তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প-৪ এর আওতায় ঝালকাঠির রাজাপুরে জাতীয় মহিলা সংস্থার প্রশিক্ষণকেন্দ্রে চলছে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ। ভর্তি-নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি ব্যাচে পৃথক পাঁচটি ট্রেডে ৫০ জন করে মোট ২৫০ প্রশিক্ষণার্থী থাকার কথা এখানে। তাদের প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১২ হাজার টাকা। অভিযোগ উঠেছে, বরাদ্দের এই টাকা লোপাটের জন্যই প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভর্তি ফরম ও হাজিরা খাতায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে ২৫০ জনের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
দৈনিক বাংলার অনুসন্ধানেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে কাগজে-কলমে প্রশিক্ষণার্থীদের ২৫০ জনের তালিকা পূরণের প্রমাণ মিলেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক প্রশিক্ষণার্থী দৈনিক বাংলার কাছে এমন তথ্যের সত্যতাও স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে নামে-বেনামে প্রশিক্ষণার্থী দেখিয়ে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামিরা আক্তার সরকারি বরাদ্দের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ মিলেছে।
নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের আওতায় বর্তমান ব্যাচে চার মাস মেয়াদি বিউটিফিকেশন কোর্স, কেটারিং কোর্স, ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্স ও ফ্যাশন ডিজাইনার কোর্স ট্রেডে নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া ৪০ দিন মেয়াদি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ই-কমার্স কোর্সও রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই কেন্দ্রের যাবতীয় কাগজ ও হাজিরা খাতায় প্রতিটি ট্রেডেই ৫০ জন করে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি দেখানো হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে ভুয়া নামগুলোর মাথাপিছু ১২ হাজার টাকা যাবে প্রশিক্ষণ কর্মকর্তার পেটে। ওই টাকার একটি অংশ সেখানকার ছয়জন প্রশিক্ষক ও নৈশপ্রহরীও পাবেন। এই কেন্দ্রে প্রশিক্ষণার্থীদের টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল অ্যাকাউন্টে না দিয়ে নগদ দেয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন জাতীয় মহিলা সংস্থা ঝালকাঠির জেলা কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন হাওলাদার।
গত ২৮ অক্টোবর বেলা ১১টায় রাজাপুর প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চারটি ট্রেডের প্রশিক্ষণার্থীদের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা চলছিল। এই কেন্দ্রে ছয়জন প্রশিক্ষক থাকার কথা থাকলেও ওই সময় মাত্র দুইজন প্রশিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। এমনকি সেখানকার দায়িত্বরত প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামিরা আক্তার নিজেও অনুপস্থিত ছিলেন। আর ভেতরে তিনটি কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন মাত্র ৪৬ জন নারী।
প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কেন উপস্থিত নেই- তা জানতে চাইলে সেখানে থাকা বিউটিফিকেশন ট্রেডের প্রশিক্ষক শাহানারা খাতুন বলেন, ‘ম্যাডাম ছুটিতে আছেন।’ তাৎক্ষণিক খোঁজ নিয়ে জানা গেল, দুই-তিন দিনে তার কোনো ছুটি মঞ্জুর করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
খোঁজখবর করতে করতেই সেখানে উপস্থিত হন প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামিরা আক্তার। পাঁচটি ট্রেডের জায়গায় চারটি ট্রেডে পরীক্ষা এবং সেই চারটি ট্রেডে ২০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর উপস্থিতির কথা থাকলেও পরীক্ষায় কেন ৪৬ জন উপস্থিত- জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই মাস ক্লাস চালানোর পর কেন্দ্রের নির্দেশে ৪০ দিন মেয়াদি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ই-কমার্স কোর্সটি বন্ধ আছে। তাই ভর্তি ও হাজিরা খাতায় তাদের ৫০ জনের নাম থাকলেও তারা উপস্থিত নেই। বাকি চারটি ট্রেডে ৫০ জন করে ২০০ জন ভর্তি থাকলেও কেন্দ্রের নির্দেশে বিকেলের ক্লাসও বন্ধ রয়েছে। সে কারণে বর্তমানে সকালে ১০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর ক্লাস চলমান রয়েছে। সেই ১০০ জন নারীর মধ্যে বিভিন্ন কারণে আজ পরীক্ষা দিতে আসতে পারেননি অনেকে।’
