শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২

ইউরোপ-আমেরিকায় যাচ্ছে জয়পুরহাটের কচুরলতি

কচুরলতি বিক্রি করছেন কৃষক। গত সোমবার সকালে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বটতলী লতি বাজার থেকে তোলা। ছবি: দৈনিক বাংলা।
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট
প্রকাশিত
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট
প্রকাশিত : ৯ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:৫৫

জয়পুরহাট জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্য কচুরলতি। যা লতিরাজ কচু হিসেবে পরিচিত। এই লতিরাজ কচু চাষে জেলার কৃষকদের ভাগ্য বদলেছে। বেড়েছে বাণিজ্য। রপ্তানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

জেলার সদর ও পাঁচবিবি উপজেলায় কম খরচে বেশি উৎপাদন, লাভ বেশি এবং রোগবালাই কম হওয়ায় সারা বছরই চাষ হচ্ছে কচুরলতি। এ জন্য অন্য ফসলের তুলনায় লতিরাজ কচু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেশি। ফলে এ জেলার পাশের নওগাঁ ও দিনাজপুরেও ছড়িয়ে পড়ছে লতিরাজ কচু চাষ। এখানকার উৎপাদিত কয়েক হাজার টন লতিরাজ কচু যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে শখের বসে পাঁচবিবির পাটাবুকা গ্রামের ভূমিহীন কৃষক লুৎফর রহমান ও আমির আলী পরীক্ষামূলকভাবে কচুরলতি চাষ শুরু করেন। অল্প সময়ে উৎপাদন ও লাভ দ্বিগুণ হওয়ায় এর বাণিজ্যিক চাষ গতি পায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, লতিরাজ কচু উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বেলেও দোঁআশ মাটি। প্রায় সারা বছর লতিরাজের উৎপাদন হয়। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি এবং এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত দুই মৌসুমে লতিরাজ কচু চাষ হয়। এ বছর সদর উপজেলায় ৩৩০ হেক্টর ও পাঁচবিবিতে ৯৫০ হেক্টর জমিতে লতিরাজ কচু চাষাবাদ হয়েছে। উৎপাদন প্রায় ৩৭ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন।

কচুরলতিকে কেন্দ্র করেই পাঁচবিবির বটতলী এলাকায় গড়ে উঠেছে লতি বাজার। গত সোমবার সকালে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে এই বাজারে কচুরলতি বিক্রি করছেন কৃষকরা।

উপজেলার পশ্চিম বালিঘাটা গ্রামের কৃষক সুজন মণ্ডল (৩৫) বলেন, এক বিঘা জমিতে কচুরলতি চাষ করতে সবকিছু মিলিয়ে খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। খরচ বাদে বিঘাপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ হয়। প্রতি মৌসুমে এক বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ মণ কচুরলতি উৎপাদন হয়।

সুজন বলেন, প্রতি বিঘায় লতি ছাড়াও কাণ্ড উৎপাদন হয় ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০টি। বাজারে প্রতি মণ লতি বিক্রি করা হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। জমি থেকে কাণ্ড বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ৭-৮ টাকা দরে।

পাটাবুকা গ্রামের কৃষক খালেকুল ইসলাম (৪০) বলেন, তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে কচুরলতির চাষ করেন। লাভের টাকায় বেড়ার বাড়ি থেকে আধাপাকা ইটের বাড়ি নির্মাণ করেছেন। কিনেছেন ৪ বিঘা জমি।

বটতলী লতি বাজারের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ইউরোপ, আমেরিকা, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের ১১টি দেশে কচুরলতি, কাণ্ড, ডাঁটা ও ফুল রপ্তানি হচ্ছে। এগুলো বিদেশে পাঠানোর আগে প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজে তিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। এতে এলাকার অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সাখওয়াত হোসেন বলেন, বটতলী লতি বাজার থেকে বছরে লতিরাজ কচু কেনাবেচা হচ্ছে প্রায় ২৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া মৌসুমের চার মাসে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ টন লতিরাজ কচু কেনাবেচা হয়। বাকি আট মাসে বিক্রির পরিমাণ দৈনিক ৫ থেকে ৬ টন।


টানা বৃষ্টিতে সড়ক-মহাসড়কে ভাঙন, দ্রুত সংস্কারের দাবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে শুরু করে নড়াইল, মুন্সীগঞ্জ, সাতক্ষীরা, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলা ও মহাসড়কে টানা বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে সড়ক ও সেতুর সংযোগ অংশ, গর্ত আর খানাখন্দে ভরেছে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলো। এতে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল, কোথাও সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট, কোথাও আবার ক্ষুব্ধ জনতা নেমেছে রাস্তায়। দৈনিক বাংলার ব্যুরো, জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;

মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) থেকে জানান,

একটানা প্রবল বর্ষণের ফলে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে একটি সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ায় যানবাহন চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে।

মাঝবাড়ি-মান্দ্রা সড়কের পূর্ব মাঝবাড়ি নতুন মসজিদ সংলগ্ন ব্রিজের দুপাশ ভেঙে পড়ায় যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা হাজার হাজার জনসাধারণ।

জানাগেছে, গত কয়েকদিন ধরে একটানা বৃষ্টির ফলে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ফাটল ও খানাখন্দ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গোপালগঞ্জ-পয়সার হাট আঞ্চলিক সড়কের কোটালীপাড়া জিরো পয়েন্টে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। মাঝবাড়ি-রাধাগঞ্জ সড়ক, ধারাবাশাইল-তরুর বাজার সড়ক কোটালীপাড়া-রাজৈর সড়ক মারাত্নকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

