বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১০ আশ্বিন ১৪৩২

অনুমোদনহীন ৪০ কেজি রাসায়নিকসহ যুবক আটক

র‌্যাবের হাতে আটক রায়হান। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
৭ নভেম্বর, ২০২২ ১৯:৩২
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৭ নভেম্বর, ২০২২ ১৯:২৭

ঢাকার কেরানীগঞ্জে অনুমোদনহীন ৪০ কেজি সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইটসহ রায়হান নামে এক যুবককে আটক করেছে র‍্যাব। গতকাল রোববার তাকে কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাজার থেকে আটক করা হয়।

আজ সোমাবার বিকেলে র‌্যাব ১০-এর সহকারী পরিচালক এনায়েত কবির সোয়েব দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যে জিনজিরা বাজারে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে অনুমোদনহীন ৪০ কেজি সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইট পাউডারসহ একজনকে আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক যুবক জানান, পচনশীল পণ্য ও খাদ্যসামগ্রীতে এই রাসায়নিক ব্যবহার করলে দীর্ঘদিন সতেজ থাকে। এতে ক্রেতারা আকৃষ্ট হন। তিনি কিছুদিন ধরে অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইট পাউডার বিক্রি করে আসছিলেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মমলা হয়েছে।


পাংশায় যানজট নিরসনে কাজ করছে বণিক সমিতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এস,কে পাল সমীর, পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর পাংশায় আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে পৌর শহরে সৃষ্ট যানজট নিরসনে কাজ করছে পাংশা শিল্প ও বণিক সমিতি।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাংশা শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি মো. বাহারাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার সরদারের নেতৃত্বে সমিতির অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে লাল রঙ দিয়ে যানবাহন চলাচলের নির্দেশনা আঁকা হয়। যাতে ভিড়ের সময় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় এবং পথচারীরাও নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারেন।
পাংশা শিল্প ও বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার সরদার জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিদিন শহরে ভিড় বেড়ে যায়। বিশেষ করে পূজামণ্ডপ, বাজার ও শপিং সেন্টার ঘিরে যানজট সৃষ্টি হয়। এজন্যই আগে থেকেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সমিতির সভাপতি বাহারাম হোসেন জানান, শুধু পূজার সময়ই নয়, সারাবছরই যেন পৌর শহরে শৃঙ্খলিতভাবে যান চলাচল করতে পারে—সেই দিকেও সমিতি নজর দেবে। এ কাজে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। এ কাজে তারা বাজারের ব্যবসায়ী, ভ্যানচালক, অটোচালক ও অন্যান্য যানবাহনের চালকসহ আগত জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেছেন। যাতে করে পাংশা বাজারের যানজট নিরসন করা সম্ভব জয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ বণিক সমিতির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের দাবি, এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে পাংশা শহরে যানজটের ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে।


দূর্গা পূজার ছুটি কাটাতে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার বৃদ্ধি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর )সংবাদদাতা

দীর্ঘদিন পর বেনাপোল চেকপোস্টে ভারত গমনে যাত্রীদের কোলাহল দেখা গেছে। দুর্গাপূজার ছুটি কাটাতেই হাজার হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। কেউ যাচ্ছে দূরগাপূজা উৎসব পালন করতে কেউবা চিকিৎসা করতে কেউ যাচ্ছে বেড়াতে। গত দুদিনে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে গেছেন বলে ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এর পর ভারত সরকার বাংলাদেশীদের জন্য ভারতীয় ভিসা বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে সীমিত পরিসরে চিকিৎসা ভিসা কিছু ইমারজেন্সি ভিসা প্রদান করেন। সে সময়ে প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে ৭০ থেকে ৮০ জন পাসপোর্ট যাত্রী ভারত যেত। তবে ২৮ তারিখ থেকে শুরু হওয়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই দুর্গাপূজার কারণে ভারত সরকার বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রীদের ভিসা প্রদানে আরো একটু শিথিল করেছেন। এখন প্রতিদিন ২০০০ থেকে আড়াই হাজার বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী ভারতের গমন করছেন। ভারত থেকেও প্রতিদিন আসে ৪ শ থেকে ৫ শত পাসপোর্ট যাত্রী। হঠাৎ করে ভারত গমনে পাসপোর্ট যাত্রীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রীদের কোলাহল দেখা যাচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ যাচ্ছে পূজা উৎসব পালন করতে কেউ চিকিৎসা করতে কেউ আবার পরিবার নিয়ে যাচ্ছে বেড়াতে। যাচাই-বাছাই করেই পাসপোর্ট-যাত্রীদের ভারত ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন এর ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সি জানান, বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ভ্রমণের পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুই দিনে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে গমন করেছেন। পূর্বের ন্যায় ভারত সরকার বাংলাদেশী যাত্রীদের ভিসা প্রধানের ব্যবস্থা করলে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ভ্রমণ অনেক বেড়ে যাবে। যাত্রী পারাপার বেশি হলে সরকারি রাজস্ব আদায় বেশি হবে এখান থেকে।


নবীনগরে নির্মাণের দীর্ঘদিন পরও তালাবদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামাল হোসেন পান্না; নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝিকাড়ায় অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে (২০২৩ সালে)। কিন্তু ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্তও দৃষ্টিনন্দন তিনতলা এ ভবনটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

