার হাজার জনসাধারণ। দ্রুত মেরামত দরকার।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘অতিবৃষ্টির কারনে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে এলাকটি পরিদর্শন করেছি। প্রবল বর্ষণের ফলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিজের ক্ষতিগ্রস্ত সংযোগ সড়কটি দ্রুত মেরামতের জন্য কোটালীপাড়া এলজিইডির প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত জনসাধারণের এই দুর্ভোগ রোধ হবে।

কার্ত্তিক দাস, নড়াইল থেকে জানান, নড়াইলের খাশিয়াল-নড়াগাতী বাজারের দূরত্ব সাত কিলোমিটার । গ্রামীণ এই সড়ক সংস্কারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আড়াই বছর আগে খোড়াখুড়ি করে ফেলে রাখেন । এতে এলাকার মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে । সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কয়েক বার অনুরোধ করা হলেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই। ফলে এলাকার মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে গত শনিবার বেলা ১১টায় সড়কের খাশিয়াল বাজার চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে । কর্মসূচিতে খাশিয়াল এবং জয়নগর ইউনিয়নের কয়েক’শ মানুষ অংশ নেন ।

সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের ম্যাকাডাম ও পিচ উঠে সমস্ত সড়ক জুরে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে । বর্ষায় গর্তগুলো কাদা পানিতে ভরে থাকায় বোঝার উপায় নেই যে এখানে বড় ধরণের গর্ত লুকিয়ে আছে । উপায় না পেয়ে পথচারীরা জীবনের ঝুকি নিয়ে ভাঙাচোরা এই সড়ক দিয়েই গন্তব্যস্থলে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন ।

পথচারী আমেনা বেগমের বাড়ী গোপালগঞ্জ জেলার মানিকদহ গ্রামে। তিনি বলেন, এক মাস আগে আমি আমার মেয়ে বাড়ী নড়াইল জেলা শহরের মহিষখোলা গ্রামে যাই । যাবার সময় রাস্তার গর্তগুলোতে পানি না থাকলেও ঝাকুনিতে শরীর ব্যাথা হয়ে গিয়েছিল । এখন দেখছি গর্তগুলোতে বর্ষার পানি জমে কাদা পানিতে সয়লাব হয়েছে । তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটি সড়ক তো নয়, যেন মরণ ফাঁদ। কেন এই রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে না?

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া খাশিয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বি, এম বরকত উল্লাহ বলেন, বড়দিয়া সাবেক নৌবন্দর বাজার থেকে খাশিয়াল হয়ে নড়াগাতী থানা বাজারের দূরত্ব ৭ কিলোমিটার । গোপালগঞ্জসহ নড়াইল শহর, জেলা হাসপাতাল এবং লোহাগড়া উপজেলার সঙ্গে নড়াগাতী থানা এলাকার মানুষের কম সময়ে যোগাযোগের একমাত্র পথ হচ্ছে এইটি। ব্যস্ততম এই সড়ক সংস্কার না করায় প্রতিদিনই মোটরসাইকেল, ভ্যান-ইজিবাইক উল্টে যাত্রী সাধারণ দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে । মুমূর্ষু রোগীসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, খুব দ্রুত সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া না হলে এলাকার মানুষ বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন, খাশিয়াল আদর্শ সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মফিজুর রহমান, ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো.জাফর মোল্যা, উদীচি বড়দিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায়, কাবির বিশ্বাস, সিরাজুল ইসলাম, সরদার আব্দুল করিম, খন্দকার ওবায়দুর রহমান প্রমুখ ।

জানতে চাইলে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নজরুল ইসলাম বলেন, ২০২২ সালে ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয় । কিন্তু তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করে সরে পড়ে । তিনি বলেন, ওই ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করাসহ জরিমানাও করা হয়। তিনি দাবি করেন, নতুন ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। যে কারণে ওই সড়কের সংস্কার কাজ দেরি হচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ সেতুতে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের । এসব গর্তের কারণে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়েছে মহাসড়কের গজারিয়া অংশেও।

জানা যায়, গত বুধবার রাত দশটার দিকে মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়। যা গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মহাসড়কে গজারিয়া অংশের বালুয়াকান্দি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার অংশে ছড়িয়ে পড়ে। যানজটে দীর্ঘ সময় আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রীরা। সবচেয়ে বেশী ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী ও অফিসগামী চাকরীজীবীরা।

