তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প-৪ এর আওতায় ঝালকাঠির রাজাপুরে জাতীয় মহিলা সংস্থার প্রশিক্ষণকেন্দ্রে চলছে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ। ভর্তি-নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি ব্যাচে পৃথক পাঁচটি ট্রেডে ৫০ জন করে মোট ২৫০ প্রশিক্ষণার্থী থাকার কথা এখানে। তাদের প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১২ হাজার টাকা। অভিযোগ উঠেছে, বরাদ্দের এই টাকা লোপাটের জন্যই প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভর্তি ফরম ও হাজিরা খাতায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে ২৫০ জনের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
দৈনিক বাংলার অনুসন্ধানেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে কাগজে-কলমে প্রশিক্ষণার্থীদের ২৫০ জনের তালিকা পূরণের প্রমাণ মিলেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক প্রশিক্ষণার্থী দৈনিক বাংলার কাছে এমন তথ্যের সত্যতাও স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে নামে-বেনামে প্রশিক্ষণার্থী দেখিয়ে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামিরা আক্তার সরকারি বরাদ্দের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ মিলেছে।
নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের আওতায় বর্তমান ব্যাচে চার মাস মেয়াদি বিউটিফিকেশন কোর্স, কেটারিং কোর্স, ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্স ও ফ্যাশন ডিজাইনার কোর্স ট্রেডে নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া ৪০ দিন মেয়াদি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ই-কমার্স কোর্সও রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই কেন্দ্রের যাবতীয় কাগজ ও হাজিরা খাতায় প্রতিটি ট্রেডেই ৫০ জন করে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি দেখানো হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে ভুয়া নামগুলোর মাথাপিছু ১২ হাজার টাকা যাবে প্রশিক্ষণ কর্মকর্তার পেটে। ওই টাকার একটি অংশ সেখানকার ছয়জন প্রশিক্ষক ও নৈশপ্রহরীও পাবেন। এই কেন্দ্রে প্রশিক্ষণার্থীদের টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল অ্যাকাউন্টে না দিয়ে নগদ দেয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন জাতীয় মহিলা সংস্থা ঝালকাঠির জেলা কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন হাওলাদার।
গত ২৮ অক্টোবর বেলা ১১টায় রাজাপুর প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চারটি ট্রেডের প্রশিক্ষণার্থীদের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা চলছিল। এই কেন্দ্রে ছয়জন প্রশিক্ষক থাকার কথা থাকলেও ওই সময় মাত্র দুইজন প্রশিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। এমনকি সেখানকার দায়িত্বরত প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামিরা আক্তার নিজেও অনুপস্থিত ছিলেন। আর ভেতরে তিনটি কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন মাত্র ৪৬ জন নারী।
প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কেন উপস্থিত নেই- তা জানতে চাইলে সেখানে থাকা বিউটিফিকেশন ট্রেডের প্রশিক্ষক শাহানারা খাতুন বলেন, ‘ম্যাডাম ছুটিতে আছেন।’ তাৎক্ষণিক খোঁজ নিয়ে জানা গেল, দুই-তিন দিনে তার কোনো ছুটি মঞ্জুর করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
খোঁজখবর করতে করতেই সেখানে উপস্থিত হন প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামিরা আক্তার। পাঁচটি ট্রেডের জায়গায় চারটি ট্রেডে পরীক্ষা এবং সেই চারটি ট্রেডে ২০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর উপস্থিতির কথা থাকলেও পরীক্ষায় কেন ৪৬ জন উপস্থিত- জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই মাস ক্লাস চালানোর পর কেন্দ্রের নির্দেশে ৪০ দিন মেয়াদি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ই-কমার্স কোর্সটি বন্ধ আছে। তাই ভর্তি ও হাজিরা খাতায় তাদের ৫০ জনের নাম থাকলেও তারা উপস্থিত নেই। বাকি চারটি ট্রেডে ৫০ জন করে ২০০ জন ভর্তি থাকলেও কেন্দ্রের নির্দেশে বিকেলের ক্লাসও বন্ধ রয়েছে। সে কারণে বর্তমানে সকালে ১০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর ক্লাস চলমান রয়েছে। সেই ১০০ জন নারীর মধ্যে বিভিন্ন কারণে আজ পরীক্ষা দিতে আসতে পারেননি অনেকে।’
