গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে বাস ও ট্রাকের মাঝে চাপা পড়ে ইজিবাইকের চালকসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১৯ জন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের ডোমরাকান্দি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, মুকসুদপুর উপজেলার বরইতলা বিশম্ভরদী গ্রামের আবু রায়হান শেখের দুই ছেলে আবুল বশার শেখ (৪০) ও আবুল খায়ের শেখ (৩৫), একই গ্রামের চুন্নু শেখের ছেলে হাসান শেখ (২৯) এবং দিগনগর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ইয়ার ইয়ার আলী (৩৮)।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ মো. খায়রুল আনাম জানান, বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সাকুরা পরিবহনের একটি বাস একই দিক থেকে আসা একটি ট্রাককে সাইড দিতে যায়। এ সময় বাস ও ট্রাকের মাঝে চাপা পড়ে একটি ইজিবাইক। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকের দুই যাত্রী বশার শেখ ও খায়ের শেখ নিহত হন এবং ইজিবাইক চালক হাসান শেখ ও ইয়ার আলী গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে এবং আহত ইজিবাইক চালকসহ ২১ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে। বিকেলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়ার আলী ও হাসান শেখ মারা যান।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও ঘাতক বাস ও ট্রাকটি আটক করা হয়েছে।
দিনে ও রাতে এলাকাভিত্তিক শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়ে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা জারি করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে।
২০০৬ সালের বিধিমালা বাদ দিয়ে এবার নতুন করে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা জারি করল সরকার। এ বিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
বিধিমালায় বলা হয়েছে, ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সময় ‘দিবাকালীন’ সময় হিসেবে চিহ্নিত হবে। রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত বিবেচিত হবে ‘রাত্রিকালীন সময়’ হিসেবে। কোন সময়ে কত মাত্রার শব্দকে মান ধরা হবে, বিধিমালায় তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
>> নীরব এলাকা: দিনে ৫০, রাতে ৪০ ডেসিবল
>> আবাসিক এলাকা: দিনে ৫৫, রাতে ৪৫ ডেসিবল
>> মিশ্র এলাকা: দিনে ৬০, রাতে ৫০ ডেসিবল
>> বাণিজ্যিক এলাকা: দিনে ৭০, রাতে ৬০ ডেসিবল
>> শিল্প এলাকা: দিনে ৭৫, রাতে ৭০ ডেসিবল
যানবাহনের হর্ন সংক্রান্ত বিধিনিষেধে বলা হয়েছে, নির্ধারিত মানমাত্রা অতিক্রমকারী হর্ন, হাইড্রোলিক হর্ন, মাল্টি টিউন হর্ন ও সহায়ক যন্ত্রাংশ প্রস্তুত, আমদানি, মজুদ, বিক্রয়, বিক্রির জন্য প্রদর্শন, বিতরণ, বাজারজাতকরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশে পরিবহন ও ব্যবহার করা যাবে না।
কোনো ব্যক্তি মোটরযান বা নৌযানে অননুমোদিত শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী হর্ন স্থাপন ও ব্যবহার করতে পারবে না।
নীরব এলাকায় যানবাহনে কোনো প্রকার হর্ন বাজানো যাবে না। আবাসিক এলাকায় রাত ৯টার পর থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত হর্ন বাজানো যাবে না।
নীরব এলাকায় দিনে ও রাতে এবং অন্যান্য এলাকায় রাতে পটকা, আতশবাজি ও অনুরূপ শব্দ সৃষ্টিকারী কোনো কিছুর বিস্ফোরণ ঘটানো যাবে না। তবে রাষ্ট্রীয়, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসবে অনুমতি নিয়ে সীমিত আকারে পটকা, আতশবাজি ব্যবহার করা যাবে।
বিধিমালায় বলা হয়েছে, সব ধরনের শিল্প কারখানাকে শব্দের মানমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
আবাসিক, বাণিজ্যিক, মিশ্র, শিল্প ও নীরব এলাকার সকল জেনারেটর ব্যবহারকারীকে জেনারেটর থেকে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে বনভোজন নিষিদ্ধ। প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে উচ্চ শব্দ উৎপন্ন হয় এমন শব্দের উৎস ব্যবহার করা যাবে না।
বনভোজন ও সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত যানবাহনে উচ্চ শব্দ উৎপন্নকারী মাইক, লাউড স্পিকার, এমপ্লিফায়ার, সুরযন্ত্র (মিউজিক সিস্টেম) বা অন্য কোনো উচ্চ শব্দ উৎপন্নকারী যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে ন।
শাস্তি কী
বিধিমালায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত মানমাত্রা অতিক্রমকারী হর্ন, হাইড্রোলিক হর্ন, মাল্টি টিউন হর্ন ও সহায়ক যন্ত্রাংশ প্রস্তুত, আমদানি ও বাজারজাত করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড দেওয়া যাবে।
