শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

কক্সবাজার ও হাতিয়ায় ২০ ট্রলার ডুবি, ৫ মরদেহ উদ্ধার

* শতাধিক জেলে নিখোঁজ * কক্সবাজারে বেড়েছে প্লাবিত এলাকার সংখ্যা * ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর লঞ্চ চলাচল বন্ধ * নদীভাঙনে চকরিয়ায় শতাধিক পরিবার ঘরছাড়া * ৫ বিভাগে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা
বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় প্রবল বর্ষণ ও ঝড়ে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজার জেলার নিম্নাঞ্চল। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০২

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপ থেকে গভীর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি গতকাল যশোর এলাকায় অবস্থানের পর আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ সময় মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা প্রবল অবস্থায় রয়েছে। ফলে সাগরবর্তী কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-নোয়াখালীসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রবণ বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারে গত শুক্রবার সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কারণে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কক্সবাজার শহর এলাকায় দেখা দেওয়া জলাবদ্ধতা গতকাল খানিকটা কমে গেলেও জেলা সদরসহ ৬ উপজেলার অন্তত ২ শতাধিক গ্রাম পানিবন্দি রয়েছে। এদিকে প্রবল ঝড়ের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় কক্সবাজার ও নোয়াখালীর হাতিয়ায় অন্তত ২০টি মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এসব ট্রলারে থাকা শতাধিক জেলে এখনো নিখোঁজ। গতকাল তাদের মধ্যে ৫ জনের মরদেহ সৈকতে ভেসে আসার পর সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর জেলায় লঞ্চ চলাচল। আজ ঢাকাসহ ৫ বিভাগের কোথাও কোথাও অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারে গত শুক্রবারের তুলনায় গতকাল শনিবার বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। এ পরিস্থিতিতে কক্সবাজার শহরে জলাবদ্ধ এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও বেড়েছে প্লাবিত এলাকার সংখ্যা। জানা গেছে, জেলা সদরসহ ৬ উপজেলার অন্তত ২ শতাধিক গ্রাম পানিবন্দি রয়েছেন।

এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৮টি ফিশিং ট্রলারসহ অন্তত ৭০ জেলে নিখোঁজের তথ্য জানিয়েছেন মালিকরা। এর মধ্যে ৫ জনের মরদেহ সাগরের উপকূলে ভেসে এসেছে বলে জানা যায়।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২১০ মিলিমিটার। বৃষ্টি কিছুটা কমলেও ভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা কক্সবাজারের ইতিহাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টি। এর আগে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ৪৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছিল।

এদিকে টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণে জেলার চকরিয়ায় বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদীভাঙনের কবলে পড়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি। পৌর শহরের বাঁশঘাট এলাকায় মাতামুহুরি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১৫টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

অন্যদিকে, বৃষ্টি কমে যাওয়ায় কক্সবাজার শহরের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয়েছে। পর্যটন জোন কলাতলীর হোটেল মোটেল এলাকার সকল সড়ক, সৈকত-সংলগ্ন এলাকা, মাকের্ট এলাকা থেকে নেমে গেছে পানি। শহরের প্রধান সড়কের বাজারঘাটা, বড়বাজার, মাছবাজার, এন্ডারসন সড়ক, টেকপাড়া, পেশকারপাড়া, বার্মিজ মার্কেট এলাকা, বৌদ্ধমন্দির সড়ক, গোলদিঘিরপাড়, তারাবনিয়াছড়া, রুমালিয়ারছড়া, বাাঁচা মিয়ার ঘোনা, পাহাড়তলী এলাকা থেকেও পানি নেমে গেছে বলে জানা যায়।

তবে শহরের সমিতিপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, ফদনারডেইল, নুনিয়াছড়াসহ ৮টি নিম্নাঞ্চল এখনও পানিবন্দি রয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বৃষ্টি কমে যাওয়ায় হোটেল মোটেল জোনে এখন পানি নেমে গেছে। তবে বৃষ্টি হলেই এখন আতংক তৈরি হচ্ছে। মুহুর্তের মধ্যেই জলাবদ্ধতা হচ্ছে। নালা উন্নত করা না হলে এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।

উখিয়া উপজেলা ৪০টির বেশি গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি থাকার তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। উখিয়ার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হলদিয়াপালং ও জালিয়া পালং ইউনিয়নে।

এই দুই ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ গত দুই দিন ধরে পানির নিচে বসবাস করছে। ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় রান্না হচ্ছে না অধিকাংশ ঘরে।

জালিয়া পালং ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া, ঘাটঘর পাড়া পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়া ডেইপাড়া মনখালি, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া, মনির মার্কেট, রুমখা পালং, বড়বিল, পাতাবাড়ি, নলবুনিয়া, খেওয়া ছড়ি, বৌ বাজার, কুলাল পাড়া, পাগলির বিল, রাজা পালং ইউনিয়নের কুতুপালং, মাছকারিয়া, লম্বাশিয়া তুতুরবিল, পিনজির কুল, রত্নাপালং ইউনিয়নের সাদৃ কাটা, পশ্চিম রত্না, খোন্দকার পাড়া, গয়াল মারা ও পালংখালী ইউনিয়নে থাইংখালী, রহমতের বিল, বালুখালী তৈল খোলা, আঞ্জুমান পাড়া ফারিবিল সহ অন্তত ৪০টি গ্রামে পানি তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

উখিয়া উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী জানান, বন্যায় জালিয়া পালং ও হলদিয়াপালং ইউনিয়ন এর মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভির হোসেন জানান, বন্যায় কবলিত এলাকার মানুষের জন্য জেলা থেকে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমেও সহযোগিতার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে বৃষ্টিতে চকরিয়া-পেকুয়ার বিভিন্ন নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে বলে জানা যায়। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্খা রয়েছে।

চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, বিএমচর, কোনাখালী ও বদরখালী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অন্তত ২০ হাজার লোক পানি বন্দি রয়েছে। এছাড়া আমন ধানের ক্ষেত ও শীতকালিন বিভিন্ন সবজির চারা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়।

পেকুয়ার শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, তিনদিনের টানা বৃষ্টির কারনে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কিছু বসতঘর ও দোকান-পাটে পানি ঢুকেছে।

এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৮টি ফিশিং ট্রলার নিখোঁজ থাকার তথ্য জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ থাকা এসব ট্রলার ডুবে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু জেলে সাঁতার কেটে উপকুলে ফিরেছে। উদ্ধার হয়েছে ৫ জনের মরদেহও। ফলে এসব ট্রলারের আরও অন্তত ৬৮ জেলে নিখোঁজ রয়েছে।

শনিবার সকালে কক্সবাজার সৈকতের নাজিরারটেক, পেঁচারদ্বীপ, ইনানী ও কলাতলী উপকুলে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা। এর মধ্যে দুই জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরা হলেন, বাঁশখালী উপজেলার শেখেরকিল এলাকার নুরুল আমিন (৪০), লোহাগাড়া উপজেলার চরমবা এলাকার মোহাম্মদ জালাল (৩৭) ও আব্দুল করিম (৩৫) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। অপর দুই জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। মরদেহ ৫টি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রবল বর্ষণে নদীভাঙন, চকরিয়ায় শতাধিক পরিবার ঘরছাড়া

দৈনিক বাংলার চকরিয়া- পেকুয়া প্রতিনিধি জানায়, টানা তিনদিনের বারিবর্ষণে কক্সবাজার চকরিয়ায় বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে শতাধিক ঘরবাড়ি। পৌর শহরের বাঁশঘাট এলাকায় মাতামুহুরি নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে ১৫ টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে আতঙ্কে ঘরছাড়া হয় শতাধিক পরিবার।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বদরখালী পওর শাখার উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. জামাল মুর্শিদ জানান, শনিবার বেলা বারোটায় মাতামুহুরি নদীর পানি ৫ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মাতামুহুরি নদীর বিপৎসীমা ধরা হয় ৫ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার।

জানা গেছে, তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, বিএমচর, কোনাখালী ও বদরখালী ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অন্তত ২০ হাজার লোক পানি বন্দি রয়েছে। এছাড়া আমন ধানের ক্ষেত ও শীতকালিন বিভিন্ন সবজির চারা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়।

হাতিয়ার মেঘনায় ১০ ট্রলারডুবি, ৮ মাঝিসহ ৫ ট্রলার নিখোঁজ

বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঝড়ের কবলে পড়ে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে দশটি মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ১৮ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ৫টি ট্রলারসহ ৮ মাঝি এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়ে পুলিশ।

গত শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে মেঘনা নদীর কয়েকটি এলাকায় এ ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে।

ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলোর মালিকরা হলেন বাবর মাঝি, জান মিয়া, দেলোয়ার মাঝি, হেলাল উদ্দিন, শহীদ মাঝি, মেহরাজ মাঝি ও ইউনুছ মাঝি।

হাতিয়ার ট্রলার মালিক সমিতির সদস্য লুৎফুল্লাহিল নিশান দাবি করেন, ঝোড়ো বাতাস ও প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে হাতিয়ার মোট ১৯টি ট্রলার ডুবে গেছে। অনেকে ট্রলারডুবির সময় পার্শ্ববর্তী ট্রলারগুলোর সহযোগিতায় কূলে উঠেছেন। এখনো অনেকে নিখোঁজ আছেন।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সোহেল বলেন, আমাদের নামার বাজার এলাকার চারটি ট্রলার ডুবে গেছে। কেউ কেউ পাড়ে উঠে আসতে পারলেও অনেকেই এখনও উঠতে পারেননি। কে এসেছেন বা কে আসেননি তার হিসাব নেওয়া কঠিন।

কোস্টগার্ড হাতিয়ার স্টেশন অফিসার সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন বলেন, যারা খবর দিতে পেরেছেন আমরা তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি স্থানীয় কিছু ট্রলার গিয়ে উদ্ধারকাজ করছে। এখনো অনেক ট্রলারের খবর পাওয়া যাচ্ছে না। সেসব ট্রলারগুলোর বিষয়ে আমরা খবর নিচ্ছি।

ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর লঞ্চ চলাচল বন্ধ

ভোলা প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুরসহ স্থানীয় সব নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌপথের ফেরি চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বিআইডব্লিউটিএ ভোলার সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি আরও জানান, সমুদ্র এলাকাভুক্ত হওয়ায় চরফ্যাশনের বেতুয়া টু ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচলও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে ভোলা-ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচল করবে।

এদিকে, শনিবার বিকালে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক সুপারভাইজার শরীফুল ইসলাম ও ফেরিঘাটের সহ-ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জাহেদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌপথের ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। এই নৌপথে চলাচলের জন্য ফেরি কুসুমকলি, কাবেরী, কলমিলতা, কিষানি ও কনকচাঁপা রয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলেই সেগুলো চলাচল শুরু হবে।

ঢাকাসহ ৫ বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা

এদিকে, আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।


ঝুঁকিতে নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম: অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ সেবাবঞ্চিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর পশ্চিম পাড়ে দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবনে চলছে ৪নং নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম। বহু পুরোনো আধাপাকা এই টিনশেড ভবনে ইউপির কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে ধীরে ধীরে স্থবির হয়ে পড়েছে সার্বিক কর্মকাণ্ড। ফলে ইউনিয়নের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ নিয়মিত নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, আর ত্রাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন জনপ্রতিনিধিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেটে যাওয়া ইটের দেয়াল, মরিচা ধরা টিনের চালা ও পলেস্তরা খসে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ এই ঘরেই চলছে ইউনিয়ন পরিষদের নানা কার্যক্রম। বৃষ্টির সময় ছাদ ও চালার অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে পানি পড়ে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ভিজে যাওয়া এখন নিত্যদিনের ঘটনা। ভবনের ভেতরে ১০-১৫ জনের বেশি বসার জায়গা না থাকায় অনেককে রোদ-বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে সেবা নিতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সামিউল ইসলাম বলেন, “জোরে বাতাস উঠলেই আতঙ্কে থাকি। কখন টিন উড়ে যায় আর দেয়াল ভেঙে পড়ে, বলা মুশকিল। এমন ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় কিভাবে এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয় বুঝি না।”

এমন দুরাবস্থার মধ্যেই চলছে গ্রাম আদালত, চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের বৈঠক, ইউপি সচিবের দাপ্তরিক কাজ এবং ডিজিটাল সেন্টারের সেবা। একটি কাজ করতে গিয়ে অন্যটি বন্ধ রাখতে হয়, ফলে গুরুতরভাবে ব্যাহত হচ্ছে সেবা প্রদান। ভবনের অভাবে সরকারি ত্রাণ, কম্পিউটার ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি যত্রতত্র রাখা হচ্ছে—যা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি চুরির ঝুঁকিতেও রয়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শরীফ আল ফায়েদ জানান, “বৃষ্টি হলেই ভেতরে পানি ঢুকে কোনো কাগজপত্রই নিরাপদ থাকে না। একটি ইউনিয়নের সব কাজ এক ছাদের নিচে করতে গিয়ে আমরা বিপাকে পড়ছি।”

ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান বলেন, “ত্রাণ বিতরণ থেকে শুরু করে দৈনন্দিন দাপ্তরিক কাজ—সবকিছুই এই জরাজীর্ণ ভবনে অত্যন্ত কষ্টে করতে হয়। বৈঠক বা গ্রাম আদালত পরিচালনার মতো পরিবেশও নেই।”

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি জানান, নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ভবনের অবস্থা সম্পর্কে তারা অবগত। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সারাদেশে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ শুরু হলে নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদও নতুন কমপ্লেক্স পাবে।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের আগেই নির্মিত এই ভবনটিতে ১৯৮৩ সাল থেকে নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর আগে রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়া ইউনিয়ন ও নয়াবিল ইউনিয়ন যৌথ পরিষদ হিসেবেও এখানে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো।


রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী বাঁচাতে ছয় দফা অঙ্গীকার বাস্তবায়নে র‍্যালি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নদী বাঁচাও, দেশ বাঁচাও, শীতলক্ষ্যা বাঁচাও, আমাদের বাঁচাও স্লোগানে সকাল সকাল মুখরিত রূপগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীর।

শীতলক্ষ্যা নদী বাঁচাতে ছয় দফা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নারায়ণগঞ্জ- ১ (রূপগঞ্জ) আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে ‘সেভ দ্যা শীতলক্ষ্যা’ নামে র্যালী কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার মুড়াপাড়া কলেজ থেকে রান উইথ আনোয়ার হোসেন মোল্লা টু সেভ দ্যা শীতলক্ষ্যা ব্যানারে র্যালীটি শুরু হয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর দিয়ে ৩ কিলোমিটার সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাটাব বাজারে গিয়ে শেষ হয়।

নারায়ণগঞ্জ -১ (রূপগঞ্জ) আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত র্যালীতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান হাফিজ।

র্যালী শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফিজুর রহমান বলেন, এই শীতলক্ষা হচ্ছে রূপগঞ্জের প্রাণ। শীতলক্ষ্যা কে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে শিল্প কারখানার প্রসার ঘটেছিল। এই শীতলক্ষ্যার স্বচ্ছ পানি ছিল নাব্যতা ছিল। এই শীতলক্ষ্যা ধ্বংস হয়েছে অসৎ দুর্নীতিবাজ চাঁদাবাজ নেতৃত্ব আর সুবিধাবাদী ব্যবসায়ীদের কারণে। আসুন আগামীতে শুধু শীতলক্ষ্যা নয় গোটা বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য আমরা শপথ গ্রহণ করি। সৎ নেতৃত্বের সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলি। সমাবেশে র‍্যালির মূল প্রতিপাদ্য তুলে ধরে বক্তব্য, রাখেন আনোয়ার হোসেন মোল্লা।

তার দেওয়া অঙ্গীকার গুলো হচ্ছে: ১। নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি, ২। নদীর দুই পাড়ে সবুজ বেষ্টনী, ৩। নদীর পানি পরিষ্কার ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ, ৪। আধুনিক ওয়াকওয়ে, লাইটিং, বিনোদন ক্ষেত্র, ৫। পরিবেশবান্ধব নদী পরিবহন ব্যবস্থা ও ৬। নদীভিত্তিক নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী খাঁন, জেলা আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইসরাফিল, জেলা শিবির সভাপতি আকরাম হোসেন, রূপগঞ্জ উত্তর ও পশ্চিম আমীর আবদুল মজিদ, ও মাওলানা ফারুক আহমাদ, দক্ষিণ, উত্তর ও পশ্চিম সেক্রেটারি, আনিসুর রহমান, খাইরুল ইসলাম, মোহাম্মদ হানিফ ভূঁঞা প্রমুখ।


মাগুরার সুপ্রভাত বাংলাদেশের যুগ পূর্তিতে বর্ণাঢ্য আয়োজন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাগুরা প্রতিনিধি

‘নিয়মিত ব্যায়াম, পরিমিত আহার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে মাগুরার শরীরচর্চাবিষয়ক সংগঠন সুপ্রভাত বাংলাদেশ-এর একযুগ পূর্তি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় ব্যায়ামপ্রেমী এই সংগঠনের শতাধিক সদস্য অংশ নেন। পরে অনুষ্ঠিত হয় স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা। সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। বক্তারা সংগঠনের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, গত ১২ বছরের অর্জন ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম, পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন এবং স্বাস্থ্যসচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও তুলে ধরা হয়। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সুস্থ শরীর ও মানসিক সতেজতা ধরে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম, হাঁটাচলা ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের কোনো বিকল্প নেই। সমাজব্যাপী স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি করতে এ ধরনের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।

আলোচনা সভা শেষে কেক কাটার মধ্য দিয়ে সুপ্রভাত বাংলাদেশ, মাগুরার একযুগ পূর্তি অনুষ্ঠান শেষ হয়।


শ্রীমঙ্গলের লাল শাপলা মুগ্ধ করছে প্রকৃতিপ্রেমীদের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ হাত্তরজুড়ে ফুটে থাকা লাল শাপলার অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ছুটে আসছেন দেশের নানা প্রান্তের পর্যটকরা। ভোরের প্রথম আলোয় যখন হাজারো লাল শাপলা একসঙ্গে ফুটে ওঠে, তখন পুরো বিলজুড়ে সৃষ্টি হয় রঙিন ও মনোমুগ্ধকর এক আবহ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে শ্রীমঙ্গলের এই নব-পর্যটনকেন্দ্র ‘লাল শাপলা বিল’।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাল শাপলার মনোরম দৃশ্য ভাইরাল হওয়ায় দর্শনার্থীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শাপলা মূলত ভোরে ফোটে এবং সকালে সূর্যের আলোয় পুরোপুরি বিকশিত হয়—যা দেখতে সত্যিই মনোমুগ্ধকর। দুপুরে কিছুটা নিস্তেজ মনে হলেও বিকেলে আবারও সৌন্দর্য ছড়িয়ে দেয় চারদিকে।

ঘুরতে আসা কলেজছাত্রী দিবান্বিতা দাশগুপ্তা বলেন, ‘এত লাল শাপলা আমি আগে কখনও দেখিনি। বান্ধবীদের সঙ্গে এসেছি। হাজার হাজার শাপলা যেন পুরো প্রকৃতিকে নতুন সাজে সাজিয়েছে দেখতে সত্যিই দারুণ লাগছে।

দর্শনার্থী ফাহিম আহমদ বলেন, ‘আগে এখানে তেমন কেউ আসত না। এখন মানুষ দূরদূরান্ত থেকে শুধু লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখতে আসছে। বিনোদনের জন্য সুন্দর একটি জায়গা তৈরি হয়েছে। এখানে এসে আমরা বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও দেখেছি।

আরেক দর্শনার্থী আরোফিন হোসেন জানান, ‘বউকে নিয়ে এসেছি লাল শাপলা দেখতে। অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল আজ সেই ইচ্ছে পূরণ হলো। ভোরের আলোয় শাপলার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সত্যিই মনকে প্রফুল্ল করে। পাখির কিচিরমিচির ডাকও অত্যন্ত ভালো লেগেছে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মির্জাপুরের লাল শাপলা এখন দেশ-বিদেশের মানুষের আকর্ষণ। প্রতিদিন এখানে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। শ্রীমঙ্গলের মতো মির্জাপুরও ধীরে ধীরে পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।


কমলগঞ্জে অল্পদিনের বাণিজ্যিক সম্ভাবনায় বেড়েছে বিনিয়োগ

গরুর খামারে সফল তরুণ উদ্যোক্তা মুঈদ আশিক চিশতী
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

তরুণ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগমুখি লাভজনক খাত হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কৃষিকাজ। অল্পদিনেই গড়ছেন সাফল্যের নজির। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার এক উদ্যমী উদ্যোক্তা মুঈদ আশিক চিশতী। পেশায় ব্যবসায়ী হলেও দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গরুর খামার করে আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। তার কাজে উৎসাহী হয়ে আত্মকর্মী হয়ে উঠছে আশপাশের অনেক তরুণ যুবক। তিনি এখন সফল খামারি হিসেবে দেশবিদেশে পরিচিত। মুঈদ আশিক চিশতী উপজেলার কমলগঞ্জ পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) এর একমাত্র ছেলে।

আজ সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন মুঈদ আশিক চিশতী, একজন উদ্যমী ও পরিশ্রমী মানুষ। নিজ এলাকার কৃষি ও পশুপালন খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে গড়ে তুলেছেন একটি খামার। তার খামারটি এখন শুধু তার নিজ পরিবারকেই নয়, পুরো এলাকার মানুষের জীবিকা ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অল্পদিনের বাণিজ্যিক সম্ভাবনায় বেড়েছে বিনিয়োগ। বেড়েছে খামারের পরিধি।

নিজ গ্রামে ২০০৭ সালে চিশতি এই সাফল্যের শুরু হয় ছোট পরিসরে। নিজের বাড়ির পাশেই গরু ও মুরগি পালন শুরু করেন। প্রথম দিকে নানা সমস্যার মুখোমুখি হলেও তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও ধৈর্য তাকে এগিয়ে নিতে থাকে। খামার পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, সঠিক পরিকল্পনা এবং স্থানীয় কৃষি ও পশুপালন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে তিনি ধীরে ধীরে খামারকে বড় পরিসরে সম্প্রসারণ করেন। বর্তমানে তিনি মহিষ ও দুগ্ধ খামার গড়ে তুলেছেন। সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে খামার ও ৫০ বিঘা জমিতে গবাদিপশুর খাদ্য সাইলেজ উৎপাদন করছেন এবং ৪০ বিঘা জমিতে ৮টি পুকুরে মৎস চাষ করছেন।

চিশতির খামারে দেশি গরুসহ বিভিন্ন জাতের গরু আছে যেমন- আরসিসি, মিরকাদিম, ফিজিয়ান ইত্যাদি। এখন প্রায় ১০০ টিরও বেশি গরু রয়েছে। এবং দেশি মহিষসহ বিদেশি জাতের যেমন: মুররা, এলবিনো, নিলিরাভি মহিষ রয়েছে। এখন ২৪টি মহিষ রয়েছে। এছাড়াও খামারের আশেপাশের জমিতে ফসল উৎপাদন করে তিনি একধরনের ‘মিশ্র কৃষি’ চালু করেছেন, যা তার খামারের আয়কে আরও বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে। তার খামার থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার খামারিরা গবাদিপশুর খাদ্য সাইলেজ ক্রয় করে থাকেন।

স্থানীয়রা ছোট ছোট খামারিরা জানান, ‘কমলগঞ্জ উপজেলায় একজন সফল উদ্যোক্তা ও খামারি হিসেবে পরিচিত কমলগঞ্জের চিশতী। তিনি তার দৃঢ় মনোভাব, উদ্ভাবনী চিন্তা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে শখের খামারকে একটি লাভজনক উদ্যোগে পরিণত করেছেন। তার সফলতার গল্প শুধু কৃষি খাতের জন্যই নয়, বরং সারাদেশের উদ্যোক্তাদের জন্যও এক মহান অনুপ্রেরণা।’

উদ্যোক্তা মুঈদ আশিক চিশতী বলেন, ‘প্রথমে অনেকে আমার পরিকল্পনাকে অবিশ্বাস করেছিল, তবে আমি বিশ্বাস করেছি আমার স্বপ্নের ওপর। আজ আমার খামার শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, সামাজিকভাবেও একটি মডেল হিসেবে দাঁড়িয়েছে। চিশতীর এই খামার শুধু তার নিজের আয় বৃদ্ধি করেনি, বরং এলাকার অনেক বেকার যুবককে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। খামারে কাজ করে তারাও স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তার খামারে ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক দৈনিক মুজুরি ও মাসিক বেতন হিসেবে কাজ করছেন।

চিশতী জানান, খামার চালাতে গিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিশেষ করে পশুপালনের জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন ও খাদ্য সরবরাহে সমস্যা ছিল। সরকারিভাবে কোন ধরনের সহযোগীতা পান না বললেই চলে। তবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও তিনি আজ সফল। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে তার খামারকে সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা করছেন এবং স্থানীয়দের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করারও ইচ্ছা রয়েছে।

তিনি ইতোমধ্যে ‘কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে atiah deponkor University of science & technology’ দিয়ে ‘কৃষি উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০২২’ সম্মাননা পেয়েছেন। প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ এ মৌলভীবাজার জেলাতে মহিষ উৎপাদনে প্রথম হয়েছেন।

এদিকে বুধবার কমলগঞ্জে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত গরু ও মহিষ মোটাতাজাকরণ ২য়, ছাগল পালনে ৩য় ও দুগ্ধ ক্যাটাগরিতে ৩য় পুরস্কার ও সনদপত্র গ্রহণ করেন।

কমলগঞ্জ প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রমা পদ দে, বলেন, ‘কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্য থাকলে জীবনে সফলতা আসে, মুঈদ আশিক চিশতীই তার অনন্য উদাহরণ।’

তিনি বলেন, মুঈদ আশিক চিশতী কমলগঞ্জের একজন সত্যিকার উদাহরণ, যিনি প্রতিকূলতার মধ্যেও সাফল্যের মুখ দেখেছেন। তার খামার আজ অনেকের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা কমলগঞ্জের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।


আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপর্যস্ত কড়াইলবাসীর জন্য জরুরি মানবিক সেবাকেন্দ্র চালু করল আনসার–ভিডিপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে ২৫ নভেম্বরের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মুহূর্তের মধ্যে শত শত পরিবার ঘরবাড়ি ও সম্পদ হারিয়ে মারাত্মক মানবিক সংকটে পড়ে। পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক গুরুত্ব অনুধাবন করে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে আজ ২৮ নভেম্বর বস্তির অভ্যন্তরে একটি মানবিক সেবাকেন্দ্র চালু করেছে। মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদের নির্দেশনায় আজ দুপুর ২ টায়, এ সেবাকেন্দ্রটির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।

মহাপরিচালক বলেন, “এই সেবাকেন্দ্রের লক্ষ্য হলো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে প্রাথমিক মানবিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে জরুরি খাদ্য, পানি ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে তাদের জীবনের নিরাপত্তা সহায়তা ও কিছুটা স্বস্তি নিশ্চিত করা।” উদ্যোগটি সাহায্যকারী বাহিনীর পক্ষ হতে জরুরি মানবিক সহায়তা ব্যবস্থায় একটি কার্যকর সংযোজন হিসেবে বিবেচিত।

২৫ নভেম্বর বিকেল ৫টার দিকে অগ্নিকাণ্ড দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ঘনবসতিপূর্ণ বস্তির শতাধিক ঘর অল্প সময়েই পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে এবং অসংখ্য পরিবার সম্পূর্ণভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়ে।

মানবিক সেবাকেন্দ্রটি প্রতিদিন দুই বেলা প্রায় দুই হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করবে, যা আজ থেকে শুরু করে পাঁচ দিন অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি নিরাপদ পানির চাহিদা পূরণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেবাকেন্দ্র এলাকায় নলকূপ স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যাতে বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা যায়। এই ব্যবস্থা পানীয়জল সংকট কমানোর পাশাপাশি পানিবাহীত রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে।

সেবাকেন্দ্র চালুর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ দ্রুত খাদ্য সহায়তা পেয়ে নতুন করে আশার আলো দেখছে। খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী পেয়ে অনেক পরিবার স্বস্তি প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে শিশু, নারী ও প্রবীণদের কাছে দ্রুত মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক বার্তা হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছে। ঢাকা মহানগর আনসারের পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান গনী এই মহতী কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।

“মানুষ মানুষের জন্য”—এই মানবিক অঙ্গীকার নিয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ভবিষ্যতেও সকল সংকটময় মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থেকে সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।


কড়াইল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি খাদ্য সহায়তায় ডব্লিউএফপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।

ডব্লিউএফপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ শুক্রবার জানানো হয়, গত ২৫ নভেম্বরের এই অগ্নিকাণ্ডের পরে পার্শ্ববর্তী বিটিসিএল গার্লস হাই স্কুলে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর মাঝে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর (ডিডিএম), ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)-এর সহযোগিতায় ১ হাজার ৯শ’ পরিবারকে হাই এনার্জি বিস্কুট (এইচইবি) বিতরণ করেছে ডব্লিউএফপি।

প্রতিটি পরিবার একটি পাঁচ কেজি ওজনের এইচইবি কার্টন পেয়েছে। রান্না বা পানির প্রয়োজন হয় না বলে জরুরি পরিস্থিতিতে এই বিস্কুট অত্যন্ত কার্যকর।

প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ এইচইবি আগামি কয়েক দিনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে।

ডব্লিউএফপি বাংলাদেশে ১৯৭৪ সাল থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জরুরি সহায়তা, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি এবং দুর্যোগ-পরবর্তী পুনরুদ্ধারসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে লাখো মানুষকে সহায়তা দিয়ে আসছে জাতিসংঘের এ সংস্থাটি।

শুধু ২০২৪ সালেই ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও একাধিক বন্যার পর ২৮ লাখ মানুষের কাছে খাদ্য, নগদ অর্থ ও পুনরুদ্ধার সহায়তা পৌঁছে দেয় ডব্লিউএফপি।

ডব্লিউএফপির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর সিমোন পার্চমেন্ট বলেন, ‘আজকের বিতরণের পরও আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও মানবিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে ডব্লিউএফপি অতিরিক্ত সহায়তা দিতেও প্রস্তুত। সূত্র: বাসস


সাগরে ধরা পড়ল ১৬৬ কেজির ভোল মাছ

১ লাখ ৮০ হাজারে বিক্রি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ১৬৬ কেজি ওজনের বিরল আকৃতির একটি ভোল মাছ ধরা পড়েছে; যেটি এক লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার শাপলাপুর বাহারছড়ার বাসিন্দা সাইফুল ইসলামের জালে মাছটি ধরা পড়ে বলে জানান টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন।

নৌকার মালিক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনের মত সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে হঠাৎ জালে বিশাল ভোল মাছটি ধরা পড়ে। নৌকা থেকে ঘাটে মাছটি নামলে উৎসুক জনতা দেখতে ভিড় করেন।

‘এত বড় মাছ তুলতে আমাদের যথেষ্ট কষ্ট হয়েছে। জীবনে কখনো এত বড় মাছ দেখিনি, তুলতেই হিমশিম খেতে হয়েছে’, বলেন তিনি।

লামার বাজার আড়তে মাছটি তুলে দাম দুই লাখ টাকা চাওয়া হলেও পরে তা বাহারছড়ার ব্যবসায়ী করিম সওদাগর এক লাখ ৮০ হাজার টাকায় কিনে নেন বলে জানান সাইফুল ইসলাম।

মাছটি ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ী করিম সওদাগর।

স্থানীয় জেলে নুর মোহাম্মদ বলেন, এত বড় ভোল মাছ বহু বছর ধরে তাদের জালে ধরা পড়ে না। বিরল এ মাছটি ধরা পড়ায় এলাকায় উৎসাহ ও কৌতুহল ছড়িয়ে পড়েছে।

মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, শীত মৌসুমে পাঁচ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত ভোল মাছ জেলেদের জালে আটকা পড়ে। এই মাছ সাধারণত ৪০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, সাগরে মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে পালন হওয়ায় মাছ বড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এতে জেলেরাও ভালো দাম পাচ্ছেন।


হাতিরঝিল প্রকল্প পেল আন্তর্জাতিক পুরস্কার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল ঢাকার হাতিরঝিল ও বেগুনবাড়ি খাল উন্নয়ন প্রকল্প। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটায় হংকংয়ের সিআইসি-জিরো কার্বন পার্কে আয়োজিত এশিয়ান টাউনস্কেপ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ লিমিটেডের নকশা করা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রকল্প ‘ইন্টিগ্রেটেড ডেভলপমেন্ট অব হাতিরঝিল এরিয়া ও বেগুনবাড়ি খাল’ পুরস্কৃত হয়েছে।

আনুষ্ঠানিকভাবে এশিয়ার হেবিটেট সোসাইটির চেয়ারম্যান প্যাট্রিক লাউ সিংয়ের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল ইসলাম ও স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ লিমিটেডের পরিচালক স্থপতি ইকবাল হাবিব এবং স্থপতি ইসতিয়াক জহির।

হাতিরঝিল প্রকল্পটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার নগর কাঠামো, জনসেবামূলক ব্যবহার, জলাধার পুনরুদ্ধার এবং জনবিনোদনমূলক অবকাঠামো উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের স্থাপত্য ও নগর উন্নয়নক্ষেত্রে একটি তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন।

আয়োজিত এশিয়ার টাউনশিপ অ্যাওয়ার্ড যৌথভাবে আয়োজন করেছে ইউএন-হেবিটেট রিজিওনাল অফিস ফর এশিয়া এন্ড দ্য প্যাসিফিক (এএইচএস), ফুকুওকা এশিয়ার আরবান রিসার্চ সেন্টার (ইউআরসি) এবং এশিয়া টাউনশিপ ডিজাইন সোসাইটি এ বছর বিশ্বব্যাপী শহুরে পরিবেশ, জনজীবন, নান্দনিকতা এবং প্রতিবেশগত স্থিতিশীলতায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে এমন ৭২টি প্রকল্প থেকে ১১টি প্রকল্পকে এই পুরস্কার দেয় হয়েছে।


কমলগঞ্জে দু:স্থ পরিবারের মাঝে টিউবওয়েল বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ প্রেসে ক্লাবের আয়োজনে ও ‘ইটারনেল গিভি’এর সহযোগতিায় উপজেলার ২৫টি অসহায় ও দু:স্থ পরিবারের মাঝে বিশুদ্ধ পানির জন্য টিউবওয়েল বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কমলগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আনুষ্ঠানকিভাবে এসব টিউবওয়েল বিতরণ করা হয়।

কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আসহাবুজ্জামান শাওনের সভাপকিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদুজ্জামন আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৌহিদুল ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী সমাজসবেক আহসান কবির চৌধুরী (রিপন)।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসনে এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। প্রবাসীদরে এমন মানবকি সহায়তা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এসময় প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং উপকারভোগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজকরা জানান, ইটারনেল গিভিং-এর র্অথায়নে এবং কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় যাচাই-বাছাই শেষে প্রকৃত ২৫টি অসহায় ও দু:স্থ পরিবারকে এই সহায়তা প্রদান করা হয়।


ফ্লাক্সের চা বিক্রি করে সংসার চলে সরিষাবাড়ীর লাভলীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

ফ্লাস্ক হাতে নিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরে চা বিক্রি করে সংসার চালান জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার লাভলী বেগম (৪৮)। ২০ বছর ধরে স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে দোকানে দোকানে ফ্লাক্স হাতে নিয়ে চা বিক্রি করে দিব্যি সংসার চালাচ্ছেন তিনি। মানুষের ইচ্ছাশক্তি আর মনোবল থাকলে সবাই সম্ভব তারই উদাহরণ যেন লাভলী বেগম। প্রয়োজন একটু সহযোগীতা।

জানা যায়, লাভলী আক্তারের সাথে ৩০ বছর আগে আবুল হোসেন বল্টুর সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্মায়। প্রায় ১০ বছর পর স্বামী বল্টু লাভলীকে তালাক দিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে শিমলা পল্লী এলাকার সিটঘরে খলিল হোসেনের বাড়ি ভাড়া নেন। আলহাজ জুট মিলে ড্রয়িং মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেখানে কাজ করে মেয়ে আলোকে বিয়ে দিয়েছেন উপজেলার সানাকৈর এলাকায়। হঠাৎ করে আলহাজ জুট মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করেন এই নারী। পরে অন্যের টাকায় ফ্লাস্ক কিনে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ও দোকানে দোকানে চা বিক্রি করা শুরু করেন তিনি। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত শিমলা বাজারের বিভিন্ন দোকানে দোকানে ঘুরে ৪/৫ ফ্লাস্ক চা বিক্রি করেন তিনি। প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ৭শ টাকার চা বিক্রি হয়। এতে করে প্রতিদিন খরচ বাদ দিয়ে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা থাকে। যা দিয়ে জীবন চালাচ্ছেন লাভলী। তার এমন করুন অবস্থা দেখে প্রায় ১০ বছর ধরে বাসা ভাড়া না নিয়ে বিনা ভাড়ায় নিজের বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন খলিল হোসেন। তার এমন মহানুভবতা ও উদারতা মুগ্ধ করেছে স্থানীয়দের।

বাড়ির মালিক খলিল হোসেন বলেন, লাভলী অনেক বছর ধরে আমার বাসায় ভাড়া আছেন। আগে জুটমিলে চাকরি করত কিন্তু মিল হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক সংকট ও ধার-দেনায় জরিয়ে পড়েন তিনি। তার স্বামী ও ছেলে নেই। একটা মেয়ে আছে তাকে আমরা এলাকাবাসী সহযোগীতায় বিয়ে দিয়েছি। তার এমন পরিস্থিতি দেখে আমি তাকে বিনা ভাড়ায় আমার বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেই। বর্তমানে তিনি আমার বাসায় থেকে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করে জীবন চালাচ্ছে। সরকারি বা কোন সহযোগীতা পেলে হয়তো এই অসহায় মেয়েটির ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।

লাভলী বেগম বলেন, স্বামী তালাক দেয়ার পর একমাত্র শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে ছিলাম। মেয়েকে মানুষ করতে পাট মিলে কাজ করেছি। পাটমিল হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। সংসার চালানোর জন্য অন্য কোন উপায় না দেখে অন্যের সহযোগীতায় ফ্লাস্ক কিনে বিভিন্ন বাজারের দোকানগুলোতে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করি। যা রোজগার হয় তাতেই আমার একার জীবন চলে যাচ্ছে। তবে এখন শরীরে নানা অসুখ হয়েছে। এভাবে ফ্লাস্ক নিয়ে হেটে হেটে চা বিক্রি করতে খুব কষ্ট হয়। তবুও পেটের দায়ে সব কষ্ট মেনে নেই।


যৌন উত্তেজক ওষুধের নামে প্রতারণা, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

সারিয়াকান্দিতে যততত্র বিক্রি হচ্ছে এসব ওষুধ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার যুবক আকন্দ (ছদ্মনাম) সম্প্রতি বিয়ে করেছেন। তার এক বন্ধুর পরামর্শে সপ্তাহে ২ দিন করে বিভিন্ন ধরনের যৌন শক্তিবর্ধক সিরাপ পান করেন। স্থানীয় বাজারের মুদির দোকান থেকে ৭০ টাকা দামে ক্রয় করেন এসব সিরাপ।

এই যুবক জানান, এক বন্ধুর মাধ্যমে এ সিরাপের নাম জেনেছেন। এরপর থেকে কিনে খান। এটা না খেলে মনের দিক থেকে ভয় কাজ করে। এখন এটার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পরেছেন। এটা পান করা ছাড়া স্ত্রীর কাছে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না।

এমনকি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকে এসব ওষুধ সেবনের ঝুঁকি সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই বলে মন্তব্য করেন এই যুবক।

তবে চিকিৎসকরা বলছেন, যৌন শক্তিবর্ধকের নামে এসব সিরাপ মানবদেহে নানা মরণব্যাধি সৃষ্টির কারণ হয়ে উঠেছে। ওষুধ প্রশাসনের নিয়ম অনুযায়ী ড্রাগ লাইসেন্স ও সাইনবোর্ড ছাড়া ওষুধের ব্যবসা পরিচালনা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ সারিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শুধু আকন্দ নামের এই যুবকই নন। পাড়া-মহল্লার কিশোর-যুবক-বয়স্কদের অনেকেই সেবন করছেন এসব ক্ষতিকর সিরাপ। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে অনুমোদনহীন এসব যৌন উত্তেজক ওষুধ।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন স্ট্যান্ড ও বাজার এলাকার অলিতে-গলিতে পড়ে থাকে এমন ওষুধের খালি বোতল। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এসব যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রি হলেও প্রশাসনের ভূমিকা যেন একেবারেই নীরব।

সরেজমিনে জানা গেছে, এই সকল ওষুধ বা সিরাপের তালিকায় রয়েছে নানা নামের জিনসিন, হ্যাপি, টার্চ, হর্স, থ্রী-হর্স, এ ওয়ান, ফাইট ওয়ান, এ্যানজয় ফ্রটুস্, ইকলিপ নামীয় তরলীকরণ সিরাপ, ওষুধ মুনইশ, পাওয়ার-৩০, এগ্রা, নিশাত, জিগরাসহ বিভিন্ন বেনামী কোম্পানির পণ্য।

অনুমোদনহীন এই সকল ওষুধ বা সিরাপের গায়ে বিএসটিআই, মেয়াদ, উৎপাদন তারিখ ও ব্যাচ নম্বর ও খুচরা মূল্য যথারীতি লেখা থাকেও তা নিয়ে বিষ্মিত অনেকেই। এই সকল ওষুধ শোভা পাচ্ছে উপজেলার পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন ওষুধের ফার্মেসি, হোমিও, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক দাওয়াখানা, পান-বিড়ির দোকান, মুদি দোকান, হাটবাজারের অস্থায়ী হকারের দোকানগুলোতেও।

ফার্মেসিগুলোতে কথা বলে জানা যায়, যৌনরোগ নিরাময়ে ডাক্তার প্রেসক্রিপশন অনুসারে সাধারণত ভিগোরেক্স, সিলেগ্রা, ডিউমাক্স-৩০, ভায়াগ্রা-৫০, ইনন্টিমেট, বিক্রি হয়ে থাকে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সীমিত পুজি খাটিয়ে এই সকল ওষুধ চুপিসারে উঠতি বয়সি ক্রেতা, প্রাপ্ত বয়স্ক ক্রেতাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত খুচরা বিক্রিতাদের কাছে বিক্রি করছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যৌন সমস্যায় ভুগছেন এমন অনেকেই চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে নিজে থেকে ওষুধের দোকান বা ফার্মেসি থেকে যৌন উত্তেজক ওষুধ কিনে সেবন করেন। এটি এক সময় অভ্যাসে পরিণত হয়। কিন্তু যারা এভাবে কিনছেন তারা হয়তো জানেনই না প্রকৃত অর্থে তার সমস্যা কী এবং কোথায়।

একইসঙ্গে যে কারণে যৌন সমস্যা হচ্ছে সেটি শনাক্ত ও চিকিৎসা না হওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত আরও খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেজ্ঞরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাত একটু বাড়া মাত্রই উঠতি বয়সি বা প্রাপ্ত বয়স্করা এই সকল সিরাপ বা ওষুধ সরবরাহ বা ক্রয়ে অধিক আগ্রহী হয়ে ওঠে। নগরীর বিভিন্ন ফার্মেসিগুলোর সামনে দাড়িয়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ।

অন্য ক্রেতারা সরে যাওয়ার মাত্র চুপিসারে ক্রয় করেই তড়িঘড়ি করে চলে যায়। তবে প্রতিদিন ক্রয় করা ক্রেতা বিক্রেতার নিকট অনেকটাই পরিচিতি হওয়ায় চেহেরা দেখা মাত্র বিক্রেতা অতি সহজেই দিয়ে দেয় এই উত্তেজক ওষুধ। নগরীর বিভিন্ন ফার্মেসি সম্মুখ আর পাড়া-মহল্লা ঘুরে অনুসন্ধ্যানে এমনই চিত্র উঠে এসেছে।

হাট শেরপুরের ইনসান বলেন, সারিয়াকান্দি বিভিন্ন হাট-বাজার, পথে-ঘাটে ও ফুটপাতে এমন কী বিড়ি-পানের দোকানে দিনদিন বেড়েই চলেছে এসব অবৈধ ওষুধের ব্যবসা। এতে প্রশাসনের কোনো ভূমিকা দেখি না। প্রশাসন যদি কোনো পদক্ষেপ নিত তাহলে জীবনরক্ষাকারী নিম্নমানের ওষুধ যত্রতত্র বিক্রি বন্ধ হতো। এসব বন্ধ না করলে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েই চলবে। বিক্রেতা জাকির জানান, গ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে দোকানগুলোতে জিনসিন জাতীয় সিরাপগুলো ভালো চলে লাভ বেশি তাই, দোকানদাররা আগ্রহ সহকারে বিক্রি করে।

চর্ম, এলার্জি, যৌন ও কুষ্ঠ রৌগ বিশেষজ্ঞ ডা. কোরবান আলী (রনি) বলেন, পুরুষের ইরেকটাল ডিসফাংশনের জন্য সাধারণত ওষুধ দেওয়া হয়, যা কিছু ব্র্যান্ডের নামে পাওয়া যায়। মূলত এই ওষুধগুলো যৌন উত্তেজক ওষুধ হিসেবে চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশনে দিয়ে থাকেন। কার জন্য কোন ওষুধ এবং কত ডোজে দেওয়া প্রয়োজন সেটি একজন চিকিৎসক রোগীর সঙ্গে কথা বলে, পরীক্ষা করে নির্ধারণ করেন।

এসব ওষুধ সেবনে তাৎক্ষণিকভাবে দৈহিক মিলনে স্থায়িত্ব বাড়ালেও শরীরের রক্তচাপ অনেক বেড়ে যায়। ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। একই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনির মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে।


নড়াইলে গাঁও-গেরামের স্বভাব কবির মৃত্যুবার্ষিকী পালন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইলে গাঁও-গেরামের স্বভাব কবি বিপিন সরকারের ১০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নড়াইল পৌর সভার বাহিরডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ির আঙিনায় কবির মৃত্যুদিন পালনে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল কবির সমাধি এবং প্রতিকৃতিতে পুষ্প্যমাল্য অর্পণ, এক মিনিট নীরবতা,স্মরণ সভা। স্বভাব কবি বিপিন সরকার স্মৃতিরক্ষা পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিপিন সরকার স্মৃতি রক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মায়া রানী বিশ্বাস দৈনিক বাংলাকে বলেন, ১৯২৩ সালে কবি নড়াইল পৌরসভার বাহিরডাঙ্গা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ২০১৫ সালে তিনি নিজ বাড়িতে দেহ ত্যাগ করেন। কবিকে ধরে রাখতে মৃত্যুর পর থেকেই প্রতি বছর তার জন্ম এবং মৃত্যু দিবস পালিত হয়ে আসছে। তিনি বলেন, কবি প্রায় একশর মতো কবিতা, দুইশর মতো হালই গান, ৫০টির মতো অষ্টক গান রচনা করে গেছেন।

স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন, স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সহসভাপতি বিদ্যুৎ স্যান্নাল। স্বাগত বক্তব্য দেন, স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মায়া রানী বিশ্বাস। বক্তব্য দেন, লেখক সুবাষ বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শঙকর কর্মকার, সঙ্গীত শিল্পী প্রতুল হাজরা, হীরক গোস্বামী, মো. তরিকুল ইসলাম, কবির ছেলে বিজন বিশ্বাস অনেকে।

বক্তারা বলেন, বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন স্বভাব কবি বিপিন সরকার। শিল্পী সুলতান কবিকে খবর দিয়ে বাড়িতে এনে তার লেখা কবিতা, গান, হালই নিয়মিত শুনতেন। তার রচিত বিভিন্ন গান দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের মানুষ শুনতেন এবং গাইতেনও। তরি রচিত গান খুলনা বেতারে গাওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া নড়াইলের বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের কৃষক জমিতে কাজ করার সময়, নৌকার মাঝিরা নৌকা চালানোর সময় কবির গান পরিবেশন করে থাকেন। তিনি শুধু সুলতানেরই বন্ধু ছিলেন না। কবিয়াল বিজয় সরকার ও জারী সম্রাট মোসলেম উদ্দীন বয়াতিরও বন্ধৃ ছিলেন। ক্ষণজন্মা এই স্বভাব কবির মৃত্যুতে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ মর্মাহত।


banner close