শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

আয়েশি নয়, কল্যাণমুখী প্রকল্পে জোর দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
আপডেটেড
৮ নভেম্বর, ২০২২ ১৮:২১
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৮ নভেম্বর, ২০২২ ১৮:২০

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী চাপে থাকা অর্থনীতিকে টেনে তুলতে বিলাসী প্রকল্পে হাত না দিয়ে উৎপাদনমুখী প্রকল্পে জোর দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি উৎপাদন বাড়াতে সব পতিত জমিতে চাষ করার তাগাদা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া নতুন হুমকি হয়ে আসা ডেঙ্গুর বিষয়ে সতর্ক হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে সরকারপ্রধান এসব নির্দেশনা দেন। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

মন্ত্রী বলেন,‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের আরও সাবধানী হতে বলেছেন। প্রকল্প যাচাই বাছাই ও অনুমোদন দুটোতেই। অপ্রয়োজনীয় অথবা আয়েশি এসব আইটেমের দিকে আমাদের সতর্ক হতে হবে। এ ধরনের প্রকল্প এখন অনুমোদন দেয়া যাবে না। আমরা এই প্রক্রিয়া গত কয়েক মাস ধরেই করে আসছি। এখন বিষয়টিতে আরও জোর দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।’

‘তবে একটি শর্ত ছোট প্রকল্প, গ্রামীণ প্রকল্প, কল্যাণমুখী প্রকল্প—এগুলোতে আমরা কোনো আপস করব না। এগুলোকে আমরা আগে যেভাবে অগ্রাধিকার দিয়েছি এখনো সেভাবে অগ্রাধিকার দেব। শুধু বড় বড় প্রকল্প সেগুলো আমরা না করছি, সেগুলোর আরও গভীর চিন্তাভাবনা করে অনুমোদন দিতে হবে’, বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

বিলাসদ্রব্য কমিয়ে কৃষিতে জোর দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আমাদের কাজে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন আপনারা ভালো করছেন, আরও করতে হবে। দুনিয়াব্যাপী টালমাটাল অবস্থায়ও আমরা টেকসই থাকতে চাই। শুধু অপচয় কমানো নয়, নিজেদের সম্পদ বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। বিলাসদ্রব্য আমাদের অফিসে হোক, বাস ভবনে হোক, এভয়েড করতে হবে। কোনো বিলাসদ্রব্য আমরা ব্যবহার করব না। কৃষির ওপরে তিনি বেশি জোর দিয়েছেন। তার কথা হলো, স্বাবলম্বী হতে হবে। আমাদের নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কোনো কারণে যদি দুনিয়ার পতন হয়েই যায়, আমরা যেন খেয়ে-পরে বাঁচতে পারি।’

‘সুতরাং চাল, ডাল, সবজি, মাছ, মুরগি পোলট্রি—এগুলো আমাদের বড় শিল্পের মধ্যে আছে। এগুলোকে আমরা সহায়তা দিয়ে যাব’, বলেনএম এ মান্নান।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

জমি খালি রাখা যাবে না
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না। আপনারা শুনেছেন বারবার। আজকেও আবার তিনি বলেছেন, আমরা যে যেখানে পারি, যে যা চাষ করবে তার ইচ্ছা। যার যা ইচ্ছা চাষ করুক। কিন্তু কোনো জমি ফেলে রাখা যাবে না।’

‘জেলা প্রশাসনকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন তারা যেন খুঁজে খুঁজে অনাবাদি জমি বের করেন। সরকারপ্রধানের বার্তাটা পৌঁছে দেয়া হবে। তাদের কিছু ছোটখাটো সহায়তা লাগলে সেগুলো দেওয়া হবে আমলাতন্ত্রকে এড়িয়ে।’

ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন হতে হবে
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কোভিডের সুড়ঙ্গ থেকে আমরা প্রায় বের হয়ে এসেছি। সুতরাং ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য সরকারপ্রধান আমাদের বলেছেন।’

এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। তবে আমাদের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক আছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে বেশি ক্ষতি হয়নি।’

‘আজকে আমরা তার কাছে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। আমরা একটি কঠিন সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। সারা বিশ্ব একটি কঠিন সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। সেটা আমরা আমাদের প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করেছি। এই কঠিন সময় কোন দেশের কতটুকু ক্ষতি হয়েছে জানি না। আমরা উদীয়মান দেশ। আমাদের মোটামুটি একটি উল্লম্ফন ঘটে গিয়েছিল। সেটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এটা আমাদের বিশেষ ক্ষতি।’

‘এত কিছুর মধ্যেও আমরা আমাদের গতিধারা ধরে রাখতে পেরেছি। ইতিবাচক ধারায় আমরা আছি। আমাদের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক অবস্থায় আছে। সেটা সামনে আরও সংহত হবে। বিশেষ করে সিত্রাংয়ের পর আমরা যে আশঙ্কা করেছিলাম, সে রকম ক্ষতি হয়নি। এখন আমরা আশা করছি আগামী ফসলটা মাঠে... আশা করি উঠে যাবে, কোনো বড় ঝড় যদি না হয়, তাহলে বড় একটি সুবিধা হবে’, বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

