পর্বত, অরণ্য ও সমুদ্রপ্রেমী এই তিন শ্রেণির পরিব্রাজকদের জন্য সেরা গন্তব্য হচ্ছে বান্দরবান। অতিকায় উচ্চতার নিঃসীম শূন্যতা উপভোগ করতে করতে সবুজ বনে ঢাকা পাহাড়ি রাস্তা ট্রেকিং করা নিঃসন্দেহে কষ্টসাধ্য। এরই মাঝে দু-একটি সুদৃশ্য ঝর্ণা যেন বিস্ময়ের অববাহিকায় দিয়ে যায় রোমাঞ্চকর পরশ। চূড়ায় ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সেই অনন্ত শূন্যতার সঙ্গে আলিঙ্গনটা যেন এত কষ্টের স্বার্থকতা এনে দেয়। এর সঙ্গে দৃষ্টিসীমানায় ফেনিল সাগরের দৃশ্য জুড়ে দিলেই তা মিলে যাবে মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণ অভিজ্ঞতার সঙ্গে। দ্বিতীয় সাজেক নামে পরিচিত এই জায়গাটি ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে।
মিরিঞ্জা ভ্যালির অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলা বান্দরবানের অন্তর্গত লামা উপজেলা। অপরদিকে,কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে আলীকদম সড়কে লামার অবস্থান। এই উপজেলারই অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর মিরিঞ্জা ভ্যালি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভ্যালির অবস্থান প্রায় ১ হাজার ৫০০ ফুট উঁচুতে।
মিরিঞ্জা ভ্যালির ইতিহাস ও বিশেষত্ব
সরাসরি ভ্যালির ইতিহাস বা এর নামকরণের উৎপত্তি নিয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সের গোড়াপত্তন হয়েছিল ২০০৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রায় ১৬ একর পাহাড়ি ভূমিকে ঘিরে। এর আগেও কতিপয় ট্রেকারদের আনাগোনা থাকলেও এই কমপ্লেক্সই মূলত স্থানটির জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করে। মিরিঞ্জা পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তের চূড়ায় ইট পাথরে নির্মাণ করা হয় বিখ্যাত টাইটানিক জাহাজের ভাস্কর্য, যার উদ্বোধন হয় ২০০৫ সালের ১৯ এপ্রিল।
এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলো পাহাড় ও মেঘের অসাধারণ মিথস্ক্রিয়া। এই কারণে পর্যটনকেন্দ্রটিকে বর্তমানে দ্বিতীয় সাজেক ভ্যালি হিসেবে অভিহিত করা হয়।
ঢাকা থেকে বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি যাওয়ার উপায়
মিরিঞ্জা যাওয়ার জন্য প্রথমত রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ, ফকিরাপুল বা সায়েদাবাদ থেকে কক্সবাজারের বাস ধরতে হবে। অতঃপর গন্তব্যের আগেই নেমে যেতে হবে চকরিয়া বা চিরিঙ্গা বাস টার্মিনালে।
এছাড়া কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রেলপথে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যাওয়া যায়। অতঃপর বাসে করে সরাসরি চকরিয়া বাস টার্মিনাল। দ্রুত সময়ে যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারের ফ্লাইট ব্যবহার করা যেতে পারে। তারপর কক্সবাজার থেকে বাসে করে চকরিয়া পৌঁছাতে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে।
চকরিয়া থেকে লামা-আলীকদম সড়ক ধরে মিরিঞ্জা ভ্যালিতে যাওয়ার সিএনজি, জিপগাড়ি বা লোকাল বাস পাওয়া যায়। এই পরিবহনগুলো লামা-আলীকদম পথে মিরিঞ্জা পাহাড়ের পাশে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে ১০ মিনিট হাঁটার দূরত্বে ভ্যালির অবস্থান।
যারা ট্রেকিং করতে ইচ্ছুক তাদের চকরিয়া থেকে চান্দের গাড়িতে করে মুরুম পাড়া পর্যন্ত আসতে হবে। এখান থেকে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে ভ্যালি পর্যন্ত ২০ মিনিটের একটি সহজ ট্রেকিং পথ আছে।
চান্দের গাড়িগুলো মিরিঞ্জা পাড়া পর্যন্তও যায়,যেখানে মেইন রোড থেকে ভ্যালি মাত্র ১০ মিনিট হাঁটা পথ।
মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণে কী কী দেখবেন
পাহাড়ি রাস্তা বা ঝিরিপথ পেরিয়ে চূড়ায় আরহণের পর দূরে দেখা যায় মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স এবং সাঙ্গু নদীসহ বিশাল পাহাড়জুড়ে বিস্তীর্ণ সবুজ বনভূমি। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য এই চূড়া উপযুক্ত একটি স্থান। এখান থেকে দিগন্তরেখায় কক্সবাজার অংশের বঙ্গোপসাগরের উত্তাল জলরাশি চোখে পড়ে। সেই সঙ্গে দৃশ্যমান হয় লাইট হাউস,যার ক্ষীণ আলোয় সরু রেখায় আলোকিত হয়ে ওঠে পৃথিবীর দীর্ঘতম সৈকত। মুগ্ধতার পরিসর আরও একটু বাড়িয়ে দিয়ে কখনো কখনো সেই রেখায় ভেসে ওঠে একটি দুটি জাহাজ। পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তের টাইটানিক জাহাজের কাঠামোটিও এখানকার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। পর্যটনকেন্দ্রের কাছেই উপজেলা শহরে ম্রো, ত্রিপুরা, ও মারমাসহ মোট ১১ জনগোষ্ঠির বসবাস।
মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণের সেরা সময়
বর্ষাকালের শেষ থেকে শরৎকাল পর্যন্ত প্রায় সারাদিনই পরিষ্কার আকাশে শুভ্র মেঘের খেলা দেখা যায়। পাহাড়ের চূড়া থেকে এই দৃশ্য দেখার অনুভূতির কোনো বিকল্প হয় না। তবে এ সময়টাতে পাহাড়ি পথ বেশ পিচ্ছিল থাকে। ট্রেকিং পথ খুব একটা দুর্গম না হলেও উষ্ণ মৌসুমের ফলে পুরো যাত্রাটা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই এখানে আসার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে শীতের শুরু, তথা নভেম্বর মাস। এ সময় কুয়াশার ঘনঘটা তেমন থাকে না, বিধায় পাহাড়ের উপরের দৃশ্যগুলো ভালোভাবে দেখা যায়।
মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
পাহাড়ের উপরের বাঁশ ও খড়ের মাচাং এবং জুম ঘরগুলো যথেষ্ট পরিবেশবান্ধব। এগুলো যাত্রাবিরতিতে বসবাসের জন্য উপযোগী। এছাড়া পর্যটন কমপ্লেক্সের ভেতর খোলা আকাশের নিচে রয়েছে বেশ কয়েকটি তাঁবু ঘর। তাই রাতে ক্যাম্পিং নিয়ে ঝামেলা নেই।
এই ছোট বাসস্থানগুলোকে ঘিরে আশপাশে রয়েছে চিকেন ফ্রাই ও বিরিয়ানিসহ নানা পদের খাবারের ব্যবস্থা। তবে কমপ্লেক্স বা রিসোর্টের বাইরে থাকার এবং খাবারের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। সুতরাং, ট্রেকিং বা আশপাশ ঘুরে দেখার সময় শুকনো খাবার বা পানীয় সঙ্গে রাখা উচিত।
ভ্রমণকালীন সতর্কতা
# এই ভ্যালিতে ঘুরতে গেলে অবশ্যই দল বেঁধে যাওয়া উত্তম
# সার্বিক নিরাপত্তার প্রয়োজনে কিছু জায়গায় চেকিং হতে পারে। তাই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র বা পেশাগত বা ইউনিভার্সিটির পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা উচিত।
# পাহাড়ের ওপর নির্বিঘ্নে চলাফেরা করার জন্য ভালো গ্রিপসহ মজবুত জুতা পরে যাওয়া জরুরি
# খাবার পানি, শুকনো খাবার, টর্চলাইট ও প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম সঙ্গে নিতে হবে। তবে খেয়াল রাখা উচিত যে,কাঁধের ব্যাগ যেন খুব বেশি ভারী হয়ে না যায়।
# নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন ও হাসপাতালের যোগাযোগের নম্বর সংগ্রহে রাখতে হবে
# পরিবেশ ময়লা বা দূষিত করা এড়িয়ে চলতে হবে। সঙ্গে খাবার নিয়ে গেলে সমস্ত উচ্ছিষ্ট এবং মোড়ক যেখানে-সেখানে না ফেলে যথাস্থানে ফেলা উচিত।
# আদিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, কোনো অবস্থাতেই যেন তাদের সংস্কৃতির প্রতি কোনো অযাচিত মনোভাব প্রদর্শন না হয়।
শেষ কথা
বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালির মেঘ ও পাহাড়ের নিবিড় আলিঙ্গন ভ্রমণপিপাসুদের বারবার মনে করিয়ে দেয় সাজেকের কথা। এখানকার জুমঘরগুলোর যে কোনোটিতে একটি রাত কাটানো সারা জীবনের জন্য অবিস্মরণীয় এক স্মৃতি হয়ে থাকবে। সবুজ বনে আচ্ছাদিত সুবিশাল পাহাড় আর সীমান্তরেখায় সমুদ্রের উত্তাল জলরাশি ট্রেকিংয়ের ক্লান্তিকে নিমেষে ভুলিয়ে দেয়। এই অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে এবং সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্য বড় দল নিয়ে ভ্রমণ করা আবশ্যক। সেই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের যোগাযোগের নাম্বার সংগ্রহে রাখা জরুরি। ( সূত্র: ইউএনবি)
রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতাকে মাথায় গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে খুলনা বিভাগীয় প্রধান এবং এনসিপি শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মোতালেব শিকদার এই হামলার শিকার হন। দুর্বৃত্তরা তাঁর মাথা লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গুরুতর আহত অবস্থায় মোতালেব শিকদারকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে জরুরি সিটি স্ক্যানের জন্য তাঁকে শেখপাড়া সিটি ইমেজিং সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর মাথার আঘাত অত্যন্ত গুরুতর এবং বর্তমানে তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
ঘটনার বিষয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনিমেষ মণ্ডল জানিয়েছেন, গুলির খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হামলার প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং সিসিটিভি ফুটেজসহ অন্যান্য আলামত বিশ্লেষণ করে হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ন্যাক্কারজনক হামলার খবর নিশ্চিত করে মোতালেব শিকদারের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর একই কায়দায় ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করা হয়েছিল, যিনি দীর্ঘ ছয় দিন লড়াই করার পর গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে মৃত্যুবরণ করেন। হাদি হত্যাকাণ্ডের পর এনসিপি এবং সমমনা দলগুলোর নেতাদের ওপর এমন সিরিজ হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আতঙ্ক ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সরকার যখন জুলাই যোদ্ধাদের জন্য গানম্যান ও বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে, ঠিক সেই মুহূর্তেই নতুন করে এই হামলার ঘটনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারী ফয়সাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, ফয়সালের শেষ অবস্থান নিয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। এটা পেতে আমাদের বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তবে সে যে দেশের বাইরে চলে গেছে, এমন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাইনি। অনেক সময় অপরাধীদের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। রোববার (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
এ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা পেয়েছেন কি না– এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা এখনো স্পেসিফিক কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা পাইনি। তবে আমরা সঠিক তথ্য পেতে চেষ্টা করছি।
এ সময় ডিবি প্রধান শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ধারণা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশে এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে। এখানে ব্যক্তিগত কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে হয়নি। ঘটনার শুরু থেকে আমরা মাঠে ছিলাম। সব এজেন্সি সমন্বিতভাবে কাজ করেছি। এটাকে আমরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সম্ভাব্য সবগুলো দিক দেখছি।
এসময় ডেভিলহান্ট-২ অভিযান নিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি জানান, এই অভিযানে ১৩ ডিসেম্বর থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত ছয় হাজার ৫৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে বিজিবি ময়মনসিংহ রিজিওনের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সীমান্তের অনেক কাছে যারা থাকেন তারা চোরাচালানো জড়িত। সুস্পষ্ট তথ্য না পেলে ধরা কঠিন হয়ে যায়। তবে আমাদের কার্যক্রম চলছে। ফয়সাল সীমান্ত পার হয়ে ভারতে গেছে কিনা সেই তথ্য নেই।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, চব্বিশের জুলাইয়ের পরও আমরা কঠিন সহিংসতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। শুধু বর্বর মৃত্যুগুলো নয়, আমাদের সন্তানরাও বিশেষ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিংয়ের জন্য সাইকোলজিস্ট ও সাইক্রিয়াটিকের ব্যবস্থা করতে হবে। কাউন্সিলিং ও থেরাপি দুই ধরনের সেবার ব্যবস্থা রাখতে হবে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এবছর ঢাকা মেডিকেল কলেজে বেশি মেয়ে ভর্তি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০ ভাগ মেয়ে পড়ালেখা করছে। শিক্ষার সব ক্ষেত্রে মেয়েদের উপস্থিতি বাড়ছে। এটা যেমন আনন্দের তেমনই শঙ্কারও। কারণ ছেলেদের ক্ষেত্রে কী হচ্ছে, তারা কেন ঝরে পড়ছে, শিক্ষাবিমুখ হচ্ছে, অন্য কোন আকর্ষণে লেখাপড়া থেকে দূরে থাকছে তা জানতে হবে। এটা চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ এ নতুন সংকট তৈরি করবে।’ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য প্রফেসর ড. খাদেমুল ইসলাম মোল্যার নেতৃত্বে শুরু হয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান। উপদেষ্টা শারমিন এস মুর্শিদ সমাবর্তনের চেয়ার হিসেবে গ্র্যাজুয়েটদের ডিগ্রি প্রদান করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সামার ২০২০ থেকে ২০২৫ এর স্প্রিং সেমিস্টার পর্যন্ত স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৩৭৫ জনকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সভায় মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবার ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক একরাম হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. এম. আনোয়ার হোসেন। এছাড়া বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান সমাবর্তনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