এদিকে প্রশিক্ষণার্থীদের হাজিরা খাতার কিছু অংশ সংগ্রহ করেছে দৈনিক বাংলা। তাতে দেখা যায়, প্রশিক্ষণার্থীদের উপস্থিতির ঘরে বল পেন দিয়ে সই করানো হয় এবং অনুপস্থিতের ঘরে কাঠ পেনসিল দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেয়া হয়। কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, প্রশিক্ষণার্থীদের অনুপস্থিতির দিনগুলোতে ১৫০ টাকা করে কেটে রাখা হবে। অভিযোগ রয়েছে, কাঠ পেনসিলের ক্রস চিহ্ন রাবার দিয়ে মুছে সই বসিয়ে সে টাকাও তুলে নেয়া হবে। হাজিরা খাতায় কেন কাঠ পেনসিল দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেয়া হলো- সামিরা আক্তার এ প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকেন।
রাজাপুরের কেন্দ্রে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব নারীরাও পরীক্ষা দিচ্ছেন বিউটিফিকেশন ট্রেডে। তবে তাদের কাউকেই কিছু লিখতে দেখা যায়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়, অনেক পরীক্ষার্থী জানেন না তারা কী পরীক্ষা দিতে এসেছেন। তাদের যা লিখতে বলা হয়, তারা কেবল সেটিই লিখে থাকেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই বা তিন হাজার টাকার বিনিময়ে গ্রামের অনেক গৃহিণীকে এনে পরীক্ষা দেয়ানো হয়। অথচ তাদের নামেও বরাদ্দ হবে ১২ হাজার টাকা।
পরীক্ষা কেন্দ্রের একটি কক্ষে গিয়ে দেখা গেছে, ষাটোর্ধ্ব নারীরাও ফ্যাশন ডিজাইনার ট্রেডে পরীক্ষা দিতে এসেছেন। এক প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কোন ট্রেডে পরীক্ষা দিয়েছেন? তিনি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে কোনো উত্তর না দিতে পেরে কেন্দ্র থেকে চলে যান।
ষাটোর্ধ্ব নারীদের পরীক্ষায় উপস্থিত দেখা গেলেও প্রকল্পের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা সহকারী প্রোগ্রামার মো. সাদাত হোসেন জানান, সব ট্রেডে ভর্তিসংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি পাস থাকতে হবে। তাদের বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পের সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন) কাইয়ুম মিয়া মোবাইল ফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আমাদের প্রকল্পের বাজেট মন্ত্রণালয় থেকে অর্ধেক করে দিয়েছে। তাই প্রকল্পে ব্যয় সংকোচন করতে সব প্রশিক্ষণকেন্দ্রে বিকেলের ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে। শুধু সকালের ক্লাসে ১০০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেবেন। তবে রাজাপুর কেন্দ্রে সকালেও ১০০ জন কেন নেই, সে বিষয়ে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত নভেম্বর-২০২৫ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৬৮ কোটি ৩৮ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে-২ কেজি ২৬৬.২২ গ্রাম স্বর্ণ, ১২১ গ্রাম রূপা, ১৭,২৩৪টি শাড়ী, ২১,৩৩৮টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল, ২৭,৪৫০টি তৈরী পোশাক, ৯,৭৪০ মিটার থান কাপড়, ৩,৪০,৩৮০টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ৬,৫৬৪ পিস ইমিটেশন গহনা, ১০,০৯,৪২১টি আতশবাজি, ৬,২১৬ ঘনফুট কাঠ, ১,২৮৪ কেজি চা পাতা, ১১,৪৭৯ কেজি সুপারি, ৬৬,৫৪৬ কেজি কয়লা, ১২,৮৯০ ঘনফুট পাথর, ৫৯৭ কেজি সুতা/কারেন্ট/দুয়ারি জাল, ১৫,১৭৮টি প্লাস্টিক/ইলেঃ সামগ্রী, ৪৪৫টি মোবাইল, ১৫,১৪৫টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৭৩,৫৬৪টি চশমা, ৩৭,৬৯০.৫০০ কেজি জিরা, ৪,৯৭০ কেজি চিনি, ১,৬৩,৪৯০ কেজি পিয়াজ, ১,৭৩১ কেজি রসুন, ৪,৬৮০ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৬,৩২০ কেজি সার, ২,৬৮৪ প্যাকেট কীটনাশক, ৪৮৫ লিটার ডিজেল, ১,৬৮,০২১ পিস চকোলেট, ৮১৯টি গরু/মহিষ, ১৬টি ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান, ১৭টি পিকআপ/মহেন্দ্র, ৪টি ট্রাক্টর, ২টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ১৪টি ট্রলি, ১৭৯টি নৌকা, ৩৮টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৫৪টি মোটরসাইকেল এবং ৩১টি বাইসাইকেল/ভ্যান।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ৪টি দেশী/দেশীয় পিস্তল, ১টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ২টি ম্যাগাজিন, ১৯ রাউন্ড গোলাবারুদ, ২কেজি ৩০০ গ্রাম গান পাউডার, ৩টি মাইন, ৬টি ককটেল এবং ৯টি অন্যান্য অস্ত্র।
