শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

প্রশিক্ষণার্থী কাগজে আছে, বাস্তবে নেই

রাজাপুর মহিলা সংস্থার প্রশিক্ষণকেন্দ্র। ছবি : দৈনিক বাংলা
হাসনাইন তালুকদার, ঝালকাঠি
প্রকাশিত
হাসনাইন তালুকদার, ঝালকাঠি
প্রকাশিত : ৫ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:৫৯
  • রাজাপুর মহিলা সংস্থার প্রশিক্ষণকেন্দ্র

তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প-৪ এর আওতায় ঝালকাঠির রাজাপুরে জাতীয় মহিলা সংস্থার প্রশিক্ষণকেন্দ্রে চলছে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ। ভর্তি-নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি ব্যাচে পৃথক পাঁচটি ট্রেডে ৫০ জন করে মোট ২৫০ প্রশিক্ষণার্থী থাকার কথা এখানে। তাদের প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১২ হাজার টাকা। অভিযোগ উঠেছে, বরাদ্দের এই টাকা লোপাটের জন্যই প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভর্তি ফরম ও হাজিরা খাতায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে ২৫০ জনের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

দৈনিক বাংলার অনুসন্ধানেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে কাগজে-কলমে প্রশিক্ষণার্থীদের ২৫০ জনের তালিকা পূরণের প্রমাণ মিলেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক প্রশিক্ষণার্থী দৈনিক বাংলার কাছে এমন তথ্যের সত্যতাও স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে নামে-বেনামে প্রশিক্ষণার্থী দেখিয়ে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামিরা আক্তার সরকারি বরাদ্দের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ মিলেছে।

নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের আওতায় বর্তমান ব্যাচে চার মাস মেয়াদি বিউটিফিকেশন কোর্স, কেটারিং কোর্স, ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্স ও ফ্যাশন ডিজাইনার কোর্স ট্রেডে নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া ৪০ দিন মেয়াদি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ই-কমার্স কোর্সও রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই কেন্দ্রের যাবতীয় কাগজ ও হাজিরা খাতায় প্রতিটি ট্রেডেই ৫০ জন করে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি দেখানো হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে ভুয়া নামগুলোর মাথাপিছু ১২ হাজার টাকা যাবে প্রশিক্ষণ কর্মকর্তার পেটে। ওই টাকার একটি অংশ সেখানকার ছয়জন প্রশিক্ষক ও নৈশপ্রহরীও পাবেন। এই কেন্দ্রে প্রশিক্ষণার্থীদের টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল অ্যাকাউন্টে না দিয়ে নগদ দেয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন জাতীয় মহিলা সংস্থা ঝালকাঠির জেলা কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন হাওলাদার।

গত ২৮ অক্টোবর বেলা ১১টায় রাজাপুর প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চারটি ট্রেডের প্রশিক্ষণার্থীদের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা চলছিল। এই কেন্দ্রে ছয়জন প্রশিক্ষক থাকার কথা থাকলেও ওই সময় মাত্র দুইজন প্রশিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। এমনকি সেখানকার দায়িত্বরত প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামিরা আক্তার নিজেও অনুপস্থিত ছিলেন। আর ভেতরে তিনটি কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন মাত্র ৪৬ জন নারী।

প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কেন উপস্থিত নেই- তা জানতে চাইলে সেখানে থাকা বিউটিফিকেশন ট্রেডের প্রশিক্ষক শাহানারা খাতুন বলেন, ‘ম্যাডাম ছুটিতে আছেন।’ তাৎক্ষণিক খোঁজ নিয়ে জানা গেল, দুই-তিন দিনে তার কোনো ছুটি মঞ্জুর করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

খোঁজখবর করতে করতেই সেখানে উপস্থিত হন প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামিরা আক্তার। পাঁচটি ট্রেডের জায়গায় চারটি ট্রেডে পরীক্ষা এবং সেই চারটি ট্রেডে ২০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর উপস্থিতির কথা থাকলেও পরীক্ষায় কেন ৪৬ জন উপস্থিত- জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই মাস ক্লাস চালানোর পর কেন্দ্রের নির্দেশে ৪০ দিন মেয়াদি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ই-কমার্স কোর্সটি বন্ধ আছে। তাই ভর্তি ও হাজিরা খাতায় তাদের ৫০ জনের নাম থাকলেও তারা উপস্থিত নেই। বাকি চারটি ট্রেডে ৫০ জন করে ২০০ জন ভর্তি থাকলেও কেন্দ্রের নির্দেশে বিকেলের ক্লাসও বন্ধ রয়েছে। সে কারণে বর্তমানে সকালে ১০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর ক্লাস চলমান রয়েছে। সেই ১০০ জন নারীর মধ্যে বিভিন্ন কারণে আজ পরীক্ষা দিতে আসতে পারেননি অনেকে।’

