সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কেএনএফের দুই সদস্য নিহত

ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৪ জুলাই, ২০২৪ ২১:১৮

বান্দরবানের রুমায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) দুই সদস্য নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার সকালে রুমা উপজেলার সৈকত পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, বান্দরবানের রুমা উপজেলার সৈকত পাড়া এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে কেএনএফের দুজন সদস্য নিহত হয়েছে। এ সময় অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অন্য সরঞ্জমাদি জব্দ করা হয়।

বিষয়:

জামালপুরে পরিক্ষা বন্ধ করে কর্ম বিরতিতে মাধ্যমিক শিক্ষকরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বৈষম্যের প্রতিবাদে ও ৪ দফা দাবী বাস্তবায়নের লক্ষে পূর্ন কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই জেলার সবগুলো সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ নিজ নিজ বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে করে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করবেন তারা। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বন্ধের দিনগুলোতে পরীক্ষা কার্যক্রম চালানোর কথা জানান শিক্ষকরা।
চার দফা দাবী গুলো: পৃথক অধিদপ্তরে শিক্ষকদের এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড ধরে ৪ স্তর বিশিষ্ট পদ সোপান। বকেয়া টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রদান। দীর্ঘদিন প্রমোশন বঞ্চিত শিক্ষকদের দ্রুত প্রমোশনের ব্যবস্থা করা ও অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য অ্যাডভান্স ইনক্রিমেন্ট আগের মত বহাল রাখার দাবি জানান।


সেন্টমার্টিন নৌ- রুটে স্পিডবোট ডুবি: মা–মেয়ের করুণ মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ–রুটে নাফ নদীর মোহনায় স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় মা–মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপমুখী স্পিডবোট নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে উল্টে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন-সেন্টমার্টিন পূর্বপাড়ার বাসিন্দা মরিয়াম খাতুন (৩৫) ও তাঁর ৫ বছর বয়সী মেয়ে মাহিমা।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন,“সেন্টমার্টিন থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী স্পিডবোট নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় পৌঁছালে প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে উল্টে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে কাছাকাছি থাকা একটি স্পিডবোট গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে। এতে মা–মেয়ে দুজন প্রাণ হারান।”

নিহত মরিয়ামের ভাই বশির আহমেদ জানান,“বোন আর ভাগনিটিকে নিয়ে টেকনাফে ফিরছিলাম। হঠাৎ ঢেউ এসে স্পিডবোট উল্টে দেয়। পরে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বোনের ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল—সেই পথেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।”

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আসিফ আলভী বলেন,“হাসপাতালে আনার আগেই মা–মেয়ে দুজনের মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় আহত আরও দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিব হাসান চৌধুরী বলেন,“দুর্ঘটনায় দুজন মারা গেছেন। কীভাবে স্পিডবোটটি উল্টে গেল, তা তদন্ত করা হচ্ছে।”


কেশবপুরে ভেজাল সারবিরোধী অভিযান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেশবপুর প্রতিনিধি

রবিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর ২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশোরের কেশবপুর উপজেলায় ভেজাল সারবিরোধী বিশেষ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শরীফ নেওয়াজ। প্রসিকিউশনে ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

অভিযান চলাকালে ভেজাল সার বিক্রির দায়ে সাগর দত্ত কাটি গ্রামের নলিনী কান্ত বৈরাগীর পুত্র সুশান্ত বৈরাগী (৫৪)–কে ভোক্তা অধিকার ও সংশ্লিষ্ট আইনের আওতায় ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা জরিমানা করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে আদায় করা হয়। পাশাপাশি জব্দ করা ভেজাল সার ঘটনাস্থলেই বিনষ্ট করা হয়।

জনস্বার্থে ভেজালবিরোধী এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।


খুলনায় আদালতের সামনে দুজনকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খুলনা প্রতিনিধি

খুলনায় আদালতের সামনে প্রকাশ্যে দুইজনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি অস্ত্র মামলায় হাজিরা দিতে আসেন রূপসার বাগমারা এলাকার রাজন ও হাসিব।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানা, জামিনে থাকা ওই দুই আসামি আদালতে হাজিরা দিয়ে আদালত ফটকের সামনে মোটরসাইকেল রেখে চা পান করতে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় চার থেকে পাঁচজন দুর্বৃত্ত হেঁটে এসে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে তারা দুজন মাটিতে পড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে তাদের। দুর্বৃত্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত দুজনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
হাসপাতালে পৌঁছানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।
এদিকে, এ ঘটনার কারণে পুরো আদালত চত্বরে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আদালতের আইনজীবীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে খুলনা সদর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জামিনে থাকা দুই আসামি হাজিরা শেষে আদালত ফটকের সামনে মোটরসাইকেল রেখে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় চার থেকে পাঁচজন হামলাকারী হেঁটে এসে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।’


