বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ফেনীতে বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৮

ছবি: সংগৃহীত
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:৩১

ফেনী জেলায় ভয়াবহ বন্যায় আরও দুইজন বেড়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২৮ জন হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন পুরুষ, ৭ জন নারী এবং ৪ জন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ জনের পরিচয় মিলেছে। বাকি ৮ জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

আজ মঙ্গলবার সকালে তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার। তবে একাধিক ব্যক্তির দাবি, এখনো তাদের স্বজন নিখোঁজ রয়েছেন।

পুলিশের গোয়েন্দা শাখার বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বন্যায় মৃত ওই ২৮ জনের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় অজ্ঞাত তিনজন, সোনাগাজী চারজন এবং ছাগলনাইয়া উপজেলায় অজ্ঞাত একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ফেনী সদরে ৭ জন, দাগনভূঞায় ৩ জন, ফুলগাজীতে ৭ জন, সোনাগাজীতে ৬ জন, ছাগলনাইয়ায় ৩ জন এবং পরশুরামের ২ জন রয়েছেন।

উল্লেখ্য, অতি বৃষ্টি ও ভারত হতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীতে জুলাই-আগস্ট মাসে তিনবার বন্যা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৯ আগস্ট আকস্মিক বন্যায় পরশুরাম, ফুলগাজীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। এ প্লাবন দ্রুত সমগ্র জেলায় ছড়িয়ে পড়ে।

বিষয়:

ঢাকা ও রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারকে বদলি

মো. সাবিরুল ইসলাম ও মো. জাকির হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম এবং রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেনকে প্রত্যাহার করে বদলি করা হয়েছে। তাদের পরবর্তী পদায়নের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে। আজ বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর জনপ্রশাসন, পুলিশ, শিক্ষা ক্যাডারসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদগুলোতে পরিবর্তন আসছে।

এদিকে পৃথক প্রজ্ঞাপনে নিয়োগের এক দিন পর আজ আট জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নিয়োগের আদেশ বাতিল করেছে সরকার। এ ছাড়া চার জেলায় ডিসি পদে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তাদের জেলা রদবদল করা হয়েছে।


নড়াইলে ট্রাকচাপায় নিহত ৩

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নড়াইল প্রতিনিধি 

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ট্রাকের ধাক্কায় তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। তার অবস্থাও গুরুতর। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে পৌরসভার আশ্রয়ন প্রকল্পের সামনে (গুচ্ছ গ্রাম) মাইটকুমড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, পৌরসভার মাইটকুমড়া গ্রামের হেমায়েত শেখের ছেলে শামিম শেখ ও একই গ্রামের রমজান বিশ্বাসের ছেলে জিয়া বিশ্বাস ও একই গ্রামের জামাল মোল্যার ছেলে রাসেল মোল্যা। আহত হয়েছেন একই গ্রামের হবিবার শেখের ছেলে কুইন শেখ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত রাসেলের বৃদ্ধা দাদির মরদেহ দাফনের জন্য মসজিদ থেকে খাটিয়া বহন করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিল চারজন। কালনা-নড়াইল-বেনাপোল মহাসড়কের মাইটকুমড়া এলাকায় পৌঁছলে লোহাগড়ার দিক থেকে আসা একটি ট্রাক খাটিয়া বহনকারীদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। আহত হন একজন।

স্থানীয়রা আহত কুইন শেখকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে লোহাগড়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বিষয়:

খুলনায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে ৩ শ্রমিকের মৃত্যু

বয়রা সরকারি মহিলা কলেজের সামনে নির্মাণাধীন ভবন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খুলনা ব্যুরো

খুলনার বয়রায় নির্মাণাধীন ভবনের পাঁচতলা থেকে পড়ে তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বয়রা সরকারি মহিলা কলেজের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতরা হলেন- রাব্বি, আশরাফুল ও মামুন।

নিহত রাব্বির মামা আব্দুল বারেক জানান, রাব্বির বাড়ি পঞ্চগড় জেলায়। সকালে তিনি জানতে পারেন কাজ করতে গিয়ে কর ভবন থেকে রাব্বিসহ তিনজন পড়ে মারা গেছেন। ওরা তিনজন কর ভবনে রড মিস্ত্রির কাজ করছিলেন।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) সুমন মণ্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহগুলোর ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করেছি।

