শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

ঠেকানো যাচ্ছে না রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

ফাইল ছবি
আপডেটেড
১৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:১৪
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)
প্রকাশিত
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)
প্রকাশিত : ১৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:১৪

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সীমান্ত রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে। রাখাইন এলাকা থেকে বিতাড়িত শতাধিক রোহিঙ্গা পরিবার। দালালদের মতে প্রতিদিন এ সংখ্যা হাজারের ওপরে। সে হিসাবে নতুন করে ৫০ হাজার থেকে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে দালালদের সহযোগিতায় গোপনে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।

মিয়ানমারে জান্তা বাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চলমান সংঘাতে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা এখনো থামেনি। রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দুই দেশের দালালচক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে ২০-৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে গোপনে অনুপ্রবেশের ব্যবস্থা করেই যাচ্ছে এসব দালালচক্র।

এদিকে, অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় আটক করে রোহিঙ্গাদের দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়াও অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের শতাধিক নৌকাকে আটক করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন কোস্টগার্ড ও বর্ডারগার্ড বিজিবি।

সীমান্তে বর্ডারগার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নজরদারি কম এমন পয়েন্ট দিয়েই রাতের আঁধারে দালালরা রোহিঙ্গাদের এ দেশে আনছেন। বিনিময়ে নিচ্ছেন জনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তাই সীমান্তে বিজিবির কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও ঠেকানো যাচ্ছে না নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানান, প্রাণের ভয়ে তারা গ্রাম ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। ওপারে সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় তাদের মতো আরও অনেকে এপারে চলে আসার পথ খুঁজছে। মংডুর নলবাইন্যা ও মেরোংলা এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে আরাকান আর্মি ২০০টি ঘরে আগুন দিয়েছে। এ সময় তাদের গুলিতে ২০ জন রোহিঙ্গা গুরুতর আহত হয়েছে। অনেকে মারাও গেছে। প্রাণে বাঁচতে তারা নাফ নদ পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। জান্তা বাহিনী আগে এসব এলাকায় তাণ্ডব করেনি। এখন মিয়ানমার সরকারের পাশাপাশি বেশি নির্যাতন করছে আরাকান আর্মি। তাদের দলে যোগ না দিলে হত্যার হুমকি দিচ্ছে রোহিঙ্গাদের। নইলে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধের সুযোগকে ব্যবহার করে সীমান্তের দালালরা অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। আমরা সেসব দালালদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে যাতে নতুন করে রোহিঙ্গা দেশে অনুপ্রবেশ না করে।

টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের আটকের পর মিয়ানমারে ফেরত পাঠাচ্ছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড; কিন্তু ফেরত পাঠানো রোহিঙ্গারা কৌশলে আবারও টেকনাফ সীমান্তে ভিড় করছে নানান কৌশলে। ফের ঢুকে পড়ছে বাংলাদেশে। তারা কিছুতেই ফিরে যেতে চাইছে না মিয়ানমারে। রাতের আঁধারে কারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে তাও বোঝা যাচ্ছে না বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর পক্ষ থেকে। তারপরও তারা রোহিঙ্গা প্রবেশ রোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সম্প্রতি কত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে সে-সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য কোনো কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি।

মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সীমান্তের বিশাল একটি অংশজুড়ে রয়েছে জলপথ। এ জলপথই মূলত অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের প্রবেশের মূল জায়গা। রোহিঙ্গারা এ ক্ষেত্রে নাফ নদী ব্যবহার করছে। তারা দুই পারের দালালদের সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে খুব সহজেই এ দেশে ঢুকে পড়ছে।

শাহপরী দ্বীপের স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় কিছু দালাল প্রতিদিন তাদের নিজস্ব ট্রলারে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে যাদের ট্রলার নেই তারা ওপার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের নিজ দায়িত্বে টাকার বিনিময়ে প্রবেশ করাচ্ছেন।

রোববার রাতে গোপনে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন মনির হোসেন ও হোসনে আরা নামের দুই রোহিঙ্গা। তারা জানান, রাখাইন রাজ্যে সুএজাতে তাদের গ্রাম। আরাকান আর্মি ও সরকার বাহিনী বিমান হামলা করে তাদের গ্রাম ধ্বংস করে ফেলছে। তাদের গ্রামের অনেক মানুষ মর্টার শেলের আঘাতে মারা গেছেন। রোহিঙ্গাদের সব গ্রামে আরাকান আর্মি ঢুকেছে। তারা এক মাস আগে গ্রাম খালি করে দিয়েছে। তাদের অনেকেই বাড়ি-ঘর ছেড়ে দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের ওপর অনেক নির্যাতন করছে আরকান আর্মি।

