চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় কাস্টমস জটিলতার কারণে। এর ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি।
সূত্রমতে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গড় হিসাবে প্রতি মাসে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। প্রতিদিন গড়ে ২১৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়। এই হিসাবে গত ৭ দিনে ১ হাজার ৫১৬ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।
ইন্টারনেট না থাকায় কাস্টমসের কম্পিউটারগুলোতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড (পণ্যের আমদানি-রপ্তানির আধুনিক শুল্কায়ন পদ্ধতির আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার) অচল হয়ে পড়েছিল, যার ফলে শুল্ক আদায় বন্ধ হয়ে যায়।
যদিও মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড চালু করা সম্ভব হয়েছে, তবে এটি শুধু চট্টগ্রাম কাস্টমসের কাছে সীমাবদ্ধ এবং বাইরের কম্পিউটারে এই সফটওয়্যার খোলা যাচ্ছে না। ফলে নতুন কোনো পণ্য অন্তর্ভুক্তি করা যাচ্ছে না এবং পণ্যের জাহাজীকরণ এখনো বন্ধ রয়েছে।
দেশব্যাপী ইন্টারনেট না থাকায় ১৮ জুলাই রাত থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যদিও কিছু আমদানি পণ্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে এবং ১৩টি জাহাজকে মাতারবাড়ী ও চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তবুও চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার সুলতানুল আরেফিন জানান, বন্দরের নিজস্ব সফটওয়্যার এবং কাস্টমসের সঙ্গে যুক্ত সিটিএমএস পদ্ধতিও অনলাইননির্ভর হওয়ায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বন্দরে কনটেইনার জটের আশঙ্কা থাকলেও ম্যানুয়ালি পদ্ধতিতে কিছু আমদানি পণ্য খালাস করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বন্দর সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন গড়ে ৯ হাজার একক কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয় এবং প্রতি কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে বন্দরের চার্জ ৪৫ মার্কিন ডলার। রপ্তানিপণ্য জাহাজীকরণ না হওয়ায় কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে, যার ফলে বন্দরের আয় প্রতিদিন প্রায় পাঁচ কোটি টাকা কমেছে। গত ৭ দিনে এই ক্ষতি প্রায় ৩৫ কোটি টাকা হতে পারে।
সামগ্রিকভাবে, চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের ক্ষতি প্রায় ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আগুনে ১৫টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা হাবিবপুর ঈদগাহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট আগুনে ১৫টি দোকানের আসবাবপত্রসহ প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে জানিয়েছেন দোকান মালিকরা। সোনারগাঁও ফায়ার সার্ভিসের দুটি দল প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ঈদগাহ এলাকা মুজিবুর রহমানের ভাঙারি দোকান থেকে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেল পৌঁনে চারটার দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। একে একে ফার্নিচার দোকান, মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান, খেলনার দোকান, স্টিলের আলমারির দোকানসহ ১৫টি দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সোনারগাঁও ফায়ার সার্ভিসের দুটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে।
দোকান মালিকদের দাবি, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে কিছু মালপত্র বের করতে পারলেও সব কিছু বের করা সম্ভব হয়নি। ফলে অনেক মালপত্র পুড়ে যায়। আগুনে তাদের ১৫টি দোকানের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ও এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহন করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে তারা অর্থনৈতিকভাবে বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছেন।
মোবাইল সার্ভিসিংয়ের মালিক রিয়াদ হোসেন জানান, আগুনের কারণে তার দোকানের সকল মালপত্র পুড়ে যায়। এতে করে তার প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সোনারগাঁও ফায়ার সার্ভিসের সাব স্টেশন অফিসার ওসমান গণি জানান, একটি ভাঙারি দোকান থেকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তাদের দুটি ইউনিট প্রায় ১ ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে নিয়েছেন।
সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন। ঘণ্টাব্যাপী আগুনে প্রায় ১৫টি দোকান পুড়েছে।
কেশবপুরে ইরি বোরো রোপণের জন্য জমি প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। পুরুষের পাশাপাশি নারীরা একাজে সহযোগিতা করছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে এবার কেশবপুর উপজেলায় ৬৫৭ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির পর পুরোপুরি ইরি বোরো রোপণ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বোরো আবাদের জন্য সরকারের দেওয়া বীজ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয় ৩ হাজার কৃষককে উন্নত মানের এই বীজ সরবরাহ করেন কৃষি অফিস।
