রোববার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

শেরপুরে নতুন করে আরও ৭ ইউনিয়ন প্লাবিত

শনিবার শেরপুুরে নতুন করে প্লাবিত হয় আরও সাতটি ইউনিয়ন। ছবি: সংগৃহীত
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১৬:২৫

শেরপুরের চারটি পাহাড়ি নদীর উজানের পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে জেলার ভাটি এলাকায় নতুন করে আরও সাতটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এর মাধ্যে রয়েছে শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলা। এ নিয়ে জেলার পাঁচটি উপজেলায় মোট ৩০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হলো। জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাত থেকেই প্লাবিত হতে শুরু করে নতুন এলাকাগুলো। জেলার গাজীরখামার, ধলা, পাকুরিয়া ও নকলা পৌর পুরো নকলা উপজেলাই বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

আজ রোববার সকালে শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার ভোগাই নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং চেল্লাখালী নদীর পানিও ৫৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া অপর দুটি পাহাড়ি নদী- মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড আরও জানিয়েছে, বন্যার কারনে শেরপুর নাকুগাঁও স্থলবন্দর পরো স্থবির হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে অসংখ্য গ্রামীণ পাকা-কাঁচা রাস্তা। তলিয়ে গেছে কৃষকের উঠতি আমনের খেত। ভেসে গেছে কাঁচা ঘর-বাড়ি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাকিবুজ্জামান খান বলেন, আগামীকাল সোমবারের ভেতর কমবে সব নদীর পানি, উন্নতি হবে বন্যা পরিস্থিতির। জেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত জেলার সাড়ে ৩৫ হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের আবাদ পানিতে তলিয়ে গেছে। সাড়ে ৯শ হেক্টর জমির সবজির আবাদ পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

এদিকে, শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্যার পানির স্রোতে নিখোঁজ হওয়া দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে এই জেলায় বন্যায় সাত জনের মৃত্যু হলো। গতকাল শনিবার উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর কুতুবাকুড়া গ্রামের ফসলের মাঠ থেকে দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন- হাতেম আলী (৩০) ও তার ভাই আলমগীর হোসেন (১৮)। তারা অভয়পুর গ্রামের মৃত বাছির উদ্দিনের ছেলে। এর আগে নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীতে বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে ইদ্রিস আলী, খলিলুর রহমান ও বাঘবেড় বালুরচর গ্রামের ওমিজা বেগমসহ ৫ জন।

নিহতের স্বজনরা জানান, গত শুক্রবার চেল্লাখালী নদীর পাহাড়ি ঢলের স্রোতের তোড়ে নিখোঁজ হন সহোদর দুই ভাই। এরপর থেকে তাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। কুতুবাকুড়া গ্রামের দুইজন কৃষক গতকাল শনিবার বিকেলে ধানক্ষেতে তাদের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্বজনরা গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।

জেলায় বন্যায় উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। জানা গেছে, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিএনপি, জামায়াত ও স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের উদ্যোগে বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে অভিযান চললেও পানির প্রবল স্রোত আর পর্যাপ্ত নৌযানের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার কাজ।

বিষয়:

নওগাঁয় ভটভটি উল্টে প্রাণ গেল গরু ব্যবসায়ীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় গরু বোঝাই একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ভটভটি উল্টে গিয়ে ভটভটির নিচে চাপা পড়ে রেজাউল ইসলাম (৪২) নামে এক গরু ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে আত্রাই উপজেলার বজ্রপুর তাতীপুকুর ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত রেজাউল ইসলাম বজ্রপুর গ্রামের কিয়ামত আলীর ছেলে।

দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাহাবুদ্দিন জানান, নিহত রেজাউল ইসলাম গরু কেনা-বেচার ব্যবসা করতেন। শনিবার সকালে গরু বিক্রি করার উদ্দেশ্যে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ভটভটি করে পাশ্ববর্তী হাটে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হলে বজ্রপুর তাতীপুকুর এলাকায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে খাদে পড়ে যায়। এতে রেজাউল ইসলাম ভটভটির নিচে চাপা পড়ে বুকে ও পিঠে মারাত্মক আঘাত পায়।

তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথে তাঁর মৃত্যু হয় বলেও জানান তিনি।

আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তবে ঘটনার বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি।'


ভোলায় আরও ১৯টি গ্যাস কুপ খননের পরিকল্পনা আছে: জ্বালানি উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ভোলায় ২০২৮ সালের মধ্যে আরো ১৯টি গ্যাস কূপ খনন করার পরিকল্পনা আছে। তিনি বলেন, গ্যাস সংকট দূর করতে ভোলাতে পরিকল্পনা করে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫টি গ্যাস কূপ খনন করা হবে। আর ২০২৮ সালের মধ্যে আরও ১৪টিসহ মোট ১৯টি গ্যাস কূপ খনন করার পরিকল্পনা আছে।

আজ শুক্রবার ভোলার ইলিশা-১ গ্যাস ক্ষেত্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ সব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, দেশে প্রচুর পরিমাণ জ্বালানি গ্যাসের সংকট রয়েছে। ফলে গ্যাস আমদানিতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয়। আমাদের এখন ৪ হাজার এমসি গ্যাস দরকার, সেখানে আমরা পাচ্ছি মাত্র ২ হাজার। আমরা বর্তমানে বিভিন্ন দেশ থেকে গ্যাস আমদানি করছি, এতে আমাদের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে। ঘাটতি মেটানোর জন্য বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার এলএনজি আমদানি করা হয়। আমরা জোড়ালোভাবে চেষ্টা করছি নতুন-নতুন গ্যাস ফিল্ড তৈরি করে গ্যাসের উৎপাদনমুখী হওয়ার।

