বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপ থেকে গভীর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি গতকাল যশোর এলাকায় অবস্থানের পর আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ সময় মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা প্রবল অবস্থায় রয়েছে। ফলে সাগরবর্তী কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-নোয়াখালীসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রবণ বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারে গত শুক্রবার সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কারণে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কক্সবাজার শহর এলাকায় দেখা দেওয়া জলাবদ্ধতা গতকাল খানিকটা কমে গেলেও জেলা সদরসহ ৬ উপজেলার অন্তত ২ শতাধিক গ্রাম পানিবন্দি রয়েছে। এদিকে প্রবল ঝড়ের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় কক্সবাজার ও নোয়াখালীর হাতিয়ায় অন্তত ২০টি মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এসব ট্রলারে থাকা শতাধিক জেলে এখনো নিখোঁজ। গতকাল তাদের মধ্যে ৫ জনের মরদেহ সৈকতে ভেসে আসার পর সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর জেলায় লঞ্চ চলাচল। আজ ঢাকাসহ ৫ বিভাগের কোথাও কোথাও অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারে গত শুক্রবারের তুলনায় গতকাল শনিবার বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। এ পরিস্থিতিতে কক্সবাজার শহরে জলাবদ্ধ এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও বেড়েছে প্লাবিত এলাকার সংখ্যা। জানা গেছে, জেলা সদরসহ ৬ উপজেলার অন্তত ২ শতাধিক গ্রাম পানিবন্দি রয়েছেন।
এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৮টি ফিশিং ট্রলারসহ অন্তত ৭০ জেলে নিখোঁজের তথ্য জানিয়েছেন মালিকরা। এর মধ্যে ৫ জনের মরদেহ সাগরের উপকূলে ভেসে এসেছে বলে জানা যায়।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২১০ মিলিমিটার। বৃষ্টি কিছুটা কমলেও ভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা কক্সবাজারের ইতিহাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টি। এর আগে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ৪৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছিল।
এদিকে টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণে জেলার চকরিয়ায় বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদীভাঙনের কবলে পড়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি। পৌর শহরের বাঁশঘাট এলাকায় মাতামুহুরি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১৫টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
অন্যদিকে, বৃষ্টি কমে যাওয়ায় কক্সবাজার শহরের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয়েছে। পর্যটন জোন কলাতলীর হোটেল মোটেল এলাকার সকল সড়ক, সৈকত-সংলগ্ন এলাকা, মাকের্ট এলাকা থেকে নেমে গেছে পানি। শহরের প্রধান সড়কের বাজারঘাটা, বড়বাজার, মাছবাজার, এন্ডারসন সড়ক, টেকপাড়া, পেশকারপাড়া, বার্মিজ মার্কেট এলাকা, বৌদ্ধমন্দির সড়ক, গোলদিঘিরপাড়, তারাবনিয়াছড়া, রুমালিয়ারছড়া, বাাঁচা মিয়ার ঘোনা, পাহাড়তলী এলাকা থেকেও পানি নেমে গেছে বলে জানা যায়।
তবে শহরের সমিতিপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, ফদনারডেইল, নুনিয়াছড়াসহ ৮টি নিম্নাঞ্চল এখনও পানিবন্দি রয়েছে।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বৃষ্টি কমে যাওয়ায় হোটেল মোটেল জোনে এখন পানি নেমে গেছে। তবে বৃষ্টি হলেই এখন আতংক তৈরি হচ্ছে। মুহুর্তের মধ্যেই জলাবদ্ধতা হচ্ছে। নালা উন্নত করা না হলে এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।
উখিয়া উপজেলা ৪০টির বেশি গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি থাকার তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। উখিয়ার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হলদিয়াপালং ও জালিয়া পালং ইউনিয়নে।
এই দুই ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ গত দুই দিন ধরে পানির নিচে বসবাস করছে। ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় রান্না হচ্ছে না অধিকাংশ ঘরে।