মোটরযান বা নৌযানে অননুমোদিত শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী হর্ন ব্যবহার করলে এবং নীরব এলাকায় যানবাহনের হর্ন বাজালে সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হেতে পারে। চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে ১ পয়েন্ট কাটা যাবে।
এছাড়া অন্যান্য বিধি ভঙ্গের জন্য সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
তবে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা বা অন্য কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে; ঈদের জামাত, জানাজা, নাম-সংকীর্তন এবং শবযাত্রাসহ অন্যান্য আবশ্যিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে; সরকারি বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রচারকালে; প্রতিরক্ষা, পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনকালে; স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, বিজয় দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি, পহেলা বৈশাখ, মহররম বা সরকার ঘোষিত অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে; আকাশযান ও রেলগাড়ি চলাচলের ক্ষেত্র এই বিধিমালা প্রযোজ্য হবে না।
ভোটের প্রচারেও মানতে হবে শব্দের বিধি
ভোটের প্রচারে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছে, সব নির্বাচনে নীরব এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে মাইক, লাউড স্পিকার, পাবলিক অ্যাড্রেসিং সিস্টেম বা অন্য কোনো উচ্চ শব্দ উৎপন্নকারী যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
নীরব এলাকা ছাড়া অন্যান্য এলাকায় নির্বাচনী প্রচারাভিযানে নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধিমালা মেনে চলতে হবে। তবে শব্দের মানমাত্রা অতিক্রম করা যাবে না।
এদিকে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় মাইক ও লাউড স্পিকার ব্যবহারের বিষয়ে বলা হয়েছে- কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ব্যক্তি কোনো নির্বাচনী এলাকায় একইসঙ্গে ৩টির বেশি মাইক্রোফোন বা লাউড স্পিকার ব্যবহার করতে পারবেন না।
>> দল, প্রার্থী বা তার পক্ষে প্রচারের সময় কোনো নির্বাচনী এলাকায় মাইক বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্য যন্ত্রের ব্যবহার দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবেন।
>> নির্বাচনী প্রচার কাজে ব্যবহৃত মাইক বা শব্দ বর্ধনকারী যন্ত্রের শব্দের মানমাত্রা ৬০ ডেসিবেলের বেশি হতে পারবে না।
>> কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহের আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না এবং ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার ৪৮ (আটচল্লিশ) ঘণ্টা আগে নির্বাচনি প্রচার শেষ করতে হবে।
এ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের দণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। সর্বোচ্চ প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে ইসির।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন কর্ণফুলী টানেলের রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ২৫ নভেম্বর হতে ৩০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ দিবাগত রাত ১১:০০টা হতে ভোর ০৫:০০টা পর্যন্ত প্রয়োজন অনুযায়ী 'পতেঙ্গা হতে আনোয়ারা' অথবা 'আনোয়ারা টু পতেঙ্গা' টিউবের ট্রাফিক ডাইভারসনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিতভাবে যানচলাচল অব্যাহত রাখা হবে। এসময় বিদ্যমান ট্রাফিকের পরিমাণ অনুযায়ী সর্বনিম্ন ০৫ (পাঁচ) হতে সর্বোচ্চ ১০ (দশ) মিনিট টানেলের উভয়মুখে সম্মানিত যাত্রীদের অপেক্ষমাণ থাকার প্রয়োজন হতে পারে। কর্ণফুলী টানেলের নিরাপদ ও কার্যকর রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ কাজে আপনার আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ২০২৫ তারিখে জনাব সুমি রানী দাস,সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, গাজীপুর -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ- চন্দ্রা, জোনাল বিক্রয় অফিস-চন্দ্রা আওতাধীন বারেন্ডা, মোল্লা মার্কেট,কাশিমপুর, গাজিপুর মহানগর, গাজীপুর এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ২৫ টি বাড়ির ১৫০ ডাবল চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ ৩/৪ ইঞ্চি ব্যাসের ৫০ ফুট জি আই পাইপ, ৩/৪ ইঞ্চি ব্যাসের ২০০ ফুট প্লাস্টিক কয়েল পাইপ, ৩/৪ ইঞ্চি ব্যাসের ৩০ ফুট প্লাষ্টিক থ্রেড পাইপ ও সম্পুর্ন অবৈধ ৬ টি রেগুলেটর জব্দ/অপসারণ করা হয়েছে। উক্ত অভিযানে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের কারনে ০৩ জন অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারী হতে মোট-২,২০,০০০/- জরিমানা তাৎক্ষণিক আদায় করা হয়েছে।