কলেজ ছাত্র রিফাত হোসেন বলেন, ‘আজ আমাদের পরীক্ষা আছে। যানজটে দীর্ঘ সময় আটকে থাকলাম এখন বাধ্য হয়ে বাস থেকে নেমে হাটা শুরু করেছি’।

ঢাকায় বেসরকারি একটি কোম্পানিতে কর্মরত খোকন মিয়া বলেন, ‘সকাল সাড়ে দশটায় আমার একটি গুরত্বপূর্ণ মিটিং আছে। সকাল আটটায় বাসা থেকে বের হয়েছি সাড়ে নয়টার মধ্যে আমার ঢাকার কথা কিন্তু এখন সকাল দশটা বাজে যানজটের কারণে আমি মেঘনা ব্রিজের উপর আটক আছি।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘আমাদের গজারিয়া অংশে কোন সমস্যা নেই। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ অংশের যানজট গজারিয়া অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের লোকজন রাস্তায় আছে, আশা করি অল্প সময়ের ভেতর যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।’

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি কাজী ওয়াহিদ মোরশেদ জানান, ‘লাঙ্গলবন্দের ব্রিজের অবস্থা খারাপ হওয়ায় যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজ ও রাস্তা মেরামতের জন্য বিষয়টি আমরা সড়ক ও জনপথকে জানিয়েছি। তারা কাজ শুরু করেছে পাশাপাশি যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে।’

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের মানিকখালী-রমজাননগর মেইন সড়কে হারু গায়েনের বাড়ির সংলগ্ন কালভার্টটির উপরে দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান ও ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে কালভার্টটির ওপর অংশ ভেঙে পড়া অবস্থায় রয়েছে। কখনও কখনও অস্থায়ীভাবে সংস্কার করা হলেও তা স্থায়ী হয় না। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে বিলে পানি নিষ্কাশনের জন্য কালভার্টটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও পানির প্রবল চাপে এর ভাঙন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। এতে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা শিবপদ গায়েন, বাঞ্চারাম মন্ডল, শৌলেন্দ্র নাথ সরকার, অবনি চন্দ্র মৃধা, নিরাপদ মন্ডল ও নিতাই পদ গায়েন জানান, দীর্ঘদিন ধরে কালভার্টটির ওপর নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। দ্রুত সংস্কার না হলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। শ্যামনগর সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুস সামাদ জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। রমজাননগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হামিদ লাল্টুও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এলাকাবাসী কালভার্টটির দ্রুত সংস্কারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর থেকে জানান, দীর্ঘদিন সড়কের সংস্কার কাজ না হওয়ায় ফরিদপুর-ভাঙ্গা মহাসড়কের বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা। জেলা শহর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। পদ্মা সেতু চালুর পর সড়কের ওপর যানবাহনের চাপ বহুগুণ বাড়লেও এটি চার লেনে উন্নীত করার প্রস্তাবনা এখনো পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।

দেখা গেছে, মহাসড়কের বাখুণ্ডা নামক স্থানে প্রায় ৩০০ মিটার, মহিলা রোড এলাকায় ৪০০ মিটার এবং তালমা মোড়ে ২০০ মিটার অংশের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। চলতি সপ্তাহে টানা বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, যা যান চলাচলের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

পরিবহন চালক জালাল মাতুব্বর জানান, ঢাকা থেকে ভাঙা পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে যেখানে দেড় ঘণ্টা লাগে, সেখানে ভাঙা গোল চত্বর থেকে ফরিদপুর শহর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার পথ যেতে প্রায় একই সময় লাগছে। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে বাধ্য হওয়ায় প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অবিলম্বে সড়ক সংস্কারের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী ও যাত্রীরা।


১৩০ বছর বয়সেও বয়স্ক ভাতা কার্ড জোটেনি আজিমনের

আপডেটেড ১০ জুলাই, ২০২৫ ২২:৫৪
মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রতিটি মানুষ সুন্দর জীবন জাপন করে বেচে থাকতে চাই, আর সেই জীবনে দীর্ঘায়ু হোক এটা কে না চাই। তবে আনুমানিক ১শ ত্রিশ বছর বয়স্ক আজিমন নেছা বয়সের ভারে ন্যুব্জ, জরাজীর্ণ শরীর, আর পরনে থাকা ছেড়া কাপড়,শরীরে জড়ানো ছেঁড়া কাঁথা আর নোংরা মেঝেতে শুয়ে প্রতিক্ষার প্রহর গুনছেন মৃত্যুর।