পরিবেশের দূষণের মতোই মনের দূষণও ব্যক্তি ও সমাজকে কষ্ট দেয়, এমন বার্তা নিয়ে রাজধানীতে পালিত হয়েছে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। আয়োজকেরা বলছেন, ব্যক্তির মন ভালো থাকলে পরিবার, সমাজ ও বিশ্বও ভালো থাকে। যুগ যুগ ধরে মানুষের মন ভালো রাখার চর্চাই করে আসছে মেডিটেশন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৭ টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে বাংলাদেশে মেডিটেশন চর্চার পথিকৃৎ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়। এ আয়োজনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা শ্রেণি–পেশার হাজারো শান্তিপ্রিয় মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মিলিত কণ্ঠে ভালো থাকার প্রত্যয় উচ্চারণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে এক অডিও বার্তায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মাদাম নাহার আল বোখারী।
বৈজ্ঞানিক মেডিটেশন পদ্ধতি ‘কোয়ান্টাম মেথড’–এর উদ্ভাবক শহীদ আল বোখারী মহাজাতক এক অডিও বার্তায় বলেন, কোয়ান্টাম তিন দশক ধরে বলে আসছে- মন ভালো তো সব ভালো। ২০২৪ সালে জাতিসংঘ ২১ ডিসেম্বরকে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস হিসেবে ঘোষণা করায় সারাবিশ্বের মেডিটেশন চর্চাকারীদের মতো বাংলাদেশের মানুষও আনন্দিত হয়েছে।
শহীদ আল বোখারী বলেন, কোয়ান্টাম ২০২৫ সালকে ঘোষণা করেছে ‘দ্য ইয়ার অব মেডিটেশন’ হিসেবে, যা সমাজের সর্বস্তরে মেডিটেশন চর্চাকে নতুন গুরুত্ব দিয়েছে।
আলোচনায় বর্তমান ডিজিটাল জীবনে বেড়ে যাওয়া উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, অস্থিরতা, ট্রমা, ভয় ও অনিশ্চয়তা এবং সেখান থেকে সৃষ্ট মনোদৈহিক রোগের বিষয়টি উঠে আসে। বক্তারা বলেন, এসব থেকে মুক্তির পথ দেখায় মেডিটেশন। তাই মেডিটেশনের বাণী বিশ্বের প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে মেডিটেশন চর্চার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন সাবেক সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (এসডিএফ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনাক হোসেন, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের হেড অব নিউজ রেজওয়ানুল হক রাজা, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহসীন ও স্কলাস্টিকা স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শাহিদা রহমান।
ঘণ্টাব্যাপী আয়োজনে মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেটসহ দেশব্যাপী শতাধিক স্থানে একযোগে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস পালিত হয়। এ ছাড়া বিদেশের বিভিন্ন স্থানেও দিবসটি পালিত হয়। শিশু–কিশোরসহ অসংখ্য মানুষ মেডিটেশনে অংশ নিয়ে জানিয়ে দেন তাদের বিশ্বাস- মন ভালো থাকলেই সব ভালো।
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুর প্রকোপ থামছেই না। প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর আসছে। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শত শত ডেঙ্গুরোগী। সারাদেশে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা গেছেন। এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৯৪ জন ডেঙ্গুরোগী। রোববার (২১ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২০২৪ সালে দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের। এর আগের বছর ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে মারা যান সর্বোচ্চ এক হাজার ৭০৫ জন এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
নীলফামারী পৌরসভার উদ্যোগে নবনির্মিত কসাইখানা’র উদ্বোধন করা হয়েছে। রবিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা শহরের কলেজপাড়া এলাকায় ১৮শতাংশ জমির উপর এই কসাইখানার উদ্বোধন করেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান প্রধান অতিথি থেকে নবনির্মিত কসাইখানার ফলোক উন্মোচন করেন।
নীলফামারী পৌরসভার প্রশাসক সাইদুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী তারিক রেজা, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল ইসলাম, নীলফামারী প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আতিয়ার রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আধুনিক মানসম্মত এই কসাইখানার দুটি সেডে একযোগে ২০টি গরু ও ২০টি ছাগল জবাই করা যাবে। ভেটেরিনারি চিকিৎসকের উপস্থিতিতে শহরের কসাইরা এখানে পশু এনে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জবাই করতে পারবেন। পৌর নির্ধারিত ইমাম দিয়ে পশুগুলো জবাই করা হবে।
পৌর প্রশাসক সাইদুল ইসলাম জানান, এই শহরের মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিলো একটি কসাইখানা স্থাপন। বিচ্ছিন্ন ভাবে পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করা হতো এতদিন। এনিয়ে প্রশ্ন ছিলো। যা আজ থেকে দুর হলো।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, আমরা নির্দিষ্ট এলাকায় জবাই করা পশুর মাংস পাচ্ছি এটি হওয়ার ফলে। এটি আমরা নিশ্চিত করতে পারলাম। নিয়ম অনুসারে এটি পরিচালিত হবে এবং স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে এটি পরিচালিত হবে।
বলেন, পৌরসভা থেকে কসাইদের পরিচয় পত্র প্রদান করা হবে। পরিচয় পত্র ছাড়া কোন কসাইয়ের পশু জবাই করা হবে না।
পরে নীলফামারী বড় মাঠ পরিদর্শণ করেন জেলা প্রশাসক। বড় মাঠে মোটর সাইকেল প্রবেশ বন্ধে ব্যারিকেট স্থাপন কাজের উদ্বোধন করা হয়।
২১ ডিসেম্বর বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। ‘মন ভালো তো সব ভালো’-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে রবিবার কুমিল্লায় পালিত হয়েছে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। এ উপলক্ষে রোববার কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন কুমিল্লা শাখার উদ্যোগে নগরীর পৌর উদ্যানের জামতলায় মেডিটেশন চর্চার আয়োজন করা হয়। এই মেডিটেশন চর্চায় তিন শতাধিক সদস্য ও সহযোগী সদস্যরা অংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী এই আয়োজনে মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, মূলত মানসিক প্রশান্তির জন্যই নিয়মিত মেডিটেশন প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ধৈর্য ও সহ্য ক্ষমতা বাড়ে। ঠাণ্ডা মাথায় যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যায়।’
এসময় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শহীদ আল বোখারী মহাজাতক এক অডিওবার্তায় বলেন, কোয়ান্টাম তিন দশক ধরে বলে আসছে ‘মন ভালো তো সব ভালো।’ তিনি বলেন, পরিবেশের দূষণ যেমন সবাইকে কষ্ট দেয়, তেমনি যে কোন মানুষের মনের দূষণ চারপাশের মানুষের কষ্টের কারণ হয়। তাই মন ভালো রাখার গুরুত্ব সর্বাধিক। ব্যক্তি মন ভালো থাকলে, মনে প্রশান্তি থাকলে পরিবারে, সমাজে ও বিশ্বে শান্তি আসবে। এক্ষেত্রে মেডিটেশন সবচেয়ে সহায়ক শক্তি।
তিনি বলেন, এখনকার ডিজিটাল জীবনে বিলাস ও গতি বেড়েছে। কিন্তু ব্যক্তির মন আক্রান্ত হয়েছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা,অস্থিরতা, ক্ষুব্ধতা, ট্রমা, ভয়, রাগ, অনিশ্চয়তা, বিষণ্নতা ও একাকিত্বে। মনের এই অসুখ মানবদেহের শতকরা ৭৫ শতাংশ রোগ সৃষ্টি করে।
মেডিটেশন চর্চায় সচেতনতা বাড়াতে জাতিসংঘ ২০২৪ সাল থেকে ২১ ডিসেম্বরকে ‘বিশ্ব মেডিটেশন দিবস’হিসেবে ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে জাতিসংঘ মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারকে গুরুত্ব দিয়েছে।
অপরদিকে অডিওবার্তায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মাদাম নাহার আল বোখারী বলেন, মেডিটেশন ব্যক্তি ও সমাজকে ইতিবাচক পরিবর্তনের পথে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কুমিল্লা শাখার আর্ডেন্টিয়ার মুহাম্মদ রাসেল বলেন, মেডিটেশন করে লাখো মানুষ প্রশান্তি খুঁজে পেয়েছেন। এই বৈজ্ঞানিক উপায় অনুসরণ করে আপনিও ভালো থাকতে পারেন।
দেশের শীর্ষ গণমাধ্যম প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নি সংযোগ এবং খুলনার ডুমুরিয়ার সাংবাদিককে হত্যার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আয়োজনে মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কামেশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান, অর্থ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ, দৈনিক বাংলা পত্রিকার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মোঃ আবু সাঈদ,
এস এম জিন্নাহ, গাজী ফরহাদ, এস এম বিপ্লব হোসেন, জি এম সোহরাব হোসাইন, জামাল উদ্দিন, বরুন ব্যানার্জি, হোসেন আলীসহ অন্যারা। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম. বেলাল হোসাইন।
