রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

কুমিল্লায় শোবার ঘরে ঢুকে মা ও শিশুসহ ৩ জনকে ‘হত্যা’

প্রতীকী ছবি
সারাবাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
সারাবাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২০:৫১

কুমিল্লায় নিজ ঘরে মা-ছেলেসহ তিনজনকে শ্বাসরোধ ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বড় ঘাগুটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন।

নিহতদের মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করেছেন বলেও জানান তিনি। নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের শাহপরানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (৩৫), তাদের ছেলে শাহাদ (৯) এবং শাহপরানের মামাতো ভাইয়ের মেয়ে তিশা (১৪)। মো. শাহপরান ঢাকায় চাকরি করেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি জানান, শাহ পরান ঢাকায় চাকরি করেন। বুধবার রাতে তার স্ত্রী, শিশু সন্তান এবং প্রতিবেশী মামাতো ভাইয়ের কিশোরী মেয়ে তিশা ঘুমিয়েছিল। রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা তাদের হত্যা করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে খাটের ওপর রেখে পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়রা তিন জনের মরদেহ একই কক্ষে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে। মরদেহগুলোর মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।

কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (হোমনা সার্কেল) মীর মহসিন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে তিনজনের মরদেহ একই কক্ষে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে। তিনটি মরদেহের মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিক তদন্তে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করছি। মরদেহগুলো উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’


সার কালোবাজারে বিক্রি ও পাচারের প্রতিবাদে কৃষকদের মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দিনাজপুর প্রতিনিধি

কৃষকের সার কালোবাজারে বিক্রি ও পাচারের প্রতিবাদে এবং জড়িত ডিলারের বিএডিসি লাইসেন্স বাতিল ও বিচারের দাবিতে হাতে কোদাল ও বাউকা হাতে নিয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন কৃষকরা। রোববার সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের কৃষকরা এই কর্মসূচী পালন করেন। পরে তারা দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষি উপদেষ্টার নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের অর্ন্তগত মাস্তান বাজার এলাকার বিএডিসি সার ডিলার মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী আবেদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরেই কৃষকদের সার না দিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করে আসছেন। তিনি এই এলাকার জন্য বরাদ্দকৃত সার বিভিন্ন স্থানে পাচার করেন এবং বিক্রি করেন। তার কাছে যাওয়া হলে সার দিতে গরিমসি করেন এবং সার নাই বলে জানিয়ে দেন। ডিলারের এমন কার্যকলাপের কারণে প্রকৃত কৃষকরা সার পাচ্ছেন না এবং তাদের সমস্যা হচ্ছে ও উৎপাদন খরচ বাড়ছে।

গত ১০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে আবেদুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের জন্য বরাদ্দকৃত সার ট্রাক্টরযোগে বীরগঞ্জে পাঠানো হচ্ছিল। এ সময় মহারাজা মোড়ে সারভর্তি ট্রাক্টর আটক করে। পরে পুলিশ সার, ট্রাক্টর ও চালকসহ ৪ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে চালক সারগুলো আবেদুল ইসলামের বলে স্বীকার করে। ওই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জড়িত বিএডিসি সার ডিলার কিংবা তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

কৃষকদের সাথে প্রতারণা, বরাদ্দকৃত সার কালোবাজারী ও পাচার করার জন্য বিএডিসির সার ডিলার মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের নামে লাইসেন্স বাতিল এবং জড়িত সত্বাধিকারী আবেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে বিচার করার দাবি জানান তারা।

কর্মসূচীতে কৃষক সামিদুল ইসলাম, হুসেন আলী, ফজলু রহমান, আবুল হামিদ, শহিদুল ইসলাম, সাঈদ ইসলাম, ওমর ফারুক তালুকদার, আজগার আলী, গোলাব রব্বানীসহ শতাধিক কৃষক অংশগ্রহণ করেন।

এ ব্যাপারে জানতে বারবার মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী আবেদুল ইসলামকে ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।


ফরিদপুরে পদোন্নতি বঞ্চিত শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষকদের কর্মবিরতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের যোগ্য সব প্রভাষকের সহকারী অধ্যাপক পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির দাবিতে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ চত্বরে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কলেজ শিক্ষকরা। রোববার সকাল থেকে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ চত্বরে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ইউনিট, ফরিদপুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ, ফরিদপুর সরকারি ইয়াসিন কলেজ ইউনিটের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ সময় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ ফরিদপুর জেলা ইউনিটের আহ্বায়ক হাসিব মৃধার সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মো. ওসমান মোল্লার সঞ্চালনায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ইউনিটের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ইউনিটের সদস্য সচিব মো. এরশাদ শেখ, ফরিদপুর জেলা ইউনিটের প্রচার সম্পাদক বাবুল তালুকদার, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ইউনিটের সদস্য শফিকুল ইসলাম সহ ফরিদপুর জেলার সকল সরকারি কলেজের প্রভাষকরা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় শিক্ষকরা বলেন, সারাদেশে ৩২ থেকে ৩৭তম ব্যাচের প্রায় আড়াই হাজার প্রভাষক দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছেন। প্রাপ্য পদোন্নতি না পাওয়ায় তাদের মধ্যে গভীর হতাশা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও ফাইলে বিলম্বের কারণে তাদের পদোন্নতির গেজেট ঝুলে আছে। ন্যায্য পদোন্নতির আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলেও জানান তারা।