এদিকে প্রশিক্ষণার্থীদের হাজিরা খাতার কিছু অংশ সংগ্রহ করেছে দৈনিক বাংলা। তাতে দেখা যায়, প্রশিক্ষণার্থীদের উপস্থিতির ঘরে বল পেন দিয়ে সই করানো হয় এবং অনুপস্থিতের ঘরে কাঠ পেনসিল দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেয়া হয়। কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, প্রশিক্ষণার্থীদের অনুপস্থিতির দিনগুলোতে ১৫০ টাকা করে কেটে রাখা হবে। অভিযোগ রয়েছে, কাঠ পেনসিলের ক্রস চিহ্ন রাবার দিয়ে মুছে সই বসিয়ে সে টাকাও তুলে নেয়া হবে। হাজিরা খাতায় কেন কাঠ পেনসিল দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেয়া হলো- সামিরা আক্তার এ প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকেন।

রাজাপুরের কেন্দ্রে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব নারীরাও পরীক্ষা দিচ্ছেন বিউটিফিকেশন ট্রেডে। তবে তাদের কাউকেই কিছু লিখতে দেখা যায়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়, অনেক পরীক্ষার্থী জানেন না তারা কী পরীক্ষা দিতে এসেছেন। তাদের যা লিখতে বলা হয়, তারা কেবল সেটিই লিখে থাকেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই বা তিন হাজার টাকার বিনিময়ে গ্রামের অনেক গৃহিণীকে এনে পরীক্ষা দেয়ানো হয়। অথচ তাদের নামেও বরাদ্দ হবে ১২ হাজার টাকা।

পরীক্ষা কেন্দ্রের একটি কক্ষে গিয়ে দেখা গেছে, ষাটোর্ধ্ব নারীরাও ফ্যাশন ডিজাইনার ট্রেডে পরীক্ষা দিতে এসেছেন। এক প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কোন ট্রেডে পরীক্ষা দিয়েছেন? তিনি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে কোনো উত্তর না দিতে পেরে কেন্দ্র থেকে চলে যান।

ষাটোর্ধ্ব নারীদের পরীক্ষায় উপস্থিত দেখা গেলেও প্রকল্পের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা সহকারী প্রোগ্রামার মো. সাদাত হোসেন জানান, সব ট্রেডে ভর্তিসংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি পাস থাকতে হবে। তাদের বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পের সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন) কাইয়ুম মিয়া মোবাইল ফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আমাদের প্রকল্পের বাজেট মন্ত্রণালয় থেকে অর্ধেক করে দিয়েছে। তাই প্রকল্পে ব্যয় সংকোচন করতে সব প্রশিক্ষণকেন্দ্রে বিকেলের ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে। শুধু সকালের ক্লাসে ১০০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেবেন। তবে রাজাপুর কেন্দ্রে সকালেও ১০০ জন কেন নেই, সে বিষয়ে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হবে।


সাজিদের শেষ বিদায়ে হাজারো মানুষের ঢল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজশাহী প্রতিনিধি

সকাল থেকেই গ্রামের বাতাস ভারী। মসজিদের মাইকে বারবার ভেসে আসছে সেই ঘোষণা- ‘কোয়েলহাট পূর্বপাড়া নিবাসি রাকিব উদ্দীনের দুই বছরের শিশু সন্তান সাজিদ মারা গেছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার নেককিড়ি কবরস্থানের সামনের ফাঁকা মাঠে জানাজা শেষে নেককিড়ি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।’

সবাই গ্রামের রাস্তা ধরে গায়ে পাঞ্জাবি জড়িয়ে মাথায় টুপি দিয়ে আসছেন সাজিদের বাড়ির দিকে। তারা একবার দেখতে চান সেই নিষ্পাপ মুখটা, যে মুখে প্রতিদিন হাসি ছিল, আজ সেখানে নিস্তব্ধতা।

জানাজার মাঠে মানুষের ঢল নামে সকালেই। গ্রামের বৃদ্ধ থেকে শুরু করে স্কুলপড়ুয়া ছেলেরা সবার চোখ ভেজা। কারও কণ্ঠে ফিসফিস, ‘আল্লাহ, এমন মৃত্যু যেন কেউ না পায়।’ সাজিদের ছোট্ট দেহটি যখন সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় আনা হলো, তখন কান্নার রোল পড়ে গেলো চারপাশে। তার মা-বারবার ছুটে আসতে চাইছিলেন; করছেন আহাজারি। লোকজন ধরে রেখেছিল তাকে, কিন্তু কান্না থামাতে পারেনি কেউ।

জানাজার নামাজের ইমাতি করেন কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান। ইমাম সাহেব জানাজা শেষে যখন তাকবির দিলেন, মানুষ হাত তুললো দোয়ার ভঙ্গিতে। হাজারো কণ্ঠে দোয়া অনুষ্ঠিত হলো। সবাই মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন সাজিদের জন্য। একই সঙ্গে তার পরিবারকে আল্লাহ যেন ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন– এমন দোয়াও সবাই করেছেন।

জানাজা শেষে সাজিদের ছোট্ট কফিনটা যখন কবরের দিকে নেওয়া হলো, তখন বাতাস যেন থেমে গেলো, শুধু শোনা যাচ্ছিল কান্নার শব্দ। কান্না করছেন স্বজনরা। একটি শিশুর জানাজায় অংশ নিয়েছে পুরো গ্রাম– এমন দৃশ্য কখনও দেখেননি গ্রামবাসী।