এবার কেশবপুর উপজেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়। এবার অনাবাদি কত হেক্টর জমি থাকতে পারে এখন কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়নি।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কৃষকরা খেতে গরুর বদলে মই টানছে মানুষ। আবার কেউ কেউ ইরি বোরো রোপণ ও রোপণের জন্য জমিতে পরিচর্যার কাজ করছে। জানা গেছে এক সময় এ এলাকার কৃষকদের ঘরে ঘরে গরু, জোয়াল এবং লাঙলসহ কৃষি যন্ত্রপাতি ছিল। কৃষকের জমি চাষের সঙ্গে গরু ও মহিষের সম্পর্ক সেই আদিকাল থেকে। সাধারণত কৃষিজমিতে গরু দিয়ে টানা লাঙলে জমি চাষ ও মই দিয়ে চাষের জমি সমান করে ফসল লাগানো হয়ে থাকে। আধুনিক যুগে এসে যোগ হয়েছে ইঞ্জিনচালিত পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর। গ্রামাঞ্চলে কৃষকের বড় পরিচয় ছিল যার বাড়িতে গরু, লাঙল ও মই আছে।
কথা হয় বোরো খেতে গরুর বদলে মই টানতে থাকা উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘জমি চাষাবাদ করে ছয়-আট সদস্য পরিবারের সংসারের সারা বছরের জোগান দিতে হয়। কিন্তু আমাদের এলাকায় ইরি বোরো চাষ ছাড়া অন্য ফসল তেমন না হওয়ায় হালের গরু পালন করা হয় না। আগে আমারও হালের বলদ ছিল। সারা বছর গরু পালন করতে যে টাকা খরচ হয় তা দিয়ে আমাদের মতো কৃষকের গরু পোষা সম্ভব না। এখন বিচালীসহ গো খাদ্যের অনেক দাম। গরু দিয়েই খেতে মই দিতে হয়। বর্তমানে আমার হালের বলদ না থাকাই সকাল থেকে নিজেরায় খেতে মই টানছি।’
কৃষক হাবিবুর রহমান হবির ছেলে আবদুল মাজিদ বলেন, ‘বাগদহা বিলে ৬ বিঘা জমিতে আমরা চলতি বোরো মৌসুমে ধান চাষ করব। সকল জমিতেই গরুর বদলে নিজেদেরই মই টানতে হবে।’ মই টানতে সহযোগিতা করতে আসা কৃষক আবদুল জলিল বলেন, ‘গরুর বদলে মই টানতে তিনজন মানুষের প্রয়োজন। একজন দিয়ে মই টানা অসম্ভব। তাই প্রতিবেশী হিসেবে আরেক কৃষককে সহায়তার জন্য মই টানার কাজে আমি তাদের সাহায্য করতে এসেছি।’ বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, তিনি ওই গ্রামের একজন ভালো কৃষক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ইরি-বোরো আবাদ করে আসছেন। এবারও তিনি ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এলাকায় হালের বলদ না পাওয়ায় নিজেরা খেতের মই দিতে হচ্ছে। ফতেপুর গ্রামের কৃষক হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘আগে হাল চাষের জন্য প্রত্যেক কৃষকের ঘরে গরু, লাঙল ও মই থাকত। সময়ের সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া এখন গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে গেছে। এখন ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রযুক্তির পাশাপাশি জমি দ্রুত তৈরিতে গরু টানা লাঙল ও মইয়ের পরিবর্তে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে গরু টানা লাঙল ও মই এখন কেশবপুরে তেমন একটা চোখে পড়ে না।’ কেশবপুর থেকে হালের বলদ প্রায় বিলুপ্তির পথে। সে কারণে তিনি নিজে ও ভাইদের সহযোগিতায় চলতি বোরো মৌসুমে ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা ৭ বিঘা জমির উঁচু-নিচু অংশসহ চাকার দাগ সমান করতে গরুর পরিবর্তে মই টানছেন। কিন্তু গ্রামবাংলার কৃষকের গরু দিয়ে টানা হাল, মইয়ে জমি তৈরিতে সময় লাগত। সময়ের সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া এখন গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে গেছে। এখন ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রযুক্তির পাশাপাশি জমি দ্রুত তৈরিতে গরু টানা লাঙল ও মইয়ের পরিবর্তে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে গরুর টানা লাঙল, মই এখন কেশবপুরে তেমন একটা চোখে না পড়লেও ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা জমির উঁচু-নিচু অংশ বা চাকার দাগ সমান করতে গরুর পরিবর্তে মই টানছে মানুষ। মইয়ে হালকা কিছু ওজন দিয়ে তা দুজন কিংবা একজন টেনে জমির প্রয়োজনীয় অংশ দ্রুত সমান করে ফেলছে। এলাকার কৃষকরা জানান, পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা জমিতে চাকার দাগ থাকায় তা সমান করতে নিজেরা মই টেনে সমান করেছেন। ওই এলাকার আবুল হোসেন বলেন, ‘তার ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান চারা রোপণের পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করে নেওয়ার পর নিজেরাই মই টেনে জমি সমান করে চারা রোপণ করছেন।’ ব্রহ্মকাটি গ্রামের কৃষক জামাল সরদার, হামিদ সরদার, আনিছুর সরদার, রামচন্দ্রপুর গ্রামের ময়েজউদ্দিন, আব্দুল সরদার, সুজাপুর গ্রামের আতিয়ার রহমান, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সুজনসহ আরও অনেক কৃষকরা এ প্রতিনিধিকে জানান, আধুনিক যন্ত্র দিয়ে দ্রুত জমি চাষ হওয়ায় এখন গরুর লাঙল, মই হারিয়ে যাচ্ছে। গরুর বদলে বিকল্প হিসেবে মানুষই মই টেনে জমি সমান করে নিচ্ছে। এমন দৃশ্য উপজেলার প্রায় সব জায়গায়। তারা আরও বলেন, এই উপজেলাজুড়ে কৃষকরা ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমরা আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এবার কেশবপুর উপজেলায় ৬৫৭ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির পর পুরোদমে ইরি বোরো রোপণ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। গত বছর উপজেলায় ১৩ হাজার ১ শত হেক্টর জমিতে ইরি বোরো আবাদ হয়। এবার ১৩ হাজর হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।’
শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংঠন মুক্তাঞ্চলের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নানা উৎসাহ উদ্দীপনায় সংগঠনের সব সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শোভাযাত্রাটি উপজেলা চত্বর থেকে রৌমারী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়। সংগঠনের পরিচালক প্রভাষক আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে শোভা যাত্রায় উপস্থিত ছিলেন, জনাব শহীদ রেজাউল কবির সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রৌমারী সরকারি কলেজ, আব্দুর রাজ্জাক উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক ও রৌমারী সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, মজিবর রহমান বিএসসি (অব.) শিক্ষক, প্রভাষক আবদুল হাই, প্রভাষক আনজুমানারা, রেজাউল ইসলাম রিজু, শিক্ষার্থী, শিল্পী ও সাংবাদিক প্রমুখ।
পঞ্চগড় সীমান্তে চোরাচালানবিরোধী অভিযানে ২৯ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল জব্দ করেছে ৫৬ বিজিবি। গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে বোদা উপজেলার হারিভাসা ইউনিয়নের ব্রমতল এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বিজিবি জানায়, বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের তথ্যে অধিনায়ক, নীলফামারী ব্যাটালিয়নের (৫৬ বিজিবি) নির্দেশনায় ঘাগড়া বিওপির একটি বিশেষ টহল দল হাবিলদার আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে সীমান্ত পিলার ৭৫৪/২-এস-সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় ভারত থেকে বাংলাদেশে চোরাচালানকৃত ২৯ বোতল ফেনসিডিল মালিকবিহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার ফেনসিডিলের আনুমানিক মূল্য ১১ হাজার ৬০০ টাকা।
৫৬ বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান, নজরদারি ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। মাদকদ্রব্যসহ চোরাচালান রোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
খুলনার এনসিপি বিভাগীয় প্রধান মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পর সম্ভাব্য পলাতক আসামিরা যাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালাতে না পারে, সে লক্ষ্যে বেনাপোল সীমান্তে কড়া নজরদারি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) সূত্র জানায়, ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ মেইন পিলার ১৮/১ এস থেকে ৪৭/৩ এস পর্যন্ত প্রায় ৭০.২৭৪ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি ও নজরদারি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে বাড়ানো হয়েছে টহল, গোয়েন্দা নজরদারি এবং অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যেসব সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই, সেসব এলাকা কার্যত সিলগালা করা হয়েছে।
৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, মোতালেব শিকদারের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতরা যাতে কোনোভাবেই সীমান্ত অতিক্রম করে পালাতে না পারে, সে জন্য বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সীমান্তের প্রতিটি পয়েন্টে তল্লাশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ১নং সদস্য মানিকগঞ্জ-১ ( দৌলতপুর-ঘিওর-শিবালয়) আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এস এ জিন্নাহ কবির বলেছেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে ঘরে ঘরে গিয়ে ধানের শীষের ভোট চাইতে হবে। আমরা সবাই ধানের শীষের লোক। বেদাভেদ ভুলে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হবে। ধানের শীষ বিজয়ী হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হবেন প্রধানমন্ত্রী। গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাতে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার খলসী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির উদোগে বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্বাস্থ্য ও রোগমুক্তি কামনায় দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও নির্বাচনী উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এস.এ জিন্নাহ কবির এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান।