ব্যবসায়ী দিদার দাড়িয়া বলেন, ‘মাঝবাড়ি-মান্দ্রা সড়কের পূর্ব মাঝবাড়ি নতুন মসজিদের সামনের বেইলী ব্রিজের দুপাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপদে পড়েছে হাজার হাজার জনসাধারণ। দ্রুত মেরামত দরকার।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘অতিবৃষ্টির কারনে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে এলাকটি পরিদর্শন করেছি। প্রবল বর্ষণের ফলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিজের ক্ষতিগ্রস্ত সংযোগ সড়কটি দ্রুত মেরামতের জন্য কোটালীপাড়া এলজিইডির প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত জনসাধারণের এই দুর্ভোগ রোধ হবে।

কার্ত্তিক দাস, নড়াইল থেকে জানান, নড়াইলের খাশিয়াল-নড়াগাতী বাজারের দূরত্ব সাত কিলোমিটার । গ্রামীণ এই সড়ক সংস্কারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আড়াই বছর আগে খোড়াখুড়ি করে ফেলে রাখেন । এতে এলাকার মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে । সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কয়েক বার অনুরোধ করা হলেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই। ফলে এলাকার মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে গত শনিবার বেলা ১১টায় সড়কের খাশিয়াল বাজার চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে । কর্মসূচিতে খাশিয়াল এবং জয়নগর ইউনিয়নের কয়েক’শ মানুষ অংশ নেন ।

সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের ম্যাকাডাম ও পিচ উঠে সমস্ত সড়ক জুরে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে । বর্ষায় গর্তগুলো কাদা পানিতে ভরে থাকায় বোঝার উপায় নেই যে এখানে বড় ধরণের গর্ত লুকিয়ে আছে । উপায় না পেয়ে পথচারীরা জীবনের ঝুকি নিয়ে ভাঙাচোরা এই সড়ক দিয়েই গন্তব্যস্থলে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন ।

পথচারী আমেনা বেগমের বাড়ী গোপালগঞ্জ জেলার মানিকদহ গ্রামে। তিনি বলেন, এক মাস আগে আমি আমার মেয়ে বাড়ী নড়াইল জেলা শহরের মহিষখোলা গ্রামে যাই । যাবার সময় রাস্তার গর্তগুলোতে পানি না থাকলেও ঝাকুনিতে শরীর ব্যাথা হয়ে গিয়েছিল । এখন দেখছি গর্তগুলোতে বর্ষার পানি জমে কাদা পানিতে সয়লাব হয়েছে । তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটি সড়ক তো নয়, যেন মরণ ফাঁদ। কেন এই রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে না?

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া খাশিয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বি, এম বরকত উল্লাহ বলেন, বড়দিয়া সাবেক নৌবন্দর বাজার থেকে খাশিয়াল হয়ে নড়াগাতী থানা বাজারের দূরত্ব ৭ কিলোমিটার । গোপালগঞ্জসহ নড়াইল শহর, জেলা হাসপাতাল এবং লোহাগড়া উপজেলার সঙ্গে নড়াগাতী থানা এলাকার মানুষের কম সময়ে যোগাযোগের একমাত্র পথ হচ্ছে এইটি। ব্যস্ততম এই সড়ক সংস্কার না করায় প্রতিদিনই মোটরসাইকেল, ভ্যান-ইজিবাইক উল্টে যাত্রী সাধারণ দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে । মুমূর্ষু রোগীসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, খুব দ্রুত সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া না হলে এলাকার মানুষ বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন, খাশিয়াল আদর্শ সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মফিজুর রহমান, ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো.জাফর মোল্যা, উদীচি বড়দিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায়, কাবির বিশ্বাস, সিরাজুল ইসলাম, সরদার আব্দুল করিম, খন্দকার ওবায়দুর রহমান প্রমুখ ।

জানতে চাইলে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নজরুল ইসলাম বলেন, ২০২২ সালে ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয় । কিন্তু তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করে সরে পড়ে । তিনি বলেন, ওই ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করাসহ জরিমানাও করা হয়। তিনি দাবি করেন, নতুন ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। যে কারণে ওই সড়কের সংস্কার কাজ দেরি হচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ সেতুতে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের । এসব গর্তের কারণে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়েছে মহাসড়কের গজারিয়া অংশেও।

জানা যায়, গত বুধবার রাত দশটার দিকে মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়। যা গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মহাসড়কে গজারিয়া অংশের বালুয়াকান্দি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার অংশে ছড়িয়ে পড়ে। যানজটে দীর্ঘ সময় আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রীরা। সবচেয়ে বেশী ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী ও অফিসগামী চাকরীজীবীরা।

কলেজ ছাত্র রিফাত হোসেন বলেন, ‘আজ আমাদের পরীক্ষা আছে। যানজটে দীর্ঘ সময় আটকে থাকলাম এখন বাধ্য হয়ে বাস থেকে নেমে হাটা শুরু করেছি’।

ঢাকায় বেসরকারি একটি কোম্পানিতে কর্মরত খোকন মিয়া বলেন, ‘সকাল সাড়ে দশটায় আমার একটি গুরত্বপূর্ণ মিটিং আছে। সকাল আটটায় বাসা থেকে বের হয়েছি সাড়ে নয়টার মধ্যে আমার ঢাকার কথা কিন্তু এখন সকাল দশটা বাজে যানজটের কারণে আমি মেঘনা ব্রিজের উপর আটক আছি।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘আমাদের গজারিয়া অংশে কোন সমস্যা নেই। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ অংশের যানজট গজারিয়া অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের লোকজন রাস্তায় আছে, আশা করি অল্প সময়ের ভেতর যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।’

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি কাজী ওয়াহিদ মোরশেদ জানান, ‘লাঙ্গলবন্দের ব্রিজের অবস্থা খারাপ হওয়ায় যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজ ও রাস্তা মেরামতের জন্য বিষয়টি আমরা সড়ক ও জনপথকে জানিয়েছি। তারা কাজ শুরু করেছে পাশাপাশি যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে।’