এর আগে গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে সাজিদ গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ৪০ ফুট মাটি খনন করে ৩২ ঘণ্টা পর শিশুটিকে উদ্ধার করেন। এরপর তাকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।


টাঙ্গাইলে মওলানা ভাসানীর জন্মবার্ষিকী পালন

আপডেটেড ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২২:১১
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ১৮৮০ সালের এইদিনে সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের মুক্তি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া এই নেতার জীবনের বড় অংশই কেটেছে টাঙ্গাইলের সন্তোষে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি ছিলেন কিংবদন্তী। কাগমারী সম্মেলন থেকে ফারাক্কা লং মার্চ- সবকিছুতেই তিনি রেখে গেছেন সুদূরপ্রসারী ছাপ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ভাসানী ১৪৫তম জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে।

এদিন সকাল ৯ টার দিকে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষ থেকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মতিউর রহমান, লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আবু জুবাইর, প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. ইমাম হোসেন, রেজিস্ট্রার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. সাজ্জাদ ওয়াহিদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।


ওসমান হাদীর ওপর দুর্বৃত্তদের গুলির ঘটনায় ডাকসুর বিক্ষোভ মিছিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদীর ওপর দুর্বৃত্তদের গুলির ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিক্ষোভ মিছিলটি ডাকসু ভবনের সামনে থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভিসি চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা- ‘আমরা সবাই হাদী হব, গুলির মুখে কথা কবো’, ‘হাদীর বুকে গুলি চলে, প্রশাসন কি করে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

সমাবেশে হাজী মুহম্মদ মুহসিন হল সংসদের ভিপি সাদিক শিকদার বলেন, সহস্র শহিদের বিনিময়ে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি সেই বাংলাদেশ যাদের কাছে দিয়েছি সেই ইন্টেরিম সরকার জুলাই বিপ্লবীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা হাদীর ওপর গুলি করা সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চাই। তিনি বলেন, এক ওসমান হাদীর মৃত্যু হবে, লক্ষ হাদী জন্ম নেবে। আমরা শহীদ তিতুমীরের বংশধর।

ডাকসুর স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এস এম আল মিনহাজ বলেন, ওসমান হাদী ভাইয়ের ঠিক কানের নিচে টার্গেট করে পেশাদার শ্যূটার দিয়ে গুলি করা হয়েছে। হাদীর চিকিৎসা নিয়ে কোনও ধরণের ষড়যন্ত্র যেন না হয় তা নিয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।

ডাকসুর এজিএস মহিউদ্দিন খান বলেন, ওসমান হাদীর সংগ্রাম মূলত আমাদের সংগ্রাম। ওসমান হাদীর সংগ্রাম জুলাইয়ের সংগ্রাম। তিনি শরীফ ওসমান হাদীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন‌।


কুড়িগ্রামে গ্রাম আদালতে ১ বছরে ২৮০০টি মামলা নিষ্পত্তি

সু‌বিধাভোগীদের ৪০ ভাগ নারী
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

সাধারণ গ্রামীণ জনগণকে ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টিতে ‘ভিলেজ কোর্ট’ তথা ‘গ্রাম আদালত’ ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। বিরোধ নিষ্পত্তিতে কুড়িগ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই আদালত। গত এক বছরে জেলায় এই আদালতের মাধ্যমে ২ হাজার ৮৫২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। যার ৪০ ভাগ বিচারপ্রার্থী নারী। বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় সভায় এই তথ্য জানানো হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বি এম কুদরত-এ-খুদার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ-তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের জেলা ব্যবস্থাপক দৌলতুন্নেছার সঞ্চালনায় সভায় জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতরের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা অংশ নেন।

স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় জানানো হয়, গত এক বছরে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) গ্রাম আদালতে ৩ হাজার ৮৫ জন আবেদনকারী মামলা করেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৮৫২টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়। এর মধ্যে সরাসরি ইউপিতে দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা ২ হাজার ৭৫৮। আর জেলা আদালত থেকে ৩২৭টি মামলা গ্রাম আদালতে পাঠানো হয়। বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে ৬৫৩ জন নারী গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচার পেয়েছেন যা মোট বিচারপ্রার্থীর প্রায় ৪০ ভাগ। এ ছাড়াও গত এক বছরে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ ৩৪ হাজার ৬২০ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা সম্ভব হয়েছে।

তবে প্রচারণার ঘাটতি এবং ইউনিয়ন পরিষদের অসহযোগিতার কারণে এই ব্যবস্থা চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে সভায় মত প্রকাশ করেন অংশীজনরা। বর্তমান পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং মামলার আসামি হয়ে পলাতক থাকায় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতিতে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশ এখনও এই আদালতের কার্যক্রম, পরিধি এবং সুফল সম্পর্কে অবগত নয়। ফলে গ্রাম আদালতের লক্ষ্য অর্জন বিলম্বিত হচ্ছে। আদালতের কার্যক্রম আরও বেগবান ও ফলপ্রসূ করতে সভায় মতামত তুলে ধরা হয়।