পরিবার ও প্রতিবেশিদের দাবি, তার বয়স আনুমানিক ১৩০ বছর পেরিয়েছে। আজিমন নেছার পিতা পিতল আলীকে হারিয়েছেন বিয়ের আগেই, আর বিয়ের কিছু বছর পরে হারিয়েছেন স্বামী মফেজ উদ্দিনকে, আর একমাত্র সন্তান মইয়েজ উদ্দিন কে হারিয়েছেন বছর চল্লিশেক আগে, পিতা-মাতা, স্বামী, সন্তানকে হারিয়ে পরিবার বলতে ৬৯ বছর বয়সি নাতনি রত্না খাতুন ও ৬৭ বছর বয়সি আরে নাতি শাহবুদ্দিন আহমেদ।

আর অভাবের সংসারে বয়সের ভারে দুর্বল হয়ে পড়া রত্না খাতুন যখন নিজেই চলতে পারেন না অথচ তাকেই দেখাশোনা করতে হয় বৃদ্ধা আজিমন নেছাকে। অভাবের সংসারে আজিমন খাতুন এখন যেনো বোঝা ছাড়া আর কিছুই নই। এখন নাতনির একটাই চাওয়া যে কোন সময় যেন দাদির মৃত্যু হয়। অভাবের সংসারে এ বোঝা আর বইতে পারছে না বিধবা রত্না খাতুন। তাছাড়া সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া অন্যের বাড়িতে কাজ করে দাদিকে নিয়ে জীবনজাপন করতে গিয়ে হাফিয়ে উঠেছেন। এখন তিনি একটু বিশ্রাম চান।

স্থানীয়রা বলেন, আজিমনের বয়স ১৩০ বছরের বেশি হলেও তার বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ না নেওয়া এবং খেয়ালীপনার কারণেই এমনটা হয়েছে।আবার এমনও হতে পারে মেম্বারদের অনৈতিক সুবিধা দিতে না পারাই হইতো কার্ডটি হচ্ছে না।

আজিমন নেছার নাতী (ছেলের সন্তান) শাহাবুদ্দিন জানান, আমার নিজের বয়স ৬৯ বছরের বেশি। তিনি কখনোই তার দাদিকে সরকারি কোনো সাহায্য পেতে দেখেননি। তবে মেম্বার সাহেবরা ভোটের সময় এসে কার্ড ও সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়ে যায়। ভোট পার হয়ে গেলে খোঁজ থাকে না।

কাজীপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফুলচাঁদ আলী জানান, শুরুতে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি এই সংবাদ শোনার পরে ওই বৃদ্ধার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদের ভাতার কার্ডের তালিকা দেখি। দেখে দেখতে পাই তালিকায় তার নাম আছে এবং বিগত সময়ে দুবার টাকাও উঠেছে। তবে যে ফোন নম্বরটি ব‍্যাবহার করে টাকা উঠেছে সেই নম্বরটি এই পরিবারের কারোর না। আমি এই সপ্তাহের মধ্যে আজিমনের নাতি রত্নার ফোন নম্বরে যাতে ভাতার টাকা আসে সে ব‍্যববস্থা করে দেব ইনশাআল্লাহ।

কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মু. আলম হোসেন বলেন, এত বয়স হওয়ার পরেও কেন তার বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়নি, তা দুঃখজনক। দ্রুত সময়ে তার কার্ড করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি, সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা তাকে দেওয়া হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান বলা হয়েছে। তাছাড়া আপাতত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বসবাসের ঘর মেরামতের জন‍্য ঢেউ টিন ও নগদ অর্থ প্রদান করা হবে।


পাঁচ পা-ওয়ালা গরুর বাছুর দেখতে ভিড়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শামীম আল মামুন, টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলায় জন্ম নিয়েছে এক বিস্ময়কর আকৃতির গরুর বাছুর যার রয়েছে পাঁচটি পা! উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের সাজানপুর গারালিয়া পাড়া গ্রামের কৃষক মো. শাহিন মিয়ার বাড়িতে গত শনিবার (০৫ জুলাই) সন্ধ্যায় এ ব্যতিক্রমী বাছুরটির জন্ম হয়।

