কয়লা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ির বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটেরই উৎপাদন। গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিটেরই উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। পুরোপুরি কয়লা আমদানিনির্ভর এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চলতি মাসে চালু হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে জানা গেছে। ১২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার এ বিদ্যুৎকেন্দ্র কবে আবার উৎপাদনে আসতে পারবে তা নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
অনিয়ম-দুর্নীতি ও মামলার বেড়াজালে পড়ে বেহাল দশা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা ঋণনির্ভর এ মেগা প্রকল্পটির। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি নভেম্বরের শেষ দিকে বিদেশ থেকে কয়লা এলে এ সংকটের নিরসন করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী, সুমিতমো করপোরেশন কয়লার সর্বশেষ সরবরাহ দেয় গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে। মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাই ও অপর ইউনিট ডিসেম্বরে চালু হয়। যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এখন পর্যন্ত জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে আনা হয় ২২ লাখ ৫ হাজার টন কয়লা। সেই মজুত পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তিন বছর কয়লা সরবরাহের জন্য কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু সাবেক প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ একটি প্রতিষ্ঠানকে বেআইনি সুবিধা দিতে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় ১০ মাস দেরি করে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই অনিয়মের অভিযোগ তুলে আদালতে অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয় গত জুলাইয়ে। সেই আদেশটি পরে উচ্চ আদালতে স্থগিত করা হলেও দীর্ঘমেয়াদে কয়লা আমদানি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
এদিকে কায়লা সংকটের কারণে গত বৃহস্পতিবার থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিচালন) মনোয়ার হোসেন মজুমদার।
তিনি জানান, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ইউনিট কমিশনিংয়ের জন্য জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা আনা হয়ে থাকে। গত আগস্ট মাসে জাপানি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়েছে। প্রকল্পের একটি ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাই ও অপর ইউনিট ডিসেম্বরে চালু হয়। যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এখন পর্যন্ত জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে আনা হয় ২২ লাখ ৫ হাজার টন কয়লা। সেই মজুদ পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। ফলে বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তিন বছরের কয়লা সরবরাহের জন্য কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু সাবেক প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ একটি প্রতিষ্ঠানকে বেআইনি সুবিধা দিতে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় ১০ মাস দেরি করে বলে অভিযোগ উঠে। ওই অনিয়মের অভিযোগ তুলে আদালতে অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয় গত জুলাইয়ে। সেই আদেশটি পরে উচ্চ আদালতে স্থগিত করা হলেও দীর্ঘমেয়াদে কয়লা আমদানি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। তবে সব প্রক্রিয়া শেষ করে নভেম্বরের শেষ দিকে কয়লা আমদানি করার চেষ্টা চলছে। কয়লা আসলেই শুরু হবে উৎপাদন।’
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে অব্যবহৃত জায়গাগুলোর কার্যকর ও নান্দনিক ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সবুজায়ন ও ঢাকা মহানগরীর নাগরিকদের জন্য গণপরিসর উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক আজ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
উক্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ এজাজ এবং সভাপতিত্ব করেন জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, সচিব, সেতু বিভাগ ও নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