জালিয়া পালং ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া, ঘাটঘর পাড়া পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়া ডেইপাড়া মনখালি, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া, মনির মার্কেট, রুমখা পালং, বড়বিল, পাতাবাড়ি, নলবুনিয়া, খেওয়া ছড়ি, বৌ বাজার, কুলাল পাড়া, পাগলির বিল, রাজা পালং ইউনিয়নের কুতুপালং, মাছকারিয়া, লম্বাশিয়া তুতুরবিল, পিনজির কুল, রত্নাপালং ইউনিয়নের সাদৃ কাটা, পশ্চিম রত্না, খোন্দকার পাড়া, গয়াল মারা ও পালংখালী ইউনিয়নে থাইংখালী, রহমতের বিল, বালুখালী তৈল খোলা, আঞ্জুমান পাড়া ফারিবিল সহ অন্তত ৪০টি গ্রামে পানি তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উখিয়া উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী জানান, বন্যায় জালিয়া পালং ও হলদিয়াপালং ইউনিয়ন এর মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভির হোসেন জানান, বন্যায় কবলিত এলাকার মানুষের জন্য জেলা থেকে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমেও সহযোগিতার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টিতে চকরিয়া-পেকুয়ার বিভিন্ন নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে বলে জানা যায়। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্খা রয়েছে।
চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, বিএমচর, কোনাখালী ও বদরখালী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অন্তত ২০ হাজার লোক পানি বন্দি রয়েছে। এছাড়া আমন ধানের ক্ষেত ও শীতকালিন বিভিন্ন সবজির চারা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়।
পেকুয়ার শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, তিনদিনের টানা বৃষ্টির কারনে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কিছু বসতঘর ও দোকান-পাটে পানি ঢুকেছে।
এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৮টি ফিশিং ট্রলার নিখোঁজ থাকার তথ্য জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।
তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ থাকা এসব ট্রলার ডুবে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু জেলে সাঁতার কেটে উপকুলে ফিরেছে। উদ্ধার হয়েছে ৫ জনের মরদেহও। ফলে এসব ট্রলারের আরও অন্তত ৬৮ জেলে নিখোঁজ রয়েছে।
শনিবার সকালে কক্সবাজার সৈকতের নাজিরারটেক, পেঁচারদ্বীপ, ইনানী ও কলাতলী উপকুলে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা। এর মধ্যে দুই জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরা হলেন, বাঁশখালী উপজেলার শেখেরকিল এলাকার নুরুল আমিন (৪০), লোহাগাড়া উপজেলার চরমবা এলাকার মোহাম্মদ জালাল (৩৭) ও আব্দুল করিম (৩৫) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। অপর দুই জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। মরদেহ ৫টি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রবল বর্ষণে নদীভাঙন, চকরিয়ায় শতাধিক পরিবার ঘরছাড়া
দৈনিক বাংলার চকরিয়া- পেকুয়া প্রতিনিধি জানায়, টানা তিনদিনের বারিবর্ষণে কক্সবাজার চকরিয়ায় বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে শতাধিক ঘরবাড়ি। পৌর শহরের বাঁশঘাট এলাকায় মাতামুহুরি নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে ১৫ টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে আতঙ্কে ঘরছাড়া হয় শতাধিক পরিবার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বদরখালী পওর শাখার উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. জামাল মুর্শিদ জানান, শনিবার বেলা বারোটায় মাতামুহুরি নদীর পানি ৫ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মাতামুহুরি নদীর বিপৎসীমা ধরা হয় ৫ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার।
জানা গেছে, তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, বিএমচর, কোনাখালী ও বদরখালী ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অন্তত ২০ হাজার লোক পানি বন্দি রয়েছে। এছাড়া আমন ধানের ক্ষেত ও শীতকালিন বিভিন্ন সবজির চারা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়।
হাতিয়ার মেঘনায় ১০ ট্রলারডুবি, ৮ মাঝিসহ ৫ ট্রলার নিখোঁজ
বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঝড়ের কবলে পড়ে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে দশটি মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ১৮ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ৫টি ট্রলারসহ ৮ মাঝি এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়ে পুলিশ।
গত শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে মেঘনা নদীর কয়েকটি এলাকায় এ ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে।
ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলোর মালিকরা হলেন বাবর মাঝি, জান মিয়া, দেলোয়ার মাঝি, হেলাল উদ্দিন, শহীদ মাঝি, মেহরাজ মাঝি ও ইউনুছ মাঝি।