বক্তারা আরো বলেন, মহান বিপ্লবী শরিফ ওসমান হাদি নিজেও অগ্নি সংযোগ ও ভাংচুরের পক্ষে ছিলেন না। তিনি তার অগ্নি ঝরা বক্তব্য দিয়ে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে ছিলেন। তার জানাজ নামাজের কোটি মানুষের উপস্থিতিই প্রমান করে সন্ত্রাসী, লুটপাট এবং অগ্নি সংযোগ করে কখনো ভালোবাসা পাওয়া যাবে না। অথচ বিপ্লবী হাদির মৃত্যু খবর শুনেই একটি উপগ্রবাদী গোষ্ঠী প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মত গণমাধ্যমের কার্যালয়ে অগ্নি সংযোগ করে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার যেমন গণমাধ্যমে কণ্ঠরোধ করতে চেয়েছিল একটি গোষ্ঠী দেশকে অশান্ত করতে একই প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা অবিলম্বে এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক শাস্তি এবং খুলনায় ডুমুরিয়া শলুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমদাদুল হককে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান বক্তারা।
গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস-আনন্দ ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানা এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশে এই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়।
এবারের সমাবর্তনে সামার ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের স্প্রিং সেমিস্টার পর্যন্ত স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৩৭৫ জন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি লাভ করেন। পাশাপাশি ৫ জন শিক্ষার্থী আচার্য ও উপাচার্য পদক অর্জন করেন।
সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস. মুরশিদ। তিনি গ্র্যাজুয়েটদের হাতে ডিগ্রি তুলে দেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শারমীন এস. মুরশিদ বলেন, ‘১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থান—যুগে যুগে কালজয়ী পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিয়েছে তরুণ প্রজন্ম।’
তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্বল্প সময়েই নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে, যা সম্ভব হয়েছে সঠিক নেতৃত্ব, পরিকল্পনা ও মান বজায় রাখার মাধ্যমে।’
সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্বখ্যাত প্রকৌশল বিজ্ঞানী ও গবেষক, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবার ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকরাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক সম্ভাবনার দিকে চোখ খুলে দিয়েছে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. এম আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রথাগত শিক্ষার মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের খরা, নদীভাঙনসহ নানা সমস্যার টেকসই সমাধান সম্ভব নয়। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে সময়োপযোগী ও আধুনিক শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্যা বলেন, ‘আন্তবিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র সম্প্রসারণ, ইনোভেশন হাব গঠন এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একাডেমিক এক্সচেঞ্জসহ বিভিন্ন কার্যক্রমকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এখানে অর্জিত জ্ঞান মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হবে—এটাই আমাদের বিশ্বাস।’
এবারের সমাবর্তনে চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আল মুক্তাদির মুনেম এবং অর্থনীতি বিভাগের মো. সোহানুর রহমান।
ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অপ্সরা খান, অর্থনীতি বিভাগের শতাব্দী রাণী দাস এবং ফার্মেসি বিভাগের শিখা খাতুন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার, শিক্ষক, কর্মকর্তা, অভিভাবক ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নেত্রকোনার অবৈধ ইটভাটায় বিধিভঙ্গ করে তৈরি হচ্ছে ছোট আকৃতির ইট, প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে রমরমা ব্যবসা, উপেক্ষিত পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় অভিযোগ পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যখন সরকার বদ্ধপরিকর, ঠিক তখনই নেত্রকোনা জেলায় একশ্রেণির প্রভাবশালী মহল নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে আইন ও বিধি ভঙ্গ করে অবৈধ ইটভাটার রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশগত ছাড়পত্র, নির্ধারিত চিমনির উচ্চতা এবং প্রয়োজনীয় দূরত্ব উপেক্ষা করে তৈরি হচ্ছে ছোট আকৃতির ইট, যা একদিকে যেমন সরকারি নির্মাণকাজে প্রতারণা, তেমনি অন্যদিকে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। জেলাজুড়ে হাওর অঞ্চল খালিয়াজুড়ী বাদে বাকি ৯টি উপজেলাতেই ছড়িয়ে রয়েছে এসব অবৈধ ইটভাটা।