খলসী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইউপি সদস্য আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং দৌলতপুর উপজেলার বিএনপির সহসভাপতি মো. লোকমান হোসেন, জেলা কৃষকদলের সিনিয়র সহসভাপতি মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ, ঘিওর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর মানিকুজ্জামান মানিক, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান আনিস, ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও দৌলতপুর উপজেলার বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাবিবুল্লাহ নোমানী, ব্যারিস্টার জয়দুল করিম নয়ন, বাঘুটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন, খলসী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া, ঘিওর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জানে আলম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান কুদরত, জেলা কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইউসুফ আলী প্রমুখ।
দেশব্যাপী মব সন্ত্রাসে উদীচী-ছায়ানট, প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে অগ্নি সংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাট, সাংবাদিক নিপীড়ন, পিটিয়ে মানুষ হত্যা, জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে পাবনায় প্রতিবাদী অবস্থান করেছেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন সুশীল সমাজের নেতাকর্মীরা। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় শহরের আব্দুল হামিদ সড়ক প্রেসক্লাবের সামনে সাংস্কৃতিক কর্মী মির্জা রানার আয়োজনে আহ্বান ঘণ্টাব্যাপী এ প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেশের চলমান সহিংসতা মাধ্যমে গুম, খুন, লুটপাট, জ্বালাও-পোড়াও এবং মব সৃষ্টির মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার প্রতিবাদে হুশিয়ারি দেওয়া হয়। এবং সেইসাথে এসব অরাজকতার বিরুদ্ধে জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক কর্মী ভাস্কর চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম হীরা, ফিরোজ খন্দকার, দিবাকর চক্রবর্তী, তিমির হায়দার, আবদুল হাফিজ রতন, বিপ্লব ভৌমিক, সামুন সাব্বির সহ পাবনার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন সুশীল সমাজের নেতাকর্মীরা।
দৈনিক প্রথম আলো-দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার অফিসে হামলার প্রতিবাদে গাজীপুরের শ্রীপুরে শ্রীপুর প্রেসক্লাবের উদ্যোগে মানববন্ধন হয়েছে। দুপুরে শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের সামনে এ মানববন্ধন হয়। এতে অংশ নেন শ্রীপুর কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
শ্রীপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি বশির আহমেদ কাজলের সভাপতিত্বে আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি রাতুল মন্ডলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন শ্রীপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আ.সালাম রানা, আমাদের সময় পত্রিকার প্রতিনিধি মো. আ.লতিফ, কালের কণ্ঠের শাহীন আকন্দ, গাজী টিভির মোতাহার খান, প্রথম আলোর সাদিক মৃধা, দ্য ডেইলি স্টারের জেলা প্রতিনিধি মঞ্জুরুল আলম, দৈনিক গনমুখের শফিকুল ইসলাম, দৈনিক চিত্র প্রতিনিধি কবির সরকার, চ্যানেল নাইনের আরিফ খান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের মাহবুবুর রহমান, দেশ রুপান্তরের রেজাউল করিম সোহাগ, এনটিভির আ.রউফ রুবেল, গ্লোবাল টিভির সোলাইমান মাহমুদ, এশিয়ান টেলিভিশনের সুমন গাজী, তৃতীয় মাত্রার আরিফ মন্ডল, চ্যানেল এস এর কাওসারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা।
বক্তারা অভিলম্বে হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান। একই সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার ও সারাদেশে সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কসংলগ্ন সৈকত এলাকায় আবারও একটি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) উখিয়া উপজেলার মনখালী সৈকত অংশে ডলফিনটির মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা।
স্থানীয় জেলে ছৈয়দ মিয়া জানান, ডলফিনটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাত ফুট এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তীব্র দুর্গন্ধ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এটি দুই থেকে তিন দিন আগেই মারা গেছে।