এছাড়াও গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ২০,৫৮,৭৮৯পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১৯৩ গ্রাম হেরোইন, ৩,৭১৪ বোতল ফেনসিডিল, ৭,১৭৬ বোতল বিদেশী মদ, ২০৩.৯ লিটার বাংলা মদ, ৬০৮ ক্যান বিয়ার, ১,৫২৬ কেজি ৫০ গ্রাম গাঁজা, ১,১৭,৮৫১ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৫০,৫৮৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৩,৪৬৩ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৮,১৫৬টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ৫৬,১২০টি মদ তৈরীর বড়ি, এবং ৭,৬৭,৯২৩ পিস বিভিন্ন প্রকার ঔষধ ও অন্যান্য ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫৯ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ১৩৭ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ০২ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৪০৩ জন মায়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফে হাইওয়ে সড়কে মিনি ট্রাক ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ দুইজন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে হ্নীলা আলীখালী রাস্তার মাথা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনা নিশ্চিত করেছে হোয়াইক্যং হাইওয়ে থানা পুলিশ।
নিহতরা হলেন—হ্নীলা মৌলভীবাজার পূর্বপাড়ার মো. সেলিমের ছেলে সিএনজি চালক মো. ফারুক এবং টেকনাফ নাজিরপাড়ার ছৈয়দ নুরের ছেলে ইমান হোসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।
হোয়াইক্যং হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল আবছার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, হ্নীলা থেকে টেকনাফগামী সিএনজি অটোরিকশাটি হাইওয়ে সড়কে পৌঁছালে কক্সবাজারমুখী মাছবোঝাই একটি মিনি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজি চালক মো. ফারুক ও যাত্রী মো. ইসমাইল (অনেকে ইমান হোসেন হিসেবে শনাক্ত করেন) ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
ওসি আরও জানান, সংঘর্ষের ধাক্কায় সিএনজিটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ এবং ট্রাকটি জব্দের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা তদন্ত শুরু করেছি।”
স্থানীয়রা জানান, টেকনাফ–কক্সবাজার হাইওয়ে সড়কে অতিরিক্ত গতি ও বেপরোয়া চালনার কারণে এ ধরনের দুর্ঘটনা বাড়ছে। তারা সড়কে নিয়মিত নজরদারি ও গতিনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ মরদেহ দুটি টেকনাফ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারগুলোর কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানা গেছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে দোয়া মাহফিল ও বৃক্ষরোপন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সোনারগাঁ কাজী ফজলুল হক উইমেন্স কলেজ ছাত্রদলের আয়োজনে এই বৃক্ষরোপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সোনারগাঁ কাজী ফজলুল হক উইমেন্স কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সাদিয়া আক্তার মিমের সভাপতিত্বে ও কলেজ ছাত্রদল নেত্রী সাফরিন মৌ এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি'র আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল ছিলেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ কাজী ফজলুল হক উইমেন্স কলেজের অধ্যাপক মনিরুজ্জামান ভুইয়া লিটন, অধ্যাপক মাহাবুর রহমানসহ অত্র কলেজের শিক্ষক,শিক্ষিকা ও ছাত্রীবৃন্দ।
আলোচনা শেষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিলে খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ইউএনও মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।
পরে উপজেলা পরিষদ হলরুমে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা গড়বে আগামীর শুদ্ধতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহ সভাপতি মোহাম্মদ আমির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, সকল অনাচার ও সমস্যার মূলে রয়েছে দুর্নীতি। তাই দেশকে পুরোপুরি বৈষম্যমুক্ত করতে চাইলে দুর্নীতি নির্মুলের কোন বিকল্প নেই । আর এজন্য সকলকে যার যার অবস্থান থেকে আত্মসমালোচনার মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাগ্রত ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মাস্টারের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ জোবায়ের হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক( তদন্ত) মোখলেছুর রহমান আকন্দ, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া, আনসার বিডিপি কর্মকর্তা কুসুম কুমার রায়, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহ সভাপতি শাহিদা পারভীন, সদস্য সাংবাদিক আব্দুল হালিম ও মডেল মসজিদের ইমাম মুফতি আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা গড়বে আগামীর শুদ্ধতা স্লোগানে দিবসটি উপলক্ষে পরিষদ প্রাঙ্গনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলা প্রশাসন, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকমণ্ডলী এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
কুষ্টিয়ায় পৃথক দুটি স্থানে অভিজান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ নকল বিড়ি ও ভারতীয় মদ আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৯ ডিসেম্বর) বিজিবির পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কুষ্টিয়া বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনির স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে কুষ্টিয়া বাইপাস লালন চত্বর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ৪৭ বিজিবির ব্যাটালিয়ন সদরের একটি টহল দলের অভিযানে পাবনা থেকে পাথরঘাটা অভিমুখী একটি বিআরটিসি বাস তল্লাশি করা হয়। এ সময় বাসের ভেতর থেকে ৪ হাজার ২০০ প্যাকেট অবৈধ নকল বিড়ি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত বিড়ির আনুমানিক মূল্য ২ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
এর আগে রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাত ১১টা ১০ মিনিটের দিকে চিলমারী বিওপির একটি নিয়মিত টহল দল চোরাচালানবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। সীমান্ত পিলার ১৫৭/২-এস থেকে ৫০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মরার পাড়া এলাকায় মালিকবিহীন অবস্থায় ভারতীয় উৎপাদিত ৪৮ বোতল মদ আটক করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৭২ হাজার টাকা।
বিজিবি জানায়, দুটি অভিযানে উদ্ধারকৃত মালামালের মোট মূল্য ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা। মালিকবিহীন অবস্থায় আটককৃত মদ ধ্বংসের জন্য ব্যাটালিয়ন সিজার স্টোরে রাখা হয়েছে এবং নকল বিড়ি বিধি মোতাবেক কাস্টমস অফিসে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২৫ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালিত হয়েছে।
ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসন, জাতীয় মহিলা সংস্থা ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এই দিবস পালিত হয়।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা সভা কক্ষে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম।
এতে জাতীয় মহিলা সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসমান আলীর উপস্থাপনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ফারুক আহমেদ, আইসিটি কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুন, দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা, মনোজ কুমার ইন্দ্র,উপজেলা বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামসহ জাতীয় মহিলা সংস্থার নতুন পুরাতন ৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী উপস্থিত ছিলেন।
নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হই, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। "অদম্য নারী পুরস্কার" শীর্ষক কার্যক্রমের অদম্য নারী অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য অর্জন করেছেন যে নারী, শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছেন যে নারী, সফল জননী নারীনির্যাতনের দুঃস্বপ্ন মুছে জীবন সংগ্রামে জয়ী নারী, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী ক্যাটাগরীতে বিভিন্ন শাখায় অসামান্য অবদান রাখার জন্য পাঁচজন নারীকে অদম্য পুরস্কার দেওয়া হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন সমাজ উন্নয়নে মোছাঃ আমেনা খাতুন, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে ববিতা খাতুন, সফল জননী মোছাঃ আনোয়ারা খাতুন, অর্থনৈতিকভাবে স্বামলম্বী মিমি খাতুন এবং বিভীষিকাময় দুঃশাসন ক্যাটাগরীতে শান্তা খাতুন প্রমুখ।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর নারী শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি প্রথম আবাসিক হল এবং পুরাতন ভবন গুলোর মধ্যে অন্যতম খালেদা জিয়া হল।