তারা বলেন, আমরা দেখে আসছি বিভিন্ন ক্যাডারে পদোন্নতির যোগ্য না হলেও তাদের যোগ্য বানিয়ে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অনেক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ডেকে এনে তাদের পদোন্নতি করানো হচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ক্যাডারের আমাদের যৌক্তিক পদোন্নতি সেটা আমাদের দেওয়া হয়নি। আমরা শ্রেণি শিক্ষক, আমরা পাঠদানে ফিরে দিতে চাই। আমরা কর্ম বিরতিতে থাকতে চাই না। তাই আমাদের দাবি একটাই আমরা যেদিন থেকে পদোন্নতি যোগ্য হয়েছি আমাদের ভূতাপেক্ষী পদোন্নতি দিতে হবে।


রোহিঙ্গাদের টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাশনের বিকল্প নেই

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কনফারেন্সে বক্তারা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এস এম জাফর, কক্সবাজার

কক্সবাজারে অবস্থান করছে ১৩ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরনার্থী। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ভারে ভারাক্রান্ত বাংলাদেশে। রোহিঙ্গাদের টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাশনের বিকল্প নেই। রোহিঙ্গা সংকট এখন বৈশ্বিক সমস্যা।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে শরনার্থী কমিশন ও ব্র্যাকের সহায়তায় রোববার কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (সিজিএ) আয়োজিত কনফারেন্সে এসব অভিমত প্রকাশ করেন বক্তারা।

কনফারেন্সে বক্তারা বলেন রোহিঙ্গা সংকট কেবল মানবিক নয়- এটি ন্যায়বিচার ও বৈশ্বিক জবাবদিহিতার প্রশ্ন। মিয়ানমারের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত ও রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোর আহ্বান জানানো হয় এতে।

সিজিএ বাংলাদেশ চাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ফরিদা পারভীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত এই কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাশন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রোহিঙ্গা সেলের প্রধান মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

তিন পর্বে আয়োজিত দিনব্যাপী এই কনফারেন্সে রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান আর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জসহ বিভিন্ন বিষয়ের আলোচনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক ও অ্যাসোসিয়েট প্রেসের প্রতিনিধি জুলহাস আলম, প্রফেসর ড. রহমান নাসির উদ্দীন, ড. জাকিয়া সুলতানা, ড. আমেনা মহসিন, আসিফ মুনির সিজিএ বাংলাদেশ চাপ্টারের সেক্রেটারি ওসমান গনি মনসুর, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা জামায়াত ইসলামের আমীর নুর আহমেদ আনোয়ারী, এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব সুজা উদ্দীন সুজা প্রমুখ।

রোহিঙ্গা সংকটে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান ও সমন্বিত উদ্যোগ গড়ে তোলাসহ রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা, দক্ষতা উন্নয়ন, সংকট মোকাবেলার বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং টেকসই ভবিষ্যতের কৌশল প্রনয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় এই সম্মেলনে।

সম্মেলনে অংশনেন সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক নেতারা, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, রোহিঙ্গা কমিউনিটি লিডার, আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার কর্মকর্তা এবং রোহিঙ্গা ইস্যুর সাথে জড়িত বিভিন্ন স্টেকহোল্ডাররা।


লোহাগাড়ায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে সাকিবুল হাসান (২৪) নামক এক বাইকারের মৃত্য হয়েছে। এ ঘটনায় বাইকে থাকা সোহাগ নামে আরও এক আরোহী গুরুতর আহত হয়েছেন। রোববার দুপুরের দিকে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নে চট্টগ্রাম- কক্সবাজার মহাসড়কের জাঙ্গালিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত বাইকার সাকিবুল হাসান নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার পারসাথলী শেখপাড়ার বাসিন্দা মো. আতাউর রহমানের পুত্র।

সফরসঙ্গী মেঘলা জানান, তারা জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর ফারজানা বিথীসহ ১৫ জন নারী-পুরুষ মিলে ৩ দিন আগে রাজশাহী থেকে কক্সবাজার গিয়েছিলেন, আজ (রোববার) সকালে কক্সবাজার থেকে ফেরার পথে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া নামক স্থানে মহাসড়কের উপর বসানো গতিরোধকে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বাইকে থাকা দুজন সড়কের পাশে থাকে সেতুর নিচে পড়ে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় আমরা তাদের উদ্ধার করে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন।

লোহাগাড়া ট্রমা সেন্টারের জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসক ডা. ইজাজ আহমেদ শামীম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন বাইকারকে এখানে আনা হয়েছে তাদের মধ্যে সাকিবুল হাসান নামে একজনকে হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত সোহাগ নামের একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার এস আই আব্দুস সাত্তার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাইকারের লাশ লোহাগাড়া ট্রমা সেন্টারে রাখা হয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।


