বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
১৮ আষাঢ় ১৪৩২

কক্সবাজার ও হাতিয়ায় ২০ ট্রলার ডুবি, ৫ মরদেহ উদ্ধার

* শতাধিক জেলে নিখোঁজ * কক্সবাজারে বেড়েছে প্লাবিত এলাকার সংখ্যা * ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর লঞ্চ চলাচল বন্ধ * নদীভাঙনে চকরিয়ায় শতাধিক পরিবার ঘরছাড়া * ৫ বিভাগে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা
বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় প্রবল বর্ষণ ও ঝড়ে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজার জেলার নিম্নাঞ্চল। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০২

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপ থেকে গভীর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি গতকাল যশোর এলাকায় অবস্থানের পর আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ সময় মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা প্রবল অবস্থায় রয়েছে। ফলে সাগরবর্তী কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-নোয়াখালীসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রবণ বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারে গত শুক্রবার সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কারণে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কক্সবাজার শহর এলাকায় দেখা দেওয়া জলাবদ্ধতা গতকাল খানিকটা কমে গেলেও জেলা সদরসহ ৬ উপজেলার অন্তত ২ শতাধিক গ্রাম পানিবন্দি রয়েছে। এদিকে প্রবল ঝড়ের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় কক্সবাজার ও নোয়াখালীর হাতিয়ায় অন্তত ২০টি মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এসব ট্রলারে থাকা শতাধিক জেলে এখনো নিখোঁজ। গতকাল তাদের মধ্যে ৫ জনের মরদেহ সৈকতে ভেসে আসার পর সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর জেলায় লঞ্চ চলাচল। আজ ঢাকাসহ ৫ বিভাগের কোথাও কোথাও অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারে গত শুক্রবারের তুলনায় গতকাল শনিবার বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। এ পরিস্থিতিতে কক্সবাজার শহরে জলাবদ্ধ এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও বেড়েছে প্লাবিত এলাকার সংখ্যা। জানা গেছে, জেলা সদরসহ ৬ উপজেলার অন্তত ২ শতাধিক গ্রাম পানিবন্দি রয়েছেন।

এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৮টি ফিশিং ট্রলারসহ অন্তত ৭০ জেলে নিখোঁজের তথ্য জানিয়েছেন মালিকরা। এর মধ্যে ৫ জনের মরদেহ সাগরের উপকূলে ভেসে এসেছে বলে জানা যায়।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২১০ মিলিমিটার। বৃষ্টি কিছুটা কমলেও ভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা কক্সবাজারের ইতিহাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টি। এর আগে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ৪৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছিল।

এদিকে টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণে জেলার চকরিয়ায় বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদীভাঙনের কবলে পড়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি। পৌর শহরের বাঁশঘাট এলাকায় মাতামুহুরি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১৫টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

অন্যদিকে, বৃষ্টি কমে যাওয়ায় কক্সবাজার শহরের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয়েছে। পর্যটন জোন কলাতলীর হোটেল মোটেল এলাকার সকল সড়ক, সৈকত-সংলগ্ন এলাকা, মাকের্ট এলাকা থেকে নেমে গেছে পানি। শহরের প্রধান সড়কের বাজারঘাটা, বড়বাজার, মাছবাজার, এন্ডারসন সড়ক, টেকপাড়া, পেশকারপাড়া, বার্মিজ মার্কেট এলাকা, বৌদ্ধমন্দির সড়ক, গোলদিঘিরপাড়, তারাবনিয়াছড়া, রুমালিয়ারছড়া, বাাঁচা মিয়ার ঘোনা, পাহাড়তলী এলাকা থেকেও পানি নেমে গেছে বলে জানা যায়।

তবে শহরের সমিতিপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, ফদনারডেইল, নুনিয়াছড়াসহ ৮টি নিম্নাঞ্চল এখনও পানিবন্দি রয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বৃষ্টি কমে যাওয়ায় হোটেল মোটেল জোনে এখন পানি নেমে গেছে। তবে বৃষ্টি হলেই এখন আতংক তৈরি হচ্ছে। মুহুর্তের মধ্যেই জলাবদ্ধতা হচ্ছে। নালা উন্নত করা না হলে এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।

উখিয়া উপজেলা ৪০টির বেশি গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি থাকার তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। উখিয়ার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হলদিয়াপালং ও জালিয়া পালং ইউনিয়নে।

এই দুই ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ গত দুই দিন ধরে পানির নিচে বসবাস করছে। ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় রান্না হচ্ছে না অধিকাংশ ঘরে।