৩৯৮১ কোটি টাকার ৭ প্রকল্প অনুমোদন
একনেক আজ প্রায় তিন হাজার ৯৮১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত সাতটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন তিন হাজার ৩৯২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৩২২ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৬৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

প্রধানমন্ত্রী এবং একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।


টেকনাফে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে চলছে ভাড়াবাণিজ্য

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:৪৫
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার একটি পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নের মোট ৫২৩ জন ভূমি ও গৃহহীনদের মধ্যে ঘর বিতরণ করা হয়। মাথা গোঁজার স্থায়ী একটি আবাসন পেয়ে নতুন জীবন শুরু করেন এসব ভূমিহীন অসহায় মানুষ।

তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই এসব আশ্রয়ণের ঘর ভাড়া দিয়ে শুরু হয় রমরমা বাণিজ্য। দুর্নীতি ও প্রভাব খাটিয়ে অনেক সচ্ছল পরিবারের লোকজন এই ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। তারা এসব ঘরে বসবাস না করে ভাড়া দিচ্ছেন। গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা মেলে।

টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়ার শেষ মাথায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালিকায় ৫ নম্বর সিরিয়ালে রয়েছে নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কামালের ঘর। ওই গ্রামেই কামালের টিনশেড ঘর রয়েছে। তবুও তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। বরাদ্দ পাওয়া ঘর কামাল এখন ভাড়া দিয়েছেন অন্যের কাছে। আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেখানকার মোট ৭টি ঘর ভাড়া দেওয়া হয়েছে অন্যের কাছে। কামাল ২ লাখ টাকার বিনিময়ে তার ঘরটি বিক্রি করেন রাশেদার কাছে। পরে জানাজানি হলে টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছেন বলে জানান বসবাসকারীরা।

টেকনাফ সাবরাং নয়াপাড়ার (পুরান পাড়ার) আশ্রয়ণের ঘরে থাকা এক নারী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ‘আমাদের ১০টি ঘরের মধ্যে তিনটি ঘরে উপকারভোগীরা বসবাস করে। বাকি ৭টি ঘরে কেউ থাকে না। বর্তমানে সেই ৭টি ঘরে তালা ঝুলিয়ে রাখলেও বরাদ্দপ্রাপ্তরা নতুন ভাড়াটিয়া খোঁজ করছেন।’ এ ব্যাপারে কামাল বলেন, ‘এখন ঘর বিক্রি করব না এবং ভাড়াও দেব না।’ এই ঘর বিক্রি করেছিলেন বলে স্বীকার করেন তিনি।

টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মুফিত কামাল বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে সরকার টিনের গুচ্ছগ্রাম দিয়েছিলেন। তার প্রতিটি ঘরেই মানুষ থাকে। বর্তমানে ওইসব ঘর জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। তাদের পাশেই প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘর রয়েছে। অথচ অনেকে বরাদ্দ পাওয়া ঘরে থাকছেন না। সেই ঘরগুলো সবসময় তালাবদ্ধ থাকে। সেগুলো যদি গুচ্ছগ্রামের জরাজীর্ণ ঘরে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হয় তাহলে বেঁচে যান অনেকে।

স্থানীয় কলেজপড়ুয়া ছাত্র মো. শাহ্ আলম বলেন, ‘যাদের কাছে ঘরের প্রয়োজন নেই তারাই এসব ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের কাছের লোক এবং আত্মীয়দের ঘর দিয়েছেন। তাই সিংহভাগ ঘর তালাবদ্ধ থাকছে। প্রশাসনের কাউকে কোনোদিন আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব ঘর তদারকি করতেও দেখিনি।’

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে জানান, ‘নিজের নামের বরাদ্দ ঘর ভাড়া দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবু আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর কেউ বিক্রি অথবা ভাড়া দিয়ে থাকলে যাচাই-বাছাই করে তাদের ঘর বাতিল করা হবে।


হবিগঞ্জে টোল আদায় নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

আপডেটেড ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:৫৭
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের মাধবপুরে একটি সিএনজি স্ট্যান্ডের চাদা তোলা নিয়ে শ্রমিক ও পৌরসভার কাউন্সিলরদের মধ্য ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কাউন্সিলরসহ উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাধবপুর কাটিয়ারা গাবতলি সিএনজি স্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।

মাধবপুর পৌরসভার সচিব আমিনুল ইসলাম জানান, নীতিমালা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে মাধবপুর পৌর কর্তৃপক্ষ টোল আদায় করছিল। দুপুরের দিকে ৫০ থেকে ৬০ জন শ্রমিক দা-লাঠি নিয়ে পৌরসভার কর্মচারী ও কাউন্সিলরদের ওপর আক্রমণ করে। এতে কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম, কাউন্সিলর হাকিম, কর্মচারী উৎপল সাহা ও সুহেল মিয়াসহ ১০ থেকে ১২ জন আহত হন।