এর আগেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। গত ১৮ ডিসেম্বর মেরিন ড্রাইভ-সংলগ্ন টেকনাফ উপজেলার শিলখালী সৈকত এলাকা থেকে আরেকটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে ডলফিনকে সংরক্ষিত স্তন্যপায়ী প্রাণী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ আইনে ডলফিন শিকার, ভক্ষণ, দেহাংশ পরিবহন কিংবা বেচাকেনা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কক্সবাজার উপকূলে ভেসে আসা ডলফিনগুলোর অধিকাংশই বিপন্ন ইরাবতী প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত, যার বৈজ্ঞানিক নাম Orcaella। এই প্রজাতির ডলফিন পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এএসএম শরীফ বলেন, ‘ডলফিন বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে। অনেক ক্ষেত্রে মাছ ধরার জালে আটকা পড়ে তাদের মৃত্যু হতে পারে। তবে প্রতিটি ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান প্রয়োজন।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক দিনের মধ্যেই অন্তত চারটি মৃত ডলফিন তারা সৈকত এলাকায় দেখতে পেয়েছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে এমন ধারাবাহিক মৃত্যুর ঘটনা সামুদ্রিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য গভীর উদ্বেগের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার শহর শাখার সভাপতি ইরফান উল হাসান বলেন, ‘একসময় কক্সবাজার উপকূলের কাছাকাছি এলাকায় ডলফিনের অবাধ বিচরণ চোখে পড়ত। বর্তমানে সেই চিত্র অনেকটাই বদলে গেছে।’ ডলফিন মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয় এবং সামুদ্রিক প্রাণী রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত ও সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতাকে মাথায় গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে খুলনা বিভাগীয় প্রধান এবং এনসিপি শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মোতালেব শিকদার এই হামলার শিকার হন। দুর্বৃত্তরা তাঁর মাথা লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গুরুতর আহত অবস্থায় মোতালেব শিকদারকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে জরুরি সিটি স্ক্যানের জন্য তাঁকে শেখপাড়া সিটি ইমেজিং সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর মাথার আঘাত অত্যন্ত গুরুতর এবং বর্তমানে তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
ঘটনার বিষয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনিমেষ মণ্ডল জানিয়েছেন, গুলির খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হামলার প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং সিসিটিভি ফুটেজসহ অন্যান্য আলামত বিশ্লেষণ করে হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ন্যাক্কারজনক হামলার খবর নিশ্চিত করে মোতালেব শিকদারের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর একই কায়দায় ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করা হয়েছিল, যিনি দীর্ঘ ছয় দিন লড়াই করার পর গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে মৃত্যুবরণ করেন। হাদি হত্যাকাণ্ডের পর এনসিপি এবং সমমনা দলগুলোর নেতাদের ওপর এমন সিরিজ হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আতঙ্ক ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সরকার যখন জুলাই যোদ্ধাদের জন্য গানম্যান ও বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে, ঠিক সেই মুহূর্তেই নতুন করে এই হামলার ঘটনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারী ফয়সাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, ফয়সালের শেষ অবস্থান নিয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। এটা পেতে আমাদের বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তবে সে যে দেশের বাইরে চলে গেছে, এমন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাইনি। অনেক সময় অপরাধীদের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। রোববার (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
এ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা পেয়েছেন কি না– এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা এখনো স্পেসিফিক কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা পাইনি। তবে আমরা সঠিক তথ্য পেতে চেষ্টা করছি।
এ সময় ডিবি প্রধান শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ধারণা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশে এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে। এখানে ব্যক্তিগত কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে হয়নি। ঘটনার শুরু থেকে আমরা মাঠে ছিলাম। সব এজেন্সি সমন্বিতভাবে কাজ করেছি। এটাকে আমরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সম্ভাব্য সবগুলো দিক দেখছি।
