নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবীর বিরুদ্ধে পৌর কর, টোল ও এলআর ফান্ডের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে মাস্টার রোলে অতিরিক্ত কর্মচারী নিয়োগ, বিভিন্ন প্রকল্পে লুটপাটসহ নানা ধরনের দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার পৌর কার্যালয় পরিদর্শন করে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেওয়া গেছে।
গত ৩০ জুন বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে প্রকাশিত পরিদর্শন প্রতিবেদন সূত্রে পৌর মেয়রের এসব দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য জানা গেছে। পৌর মেয়র রাফিকা আকতার সৈয়দপুর পৌর মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত আখতার হোসেন বাদলের স্ত্রী।
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, গোপন অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছরের গত ৩০ মে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন সৈয়দপুর পৌরসভা পরিদর্শন করেন। পৌর মেয়র, কাউন্সিলর, পৌর কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ ছাড়া বিভিন্ন রেজিস্ট্রার খাতা পর্যবেক্ষণ করেন। এতে করে পৌর মেয়রের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র ধরা পড়ে। পৌরসভায় মোট মঞ্জুরীকৃত ১৫৮ পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছে মাত্র ২৯ জন। অর্থাৎ ১২৯টি পদ শূন্য থাকলেও তা পূরণে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ৫০০ জনকে মাস্টার রোলের মাধ্যমে নিয়োগ দেন। নিয়মিত পৌরকর আদায় করলেও তা রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করা হয় না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে ২০২৩ সালের জুলাই মাসের পর থেকে টোল আদায় রেজিস্ট্রারে কোনো হিসাব রাখা হয়নি। মেয়র টোলের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া এল আর ফান্ডের কোটি টাকা ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এসব ছাড়াও মেয়রের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এ প্রসঙ্গে সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে পৌরসভার অন্য কর্মকর্তারাও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পথের বেওয়ারিশ কুকুরগুলো যেন খুঁজে পেয়েছে আপন ঠিকানা। মানুষের মতো ৩ বেলা মিলছে খাবার। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে একসাথে জড়ো হয় ২৫ থেকে ৩০ টি কুকুর। আর এই কুকুরগুলোকে খাবারের ব্যবস্থা করছেন গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার ঘাঘর বাজারের মোবাইল মেকানিক জি এম রনি। কুকুরের জন্য খাবারের তালিকায় থাকে দুধ মাখানো ভাত, পাউরুটি ও বিস্কুট। তবে বাড়িতে যেদিন মাংস রান্না হয় সেদিন কুকুরের জন্য রান্না করা মাংস আনতে ভুলেন না জি এম রনি।
স্বামী বিবেকানন্দের একটি অমর বাণী ‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর‘। এই বাণীটি যেন সত্যি হয়ে উঠেছে কুকুরের প্রতি রনির ভালোবাসায়। প্রায় ৫ বছর ধরে এভাবে কুকুরকে প্রতিদিন ৩ বেলা খাবার দিয়ে ভালোবাসার এক অন্যরকম নজির স্থাপন করে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন রনি। যা স্থানীয়দের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।
রনি উপজেলার দক্ষিণ কয়খা গ্রামের আবুল হোসেন গাজীর ছেলে। তিনি স্থানীয় ঘাঘর বাজারে প্রায় ৭ বছর ধরে মোবাইল মেকানিকের কাজ করে আসছেন। ছোট বেলা থেকেই পশুপাখির প্রতি রনির ছিল অন্যরকম ভালবাসা। সেই ভালবাসা থেকেই তার চলার পথে কখনো কুকুর-বিড়ালের দেখা পেলে খাবার কিনে খাওয়াতেন।
করোনাকালীন সময়ে লকডাউনে ঘাঘর বাজারের দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেলে খাদ্যের অভাবে বিপাকে পড়ে যায় বাজারে থাকা কুকুরগুলো। এসময় ভালোবাসার টানে কুকুরগুলোর জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন রনি। এই লকডাউনে যখন প্রশাসনের চাপ ও মৃত্যুভয়ে মানুষ ঘরবন্দি, তখন বাড়ি থেকে রান্না করে কুকুরগুলোর জন্য খাবার নিয়ে আসেন রনি। প্রথমে ৫ থেকে ৭ টি কুকুর থাকলেও ক্রমেই এই সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে ২৫ থেকে ৩০ টি কুকুরকে ৩ বেলা খাবারের ব্যবস্থা করছেন রনি।
শুধু যে কুকুরগুলোকে ৩ বেলা খাবারই নয়, কোন একটি কুকুর অসুস্থ হলে বা কেউ আঘাত করলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন রনি। নিজ হাতে ওষুধও খাইয়ে দেন অসুস্থ কুকুরগুলোকে। কোন কুকুরের গায়ে ক্ষত বা ঘাঁ হলে নিজ হাতে তা পরিস্কার করে মলম লাগিয়ে দেন।
প্রথম দিক দিয়ে জি এম রনির আশপাশের ব্যবসায়ীরা ও পরিবারের লোকজন তাঁর এই কাজে বিরাগভাজন হলেও এখন সবাই প্রংশসা করছেন। এই কুকুরগুলোর জন্য নিয়মিত ৩ বেলা ভাত রান্না করে দিয়ে রনিকে রনিকে সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী। শুধু স্ত্রীই নয়, মা-বাবা ও তার বন্ধুরাও নিয়মিত সহযোগিতা করছেন বলে জানিয়েছেন এই প্রাণীপ্রেমী জি এম রনি।