ভেলা-বরিশাল সেতুর দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাকিব আসলাম, ইবি

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভেলা-বরিশাল সেতুর দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ইবি শিক্ষার্থীরা। রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, বরিশাল জেলাকে ভোলা জেলার সাথে যুক্ত করা ২২ লাখ ভোলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। ভোলা জেলা বাংলাদেশের একটি ব-দ্বীপ এলাকা যেখানে ৫৬ লাখ কোটি টাকার গ্যাস মজুত রয়েছে। এখান থেকে রাষ্ট্র নিচ্ছে কিন্তু আমাদের সহযোগিতা করছে না। আমরা চিকিৎসা ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি। একটি রোগী যদি ভোলা থেকে রেফার করা হয় বরিশালে কিন্তু নদীতে ঝড়-তুফানের কারণে ওই স্থানে তাকে মৃত্যুর শয্যায় শয্যায়িত হয়ে হয়। একজন শিক্ষার্থীকে চাকরি পরিক্ষার জন্য রাজধানীতে সঠিক সময় উপস্থিত হতে পারছে না কারণ রাতে লঞ্চ পারাপার বন্ধ থাকে।

তারা আরও বলেন, ভোলা ও বরিশাল জেলায় সেতু এখন সময়ের দাবি। ইন্টিরিম সরকারকে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। এদিকে সেতু উপদেষ্টা ভোলা জেলায় গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিল যে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে কার্যক্রম শুরু করবেন। কিন্তু তারা প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে পারেন নাই। তারা অজুহাত দিচ্ছেন পরিবেশের নাকি সমস্যা হবে। আগে মানুষকে বাঁচাতে হবে। ভোলা জেলা থেকে আপনারা সম্পদ আহরণ করছেন; কিন্তু বিনিময় কী দিচ্ছেন? ১৭ হাজার কোটি টাকার সেতু স্থাপন করে সহযোগিতা করতে পারছেন না। ইন্টিরিমের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো আরও সমৃদ্ধ করতে ভোলা জেলায় সেতু স্থাপন করে আশার আলো দেখাবে বলে প্রত্যাশা করি।


ফেনীতে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি গুরুত্বপূর্ণ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীতে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আসামি গ্রেপ্তার, প্রসেস জারি, তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান, মেডিকেল সার্টিফিকেট ও চার্জশিট দাখিল, ফৌজদারী কার্যবিধি ও মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। গত শনিবার বিকেলে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ছালামত উল্লাহ এর সভাপতিত্বে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।

ওই কনফারেন্সে ফেনী জেলা প্রশাসক এর প্রতিনিধি, পুলিশ সুপার এর প্রতিনিধি, সিভিল সার্জন এর প্রতিনিধি, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার, সহকারী পরিচালক, বিজিবি, ব্যাটলিয়ন ৪, ফেনী, র্যাব-০৭ এর প্রতিনিধি এবং জেলার বিভিন্ন সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তাসহ ফেনী জেলায় কর্মরত সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেটরা, সিআইডিসহ সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং তদন্তের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য ইউনিটের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ওই কনফারেন্সে ফোকাল পার্সন হিসেবে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট কাজী মো. আবু জাহের বাদল।

কনফারেন্সে আদালত চত্বরসহ অন্যান্য সরকারি অফিসের নিরাপত্তা জোরদার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ ছাড়াও কনফারেন্সে আসামি গ্রেপ্তার, প্রসেসজারী, তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান, মেডিকেল সার্টিফিকেট ও চার্জশীট দাখিল ও পোস্টমর্টেম রিপোর্টসহ সাক্ষী উপস্থাপন নিয়ে আলোচনা হয়।

কনফারেন্সে বিজ্ঞ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ছালামত উল্লাহ আদালত চত্বরের নিরাপত্তাসহ সরকারি অফিসসমূহের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ সুপারের প্রতিনিধিকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন।

মামলার সিংহভাগ কাজই তদন্তকারী সংস্থা করে থাকেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সাক্ষীদের সাক্ষ্য, মেডিকেল সনদ, আলামত জব্দকরণ, রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন সংগ্রহ, ডিএনএ টেস্ট, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, ভিসেরা রিপোর্ট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, ভিকটিমের জবানবন্দি, বিশেষজ্ঞের মতামত, এজাহারকারী/ নালিশকারীর বক্তব্য রেকর্ড ও সংগ্রহে বিচ্যুতি হলে মামলায় বিরূপ ফল হয়। এজন্য সকল তদন্তকারী সংস্থা ও এজেন্সিকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ

করে দ্রুত মামলা নিস্পত্তির স্বার্থে মেডিকেল সনদ সরবরাহসহ পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট দ্রুত সরবরাহের জন্য সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিকে আরও দায়িত্ববান হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।

চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্রুত মামলা নিস্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট মামলার সাক্ষী উপস্থাপন এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলাসমূহ গুরুত্বসহকারে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট বিচারকদেরকে নির্দেশনা প্রদান করেন।


দেশজুড়ে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিভিন্ন জেলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি, সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিল, মিলাদ, কোরআন খতম, নফল রোজা এবং মানবিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দেশজুড়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ, ধর্মীয় শিক্ষার্থী এবং বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতারা এসব কর্মসূচিতে অংশ নেন।

জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর;

শান্ত শিফাত, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপির আয়োজনে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের বিএনপির কার্যালয়ে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ শাহজাহান আকন্দ, পরিচালনা করেন সদস্য সচিব লুৎফর রহমান। দোয়া পরিচালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আবুল হোসেন সরকার (আবুল মুন্সী)। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরপুর-৩ (ঝিনাইগাতী-শ্রীবরদী) আসনের সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল।

আহ্বায়ক শাহজাহান আকন্দ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রী নন- তিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রতীক। তার প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল সাধারণ মানুষের অধিকার, ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্রের সুশাসনের জন্য। আজ তিনি গুরুতর অসুস্থ। একজন তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে চিকিৎসার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম উদাহরণ। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের প্রিয় নেত্রীকে সুস্থতা দান করেন। তার সুস্থতা দেশের মানুষকে নতুন করে আশার আলো দেখাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঝিনাইগাতী উপজেলা বিএনপি অতীতের মতো ভবিষ্যতেও নেত্রীর মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। নেত্রীকে সুস্থ দেখতে আমরা সবাই ব্যাকুল অপেক্ষায় আছি।’

সদস্য সচিব লুৎফর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা- এসবের প্রতিটি আন্দোলনের সামনে ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। দেশ ও জনগণের স্বার্থে তার ত্যাগ-অবদান তুলনাহীন।’

তিনি আরও বলেন, ‘নেত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা শুধু বিএনপির বিষয় নয়; এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষাকারী প্রতিটি মানুষের আবেগের বিষয়। আমরা চাই আমাদের নেত্রী সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসুক। দেশের সকলের কাছে আমাদের দেশনেত্রীর দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ তায়ালা তাকে দ্রুত সুস্থ করে আবারও বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ে নেতৃত্ব দেওয়ার শক্তি দেবেন।’

মাহফিলে উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। শেষে বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি, দীর্ঘায়ু এবং দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল ফরিদপুর জেলা শাখার আয়োজনে বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও সুস্থ্যতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিকাল সাড়ে ৪ টায় জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল ফরিদপুর থানা শাখা কার্যালয়ে এই দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

দোয়া মাহফিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ফরিদপুর জেলা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) মাসুদুর রহমান মাসুদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গি। এ সময় ফরিদপুর জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান শেখ মানা, সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন লাভলু, যুগ্ম সম্পাদক রউফুন আলম লিমন, সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম, সহসম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান রিপনসহ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ফরিদপুর জেলা শাখার অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া মাহফিল পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও সুস্থতা কামনা করা হয়। বক্তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে জয় যুক্ত করার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

একই সাথে ফরিদপুর ৩ সদর আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী চৌধুরী নায়াব ইউসুফকে ধানের শীষ মার্কায় ভোট দিয়ে জয় যুক্ত করার আহ্বান জানান।

দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ফরিদপুর পিটিআই জামে মসজিদের পেস ইমাম হাফেজ মাও. মো. সফিউল্লাহ দেওয়ান।

মাগুরা প্রতিনিধি: বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিএনপি নেতা কাজী কামালের নেতৃত্বে মাগুরার বিনোদপুরে লাখো মানুষের অংশগ্রহণ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার বিকেলে মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর স্কুল মাঠে স্থানীয় বিএনপি নেতা গোলাম আযম সাবুর সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মাগুরা-২ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সালিমুল হক কামাল। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন মহম্মদপুর বিএনপি নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খান বাচ্চু, আখতারুজ্জামান, শালিখা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাফফর হোসেন টুকু প্রমুখ।