অভিযোগ রয়েছে, নেত্রকোনায় নিয়মমাফিক মাত্র ৪টি ইটখোলা বৈধভাবে কাজ করছে। বাকি ভাটাগুলো পরিবেশবান্ধব বিহীন (ক্লিন ফায়ার প্রযুক্তি ছাড়া) পদ্ধতিতে এবং বিধিবহির্ভূতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। ছোট আকৃতির ইট, প্রতারণার নতুন ফাঁদ, উন্নয়ন কাজের অন্যতম উপাদান হলো ইট। কিন্তু এই ভাটাগুলোতে ইচ্ছাকৃতভাবে ছোট আকৃতির ইট তৈরি করা হচ্ছে। নির্মাণকাজে এই ছোট ইট ব্যবহার করে মূলত সরকারি নিয়মের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন সুস্পষ্ট বিধিভঙ্গ চললেও তা বন্ধ করতে কার্যত কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, সবকিছুই স্থানীয় প্রভাবশালী কুচক্রী মহল ‘ম্যানেজ’ করে নিজেদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে সরকারি বিধিমালা ভঙ্গ করে তৈরি করছে ছোট আকৃতির ইট। নিয়ম অনুযায়ী কাঁচা ইট পোড়ানো হলে তার আকৃতি হতে হবে, লম্বায় ১০ ইঞ্চি, চওড়ায় ৫ ইঞ্চি ও উচ্চতায় ৩ ইঞ্চি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলা, সদরের DHAKA ব্রিকস, MBB ব্রিকস ও AST ব্রিকসসহ জেলার প্রতিটি ইটের ভাটায় তাদের পোড়ানো ইটের মাপ বা আকৃতি রয়েছে লম্বায় ৮.৫ ইঞ্চি, চওড়ায় ৪.৭৫ ইঞ্চি ও উচ্চতায় ২.৭৫ ইঞ্চি। এতে করে গড়ে এক গাড়িতে প্রায় ২৫০টি ইট বেশি কিনতে হচ্ছে। ইটের সাথে বালু, সিমেন্ট ও শ্রমিক খরচ বেড়ে চলেছে। ফলে গ্রাহকরা ইট উন্নয়ন প্রতারণার শিকার হচ্ছে আর বেড়েছে তাদের নির্মাণ ব্যয়। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় লোকজন কিছু বলতে পারে না ভয়ে, কিছু বললেই তাদের উপর হুমকি ও চাপ। নেত্রকোনা জেলায় একমাত্র সদর উপজেলা বালী গ্রামে MHC ব্রিকস সঠিক নিয়মে তাদের ইট উৎপাদন করছে। সরেজমিনে দেখা যায়, MHC ব্রিকস এর পোড়ানো ইটের মাপ বা আকৃতি রয়েছে লম্বায় ১০ ইঞ্চি, চওড়ায় ৫ ইঞ্চি ও উচ্চতায় ৩ ইঞ্চি। নেত্রকোনার সচেতন মহল জানান, প্রতারণা বন্ধ করে ইটের আকৃতি সঠিকভাবে তৈরি করতে ভাটা মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান। এবং এ বিষয়ে তদারকি ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেত্রকোনা জেলা ইট ভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক টিটু মাস্টারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। নেত্রকোনার সাধারণ মানুষের দাবি, MHC ব্রিকসের মতো সকল ইট ভাটায় সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী সঠিক আকৃতির ইট উৎপাদন করে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের মারাত্মক ঝুঁকি যে সমস্ত ভাটা চলছে, সেগুলোর বেশিরভাগই নিয়ম ভেঙে লোকালয়, স্কুল-মাদ্রাসা ও বাজারের খুব কাছে স্থাপন করা হয়েছে।
এর ফলে বসতঘর, স্কুল-মাদ্রাসা ও বাজারের পাশে ভাটা স্থাপন করায় জনজীবন বিপর্যস্ত। চিমনির উচ্চতা নির্ধারিত মানদণ্ড অনুসরণ করছে না। চিমনি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে এবং বায়ুদূষণ চরম আকার ধারণ করেছে। এলাকার কৃষিজমি ও ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। শ্রমিকদের মানবেতর জীবন, শিশু শ্রমের অভিযোগ-বেশ কিছু ভাটায় শিশুশ্রমিক ব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া শ্রমিকদের নিয়মিত বেতন ঘাটতি রয়েছে বলেও জানা গেছে, যা শ্রম আইনকে চরমভাবে লঙ্ঘন করছে। প্রশাসনের নীরবতা ও স্থানীয়দের ক্ষোভ স্থানীয় জনসাধারণ ও পরিবেশকর্মীরা এসব অনিয়ম নিয়ে বারবার অভিযোগ জানালেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। উল্টো, অভিযোগের পরেও প্রভাবশালীরা সবকিছু ম্যানেজ করে চুলায় আগুন জ্বালিয়ে রাখছে। স্থানীয়দের দাবি, পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নেত্রকোনার পরিবেশ এক মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
অবিলম্বে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের এই অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সচেতন মহল। পরিবেশ, জলবায়ু ও উন্নয়নের স্বার্থে এই প্রতারণামূলক ও পরিবেশঘাতী ব্যবসা বন্ধ করা জরুরি।
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আবু বক্কর (৬০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ঝিনাইগাতী- গজনী সড়কের রাংটিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবু বক্কর রাংটিয়া এলাকার মৃত আবু তাহেরের ছেলে।