তিনি বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই পোষা প্রাণীদের খুব ভালবাসী। সেই ভালবাসা থেকেই করোনাকালীন সময়ে ঘাঘর বাজারে খাদ্যসংকটে থাকা কুকুরগুলোকে খাবার খাওয়ানো শুরু করি। যা আজও চলমান রেখেছি। এখন এসব কুকুরের প্রতি অন্য রকম ভালবাসা তৈরি হয়েছে। কুকুরগুলোর প্রতি আমার ভালবাসা এমন হয়েছে যে, আমি এখন কোথাও বেড়াতে গিয়ে থাকতে পারি না। ওদেরকে কে খাওয়াবে? সবসময় এই ভাবনায় থাকি। কুকুরের প্রতি আমার এই ভালবাসা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। তবে কুকুরের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে এভাবে কতদিন ধরে রাখতে পারবো সেটি এখন চিন্তার বিষয়।
ব্যবসায়ী উজ্জ্বল সাহা বলেন, রনি আমার দোকানে ৬/৭ বছর ধরে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করে। সে করোনার সময় থেকে ঘাঘর বাজারে থাকা কুকুরগুলোকে খাবার দিয়ে আসছে। প্রথম দিকে তার এই কাজ নিয়ে উপহাস করলেও পরে বুঝতে পারি সে যা করছে তা অত্যন্ত মানবিক। এখন আমরা তাকে এই কাজে উৎসাহ দিচ্ছি।
চায়ের দোকানদার আক্কেল আলী বলেন, রনি ভাই প্রতিদিন বাড়ি থেকে ভাত এনে আমার দোকান থেকে দুধ কিনে সেই ভাত দুধ দিয়ে মেখে কুকুরকে খাওয়ায়। কোনদিন ব্যস্ততার ভাত না আনতে পারলে আমার দোকান থেকে রুটি ও বিস্কুট কিনে কুকুরকে খেতে দেয়।
ইলেকট্রোনিক্স ব্যবসায়ী সংকর সাহা বলেন, প্রায় প্রতিদিনই আমরা শুনতে পাই উপজেলার কোন না কোন এলাকায় কুকুরে কামড়ানোর সংবাদ। তবে সেই থেকে আলাদা রনির সানিধ্যে থাকা কুকুরগুলো। কোনদিন শুনিনি ঘাঘরবাজারে কোন কুকুর কাউকে কামড় দিয়েছে। রনির ভালোবাসায় কুকুরগুলো যেন শান্তির ঠিকানা পেয়েছে।
কোটালীপাড়া কল্যাণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মাসুম মৃধা বলেন, রনির এমন মানবিক উদ্যোগ আমাদের মনে করিয়ে দেয়-মানুষ শুধু মানুষের জন্য নয়, অন্য জীবের জন্যও মানুষ। রনি যে কাজটি করছে তাহা অত্যন্ত প্রশংসার দাবী রাখে। রনির মতো আমরা যদি সকলে এভাবে প্রাণীকে ভালবাসতাম তাহলে পৃথিবীটি খুব সুন্দর হতো। আমাদের উচিত রনির মতো যারা প্রাণীদের ভালোবাসে তাদের পাশে দাড়ানো।
ময়মনসিংহের ত্রিশালের রফিক তার আড়াই একর জমিতে বিদেশি জাতের পেঁপে চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে মোক্ষপুর ইউনিয়নের কইতর বাড়ি ( খলাবাড়ি) এলাকায় আড়াই একর জমিতে বিদেশি রেড লেডি জাতের পেঁপে চাষ করেছেন কৃষক রফিকুল ইসলাম।
জানাগেছে, পেঁপে একটি উচ্চ ফলনশীল ফসল, যা সারা বছরই ফলন দেয়। বিদেশি জাতের পেঁপে চাষের কিছু বিশেষ সুবিধা আছে, যা রফিককে সফল হতে সাহায্য করেছে।
এই জাতের পেঁপের স্বাদ, রং এবং আকার ভালো হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি এবং দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়াও বিদেশি জাতের পেঁপেতে রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম তাই ফলন নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি নেই। রফিক বলেন, পেঁপে চাষের সময় জমিতে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে পাশাপাশি চারা রোপণের আগে জমি ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। তাহলেই জমিতে পেঁপের ভাল ফলন হবে।
ত্রিশাল উপজেলা কৃষি কমকর্তা তানিয়া রহমান বলেন, রফিকের বাগানে বাম্পার ফলন হয়েছে। এক একটি গাছে ৪০ কেজির মতো করে পেঁপে এসেছে। তার ১৪ থেক ১৫ লাখ টাকা লাভ হবে বলে আমাকে কৃষক জানিয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা তার বাগানের নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছি।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের আগস্ট মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মোট আদায়ের পরিমান ২৭,১৭৪ কোটি টাকা। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২৩,০৮৯.৩৭ কোটি টাকা। আগস্ট-২০২৫ মাসে বিগত আগস্ট-২০২৪ মাসের তুলনায় ৪০৮৪.৫ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে, অর্জিত প্রবৃদ্ধির হার ১৮%।
২০২৫ সালের জুলাই-আগস্ট এই দুই মাসে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৪,৪২৩.০০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের একই সময়ে মোট রাজস্ব আদায়ের পরিমান ছিল ৪৫,০০৫.১৬ কোটি টাকা। এ বছরের জুলাই-আগস্ট এই দুই মাসের রাজস্ব আদায়ে ২১% হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