অংশীজনরা মতামত তুলে ধরে বলেন, ‘প্রচলিত আদালতে মামলা জট কমিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে গ্রাম আদালত অসাধারণ ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এই আদালতের কার্যক্রম বেগবান করতে আদালতের সদস্যদের জন্য সম্মানীর ব্যবস্থা রাখা, গ্রাম আদালত যেসব অভিযোগের বিরোধ নিষ্পতি করতে পারে সেসব অভিযোগ থানায় এবং আদালতে না নিয়ে গ্রাম আদালতে পাঠানো, বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত তাগাদা দেওয়াসহ আদালতের কার্যপরিধি ও সুবিধা নিয়ে ব্যাপক প্রচারণার ব্যবস্থা করতে হবে।’

উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন কাঠামো ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ছোটখাটো বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ‘গ্রাম আদালত অর্ডিনেন্স ১৯৭৬’-এর বিধানের আলোকে গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে কতিপয় ফৌজদারি ও দেওয়ানী বিরোধের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত অনধিক তিন লাখ টাকা মূল্যমানের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে। এই আদালতে আইনজীবী নিয়োগের বিধান নেই।

এই সমস্যার সমাধানকল্পেই স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ইউএনডিপি মিলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতায় গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুবিচার প্রাপ্তিতে কাজ করছে অ্যাক্টিভেটিং ভিলেজ কোর্টস অব বাংলাদেশ তথা গ্রাম আদালত প্রকল্প। ২০০৯ সালে ইউএনডিপির সহায়তায় সরকার বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির এই ব্যবস্থাটি সারা দেশে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের নেতৃত্বে পরিচালিত প্রকল্পটি বর্তমানে তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। এতে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।


আদালত থেকে পালানো আসামি গ্রেপ্তার, বগুড়ার ৭ পুলিশ প্রত্যাহার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ায় আদালত হাজতখানা থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আদালতে কর্মরত সাত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম।

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানা থেকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় হাতকড়া খুলে পালিয়ে যায় পকেটমার শাহীন ওরফে মিরপুর (১৯)। শাহীন শহরতলীর সাবগ্রাম (চানপুর) এলাকার নুর আলমের ছেলে।

পুলিশ সূত্র জানায়, বুধবার রাত ৮টার দিকে শহরের থানারোড এলাকায় পকেটমারার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে মারধর করে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। ভুক্তভোগীরা কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় বৃহস্পতিবার তাকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। জামিন না হওয়ায় আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় এবং তাকে আদালত হাজতখানায় রাখা হয়। সন্ধ্যায় প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় কৌশলে হাতকড়া খুলে পুলিশের সামনেই দৌড়ে পালিয়ে যায় শাহীন।

এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে হাজতখানার ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহীম হোসেন, সহকারী টাউন উপপরিদর্শক (এটিএসআই) মাসুদ রানা, জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন এবং কনস্টেবল আব্দুল জলিল, শহীন মিয়া ও গোলাম মোস্তফাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ ইকবাল বাহার জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে শহরতলীর সাবগ্রাম এলাকা থেকে শাহীন ওরফে মিরপুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।


উত্তরের জনপদে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দ্বিতীয় দিনের মতো মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তেঁতুলিয়া উপজেলাসহ জেলার আশপাশের এলাকায় দ্বিতীয় দিনের মত বয়ে চলেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এর আগে সপ্তাহ জুড়ে ১০ এর ঘরেই ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তবে দিনের তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি।

এদিকে ভোরের দিকেই সূর্যের মুখ দেখা গেলেও হিমালয় থেকে বেয়ে আসা বাতাসের কারণে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে স্থানীয়দের। রাতের তাপমাত্রা কমে দ্বিতীয় দিনের মতো মৃদু শৈত্যপ্রবাহের ফলে শীতের প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ঘনকুয়াশা নেই। হালকা কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমশীতল বাতাসে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। তবে অন্য দিনের মতো বৃহস্পতিবারও ভোরের দিকেই সূর্যের দেখা মিলে। সকালে ঝলমলে রোদ ছড়িয়ে পরলে কমতে থাকে শীতের তীব্রতা। শৈত্যপ্রবাহের কারণে প্রতিদিন বিকেলের পর থেকে উত্তরের হিমেল বাতাস আর হালকা কুয়াশার কারণে কনকনে শীত অনুভূত হয়।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, তেঁতুলিয়া এবং এর আশেপাশের এলাকায় দ্বিতীয় দিনের মতো মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলছে। তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি জানান, আরও ২ থেকে ১ দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।


চাঁদপুরে ইলিশের কেজি ৪ হাজার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুরের বড়স্টেশন মাছঘাটে ফের আকাশছোঁয়া ইলিশের দাম। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ছুটির দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘাটে আসা ক্রেতারা ইলিশের দাম শুনে হতাশ হয়ে খালি হাতে ফিরছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে ইলিশের দাম প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।

ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, দাম অতিরিক্ত বেশি রাখায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে ইলিশ।

ঢাকা থেকে বড়স্টেশন মাছঘাটে আসা ক্রেতা ফাহিম হাসান ও নুর উদ্দিন বলেন, সাধারণ বাজারদরের সঙ্গে এই দামের কোনো মিল নেই। অনেকেই ধারণা করছিলেন, ছুটির দিনে সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা কমবে, কিন্তু বাস্তবে হয়েছে উল্টো ইলিশ আরও দুর্লভ ও দাম আরও বেশি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এক-দেড় মণের বেশি ইলিশ সরবরাহ হয়নি।