এদিকে প্রশিক্ষণার্থীদের হাজিরা খাতার কিছু অংশ সংগ্রহ করেছে দৈনিক বাংলা। তাতে দেখা যায়, প্রশিক্ষণার্থীদের উপস্থিতির ঘরে বল পেন দিয়ে সই করানো হয় এবং অনুপস্থিতের ঘরে কাঠ পেনসিল দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেয়া হয়। কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, প্রশিক্ষণার্থীদের অনুপস্থিতির দিনগুলোতে ১৫০ টাকা করে কেটে রাখা হবে। অভিযোগ রয়েছে, কাঠ পেনসিলের ক্রস চিহ্ন রাবার দিয়ে মুছে সই বসিয়ে সে টাকাও তুলে নেয়া হবে। হাজিরা খাতায় কেন কাঠ পেনসিল দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেয়া হলো- সামিরা আক্তার এ প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকেন।
রাজাপুরের কেন্দ্রে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব নারীরাও পরীক্ষা দিচ্ছেন বিউটিফিকেশন ট্রেডে। তবে তাদের কাউকেই কিছু লিখতে দেখা যায়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়, অনেক পরীক্ষার্থী জানেন না তারা কী পরীক্ষা দিতে এসেছেন। তাদের যা লিখতে বলা হয়, তারা কেবল সেটিই লিখে থাকেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই বা তিন হাজার টাকার বিনিময়ে গ্রামের অনেক গৃহিণীকে এনে পরীক্ষা দেয়ানো হয়। অথচ তাদের নামেও বরাদ্দ হবে ১২ হাজার টাকা।
পরীক্ষা কেন্দ্রের একটি কক্ষে গিয়ে দেখা গেছে, ষাটোর্ধ্ব নারীরাও ফ্যাশন ডিজাইনার ট্রেডে পরীক্ষা দিতে এসেছেন। এক প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কোন ট্রেডে পরীক্ষা দিয়েছেন? তিনি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে কোনো উত্তর না দিতে পেরে কেন্দ্র থেকে চলে যান।
ষাটোর্ধ্ব নারীদের পরীক্ষায় উপস্থিত দেখা গেলেও প্রকল্পের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা সহকারী প্রোগ্রামার মো. সাদাত হোসেন জানান, সব ট্রেডে ভর্তিসংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি পাস থাকতে হবে। তাদের বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পের সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন) কাইয়ুম মিয়া মোবাইল ফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আমাদের প্রকল্পের বাজেট মন্ত্রণালয় থেকে অর্ধেক করে দিয়েছে। তাই প্রকল্পে ব্যয় সংকোচন করতে সব প্রশিক্ষণকেন্দ্রে বিকেলের ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে। শুধু সকালের ক্লাসে ১০০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেবেন। তবে রাজাপুর কেন্দ্রে সকালেও ১০০ জন কেন নেই, সে বিষয়ে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হবে।
আবুল সরকারের মুক্তি ও বাউলদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গান গেয়ে মানববন্ধন করলেন মেহেরপুরের বাউল সম্প্রদায়ের লোকজন। এ সময় তাদের হাতে একতারা, দোতারা, হারমোনিয়াম, ঢোল আর নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্র ছিল।
বৃহস্পতিবার বেলা ২ টার সময় গাংনী উপজেলা শহরের কাঁচাবাজার এলাকায় এই মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে গান পরিবেশন করেন, আব্দুস সামাদ বাউল, ছন্নত বাউল, ভিকু বাউল ও মহিবুল বাউল।
মানববন্ধনে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের নিশর্ত মুক্তি ও বাউলদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করেন।
আবুল সরকারের নিশর্ত মুক্তি দাবি করে বাউল সম্প্রদায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মজনুল হক বলেন, বাউল সম্প্রদায় শুরের মানুষ। আমরা কোন ফ্যাসাদ বুঝিনা, ভালবাসার মানবিক সমাজ বুঝি। আমরা মনের মানুষের সাথে মনের মিলন ঘটনাতে চাই। আমরা ভাই ভাই, জাতিগোত্র সম্প্রদায় মিলে আমরা সম্প্রীতির রাস্ট্র চাই। সমাজে কোন ধরণের অমানবিক কর্মকাণ্ড হোক আমরা চাইনা। আমাদের এই দেশ বহুজাতী, বহু মতের দেশ, বহু চেতনার দেশ। আমরা লালন করি বাউল দর্শন। আবুল সরকার তার গানের মধ্য দিয়ে অভিনয় করছিলেন, সেই গানের অভিনয়ের মধ্য দিয়ে যদি ভাষার ভুলত্রুটি হয়, তাহলে তাকে ক্ষমা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারপরেও বাউল আবুল সরকারের ক্ষমা হয়নি। তারপরেও তাকে আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি এগুলো একটি ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড আমরা এই ষঢ়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তি চাই। মানববন্ধনে বিভিন্ন এলাকার ৩৫ জন বাউল অংশ নেন।
আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালে কিলিং মিশনের মাধ্যমে মানুষ হত্যা শুরু করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভপতি জাহিদুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাইবান্ধা স্বাধীনতা প্রাঙ্গণে ছাত্র–যুব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অতীতে রাজনৈতিক ইতিহাসে যে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসন কাঠামো গড়ে উঠেছিল, তা বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করার এক ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ছিল। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের ‘লগি-বৈঠা’ ঘটনা, পিলখানা হত্যা এবং শাপলা চত্বরের রাতের অভিযানসহ বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন-এগুলো ছিল রাজনৈতিক নিপীড়নের ধারাবাহিকতা।