একই দিনে, অবৈধ গ্যাস ব্যবহার প্রতিরোধ ও সিস্টেম লস হ্রাসকল্পে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ -৬ ও মেট্রো ঢাকা রাজস্ব বিভাগ -৬ -এর যৌথ উদ্যোগে পল্লবী বিক্রয় শাখা ও কাফরুল বিক্রয় শাখার আওতাধীন এলাকায় অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, হেভেন ইন্টারন্যাশনাল ডাই প্রসেসিং, নর্থ বেঙ্গল স্ট্রিম/ ওয়াশিং, নিউ ফোর স্টার ওয়াশিং ও জাকি ডাইং এন্ড এক্সেসরিজ নামক প্রতিষ্ঠানের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ইব্রাহীমপুর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পিছনের রাস্তায় ২” ডায়া বিশিষ্ট বৈধ বিতরণ লাইনে লিকেজ থাকায় বৈধ গ্রাহকগণ অফিসের অনুমোদন ব্যতীত নিম্নমানের ফিটিংস দিয়ে নিজস্ব উদ্যোগে উক্ত রাস্তায় বিদ্যমান বৈধ ২” ডায়া বিশিষ্ট বিতরণ লাইনের পাশাপাশি অবৈধভাবে আনুমানিক দৈর্ঘ্য ৪০০ ফুট অন্য একটি ২” ডায়া বিশিষ্ট বিতরণ পাইপলাইন উত্তোলনের জন্য রাইজার টিমের মাধ্যমে মাটি খননের কিছুক্ষণের মধ্যে এলাকার কিছু লোকজন/ মহিলা ও পুরুষ মিলে মাটি গুলো দিয়ে ভরাট করে ঢেকে দেয় এবং লাইন বিচ্ছিন্ন করতে বাধা দেয় যার ফলে অবৈধভাবে স্থাপিত বিতরণ লাইন বিচ্ছিন্ন/অপসারণ করা সম্ভব হয়নি, যা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। উক্ত অভিযানে, বিভিন্ন ব্যাসের ৪৮ ফুট লাইন পাইপ, ২টি রেগুলেটর, ১টি লক উইং কক, ২টি বার্নার ও ১টি বল ভাল্ব অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া, জনাব সায়মা রাইয়ান, সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর জোবিঅ-সোনারগাঁও আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের সোনারগাঁও ইকোনোমিক জোনের গেট সংলগ্ন এলাকা এবং ঝাউচর এলাকার ৫টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ৪টি চুনা কারখানা ও ২০০টি অবৈধ আবাসিক চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, বিভিন্ন ব্যাসের ৩৮৪ ফুট লাইন পাইপ, এয়ার মিক্স বার্ণার- ১টি, পাথর ওজন করার মেশিন- ১টি, কারখানার কাজে ব্যবহৃত বেলচা- ৪টি অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। চুনা কারখানাগুলোর স্থাপনা এক্সক্যাভেটর মেশিনের সাহায্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে৷
এছাড়াও, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ-সাভার, জোবিঅ-আশুলিয়া আওতাধীন ডেবনিয়ার গার্মেন্টস সংলগ্ন, গোরাট, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা, ও ধনাইদ, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা এলাকার ২টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ৩ কিলোমিটার বিতরণ লাইনের আনুমানিক ৭০০ টি অবৈধ আবাসিক গ্যাস বার্নারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, বিভিন্ন ব্যাসের ৬০০ মিটার লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ১৭,৯৮,২৩৬ টাকার গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
অধিকন্তু, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ-চন্দ্রা, জোবিঅ -টাঙ্গাইল আওতাধীন নাজিরপাড়া,গন্ধব্যপাড়া গোড়াই, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল এলাকার ৪টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, অতিরিক্ত চুলা ব্যবহারের জন্য ০৪ টি রাইজারের ৫ ডাবল অতিরিক্ত চুলা, ০২ টি বহুতল ভবনের সম্পূর্ণ অবৈধ ৩৫ টি ডাবল ও সম্পূর্ণ অবৈধ ২৭ টি আধাপাকা বাড়ির ৯০ টি ডাবল চুলাসহ মোট ১৩০ টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, ৩/৪ ইঞ্চি পাইপ ২০০ ফুট লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও, জোবিঅ-কিশোরগঞ্জ, রাজস্ব উপ শাখা- কিশোরগঞ্জ -এর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বকেয়ার জন্য ০৭ টি রাইজারের ৮টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ২০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ৪৩১টি শিল্প, ৫৪৬টি বাণিজ্যিক ও ৭৬,৬৬১টি আবাসিকসহ মোট ৭৭,৬৩৮টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ১,৬৬,৬৯৫টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ৩১৭ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।
রূপগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনে চার তলার ছাদে কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে মোজাম্মেল শিকদার (৭০) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার পূর্বাচলের জলসিড়ি আবাসিক প্রকল্পের ১১নং সেক্টরের নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত মোজাম্মেল শিকদার (৭০) উত্তরখান থানার কাঁচকুড়া এলাকার আবেদ আলী শিকদারের ছেলে।