চুক্তিতে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষে পরিচালক (প্রশাসন) ও যুগ্মসচিব জনাব আলতাফ হোসেন সেখ এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের-এর পক্ষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও (উপসচিব) জনাব মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান স্বাক্ষর করেন। এছাড়া, চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, প্রকল্প পরিচালক এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ এজাজ বলেন, এই চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ঢাকার নাগরিকদের জন্য নতুন প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করতে পারব। অব্যবহৃত জায়গাগুলো এখন নাগরিকদের বিনোদন ও বিশ্রামের আধুনিক পরিসরে রূপ নেবে। এই চুক্তির মাধ্যমে ২টি সরকারি প্রতিষ্ঠান সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে, যা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে একটি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সচিব সেতু বিভাগ বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত যুগপোযুগী পরিবর্তনে সবাইকে একসাথে কাজ করে যেতে হবে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে শুধু যানবাহন চলাচলের জন্যই নয়, বরং এর নিচের স্থানগুলোকে নাগরিক কল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করার মাধ্যমে নগরজীবনকে আরও প্রাণবন্ত ও সুসংগঠিত করা আমাদের লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে সেতু সচিব মহোদয় বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিলারের মধ্যবর্তী এবং আশপাশের উন্মুক্ত স্থানে দেশীয় ও পরিবেশবান্ধব বৃক্ষরোপণ এবং নান্দনিক বাগান তৈরি করা, নাগরিকদের হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে), সাইকেলের জন্য পৃথক লেন (যেখানে সম্ভব), বসার বেঞ্চসহ প্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা এবং এলাকার পরিবেশগত মান উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে ভূমিকা রাখবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) ও যুগ্মসচিব জনাব আলতাফ হোসেন সেখ বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে অব্যবহৃত জায়গা সৃজনশীল কাজে ব্যবহার হবে।
এই চুক্তির মাধ্যমে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচের অব্যবহৃত জায়গাগুলোকে পরিকল্পিতভাবে সাজিয়ে সবুজায়ন, পথচারী-বান্ধব এলাকা, বিনোদন স্পট, খেলার মাঠ, সাইকেল ট্র্যাক, আর্ট ও কালচার কর্ণার, বসার স্থান এবং উন্মুক্ত গণপরিসরে রূপান্তরিত করা হবে। এর ফলে নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন, বায়ুদূষণ হ্রাস এবং নগরীর পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের এই সমন্বিত উদ্যোগ, ঢাকা মহানগরীর পরিবেশবান্ধব ও টেকসই নগরায়ণ প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
নিলাম অযোগ্য Dangerous Goods ও অন্যান্য ধ্বংসযোগ্য পণ্য বিনষ্টকরণের লক্ষ্যে গঠিত আন্ত:সংস্থা কমিটির আহ্বায়ক জনাব মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক), চট্রগ্রাম বিভাগ মহোদয়ের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, ডিজিএফআই, এনএসআই, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এর প্রতিনিধিবৃন্দের উপস্থিতিতে গত ২৫-১০-২০২৫ এবং ২৬-১০-২০২৫ তারিখে চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা ১৯টি Dangerous Goods এর কন্টেইনার পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
উক্ত ধ্বংসের কাজ গত ২৫-১০-২০২৫ খ্রি. রোজ শনিবার সকাল ৯:০০ ঘটিকা থেকে শুরু করে ২৬-১০-২০২৫ খ্রি. রোজ রবিবার রাত ৯:৩০ টা পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে চালু রেখে ধ্বংস কাজ সম্পন্ন করা হয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আনসার সদস্য ও স্থানীয় বন্দর থানার পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত থেকে উক্ত ধ্বংসকাজের নিরাপত্তা প্রদানসহ সার্বিক সহায়তা প্রদান করেন।
ধ্বংসকৃত পণ্যসমূহের মধ্যে রয়েছে Uncoated Calcium Carbonate (১৬ কন্টেইনার), Orange Emulsion (১ কন্টেইনার), Sweet Whey Powder (১ কন্টেইনার) এবং Skimmed Milk Powder (১ কন্টেইনার), যা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে ছিল বিধায় বন্দরের নিরাপত্তা জনিত ঝুঁকির সৃষ্টি করে।