বক্তারা দ্রুত বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেন এবং মাগুরা-২ আসনে ধানের শীষে প্রার্থী বদল করে কাজী কামালকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি করেন।

নীলফামারী প্রতিনিধি: বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় নীলফামারীতে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিকেলে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতির বাসভবনে সাবেক নেতাকর্মীদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, সহসভাপতি আজিজ আহমেদ, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রাহেদুল ইসলাম দোলন, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জামিয়ার রহমান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ পারভেজ প্রিন্স এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু পারভেজ, মোস্তাক হোসেনসহ আরও অনেকে।

আয়োজকরা জানান, দলের নেত্রী খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দোয়া করা হয়েছে এবং তার সুস্থতা প্রত্যাশা করেন তারা।

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে গণতন্ত্র্যের আলোসহীন নেত্রী, বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ও কেশবপুরের ধানের শীষের প্রার্থী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ আবুল হোসেন আজাদ, পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আব্দুস ছামাদ বিশ্বাস, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম শহিদ, ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আজিজুর রহমানসহ উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের অন্যান্য নেতারা।

দোয়া মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য ও সুস্থ দীর্ঘ জীবন কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে কোরআন পাঠ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার দুপুরে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের তাহেরপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সর্বস্তর জনগণের আয়োজনে এ দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. ইব্রাহিম খলিলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আবু জাফর, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল। দোয়া মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁও পৌরসভা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির রফিক, সাবেক কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ তপন, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে ইয়াসিন নোবেল, বিএনপি নেতা পনির হোসেন, আতাউর রহমান, মাসুদ রানা বাবু প্রমুখ। এ সময় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা এবং মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বাভাবিকভাবে অসুস্থ হয়নি, বিগত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার তাকে অসুস্থ করে রেখেছে। তাকে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা করেছে। খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে রেখে অসুস্থ করে রাখে। তিনি মুক্তি পেয়ে কারো প্রতিশোধ নেয়নি, কারো বিরুদ্ধে কিছু বলেনি। আমরা আজ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করি। মাদ্রাসার শিশুদের দোয়া কাজে আসবে। তোমরা ওনার জন্য দোয়া করো।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির নাম করে কেউ কোন চাঁদাবাজিসহ কাউকে অন্যান্য জুলুম হয়রানী করে, তাদের ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ও দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশে ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জিয়াউর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে বিএনপির জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য সকলে দোয়া করুন। তিনি একজন আপোষহীন দেশনেত্রী। এই কঠিন সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থেকে তার পাশে থাকবে এবং দলকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করবে। আলোচনা শেষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিলে খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।


রাউজানে দিন দিন বাড়ছে অপরাধ, আতঙ্কে মানুষ

*একে-৪৭-সহ অত্যাধুনিক অস্ত্র হাতেও চলে মহড়া *গ্রেপ্তার এড়াতে ৫ কি.মি. জুড়ে সিসিটিভিতে নজরদারি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এম. রমজান আলী, রাউজান (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নজুড়ে মহা আতঙ্কের নাম ডাকাত আলম। একসময় আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত এই অস্ত্রধারী ব্যক্তি এখন বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতার হয়ে আধিপত্য বিস্তার করছেন। ২০-৩০ জন অস্ত্রধারী নিয়ে এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য ও সংগঠিত বাহিনী নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে আলম।

জানা যায়, রাউজানের বাঘা বাঘা সন্ত্রাসী ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হলেও কদলপুরের ত্রাস জানে আলম প্রকাশ ডাকাত আলমকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ ও র্যাব।

স্থানীয়রা জানায়, কদলপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ভোমরপাড়া গ্রামের মৃত আজিজুল হক প্রকাশ বাসেক ড্রাইভারের পুত্র ডাকাত আলম অপরাধ জগতে প্রায় দুই যুগ। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় রয়েছে ১৫টি মামলা। এছাড়া তার পরিবারটি এলাকায় আলোচিত। পরিবারের সকলের পেছনে রয়েছে এক-একটা পরিচিতি। তার মা লেডি ডাকাত মনেক্কা নামে পরিচিত। তার ভাইও ডাকাত আজাদ নামে পরিচিত ছিল। ডাকাত আলমসহ তার বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আয়ত্তের বাইরে রাখতে এ বাহিনীর কাছে রয়েছে চারটি পুলিশি মানের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, ছয়টি ওয়াকিটকি সেট এবং পাহাড়তলী মোড়ের সিসিটিভি ক্যামেরার লাইভ ভিডিও ফিড পাওয়ার ব্যবস্থা, যা সরাসরি আলমের মোবাইলে দেখা যায়। ফলে এলাকাজুড়ে কে কোথায় চলাফেরা করছে, এমনকি পুলিশি গতিবিধিও দ্রুত জানতে পারে আলম ও তার বাহিনী। এ কথায় গোটা এলাকায় নজরদারি কায়েম করেছেন এ বাহিনী।