স্থানীয় ও মোজাম্মেল শিকদারের মেয়ে নাজমা বেগম (৩০) জানান, ছাদে কাজ করার সময় মোজাম্মেল শিকদার পড়ে গিয়ে আহত হলে নির্মাণাধীন ভবনের অন্যান্য শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। পরে ডিএমপি ঢাকার শাহবাগ থানা থেকে বেতার বার্তার মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। পরে নাজমা বেগম বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ নিয়ে যান।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানা নেই। কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
রাজধানীর মেট্রোরেল ব্যবহারে যাত্রীসেবা আরও সহজ করতে চালু হয়েছে অনলাইন রিচার্জ সুবিধা। এখন থেকে স্টেশনের কাউন্টারে লাইনে দাঁড়ানো ছাড়াই ঘরে বসেই র্যাপিড পাস বা এমআরটি পাসে রিচার্জ করা যাবে। মঙ্গলবার সকালে আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনে এ সেবার উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন।
ডিটিসিএ জানিয়েছে ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, নগদ, রকেটসহ যেকোনো অনলাইন পেমেন্ট মাধ্যম ব্যবহার করে রিচার্জ করা যাবে। এজন্য ডিটিসিএর ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপে নিবন্ধন করে লগইন করতে হবে। তবে অনলাইনে পেমেন্ট সফল হলেও স্টেশনে স্থাপিত নতুন এভিএম মেশিনে কার্ড স্পর্শ না করা পর্যন্ত রিচার্জ কার্যকর হবে না।
নীতিমালা অনুযায়ী, অনলাইন রিচার্জে অতিরিক্ত পেমেন্ট গেটওয়ে ফি প্রযোজ্য হবে। রিচার্জ করা টাকা তিন মাস পর্যন্ত ‘অপেক্ষমাণ’ অবস্থায় থাকবে। নির্ধারিত সময়ে কার্ড এভিএম-এ ট্যাপ না করলে টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাকাউন্টে ফিরে যাবে, তবে ১০ শতাংশ সার্ভিস চার্জ কেটে রাখবে কর্তৃপক্ষ।
গ্রাহক চাইলে সাত দিনের মধ্যে রিফান্ড নিতে পারবেন, সে ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ফি কাটবে। এ সুবিধায় সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যাবে।
তবে কার্ড ব্ল্যাকলিস্ট হলে কোনো ধরনের রিচার্জ নেয়া হবে না। অনলাইন রিচার্জ সেবা চালুর অংশ হিসেবে ১৬টি স্টেশনে ৩২টি নতুন এভিএম মেশিন স্থাপনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিটিসিএ।
অনলাইন রিচার্জ করা যাবে যেভাবে: মেট্রোরেলের কার্ডে অনলাইন রিচার্জ করতে শুরুতে মেট্রোর র্যাপিড পাস ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। রিচার্জের ক্ষেত্রে র্যাপিড পাস কার্ডটি ইতোমধ্যে নিবন্ধন করা না থাকলে নিবন্ধন করতে হবে।
যেকোনো একটি পেমেন্টের মাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইনে কার্ড রিচার্জ করতে হবে। তবে অনলাইনে রিচার্জ করার পর এভিএম কার্ড স্পর্শ করার আগ পর্যন্ত তা (রিচার্জ) অপেক্ষমাণ (পেন্ডিং) দেখাবে। ১৬টি মেট্রোস্টেশনে ৩২টি এভিএম মেশিন বসানো হয়েছে অনলাইন রিচার্জ চেক করার জন্য।
রিচার্জ সফল হলে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বরে একটি এসএমএস দেওয়া হবে। একটি কার্ডে একবারে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা, সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যাবে। রিচার্জ বাতিল করা যাবে ৭ দিনের মধ্যে। তবে ৫ শতাংশ চার্জ কেটে নেওয়া হবে।
এবারের নির্বাচন হবে ইতিহাস সৃষ্টিকারী নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি। এখন ডিসিদের একটাই কাজ সেটা হলো নির্বাচন। আর বাকি কাজ হলো রুটিন ওয়ার্ক। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জয়পুরহাট জেলার নতুন জেলা প্রশাসক মো. আল-মামুন মিয়া। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জেলার সার্বিক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে নতুন জেলা প্রশাসক আলোচনা করেন।
সামনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন সম্পর্কে সাংবাদিকদের জন্য কোন আগাম বার্তা দিয়েছেন বা আছে কি না? এমন প্রশ্নে জেলা প্রশাসক মো. আল-মামুন মিয়া বলেন, নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছিলেন। ব্রিফিং শুরু হয়ে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা ভাষণ দিয়েছেন। তারপরে ৪ জন সচিব আবার ব্রিফিং দিয়েছেন। তারমধ্যে ইলেকশন কমিশনের সচিব , তারপরে স্বরাষ্ট্র সচিব , জনপ্রশাসন সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রীপরিষদ সচিব। এ সময় ব্রিফিংয়ে তারা বিভিন্ন দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় তার বক্তব্যে বলেছেন, একটা নির্বাচন হয় প্রতি পাঁচ বছর পর পর গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ইতিহাস কীভাবে হবে? ইতিহাস হবে যে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে? অর্থাৎ এবারের নির্বাচনে আরেকটা গণভোট হচ্ছে। কাজেই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে। বাংলাদেশ কি রূপরেখা তার ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে সেটা এইবারের নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে? ওনার বক্তব্য হচ্ছে আমরা ব্যর্থ হইতে পারি না। আমরা ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়ে যাবে। বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়ে যাবে। কাজেই যেকোনভাবে আমাদেরকে এই নির্বাচনে সফল হইতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেসমিন নাহার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাইমেনা শারমীন, জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, প্রথম আলো জেলা প্রতিনিধি রবিউল ইসলামসহ জেলার ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট, অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়ার সাংবাদিকরা।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ার জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে ফরিদপুরে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার ফরিদপুর শহরের জেলখানা গেট এলাকা থেকে পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি খন্দকার আবদুল আউয়াল এর নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে এসে শেষ হয়।
পরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লার কাছে তারা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এ সময় পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি খন্দকার আবদুল আউয়াল, ফরিদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. সেক নাজিম, সিনিয়র সহসভাপতি মনসুর আহমেদ, সহসভাপতি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক, মো. ইবনুল কাজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোখলেসুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মো. আব্দুল হাকিম, যুব বিষয়ক সম্পাদক মো. মশিউর রহমানসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, পতিত স্বৈরাচারের বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ও তার দোষরদের মদদে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণের লক্ষ্যে গ্রাহক সেবার মান তলানীতে পৌঁছাতে বিগত ১৭ বছরে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে কোন কারিগরী লোকবল নিয়োগ করা হয়নি। ফলে ২১ জেলার বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বহিরাগত গ্যাটিস নির্ভর হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা একটি অতিমাত্রায় কারিগরী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোন দক্ষ জনবল তৈরি হয়নি।
আমরা অবিলম্বে ‘আউটসোর্সিং’ প্রক্রিয়ায় লোকবল নিয়োগ বন্ধ করে স্থায়ী শ্রমিক নিয়োগের জন্য ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করছি।
জনপ্রিয় ইসলামী স্কলার, চিন্তক ও বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, রাসুলের (সা.) শিক্ষাদান পদ্ধতি কল্যাণকামিতায় ভরপুর ছিল। তাঁর শিক্ষাদান ছিল উৎসাহমূলক ও আশাব্যঞ্জক। তাঁর শিক্ষাদান পদ্ধতি ছিল সুন্দর ও উপদেশমূলক। অংশগ্রহণমূলক ও প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক শিক্ষাদানকে তিনি অগ্রাধিকার দিতেন। তিনি শুনতেন এবং শোনাতেন। ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) সভ্যতা, সমতা, জীবনবোধ শিখিয়েছেন। তিনি শিক্ষক হিসাবে প্রেরিত হয়েছিলেন। জ্ঞানার্জনকে আল্লাহর রাসুল (সা.) বাধ্যতামূলক করেছিলন। জ্ঞানের আলোকে তিনি বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে বলেছেন। জ্ঞান অর্জন করতে অনীহাকে নবী (সা.) পাপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) আয়োজিত ‘রাসুল (সা.) এর শিক্ষাদান পদ্ধতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে জনপ্রিয় ইসলামী স্কলার, চিন্তক ও বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী প্রধান অতিথি ও প্রধান আলোচকের বক্তব্যে কথাগুলো বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আ ন ম শামসুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শাহজাহান এবং আইআইইউসির ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ। আলোচনার শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অতিথিকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের পরিচালক মুহাম্মদ মামুনুর রশীদ এবং অতিরিক্ত পরিচালক চৌধুরী গোলাম মাওলা। সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্পণ শিল্পীগোষ্ঠী মনোমুগ্ধকর ইসলামি সংগীত পরিবেশন করে।
বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় উম্মাহর সম্পদ। এটাকে আমাদেরকেই সুন্দর ও সমৃদ্ধ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, দুনিয়ার সফলতাই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়। প্রকৃত সফলতা হলো আখেরাতমুখী হওয়া, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ অর্জন করা। এই বিশ্ববিদ্যালয় সেই আদর্শেই শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে চায়।
২৩ মাস বন্ধ থাকার পর পুনরায় গ্যাস সংযোগ পেল জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানা (জেএফসিএল)। গ্যাস সংযোগ দেওয়ায় ফের ইউরিয়া উৎপাদনে ফেরার কার্যক্রম শুরু করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার সন্ধ্যার পর যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ চালু করে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যমুনা সার কারখানার উপ-প্রধান প্রকৌশলী (রসায়ন) মো. ফজলুল হক। দীর্ঘদিন পরে গ্যাস সংযোগ পেয়ে কারখানা চালু হওয়ায় খুশি কারখানার কর্মকর্তা, কর্মচারী, শ্রমিক, ডিলার ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
কারখানা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে তারাকান্দি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা। এ কারখানাটি বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা নিয়ন্ত্রণাধীন এবং কেপিআই-১ মানসম্পন্ন সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। কারখানার সঠিক উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন গড়ে ৪২ থেকে ৪৩ পিএসআই গ্যাসের প্রয়োজন হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কারখানাটি প্রতিদিন ১ হাজার ৭০০ টন সার উৎপাদন করছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে গ্যাসের প্রেসার স্বল্পতা ও নানা ত্রুটির কারণে উৎপাদন কমে গিয়ে ১ হাজার ২০০ টনে নেমে আসে।
গত ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে তিতাস কোম্পানি গ্যাসের প্রেসার কমিয়ে দেয়ার কারণে উৎপাদন ও কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে বন্ধ থাকার দীর্ঘ ১৩ মাস পর ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পুনরায় গ্যাস সংযোগ পেয়ে আবারো উৎপাদনে ফিরে কারখানাটি। কিন্তু উৎপাদন শুরুর ৪ দিনের মাথায় কারখানার অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আজ বুধবার রাত ৭টার পর ফের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকে বন্ধ রয়েছে বৃহৎ এ কারখানাটি। এদিকে গত সোমবার থেকে গ্যাসের চাপ পুনরায় বৃদ্ধি করলে ইউরিয়া উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
যমুনা সার কারখানার উপ-প্রধান প্রকৌশলী (রসায়ন) মো. ফজলুল হক বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যার পর কারখানায় গ্যাসের চাপ বাড়িয়েছে তিতাস। কারখানার যন্ত্রাংশের কিছুটা মেরামত করে পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে আগামী সপ্তাহ নাগাদ সময় লাগতে পারে।’
ঝালকাঠি শহরের কোলঘেঁষে বয়ে যাওয়া সুগন্ধা নদী যুগ যুগ ধরে এখানকার দুই তীরের সৌন্দর্য ছড়িয়েছে। কিন্তু প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ ভাঙনে ভিটে ছাড়া হয়েছে এ নদীর তীরের অনেক পরিবার। এলপিজি বহনকারী দ্রুত গতির জাহাজের ঢেউয়ে শীতকালেও এ নদীর তীর ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। ঘরবাড়ি ভেঙে নদীতে বিলীন হওয়া, চাষের জমি হারানো আর প্রতিদিনের অনিশ্চয়তা যেন এক অদৃশ্য আতঙ্ক হয়ে ছিল এ অঞ্চলের মানুষের জীবনে। সুগন্ধা তীরের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কাটিয়ে ওঠার স্বপ্ন এখন বাস্তবের কাছে পৌঁছেছে।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের হাতে নেওয়া ‘সুগন্ধা নদীর ভাঙন থেকে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজলো ও নলছটি উপজলোর বিভিন্ন এলাকা রক্ষা’ প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে, যা নদীপাড়ের জনজীবনে নতুন আশার আলো ছড়িয়ে দিয়েছে।
প্রকল্প এলাকায় এখন প্রতিদিনই দেখা যায় শ্রমিকদের বেশ কর্মযজ্ঞ। নদীর তীরে স্থাপন করা হচ্ছে সুরক্ষাবাঁধ, জিওব্যাগ, সিমেন্ট কংক্রিটের ব্লকসহ আধুনিক নদীশাসন কাঠামো।
পাউবো কর্মকর্তারা জানান, ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন ১৩.২১৫ কি. মি. নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পটির দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্বের কথা মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
সুগন্ধা নদীর স্রোতের ধরন, মাটির গঠন এবং ভাঙনপ্রবনতার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব ব্যবস্থায় নদীর তীর দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল থাকবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