গত বছর অক্টোবর মাসে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়ে ১৪ বছর ধরে বন্দর প্রাঙ্গণে পড়ে থাকা অতিমাত্রায় দাহ্য ৪ টি Hazardous Cargo Containers সফলভাবে বন্দর এলাকা থেকে অপসারণ করে পরিবেশ সম্মত উপায়ে ধ্বংস করতে সমর্থ হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার জট কমানোর লক্ষ্যে বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা প্রায় ৬০৬৯ কন্টেইনার (প্রায় ১০,০০০ TEUs) এর ইনভেন্টরি সম্পন্ন করে তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিলামে বিক্রয় করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি বিশেষ আদেশ জারী করেছে। ইতোমধ্যে উক্ত কন্টেইনারসমুহের মালামালসমূহের ইনভেন্টরি কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমান কন্টেইনারের নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস দ্রুততার সাথে চলমান নিলাম সম্পন্ন করে চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার জট কমাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সার্বিক সহযোগীতায় বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা বিপজ্জনক পণ্যগুলো জরুরী ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে ধ্বংস করার কাজ অব্যাহত থাকবে।
কৃষি খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও সার সরবরাহে সঙ্কট রোধে ‘সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা-২০২৫ বাতিল করে ২০০৯ সালের নীতিমালা বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন (বিএফএ) কুমিল্লা জেলা ইউনিট। একই সঙ্গে কৃষকদের দোরগোড়ায় সময়মতো সার সরবরাহ নিশ্চিত ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সারের ক্রয়মূল্যের সঙ্গে পরিবহন, অন্যান্য খরচ এবং লভ্যাংশ বাবদ শতকরা ২৫ ভাগ বৃদ্ধি করে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণেরও জোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংগঠনের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রস্তাবিত ‘সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা–২০২৫’ বাস্তবায়িত হলে মাঠপর্যায়ে সারের সুষ্ঠু সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে এবং কৃষি উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে আসবে।
তিনি বলেন, বিএফএ ১৯৯৬ সাল থেকে দেশের সারের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দীর্ঘ ৩ দশক ধরে বিএফএ কৃষির উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
একজন ডিলারকে গড়ে ৩০ থেকে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে হয় এবং খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বাকিতে সার সরবরাহ করতে হয়। কৃষকরা ফসল বিক্রির পর ওই টাকা পরিশোধ করলেও পুরো অর্থ ফেরত আসে না। এমন বাস্তবতায় নতুন নীতিমালা চালু হলে অনেক ডিলার দেউলিয়া হয়ে পড়বে, যা দেশের সার সরবরাহ ব্যবস্থাকে ভেঙে দেবে।
লিখিত বক্তব্যে আরো জানানো হয়, ইউনিয়নভিত্তিক তিনজন নতুন ডিলার নিয়োগের প্রস্তাবও বাস্তবসম্মত নয়। এতে বিনিয়োগ ব্যয় ও পরিচালন খরচ বহুগুণে বাড়বে, অথচ লভ্যাংশ কমে যাবে। ফলে সার ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হবে, এবং সার সংকট দেখা দিতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, বর্তমানে প্রতি ইউনিয়নে একজন ডিলারশিপ পদ্ধতিই কার্যকর এবং স্থিতিশীল ব্যবস্থা।
বিএফএ কুমিল্লা ইউনিট মনে করে, একই পরিবারের সদস্যরা যদি পৃথক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে এবং সরকারের চাহিদা অনুযায়ী সব দলিল উপস্থাপন করতে পারে, তবে তাদের ডিলারশিপ বহাল রাখা ন্যায্য হবে। সংগঠনটি নারী উদ্যোক্তাদের সার ব্যবসায় যুক্ত করার পক্ষেও মত দেয়।
বক্তব্যে মো. জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ২০ বছর আগে নির্ধারিত প্রতি বস্তায় মাত্র ১০০ টাকা পরিবহন খরচ আজ আর বাস্তবসম্মত নয়। জ্বালানি ও পরিবহন ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় তারা দাবি জানান, ক্রয়মূল্যের সঙ্গে শতকরা ২৫ ভাগ যুক্ত করে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হোক, যাতে সরকারি মূল্যে সার বিক্রি নিশ্চিত থাকে।
এ সময় মোঃ জাহাঙ্গীর আলম আরো বলেন, সরকারের ভর্তুকি মূল্যের সারের ওপর কোনো আগাম কর আরোপ করা হলে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। এছাড়া আগামী ফেব্রুয়ারি ২০২৬ সালে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এখনই নীতিমালা পরিবর্তনের চেষ্টা করলে পিক সিজনে সার সংকট দেখা দিতে পারে।
তিনি আহ্বান জানান, নীতিমালা ২০২৫ কার্যকর না করে বরং দেশের প্রতিটি জেলা থেকে অন্তত ১০ জন বিসিআইসি ডিলারের মতামতের ভিত্তিতে ২০০৯ সালের পরীক্ষিত নীতিমালাকে পর্যালোচনা করা হোক। অন্যথায়, সার সংকটের দায় বর্তমান সরকারের ওপরই পড়বে।
সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হাসান তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন, কৃষক জাতির মেরুদণ্ড। কৃষকের স্বার্থ রক্ষাই আমাদের প্রথম দায়িত্ব। তাই সার ডিলারদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে কৃষি উৎপাদন যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেই বিষয়ে সরকারের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।
শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়কে নীতিমালা-২০২৫ বাস্তবায়ন স্থগিত করে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএফএর কুমিল্লা ইউনিটের সহ-সভাপতি মো. আখতার হোসেন, বিএফএ কুমিল্লার সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আবদুল মতিন, মোঃ আখতার হোসেন, দিলিপ কুমার সাহা, চন্দন কুমার সাহা ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ আবদুল হান্নান, যুগ্ম সম্পাদক একেএম মোস্তফাসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনের পরে, বিএফএ কুমিল্লা ইউনিটের নেতৃবৃন্দ সার সমন্বিত নতুন নীতিমালা বাতিল ও বিক্রয়মূল্যে ২৫% বৃদ্ধি দাবিতে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি জমা দেন। এসময়, জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারক লিপি জমা নেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক শিডিউল ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
গত ২৭ অক্টোবর (সোমবার) মন্ত্রণালয়ের সিভিল এভিয়েশন–১ শাখা থেকে স্বাক্ষরিত এক সরকারি পত্রে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।
এছাড়াও পত্রে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর পূর্ব পর্যন্ত কক্সবাজার বিমানবন্দর নন-শিডিউল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এবং জরুরি অবতরণ (Emergency/Diversion) এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার না করার অনুরোধ করা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বিষয়টি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে নিযুক্ত বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ এবং তিতাস গ্যাসের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসব অভিযানের ফলে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়ার সাথে জড়িত দুষ্কৃতকারী চক্র এখন ময়মনসিংহ এলাকায় তাদের ঘাটি স্হাপন করেছে। এই চক্রটি অবৈধভাবে চুনা কারখানায় গ্যাস সংযোগ দিয়ে অবৈধভাবে টাকা আয় করছে। সে প্রেক্ষিতেই গত ২৬/১০/২০২৫ তারিখে চর রঘুরামপুর, ময়মনসিংহ হতে নেত্রকোনা গামী ৬" × ১০০০ psig সঞ্চালন পাইপ লাইনের শম্ভুগঞ্জ, ময়মনসিংহ নামক স্থানে অবৈধ চুনা কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ০২ টি সার্ভিস টি স্থাপন করা হয় এবং গ্যাস লিকেজ সৃস্টি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে অত্র কোম্পানির কর্মকর্তা/কর্মচারী এবং পুলিশের সহযোগিতায় অবৈধ গ্যাস সংযোগে জড়িত ১৫ জন'কে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয় এবং থানায় মামলা রজু করা হয়।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদের বিষয়ে জিরো টলারেন্স। এই উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং অবৈধ গ্যাস সংযোগের সাথে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ২৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ৩৮৯টি শিল্প, ৫২০টি বাণিজ্যিক ও ৭০,৮৯৮টি আবাসিকসহ মোট ৭১,৮০৭টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ১,৫২,৬৭৮টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ২৯১.৩ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ৮ টি উপজেলার বয়স্কভাতা উপকারভোগীদের তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ কার্যক্রমের প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় হালনাগাদ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিকতার সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডাঃ তামান্না তাসনীম। এসময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক আদিল মোত্তাকিন, গাজীপুরের উপ-পরিচালক মোঃ মতিয়ার রহমান, সহকারী পরিচালক এটিএম তৌহিদুজ্জামান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন, ট্যাগ অফিসার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল্লাহ্, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৩ হাজার ২'শ ৩৯ জন বয়স্কভাতা উপকারভোগী রয়েছে। ইতিমধ্যে কাপাসিয়া, কড়িহাতা, সনমানিয়া, টোক, ঘাগটিয়া, দূর্গাপুর ইউনিয়নে আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের উপকারভোগীদের তথ্য হালনাগাদ করা হবে।