ভবন পুরাতন এবং বৈদ্যুতিক লাইনগুলো পুরোনো হওয়ায় শর্ট সার্কিটের কারণে বারবার অগ্নিকান্ডের মত ঘটনা ঘটেছে এই হলে। প্রতিবার আগুন লাগার পর নামমাত্র সংস্কার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে আবাসিক শিক্ষার্থীদের। ঝুঁকি এড়াতে দীর্ঘদিন স্থায়ী সমাধানের দাবি করে আসছে এই হলের ছাত্রীরা।
এবার সেই নিরাপত্তা ঝুঁকি ও আশঙ্কা মুক্ত করতে স্থায়ীভাবে বৈদ্যুতিক সংস্কারসহ অন্যান্য সংস্কারমূলক কাজ আরম্ভ হয়েছে বলে জানা গেছে।
হল সূত্রে জানা যায়, বর্তমান হল প্রভোস্ট দায়িত্ব নেয়ার সময় হল ফান্ডে ৭ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন। দায়িত্বের এক বছরের মধ্যে তিনি হল ফান্ড থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার কাজ করেছেন। হলের রিডিংরুম সংস্কারে প্রায় ৬ লক্ষ টাকাসহ ওয়াইফাই, গণরুম, সিসিটিভি ক্যামেরায় ব্যয় করেছেন তিনি।
ঐ হলের আবাসিক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হলের পুরাতন ব্লকে কয়েকবার আগুন লেগেছে। আমরা সবসময় আতংকে এবং অনিরাপদ থাকি। পুরাতন ব্লকের সংস্কার শুরু হয়েছে। বাইরে হট্টগোল হলেই মনে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। মনে হয় এই বুঝি আগুন লেগেছে। এখন থেকে আর আতংকে থাকতে হবে না। আশা করছি পুরাতন ব্লকের মতো নতুন ব্লকও যেন নিরাপদ করে গড়ে তোলা হয়।’
খালেদা জিয়া হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘খালেদা জিয়া হলে পুরাতন এবং নতুন নামে দুইটি ব্লক আছে। পুরাতন ব্লকের পলেস্তারা এবং বৈদ্যুতিক লাইন খুবই খারাপ। আমি এসে শুনেছি এখানে কয়েকবার শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা হলের ৪র্থ ও ৫ম ফ্লোরে রিপেয়ারের কাজ শুরু করেছি। আশা করছি বাকি ফ্লোরগুলোতে অতিশীঘ্রই কাজ শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, পুরাতন ব্লকের ওয়াশরুম এবং বাথরুম ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এগুলো সংস্কারের জন্য বড় বাজেটের দরকার। এজন্য আমি প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছি। যেহেতু এবিষয়ে কোনো প্রকল্প নেই সেহেতু বিভিন্ন উৎস থেকে ফান্ড যোগাড় করে দিবেন বলে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। ফান্ড পেলে আশাকরি দ্রুতই আমরা সমস্যার সমাধান করতে পারবো।’
মারামারি বন্ধ ও নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘শান্তিচুক্তি’ হওয়ার ঠিক এক মাসের মাথায় আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব ও এর আশপাশের এলাকায় দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ুব জানান, ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা কলেজের একটি বাসে আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বলে অভিযোগ ওঠে। মূলত এই অভিযোগের জের ধরেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শান্ত করে ক্যাম্পাসে ফেরত পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, আইডিয়াল কলেজ কলাবাগান থানা এলাকার আওতাধীন হওয়ায় সেখানকার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এই সংঘর্ষের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, সায়েন্স ল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ, আইডিয়াল কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যা তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এই সমস্যা সমাধানে গত ৯ নভেম্বর নিউমার্কেট থানা পুলিশের মধ্যস্থতায় ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি মৌখিক ‘শান্তিচুক্তি’ হয়েছিল। তখন শিক্ষার্থীরা আর মারামারি করবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করলেও এক মাসের মাথায় সেই কথা রাখলেন না তারা।
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী আমবাগ এলাকায় পিএন কম্পোজিট নামের একটি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার প্রধান ফটকে বন্ধের নোটিশ দেখে শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপরই তারা কারখানা খুলে দেওয়াসহ বেশ কিছু দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত গত রবিবার (৭ ডিসেম্বর)। ওইদিন কারখানার এক শ্রমিক জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গিয়ে ফিরে আসার পর কয়েকজন কর্মকর্তা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার দিনভর বিক্ষোভ করেন সাধারণ শ্রমিকরা। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও তাতে ব্যর্থ হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সোমবার রাতেই কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