এলাকাবাসী বলছে, তাদের হাতে রয়েছে একটি একে-৪৭, তিনটি শটগান, নয়টি শাটার গান, দুটি তুর্কি বন্দুক, চারটি ভারতীয় ৭.৬ এমএম পিস্তল এবং প্রায় ৩০-৩৫টি দেশীয় তৈরি বন্দুক। কিছু কিছু অস্ত্র লুকাতে অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদেরও ব্যবহার করে তারা।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, আলমের পাশে অন্তত পাঁচজন সশস্ত্র সহযোগী দাঁড়িয়ে আছে। কারও হাতে শটগান, কারও হাতে শাটার গান, আবার একজনের হাতে ঝুলছে সেনাবাহিনীর ব্যবহিৃত একে-৪৭ ধাঁচের আধুনিক অস্ত্র। ভিডিওটিতে তাদের নির্ভীক উপস্থিতি এলাকাবাসীর মধ্যে আরও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। একাধিক পরিবার জানিয়েছে, যে বাড়ি থেকে সম্প্রতি ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে, সেই বাড়ির লোকের কাছ থেকে আলম ৪ লাখ টাকা দাবি করে এবং টাকা না দেওয়ায় পরিবারটিকে ঘরছাড়া করে দেয়।

এ ডাকাত আলমকে গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন এলাকার মানুষ।

পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৫ সালে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আলমের ভাই আজাদসহ চারজন নিহত হন, সে সময় অল্পের জন্য বেঁচে যান আলম। অভিযানের সময় ১টি লাইসেন্সধারী বন্দুক নিখোঁজ হয়, যা দিয়েই পরবর্তী সময়ে তার অপরাধী নেটওয়ার্ক আরও বিস্তৃত হয় বলে অভিযোগ। আলম ৫ আগস্টের পর প্রকাশ্যে দিবালোকে এসে এলাকার আধিপত্য বিস্তার শুরু করে সে। প্রথমে পরীর দীঘির বাজারে দিনে দুপুরে প্রকাশ্যেদিবালোকে বাইলে প্রকাশ বাইল্লে তোতাকে খুন করে আলোচনায় উঠে আসে শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায়। এরপর ঊনসত্তরপাড়ার নূর মোহাম্মদ হাজী প্রকাশ পোয়ান হাজীকে খুন করে। এ সময় লুট করে নিয়ে যায় লাইসেন্স করা একটি বন্দুক। এর আগে কাপ্তাই সড়কের জিয়ানগরে ট্রাক ডাকাতি করার সময় ট্রাকের ডাইভারকে গুলি করে হত্যা করে। কদলপুরের জয়নগর বড়ুয়া পাড়ার মৃদুল বড়ুয়াকে হত্যা করে। কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া এলাকায় এক উপজাতি নারীকে গুলি করে হত্যা করে। চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় ছিনতাই করতে গিয়ে এক আবাসিক হোটেলের মানিককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। রাঙ্গুনীয়া পোমরা এলাকায় ডাকাতি করতে গিয়ে এক দুবাই প্রবাসীকে গুলি করে হত্যা করে। রাঙ্গুনীয়া বেতাগী থেকে ব্যবসায়িকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। পরে চিনে ফেলায় কদলপুরের পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে। অভিযোগ রয়েছে কদলপুরের ভোমরপাড়া গ্রামের ডা. ফরিদের এক মেয়েকে অপহরণ করে রাঙামাটিতে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ মামলায় তার সাজা হয়েছিল। অনেক দিন জেলেও ছিল। এ মামলায় তার ভাই আজাদ ও তার মা মনেক্কা আসামি ছিল।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে রাউজানে ১৭টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। যার বেশিরভাগই রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজির ভাগবাঁটোয়াকে কেন্দ্র করে।

এ বিষয়ে আলম দাবি করেন, অস্ত্র নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি বানানো। এর আগে কখনো মেয়ে দিয়ে ভিডিও বানাইছে, কখনো অন্য কোনো কিছু দিয়ে। সিসিটিভি লাগানোর মতো টাকা আমার নেই। আমি গরিব।

রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, অভিযোগগুলো আমরা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। কেউ অপরাধ করলে তার রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক, তাকে আইনের ঊর্ধ্বে রাখা হবে না। চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন অ্যান্ড ক্রাইম) সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাউজানে বর্তমানে সাতটি গ্রুপ সক্রিয়। তাদের ধরতে নিয়মিত অভিযান চলছে। প্রায় প্রতিদিনই আমরা অস্ত্র উদ্ধার করছি, সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার করছি। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া আলমের অস্ত্রের মহড়ার ভিডিও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। কোনো অপরাধী আমাদের নজরদারির বাইরে নেই।


মাদারীপুরে সাংবাদিকদের সাথে নতুন পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাদারীপুর প্রতিনিধি

দেশব্যাপি লটারীর মাধ্যমে পুলিশ সুপারদের পদায়নের পরে মাদারীপুরে এহতেশামুল হক পুলিশ সুপার পদে সদ্য যোগদান করেন। এর আগে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় পুলিশ সুপার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। রোববার মাদারীপুর জেলা পুলিশ সম্মেলন কক্ষে নবাগত পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক জেলায় কর্মরত সর্বস্তরের সাংবাদিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সাথে তিনি এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করেন। মত বিনিময় সভায় মাদারীপুরের বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। নবাগত পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক নিজের পরিচয় প্রদান করে মাদারীপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক ও সন্ত্রাস সহ বেআইনি কার্যদি বন্ধের লক্ষ্যে এবং সর্বোপরী দেশ ও জাতির স্বার্থে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে মাদারীপুর জেলা ও পুলিশ প্রশাসন ওকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। প্রশ্নপর্বে সাংবাদিকদের মধ্য থেকে অনেক সাংবাদিকরা মাদারীপুরের কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম, মানবপাচার, সন্ত্রাস, ট্রাফিক বিভাগকে অবৈধ যান বন্ধসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা পুলিশ বিভাগকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন অ্যান্ড মিডিয়া) জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পুলিশ সুপার বিমল চন্দ্র বর্মন, মাদারীপুর সদর থানার ওসি আদিল হোসেন সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা।


রংপুর-নীলফামারীর সকল রুটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারীর এক বাস শ্রমিক নেতাকে মারধরের প্রতিবাদে রংপুর বাস মিনিবাস মালিক সমিতির অধীনে পরিচালিত নীলফামারীর সব রুটে বাস পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। রোববার সকাল থেকেই রংপুর-নীলফামারী-সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ-জলঢাকা-ডিমলা-ডোমারসহ জেলার অভ্যন্তরীণ ও আন্তজেলা রুটে বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। তবে ঢাকাগামী বাসসহ দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলা সমিতির গাড়ি আগের মতোই চলছে।

শ্রমিক ইউনিয়নের সূত্র জানায়, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা বাস শ্রমিক ইউনিয়ন উপকমিটির দপ্তর সম্পাদক সফিকুল ইসলামের সঙ্গে ন্যায্য পাওনা নিয়ে বিরোধের জেরে রংপুর বাস মালিক সমিতির কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে মারধর করেন। স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার হওয়া সফিকুল বিষয়টি শ্রমিক ইউনিয়নকে জানান। এর পরই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত রংপুর মালিক সমিতির অধীন থাকা সব বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন।

হঠাৎ বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নীলফামারী ও আশপাশের রুটে যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেকে জরুরি প্রয়োজনে ভ্যান, অটোরিকশা কিংবা প্রাইভেটকারসহ বিকল্প যানবাহনের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে করে কিন্তু ভোগান্তির সাথে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে বলে জানান যাত্রীরা।

জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘শ্রমিকদের ওপর হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাস পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। রংপুর মালিক সমিতির কোন বাস নীলফামারীর রুটে চলতে দেওয়া হবে না।

এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘দুই জেলার মালিক সমিতির মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। আমি রংপুরের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি সমাধান হবে।


আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ

বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ৮০ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া ২৩ নভেম্বর ফুসফুস সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে নিবিড় পরিচর্যায় রয়েছেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খানকে উদ্ধৃত করে এএফপি জানিয়েছে, তিনি ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’ অবস্থায় রয়েছেন এবং চিকিৎসকরা তাঁর শারীরিক অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

এএফপি আরও জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সেজন্য একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংস্থাটি তাঁর একাধিক স্বাস্থ্য জটিলতার কথা উল্লেখ করেছে, যার মধ্যে রয়েছ—হৃদরোগ, লিভার ও কিডনির সমস্যা, ডায়াবেটিস, ফুসফুসের জটিলতা, বাত এবং চোখের অসুস্থতা।