কাটিয়ারা গাবতলি সিএনজি স্ট্যান্ডের শ্রমিকনেতা লাকমান হাসান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে মাধবপুর পৌরসভার মেয়রের নির্দেশে পৌরসভার লোকজন সিএনজি থেকে চাদা উত্তালন শুরু কর। এ সময় সিএনজিচালকরা চাদা দিতে অস্বীকার করলে পৌরসভার লোকজন শ্রমিকদের ওপর হামলা করে। এতে শ্রমিক চেরাগ আলী, হারুন মিয়া, কামাল মিয়া, হারিছ মিয়া, হাকিম মিয়াসহ আহত হন। এ ঘটনায় শ্রমিকরা মাধবপুর থানায় মামলা করবেন বলে জানা যায়।

মাধবপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক জানান, আইন অনুযায়ী টোল আদায় করতে গিয়ে কাউন্সিলরসহ পৌরসভার কর্মচারীদর পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। পৌরসভার রাজস্বের জন্য এ টোল আদায় করা হয়। পৌরবাসীকে রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত করতে সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে। সন্ত্রাসী ও হামলাকারিদের বিরুদ্ধ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশপাশি থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম খান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। অভিযোগ পেলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।


নিয়োগের আগেই পাঁচধাপ ডিঙিয়ে পদোন্নতি চসিকে!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ (চাকরি) স্থায়ী হওয়ার পাঁচ মাস পূর্বেই মো. আবু তাহের নামক এক ব্যক্তিকে স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক পদে পদোন্নতি দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। ইতিমধ্যে তার পদোন্নতিপত্র প্রস্তুত করে চসিকের ভারপ্রাপ্ত সচিবের টেবিলে উত্থাপন করা হয়েছে। স্বাক্ষর হলেই দু/এক দিনের মধ্যে তাকে এই পদোন্নতিপত্র দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

যদিও চাকুরি বিধি অনুসারে এই পদে পদোন্নতি পেতে হলে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ স্থায়ী হওয়ার পর পাঁচটি ধাপে অন্তত ২০ হতে ২৫ বছর চাকরিকাল অতিবাহিত হওয়া বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

তবে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চলতি মাসের ১ তারিখ (১ এপ্রিল ২০২৪) হতে নিয়োগ পাওয়া মো. আবু তাহের এর বেলায় সরকারের এই নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতি বিধির কোনো নিয়মই অনুসরণ করেনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা। এই নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বাস্থ্য বিভাগের স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে চাপাক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

চসিকের সংস্থাপন শাখার একাধিক কর্মকর্তা জানান, স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ (চাকরি) স্থায়ী হয়ে অন্তত পাঁচ বছর চাকরি করার পর সিনিয়র স্বাস্থ্য সহকারী পদে পদোন্নতি হওয়ার কথা। এই পদে শান্তি-শৃঙ্খলা মেনে পাঁচ বছর চাকরি করার পর পদোন্নতি পাবেন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে। নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকসহ আরও কয়েকটি কোর্স সম্পন্ন করার পাশাপাশি এই পদে চাকরিকাল পাঁচ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পাবেন। এরপর পাঁচ বছর অতিক্রম হলে সিনিয়র স্বাস্থ্য পরিদর্শক এবং এর আরও পাঁচ বছর পর স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক পদে পদোন্নতির দেওয়ার বিধান রয়েছে।

তবে চসিকের অস্থায়ী স্বাস্থ্য সহকারী মো. আবু তাহেরকে চলতি মাসের ১ তারিখ হতে (১ এপ্রিল ২০২৪) স্বাস্থ্য সহকারী পদে স্থায়ী করে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। যা গত এক সপ্তাহ পূর্বে তার হস্তগত হয়েছে। এই নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার এক সপ্তাহ অতিক্রম না হতেই এবার তাকে পাঁচ ধাপ ডিঙিয়ে স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক পদে পদোন্নতি দিয়ে পত্র ইস্যু করা হয়েছে।

চসিক সচিবের দপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম গত বছরের ৩ ডিসেম্বর হতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চিকিৎসা জন্য বিদেশে অবস্থান করেন। ওই সময় চসিকের প্রধান মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন সংস্থাটির সচিব খালেদ মাহমুদ। এই সময়ে তিনি সম্পূর্ণ বিধিবর্হিভুতভাবে চসিকের অস্থায়ী স্বাস্থ্য সহকারী আবু তাহেরকে সংস্থাটির স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক পদে পদোন্নতির ফাইল অনুমোদন দেন। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্বে থাকা (প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা) মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের টেবিলে সেই পদোন্নতিপত্রটি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব (প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা) মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের দপ্তরে গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পরও কোনো স্বাক্ষাৎ মিলেনি। এমনকি মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও এই কর্মকর্তার কোনো সাড়া দেননি।

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এই ধরণের কোনো ফাইল আমার টেবিলে এসেছে কিনা জানা নেই। তবে বিধি উপেক্ষা করে কোনো নিয়োগ-পদোন্নতি অন্তত আমার হাতে হবে না- এটুকু বিশ্বাস রাখতে পারেন।


ব্যারিস্টার সুমনের উদ্যোগে লোডশেডিং থেকে রক্ষা পেল ৮ লাখ মানুষ

চালু হয়েছে ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এমপির প্রচেষ্টায় বিদ্যুতের লোডশেডিং থেকে অনেকটাই রক্ষা পেয়েছে চুনারুঘাট-মাধবপুরের প্রায় ৮ লাখ মানুষ। দুই উপজেলায় চালু হয়েছে বন্ধ থাকা ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। বিষয়টি এক ভিডিও বার্তায় নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার সুমন।

এতে করে তার সংসদীয় এলাকায় পূর্বের তুলনায় তীব্র তাপদাহের এই সময়ে লোডশেডিং অনেকটা কমেছে। আগে যেখানে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৫-১৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকতো না, আর এখন ১৬-১৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে ওই এলাকার মানুষ। ফলে জনজীবনে ফিরেছে স্বস্তি। ব্যারিস্টার সুমন এমপির এমন উদ্যোগকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন জনগণ।

রমজান মাসে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে এমপি সুমনের কাছে সমাধান চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হন চুনারুঘাট-মাধবপুরবাসী। জনতার এমপি ব্যারিস্টার সুমন তাঁর সংসদীয় এলাকার জনগণের কষ্টের কথা শুনে ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় লোডশেডিং কমানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সমাধান না হলে তিনি মহাসমাবেশের ডাক দিবেন বলেও হুশিয়ারী দেন।

পরবর্তীতে ব্যারিস্টার সুমনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চালুর মাধ্যমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আনতে বাধ্য হন সংশ্লিষ্টরা। এ সুখবর দিতে গিয়ে ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘গ্যাস সংযোগ না থাকার কারণে নসরতপুর ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এতোদিন বন্ধ ছিল। বন্ধ থাকা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে চালু হয়েছে। এখন আশা করা যাচ্ছে, আগের মতো এতোটা লোডশেডিং হবেনা। তিনি বলেন, যদি আবারও অসহনীয় লোডশেডিং হয়, তবে পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করতে হবে জনগণের কাছে। পরিশেষে তিনি জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।


তীব্র দাবদাহে মেহেরপুরে দেখা দিয়েছে পানি সংকট

বৃদ্ধ আব্দুর রহিম টিউবওয়েল চাপছেন; কিন্তু পানি উঠছে না। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মেহেরপুর প্রতিনিধি

ছিয়াত্তর বছর বয়সি আব্দুর রহিম, বয়সের ভারে চলাফেরা করাটাই তার পক্ষে এখন কঠিন। স্ত্রীকে হারিয়েছেন দেড় যুগ আগে। পরিবারের সদস‍্য বলতে এক ছেলে, তাও থাকেন প্রবাসে। এ অবস্থায় রান্না বান্না থেকে শুরু করে সব কিছুই করতে হয় নিজেকে। জীবন যুদ্ধে তিনি কখনো দমে যাননি। তবে এবার হার মেনেছেন টিউবওয়েলের পানির কাছে। ১৫ থেকে ১৬ বার টিউবওয়েল চাপার পরেও মিলছে না এক গ্লাস পানি। তাই পানি সংকটের কারণে গোসল থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সব কাজ হচ্ছে ব‍্যাহত। প্রচণ্ড গরমে তাই তিনি অধিকাংশ সময় বাড়ির পাশে থাকা মসজিদে গিয়ে পানির চাহিদা পূরণ করছেন।

গৃহবধূ ছানোয়ারা খাতুনের বাড়িতেও সপ্তাহ দুয়েক ধরে টিউবওয়েলে উঠছে না পানি। প্রতিবেশীদের পরামর্শে মটর কিনে এনে টিউবওয়েলে সেট করেও মিলছে না পানি। খাওয়া থেকে ওজু, গোসল সব কিছুতেই বেগ পেতে হচ্ছে পানি সংকটের কারণে।

মেহেরপুরের গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের হস্তচালিত টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে এলাকায় পানির সংকট চরমে পৌঁছেছে। একদিকে গৃহস্থালির কাজে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে পর্যাপ্ত পানির অভাবে বোরো চাষ ব্যাহত হচ্ছে।

এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললে তারা সুপেয় পানির সংকটের কথা জানান। বিশেষ করে মুজিবনগর উপজেলার, জয়পুর, আমদহ, তারানগর, বিশ্বনাথপুর, সদর উপজেলার শালিকা, আশরাফপুর, আমদাহ, বুড়িপোতা, আলমপুর এবং গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের আমতৈল, মানিকদিয়া, কেশবনগর, শিমুলতলা, রইয়েরকান্দি, সহড়াবাড়িয়া, মিনাপাড়া, ভোলাডাঙ্গা, কুমারীডাঙ্গা কাথুলি ইউনিয়নের গাঁড়াবাড়িয়া, ধলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই সুপেয় পানির সংকট প্রকট।

দীর্ঘ সময় ধরে অনাবৃষ্টি, ভূ-গর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার, অপরিকল্পিতভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলা এবং পুকুর-খাল-বিল ভরাটের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, গ্রীষ্মকাল শুরু না হতেই এবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। অথচ গ্রামে সুপেয় পানির জন্য নলকূপই শেষ ভরসা। তাই যেখানে পানি পাওয়া যাচ্ছে সেখানে এলাকার গৃহবধূ ও শিশুরা জগ, কলসি ও ঘড়া নিয়ে টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করছেন।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, জেলার গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানির স্তর প্রতিবছর ১০ থেকে ১১ ফুট নিচে নামছে। ১০ বছর আগেও এই এলাকায় ৬০ থেকে ৭০ ফুটের মধ্যে ভূগর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর পাওয়া যেত। অথচ এখন পানির জন্য যেতে হয় ৩০০ ফুটেরও বেশি গভীরে। ফলে অকেজো হয়ে পড়েছে হস্তচালিত অনেক টিউবওয়েল।

জেলায় গভীর-অগভীর মিলিয়ে ৯ হাজার ৯১৩টি নলকূপ আছে। এর মধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ২ হাজার ২৩৯টি নলকূপ।

গাংনী উপজেলার ভোলাডাঙ্গা গ্রামের পল্লি চিকিৎসক আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমি ২০ বছর ধরে গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা দিয়ে বেড়াই। আজ ১০ দিন ধরে আমার বাড়ির নলকূপে পানি উঠছে না। রোদের মধ‍্যে সারাদিন গ্রাম গ্রাম ঘুরে বাড়ি এসে যদি পানি না পাই তাহলে কেমন লাগে? আমি তাই মসজিদের নলকূপে গিয়ে গোসল সেরে আসি। আর গিন্নি যায় পাশের বাড়িতে। বর্ষা শুরু হলে হয়তো এর সমাধান হবে।’

একই এলাকার দিনমজুর সিরাজ বলেন, ‘সারাদিন মাঠে কাজ করি। বাড়িতে দুটি গরুও পালন করি। গরু দুটির আজ কয়দিন গা ধুয়াতে পারিনি। আবার মাঠে এক বিঘা ধানের আবাদ আছে, তাতে সেচ দিতে গিয়ে বিপদে পড়তে হচ্ছে। যেখানে দুই ঘন্টা মেশিনে পানি দিলে হয়ে যেতো। সেখানে এখন চারটা ঘণ্টা পানি দিয়েও হচ্ছে না।’

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, কয়েকদিন ধরেই চুয়াডাঙ্গাসহ এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মেহেরপুরের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন বলেন, সুপেয় পানির সমস্যা নিরূপণে যেসব এলাকায় সংকট সেখানে ১০টি বাড়িকে কেন্দ্র করে একটি ৯০০ ফুট গভীর নলকূপ স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। এসব এলাকায় ৫০০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হবে। তবে অতিবৃষ্টি ও পানির অপচয় রোধ করা না গেলে পানি সংকটের সমাধান মিলবে না।


দাবদাহে হাঁসফাঁস করছে সাফারি পার্কের প্রাণীরা

গাছের ছায়ায় ঝিমুচ্ছে সিংহ। ছবি: দৈনিক বাংলা। 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোতাহার খান, শ্রীপুর (গাজীপুর)

পার্কজুড়ে সুনসান নীরবতা। প্রচণ্ড দাবদাহে দর্শনার্থীর সংখ্যা একেবারে নেই বললেই চলে। পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্তরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে এমনটাই দেখা গেছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সকল ইউনিটে।

কোর সাফারী পার্কে ঘুরে দেখা যায়, টানা তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস করছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রাণীকুল। পার্কের অপেক্ষাকৃত ছায়া যুক্ত স্থানে থাকতে চাচ্ছে প্রাণীরা। টানা খরায় পার্কের লেকগুলোতে কমে গেছে পানি। কর্তৃপক্ষ পানির সরবরাহ বাড়াতে চালাচ্ছেন প্রানান্ত চেষ্টা। আশার কথা তীব্র দাবদাহে দেশি-বিদেশি কোনো পশু পাখি অসুস্থ হয়ে পড়েনি। প্রাণীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিচর্যা করছে কর্তৃপক্ষ। দাবদাহ থেকে প্রাণীদের রক্ষা করতে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি যত্ন। পর্যাপ্ত পানির জন্য স্থানে স্থানে স্থাপন করা হয়েছে পাম্প।

পার্কের আফ্রিকান সাফারি ঘুরে দেখা গেছে, জেব্রার পাল একটু ছায়ার জন্য দৌড়াচ্ছে। দূরে বনের গভীরে ঠাঁই দাড়িয়ে আছে নীল গাই, গয়াল, ওয়াইলবিস্ট, হরিণের পাল। শাবক হরিণের জন্য দেওয়া হয়েছে পানির চৌবাচ্চাসহ বিশেষ ইনক্লুজার। সেডের ছায়ায় খাবার সামনে রেখে হাঁপাচ্ছে ভাল্লুক।

রয়েল বেঙ্গল বাঘের বেষ্টনীর খালে কমে গেছে পানি। বেষ্টনীর যে জায়গায় ছায়া আছে বাঘ ছুটছে সেখানে। কখনোবা খালের পানিতে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টাও করছে। আফ্রিকান সিংহ তীব্র রোদে ক্লান্ত হয়ে ঝিমাচ্ছে। বিশেষ গাড়িতে খুব কাছে গিয়ে দেখা গেছে সিংহ ছায়া যুক্ত গাছের নিচে আয়েশে ঝিমাচ্ছে। রোদের তীব্রতায় ময়ুর গুলো গাছের ছায়ায় পাখনা মেলে আছে। জলহস্তির বেষ্টনীতে কমে গেছে পানি। অল্প পানিতে দুটি জলহস্তি নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। উট পাখিগুলো সেডের ভেতর সামান্য ছায়ায় বসে থাকতে দেখা গেছে। প্রচণ্ড খরা আর দাবদাহে পার্কের প্রাকৃতিক জলাধারগুলোতে কমে গেছে পানি।

পার্ক ঘুরে দেখা গেছে কর্তৃপক্ষ নিয়েছেন বিশেষ ব্যবস্থা। জলা ধারে পানি সরবরাহ বাড়াতে স্থাপন করা হয়েছে সাতটি সাবমারসিভল পাম্প। বিভিন্ন প্রাণীর বেষ্টনীতে স্থানে স্থানে স্থাপন করা হয়েছে কৃত্রিম জলাধার। এসব জলাধারে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা হয়। আফ্রিকান সাফারিতে থাকা হিংস্র প্রাণীসহ সকল প্রাণীর গতিবিধি মনিটর করতে লাগানো হয়েছে সিসিটিবি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরায় প্রত্যেকটি প্রাণীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।

পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বনসংরক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে জানান, পার্কে বর্তমানে আটটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চারটি সিংহ,আটটি হাতি,প্রায় দেড় শত হরিণ, দুটি জিরাফ, নয়টি ননীলগাই,ত্রিশটি জেবরাসহ দেশি-বিদেশি দুর্লভ প্রাণী ও পাখি রয়েছে। তীব্র দাবদাহের কারণে পার্কের প্রাণিকুল এখন হাঁসফাঁস করছে। এসব পশু-পাখির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। হাতি, বাঘ, সিংহকে শান্ত রাখতে দিনে তিন চার বার গোসল করানো হচ্ছে। পানির সাথে সেলাইন,গ্লুকোজ দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। চব্বিশ ঘণ্টা প্রাণীদের মনিটরিং করা হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে হিংস্র প্রাণীদের মনিটরিং করা হয়। এ ছাড়া পার্কে দুইটি জেব্রা ও দুটি গয়ালের সাবক রয়েছে। এদের বিশেষ যত্ন নেওয়া হচ্ছে। দাবদাহের কারণে এখনো পার্কে কোন প্রাণী অসুস্থ্য হয়নি। তবে দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে গেছে।


সাজেকে ডাম্প ট্রাক খাদে: নিহত বেড়ে ৯

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

রাঙ্গামাটির সাজেকের শ্রমিকবাহী ডাম্পট্রাক খাদে পড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রিপল বাপ্পি চাকমা।

গতকাল বুধবার বিকেলে খাগড়াছড়ি হতে সাজেক উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্পট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ার কোম্পানির ব্রিজের কাজে যাওয়ার সময় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে ৬ জন মারা যান।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার গণমাধ্যমকে জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহতদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

তবে মৃত ৯ জনের মধ্যে ২ জনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশ। তারা হলেন- রামুর আব্দুর শুক্কুরের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন (৩৫) ও ইশ্বরগঞ্জ ময়মনসিংহের হাশেম ফকিরের ছেলে লালন মিঞা। বাকী ৭ জনের পরিচয় এখনও জানা সম্ভব হয়নি।

বৃহস্পতিবার সকালে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঘাইছড়ির সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল আওয়াল।

তিনি বলেন, সীমান্ত সড়কের কাজ শেষে করে শ্রমিক বহনকারী ট্রাকটি মূল স্টেশনে ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ি খাদে পড়ে যায়। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক ৩ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে চিকিৎসারত অবস্থায় আরেকজন মারা যান।

তিরি আরও বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে। হতাহতদের নাম ও পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে।


যেভাবে সংসদ নির্বাচন করেছি, উপজেলায় সেভাবে ভোট হবে: ইসি আনিছুর

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম ব্যুরো

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠাবোধ করা হবে না। যেভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেছি, সেভাবে এ নির্বাচন হবে। কোনোভাবে জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে নিচে নামার সুযোগ নেই।
আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর পিটিআই মিলনায়তনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২৪ উপলক্ষে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা এবং রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সি আনিছুর বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চট্টগ্রাম বিভাগের ৯টি জেলার প্রতিটি উপজেলায় ইভিএমের মাধ্যমে এবং বাকি জেলাগুলোর উপজেলা পরিষদে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। এ নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না। কোনো কেন্দ্রে যদি ভোট কারচুপি বা অনিয়ম হয় তবে সে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার সঙ্গে সঙ্গে ভোট বন্ধ করে দিতে পারবেন। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আইনের পক্ষে থেকে যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা আপনাদের পাশে থাকবে।