সুগন্ধা তীরের বাসিন্দা মাহাবুব আলম, মকবুল মৃধা, সবুজ হাওলাদার এবং মনোয়ারা বেগমসহ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে পরিবর্তনের ছোঁয়া টের পাচ্ছেন তারা। পৌর এলাকার কৃষ্ণকাঠি, কুতুবনগর, শহীদ স্মরণী এলাকার নদীর তীরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগেও যারা ভয়ে নিজের বসতবাড়িতে বিনিয়োগ করতে পারছিলেন না, এখন তারা নতুন ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভাঙনের ভয়ে কমে যাওয়া ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন গতি আসবে। নদীর অপর পাড়ের কৃষকরা নিশ্চিন্তে আগাম মৌসুমের ফসল ফলানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নদীর তীরের বাসিন্দারা আরও জানিয়েছেন, প্রকল্পটি সমাপ্ত হলে বেড়িবাঁধ এলাকা পর্যটন এলাকায় রূপ পাবে। এছাড়া নদীর তীরবর্তী জমির দামও বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। যা স্থানীয় অর্থনীতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
সুগন্ধা তীরের বাসিন্দা কামরুজ্জামান, হুমায়ুন কবির এবং আজগর হাওলাদার বলছেন, ‘নদীর ভাঙন রোধ শুধু একটি সরকারি প্রকল্প নয়, এটি নদীর পাড়ের মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একটি স্বপ্ন। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে মানুষ আবাসন ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে আরেকটি নিরাপদ বাস্তবতায় প্রবেশ করবে।’
এদিকে প্রকল্পকে সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি নিয়মিতভাবে স্থানীয় দপ্তরে খোঁজ নিচ্ছেন। আর প্রতিনিন একাধিকবার ব্লক তৈরির কাজ ও কাজের গুণগত মান যাচাই করছেন পাউবো ঝালকাঠি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। নকশা অনুযায়ী নির্মাণকার্য হচ্ছে কি না, তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে কর্তৃপক্ষ। এ কারণে পুরো প্রকল্পটি নিরাপদ, মানসম্মত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উন্নয়ন সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এই প্রকল্প শুধু ভাঙন ঠেকিয়ে মানুষের ঘরবাড়ি রক্ষাই করবে না, বরং ঝালকাঠির সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন পথ খুলে দেবে।
নদীর পাড়কে কেন্দ্র করে তৈরি হবে নতুন বাজার, রেস্টুরেন্ট, পার্ক, কৃষিভিত্তিক উদ্যোগ এবং টেকসই পরিবেশবান্ধব বসতি। সব মিলিয়ে, সুগন্ধা নদী সংরক্ষণ প্রকল্প এখন ঝালকাঠির মানুষের সামনে নিরাপদ, স্থিতিশীল এবং উন্নয়নমুখী ভবিষ্যতের দ্বার উন্মোচিত করছে।
প্রকল্পটি শেষ হলে সুগন্ধা নদীর তীর শুধু ভাঙন মুক্তই হবে না, এটি রূপ নেবে টেকসই উন্নয়নের এক অনন্য সম্ভাবনাময় অঞ্চলে।
#
নওগাঁর মান্দা উপজেলায় নারী উন্নয়ন ফোরামের নামে বরাদ্দকৃত ১০ লাখ টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন ছাড়াই আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কাগজে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও ফোরামের সদস্যরা জানেন না বরাদ্দের কথা; কেউ কোনো উপকরণও পাননি। ফলে উপজেলাজুড়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। গত বছর আগস্ট মাসের পর থেকে সভাপতি না থাকার কারণে নারী উন্নয়ন ফোরামের কোনো অস্তিত্ব নেই বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একের পর এক ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থআত্মসাতের ঘটনা বেড়ে চলেছে। দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সরকারি বার্ষিক উন্নয়ন তহবিলের (এডিবি) আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নারী উন্নয়ন কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রকল্পে মোট ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়। এর মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণের নামে ৫ লাখ টাকা এবং গবাদিপশু বিতরণের নামে আরও ৫ লাখ টাকা।
প্রকল্প দুটি উপজেলা এলজিইডির তালিকায় যথাক্রমে ১৪৮ ও ১৪৯ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত এবং কাগজপত্র অনুযায়ী ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে উপজেলা পরিষদের সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, নারী উন্নয়ন ফোরামের ৪২ জন সদস্যের কেউই এই দুই প্রকল্প থেকে কোনো উপকরণ পাননি। বরাদ্দের ব্যাপারেও ছিল না তাদের কোনো ধারণা। গত অর্থবছরের বরাদ্দকৃত সেলাই মেশিন ও গবাদিপশু না পেয়ে (২৪ নভেম্বর ২০২৫) নারী উন্নয়ন ফোরামের সদস্যরা বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আখতার জাহান সাথীর কার্যালয়ে মৌখিক অভিযোগ করে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন।