কারখানার প্রধান ফটকে টাঙানো নোটিশে বলা হয়েছে, শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে পরবর্তীতে নোটিশের মাধ্যমে কারখানা খোলার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বন্ধের নোটিশ দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা অবিলম্বে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও কোনাবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। এছাড়া কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর ভাটারা এলাকার একটি বহুতল ভবনের শয়নকক্ষ থেকে আপন (২০) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। সোমবার রাতে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার মাহাবুব মিয়ার ছেলে আপন পরিবারের সঙ্গে ভাটারা থানার ১১৪ নম্বর বিসমিল্লাহ রোডের একটি আটতলা ভবনের ছয়তলায় ভাড়া থাকতেন। সোমবার দুপুরের দিকে তিনি নিজ কক্ষের দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে যান। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও ভেতর থেকে কোনো সাড়া-শব্দ না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে ভাটারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে আপনকে বিছানায় অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়।
পুলিশের সহায়তায় দ্রুত তাকে উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আপনের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবার ও স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতের ফুফাতো ভাই সাজিদ জানান, দুপুরে ঘুমাতে যাওয়ার পর আর দরজা না খোলায় তাঁরা পুলিশকে জানান। কীভাবে বা কী কারণে হঠাৎ তার মৃত্যু হলো, সে বিষয়ে পরিবারের কারো কোনো ধারণা নেই।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চিকিৎসকের ঘোষণার পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে ভাটারা থানা–পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ পটুয়াখালী জেলার চান্দুপাড়া সঞ্জীবন প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি, উৎপাদনমুখী সামাজিক বিনিয়োগভিত্তিক এই উদ্যোগের মাধ্যমে সদস্যদের আত্মনির্ভরশীলতা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং পেশাগত সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি প্রকল্পভুক্ত দুই প্লাটুনের মোট ৬৪ জন উদ্যোক্তার সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের নির্দেশনা প্রদান করেন।
৮ ডিসেম্বর (সোমবার) সকাল ৯টায় প্রকল্পস্থলে উপস্থিত হয়ে মহাপরিচালক প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ‘সামাজিক সুরক্ষা দল–১’ (কলাপাড়া, পটুয়াখালী) এবং ‘সামাজিক সুরক্ষা দল–২’ (বেতাগী, বরগুনা)–এর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তাদের পরিকল্পনা, সম্ভাবনা ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এসময় তিনি বলেন, “সামাজিক বিনিয়োগ মডেলভিত্তিক সঞ্জীবন প্রকল্প সদস্যদের উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করে মৌলিক চাহিদা পূরণ ও দীর্ঘমেয়াদে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
তিনি আরও বলেন, “সঞ্জীবন, আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এবং আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত এই প্রকল্পটি কৃষি ও অকৃষি—উভয় খাতে প্লাটুনভিত্তিক ক্ষুদ্র উদ্যোগ সৃষ্টির মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত সদস্যদের জীবিকা উন্নয়ন এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।”
বাহিনীর সদস্যদের পেশাগত উৎকর্ষ অর্জনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন যে আধুনিক প্রশিক্ষণ, দেশপ্রেম, সততা ও নৈতিক আদর্শ সমন্বয়ে প্রতিটি সদস্যকে নিজেকে আরও দক্ষ ও দায়িত্বশীল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, “আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতীয়মান করতে আনসারের সকল স্তরের সদস্যকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, শৃঙ্খলা ও জাতীয়তাবোধ প্রদর্শন করতে হবে।”