তিনি বলেন, গত নির্বাচন একই দিনে সম্পন্ন হলেও এবারের নির্বাচনে ব্যবস্থাপনার সুবিধা ও কৃচ্ছ্রতাসাধনে চারটি ভাগে নির্বাচন শেষ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ৮ মে ১৫০টি উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাকি উপজেলাগুলোতে ২১ মে, ২৯ মে ও ৫ জুন ভোট গ্রহণ করা হবে। তবে বান্দরবান জেলার তিনটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। দুর্গম, পাহাড়ি ও দ্বীপ এলাকাগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোটের আগের দিন নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হবে এবং বাকি উপজেলাগুলোতে ভোটের দিন সকাল ৮টার আগে ব্যালট পেপার পৌঁছে দেওয়া হবে এবং বিকাল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ হবে।

ইসি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী থাকছে না এবং দলীয় প্রতীক দেওয়া হচ্ছে না। কাজেই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। আশা করছি ভোটারের সংখ্যাও বাড়বে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা শেষ মুহূর্তে বাতিলের বিষয়টি উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, চট্টগ্রামে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। কারণ বাতিল করার মতো উপাদানও ছিল। তাকে (মোস্তাফিজুর রহমান) সপ্তাহখানেক আগে থেকে নজরদারি করা হচ্ছিল। যখন তিনি থানায় ঢুকে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মারধর করছেন, সার্কেল এসপি তাকে নিবৃত্ত করতে পারছেন না, এরপর আর বসে থাকা যায়নি। তখন আমরা প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা এ ক্ষেত্রেও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে কোনো রকমের সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠাবোধ করব না।

ইসি আনিছুর রহমান নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের একটাই চাওয়া- নির্বাচনকে সুন্দর করতে হবে।
প্রিজাইডিং অফিসারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা কেন্দ্রের সব দায়িত্ব পালন করবেন। ইচ্ছা করলে নির্বাচন বন্ধ করতে পারবেন। আপনারা ভোটের দিন যে যেখানে থাকবেন, সর্বময় ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। তবে তা আইনের পক্ষে হতে হবে। এতে যদি কোনো রকমের বিপদগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, আমরা আপনাদের পাশে আছি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি নুরে আলম মিনা, বিজিবি রিজিয়ন কমান্ডার মো. আজিজুর রহমান, ডিজিএফআই শাখা অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার, আনসার ও ভিডিপি উপ-মহাপরিচালক মো. সাইফুল্লাহ রাসেল, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, জেলা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও জেলাপর্যায়ের অন্য কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।


তৃতীয় দিনও সড়ক অবরোধ চুয়েট শিক্ষার্থীদের

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় গত সোমবার মোটরসাইকেল আরোহী চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ ছাত্রছাত্রী তথা নিহতদের সহপাঠীরা। আজ বুধবার চুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের সঙ্গে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচিও চালিয়েছেন।

নিহত শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসেনের সহপাঠীরা জানান, চালক ও সহযোগীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনাসহ ১০ দফা দাবি দিয়েছেন তারা। আর এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

আজ সকালেই দুই সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো কাপ্তাই সড়কে অবস্থান নেন চুয়েট শিক্ষার্থীরা। রাস্তায় গাছ ফেলে, ব্যারিকেড দিয়ে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে নানান স্লোগান দেন তারা।

এদিকে বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় বাস চালককে রাঙ্গুনিয়া থেকে আটক করেছে পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার ছাত্র প্রতিনিধি, বাস মালিক সমিতি ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বৈঠক হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। সেখানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

গত সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের সেলিনা কাদের চৌধুরী কলেজ-সংলগ্ন এলাকায় বাসের চাপায় নিহত হন মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও ২১তম ব্যাচের তৌফিক হোসেন।

দুর্ঘটনায় আহত হন জাকারিয়া হিমু নামে আরেক শিক্ষার্থী। তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।

দুই শিক্ষার্থী নিহত ও এক শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় সোমবার রাতেই চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করে নানা কর্মসূচি পালনে কাপ্তাইয়ের সঙ্গে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও বিদেশগামীদের যানবাহনগুলো যেতে দেন অবরোধকারীরা।


সাজেকে ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬, আহত ৮

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ২১:১৯
রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় ট্রাক খাদে পড়ে ৬ জন নিহত এবং আরও ৮ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ বুধবার বিকেলে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহত কয়েক জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, সীমান্ত সড়কে কাজের উদ্দেশ্যে মিনি ট্রাকে করে ১৪ জন শ্রমিক গাজীপুর ও ময়মনসিংহ থেকে সাজেক গিয়েছিল। গতকাল বিকেলে কাজ শেষে উপজেলা সদরে ফেরার পথে পাহাড়ি খাদে পরে ঘটনাস্থলেই ৬ জন শ্রমিক মারা যান। আহতদের উদ্ধার করে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সহায়তায় খাগড়াছড়ির দিঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আহতদের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।’

বাঘাইছড়ি সার্কেল অফিসার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল চৌধুরীর দুর্ঘটনার বিষয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘সীমান্ত সড়কের কাজ শেষে ড্রাম ট্রাকে করে ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ১০০ ফুট গভীর খাদে পরে গাড়ী দুমড়ে মুচড়ে যায়। স্থানীয়দের কাছে সংবাদ পেয়ে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।


একে একে চলে গেল পরিবারের পঞ্চম সদস্য সুজন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ১২ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের পরদিন ভোর ৪টার দিকে ভাসানটেকের একটি বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লেগে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে তাদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল। নানি-মা-বাবা-বোনের পর চলে গেল শিশু সুজনও। এ নিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা পাঁচ জনে দাঁড়াল।

আজ বুধবার বেলা ২টায় ওই পরিবারের নয় বছর বয়সি সদস্য সুজনের (৯) মৃত্যু হয় বলে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিউটের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম জানান। তার শরীরের ৪৩ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে জানান এই চিকিৎসক।

এর আগে গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় সুজনের মা সূর্য বানু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর দুদিন আগে ১৩ এপ্রিল তার মা মেহেরুন্নেছার মৃত্যু হয়। ১৬ এপ্রিল সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সুজনের বাবা লিটন মিয়া। আর সুজনের বোন লামিয়া মারা যায় গত ১৯ এপ্রিল।

পরিবারটির সর্বশেষ সদস্য সুজনের আরেক বোন লিজার চিকিৎসা চলছে বার্ন ইনস্টিটিউটে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

এলাকাবাসী জানান, মশার কয়েল জ্বালাতে গেলে ঘরের মধ্যে গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপের লিকেজ থেকে জমে থাকা গ্যাসে আগুন ধরে যায়। এতে ওই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হন।

তাদের মধে সূর্য বানুর ৮২ শতাংশ, লিটনের ৬৭ শতাংশ, লামিয়ার ৫৫ শতাংশ, মেহরুন্নেচ্ছার ৪৭ শতাংশ, সুজনের ৪৩ শতাংশ ও লিজার শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে যায় বলে চিকিৎসক সূত্রে জানা যায়।


হাজীগঞ্জে ট্রেনের নিচে সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে কোলের সন্তানসহ এক নারীর দ্বিখণ্ডিতলাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার বিকালে চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসা লাকসামগামী সাগরিকা এক্সপ্রেসের নিচে এক বছরের শিশু সন্তান আব্দুর রহমানকে নিয়ে আত্মহত্যা করে তাহমিনা আক্তার (২৩)।

ঐ নারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধড্ডা দেওয়ানজি বাড়ির রফিকুল ইসলামের মেয়ে। গত ৫ বছর পূর্বে একই উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের স্বর্ণা এলাকার প্রবাসী মাসুদুজ্জামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। তাদের চার বছরের এক মেয়ে ও এক বছরের এক ছেলে সন্তান ছিলো।

গত এক মাস পূর্বে স্বামীকে তালাক দেয় তাহমিনা। স্বামী বিদেশ থেকে দেশে আসলে তার কিছু আপত্তিকর ছবি ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। নারী থানায় অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা না পেয়ে লজ্জা আর অপমানের ভয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয় বলে জানা গেছে। চাঁদপুর রেলওয়ে পুলিশ শিশু ও মায়ের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।

আত্মহত্যার আগে তাহমিনা তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী না করে রেখে যাওয়ার মেয়ের দায়িত্ব পরিবারকে নেওয়ার আহবান জানান।


চুয়াডাঙ্গায় আবারও তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রির ঘরে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

টানা কয়েকদিন চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ালেও মাঝে জেলায় কিছুটা কমে তাপমাত্রা। তবে আজ বুধবার চুয়াডাঙ্গায় আবারও বেড়েছে তাপমাত্রা। জেলার কয়েকটি জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে ৪০ মিনিট গুড়িগুড়ি বৃষ্টিপাত হয়, যা ১ দশমিক ৬ মিলিমিটার রেকর্ড করে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। তবে, আজ বুধবার সকাল থেকে আবারও উত্তপ্ত হতে শুরু করে চুয়াডাঙ্গার জনপদ। আবারও তাপদাহ শুরু হওয়ায় জনজীবনে বেড়েছে অস্বস্তি।

আজ বুধবার বিকেল ৩ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস। তাপদাহে স্বস্তি মিলছে না কোথাও। গাছের ছাঁয়ায় আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। তবে, ভ্যাপসা গরমে সেখানেও মিলছে না শান্তি। চলমান দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। নষ্ট হচ্ছে ধান, আম, লিচু ও কলাসহ মাঠের অন্যান্য ফসল। দাবদাহে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম।

দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম বলেন, ‘এই তাপে ধানের ক্ষেত শুকি যাচ্চি। বেশি বেশি সেচ দিতি হচ্চি। দিনের বেলায় পাম্পে খুব একটা পানি উটচি না। রাতি পানি দিতি হচ্চি। তাছাড়া আম, লিচু, কলা সব নষ্ট হয়ি যাচ্চি। গরমে আমারও মাটে টিকতি পারচি নি।”

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, গতকালের তুলনায় আজ তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি বেড়েছে। এপ্রিল মাসজুড়ে এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।


banner close