অনুপ্রবেশকারী মনির হোসেন জানান, ‘আরকান আর্মি রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করছে বলে ফেসবুকে প্রচার করে যাচ্ছে; কিন্তু তারাই চায় আমরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাই। তাই তারা বেশি নির্যাতন করছে আমাদের ওপর। তাই প্রাণে বাঁচতে গ্রাম ছেড়ে চলে যাই অন্য জায়গায়। সেখান থেকে হেঁটে হেঁটে চলে আসি। তারপর জোবাইর নামক এক দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৫ লাখ মিয়ানমারের টাকা দিয়ে কথাবার্তা ক্লিয়ার করি। আসার জন্য এক দিন অপেক্ষা করি চরে। পরদিন নৌকা করে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে চুরি করে শাহপরীর দ্বীপের ঘোলার পাড়ায় উঠি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দালালরা ২০-৩০ হাজার টাকার বিনিময় টেকনাফের অরক্ষিত জায়গা দিয়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৭ জন দালালের নাম পাওয়া গেছে যারা টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে। তাদের মধ্যে রয়েছে সাবরাংয়ের মুন্ডার ডেইলের দানু মেম্বার, আব্দুল আমিন, শহিদুল ইসলাম, নবী হোসেন, মনজুর, মৌলভী রফিক, শামসু তেলের দোকানদার, বড়ইতলীর রোবেল, শাহপরীর দ্বীপ জালিয়া পাড়ার শামসুল আলম প্রকাশ শামিম হাসু, শাহপরীর দ্বীপ উত্তরপাড়া মামুন, নাইথ্যংপাড়ার শামসুল আলম, মো. জাকের, কবির আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম, মো. ইউনুছ ওরফে আঙ্গুলী, মো. ইউনুছ ওরফে ইনাইয়া, বড়ইতলী গ্রামের আমীর হোসেন, ফরিদ উল্লাহ, সাবরাং মগপাড়ার আবদুল্লাহ, মো. ইসমাইল ওরফে লেজা, রাসেল, মো. ইব্রাহীম, জিনাপাড়ার আরাফাত, শাহপরীর দ্বীপের করিম উল্লাহ, সানা উল্লাহ, শামশুল আলম, নুর মোহাম্মদ, জোবাইর সাইফুল ইসলাম, মো. শফিক, মুহাম্মদ মান্নান, করিম উল্লাহ, নজির আহমেদ, মো. শফিক, মো. ফারুক, মো. জয়নাল, নুর হোসেন ও মো. সাদ্দাম প্রমুখ। পুলিশের মানব পাচার তালিকায়ও এদের নাম রয়েছে। আছে অনেকের নামে মানব পাচার আইনে মামলাও।

এসব দালাল ২১টি পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসছে। পয়েন্টগুলো হলো- টেকনাফ নাইট্যংপাড়া, জাদিমুড়া, কেরুনতরী, বরইতলী, চৌধুরীপাড়া, তুলাতলী ঘাট, মৌলভীপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং মগপাড়া, লেজিরপাড়া, আচার বনিয়া, জিনাপাড়া, মুন্ডার ডেইল, কচুবনিয়া, খুরের মুখ, মহেষখালীয়াপাড়া, বাহারছড়া ঘাট ও শাহপরীর জালিয়াপাড়া, দক্ষিণপাড়া, জালিয়াপাড়া ও গোলারচর। এসব পয়েন্ট একাধিক মানব পাচার মামলার দালালরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

তবে দালালদের বিষয়ে বিজিবি কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয়। অবশ্য সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকানার পাশাপাশি যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।

প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা। তিনি জানান, ‘সীমান্তে কড়া পাহারা রয়েছে। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ রোধ করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দালালদের বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখব।

দালালের বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি তদন্ত আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা শুনেছি তবে আমাদের নজরে আজও আসে নাই। এর আগেও দালালদের আটক করে মামলা রুজু করে আদালতে পাঠিয়েছি। যদি কোনো দালাল রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

বিষয়:

জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: ডা. তাহেরের বক্তব্য

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা দক্ষিণ প্রতিনিধি

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন সংস্কার চায় না। তারা পুরোনো নিয়মে নির্বাচনের আয়োজন করতে চাইছে এবং অন্তবর্তী সরকার সে দলের ফাঁদে পা দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসাথে আয়োজনের সিদ্ধান্ত জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। আলাদা গণভোট হলে দেশের ৮০ ভাগ মানুষ সংস্কারের পক্ষে রায় দিত। সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন নয়- এটি বিশ্বাসঘাতকতা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বিশাল নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহজাহান, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মুনা কনভেনশন সেন্টারের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ও বায়তুল মামুর মসজিদের ইমাম মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন।

শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে এবং মনির হোসাইন ও রবিউল হোসেন মিলনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভিপি শাহাব উদ্দিন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আমীর মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, পৌর আমীর মাওলানা ইব্রাহীম, শিবির নেতা আলা উদ্দিন, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম, সাবেক সেক্রেটারি শাহ মিজানুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নেতা মাওলানা আবদুল্লাহ আল নোমান, ডা. ফজলুর রহমান, বিভিন্ন মাদরাসার অধ্যক্ষরা ও স্থানীয় নেতারা।


কুমড়ো ও ডালের বড়ি বানিয়ে সফল রূপগঞ্জের ৭০ পরিবার

*৭০টি পরিবার মাসে ৮৪ লাখ টাকার বড়ি তৈরি করছে *স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে বড়ি যাচ্ছে দেশে-বিদেশেও
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

কার্তিকের সোনালি রোদ ঠিকরে পড়ছে। দিগন্তে চোখ পাতলেই দেখা যায় ধানের খেত সোমত্ত হয়ে উঠছে। সবুজ থেকে ধীরে ধীরে হলুদ হচ্ছে ধানগাছের শরীর। ঋতুচক্রে এখন হেমন্ত কাল। কিন্তু উত্তরের হেমন্ত মূলত শীতেরই আগমনী বার্তা দেয়। ঘাসে ঘাসে শিশির বিন্দু কণা। সকালে এখন শীতের আবেশ। সেই আবেশ ছড়িয়ে পড়েছে গর্ন্ধবপুর নওগাঁও গ্রামসহ পুরো উত্তরে। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে শীতের।

শীত মানেই বড়ি দিয়ে আলু ফুলকপির ঝোল, সিম-বেগুন, পাঁচ মিশালি চচ্চড়ি, কচুর শাক, বা কৈ-শোল মাছের ঝাল। আর গরম ভাতে ঘি আর কালোজিরে বা পোস্ত দেয়া ছোট্ট ছোট্ট ডালের বড়ি ভাজা হলে তো এক থালা ভাত নিমেষে শেষ! শীতের খাবারে ভিন্ন স্বাদ আনতে মাছ-সবজিতে বড়ির প্রচলন দীর্ঘদিনের।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী শীতের পিঠাপুলি খাবারের মত বড়ির বেশ কদর রয়েছে। মুখরোচক সুস্বাদু এই খাদ্য অতিযত্ন সহকারে শৈল্পিকভাবে তৈরি করে আসছে রূপগঞ্জের ৫টি গ্রামের প্রায় ৭০টি পরিবার। শীতের শুরু থেকে চার মাস এই বড়ি তৈরির কাজে বেশ ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। ডালের বড়ি মূলত নারীরাই তৈরি করেন। পুরুষরা সহযোগিতা করেন।

কারিগররা বলেন, বাজারে ডালের দাম বৃদ্ধির কারণে এখন বিক্রি কম। তবু বসে নেই এই মাসকলাই-কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগররা। এই বড়ি স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশে-বিদেশে।

কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আত্মীয়-স্বজনের হাত ঘুরে সুস্বাদু বড়ি এখন প্রবাসী বাঙালীদের রসনা তৃপ্ত করছে। এ উপজেলার মানুষ যারা দুবাই, সৌদি আরব, কাতার-ওমান, আরব-আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন তাদের জন্য পাঠানো হচ্ছে এই বড়ি। রূপগঞ্জের ৭০টি পরিবার মাসে প্রায় ৪২শ কেজি ডালের বড়ি তৈরি করে আসছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮৪ লাখ টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, এই বড়ি বানানোর কাজ শুরু হয় ভোর ৫টার দিকে। সেই কর্মযজ্ঞ দেখতে ভোরবেলা রওনা হই সিএনজিযোগে। তারাব পৌর এলাকা থেকে গর্ন্ধবপুর এলাকা। এরপর আঁকাবাঁকা কাঁচা সড়ক ধরে পূর্বে ছুটে চলি। প্রায় আধা কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে না করতেই আটকে গেল দুই চোখ। বাড়ির উঠানে বসে লোকজন পরিষ্কার করছেন টিন। পুরোনো সেই টিনের ওপর কেউবা দিচ্ছেন নারকেল তেলের প্রলেপ। কেউ ফেটিয়ে যাচ্ছেন মিহি করে বেটে নেয়া মাষকলাই। আবার কেউ তৈরি করছেন ডালের বড়ি। বাড়ির নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কিংবা শিশু সবাই কোনো না কোনোভাবে বড়ি বানানোর কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকছেন। এটাই যে সেই নওগাও, তা আর বুঝতে বাকি রইল না।

কারিগররা আরো বলেন, শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাজারে নানা ধরনের সবজির সমাহার দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলের খালবিল নদীতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। এই সময়ে মাছের সাথে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের সবজি বাজারে ওঠে। আর এই মাছ ও সবজি রান্নাতে ব্যবহার হয় সুস্বাদু কুমড়া বড়ি। সেই চাহিদা পূরণ করছে নওগাও, গন্ধবপুর বারোবিঘা, নিমেরটেক, টান মুশরী গ্রামের মাসকলাই ও কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগর।

পরিবারের কাজের ফাঁকে কুমড়া বড়ি তৈরি করে বাড়তি উপার্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন গ্রামের নারী ও পুরুষরা।

নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি কুমড়া বড়ি তৈরি করে শুকানোর জন্য রোদে দিয়েছেন। আর এ কাজে নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও কাজ করছেন। ডাল ভেদে দাম নির্ধারণ হয় কুমড়া বড়ির। ১৮০ টাকা কেজি থেকে শুরু করে ২৫০ টাকা কেজি পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। ভোর থেকে উপকরণ তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে সূর্য উঠা পর্যন্ত চলে এই কাজ। শীতের প্রখর রোদে দুই-তিন দিন শুকিয়ে বাজারজাতের জন্য প্রস্তুত করা হয় কুমড়া বড়ি।

নগরপাড়া এলাকার গৃহবধূ নাজনীন সুলতানা বলেন, শীত আসলে ঘরে ডালের বড়ি থাকা চাই। ডালের বড়ির সাথে ফুলকপি আর কৈ মাছ দিয়ে সুস্বাদু তরকারি তৈরি করি।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জজ বলেন, ডালের বড়ি বা কুমরোর বড়ি আসলেই মজাদার খাবার। দিন দিন এগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের এসব ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রক্ষণা বেক্ষণ করতে হবে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে হবে।


সারিয়াকান্দিতে পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আপন মামার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে জোরপূর্বক জমিদখল, বাবাকে হত‍্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে আহতের বিচার ও নিজের এবং বাবার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে আপন মামার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক নারী।

গত শুক্রবার সকালে সারিয়াকান্দি মডেল প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে আপন মামার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন নারচী ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী এলাকার জয়নাল আবেদীনের মেয়ে শারমিন আক্তার জনি।

লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৮নভেম্বর আনুমানিক সকাল ১১ ঘটিকায় উপজেলার নারচী ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী এলাকায় তার আপন মামা সামছুল মোল্লা, দুলা মিয়া, মুন বাবু, রশিদুল, নাহিদ ও লাইলীসহ বেশ কয়েকজন মিলে তার মা রহিমা বেগম, বাবা জয়নাল আবেদীনসহ তার চাচা-চাচিকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজ করেন এবং বিভিন্ন হুমকি প্রদান করেন। এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার মামার বাহিনী অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে জনির আপন মামা সামছুল মোল্লা জনির বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কুড়াল দিয়ে আঘাত করেন এবং তার মা ও চাচা-চাচিকে রড দিয়ে বেধরক পিটায়। কুড়ালের আঘাতে জয়নাল আবেদীনের মাথায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং অনবরত রক্তক্ষরণ চলতে থাকে। এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে সামছুল মোল্লাসহ তার বাহিনী পিছু হটে। এরপর এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আহতদের প্রথমে সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসাপত্র প্রদান করেন এবং জয়নাল আবেদীনের মাথায় রক্তক্ষরণ বন্ধে ৬টি সেলাই দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এখন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, এর আগেও গত অক্টোবর মাসে এ জমি দখলের উদ্দেশ্যে সামছুল মোল্লার মেয়ে জামাই নাহিদের নেতৃত্বে বগুড়া থেকে প্রায় শতাধিক সন্ত্রাস বাহিনী জয়নাল আবেদীনকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দেয়। একই দিনে সন্ত্রাস বাহিনী ধারালো অস্ত্র দিয়ে জমিতে রোপনকৃত ১৫টি বনজ ও ফলজ বৃক্ষ কর্তন করে এবং এরকমই গাছের মতো তাদের দেহ থেকে মাথা আলাদা করার হুমকিও প্রদান করে। এটা সমাধান করার জন্যে মাত্র ৭দিন সময় বেঁধে দেয় সন্ত্রাসরা। সাত দিনের মধ্যে আমরা তাদের কথা মতো জমি না ছাড়ার পেক্ষিতে গত ৮নভেম্বর শনিবার এই হামলার ঘটনা ঘটায়।

সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শারমিন আক্তার জনি তাদের পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ওই পরিবারের কোনো ক্ষতি হলে সামছুল মোল্লাসহ তার বাহিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী থাকবে বলেও তিনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।


আটক আসামির বক্তব্য প্রচার: রাজশাহী পুলিশ কমিশনারকে আদালতে তলব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজশাহী প্রতিনিধি

বিচারকের ছেলেকে হত্যা ও স্ত্রীকে আহত করার ঘটনায় পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামির বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচারের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে ১৯ নভেম্বর আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার সকালে মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রশীদ এ আদেশ দেন।

আদেশে বলা হয়, মিডিয়ায় প্রচারিত বিভিন্ন সংবাদ থেকে আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে, বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় অভিযুক্ত লিমন মিয়া কৌশলে প্রবেশ করে তার ছেলে তাওসিফ রহমানকে (১৭) ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত ও শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এছাড়া তাঁর স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এর প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল থেকে লিমন মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যায়, লিমন মিয়া পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেয় যা আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বনাম রাষ্ট্র ৩৯ বিএলডি ৪৭০সহ বিভিন্ন মামলায় প্রদত্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে মিডিয়ার সামনে বক্তব্য প্রদান করার সুযোগ দেওয়ায় কেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।


হ্যান্ডকাপসহ পালালো আ.লীগ নেতা, সাঁড়াশি অভিযানে পুলিশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় আক্রমণ করে ক্যান্ডকাপসহ পালিয়েছেন এক আ.লীগ নেতা। তাকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে পুলিশ। রাতভর অভিযানের পরও তাকে ধরা যায়নি। পলাতক জসিম উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য।

এরআগে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পুটিজুরী বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের কিছুক্ষণ পরই জসিম মেম্বার ও সহযোগীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে পুলিশের এসআই মহসিন রেজা সৌরভ আহত হলে জসিম মেম্বার পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। স্থানীয়রা জানান, পুলিশ জসিম মেম্বারকে গ্রেপ্তার করার পরে সে চিৎকার করে উঠলে তার সহযোগীরা তাকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে অস্ত্রসহ হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি একাধিক মামলার আসামি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন।

বাহুবল মডেল থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে জসিম মেম্বারকে ধরতে গেলে সে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। আর হ্যান্ডকাপসহ পালিয়ে যাওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।


ভোরের আলো ফোটার আগেই ফ্ল্যাটে মিললো স্ত্রীর লাশ, গুরুতর আহত স্বামী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরের কোনাবাড়িতে শনিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই ফ্ল্যাটে মিলেছে স্ত্রীর লাশ। এ সময় গুরুতর আহত স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শনিবার ভোরে বাইশমাইল এলাকার নওয়াব আলী মার্কেট এলাকার স্থানীয় একতা টাওয়ারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রহিমা খাতুন ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার আমতৈল গ্রামের কসাই এমরান হোসেনের স্ত্রী । তিনি একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, ইমরান কসাই এর কাজ করেন। তার স্ত্রী রহিমা খাতুন ও মেয়ে শারমিনকে নিয়ে বাইমাইল এলাকায় একতা টাওয়ারের ৫ম তলার ফ্ল্যাটে ভাড়ায় বসবাস করতেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে অজ্ঞাত পরিচয় দুর্বৃত্তরা ওই বাসায় প্রবেশ করে ইমরান ও তার স্ত্রীকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই রহিমা খাতুনের মৃত্যু হয়। শনিবার ভোরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইমরানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ও স্ত্রীর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), সিআইডিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কোনাবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, লাশ উদ্ধারের কিছুক্ষণ পর তল্লাশি চালালে স্বামী এমরান হোসেনের পালস পাওয়া যায়। তাই তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার স্ত্রী রহিমার লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের মেয়ে শারমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


