জুলাইয়ের ছাত্রজনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, পরবর্তীতে লাগাতার বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ও সাম্প্রতিক সময়ের সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির পর্যটন শিল্প। এসব ঘটনায় গত দুই মাস রাঙামাটি প্রায় পর্যটকশূন্য ছিল। এর মধ্যে গত ৮-৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জেলা প্রশাসন থেকে পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ফলে চরম হতাশায় দিন পার করেছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। পাঁচ আগস্ট সরকার পতনের পর ভয়াবহ বন্যা ও ভারী বৃষ্টিপাতে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। এতে ডুবে যায় রাঙামাটির অন্যতম আকর্ষণ ঝুলন্ত সেতু। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে পর্যটন ব্যবসায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে না উঠতেই পাহাড় আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাহাড়ি-বাঙালি সহিংস ঘটনায়। এ ঘটনায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হলেও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির জের টানতে হচ্ছে পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের।
এদিকে, ব্যবসায়ী, শ্রমিক-কর্মচারী মিলে রাঙামাটিতে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে প্রায় ১ লাখ মানুষ জড়িত রয়েছে। ব্যবসায়ীদের হিসাব মতে, পর্যটন খাতে জেলায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। বর্তমানে ব্যবসায়ীদের দাবি, বিগত চার মাসের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার থেকে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হোক।
পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে রাঙামাটিতে আশির দশকের শেষের দিকে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে অসংখ্য হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, স্থানীয় তাঁত শিল্প, টুরিস্ট বোট, রেস্তোরাঁ এবং সেগুন কাঠের আসবাবপত্রের দোকানসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্ট অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এখানকার মূল ব্যবসা গড়ে উঠেছে পর্যটকদের উপজীব্য করে। এসব ব্যবসার ওপর এখানকার মানুষের জীবন-মান নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
এদিকে, রাঙামাটি পর্যটন নৌ-ঘাট ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিগত চার মাসে সরকার পতনের আন্দোলন, ঝুলন্ত সেতু পানির নিচে থাকা এবং গত সেপ্টেম্বর মাসে রাঙামাটিতে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় পর্যটক ভ্রমণ নিষেধ থাকায় সেখানে তেমন পর্যটক আসেনি। এর ফলে আমাদের প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
রাঙামাটি শহরের হোটেল সাংহাই ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শরিফুল ইসলাম সুমন বলেন, গত জুলাই মাস থেকে দেশের পরিস্থিতির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য খুবই মন্দা যাচ্ছিল। এরপরে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটিতে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, এতে করে আমাদের ব্যবসা নাই বললে চলে।’
তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসন ১ নভেম্বর থেকে পর্যটক ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে, আশা করছি ট্যুরিস্ট আসা শুরু হতে পারে।’
সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন বলেন, ‘গত দেড় মাসে সাজেকে পর্যটক ভ্রমণ করতে না আসায় আমাদের ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এখন সরকার থেকে যদি আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে আমরা কিছুটা হলেও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘৫ তারিখ থেকে সাজেকে খুলে দেওয়ার পর কিছু কিছু পর্যটক ভ্রমণ করতে এসেছেন। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে পর্যটক বাড়লে এই ক্ষতি আস্তে আস্তে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন বলেন, সাজেকে ১১৬টি রিসোর্ট ও শতাধিক রেস্টুরেন্ট রয়েছে।’