ইলিশ বিক্রেতা সম্রাট বলেন, ইলিশ মৌসুম না থাকায় নদীতে ইলিশ কম ধরা পড়ছে। এর জন্য বাজারে সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে। দাম বাড়ার কারণে বিক্রি কমে গেছে। সারাদিন মাত্র ২-৩ পিস বড় ইলিশ বিক্রি হয়। এক কেজি ওজনের ইলিশ ৪ হাজারের ওপরে বিক্রি হয়। আর তার নিচেরগুলো ৩ হাজার ৫০০ থেকে, ৩ হাজার ৭০০ টাকা।

উদ্যোক্তা ইকবাল বাহার বলেন, এই বছরে ইলিশের সরবরাহ খুম কম হয়েছে। শুরু থেকে দাম বেড়েছে, যা আর কমেনি। এখন রেকর্ড দাম ইলিশের। দাম দিয়ে সবার কেনার সক্ষমতা নেই। ক্রেতারা ঘাটে এসেও ইলিশ কিনতে পারছেন না। চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনার তাজা ইলিশ এখন নেই বললেই চলে। আবার মৌসুম শুরু হলে দাম কমতে পারে।


ফেনীতে বিভাগীয় ইজতেমায় জুমার নামাজে মুসল্লির ঢল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীতে বিভাগীয় ইজতেমায় একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করলেন হাজারো মুসল্লি। নামাজ শেষে মোনাজাতে মুসলিম উম্মার শান্তি, সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ফেনী-ছাগলনাইয়া সড়কের বিরিঞ্চি ব্রিকফিল্ড সংলগ্ন মাঠে বৃহৎ এ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হ‌য় ইজতেমার কার্যক্রম।‌

জানা যায়, ইজতেমায় লক্ষাধিক মুসল্লির সমাগমের সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগত মুসল্লিদের জন্য রাণীরহাট এলাকায় মাঠজুড়ে শামিয়ানা টাঙানো, পানির লাইন ও বিদ্যুৎ সংযোগ, সাইকেল গ্যারেজসহ বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। বিশাল আয়তনের এ মাঠে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা শামিয়ানার নিচে অবস্থান নিয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলা ছাড়াও ভারত, মরক্কো, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মেহমানরা এতে অংশ নেন।

জেলার সর্ববৃহৎ এ জুমার নামাজে ইমামতি করেন তাবলিগ জামাতের কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা আনাস বিন মোজাম্মেল।

এর আগে সকালে বয়ান করেন মাওলানা সাদ অনুসারীদের আমীর, তাবলিগ জামাতের আহলে শুরা ও কাকরাইল মসজিদের শীর্ষ মুরুব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম।

আশরাফুল ইসলাম নামে জুমার নামাজে অংশ নেওয়া এক মুসল্লি বলেন, ‌‘সচরাচর এত বড় জুমার জামাতে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়না। সেজন্যই ইজতেমায় হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে জুমার নামাজ পড়েছি। আল্লাহ যে কারোর উছিলায় সবার দোয়া কবুল করবেন আশা করি।’

মাওলানা নুর উদ্দিন নামের তাবলিগ জামাতের এক মুরুব্বি বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলা, বিভিন্ন দেশের মেহমান ছাড়াও শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) স্থানীয়ভাবে ইজতেমায় মুসল্লিদের ঢল নামে। বিশেষ করে বিশাল ময়দানে একত্রে জুমার নামাজ আদায়ে মুসল্লিরা একত্রিত হন। মাঠে পৌরসভার সহযোগিতায় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।


নির্বাচনকে বানচাল করার মতো কোনো শক্তি পৃথিবীতে নেই: প্রেস সচিব

আপডেটেড ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:১৬
শরীয়তপুর প্রতিনিধি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করার মতো কোনো শক্তি পৃথিবীতে নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়ার সুরেশ্বর দরবার শরীফ জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে আছেন। যারা আইন হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করবে এবং আইনশৃঙ্খলা অবনতি করার চেষ্টা করবে, তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। এছাড়া যারা অনৈতিক দাবি নিয়ে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করবে, তাদের এই সরকার কঠোর হাতে দমন করবে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা পতিত স্বৈরাচারের পার্টি, তারা নিজেরাই নির্বাচন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। তারা পলিটিক্যালি শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করবে, কিন্তু তারা সেটা না করে তাদের সরকার ও তাদের কর্মীরা সবাই রাইফেল পিস্তল নিয়ে নেমেছে বাচ্চাকাচ্চা ছেলেদের খুন করার।

প্রেসসচিব বলেন, তারা ভেবেছিলো অনেক লোককে খুন করলে ১৫ বছর চুপ ছিলো, আরও ১৫ বছর সবাই চুপ থাকবে। এখন নিজেরাই তারা নিজেদের আউট করে দিয়েছে।


আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জ্বালানি খাতে নতুন সম্ভাবনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি

শেরপুরে পরিত্যক্ত পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যকে জ্বালানিতে রূপান্তর করে তেল উৎপাদনে সফল হয়েছে শেরপুর পৌরসভা ও তরুণ গবেষক তৌহিদুল ইসলামের যৌথ উদ্যোগ। ২০২৪ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প চলতি বছরের অক্টোবরে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে সফল হয়। বর্তমানে প্রতিদিন ১০০–২০০ লিটার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (বেজওয়েল) উৎপাদন করা হচ্ছে। ২০২২ সালে শেরপুরের অষ্টমতলায় প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ডাম্পিং স্টেশনে দেখা যায়, জমা হওয়া বর্জ্যের ৭০–৮০ ভাগই অপচনশীল পলিথিন ও প্লাস্টিক। এই বিপুল বর্জ্যের কারণে ডাম্পিং স্টেশন ভবিষ্যতে টেকসই থাকবে না- এমন আশঙ্কায় নতুন সমাধান খুঁজতে শুরু করে পৌরসভা। পরিবেশ অধিদপ্তর, স্থানীয় পরিবেশবাদী এবং সমাজকর্মীদের পরামর্শে পৌর কর্তৃপক্ষ যুক্ত হন পলিথিন–প্লাস্টিক গবেষক তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে। শুরু হয় বর্জ্যকে জ্বালানিতে রূপান্তরের গবেষণা।

তৌহিদুল ইসলাম, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও এইচএমএস রিসার্চ সেন্টারের প্রেসিডেন্ট। ছাত্রজীবনে শুরু করা তার গবেষণা তাকে ২০১৮ সালে এনে দেয় আন্তর্জাতিক স্বর্ণপদক। গত বছর তিনি তেল উৎপাদন মেশিন তৈরির কাজ শুরু করেন এবং সেপ্টেম্বরে প্রস্তুত হওয়া মেশিন অক্টোবরে সফলভাবে তেল উৎপাদন করে। ৩০০ কেজি পলিথিন ব্যবহার করতে সক্ষম মেশিনে প্রতিদিন ১০০–২০০ লিটার বেজওয়েল উৎপাদন হচ্ছে। পলিথিন ও প্লাস্টিক পরিষ্কার থাকলে তেলের পরিমাণ বাড়ে। এই প্রক্রিয়ায় শুধু তেল নয়, পাওয়া যাচ্ছে গ্যাস ও কার্বন কয়লাও। রিফাইনারি স্থাপন হলে উৎপাদিত তেল থেকে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল পাওয়া যাবে।

এ পর্যন্ত প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ২১ লাখ টাকা। এর মধ্যে পৌরসভার বিনিয়োগ ৫ লাখ এবং উদ্যোক্তার বিনিয়োগ ১৬ লাখ টাকা। বর্তমানে ডাম্পিং স্টেশনে প্রায় ১০০ টন প্লাস্টিক–পলিথিন বর্জ্য মজুত রয়েছে এবং প্রতিদিন নতুন করে জমা হচ্ছে ৭০০-১৩০০ কেজি।

গবেষকের দাবি, ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করা গেলে ময়লা অপসারণ করে উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব। ভবিষ্যতে ৩০০ কেজির পরিবর্তে ২ হাজার কেজি ধারণক্ষমতার মেশিন বসালে বড় পরিসরে উৎপাদন সম্ভব হবে। তার লক্ষ্য-২০২৭ সালের মধ্যে শেরপুরকে বর্জ্য থেকে জ্বালানি তেল উৎপাদনে দেশের ‘মডেল জেলা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

শেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল কাদের ও পরিবেশবিদ সুজয় মালাকার জানান, পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই এই উদ্যোগ পরিবেশ রক্ষায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।

শেরপুর পৌরসভার বর্জ্য বিশেষজ্ঞ ও সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ শরীফ উদ্দীন বলেন, অপচনশীল বর্জ্য আলাদা করতে পারলে ডাম্পিং স্টেশন টেকসই হবে এবং পচনশীল বর্জ্য থেকে জৈব সার উৎপাদন সম্ভব হবে। তবে বড় পরিসরে উৎপাদন করতে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।

পৌর প্রশাসক আরিফা সিদ্দিকা বলেন, উদ্যোক্তাদের এই উদ্যোগ শেরপুরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক করবে এবং জ্বালানি খাতেও নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে।


বিদ্যুৎ সরবরাহে পূর্ণ প্রস্তুতির দিকে এগোচ্ছে রূপপুর

আপডেটেড ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:৫৪
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সব পর্যায়ের পরিদর্শনে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

ইতোমধ্যে প্রকল্পের পূর্ণ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা সফলভাবে এনপিসিবিএল অপারেশন টিমের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছেন নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জায়েদুল হাসান। হস্তান্তরের পর থেকে অপারেটররা সিস্টেমটি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করছেন এবং এ পর্যন্ত কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দেয়নি বলেও তিনি জানান। এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে রূপপুরের বৈদ্যুতিক কাঠামো ভবিষ্যতে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের পূর্ণ প্রস্তুতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, বর্তমানে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা জাতীয় গ্রিড থেকে রূপপুর সাইটে বিদ্যুৎ গ্রহণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা কমিশনিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। প্রতিদিন জাতীয় গ্রিড থেকে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ এনে সাইটের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিস্টেমের স্থিতিশীল অপারেশন প্রমাণ করছে যে ভবিষ্যতে রূপপুর কেন্দ্র নিজস্ব উৎপাদিত বিদ্যুৎ ও একই নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করবে। অর্থাৎ যে নেটওয়ার্ক আজ গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নিচ্ছে, ভবিষ্যতে সেই নেটওয়ার্ক দিয়েই দেশকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ দেবে কেন্দ্রটি। এই দ্বৈত সক্ষমতা পুরো প্রকল্পকে আরও শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য করে তুলেছে।