লন্ডন থেকে বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান জাতির কাছে মায়ের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এমন সঙ্কটকালে মায়ের স্নেহ স্পর্শ পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যেকোনো সন্তানের মতো আমারও আছে। কিন্তু অন্য আর সকলের মতো সেটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত নয়। স্পর্শকাতর বিষয়টিতে বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত।’

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ. জেড. এম. জাহিদ হোসেনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, খালেদা জিয়া ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এএফপি’কে উদ্ধৃত করে গালফ নিউজ একই ধরনের তথ্য প্রকাশ করেছে। দ্য ডন নিউজ এবং আরব নিউজ তার অবনতিশীল স্বাস্থ্য নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

আরব নিউজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বেগম জিয়ার অবস্থা ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’।

ভারতের এনডিটিভি তাদের প্রতিবেদনের শিরোনামে লিখেছে—‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি’।

এ ছাড়া, টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু এবং হিন্দুস্তান টাইমসও এ খবরটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে।

এদিকে, শনিবার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক ব্রিফিংয়ে ডা. এ. জেড. এম. জাহিদ হোসেন বলেন, বেগম জিয়ার অবস্থা গত তিন দিন ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে।

তিনি বলেন, বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে এবং অনুমোদন পাওয়া মাত্র তাকে বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। তার পরিবারের সদস্যরা ও বিএনপি নেতারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সুস্থতার জন্য জাতির কাছে দোয়া চেয়েছেন। সূত্র: বাসস


চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেনের দাবিতে অবরোধ, যানজটে চরম ভোগান্তি

সাত দিনের মধ্যে দৃশ্যমান কাজ না হলে আন্দোলন দিগুণ হবে: ইব্রাহীম ফারুক সিদ্দিকী
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউসুফ বিন হোছাইন, চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার)

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেন করার দাবিতে চকরিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে কড়া অবরোধের ডাক দিয়েছিলেন ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন আন্দোলন’ চকরিয়ায় প্রধান সমন্বয়কারী ইব্রাহীম ফারুক সিদ্দিকী আগামী সাত দিনের মধ্যে মহাসড়কের দৃশ্যমান উন্নয়ন কার্যক্রম না দেখলে এরচেয়ে আরও দিগুণ হয়ে আন্দোলনে নামার কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। রোববার চকরিয়া পৌরশহরের মাতামুহুরি ব্রিজে সড়ক অবরুদ্ধ করে অবস্থান করেন আন্দোলনকারীরা। ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরুদ্ধ থাকার পর জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ ফারুকসহ চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুর রহমান, চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ ও চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তৌহিদুল আনোয়ারের অনুরোধে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাদের এ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন আন্দোলনের চকরিয়ার প্রধান সমন্বয়কারী ইব্রাহীম ফারুক সিদ্দিকী বলেন, লিফলেট বিতরণ, ব্যানার টাঙানো, সংশ্লিষ্ট মহলে স্মারকলিপি প্রদানসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। সরকারকে আমরা অনেকভাবে বুঝিয়েছি এটা একটি মরণফাঁদ। আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ২৭ নভেম্বরের মধ্যে যদি দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম না দেখি তাহলে আমরা রাজপথে নেমে যাব। আমরা সে কথার ভিত্তিতে চকরিয়ার রাজপথে নেমেছি। আজ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছি। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দৃশ্যমান উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু না হলে আমরা আরও দিগুণ আকার ধারণ করব।

তিনি আরও বলেন এই আন্দোলন শুধু আমাদের জন্য নয়। বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের শহর কক্সবাজারে সারাদেশ থেকে লাখ লাখ পর্যটক আসে এই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে। তাদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আমাদের এই আন্দোলন।

এর আগে সকাল ৯টার দিকে লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ায় ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন আন্দোলন’ সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চকরিয়ায় মহাসড়ক অবরোধ করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এতে দীর্ঘ যানজট দেখা দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন কক্সবাজারমুখী পর্যটক ও সাধারণ যাত্রীরা।

বর্তমানে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি দুই লেনের হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঘটনায় প্রাণহানি হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পর্যটন নগর কক্সবাজারের কারণে এই সড়কে সব সময় যানবাহনের চাপ থাকে। ফলে প্রতিদিনই দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয় যাত্রীদের। এছাড়া সরু মহাসড়ক হওয়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরি সেতু এলাকায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সেতু এলাকায় অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশের একটি দল তাদের সরে যেতে অনুরোধ করলেও দাবি পূরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত সরবেন না বলে জানান তারা। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ আল ফারুক, চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ ও চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তৌহিদুল আনোয়ারের অনুরোধে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাদের এ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