ফাওজুল কবির খান বলেন, এখন থেকে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়া কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হবে না এবং টেন্ডারের মাধ্যমে যার কাছে ভালো প্রস্তাব পাওয়া যাবে তাকে কাজ দেয়া হবে। এসব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শ নেয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা সব বড়-বড় প্রকল্প গ্রহণ করেছি। কিন্তু মানুষের প্রয়োজনটাকে গুরুত্ব দেইনি, তাই দুর্নীতি বেশি হয়েছে এই ধরনের বড় প্রকল্পে। আমরা জনগণের চাহিদাকে গুরুত্ব দিতে চাই।

এ মুহূর্তে বাসা-বাড়িতে গ্যাস দেয়া হবে, আমাদের জন্য এটি মিথ্যা আশ্বাস। আমি যেহেতু রাজনীতি করবো না, তাই এই ধরনের মিথ্যা আশ্বাস দেবো না। বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহের প্রসঙ্গ টেনে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, তবে ভবিষ্যতে সারা দেশে গ্যাস সরবরাহ বাড়লে তখন এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।

এ সময় ভোলার বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান ও গ্যাস ভিত্তিক শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দেন তিনি। ভোলায় একদিনের সরকারী সফরে তিনি এখানকার বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র, ভোলা নর্থ-১, নর্থ-২ ও ইলিশা-১ নং গ্যাসক্ষেত্র পরিদর্শন করেন। বিকেলে তিনি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার গ্যাসচালিত ২২৫ ও ২২০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও পরিদর্শন করেন।

এসময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব এসএম মঈন আহমেদ, পেট্টোবাংলার চেয়ারম্যান, ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


ইউপিডিএফের ৩ কর্মীকে গুলি করে হত্যা

আগামীকাল খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল
আপডেটেড ৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১৯:৫৭
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

খাগড়াছড়ির পানছড়িতে প্রকাশ্যে দুর্বৃত্তদের গুলিতে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রসীত গ্রুপের তিন কর্মী নিহত হয়েছেন।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে পানছড়ির লতিবান ইউনিয়নের শুকনাছড়ির শান্তিরঞ্জন পাড়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। পানছড়ি থানার ওসি মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন- সিজন চাকমা, শাসন ত্রিপুরা ও জয়েন চাকমা। তারা ইউপিডিএফ-এর সদস্য বলে নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।

স্থানীয়রা জানান, ওই তিন জন শান্তিরঞ্জন পাড়ায় একটি বাড়িতে বসে থাকার সময় মুখোশ পরে কয়েকজন এসে তাদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

অংগ্য মারমা জানান, নিহতরা ওই এলাকার স্থানীয়ভাবে সাংগঠনিক কাজ করতেন। ১৩/১৪ জনের একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন। এই ঘটনার জন্য তিনি নব্য ‘মুখোশ বাহিনী’কে দায়ী করেছেন।

পানছড়ি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিমউদ্দীন দুপুরে বলেন, গোলাগুলির খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলটি দুর্গম এলাকা হওয়ায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। সেখানে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

তিন ইউপিডিএফ কর্মীকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনীদের গ্রেপ্তার-শাস্তির দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইউপিডিএফ। গতকাল দুপুরে এক বিবৃতিতে অবরোধের ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এর আগে গত বছর এই সন্ত্রাসীরা পানছড়ির পুজগাঙে বিপুল চাকমাসহ চার জনকে হত্যা করলেও তাদের বিরুদ্ধে সরকার-প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’


দেশের ৮ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশের ৮ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো- জয়পুরহাট, রাজশাহী, রাজবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, শরীয়তপুর ও নাটোর।

আজ বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে উপসচিব পদমর্যাদার এসব কর্মকর্তাকে ডিসি নিয়োগ দিয়ে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এর মধ্যে পরিকল্পনা বিভাগের উপপ্রধান আফরোজা আকতার চৌধুরীকে জয়পুরহাট, চট্টগ্রাম ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার আফিয়া আখতারকে রাজশাহী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত উপসচিব মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞাকে রাজবাড়ী, সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জের ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া অর্থ বিভাগের উপসচিব মো. তৌফিকুর রহমানকে কুষ্টিয়া, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. রফিকুল ইসলামকে দিনাজপুর, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনকে শরীয়তপুর এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত উপসচিব আসমা শাহীনকে নাটোরের ডিসি করা হয়েছে।


কোটিপতি বনে যাওয়ার পেছনের গল্প ‘ক্রসফায়ার বাণিজ্য’

অভিযোগ থাকার পরও বহাল তবিয়তে অপরাধের গডফাদার আমিন # মাদকের তকমা দিয়ে ক্রসফায়ারের হুকুম
মো. আমিনুল হক। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১৭:০১
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)