রাঙামাটি রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুমেধ চাকমা বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে তিন পার্বত্য জেলা একটি সম্ভাবনাময় এলাকা। একসময় রাঙামাটিতে ট্যুরিস্ট আসলেও রাত্রি যাপনের মানসম্পন্ন কোনো হোটেল বা রিসোর্ট ছিল না। কিন্তু বর্তমানে সেই ব্যবস্থা আমরা করেছি। বর্তমানে রাঙামাটিতে সমিতির অন্তর্ভুক্ত ১১টি রিসোর্ট আছে। গত মাসে দুর্গাপূজায় লম্বা একটা ছুটি ছিল। আমরা মনে করেছিলাম সেই ছুটিতে পর্যটক এলে আমাদের প্রায় ২০ লাখ টাকা লাভ হতো, কিন্তু উল্টো আমাদের লোকসান গুনতে হলো।’
তিনি বলেন, ‘শুধু আমাদের বার্গী লেক ভ্যালিতে কর্মচারী রয়েছেন ২২ জন। তাদের খাওয়া, বেতন ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ রয়েছে। লাভের কথা বাদ দেন, এটাকে ধরে রাখা আমাদের মতো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য।’
সুমেধ চাকমা বলেন, ‘আমাদের রিসোর্ট সমিতির বিভিন্ন উদ্যোক্তা আছেন যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন, তারা এখন ব্যাংকের মাসিক কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। বিগত চার মাসে আমাদের রিসোর্ট সমিতির অন্তর্ভুক্ত সদস্যদের প্রায় ৫-৬ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এখন সরকার থেকে আমাদের রিসোর্ট সমিতির মালিকদের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য সহযোগিতার বিশেষ প্রয়োজন।’
এদিকে, রাঙামাটি রেস্তোরাঁ মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা বলেন, ‘রাঙামাটি শহরে আমাদের শতাধিক রেস্টুরেন্ট আছে। বিগত ৩-৪ মাস ধরে আমাদের রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা দৈনিক কমপক্ষে ৫ হাজার টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে পর্যটক না আসার কারণে। এতে করে বিগত ৪ মাসে আমাদের প্রায় ৮ কোটি টাকার মতো লোকসান হয়েছে। এত বড় লোকসান কীভাবে পুষিয়ে নিব তা নিয়ে আমরা চিন্তায় আছি। জানিনা ভবিষ্যতে কী হবে।’
রাঙামাটি হাউজ বোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাপ্পী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘গত জুলাই বিপ্লবের কারণে দেশের যে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও পার্বত্য চট্টগ্রামে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রেক্ষিতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে সামগ্রিকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এর ফলে পর্যটন ব্যবসায় একটি ধস নেমেছে। আমাদের সবার অর্থনৈতিক দুরবস্থা চলছে। আমরা কোটি কোটি টাকা এই শিল্প খাতে বিনিয়োগ করেছি, আমরা এখন পথে বসার অবস্থা। তিনি বলেন, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে আমাদের রিসোর্ট মালিকদের প্রায় ৬ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
রাঙামাটির আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, রাঙামাটিতে ৫৩টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। বিগত জুলাই মাস থেকে রাঙামাটিতে পর্যটক নেই- এরপর পুরো অক্টোবর মাসে রাঙামাটি ট্যুরিস্ট ভ্রমণে নিরুৎসাহিতকরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের আবাসিক হোটেলগুলোতে দৈনিক প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে ট্যুরিস্ট না আসার ফলে। বিগত ৪ মাসে প্রায় ১২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘অক্টোবরের ৮ তারিখ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পহেলা নভেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু খাগড়াছড়িতে নভেম্বরের ৪ তারিখ পর্যন্ত বিধিনিষেধ ছিল, ফলে সাজেকে কোনো পর্যটক যেতে পারেনি। ৫ নভেম্বর থেকে সাজেকে পর্যটক ভ্রমণ করছেন এবং পর্যটকরা রাঙামাটি জেলা নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, বন্ধ থাকায় পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন ব্যবসার মৌসুম শুরু হয়েছে। ফলে পর্যটন-সংশ্লিষ্টরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। আমরা চাই পর্যটন-সংশ্লিষ্ট কারও জীবন-জীবিকা যেন স্থবির না হয়। সবার যেন অর্থনৈতিক সচ্ছলতা থাকে। কেউ যাতে সমস্যায় না পড়ে সে বিষয়গুলো গভীরভাবে চিন্তা করি এবং এগুলো আমাকে পীড়া দেয়।
পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত থাকায় পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা প্রদানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমি যদি আবেদন পাই তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাব।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘রাঙামাটির আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কটি দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর পর্যটক আসেন। এই সড়কের সৌন্দর্য সবাইকে ধরে রাখতে হবে। পর্যটকদের জন্য রাঙামাটি শহরের মানিকছড়ি এলাকায় একটি তথ্যকেন্দ্র খোলার জন্য বিবেচনাধীন রয়েছে। যাতে করে পর্যটকরা পুরো রাঙামাটির তথ্য পায়।’
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাল্লারপার এলাকার একটি ধানখেত থেকে ৭ ফুট লম্বা একটি অজগর উদ্ধার করা হয়েছে। পরে সেটিকে উদ্ধার করে লাউয়াছড়ার জানকিছড়া রেসকিউ সেন্টারে ক্লিনিকে নেওয়া হয়েছে। সাপটি আঘাতপ্রাপ্ত থাকায় অবমুক্ত করা হয়নি। গত রোববার (সাপ-সংরক্ষক ও ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের সংরক্ষণ কর্মী চঞ্চল গোয়ালা অজগরটি উদ্ধার করেন।
চঞ্চল গোয়ালা জানান, দুপুরের দিকে স্থানীয়রা ফোন দিয়ে জানান ধান কাটতে গেলে একটি অজগর তারা দেখতে পান। তিনি সেখানে গিয়ে দেখেন সাপটির শরীরে আঘাত রয়েছে। স্থানীয়রা সাপটিকে কাঁচি দিয়ে আঘাত করে। সেখান থেকে অজগরটিকে উদ্ধার করে প্রথমে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের রেসকিউ সেন্টারে নেওয়া হয়। কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলে সেটিকে উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, সাপটি বৃষ্টির কারণে ছড়ার পানিতে ভেসে আসছে। সাপটার ওজন প্রায় ১০ কেজির মতো।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী নাজমুল হক জানান, সাপ-সংরক্ষক ও ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের সংরক্ষণ কর্মী চঞ্চল গোয়ালা ধানক্ষেত থেকে অজগরটি উদ্ধার করেন। সাপটি কিছুটা আঘাত প্রাপ্ত। সুস্থ করে নিরাপদে অবমুক্ত করা হবে। তিনি বনসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন এবং সাপ দেখলে হত্যা না করে বনবিভাগ বা সংরক্ষণ কর্মীদের খবর দেওয়ার আহ্বান জানান।
মেহেরপুরে একটি মাদক মামলায় ৪ আসামিকে যাবজ্জীবন সাজা ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার মেহেরপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম নাসিম রেজা আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলো- গাংনী উপজেলার করমদি মধ্যপাড়ার মুসলিম আলীর ছেলে জুয়েল হোসেন, সাবেদ আলীর ছেলে স্বপন আলী, আইবুদ্দিনের ছেলে আবেদ আলী এবং জামরুল ইসলামের ছেলে টিপু।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাংনী থানা পুলিশ মেহেরপুর কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের আকুবপুর এলাকায় একটি ট্রাক আটক করে। পরবর্তীতে ট্রাক তল্লাশি চালিয়ে ৪৬০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩১ (১) সারণী ও ৩৮ ধারায় গাংনী থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
দীর্ঘ সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন শেষে আদালত চার আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর দণ্ড প্রাপ্তদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে পদায়ন পেয়েছেন মো. আতিকুর রহমান। তার যোগদানের মধ্যদিয়ে ১ বছর ৩ মাস ১৯ দিন পর এসিল্যান্ড পেলেন উপজেলাবাসী। তিনি ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন।
গত রোববার বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নবাগত এসিল্যান্ড আতিকুর রহমানকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার রহমান। এসিল্যান্ডের যোগদানে এ উপজেলায় নাগরিক সেবাতে আরও গতি বাড়বে বলে মনে করছেন উপজেলাবাসী।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৩ মে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সবুজ কুমার বসাক পদোন্নতিজনিত বদলি হয়ে অন্যত্র যাবার পর দীর্ঘদিন যাবত সারিয়াকান্দি উপজেলায় শূন্য ছিল এ পদটি। পদটিতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান ও বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার রহমান।