শীতের আগমনে শ্যামনগরে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

শীতের আগমন শুরু হলেই শ্যামনগর শুরু হয় খেজুর গাছ পরিচর্যা। শীত মৌসুমে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে তা থেকে তৈরি হয় গুড়। ইতোমধ্যেই রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ কাটায় (পরিচর্যা) ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্যামনগরের গাছিরা। গাছ কাটার ১০-১২ দিন পর থেকেই শুরু হবে রস সংগ্রহ।

শ্যামনগর বেশির ভাগ গ্রামের পথ দিয়ে হেঁটে গেলে চোখে পড়ে খেজুর গাছ। জমির প্রতিটি আইলে খেজুর গাছ লাগিয়েছেন গ্রামের কৃষকরা। বিশেষ করে উপজেলা সদরের নকিপুর, ভুরুলিয়া, কাশিমাড়ী, আটুলিয়া, নুরনগর, বংশিপুর গ্রামে খেজুরের গাছ বেশি চোখে পড়ে। শীত মৌসুমে এসব গ্রামে খেজুরের রস বিক্রি ও গুড় তৈরির কাজ চলে পুরো দমে।

এখন চলছে তারই প্রস্তুতি। নওয়াবেকী গ্রামের শাহিন আলমের খেজুর গাছ আছে ১২০টি। একই গ্রামের রমজান আলীর রয়েছে ৮০টি। রস সংগ্রহের জন্য তারা এখন খেজুর গাছের আগা ঝোড়া, চাঁচ দেওয়া ও নলি মারায় ব্যস্ত।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীত মৌসুমের পুরো চার মাস তারা বাড়িতে খেজুরের গুড় ও পাটালি তৈরি করে। ওই সময় তাদের প্রতিদিন আয় হয় ১ থেকে ২ হাজার টাকা। তাদের মতে, কোন কৃষকের যদি ২০০ খেজুর গাছ থাকে তাহলে পুরো বছরের সংসার ভালোভাবে চলে যাবে। শ্যামনগর সদরের নকিপুর ও নওয়াবেকী গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামের প্রায় সব জমিতেই আছে একটি-দুটি এমনকি ১০-১২টি পর্যন্ত খেজুর গাছ। কোন কোন জমির চারপাশ খেজুর গাছ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।

জমিতে চাষাবাদ আর খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ- এভাবেই চলছে অনেক কৃষকের সংসার। খেজুর গাছ অনেকের সচ্ছলতাও এনে দিয়েছে। কৃষকরা জানান, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে গাছের আগা কাটা হয়। আগা কাটা শ্রমিকও পাওয়া যায় গ্রামে। নির্ধারিত মজুরি নিয়ে তারা গাছ কাটেন সকাল ৮টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত। শীত মৌসুমে গ্রামের কৃষকদের খেজুর গাছ কেটে সচ্ছলভাবে তাদের সংসার চলে।

আটুলিয়া গ্রামের রমজান আলী জানান, ‘শীত মৌসুমে ঢাকাসহ সারাদেশের ব্যাপারীরা শ্যামনগর কালিগঞ্জ বালিয়াডাঙ্গা গুড়ের হাটে আসেন। তারা এসব হাট থেকে খেজুরের গুড় ও পাটালি কিনে সারাদেশে সরবরাহ করেন। অনেকেই বালিয়াডাঙ্গা বাজারের খেজুরের গুড় ও পাটালি দেশের বাইরেও পাঠান।’

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক এস এম এনামুল হক জানান, সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ২ লাখ খেজুর গাছ আছে। এ জেলার খেজুরের গুড়ের সুনাম দেশজোড়া। শীত মৌসুমে খেজুরের গুড় ও পাটালি বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন জেলার চাষিরা।


খোলা ম্যানহোলে পড়া নারীকে ৩ দিন পর জীবিত উদ্ধার

*ময়মনসিংহ নগরীতে ম্যানহোলে পরে যাওয়ার শঙ্কায় মানুষ *ঢাকনা চুরি হলে সহসাই স্থাপন করে না সিটি করপোরেশন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কামরান পারভেজ, ময়মনসিংহ ব্যুরো

রাত তখন পৌনে বারোটা। ময়মনসিংহ নগরীর কাশর এলাকায় রিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক চালক। চারপাশে তখন নীরবতা। ওই সময় শুনতে পান অস্ফুষ্ট স্বরে আর্তনাদ। প্রথমে কিছুটা ভয় পান। ঠিক তখনি আরও একজন চালক খালি রিকশা নিয়ে এ পথ দিয়ে যেতে থাকেন। আর্তনাদ শুনে তিনিও থামেন। পরে দুইজন আর্তনাদের উৎস খুঁজে বের করেন। দেখা যায় একটি ঢাকনা দেওয়া ম্যানহোলের ভেরত থেকে আসছে এ আওয়াজ। দুইজন মিলে একটি শক্ত বাঁশ সংগ্রহ করে ম্যানহোলের ঢাকা খুলে বুঝতে পারেন এটা একটা নারীর আর্তনাদ। কিছুক্ষণের মধ্যে আরও লোক চলে আসে। পরে ঢাকনা সরিয়ে ওই নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