কৃষক শাহিন মিয়া জানান, তার গাভীটি স্বাভাবিকভাবেই বাছুর প্রসব করে। তবে কিছুক্ষণ পর তিনি দেখতে পান, বাছুরটির সামনের অংশে রয়েছে একটি অতিরিক্ত পা। বাছুরটি তিনটি পায়ের ওপর ভর দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করছে, যা পরিবার ও এলাকাবাসীর জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অদ্ভুত গঠনের এই বাছুরটিকে এক নজর দেখতে ইতোমধ্যে আশপাশের গ্রামের মানুষ ভিড় করছেন শাহিন মিয়ার বাড়িতে। কেউ কেউ মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। রুবেল মিয়া নামে একজন বলেন, এলাকায় এধরনের কোন ঘটনা আগে দেখি নাই, আমরা এই গরুর ঘটনা দেখে হতভম্ব।

দর্শনার্থীদের মধ্যে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা মো. মুক্তার হোসেন বলেন, আমি জীবনে কখনও এমন কিছু দেখিনি। বিষয়টা একেবারেই অবিশ্বাস্য।

এ বিষয়ে গোপালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোর্শেদ জানান, এটি সম্ভবত জেনেটিক মিউটেশনের ফল। যদিও ঘটনাটি অত্যন্ত বিরল, তবে যদি বাছুরটির অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা না থাকে, তাহলে অতিরিক্ত পা তার স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের বড় কোনো ক্ষতি করবে না।

টাঙ্গাইল জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.শহিদুল ইসলাম বলেন, এই গরুটির ক্ষেত্রে জেনেটিক মিউটেশনের ফল। তবে বাছুরটি স্বাভাবিক ভাবে বড় হলে কোন সমস্যা দেখা দিবেনা। এই ধরনের ঘটনা বিরল।


কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট একসঙ্গে চালু

উৎপাদন হবে ২১২ মেগাওয়াট
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি 

এবার একযোগে চালু করা হলো রাঙামাটির কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের (কপাবিকে) ৫টি ইউনিট। এই ৫টি ইউনিট হতে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২ শত ১২ মেগাওয়াট। বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮ টায় কপাবিকে এর ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বুধবার (৯ জুলাই) রাত ৮ টায় এই কেন্দ্রের ৫ টি ইউনিটের মধ্যে একসঙ্গে ৫ টি ইউনিট চালু করা হয়েছে। যা হতে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে সর্বমোট ২ শত ১২ মেগাওয়াট। তিনি আরোও জানান, ৫টি ইউনিটের মধ্যে ১ নং ও ২ নং ইউনিট হতে প্রতিটি ৪৬ মেগাওয়াট করে ৯২ মেগাওয়াট এবং ৩,৪ ও ৫ নং ইউনিট হতে প্রতিটি ৪০ মেগাওয়াট করে ১ শত ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের প্রকৌশলীদের জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারি বৃষ্টিপাতে ঘন্টায় ঘন্টায় পানি বৃদ্ধির ফলে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা আরোও জানান বুধবার (৯ জুলাই) রাত ৮টা পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে পানির লেভেল ছিল ৯৬.৪১ ফুট মীনস সি লেভেল। রুলকার্ভ অনুযায়ী এ সময় লেকে পানি থাকার কথা ৮৫.২৮ ফুট মীনস সি লেভেল। কাপ্তাই লেকে পানির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১০৮ ফুট মীনস সি লেভেল। এর আগে ২ শত ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই কেন্দ্রে ৪টি চালু থাকলেও নানা কারণে ৫টি ইউনিট একসঙ্গে চালু সম্ভব হয়নি।


দেবিদ্বার স্কুলে আ.লীগ নেতাকে সভাপতি করায় এলাকাবাসির ক্ষোভ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বড় শালঘর ইউএমএ উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ নেতাকে বসানোয় স্কুলের অভিভাবকসহ এলাকাবাসির মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়- স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সহায়তায় এমন ঘটনা হওয়ায় এ নিয়ে আরও নেতিবাচক কথা জানা যায়।

খবর নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আওয়ালের ছোট ভাই মাসুদুর রহমানকে স্কুলটির সভাপতি করা হয়েছে।