আগস্ট'২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মুসক খাত থেকে সবচেয়ে বেশি ১১,০৮৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত অর্থ বছরের আগস্ট'২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,২৮৩.১৫ কোটি টাকা। আগস্ট-২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মুসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩৩.৮৩%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে আগস্ট'২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮,৪৪২ কোটি টাকা যা আগস্ট'২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৬,৭৯৮.৭৩ কোটি টাকার চাইতে ১,৬৪৩ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে আগস্ট- ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.১৭%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের আগস্ট মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭,৬৪৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের আগস্ট'২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,০০৭.৬২ কোটি টাকা। আইবাস প্লাস প্লাস সিস্টেমে অর্থনৈতিক কোড পরিবর্তনজনীত কারণে কাস্টমস হাউসসমূহের উল্লেখযোগ্য পরিমান রাজস্ব সেপ্টেম্বর’২০২৫ মাসে জমা হবার কারণে এই খাতে আগস্ট ২০২৫ মাসে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধির এ ধারাকে আরও জোরালো করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীগণ কর নেট সম্প্রসারণ, কর পরিপালন নিশ্চিতকরণ এবং কর ফাঁকি উদঘাটন কার্যক্রম বেগবান করতে নিরলসভাবে কাজ করছে। সম্মানিত করদাতাগণ আইনের সুষ্ঠু পরিপালনের মাধ্যমে সময়মত যথাযথ পরিমান কর পরিশোধ করে দেশ গড়ার কাজের গর্বিত অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
মেহেরপুরের গাংনীতে অভিনব কায়দায় মটরসাইকেল করে ফেনসিডিল পাচারকালে ৪৫ বোতল ফেনসিডিলসহ লিপন হোসেন নামের এক মাদক কারবারিকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জেলার গাংনী উপজেলার ছাতীয়ান ব্রিক ফিল্ড বাজারের তিন রাস্তার মোড় থেকে এই মাদক পাচারকারিকে আটক করে পুলিশ।
আটক সাইত্রিশ বছর বয়সি লিপন হোসেন কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার তেকালা পশ্চিম পাড়ার ফরজ আলীর ছেলে।
গাংনী থানা পুলিশের এসআই শিমুল বিশ্বাস এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি ছাতীয়ান ব্রিক ফিল্ড বাজার দিয়ে এক মাদক কারবারি মাদক পাচার করছে।
আমরা এমন সংবাদ শুনে আমরা সিভিল ড্রেসে আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করি।
পরে ওই সড়ক দিয়ে একটি TVS metro মটরসাইকেল যার নম্বর কুষ্টিয়া হ-১৩২৭৬০ সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় বেরিকেড দিয়ে আটকিয়ে তল্লাশি করে মটরসাইকেলের সিট কভারের নিচে থরে থরে সাজানো ৪৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করি।
সেই সাথে মাদক পাচারের কাজে ব্যাবহৃত মটরসাইকেলটি জব্দ করে আসামি গাংনী থানায় নিয়ে আসি।
আটকৃতর বিরুদ্ধে আইনিপ্রক্রিয়া শেষে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সবধরনের সবজির দামই নাগালের বাইরে চলে গেছে।
বর্তমানে নবীনগর সদর বাজারে শিম প্রতি কেজি ২২০-২৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০-২২০ টাকা, টমেটো ১১০-১২০ টাকা, উস্তে ৯০-১০০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, পটল ৮০-৮৫ টাকা, বরবটি ৬৫-৭০ টাকা, কাকরোল ৮০-৯০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা, মুলা ৬০-৬৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬৫-৮০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, কচুর মুখি ৪০ টাকা এবং আলু ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম কাঁচামরিচ ও শিমের।
সবজির দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নবীনগর সদর বাজারে আসা ক্রেতা আলম মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের আয় সীমিত। এত দামে বাজার করা অসম্ভব। বাজেট ভেঙে গেছে।’ তবে স্বস্তির বিষয় হলো- আলুর দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালে রয়েছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরায়ও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাদের দাবি- মূলত পাইকারি বাজারের উপর নির্ভর করেই সবজির দাম ওঠানামা করে।
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে মরিচ ও সিমের উৎপাদন কমেছে। তাই সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কিছু কাঁচামরিচ ভারত থেকেও আমদানি করা হচ্ছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সরবরাহ চেইনে ত্রুটি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবজির দাম বেড়েছে। তারা মনে করেন, এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো জরুরি।
আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস উপলক্ষ্যে ফেনী শহরে আনন্দমুখর শান্তির পদযাত্রা হয়েছে। ‘সংঘাত নয়, শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রোববার শহরের ভাষা শহীদ সালাম কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়।
সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বেলুন উড়িয়ে পদযাত্রার উদ্বোধন করেন।
পিএফজি সমন্বয়ক মোরশেদ হোসেনের পরিচালনায় বর্ণাঢ্য আয়োজন করে পিস ফ্যাসিলেটেটর গ্রুপ (পিএফজি) ও ইয়ুথ পিস অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ (ওয়াইপিএজি)। পদযাত্রার অগ্রভাগে নারী নেত্রী নুর তানজিলা রহমান, মাওলানা আরফান উদ্দিন, পুরোহিত নারায়ন চক্রবর্তী, ফেনী ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সভাপতি দিলু সরকার, বৌদ্ধধর্মের গুরু প্রীতিময় ভিক্ষুর অংশগ্রহণ সম্প্রীতির বাংলাদেশের চিত্র ফুটে উঠে।
পদযাত্রায় নোয়াখালী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মলয় কান্তি সাহা, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক ও পৌরসভার প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান মেহেবুব, জামায়াতের জেলা আমির মুফতি আবদুল হান্নান, ফেনী ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সচিব ও সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক জেলা কমিটির সদস্য ডা. তবারক উল্যাহ চৌধুরী বায়েজীদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নুরুল আমিন খান, জেলা মহিলা দল সভাপতি জুলেখা আক্তার ডেইজী, জামায়াতের জেলা প্রচার সম্পাদক আ.ন.ম আবদুর রহীম, এবি পার্টির বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম বাদল, জেলা সভাপতি আহসান উল্যাহ, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, ফেনী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ আবু তাহের ভূঁইয়া ও একেএম আবদুর রহীম, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি শুকদেব নাথ তপন ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট পার্থ পাল চৌধুরী প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস শান্তি-সম্প্রীতির। আবহমানকাল থেকে দেশের মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একত্রে বসবাস করছে। আমরা চাই সকল শ্রেণি-পেশার সকল ধর্মের এবং সকল স্তরের মানুষ একত্রিতভাবে কাজ করুন। নাগরিকের যে দায়িত্ব বা অধিকার সবাই পালন করুন।’
শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। পূজার আমেজ ঘনিয়ে আসতেই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শুরু হয়েছে উৎসবের কেনাকাটার ধুম। শহরের বড় বড় বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান পর্যন্ত এখন জমজমাট কেনাবেচা চলছে। পূজাকে ঘিরে বাজারগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
রোববার সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিভিন্ন বিপণীবিতানগুলো ঘুরে দেখা যায়, পোশাক, জুতা, কসমেটিকস, ইমিটেশনের গয়না ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে। বিপণিবিতানের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ছিল নিম্নবিত্ত মানুষের চোখে পড়ার মতো আনাগোনা।
ক্রেতাদের মধ্যে তরুণ-তরুণীর উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। তারা জানান, শেষ সময়ে ভিড় এড়াতে আগেভাগেই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ।
ভুড়ভুড়িয়া চা-বাগান থেকে শপিং করতে আসা দিপা ভৌমিক জানান, ‘দুর্গাপূজা আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। প্রতিবছরই পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক ও উপহার কিনি। এবারও পরিবারের সবাইকে নিয়ে মার্কেটে এসেছি।’
কেনাকাটা করতে আসা রুপন নামের এক ক্রেতা জানান, ‘পূজাকে ঘিরে তার রয়েছে বিশেষ উচ্ছ্বাস। শেষ মুহূর্তের ভিড় আর হুড়োহুড়ি এড়াতেই এখনই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছি। আসলে পূজার আনন্দ কেবল মণ্ডপে ঘোরাঘুরিতেই সীমাবদ্ধ নয়, কেনাকাটার মধ্যেও থাকে উৎসবের আসল রঙ। এ মুহূর্তে বাজারে ভিড় তুলনামূলক কম, তাই স্বাচ্ছন্দ্যে পছন্দমতো জিনিস কেনা যাচ্ছে। তবে কয়েকদিন পর যখন মানুষের ঢল নামবে, তখন এভাবে নিশ্চিন্তে কেনাকাটা করা আর সম্ভব হবে না।’
অন্যদিকে শহরের স্বর্ণ অলঙ্কারের দোকানগুলোতেও বিক্রি বাড়ছে সমানতালে। নারীরা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন চুড়ি, মালা, আংটি, গলার হার ও প্রসাধনী সামগ্রী। বিক্রেতা পঞ্চম হাজরা জানান, পোশাকের পাশাপাশি মেয়েদের স্বর্ন অলঙ্কার, সিঁদুর ও অন্যান্য অনুষঙ্গের চাহিদাও বেড়েছে।
স্টেশন রোডের মদিনা মার্কেটের ‘গীতাশ্রী বস্ত্রালয়ের বিক্রেতা লিটন অধিকারী জানান, ‘এবার ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ডিজাইনের কামিজ, কুর্তি, থ্রি পিছ, ঘের দেওয়া জামা, বিভিন্ন ধরনের থানকাপড় ও নারীদের জন্য জামদানীসহ বিভিন্ন ধরনের বেনারশী সফট কাতান, তসর, বিভিন্ন ধরণের সিল্ক শাড়ি, জর্জেট শাড়ি, হাফসিল্ক, দুপিয়ান শাড়ি এবং দেশি তাঁতের শাড়িও এনেছি। আজ ক্রেতা সমাগম অনেক বেশি। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আশা করছি, এ বছর ব্যবসা বেশ সফল হবে।’