গত শনিবার রাত পৌনে বারোটায় ঘটে এ ঘটনা। এ ঘটনায় নগরীর কাশর, গলগণ্ডা ও জেলাখানা রোড এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ধার হওয়া নারী (৩৮) মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি ময়মনসিংহ নগরের গল্ডা এলাকার বাসিন্দা। গত বুধবার সকাল তিনি বাড়ি থেকে বের হন। পরে রাতে আর ফিরেননি। ফলে নারীর বাবা বিভিন্ন এলাকায় ও আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নেন। কোথায় খোঁজ না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ কতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

রোববার সকালে কাশর এলাকায় গিয়ে কথা হয়, স্থানীয় বাসিন্দা ও উদ্ধারকারী দুইজন রিকশা চালকের একজন মো. রোমান মিয়ার সঙ্গে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঢাকনা দেওয়া যে ম্যানহোলের নিচ থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে তা থেকে আনুমাকি ৫০ ফুট দূরের অপর একটি ম্যানহোলের ঢাকা ছিল না অনেক দিন ধরেই। ধারণা করা হচ্ছে ওই নারী ঢাকনা না থাকা ম্যানহোনে পরে যান দুই দিন কি তিন আগে। পরে ড্রেনের নিচ দিয়ে কোন ভাবে ঢাকনা দেওয়া ম্যানহোলের নিচে চলে যান।

উদ্ধার হওয়া নারী হয়তো পড়ে যাওয়ার পর থেকেই বাঁচার জন্য আকুতি জানাতে থাকেন। কিন্তু এলাকাটি ময়মনসিংহ-টঙ্গাইল মহাসড়কের খুব কাছে হওয়ায় সারাক্ষণই গাড়ির শব্দ থাকে।

এছাড়া ম্যানহোলের কাছে দোকান-পাট ও একটি ওয়ার্কশপ থাকায় শব্দের কারণে নারীর বাঁচার আকুতি শোনা যায়নি। রাত পৌনে বারোটার সময় এলাকা নীবর হওয়ায় তখন তার বাঁচার জন্য আকুতি কানে আসে।

কাশর এলাকাটি ময়মনসিংহ নগরের ২ নাম্বার ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। বিভিন্ন সময়ই ম্যানহোলের ঢাকা চুরি হয়ে যায়। মাদকাসক্তরা এ চুরির সঙ্গে জড়িত থাকে। একবার ঢাকনা চুরি হলে সিটি করপোরেশন কতৃপক্ষ দীর্ঘ দিন আর নতুন ঢাকনা স্থাপন করে না। যে কারনে প্রায় সময়ই এলাকার বাসিন্দারা ম্যানহোলে পরে যাওয়ার শঙ্কায় ভুগেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, রাতে ওই নারীকে উদ্ধারের পর প্রথমে পরিচয় জানা যায়নি। নারী কোন কথা বলতে পারেননি। তার সারা শরীর ফ্যাকাশে ছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ মাসুদ ও তার স্ত্রী নারীকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। মোহাম্মদ মাসুদ পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি দৈনিক বাংলাকে জানান, বাসায় নেওয়ার পর আমার স্ত্রী তাকে প্রথমে গরম পানি দিয়ে গোসল করিয়ে গরম পোশাক পরান। তারপর তাকে কিছু খেতে বলা হলেও তিনি খাননি। তিনি মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন হওয়ায় নিজের পরিচয়ও বলতে পারেননি। কিছুক্ষণ পর অপর একজন তাকে চিনতে পারেন। এরপর ওই নারীকে ময়মনসিংহ নগরীর জেলখানা রোডে তার বাবার কাছে নিয়ে যাওয়ায় হয়।

দুপুরে জেলাখানা রোডে ওই বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, উদ্ধার হওয়া নারী লেপ গায়ে দিয়ে শুয়ে আছেন। তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। নারীর বাবা জানান, তার মেয়ে উচ্চশিক্ষিত। তবে ২০১৩ সালে একটা দুর্ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। এরপর থেকে প্রায় সারা দিনের জন্য বাইরে চলে যান। তবে রাতে ঠিকই বাড়িতে ফিরে আসেন। গত বুধবার রাতে না ফেরায় বৃহস্পতিবার থানায় জিডি করেন। তিনি অসুস্থ থাকায় কবে কিভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে এখনো কিছু জানা যায়নি।

এ নিয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ২ নাম্বার ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর পরিবেশ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ জেলা কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক নাজিয়া উদ্দিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ওই এলাকার ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকার বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। এ দুর্ঘটনার খবরটি কেউ জানায়নি। আমি খোঁজ নিয়ে জানব।


বেনাপোলে পতাকা বৈঠকের পর ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর হাতে আটক ১৫ বাংলাদেশি নাগরিককে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে।

গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভারতের পেট্রাপোল এবং বেনাপোল চেকপোস্ট আইসিপি ক্যাম্পের মধ্যে এ পতাকা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার মিজানুর রহমান এবং বিএসএফর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এসি প্রবীণচান্দ।

হস্তান্তরকৃতরা হলো- আব্দুল হান্নান (৬০), হোসেন আলী (২৫), আকলিমা খাতুন (৫২), শাহানারা খাতুন (১৫), হাফিজুর রহমান (৩১), রেশমা খাতুন (২৮), আজমিরা (৫),বাবলুর রহমান (৪২), তাহামিনা বেগম (৩৭), জান্নাতুল বুশরা (৪),তাইজুল ইসলাম (৪৩), মোসা. নাসিমা খাতুন (৪১), শেফালী খাতুন (৩৬), মো. আমিনুর রহমান (৫৬) এবং মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৯)। এরা খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

জানা যায়, আটক ব্যক্তিরা গত তিন থেকে চার বছর ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছিলেন। বিভিন্ন সময়ে সাতক্ষীরা ও সুন্দরবন সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে তারা সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি আব্দুল আল মামুন জানান, বিএসএফ কর্তৃক হস্তান্তরকৃত ১৫ বাংলাদেশি নারী-পুরুষকে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি। এদের সমস্ত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রোববার তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


দাউদকান্দির বলদাখাল দখল-দূষণে মৃতপ্রায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বলদাখাল এখন দখল ও দূষণের চরম সংকটে। একসময় স্বচ্ছ পানির স্রোতে ভরা এ খালটি আজ মৃতপ্রায়। নাব্যতা হারিয়ে দুর্গন্ধ, মশা, আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সরকারি খাল ও খাসজমি দখল করে বছরের পর বছর প্রভাবশালী দখলদাররা নির্মাণ করেছে দোকানপাট ও স্থায়ী অবকাঠামো। অভিযোগ রয়েছে যারা দখল করে ব্যবসা চালাচ্ছেন, তারা স্থানীয়ভাবে বেশ প্রভাবশালী।

প্রায় দুই বছর আগে দাউদকান্দির সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজ উদ্যোগে সাহাপাড়া এলাকা থেকে বলদাখালের প্রায় আধা কিলোমিটার অংশ দখলমুক্ত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন। কিন্তু তার বদলির পর অভিযান থেমে যায়। আবারও শুরু হয় আগের মতো দখল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌরসভার অন্তত দুই কিলোমিটার জুড়ে খালের অধিকাংশ অংশই অবৈধ দখলে। ফলে জনজীবন কৃষিনির্ভর অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে। দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতে প্রশাসন কার্যত ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে খালটি উদ্ধার হবে কি না এ নিয়ে মানুষের মনে তৈরি হয়েছে গভীর সংশয়।

অবৈধ দখল ও বর্জ্য ফেলার কারণে খালটির স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। শুষ্ক ও শীত মৌসুমে খাল প্রায় পানি শূন্য থাকে। জমে থাকা কচুরিপানা, আবর্জনা ও পলিথিনে হাটু সমান দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব।

স্থানীয় প্রবীণ নাজমুল হোসেন বলেন, একসময় এই খালে ছোট-বড় নৌকা চলাচল করত। ট্রলার মালবাহী নৌযান চলাচল করত। জেলেরা এই পথ দিয়ে বিভিন্ন নদীতে যেতেন। খালটি ছিল দাউদকান্দির অর্থনীতির অন্যতম প্রাণ ছিল।

গোমতী নদীর শাখা এ খালটি অতীতে এক নদী থেকে আরেক নদীতে যাতায়াতের সহজ পথ হিসেবে পরিচিত ছিল।

দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক রেদওয়া ইসলাম বলেন, বলদাখালকে দূষণমুক্ত রাখতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হচ্ছে। কেউ খালের জায়গা অবৈধভাবে দখল করলে উচ্ছেদসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দাউদকান্দির মানুষের দাবি শুধু সাময়িক অভিযান নয়, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী বলদাখালকে দখলমুক্ত ও পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। নয়তো দখল দূষণের চাপে খালটি পুরোপুরি হারিয়ে যাবে- এমন আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।


রূপগঞ্জে চায়না খলশে মাছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা

অ্যাকুয়ারিয়াম থেকে মাছটি ছড়িয়েছে সারাদেশে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

খলিশা মাছের মতো। কিন্তু আকারে এর চেয়ে খানিকটা বড়। রূপগঞ্জের বিভিন্ন মাছের আড়ত আর হাট-বাজারে প্রায়ই দেখা মেলে এ মাছের। স্থানীয়ভাবে মাছটি হাইব্রিড খলশে বা চায়না খলশে নামে পরিচিত। দামে সস্তা হওয়ায় মাছটি নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আগ্রাসী মাছটির বংশবিস্তার বাড়াচ্ছে শঙ্কা। কারণ, এ মাছ অন্য মাছের বংশবিস্তারের জন্য হুমকি।