তার দাবি, বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক শীর্ষ নেতা, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের ‘জুডিশিয়াল কিলিং’–এর মাধ্যমে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। সাম্প্রতিক ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমনের সময়ও ছাত্র–জনতা, কৃষক–শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ গুলিতে নিহত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘২০২৪-এর জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে বাংলাদেশের ছাত্র–জনতা প্রমাণ করেছে- আমরা কোন কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচার বা ফ্যাসিস্টের কাছে মাথা নত করব না। এই জাতি আবারো জানিয়ে দিয়েছে, জুলুমের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যই সবচেয়ে শক্তিশালী।’
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের পর অনেকেই ভেবেছিলেন দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে; কিন্তু দুঃখজনকহলেও সত্য অতীতে যারা ফ্যাসিস্ট ছিল তাদের কাজগুলো বাংলাদেশের একটি দল সমাপ্ত করতে নিজের কাধে তুলে নিয়েছে।
আমরা চাই নীতি ও মূল্যবোধের রাজনীতি। চাই সম্মান ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে নতুন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়ে উঠুক। হত্যা–দখলদারিত্বের, চাঁদাবাজির রাজনীতি আমরা চাই না।
সমাবেশে জেলা ও উপজেলার জামায়াতে ইসলামী যুব বিভাগ ও ছাত্র শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ মাঠে নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন কেন্দ্রীয় এই শিবির নেতা। অনুষ্ঠানে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের এক হাজার ২০০ শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেন। প্রোগ্রামে অংশ নেন প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী। দীর্ঘ ২০ বছর পর কলেজ মাঠে উন্মুক্তভাবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সেমিনার ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করলেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসন। সরকারি সমন্বিত ভবনের মাল্টিপারপাস হলরুমে বৃহস্পতিবার ওই সেমিনারে প্রধান অতিথি ও সভাপতি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ওয়াদিয়া শাবাব, জেলা তথ্য কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শামিম আহম্মেদ, জেলা মৈত্রী মিডিয়ার সেন্টারের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান বাদল, জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুবল বিশ্বাস, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা সেন্ট্রাল কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ মো. ফায়েজুল কবীর, সেক্রেটারি ইমদাদুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সবুজ মিয়া, জেলা সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি এস আর শফিক স্বপন, সেক্রেটারি ও বাসস প্রতিনিধি বেলাল রিজভী, মেত্রী মিডিয়ার সেন্টারের সেক্রেটারি এস এম আরাফাত হাসান, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাব্বির হোসেন আজিজ, মাদারীপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সেক্রেটারি মেহেদী হাসানসহ শতাধিক গণমাধ্যম কর্মী।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা তথ্য অফিসার বেনজীর আহমেদ। নির্বাচন সংক্রান্ত পোস্টাল ভোট, পিআর, কেন্দ্র ও বুথের সংখ্যা, প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিং অফিসার, এজেন্ট অন্যান্য বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকতা শামিম আজম্মেদ।
অনুষ্ঠানে নবাগত জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম মাদারীপুরের সর্বস্তরের সাংবাদিকদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও স্বতঃস্ফূর্ত করার জন্য নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এজন্য সাংবাদিকদের রয়েছে ব্যাপক ভূমিকা, কেননা সাংবাদিকরা হচ্ছে দেশের আয়না।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব আনসারসহ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। আমরা সাংবাদিকদের কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করছি।