এলাকাবাসী জানায়, সকাল থেকে নির্মাণশ্রমিকরা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার বয়রা এলাকায় অবস্থিত কর কমিশনারের কার্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করছিলেন। এ ভবনের একটি মাচায় আটজন শ্রমিক কাজ করছিলেন। এরমধ্যে তিনজন পা পিছলে পড়ে যান। বাকিরা কোনো রকমে মাচা ধরে ওপরে উঠতে সক্ষম হন।

নিচে পড়ে যাওয়া রাব্বি, মামুন ও আশরাফুলকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তাদের মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।

সোনাডাঙা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহগুলো খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহগুলো তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

উল্লেখ্য, মহানগরীর বয়রা মহিলা কলেজের বিপরীতে এনবিআরের নিজস্ব জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক ১০তলা কর ভবন।

বিষয়:

সৈয়দপুরে মহিলা দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আলোচনা সভা

সোমবার সৈয়দপুরে শহীদ ডা. জিকরুল হক রোডের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৮:২২
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা শাখার আয়োজনে সংগঠনটির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সৈয়দপুর শহরে শহীদ ডা. জিকরুল হক রোডে অবস্থিত বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা মহিলা দলের সভাপতি রিনু আফজাল।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল গফুর সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহীন আকতার শাহীন ও জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক রুপা বেগম।

এ সময় সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা-উপজেলা ও পৌর মহিলা দলেরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ প্রয়াত সব নেতাদের রুহের মাগফেরাত ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনাসহ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়। সবশেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

বিষয়:

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আবারও বাংলাদেশি নিহত

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ে ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে পারাপারে সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে শ্রী জয়ন্ত কুমার সিংহ (১৫) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে জেলার বালিয়াডাংগী উপজেলার ধনতলা সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহত জয়ন্ত কুমারের বাবা।

নিহত শ্রী জয়ন্ত কুমার সিংহ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাহিড়ি ফকির ভিঠা বেলপুকুর গ্রামের মহাদেব কুমার সিংহের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির।

বিজিবির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, মরদেহ বিএসএফ ভারতে নিয়ে গেছে আর আহতদের রংপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাংগী উপজেলার ধনতলা বিজিবি সিমান্ত এলাকা মেইন পিলার ৩৯৩ কাছাকাছি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি বিভিন্ন প্রকার লোককে ভারতে পারাপার করে দেওয়ার সমায় ভারতীয় ডিংগাপাড়া বিএসএফ বাহিনী গুলি চালালে এ ঘটনা ঘটে। আমি ঘটনাস্থানে যাচ্ছি পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।


বাগেরহাটে পিকআপ-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৪

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের ফকিরহাটে পিকআপ ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীসহ চার যাত্রী নিহত হয়েছেন। এসময় আরও তিন যাত্রী আহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফকিরহাটের কাটাখালী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। কাটাখালী হাইওয়ে থানা পুলিশের উপসহকারী পরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার মুনিগঞ্জ এলাকার নোমান শেখের স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা নিপা বেগম (২৮), রামপাল উপজেলার নবাবপুর এলাকার রাজমিস্ত্রি মো. মাসুম (৩৩), একই এলাকার রাজমিস্ত্রি শওকত আলী (৪০)। এছাড়া খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

কাটাখালী হাইওয়ে থানা পুলিশের উপসহকারী পরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে কাটাখালী থেকে যাত্রীবাহী ইজিবাইকটি টাউন নওয়াপাড়ার দিকে যাচ্ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা পিকআপ ভ্যানের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ইজিবাইকে থাকা স্কুল শিক্ষিকাসহ তিনজন ঘটনাস্থলে নিহত হন। আহত দুইজনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। পরে তাদের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ইজিবাইকটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। তবে ঘটনার পর ঘাতক পিকআপ ভ্যানটি দ্রুত পালিয়ে গেছে।


সিরাজগঞ্জে অটোরিক্সা ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহত ৫

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে রোববার দুপুরে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়কের ভদ্রঘাট কুঠিরচর এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। এঘটনায় অন্তত আরও দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।

নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় জানা গেছে; তারা হলেন- রায়গঞ্জ উপজেলার ব্রাক্ষবয়রা গ্রামের রাসেদুল ইসলাম, তাড়াশ উপজেলার ভাটড়া গ্রামের নুরুজ্জামান ও তারেক রহমান।

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, রোববার বেলা ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ থেকে নলকাগামি একটি সিএনজি অটোরিক্সা সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়কের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট কুঠিরচর এসিআই মিলের সামনে পৌঁছলে বিপরীতমুখী একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে। এতে ঘটনাস্থলেই রাসেদুল, নুরুজ্জামান ও তারেক নিহত হয়। আহত হয় আরও দুই জন। পুলিশ ও ফায়ার ব্রিগেডের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে আরও দুইজন নিহত হয়।


যমুনা নদীতে রেলসেতুর ৯৪ শতাংশের কাজ শেষ

*চলছে ঘষামাজা ও রঙয়ের কাজ *ডিসেম্বরেই উদ্বোধনের সম্ভাবনা
নির্মাণাধীন রেলসেতু পুরো দৃশ্যমান। ছবি:  দৈনিক বাংলা।
আপডেটেড ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০৮
ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা সেতু থেকে ৩০০ মিটার অদূরে দেশের দীর্ঘতম নির্মাণাধীন রেলসেতু এখন পুরোটাই দৃশ্যমান। নির্মাণাধীন এই সেতুটিতে বসানো হয়েছে সব কটি স্প্যান। ইতোমধ্যে সেতুটির ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে। বাকি রয়েছে মাত্র ৬ শতাংশ কাজ। এ কাজ শেষ হলেই ডিসেম্বরে হবে উদ্বোধন। এতে বিরতিহীনভাবে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে পারাপার হতে পারবে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের সেতুর পূর্ব প্রান্তে কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে এবং সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তেও পুরোপুরি কাজ শেষের দিকে বলে জানা যায়। এ ছাড়া সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম স্টেশন আধুনিকায়নের কাজও শেষ পর্যায়ে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান দৈনিক বাংলাকে জানান, ‘নির্মাণাধীন রেলসেতুর কাজ ইতোমধ্যে ৯৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া নির্মাণ ব্যয়ও বাড়ছে না। চলছে ঘষামাজা ও রঙের কাজ। আশা করছি, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে উদ্ধোধন করা যাবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে দ্রুত গতিতে রাতদিন কাজ করা হচ্ছে।’

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, নির্মাণাধীন সেতু দিয়ে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেনও চলাচলের উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের ১ বছর) সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।

এই প্রকল্পে খবর নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালে মার্চ মাসে সেতুটির ৩০০ মিটার উজানে পাইলিংয়ের মাধ্যমে রেলসেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে নির্মাণকাজের ব্যয় প্রথমে ধরা হয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। পরবর্তীতে এ প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে দেশীয় অর্থায়ন ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। অবশিষ্ট ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।

ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। নির্মাণাধীন এ সেতুটির সবকটি স্প্যান এরই মধ্যে বসানো হয়েছে। যমুনা নদীর পূর্ব টাঙ্গাইলের অংশের পুরোপুরি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে পশ্চিম প্রান্ত সিরাজগঞ্জে পুরোপুরি কাজ শেষের দিকে রয়েছে। এ ছাড়া সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের স্টেশন আধুনিকায়নের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নেওয়া প্রকল্পে চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নসহ রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেশের বৃহত্তর এ রেলসেতু নির্মাণে ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। প্রথম দফা ডিপিপি সংশোধনের পর সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়ায়।

এই রেল সেতুর সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ও ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার রেলসেতুর দুই পাশে ০.০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পে রেলপথের পাশাপাশি সেতুর গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।

১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেল সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।


নেত্রকোনায় যৌথবাহিনীর অভিযানে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার, আটক ৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নেত্রকোনা প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গাড়ি থেকে লুট হওয়া ১০টি আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে আরও একটি ৯ এম এম পিস্তল ও আরেকটি অস্ত্রের অর্ধাংশ উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী। এ ঘটনায় পূর্বধলা থেকে এক নারীসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে লুট হওয়া ১০টি অস্ত্রের ৯টি পুরোপুরি ও একটি আংশিকভাবে উদ্ধার হলো।