বিষেজ্ঞরা বলছেন, সাকার মাছের মতো অ্যাকুয়ারিয়াম থেকেই এটি দেশে ছড়িয়েছে।’ দেশের অন্য মাছ রক্ষায় এটির চাষ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা উচিত।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, এই মাছের নাম ‘স্নেকস্কিন গুরামি’। স্থানীয় মাছের বংশবিস্তারের জন্য এ মাছ হুমকির। দ্রুত বংশবিস্তার করায় অন্য মাছের জায়গা এটি দখল করে ফেলে। দামে কম হওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে মাছটির চাহিদা বাড়ছে।

রোববার সকালে সরেজমিনে গাউছিয়া বাজার মাছের আড়তে দেখা যায়, অন্যান্য মাছের সঙ্গে নিলামে এই মাছ বিক্রি করছেন আড়তদারেরা। পাইকারিতে এক মণ মাছের দাম উঠেছে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ২০০ টাকা। সে হিসাবে কেজিতে দাম পড়ে মাত্র ৮০ টাকা।

বিসমিল্লাহ মাছের আড়তের মালিক রিয়াজ মিয়া বলেন, বিভিন্ন এলাকার জলাশয়ে পাওয়া যাচ্ছে এ মাছ। পাইকারিতে প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৯০ টাকায় এ মাছ বিক্রি হয়।

দেশের অন্য মাছ রক্ষায় এটির চাষ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা উচিত। পাশাপাশি মৎস্য অধিদপ্তরেরও সতর্ক হওয়া উচিত।

অ্যাকুয়ারিয়ামের জন্য মাছ আমদানির অনুমতি দেয়ার আগে সেসব মাছের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত। তা না হলে এভাবেই ধীরে ধীরে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হবে বলে জানান স্থানীয় জেলেরা।

উপজেলার কাঞ্চন বাজারের মাছ বিক্রেতা রতন সরকার বলেন, পুকুর, খাল-বিল ও ডোবা-জলাশয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় বলে এ মাছের জোগান বেশি। আবার কাটা কম থাকায় অনেকে শিশুদের জন্য এ মাছ কিনে নিচ্ছেন। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষ এ মাছের ক্রেতা। কারণ, এটিই বাজারের সবচেয়ে সস্তা মাছ।

উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের কায়েতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ গোপাল বলেন, ২০২৪ সালের পর থেকেই জলাশয়, ধানের মাঠসহ সব জায়গায় প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে মাছটি।

জানতে চাইলে মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ মাছ খাদ্য হিসেবে বিষাক্ত নয়। খেতে অনেকটা তেলাপিয়া মাছের মতো।

সাকার মাছের মতো অ্যাকুয়ারিয়াম থেকেই এটি দেশে ছড়িয়েছে।’ দেশের অন্য মাছ রক্ষায় এটির চাষ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা উচিত।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ এ মাছ উপজেলায় বেশি দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এ মাছ অন্য প্রজাতির মাছের জন্য হুমকি।’


ফেনীতে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীর ট্রাংক রোডের মুক্ত বাজার এলাকায় নির্মিত জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার ভোরে স্মৃতিস্তম্ভে আগুনের বিষয়টি দেখতে পান স্থানীয়রা। তবে এতে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

স্থানীয়রা জানান, জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের ফ্লোরের কিছু অংশ ও কয়েকটি অক্ষর আগুনে পুড়ে গেছে। তবে এতে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ফেনী জেলা সংগঠক ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সাবেক সমন্বয়ক মুহায়মিন তাজিম বলেন, আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের লোকজন জনমনে ভীতি তৈরির জন্য এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমি মনে করি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনগুলোতে হামলা প্রতিরোধে প্রশাসনকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে।

ফেনী সদর মডেল থানার ওসি শামসুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ এ বিষয়ে কাজ করছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

ফেনী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেন, সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সুপার আরো বলেন, হেলমেট পরিহিত যুবক আগুন দিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে।


গ্যাস সংকটে যমুনা সার কারখানায় দিনে লোকসান সাড়ে ৩ কোটি টাকা

*২৩ মাস ধরে বন্ধ সরিষাবাড়ীর যমুনা সার কারখানা *পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন হাজারও শ্রমিক *শিল্পকারখানাটি বন্ধ থাকায় মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

গ্যাস সংকটে ২৩ মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ে আছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা (জেএফসিএল)। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিদিন লোকসান হচ্ছে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন ধরে এই শিল্পকারখানাটি বন্ধ থাকায় মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ। ফলে আসন্ন বোরো মওসুমে ইউরিয়া সারের সংকট হতে পারে বলে মনে করছে কৃষকরা।

দীর্ঘদিন ধরে কারখানাটি বন্ধ থাকার কারণে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ও বিভিন্ন পরিবহনের হাজার হাজার শ্রমিক পরিবার। অতি দ্রুত পুনরায় গ্যাস সংযোগ দিয়ে কারখানাটি চালু করে এ উপজেলার হাজার হাজার শ্রমিক পরিবারের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা যায়, ১৯৯১ সালে তারাকান্দি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা। এ কারখানাটি বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা নিয়ন্ত্রণাধীন এবং কেপিআই-১ মানসম্পন্ন সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। কারখানার সঠিক উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন গড়ে ৪২ থেকে ৪৩ পিএসআই গ্যাসের প্রয়োজন হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কারখানাটি প্রতিদিন ১ হাজার ৭০০ টন সার উৎপাদন করছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে গ্যাসের প্রেসার স্বল্পতা ও নানা ত্রুটির কারণে উৎপাদন কমে গিয়ে ১ হাজার ২০০ টনে নেমে আসে।

এ কারখানা থেকে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও উত্তরাঞ্চলের রাজবাড়ী ও উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলায় প্রায় আড়াই হাজার ডিলারের মাধ্যমে সার সরবরাহ করা হয়ে থাকে। গত ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে তিতাস কোম্পানি গ্যাসের প্রেসার কমিয়ে দেওয়ার কারণে উৎপাদন ও কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বেকার হয়ে পড়ে কারখানাসংশ্লিষ্ট শ্রমিক, কর্মচারী, পরিবহনের চালক, হেলপার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিকরা।

এদিকে বন্ধ থাকার দীর্ঘ ১৩ মাস পর ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্যাস সংযোগ পেয়ে আবার উৎপাদনে ফিরে কারখানাটি। উৎপাদন শুরুর ৪ দিনের মাথায় কারখানার অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাত ৭টার পর ফের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকে বন্ধ রয়েছে বৃহৎ এ কারখানাটি। দীর্ঘ ২৩ মাস ধরে কারখানাটি বন্ধ থাকায় প্রতিদিন সাড়ে ৩ কোটি টাকা করে লোকসান হচ্ছে বলে জানান সিবিএ নেতারা। অতি দ্রুত গ্যাস সংযোগ দিয়ে দেশের বৃহৎ এ শিল্পকারখানাটি সচল করতে না পারলে এক সময়কার চিনি ও পাট শিল্পের মতো এ কারখানাটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এদিকে গত ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান যমুনা সার কারখানা পরিদর্শন করতে এসে দ্রুতই পুনরায় গ্যাস সংযোগ দিয়ে কারখানা চালু করার আশ্বাস দেন। তবে আশ্বাস দেওয়ার ৩ মাস হলেও চালু হয়নি এ কারখানাটি।

যমুনা সার কারখানা এলাকার একাধিক শ্রমিক জানান, এ কারখানার সাথে জড়িত শত শত ট্রাক, ট্যাংক ও লড়ি পরিবহন আছে। দীর্ঘদিন ধরে কারখানা বন্ধ থাকার কারণে আমরা শ্রমিকরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। কারখানা বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন সকালে কারখানার সামনে এসে বসে থাকি চালুর আশায় ও কাজের আশায়। অধিকাংশ দিনই খালি হাতে বাড়িতে ফিরে যেতে হয়। কারখানা এভাবে বন্ধ থাকলে আমরা না খেতে পেরে মারা যাব।

যমুনা সার কারখানা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক মোরর্শেদ আলম তালুকদার বলেন, প্রায় ২ বছর ধরে কারখানাটি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। এতে করে কারখানার ডিলারদের আমদানিকৃত সার সরবরাহ করা হচ্ছে। কারখানাটি চালুর বিষয়ে আমরা একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অনুপ সিংহ বলেন, যমুনা সার কারখানার সারের গুণগত মান ভালো। আমাদের কৃষকরা যমুনার সার জমিতে ব্যবহার করে। এতে ফসলের ফলন ভালো হয় ও গুণগত মান বৃদ্ধি পায়। আমদানিকৃত সারগুলো দীর্ঘদিন ধরে কারখানায় মজুত রাখার কারণে এটির গুণগত মান অনেকটাই কমে যায়। ফলে কৃষক আমদানি করা সার শষ্যখেতে ব্যবহার করতে চায় না। কৃষি ও কৃষকের কথা চিন্তা করে হলেও সার কারখানাটি চালুর প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) এস.এম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ মুঠোফোনে বলেন, গ্যাস সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। খুব তারাতাড়ি যমুনা সার কারখানায় পুনরায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। যাতে আবার আগের মতো যমুনা সার কারখানা পুরোদমে উৎপাদনে ফিরতে পারে। আশা করি অতি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।


নতুন পোশাকে পুলিশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পুলিশের নতুন পোশাক বাহিনীর সদস্যদের গায়ে উঠেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশসহ (ডিএমপি) দেশের সব মহানগর পুলিশ ও বিশেষায়িত ইউনিটে নতুন পোশাক পরেছে পুলিশ। তবে জেলা পুলিশ এখনো তা পায়নি। পর্যায়ক্রমে তারাও নতুন পোশাক পাবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার থেকে বাংলাদেশ পুলিশের পরিবর্তিত নতুন পোশাক চালু হয়েছে।
তবে এখনই সর্বস্তরে বা সবার কাছে নয়, সদস্যদের মধ্যে সীমিত পরিসরে এ পোশাক সরবরাহ করা হচ্ছে। নীল ও সবুজ রঙের পরিবর্তে নতুন একটি রঙের পোশাক পরবেন রেঞ্জ ও মহানগর পুলিশ সদস্যরা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপকমিশনার তালেবুর রহমান বলেন, গতকাল শনিবার থেকে চালু হলো পুলিশের নতুন পোশাক। এটা ধাপে ধাপে সব সদস্যকে দেওয়া হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন বলেন, জেলা ও রেঞ্জ পুলিশ পর্যায়ক্রমে নতুন এই পোশাক পরবেন। তবে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও স্পেশাল প্রটেকশন ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএন) আগের পোশাক থাকবে।
এর আগে, মঙ্গলবার পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে সবারই মন-মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে মন্তব্য করে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। পুলিশের জন্য, র‌্যাবের জন্য এবং আনসারের জন্য। তিনটা সিলেক্ট করা হয়েছে। এটা ইমপ্লিমেন্ট হবে আস্তে আস্তে।
জানা যায়, তিন বাহিনীর সদস্যদের নতুন পোশাকের জন্য ব্যয় হবে ৬ থেকে ৭ কোটি টাকা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দমন-পীড়নের অভিযোগ ওঠার পর থেকে সমালোচনার মুখে থাকা পুলিশ বাহিনীর সংস্কার ও পোশাক পরিবর্তনের দাবি উঠলে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন পোশাক অনুমোদন করে। এরই অংশ হিসেবে মহানগর পুলিশে লৌহ রঙের নতুন পোশাক দেওয়া হয়েছে। পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ট্যুরিস্ট পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ এই পোশাক পরবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশ বাহিনীর কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ ছিল গোটা দেশের মানুষ। পুলিশ সদস্যদের পোশাকও অনেকের কাছে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়ায় সেসময়। আবার পুলিশ সদস্যরা পোশাক পরে বের হতেও সংকোচবোধ করতেন। অনেক পুলিশ সদস্য ট্রমায় ভুগেছেন দীর্ঘদিন। সরকার পতনের পর থেকে আলোচনায় থাকলেও অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে পুলিশ বাহিনীর নতুন পোশাক।
তবে ২০২০ সাল থেকেই বাংলাদেশ পুলিশের পোশাক পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা চলছিল। ২০২১ সালের শুরুর দিকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের জন্য বেশ কয়েকটি পোশাকের ট্রায়ালও হয়। তারপরও নানা কারণে নতুন পোশাক পাননি বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা।
পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুলিশের নতুন পোশাক হচ্ছে ‘আয়রন’ রঙের, র‌্যাবের ‘অলিভ’ আর আনসার বাহিনীর জন্য ‘গোল্ডেন হুইট’।


রামগতিতে ইটভাটা বন্ধের প্রতিবাদে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রামগতি-কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ইটভাটা বন্ধের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন কয়েক হাজার শ্রমিক। আজ রোববার (১৫ নভেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে শুরু হওয়া মানববন্ধন চলে দুপুর ১ টা পর্যন্ত। এসময় লক্ষ্মীপুর-রামগতি আঞ্চলিক সড়কের রামগতি উপজেলা পরিষদের সামনে তিনঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। দীর্ঘ তিনঘণ্টা ধরে চলা মানববন্ধনে শ্রমিকরা জানান, রামগতিতে ৪৪টি ইটভাটা থাকলেও ইতোমধ্যে বিভিন্ন কারণে ৭ টি ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব ভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে প্রায় ৫০ হাজার লোক। আর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এ শিল্পে জড়িত রয়েছে আরও ৪০ হাজার লোক। সব মিলিয়ে প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষের আয় রোজগারের একমাত্র মাধ্যম ইটভাটাগুলো। ইটভাটার যেমন ক্ষতিকর দিক রয়েছে, তেমনি উপকারের দিক বিবেচনায় করে এ শিল্পকে সরকারের নীতিমালার আওতায় এনে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার দাবি জানান তারা।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, এ অঞ্চলে বর্তমানে কোন কাজকর্ম নেই। ভাটাগুলো বন্ধ হলে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। এঅবস্থায় সরকার ও প্রশাসনের মানবিক দৃষ্টি কামনা করেন তারা। অন্যথায় তাদের জীবিকা নির্বাহের এই মাধ্যমটি কোন ভাবেই বন্ধ করতে দিবেনা শ্রমিকরা। এসময় কাফনের কাপড় পরিধান করে রাস্তায় বসে পড়েন তারা।

ভাটার মালিকরা বলেন, হঠাৎ করে দেশীয় ইটভাটা বন্ধের সিদ্ধান্তে চরম বেকারত্বের ঝুঁকিতে পড়বে ইটভাটার সাথে জড়িত এ অঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক। তারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যায় করে ফেলেছেন। ভাটাগুলো বন্ধ হলে তাদের আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন উপায় নেই। সে দিক বিবেচনা করে ইটকে শিল্প হিসেবে নিয়ে নীতিমালার আওতায় আনা জরুরি বলে মনে করছেন তারাও।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন-ইটভাটা মালিক, হাজী খলিল, রাসেল, আল আমিন ও বাবুল সহ ইটভাটার ১০ জন মালিক।


banner close