উল্লেখ্য, এসিল্যান্ড আতিকুর রহমান এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (রাজস্ব শাখা ও রাজস্ব মুন্সিখানা শাখা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের অন্তারমোড় এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসনের বরাদ্দকৃত অর্থে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান ভাঙনস্থলে এসে জিওব্যাগ ফেলা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
টেন্ডারের মাধ্যমে বালু ভর্তি জিওব্যাগ কাজের তদারকি করছেন মেসার্স মল্লিক এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার মো. আতিকুর রহমান বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পেয়েছি। অন্তারমোড় ভাঙন রোধে ৫৫০ বস্তা জিওব্যাগ ফেলা হবে। প্রতি ব্যাগে ২৫০ কেজি করে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কেজি বালু ফেলা হবে ভাঙন এলাকায়।
এ বিষযে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান বলেন, ‘সকাল থেকে জরুরি আপৎকালীন কাজের অংশ হিসেবে অন্তারমোড় ভাঙনকবলিত এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের বরাদ্দকৃত অর্থে আপাতত ৫৫০ বস্তা বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, চুরি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে সচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত রোববার সন্ধ্যায় উপজেলা কাঠিগাঁও গ্রামে মেধাসিড়ি বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে কোটালীপাড়া যুবদলের সাবেক সভাপতি বিএনপি নেতা মানিকুজ্জামান হাওলাদারের উদ্যোগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বর্ষিয়ান মুরুব্বি আনোয়ার হোসেন ফকিরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় দলমত নির্বিশেষে কাঠিগাঁও ও চিতশী গ্রামের শতাধিক মুরুব্বিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেয়।
আলোচনা সভায় কোটালীপাড়া পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওলিউর রহমান হাওলাদার, পিঞ্জুরী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এইচ এম শহীদ, পল্লী চিকিৎসক মনিরুজ্জামান শেখ, মতিউর রহমান মুকুল, আবুল বাশার হাওলাদার বাচ্চু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মাদক এখন আর শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতির বিষয় নয়—এটি পুরো সমাজ, জাতি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি। একদিকে যেমন এটি পরিবারে অশান্তি তৈরি করছে, অন্যদিকে অপরাধের বিস্তারেও এর বড় ভূমিকা রয়েছে।
যুব সমাজকে খেলার মাঠে ফেরাতে হবে, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যদি আমরা সকলে মিলে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসি, তাহলে মাদকমুক্ত, নিরাপদ এবং শান্তিময় এলাকা গড়ে তোলা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
একইসঙ্গে নির্দোষ ব্যক্তিরা যেন পুলিশি হয়রানিসহ কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
আবহাওয়া অনুকূল থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে চলতি মৌসুমে আউশ ধানের ব্যাপক ফলন হয়েছে। আগাম বৃষ্টিতে জমির লবণাক্ততা কমে যাওয়ায় গতবারের তুলনায় এবার জেলায় আউশ ধানের ফলন অনেক বেশি। জেলায় ৩ হাজার ৯ শ ৩৭ হেক্টর জমিতে মোট আউশ ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১হাজার ৪শ ৯৬ মেট্রিক টন।
জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৬টি উপজেলায় আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। আজ পর্যন্ত ৩২ শতাংশ জমির আউশ ধান কর্তন হয়েছে।
এরমধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলায় ৯ হেক্টর জমির ধান কর্তন করে উৎপাদন ৪১ মেট্রিক টন, ফকিরহাট উপজেলায় ১৭৭ হেক্টর জমির ধান কর্তন করে উৎপাদন ৫০৯.২৫ মেট্রিক টন, মোল্লাহাট উপজেলায় ২৩০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন ৬১৮ মেট্রিক টন, কচুয়া উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে মোট উৎপাদন ৪১৫.৮ মেট্রিক টন, মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় ২০৬ হেক্টর জমিতে উৎপাদন ৫৫৪.৪ মেট্রিকটন এবং শরনখোলা উপজেলায় ৪৮০ হেক্টর জমিতে চাল উৎপাদন ১৫৩৭.৫ মেট্রিকটন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ১২৫২ হেক্টর জমি থেকে ৩৬৭৫.৯৫ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছে।
কচুয়ার চাষি সুন্দর আলী বাসসকে বলেন, এসময়ে শ্রমিক সংকট প্রকট। স্থানীয় শ্রমিকরা অধিক মজুরি লাভের আশায় ফরিদপুর, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় ধান কাটতে যায়। এ কারণে মৌসুমি ফসল কাটতে শ্রমিক সংকটে পড়তে হচ্ছে। এজন্য খরচও বেশি করতে হচ্ছে। একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা মজুরি ও দুপুরের খাবার দিতে হয়।
কচুয়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পরীক্ষিত জোয়ার্দার বাসসকে বলেন, আবহাওয়া অনুকূল হওয়ায় মাঠে থাকা ধানের কোন ক্ষতি হবে না। বাকি আউশ ধান কর্তন চলতি মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। তিনি জানান, কচুয়ায় প্রতিবছর আউশ ধানের আবাদে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। এবছর কচুয়া উপজেলায় ১১৫০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৫০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৪১৫.৮ মেট্রিক টন চাল।
তিনি বলেন, এখানকার বলেশ্বর নদীর পানি মিষ্টি বলে দিনে দিনে আউশের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে আউশের ব্যাপক ফলনে এলাকার চাষিরা খুবই খুশি। তাদের মুখে হাসির ঝিলিক লেগে আছে।
কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বাসসকে বলেন, প্রতি হেক্টর জমিতে আউশ চাষে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা খরচ হয় এবং উৎপাদিত ধান ও খড়সহ প্রায় ৯০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। এ ধানে সেচের প্রয়োজন হয়না এবং সার কম লাগে। তাই ফলন একটু কম হলেও লাভ বেশি। আবার আউশ আবাদের পর চাষিরা একই জমিতে আমন ও বোরো ধানের চাষ করতে পারে। এতে জমির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়।
বাগেরহাট খামারবাড়ির কৃষি কর্মকর্তা মো. মোতাহার হোসেন বাসসকে বলেন, পানি বাড়ার সাথে সাথে ‘আউশ ১০৬’ জাতের ধান গাছের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। ফলে অতি বৃষ্টিতে ধানের চারায় পচন ধরে না। তাই এ বছর আগাম বৃষ্টি হওয়ায় নদীর পানির লবণাক্ততা হ্রাস পেয়ে গত মৌসুমের তুলনায় আউশ ধানের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি জানান, ২০২৪ সালে বাগেরহাট জেলায় ৪ হাজার ৮ শত ২৭ হেক্টর জমিতে আউশ উৎপাদন হয় ১৩ হাজার ৩ শত ৭৫ মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ৯ শত ৩৭ হেক্টর জমিতে আউশ উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৪ শত ৯৬ মেট্রিক টন চাল।
কৃষি কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন আরও জানান, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে মাটির লবণাক্ততা কেটে গেছে। এর ফলে আগামী এক বছর পর্যন্ত কৃষিতে উচ্চ ফলনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। শীত ও গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির পাশাপাশি সব ধরনের ফসলের ফলন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে চাষিরাও লাভবান হবে।
কৃষি খাতকে সমৃদ্ধ করতে চাষিদের বিনামূল্যে সার, কীটনাশক ও ধানবীজ বিতরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ, পরামর্শ ও সহায়তা দিতে কৃষকদের পাশে রয়েছে।
বাগেরহাটের কৃতি সন্তান কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বাসসকে বলেন, বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর দেশ। স্বাধীনতা লাভের পর যখন দেশে সাড়ে ৭ কোটি মানুষের বসবাস ছিল তখন মান্ধাতার আমলের চাষের কারণে কৃষিতে ব্যাপক বিপর্যয় দেখা দেয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে এদেশে কৃষি বিপ্লব ঘটে। এরপর থেকে ক্রমশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলশ্রুতিতে কৃষকরা আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠছে।
সোমবার ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ দুপুরে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সোমবার মধ্যরাত ৩ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন টেকনাফ ও পুলিশের সমন্বয়ে টেকনাফ থানাধীন হ্নীলা রঙ্গীখালী এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ১ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ রাউন্ড তাজা গোলাসহ ১ জন কুখ্যাত দুষ্কৃতিকারীকে আটক করা হয়।
জব্দকৃত আলামত ও আটককৃত ব্যক্তির পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের রেলগেটের দক্ষিণ পাশে এ অভিযান চালানো হয়।
এ সময় আনুমানিক অর্ধশতাধিক টিনশেড স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। অভিযানের সময় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, রেলগেটের সামনের কিছু স্থাপনা অক্ষত রেখে অন্যান্য দোকানপাট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা বলেন, এ রেলওয়ের জায়গাকে কেন্দ্র করে চোর-পুলিশ খেলা চলছে। প্রায় ৩৫ বছর ধরে রেলওয়ের জায়গা লিজ নিয়ে তারা ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। দুই দিন আগে মাইকিং করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কথা জানানো হলেও, লিজ নেওয়া দোকান ভাঙা হবে তা তারা জানতেন না।
এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, সকালে ভেকু দিয়ে আমার দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অথচ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ টাকার বিনিময়ে বড় ব্যবসায়ীর ছানা ঘর অক্ষত রেখেছে।
এ সময় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হলে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে এবং উচ্ছেদ কাজে ব্যবহৃত বুলডোজার স্থানীয়রা আটকে দেয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ কার্যক্রম চলছে। রেলওয়ের জায়গায় কোনো অবৈধ স্থাপনা রাখা হবে না।
ঈশ্বরদীর পাকশির বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর একই স্থানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছিল। আদালতে মামলা থাকায় ছানা ঘর উচ্ছেদ করা হয়নি। রেলওয়ের সংস্কারের অংশ হিসেবে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মাদ কাবেরুল ইসলাম লিটনের উদ্যোগে নীলফামারীতে ফ্রি মেডিকেল ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সদর উপজেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নের মাহাবুবা মেমোরিয়াল জেনারেল হাসপাতালে দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে পাঁচ শতাধিক রোগী ফ্রি চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করে। মেডিক্যাল ক্যাম্প পরিচালনা করেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আরিফুল ইসলাম ও জান্নাতুল নেছা।
চিকিৎসা নিতে আসে হাসিনা বানু বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছি, কিন্তু অর্থের অভাবে নিয়মিত ডাক্তার দেখাতে পারি না। আজ এখানে এসে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ পেয়ে আমি সত্যিই উপকৃত হয়েছি। সাধারণ মানুষের জন্য এ ধরনের আয়োজন অনেক উপকারী।’
গোড়গ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের মেম্বার বলেন, ‘লিটন ভাই একজন অত্যন্ত ভালো মানুষ। তিনি শুধু রাজনীতি করেন না, মানুষের দুঃখ-দুর্দশার সময় পাশে দাঁড়ান। এলাকার উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে তার আন্তরিক ভূমিকা রয়েছে।’
সাবেক ছাত্রনেতা কাবেরুল ইসলাম লিটন মুঠোফোনে বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুধু আনন্দের দিন নয়, এটি মানুষের কল্যাণে কাজ করার এক সুযোগও বটে। তাই আমি চেষ্টা করেছি সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করার। অনেক মানুষ আর্থিক কারণে ঠিকমতো চিকিৎসা নিতে পারেন না। সেই কথা মাথায় রেখে আমরা ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ব্লাড গ্রুপিংয়ের আয়োজন করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধরনের মানবিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে, কারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমার রাজনৈতিক অঙ্গীকার।’
কেউ কেউ চোখ মুছছেন, কেউবা আঁকড়ে ধরছেন প্রিয় শিক্ষকের হাত, কেউ আবার নিঃশব্দে ফেলছেন অশ্রু। চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে বিদায়ের বিষণ্ণ সুর। আর সেই সুরের মাঝে ফুলের পাঁপড়ি বর্ষণের সঙ্গে ঘোড়ার গাড়িতে করে এগিয়ে চলছেন একজন শিক্ষক । এমনই এক আবেগঘন পরিবেশে রাজকীয় বিদায় জানানো হলো আনোয়ারা উপজেলার বখতিয়ারপাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী মাওলানা কাজী মো. আবুল কালামকে।
দীর্ঘ ৪১ বছর সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা শেষে কর্মজীবন থেকে অবসর নিলেন এই বরেণ্য শিক্ষক। শুধু শিক্ষক নন, ছিলেন একজন অভিভাবকতুল্য মানুষ, শিক্ষার্থীদের আদর্শ, সহকর্মীদের প্রেরণার উৎস।
গতকাল সোমবার সকাল থেকেই মাদ্রাসা চত্বরে এক ভিন্ন রকম পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। বিদায়ী শিক্ষককে ঘিরে আয়োজিত হয় নানা কর্মসূচি। শুরুতেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর একে একে হামদ-নাত, আবৃত্তি ও সংগীত পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীরা। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বিদায়ী শিক্ষক মাওলানা কাজী মো. আবুল কালাম ১৯৮৪ সালে আনোয়ারার স্বনামধন্য বখতিয়ারপাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় পাঠদান শুরু করেন। দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি তার নিষ্ঠা, ধর্মীয় জ্ঞান এবং নৈতিক শিক্ষা দিয়ে হাজারও শিক্ষার্থীর জীবন গঠনে ভূমিকা রেখেছেন। তার হাত ধরে অনেকেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আলো ছড়াচ্ছেন।
এমন শিক্ষকের বিদায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে জানে আলম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষক আমাদের পিতার সমতুল্য। আমার পিতা আমাদের জন্ম দিলেও শিক্ষকরা আমাদের জীবন দিয়েছেন। শিক্ষকদের শাসন আমাদের চলার পথকে মসৃণ করে। আমাদের এই শিক্ষক সকল শিক্ষার্থীর খুব পছন্দের একজন ছিলেন যার কারণে সবাই তার বিদায়ী শোকার্ত।
বিদায়ী শিক্ষক মাওলানা কাজী মো. আবুল কালাম জানান, জীবনের বৃহৎ একটি অংশ এই প্রতিষ্ঠানে কাটিয়েছি। চেষ্টা করেছি নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব এবং শিক্ষার্থীদের হক যথাযথভাবে পালন করতে। হয়তো আনুষ্ঠানিক এই প্রতিষ্ঠানে আর ক্লাস নেওয়া হবে না; কিন্তু আমৃত্যু যদি শিক্ষার্থীদের পাঠদানে থাকতে পারতাম সেটাই হতো আমার জন্য বড় পাওয়া।
বখতিয়ারপাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পরিচালক অধ্যক্ষ কাজী মো. আবদুল হান্নান বলেন, আমাদের মাদ্রাসা শিক্ষক, আমার সহকর্মী দীর্ঘ ৪১ বছর তার শিক্ষকতা জীবন শেষ করেছেন। আমরা চেয়েছি তার বিদায়টা সম্মানজনক করতে। আমার দেখেছি যেসব শিক্ষক প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নেয় তাদের একটি ছাতা, কাপড় ইত্যাদি দিয়ে বিদায় দিত যা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং অসম্মানজনক। তাই ব্যতিক্রম কিছু করার প্রয়াস থেকে এই আয়োজন।
এদিন দিনব্যাপী আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. ফেরদৌস হোসেন, প্রধান আলোচক হিসেবে পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ ওসমান গণি উপস্থিত ছিলেন। এ সময় অন্যানের মধ্যে মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ, শিক্ষকরা, পরিচালনা কমিটি সদস্য ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে কুটুক্তির মামলায় সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে জামালপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সোমবার (১লা সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরিষাবাড়ী আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোমানা আক্তার মামলাটি আমলে নিয়ে ডা. মুরাদ হাসানসহ দুইজন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ডা: মুরাদ হাসান তথ্য প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন এক ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজের টক-শোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। অসৎ উদ্দেশ্যে এই মিথ্যাচার, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যে তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের দশ হাজার কোটি টাকার অধিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় জামালপুর জেলা ট্রাক ও ট্যাঙ্ক লরি মালিক সমিতির সহ সভাপতি ও সাবেক ছাত্রদল নেতা লায়ন মো: রুমেল সরকার বাদী হয়ে মামলটি দায়ের করেন। মামলায় ডা. মুরাদ হাসান ছাড়াও টক-শোর উপস্থাপক চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর এলাকার এটিএম আবুল কাশেমের ছেলে মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদকে আসামী করা হয়েছে। বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এর আগে গত ২৪ মে সরিষাবাড়ী আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুকসানা পারভীন দশ হাজার কোটি টাকার মানহানি মামলাটি আমলে নিয়ে ডা. মুরাদ হাসান ও মহি উদ্দিন হেলালের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছিলেন। আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করে তারা আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
নানা আয়োজন ও উৎসবমুখর পরিবেশে পিরোজপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)এর ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় পিরোজপুর পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাউন ক্লাব স্বাধীনতা মঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। এতে নেতাকর্মীদের হাতে ছিল রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা এবং দলীয় প্রতীক।
শোভাযাত্রা শেষে টাউন ক্লাব চত্বরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলুর সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন,বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এলিজা জামান,জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আকন,
যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ রিয়াজ উদ্দিন রানা, আহবায়ক কমিটির সদস্য সাইদুল ইসলাম কিসমত,হাসানুল কবির লীন, জেলা শ্রমিকদলের সাধারন সম্পাদক আফজাল হোসেন টিপু, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান শাহীন,জেলা কৃষকদলের সভাপতি নাসির আহমেদ বাচ্চু,জেলা যুবদলের আহবায়ক(ভারপ্রাপ্ত) কামরুজ্জামান তুষার, সদস্য সচিব এমদাদুল হক মাসুদ,জেলা সেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান মনি,সদস্য সচিব তৌহিদুল ইসলাম তহিদ,জেলা মৎসজিবীদলের সভাপতি মোঃতারিকুল ইসলাম নজিবুল,জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন তালুকদার কুমার, সাধারন সম্পাদক মাহামুদ হাসান শাহীন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জেলার ৭টি উপজেলার বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদল, শ্রমিক দলসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন,
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করবো।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবো এবং দল যে প্রার্থীকে নমিনেশন দিবে আমরা তাকে বিজয়ী করে দেশনায়ক তারেক রহমান এর হাতকে শক্তিশালী করবো।
এছাড়াও বক্তারা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর আত্মত্যাগ নিয়ে আলোচনা করেন এবং আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
মেহেরপুরে একটি মাদক মামলায় ৫ আসামিকে যাবজ্জীবন সাজা ও প্রত্যেকেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
আজ সোমবার বেলা ১ টার সময় মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এএস্এম নাসিম রেজা এ দণ্ডাদেশ দেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জামরুল ইসলাম মিস্ত্রীর ছেলে টিপু সুলতান, সাবের আলীর ছেলে স্বপন আলী, মৃতু আয়ূব আলীর ছেলে আবেদ আলী, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দাতপুর গ্রামের নুরু সর্দারের ছেলে রাজিব সর্দার ও গাংনী উপজেলার করমদী বহলপাড়া এলাকার মকলুচ ওরফে মকলেচুর রহমানের ছেলে জুয়েল রানা। এদের মধ্যে রাজিব সর্দার ও জুয়েল রানা পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভোররাতের দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাংনী উপজেলার আকুবপুর নামক স্থানে চেক পোষ্ট বসিয়ে একটি ট্রাকে তল্লাশী চালান গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম। এসময় ট্রাক (যার নং কুষ্টিয়া ট ১১-২০০৯ ) থেকে ৪৬০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিলসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে। এসময় জুয়েলরানা পালিয়ে যায়। পরে গাংনী থানার এসআই আলী রেজা বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬(১) স্বারণির ১৪(গ)/৩৮/৪১ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামালার নং ৫. তারিখ ০৬/০৯/২০১৯ ইং। জিআর মামলা নং ২০৬/১৯(ক)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন। আদালত স্বাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেন।
আসামি পক্ষের কৌশুলী ছিলেন অ্যাডভোকেট আজম খোকন ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলী ছিলেন মেহেরপুর জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর এ এস এম সাইদুর রাজজাক সাদ্দাম।