কমপ্লেক্সের ভেতরে রয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত স্মৃতিফলক। ভবনের প্রথম তলায় মার্কেট, দ্বিতীয় তলায় অফিসের জন্য ছয়টি কক্ষ এবং তৃতীয় তলায় একটি সম্মেলন কক্ষ নির্মিত হয়েছে।

২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনায় ৬৪ জেলার ৪২১টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। প্রথমে ২০১৫ সালের জুনে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পের মেয়াদ দুই দফা বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুনে শেষ করা হয়। প্রতিটি ভবন নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

যদিও ২০২৪ সালে সারাদেশে ৩৪টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স একসঙ্গে উদ্বোধনের পরিকল্পনা ছিল, তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে নবীনগরের মুক্তিযোদ্ধারা বর্তমানে পৌর ভবন সংলগ্ন অফিসে স্থান সংকুলান ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

অপরদিকে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক এই ভবনটি দীর্ঘদিন তালাবদ্ধ থাকায় ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে। ভাঙা জানালার কাঁচ, ক্ষতিগ্রস্ত শাটার, বৃষ্টির পানি জমা, এমনকি একমাত্র নলকূপ চুরি হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। মূল গেইট না থাকায় ভবন এলাকায় অবাধে যাতায়াত করছে সাধারণ মানুষ।

নীতিমালা অনুযায়ী এই ভবনের ভাড়া থেকে শতকরা ১৫ ভাগ ব্যয় হবে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে এবং বাকি ৮৫ ভাগ জমা হবে সরকারি কোষাগারে। কিন্তু উদ্বোধনে বিলম্বের কারণে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি ভবনটিও ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সামসুল আলম বলেন—

“আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ভবনটি বুঝে পাওয়ার দাবি জানিয়েছি। তিনি জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অচিরেই ভবনটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”

নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব চৌধুরী বলেন—

“ভবনটি সংস্কারের পর শিগগিরই উদ্বোধন করে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি এসেছে। দ্রুতই তা করা হবে।”


নারায়ণগঞ্জ শহরের জিমখানায় যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক ২৪

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি 

নারায়ণগঞ্জ শহরের জিমখানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৪ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। এদের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে জিমখানা লেকপার্ক এলাকায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

সাজাপ্রাপ্ত ৫ জন হলেন- মো. ফয়সাল (২১), রিফাত (২০), জুবায়ের ভূইয়া রানা (৩৬), মো. মোস্তফা হোসেন (২৬) ও অভিনন্দী (৩০)। তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া আটককৃত আরও ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জনকে সদর মডেল থানায় যাচাই বাছাইয়ের জন্য নেওয়া হয়েছে। তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এছাড়া অপর তিন জনের কাছ থেকে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হলেন- আলম চাঁন, পারভীন আক্তার ও আফরিনা ওরফে হাসি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার জিমখানা এলাকায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানে জিমখানা এলাকার মাদক কারবারি আলম চাঁন কে আটক করা হয়। এছাড়া আলম চাঁন এর নিজ বসতঘর তল্লাশি করে প্রায় দেড় কেজি গাঁজা, ২৫০ মিলি বিদেশি মদ, ৩টি বড় ছোড়া, ১টি স্টীলের চাপাতি, ১টি টেটা, ২টি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও অস্ত্র আইনে নিয়মিত মামলা করা হবে। এছাড়া আলম চাঁন এর বিরুদ্ধে সদর থানায় ১০টি মাদক মামলা রয়েছে।

এছাড়া পারভীন আক্তার এর কাছ থেকে ২৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও আফরিনা ওরফে হাসি এর কাছ থেকে ৩৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার সহ তাদের আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হবে।

এদিকে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে গাঁজা রাখা ও সেবনের অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে ৫ জনকে সাজা প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টি এম রাহসিন কবির। এদের মধ্যে মো. ফয়সাল ও রিফাতকে ১২ দিন, জুবায়ের ভূইয়া রানাকে ২০ দিন, মো. মোস্তফা হোসেনকে ১৪ দিন এবং অভিনন্দীকে ৭ দিন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযান পরিচালনা করে ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জনকে সদর মডেল থানায় প্রেরণ করে যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। এছাড়া তিনজন আগে থেকে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আর ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।


নিরাপদ পানি, স্যানিটেশনের পরিকল্পিত উন্নয়নে চট্টগ্রামে ব্যাপক পরিবর্তন

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম জেলা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা, যেখানে নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন সুবিধা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, যা স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মানকে উন্নত করেছে।

সরাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগ, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য প্রায় ২৫ হাজার সাবমার্সিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। চট্টগ্রাম জেলার উপজেলাসমূহে জলস্তরের (Water table) উচ্চতা খুবই নিচে চলে যাওয়ায় এবং নদী-নালা শুকিয়ে যাওয়ার কারণে টিউবওয়েলের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলশ্রুতিতে জনগণ সুপেয় পানি হতে বঞ্চিত হচ্ছে এবং দূষিত পানি পান করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার মানুষ। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তদারকিতে স্থাপিত গভীর নলকূপসমূহ জনগণের মাঝে সুপেয় পানি সরবরাহ করে যাচ্ছে।