এসময় ডেভিলহান্ট-২ অভিযান নিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি জানান, এই অভিযানে ১৩ ডিসেম্বর থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত ছয় হাজার ৫৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে বিজিবি ময়মনসিংহ রিজিওনের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সীমান্তের অনেক কাছে যারা থাকেন তারা চোরাচালানো জড়িত। সুস্পষ্ট তথ্য না পেলে ধরা কঠিন হয়ে যায়। তবে আমাদের কার্যক্রম চলছে। ফয়সাল সীমান্ত পার হয়ে ভারতে গেছে কিনা সেই তথ্য নেই।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, চব্বিশের জুলাইয়ের পরও আমরা কঠিন সহিংসতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। শুধু বর্বর মৃত্যুগুলো নয়, আমাদের সন্তানরাও বিশেষ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিংয়ের জন্য সাইকোলজিস্ট ও সাইক্রিয়াটিকের ব্যবস্থা করতে হবে। কাউন্সিলিং ও থেরাপি দুই ধরনের সেবার ব্যবস্থা রাখতে হবে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এবছর ঢাকা মেডিকেল কলেজে বেশি মেয়ে ভর্তি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০ ভাগ মেয়ে পড়ালেখা করছে। শিক্ষার সব ক্ষেত্রে মেয়েদের উপস্থিতি বাড়ছে। এটা যেমন আনন্দের তেমনই শঙ্কারও। কারণ ছেলেদের ক্ষেত্রে কী হচ্ছে, তারা কেন ঝরে পড়ছে, শিক্ষাবিমুখ হচ্ছে, অন্য কোন আকর্ষণে লেখাপড়া থেকে দূরে থাকছে তা জানতে হবে। এটা চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ এ নতুন সংকট তৈরি করবে।’ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য প্রফেসর ড. খাদেমুল ইসলাম মোল্যার নেতৃত্বে শুরু হয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান। উপদেষ্টা শারমিন এস মুর্শিদ সমাবর্তনের চেয়ার হিসেবে গ্র্যাজুয়েটদের ডিগ্রি প্রদান করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সামার ২০২০ থেকে ২০২৫ এর স্প্রিং সেমিস্টার পর্যন্ত স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৩৭৫ জনকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সভায় মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবার ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক একরাম হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. এম. আনোয়ার হোসেন। এছাড়া বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান সমাবর্তনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
পরিবেশের দূষণের মতোই মনের দূষণও ব্যক্তি ও সমাজকে কষ্ট দেয়, এমন বার্তা নিয়ে রাজধানীতে পালিত হয়েছে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। আয়োজকেরা বলছেন, ব্যক্তির মন ভালো থাকলে পরিবার, সমাজ ও বিশ্বও ভালো থাকে। যুগ যুগ ধরে মানুষের মন ভালো রাখার চর্চাই করে আসছে মেডিটেশন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৭ টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে বাংলাদেশে মেডিটেশন চর্চার পথিকৃৎ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়। এ আয়োজনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা শ্রেণি–পেশার হাজারো শান্তিপ্রিয় মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মিলিত কণ্ঠে ভালো থাকার প্রত্যয় উচ্চারণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে এক অডিও বার্তায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মাদাম নাহার আল বোখারী।
বৈজ্ঞানিক মেডিটেশন পদ্ধতি ‘কোয়ান্টাম মেথড’–এর উদ্ভাবক শহীদ আল বোখারী মহাজাতক এক অডিও বার্তায় বলেন, কোয়ান্টাম তিন দশক ধরে বলে আসছে- মন ভালো তো সব ভালো। ২০২৪ সালে জাতিসংঘ ২১ ডিসেম্বরকে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস হিসেবে ঘোষণা করায় সারাবিশ্বের মেডিটেশন চর্চাকারীদের মতো বাংলাদেশের মানুষও আনন্দিত হয়েছে।
শহীদ আল বোখারী বলেন, কোয়ান্টাম ২০২৫ সালকে ঘোষণা করেছে ‘দ্য ইয়ার অব মেডিটেশন’ হিসেবে, যা সমাজের সর্বস্তরে মেডিটেশন চর্চাকে নতুন গুরুত্ব দিয়েছে।
আলোচনায় বর্তমান ডিজিটাল জীবনে বেড়ে যাওয়া উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, অস্থিরতা, ট্রমা, ভয় ও অনিশ্চয়তা এবং সেখান থেকে সৃষ্ট মনোদৈহিক রোগের বিষয়টি উঠে আসে। বক্তারা বলেন, এসব থেকে মুক্তির পথ দেখায় মেডিটেশন। তাই মেডিটেশনের বাণী বিশ্বের প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে মেডিটেশন চর্চার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন সাবেক সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (এসডিএফ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনাক হোসেন, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের হেড অব নিউজ রেজওয়ানুল হক রাজা, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহসীন ও স্কলাস্টিকা স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শাহিদা রহমান।
ঘণ্টাব্যাপী আয়োজনে মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেটসহ দেশব্যাপী শতাধিক স্থানে একযোগে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস পালিত হয়। এ ছাড়া বিদেশের বিভিন্ন স্থানেও দিবসটি পালিত হয়। শিশু–কিশোরসহ অসংখ্য মানুষ মেডিটেশনে অংশ নিয়ে জানিয়ে দেন তাদের বিশ্বাস- মন ভালো থাকলেই সব ভালো।