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের বালিশিরা ভ্যালি সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, ‘আমাদের চা শ্রমিকদের পূজার কেনাকাটা এখনও শুরু হয়নি। আজ সোমবারে চা বাগানগুলোতে উৎসব ভাতা-বোনাস পাওয়ার পর চা শ্রমিকরা পূজার কেনাকাটা করবেন।’
শহরের বিপণিবিতান ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে এখন বইছে উৎসবের হাওয়া। পূজার দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। জমে উঠেছে শ্রীমঙ্গলের শারদীয় দুর্গাপূজার কেনাকাটা।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূজামন্ডপ, বিপণিবিতান ও জনসমাগমস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। আমরা চাই, পূজা ঘিরে যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অশান্তির ঘটনা না ঘটে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসলাম উদ্দিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আসন্ন দুর্গাপূজাকে ঘিরে শহরের মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে উপজেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ নজরদারি রয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসন সর্বদা তৎপর। পূজার সময় যাতে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে কেনাকাটা ও উৎসব পালন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে ময়মনসিংহ অঞ্চল পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আছিম পাটুলি ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়ী লাঙ্গল শিমুল পাকা রাস্তা ভায়া শ্রীফুলিয়া রাস্তার নির্মাণ কাজে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানাগেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৮৪ লাখ ৮৩ হাজার ৮১ টাকা বরাদ্দে জঙ্গলবাড়ী লাঙ্গল শিমুল পাকা রাস্তা ভায়া শ্রীফুলিয়া ৬১১ মিটার রাস্তার কার্যাদেশ পায় ফাহাদ এন্টারপ্রাইজ নামীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চুক্তি মোতাবেক ২০২৪ সালের ২৯ জুন কাজ সমাপ্ত করার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়েও কাজ সমাপ্ত করেননি প্রতিষ্ঠানটি। নির্মাণ সংক্রান্তে সময় বাড়িয়েও যথাসময়ে তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় স্থানীয়রা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন। যার দরুন দ্রুত কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গত ৬ মে ঠিকাদারকে লিখিত চিঠি দিয়ে অবহিত করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, এ প্রকল্পের রাস্তায় কোন সাইনবোর্ড নেই। রাস্তার শুরুতেই নিচু জায়গাতে মাটি ভরাট না করায় পুকুরের পানি ও রাস্তা প্রায় একাকার হওয়ার উপক্রম হয়ে গেছে। পুকুরে প্যালাসাইডিং থাকলেও সেগুলোও তলিয়ে গেছে। ডব্লিউ বিএম (মেকাডম) এর কাজে উন্নত মানের পিকেট ইট ব্যবহার না করে নাম্বারহীন ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তার কাজে কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মান কাজে শুরু থেকেই অনিয়ম করছেন। মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করার কথা থাকলেও তা মানেনি। এছাড়ও এএস (এগ্রিগেট সেন্ট) এ খোয়া বালির মিশ্রিত লেয়ারেও নিম্নমানের কাজ করা হয়। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অবহিত করলেও তাদের ভূমিকা অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ বলেও জানায় এলাকাবাসী।
শিক্ষার্থী শুভ ও ইফাদ বলেন, দুর্নীতি ও অনিয়ম রুখে দিতেই আমরা জুলাই আন্দোলন করেছি, আমাদের এ সামান্যতম রাস্তাতেও সেই অনিয়মই করা হচ্ছে। এটি খুবই দুঃখ জনক। ঠিকাদারের অনিয়ম নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলেই তিনি কাজ বন্ধ করে দেন।
ইয়াহইয়া হাসান বলেন, রাস্তার নির্মাণ কাজে প্রথম থেকেই অনিয়ম করা হচ্ছে। কেউ কিছু বললে ঠিকাদার কাজ অফ করে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই আচরণ করে আমাদের ভোগাচ্ছেন। রাস্তার তদারকির দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব সাহেবও ঠিকাদারের সাথে সুর মিলিয়ে কথা বলছেন। তিনি কাজের মান নিয়ে কোন কিছু না বলার কথাও বলেন। তবে তদারকির দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুব হাসান জানান তিনি এলাকার লোকজনকে কিছুই বলেননি।
অধ্যক্ষ মাওলানা ইসমাইল হোসেন বলেন, নিম্নমানের কাজ হওয়ায় আমরা প্রতিবাদ করি। যার ফলে ঠিকাদার রাস্তার কাজ ফেলে রেখে চলে গেছে। সেইসাথে তিনি এ রাস্তার কাজ করবেন না বলে হুমকি দেন । এর আগওে তার অনিয়ম নিয়ে কথা বললে তিনি সেইম আচরণ করেন। ঠিকাদারের কারণে গত দুই বছর ধরে আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কথা বললেই কাজ বন্ধ করে দেয়।
রমজান আলী বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতি করছেন। কেউ কথা কইলেই কাজ না করার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে আবার কাজ শুরু করে। তিনি একরকম আমাদেরকে ব্ল্যেকমেইল করেই কাজ করতেছেন। মেকাডমের কাজে যেই খোয়া দিচ্ছে তা স্থানীয় ভাটার ফেলে দেওয়া খোয়া। পা দিয়ে চাপা দিলেই তা ভেঙ্গে যায়। উর্ধ্বতন কর্তৃপপক্ষ যদি রিপোর্ট দেয় ঠিকাদারের কাজ সিডিউল মাফিক হচ্ছে তাহলে আমাদের আর কোন কথা নেই। তিনি কাজের অনিয়ম বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মোতালেব মিয়া বলেন, কাজের সিডিউলে রাস্তার নিচু যায়গায় ভরাট করতে প্রায় ৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা বরাদ্দ আছে। ঠিকাদার বাহির থেকে কোন মাটিই আনেননি। বরংচ নিচু জায়গায় নিচু রেখেই রাস্তার কাজ শুরু করেছেন। ঠিকাদারের অনিয়মই যেনো এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
এবিষয়ে ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বর্ষা থাকায় সিরামিক্সের ইট নিতে পারেননি, তাই লোকাল ভাটার খোয়া নেওয়া হয়েছিল। বর্ষা উঠলেই মাটির কাজ ও সিরামিক্সের ইট দিয়েই কাজ করবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জোবায়ের হোসেন জানান, ঠিকাদারকে মাটির কাজ শেষ করে রাস্তার কাজ করতে বলেছি। অতিদ্রুত নিম্নমাণের খোয়াগুলো রাস্তা থেকে সরিয়ে ভালো খোয়া দিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর নিজ এলাকা যশোরের কেশবপুরে আসলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। গত শনিবার বিকেলে তিনি কেশবপুরে এসে পৌঁছান। এ সময় কয়েকশ মোটরসাইকেল ও যানবাহনযোগে তাকে স্বাগত জানান বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী। শ্রাবণের আগমন উপলক্ষে আগে থেকেই কেশবপুর শহরসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়। কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ কেশবপুরে প্রবেশ করলে রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে সাধারণ জনতা হাত নেড়ে তাকে স্বাগত জানান। কেশবপুরে এসেই তিনি সর্বপ্রথম জনপ্রিয় বিএনপি নেতা ও মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চার বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রয়াত আবু বকর আবুর কবর জিয়ারত করেন। পরে তিনি কেশবপুরে পথসভা ও বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা সম্বলিত প্রচারপত্র বিতরণ করেন। শহরের ত্রিমোহিনী মোড় চত্বরে তার আগমন উপলক্ষে বিএনপি নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে এক পথসভার আয়োজন করা হয়। পথসভায় সভাপতিত্ব করেন কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি সাবেক কাউন্সিলর মশিয়ার রহমান। বক্তব্য রাখেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শামছুল আলম বুলবুল, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল হালিম অটল, উপজেলা যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর কবির মিন্টু, পৌর সেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম পলাশ প্রমুখ।
এদিন দুপুরে যশোরে পৌঁছে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের কবর জিয়ারত করেন। কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন। তার বাড়ি কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের চিংড়া গ্রামে। তিনি রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘ ১৭ বছর ঢাকাতে অবস্থান করছিলেন। দলের বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রামে শ্রাবণ সামনে থেকে দিয়েছেন নেতৃত্ব। যে কারণে বহুবার তাকে হামলা-মামলার শিকারও হতে হয়েছে। ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি পত্রে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি করা হয়। পরে ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর শ্রাবণকে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। দলকে সুসংগঠিত করতে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ কাজ করে চলেছেন। ইতোমধ্যেই কেশবপুরে তাকে নিয়ে সর্বমহলে আলোচনা চলছে। তিনি বিএনপি থেকে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে সংসদ সদস্য পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে জানা গেছে।