পরিদর্শনকালে মহাপরিচালক সঞ্জীবন প্রকল্পের জমির কাগজপত্র ও দলিলাদি পর্যালোচনা করেন এবং সম্ভাব্য জটিলতা দ্রুত সমাধানের নির্দেশনা দেন। প্রকল্পের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা এবং নির্বাচনের পূর্বে সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় এই সফরকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে এবং উপস্থিত সদস্যদের মাঝে বিশেষ উদ্দীপনা সৃষ্টি করে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর বরিশাল রেঞ্জের রেঞ্জ কমান্ডার মোঃ আব্দুস সামাদসহ বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সদস্যবৃন্দ।
সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ ডাকাত ডাকাত দুলাভাই বাহিনীর সদস্যরা সুন্দরবনের কয়রা নদীর নাগজোড়া খাল সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে, এক গোপন সংবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ৭ ডিসেম্বর (রবিবার) রাত ৮ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন কয়রা কর্তৃক উক্ত এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে ১ টি একনলা বন্দুক, ১ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ১ রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজসহ ডাকাত দুলাভাই বাহিনীর কাছে জিম্মি থাকা ৪ জন জেলেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধায় কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত জেলেদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয় এবং জব্দকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অপরদিকে, আরও এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৮ ডিসেম্বর (সোমবার) মধ্যরাত ২টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন কয়রা কর্তৃক কয়রা নদীর ময়দাপেশা খাল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
সিয়াম-উল-হক জানান, অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় তল্লাশি করে ৭২ কেজি হরিণের মাংস, ২টি মাথা, ৩০০ মিটার হরিণ শিকারের ফাঁদসহ ৪ হরিণ শিকারিকে আটক করা হয়।
জব্দকৃত হরিণের মাংস, মাথা, শিকারের ফাঁদ এবং আটককৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত রাখতে এবং বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
নীলফামারীর জলঢাকায় বুড়ি তিস্তা নদী খনন করে সেচ সুবিধা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জলঢাকা–ডিমলা সড়কের কালিগঞ্জ বাজার এলাকায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে তারা সড়ক অবরোধে অংশ নেন। এতে প্রায় তিন ঘন্টা ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে বক্তব্য দেন কৃষক শফিক হোসেন, জামাল, আরশাদ ইসলাম, দুলাল হোসেন, জয়নাল আলী, ফরিদ খান, সাব্বির হোসেন সহ আরও অনেকে।
কৃষকেরা জানান, প্রায় ২২ বছর ধরে তারা সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বুড়ি তিস্তা নদী খনন না হওয়ায় সেচ ক্যানেলগুলোতে পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে কালিগঞ্জ মৌজা, গোলনা, বালাপাড়া, মীরগঞ্জ, খেরকাটি, ডিমলা সদর ইউনিয়ন, নাউতারা ও পচারহাট মৌজাসহ ৭টি ইউনিয়নে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে।
বক্তারা দাবি করেন, নদী খনন না হওয়ায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহার করে সেচ দিতে হচ্ছে, এতে উৎপাদন খরচও বাড়ছে। সেচ ক্যানেলের মাধ্যমে বিঘা প্রতি ২শত টাকায় সেচ দেওয়া যায়। কিন্তু ক্যানেলে পানি না থাকায় তাদের দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হচ্ছে সেচের পিছনে। দ্রুত বুড়ি তিস্তা খননের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, বুড়ি তিস্তার জলাধার খনন প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের স্বার্থ আদায়ের জন্য এই কাজে বাধা প্রদান করছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রতিবছর অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন হবে ২৬ লাখ মেট্রিক টন, সাড়ে ১৫ কোটি টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হবে । আর এতে পরিবেশেরও ভারসাম্য রক্ষা হবে। কাজটি কিভাবে শুরু করা যায়, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।