লক্ষ্মীপুরে আগুনে পুড়লো ৬ দোকান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজারে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডে ৬টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) গভীর রাতে বাজারের তেমুহনীতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা জানায়, আজাদের সিএনজি অটোরিকশার গ্যারেজে বিদ্যুতের শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন আশে পাশের দোকান গুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় প্রায় ১ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগেই ৬টি দোকান পুড়ে গেছে।

লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রঞ্জিত কুমার সাহা জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি।


জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে রাজধানীতে ৫ শতাধিক তরুণদের ধর্মঘট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিশাল ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক’ (বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট) অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ-এর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ১৩ যুব সংগঠনের পাঁচ শতাধিক তরুণ জলবায়ু কর্মী এই সমাবেশে যোগ দিয়ে একটি সবুজ, ন্যায্য ও সমতাপূর্ণ বিশ্বের দাবি জানিয়েছে।

সমাজের সর্বস্তরের তরুণ জলবায়ু কর্মীরা একত্রিত হয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচার-কেন্দ্রিক পদক্ষেপের দাবি জোরদার করেছেন। তরুণরা বিভিন্ন রঙিন ফেস্টুন, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে তাদের কণ্ঠকে জোরালো করে তুলেছে। জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ করা; জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ স্থানান্তর করা এবং সবার জন্য সবুজ, সমতাপূর্ণ, ন্যায্য ও টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

তরুণ জলবায়ু কর্মীরা সম্মিলিতভাবে ন্যায্য রূপান্তরের এজেন্ডাটি পুনঃউল্লেখ করে দাবি জানিয়েছে, কপ-৩০ যেন একটি সিদ্ধান্তমূলক কপ হয়, যেখানে গ্লোবাল সাউথের জনগণের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হয়। তারা জোর দিয়ে বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনা এবার ব্যর্থ হওয়া উচিত নয়। বিশ্বনেতাদের কাছে ফাঁকা প্রতিশ্রুতি থেকে বেরিয়ে এসে সুনির্দিষ্ট ন্যায়বিচার-কেন্দ্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বৃহত্তর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে তারা।

এই ধর্মঘটে কেবল ঢাকা নয়, খুলনা, নেত্রকোনা, বান্দরবান, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, পটুয়াখালী, ভোলা, রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, হবিগঞ্জ, নোয়াখালী, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, কুড়িগ্রাম, টেকনাফ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ ২৪টিরও বেশি জেলা থেকে এবং গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম লোকাল ইয়ুথ হাবের হাজারেরও বেশি অ্যাক্টিভিস্ট ও তরুণরা ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’-এর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেয়।

দেশজুড়ে এই প্রাণবন্ত ও শান্তিপূর্ণ জলবায়ু পদযাত্রায় তরুণরা জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং ন্যায্য ও সমতাপূর্ণ রূপান্তরের জন্য তাদের আন্দোলনকে পুনরুজ্জীবিত করতে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে স্লোগান দেয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: জাস্ট ট্রানজিশন নাউ, ফান্ড আওয়ার ফিউচার, ক্লাইমেট ফাইন্যান্স, স্টপফসিলফুয়েল, ক্লাইমেট জাসটিস নাউ, পে আপ ফর লস অ্যান্ড ড্যামেজ, ক্লাইমেট স্ট্রাইক, অ্যান্ড ফসিল ফুয়েল।


মোহাম্মদপুরে কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণে ককটেল উদ্ধার

অভিযানে বিপুলসংখ্যক ককটেল ও ককটেল তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল তৈরির গোপন কারখানার সন্ধান পাওয়ার পাশাপাশি ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার জেনেভা ক্যাম্পে গোপন ককটেল তৈরির একটি কারখানায় অভিযান চালায় পুলিশ।

মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ৩৫টি ককটেল ও ককটেল তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ আগামী ১৭ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে ককটেল তৈরি করছিল। ককটেলগুলো রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহের কথা ছিল।


স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশনের ঘর পেলেন ভ্যানচালক মমিন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা দক্ষিণ প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অসহায় ভ্যানচালক আবদুল মমিনের হাতে নতুন টিনসেড ঘর তুলে দিয়েছে স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশন। শুক্রবার সংগঠনটির ‘আশ্রয়ন প্রকল্প’-এর উদ্যোগে জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী সাতঘড়ীয়া গ্রামে ঘর পেয়ে খুশিতে আবেগাপ্লুত হন তিনি।

ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মোনাজাত করেন উপজেলা সম্মিলিত ওলামা পরিষদের সভাপতি ও চিওড়া আজগরিয়া ফাযিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আনোয়ার উল্লাহ। স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশনের পরিচালক মনির হোসেন খোকন, চিওড়া ইউনিয়ন ব্লাড ডোনেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ হোসেন নয়ন, পাঁচরা জনকল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নুর মোহাম্মদ সুমন, উপদেষ্টা আবুল হাশেমসহ সংগঠনটির সদস্য ও গ্রামবাসী।

নতুন ঘর পেয়ে আবদুল মমিন বলেন, ‘ভ্যান চালিয়ে কোনোমতে সংসার চলত। টাকার অভাবে জরাজীর্ণ ঘরে থাকতে হতো। এই নতুন ঘর পেয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি এবং স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশনের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জানান, আবদুল মমিনের আবেদন পেয়ে সরেজমিন পরিদর্শনের পর প্রবাসী ও দেশের মানবিক ব্যক্তিদের সহায়তায় ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর আগে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসহায় পরিবারকে আরও পাঁচটি নতুন ঘর প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের দেওয়া অনুদান যথাযথভাবে পৌঁছে দিতে আমাদের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।


কুমিল্লায় ৪০০ এতিম ও দুস্থ পরিবারে কাতার চ্যারিটির খাদ্য সহায়তা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা দক্ষিণ প্রতিনিধি

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার খুরুইল বুটিয়াকান্দি দরবার শরীফে প্রতিষ্ঠিত সাখা অরফেনজ সেন্টারের উদ্যোগে ৪০০ এতিম ও দুস্থ পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে কাতার চ্যারিটি। শুক্রবার দুপুরে দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে এ মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দরবার শরীফের পীর ড. শাহ মো. এনামুল হক আল আজহারী। প্রধান অতিথি ছিলেন কাতার চ্যারিটির কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. আহমেদ আমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন অরফেনজ ডিরেক্টর ড. আব্দুল কাদের।

বিতরণ কার্যক্রমে আরও উপস্থিত ছিলেন পীরজাদা মাওলানা এমদাদুল হক, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। সভাপতির বক্তব্যে ড. শাহ মো. এনামুল হক আল আজহারী বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে এবং রমজান মাসকে সামনে রেখে এতিম ও দুস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কাতার চ্যারিটির প্রতি কৃতজ্ঞ। এই সহায়তা ৪০০ পরিবারের জন্য বড় স্বস্তি।’

অতিথিরাও সমাজসেবামূলক এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আশা প্রকাশ করেন।


আমতলীতে পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন

ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৫ জন আটক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনার আমতলীতে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে গেছে স্বর্ণা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মালিক পক্ষ। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পৌর শহরের ফেরিঘাট সড়কের গাজীবাড়ির সামনে পার্কিং অবস্থায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর বন্দরের শহীদ দেওয়ান দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে পরিবহন ব্যবসা করছেন। তার মেয়ে স্বর্ণার নামে তৈরি বাসটি বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কে চলাচল করত। ঘটনার রাতে ফেরিঘাট সড়কে ৮টি বাস পার্কিং ছিল। সামনের অবস্থানে থাকা স্বর্ণা পরিবহনের বাসটিতে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিলে মুহূর্তেই পুরো গাড়িটি পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও ততক্ষণে বাসটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতাউর রহমান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পারভেজ খান, পৌর যুবলীগ সদস্য তন্ময় গাজী, কাওসার রনি ও সগির মল্লিককে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

বাস মালিক শহীদ দেওয়ান অভিযোগ করে বলেন, দুর্বৃত্তরা আমার জীবনের সঞ্চয় পুড়িয়ে দিয়েছে।

তার ছোট ভাই ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা বাতেন দেওয়ান বলেন, পরিকল্পিতভাবেই এই অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমি বিএনপি করি বলেই আমাদের বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।

বরগুনা বাস মালিক সমিতির লাইন সম্পাদক অহিদুজ্জামান সজল মৃধা জানান, মালিক সমিতির পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং ক্ষতিপূরণের বিষয়েও আলোচনা চলছে।

আমতলী ফায়ার সার্ভিসের ওয়ারহাউস ইন্সপেক্টর মো. হানিফ বলেন, দ্রুত গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে আরও বড় ক্ষতি হতো।

আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। আরও যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


তেঁতুলিয়া সীমান্তে নতুন পর্যটন স্বর্গ গড়ে উঠছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তেতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি

সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় গড়ে উঠছে একের পর এক নতুন পর্যটন আকর্ষণ। এরই মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে তেঁতুলিয়া সদর ও শালবাহান ইউনিয়নের সীমানায় অবস্থিত কুমারটুল এলাকার নোম্যানস ল্যান্ড। সীমান্তঘেঁষা এই স্থানটি এখন পর্যটকদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠছে ছোট্ট ভারত নামে।

তেঁতুলিয়ায় প্রবেশের আগে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্ত ভাগ করা ৪৩৬ নম্বর মূল পিলারকে ঘিরে গড়ে উঠেছে এক অনন্য প্রাকৃতিক দৃশ্যপট। একদিকে বাংলাদেশের শান্ত, সবুজ গ্রামীণ প্রকৃতি- অন্যদিকে ভারতের বিস্তীর্ণ সমতলভূমির চা-বাগান ও সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া। উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিরাপত্তার মাঝেও প্রতিদিনই এখানে ভিড় জমছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভ্রমণপিপাসু মানুষের।

সরেজমিনে দেখা যায়, নোম্যানস ল্যান্ডের পাশ দিয়ে যাওয়া তেঁতুলিয়ার মূল সড়কের পাশে সবুজে মোড়ানো চারপাশ, সীমান্ত পিলারের অপর পাশে ভারতের চা-বাগানের সারি আর দেখা মিলছে ভারতীয় সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া। দৃশ্যটি এতটাই মনোমুগ্ধকর যে পর্যটকদের ভাষায়, একবার না দাঁড়ালে যেন ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কেউ তুলছেন ছবি, কেউ ভিডিও করছেন- সব মিলিয়ে জায়গাটি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এক, চেক-ইন স্পট।

ঘুরে আরো দেখা গেছে, শীতের আগমনী বার্তা আর হেমন্তের নরম রোদে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর সীমান্তের এ এলাকাটি। কেউ তুলছেন স্মৃতি-বন্দি ছবি, কেউবা নিরাপদ দূরত্ব থেকে ভারতের চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন আর ছবি তুলছেন।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা নুসরাত জাহান বলেন, আমরা মূলত কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে এসেছি। কিন্তু সীমান্তের এই জায়গায় এসে মনে হলো, না এসে থাকলে ভ্রমণটা অসম্পূর্ণ থাকত। এখানে দাঁড়িয়ে ভারতের চা-বাগান দেখা এক অনন্য অভিজ্ঞতা। পরিবার নিয়ে মজা করার পাশাপাশি ছবি তুলছি।

রাজশাহী থেকে আসা মঞ্জুরুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘আমরা মূলত সীমান্তের খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছি- একদম ভারতীয় মাটির সামনেই। সবকিছু মিলে দারুণ লাগছে।’

বগুড়া থেকে বাইক নিয়ে আসা পর্যটক অরজুন রায় বলেন, ‘আমরা চারটি বাইক নিয়ে ঘুরতে এসেছি। এই জায়গাটা অন্যরকম। তাই সবাই মিলে এখানে ছবি তুলছি।’

স্থানীয়রা জানান, এলাকাটি এখন ফটোগ্রাফার, ভ্রমণব্লগার ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের নতুন প্রিয় জায়গা। সকাল কিংবা বিকেলের আলোয় সীমান্তের মনোরম দৃশ্য ধারণ করতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন অনেকে।

এ নিয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, তেঁতুলিয়ায় পর্যটকের আগমন বেড়েছে। সামনে আরও বাড়বে। তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা তৎপর রয়েছে। একই সাথে সীমান্ত নিরাপত্তায় কাজ করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি সদস্যরা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পর্যটন মানচিত্রে তেঁতুলিয়ার রয়েছে বিশেষ অবস্থান। বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা খালি চোখে দর্শন ছাড়াও এখানে রয়েছে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, সমতলের বাংলার বিস্তৃন্য মাঠজুড়ে সমতলের চা-বাগান, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো ও মহানন্দা নদীসহ বিভিন্ন স্থাপনা। সব মিলিয়ে তেঁতুলিয়া এখন যেন উত্তরবঙ্গের প্রকৃতি রাজধানী- আর নতুন সংযোজন এই ছোট্ট ভারত নামের সীমান্ত এলাকা।


banner close