গত ৪ আগস্ট নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারে পুলিশের গাড়িতে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার সময় পুলিশকে মারধর করে ১০টি ৯ এম এম পিস্তল, ২৬টি ম্যাগাজিন, ৪২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৪০ রাউন্ড রাইফেলের গুলি এবং ৩২টি সক্রিয় কাঁদানে গ্যাস শেল লুট করে দুর্বৃত্তরা। এরপর গত এক মাসে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে দফায় দফায় অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার একটি অস্ত্র উদ্ধার হয় মসজিদের ভেতর পরিত্যক্ত অবস্থায়। আর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পূর্বধলার সোয়াই নদী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার হয় আরেকটি অস্ত্রের অর্ধাংশ।

অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটকরা হলেন- পূর্বধলা উপজেলার জামাইকোণা গ্রামের মৃত হাজী তালেব আলী সরকারের ছেলে মো. আতাউর রহমান (৩৯), জালশুকা গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (২৩), গোহালাকান্দা গ্রামের আসাদুজ্জামানের ছেলে মো. সাব্বির হোসেন খান (১৮), মো. আব্দুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম (২৫), এবং ময়মনংসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মহিলাকান্দা গ্রামের মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস (২৬)। তার স্বামীর নাম ছোটন সরকার।

নেত্রকোনা অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের মেজর জিসানুল হায়দার জানান, এই অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে নেত্রকোনা সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সাজিদ বিন রওশনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালনা করেন পূর্বধলা ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন এ এম এন আকিব। এ সময় নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীত সরকার।

মেজর জিসানুল হায়দার আরও জানান, লুটকরা অস্ত্র, গোলা-বারুদসহ অন্যান্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার থেকে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাব এবং আনসার সদস্যের সমন্বয়ে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার পূর্বধলা থানাধীন শ্যামগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন স্থানে রাতভর যৌথবাহিনীর অভিযান চলে। এতে সেখানে ব্যাপক জনমত এবং সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে গত শুক্রবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও স্থানীয়দের সহায়তায় জালশুকা কুমুদগঞ্জ জামে মসজিদের ভেতরে পাওয়া এক শপিং ব্যাগে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি ৯ এম এম পিস্তল এবং একটি পিস্তলের ম্যাগাজিন উদ্ধার করে সেনা সদস্যরা। অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ জানান, মোট দুটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। একটি সেনাবাহিনী যৌথ অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার হয়েছে এবং আরেকটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পূর্বধলা উপজেলার সোয়াই নদী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়। সেখানে একটি অস্ত্রের অর্ধেক অংশ পাওয়া গেছে। বাকি অর্ধেক অংশ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।


সংসদ ভবন থেকে হারিয়েছে পলকের ২ আগ্নেয়াস্ত্র

জুনাইদ আহমেদ পলক। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২০:৫৮
নাটোর প্রতিনিধি

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র জমা না দেওয়ায় সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের দুটি আগ্নেয়াস্ত্র এখন অবৈধ অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানিয়েছে নাটোরের পুলিশ। তবে জানা গেছে, পলকের নামে লাইসেন্স করা অস্ত্র শেখ হাসিনার সরকার পতনের দিনই খোয়া গেছে।

সরকার পতনের পর সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তার নামে লাইসেন্স করা দুটি আগ্নেয়াস্ত্র রাখা ছিল জাতীয় সংসদ ভবনে।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর গণভবন ও সংসদ ভবন নিয়ন্ত্রণে নেয় হাজারো মানুষ। বিজয় উদযাপনের পাশাপাশি লুটপাটও চলে ভবন দুটিতে। সে সময় অন্যান্য মালামালের সঙ্গে পলকের সংসদ ভবনের অফিস কক্ষে রাখা তার আগ্নেয়াস্ত্র দুটিও লুট হয়।

নাটোরের পুলিশ সুপারের কার্যালয় জানিয়েছে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সময় ৩ সেপ্টেম্বর পার হয়েছে। অস্ত্র দুটি নাটোর প্রশাসনের কাছে বা থানায় কেউ জমা দেয়নি। ফলে আগ্নেয়াস্ত্র দুটি এখন অবৈধ অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

নাটোরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন গণমাধ্যমকে জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় লাইসেন্স দেওয়া ৯৫টি অস্ত্রের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে ৮৯টি অস্ত্র জমা পড়েছে। যে ছয়টি জমা পড়েনি, তার মধ্যে দুটি সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের ও দুটি এমপি শিমুলের। এখন এগুলো অবৈধ বলে ঘোষিত হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথবাহিনী কাজ করছে।


সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সিরাজগঞ্জ জেলায় বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর ট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কায় বাবা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন বাসযাত্রী। আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর ১৩ নং পিলারের উপর এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ধানবান্ধি এলাকার রহিজ উদ্দিন ও তার ছেলে শাহরিয়ার রিপু ও সদর উপজেলার বনবাড়িয়া এলাকার বাবু শাহার ছেলে চন্দ্র শেখর।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ঢাকা এক্সপ্র্রেস পরিবহণের একটি যাত্রীবাহী বাস ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সেতুর ১৩নং পিলারের কাছে এসে পৌঁছলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা একটি পাথর বোঝাই ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনযাত্রী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের উদ্ধার করে। আহতদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত বাসটিকে রেকার দিয়ে সরিয়ে সেতুর উপর যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। ট্রাকটি নিয়ে চালক পালিয়ে গেছে।


চমেকের ক্যান্টিনে বকেয়া রেখে আত্মগোপনে ছাত্রলীগ নেতারা

৫০ নেতা-কর্মীর বাকি ৪ লাখ টাকা!
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

মো. রফিকুল ইসলাম। ২০০৭ সালে দায়িত্ব নিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ছাত্রাবাসের ‘বেলাল স্মৃতি মেস’ নামক ক্যান্টিনের; কিন্তু এ ক্যান্টিন (মেস) থেকে আয় করে লাভের চেয়ে ক্ষতির পাল্লাই ভারী হয়েছে তার। এ পর্যন্ত তার বাকির খাতায় উঠেছে চার লাখ টাকারও বেশি। গত পাঁচ বছরেই বেড়েছে বাকি খাতার টাকার পরিমাণ। আর এসব টাকা ছাত্রলীগ নেতাদের কাছ থেকে পাওনা তিনি।

রফিকুলের ভাষ্য, বিভিন্ন সময়ে খাবার খেয়ে টাকা না দিয়ে চলে যেতেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। টাকা চাওয়ায় ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে তিনি মারধরের শিকার হয়েছেন। তবে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ছাত্রলীগ নেতারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। রফিকুলের বাকি টাকা আদায়ও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। রফিকুল জানান, বাকিখোরদের দলে ছিল প্রায় ৫০ জন। তবে নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের নাম বলতে চাননি তিনি।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালে তিনি ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্ব নেন। গ্রাহক ছিল এমবিবিএস ৪৬তম ব্যাচ থেকে ৬২তম ব্যাচ এ সময়ের ছাত্ররা। এই ১৭ বছরে ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা খেয়ে বিল পরিশোধ না করায় বকেয়া জমেছে ৪ লাখ টাকার ওপরে।

রফিক বলেন, এর মধ্যে ২০২৩ সালে বকেয়া বিলের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ওই এক বছরে ছাত্রলীগের বাকির খাতায় লিখিয়েছে আড়াই লাখ টাকা।

জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন খাওয়ার বিল পরিশোধ না করলেও সব ভালো খাবার তারা রুমে নিয়ে যেত। ৪৫ থেকে ৫০ জন বাকিখোরের দলে ছিল। প্রতিদিন সকালে খিচুড়ি, ডিম ওমলেট পাওয়া যায় ক্যান্টিনে, দাম ৪৫ টাকা। দুপুরের মেন্যুতে ফার্মের মুরগি, ভাত, ডাল, সবজির প্যাকেজ দাম নির্ধারিত ছিল ৮০ টাকা। দেশি মুরগি থাকলে দাম ৯০ টাকা। আর প্যাকেজে গরুর মাংস থাকলে দাম পড়ে ১০০ টাকা। সপ্তাহে পোলাও শুক্রবার ও খিচুড়ি নির্ধারিত রয়েছে মঙ্গলবার। এর সঙ্গে মাছ, সবজি, ভাত মিলে প্যাকেজ ৭০ টাকা।

আরও জানা গেছে, ক্যান্টিনে খাবার দেওয়া শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে ১০টা, দুপুরে সাড়ে ১২টা থেকে আড়াইটা ও রাতে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতারা নির্ধারিত সময়ের আগেই মেসে এসে রান্নাঘর থেকেই রান্না করা ভালো খাবারগুলো নিয়ে রুমে চলে যেতেন। পোলাও, গরুর মাংস কখনোই ছাত্রাবাসের সাধারণ ছাত্রদের কপালে জুটত না। বিল চাইলে ছাত্রলীগ নেতারা বলত, ‘টাকা তো দিবই। না দিয়ে থাকব নাকি?’ দুই-তিন মাস পরপর এক-দেড় হাজার টাকা দিয়ে আবার বাকির খাতায় নাম লিখাত তারা। বাকি টাকা আদায় প্রসঙ্গে ক্যান্টিনের ব্যবস্থাপক রফিক বলেন, ‘যারা বাকি খেয়েছে, তারা জানে কত টাকা বাকি খেয়েছে। আমি গরিব মানুষ। ক্যান্টিনে ব্যবসা করে সংসার চালাই। আমার টাকা যদি পরিশোধ করে আলহামদুলিল্লাহ। না দিলেও আলহামদুলিল্লাহ। কারণ আমি প্রতিবাদ করতে পারব না। আমাকে রাস্তাঘাটে মেরে ফেলে রাখবে। তাই আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রাখছি।’

টাকা চাইলে করত মারধর

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই ছাত্রলীগের একাংশের নেতা আসেফ বিন তাকির বেধড়ক পেটান রফিককে। বাকি টাকা চাওয়ার কারণেই এভাবে মারধর করা হয় তাকে। তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তারের কাছে লিখিত অভিযোগে রফিক ‘চাঁদা না দেওয়ায়’ তাকে মারধর করা হয় বলে উল্লেখ করেন। তাকির তখন হাসপাতালের ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। এভাবে আরও দুবার টাকা চাইতে গিয়ে মারধরের শিকার হন রফিকুল। আজ সরেজমিন ছাত্রাবাসে দেখা গেছে, সাধারণ ছাত্ররা তাদের পছন্দমতো খাবার নিয়ে খেতে পারছেন। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাকি খাওয়া বন্ধ ঘোষণা করেছে কলেজ প্রশাসন। কলেজ থেকে ছাত্রাবাসে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হবে। এতে খাবারের মূল্য তালিকা কম রাখা হবে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিব হাসান বলেন, ‘আমরা ছাত্র ও ক্যান্টিন ব্যবস্থাপক রফিককে নিয়ে একটা কমিটি করে দিয়েছি। প্রতি সপ্তাহে কমিটির একেকজন রফিকের সঙ্গে বাজার করতে যাবে। তাহলে বাজারদরের প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে। কমিটির সুপারিশ মোতাবেক খাদ্য তালিকায় থাকা খাবারের দাম নির্ধারণ করা হবে। কলেজ থেকে ক্যান্টিনে ভর্তুকি দেওয়া হবে। যাতে খাবারের মান ভালো হয়। আর কোনোভাবেই ছাত্ররা ক্যান্টিনে বাকি খেতে পারবে না।


চট্টগ্রামে বন্যায় এক লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট

বিরূপ প্রভাব পড়ছে দেশের খাদ্য নিরাপত্তায়
ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

দেশে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কৃষি সেক্টরে মারাত্মক রকমের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে, যা কৃষি উৎপাদনসহ খাদ্য নিরাপত্তায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জমিতে লাগানো আমন ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে বীজতলাও। আবার নতুন করে বীজতলা তৈরি করে চারা গজিয়ে চাষাবাদ করা আদৌ সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বৃহত্তর চট্টগ্রামের কৃষি অঞ্চলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালীসহ ৫টি জেলা, ৪২টি উপজেলা ও ৩টি মেট্রোথানার সমন্বয়ে গঠিত। ১৪ হাজার ৪২৩ দশমিক ২২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বিস্তৃত এই অঞ্চলে প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস। এ অঞ্চলের প্রধান ফসল ধান। এ ছাড়া চা, ভুট্টা, গোলআলু, বাদাম, তরমুজসহ বিভিন্ন ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদিত হয়। ফেনী ও কক্সবাজার জেলা মূলত ধান উৎপাদন এলাকা। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, ফটিকছড়ি অঞ্চলেও প্রচুর ধানচাষ হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম খাদ্য ঘাটতির একটি অঞ্চল। এখানে প্রচুর বাইরের লোকের বসবাস হওয়ায় এই অঞ্চলটিতে খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। যা দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে এনে জোগান দিতে হয়।

চট্টগ্রামে ধানচাষের একটি বড় অংশ দখল করে থাকে আমন। প্রচুর ফলন আসে এই মৌসুমের চাষ থেকে। কৃষকেরা তাদের জমিতে একটু আগেভাগে আমন লাগিয়ে দ্রুত ফসল ঘরে তুলতে চান। এবারও প্রচুর জমিতে আমনের চাষ হয়েছিল চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলের এলাকাগুলোতে। চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, হাজার হাজার একর আমন চাষ সম্পন্ন করে কৃষকেরা উৎসবমুখরভাবে ঘরে ফিরলেন, তখনই ভয়াল বন্যা সব তছনছ করে দিল।

শুধু চট্টগ্রামেই প্রায় ৫শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, আসলে টাকার অংকে এই ক্ষতি নিরূপণ করা যাবে না। ফসলপ্রাপ্তি নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হল তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে। তিনি বলেন, একজন কৃষক তার সর্বস্ব খরচ করে চাষাবাদ করলেন। তা ধ্বংস হয়ে গেল। এখন নতুন করে আবার চাষ করার মতো অবস্থা ওই কৃষকের নেই। হয়তো দেখা যাবে জমিটি খালি পড়ে রয়েছে। কোন ফসলই ওই জমি থেকে এই মৌসুমে আর পাওয়া যাবে না। এই ক্ষতির প্রভাব ব্যাপক বলেও তিনি মন্তব্য করেন। কৃষি বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলে এবারকার বন্যায় সর্বমোট ১ লাখ ৫৩ হাজার ১০৩ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে অনেক জমিই খালি পড়ে থাকবে বলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন।

কৃষি বিভাগের কাছ থেকে প্রাপ্ত হিসেব মতে, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, ফটিকছড়ি, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী উপজেলার ধানি জমিতে বন্যা মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলেছে। ওই সাত উপজেলায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ১ হাজার ৯২২ হেক্টর সবজি বাগান। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশ ও আমন খেত। আমন ধানের উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রায় অর্জিত না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেছেন, টাকার অংকে চট্টগ্রামে আমনের ক্ষতি ২৫২ কোটি টাকা উল্লেখ করে সরকারের কাছে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই ক্ষতি অপূরণীয় বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।

মাঠ কর্মকর্তারা জানান, আমনের ক্ষয়ক্ষতি এত ব্যাপক হয়েছে যে বহু কৃষকই নিঃস্ব হয়ে গেছেন। চট্টগ্রাম জেলায় এবার ১ লাখ ২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়। এর মধ্যে বন্যায় তলিয়ে গেছে ৪৩ হাজার ৫শ হেক্টর জমির ফসল। তলিয়ে যাওয়া আমন ক্ষেতের মধ্যে ১৩ হাজার ৮৩১ হাজার হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চট্টগ্রামে এই বন্যায় মোট ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাদের অনেকেরই আর চাষাবাদ করার মতো সামথ্য নেই।

আবার চলতি মাসেই আউশ ধান ঘরে তোলার কথা ছিল কৃষকদের; কিন্তু বন্যায় তাও নষ্ট করে দিয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ৩৩ হাজার ১ হেক্টর জমিতে আউশের চাষ হয়েছিল। এরমধ্যে ৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কোটি কোটি টাকার ফসলহানি হয়েছে বলেও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। চট্টগ্রামে আমন এবং আউশ ধানের যে ক্ষতি হয়েছে তা খাদ্য ঘাটতির এই জেলাটিতে মারাত্মক রকমের প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করে বলা হয়েছে, এই ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের বেশ বেগ পেতে হবে। চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবদুচ ছোবহান বলেন, ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক। তবে আমরা কিছুটা আশাবাদী যে, চট্টগ্রামে আমন ধান কিছুটা দেরিতে লাগানো হয়। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমন লাগানো যাবে। তবে চারার যেই সংকট তা কাটিয়ে উঠা গেলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


banner close