এলাকাবাসির মতে, যেই আওয়ামী লীগ নেতা বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যে দুর্নীতিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ করেছেন, তাকেই আবার এতো নামিদামি স্কুলের সভাপতি করা বেশ দুঃখজনক।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই মাসুদুর রহমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার জন্য তখন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নানা কর্মসূচি পালন করেন। এমনকি তখন বিএনপি ও জামায়েতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির নানা অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাকেই আবার যখন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সহায়তায় স্কুলের কমিটির সভাপতি করা হয় তা নিয়ে বেশ ক্ষোভই প্রকাশ করেন অনেকেই।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা জানান, বেলজিয়াম বিএনপির সভাপতি সাইদুর রহমান লিটন আওয়ামী লীগ ঘেঁষা ব্যক্তিদের টেনে এনে কমিটিতে বসাচ্ছেন। এটি শুধু রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি নয়, তা ত্যাগী ও আদর্শিক বিএনপি নেতাকর্মীদের অপমান বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি দলীয় হাইকম্যান্ড এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সূত্র জানিয়েছে, মাসুদুর রহমান তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জেলার সৈয়দপুর কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যাক্ষ হিসেবে ইসমাইল নামের এক দুর্নীতিবাজ শিক্ষককে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন অধ্যাক্ষ সৎ সাহসের সাথে তা প্রত্যাখান করেন।

এদিকে কমিটির নেতৃত্বে মাসুদুর রহমানকে নিয়ম মেনেই মনোনীত করা হয়েছে এবং এটি আওয়ামী লীগ- বিএনপি হিসাব করে করা হয়নি বলে তার পক্ষে একদল শিক্ষক জানান।

অন্যদিকে এমইউএ স্কুলের প্রাধান শিক্ষক আবু ইউসুফ বলেন, আমি কারও নাম দিইনি। কমিটির নাম সর্বসম্মতভাবে চূড়ান্ত করে জমা দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে মাসুদুর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।

এদিকে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো. জাকির হোসেন স্কুলটির গভর্নিং বডির সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সর্ব সম্মতিক্রমে আমার নাম প্রথমে এক নাম্বারে ছিল। যেটা ইউএনওর মাধ্যমে ডিসি বরাবর যায়। হঠাৎ করে পরের দিন আমার নাম দ্বিতীয় নাম্বারে দিয়ে জেলা অফিস থেকে স্কুলে চিঠি আসে। প্রথমে নাম থাকে মাসুদুর রহমানের। যা দেখে আসলেই হতাশ হই। পরবর্তী সময়ে জানতে পারি এটি আসলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বোর্ড অনুমোদন দেয়।’


তিতাসের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে অভিযান

আপডেটেড ১০ জুলাই, ২০২৫ ২১:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাভার ও আশুলিয়ায় বাইপাস লাইন সনাক্ত, অনুমোদন অতিরিক্ত গ্যাসের ব্যবহার এবং অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে তিতাস গ্যাস কর্তৃক সাঁড়াশি অভিযান ও জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার তিতাসের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈকত রায়হান, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ সাভার, আশুলিয়ার আওতাধীন গোরাট, চৌরাস্তা (পাকার মাথা), সরকার মার্কেট, খোঁয়াজ মার্কেটসংলগ্ন, ও উত্তর গোমাইল মডেল মসজিদসংলগ্ন, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়। ওই অভিযানে কোয়ালিটি থ্রেড এন্ড এক্সেসরিজ ও মায়ের দোয়া এক্সেসরিজ নামক ২টি বাণিজ্যিক কারখানার এবং আনুমানিক ২ কি.মি. অবৈধ বিতরণ লাইনের আনুমানিক ৬০০টি আবাসিক গ্যাস বার্নারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের আনুমানিক ৫০০ মিটার লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। ওই অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সর্বমোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