এ সময় চকরিয়া-পেকুয়া আসনের এমপিপ্রার্থী আব্দুল্লাহ আল ফারুক আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের উদ্দেশ করে বলেন, গত ৫৪ বছরে দক্ষিণ চট্টগ্রামে কক্সবাজারের সাথে চকরিয়ার যে বৈষম্য হয়েছে আজ সেটির বহিঃপ্রকাশ হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিকভাবে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এই দক্ষিণ চট্টগ্রাম। এই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের মহাসড়ক কেন দুই লেন হবে? অনতিবিলম্বে দুই লেন থেকে ছয় লেনে উন্নিত করার দাবি জানিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ ও যাত্রীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে অবরোধ প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানান তিনি।

চকরিয়ার ইউএনও মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হয়েছে। এখন ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) প্রণয়নের কাজ চলছে। আন্দোলনকারীদের তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান: চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার দাবিতে রবিবার সকাল ১০টা থেকে সাতকানিয়ার কেরানীহাট এলাকায় সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে স্থানীয় জনতা। ‘চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন আন্দোলন’-এর ব্যানারে আয়োজিত এই ব্লকেডের কারণে মহাসড়কজুড়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে, সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট এবং জনভোগান্তি।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, প্রশাসনের অনুরোধে আন্দোলনকারীরা মহাসড়ক থেকে সরে গেছেন এবং বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক। দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

মোছাদ্দেক হোসাইন, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের দাবিতে লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চকরিয়া, রওশনহাটসহ চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছেন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন আন্দোলন নামে একটি সংগঠন। রবিবার লোহাগাড়া উপজেলার বটতলি মটর স্টেশনের পুলিশ বক্সের সামনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেন বাস্তবায়ন কমিটির একাংশ। পরে স্থানীয় জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর অনুরোধে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা।


১৬ শতক জমির বিরোধে ঝরল ভাই-বোনসহ তিনজনের প্রাণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ১৬ শতক জমির দখলকে কেন্দ্র করে একই বংশের দুই পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক নারীসহ উভয় পক্ষের তিনজন মারা গেছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন নারীসহ অন্তত আটজন। রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাইলাটারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে জড়ানো দুই পক্ষ হলো- নূর মোহাম্মদ ও মানিক মুন্সি (আপন ভাই) এবং তাদের চাচাতো ভাই আলতাফ হোসেন ও আজিজার রহমান (আপন ভাই)। নিহত ব্যক্তিরা হলেন- আলতাফ হোসেন (৫৫), তার চাচাতো ভাই মানিক মুন্সির ছেলে এরশাদুল হক (৪২) এবং মানিক মুন্সির বোন কুলসুম বেগম (৫০)। এ ঘটনায় নিহত আলতাফের ছেলে মোফাজ্জল হোসেনকে (২৪) আটক করেছে পুলিশ।

নিহত ব্যক্তিদের পরিবার, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাইলাটারী গ্রামের মানিক মুন্সি ও নূর মোহাম্মদ এবং আলতাফ হোসেন ও আজিজার রহমান প্রায় এক বছর আগে যৌথভাবে একই দাগের ১৬ শতক জমি কেনার উদ্দেশ্যে মালিককে টাকা দেন। কিন্তু কোনো পক্ষই জমির দলিল করে নেয়নি। জমিটি দখলে নেয় মানিক মুন্সি ও নূর মোহাম্মদ পক্ষ। এ নিয়ে আলতাফ হোসেন ও আজিজার রহমান পক্ষের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য একাধিকবার বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি।

রোববার বেলা ১১টার দিকে আলতাফ হোসেন ও আজিজার রহমান লোকজন নিয়ে জমিটি দখল নিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান মানিক মুন্সির ছেলে এরশাদুল হক ও বোন কুলসুম বেগম। গুরুতর আহত আলতাফ হোসেনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনিও মারা যান। আহত ব্যক্তিরা হলেন- মানিক মুন্সি (৬০), নূর মোহাম্মদ, নিহত এরশাদের স্ত্রী মঞ্জুয়ারা বেগম মঞ্জু (৩৫), জোবায়দুর (৪৫), সফিকুল ইসলাম (২৫), মর্জিনা বেগম (৪২), আজিজার রহমান (৪০) ও পারুল বেগম (৩২)। তাদের চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নাগেশ্বরী থানার ওসি বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর একজনকে আটক করা হয়েছে।


banner close