নারী উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও পরানপুর ইউপির সদস্য কমলা বেগম বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে নারী উন্নয়ন ফোরামের মাধ্যমে কিছুই দেওয়া হয়নি। বরাদ্দ ছিল কি না, সেটাও আমাদের জানানো হয়নি।’
কসব ইউপির নারী সদস্য আঞ্জুয়ারা ও সানোয়ারা বেগম বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর থেকে নারী ফোরামের সভাপতি না থাকায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কোনো বরাদ্দ বা বিতরণ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না।
উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ জানান, ‘আমি যোগদানের আগেই কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে। সেলাই মেশিন ও গবাদিপশু বিতরণ হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী বলেন, ‘প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকলে কাজ বাস্তবায়নের কথা। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া আরও পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস এ রায় প্রদান করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চৌদ্দগ্রাম থানার দেড়কোটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও একই গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে জুয়েল রানা ওরফে জুয়েল। এছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চৌদ্দগ্রামের দেড়কোটা গ্রামের কারি ফজলুল হক, আজাদ রহমান, আবদুল কাদের, কবির আহমেদ ও ফেলনা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন। রায় ঘোষণাকালে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কবির আহমেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর ছয় আসামি পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও তার সহযোগীরা আনোয়ার হোসেনের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এতে বাধা দিলে তারা আনোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে তাকে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। পরদিন ২৩ এপ্রিল এ ঘটনায় নিহতের পিতা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট জেলা ডিবির এসআই জিল্লুর রহমান আদালতের নির্দেশে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং অপর পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া মামলার চার্জশিটভুক্ত ১২ জন আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন- অ্যাডভোকেট মুমিনুল হক ভূঁইয়া। মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
বাউল শিল্পী আবুল সরকারের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কিশোরগঞ্জে সার্বজনীন মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে কিশোরগঞ্জের বাউল ও শিল্পী সমাজের উদ্যোগে সার্বজনীন ও উন্মুক্ত এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সারাদেশে ‘তৌহিদী জনতার নামে দরবার শরীফ, মাজার, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। এমনকি পাগল-ফকিরদের শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যার ঘটনাও ঘটছে।
বক্তারা আরও বলেন, বাউল শিল্পী আবুল সরকারকে নিরাপত্তার কথা বলে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, যা অমানবিক ও অগ্রহণযোগ্য। অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তারা।
বক্তারা জানান, ‘আমরা যে আন্দোলন-অভ্যুত্থান চেয়েছিলাম, তা কোনো সংস্কৃতি ধ্বংসের জন্য নয়, মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্যও নয়।’
মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সুফী সংগঠনের নেতারা সংহতি জানান এবং বাউল আবুল সরকারের দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন মধু, বাংলাদেশ জাতীয় বাউল সমিতির কিশোরগঞ্জের সভাপতি বাউল হারিছ, শানে পাঞ্জাতন মহরম জারী দলের পরিচালক বাউল মান্নান, বাউল কিবিরিয়া খোকন, মাসুদুর রহমান মিলন, জেলা যুবদলের সহসভাপতি রকিবুল হাসান ফয়সাল।
এছাড়া ওই মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন তরফীয়া দরবার ও মাজার শরীফের সাজ্জাদনশীন সৈয়দ ইয়াছিন, জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত কুমার সরকার, উদিচির সাধারণ সম্পাদক বাবুল রেজা, বাপা সভানেত্রী অ্যাড. হামিদা বেগম, মহিলা পরিষদ নেত্রী কামরুন্নাহার।
উল্লেখ্য, ৪ নভেম্বর মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জাবরা এলাকায় একটি পালাগানের আসরে বাউল শিল্পী আবুল সরকার ধর্ম অবমাননা করে মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তার মন্তব্যের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।
এরপরে ২০ নভেম্বর মাদারীপুরে এক অনুষ্ঠানে আবুল সরকারকে গ্রেপ্তার করে মানিকগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।