মেঘনার অথৈয় জলরাশির বয়ে চলার শব্দ আর জেলেদের কোলাহল। কাকডাকা ভোরে ঘুম ভাঙে মেঘনার দুই পাড়ের বাসিন্দাদের। এমন চিত্র দেখা মেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার এলাকায়। এখানে গড়ে উঠেছে মিঠাপানির ছোট মাছের বাজার। বৈদ্যেরবাজার ফিশারি ঘাট হিসেবে পরিচিত মেঘনা নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে এ বাজার। যা ছোট ও বড় মাছের বাজার হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন ভোররাত থেকে শুরু হয়, যা শেষ হয় সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গে। এ মাছের বাজারে সারা বছরই থাকে ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিড়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষা এ বাজারে ভোররাতেই আনাগোনা শুরু হয় ক্রেতা-বিক্রেতাদের। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে পাইকার মহাজনরাসহ খুচরা ক্রেতারা এখানে আসে তাদের পছন্দের মাছ কিনতে। নৌকা ও ছোট-বড় ট্রলারে করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে আসছেন জেলেরা। এসব মাছের ডাকে (নিলাম) ওঠাচ্ছেন পাইকাররা। মাছ কিনে পাইকাররা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। এখানে পাওয়া যায় মেঘনা নদীর সুস্বাদু সব মাছ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো টেংরা, পাবদা, মেনি, বাইলা, চিংড়ি, বাইম, পোয়া, কাজলি, কাচকি, মলা, বজরি, বইছা, পুঁটি, কই, শিং, টেকচাঁদা। এসব ছোট মাছের পাশাপাশি রুই, কাতলা, আইড়, বাঘা আইড়, ইলিশ, বোয়াল, চিতলসহ বড় মাছও বিক্রি হয়।
ঢাকার রামপুরার বনশ্রী এলাকা থেকে আসা মাহবুবুল আলম ও সাজ্জাদ মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রতি মাসে এ ঘাটে মাছ কিনতে আসি। এখানকার মাছ তরতাজা ও সুস্বাদু হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের পছন্দের তালিকায় সব সময় শীর্ষে থাকে এ এলাকার ছোট মাছ।’
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মারুফ হাসান ও তার বন্ধু আকবর আলী বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে তারা এ বৈদ্যেরবাজার থেকে মাছ কিনেন। এসব মাছ তারা তাদের স্বজনদের বাসায় পাঠান ও নিজেরাও খান। তারা আরও বলেন, এ এলাকার মাছ বেশ স্বাদ। তাই মাছ কিনতে লোকজন এ বাজারে ভিড় করেন। আগে মাছের দাম কম ছিল, এখন মাছের দামও একটু চড়া। দালালও ভড়ে গেছেন। মাছ কিনতে দালালদের মাধ্যমে কিনতে হয়।’
ঢাকার ডেমরা থেকে আসার মাছের আড়তের পাইকারি মাছ বিক্রেতা জসিমউদ্দিন বলেন, ‘মেঘনার তরতাজা ছোট মাছের কদর অনেক বেশি। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ভোজনরসিক মানুষ আগে থেকেই এসব মাছের অর্ডার দেন। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতাদের চাহিদা মতো বাসায় বাসায় আমরা এসব মাছ পৌঁছে দেই। এই মাছের স্বাদ যারা একবার নিয়েছেন, তারা ভুলতে পারেন না। এ জন্য অনেকে অগ্রিম অর্ডার করেন।’
বৈদ্যেরবাজার ঘাটের মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ উজ্জল বলেন, ‘এই ঘাটে কুমিল্লার মেঘনা থানার বিভিন্ন এলাকা ও আড়াইহাজার ও সোনারগাঁয়ের নুনেরটেক এলাকার জেলেরা মাছ বিক্রি করতে আসেন। প্রতিদিন এখানে গড়ে ১৫-২০ লাখ টাকার শুধু ছোট মাছ বিক্রি হয়।’
সোনারগাঁ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আকতার বলেন, ‘এ ঘাটের মাছের খ্যাতি এখন ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে তাজা মাছ পাওয়া যায়। বিশেষ করে এখানকার ছোট মাছ নিয়ে আমরা এখন গর্ব করতে পারি। এ মেঘনা নদীর ছোট মাছগুলো সুস্বাদু। এখানকার জেলেদের সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হয়।’
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় মাদকাসক্ত ভাতিজা ও চাচাতো ভাইয়ের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে এক বৃদ্ধ দম্পতি প্রায় ১৫ দিন নিজ বাড়িতেই গৃহবন্দী অবস্থায় জীবন কাটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১ নম্বর জোয়ারী ইউনিয়নের কুমরুল গ্রামের বাসিন্দা আলহাজ মোসলেম উদ্দিন ও তার স্ত্রী খাদিজা বেগম এই নির্যাতনের শিকার হন। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিনের ভয় ও আতঙ্কে তারা ঘরের ভেতরেই অস্থির অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত ২২ নভেম্বর সকালে বাড়িতে একা পেয়ে মাদকাসক্ত দুই ভাতিজা তৌকির ও তারেক এবং চাচাতো ভাই ফিরোজ পরিকল্পিতভাবে মোসলেম উদ্দিনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তার চিৎকারে মা খাদিজা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে তারা প্রাণে রক্ষা পান। এরপর থেকেই অভিযুক্তরা তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন বলে দাবি করেন বৃদ্ধ দম্পতি। এতে ভয়ে তারা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। গুরুতর অসুস্থ হয়েও চিকিৎসা নিতে পারেননি তারা। ঘটনার পর ২৪ নভেম্বর বৃদ্ধ দম্পতির জামাতা, অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা, বড়াইগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে তাদের একমাত্র ছেলে মাসুম আহমেদও একই থানায় পৃথকভাবে অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