বিশেষ করে সীতাকুন্ড উপজেলায় মাটির নিচে পাথরের স্তর থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবে নলকূপ স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চরম পানি সংকটের সম্মুখিন হয়েছে ওই এলাকার মানুষ। বর্তমানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর ব্যবস্থাপনায় উন্নত প্রযুক্তি Hydraulic Rig পদ্ধতি ব্যবহার করে সীতাকুন্ড উপজেলায় গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। এতে জনগণের সুপেয় পানির অভাব পূরণ হয়েছে এবং উক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নলকূপ স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।

তাছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় কমিউনিটি বেসড ওয়াটার সাপ্লাই স্কীম এবং রুরাল পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কীমের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ কাজ চলমান রয়েছে। সর্বোপরি এ প্রকল্পের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম জনগণের জন্য সহজলভ্য এবং নিরাপদ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে।

পিইডিপি-৪ প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০০টি ওয়াশব্লক নির্মাণ এবং ১,১৩৫টি সাবমার্সিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় মাটির নিচে পাথুরে স্তর থাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা সম্ভব ছিল না। এতে করে বিদ্যালয়ে সুপেয় পানি বা স্যানিটেশন ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ী থেকে পানি নিয়ে আসতে হত। এ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর ব্যবস্থাপনায় Hydraulic জরম পদ্ধতি ব্যবহার করে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়।

তছাড়া বিভিন্ন উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এবং বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সন্দ্বীপেও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ওয়াশব্লক নির্মাণ ও গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কোমলমতি শিশুদের স্যানিটেশন সুবিধা উন্নত করার জন্য এবং নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর তদারকিতে উক্ত কাজসমূহ সম্পন্ন করা হয়।

মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প-এর আওতায় ১৪,৭০০টি টুইনপিট ল্যাট্রিন নির্মাণ করা হয়েছে, যা স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছে এবং জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে। তাছাড়া ৫টি Large Piped Water Supply Scheme এর কাজ চলমান রয়েছে এবং ২৬৬ Small Piped Water Supply Scheme এর মাধ্যমে জনগণের মাঝে সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রতিটি Small Piped Water Supply Scheme এর মাধ্যমে ৩০-৪০ টি পরিবার পানি পাচ্ছে। তাছাড়া জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে ৪২ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে নতুন টয়লেট নির্মাণ, ২৮টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ এবং ৬৩ টি হ্যান্ড ওয়াশিং বেসিন নির্মাণ করে।

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে ৬,৩৩৬টি রেইন ওয়াটার হার্ভোস্টিং ও ৬৩০ টি রেইন ওয়াটার ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্মাণ করা হয়েছে। এটি বৃষ্টির পানি সঞ্চয়ের মাধ্যমে পানি সংকট মোকাবেলা করতে সহায়তা করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উপকূলীয় জনগণের পানির অভাব দূর করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলার জনগণের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে, যা পানিবাহিত রোগের প্রতিরোধ এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

৩২ পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও মানব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় সাতকানিয়া পৌরসভায় জনগণের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে ৪০টি কমিউনিটি ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ৪৭টি কমিউনিটি বিন নির্মাণ, ড্রেন নির্মাণ, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও পাম্প হাউজ নির্মাণ করেছে।

বাংলাদেশে ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় বাঁশখালী ও চন্দনাইশ পৌরসভায় ইমপ্রুভড হাউসহোল্ড টয়লেট নির্মাণ করা হয়। এতে জনগণের স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি হয়। তাছাড়া উক্ত পৌরসভাসমূহে ড্রেন নির্মাণের কাজ ও চলমান রয়েছে। তাছাড়া খুব অল্প সময়ের মধ্যে এ দুটি পৌরসভার জনগণের মাঝে পানি সরবরাহ আরম্ভ হবে।

প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রামকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে, যেমন দূরবর্তী অঞ্চলে টিউবওয়েল স্থাপন এবং স্যানিটেশন সুবিধার জন্য অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি। তবে এসব প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন চট্টগ্রাম জেলার জনগণের জীবনযাত্রায় একটি বড় পরিবর্তন এনে দিয়েছে। নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এ অঞ্চলের জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সাধারণ জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে।


রঙিন মাছ চাষে স্বপ্ন বুনছেন কুমিল্লার তরুণ উদ্যোক্তারা

পোনা উৎপাদন করে লাখপতি কুমিল্লার জয়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা

শতাধিক চৌবাচ্চায় লাল, নীল, হলুদ, সাদা, কালো আর কমলা রঙের মাছের ঝলকানি। রঙিন এই মাছের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন আগত দর্শনার্থীরা। শখের বশে শুরু হলেও আজ সেটিই পরিণত হয়েছে এক সফলতার গল্পে। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার প্রজেশ্বর চন্দ্র জয় এখন রঙিন মাছ চাষ করে হয়েছেন লাখপতি। জয়ের সাফল্য দেখে রঙিন মাছ চাষে স্বপ্ন দেখছেন কুমিল্লার তরুণরা।

পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে জয় বেছে নেন ভিন্ন পথ। ইউটিউব দেখে ২০১৯ সালে মাত্র ১ হাজার ৩০০ টাকা ব্যয়ে দুটি ড্রামে শুরু করেন রঙিন মাছ চাষ। প্রথমে ছিল শুধু শখ, কিন্তু বর্তমানে তা রূপ নিয়েছে বাণিজ্যিক খামারে। বুড়িচং উপজেলার মণিপুর ও নাঙ্গলকোটে তার রয়েছে তিনটি খামার, ‘আর বি ফিস ফার্ম’ নামে, যেখানে চাষ হচ্ছে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি মাছ।

