মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২

ময়মনসিংহে বন্যার অবনতি, নতুন  করে প্লাবিত আরও ৫০ গ্রাম

ফাইল ছবি
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৭ অক্টোবর, ২০২৪ ২১:৫৪

বর্ষার শেষে দেশে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। আশ্বিন মাসের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ মাসে থেমে থেমেই ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বিশেষ করে গত কয়েক দিন ধরেই সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। চলতি মৌসুমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার পর এবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে।

অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুরসহ কয়েকটি উপজেলায় গত কয়েকদিন ধরেই বন্যার দেখা দিয়েছে। আজ পর্যন্ত সেসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে বলে জানা যায়। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে সেখানকার আরও অন্তত ৫০টি গ্রাম। এতে তিন উপজেলার ২৩ ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সোমবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়ে জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন জানান, তিন উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে এখন নারী শিশুসহ দুই হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এসব উপজেলায় ৬৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ সাত লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া রান্না করা খাবারও দেওয়া হচ্ছে বন্যা দুর্গতদের।’ ধোবাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, ‘টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ১২৭ কিলোমিটার রাস্তা পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ কিলোমিটার রাস্তা চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পানি কমলে পুরো ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা নির্ণয় করে মেরামতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইইএনও) নিশাত শারমিন বলেন, সোমবার নতুন করে উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ২৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে উজানের পানি কিছুটা কমছে। আশা করা যাচ্ছে, দুই-একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। এদিকে বন্যায় শেরপুরে গত চারদিনে বন্যার পানিতে নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও নকলা উপজেলায় মোট ৯ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ছনধরা, রামভদ্রপুর, সিংহেশ্বরও, ফুলপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ ও অন্যান্য ইউনিয়নের ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ সব এলাকার আমন ফসল ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে; ভেসে গেছে মাছের খামার।

খবর নিয়ে জানা গেছে, হালুয়াঘাটের প্রায় ১২টি ইউনিয়ন শুক্রবার থেকে প্লাবিত হয়েছিল। ওইসব এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে নতুন করে আরও ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ধান, সবজি ক্ষেত। সঙ্গে পুকুরের মাছও। পানিবন্দি হয়ে আছে হাজার হাজার মানুষ। ঘরের মধ্যে পানি ঢোকার কারণে রান্নার কাজও ব্যাহত হচ্ছে। অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে মানুষ।

হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরশাদুল আহমেদ বলেন, উজানে প্লাবিত হওয়া গ্রামের পানি নামতে শুরু করেছে। উপজেলার নড়াইল, কৈচাপুর, ধুরাইল এবং আমতৈল ইউনিয়ন দিয়ে পানি ফুলপুর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নতুন কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হলেও সার্বিক পরিস্থিতি ভালো।

শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

দৈনিক বাংলার শেরপুর প্রতিনিধির পাঠানো খবর থেকে জানা যায়, টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরে সৃষ্ট বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সোমবার দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় এ উন্নতি হয়েছে। জেলার চারটি পাহাড়ি নদীর পানি আরও কমেছে। এসব নদীর পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ব্রহ্মপুত্র, দশানী ও মৃগী নদীতে। পানি বৃদ্ধি পেলেও এসব নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বন্যায় গত চারদিনে বন্যার পানিতে নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও নকলা উপজেলায় মোট ৯ জন মারা গেছেন।

সোমবার সকাল ৯টায় শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার ভোগাই নদীর পানি ১৩৮ সেন্টিমিটার, চেল্লাখালী নদীর পানি ৭৭ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও অপর দুটি পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।

তবে জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও কমেনি দুর্ভোগ। এখনও প্রতিটি এলাকায় খাদ্য সংকট রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিএনপি, জামায়াতসহ রাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করলেও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। অনেক দুর্গম এলাকায় এখন পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছেনি। আর বিশুদ্ধ পানির সংকট, শৌচাগারের সমস্যায় ভোগছেন।

কৃষি বিভাগ ও মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় ৪৭ হাজার হেক্টর আবাদি জমির আমন ধান ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার হেক্টর জমির সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর মাছের ঘের তলিয়ে গেছে ৬ হাজারেরও বেশি। এতে মাথায় হাত পড়েছে আমন ও মৎস্যচাষীদের। সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলার কৃষক ও মৎস্যচাষিরা। এ বন্যায় অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক, মাদরাসা, কারিগরি, কলেজ বন্ধ রয়েছে।

জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৪১টি। এর মধ্যে বন্যাকবলিত হয়েছে ৩০১টি বিদ্যালয়। এর মধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ২৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা সব জায়গায় ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করছি। আমাদের এ কাজে সেনাবাহিনী সার্বিক সহযোগিতা করছে। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ব্যবসায়ীসহ সবাই এগিয়ে এসেছেন। সবাই মিলে আমরা এ দুর্ভোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম হব।’ শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে ১০ হাজারের মতো ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে বন্যা দুর্গত এলাকায়। আরও ২৫ হাজারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার পাওয়া গেছে তা বিতরণ করা হবে।

এদিকে শেরপুরে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সেনবাহিনী। জেলার পাঁচটি উপজেলাতেই সেনাপ্রধানের নির্দেশে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে উদ্ধার অভিযান এবং খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম চলছে। বন্যাকবলিতদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শেরপুরে এখন পর্যন্ত চার হাজার পরিবারের কাছে ত্রাণসামগ্রী পোঁছে দেওয়া হয়েছে। যাদের বাসায় রান্না করার ব্যবস্থা নেই, তাদেরকে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।

সোমবার ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নে ও নকলা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রান্না করা খাবার এবং ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন সেনাসদস্যরা। ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সারিকালিনগর, দড়িকালিনগর ও হাতিবান্ধা ইউনিয়নের মিরপাড়া এলাকায় ২ শতাধিক দুর্গতের মধ্যে ময়মনসিংহ সেনানিবাসের ১৩ বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট জোহায়ের খাবার বিতরণ কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করেন।

নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, দেখা দিয়েছে বিভিন্ন দুর্ভোগ

দৈনিক বাংলার নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানায়, জেলায় কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। এতে স্বস্তি ফিরছে বানভাসিদের। তবে সংকট দেখা দিয়ে সুপেয় পানির। ভেসে উঠছে ভেঙে যাওয়া রাস্তার খানাখন্দ। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েক হাজার পরিবারের। এর আগে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে জেলার দুর্গাপুর, কলমাকান্দা ও পূর্বধলা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। শতাধিক বিদ্যালয়ে পাঠদান সমায়িক বন্ধ রাখা হয়। ১৭ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান তলিয়ে যায়। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। কমতে শুরু করেছে পানি।

এদিকে পূর্বধলার নাটেরকোনা এলাকায় একটি ফসলরক্ষা বাঁধ রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেলে ভেঙে গিয়ে ৭-৮টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। তবে গতকাল সোমবার সেসব স্থান থেকেও পানি নামতে শুরু করেছে।

সোমবার পানিবন্দী এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জেলার সবগুলো নদ-নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। ডুবন্ত রাস্তাগুলো ভেসে উঠছে। দৃশ্যমান হচ্ছে রাস্তার ভাঙা অংশ ও বড় বড় গর্ত। বন্যার্তদের জেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো ত্রাণ সহায়তা করছে।

জেলার শিক্ষা ও কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১৭ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান বন্যায় তলিয়ে গেছে। ২-৩ দিনের মধ্যে পানি কমে গেলে ধানের ক্ষতি অনেকটা কমে যাবে। এ ছাড়া পানি ওঠায় জেলায় ১৮৬টি বিদ্যালয়ে পাঠদান সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।

সপ্তাহজুড়ে থাকবে বৃষ্টি

রাজশাহী ছাড়া দেশের সব বিভাগেই সপ্তাহজুড়ে কম-বেশি বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এরপর গরম কিছুটা বাড়বে। আর বৃষ্টি-গরমের এই পর্ব শেষে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে শীতের দেখা মিলতে পারে দেশে।

আজ সোমবার আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাজশাহীতে একটু কম বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া সব বিভাগেই আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিনই এক পশলা-দুই পশলা করে বৃষ্টিপাত হবে। এরপর কিছুটা গরম পড়বে। তবে, বৃষ্টির পরপরই শীত পড়ার আভাস নেই। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশে শীত নামতে শুরু করবে।’

সোমবার আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয়। এর অক্ষের বর্ধিতাংশ ভারতের বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে এটি মাঝারি অবস্থায় আছে। এর প্রভাবে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

বিষয়:

বিদেশি জাতের আম চাষে নতুন দিগন্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। ধান, চালে বিখ্যাত হলেও বিগত কয়েক বছর থেকে আমের নতুন রাজধানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বিশেষ করে এ জেলার সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলা উপজেলার যেদিকে দুচোখ শুধুই আম গাছের সাড়ি। আর থোকায় থোকায় ঝুলছে নানা জাতের আম। তবে দেশীয় নানা জাতের আমের পাশাপাশি আগ্রহ বাড়ছে বিদেশি জাতের আম চাষ। দেখতে সুন্দর ও আর্কষণীয়, ফলন ভালো এবং স্বাদ ও গুণগত মান ভালো হওয়ায় ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।