একই দিনে, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসির চন্দ্রা কর্তৃক পরিচালিত অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিশেষ অভিযানে চন্দ্রা (পল্লীবিদ্যুৎ), কালিয়াকৈর, গাজীপুর এলাকার সম্পূর্ণ অবৈধ/বিল বই বিহীন ৫টি রাইজারের ৫০টি দ্বিমুখী চুলা ও অনুমোদন অতিরিক্ত চুলায় গ্যাস ব্যবহারের জন্য ১টি সংযোগের ২৩টি অনুমোদন অতিরিক্ত চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক-গাজীপুর নিয়ন্ত্রণাধীন আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ-গাজীপুর এর ভিজিল্যান্স শাখা (সাভার -মানিকগঞ্জ- আশুলিয়া এবং ভিজিল্যান্স শাখা জয়দেবপুর ও চন্দ্রা) কর্তৃক যৌথ পরিদর্শনে টঙ্গী মিলগেট এলাকায় মেসার্স জেরিনা কম্পোজিট মিলস লি. (৮০৩০০০০০৫) এ ক্যাপটিভ পাওয়ার রানে অনুমোদিত ১০৩০ কিলোওয়াট ক্ষমতার জেনারেটরের পরিবর্তে ১৫০০ কিলোওয়াট ক্ষমতার জেনারেটর চালু পাওয়া যাওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

অন্যদিকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মনিজা খাতুন (সিনিয়র সহকারী সচিব) -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ -২ এবং মেট্রো ঢাকা রাজস্ব বিভাগ-২ -এর তত্ত্বাবধানে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর এলাকায় একটি সফল অভিযান পরিচালিত হয়েছে।


জামালপুরের কামালপুর সীমান্তে সাতজনকে পুশইন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরের বকশীগঞ্জে ধানুয়া কামালপুর সীমান্ত দিয়ে চার নারী সহ সাত জনকে পুশইন এর ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার ভোর ৪ টায় ধানুয়া কামালপুরের ১০৮৩ পিলারের কাছ দিয়ে তাদের পুশইন করে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পরে সকাল ৭ টায় স্থানীয় এলাকাবাসী তাদের আটক করে বকশীগঞ্জ থানায় সোপর্দ করে।

আটককৃতদের বাড়ি খুলনা, ফরিদপুর, বাগেরহাট ও বরগুনার জেলায়।
আটককৃতরা হলেন বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার কাশেম আলীর ছেলে এনায়েত খাঁ (৫৫), একই উপজেলার বেলায়েত খাঁ এর ছেলে মোহম্মদ ইসলাম (২২), ফরিদপুর জেলার মেহবুব আলীর ছেলে কোরবান আলী (২০), তার মা তাছলিমা বেগম (৫০) একই খুলনার খালিশপুর এলাকার সোহাগ মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তার (৩০), তার বোন রেমি আক্তার (২০,) বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার রুস্তম আলীর মেয়ে মায়া আক্তার (৩২)।

ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোতালেব মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ভোরে ভারত থেকে ৭ জনকে পুশইন করছে এমন খবর পেয়ে গ্রামবাসীকে নিয়ে আমরা সীমান্তে অবস্থান নেই এবং তাদের আটক করি।
আটককৃরা বিভিন্ন সময়ে কাজের সন্ধানে দালালদের মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন শহরে চলে যায়। সম্প্রতি বিভিন্ন সীমান্তে পুশইন এর ঘটনা ঘটলে বকশীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে তাদেরও বাংলাদেশে পাঠায় বিএসএফ।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, ধানুয়া কামালপুর সীমান্তে পুশইন করার পর স্থানীয়রা সাতজনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। এ বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।


১৩০ বছর বয়সেও জোটেনি আজিমনের বয়স্ক ভাতা কার্ড

আর কত বছর বয়স হলে মিলবে এই সুবিধা?
দুই নাতি নাতনির মাঝে নিজ বসত ভিটাই বসে আছেন বয়স্ক আজিমন নেছা 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সোহেল রানা বাবু, মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রতিটি মানুষ সুন্দর জীবন জাপন করে বেচে থাকতে চাই, আর সেই জীবনে দীর্ঘায়ু হোক এটা কে না চাই। তবে আনুমানিক ১"শ ত্রিশ বছর বয়স্ক আজিমন নেছা বয়সের ভারে ন্যুব্জ, জরাজীর্ণ শরীর, আর পরনে থাকা ছেড়া কাপড়,শরীরে জড়ানো ছেঁড়া কাঁথা আর নোংরা মেঝেতে শুয়ে প্রতিক্ষার প্রহর গুনছেন মৃত্যুর।