আহতরা হলেন- কবিতা খাতুন (১৫), সিনহা খাতুন (১০) ও সিফাত (২০)। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সকালে বিপরীত দিক থেকে আসা দুটি মোটরসাইকেলের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় মোটরসাইকেলে থাকা চারজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু বক্করকে মৃত ঘোষণা করেন।
দুর্ঘটনায় এক মোটরসাইকেলের চালক আবু বক্কর নিহত হলেও অপর মোটরসাইকেলের চালক সিজন (২১) ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে ঝিনাইগাতী থানার এসআই শফিউল্লাহ সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহত ও নিহতদের উদ্ধারে সহযোগিতা করেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান জানান, দুর্ঘটনার ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রাঙামাটি শহরের পুরাতন বাস টার্মিনাল এলাকায় আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) ভোররাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই অগ্নিকাণ্ডে খাগড়াছড়ি-বান্দরবান রুটে চলাচলকারী তিনটি যাত্রীবাহী বাস, পাঁচটি দোকান এবং একটি বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিস সময়মতো পৌঁছাতে না পারায় আগুনের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোররাতে টার্মিনাল এলাকার একটি ফার্নিচারের দোকান থেকে প্রথম আগুনের সূত্রপাত ঘটে এবং মুহূর্তের মধ্যে তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের একটি দল খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে এর আগেই পার্কিং করে রাখা তিনটি বাসসহ পাঁচটি দোকান ও একটি বসতবাড়ি পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। রাঙামাটি বাস মালিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাকিল জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক এক কোটি টাকারও বেশি সম্পদ নষ্ট হয়েছে।
রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ফার্নিচারের দোকানে মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। তবে তদন্তের পর আগুনের প্রকৃত কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হবে বলে তারা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় ওই এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নারায়ণগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে ফেরি পারাপারের সময় মাঝনদীতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা আরও চারটি যানবাহনকে ঠেলে নদীতে ফেলে দিয়েছে। এ ঘটনায় ট্রাকসহ মোট পাঁচটি যানবাহন পানিতে তলিয়ে যায় এবং এখন পর্যন্ত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার বক্তাবলি নরসিংপুর এলাকায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—মোটরসাইকেল আরোহী রফিক, রিকশাভ্যান চালক স্বাধীন এবং প্রবাসী মাসুদ রানা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেরিটি বক্তাবলি থেকে ছেড়ে মাঝনদীতে পৌঁছালে হঠাৎ করেই ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক চালু হয়ে সামনের দিকে এগোতে থাকে। চালক নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে ট্রাকটি সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেল, দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও একটি ভ্যানগাড়িকে ঠেলে নিরাপত্তা রেলিং ভেঙে নদীতে ফেলে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে ট্রাকসহ সবগুলো যানবাহন পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় ট্রাকচালক সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও অন্য আরোহীরা নিখোঁজ হন।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও ডুবুরি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। দুর্ঘটনার পরপরই রফিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে দিবাগত রাত ২টার দিকে নদী থেকে বাকি দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বক্তাবলি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ওসি রকিবুজ্জামান জানান, চালক স্টিয়ারিংয়ে থাকলেও হঠাৎ ট্রাকটি চালু হয়ে যাওয়ায় তিনি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি, যার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) হাসিনুজ্জামান জানান, উদ্ধারকৃত মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। রবিবার সকাল থেকে ডুবে যাওয়া যানবাহন উদ্ধারে কাজ শুরু হবে এবং আরও কেউ নিখোঁজ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে পুনরায় তল্লাশি চালানো হবে।