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের মানিকখালী-রমজাননগর মেইন সড়কে হারু গায়েনের বাড়ির সংলগ্ন কালভার্টটির উপরে দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান ও ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে কালভার্টটির ওপর অংশ ভেঙে পড়া অবস্থায় রয়েছে। কখনও কখনও অস্থায়ীভাবে সংস্কার করা হলেও তা স্থায়ী হয় না। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে বিলে পানি নিষ্কাশনের জন্য কালভার্টটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও পানির প্রবল চাপে এর ভাঙন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। এতে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা শিবপদ গায়েন, বাঞ্চারাম মন্ডল, শৌলেন্দ্র নাথ সরকার, অবনি চন্দ্র মৃধা, নিরাপদ মন্ডল ও নিতাই পদ গায়েন জানান, দীর্ঘদিন ধরে কালভার্টটির ওপর নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। দ্রুত সংস্কার না হলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। শ্যামনগর সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুস সামাদ জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। রমজাননগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হামিদ লাল্টুও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এলাকাবাসী কালভার্টটির দ্রুত সংস্কারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর থেকে জানান, দীর্ঘদিন সড়কের সংস্কার কাজ না হওয়ায় ফরিদপুর-ভাঙ্গা মহাসড়কের বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা। জেলা শহর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। পদ্মা সেতু চালুর পর সড়কের ওপর যানবাহনের চাপ বহুগুণ বাড়লেও এটি চার লেনে উন্নীত করার প্রস্তাবনা এখনো পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।

দেখা গেছে, মহাসড়কের বাখুণ্ডা নামক স্থানে প্রায় ৩০০ মিটার, মহিলা রোড এলাকায় ৪০০ মিটার এবং তালমা মোড়ে ২০০ মিটার অংশের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। চলতি সপ্তাহে টানা বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, যা যান চলাচলের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

পরিবহন চালক জালাল মাতুব্বর জানান, ঢাকা থেকে ভাঙা পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে যেখানে দেড় ঘণ্টা লাগে, সেখানে ভাঙা গোল চত্বর থেকে ফরিদপুর শহর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার পথ যেতে প্রায় একই সময় লাগছে। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে বাধ্য হওয়ায় প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অবিলম্বে সড়ক সংস্কারের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী ও যাত্রীরা।


১৩০ বছর বয়সেও বয়স্ক ভাতা কার্ড জোটেনি আজিমনের

আপডেটেড ১০ জুলাই, ২০২৫ ২২:৫৪
মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রতিটি মানুষ সুন্দর জীবন জাপন করে বেচে থাকতে চাই, আর সেই জীবনে দীর্ঘায়ু হোক এটা কে না চাই। তবে আনুমানিক ১শ ত্রিশ বছর বয়স্ক আজিমন নেছা বয়সের ভারে ন্যুব্জ, জরাজীর্ণ শরীর, আর পরনে থাকা ছেড়া কাপড়,শরীরে জড়ানো ছেঁড়া কাঁথা আর নোংরা মেঝেতে শুয়ে প্রতিক্ষার প্রহর গুনছেন মৃত্যুর।

পরিবার ও প্রতিবেশিদের দাবি, তার বয়স আনুমানিক ১৩০ বছর পেরিয়েছে। আজিমন নেছার পিতা পিতল আলীকে হারিয়েছেন বিয়ের আগেই, আর বিয়ের কিছু বছর পরে হারিয়েছেন স্বামী মফেজ উদ্দিনকে, আর একমাত্র সন্তান মইয়েজ উদ্দিন কে হারিয়েছেন বছর চল্লিশেক আগে, পিতা-মাতা, স্বামী, সন্তানকে হারিয়ে পরিবার বলতে ৬৯ বছর বয়সি নাতনি রত্না খাতুন ও ৬৭ বছর বয়সি আরে নাতি শাহবুদ্দিন আহমেদ।

আর অভাবের সংসারে বয়সের ভারে দুর্বল হয়ে পড়া রত্না খাতুন যখন নিজেই চলতে পারেন না অথচ তাকেই দেখাশোনা করতে হয় বৃদ্ধা আজিমন নেছাকে। অভাবের সংসারে আজিমন খাতুন এখন যেনো বোঝা ছাড়া আর কিছুই নই। এখন নাতনির একটাই চাওয়া যে কোন সময় যেন দাদির মৃত্যু হয়। অভাবের সংসারে এ বোঝা আর বইতে পারছে না বিধবা রত্না খাতুন। তাছাড়া সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া অন্যের বাড়িতে কাজ করে দাদিকে নিয়ে জীবনজাপন করতে গিয়ে হাফিয়ে উঠেছেন। এখন তিনি একটু বিশ্রাম চান।

স্থানীয়রা বলেন, আজিমনের বয়স ১৩০ বছরের বেশি হলেও তার বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ না নেওয়া এবং খেয়ালীপনার কারণেই এমনটা হয়েছে।আবার এমনও হতে পারে মেম্বারদের অনৈতিক সুবিধা দিতে না পারাই হইতো কার্ডটি হচ্ছে না।

আজিমন নেছার নাতী (ছেলের সন্তান) শাহাবুদ্দিন জানান, আমার নিজের বয়স ৬৯ বছরের বেশি। তিনি কখনোই তার দাদিকে সরকারি কোনো সাহায্য পেতে দেখেননি। তবে মেম্বার সাহেবরা ভোটের সময় এসে কার্ড ও সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়ে যায়। ভোট পার হয়ে গেলে খোঁজ থাকে না।

কাজীপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফুলচাঁদ আলী জানান, শুরুতে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি এই সংবাদ শোনার পরে ওই বৃদ্ধার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদের ভাতার কার্ডের তালিকা দেখি। দেখে দেখতে পাই তালিকায় তার নাম আছে এবং বিগত সময়ে দুবার টাকাও উঠেছে। তবে যে ফোন নম্বরটি ব‍্যাবহার করে টাকা উঠেছে সেই নম্বরটি এই পরিবারের কারোর না। আমি এই সপ্তাহের মধ্যে আজিমনের নাতি রত্নার ফোন নম্বরে যাতে ভাতার টাকা আসে সে ব‍্যববস্থা করে দেব ইনশাআল্লাহ।

কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মু. আলম হোসেন বলেন, এত বয়স হওয়ার পরেও কেন তার বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়নি, তা দুঃখজনক। দ্রুত সময়ে তার কার্ড করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি, সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা তাকে দেওয়া হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান বলা হয়েছে। তাছাড়া আপাতত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বসবাসের ঘর মেরামতের জন‍্য ঢেউ টিন ও নগদ অর্থ প্রদান করা হবে।


পাঁচ পা-ওয়ালা গরুর বাছুর দেখতে ভিড়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শামীম আল মামুন, টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলায় জন্ম নিয়েছে এক বিস্ময়কর আকৃতির গরুর বাছুর যার রয়েছে পাঁচটি পা! উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের সাজানপুর গারালিয়া পাড়া গ্রামের কৃষক মো. শাহিন মিয়ার বাড়িতে গত শনিবার (০৫ জুলাই) সন্ধ্যায় এ ব্যতিক্রমী বাছুরটির জন্ম হয়।

কৃষক শাহিন মিয়া জানান, তার গাভীটি স্বাভাবিকভাবেই বাছুর প্রসব করে। তবে কিছুক্ষণ পর তিনি দেখতে পান, বাছুরটির সামনের অংশে রয়েছে একটি অতিরিক্ত পা। বাছুরটি তিনটি পায়ের ওপর ভর দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করছে, যা পরিবার ও এলাকাবাসীর জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অদ্ভুত গঠনের এই বাছুরটিকে এক নজর দেখতে ইতোমধ্যে আশপাশের গ্রামের মানুষ ভিড় করছেন শাহিন মিয়ার বাড়িতে। কেউ কেউ মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। রুবেল মিয়া নামে একজন বলেন, এলাকায় এধরনের কোন ঘটনা আগে দেখি নাই, আমরা এই গরুর ঘটনা দেখে হতভম্ব।

দর্শনার্থীদের মধ্যে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা মো. মুক্তার হোসেন বলেন, আমি জীবনে কখনও এমন কিছু দেখিনি। বিষয়টা একেবারেই অবিশ্বাস্য।

এ বিষয়ে গোপালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোর্শেদ জানান, এটি সম্ভবত জেনেটিক মিউটেশনের ফল। যদিও ঘটনাটি অত্যন্ত বিরল, তবে যদি বাছুরটির অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা না থাকে, তাহলে অতিরিক্ত পা তার স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের বড় কোনো ক্ষতি করবে না।

টাঙ্গাইল জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.শহিদুল ইসলাম বলেন, এই গরুটির ক্ষেত্রে জেনেটিক মিউটেশনের ফল। তবে বাছুরটি স্বাভাবিক ভাবে বড় হলে কোন সমস্যা দেখা দিবেনা। এই ধরনের ঘটনা বিরল।


কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট একসঙ্গে চালু

উৎপাদন হবে ২১২ মেগাওয়াট
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি 

এবার একযোগে চালু করা হলো রাঙামাটির কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের (কপাবিকে) ৫টি ইউনিট। এই ৫টি ইউনিট হতে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২ শত ১২ মেগাওয়াট। বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮ টায় কপাবিকে এর ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বুধবার (৯ জুলাই) রাত ৮ টায় এই কেন্দ্রের ৫ টি ইউনিটের মধ্যে একসঙ্গে ৫ টি ইউনিট চালু করা হয়েছে। যা হতে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে সর্বমোট ২ শত ১২ মেগাওয়াট। তিনি আরোও জানান, ৫টি ইউনিটের মধ্যে ১ নং ও ২ নং ইউনিট হতে প্রতিটি ৪৬ মেগাওয়াট করে ৯২ মেগাওয়াট এবং ৩,৪ ও ৫ নং ইউনিট হতে প্রতিটি ৪০ মেগাওয়াট করে ১ শত ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের প্রকৌশলীদের জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারি বৃষ্টিপাতে ঘন্টায় ঘন্টায় পানি বৃদ্ধির ফলে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা আরোও জানান বুধবার (৯ জুলাই) রাত ৮টা পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে পানির লেভেল ছিল ৯৬.৪১ ফুট মীনস সি লেভেল। রুলকার্ভ অনুযায়ী এ সময় লেকে পানি থাকার কথা ৮৫.২৮ ফুট মীনস সি লেভেল। কাপ্তাই লেকে পানির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১০৮ ফুট মীনস সি লেভেল। এর আগে ২ শত ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই কেন্দ্রে ৪টি চালু থাকলেও নানা কারণে ৫টি ইউনিট একসঙ্গে চালু সম্ভব হয়নি।


দেবিদ্বার স্কুলে আ.লীগ নেতাকে সভাপতি করায় এলাকাবাসির ক্ষোভ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বড় শালঘর ইউএমএ উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ নেতাকে বসানোয় স্কুলের অভিভাবকসহ এলাকাবাসির মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়- স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সহায়তায় এমন ঘটনা হওয়ায় এ নিয়ে আরও নেতিবাচক কথা জানা যায়।

খবর নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আওয়ালের ছোট ভাই মাসুদুর রহমানকে স্কুলটির সভাপতি করা হয়েছে।

এলাকাবাসির মতে, যেই আওয়ামী লীগ নেতা বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যে দুর্নীতিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ করেছেন, তাকেই আবার এতো নামিদামি স্কুলের সভাপতি করা বেশ দুঃখজনক।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই মাসুদুর রহমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার জন্য তখন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নানা কর্মসূচি পালন করেন। এমনকি তখন বিএনপি ও জামায়েতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির নানা অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাকেই আবার যখন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সহায়তায় স্কুলের কমিটির সভাপতি করা হয় তা নিয়ে বেশ ক্ষোভই প্রকাশ করেন অনেকেই।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা জানান, বেলজিয়াম বিএনপির সভাপতি সাইদুর রহমান লিটন আওয়ামী লীগ ঘেঁষা ব্যক্তিদের টেনে এনে কমিটিতে বসাচ্ছেন। এটি শুধু রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি নয়, তা ত্যাগী ও আদর্শিক বিএনপি নেতাকর্মীদের অপমান বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি দলীয় হাইকম্যান্ড এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সূত্র জানিয়েছে, মাসুদুর রহমান তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জেলার সৈয়দপুর কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যাক্ষ হিসেবে ইসমাইল নামের এক দুর্নীতিবাজ শিক্ষককে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন অধ্যাক্ষ সৎ সাহসের সাথে তা প্রত্যাখান করেন।

এদিকে কমিটির নেতৃত্বে মাসুদুর রহমানকে নিয়ম মেনেই মনোনীত করা হয়েছে এবং এটি আওয়ামী লীগ- বিএনপি হিসাব করে করা হয়নি বলে তার পক্ষে একদল শিক্ষক জানান।

অন্যদিকে এমইউএ স্কুলের প্রাধান শিক্ষক আবু ইউসুফ বলেন, আমি কারও নাম দিইনি। কমিটির নাম সর্বসম্মতভাবে চূড়ান্ত করে জমা দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে মাসুদুর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।

এদিকে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো. জাকির হোসেন স্কুলটির গভর্নিং বডির সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সর্ব সম্মতিক্রমে আমার নাম প্রথমে এক নাম্বারে ছিল। যেটা ইউএনওর মাধ্যমে ডিসি বরাবর যায়। হঠাৎ করে পরের দিন আমার নাম দ্বিতীয় নাম্বারে দিয়ে জেলা অফিস থেকে স্কুলে চিঠি আসে। প্রথমে নাম থাকে মাসুদুর রহমানের। যা দেখে আসলেই হতাশ হই। পরবর্তী সময়ে জানতে পারি এটি আসলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বোর্ড অনুমোদন দেয়।’


তিতাসের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে অভিযান

আপডেটেড ১০ জুলাই, ২০২৫ ২১:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাভার ও আশুলিয়ায় বাইপাস লাইন সনাক্ত, অনুমোদন অতিরিক্ত গ্যাসের ব্যবহার এবং অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে তিতাস গ্যাস কর্তৃক সাঁড়াশি অভিযান ও জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার তিতাসের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈকত রায়হান, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ সাভার, আশুলিয়ার আওতাধীন গোরাট, চৌরাস্তা (পাকার মাথা), সরকার মার্কেট, খোঁয়াজ মার্কেটসংলগ্ন, ও উত্তর গোমাইল মডেল মসজিদসংলগ্ন, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়। ওই অভিযানে কোয়ালিটি থ্রেড এন্ড এক্সেসরিজ ও মায়ের দোয়া এক্সেসরিজ নামক ২টি বাণিজ্যিক কারখানার এবং আনুমানিক ২ কি.মি. অবৈধ বিতরণ লাইনের আনুমানিক ৬০০টি আবাসিক গ্যাস বার্নারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের আনুমানিক ৫০০ মিটার লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। ওই অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সর্বমোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

একই দিনে, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসির চন্দ্রা কর্তৃক পরিচালিত অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিশেষ অভিযানে চন্দ্রা (পল্লীবিদ্যুৎ), কালিয়াকৈর, গাজীপুর এলাকার সম্পূর্ণ অবৈধ/বিল বই বিহীন ৫টি রাইজারের ৫০টি দ্বিমুখী চুলা ও অনুমোদন অতিরিক্ত চুলায় গ্যাস ব্যবহারের জন্য ১টি সংযোগের ২৩টি অনুমোদন অতিরিক্ত চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক-গাজীপুর নিয়ন্ত্রণাধীন আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ-গাজীপুর এর ভিজিল্যান্স শাখা (সাভার -মানিকগঞ্জ- আশুলিয়া এবং ভিজিল্যান্স শাখা জয়দেবপুর ও চন্দ্রা) কর্তৃক যৌথ পরিদর্শনে টঙ্গী মিলগেট এলাকায় মেসার্স জেরিনা কম্পোজিট মিলস লি. (৮০৩০০০০০৫) এ ক্যাপটিভ পাওয়ার রানে অনুমোদিত ১০৩০ কিলোওয়াট ক্ষমতার জেনারেটরের পরিবর্তে ১৫০০ কিলোওয়াট ক্ষমতার জেনারেটর চালু পাওয়া যাওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

অন্যদিকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মনিজা খাতুন (সিনিয়র সহকারী সচিব) -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ -২ এবং মেট্রো ঢাকা রাজস্ব বিভাগ-২ -এর তত্ত্বাবধানে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর এলাকায় একটি সফল অভিযান পরিচালিত হয়েছে।