একসময়ে বাজারের ছোট্ট একটি মাইকের দোকান নিয়ে মাইকিং করতেন আমিনুল হক। এক চালা ঘরে পরিবারের লোকজন নিয়ে থাকতেন ঠাসাঠাসি করে। মাইকের দোকান নিয়ে চলছিল না তার পরিবার। তাই যুক্ত হন পুলিশের সোর্স হিসেবে। এভাবেই চেনা হয় চোরাচালানের অলিগলি এবং গডফাদারদের। কাজ শুরু করেন ওসি প্রদীপের বিশ্বস্ত সোর্স হিসেবে। এর সূত্র ধরে টেকনাফ হোয়াইক্যং ইউনিয়নে মাদক কারবারিদের তালিকা তৈরি করেন। কোটি টাকার চাঁদা আদায়ের দায়িত্ব দেন ওসি প্রদীপ তাকে। তখন আমূল বদলে যান তিনি। টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে হয়েছে তার কোটি টাকার বাড়ি। কোটি কোটি টাকার জায়গা কিনে রেখেছেন। হঠাৎ শূন্য থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া আমিনের পেছনের গল্প প্রদীপ ‘ক্রসফায়ার বাণিজ্য’।

প্রদীপের রাজত্বের ছোঁয়ায় রাতারাতি ধনী বনে যাওয়া এ ব্যক্তির নাম আমিনুল হক প্রকাশ মাইক আমিন। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে ভুক্তভোগী পরিবার, যে মামলায় আসামি রয়েছে প্রদীপসহ কয়েকজন পুলিশ অফিসার। অনেক নিরীহ মানুষকে প্রদীপের ভয় দেখিয়ে যেসব টাক আত্মসাত করেছেন, সেগুলোর জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

টেকনাফ কক্সবাজার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের দফাদার আমিনের বিরুদ্ধে প্রদীপের রাজত্বের সুযোগে ক্রসফায়ারে ভয় দেখিয়ে প্রবাসী এবং মাদক কারবারিদের কাছ থেকে ঘুস গ্রহণ, চাঁদাবাজি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারিদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা গ্রহণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল।

স্থানীয়দের দাবি, আমিনুল হক ও প্রদীপ নিজে মাদকের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। ক্রসফায়ার দেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে সরাসরি জড়িত ছিলেন আমিন। প্রদীপের সঙ্গে রাতের অন্ধকারে তল্লাশির নামে নিরীহ মানুষের ঘরে লুটপাট, নিরীহ ব্যক্তিদের আটক করে টাকা আদায় করতেন তিনি। ওসি প্রদীপে মাধ্যমে ইয়াবা সিন্ডিকেটকে অর্থের বিনিময়ে নির্বিঘ্নে অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ পেয়েটিলেন তিনি। এছাড়া আমিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাধারণ মানুষকে ঘরছাড়া করা, টাকা না পেলে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যার করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া ছিল তার দায়িত্ব। সে টাকায় এখন আলিশান জীবন যাপন করছেন মো. আমিন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফ হোয়াইক্যংয়ে দুটি ফ্ল্যাট তিনি থাকেন, যার মূল্য দুই কোটি টাকা। বিভিন্ন জায়গায় দুই কানি তার নামে জমি রয়েছে। ২০১৯ সালে চৌকিদার পদে যোগদান করেন হোয়াইক্যং ইউনিয়নের আমিনুল হক। ২০২০ তিনি প্রদীপের হয়ে মাঠে ময়দানে কাজ শুরু করেন।এরপর থেকে তিনি ফুলেফেঁপে উঠতে থাকেন। এরপর ক্রসফায়ার ব্যবসার টাকায় রাতারাতি অঢেল সম্পদের মালিক হতে শুরু করে নিজের ও বউয়ের পরিবার। নুর হাফেজ বলেন, খুব নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার তাদের। এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, কিছুদিন আগেও ৩৮ শতক জমি কিনেছেন। তার কৃষিজমি রয়েছে ৫০ বিঘার মতো। শুধু গ্রামের বাড়িতে নয়, কক্সবাজার শহরেও তার তিনতলা বাড়ি আছে। আর এ সবই করেছেন নানা ধরনের অপরাধ করে।

ভুক্তভোগী মো, ইসমাইল বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ২য় প্রদীপ ছিল মো. আমিন। আমাদের এলাকায় একধরনের রাজত্ব কায়েম করেন তিনি। প্রদীপের নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি টাকার আত্মসাত করেন আমিন। আমার ভাইকে মাদকের তকমা দিয়ে ২০ লাখ নিয়েও ক্রসফায়ার দেন আমিন ও প্রদীপ। আলোচিত মেজর সিনহা ঘটনার আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করি।’ আরেক ভুক্তভোগী পরিবার বলেন, ফাঁসির আসামি সাবেক ওসি প্রদীপ যখন ক্রসফায়ার দেওয়া শুরু করেন, তখন ঘুষ বার্ণিজ্য করতে নেমে যান আমিন। অসহায় অসংখ্য মানুষকে হয়রানির শিকার করেন। আমাকে মামলায় ঢুকাবে বলে ৫ লাখ টাকা নেয় আমিন। স্থানীয় রাশেল জানান, তার মতো অন্যদেরও প্রশ্ন- কী করে এত দ্রুত কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেলেন পুলিসের সোর্স আমিন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আমিন বলেন, ‘আমি প্রদীপের হুকুম পালন করতাম। আমি যে টাকা নিতাম সে টাকা প্রদীপকে বুঝিয়ে দিতাম। সেখান থেকে আমি কিছু পেতাম।’ বাকি গুলো মিথ্যা বলে মোবাইল ফোন কেটে দেন। রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘একজন সাধারণ ইউনিয়নের দফাদার হয়ে বিলাস বহুল মার্কেটে রয়েছে তার নামে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, আমিন প্রদীপের সহযোগী এবং ক্রসফায়ারে অন্যতম মাস্টারমাইন্ড। এসব অভিযোগ থাকার পর তিনি এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। আমার দাবি তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’ এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সালা উদ্দিন বলেন, ‘আমরা তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’