জালিয়া পালং ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া, ঘাটঘর পাড়া পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়া ডেইপাড়া মনখালি, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া, মনির মার্কেট, রুমখা পালং, বড়বিল, পাতাবাড়ি, নলবুনিয়া, খেওয়া ছড়ি, বৌ বাজার, কুলাল পাড়া, পাগলির বিল, রাজা পালং ইউনিয়নের কুতুপালং, মাছকারিয়া, লম্বাশিয়া তুতুরবিল, পিনজির কুল, রত্নাপালং ইউনিয়নের সাদৃ কাটা, পশ্চিম রত্না, খোন্দকার পাড়া, গয়াল মারা ও পালংখালী ইউনিয়নে থাইংখালী, রহমতের বিল, বালুখালী তৈল খোলা, আঞ্জুমান পাড়া ফারিবিল সহ অন্তত ৪০টি গ্রামে পানি তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

উখিয়া উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী জানান, বন্যায় জালিয়া পালং ও হলদিয়াপালং ইউনিয়ন এর মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভির হোসেন জানান, বন্যায় কবলিত এলাকার মানুষের জন্য জেলা থেকে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমেও সহযোগিতার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে বৃষ্টিতে চকরিয়া-পেকুয়ার বিভিন্ন নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে বলে জানা যায়। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্খা রয়েছে।

চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, বিএমচর, কোনাখালী ও বদরখালী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অন্তত ২০ হাজার লোক পানি বন্দি রয়েছে। এছাড়া আমন ধানের ক্ষেত ও শীতকালিন বিভিন্ন সবজির চারা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়।

পেকুয়ার শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, তিনদিনের টানা বৃষ্টির কারনে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কিছু বসতঘর ও দোকান-পাটে পানি ঢুকেছে।

এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৮টি ফিশিং ট্রলার নিখোঁজ থাকার তথ্য জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ থাকা এসব ট্রলার ডুবে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু জেলে সাঁতার কেটে উপকুলে ফিরেছে। উদ্ধার হয়েছে ৫ জনের মরদেহও। ফলে এসব ট্রলারের আরও অন্তত ৬৮ জেলে নিখোঁজ রয়েছে।

শনিবার সকালে কক্সবাজার সৈকতের নাজিরারটেক, পেঁচারদ্বীপ, ইনানী ও কলাতলী উপকুলে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা। এর মধ্যে দুই জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরা হলেন, বাঁশখালী উপজেলার শেখেরকিল এলাকার নুরুল আমিন (৪০), লোহাগাড়া উপজেলার চরমবা এলাকার মোহাম্মদ জালাল (৩৭) ও আব্দুল করিম (৩৫) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। অপর দুই জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। মরদেহ ৫টি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রবল বর্ষণে নদীভাঙন, চকরিয়ায় শতাধিক পরিবার ঘরছাড়া

দৈনিক বাংলার চকরিয়া- পেকুয়া প্রতিনিধি জানায়, টানা তিনদিনের বারিবর্ষণে কক্সবাজার চকরিয়ায় বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে শতাধিক ঘরবাড়ি। পৌর শহরের বাঁশঘাট এলাকায় মাতামুহুরি নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে ১৫ টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে আতঙ্কে ঘরছাড়া হয় শতাধিক পরিবার।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বদরখালী পওর শাখার উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. জামাল মুর্শিদ জানান, শনিবার বেলা বারোটায় মাতামুহুরি নদীর পানি ৫ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মাতামুহুরি নদীর বিপৎসীমা ধরা হয় ৫ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার।

জানা গেছে, তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, বিএমচর, কোনাখালী ও বদরখালী ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অন্তত ২০ হাজার লোক পানি বন্দি রয়েছে। এছাড়া আমন ধানের ক্ষেত ও শীতকালিন বিভিন্ন সবজির চারা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়।

হাতিয়ার মেঘনায় ১০ ট্রলারডুবি, ৮ মাঝিসহ ৫ ট্রলার নিখোঁজ

বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঝড়ের কবলে পড়ে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে দশটি মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ১৮ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ৫টি ট্রলারসহ ৮ মাঝি এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়ে পুলিশ।

গত শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে মেঘনা নদীর কয়েকটি এলাকায় এ ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে।

ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলোর মালিকরা হলেন বাবর মাঝি, জান মিয়া, দেলোয়ার মাঝি, হেলাল উদ্দিন, শহীদ মাঝি, মেহরাজ মাঝি ও ইউনুছ মাঝি।