তার হ্যাচারিতে এখন ৯০ প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন হয়। দূর-দূরান্ত থেকে শৌখিন মানুষ এসে রঙিন মাছের পোনা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের ঘরের অ্যাকুরিয়ামে শোভা পায় জয়ের হ্যাচারির রঙিন মাছ।

তখন অনেকেই জয়ের কাজ দেখে হাসাহাসি করে। তবে দীর্ঘ পরিশ্রম আর একাগ্রতায় তিনটি হ্যাচারির মালিক হন জয়। দুটি তার গ্রামের বাড়ি নাঙলকোটে। আরেকটি বুড়িচং উপজেলার কাবিলা-মণিপুর এলাকায়। তার হ্যাচারিতে রঙিন মাছের পোনার মধ্যে রয়েছে এলবাইনো ব্লুটুপাস, গ্রীন বেনবেল্ট, ডাম্বু মোজাইক, এলবাইনো পিঙ্ক মোজাইক, গ্লুকই, ফরকে গোল্ড, ব্লু মেটাল, ব্লু হেড সামুরাই, রেড ড্রাগন, গ্রীন ড্রাগন, আরটিপি, লবস্টার বা ক্রে ফিস, মুনটেল বেলুনমলি।

জয় বলেন, ‘হ্যাচারির মধ্যে ৪৪টি হাউসে নিয়ম করে মাছের পোনাকে যত্নআত্তি করতে হয়। সকাল-বিকেল অক্সিজেন চেক করে খাবার দিতে হয়।’ পোনা পরিচর্যাকারী রাকিব উল্লাহ জানান, ‘নিয়ম করে হ্যাচারিতে অক্সিজেন দিতে হয়। তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে পোনার খাবার দিতে হয়। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে পোনা মরে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।’

স্থানীয় আবদুর রশীদ নামে এক বাসিন্দা জানান, ‘দূর-দূরান্ত থেকে শৌখিন লোকজন এসে মাছের পোনা কিনে নিয়ে যায়।’ ক্রেতা আবুল খায়ের জানান, ‘তিনি মাছের পোনা কিনে নিয়েছেন। সাশ্রয়ী দামে পোনা কিনেছেন। বাড়তি হিসেবে হ্যাচারি থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হয়।’ জয়ের এমন সাফল্য দেখে তরুণরা এখন রঙিন মাছের পোনা উৎপাদনে উৎসাহিত হচ্ছে।

আরেক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, ‘কুমিল্লা ছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা যেমন; চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহীতে যা তার এই উৎপাদিত মাছের পোনা। এছাড় অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও বিক্রি হচ্ছে তার মাছ।’

রঙিন মাছের প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। বাসার অ্যাকুরিয়াম সাজাতে প্রতিদিনই ক্রেতারা ভিড় করছেন জয়ের খামারে। উদ্যোক্তা হিসেবে জয়ের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় অনেক তরুণ এখন নতুন খামার গড়ে তোলার কথা ভাবছেন।

হ্যাচারির মালিক প্রজেশ্বর চন্দ্র জয় বলেন, শুরুতে অনেকেই হাসাহাসি করেন। ধীরে ধীরে যখন সফলতা এসে ধরা দিতে লাগল তখন সমালোচনাকারীরা আমার হ্যাচারিতে এসে বিনিয়োগ করতে চায়। তবে রঙিন মাছের পোনা উৎপাদনে শেখার কোনো শেষ নেই বললেন হ্যাচারির মালিক জয়। তাই শুধু হ্যাচারি করলেই হবে না, প্রতিনিয়ত শেখতে হবে।

রঙিন মাছের পোনা উৎপাদনে শুধু সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেনি বরং জয় এখন এলাকার তরুণদের কাছে হয়ে উঠেছেন অনুপ্রেরণার প্রতিক।

এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, কুমিল্লা দেশের মৎস্য উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রঙিন মাছ চাষের সম্ভাবনা।

মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, জয় একটি অসাধারণ উদ্যোগ নিয়েছে। তরুণরা চাইলে খুব সহজেই এ খাত থেকে লাভবান হতে পারবেন। সে জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পরমার্শ দিতে প্রস্তুত আছে মৎস্য কর্মকর্তারা।

শখের বশে শুরু হলেও আজ রঙিন মাছ চাষ প্রজেশ্বর চন্দ্র জয়ের জীবনে এনেছে সাফল্য। শুধু নিজেই নয়, আশপাশের তরুণদেরও অনুপ্রাণিত করছেন তিনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনা ও সরকারি সহায়তা পেলে রঙিন মাছ চাষে দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় রপ্তানি শিল্পে পরিণত হতে পারে।


কৃষিকাজের আড়ালে তৈরি হতো মদ, বিপদগামী যুবকরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শামসুল ইসলাম সনেট, কেরানীগঞ্জ