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উজিরপুর উপজেলার ইচলাদি টোল প্লাজায় চলন্ত বিআরটিসি বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গৌরনদী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুর রহমান অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিআরটিসি বাসের চালক মো. শাহজালাল বলেন, বরিশাল থেকে খুলনার উদ্দেশে যাত্রী নিয়ে বাসটি ইচলাদী টোল প্লাজায় পৌঁছালে যাত্রীরা হঠাৎ ধোঁয়া দেখতে পান এবং চিৎকার শুরু করেন। আমি গাড়ি থামাতেই দেখতে পাই আগুনের কুণ্ডলি উঠছে।
তিনি আরও বলেন, সৌভাগ্যবশত সব যাত্রী নিরাপদে বের হতে সক্ষম হন।
বাসটি (ব্রাহ্মণবাড়িয়া–ব–১১–০০০৪) মুহূর্তের মধ্যেই দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। খবর পেয়ে উজিরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অগ্নিকাণ্ডে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মারা গেছেন তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। হাফেজ ত্বকী জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি এনটিভিতে প্রচারিত কুরআনের আলো অনুষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ী হন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাফেজ ত্বকীর শিক্ষক ও মারকাযুত তাহফিজের প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ কারী শায়খ নেছার আহমদ আন-নাছিরী।
হাফেজ ত্বকী মারকাযুত তাহফিজ থেকে হিফজ সম্পন্ন করেছিলেন এবং এই প্রতিষ্ঠান থেকে একাধিকবার কোরআন প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদরাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং এক পর্যায়ে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানেই মারা যান তিনি।
বিশ্বের একাধিক দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী। ২০১৭ সালে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম হন হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী। পরবর্তী সময়ে কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেন।
কুমিল্লা মুরাদনগরের ডালপা গ্রামে ২০০০ সালে জন্মগ্রহণ করেন হাফেজ ত্বকী। বাবা মাওলানা বদিউল আলম পেশায় একজন মাদরাসা শিক্ষক। তার এই ইন্তেকালে শোকে ভাসছে পরিবারটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন।
এক বছর চার মাস আগে ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ সম্পন্ন হওয়া অত্যাধুনিক ১৫০ শয্যার নয়তলা হাসপাতাল ভবনটি অবশেষে সীমিত পরিসরে চালু হচ্ছে—তাও সরকারি বরাদ্দ ছাড়াই। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, আসবাবপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার জন্য এখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অর্থ বরাদ্দ না আসায় স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মিলে নিজস্ব উদ্যোগে তহবিল গঠন করে এই সেবা চালুর প্রস্তুতি নিয়েছে।
জানা গেছে, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ভবনটি নির্মাণ শেষে এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। এতে পঞ্চগড় জেলার সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে এবং আর্থিক ক্ষতিও গুনতে হচ্ছে।
পাশেই অবস্থিত ১০০ শয্যার আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী ভর্তি থাকেন। তীব্র চিকিৎসক সংকটে অনেক রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হয়। অনেকে বাধ্য হয়ে চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর, রংপুর বা ঢাকায় যাচ্ছেন—পথেই কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করছেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ঘাটতির কারণে হাসপাতালের পরিবেশও নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নতুন ভবনে সীমিত পরিসরে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরুর নির্দেশনা দিয়েছে, তবে অর্থ বরাদ্দ দেয়নি। স্থানীয়ভাবে অর্থ সংগ্রহের নির্দেশনা পেয়ে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী ও সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান মাঠে নেমেছেন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, চেম্বার নেতা, এনজিও প্রতিনিধি ও বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে মতবিনিময় করে ইতোমধ্যে ২১ লাখ ১৫ হাজার