নওগাঁ জেলার মাটি ও আবহাওয়া বিদেশি জাতের আম চাষ উপযোগী হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। এতে দিন দিন বাগানের পরিমাণও বৃদ্ধির পাশাপাশি ভোক্তাদের খাবারে আগ্রহ বাড়ছে। আগামীতে অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসবে এবং কৃষি খাত হয়ে ওঠবে আরও লাভজনক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় এ বছর ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। যা থেকে প্রায় ৩ লাখ ৮৭ হাজার টনের বেশি আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২০ হেক্টর বাগানে বিদেশি বিভিন্ন জাতের আম বাগান রয়েছে। যা থেকে বছরে প্রায় দেড় হাজার টন আম উৎপাদন হয়। ৫ হাজার টাকা মণ হিসেবে যার বাজারমূল্য প্রায় ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে পরিচিত জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলা উপজেলার আংশিক এলাকা। এসব উপজেলায় প্রধান অর্থকরি ফসল ছিল আমন ধান ও গম। পানি স্বল্পতার কারণে এক সময় এসব এলাকায় বৃষ্টিনির্ভর একটিমাত্র ফসল আমন ধানের ওপর নির্ভর করতে হতো। তবে গত একযুগের ব্যবধানে বরেন্দ্রের মাঠগুলো এখন সবুজে ছেয়ে গেছে। ধানের আবাদ ছেড়ে চাষিরা এখন আম চাষে ঝুঁকছেন। এসব উপজেলায় সুস্বাদু ও সুমিষ্ট আম্রপালি, গোপালভোগ, ফজলি, খিরসাপাত, ল্যাংড়া, হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা, আশ্বিনা, বারী-৪, গুটি এবং বিদেশি জাতের পালমার, মিয়াজাকি, চিয়াংমাই ও কিউজাইসহ অন্তত ৩০ জাতের আম চাষ হচ্ছে। এসব আম ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। এমনকি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।

জেলার সীমান্তঘেরা উপজেলা সাপাহারের বরেন্দ্র এগ্রো পার্কের তরুণ উদ্যোক্তা সোহেল রানা। তার ৭৫ বিঘা জমিতে আম্রপালি, ল্যাংড়া ও বারি-৪ সহ বিদেশি জাতের আম রয়েছে। তবে এর মধ্যে ২০১৮ সাল থেকে বাণিজ্যিভাবে বিদেশি জাতের ৯ বিঘাতে জমিতে ব্যানান ম্যাংগো ও ২ বিঘাতে রেড পালমার, মিয়াজাকি, চিয়াংমাই ও কিউজাইসহ ৮ জাতের আম রয়েছে। থোকায় থোকায় ঝুঁলছে বাহারি রঙের আম। দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, খেতেও তেমন সুস্বাদু।

কথা হলে সোহেল রানা প্রতিবেদককে বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে এসব জাতের আমের কাটিং কলম সংগ্রহ করে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুরু থেকেই ব্যানান ম্যাংগো বাগান রয়েছে। এ আম ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়ে থাকে। দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে আরও বেশি জমিতে বাণিজ্যিভাবে বিদেশি জাতের আম বাগান করা হবে বলে জানান এ উদ্যোক্তা।

তার মতো অনেক কৃষক এখন বিদেশি জাতের আম চাষে ঝুঁকছেন। কৃষকদের মাঝেও দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। এর কারণ হচ্ছে- বারোমাসি বা স্বল্পসময়ে ফল দেয় এবং গাছে ফলন ভালো হয়। দেখতে সুন্দর ও আকর্ষণীয় এবং স্বাদ ও গুণগত মান ভালো। এতে ভোক্তাদের মাঝে এসব আমের চাহিদা বেশি। ফলে বাজারমূল্যও তুলনামূলক বেশি পাওয়া যায়। এতে কৃষকরা কম সময়ে বেশি ফলন পায় এবং অধিক লাভবান হয়। বাজারমূল্য ও লাভের সম্ভাবনার কারণে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই অনেক কৃষক বিদেশি জাতের আম চাষে ঝুঁকছেন।

উপজেলার পাতারি গ্রামের আম চাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন- গত ৩ বছর আগে ২৫ কাঠা জমিতে ব্যানানা ম্যাংগোর বাগান করেছিলাম। দাম ভালো পাওয়ায় সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে বাগান করেছি। গত বছর ৫ হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম। এবছর ভালো দাম আছে। আরও দাম বাড়বে। ৭-৮ হাজার টাকা মণ বিক্রি হয়।

আরেক আম চাষি মো. রাকিব হোসেন বলেন- ব্যানানা ম্যাংগো, মিয়াজাকি ও কিউজাই আমের বেশ চাহিদা রয়েছে। এসব আমের বাগানও সম্প্রসারণ হচ্ছে। রপ্তানি করে ভালো আয় করা হয়। আগামীতে বিদেশি জাতের আমের চাহিদা বাড়বে।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন- ইতোমধ্যে এ জেলা আমের বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। এ জেলার মাটিতে দেশি আমের পাশাপাশি বিদেশি জাতের আম চাষ উপযোগী হওয়ায় কৃষকদের মাঝে বেশ আগ্রহ বাড়ছে। অনেক সৌখিন চাষি বিদেশি জাতের আম বাগান করছেন। তারা ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


বরিশাল বিভাগজুড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

হুমকিতে নদীতীরের জনপদ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তুহিন, বরিশাল

বরিশাল বিভাগে দিনে-রাতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। অন্তত ৭০টি স্পটে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন হচ্ছে প্রতিদিন। জন্ম দিচ্ছে ভাঙন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের।

বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ নদ-নদী এখন বালু খেকোদের কবলে। কীর্তনখোলা, মেঘনা, তেঁতুলিয়া, বলেশ্বর, পায়রাসহ প্রধান নদীগুলোতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে দিনের পাশাপাশি রাতেও। বিশেষ করে বরিশাল শহরের পাশঘেঁষা চরমোনাই এলাকায় সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় বালু উত্তোলন। রাতভর চলে এই কার্যক্রম, সকালেই জাহাজ বোঝাই হয়ে যায় বালুতে। শ্রমিকরা নিজেরাই অকপটে স্বীকার করছেন, তাদের কার্যক্রমের কোনো বৈধতা নেই।

বরিশাল হিজলা উপজেলার নয়াভাঙনী নদীর গুয়াবাড়িয়া, হরিনাথপুর এবং মেঘনা নদীর গঙ্গাপুর, বদরপুর, আবুপুর, কোদালপুর, পট্টিসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চলছে বালু উত্তোলনের হিড়িক।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রতি রাতে নদীর বুক চিরে বালু তোলা হয়; অথচ প্রশাসনের তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নেই। ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকেও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, সৃষ্টি হচ্ছে ভাঙনের ভয়াবহতা। অনেক স্থানে চাষযোগ্য জমি ও ঘরবাড়ি ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত এই বালু সিন্ডিকেটে। প্রশাসনের নাকের ডগায় চললেও তাদের বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না।

পটুয়াখালীর আগুনমুখা, পায়রা, তেঁতুলিয়া ও পিরোজপুরের বলেশ্বর, কচা নদীর চরখালীসহ অন্তত ৭০টি স্পটে প্রতিদিন চলে এই অপতৎপরতা। নদীর তীরের মানুষের ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও হুমকির মুখে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এক হতাশা নিয়ে আল আমিন জানান, নদী ভাঙনে আমার বসতভিটা চলে গেছে। প্রতিবাদ করলে হুমকি আসে। প্রশাসন যদি কঠোর না হয়, আমরা সব হারিয়ে ফেলব।

সুজন সভাপতি মোবাশ্বির উল্যাহ চৌধুরী বলেন, এই অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন শুধু পরিবেশের ক্ষতি করছে না, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও হুমকিতে ফেলছে। স্থানীয় প্রশাসনের আরও কঠোর হওয়া দরকার।

বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা রাতের বালু উত্তোলন নিয়ে তথ্য নিচ্ছি। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার জানান, নদী সুরক্ষায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না।


নিলাম ছাড়াই ভবন ভেঙে ইট বিক্রি, তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সামসুজ্জামান সুমন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিলাম ছাড়াই ভবন ভেঙে বিক্রি করার অভিযোগ ওঠেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। এ নিয়ে গোটা উপজেলা জুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠেছে।

স্থানীয় ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন (ওয়াশ ব্লক) কাজের বরাদ্দ পাওয়ায় পুরোনো ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরে পুরোনো ভবনের ইট, টিন বিভিন্ন সরঞ্জাম বিদ্যালয়ের মাঠে স্তূপ করে রাখা হয়। সেখান থেকে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ট্রলিতে উঠিয়ে গোপনে রাতের আঁধারে কয়েক হাজার ইট এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাহজুবা উম্মে লাবনী।

মাঝরাতে বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয়রা ইটসহ দুটি ট্রলি গাড়ি আটকে রাখেন। পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে শিক্ষিকার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। এ সময়ে তারা গিয়ে গাড়ি থেকে ইট নামিয়ে নেন।

স্থানীয়রা জানান, সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার অফিসার উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফারুক হোসেনকে ম্যানেজ করে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের দুটি রুম নিলাম ছাড়াই ভেঙে ফেলে ইট বিক্রি করে প্রধান শিক্ষক। ২০ জুন রাতে ওই রুমের ইট গোপনে ট্রলিতে করে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী সেই ইটসহ ট্রলি আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেয়। গত ২১ জুন সকালে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফারুক হোসেন হেলাল ও কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকা মাহজুবা উম্মে লাবনীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ইট গাড়ি থেকে নেমে রেখে চলে আসেন। ঘটনার পরের দিন এলাকাবাসী ২২ জুন ইট চুরির মূল ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিচারের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগ দেওয়ার পরেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার অফিসারকে প্রধান করে ও আর একজন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

গত রোববার ওই কমিটি স্কুলে তদন্ত করতে গিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়লে তদন্ত না করে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন।

পরে নতুন করে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দুই সদস্য একটি কমিটি গঠন করেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার।

এ বিষয়ে বাহাগিলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাহজুবা উম্মে লাবনীর মুঠো ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার অফিসার ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফারুক হোসেন হেলাল মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কুমারেশ চন্দ্র গাছি বলেন, প্রধান শিক্ষিকা ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার কোনোভাবেই রেজুলেশন মূল্যে পরিত্যক্ত বিল্ডিং ভাঙতে পারবে না। নিয়ম হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার রেজুলেশন করে নিলামের মাধ্যমে বিল্ডিং ভেঙে ফেলতে পারেন। এ ব্যত্যয় ঘটলে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে।


লোহাগাড়ায় হুমকির মুখে সোনাছড়ি সেতু

লোহাগাড়ায় হুমকির মুখে সোনাছড়ি সেতু।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুহাম্মদ হোছাইন, লোহাগাড়া

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে সোনাছড়ি সেতু। উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের মুন্সেফ বাজারের দক্ষিণে শমসু হাজি পাড়া এলাকায় রাতারছড়ার উপর নির্মিত হয়েছে সেতুটি। সেতুর গোড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সেতুটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো মতে ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে পার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর নিচে পিলারের গোড়া থেকে মাটি সরে গেছে। সেতুর সংযোগ সড়কের দুপাশের মাটি ধ্বসে গেছে। মাঝখানে সামান্য অক্ষত রয়েছে। সেটিও যেকোনো সময় পানির স্রোতে মিশে যাবে। এটি দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন রোসাইঙ্গা ঘোনা, বড়ুয়া পাড়া এবং শমশু হাজি পাড়ার বাসিন্দারা। এ সড়কটি দিয়ে চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসা, চুনতি সরকারি মহিলা কলেজ, চুনতি উচ্চ বিদ্যালয়, ফাতেমা বতুল মহিলা মাদ্রাসা, হাকিমিয়া সরকারি প্রাথমিক স্কুল, মেহেরুন্নিছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং আনসার ভিডিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে থাকে।

স্থানীয়রা জানান, সেতুটি ১৯৯৯ সালে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেতুর আশেপাশে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি চক্র। ফলে ধীরে ধীরে সেতুর গোড়া থেকে মাটি সরতে শুরু করে। সেতুটি বর্তমানে পাঁচ ফুট নিচে দেবে গেছে। যেকোনো সময় সেতু ভেঙে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইফরাদ বিন মুনীর বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি হয়ে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ ইনামুল হাছান বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘবে সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা হবে।


জামালপুরে জুলাই শহীদ পরিবারে সঞ্চয়পত্রের চেক বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের মধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের চেক বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার (০৭ জুলাই) বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে সঞ্চয়পত্রের চেক তুলে দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম জানান, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারের অনুকূলে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ১০ লাখ টাকা করে মোট ৮০ লাখ টাকার আটটি চেক বিতরণ করা হয়েছে। জেলার সব শহীদ পরিবার ও আহত পরিবারের সদস্যদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইফতেখার ইউনুস, সাংবাদিক এম এ জলিল, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলে এলাহি মাকাম, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদর উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক আরাফাত হোসেন শাকিল, আহত সদস্য অম্লান সরকারসহ শহীদ পরিবারের সদস্যরা। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জামালপুরে ১৭ জন শহীদ হয়েছেন।


বাংলাদেশের ১৭ কোটি ৫৭ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগই কর্মক্ষম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৫৭ লাখে পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হয়। এর অর্ধেক নারী এবং দুই-তৃতীয়াংশ (১১ কোটি ৫০ লাখ) কর্মক্ষম বয়সী, যাদের বয়স ১৫-৬৪ বছরের মধ্যে। জনসংখ্যার এমন সংখ্যাগত অবস্থা লাভজনক কাজে লাগানোর সুযোগ করে দেয়।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) বার্ষিক প্রধান প্রকাশনা—বিশ্ব জনসংখ্যার অবস্থা (এসডব্লিউওপি) ২০২৫-এ এই অনুমান করা হয়েছে।

সোমবার(৭ জুলাই) রাজধানীর গুলশানের জাতিসংঘ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে ইউএনএফপিএ প্রতিনিধি ক্যাথেরিন ব্রিন কামকং আনুষ্ঠানিকভাবে এই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

ক্যাথেরিন কামকং বলেন, ‘২০২৫ সালের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে বর্তমানে জনসংখ্যা ৮২০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৫৭ লাখ বলে অনুমান করা হয়। এর মধ্যে অর্ধেক নারী। আর দুই-তৃতীয়াংশ (সাড়ে ১১ কোটি) কর্মক্ষম বয়সী। এটি জনসংখ্যাগত লাভজনক কাজে লাগানোর একটি সুযোগ।’

তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে বাংলাদেশের এই জনসংখ্যার ৭ শতাংশ (১ কোটি ২০ লাখ) ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী—যা জনসংখ্যার বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার শুরুর ইঙ্গিত দেয়।

ক্যাথেরিন কামকং বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ কিশোর-কিশোরী (প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ)। যাদের বয়স ১০ থেকে ২৪ বছর। আর বৃহত্তর যুব জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২৮ শতাংশ (প্রায় ৫ কোটি)।

এ বছরের প্রকাশনার প্রতিপাদ্য ‘আসল প্রজনন সংকট – পরিবর্তনশীল বিশ্বের প্রজনন অধিকার অর্জনের প্রয়াস’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি ‘অতিরিক্ত জন্ম’ বা ‘কম জন্ম’– এই প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। প্রকৃত সংকট সংখ্যার নয়, এটি প্রজনন অধিকার বা ক্ষমতার সংকট।

ইউএনএফপিএ প্রতিনিধি বলেন, ‘সারা বিশ্বে এবং বাংলাদেশের মানুষ বিশেষ করে নারী এবং তরুণরা পদ্ধতিগত, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বাধার কারণে তাদের প্রজনন উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে পারছেন না।’

এই প্রতিবেদনটি জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) পরিচালিত একটি বৈশ্বিক জরিপের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এটির সঙ্গে একাডেমিক গবেষণা ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রতিবেদনটি প্রজনন ক্ষমতা ও প্রজনন অধিকার বিষয়ে একটি সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।

কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের মতো উচ্চ-আয়ের দেশগুলোতে নারীদের প্রজনন ক্ষমতা জনপ্রতি মাত্র ০.৮ সন্তানের মধ্যে নেমে এসেছে— যা বিশ্বব্যাপী সর্বনিম্ন।

অন্যদেকে আফ্রিকার কিছু দেশে উচ্চ প্রজনন হার রয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী নাইজারে সর্বোচ্চ মোট প্রজনন হার (টিএফআর) (প্রতি নারীর ৫.৮ শিশু) রেকর্ড করেছে।

বাংলাদেশও এর মধ্যে রয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে দেখানো হয়েছে। যেখানে মোট প্রজনন হার (টিএফআর) ২.১ শতাংশ। বাংলাদেশের কিছু অংশে কিশোর বয়সে জন্মহার উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে— যার কারণ হলো বাল্যবিবাহ, গর্ভনিরোধের সীমিত সুবিধা এবং যৌন শিক্ষার অভাব।

১৪টি দেশের প্রমাণের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি অপূর্ণ প্রজনন আকাঙ্ক্ষার উপর আলোকপাত করেছে।

যদিও বেশিরভাগ মানুষ দুইটি সন্তান চায়, তবে অনেকেই ইচ্ছার চেয়েও কম সন্তান নিতে পারেন—বিশেষত বয়স বেশি হওয়া ব্যক্তিরা। অন্যদিকে, কেউ কেউ পরিকল্পনার চেয়েও বেশি সন্তানের প্রত্যাশা করেন, কিন্তু তারা পরিবার পরিকল্পনা সেবা সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান বা সুযোগ-সুবিধা পান না।

ক্যাথেরিন কামকং বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যয় অনেক বেশি, যার অর্থ হলো যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই তারা তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নাও পেতে পারেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সরকার বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ০.৭ শতাংশ এবং সাধারণ বাজেটের ২ শতাংশ বিনিয়োগ করছে। আমরা আশা করি, এটি বাড়িয়ে জিডিপির ৫ শতাংশ এবং সাধারণ বাজেটের ১৫ শতাংশ করা হবে, কারণ দেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে স্বাস্থ্য ও কল্যাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ ‘এর ফলে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী, বিশেষ করে মিডওয়াইফ বা ধাত্রী নিয়োগ, মোতায়েন এবং টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে,’ বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এটি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ এবং বিভিন্ন ধরণের গর্ভনিরোধক সরবরাহের নিরবচ্ছিন্ন সুযোগ তৈরি করবে, যা নারীদের পছন্দের সুযোগ করে দেবে।


স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে বিএনপি নেতা হাফিজ ইব্রাহিমের নামে অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা প্রতিনিধি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।

রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।

এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।

হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।


রাজশাহীতে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাব-৫।

রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।

সোমবার সকালে র‌্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র‌্যাবের গোয়েন্দা দল।

এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।


মুরাদনগরে ট্রিপল মার্ডার: ৭ আসামি কারাগারে, একজনের জবানবন্দি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

কুমিল্লার মুরাদনগরের একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার আট আসামির মধ্যে ৭ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

পাশাপাশি মামলার এজাহারের ৩ নম্বর আসামি বাচ্চু মিয়া মেম্বার আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তার বক্তব্য রেকর্ডের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়।

রবিবার (৬ জুলাই) বিকালে চাঞ্চল্যকর তিন খুনের ঘটনায় ঢাকায় র‍্যাবের হাতে আটক ৬ জনকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করে পুলিশ। আসামি ৬ জন হলেন—বাচ্চু মিয়া, রবিউল আওয়াল, আতিকুর রহমান, বায়েজ মাস্টার, দুলাল ও আকাশ।

৫ নং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিদ্দিক আজাদ এসব আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে শনিবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর হাতে আটক ২ আসামি— নাজিমুদ্দিন বাবুল ও ছবির আহমেদকে পুলিশের মাধ্যমে আদালতে হাজির করা হলে আমলি আদালত ১১ এর বিচারক মমিনুল হক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত ৪ জুলাই বাঙ্গরাবাজার থানা এলাকার কড়ইবাড়িতে মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে নিজ বাড়ির সামনে রোখসানা বেগম রুবি, তার মেয়ে জোনাকি আক্তার ও ছেলে রাসেল মিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এই ঘটনায় রুবির মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ পর্যন্ত এই মামলায় সেনাবাহিনী ও র‍্যাব মোট আটজনকে গ্রেফতার করেছে।

কুমিল্লার আদালত পরিদর্শক সাদেকুর রহমান বলেন, এ মামলায় মোট আটজনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় দুজনকে এবং রবিবার বিকেলে ছয়জনকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এর মধ্যে মামলার তিন নম্বর আসামি বাচ্চু মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার কথা জানিয়েছেন। তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে।


শহীদ শিশুদের যুগের পর যুগ জাতি স্মরণ করবে: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ শিশুদের যুগের পর যুগ জাতি স্মরণ করবে।

রোববার নারায়ণগঞ্জ শহরের নয়ামাটিতে শিশু শহীদ রিয়া গোপ ও সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় শহীদ সুমাইয়ার বাসায় গিয়ে তাদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, জুলাই আন্দোলনে যে সকল নারী ও শিশুরা নিহত হয়েছে, তাদের হারিয়ে যেতে দেব না। তাদের নিয়ে সংকলন করা হবে। যারা শহীদ হয়েছে, তাদের সব অধিকার রাষ্ট্র থেকে নিশ্চিত করা হবে। এটার জন্য জেলা প্রশাসক কাজ করছেন।

তিনি বলেন, শহীদ এই নারীদের পরিবারগুলো কেমন আছে এবং তাদের সংকটগুলো কী, সেটা জানার চেষ্টা করছি। আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে যতটুকু শক্তি আছে, রিসোর্স আছে, সেগুলো দিয়ে শহীদ পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা শহীদ পরিবারের চোখের জল মুছে দিতে চাই।

এসময় জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন

আপডেটেড ৬ জুলাই, ২০২৫ ১৩:২৬
জালাল উদ্দিন ভিকু, দৌলতপুর(মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের উদ্যোগে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু হয়েছে । উক্ত খেলা উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ১ নং সদস্য , জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির ।

শনিবার (৫ জুলাই) বিকাল ৪ টায় শিবালয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন করা হয় ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, জেলা বিএনপির সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপি'র সহ-সভাপতি এবং জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো: লোকমান হোসেন, উপজেলা বিএনপি সভাপতি রহমত আলী লাভলু, সম্পাদক মিজানুর রহমান লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, জেলা কৃষকদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ,জেলা বিএনপির সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো: ফেরদৌস রহমান, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মো: হোসেন আলী, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মো: শহিদুল ইসলাম ।

এছাড়া উপস্থিত ঘিওর উপজেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মো: রাজা মিয়া মেম্বার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আসিফ ইকবাল রনি, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আখতারুজ্জামান আক্তার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মামিনুল ইসলাম মমিন, জেলা যুবদলের সদস্য মোসলেম উদ্দিন,জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব খান অয়ন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জিহাদ প্রমূখ । সভাপতিত্ব করেন,মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মহিদুর রহমান কাজল ।

প্রধান অতিথি এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া রহমান এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এদেশে প্রথম ফুটবল খেলাকে আন্তর্জার্তিক পর্যায়ে নিয়ে যান। তাদের চেষ্টায় সার্ফ ফুটবল টুর্ণামেন্ট আয়োজন করার সম্ভব হয়। মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে যুব সমাজকে খেলার মাঠে আনতে হবে । মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে হলে খেলাধুলার বিকল্প নাই ।

স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাব আয়োজিত টুর্ণামেন্টে নক-আউট পদ্ধতিতে আটটি দল অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী খেলায় টাইব্রেকারে মানিকগঞ্জ কৈট্রা ফিউচার ফুটবল একাডেমী ৫-৪ গোলে পাবনার নবযুগ মিলন সমিতিকে হারায়। রেফারি ছিলেন আবুল কালাম।


সিলেটে আরো দুইজনের করোনা ও ডেঙ্গু শনাক্ত 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সিলেটে নতুন করে একজনের করোনা ও একজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে চলতি বছর ২৭ জনের করোনা ও ৩৮ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হলো।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে একজনের রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। এই বছর ৪৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৭ জনের করোনা ধরা পড়েছে এবং দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সিলেট স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় থেকে প্রেরিত ডেঙ্গু সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে জুলাই মাসে পাঁচজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হলো। বর্তমানে ২৫০ শয্যার মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে তিনজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চলতি বছর ৩৮ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ১০ জন, সুনামগঞ্জ জেলায় তিনজন, মৌলভীবাজার জেলায় ১১ জন এবং হবিগঞ্জ জেলায় ১৪ জন। তবে, ডেঙ্গুতে সিলেট অঞ্চলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।


ভোলায় কাভার্ড ভ্যানে কোস্টগার্ডের তল্লাশি ৭ কোটি টাকার অবৈধ পন্য জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা প্রতিনিধি

ভোলা জেলা শহরের কালিনাথ বাজারে ঢাকা থেকে আসা ভোলাগামী এস এ পরিবহনের পন্য বহনকারী একটি কাভার্ড ভ্যানে তল্লাশি চালিয়ে অবৈধভাবে আনা প্রায় সাত কোটি টাকা মূল্যের ২০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, ৮০ কেজি পলিথিন, ৫ হাজার ৮৮৯ পিস আতশবাজি ও ১৯ হাজার ৬০০ শলাকা বিদেশি সিগারেট জব্দ করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ভোলা বেইস।

শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে কোস্টগার্ড ভোলা বেইসের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টায় কোস্টগার্ডের ভোলা বেইসের সদস্যরা শহরের কালিনাথ রায়ের বাজারে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযান চলাকালে ওই এলাকায় ঢাকা থেকে ভোলাগামী এস এ পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিসের একটি কাভার্ডভ্যান তল্লাশি করে ৭ কোটি ৮ লাখ ২ হাজার ৩৬০ টাকা মূল্যের নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, পলিথিন, আতশবাজি ও শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা বিদেশি সিগারেট জব্দ করা হয়।

পরবর্তীতে জব্দকৃত কারেন্ট জাল সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিনষ্ট করা হয়। এ ছাড়া নিষিদ্ধ পলিথিন ভোলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শুল্ক ফাকি দিয়ে আনা সিগারেট বরিশাল কাস্টমস ও আতশবাজি ভোলা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ২৪ ঘণ্টা টহল জারি রেখেছে। যার মাধ্যমে কোস্টগার্ডের আওতাধীন উপকূলীয় এবং নদী-তীরবর্তী অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে উন্নত হয়েছে।

বাংলাদেশ কোস্টগার্ড কতৃক শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসা চোরাচালানবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।


banner close