এ নিয়ে থানার ওসি জানান, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা সিনিয়র সিটিজেন হওয়ায় আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহায়তা নিশ্চিত করা হবে।
তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্প্রতি নিবারক কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআর-এর ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে।
অভিযানকালে ৬,৩৪,৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লক্ষ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া ১০,২৯,০০০ পিস অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল/স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮.৫ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩,২২,৫০০ পিস বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রয় করছিল।
জব্দকৃত সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধারকৃত দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রয় কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
জাতীয় রাজস্বের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার এবং রাজস্ব ফাঁকি রোধে এনবিআর ভবিষ্যতেও আরও কঠোর ও ধারাবাহিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৫০ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পদে রদবদল করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ রদবদল করা হয়।
বদলি বা পদায়নকৃত উল্লেখযোগ্য কর্মকর্তারা হচ্ছেন- মোহাম্মদ তাইফুর রহমান মির্জা অফিসার ইনচার্জ ডেমরা থানা, মো. জিয়াউর রহমান অফিসার ইনচার্জ আদাবর থানা, মো. মনিরুল ইসলাম অফিসার ইনচার্জ শেরেবাংলা নগর থানা, মো. ফজলে আশিক অফিসার ইনচার্জ কলাবাগান থানা, মো. রাজু অফিসার ইনচার্জ যাত্রাবাড়ি থানা, মো. রাকিবুল হাসান অফিসার ইনচার্জ গুলশান থানা, মো. সাজ্জাদ হোসেন অফিসার ইনচার্জ কাফরুল থানা, মো. হাফিজুর রহমান অফিসার ইনচার্জ হাজারীবাগ থানা, এ কে এম আলমগীর জাহান অফিসার ইনচার্জ পল্লবী থানা, মো. হাবিবুর রহমান অফিসার ইনচার্জ উত্তরখান থানা, গোলাম ফারুক অফিসার ইনচার্জ কামরাঙ্গীরচর থানা, মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম অফিসার ইনচার্জ ধানমন্ডি থানা, মোহাম্মদ খালিদ মুনসুর অফিসার ইনচার্জ বনানী থানা।
এতে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকায় কর্মরত নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক-গণকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জনস্বার্থে তাদের নামের পার্শ্বে বর্ণিত স্থানে বদলি/পদায়ন করা হলো।
এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে অফিস আদেশে জানানো হয়।
একইদিন ডিএমপি কমিশনারের আরও দুটি পৃথক আদেশে ১৪ জন উপ-পুলিশ কমিশনারের রদবদল করা হয়েছে। সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ বেবিচক এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি এর নির্দেশনায় “Airport Mini Fire Exercise 2025” সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (ICAO) নির্দেশিকা অনুযায়ী বিমানবন্দরে দূর্ঘটনাপ্রবণ পরিস্থিতিতে সার্বিক অগ্নি নিরাপত্তা, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা, অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর পারস্পরিক সমন্বয় এবং প্রতিক্রিয়া সময় মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
এই মহড়াটি বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। মহড়ায় বিমানবন্দর এর বিভিন্ন সংস্থা: এয়ার পোর্ট ফায়ার সার্ভিস (ফায়ার ভেহিকেল ও অ্যাম্বুলেন্স), এভসেক, বেবিচক ফ্লাইট সেফটি (এজিএ ডিপার্টমেন্ট), এপিবিএন, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল, এয়ারপোর্ট থানা, ডিরেক্টর ফায়ার, এয়ারপোর্ট স্বাস্থ্য বিভাগ এর সদস্য ও অ্যাম্বুলেন্স সহ সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ফায়ার ইউনিট (ফায়ার ভেহিকেল ও অ্যাম্বুলেন্স), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর ০২ ইউনিট (দিয়াবাড়ি ও উত্তরা), অ্যাম্বুলেন্স (জাহানারা ক্লিনিক, উত্তরা, ওমেনস মেডিকেল কলেজ, উত্তরা, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল) এজেন্সিগুলো অংশগ্রহণ করে।
মহড়াটি ছিল ড্রাই এক্সারসাইজ, যেখানে আগুন প্রজ্বলন না করে শুধুমাত্র অগ্নিনির্বাপণ প্রতিক্রিয়া, সমন্বয়, যোগাযোগ এবং অপারেশনের গতিশীলতা যাচাই করা হয়। বিশেষভাবে বিমানবন্দরের General Aviation এলাকাকে মহড়ার স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং নিয়মিত ফ্লাইট অপারেশন স্বাভাবিকভাবেই রেখেই মহড়াটি সম্পন্ন করা হয়।