টাকার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। ‘স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা তহবিল’ নামে গঠিত এ ফান্ড থেকে বেড ও চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয় করা হবে। আপাতত ৫০ লাখ টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান জানান, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আপাতত সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ নতুন ভবনে স্থানান্তরের প্রস্তুতি চলছে। সেখানে ১০০ শয্যার মেডিসিন ইউনিট চালু করা হবে। ১৫ই নভেম্বর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এ হাসপাতালের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে, এবং তিনি আরো জানান যেকোনো কারণে ডেট চেঞ্জ হতে পারে।
নতুন ভবনে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করতে ৩৮৮ জন জনবল, আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকার বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, “চিকিৎসক দেওয়ার আশ্বাস আমরা পেয়েছি, তবে অর্থ বরাদ্দে সময় লাগবে। তাই স্থানীয়ভাবে তহবিল গঠন করা হয়েছে। আপাতত সংগৃহীত টাকা দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালু করা হবে এবং ভবিষ্যতে দরিদ্র রোগীদেরও সহায়তা করা হবে।”
এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, “আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি দপ্তরে গিয়ে পঞ্চগড়ের স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থা তুলে ধরেছি। নভেম্বরের ২০ তারিখের মধ্যে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ চিকিৎসক পদ পূরণের আশ্বাস দিয়েছে তারা। সবাই মিলে সহযোগিতা করলে শিগগিরই এ জেলার স্বাস্থ্যসেবায় পরিবর্তন আসবে।”
এদিকে, পঞ্চগড় জেলার পাঁচটি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসক সংকট চলছে। বর্তমানে জেলায় মোট ১১৪টি চিকিৎসক পদ শূন্য—যার মধ্যে সদর হাসপাতালে ২১টি, তেঁতুলিয়ায় ২০টি, আটোয়ারীতে ২১টি, বোদায় ২০টি, দেবীগঞ্জে ২৪টি এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ২টি পদ ফাঁকা রয়েছে।
ভৈরবকে জেলা করার দাবিতে এবার নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন ছাত্র জনতা। এসময় মেঘনা নদীর ঘাটে ১ ঘন্টা নৌ চলাচল বন্ধ থাকে। এরপর আগামী বৃহস্পতিবার সড়ক, রেল, নৌপথ অবরোধের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় থেকে শুরু বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ভৈরব বাজার লঞ্চঘাট ও কার্গোঘাটে এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এসময় আন্দোলনকারীরা তাদের বক্তব্যের বলেন, গতকাল সোমবার শান্তিপূর্ণ রেল অবরোধের সময় কর্মসূচির শেষের দিকে হঠাৎ ট্রেন চালক জোরে ট্রেনের হুইশাল বাজানোর কারণে রেললাইনে অবস্থান থাকা ছাত্র জনতা এসময় নিজেদের সেভ করতে কয়েকটি পাথর নিক্ষেপ করে। তবে এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ী স্টেশন মাস্টার ও রেলওয়ে থানার ওসি। আমরা ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে পূর্বেও ছিলাম ভবিষ্যতেও থাকবো। আমাদের মামলা হামলা দিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না।
এসময় বক্তব্য রাখেন, জেলা আন্দোলনের অন্যতম মাওলানা সাইফুল ইসলাম শাহারিয়া, গণঅধিকার পরিষদ নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল, ছাত্র নেতা জুনাইদ প্রমুখ।
ভৈরব বাজার লঞ্চঘাটে নৌপথ অবরোধ চলাকালীন সময়ে যেন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্যই ভৈরব উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এএইচএম মো.আজিমুল হক, ভৈরব নৌপুলিশ থানার অফিসার ইনচার্জ মো.রাশেদুজ্জামানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এবিষয়ে ভৈরব নৌপুলিশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.রাশেদুজ্জামান জানান, আজকে সকালে ভৈরবকে জেলার দাবিতে নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। তারা আগামী বৃহস্পতিবার সড়ক, রেল, নৌপথ এক যোগে অবরোধের ঘোষণা দিয়ে শেষ করেন আজকের কর্মসূচি।
যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধানরাখার গোলাঘর থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এসময় একজনকে আটক করেছে বিজিবি।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ভোরে খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দৌলতপুর বিওপির একটি বিশেষ টহলদল এ অভিযান পরিচালনা করে।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুবেদার ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টহলদল সীমান্ত মেইন পিলার ১৭/০৯ এস হতে ১০০০ গজ বাংলাদেশের মধ্যে বেনাপোল দৌলতপুর উত্তরপাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় স্থানীয় এক বাসিন্দার ধান রাখার গোলাঘর তল্লাশি করে একটি দেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