পরিবার ও প্রতিবেশিদের দাবি, তার বয়স আনুমানিক ১৩০ বছর পেরিয়েছে। আজিমন নেছার পিতা পিতল আলীকে হারিয়েছেন বিয়ের আগেই, আর বিয়ের কিছু বছর পরে হারিয়েছেন স্বামী মফেজ উদ্দিনকে, আর একমাএ সন্তান মইয়েজ উদ্দিন কে হারিয়েছেন বছর চল্লিশেক আগে, পিতা-মাতা, স্বামী,সন্তানকে হারিয়ে পরিবার বলতে ৬৯ বছর বয়সি নাতনি রত্না খাতুন ও ৬৭ বছর বয়সি আরে নাতি শাহবুদ্দিন আহমেদ।

আর অভাবের সংসারে বয়সের ভারে দুর্বল হয়ে পড়া রত্না খাতুন যখন নিজেই চলতে পারেন না অথচ তাকেই দেখাশোনা করতে হয় বৃদ্ধা আজিমন নেছাকে। অভাবের সংসারে আজিমন খাতুন এখন যেনো বোঝা ছাড়া আর কিছুই নই। এখন নাতনির একটাই চাওয়া যে কোন সময় যেনো দাদির মৃত্যু হয়। অভাবের সংসারে এ বোঝা আর বইতে পারছে না বিধবা রত্না খাতুন। তাছাড়া সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া অন‍্যের বাড়ীতে কাজ করে দাদিকে নিয়ে জীবন জাপন করতে গিয়ে হাফিয়ে উঠেছেন। এখন তিনি একটু বিশ্রাম চান।

স্থানীয়রা বলেন, আজিমনের বয়স ১৩০ বছরের বেশি হলেও তার বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ না নেওয়া এবং খেয়ালীপনার কারণেই এমনটা হয়েছে।আবার এমনও হতে পারে মেম্বারদের অনৈতিক সুবিধা দিতে না পারাই হইতো কার্ডটি হচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল বলেন, আজিমনের আমাদের এলাকায় কালো বুড়ি নামে পরিচিত। কালো বুড়িকে সেই ছোট বেলা থেকে দেখছি। ছোট বেলায় যেমন দেখেছি এখনো তেমনি দেখছি। এমনকি আমার বাবারাও তাকে এমটাই দেখছে। এই মানুষের কার্ডতো বাড়িতে বসে থেকে হয়ে যাবার কথা। অথচ আপনারা সাংবাদিকরা যদি এটা না তুলে ধরতেন হইতো সে অগচরেই থেকে সুবিধা বঞ্চিত হয়ে মৃত্যু বরণ করতন। এটাই সমাজের বাস্তব চিত্র।

আজিমন নেছার নাতী (ছেলের সন্তান)শাহাবুদ্দিন জানান, আমার নিজের বয়স ৬৯ বছরের বেশি। তিনি কখনোই তার দাদিকে সরকারি কোনো সাহায্য পেতে দেখেননি। তবে মেম্বার সাহেবরা ভোটের সময় এসে কার্ড ও সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়ে যায়। ভোট পার হয়ে গেলে খোঁজ থাকে না।

কাজীপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফুলচাঁদ আলী জানান, শুরুতে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি এই সংবাদ শোনার পরে ওই বৃদ্ধার পরিবারের সাথে কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদের ভাতার কার্ডের তালিকা দেখি। দেখে দেখতে পাই তালিকায় উনার নাম আছে এবং বিগত সময়ে দুবার টাকাও উঠেছে। তবে যে ফোন নম্বরটি ব‍্যাবহার করে টাকা উঠেছে সেই নম্বরটি এই পরিবারের কারোর না। আমি এই সপ্তাহের মধ‍্যে আজিমনের নাতি রত্নার ফোন নম্বরে যাতে ভাতার টাকা আসে সে ব‍্যাবস্থা করে দিবো ইনশাআল্লাহ।

কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মু. আলম হোসেন বলেন, এত বয়স হওয়ার পরেও কেন তার বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়নি, তা দুঃখজনক। দ্রুত সময়ে তার কার্ড করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি, সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা তাকে দেওয়া হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাকে সার্বিক সহযোগিতার জন‍্য স্থানীয় চেয়ারম্যান বলা হয়েছে। তাছাড়া আপাতত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বসবাসের ঘর মেরামতের জন‍্য ঢেউ টিন ও নগদ অর্থ প্রদান করা হবে।


banner close