ঘটনার ধারাবাহিকতায় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (ATC) টাওয়ারে আগুন সংক্রান্ত কল জানার পরে তাৎক্ষণিকভাবে Emergency Operation Center (EOC) সক্রিয় করা হয়। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে জানানোর পর ফায়ার টেন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে অগ্নিনির্বাপক গাড়িগুলোর সর্বপ্রকার কার্যকারিতা নিরীক্ষা করা হয়।
মহড়াটি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সকল অংশগ্রহণকারী সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। নিরাপদ, কার্যকর এবং সমন্বিতভাবে বিমানবন্দর পরিচালনা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের মহড়া অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
যশোরের কেশবপুর উপজেলার কাকিলাখালী গ্রামের অশোক কুমার দাশের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কেশবপুরের একটি সাংবাদিক সংগঠনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ভুক্তভোগী অশোক দাশ তার পরিবারের ওপর হামলা, ভাঙচুরও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, ঘটনার পর থেকে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অশোক দাশ (৬০) জানান, পারিবারিক পূর্ববিরোধের জেরে তার ছোট ভাই অসীম দাশ (৪৮) ও ভাইয়ের স্ত্রী ডলি দাশ (৪২) গত ২ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে লাঠিসোটা নিয়ে তার বসতবাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে। বাড়িতে ঢুকেই তাকে অশ্লীল গালিগালাজ ও বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে প্রতিবাদ করলে অসীম দাশ তাকে এলোপাথাড়ি মারধর করেন এবং ডলি দাশ হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে হামলার চেষ্টা করেন। এতে অশোক দাশের বাম হাত গুরুতর জখম হয়।
হামলা থেকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দাশ এবং ছেলে একইভাবে মারধরের শিকার হন। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা বাড়ির দরজা ভেঙে ফেলে, বারান্দার বিভিন্ন সামগ্রী ভাঙচুর করে এবং সেচ মটরের তার, পানি সরবরাহের পাইপ ও মোটরসাইকেলের মিটার ভেঙে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে।
শোরগোল শুনে প্রতিবেশী মলয় দাশ, কনক দাশসহ স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তারা জানান, পুরো বাড়িতে আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল।
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত অশোক দাশকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। বর্তমানে তিনি আংশিক সুস্থ হলেও পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে দাবি করেন।
ভুক্তভোগীরা যশোর জেলা প্রশাসনের তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে যে কোন সময়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
এ বিষয়ে কেশবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নওগাঁ জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল হক মুকুলের প্রয়াণে নওগাঁয় শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সংগঠনের নেতারা তার জীবন, সংগ্রাম ও আদর্শকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নওগাঁ জেলা কমিটির উদ্যোগে গত বুধবার শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার মুক্তির মোড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণমানুষের নেতা ময়নুল হক মুকুলের শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবি নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহসীন রেজা।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জলি তালুকদার।
স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সামনের সারির নেতা হিসেবে তার ভূমিকা স্মরণ করে বক্তারা বলেন, ‘ মুকুল ছিলেন সততা, সাহস ও আদর্শের প্রতিচ্ছবি; তার মৃত্যু নওগাঁর প্রগতিশীল আন্দোলনের জন্য বিরাট ক্ষতি।’
সিপিবি নওগাঁ জেলার সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিপিবির জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি প্রদ্যুৎ ফৌজদার, বাসদ নওগাঁ জেলা কমিটির আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন মুকুল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা, ‘সোনালী অতীত’ সংগঠনের সদস্য আবুল কালাম আজাদ, আদিবাসী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেবেকা সরেন, একুশে পরিষদের সভাপতি ডিএম আব্দুল বারী, নওগাঁ জেলা জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি আমিন কুজুর এবং জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রহমান রায়হান বাহাদুর প্রমখ।