জামালপুরের কামালপুর সীমান্তে সাতজনকে পুশইন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরের বকশীগঞ্জে ধানুয়া কামালপুর সীমান্ত দিয়ে চার নারী সহ সাত জনকে পুশইন এর ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার ভোর ৪ টায় ধানুয়া কামালপুরের ১০৮৩ পিলারের কাছ দিয়ে তাদের পুশইন করে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পরে সকাল ৭ টায় স্থানীয় এলাকাবাসী তাদের আটক করে বকশীগঞ্জ থানায় সোপর্দ করে।

আটককৃতদের বাড়ি খুলনা, ফরিদপুর, বাগেরহাট ও বরগুনার জেলায়।
আটককৃতরা হলেন বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার কাশেম আলীর ছেলে এনায়েত খাঁ (৫৫), একই উপজেলার বেলায়েত খাঁ এর ছেলে মোহম্মদ ইসলাম (২২), ফরিদপুর জেলার মেহবুব আলীর ছেলে কোরবান আলী (২০), তার মা তাছলিমা বেগম (৫০) একই খুলনার খালিশপুর এলাকার সোহাগ মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তার (৩০), তার বোন রেমি আক্তার (২০,) বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার রুস্তম আলীর মেয়ে মায়া আক্তার (৩২)।

ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোতালেব মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ভোরে ভারত থেকে ৭ জনকে পুশইন করছে এমন খবর পেয়ে গ্রামবাসীকে নিয়ে আমরা সীমান্তে অবস্থান নেই এবং তাদের আটক করি।
আটককৃরা বিভিন্ন সময়ে কাজের সন্ধানে দালালদের মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন শহরে চলে যায়। সম্প্রতি বিভিন্ন সীমান্তে পুশইন এর ঘটনা ঘটলে বকশীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে তাদেরও বাংলাদেশে পাঠায় বিএসএফ।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, ধানুয়া কামালপুর সীমান্তে পুশইন করার পর স্থানীয়রা সাতজনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। এ বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।


১৩০ বছর বয়সেও জোটেনি আজিমনের বয়স্ক ভাতা কার্ড

আর কত বছর বয়স হলে মিলবে এই সুবিধা?
দুই নাতি নাতনির মাঝে নিজ বসত ভিটাই বসে আছেন বয়স্ক আজিমন নেছা 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সোহেল রানা বাবু, মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রতিটি মানুষ সুন্দর জীবন জাপন করে বেচে থাকতে চাই, আর সেই জীবনে দীর্ঘায়ু হোক এটা কে না চাই। তবে আনুমানিক ১"শ ত্রিশ বছর বয়স্ক আজিমন নেছা বয়সের ভারে ন্যুব্জ, জরাজীর্ণ শরীর, আর পরনে থাকা ছেড়া কাপড়,শরীরে জড়ানো ছেঁড়া কাঁথা আর নোংরা মেঝেতে শুয়ে প্রতিক্ষার প্রহর গুনছেন মৃত্যুর।

পরিবার ও প্রতিবেশিদের দাবি, তার বয়স আনুমানিক ১৩০ বছর পেরিয়েছে। আজিমন নেছার পিতা পিতল আলীকে হারিয়েছেন বিয়ের আগেই, আর বিয়ের কিছু বছর পরে হারিয়েছেন স্বামী মফেজ উদ্দিনকে, আর একমাএ সন্তান মইয়েজ উদ্দিন কে হারিয়েছেন বছর চল্লিশেক আগে, পিতা-মাতা, স্বামী,সন্তানকে হারিয়ে পরিবার বলতে ৬৯ বছর বয়সি নাতনি রত্না খাতুন ও ৬৭ বছর বয়সি আরে নাতি শাহবুদ্দিন আহমেদ।

আর অভাবের সংসারে বয়সের ভারে দুর্বল হয়ে পড়া রত্না খাতুন যখন নিজেই চলতে পারেন না অথচ তাকেই দেখাশোনা করতে হয় বৃদ্ধা আজিমন নেছাকে। অভাবের সংসারে আজিমন খাতুন এখন যেনো বোঝা ছাড়া আর কিছুই নই। এখন নাতনির একটাই চাওয়া যে কোন সময় যেনো দাদির মৃত্যু হয়। অভাবের সংসারে এ বোঝা আর বইতে পারছে না বিধবা রত্না খাতুন। তাছাড়া সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া অন‍্যের বাড়ীতে কাজ করে দাদিকে নিয়ে জীবন জাপন করতে গিয়ে হাফিয়ে উঠেছেন। এখন তিনি একটু বিশ্রাম চান।

স্থানীয়রা বলেন, আজিমনের বয়স ১৩০ বছরের বেশি হলেও তার বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ না নেওয়া এবং খেয়ালীপনার কারণেই এমনটা হয়েছে।আবার এমনও হতে পারে মেম্বারদের অনৈতিক সুবিধা দিতে না পারাই হইতো কার্ডটি হচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল বলেন, আজিমনের আমাদের এলাকায় কালো বুড়ি নামে পরিচিত। কালো বুড়িকে সেই ছোট বেলা থেকে দেখছি। ছোট বেলায় যেমন দেখেছি এখনো তেমনি দেখছি। এমনকি আমার বাবারাও তাকে এমটাই দেখছে। এই মানুষের কার্ডতো বাড়িতে বসে থেকে হয়ে যাবার কথা। অথচ আপনারা সাংবাদিকরা যদি এটা না তুলে ধরতেন হইতো সে অগচরেই থেকে সুবিধা বঞ্চিত হয়ে মৃত্যু বরণ করতন। এটাই সমাজের বাস্তব চিত্র।

আজিমন নেছার নাতী (ছেলের সন্তান)শাহাবুদ্দিন জানান, আমার নিজের বয়স ৬৯ বছরের বেশি। তিনি কখনোই তার দাদিকে সরকারি কোনো সাহায্য পেতে দেখেননি। তবে মেম্বার সাহেবরা ভোটের সময় এসে কার্ড ও সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়ে যায়। ভোট পার হয়ে গেলে খোঁজ থাকে না।

কাজীপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফুলচাঁদ আলী জানান, শুরুতে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি এই সংবাদ শোনার পরে ওই বৃদ্ধার পরিবারের সাথে কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদের ভাতার কার্ডের তালিকা দেখি। দেখে দেখতে পাই তালিকায় উনার নাম আছে এবং বিগত সময়ে দুবার টাকাও উঠেছে। তবে যে ফোন নম্বরটি ব‍্যাবহার করে টাকা উঠেছে সেই নম্বরটি এই পরিবারের কারোর না। আমি এই সপ্তাহের মধ‍্যে আজিমনের নাতি রত্নার ফোন নম্বরে যাতে ভাতার টাকা আসে সে ব‍্যাবস্থা করে দিবো ইনশাআল্লাহ।

কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মু. আলম হোসেন বলেন, এত বয়স হওয়ার পরেও কেন তার বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়নি, তা দুঃখজনক। দ্রুত সময়ে তার কার্ড করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি, সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা তাকে দেওয়া হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাকে সার্বিক সহযোগিতার জন‍্য স্থানীয় চেয়ারম্যান বলা হয়েছে। তাছাড়া আপাতত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বসবাসের ঘর মেরামতের জন‍্য ঢেউ টিন ও নগদ অর্থ প্রদান করা হবে।


কালীগঞ্জে পৃথক অভিযানে দুই মাদক কারবারি গ্রেফতার 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি 

গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার পুলিশ পৃথক অভিযানে বিপুল পরিমাণ চোলাইমদ ও ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। বুধবার (৯ জুলাই ২০২৫) রাতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রথম অভিযানটি রাত ৯টা ২০ মিনিটে কালীগঞ্জ থানাধীন নাগরী ইউনিয়নের ছোট করান এলাকার নিলয় গমেজের বসত বাড়িতে পরিচালনা করা হয়। সেখান থেকে বসতঘরের খাটের নিচে লুকানো অবস্থায় ৩০ লিটার চোলাইমদ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বাড়ির মালিক নিলয় গমেজ (২৫) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার পিতার নাম মৃত জজ গমেজ এবং মাতার নাম মালা গমেজ। ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় মামলা নং-১০, তারিখ-০৯/০৭/২০২৫, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬(১) সারণির ২৪(খ) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলার বাদী এসআই মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং তদন্তভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই মোঃ রাসেল।

পরবর্তীতে একই দিন রাত ৯টা ১০ মিনিটে তুমুলিয়া এলাকায় জনৈক দিপক রোজারিওর বসতবাড়ির সামনে আরেকটি অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৯০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামুন শেখ ওরফে ব্লাক মামুন (৪৫) কে আটক করা হয়। তার পিতা মৃত ইদ্রিস আলী শেখ। আসামীর বিরুদ্ধে মামলা নং-১১, তারিখ-০৯/০৭/২০২৫, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬(১) সারণির ১০(ক) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলার বাদী এসআই মোঃ রিগ্যান মোল্লা এবং তদন্ত কর্মকর্তা এসআই অপূর্ব কুমার বাইন।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলাউদ্দিন জানান, মাদকের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান আরও জোরদার করা হবে এবং মাদক কারবারীদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।


আমতলীতে বিএডিসির বীজে সিন্ডিকেট, বিপাকে কৃষকরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনার আমতলী উপজেলায় সরকারি বিএডিসির (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন) আমন ধানের বীজ নিয়ে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। স্থানীয় ডিলার মধু প্যাদা অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও বিশাল পরিমাণ বীজ সংগ্রহ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে তা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন বলে দাবি কৃষকদের।

অভিযোগে জানা গেছে, মধু প্যাদা বরিশালের ফরিদ মিয়া নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে গত ২৫ দিনে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন বিআর-৪৯ ও বিআর-২৩ জাতের ধানের বীজ কিনে তার মহিষকাটা বাজারের তিনটি গোডাউনে মজুত করেন। এরপর তা তালতলী, রাঙ্গাবালি, কলাপাড়া ও আমতলী উপজেলার বিভিন্ন দোকানে ৬৭০ টাকার বীজ ৭৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। এতে কৃষকরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি সরকার নির্ধারিত সরবরাহ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ছে।

স্থানীয় কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি বীজ না পেয়ে বাধ্য হয়ে বেশি দামে বীজ কিনতে হচ্ছে। এর পেছনে মধু প্যাদার সিন্ডিকেটই দায়ী।’
আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের আফজাল হোসেন শরীফ বলেন, ‘১০ কেজি বিআর-৪৯ জাতের বীজ কিনেছি ৭৫০ টাকায়, যা সরকারি দামের চেয়ে অনেক বেশি।’

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার রাসেল মিয়া বলেন, ‘কেউ অতিরিক্ত দামে বীজ বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে একজন ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, অনুমোদন ছাড়া ডিলারদের মধ্যে বীজ লেনদেন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

অন্যদিকে, মধু প্যাদা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি সরকারি দুটি লাইসেন্সে ৪ মেট্রিকটন বীজ পেয়েছি। চাহিদা থাকায় অতিরিক্ত বীজ ফরিদ মিয়ার কাছ থেকে সংগ্রহ করেছি।’ তবে বরিশাল জননী ট্রেডার্সের মালিক ফরিদ মিয়া বলেন, ‘আমার ব্যবসায়িক স্বার্থে সব তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’

এ বিষয়ে বরিশাল বিএডিসির উপপরিচালক মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বলেন, ‘ডিলাররা বাহির থেকে বীজ কিনলে সমস্যা কোথায়?’