এ সময় বেনাপোল পোর্ট থানার দৌলতপুর উত্তরপাড়া গ্রামের সোলায়মান হোসেনের ছেলে আতাউর রহমান (৪০) কে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়।
২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল খুরশিদ আনোয়ার অস্ত্র আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান অস্ত্র আইনে মামলা দিয়ে আটক ব্যক্তিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
দারিদ্র্য বিমোচনে গত পাঁচ দশকে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। যদিও সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, গত দু-তিন বছরে দারিদ্র্য বেড়েছে। দেশের উন্নয়নের সামগ্রিক চিত্র ইতিবাচক হলেও কিছু উপজেলা এখনো আর্থসামাজিক সংকটে আছে। কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বৈষম্য গভীর; নদীভাঙন; চরাঞ্চলের অনিশ্চয়তা; কৃষি নির্ভরতার সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি এই অঞ্চলের মানুষকে অনিশ্চিত জীবনে ঠেলে দেয়।
সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি, এনজিওগুলোর উদ্যোগসহ নানা প্রচেষ্টা চলমান থাকলেও তা এখনো যথেষ্ট নয় বলে মনে করা হয়। দারিদ্র্যের হার বেশি থাকায় ওই সব উপজেলায় লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসংস্থান, যোগাযোগে উন্নয়ন, নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং শিক্ষা-স্বাস্থ্যব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে।
এই প্রতিবেদনে দেখানো হলো দেশের সবচেয়ে দরিদ্র ১০টি উপজেলা কোনগুলো। শীর্ষ ১০টি উপজেলার ৫টিই মাদারীপুরের উপজেলা। অবশ্য জেলা পর্যায়ে মাদারীপুরের দারিদ্র্য হার সবচেয়ে বেশি।
গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ দারিদ্র্য মানচিত্র থেকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
১. ডাসার: এই উপজেলা মাদারীপুর জেলায় অবস্থিত। এই উপজেলায় দারিদ্র্যের হার ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ। এই হার সারা দেশের উপজেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ। ডাসার উপজেলায় প্রতি তিনজনে দুজন গরিব। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন অনুসারে, বালিগ্রাম, কাজীবাকাই, গোপালপুর, ডাসার ও নবগ্রাম—এই পাঁচ ইউনিয়ন নিয়ে ডাসার উপজেলা গঠিত।
২: হালুয়াঘাট: ময়মনসিংহ জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা হালুয়াঘাট। এই উপজেলার দারিদ্র্য হার ৫৯ দশমিক ৬ শতাংশ। এটি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দারিদ্র্য হারের উপজেলা। এখানে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র। সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় আর্থসামাজিক পরিস্থিতি কিছুটা নাজুক। এই এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অনেকটাই গোবরাকূড়া-কড়ইতলি স্থলবন্দরের ওপর নির্ভরশীল।
৩. কালকিনি: এই উপজেলা মাদারীপুর জেলায় অবস্থিত। এই উপজেলায় দারিদ্র্য হার ৫৬ দশমিক ৩ শতাংশ। এই হার সারা দেশের উপজেলা পর্যায়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এই উপজেলার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মূলত কৃষিনির্ভর। শিল্পকারখানা নেই বললেই চলে।
৪. রাজৈর: এই উপজেলাও মাদারীপুর জেলায় অবস্থিত। এই উপজেলায় দারিদ্র্য হার ৫৫৬ শতাংশ। টেকেরহাট এই উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজার। পদ্মা সেতু হয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ উপজেলার গুরুত্ব অপরিসীম। এ উপজেলায় অনেক খাল, বিল, পুকুর ছাড়াও ছোট ছোট নদী-নালা রয়েছে। এই উপজেলাও কৃষিপ্রধান।
৫. শিবচর: সবচেয়ে দরিদ্র শীর্ষ ১০টি উপজেলায় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা আছে। এই উপজেলার দারিদ্র্য হার ৫৫ দশমিক ১ শতাংশ। পদ্মা নদীর তীরবর্তী এই উপজেলা অবস্থিত। চরাঞ্চলও আছে। পদ্মা সেতুর চালু আগে পর্যন্ত যোগাযোগের দিক থেকে বেশ পিছিয়ে ছিল শিবচর উপজেলা। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর যোগাযোগের দিক বেশ এগিয়ে গেছে, যা জীবনমানের উন্নতিতে ভূমিকা রাখছে।