হাতিয়ার ট্রলার মালিক সমিতির সদস্য লুৎফুল্লাহিল নিশান দাবি করেন, ঝোড়ো বাতাস ও প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে হাতিয়ার মোট ১৯টি ট্রলার ডুবে গেছে। অনেকে ট্রলারডুবির সময় পার্শ্ববর্তী ট্রলারগুলোর সহযোগিতায় কূলে উঠেছেন। এখনো অনেকে নিখোঁজ আছেন।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সোহেল বলেন, আমাদের নামার বাজার এলাকার চারটি ট্রলার ডুবে গেছে। কেউ কেউ পাড়ে উঠে আসতে পারলেও অনেকেই এখনও উঠতে পারেননি। কে এসেছেন বা কে আসেননি তার হিসাব নেওয়া কঠিন।
কোস্টগার্ড হাতিয়ার স্টেশন অফিসার সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন বলেন, যারা খবর দিতে পেরেছেন আমরা তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি স্থানীয় কিছু ট্রলার গিয়ে উদ্ধারকাজ করছে। এখনো অনেক ট্রলারের খবর পাওয়া যাচ্ছে না। সেসব ট্রলারগুলোর বিষয়ে আমরা খবর নিচ্ছি।
ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর লঞ্চ চলাচল বন্ধ
ভোলা প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুরসহ স্থানীয় সব নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌপথের ফেরি চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বিআইডব্লিউটিএ ভোলার সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি আরও জানান, সমুদ্র এলাকাভুক্ত হওয়ায় চরফ্যাশনের বেতুয়া টু ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচলও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে ভোলা-ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচল করবে।
এদিকে, শনিবার বিকালে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক সুপারভাইজার শরীফুল ইসলাম ও ফেরিঘাটের সহ-ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জাহেদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌপথের ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। এই নৌপথে চলাচলের জন্য ফেরি কুসুমকলি, কাবেরী, কলমিলতা, কিষানি ও কনকচাঁপা রয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলেই সেগুলো চলাচল শুরু হবে।
ঢাকাসহ ৫ বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
এদিকে, আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের সংশয়ের কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী যদি ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন, তবে তা তার একান্তই নিজস্ব মতামত, এর সঙ্গে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জের বিকেএমইএ ভবনে জেলা পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের কাছে ছয়টি টহল গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোনো প্রার্থী কেন নির্বাচনে অংশ নেবেন না, তা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। নিরাপত্তার অজুহাতে যিনি সরে দাঁড়িয়েছেন, তিনি আসলে কী ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে এমন স্বাভাবিক পরিবেশে কেউ নিরাপত্তাহীনতার কথা বললে সেটি তার ব্যক্তিগত অনুভূতির বিষয় হতে পারে; কিন্তু সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। এ সময় তিনি সাম্প্রতিক হামলায় আহত শরিফ ওসমান হাদির সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
বিকেএমইএর পক্ষ থেকে পুলিশকে ছয়টি লেগুনা ভ্যান উপহার দেওয়ার উদ্যোগকে প্রশংসনীয় ও দৃষ্টান্তমূলক বলে অভিহিত করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় পুলিশের অনেক যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এমতাবস্থায় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর এমন সহায়তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের গতিশীলতা বাড়াবে এবং দায়িত্ব পালনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এবং বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৯২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে বিভিন্ন মামলা ও ওয়ারেন্টে ৫২৩ জন। অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ ২-তে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১ হাজার ৩৯৮ জন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অভিযানে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শ্যুটার গান, একটি বন্দুক, ৩ রাউন্ড গুলি, একটি ফায়ার করা গুলি, ৩ রাউন্ড কার্তুজ, ১১টি দেশীয় অস্ত্র এবং ১২টি ককটেল।
পুলিশ আরও জানায়, পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২১ হাজার ৬৩০টি মোটরসাইকেল ও ১৯ হাজার ৯৪টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে একটি একনলা বন্ধুক, দুটি ধারালো ছুরি, একটি বার্মিজ চাকু, এক রাউন্ড গুলি ও একটি ফায়ার করা গুলি উদ্ধার করা হয়।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় থানা ভাংচুরের মামলায় শাহজাহান মিয়া (৫২) নামে এক ইউপি মেম্বারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি সাইফুল্লাহ সাইফ জানান, শাহজাহান মিয়া পুটিজানা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বৈলাজান গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ইউপি সদস্য।
পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্ট থানা ভাংচুরের মামলার অন্যতম আসামি শাহজাহান মেম্বারকে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ১১ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম উপজেলার শিবগঞ্জ বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন। শাহজাহান মেম্বার দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
১৯৭১ সালে নওগাঁ ছিল তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর)-এর ৭ নম্বর উইংয়ের গুরুত্বপূর্ণ হেডকোয়ার্টার। ১৮ মার্চ পর্যন্ত এখানে কমান্ডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পাঞ্জাবি মেজর আকরাম বেগ। তার অধীনে দুজন ক্যাপ্টেন ছিলেন পাঞ্জাবি ক্যাপ্টেন নাভেদ আফজাল এবং বাঙালি ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন।
২৫ মার্চের পূর্বে মেজর আকরাম বেগের স্থলে বাঙালি মেজর নাজমুল হক নওগাঁয় ইপিআরের নতুন কমান্ডিং অফিসার হিসেবে বদলি হয়ে আসেন। তবে দেশের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মেজর আকরাম বেগ তার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরে অসম্মতি জানান। পরবর্তীতে কৌশলে ২৪ মার্চ মেজর আকরাম বেগ ও ক্যাপ্টেন নাভেদ আফজালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
একই সঙ্গে পশ্চিম পাঞ্জাবের ঝিলামের অধিবাসী নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক নিসারুল হামিদকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বন্দিদশায় সপরিবারে তারা নিহত হন।
এর ফলে নওগাঁ মহকুমা সদ্য ঘোষিত স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের মুক্ত এলাকায় পরিণত হয় এবং এ সময় নওগাঁর প্রশাসনিক দায়িত্বভার গ্রহণ করে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ।
২৫ মার্চ পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হলেও নওগাঁ প্রায় এক মাস মুক্ত ছিল। তবে ২২ এপ্রিল নওগাঁ পুনরায় পাক বাহিনীর দখলে চলে যায়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়।
৭ নম্বর সেক্টরের আওতায় ছিল নওগাঁ, নবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, হিলি, রাজশাহী, পাবনা ও নাটোর অঞ্চল। এই সেক্টরের প্রথম অধিনায়ক ছিলেন ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন, পরবর্তীতে মেজর নাজমুল হক এবং তার মৃত্যুর পর মেজর নুরুজ্জামান দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১১টি সেক্টর থেকে মোট ১১৪ জন যোদ্ধাকে সি অ্যান্ড সি স্পেশাল প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ভারতের দেরাদুনের কবুলিয়া নামক স্থানে এই প্রশিক্ষণ হয়। নওগাঁ থেকে মাত্র দুজন কৃতি সন্তান এই দুর্লভ প্রশিক্ষণ গ্রহণের গৌরব অর্জন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল হোসেন চৌধুরী ও আখতার আহমেদ সিদ্দিকী।
এছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনালগ্নেই নওগাঁর বহু ছাত্র-যুবক মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মোখলেসুর রহমান রাজা, আফজাল হোসেন, মুনির আহমেদ, আব্দুল মালেক, আবু রেজা বিশু, আনিসুর রহমান তরফদার, মোজাম্মেল হক, মকলেসার রহমান চৌধুরী, শামসুল হক, ওহিদুর রহমান, হাসেম আলী, ময়নুল ইসলাম ময়েন, ময়নুল হক মুকুল, খায়রুল আলম, শফিকুল ইসলাম খান, আব্দুস সাত্তার মল্লিক, হাফিজুর রহমান, আব্দুল ওহাব, আব্দুর রাজ্জাক, মোয়াজ্জেম হোসেন, হারুন-অল-রশিদ, আখতারুজ্জামান রঞ্জু, অনিমেশ চন্দ্র দাস, সিরাজুল ইসলাম আনসারী, মোরশেদ তরফদার, আলমগীর নাব সিদ্দিকী, ইব্রাহিম তারা, আবু তাহের, আব্দুস সালাম, মনিরুজ্জামান, জাহাঙ্গীর হোসেন, খন্দকার ওয়ালিউল ইসলাম টুকু, জুলফিকারুল ইসলাম নার্গিস, আজাদ, জহুরুল ইসলাম স্বপন, এ বি এম ফারুক, গোলাম সামদানী, মকছেদ আলী, ডা. শাহ আব্দুল খালেক, হাবিলদার গোলাম রাব্বানী মুকুল, এস এম সিরাজুল ইসলাম, এ এফ এম নুরুজ্জামান নান্টু, আবু তালেব, খলিলুর রহমান, আবুবকর সিদ্দিক, আবুল হোসেনসহ আরও অনেকে।
১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের সংবাদ পাওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল হোসেন চৌধুরী নওগাঁ আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। তার আগে নদীকূল এলাকায় তিনি গ্রুপ কমান্ডারদের ব্রিফিং দেন। তিনি জানান, নওগাঁ তখনো অবাঙালিদের নিয়ন্ত্রণে এবং সমগ্র শহর মেজর সাঈদের নেতৃত্বে শক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সুরক্ষিত। পাঞ্জাব, বেলুচ, সিন্ধি ও পাঠান রেজিমেন্টকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছিল।
১৭ ডিসেম্বর শীতল সকালে বিশাল মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী নওগাঁ আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী জগৎসিংহপুর ও খলিশাকুড়ি গ্রামে অবস্থান নিলে দুই বাহিনীর মধ্যে দূরত্ব কমে আসে। মাঝখানে ছিল শাখা যমুনা নদী। এ অবস্থায় জালাল হোসেন চৌধুরীর নির্দেশে শুরু হয় গোলাগুলি, যা রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
নওগাঁ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম সিরাজুল ইসলাম জানান, ১৮ ডিসেম্বর শনিবার সকালে বগুড়া থেকে অগ্রসরমান ভারতীয় বাহিনীর মেজর চন্দ্রশেখর এবং পশ্চিম দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে পিবি রায়ের নেতৃত্বে অগ্রসরমাণ মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী একযোগে নওগাঁয় প্রবেশ করে। তখন পাক হানাদার বাহিনীর আর প্রতিরোধের সক্ষমতা ছিল না।
ফলে প্রায় দুই হাজার পাকসেনা কেডি সরকারি স্কুল, পিএম গার্লস স্কুল, সরকারি গার্লস স্কুল, পুরাতন থানা চত্বর ও এসডিও অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র ফেলে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নতমস্তকে আত্মসমর্পণ করে। এ সময় নওগাঁর বিহারী সম্প্রদায়ের লোকজন সপরিবারে কেডি সরকারি স্কুলে আশ্রয় নেয়।
তৎকালীন নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক সৈয়দ মার্গুব মোরশেদ মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীকে স্বাগত জানান। এসডিও অফিস চত্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা পতাকার প্রতি সালাম জানিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর মধ্য দিয়েই ১৮ ডিসেম্বর নওগাঁ চিরতরে হানাদারমুক্ত হয়।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে এবং ব্যান্ডবাদনে মনোমুগ্ধকর নৈপুণ্যময় পরিবেশনা প্রদর্শন করেন বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ের কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী কোয়ান্টারা। লামায় এবারও তারা কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লেতে ১ম এবং ব্যান্ডবাদনে বিশেষ সম্মাননা স্মারক পুরস্কার অর্জন করেছে।
এতে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের প্যারেড বড় (৩৫জন) ও প্যারেড ছোট দল (৩৫জন) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে অংশ নেয়। লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে প্রতিযোগিতা হয়।
এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ছিলেন- লামা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈন উদ্দিন, থানার ওসি শাহাজাহান কামাল, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা নাদিম ও পৌরসভার সাবেক মেযর মো. আমির হোসেন প্রমুখ।
কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লেতে প্রথম ও ব্যান্ডবাদনে বিশেষ সম্মাননার অর্জনের সত্যতা নিশ্চিত করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ছালেহ আহমেদ জানান, ‘এবারে তিনটি কুচকাওয়াজ, দুইটি ডিসপ্লে ও দুইটি ব্যন্ডবাদন মিলে সর্বমোট ৪৭৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।’
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল সার জব্দ করা হয়েছে। পরে গুদামটি সিলগালা করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিভিন্ন ব্যান্ডের নামে বস্তাভর্তি করে ভেজাল সার গুদামজাত করা হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামে ডালের ভিটা এলাকায় ভেজাল সার উৎপাদন কারখানার সন্ধান পেয়েছে কৃষি অফিস। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে সারগুলো জব্দ করা হয়। তবে এ সময় কাউকে আটক করা যায়নি।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা জানান এখানে প্রায় ১৮ টন সার ও কাঁচামাল জব্দ করা হয়েছে যার বাজারজাত মূল্য প্রায় ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজীব আহমেদ অভিযান পরিচালনা করে গুদাম সিলগালা করে কারখানার মেশিন জব্দ করেছেন। তিনি জানান ভেজাল সারগুলো নষ্ট করে দেওয়া হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুব আলম ও আফরোজা আক্তার।
সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামেও ডেভিল হান্ট ফেজ-২ এর অভিযানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ’লীগের পৌর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের পাঁচড়া পাটোয়ারীর বাড়ীর মৃত হাফেজ মিয়ার ছেলে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার সানা উল্লাহ।