কৃষিকাজের আড়ালে বাংলা মদ উৎপাদন ও বিক্রি করে নিজের নাম লিখিয়েছেন কালো তালিকায়। এলাকার ছোট থেকে বড় সর্ব মহলে পরিচিত নাম কামাল হোসেন। কেরানীগঞ্জ উপজেলার রোহিতপুর ইউনিয়নের পোড়াহাটি গ্রামের ফয়েজ উদ্দীনের ছেলে কামাল যিনি দীর্ঘদিন ধরে একই পেশায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে শুধু নামেই পরিচিতি পাননি হয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। মদের টাকায় পারিবারিকভাবে সচ্ছলতার পাশাপাশি বাড়িতে গড়ে তুলেছেন আলিসান ভবন। মদের কারখানার সামনেই নির্মিত ভবন থেকেই দেখভাল করেন নিজ সাম্রাজ্যের।

এলাকাবাসী বলছে তার কারণে এলাকার যুবকরা বিপদগামী হচ্ছে। এলাকাবাসী প্রশাসন সবাই যেনেও বাধা দেওয়া হয় না এই অবৈধ কাজে। তার কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন একই এলাকার রবি, হান্নান ও গফফার। পুলিশ ফাঁড়ির পেছনেই বিশাল মদের কারখানা দীর্ঘদিন যাবত কী করে চলছে এর উপযুক্ত জবাব নেই ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কর্মকর্তার। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ (সার্কেল) মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন কবির জানান, পুলিশ ফাঁড়ির কাছে কিংবা দূরে মদের কারখানা কোথাও থাকবে না। তথ্য পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নতুন সোনাকান্দা আদর্শ পুলিশ ফাঁড়ির ৫০০ গজের ভেতরে পোড়াহাটি এলাকায় একটি ধইঞ্চা খেতে দুটি ড্রামের চুলায় জ্বাল দেওয়া হচ্ছে মদ। পাশেই বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছে কাঁচা মদ ভর্তি ২০-২৫টি ড্রাম। কোথাও কম পচা কোথাও আবার বেশি। কিছু পলিথিন ভর্তি রেডি বাংলা মদ। স্থানীয় যুবসমাজ খেতের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করছে মদের ড্রাম।

স্থানীয় যুবক জহিরুল ইসলাম জানান, কামাল ও তার সহযোগীরা প্রায় ৮-১০ বছর যাবত এ কাজ করে আসছে। এলাকাবাসী ও প্রশাসনের অসহযোগীয় আমরা চক্রটিকে ধরতে পারছিলাম না। অবশেষে গ্রামের যুবসমাজ একত্র হয়ে ১৫-২০ ড্রাম মদ উদ্ধার করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সামনে ধ্বংস করেছি। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সরকারি ইস্পাহানি কলেজের শিক্ষক আসকর আলী জানান, এমন জঘন্য ব্যক্তি কোনো এলাকায় থাকলে সে এলাকা ভালো থাকতে পারে না। আমরা মাদক কারবারি কামালের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।

তবে অভিযুক্ত কামালের ছেলে জানিয়েছেন, বাবাকে বারবার বলার পরও তাকে ফেরানো যায়নি। আর বাড়ি বাবার নয় নিজেদের টাকায় করেছেন বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক ডাবলু জানান, স্থানীয় লোকজন কিছু বাংলা মদ উদ্ধার করে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করতে আসেনি। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


নওগাঁ শহরের এক সময়ের ‘ক্রিং ক্রিং’ শব্দ আর নেই!

আধিপত্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

একসময় নওগাঁ শহরের অলিগলিতে প্রতিদিন ভেসে আসত প্যাডেল চালিত রিকশার পরিচিত ‘ক্রিং ক্রিং’ আর ‘টুং টাং’ বেলের শব্দ। সেই রিকশার চাকা ঘুরে চলত শত শত পরিবারের জীবনযাপন। কিন্তু সময়ের পালাবদলে সেই ঐতিহ্য প্রায় বিলুপ্তির পথে।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও লাভজনক আয়ের আশায় শহরের প্রায় সব রিকশাচালকই এখন ঝুঁকছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দিকে।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার প্রতি ঝুঁকছে চালকরা:

প্যাডেল রিকশায় পরিশ্রম বেশি হলেও আয় কম। পক্ষান্তরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে কম শ্রমে বেশি আয়ের সুযোগ থাকায় অনেকেই বদলে ফেলেছেন পেশার ধরন। ফলে শহর ও গ্রামাঞ্চলে অটোরিকশার সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।

প্যাডেল রিকশার চালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মানুষ এখন আর প্যাডেলের রিকশায় উঠতে চায় না। তাই বেশির ভাগ সময় অলস বসে থাকতে হয়। আগে দিনে ২০০-৩০০ টাকা আয় হতো, এখন সেটা ৮০-১০০ টাকায় নেমে এসেছে। এত অল্প আয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে গেছে।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক মিঠু হোসেন জানান, রিকশায় খাটুনি বেশি, অথচ আয় কম। অটোরিকশা চালিয়ে দিনে ৫০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। কিস্তিতে কেনা যায় বলেও অনেকের পক্ষে এটি সহজলভ্য।

উৎপাদন বাড়ছে, ব্যয়ও বাড়ছে:

নওগাঁয় বর্তমানে প্রায় ৫০টি কারখানায় প্রতি মাসে গড়ে ২৫০টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা তৈরি হচ্ছে। তবে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে অনেক গুণ। রড ও শিটের দাম বিগত দুই বছরে বেড়েছে ৩০-৪০ শতাংশ।

শরিফুল ইসলাম নামের একজন কারখানা মালিক জানান, একটি অটোরিকশার ফ্রেম বা বডি তৈরিতে খরচ পড়ে অন্তত ৮০ হাজার টাকা। ব্যাটারিসহ পুরো অটোরিকশার খরচ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অনেক সময় এনজিও থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে কাজ করতে হয়, কারণ ব্যাংক ঋণ পেতে হলে জমি বা ঘরের কাগজ লাগে, যা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না।

কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত:

নওগাঁ বিসিক শিল্প নগরীর উপব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চাহিদা বাড়ায় নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কারখানার সংখ্যাও বেড়েছে। শিল্প সম্ভাবনা আরও বাড়াতে কারিগরি প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বিসিক।’

হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্য:

যেখানে এক সময় অভ্যন্তরীণ যাতায়াতে একমাত্র ভরসা ছিল প্যাডেল চালিত রিকশা, সেখানে এখন তা অতীত হতে চলেছে। শহরে বর্তমানে হাতে গোনা মাত্র ৩টি প্যাডেল রিকশা দেখা যায়, যার চালকরাও অধিকাংশই বয়সে প্রবীণ। একসময় যে রিকশাগুলোর নির্মাণে ব্যস্ত ছিল ৫০টিরও বেশি কারখানা, যার মাসিক উৎপাদন ব্যয় প্রায় ২ কোটি টাকা। এখন সেগুলোও ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে স্মৃতিতে।

এক সময়ের অপরিহার্য বাহন হয়তো আগামী প্রজন্মের কাছে রয়ে যাবে কেবল ইতিহাসের পাতায় কিংবা জাদুঘরের প্রদর্শনীতে।


বিশ্ব খ্যাত কিউনির সাথে কাজ করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও বিগ ডাটা অ্যানালিটিক্স এবং জলবায়ু পরিবর্তন, রিমোট সেন্সিং ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশ্ব খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক (কিউনি) এবং সিটি কলেজ অব নিউইয়র্ক (সিসিএনওয়াইর) সাথে কাজ করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের অনলাইন ট্রেনিং প্রোগ্রাম, জয়েন্ট ডিগ্রি প্রোগ্রাম, বিভিন্ন ধরনের গবেষণা এবং ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের যৌথ এক্সপোজার সফর নিয়ে কাজ করবে দুই বিশ্ববিদ্যালয়।

যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সম্প্রতি সিটি কলেজ অব নিউইয়র্কের প্রেসিডেন্ট ভিনসেন্ট বউড্রেউর সাথে এসব বিষয়ে যৌথ অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। এ সময় সিটি কলেজ অব নিউইয়র্কের প্রেসিডেন্ট, ডিন ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রফেসর আমানুল্লাহ বলেন, দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ ভূগোল, পরিবেশ বিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্য বিভাগ এবং বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণার সুযোগ তৈরি করবে।

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা নিয়ে সিটি কলেজ অব নিউইয়র্ক কর্তৃপক্ষের আগ্রহের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই যৌথ অংশীদারিত্ব শুধু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নয় বাংলাদেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্যও ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, উচ্চশিক্ষায় প্রচুর বিনিয়োগ লাগে, যা সরকারের পক্ষে বহন করা কঠিন। তাই উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সাবেক শিক্ষার্থীদের অ্যালামনাই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি জানান, সিটি কলেজ অব নিউইয়র্কের সাবেক শিক্ষার্থীরা প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বা ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কলেজের পদার্থবিজ্ঞান ল্যাব সংস্কার করেছে। সেখানে এখন ফোটন নিয়ে গবেষণা চলছে।

প্রফেসর আমানুল্লাহ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য সাবেক শিক্ষার্থী বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছেন। তাদের সবাইকে একত্র করতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এটি আলোর মুখ দেখবে। এই সংগঠন ভবিষ্যতে দেশের উচ্চশিক্ষায় বড় অবদান রাখবে বলে আশা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের।


জয়পুরহাটে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের ছাগল বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির আর্থসামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জয়পুরহাটে সুফলভোগীদের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে এ হাসপাতাল চত্বরে বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মহির উদ্দিন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফসিয়া জাহান, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা জানান, সরকারের এ উদ্যোগ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে ২০০ জন সুফলভোগীদের মাঝে ছাগল তুলে দেন অতিথিরা।


প্রবাসীর স্ত্রী ও যুবককে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাকিবুল হাসান রোকেল, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পরকীয়ার অভিযোগ এনে প্রবাসীর স্ত্রী ও এক যুবককে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগ রয়েছে, তাদেরকে রাতভর ঘরে আটকিয়ে নির্যাতনের পর সকালে আবারও বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর এ ঘটনার একাধিক ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরেই বোরহান উদ্দিন ও কুলসুম আক্তার নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে।

কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ তরিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে এক নারী (২৮) ও এক যুবককে (২৯) পেটাচ্ছেন একই এলাকার হাবিবুর রহমান (৬৫)। এ সময় চারপাশে ভিড় করে এ ঘটনা উপভোগ করছিলেন উৎসুক জনতা। হাবিবুর রহমান প্রথমে একটি কঞ্চি দিয়ে দুজনকেই পেটানোর পর পাশ থেকে আরেকজন আরও তিনটি কঞ্চি এগিয়ে দেন। সেগুলো একসঙ্গে করে পেটাতে থাকেন হাবিবুর। এ সময় নির্যাতনের শিকার নারী-পুরুষকে চিৎকার করতে শোনা যায়। অবশ্য এর মধ্যে কেউ কেউ মারতে নিষেধ করার কথাও শোনা গেছে। তারপরেও থামেননি হাবিবুর। আরেকটি ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি কঞ্চি একসঙ্গে করে তাদেরকে পেটাচ্ছেন কুলসুম আক্তার নামে আরেক নারী।

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, ২০ সেপ্টেম্বর রাত ৩ টার দিকে পরিকল্পিতভাবে তার স্বামীর বসতে ঢুকে পড়ে আসামিরা। এসময় তার ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেন তারা। পরে তার পাশের রুম থেকে তার পূর্বপরিচিত এক যুবককে ডেকে এনে দুজনকে একসঙ্গে মারধর করা হয়। পরে আবার বাড়ির সামনে বিদ্যুতের খুঁটিতে তাদেরকে একসঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে সেই ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী ওই নারীর খালাতো ভাই হাবিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

অপরদিকে নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী যুবকের পরিবারের সদস্যরা বলেন, তার যদি কোন অপরাধ থেকে থাকে তবে সেজন্য আইন আছে, সমাজ আছে। কিন্তুু আসামিরা তা না করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।

১০ বছর আগে কটিয়াদী পৌর এলাকায় এক যুবকের সাথে বিয়ে হয় নির্যাতনের শিকার ওই নারীর। বিয়ের ৪ বছর পরে সৌদিআরবে পাড়ি জমান তার স্বামী। পরে একই উপজেলার চারিয়া গ্রামের এক যুবকের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে বলে দাবি স্থানীয়দের।

নির্যাতনের শিকার ওই নারী বর্তমানে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে তার শারীরীক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত হলেও আরোও কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ডা: সৈয়দ মোঃ শাহরিয়ার।

কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নজরে আসার পরেই তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।


নিখোঁজের ৩দিন পরে ফতুল্লার বুড়িগঙ্গা থেকে ইদ্রিস মাঝির লাশ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা সরকারী তেল ডিপো যমুনা ঘাট এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ইদ্রিস আলী ব্যাপারী (৪৫) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার বেলা ১২ টার দিকে তেল ডিপো যমুনা ঘাটের পেছনে ভাসমানঅবস্থায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করে।

নিহত ইদ্রিস আলী ব্যাপারী শরিয়তপুর জেলার শখিপুর থানার চরজিন কিং গ্রামের মৃত সিদ্দিক আলী ব্যাপারীর ছেলে। সে ঢাকার শ্যামপুর তেলঘাট এলাকায় বসবাস করতো।

পাগলা নৌ পুলিশের উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, নিহত ইদ্রিস আলী একজন নৌকার মাঝি ছিলেন। গত তিন দিন পূর্বে (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর একটার দিকে নৌকা চালানোর সময় অসাবধানতাবশতঃ বুড়িগঙ্গা মাঝ নদীতে নৌকা থেকে পানিতে পরে যায়। এতে করে সে নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। পরে বুধবার বেলা ১২ দিকে লোক মারফত সংবাদ পেয়ে তিনি সহ নিহতের পরিবারের স্বজনেরা ফতুল্লার যমুনা ঘাটে এসে ভাসমান লাশটি নিখোঁজ ইদ্রিস আলীর মৃতদেহ উদ্ধার করে।


প্রাকৃতিক পানি শোধন ফিল্টার নামক প্রাণি শামুক নিধন করা হচ্ছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হারুনার রশীদ বুলবুল; কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের কেশবপুর ও আশপাশ এলাকা থেকে অবাধে কৃষকের অগোচরে বন্ধুর ভূমিকা পালনকারী প্রাকৃতিক পানি শোধন ফিল্টার নামক প্রাণি শামুক নিধন করা হচ্ছে। এর ফলে মৎস্য ও কৃষি বিভাগও এখন হয়ে পড়েছে চিন্তিত। দাবি উঠেছে এখনি শামুক নিধনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এলাকা থেকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে পড়বে।