উল্লেখ্য গত ৯ সেপ্টেম্বর ময়নুল হক মুকুল ৮০ বছর বয়সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টর বালিয়াড়িতে দাঁড়িয়ে আছে এক বৃহদাকার দৈত্য! আকস্মিক দেখায় অনেকে বিভ্রম হতে পারে- এটা আসল নাকি নকল দৈত্য! পরিবেশ দূষণকারী ক্ষতিকর প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম এই দৈত্যটি। দৈত্যটি নজর কেড়েছে পর্যটকদের। মূলত পরিবেশে প্লাস্টিক বর্জ্যর দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে প্রতীকী হিসেবে এ প্লাস্টিক দৈত্যটি তৈরি করা হয়েছে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় পর্যটকসহ জনসাধারণকে প্রদর্শনের জন্য এই কৃত্রিম দৈত্যটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান এটির উন্মোচন করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোহাম্মদ শহীদুল আলম, বিচ ম্যাজিস্ট্রেট আজিম উদ্দিন, বিদ্যানন্দের গভর্নিং বডির সদস্য জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এই প্লাস্টিক বর্জ্যের দৈত্যটি তৈরি করেছে। ইতোমধ্যে বিগত কয়েক বছর ধরে পর্যটন মৌসুমে এই প্লাস্টিক দানবটি তৈরি করেছে সংস্থাটি।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা জানান, সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা সমন্ধে মানুষকে সচেতন করতে সমুদ্র সৈকতে তৈরি করা হয়েছে প্লাস্টিকের দৈত্যটি। যে দানবটি রক্ত-মাংসহীন প্রতীকী হলেও যার হিংস্র থাবায় প্রতিনিয়ত ক্ষত-বিক্ষত মানবদেহ, প্রকৃতি ও প্রাণবৈচিত্র্য। এই দানব প্লাস্টিক দূষণে প্রাণ-প্রকৃতির বিরূপতার সাক্ষ্য দিচ্ছে। দানবটির দেহে বয়ে বেড়ানো প্লাস্টিক দূষণে প্রাণ-প্রকৃতির ক্ষতির মাত্রা দেখানো এবং পরিবেশে ক্ষতির এই বোধটি মানুষের মনে জাগাতে এই উদ্যোগ। এটি প্রদর্শনের সাথে আগামী তিন মাসব্যাপী একটা চিত্র প্রদর্শনীও থাকবে।
দৈত্যটির অবয়বে দেখানো হয়েছে, দেখা গেছে, একটা অতি বিশাল দৈত্য পৃথিবীকে দুভাগ করে ফেলেছে। পৃথিবীর বুক চিরে প্লাস্টিক বের হয়ে যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, পৃথিবী এক বুক প্লাস্টিক নিয়ে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছে।
আয়োজক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই সমাগম ঘটে লাখো পর্যটকের। যারা সৈকতের বালিয়াড়ি ও সাগরের পানিতে ফেলছে প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রীর বর্জ্য। এতে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে দূষণ এবং হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক জীব ও মানবজীবন। আর প্রাণ-প্রকৃতির দূষণ রোধে এবং সচেতনতা সৃষ্টিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নিয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি দানব ভাস্কর্যের প্রদর্শনীর মতো ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগের।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক মুহাম্মদ মুবারক জানান, প্রায় চার মাস ধরে কক্সবাজার, ইনানী ও টেকনাফের সমুদ্র সৈকত থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে অন্তত ৮০ মেট্রিক টন সামুদ্রিক প্লাস্টিক বর্জ্য। এসব বর্জ্যের একটা অংশ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিল্পী এই ভাস্কর্যটি তৈরি করেন। আর এটি পুরো পর্যটন মৌসুম সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এটাকে কেন্দ্র করে এখানে প্লাস্টিক দূষণবিরোধী সচেতনতামূলক পথ নাটক ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডির সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, সরকারের পরিবেশ মন্ত্রণালয় প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। সরকারের পলিসির সাথে সমন্বয় করে আমরা সারাদেশ থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে ৫০০ মেট্রিক টন পরিত্যক্ত প্লাস্টিক রিসাইকেল করেছি। এতে করে প্লাস্টিক বর্জ্য ম্যানেজমেন্টে সরকারি খরচ যেমন কমবে তেমনি মানুষও জানতে পারবে কীভাবে রিসাইকেলের মাধ্যমে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা যায়।
দেশব্যাপী এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে কক্সবাজারে আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ছয় মাসব্যাপী প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে কাজ করে যাব। প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইকেলের পাশাপাশি এখানে সচেতনতামূলক ভাস্কর্য প্রদর্শনীর আয়োজনও করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ভাস্কর ও শিল্পী আবীর কর্মকার জানান, বিদ্যানন্দের ভিন্নধর্মী উদ্যোগ প্লাস্টিক দানবটি তৈরি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের একদল শিল্পী। এতে তারা প্লাস্টিক বর্জ্যের পাশাপাশি ব্যবহার করেছেন কাঠ, পেরেক ও আঁটা (গাম)-সহ আরও কয়েকটি উপকরণ। ভাস্কর্য শিল্পীদের দাবি, এটি ওসান প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি বিশ্বের সর্ব বৃহৎ ‘প্লাস্টিক দৈত্য’। এটি বানাতে প্রায় ৬ মেট্রিক টন প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়েছে।