হাতিয়ার ট্রলার মালিক সমিতির সদস্য লুৎফুল্লাহিল নিশান দাবি করেন, ঝোড়ো বাতাস ও প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে হাতিয়ার মোট ১৯টি ট্রলার ডুবে গেছে। অনেকে ট্রলারডুবির সময় পার্শ্ববর্তী ট্রলারগুলোর সহযোগিতায় কূলে উঠেছেন। এখনো অনেকে নিখোঁজ আছেন।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সোহেল বলেন, আমাদের নামার বাজার এলাকার চারটি ট্রলার ডুবে গেছে। কেউ কেউ পাড়ে উঠে আসতে পারলেও অনেকেই এখনও উঠতে পারেননি। কে এসেছেন বা কে আসেননি তার হিসাব নেওয়া কঠিন।

কোস্টগার্ড হাতিয়ার স্টেশন অফিসার সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন বলেন, যারা খবর দিতে পেরেছেন আমরা তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি স্থানীয় কিছু ট্রলার গিয়ে উদ্ধারকাজ করছে। এখনো অনেক ট্রলারের খবর পাওয়া যাচ্ছে না। সেসব ট্রলারগুলোর বিষয়ে আমরা খবর নিচ্ছি।

ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর লঞ্চ চলাচল বন্ধ

ভোলা প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুরসহ স্থানীয় সব নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌপথের ফেরি চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বিআইডব্লিউটিএ ভোলার সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি আরও জানান, সমুদ্র এলাকাভুক্ত হওয়ায় চরফ্যাশনের বেতুয়া টু ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচলও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে ভোলা-ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচল করবে।

এদিকে, শনিবার বিকালে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক সুপারভাইজার শরীফুল ইসলাম ও ফেরিঘাটের সহ-ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জাহেদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌপথের ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। এই নৌপথে চলাচলের জন্য ফেরি কুসুমকলি, কাবেরী, কলমিলতা, কিষানি ও কনকচাঁপা রয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলেই সেগুলো চলাচল শুরু হবে।

ঢাকাসহ ৫ বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা

এদিকে, আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।


আগামী অর্থবছরে ৭.০৫ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা

আগামী অর্থবছরে ৭.০৫ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পাট চাষের জন্য জমির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক শূন্য ৫ লাখ হেক্টর। এ পরিমাণ জমিতে চাষাবাদের জন্য পাট বীজ প্রয়োজন ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টন।

সোমবার বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) কৃষি উইং আয়োজিত ‘বার্ষিক অভ্যন্তরীণ গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।

তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে পাটের মোট উৎপাদন ১৫ লাখ মেট্রিক টন, পাটকাঠির মোট উৎপাদন ৩০ লাখ মেট্রিক টন এবং চারকোলের উৎপাদন ৬ লাখ মেট্রিক টন।

আগামী অর্থবছরে ৭.০৫ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘পাট নিয়ে অনেক কিছু করার আছে। পাটের সম্ভাবনা কোনো দিন শেষ হবে না। কাঁচা পাট নিয়ে অন্যান্য দেশ কীভাবে কাজ করছে তার ওপরেও মার্কেট রিসার্চে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘বদ্ধ চিন্তাধারা থেকে বের হয়ে বিজ্ঞানীদের বিশদভাবে কাজ করতে হবে। কারণ পাট নিয়ে অনেক কিছু করার আছে, পাটের সম্ভাবনা কোনো দিন শেষ হবে না। মার্কেট এবং বাস্তবতার নিরিখে গবেষণা করতে হবে। আমাদের সীমাবদ্ধ জমিতে কীভাবে পাটের উৎপাদনকে আরও বাড়ানো যায়, তা নিয়েও কাজ করতে হবে।’

আগামী অর্থবছরে ৭.০৫ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা

সভাপতির বক্তব্যে বিজেআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. নার্গীস আক্তার বলেন, ‘পাট কৃষিজাত পণ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় চাষিরা কৃষিঋণের মতো পাটঋণ এবং পণ্য রপ্তানিতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। সরকার থেকে ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা পায় চারকোল রপ্তানিকারকরা। দেশে প্রায় ৫০টি চারকোলের কারখানা রয়েছে। বর্তমানে কিছু কারখানা বন্ধ আছে।’

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা অনুবিভাগ) মো. আবু জুবাইর হোসেন বাবলু, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজেআরআইয়ের প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম মোস্তফা এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজেআরআইয়ের জেনোম গবেষণা কেন্দ্রের সমন্বয়ক ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম মাহবুব আলী।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল আমিন, কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক মো. মসীহুর রহমান, জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমির মহাপরিচালক মো. সাইফুল আজম খান, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।


সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা, সভাপতিসহ আহত ৩০

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।

সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।

হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।

এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।

ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে জেলার শ্রেষ্ঠ ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শান্ত শিফাত, ঝিনাইগাতী (শেরপুর)প্রতিনিধি

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে শেরপুর জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ঝিনাইগাতী উপজেলার ইউএনও জনাব মো. আশরাফুল আলম রাসেল।

জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের নির্ভুলতা, সময়ানুবর্তিতা ও সার্বিক দাপ্তরিক ব্যবস্থাপনায় অনন্য ভূমিকা রাখায় তাঁকে এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র তুলে দেন শেরপুর এর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ মাজিস্ট্রেট তরফদার মাহমুদুর রহমান।

পুরস্কার গ্রহণের পর অনুভূতি প্রকাশ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন,"এই স্বীকৃতি শুধু আমার একার নয়, এটি ঝিনাইগাতী উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কর্মী, গ্রাম পুলিশ এবং সহযোগী সব পক্ষের সম্মিলিত চেষ্টার ফল। আমরা চেষ্টা করেছি নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ রাখা, জনসচেতনতা তৈরি ও নিবন্ধন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে। এই সম্মাননা আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করবে জনসেবায় নতুন উদ্যমে কাজ করতে। আমি জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।”

তিনি আরও বলেন, “জন্ম ও মৃত্যুর মতো গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক তথ্যের সঠিক নিবন্ধন ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের অন্যতম ভিত্তি। তাই এই কাজকে আমি শুধু প্রশাসনিক দায়িত্ব নয়, নাগরিক অধিকারের অংশ হিসেবেও দেখি।”

এছাড়াও একই কার্যক্রমে ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও একজন শ্রেষ্ঠ গ্রাম পুলিশকেও পুরস্কার প্রদান করা হয়। তাদের নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা ও নিবন্ধন কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) ও গ্রাম পুলিশ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


সমকামিতা'সহ নানান অভিযোগে ইবি'র ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষককে অপসারণ 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাকিব আসলাম, ইবি প্রতিনিধি

সমকামিতা, নারী শিক্ষার্থী হেনস্তা সহ নানান অভিযোগের কারণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মো. হাফিজুল ইসলাম-কে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।

সোমবার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেটে পাশ হওয়ার পর উপাচার্যের নির্দেশে প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়েছে। কখন কী করা লাগবে এবং বাকিটা ব্যাখ্যা দিতে পারবেন সিন্ডিকেট।’

অফিস আদেশ সূত্রে, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব মো. হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনাপূর্বক গত ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৬ তম সভার ৪৪ নং প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির (4) i (b) ও (৫) ধারা মোতাবেক তাঁকে বাৎসরিক ০১ (এক) টি ইনক্রিমেন্ট/ধাপ বাতিল করা হয় এবং তাঁকে ১ (এক) বছরের বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করা হয়।

তবে উক্ত সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়ে পুনর্বিবেচনার দাবি ওঠলে এবং বিভাগের সকল শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৭ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি পুনরায় ব্যাপক তদন্তের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশক্রমে আবারও গত ৩১ মে ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৮ তম (সাধারণ) সভার ০৭ নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী তদন্তের আলোকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও শৃঙ্খলার স্বার্থে তাঁর এহেন কর্মকান্ড ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির চরম পরিপন্থি বলে প্রমাণিত হয়। পরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৪(১) (F) ধারা মোতাবেক তাঁকে ৩১ মে ২০২৫ তারিখ থেকে চাকুরী হতে অপসারণ করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২২ ডিসেম্বর তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হাফিজুল ইসলামের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাতিল ও এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির সিদ্ধান্ত নেয়। তবে শিক্ষার্থীরা এই শাস্তিকে অপ্রতুল দাবি করে তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে ২৮ জানুয়ারি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন, যা প্রশাসনের আশ্বাসে সাময়িক স্থগিত হয়। পরে ১৬ মে উচ্চতর তদন্ত কমিটি এসে পুনরায় জবানবন্দি চাইলে শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে প্রহসন বলে উল্লেখ করেন এবং উপাচার্যের সর্বোচ্চ শাস্তির আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।


দাউদকান্দি পৌরসভায় ৪২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।

সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।

এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।


গাজীপুরে প্লাস্টিক কারখানায় ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গাজীপুরের গাছা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতি মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়।

রবিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় গাছা থানার ঝাজর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন— হবিগঞ্জের মাজিশাইল গ্রামের মো. কাউছার মিয়া (৩৫), ময়মনসিংহের চরমদাখালী গ্রামের সাব্বির হোসেন রাজিব (২৫) এবং গাজীপুরের কোমোন গ্রামের শাখাওয়াত ওরফে সৈকত (২৬)।

পুলিশের তথ্যমতে, গ্রেপ্তার কাউছার ও শাখাওয়াতের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, গত সোমবার (২৩ জুন) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে গাছা থানাধীন ঈশ্বড্ডা এলাকায় অবস্থিত ‘আপন প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামের একটি কারখানায় ১০–১২ জনের একটি ডাকাত দল হানা দেয়।

ডাকাতরা কারখানাটি থেকে ১১৩ ব্যাগ প্লাস্টিক কাঁচামাল (যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৬ লাখ টাকা), প্রায় ২ লাখ টাকার ৪০টি ডাইস, আইপিএস, ব্যাটারি, দুটি বড় স্ট্যান্ড ফ্যান, দুটি গ্রাইন্ডিং মেশিন, নগদ ৫ হাজার টাকা এবং ৩টি মোবাইল ফোনসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও অভিযান চালিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় ঝাজর এলাকা থেকে মামলার তিন আসমিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওসি আমিনুল ইসলাম আরও জানান, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।


কুড়িগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলে অপরাধ দমনে উড়ছে পুলিশের ড্রোন

ড্রোনে পুলিশি নজরদারি বৃদ্ধির ফলে কুড়িগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষের মনে স্বস্তি ফিরেছে। পুলিশের ড্রোনে চিলমারীর জোড়গাছ হাটের দৃশ্য। রবিবার, ২৯ জুন। ছবি: কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

কুড়িগ্রামের চরবেষ্টিত উপজেলা চিলমারীসহ বিভিন্ন দুর্গম স্থানে ডাকাতি ও অপরাধ প্রতিরোধে আকাশ ও নদীপথে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ। দুর্গম চরাঞ্চল ও ব্রহ্মপুত্র নদের ঝুঁকিপূর্ণ রুটে পুলিশের টহল জোরদার করার পাশাপাশি আকাশে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চলছে প্রতিনিয়ত।

বিশেষ করে, হাটের দিন চিলমারী-রৌমারী-রাজিবপুর নৌরুটে পুলিশের একাধিক ইউনিট—গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), নৌপুলিশ ও থানা পুলিশ সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠে থাকছে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অতীতে বিভিন্ন সময় চিলমারী-রৌমারী-রাজিবপুর রুটে একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পর থেকেই নৌপথ ও চরাঞ্চলের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়। বর্তমানে শুধুমাত্র টহল নয়, আধুনিক ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চরাঞ্চলের জঙ্গলাকীর্ণ ও নজরদারির বাইরে থাকা এলাকাগুলোতেও তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

ড্রোন ক্যামেরায় চরাঞ্চলে ঝোপঝাড় কিংবা গোপন জায়গায় অপরাধীরা অবস্থান করলেও সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে ডাকাতি ও মাদকপাচারের মত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।

উপজেলার জোড়গাছ এলাকায় প্রতি সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার বড় হাট বসে। এসব দিনে চরাঞ্চল ও আশপাশের উপজেলা থেকে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা নৌপথে হাটে আসেন।

জেলা পুলিশ জানায়, হাটের দিনগুলোতে জোড়গাছ হাট, রমনা ঘাট, কাঁচকোল, ফকিরের হাট ও চিলমারী ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এসব পয়েন্টে ড্রোন ব্যবহার ছাড়াও নৌপুলিশ ও থানা পুলিশের আলাদা টহল দল সক্রিয় থাকে।

চিলমারী ইউনিয়নের বাসিন্দা আজগর আলী মণ্ডল (৬৫) বলেন, ‘আগে মাঝেমধ্যেই ডাকাতি হতো। এখন তা প্রায় নেই বললেই চলে। আকাশে ড্রোন উড়তে দেখলে বুঝি, পুলিশ সব জায়গা নজরদারি করছে। এতে নিরাপত্তা অনেক বেড়েছে।’

জোড়গাছ এলাকার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, ‘আগে হাটে আসার সময় ভয় লাগত, কিন্তু এখন নৌকায় পুলিশের টহল, নদীতে উপস্থিতি ও ড্রোন নজরদারি দেখে আমরা অনেকটাই নিশ্চিন্ত। পুলিশের এমন নজরদারির খবর ছড়িয়ে পড়ায় অপরাধীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েছে। তারা অপরাধ ঘটানোর সাহস পাচ্ছে না। এতে আমরাও নিরাপদ।’

কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘চিলমারী নদীবন্দর ও আশপাশের নৌরুটে অপরাধ দমনে ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে সর্বক্ষণ মনিটর (পর্যবেক্ষণ) করা হচ্ছে। পুলিশের নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা নজরদারির ফলে দীর্ঘদিন ধরে নৌ-ডাকাতি নেই বললেই চলে। আমরা প্রযুক্তিনির্ভর পুলিশিংয়ের মাধ্যমে চিলমারীকে নিরাপদ রাখতে বদ্ধপরিকর।’


পবিপ্রবিতে জমকালো আয়োজনে দুইদিনব্যাপী ক্যারিয়ার ফেস্ট ২০২৫ অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পবিপ্রবি প্রতিনিধি

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) দুইদিনব্যাপী ‘ক্যারিয়ার ফেস্ট ২০২৫’ উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্র ও শনিবার ২৭ ও ২৮ জুনের এই আয়োজনে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার সচেতনতা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং বাস্তবমুখী অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্য সামনে রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি ও সেশন আয়োজন করা হয়।

২৭ জুন সকাল থেকে দিনব্যাপী নানা কার্যক্রমে উৎসবে মুখর থাকে ক্যাম্পাস। সকালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর ইউএনডিপি’র বিশেষ সেশন এবং দেশের খ্যাতনামা ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ আসিফ ইকবালের দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

এরপর এক্সটেম্পোর বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে নিজেদের চিন্তা ও বক্তব্য উপস্থাপনের দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ পান।

দুপুরের পর শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মক ইন্টারভিউ সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বাস্তব ইন্টারভিউ পরিস্থিতির অনুশীলনের সুযোগ তৈরি হয়। এরপর শুরু হয় ব্যবসায়িক কেস প্রতিযোগিতা, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা বাস্তবভিত্তিক সমস্যা সমাধানে নিজেদের দক্ষতা তুলে ধরেন। দিনব্যাপী নানা আয়োজনে শেষ ভাগে ছিল আকর্ষণীয় ট্রেজার হান্ট এবং ক্যারিয়ার বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রাণবন্ত পরিবেশে সম্পন্ন হয় ক্যারিয়ার ফেস্টের প্রথম দিনের কার্যক্রম।

২৮ জুন ক্যারিয়ার ফেস্টের আয়োজনে দেশের বিভিন্ন খাতের অভিজ্ঞ পেশাজীবীরা অংশ নেন এবং শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গঠনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীরা তাদের আলোচনা থেকে কর্পোরেট দুনিয়া, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি খাতের চাকরির সুযোগ-চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভ করেন।

বিভিন্ন বিষয়ে সেশন নেন ও বক্তব্য প্রদান করেন খন্দকার তানভির আহসান, সাবেক এইচআর ও অ্যাডমিন, PLAMPAY; মাহমুদ হাসান প্রিন্স, সায়েন্টিস্ট, ইস্পাহানি গ্রুপ; ফজলে রাব্বি, সহকারী প্রোগ্রামার, পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (PDBF), স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; রাহুল দত্ত, ট্রেনিং অফিসার (WIS), ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (BAT) বাংলাদেশ; মীর মোহাম্মদ আলী, সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান, ফিশারিজ ও মেরিন সায়েন্স অনুষদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়; জাভেদ মিয়াঁদাদ, ম্যানেজার, Anticipatory Action, সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ; আদনান নাসের ধ্রুব, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট প্রফেশনাল ও উদ্যোক্তা; মো. আসিকুর রহমান আসিক, রিজিওনাল অপারেশন হেড, বিডি অ্যাপস (BDAPPS), বরিশাল বিভাগ; মাহবুবুর নাহিদ, সাহিত্যিক, কলামিস্ট, ১৭টি গ্রন্থের লেখক, নেক্সট বিডি’র নির্বাহী সম্পাদক এবং স্পোর্টস ২৪৭ মিডিয়া হাউসের সম্পাদক; এবং রুহান জুনাইদুল ইসলাম, প্রতিনিধি, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড।

দুইদিনব্যাপী ক্যারিয়ার ফেস্টে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা বাস্তব অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হন এবং নিজেদের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা নিয়ে আরও সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এ ধরনের ক্যারিয়ার উন্নয়নমূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে আরও বেশি শিক্ষার্থী ও পেশাজীবী এতে সম্পৃক্ত হতে পারেন।


একদিনে আরও ৩৮৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৮৩ জন রোগী। এসব রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩৬ জন আক্রান্ত বরিশাল বিভাগে। একইসঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৫ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৮, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২৮, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন এবং রাজশাহী বিভাগে ৩৩ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে গত এক দিনে সারাদেশে ৩৪৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮ হাজার ৭২৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৯ হাজার ৮৬৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের।


চাঁদপুরে শিয়ালের কামড়ে আহত ১০

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে শিয়ালের কামড়ে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

শনিবার (২৮ জুন) ভোরে হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের ফুলছোঁয়া গ্রামের বেপারীসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, গ্রামের একটি নির্জন জঙ্গলে মাটির গর্তে ১৫ থেকে ২০টি শিয়ালের একটি বাসা রয়েছে। সেখান থেকে শনিবার ভোরের দিকে দুটি শিয়াল বেরিয়ে এসে পাশের কয়েকটি বাড়িতে ঢুকে কামড়াতে শুরু করে। এতে ১০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে দুজনকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

গ্রামবাসীর ধারণা, শিয়াল দুটি ক্ষুধার্ত ছিল বলেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য কালাম বেপারী ও কবির হোসেন মোল্লা ইউএনবিকে জানান, ভোরে লোকজন ঘুম থেকে উঠে বাইরে আসার পর, রাস্তায় থাকা দুটি শিয়াল একত্র হয়ে যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই হঠাৎ করে কামড়ে দিয়েছে। অনেকে হাতে পাওয়া লাঠিসোটা দিয়ে প্রতিহত করে রক্ষা পান।

কালাম বেপারীর দেওয়া তথ্যমতে আহতদের মধ্যে আছেন— বেপারী বাড়ির মৃত গফুর বেপারীর ছেলে বারেক বেপারী (৬০), মহসিনের ছেলে রনি (২০), কালাম বেপারীর ছেলে জসিম বেপারী (৩০), মৃত শাহালমের ছেলে রেহান (২০), রাজ্জাক বেপারীর ছেলে হাছান বেপারী (১৫), পণ্ডিত বাড়ির মিজির ছেলে রুবেল (৪০), মৃত লতিফ বেপারীর ছেলে আবু তাহের (৪০), আবু মিয়ার ছেলে লতিফ, রুহুল আমিনের ছেলে রুবেলসহ আরও কয়েকজন।

আরেক ইউপি সদস্য আবু তাহের বলেন, ‘শিয়ালের কামড়ে বারেক বেপারীর অবস্থা একটু বেশি খারাপ। বন্যপ্রাণী আইন রক্ষা করে কীভাবে শিয়াল প্রতিহত করা যায়, তা নিয়ে আমরা গ্রামবাসী মিলে চিন্তা করছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা বন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘শিয়াল ধরে বনে ছেড়ে দেওয়া আমাদের কাজ। কিন্তু জনবল না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে স্থানীয়রা শিয়াল ধরে দিলে আমরা বনে অবমুক্ত করে দেব।’

হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন জানান, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।


কুলাউড়ায় মাদক সেবনের দায়ে তিনজনের কারাদণ্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুলাউড়া প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে তিনজন মাদকসেবীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ জহুরুল হোসেন। অভিযানে তাকে সহযোগিতা করে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল।

রবিবার (২৯ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান। তিনি জানান, মাদক সেবনের অপরাধে লস্করপুর এলাকার মাছাদ আহম্মদ (৩০), মাগুরা এলাকার জুলহাস (৩৫) ও জয়পাশা এলাকার শিমুল হোসেন আক্তারকে (৩৫) বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। পরে মাছাদ ও জুলহাসকে তিনদিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড এবং শিমুলকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।


কুমিল্লায় বসতঘরের দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণ, প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৫

ফজর আলী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

কুমিল্লার মুরাদনগরে বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রবিবার (২৯ জুন) ভোর ৫টার দিকে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফজর আলী (৩৮) কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের পুর্বপাড়ার বাসিন্দা।

ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন— বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের অনিক, সুমন, রমজান ও বাবু।

কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান তাদের আজ সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দিবাগত রাতে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামে এই ধর্ষণকাণ্ড ঘটে।

ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা আলোচনার জন্ম দেয়। নেটিজেনরা ব্যাপক সমালোচনা করে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

এরপর ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের দায়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ। পরে আজ ভোরে সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার হন ফজর আলী।

পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ফজর আলীকে প্রধান আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা করেন করেন। তবে ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে যারা সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে, তাদের মধ্য থেকে আরও চারজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে, এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার জানান, বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে রামচন্দ্রপুর পাঁচকিত্তা গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয়দের হাতে আটক হন ফজর আলী। পরে তাকে মারধরও করে বিক্ষুব্ধরা। তবে আহত অবস্থায় তিনি পালিয়ে যান।

ঘটনার পরপরই উপস্থিত কয়েকজন ধর্ষণের শিকার নারীর ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। খবর পেয়ে মুরাদনগর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়। সেই সময়ই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর মূল আসামিকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ভুক্তভোগী নারী ১৫ দিন আগে বাপের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন বলে জানান পুলিশ সুপার।


আটোয়ারীতে লাম্পি স্কিন সংক্রমণে নিশ্চুপ প্রশাসন

বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ১ থেকে ৬ মাস বয়সী গরু
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ছোঁয়াছুঁয়ি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় শতাধিক গরুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে এর মধ্যে বাছুরের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। কোরবানির ঈদের আগেই এর সংক্রমণ প্রকোপ ছিল বলে জানা যায়। তবে এলএসডির সংক্রমণ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই আটোয়ারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের।

রোগটি সাধারণত বর্ষা মৌসুমের শেষে, শরৎ বা বসন্তের শুরুতে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তবে এবার অনেকটা আগেভাগেই এর সংক্রমণের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে খামারিসহ সাধারণ মানুষের।

উপজেলার তোড়িয়া, ধামোর আলোয়াখোয়া ও বলরামপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যাচ্ছে যে, গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজের সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি এ রোগে গরুর মৃত্যুও হচ্ছে। যার সংখ্যা ইতোমধ্যে প্রায় শতাধিক ছাড়িয়েছে বলে জানা যায়।

জানা যায়, গত দুই দিনে উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে মৃত্যু হয়েছে ১৫টিরও বেশি বাছুরের। পার্শ্ববর্তী আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়ও মারা গেছে ১০ থেকে ১২টি বাছুরের। এভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে এবং মৃত্যুও হচ্ছে অস্বাভাবিকভাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, তার বাছুরের প্রথম দিকে জ্বর ছিল প্রায় ১০৪°-১০৬° তাপমাত্রা। অতিরিক্ত জ্বরের জন্য মুখ ও নাক দিয়ে লালা পড়ে, পা ফুলে যায় এবং দুই পায়ের মাঝখানে পানি জমে। ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পিণ্ড আকৃতি ধারণ করে। পরে পিণ্ডাকৃতির স্থানে লোম উঠে গিয়ে ক্ষত হওয়া শুরু করে বিভিন্ন স্থানে তা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বাছুরটি মারা যায়।

তবে, এই রোগকে পুঁজি করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন পল্লী পশু চিকিৎসকরা। তাদের এই অসাধু চিন্তার দিকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কোনো নজরদারি নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন বলেন, কারিয়াল (পল্লী পশু চিকিৎসক) আসার সঙ্গে সঙ্গে ৩-৪ টা ইনজেকশন দিয়ে দেন। তাতেই ভিজিট দিতে হয় ৪০০-৫০০ টাকা। কী ওষুধ দেন না দেন আর কিছু ওষুধের নাম লিখে দিয়ে চলে যান। তারা বর্তমানে টাকার পেছনে ছুটছেন। আমাদের এলাকার অনেক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে- তবে এর মধ্যে বাছুরের সংখ্যা ৯০ ভাগ।

এ বিষয়ে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মোসা. সোয়াইবা আখতার জানান, লাম্পি স্কিন ডিজিজ ১ থেকে ৬ মাস বয়সি বাছুরের আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এটি ভাইরাসংঘটিত হওয়ায় এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। শুধু সচেতনতার মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে এরপরও যদি কোনো প্রাণী আক্রান্ত হয়ে থাকে তবে প্রাথমিকভাবে অ্যান্টিপাইরেটিক বা অ্যান্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। আর আক্রান্ত প্রাণীর নডিউল বা গুটি ফেটে গেলে সিস্টেমিক অ্যান্টিবায়েটিক প্রয়োগ করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ওই সব একাডেমিক লাইসেন্সহীন, অদক্ষ, পল্লী পশু চিকিৎসক ও ড্রাগ লাইসেন্সহীন ফার্মেসির বিরুদ্ধে আটোয়ারী উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে।


banner close