উপপরিচালক ড. খালেকুজ্জামান জানান, রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের কমিশনিং কার্যক্রমের অংশ হিসেবে Power Evacuation সংশ্লিষ্ট তিনটি ফ্যাসিলিটি - 00UAB: ৪০০ কেভি জিআইএস Building, 00UAB: ২৩০ কেভি জিআইএস Building এবং 00UAG: অটোট্রান্সফরমার ষ্ট্রাকচার টেম্পোরারি অপারেশনের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। টেম্পোরারি অপারেশনে অন্তর্ভুক্ত করার পূর্বে ফ্যাসিলিটিগুলোর সকল সিস্টেমের Individual Testing I পরিদর্শন যথাযথ কমিশনিং প্রক্রিয়া অনুযায়ী সম্পন্ন করা হয়।

তিনি আরো জানান, টেম্পোরারি অপারেশন গ্রহণের পূর্বে টেষ্ট প্রোগ্রাম অনুযায়ী যেসব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছেঃ ৪০০ কেভি ও ২৩০ কেভি জিআইএস-এর সকল ইন্ডিভিজুয়াল টেস্টিং, ইন্টারলক, প্রোটেকশন ও কন্ট্রোল সিস্টেম টেস্টিং; দুটি অটোট্রান্সফরমারের ইন্সটলেশন রেজিটেন্স, রেশিও টেস্ট, উইন্ডিং রেজিটেন্স, OLTC ফাংশোনালিটি, Relay প্রটেকশন, ইন্টারলক জিইএস কন্ট্রোল সিস্টেম পরীক্ষা; পাওয়ার সাপ্লাই, ভেন্টিলেশন, Instrumentation & Control, ফায়ার ডিটেনশন জিইএস, ওয়াটার-ফায়ার Extinguishing System-এর কার্যকারিতা পরীক্ষা; অবশিষ্ট কাজ শনাক্তকরণ করে Punch List প্রস্তুতকরণ এবং Elimination Deadline নির্ধারণ। সমস্ত পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক হওয়ায় ফ্যাসিলিটিগুলো টেম্পোরারি অপারেশনের জন্য গ্রহণযোগ্য ঘোষণা করা হয় বলে জানান তিনি।

অপারেশনাল ব্যবস্থাপনায় ৫টি শিফটে মোট ২০ জন জনবল নিয়োজিত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি শিফটে রিয়েল-টাইম সিস্টেম মনিটরিং, ওয়াকডাউন, সুইচিং অপারেশন, গ্যাস প্রেসার ও ট্রান্সফরমার প্যারামিটার যাচাই, অ্যালার্ম স্ট্যাটাস পর্যবেক্ষণ এবং জাতীয় গ্রিডের NLDC-এর নির্দেশনা অনুযায়ী পাওয়ার সরবরাহ ও গ্রহণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।

ড. খালেকুজ্জামান জানান, টেম্পোরারি অপারেশন চলাকালে সব সিস্টেম ও সরঞ্জাম স্থিতিশীলভাবে চলছে এবং কোনো উল্লেখযোগ্য অপারেশনাল সমস্যা পরিলক্ষিত হয়নি। সকল প্রোটেকশন, কন্ট্রোল ও সুইচিং সিস্টেম প্রত্যাশিত মান বজায় রেখেছে। শিফট লগ, ইভেন্ট রেকর্ড ও দৈনিক রিপোর্ট যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

এনপিসিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জায়েদুল হাসান জানান, এ বছর রূপপুর প্রকল্পে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)-এর Pre-OSART Mission সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিদর্শন সম্পন্ন হয়েছে। এসব মূল্যায়নে কেন্দ্রের নিরাপত্তা, প্রস্তুতি ও অপারেশনাল সক্ষমতা আন্তর্জাতিক মানে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। রাশিয়ার Concern RosenergoAtom এবং বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার Self-Inspection কার্যক্রমেও রূপপুর প্রকল্প উচ্চমানের প্রস্তুতি প্রদর্শন করেছে।

তিনি আরও বলেন, সব মূল্যায়নে ইতিবাচক সাফল্যের ফলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালানি লোডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধাপে অগ্রসর হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের জন্য এক নতুন ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা করবে। জ্বালানি লোডিং সম্পন্ন হওয়ার পর কেন্দ্রটি এনপিসিবিএল অপারেশন টিমের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হবে। অপারেশনের প্রাথমিক পর্যায়ে রাশিয়ার পারমাণবিক অপারেটিং সংস্থা Concern RosenergoAtom প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে।

তিনি বলেন, রূপপুর প্রকল্পের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার সফল অপারেশন, একের পর এক ইতিবাচক আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরিদর্শন এবং জ্বালানি লোডিংয়ের প্রস্তুতি—সব মিলিয়ে কেন্দ্রটি এখন বাংলাদেশের শক্তি নিরাপত্তার এক নতুন আশার প্রতীক। অপারেটরদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে জাতীয় গ্রিডে রূপপুরের বিদ্যুৎ সরবরাহকে আরও নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ও স্থিতিশীল করে তুলবে। রূপপুর এখন কেবল একটি প্রকল্প নয়-এটি দেশের উন্নয়ন, আত্মবিশ্বাস ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রতীক।


নড়াইলে বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নড়াইল প্রতিনিধি

নানা জাতের মাছ ভোগ করতে না পারায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের তৃণমুলের নেতা নড়াইলের পাতারিয়া বিলের উন্মুক্ত জলাশয়ে বিষ প্রয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে। এতে প্রায় ১০০ মণ মাছ মারা গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুর্গাপুর-চানপুর সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকার মানুষ। এতে এলাকার কয়েকশ নারী-পুরুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নড়াইল পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আলী, নয়নপুর গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান, শাহাবাদ ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মুকুল বিশ্বাস, নয়নপুর গ্রামের কৃষক লোকনাথ বিশ্বাস, প্রদ্যেুৎ বিশ্বাস, দুর্গাপুর গ্রামের সুবোধ লষ্কর অনেকে।

সরেজমিন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাতারিয়া বিলের চারপাশে নড়াইল সদর উপজেলার ছয়টি গ্রামের কৃষক পরিবার বসবাস করেন। বেশিরভাগ মানুষ কৃষিপণ্য উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল। গ্রামগুলো হচ্ছে নড়াইল পৌরসভার দূর্গাপুর, বাহিরডাঙ্গা, ডুমুরতলা, সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের নয়নপুর, চানপুর, বিঞ্চুপুর। কৃষকরা তাদের জমিতে দুই ফসল উৎপাদন ছাড়াও বিল ও বিল সংযুক্ত খালের জলাশয়কে মাছের অভয়াশ্রম হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। সারা বছরই এই খালে পানি ও মাছ থাকে। শুষ্ক মৌসুমে কৃষকরা খালের পানি জমিতে ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করেন। সময় অসময়ে খালের অভয়াশ্রমের প্রাকৃতিক মাছ পারিবারিক কাজে ব্যবহার করে থাকেন।

নড়াইল পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আলী খান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর গ্রামের আজিজুর রহমান এককভাবে খাল দখল করে ছিলেন। অন্য কাউকে মাছ ধরতে দিতেন না। তিনি নিজে ইচ্ছামত খালের অভয়াশ্রমের মাছ বেচা-বিক্রি করতেন এবং ভোগ করতেন।

আজিজুরকে বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সদর উপজেলার জেষ্ঠ্য মৎস্য কর্মকর্তা আবু রায়হান বলেন, সরকারি আইনে সরকারিখাল বা উন্মুক্ত জলাশয়ে পাটা দিয়ে মাছ শিকার করা অবৈধ। তাই এগুলো অপসারণ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া খালে বিষ প্রয়োগে ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


কোটালীপাড়ায় তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখতে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

তরুণ প্রজন্মকে মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে দূরে রেখে সুস্থ বিনোদনের পথ সুগম করতে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ১২ দলীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলার শ্রীফলবাড়ী যুব সমাজের উদ্যোগে শ্রীফলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মোল্লা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডগলাস মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম মোল্লা, সাবেক মেম্বর যোগেন্দ্রনাথ গাইন, সাবেক মেম্বর সুভাষ গাইন, শ্রীফলবাড়ী জামে মসজিদের সভাপতি মো. খোরশেদ আলম মোল্লা, সাইদুর রহমান মোল্লা, সাংবাদিক কালাম তালুকদার, সাংবাদিক রাসেল মোল্লা বাঁধনসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

আয়োজকরা জানান, তরুণদের খেলাধুলায় সম্পৃক্ত করে মাদক, জুয়া ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখাই এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।

উদ্বোধনী খেলায় RO-KO ক্রিকেট একাদশকে ৩ উইকেটে হারিয়ে জয়লাভ করে উত্তর হাজরাবাড়ী ক্রিকেট একাদশ। টসে জিতে উত্তর হাজরাবাড়ী দল প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। RO-KO একাদশ ১০ ওভারে ৭ উইকেটে ৯২ রান করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন বিপ্লব। উত্তর হাজরাবাড়ীর মিঠুন ৫টি এবং সুজন ১টি উইকেট নেন।

জবাবে উত্তর হাজরাবাড়ী একাদশ ১০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৯৬ রান করে জয় নিশ্চিত করে। সুজন সর্বোচ্চ ৩৯ রান তুলেন। বিপ্লব ১টি ও অপু ৩টি উইকেট লাভ করেন।

অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্সের জন্য উত্তর হাজরাবাড়ী ক্রিকেট একাদশের মিঠুন ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ নির্বাচিত হন।

টুর্নামেন্ট শেষে চ্যাম্পিয়ন দলকে ফ্রিজ এবং রানারআপ দলকে টেলিভিশন পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হবে বলে আয়োজকরা জানান।


banner close