উন্মোচনকালে জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান বলেন, সমুদ্র সৈকতকে প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে এই উদ্যোগ খুবই কার্যকর ও টেকসই। সমুদ্র বিচরণ করা পর্যটককে সচেতন করতে ভাস্কর্য ও চিত্র প্রদর্শনী অবদান রাখবে। তাতেই উদ্যোগের সফলতা আসবে।
প্লাস্টিক বর্জ্যে নির্মিত এই দানবটি দেখতে ভিড় করেছেন সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা। তারা বলছেন, এটি দেখতে এসে মানুষ দৈত্য-দানবের ভয়ংকর রূপের মতো প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন হবেন। পাশাপাশি নিজেরাও প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারে সজাগ থাকবেন।
এই প্লাস্টিক দৈত্য নিয়ে পরিবেশকর্মী ইসলাম মাহমুদ বলেন, বর্তমান সময়ে নদী ও সমুদ্র দূষণের প্রধান নিয়ামক প্লাস্টিক। অপচনশীল এই বর্জ্য মানবজাতিকে এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে ধাবিত করছে। এই প্রেক্ষাপটে মানুষকে এ ব্যাপারে গুরুত্বের সাথে সচেতন হতে হবে। সমুদ্র সৈকতে তৈরি করা প্লাস্টিক দৈত্যটি মানুষকে সচেতনতা সৃষ্টিতে অবদান রাখতে পারে।
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় মাদকাসক্ত ভাতিজা ও চাচাতো ভাইয়ের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে এক বৃদ্ধ দম্পতি প্রায় ১৫ দিন নিজ বাড়িতেই গৃহবন্দী অবস্থায় জীবন কাটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১ নম্বর জোয়ারী ইউনিয়নের কুমরুল গ্রামের বাসিন্দা আলহাজ্ব মোসলেম উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী খাদিজা বেগম এই নির্যাতনের শিকার হন।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিনের ভয় ও আতঙ্কে তাঁরা ঘরের ভেতরেই অস্থির অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত ২২ নভেম্বর সকালে বাড়িতে একা পেয়ে মাদকাসক্ত দুই ভাতিজা তৌকির ও তারেক এবং চাচাতো ভাই ফিরোজ পরিকল্পিতভাবে মোসলেম উদ্দিনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তার চিৎকারে খাদিজা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে তাঁরা প্রাণে রক্ষা পান।
এরপর থেকেই অভিযুক্তরা তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন বলে দাবি করেন বৃদ্ধ দম্পতি। এতে ভয়ে তারা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। গুরুতর অসুস্থ হয়েও চিকিৎসা নিতে পারেননি তারা।
ঘটনার পর ২৪ নভেম্বর বৃদ্ধ দম্পতির জামাতা, অবসরপ্রাপ্ত নৌ-বাহিনীর এক কর্মকর্তা, বড়াইগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে তাঁদের একমাত্র ছেলে মাসুম আহমেদও একই থানায় পৃথকভাবে অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা সিনিয়র সিটিজেন হওয়ায় আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহায়তা নিশ্চিত করা হবে, বলেনও জানান তিনি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের বাউশিয়া পাখির মোড় এলাকা থেকে ৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি নোহা স্কয়ার গাড়ি জব্দ করা হয়।
বুধবার ( ৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত তিনটায় পরিচালিত এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনোয়ার আলম আজাদ।
আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীর নাম মোঃ ইব্রাহিম (৩৫)। সে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার লম্বাবিল হোয়াইকং গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে বলে জানা গেছে।
গজারিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, ইয়াবার বড় একটি চালান কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছে এরকম একটি খবরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের বাউশিয়া পাখির মোড় এলাকায় অবস্থান নেয় পুলিশ। বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে টেকনাফ থেকে ঢাকাগামী কালো রংয়ের একটি নোহা স্কয়ার গাড়ি তল্লাশি করে ৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী ইব্রাহিমকে আটক করা হয়। এ সময় মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটিও জব্দ করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ' একটি সফল অভিযানে ৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।