ভবদহ অঞ্চলের কেশবপুর উপজেলায় ৫৫ হাজার ৮৬৭বিঘাতে ৪ হাজার ৬৫৮টি ঘের ও ৫ হাজার ৮৮৭ বিঘায় ৬ হাজার ৯৯৫টি পুকুর ও দিঘী রয়েছে। মনিরামপুর উপজেলায় রয়েছে ৬৮ হাজার ৬১০ বিঘায় ৪ হাজার ৮৮৯টি ঘের ও ৩৪ হাজার ২৩৭ বিঘায় আছে ১১ হাজার ৬৪৩টি পুকুর ও দিঘী এবং অভয়নগর উপজেলায় রয়েছে ৩৪ হাজার ৪২৫ বিঘা জমিতে ১ হাজার ২০৫টি ঘের ও ২৫ হাজার ৮৯০ বিঘায় ৪ হাজার ৮১০টি পুকুর ও দিঘী। এ ছাড়াও তিনটি উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য উন্মুক্ত জলাবদ্ধ বিল যা ঘের হিসেবে ব্যবহার করা হয় না। এলাকার দরিদ্র নারী পুরুষ ও শিশুরা এ সব ঘের, পুকুর, দিঘী ও উন্মুক্ত জলাবদ্ধ বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ৭থেকে ৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে থাকে। ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন সড়কের পয়েন্টে পয়েন্টে পাইকাররা ভ্যান, সাইকেল, দাঁড়িপাল্লা নিয়ে বসে থাকে। সকাল থেকেই ওই সব পয়েন্টে গিয়ে নারী-পুরুষ ও শিশুরা শামুক-ঝিনুক বিক্রি করে থাকে। এ সব পাইকারি ব্যবসায়ীরা শামুক-ঝিনুক থেকে মাংস বের করে ঘের মালিকদের কাছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন। আবার শামুক ঝিনুকের খোলা বস্তা প্রতি ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছে চুন তৈরির কারখানায়। মূলত ঘের ও চুন কারখানার মালিকরাই অস্বচ্ছল পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুদের উদ্বুদ্ধ করে শামুক-ঝিনুক ধরতে। চুন কারখানার মালিকরা পাইকারদের কাছে অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখে শামুক-ঝিনুক কেনার জন্য। মনিরামপুরের গোপালপুরে ২টি ও চেচুড়িয়ায় ১টি মোট ৩টি বড় ধরণের চুন তৈরির কারখানা রয়েছে। উপজেলার আড়য়া গ্রামের ফতেমা বেগম জানান, তার পরিবারের ৩-৪ জন বিল খুকখিয়াসহ অন্যান্য জলাবদ্ধ বিল পুকুর ও দিঘী থেকে শামুক-ঝিনুক এনে ৭ থেকে ৮ টাকা কেজিতে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে থাকি। প্রতিদিন এক থেকে দেড় মন শামুক-ঝিনুক তারা সংগ্রহ করে। সাগরদত্তকাটি গ্রামের শামুক ব্যবসায়ী জয়দেব বলেন, জলাবদ্ধ বিল এলাকা থেকে শামুক কিনে কপালিয়া এলাকার মাছের ঘের মালিকদের নিকট বিক্রি করে থাকি। এতে তাদের প্রতি কেজিতে ২০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত লাভ থাকে। চুন তৈরির কারখানার মালিক সমিরন দাস জানান, তার কারখানায় যে চুন তৈরি হয় তার তিন ভাগের দুই ভাগ চুন ঘের মালিকদের কাছে ৫০ কেজি বস্তা প্রতি ১ হাজার ৯০০ শত টাকায় বিক্রি করে থাকে। আর এক ভাগ চুন পান ও অন্যান্য কাজে ব্যবহারে বিক্রি করে দেয়। সে আরো জানান, শামুক-ঝিনুক কেনার জন্য পাইকারদের কাছে অগ্রিম টাকা দিয়েও রাখেন। ঘের মালিক আকবর হোসেন ও মোস্তাক হোসেন জানান, ঘেরের মাছ মোটাতাজা করা ও খাদ্য হিসেবে তারা শামুক-ঝিনুকের মাংস কিনে ঘেরে দেয়।এলাকা থেকে অবাদে শামুক নিধন হওয়ায় সচেতন মহল মৎস্য ও কৃষি অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট শামুক নিধনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শামুক মারা গেলে মাংস পঁচে ও খোলায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশ জাতীয় বস্তু মাটিতে তৈরি হয়। এর ফলে যে ক্ষেতে বেশি শামুক থাকে সেখানে ফসল ভাল উৎপাদন হয়। শামুকের কারণে ক্ষেতের উর্বরতা শক্তি বাড়ে।

এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস বলেন, শামুকের শরীরে রয়েছে প্রাকৃতিক জল শোধন ব্যবস্থা (ফিল্টার)। এরা ময়লা যুক্ত পানি পান করে ময়লা খাদ্য হিসেবে ভেতরে রেখে যে পানিটা বাইরে ছেড়ে দেয় সেটা বিশুদ্ধ। শামুকের বিশুদ্ধ পানির কারণে বিলে কই, শোল, শিং ও কার্প জাতীয় মাছ শামুক ও শামুকের ডিম খেয়ে বেঁচে থাকে। জলাবদ্ধ বিল থেকে শামুক কমে গেলে পানি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পানির রং পরিবর্তন হয়ে রোগ জীবাণু বেড়ে যায়।তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালে ১০ জুলাই প্রকাশিত সরকারি প্রজ্ঞাপনে শামুককে বন্য প্রাণি হিসেবে গণ্য করা হয়। সে হিসেবে অবৈধ ভাবে শামুক ধরা ও বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিষয়টি তিনি উপজেলা সমন্বয় সভায় উত্থাপন করে প্রতিকারের দাবি করবেন। শামুক কৃষকের অগোচরে ক্ষেত খামারে বন্ধুর ভূমিকা পালন করে থাকে জানান তিনি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরকার মুহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, শামুক-ঝিনুক প্রকৃতির খাদ্য শৃঙ্খলার সাথে ওৎপ্রতভাবে জড়িত। কেউ শামুক ঝিনুক ধরে মাছ বা অন্য কোন প্রাণির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও বিপর্যয় ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। যারা শামুক-ঝিনুক ধরে পরিবেশ নষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ মৎস্য আইনে নেই। এ কারণে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না।


banner close