পুলিশ জানায়, চৌদ্দগ্রাম পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারী বিগত আ’লীগ সরকারের সময় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা মামলা চালিয়েছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যায়। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। বুধবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ পাঁচরা রাস্তার মাথা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জাকির হোসেন পাটোয়ারীকে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়।
চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার সানা উল্লাহ বলেন, ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ’লীগের চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারীকে গ্রেফতার শেষে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে’।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে সবজিবাহী ট্রাকের ধাক্কায় শামসুল আলম (৪৫) নামের এক সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ট্রাকচালক রবিউল হোসেন (৩৩) ও তার সহকারী এমরান হোসেন (১৭)। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বারইয়ারহাট পৌরসভার চিনকি আস্তানা এলাকায় ঢাকাগামী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শামসুল আলম বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সুলতান সওদাগরের ছেলে। আহত দুজনের বাড়ি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায়।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভোরে মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে সবজিবাহী ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দেয়। এতে সবজিবাহী ট্রাকের চালক, সহকারী ও সবজি ব্যবসায়ী কেবিনে আটকে পড়েন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলেই নিহত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বারইয়ারহাট ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন তিতাস বলেন, ভোরে কিছু আগে দুর্ঘটনার খবর পাই। তিন মিনিটের মধ্যে দুটি ইউনিট নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আটকে থাকা চালক ও সহকারীকে উদ্ধার করে। পরে তাদের হাসপাতালে পাঠাই এবং নিহত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক বোরহান উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত দুটি ট্রাক জব্দ করে থানায় আনা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালকের চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানোর কারণেই দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকটিতে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
অস্ট্রেলিয়ার সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ওলাভ মুরলিংক বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এন্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক ড. দিলারা জাহিদ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং শিশু শিক্ষা বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অস্ট্রেলিয়ার সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চালুসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং কর্মশালা আয়োজনের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় গবেষণার সুফল পৌঁছে দিতে পরিকল্পনানীতি এবং ব্যবহারিক একাডেমিক গবেষণার মধ্যে ব্যবধান কমানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন।
নওগাঁর মান্দায় বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে পালশ আলী নামে এক কারারক্ষী নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের ভোলাবাজার এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে।
নিহত পলাশ আলী বগুড়া জেলা কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তার বাড়ি চাপাইনবয়াবগঞ্জ জেলায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
মান্দা থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত পলাশ আলী মোটরসাইকেল চালিয়ে রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা নওগাঁ অভিমুখী একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে। এতে পলাশ আলীর মোটরসাইকেলটি বাসের নিচে চাপা পড়ে এবং বাসের চাপায় সে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে মান্দা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশীষ কুমার সন্যাল বলেন, বাস চাপায় ঘটাস্থলেই ওই কারারক্ষী নিহত হন। কারা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ঘাতক বাসটিকে শনাক্তে পুলিশ কাজ করছে।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের সাহেব বাড়ি গেইটের দক্ষিণে তেলে ভাউচারবাহী একটি যান ও আল মোবারক পরিবহনের একটি বাসের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