৬. নলছিটি: ঝালকাঠি জেলার অবস্থিত এই নলছিটি উপজেলা। এই উপজেলার দারিদ্র্য হার ৫৩ দশমিক ৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ দারিদ্র্য হার এই উপজেলায়। নদীঘেরা এই উপজেলায় কৃষিনির্ভর অর্থনীতি বিরাজমান। শীতলপাটি, পান, মৃৎশিল্প এই উপজেলার অন্যতম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
৭. গৌরীপুর: এই উপজেলা ময়মনসিংহ জেলায় অবস্থিত। এই উপজেলার দারিদ্র্যের হার ৫২ দশমিক ৯ শতাংশ। ময়মনসিংহ জেলা সদরের পূর্ব দিকে এই উপজেলা অবস্থিত। মইলাকান্দা, গৌরীপুর, অচিন্ত্যপুর, মাওহা, সহনাটি, বোকাইনগর, রামগোপালপুর, ডৌহাখলা, ভাংনামারী, সিধলা—এই ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলাটি। কৃষি ও মৎস্য খাতই এই উপজেলার মানুষের প্রধান জীবিকা।
৮. মাদারীপুর সদর: মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলায় অর্ধেক মানুষ দরিদ্র। এই উপজেলার দারিদ্র্য হার ৫০ শতাংশ। সর্বোচ্চ দারিদ্র্য এমন ১০টি উপজেলার মধ্যে মাদারীপুর সদর ছাড়া আর কোনো জেলার সদর উপজেলা নেই। মাদারীপুর সদর উপজেলায় উল্লেখযোগ্য শিল্পকারখানা নেই। এই উপজেলা মূলত কৃষিনির্ভর কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভরশীল। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে সেখানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে।
৯. বেলাব: এটি ঢাকার পাশে নরসিংদী জেলায় অবস্থিত। বেলাব উপজেলার দারিদ্র্য হার সাড়ে ৪৯ শতাংশ। এই উপজেলার অধিবাসীরা কৃষিকাজের ওপর জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এখানকার সবজি, কাঁঠাল, কলা, লটকন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নেওয়া হয়। এমনকি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়।
১০. বোদা: একসময় দারিদ্র্য বলতেই উত্তরবঙ্গের জেলা-উপজেলাকে বোঝাতো। কিন্তু সময় পাল্টে গেছে। দেশের সবচেয়ে দরিদ্র উপজেলার মধ্যে মাত্র একটি উপজেলা রংপুর বিভাগের তথা উত্তরবঙ্গের। এটি হলো সবচেয়ে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা। এই উপজেলার দারিদ্র্য হার ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ। এই উপজেলা কৃষিপ্রধান। চাষ হয় ধান, পাট, গম, আলু, বাদাম, আখ, ভুট্টা ইত্যাদি।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবকে জেলার দাবিতে রেলওয়ে জংশন স্টেশন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে জনতা।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে অবরোধ থাকা উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে যেতে চাইলে বিক্ষোভকারীরা ট্রেনে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় কয়েকজন ট্রেনের যাত্রী আহত হয়েছে। পরে ১১টা ৪০ মিনিটে ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যাই ট্রেন। এসময় রেলওয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখেন। বর্তমানে ঢাকা-চট্রগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এর আগে ভৈরবকে জেলার দাবিতে বেশ কিছু দিন যাবত উত্তাল ভৈরব। এরই অংশ হিসাবে সোমবার সকাল ১০টায় শহরের ভৈরব রেলওয়ের স্টেশনে প্লাটফর্মে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রোডের রেল যোগাযোগ বন্ধ করে বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারীরা। এসময় নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনকে ভৈরব রেলওয়ের স্টেশনে আটকে দেয় আন্দোলনকারীরা। এতে রেলের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ে। প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট যাবত ট্রেনটি আটকে থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা রহমত আলী বলেন, সকালে ট্রেন আটকিয়ে অবরোধ চলাকালীন সময়ে শেষ মুহূর্তের হঠাৎ কতিপয় কিশোর আটকিয়ে থাকা ট্রেনে ইটপাটকেল মারতে থাকেন। এসময় আমরা সবাই আতংকিত হয়ে উঠি।
স্টেশনে থাকা ট্রেন যাত্রী সোহান মিয়া বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে জনতা স্টেশনে জেলার দাবিদে আন্দোলন করছিল। কখন যে হুট করে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ শুরু হয়ে গেলো কেউ টের পায়নি।
ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ইউসুফ বলেন, স্টেশন থেকে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার মুহুর্তে হঠাৎ আন্দোলনকারীদের হামলার শিকার হন।
এ বিষয়ে ভৈরব রেলওয়ের থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) সাঈদ আহমেদ জানান, উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলার ঘটনা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে তাদের নিদের্শনা পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান ।