মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১ আশ্বিন ১৪৩২

পুলিশের ওপর হামলার মামলায় আসামি বিএনপির ৭০ নেতা-কর্মী

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
৮ নভেম্বর, ২০২২ ১৪:২৬
প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত : ৮ নভেম্বর, ২০২২ ১৪:০৬

কিশোরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে পুলিশের ওপর হামলা ও সন্ত্রাস দমন আইনে মামলাটি করেন কিশোরগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক অনিক কুমার সাহা।

মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৬০-৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সোমবার ‍দুপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে স্টেশনরোড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ ও গুলি চালায়। এতে তাদের অন্তত ১৮ নেতা-কর্মী আহত হন।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, সোমবার বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাস্তা আটকে মিছিল করছিলেন। তাদের রাস্তা ছাড়তে বলায় মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এক পর্যায়ে কার্যালয়ের ভেতর থেকেও চেয়ার ছুড়ে মারেন তারা।

তিনি জানান, হামলায় তিনি নিজেসহ পুলিশের ১০ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে শটগানের কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

ওসি জানান, ঘটনাস্থল থেকে আবু নাসের সুমন ও সাইফুল ইসলাম নামে দুইজনকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আজ তাদেরকে আদালতে তোলা হবে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।


দৌলতদিয়ায় ঘাট দুটির মধ্যে একটি ঘাট চালু, নদী পারাপারের অপেক্ষায় কয়েকশ যান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মইনুল হক মৃধা, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় ঘাট সংকটে যানবাহনের দীর্ঘ সিরিয়াল তৈরি হয়েছে।

সিরিয়ালে অল্প সংখ্যক যাত্রীবাহী যানবাহন থাকলেও পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যাই বেশি। ফলে ট্রাকচালক ও যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরজমিনে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঘাটে অপেক্ষা করে দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট পর্যন্ত দীর্ঘ দুই কিলোমিটার এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাকের সারি সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক'শ যানবাহন ফেরির জন্য লম্বা সিরিয়ালে আটকে রয়েছে। সিরিয়ালে আটকে থাকা যানবাহন গুলোর মধ্যে সব থেকে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোর।

এসব পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মহাসড়কের আটকে থাকতে হচ্ছে। ফলে তাদের গোসল, খাওয়া-দাওয়া, টয়লেটসহ নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সরেজমিন ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,, দৌলতদয়িায় ১, ২, ৫ ও ৬ নং ফেরি ঘাট দীর্ঘদিন ধরে অকেঁজো হয়ে পড়ে আছে। ৩, ৪ ও ৭ নং ফেরি ঘাট জরাজীর্ণ অবস্থায় চলমান ছিল। এরমধ্যেই পদ্মায় তীব্র স্রেতের কারনে গতমাসের ২৩ আগস্ট থেকে ৭ নম্বর ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট সচল থাকলেও ৩ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনের প্লেট ভেঙ্গে যাওয়ায় রবিবার রাত ১২টা থেকে ঘাটটি মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। শুধুমাত্র ৩ নম্বর ঘাট চালু থাকায় যানবাহনের সিরিয়াল তৈরি হয়েছে।

ফরিদপুর থেকে ছেড়ে আসা গোল্ডেন লাইনের বাস চালক আঃ জলিল বলেন, দুই ঘন্টা দৌলতদিয়া ঘাটে সিরিয়ালে আটকে আছি। শুনতেছি একটি মাত্র ঘাট চালু রয়েছে। যাত্রীদের ভোগান্তি হচ্ছে।

যশোর থেকে আসা ট্রাকচালক হাবিবুর রহমান বলেন, সকাল ৮ টার দিকে এসে সিরিয়ালে আটকে আছি। গাড়িতে তার রয়েছে। এছাড়া সময়মতো মালামাল পরিবহন করতে না পেরে পরিবহন খরচের পাশাপাশি তাদের খরচও বাড়ছে।

ভোগান্তি লাঘবে যাত্রীবাহী যানবাহন ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করছে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন জানান, দুটি ঘাটের মধ্যে একটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহনের সিরিয়াল তৈরি হয়েছে। একটি ঘাটের মেরামত কাজ চলছে, আশা করি খুব দ্রুতই ঘাটটি সচল হয়ে যাবে। তিনি আরও জানান, ঘাট কম থাকার ফেরি কম চালাতে হচ্ছে। বর্তমান এই নৌ-রুটে ছোট বড় মিলিয়ে ১০ টি ফেরি চলাচল করছে।


বগুড়ায় মা-ছেলে খুন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ায় মা-ছেলে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার সাদুল্যাপুর বটতলা গ্রামে এ খুনের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে মা ও ছেলে জোড়া খুনের বিষয়টি এলাকাবাসী টের পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতরা হলেন-শিবগঞ্জ উপজেলার সাদুল্যাপুর বটতলা গ্রামের কুয়েত প্রবাসী ঈদ্রীস প্রামানিকের স্ত্রী রানী খাতুন (৪০) ও ছেলে ইমরান (১৮)।

জানা যায়, সোমবার (১৫ই সেপ্টেম্বর) রাতে খাওয়া দাওয়া করে রানী খাতুন ও ছেলে ইমরান নিজ নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে প্রতিবেশিরা ঘরের দরজা খোলা ও ঘরের ভিতর জবাই করা মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়। তবে ইমরানের সাথে একই গ্রামের মৃত খোকার ছেলে হাসান (১৭) বসবাস করতো। ঘটনার পর থেকে হাসান নিখোঁজ রয়েছে। নিহতের মেয়ে ইলা জানান, আমার মা ও ভাইকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

শিবগঞ্জ ও সোনাতলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, ধারনা করা হচ্ছে, রাতের যে কোন সময় কে বা কারা তাদেরকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। নিহতদের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দ্রুত ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।


ভালুকায় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভর্তির দায়িত্ব নিলেন সরকারি কলেজ ছাত্রদল সভাপতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ভালুকা সরকারি কলেজে ভর্তি কার্যক্রম চলাকালে দরিদ্র ও অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ভালুকা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি তানভীর হাসান শান্ত। ভর্তি ফি জোগাড় করতে না পারায় যেসব শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল, তাদের সহযোগিতার ঘোষণা দেন তিনি।

জানা যায়, শান্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের মোবাইল নম্বর প্রকাশ করে জানান—অর্থাভাবে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হতে না পারলে সরাসরি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেক শিক্ষার্থী তাঁর সাহায্য পান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী জানান, বাবা দিনমজুর হওয়ায় ভর্তি ফি দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। পরে শান্তর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নিজে এসে ভর্তি ফি পরিশোধ করেন। আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, ভর্তি না হলে হয়তো পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হতো। শান্ত ভাই শুধু টাকা দেননি, সাহসও দিয়েছেন।

ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সিয়াম সাব্বির রিশাদ জানান, এবার তানভীর হাসান শান্তর সহযোগিতায় প্রায় বিশজন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পেরেছে। কারও ভর্তি ফি পুরোপুরি বহন করা হয়েছে, আবার অনেকে আংশিক সহায়তা পেয়েছেন।

তানভীর হাসান শান্ত বলেন, আমি বিশ্বাস করি, অর্থের কারণে কোনো শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থেমে যাওয়া উচিত নয়। আমি আমার সাধ্যমতো শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় সহযোগীতা করেছি। ভবিষ্যতে যদি কোনো শিক্ষার্থী ফরমপূরন সহ যেকোনো আর্থিক অসুবিধায় পড়ে আমি যথা সাধ্য চেষ্টা করবো। ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ রক্ষার দায়িত্বও নিতে চায়।

অভিভাবকরাও এ উদ্যোগে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। একজন অভিভাবক বলেন, ছেলের ভর্তি নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। শান্তর কারণে সেই দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে।


মুরাদনগরে বাড়ীর পাশে যুবকের মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের সন্দেহ হত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাজ্জাদ হোসেন শিমুল, মুরাদনগর (কুমিল্লা)

কুমিল্লার মুরানগর উপজেলার পীরকাশিমপুর গ্রামে বাড়ীর পাশ থেকে এক যুবকের মরদেহে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ওই যুবকের নাম মোঃ মিনহাজ (৩০)। সে পীর কাশিমপুর উত্তর পাড়ার আনোয়ার হোসেন মাস্টারের ছোট ছেলে।


নিহত মিনহাজের ভাই মঈদ আহমেদ জানান, সোবমার বিকেল ৩টার দিকে দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়ী থেকে বের হয়। রাতে এশার নামাজের পরও মিনহাজ বাসায় না ফিরলে পরিবারের সন্দেহ হয়। এরপর খোঁজাখুজি করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির কাছেই একটি পরিত্যক্ত মুরগির খামারের পাশে মিনহাজের মরদেহ পাওয়া যায়। এঘটনায় পরিবারের সদস্যরা সন্দেহ করছেন, তাকে কেউ হত্যা করে ফেলে রেখে গিয়ে থাকতে পারে।

এসময় স্থানীয়রা বাংগরা বাজার থানা পুলিশকে খবর দিলে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, রাতেই লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। তবে, সুরতহালের সময় তার কপালে দুটি ছোট ক্ষত চিহ্ন দেখা গেলেও এটি দেখে তেমন কোনে আঘাতের চিহ্ন বলে মনে হয়নি। ময়না তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলে ওসি জানান।


রামগতিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার বেহাল দশা

গ্রুপিং-দলাদলিতে ব্যস্ত প্রধান শিক্ষকরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এমরান হোসেন, কমলনগর (লক্ষ্মীপুর)

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য, ক্লাস ফাঁকিবাজি, শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং, বিভিন্ন সংগঠন তৈরী করে নেতা সেজে ক্লাস কামাই সহ নানান কারণের শিক্ষার পরিবেশ বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। প্রায় সময় দেখা যায়, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সারাক্ষণ অফিস পাড়ায় তদবির নিয়ে ব্যস্ত থাকেন প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক সংগঠনগুলোর নেতারা। লেখাপড়ার মান খারাপ হওয়ায় দিন দিন স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে শুরু করছে। অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুল থেকে নিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কুলে ভর্তি করান।

জানা যায়, উপজলার ৯৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলার মধ্যে রয়েছে- প্রধান শিক্ষকদের দুটি আর সহকারী শিক্ষকদের একটি সংগঠন। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠনের একটির নেতৃত্ব দেন আলেকজান্ডার মডেল সপ্রাবির সেলিনা আক্তার ও বালুরচর সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন। আরেকটির নেতৃত্বে বিবিরহাট সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক এবিএম ওসমান ও চরহাসান হোসেন সপ্রাবির সোহেল সামাদ। সহকারী শিক্ষকদের রয়েছে উপজেলা সহকারী শিক্ষক সমিতি। এর নেতৃত্বে রয়েছেন-আলেকজান্ডার (২) সপ্রাবির সহকারী শিক্ষক আবু সায়েদ ও মোমিন উল্লাহ।

স্কুল চলাকালীন সময়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু সায়েদ স্বপনকে প্রায়ই দেখা যায়, মধ্য আলেকজান্ডার (২) সপ্রাবির সহকারী শিক্ষক আবু সায়েদের মোটরসাইকেলের পিছনে বসে ঘুরাঘুরি করতে। আবু সায়েদ শিক্ষক নেতা হওয়াতে কখনো স্কুলে যেতে হয়না। একই স্কুলের আরেক শিক্ষক জাফর স্কুলে যান কালেভদ্রে। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর ধরে এ অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা।

এছাড়া উপজেলার ১৮ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের রয়েছে উপজলা মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মচারী সমিতি নামের একটি সংগঠন। এর সভাপতি হলেন বিবিরহাট রশিদিয়া উচ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুহিনা আক্তার। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে প্রভাব বিস্তার করে শিক্ষক কর্মচারীদের প্রায় বছর খানিকের বকেয়া বেতন নিয়ে করেন কারসাজি, স্কুলের টাকা রাখেন তার একাউন্টে। বিভিন্ন উনয়ন প্রকল্প দিয়ে করেন আর্থিক লুট। স্কুল ফাঁকি দিয়ে বেশিরভাগ সময় থাকেন ঢাকায়। খামখেয়ালি ভাবে কর্মচারীদের করেন বহিষ্কার। তার স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়েও নয়ছয় করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তুহিনা আক্তারের এসব অনিয়ম লুটপাটের বিরুদ্ধে তার স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী কারিমুল হক প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও করেছেন।

সম্প্রতি উপজলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলেকজান্ডার মডেল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল হাসান এসব অভিযোগ এনে রামগতির বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষকদের গ্রুপিং, দলাদলি, ক্লাস ফাঁকি ও নানান অনিয়মের বিষয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিকারের জন্য সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। এসময় তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং, দলাদলি, ক্লাস ফাঁকি ও প্রাইভেট কোচিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এতে এ উপজেলার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অভিভাবক সহ সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা সমালোচনা হচ্ছে। অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক স্কুলের কোন ক্লাসই করছে না। সারাদিন অফিসপাড়ায় ঘুরাঘুরি ও তদবির বাণিজ্য নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন। ফলে ক্লাস চলাকালীন ছাত্ররা স্কুল গেইটের বিভিন্ন দোকানে, বাজারে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এসব গ্রুপিং দলাদলি ও তদবির বাণিজ্য বন্ধে উপজেলা শিক্ষা অফিসের হস্তক্ষেপ কামনা করে বক্তব্য দেন তিনি।

সব মিলিয়ে উপজলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা এখন হ য ব র ল অবস্থায় বিরাজ করছে। এসকল গ্রুপিং ও দলাদলি বন্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নেই কার্যকর কোন উদ্যোগ। এতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু সায়েদ স্বপন বলেন, গ্রুপিং ও দলাদলি নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অচিরেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ দিদার হোসেনের দাবি কোচিং সারা দেশেই চলছে।শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং ও দলাদলির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এগুলো বন্ধে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।


আধ্যাত্মিকতার আড়ালে গোপালপুরের জুগীর ঘোপায় জমজমাট মাদক বাণিজ্য

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

যমুনা সেতু থেকে সরিষাবাড়ী রেললাইনের পশ্চিম পাশে, গরিল্যা বিলের মাঝে আনুমানিক ১০ শতাংশ জমির উপর ভেসে থাকা দ্বীপ স্থানীয়দের কাছে “জুগীর ঘোপা” নামেই পরিচিত। এটি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের মোহাইল গ্রামে অবস্থিত। জুগীর ঘোপা নিয়ে আধ্যাত্মিকতা সহ বিভিন্ন অলৌকিক কল্পকাহিনী স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে, অপরাধের একটি বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।

স্থানীয়দের দাবি, আধ্যাত্মিকতার আড়ালে এখানে বসে জুয়ার আসর, মাদক বিক্রি ও মাদক সেবন, এবং পলাতক আসামিদের নিরাপদ আশ্রয়। এসব কর্মকাণ্ড নিরাপদে পরিচালনা করতে বেশ কিছুদিন আগে ঝাওয়াইল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চার চালা টিনের ছাউনি, পাকা দেয়াল ও ফ্লোরসহ একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট নৌকা ছাড়া জুগীর ঘোপায় পৌঁছানোর অন্য কোনো উপায় নেই, তাই ইচ্ছে করলেই সেখানে পৌঁছানো কঠিন ব্যাপার।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বৃহস্পতিবার সারাদিন এখানে সবচেয়ে বড় গাঁজা সেবনের আসর বসে। ওইদিন বিরতিহীনভাবে ৩টি নৌকা দিয়ে হাজার হাজার মাদকসেবীকে পারাপার করা হয়। সেদিন মান্নতের খিচুড়ি বিতরণ করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান, পার্শ্ববর্তী উপজেলা এবং গোপালপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ২ থেকে ৩ হাজার মাদকসেবীর আগমন ঘটে। শত শত মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রেললাইনের পাশে রেখে তারা জুগীর ঘোপায় যায়। আগত মানুষের সিংহভাগ তরুণ ও যুবক।

এসবকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এলাকায় জিনিসপত্র চুরি বেড়েছে। এছাড়াও, স্লিপারের সাথে রেললাইনের পাত আটকানোর ক্লিপ অধিকাংশ খুলে নিয়ে নেশাখোররা বিক্রি করে দিচ্ছে।

সত্যতা স্বীকার করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি জানান, মোহাইল গ্রামের ছাত্রসমাজ কিছুদিন আগে মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। কিন্তু জুগীর ঘোপা নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে তাদের চাপে ছাত্রসমাজকে চুপ হতে হয়েছিল। এরা খুবই ক্ষমতাবান। ওখানে বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকার মাদক ব্যবসা চলছে। আমি ওখানকার কর্মকাণ্ডের ঘোর বিরোধী। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ঘর নির্মাণের ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, বর্তমান পরিষদের আমলে ঘর দেওয়া হয়নি, অনেক আগে হয়তো দিয়েছে। খতিয়ে দেখে বিস্তারিত জানাতে পারবো।

ছদ্মবেশে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঘরের মধ্যে ৪টি গ্রুপ এবং ঘরের বাইরে ১৫-এর অধিক গ্রুপ গোল করে গানের আড্ডা ও জুয়ার আসর বসিয়েছে। নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা গাঁজা এবং গাঁজা প্রস্তুতির সরঞ্জাম সরবরাহ করছে।

প্রতিবেদককে দেখে সন্দেহ হওয়ায় কয়েকজন মানুষ তাকে কঠোর নজরদারিতে রাখতে থাকে।

সিন্ডিকেটের সদস্যরা কল্পকাহিনী শোনানোর এক পর্যায়ে জানান, এখানকার গাছের ডাল ভাঙলে মানুষের সাথে সাথে গলায় রক্ত বের হয়ে মৃত্যু হয়। কিন্তু বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গাছের ডাল ভাঙলেও বাস্তবে তেমন কিছু ঘটেনি।

নৌকা চালক চান মিয়া জানান, প্রফেসরের বাপে এখানের নিয়ন্ত্রণ করে! তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে সেই প্রফেসরের নাম তিনি বলেননি।

গোপালপুর থানা অফিসার ইনচার্জ গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

জুগীর ঘোপা নিয়ে লোকমুখে সবচেয়ে প্রচলিত কল্পকাহিনী হলো, কোনো অনুষ্ঠানের প্রয়োজনে বাসন-কোসনের জন্য নগ্ন গায়ে ও নগ্ন পায়ে প্রার্থনা করলে সাথে সাথে প্রয়োজনীয় বাসন-কোসন পাওয়া যেত। অনুষ্ঠানের শেষে বাসনগুলো ধুয়ে মুছে ওই স্থানে ফেরত দিয়ে আসতে হতো। একবার একজন লোক সব বাসন ফেরত না দেওয়ায় পরবর্তী সময়ে আর বাসন পাওয়া যায়নি। তবে এই দাবির কোনো সত্য ভিত্তি পাওয়া যায়নি।


নড়াইলে মব সৃস্টি করে স্কুলের প্রধান ও সহকারী শিক্ষককে লাঞ্চিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইল সদর উপজেলার ভবানীপুর আরবিএফএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সময়ে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এস এম জিয়াউল হককে মারধর করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয়েছে । ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও ভয় ও আতঙ্কে জিয়াউল হক বিদ্যালয়ে আসতে পারছেন না । এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক ও শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ।

অভিযোগে জানা যায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষার মানোন্নয়নে সাধারণ সভা চলাকালে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শরীফ তছিকুল ইসলাম পূর্বপরিকল্পিত ভাবে মূল আলোচ্য বিষয় বাদ দিয়ে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে আলোচনা শুরু করেন। একপর্যায়ে সভাপতি বহিরাগত লোকজন নিয়ে ‘মব সৃষ্টি’ করে প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় ভয় ও আতঙ্কে বেশির ভাগ অভিভাবক সভাস্থল ত্যাগ করেন। বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

এদিকে, বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক আজিজুর রহমানের এমপিওভুক্তি অবৈধ । এই মর্ম্মে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এস এম জিয়াউল হক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, উপ-পরিচালক এবং খুলনাঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন। এ অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় জিয়াউল হককে চাপ দেয়া হয়। আজিজুরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি প্রত্যাহারে অনীহা প্রকাশ করেন জিয়াউল হক। এ সময় ‘মব সৃষ্টি’ করে জিয়াউল হককে মারধর করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সভাপতি শরীফ তছিকুল ইসলামসহ শিক্ষক আজিজুর রহমান বহিরাগতদের জড়ো করে শিক্ষকদের প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অপরদিকে, আজিজুর রহমানের অবৈধ এমপিওভুক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে গত ২৯ জুলাই জেলা শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন খুলনায় প্রেরণ করেন। এছাড়া শিক্ষক আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হলে গত ১ সেপ্টেম্বর বিষয়টি তদন্ত হয়েছে। একই বিষয়ে সোমবার (১৫ সেপ্টেস্বর) জেলা শিক্ষা অফিসারের কক্ষে আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আরেকটি তদন্ত হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মহীউদ্দিন জানান, শিক্ষক আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এদিকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শরীফ তছিকুল ইসলাম বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় শিক্ষক আজিজুর রহমানকে পুনর্বহালের কথা বলা হলে হট্টগোলের একপর্যায়ে বিদ্যালয়ের বারান্দায় অবস্থানরত লোকজন শিক্ষক জিয়াউল হককে মারধর করেন। আমি পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করি। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন তিনি।

বিষয়টি জানতে প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামকে ফোন করলে ফোন বন্দ পাওয়া যায় ।


বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে দুদকের অভিযান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল।

সোমবার সকালে পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন কুমার সূত্রধরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলামের কক্ষে প্রবেশ করেন। এসময় দুদকের প্রতিনিধি দলটি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অধ্যক্ষের কাছে জানতে চান ও বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেন।

কলেজ সূত্র জানা যায়, পরিবহন খাত নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছিল। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত পরিবহন বাবদ অর্থ নেওয়া হলেও কলেজে বাস্তবে কোনো পরিবহন ক্রয় করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের টাকা দিয়ে একটি হাইচ গাড়ি কিনলেও এ গাড়ি মূলত অধ্যক্ষ ও কিছু শিক্ষক ব্যবহার করেন এবং ওই গাড়ির ব্যয়ভার চাপানো হয় শিক্ষার্থীদের ওপর। শুধু পরিবহন খাত নয়, শিক্ষার্থী কল্যাণ তহবিল, খাদ্য বাবদ অতিরিক্ত ব্যয়, সরকারি বরাদ্দের অপব্যবহার এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতি নিয়েও নানামুখী অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ অভিযোগ করেন, ফি বাবদ যে অর্থ তোলা হয়, তার সঠিক ব্যবহার হয় না।

অভিযান পরিচালনাকালে দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন কুমার সূত্রধর জানান, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের অনুমতির প্রেক্ষিতে আজকে এখানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আমরা পরিবহন খাতের লগবুক পরীক্ষা করছি। কোথাও শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের প্রমাণ নেই। বরং শুধু অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা ব্যবহার করেছেন এবং অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে। এছাড়া অভিযানে প্রাথমিকভাবে কিছু অনিয়ম-দুর্নীতি পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর পাঠানো হবে। এরপর সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে আমরা তাদেরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছি। আমি কোন অনিয়ম দুর্নীতি করি নাই।


নওগাঁয় বিলের বুকে ব্যতিক্রমী আয়োজন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী গুটারবিলে সোমবার বিকালে এক ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হলো মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্যজীবী সমাবেশ।

বিলের মাঝে ভাসমান মঞ্চ স্থাপন করে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের শতাধিক মৎস্যজীবী।

হাঁসাইগাড়ী, শৈলগাছী, শিকারপুর ও দুবলহাটি ইউনিয়নের মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে মাছের পোনা অবমুক্ত করার পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম ধলু। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আজম ভিপি রানা, যুবদলের সদস্য সচিব রুহুল আমিন মুক্তার, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জালাল হোসেন শাহানা প্রমুখ।

প্রধান অতিথি জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু বলেন, ‘দেশের প্রাণিজসম্পদ রক্ষা এবং মাছের উৎপাদন বাড়াতে পোনা মাছ অবমুক্তকরণ একটি কার্যকর ও সময়োপযোগী উদ্যোগ। পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’

পরে অতিথিরা গুটারবিলের পানিতে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ অবমুক্ত করেন।

আয়োজকরা জানান, এ ধরনের কর্মসূচি শুধু প্রাণিজ সম্পদ সংরক্ষণে নয়, বরং মৎস্যসম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা, প্রাকৃতিক জলাশয়ের সুরক্ষা এবং মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠান শেষে অনুষ্ঠিত হয় আনন্দঘন সাংস্কৃতিক পর্ব। দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য আয়োজন করা হয় গ্রামীণ জনপ্রিয় খেলা হাঁস ধরা, নৌকাবাইচ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী এ আয়োজন প্রাণ পায় স্থানীয় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে।

এ উদ্যোগকে স্থানীয়রা স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন নিয়মিত হলে মৎস্যজীবীদের মধ্যে উৎসাহ বাড়বে এবং বিল ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক সম্পদও সুরক্ষিত থাকবে।’


দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঝিনাইদহের ৪৫৫টি মণ্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এগিয়ে আসছে শারদীয় দুর্গাপূজা। উৎসবের আমেজে ভরে ওঠেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিটি উঠোন। জেলার পূজা মণ্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। এ বছর জেলায় ৪৫৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। পূজা উদযাপনকে নির্বিঘ্ন করতে তৎপর রয়েছে জেলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব কয়টি ইউনিট।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার বিভিন্ন এলাকায় মোট ৪৫৫টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১০৯টি, কালীগঞ্জে ১০১টি, কোটচাঁদপুরে ৪৬টি, শৈলকূপায় ১২৫টি, হরিণাকুণ্ডুতে ২৭টি ও মহেশপুর উপজেলায় ৪৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হবে।

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তৎপরতা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময়, পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে একের পর এক সভা করছেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও তাদের প্রতিনিধিরা মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে মহল্লায় মহল্লায় দলীয় কর্মীদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরের ব্যাপারীপাড়া জোড়াপুকুর সংলগ্ন সার্বজনীন মন্দির, কেন্দ্রীয় বারোয়ারি মন্দির ও চাকলাপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে প্রতিমার সাজসজ্জার কাজ।

প্রতীমা তৈরি ও সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যথাসময়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই দুর্গা দেবীর আরাধনার জন্য মণ্ডপগুলো প্রস্তুত করা হবে।

শহরের চাকলাপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি রনজিৎ শাখারী একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর মতো এবারও আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পূজা উপলক্ষে দারুণ উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।’

সদর উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মালা রাণী একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতি বছর আমাদের গ্রামে দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়। এবারও প্রস্তুতি শেষের দিকে। এখন সবাই মিলেমিশে আনন্দের সঙ্গে প্রতিমা তৈরি ও মণ্ডপের সাজসজ্জার কাজ করছে।’

জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক চন্দন একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শারদীয় দুর্গোৎসব বা দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলার মণ্ডপগুলোতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বড় রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পারব বলে আশা করছি।’

তিনি বলেন, র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা পূজার আয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করছেন। বিশেষ করে, গণমাধ্যমকর্মীরা মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরছেন। আমাদের সঙ্গে তারাও এই পূজা নির্বিঘ্ন করতে কাজ করে যাচ্ছেন।

ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া একটি গণমাধ্যমকে বলেন, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা ও সাইবার টিমসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল ইউনিট জেলাব্যাপী কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ বছর শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন করতে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখন মণ্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ চলমান। পূজা চলাকালীন সকল মণ্ডপে পুলিশের কঠোর নজরদারি রাখা হবে। গত বছর ঝিনাইদহে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়েছে। এ বছর নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে বলে আশা করছি।


জয়পুরহাটে ৬ শতাধিক হতদরিদ্র রোগীকে বিনা মূল্যে চক্ষুসেবা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ৬ শতাধিক হতদরিদ্র রোগীকে বিনা মূল্যে চক্ষুসেবা দেওয়া হয়েছে। সোমবার দিনব্যাপী ব্র্যাক মাইক্রোফিন্যান্স কর্মসূচির উদ্যোগে এই চক্ষু ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।

ক্যাম্পে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওষুধ, চশমা ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়। এছাড়া ক্যাম্প থেকে শতাধিক রোগী বাছাই করে বগুড়ায় গাক চক্ষু হাসপাতালে বিনা খরচে ছানি অপারেশন করা হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আলী হোসেন শাহ, বগুড়া ব্র্যাক ডিভিশনাল কোঅর্ডিনেটর লিড জেনারেশন মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী, জয়পুরহাট জেলা সমন্বয়কারী আরিফুল ইসলাম, এলাকা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম ও বগুড়া রিজিওনাল কোঅর্ডিনেটর লিড জেনারেশন হাসান উল কবিরসহ বিভিন্ন ডাক্তার ও নার্সরা।


জমি নিয়ে বিরোধ: প্রতিপক্ষের হামলায় সাংবাদিকের মা-ভাই আহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মা-ছেলেকে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে।

সোমবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার ব্রি-কালিয়াকৈর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য ও সাংবাদিক আজিজুল হাকিম সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আহত নান্ন মিয়া ও সম্পি বেগমকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে আজিজুল হাকিমের পরিবারের সাথে চাচাতো ভাইয়ের বউ মধুমালার বিরোধ চলছিল। এরই জেরে সোমবার সকালে মধুমালা বেগম, তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার, বোন রংমালা আক্তার, বোন জামাই মবজেল ও মধুমালার বাবা তোতা মিয়াসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও কয়েকজন বাঁশের লাঠি নিয়ে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর অভিযুক্তরা ঘরে ঢুকে গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় ভুক্তভোগীর ভাই নান্ন মিয়া প্রতিবাদ করলে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। হামলার সময় তাদের মা সম্পি বেগম বাধা দিতে গেলে তাকেও কিল-ঘুষি ও চড়-থাপ্পড় মেরে জখম করা হয়। পরে তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


প্রায় ২০ মাস ধরে বন্ধ যমুনা সার কারখানা, নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোস্তাক আহমেদ মনির, সরিষাবাড়ী (জামালপুর)

গ্যাস সংকটে প্রায় ২০ মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ে আছে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা। এতে প্রতিদিন লোকসান হচ্ছে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। কারখানা বন্ধ থাকায় মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ। চলতি আমন মৌসুমে ইউরিয়া সার সংকটের আশঙ্কা করছে কৃষকরা। দীর্ঘদিন ধরে কারখানা বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে কারখানার সাথে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিক পরিবার।

কারখানা সুত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে তারাকান্দি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় যমুনা সার কারখানা। এ কারখানাটি বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা নিয়ন্ত্রণাধীন এবং কেপিআই-১ মানসম্পন্ন সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। কারখানার নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪২-৪৩ পিএসআই গ্যাসের প্রয়োজন হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দৈনিক ১ হাজার ৭০০ টন সার উৎপাদন করছিল কারখানাটি। কিন্তু গ্যাসের চাপ স্বল্পতা ও বিভিন্ন ত্রুটির কারণে উৎপাদন কমে ১ হাজার ২০০ টনে নেমে আসে। জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও উত্তরাঞ্চলের রাজবাড়ী ও উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলাসহ প্রায় ২০টি জেলার আড়াই হাজার ডিলারের মাধ্যমে যমুনার সার সরবরাহ করা হয়।

গত ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে তিতাস গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেওয়ায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এতে বেকার হয়ে পড়েন কারখানাসংশ্লিষ্ট শ্রমিক, কর্মচারী, পরিবহনের চালক, হেলপার, কারখানার আশপাশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হোটেল মালিকরা। দীর্ঘ ১৩ মাস পর ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্যাস সংযোগ পেয়ে পুনরায় উৎপাদনে ফিরে কারখানাটি। উৎপাদন শুরুর ৪ দিনের মাথায় ২৬ ফেব্রুয়ারি গত বুধবার রাত ৭টার পর অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ফের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকেই বন্ধ রয়েছে বৃহৎ এ কারখানাটি। দীর্ঘ ২০ মাস ধরে বন্ধ থাকায় প্রতিদিন সাড়ে ৩ কোটি টাকা হারে লোকসান হচ্ছে বলেও জানা যায়। দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় সার সংকট হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকরা। দ্রুত গ্যাস সংযোগ দিয়ে বৃহৎ এ শিল্প কারখানাটি সচল রাখতে না পারলে পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানান কারখানা কর্তৃপক্ষ।

এদিকে গত ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান যমুনা সার কারখানা পরিদর্শন করতে আসেন। এ সময় স্থানীয় শ্রমিক, ডিলার ও ব্যবসায়ীরা গ্যাস সংযোগের দাবিতে মানববন্ধন করেন। পরে দ্রুত গ্যাস সংযোগ দেওয়ার আশ্বাস দেন বিসিআইসির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান।

কারখানার দৈনিক মজুরিভিত্তিক একাধিক শ্রমিক, ট্রাক পরিবহন শ্রমিকসহ একাধিক শ্রমিক বলেন, কারখানার সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫ শতাধিক ট্রাক, ট্যাংক ও লড়ি পরিবহন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কারখানা বন্ধ থাকায় আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। কারখানা এভাবে বন্ধ থাকলে এক সময় চিনি ও পাটশিল্পের মতো এ শিল্পও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এ বিষয়ে যমুনা সারকারখানা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম তালুকদার বলেন, আমরা কারখানাটি চালুর বিষয়ে ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে অতি তারাতাড়ি গ্যাস সংযোগ দেবে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অনুপ সিংহ বলেন, ‘যমুনার সারের গুণগত মান ভালো। যমুনার সার জমিতে ব্যবহারের ফলে ফসল বৃদ্ধি পায় ও উৎপাদন ভালো হয়। গাছও সতেজ থাকে। আমদানি করা ও অন্য কারখানার সারগুলোর গুণগত মান ভালো না। আমদানিতকৃত সারগুলো দীর্ঘদিন ধরে কারখানায় মজুত করে রাখায় জমাট বেধে শক্ত হয়ে যায়। ফলে এটি ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। যমুনা সার কারখানাটি চালু করা অতি প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে যমুনা সার কারখানার জিএম (প্রশাসন) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের কারখানাটি এখনো বন্ধ রয়েছে। তবে আমরা আশ্বাস পেয়েছি যে আগামী মাস নাগাদ যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। গ্যাস সংযোগ পেলে আমরা পুনরায় পুরোদমে উৎপাদনে ফিরতে পারব।


banner close