অভিযান সত্ত্বেও বন্ধ নেই ইলিশ নিধন

১৫ জেলে আটক। ১ লাখ ৭৫ হাজার মিটার জাল ও ৩০ কেজি ইলিশ জব্দ
মা ইলিশ ধরা বন্ধে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে অভিযান। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১৭:০১
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

প্রজনন মৌসুমে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা চলছেই। মৎস্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযান সত্ত্বেও থামানো যাচ্ছে না মা ইলিশ নিধন। বিস্তারিত প্রতিবেদকদের পাঠানো প্রতিবেদনে।

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে মা ইলিশ শিকার বন্ধে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ৫ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল ধ্বংস করা হয়েছে।

সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিমা বিনতে আখতার উপজেলার কুঠিবয়ড়া এলাকায় এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অফিসার সুদীপ ভট্টাচার্য।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যমুনা নদীতে মা ইলিশ শিকার বন্ধে অভিযান চালিয়ে ৫ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

শিবচর (মাদারীপুর):

মাদারীপুর জেলার শিবচরের পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়ে ১৫ জেলেকে আটক করেছে পুলিশ। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পাঁচজনকে পাঁচ হাজার করে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ১০ জনকে আট দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা মৎস্য অফিস। এর আগে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পাঁচ জেলেকে আটকসহ ৪০ হাজার মিটার জাল জব্দ করে তারা।

মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ রক্ষায় রোববার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পদ্মা নদীতে অভিযান চালায় মৎস্য অফিস ও উপজেলা প্রশাসন ও নৌপুলিশ। দুপুর পর্যন্ত অভিযানে পাঁচ জেলেকে আটক করা হয়। এসময় ৩০ কেজি ইলিশ ও ৪০ হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়।

এরপর দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অভিযানে ১৫ জন জেলেকে আটক এবং ১ লাখ ৩০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ৩০ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়।

পরে উদ্ধারকৃত ইলিশ স্থানীয় ২টি এতিমখানায় বিতরণ করা হয়। জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৫ জেলের ১০ জনকে ৮ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং পাঁচজনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পৃথকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল মালেক আটক জেলেদের এ সাজা দেন। শিবচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌস ইবনে রহিম বলেন, ইলিশ রক্ষায় আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। নদীতে অভিযানের পাশাপাশি পদ্মার পাড়ে গড়ে ওঠা অস্থায়ী ইলিশের হাটেও অভিযান চালানো হয়েছে।


ভিডিওকলে কথা বলতে বলতে প্রেমিক-প্রেমিকার আত্মহত্যা

একসঙ্গে দাফনের আকুতি
আপডেটেড ২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ২১:৫৬
কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রেমিকা দেশে, প্রেমিক বিদেশে। দুজনে ভিডিওকলে কথা বলতে বলতে আত্মহত্যা করেছেন। গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বেতুয়ায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়।

নিহত গৃহবধূ খাদিজা আক্তার উর্মি (১৬) কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মাটিয়ারা গ্রামের জামাল হোসেনের মেয়ে। সে চৌয়ারা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। প্রেমিক ওমানপ্রবাসী সাফায়েত হোসেন একই উপজেলার পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।

ঘটনাস্থল থেকে নিহত গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ এবং মরদেহের পাশে থাকা তার লিখে রাখা চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৪ অক্টোবর লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বেতুয়া (কৃষ্ণপুর) গ্রামের রং মিস্ত্রি আরিফুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় উর্মির। বিয়ের ১৩ দিনের মাথায় প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিওকলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করে সে। ওই সময় তার ওমানপ্রবাসী প্রেমিক সাফায়েত হোসেনও আত্মহত্যা করেন। তাদের দুজনের কাছ থেকেই চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিঠিতে একসঙ্গে দাফনের আকুতি জানিয়েছেন নববধূ।

উর্মি চিরকুটে লিখেন, ‘চাইছিলাম দুজনে একসঙ্গে বেঁচে থাকতে। বাঁচতে দিল না। এটা সত্যি যে ও আমার প্রথম সঙ্গী। ওরে আমি বিয়ে করছি। কিন্তু ওর জায়গায় আমি অন্য কাউকে দিতে পারি নাই, পারবও না। তোমরা সুখে থেক। আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না।’

উর্মি আরও লিখেন, ও বেঁচে থাকলেও তোমরা ওকে খুন করতে এবং ওর ফ্যামিলিকে জেলের ভাত খাওয়াইতে। তাই নিজেও দুনিয়া ছাড়লাম। ওরে আমার সঙ্গে নিয়ে গেলাম। আপনাদের কাছে একটা শেষ ইচ্ছা থাকবে। বাবা-মা ও ভাইবোনের কাছে একটা আবদার, দুনিয়াতে যেহেতু একসঙ্গে থাকতে দেও নাই, আমাদের দাফনটা যেন একসঙ্গে হয়। একদিন আগে-পরে হলেও একই কবরস্থানে যেন দাফন করে। সে চাওয়াটা যেন পূরণ করেন আপনারা।