এদিকে আমতলী উপজেলায় এ বছর ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও, বিএডিসি সরবরাহ করেছে মাত্র ৫৫ মেট্রিক টন বীজ, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ফলে অধিকাংশ কৃষক চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় বীজ সংগ্রহে হিমশিম খাচ্ছেন।

বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আমতলীর ইউএনও মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, ‘কোনো ডিলার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অধিক দামে বীজ বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কৃষকদের অভিযোগ ও স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসের মাঝে, এখন প্রশ্ন- কৃষকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে বীজের বাজারে এই সিন্ডিকেটের লাগাম টানা যাবে তো?


ভোলায় টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে মাছের ঘের ফসলি জমি, পানিবন্দী অনেকে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ভোলায় গত ২দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা বৃষ্টির প্রভাবে মনপুরা উপজেলার শতাধিক পুকুর ও মাছের ঘের পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়াও, বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে এবং কৃষিজমিতে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিতে কৃষকের ফসলি জমি, ক্ষেতের সবজিসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।

মৎস্য ব্যবসায়ী মো: মাইনুদ্দিন জানান, বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে ৮৫ লাখ টাকা পুজি খাটিয়ে প্রতিবছরের মতো এ বছরও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ শুরু করেছিলেন। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে তার এগারোটি ঘের তলিয়ে গেছে। তার স্বপ্ন নিমিষেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে ধার দেনা করে মাছ ছাড়লেও সব মাছ বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে।

অপর মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ রাজীব জানান, আমার ৫০ শতাংশ জমির মধ্যে দুটি মাছের ঘের ছিল এতে লোনের টাকা নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির দেশী বিদেশী মাছের চাষাবাদ করেছিলাম বৃষ্টির পানিতে ঘের ডুবে আমার সব মাছ চলে গেছে। আমার পাঁচ লক্ষের অধিচ বেশি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক ও মৎস্য ব্যবসায়ী মো: মিজান বলেন, মনপুরায় প্রতিটি বিল ও ঘের অঞ্চলের মৎস্য ব্যবসায়ী ও কৃষকদের একই অবস্থা। কয়েক দফা বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষেতের ফসল, মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন এখানকার মৎস্য ব্যবসায়ী ও কৃষকরা।

মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আলী আহমেদ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ঘের ব্যবসায়ীদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে মৎস্য ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করা হবে। বরাদ্দ না পেলে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার কোনো সুযোগ নেই। মৎস্য ব্যবসায়ীরা যাতে আগামীতে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন সে জন্য মাঠ পর্যায়ে তাদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন মাঠকর্মীরা।

দীর্ঘায়িত বর্ষা মৌসুমে টানা কয়েকদিন ভারী বর্ষণে উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উপজেলার মৎস্য চাষি ও প্রান্তিক কৃষকরা। ঘেরের মাছ ভেসে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তারা।

মনপুরা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আহসান তাওহিদ বলেন, ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে আমাদের মাঠ কর্মীরা যাচ্ছে । ক্ষতিগ্রস্ত পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবো।

সরেজমিনে পানিবন্দি কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ ,দাসেরহাট, উত্তর সাকুচিয়া , রহমানপুর ও জংলারখাল এলাকায় পানি বন্দি হয়ে আছেন কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা।


পানি নিষ্কাশনের অভাবে  বেনাপোল বন্দরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি

ব্যাহত হচ্ছে বন্দরে খালাশ প্রক্রিয়া
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি 

টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।

ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।

তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।


দৌলতপুর সীমান্তে যৌথ অভিযানে ১ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকার জাল জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী মানিকের চর ও বাংলাবাজার খারিজাথাক এলাকায় যৌথ অভিযানে ১ কোটি ৮৪ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার অবৈধ “চায়না দুয়ারি ও বেহুন্দী” জাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন ও বর্ডার গার্ড বিজিবি। সোমবার (৭ ও ৮ জুলাই) বিকাল ৫টা থেকে পরের দিন সকাল ১১টা পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। বুধবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি’র তরফ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

বিজিবি সূত্র জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন ৪৭ বিজিবি ও দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন মীমান্তের মানিকের চর ও বাংলাবাজার খারিজাথাক এলাকায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ “চায়না দুয়ারি ও বেহুন্দী” জালের মজুদ থাকায় ওই এলাকায় গত ৭ জুলাই বিকাল ৫টা থেকে ৮ জুলাই সকাল ১১টা পর্যন্ত দুই দফায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে প্রায় ৮৫০০ কেজি অবৈধ চায়না দুয়ারি জাল, ৩৫০০ কেজি বেহুন্দী জাল, ১৫টি বড় সাইজের ড্রাম এবং ৪,০০০ কেজি জাল তৈরীর যন্ত্রাংপাতি জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালামালের মূল্য প্রায় ১,৮৪,৪৫,০০০ হাজার টাকা। এসময় ৩ জন আসামীকে ১৩,০০০ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অংশ নেয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী, উপজেলা মৎস অফিসার হোসেন আহমেদ স্বপন, আনসার সদস্য এবং ৪৭ বিজিবি’র ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার সহকারী পরিচালক মোঃ জাকিরুল ইসলাম।

জব্দকৃত অবৈধ চায়না দুয়ারি জাল, বেহুন্দী জাল, ড্রাম এবং জাল তৈরীর যন্ত্রাংশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আব্দুল হাই সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ধ্বংস করা হয়।

অবৈধ মৎস্য আহরণ ও জালের অপব্যবহার রোধে ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) ভবিষ্যতেও উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবেন বলে বিজিবি সূত্রে জানানো হয়।


banner close