কুমিল্লার মুরাদনগরে আসন্ন সারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকালে উপজেলা পরিষদের কবি নজরুল মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসন। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার জহিরুল ইসলাম সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাসান খান, তথ্য প্রযুক্তির সহকারী প্রোগ্রামার রাফিত আহম্মেদ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিনিয়ার ওয়ারেন্ট অফিসার মো. জসিম উদ্দিন, মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান, বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ জোনাল পল্লি বিদ্যুৎ ডি.জি.এম মো. মহিউদ্দিন, রাহিমপুর আজাচক আশ্রমের ড. মানবেন্দ্র যুগল ব্রহ্মচারি।
সভায় বক্তব্য রাখেন, দুলাল দেবনাথ, অরুপ নায়ায়ন পোদ্দার, দিন দয়াল পাল, চেয়ারম্যান শুকলাল দেবনাথ, ভিপি জাকির, নবিপুর পশ্চিম ইউনিয়নের বি.এন.পি নবিপর পশ্চিম ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হেদায়াত হোসেন প্রমুখ।
এছাড়াও সভায় উপজেলা বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতরা মতামত প্রদান করেন।
সভায় বক্তারা পূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, বিদ্যুৎ ও আলোকসজ্জা, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এ বছর মুরাদনগর উপজেলায় মোট ১৫৩টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু, সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখরভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে কতিপয় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সবশেষে ১৫৩ টি সার্বজনীন পূজা মণ্ডপের অনুকুলে ৫০০ কেজি করে জি আর চাল এর ডিও বিতরণ কর্মসূচী উদ্বোধন করা হয়।
ঝিনাইদহের পাঁচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে সিজারিয়ান অপারেশন। মহেশপুর, হরিণাকুন্ডু, শৈলকুপা, কালীগঞ্জ ও কোটচাঁদপুরে দীর্ঘদিন ধরে এ সেবা বন্ধ থাকায় প্রসূতিদের বাধ্য হয়ে ছুটতে হচ্ছে দূরের বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে। এতে একদিকে বাড়ছে চিকিৎসা ব্যয়, অন্যদিকে মা ও নবজাতক পড়ছেন চরম ঝুঁকিতে।
জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় এক বছর ধরে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ। একই পরিস্থিতি অন্য চার উপজেলাতেও। এনেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ ও গাইনি চিকিৎসকের অভাবেই এ সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। অথচ হাসপাতালগুলোতে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার, অক্সিজেন সিলিন্ডার, স্যালাইন স্ট্যান্ডসহ সব সরঞ্জাম ব্যবহার উপযোগী অবস্থায় আছে। প্রসূতি শিরিন আক্তার বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে গেলে খরচ কম হতো। কিন্তু এখন বাধ্য হয়ে দূরের ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে। তাতেও চিকিৎসক সবসময় থাকেন না।’
কালীগঞ্জের কৃষক রহমত আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি হাসপাতালেই যদি চিকিৎসা না পাই, তাহলে আমরা যাব কোথায়? ডাক্তার না দিলে গরিব মানুষ আরও বিপদে পড়বে।
হরিণাকুন্ডুর গৃহবধূ ফারজানা খাতুন জানান, ‘ক্লিনিকে গেলে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। গরিব মানুষ কীভাবে এই টাকা জোগাড় করবে? তারপরও বাধ্য হয়ে ক্লিনিকেই যেতে হচ্ছে।’
ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘সব উপজেলাতেই অপারেশনের যন্ত্রপাতি রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসক সংকট বড় সমস্যা। দ্রুত পদায়ন হলে আবারও সিজারিয়ান চালু করা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, চিকিৎসক থাকলে শুধু এই পাঁচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই প্রতি মাসে অন্তত ২০০ প্রসূতি সরকারি সেবা পেতেন। দীর্ঘদিন ধরে সিজারিয়ান বন্ধ থাকায় গরিব পরিবারগুলো চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মাগুরা জেলা কার্যালয় কর্তৃক সদর উপজেলার ভায়না মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় হোটেল ও মুদিদোকানসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রতিষ্ঠান তদারকি করে মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে । রোববার মাগুরা সদর উপজেলার ভায়নার মোর এলাকায় মেসার্স সোনার বাংলা হোটেল তদারকিকালে বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া যায়। রান্না ঘরের অবস্থা খুবই স্যাতসেঁতে ও নোংরা, কর্মচারীদের নাই কোন স্বাস্থ্যবিধি, নোংরা মেঝেতে যত্রতত্র খাবার খোলা রাখা হয়েছে। মাছ-মাংসের রক্ত চর্বিযুক্ত নোংরা ফ্রিজে গতদিনের বাসি গ্রিল ও মুরগির চাপ সংরক্ষণ করা হয়েছে আবার গরম করে খাওয়ানোর জন্য। খোলা রাখা মিষ্টির গামলায় পরে আছে মাছি তেলাপোকার বাচ্চাসহ নানা পোকা। মুল্যতালিকা আপডেট করা হয়না ২০দিন যাবত। খাবার রাখতে ও ঢাকতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ খবরের কাগজ ও ছাপা কাগজ। পুর্বে ভোক্তা অধিকার ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ অফিস কর্তৃক তাদের নিয়ে মিটিং করলেও হোটেলের রান্নার পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাবার তৈরি ও সংরক্ষণের বিষয়ে তাদের মধ্যে কোন উন্নতিই পরিলক্ষিত হয়নি। অস্বাস্থ্যকরভাবে খাবার তৈরি, সংরক্ষণ ও গতদিনের বাসি গ্রিল ও মুরগির চাপ সংরক্ষণ করে পুনরায় বিক্রয়ের অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো: উজির বিশ্বাসকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৩ ধারায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় ফ্রিজে রাখা বাসি গ্রিল ও চাপ এবং অস্বাস্থ্যকর পাত্রে রাখা সস নষ্ট করে দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে এধরণের আইন অমান্যকারী কার্যকলাপ না করার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়।
পরবর্তীতে অন্যান্য পণ্যের প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়। এসময় সবাইকে আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা, ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয়, মুল্যতালিকা প্রদর্শন ও ক্রয় বিক্রয় ভাউচার সংরক্ষণের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মাগুরা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সুমন অধিকারী ও মাগুরা জেলা পুলিশের একটি টিম।
উত্তর চট্টগ্রামে রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা প্রবাসী মোহাম্মদ হামিদ ওমানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। অবসরে একদিন ইউটিউবে ভিয়েতনামি হলুদ মাল্টা চাষের ভিডিও দেখেন। ২০২২ সালে ছুটিতে দেশে এসে তিনি রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নে পৈতৃক দুই বিঘা পরিত্যক্ত জমিতে উন্নত জাতের হলুদ মাল্টার ৪০০ গাছ রোপণ করেন। এতে খরচ হয় প্রায় ১৩ লাখ টাকা। রোপণের চার বছরের মধ্যে ফলন এসেছে। চলতি বছর পাঁচ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি হবে। সরেজমিন দেখা যায়, হামিদের বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে পাকা মাল্টা। আকারে বাজারের বিদেশি মাল্টার চেয়ে বড়। বাগানে মিশ্র ফল হিসেবে লাগানো হয়েছে উন্নত জাতের আম, লেবু, কলা, পেয়ারা, পিংক কাঁঠাল, লিচু গাছ। বর্তমানে বাগানে মাল্টার সঙ্গে উৎপাদিত হচ্ছে আম, কলা, পেয়ারা ও লেবু। পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত রুহুল আমীন জানান, বাগানের সব গাছে ধরেছে মাল্টা। বাগান থেকেই ২৫০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মাল্টা ফরমালিনমুক্ত। এদিকে হামিদের হলুদ মাল্টার বাগান দেখতে আসেন স্থানীয়রা। অনেকে নিজের হাতে গাছ থেকে ছিঁড়ে মাল্টা কেনার সুযোগটা নিচ্ছেন। কেউ কেউ মাল্টা কিনে বাগানেই কেটে খাচ্ছেন। প্রবাসী হামিদের পিতা মোহাম্মদ হারুন বলেন, ‘আমিও দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। ছেলে প্রবাস থেকে বাগান করার উদ্যোগ নেয়। আমিও উৎসাহ দিয়েছি, বাগান করতে সহযোগিতা করছি।’ রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকভাবে সবুজ মাল্টার চাষ হয়েছে। কিন্তু হামিদই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ভিয়েতনামি হলুদ রঙের মাল্টার চাষ করেছেন। এই মাল্টা সুস্বাদু। কৃষি বিভাগ থেকে তাকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাল্টা একটি পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ফল। দেশে উৎপাদন বাড়ানো গেলে, আমদানি কমে আসবে এবং দেশের মানুষ ফরমালিনমুক্ত ফল খেতে পারবেন।’ মাল্টা কিনতে আসা ফাহমিদা আক্তার বলেন, ‘বাজারে বিদেশি মাল্টার কেজি ৩০০ টাকা। বাজারের ফলে ফরমালিন থাকার আশঙ্কা আছে। কিন্তু হামিদের বাগানে যে মাল্টা বিক্রি হচ্ছে সেগুলো শতভাগ নিরাপদ। দাম হাতের নাগালে। খেতে বাজারের মাল্টার চেয়েও সুস্বাদু।’ বাগানের কর্মচারী সবুজ দাশ জানান, মাসে ১২ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করছেন তিনি। এই বাগানে চাকরি করে পরিবার চালান। তিনি বলেন, ‘কিছু গাছের মাল্টা বিক্রির উপযোগী হয়েছে। তবে ফলগুলো পুরোপুরি পাকতে আরও ২০ দিন লাগতে পারে।’
থাকেন বিদেশে, অথচ বাগান করলেন দেশে- এই প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ হামিদ বলেন, ‘একদিন ইউটিউবে হলুদ মাল্টা বাগানের একটি ভিডিও দেখি। প্রায় ১০ মিনিটের ভিডিওটি আমার চোখ খুলে দেয়। সেদিনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম দেশের বাড়িতে মাল্টা বাগান করব। ২০২২ সালে বাগান করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা। প্রথম বছর মাল্টা তুলিনি। গত বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা উৎপাদান শুরু হয়। এ বছর পাঁচ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রির আশা করছি।