অন্যদিকে প্রেমিক ওমানপ্রবাসী সাফায়াতের মরদেহের পাশেও একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। পরে সেটির ছবি তুলে সাফায়াতের পরিবারকে পাঠানো হয়।

তিনি মৃত্যুর আগে চিরকুটে লিখেছেন, ‘শেষ ইচ্ছা পূরণ করার দায়িত্ব আপনাদের। আমার মৃত্যুর কারণ একমাত্র ওর ফ্যামিলি। আমার মোবাইলে সব রেকর্ড করা আছে। সবকিছু ভিডিও করা আছে। আমার মৃত্যুর জন্য কে কে দায়ী সবকিছু আমার মোবাইলে রেকর্ডসহ ভিডিও করা আছে। আমার মোবাইল তার প্রমাণ। আমার মোবাইল চেক করলে সব পাবেন। রেকর্ড অপশনে আর গ্যালারিতে সব আছে। আমার ৮টা ভিডিও আছে। সবগুলো দেখবেন। লক খুলে রেকর্ড অপশনে ঢুকবেন, ইমোতে দুটি আর বাকিগুলো গ্যালারিতে পাবেন। তার দেওয়া চিঠি আছে আরিফ নামের আইডিতে। আমাদের মৃত্যুর কারণ তারা। কোনো দিন ক্ষমা করব না।’

উর্মির মা নুরুন্নাহার বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে সাফায়াত নামে এক প্রবাসী ছেলের সম্পর্ক ছিল। গত ১৪ অক্টোবর সম্মতি নিয়েই মেয়েকে বিয়ে দেই। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে হাসি-খুশিতেই ছিল। শনিবার রাতে হঠাৎ শুনি উর্মি ও তার প্রেমিক সাফায়াত ভিডিওকলে আত্মহত্যা করেছে। মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। প্রবাসী ছেলেটাই আমার মেয়ের মাথা খারাপ করে দিয়েছে।’

সাফায়াতের বাবা আবদুল খালেক বলেন, ‘এক বছর আগে ছেলেকে ওমান পাঠিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে ছেলে হঠাৎ কর্মস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। খবর নিয়ে শুনলাম ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আমার ছেলের সঙ্গে উর্মি নামে এক মেয়ের পরিচয় হয়েছিল। হঠাৎ মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সে অসুস্থ হয়ে গেছে। শনিবার রাতে সেই মেয়ে আমার ছেলের সঙ্গে ভিডিওকলে চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি।’

বাল্যবিয়ের সঙ্গে জড়িত নিকাহ রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি জানিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেসহ দুটি জীবনের আলো নিভে গেছে। তিনটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর জন্য মেয়ের বাল্যবিয়েই দায়ী।’

আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা করবেন বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলের চিরকুট হাতে পেয়েছি। তা ছাড়া মৃত্যুর আগে আমার ছেলের থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মেয়ের মা।’

লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, ‘বিয়ের ১৩তম দিনে নববধূ প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিওকলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। শুনেছি, প্রবাসী প্রেমিকও একইভাবে আত্মহত্যা করেছে। শনিবার রাত অনুমান ১১টায় নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের পাশে হাতে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আত্মহত্যার আগে মেয়েটি তার মা-বাবার উদ্দেশে এটি লিখেছিল। এই ঘটনায় নববধূর ভাই মেহেদী হাসান বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।


চমেকে ৭৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ছাত্রাবাসে অবৈধ অনুপ্রবেশ, রুম দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ৭৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে ১৪ জন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক রয়েছেন। পাশাপাশি ৮৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আর ১১ জন শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করবে না জানিয়ে দিয়েছে মুচলেকা।

সোমবার দুপুরে কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, চমেকে বিভিন্ন সময়ে যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে এই ৭৫ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মাঝে ৭ জনকে ২ বছর, ৫৪ জনকে ১ বছর এবং বাকি ১৪ জনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ১৬ মার্চ ৪ শিক্ষার্থীকে হোস্টেলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে ৭ জনকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে, কিছু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে সংঘাতের সৃষ্টি করেছে। এর আগে এ ধরনের ঘটনায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও একক কর্তৃত্ব ও গোষ্ঠীগত আধিপত্যের জন্য ছাত্র রাজনীতির নাম ব্যবহার করেছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে অবৈধভাবে প্রবেশ, রুম দখল, অঙ্গীকার ভঙ্গ, মারধর ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, যারা বহিষ্কার হয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, যাদের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ ছিল। তাদের কয়েকজনকে পূর্বে কয়েকবার বহিষ্কার করা হয়েছিল।


চাঁদপুরে তেলবাহী জাহাজে আগুন, আহত ৬

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১৮:০৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চাঁদপুর শহরে ডাকাতিয়া নদীতে ‘এমভি সাদিয়া অনিক’নামে একটি তেলবাহী জাহাজের ইঞ্জিনকক্ষে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া গেছে।

আজ রোববার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ওই নদীর পদ্মা ওয়েল কোম্পানির জেটির অদূরে এ ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক সৈয়দ মোরশেদ আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ওই নদীর পদ্মা ওয়েল কোম্পানির জেটির অদূরে ডাকাতিয়া নদীতে ‘এমভি সাদিয়া অনিক’নামে একটি তেলবাহী জাহাজের ইঞ্জিনকক্ষে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ারসার্ভিস ও কোস্ট গার্ড এক ঘণ্টার চেষ্টায় বিকেল সোয়া ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ছয়জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তাৎক্ষণিকভাবে ওই জাহাজে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মকর্তা।


গাইবান্ধায় ডিসি অফিসে নিয়োগ পরীক্ষা, প্রক্সি ২২ ভাইভা পরীক্ষার্থী আটক

আপডেটেড ২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১৭:৪৫
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জনবল নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি নেওয়া ২২ পরীক্ষার্থীকে ভাইভায় আটক করা হয়েছে।

আজ রোববার সকালে মোবাইল ফোনে বিষয়টি দৈনিক বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জাম আহমদ।

এর আগে শনিবার দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে তাদেরকে আটক করা হয় এবং পরে রাতে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানা যায়, ২৬ অক্টোবর দুপুর ২টা থেকে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখার ৫৫ জন শূন্য পদের নিয়োগে লিখিত পরিক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। এই সময়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মধ্যে ২২ জনের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষার খাতায় লেখার সঙ্গে তাদের নিজস্ব হাতের লেখার কোনো মিল পাওয়া যায়নি। মূলত ভাইভায় অংশগ্রহণকারী এই ২২ পরিক্ষার্থীর পরিবর্তে অন্য কেউ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। যা ভাইবা বোর্ডে ধরা পরে এবং পরে তাদরকে আটক করা হয়।

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ বলেন, ভাইভা বোর্ডে ২২ পরিক্ষার্থীর প্রতারণার মাধ্যমে প্রক্সি নেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। অভিযুক্তরা ভাইভা বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছে তাদের প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আমরা অভিযুক্তদের পুলিশে সোপর্দ করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষ থেকে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে অফিস সহায়ক পদের লিখিত পরীক্ষা সদর উপজেলার ১৭টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট ২২৬ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। পরদিন ২৬ অক্টোবর শনিবার দুপুর ২টা থেকে তাদের মৌখিক পরীক্ষা ওই কার্যালয়ে শুরু হয়।

এর আগে চলতি বছরের ২৬ মে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখার ৫৫টি শূন্য পদ পূরণের লক্ষ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জেলা প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে ৩০ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত একমাস জেলার স্থায়ী বাসিন্দাদের শর্ত সাপেক্ষে আবেদনের সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়। বেধে দেওয়া সময়ের সময়ের মধ্যে ১১ হাজার পরিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদন করেন।


টাঙ্গাইলে ৩০১ কোটি ব্যয়ে প্রশস্তকরণ সড়কে ধস

যানবাহন চলাচলে বাড়ছে ঝুঁকি
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কে ধস। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ০৯:৫৪
ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩০১ কোটি টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নতিকরণসহ সংস্কার কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সামান্য বৃষ্টির পানিতে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ধসে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচলে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

আঞ্চলিক মহাসড়কে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের পৌর এলাকার বাহাদীপুর, টেপিবাড়ি, কুঠিবয়ড়া, নলীনসহ কয়েকটি স্থানে বৃষ্টির পানিতে সড়ক ধসে গেছে। ফলে সেখানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ধসে যাওয়া কিছু স্থানে সওজ বিভাগ থেকে বালুর বস্তা দিয়ে মেরামত করার চেষ্টা করছে।

টাঙ্গাইল জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, ২৮ কিলোমিটারের ভূঞাপুর-তারাকান্দি মহাসড়ক (জেড- ৪৮০১) মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণের জন্য ২০১৯ সালে ৩০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২১ সালে এটির কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স। এরপর নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ করতে না পারায় ২ বার সময় বৃদ্ধি করে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করে কর্তৃপক্ষ। কাজের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ, পেভমেন্ট নির্মাণ, আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, বাস-বে ও ট্রাক-বে নির্মাণ, সসার ড্রেন নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি কাজ রয়েছে।

এ ছাড়া প্রকল্প এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডেও স্লুইজ গেট রক্ষায় কালভার্টের ডিজাইন পরিবর্তন ও এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মাণের স্থান পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়। এতে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি না পেলেও প্রাক্কলিত ব্যয় কমে যায় ৫.৭ কোটি টাকা। এতে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ৩০১ কোটি টাকায়।

জানা গেছে, সড়ক ভূঞাপুর-তারাকান্দি মহাসড়ক (জেড- ৪৮০১) মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণের কাজ শেষ হওয়ার আগে থেকেই বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন জায়গায় ধসে পড়েছিল। সম্প্রতি নতুন করে আবারও ভারী বৃষ্টির কারণে সড়কটির বিভিন্নস্থানে ধসে পড়ে। সড়ক ধস ও গর্ত সংস্কারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কয়েকবার চিঠি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পালন করছে না।

কুঠিবয়ড়া গ্রামের মোবারক জানান, নিম্নমানের কাজ করায় বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ধসে পড়েছে। অনেকস্থানে গর্তে স্থানীয়রা লাল নিশানা টাঙিয়ে দিয়েছিল। কিছু এলাকায় বালুর বস্তা দিয়ে গর্ত পূরণ করা হয়েছে।

স্থানীয় পরিবহন চালকরা জানান, সড়কের পাশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, সেটা রাতে বোঝা যায় না। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। এতে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কের কাজ করার সময়ও বৃষ্টিতে ধসে পড়েছে। জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে। যে মানের সড়ক করা হয়েছে তাতে বেশিদিন স্থায়ী হবে না।

সাব ঠিকাদার জনি জানান, বৃষ্টির কারণে এমন হয়েছে। অনেক জায়গাতে গর্ত পূরণ করা হয়েছে। মূল ঠিকাদারকেও সংস্কার করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমেরির বক্তব্য জানতে একাধিবার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি।


ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাসভাড়া কমানোর দাবি

না মানলে ১৭ নভেম্বর হরতাল
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল করা বাসের ভাড়া কমানোর দাবিতে হরতালসহ ৯টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম নামে নারায়ণগঞ্জের একটি নাগরিক সংগঠন। শনিবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচির কথা জানান সংগঠনটির আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি।

সংবাদ সম্মেলন থেকে এই রুটে নন-এসি বাসের ভাড়া সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ভাড়া অর্ধেক করারও দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।

বাসভাড়া কমানোর দাবিতে আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচারণা, নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময়, মিছিল, সমাবেশ ও মশাল মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম । তাদের দাবি মানা না হলে আগামী ১৭ নভেম্বর অর্ধদিবস হরতালেরও ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।

বর্তমানে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বন্ধন, উৎসব, গ্রীন ঢাকা, আসিয়ানসহ কয়েকটি পরিবহনের এসি ও নন-এসি বাস চলাচল করে। এসব পরিবহনের এসি বাসের ভাড়া ৮০ টাকা এবং নন-এসি বাসের ভাড়া ৫৫ টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে রফিউর রাব্বি বলেন, ‘যুগের পর যুগ ধরে সারা দেশে গণপরিবহন নিয়ে এক অরাজক পরিস্থিতি বহাল রয়েছে। সরকার বদলালেও অরাজকতা দূর হয় না। সরকার তাদের দলীয় লোকজনকে অনৈতিক সুবিধা দিতে এই সেক্টরে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। যে সিন্ডিকেট বছরের পর বছর সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে রেখেছে। বিগত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে এই অরাজকতা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।’

রাব্বি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে পরিবহন নিয়ে অরাজকতা দীর্ঘদিনের। আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিভিন্ন সেক্টরের মতো এই পরিবহন খাতটি ছিল ওসমান পরিবারের চাঁদাবাজির অন্যতম উৎস। যথেচ্ছভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করে জনগণের দুর্ভোগ তৈরিতে স্থানীয় বিআরটিএ ও প্রশাসন সবসময় তাদের সহায়তা করেছে। ২০১১ সালের জুন মাসে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের বাস ভাড়া ২২ টাকা থেকে ৩২ টাকা বৃদ্ধি করায় এখানে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের পরিবহন সিন্ডিকেটের মাফিয়া ও গডফাদারদের কেউ কেউ পালিয়ে গেছেন, কেউবা গা ঢাকা দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, দেশের পরিবর্তিত বাস্তবতায় আমরা চাই এই পরিবহন সেক্টর যেন আবার অন্য কোনো চাঁদাবাজ-গডফাদারদের হাতে বন্দি হয়ে না পড়ে। জনগণের পকেট কেটে তাদের জিম্মি করে কোনো গডফাদার যেন আর ফুলে ফেঁপে উঠতে না পারে। গত ২ এপ্রিল বিআরটিএ ঘোষিত দূরত্ব প্রতি ভাড়ার তালিকা ‘জনবিরোধী ও পরিবহন মালিকবান্ধব’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিআরটিএর হিসাবে এই রুটে ভাড়া দাঁড়ায় ৫৩ টাকা। কিন্তু বাস্তবিকভাবে নেওয়া হচ্ছে ৫৫ টাকা। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভাড়ার থেকেও যে ২ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে, তার প্রতিকারে প্রশাসন বা বিআরটিএর কোনো উদ্যোগ নেই।’

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে নন-এসি বাসের ভাড়া কোনোভাবেই ৪৫ টাকার বেশি হতে পারে না দাবি করে তিনি বলেন, বিআরটিএর ত্রুটিপূর্ণ প্রজ্ঞাপনেই অনিয়ম লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রজ্ঞাপনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের দূরত্ব সাড়ে ১৯ কিলোমিটার দেখিয়ে (২ দশমিক ৩২ টাকা কিলোমিটার প্রতি) ভাড়া দেখানো হয় ৪৫ টাকা। এর সঙ্গে ফ্লাইওভার টোল ৫ টাকা ও সানারপাড় ইউটার্ন ৩ টাকা দেখিয়ে বলা হয়, এই রুটে মোট ভাড়া ৫৩ টাকা। কিন্তু একই প্রজ্ঞাপনে বলা হয় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের ভাড়া হবে ৫৪ টাকা। বাস্তবিক নেওয়া হচ্ছে ৫৫ টাকা।

তিনি আরও বলেন, প্রজ্ঞাপনে নারায়ণগঞ্জ টার্মিনাল থেকে যাত্রী উঠলে ভাড়া ৫৩ টাকা, চাষাঢ়া থেকে উঠলে ৫০ টাকা, নতুন কোর্ট এলাকা থেকে উঠলে ৪৮ টাকা, শিবু মার্কেট থেকে উঠলে ৪৫ টাকা এবং জালকুড়ি থেকে উঠলে ৩৯ টাকা। কিন্তু সব জায়গা থেকেই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৫৫ টাকা করে। এ ছাড়া প্রজ্ঞাপনে মতিঝিল শাপলা চত্বর ঘুরে দূরত্ব দেখানো হয়েছে সাড়ে ১৯ কিলোমিটার। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে কোনো বাসই এখন শাপলা চত্বর ঘুরে যাতায়াত করে না।

রাব্বি বলেন, ‘গত ৩০ আগস্ট সরকার ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ১ দশমিক ৫০ টাকা কমালেও ভাড়া কমানোর কোনো উদ্যোগ বিআরটিএ প্রশাসন গ্রহণ করেনি। আমরা জেলা প্রশাসনের সভায় এসব অসংগতি তুলে ধরলেও তা নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রশাসন পরিবহন মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় যতটা তৎপর, যাত্রী সাধারণের অধিকার রক্ষায় ততটাই উদাসীন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এ বি সিদ্দিক, খেলাঘর আসরের সাবেক সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি মো. নুরুদ্দিন, জেলা সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিমাংশু সাহা, বাসদের সদস্যসচিব আবু নাঈম খান প্রমুখ।

এদিকে বাসভাড়া প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলা বাস-মিনিবাস কেন্দ্রীয় মালিক সমিতির সভাপতি রওশন আলী বলেন, ‘আমাদের বাসগুলো নারায়ণগঞ্জ থেকে ছাড়লেও এটি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায়ও চলাচল করে। আমাদের ভাড়া সে অনুযায়ী নির্ধারণ করা। বিদ্যমান বাস্তবতায় বাসভাড়া কমানো মালিকদের পক্ষে সম্ভব না।’

বাসমালিকরা কাউকে কোনো চাঁদা দেন না বলেও দাবি করেন মালিক সমিতির এ নেতা।

এ বিষয়ে বিআরটিএর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বাসভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৩ টাকা। কিন্তু মালিকরা ৫৫ টাকা করে নিচ্ছেন। বাসভাড়া যাতে ৫৩ টাকা করেই নেওয়া হয় সেই ব্যবস্থা করা হবে কিন্তু ভাড়া ৪৫ টাকা করতে হলে দূরত্ব অনুযায়ী নতুন করে ভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকারি সার্কুলারের প্রয়োজন হবে।


রংপুরে পুলিশ প্রটোকলে সারজিস, প্রতিবাদে জাপার লাঠি মিছিল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রংপুর প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সমন্বয়ক সারজিস আলম রংপুরে এসেছেন- এমন খবরে লাঠি মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। শনিবার দুপুরে সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পায়রা চত্বরে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।

এদিন বেলা ১১টার দিকে রংপুর সফরে আসেন পুলিশ মহাপরিদর্শক ময়নুল ইসলাম। তার সফরসঙ্গী হিসেবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমকে দেখা গেছে।

জাতীয় পার্টির প্রতিবাদ সমাবেশে দলটির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘বঙ্গভবনে উপদেষ্টাদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি ছিল। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম ধাপের সংলাপে জাতীয় পার্টি আমন্ত্রণ পেয়ে সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়ে মতামত দিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের কথায় পরবর্তী সংলাপে জাতীয় পার্টিকে ডাকা হয়নি, এটা হতাশাজনক। দুই-একজন ছাত্রের কথায় সরকার কেন এমন সিদ্ধান্ত নেবে, এটা আমাদের প্রশ্ন।’

রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তফা বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা ডাকবেন কি ডাকবেন না, সেটা তার ব্যাপার। এটা সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত আসবে। কিন্তু আমরা কী দেখলাম?

হাসনাত-সারজিসের কথায় সরকার যদি জাতীয় পার্টির সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করে, সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদেরও অনেক অবদান রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের সংবিধান অনুযায়ী পুলিশ প্রটোকল পাবেন কারা, সেটা সবাই জানে। কিন্তু এখন আমরা কী দেখছি? হাসনাত-সারজিসদের কেন প্রটোকল দিতে হবে? যেখানে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশি সেবা যাচ্ছে না, সেখানে তাদের প্রটোকল দেওয়ার কারণ কী? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি।’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রংপুরে জাতীয় পার্টির কী ভূমিকা ছিল তা তুলে ধরতে গিয়ে দলটির নেতা মোস্তফা বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সর্বপ্রথম ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিল জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা। যখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগের হামলার ভয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বের হতে পারেননি, তখন জাতীয় পার্টিই মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘রাজপথে থেকে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। আমাদের পার্টির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে। আন্দোলনে সহযোগিতা এবং পাশে থাকার কারণে আমাকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে আমাকে হেনস্তা করা হয়েছে। তার পরও কেন জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে?’

রংপুরের সাবেক মেয়র বলেন, ‘আমরা দেখেছি, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা মাঠে নেমেছিল। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত আন্দোলনের সফলতা কারও একার নয়। ১৮ কোটি মানুষের এই দেশ; কারও একার নয়, কারও বাবারও নয়।’

এর আগে শুক্রবার রাতেও নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা।


banner close