আজ দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পাঠানো হয়।
খবর পেয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় দুর্ঘটনায় জড়িত দুটি গাড়িই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বলেন, “দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুটি গাড়িই আটক করা হয়েছে। তবে বাসের কোনো লোকজনকে আমরা ঘটনাস্থলে পাইনি। ফলে নিহত ব্যক্তির পরিচয় তবে জানতে পারছি তিনি বাসের সুপারভাইজার ছিলেন। এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।“
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিএনপির দোয়া মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোরশেদ আলম শিব্বির নামের এক বিএনপি নেতা। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের ইসলামপুর বাজারে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ৪৮ বছর বয়সী মোরশেদ আলম বদলকোট ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবস উপলক্ষে ইসলামপুর বাজারে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মোরশেদ আলম। উপস্থিত নেতাকর্মীরা দ্রুত তাকে চাটখিলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেলা সদরের আরেকটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে পৌঁছানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের মতে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত মোরশেদ আলম সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন এবং সেখান থেকেই দলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। কয়েক মাস আগে তিনি দেশে এসেছিলেন এবং ছুটি শেষে পুনরায় প্রবাসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি মরহুমকে দলের একজন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা হিসেবে উল্লেখ করে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা স্টেডিয়ামে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৪৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে ‘বিজয় দিবসের তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল। তিনি বলেন, “৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। এই স্বাধীনতার সবটুকু কৃতিত্ব জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। দেশের ভূখণ্ড রক্ষায় তাদের অবদান সবচেয়ে বেশি। সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রানী ভৌমিক। এতে উপস্থিত ছিলেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সাহা, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এটিএম ফয়েজুর রাজ্জাক আকন্দ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।
আলোচনা সভা শেষে ১৪৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেন অতিথিরা।
এর আগে দিবসটির সূচনায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের শুভসূচনা করা হয়। ভোর সাড়ে ৬টায় উপজেলা শহীদদের নামফলকে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সকাল ৯টায় উপজেলা স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এই আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। আয়োজনে সাংবাদিকদের জন্য রাতে দ্বিতীয় সারিতে আসন নির্ধারণ করা হলেও অনুষ্ঠান শুরুর সময় দেখা যায় তাদের তৃতীয় সারিতে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই স্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য শোনা ও ছবি ধারণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এছাড়া কিছুক্ষণের মধ্যেই সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত আসনগুলো অন্যদের দখলে চলে যায়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকে সাংবাদিকদের জন্য নির্দিষ্ট আসনের ঘোষণা না দেওয়ায় ঝিনাইগাতীতে কর্মরত কোনো সাংবাদিকই আসন গ্রহণ করেননি। ফলে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সাংবাদিক গোলাম রব্বানী টিটু, দৈনিক সংবাদের সাংবাদিক হারুনুর রশিদ দুদু, দৈনিক বাংলার সাংবাদিক শান্ত শিফাত, খবর সারাবেলা পোর্টালের সাংবাদিক আতিকুর রহমান খানসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা মাঠে দাঁড়িয়েই সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করেন।
এ বিষয়ে সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম রব্বানী টিটু বলেন, “এখনো রাজনৈতিক সরকার আসেনি। তাতেই যদি প্রশাসন সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করে, তাহলে ভবিষ্যতে প্রশাসনের আচরণ কেমন হবে, তা ভাবনার বিষয়।”
ঘটনাটি স্থানীয় সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে।