মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর

চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, আইনজীবী নিহত

ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশিত
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশিত : ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ২১:৫৯

জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে রাষ্টদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে নেওয়ার সময় চট্টগ্রামের লালদিঘী এলাকায় সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে একজন আইনজীবী নিহত হয়েছেন।

গুরুতর আহত অবস্থায় আজ বিকেলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালত ভবনের প্রবেশমুখে রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ২৫ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

নিহত আইনজীবী আলিফের বাড়ি চট্টগ্রাামের লোহাগাড়া উপজেলায়। তাঁর বাবার নাম জামাল উদ্দিন। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নিযুক্ত হয়েছিলেন।

আহতদের মধ্যে শ্রীবাস দাশ, শারকু দাশ, ছোটন, সুজিত ঘোষ, উৎপল ও এনামুল হকের পরিচয় জানা গেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আদালতের নিচতলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তাকে পার্শ্ববর্তী জঙ্গল সিনেমা লেনে নিয়ে গিয়ে মারধরের পর কুপিয়ে হত্যা করে।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ৮ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ১৯ জনকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে তারা সবাই আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মন্নান।

আব্দুল মন্নান বলেন, ‘কেউ মাথায় আঘাত পেয়েছেন, কেউ হাতে, কেউ শরীরের অন্যান্য জায়গায় আঘাত পেয়ে আহত হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।’

জানা যায়, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভরত সনাতনীরা আদালত চত্বরে প্রায় তিনঘণ্টা পুলিশের প্রিজনভ্যান আটকে রাখেন। একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিচার্জ করে। এরপর তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে অবস্থান নেন। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অনুপস্থিতিতে দুপক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অনেকে গুরুতর আহত হন।

এর আগে, মঙ্গলবার কোতোয়ালী থানার নিউমার্কেট মোড়ের স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে হওয়া মামলায় রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলে বেলা পৌনে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী শরীফুল ইসলাম শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।

এই আদেশের পরপরই এজলাসের বাইরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ভক্ত-অনুসারীরা। এরপর প্রায় আধঘণ্টা এজলাসের বাইরেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। বেলা সোয়া ১২টার দিকে তাকে এজলাস থেকে বের করে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে প্রিজনভ্যানে তোলা হলে প্রিজনভ্যানের সামনেই বসে বিক্ষোভ করতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা।

দুপুর ১২টার পরপরই আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারী ও আইনজীবীদের একাংশ। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যকে নির্বিকার দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রায় তিন ঘণ্টা তারা প্রিজনভ্যান আটকে রাখার পর বেলা ৩টার দিকে অ্যাকশনে যায় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ।

উল্লেখ্য, কোতোয়ালী থানার নিউমার্কেট মোড়ের স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে হওয়া মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

এরপর মঙ্গলবার ভোরে তাকে চট্টগ্রাম নেওয়ার পর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারপর বেলা ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে নেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এই মঞ্চেরও মুখপাত্র। ওই সমাবেশের পরপরই তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান (পরে বহিষ্কৃত)।

সম্প্রতি, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। এই জোট ৮ দফা দাবিতে কয়েকদিন ধরে রংপুরে সমাবেশ করেছে।

অন্যদিকে, সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে বহিষ্কার করেছে ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) বাংলাদেশ।


৭৯৫ রোহিঙ্গাকে জন্মনিবন্ধন দেওয়ার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

তদন্ত কমিটি গঠন
আপডেটেড ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৩:৩৭
জালাল উদ্দিন ভিকু, দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ)

মানিকগঞ্জে টাকার বিনিময়ে ৭৯৫ জন রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন ও সনদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান হচ্ছেন জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. আইয়ুব আলী। এ ঘটনায় তার সচিবসহ সংশ্লিষ্টরাও জড়িত বলে অভিযোগে জানা গেছে। ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ায় এর সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ঘটনাটি প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন ওই জনপ্রতিনিধি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত)আহসানুল আলম। তিনি জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । ইতোমধ্যে এই অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের সরকারি নিবন্ধন আইডি বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে অভিযোগের তদন্ত চলমান থাকায় সাময়িক ভাবে ওই পরিষদের সরকারি নিবন্ধন অ্যাকাউন্ট বন্ধ রাখা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যমুনা নদীর তীর ঘেঁষে দুর্গম চরাঞ্চল চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদ। এই দুর্গমতার সুযোগ নিয়ে এলাকার বাসিন্দা না হওয়ার পরেও গোপন আর্থিক চুক্তির বিনিময়ে মিয়ানমার থেকে আসা বাস্তুচ্যুত ৭৯৫ জন রোহিঙ্গাকে ওই এলাকার বাসিন্দা হিসেবে প্রত্যয়ন দিয়ে তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়েছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী।

ইউপি সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব ও সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গা নাগরিকদের অবৈধ জন্মনিবন্ধন করেছেন। তবে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এসব সনদ দেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

ইউনিয়ন পরিষদের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, এই অবৈধ কাজে সহায়তাকারী পরিষদের উদ্যোক্তা মো. জলিল মন্ডল নিজের দোষ স্বীকার করে জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে চেয়ারম্যানের কাছে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের স্থানীয় সরকার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ফেরুয়ারি মাস থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চরকাটারী ইউনিয়নে ৭৯৫ জনের অবৈধ জন্মনিবন্ধন দেওয়া হয়। ১০ মাসের মধ্যে হওয়া ওই জন্মনিবন্ধনগুলো বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সম্প্রতি চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং জন্ম নিবন্ধনগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

এদিকে চরকাটারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কম্পিউটারের কাজ তেমন বুঝি না। পরিষদের উদ্যোক্তা মো. জলিল মন্ডলের কাছে আমার ইউপির জন্মনিবন্ধনের আইডির পাসওয়ার্ড থাকত। সেই সুযোগেই উদ্যোক্তা জলিল এ রকম অবৈধ জন্মনিবন্ধন করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমিও খুব বিপদে আছি । তবে দায় এড়াতে না পেরে পলাতক আছেন চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মো. জলিল মণ্ডল। তাকে ইউনিয়ন পরিষদে পাওয়া যায়নি । তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, উদ্যোক্তা জলিলকে কয়েক দিন ধরেই এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল, ওয়াজ উদ্দিন ও রহিম মিয়া বলেন, ৭৯৫ জনের জন্মনিবন্ধন হয়েছে, তারা কেউ আমাদের এলাকার বাসিন্দা না। চেয়ারম্যান, সচিব ও উদ্যোক্তারা টাকার বিনিময়ে অবৈধ জন্মনিবন্ধন করেছেন।

ইউপি সদস্য মো. জয়েদ আলী মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, ৭৯৫ জনের অবৈধ এ জন্মনিবন্ধন হওয়ায় আমাদের চরাঞ্চলের মানুষের ক্ষতি হবে। এর দায় চেয়ারম্যান, সচিব ও উদ্যোক্তার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরকাটারী ইউনিয়নে দীর্ঘদিন কোনো সচিব ছিল না। উপজেলার পার্শ্ববর্তী বাচামারা ইউনিয়নের সচিব আলমগীর হোসেন এই ইউনিয়নের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০ অক্টোবর নতুন সচিব মো. সেলিম দায়িত্ব গ্রহণের পরই অবৈধ জন্মনিবন্ধনের বিষয়টি তার নজরে আসে পরে তিনি ইউএনওকে অবগত করেন।

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আহসানুল আলম বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই চেয়ারম্যান ও সচিবের নিবন্ধন আইডি বন্ধ করে দিয়েছি। চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৭৯৫ জনকে জন্মনিবন্ধন দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত চলমান আছে। এ বিষয়টি লিখিত আকারে বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে আরো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি শিগগিরই তদন্ত কাজ শুরু করবে।


বিমানবন্দরে অভিনেত্রীসহ দুই যাত্রী থেকে ৬৯ লাখ টাকার সোনা জব্দ           

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক অভিনেত্রীসহ দুই যাত্রীর কাছ থেকে ৭৩৩ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছেন কর্মকর্তারা। এসব স্বর্ণালংকারের বাজার মূল্য প্রায় ৬৮ লাখ ৯৬,৪৬২ টাকা। শনিবার সকালে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর (এনএসআই) ও শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা উড়োজাহাজে তল্লাশি চালিয়ে এসব স্বর্ণালংকার জব্দ করেন।

আটক দুই যাত্রী হলেন- নাট্য অভিনেত্রী অনামিকা জুথি ও চট্টগ্রামের রাউজানের মোহাম্মদ রায়হান ইকবাল। তারা বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজে করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, অনামিকা জুথি দুই হাতে স্বর্ণের চুড়ি স্কচটেপ দিয়ে আটকে কৌশলে বহন করছিলেন। এছাড়াও দুইজনই স্বর্ণের চেনগুলো গলায় সুকৌশলে লুকিয়ে রেখেছিলেন।

তাদের হাতব্যাগ থেকেও স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়েছে। বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ বিমানের ‘বিজি-১৪৮’ ফ্লাইটে দুবাই-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে দুবাই থেকে সকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই চট্টগ্রাম বিমানবন্দর টিম ও শুল্ক গোয়েন্দা যৌথভাবে বিমানের ভেতরে ঢুকে দুই যাত্রীকে তল্লাশি করে।

এ সময় অনামিকা ও রায়হানের কাছ থেকে ৭৩৩ গ্রাম স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়। তারা মূলত ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রী। এ কারণে অ্যাভিয়েশন রুল অনুযায়ী তাদের একই বিমানযোগে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এনএসআই ও শুল্ক গোয়েন্দারা দুইজনকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টিমের কাছে হস্তান্তর করেন।

এদিকে এই বিষয়ে অনামিকা জুথি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আটক করার মতো ঘটনা ঘটেনি। ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। তবে কিছু স্বর্ণ আমার সঙ্গে ছিল তবে সেটার জন্য ট্যাক্স দিতে হয়। অলরেডি আমি ট্যাক্স দিয়েছি। যেভাবে নিউজ হয়েছে তা দেখে আমি বিব্রত। পরিচিত সবাই ফোন করেছেন। কীভাবে এত বড় ভুল একটি তথ্য ছড়িয়েছে আমার বোধগম্য নয়। এটা আমার জন্য সম্মানহানিকর।’


গোলার শব্দে ফের অশান্ত টেকনাফ সীমান্ত

অনুপ্রবেশের শঙ্কা, মানুষের মাঝে আতঙ্ক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মংডুতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্য চলমান যুদ্ধে গতকাল শুক্রবার রাত থেকে গোলার বিকট শব্দ আজ শনিবার ভোর পর্যন্ত চলছিল। এতে নতুন করে অনুপ্রবেশের শঙ্কার পাশাপাশি সীমান্ত মানুষের মাঝে আতঙ্ক কাজ করে।

সীমান্তের বসবাসকারীরা বলছে, কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এবং সাবরাং এর পূর্বে নাফনদীর ওপারে রাখাইনে মংডু টাউনশীফ বিপরীতে মংডু শহরের অবস্থান। ওই সীমান্ত এলাকায় প্রচন্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

দীর্ঘ চলমান যুদ্ধে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বিদ্রোহী আরাকান আর্মি অধিকাংশ এলাকা তাদের দখলে নেয়। এসব জায়গা পূর্ণ-উদ্ধারে কয়েকদিন ধরে ব্যাপক হামলা চালায় দেশটির জান্তা সরকার। যার কারনে সেদেশের গোলার শব্দে এপারের সীমান্ত কেঁপে উঠেছে।

টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, ‘রাতভর মিয়ানমারের গোলার কারনে নির্ঘুম রাত কেটেছে। সকাল পর্যন্ত বড় ধরনের গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। তাই আমরা রাত জেগে বসে ছিলাম। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ভয়ে ছিল।'

সীমান্তের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, মিয়ানমারের এখনো কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বসবসা করছে। বর্তমানে মংডুতে হামলা হচ্ছে, সেখানে অধিকাংশ রোহিঙ্গা নাগরিকের বসবাস। এভাবে যুদ্ধ চলমান থাকলেও ফের নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।’

তবে সীমান্তে অনুপ্রবেশে রোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইশতিয়াক মুর্শেদ।

এদিকে খারাংখালী,টেকনাফ, পৌরসভা, হ্নীলা, জাদিমুড়া, দমদমিয়া, নাইট্যংপাড়া, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, নাফ নদীর মোহনায় থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। ফলে মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেপেঁ উঠছে টেকনাফ সীমান্ত।

সীমান্তেরর বাসিন্দা গফুর আলম বলেন, ‘সীমান্তের রাতভর গোলার বিকট শব্দে মানুষ ঘুমাতে পারেনি। একটু পর পরই মুহুমুহু গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসছে এপারে। যার কারনে ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পরি। রাতের মতো এমন গুলির শব্দ আগে কখনো শুনেনি। এ পরিস্থিতিতে যে-কোন মূর্হতে সীমান্তে আবারও অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।'

ক্যাম্পের বসবাসকারী এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ‘রাখাইনে কয়েকদিন ধরে ফের যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। যার কারনে সেদেশে থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পালিয়ে আসার জন্য। কিন্তু তাদের এদেশে না আসতে নিরুসাহিত করছি। তবু মানুষ প্রাণে ভয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে।’

মিয়ানমার মংডুও শহরের মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফনদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফনদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে। সেটি চলমান এবং যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সব সময় প্রস্তুত বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরার সদস্যরা।

এ বিষয়ে সদ্য যোগদানকারী টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, 'আমি গুলির বিকট শব্দ শুনেছি। মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারনে এ ধরনের বিকট শব্দ পাওয়া যায়। আমরা সীমান্তের বসবাসকারী মানুষের খোঁজ খবর রাখছি। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমাদের বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছে।'


পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হোসেন রায়হান, পঞ্চগড়

ফজরের নামাজ পড়ে শুক্রবার অটোভ্যান নিয়ে শহরে আসেন পঞ্চগড়ের মীরগড় গ্রামের নুরুল্লাহ। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কোনো ভাড়া পাননি। এর মধ্যে হঠাৎ এদিন থেকে বেড়েছে কুয়াশা, সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া। বিপর্যস্ত এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হতাশ তিনি। কারণ এক দিন পর ঋণের আড়াই হাজার টাকা জোগাড় করতে আরও ১৩০০ টাকা দরকার তার।

একই রকম সমস্যা ফুলতলা গ্রামের আকবর আলী, শরিফুল আলম ও মিজানুর রহমানের। ভোর থেকেই শহরের সিনেমা রোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে কাজের সন্ধান করছেন তারা। ডিসেম্বর থেকে শীত-কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় কাজ একেবারেই কমে গেছে তাদের। আগে নদীর পাথর তুলে সংসার চালালেও ঠাণ্ডা পানিতে পাথর সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়ায় অন্য কাজের সন্ধ্যান করছেন তারা।

বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এভাবেই সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকায় টান পড়েছে। গত ২ সপ্তাহ ধরে পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ১০ থেকে ১২ ডিগ্রির ঘরে।

বিকেল থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ঠাণ্ডা বাতাস, সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শিশির কণা জেলার শীত কবলিত মানুষের জীবনে পরিবর্তন এনেছে। দিনভর সূর্যের আলো থাকলেও তেমন তেজ নেই। রয়েছে খণ্ড খণ্ড মেঘের মেলা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে হালকা বৃষ্টির আভাস রয়েছে। ডিসেম্বরে তাপমাত্রা এক অঙ্কের ঘরে নেমে যাবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস রয়েছে।

অব্যাহতভাবে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা কমতে থাকায় শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। রাতে তাপমাত্রা কমতে থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। দিনের তাপমাত্রাও থাকছে ২৮-২৯ ডিগ্রির ঘরে। গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজারে সন্ধ্যার পর লোক সমাগম কমছে। শহরের মানুষও তাড়াতাড়ি ঘরমুখী হচ্ছেন। তবে পাড়া-মহল্লা এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে শীতের নানা রকমারি পিঠা-পুলির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে।

শুক্রবার সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কার্যালয়। সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোরের সূর্য উঠলেও কুয়াশা ঝরা প্রকৃতি। সবুজ ঘাসের ডগায় টলমল করছে ভোরের শুভ্র শিশির। বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝরছে শিশির কণা। শিশির মাড়িয়ে কাজে যেতে দেখা যায় চাষিদের। শীত ঘিরে বাংলার ঘরে ঘরে চলছে নবান্নের আয়োজন।

উত্তরের এ জেলা বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার বিধৌত এলাকা হওয়ায় অন্যান্য জেলার আগেই শীতের আগমন হয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে। তবে নভেম্বর থেকেই শুরু হয় শীতের আমেজ। শীতকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে থাকে তেঁতুলিয়ায়। এ সময় আকাশ কিছুটা পরিষ্কার থাকায় দেখা মেলে শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার বর্ণালি লাবণ্য।

এদিকে শীতকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোশক কারিগরদের। বিক্রি বেড়েছে মৌসুমি শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে। শীতের প্রস্তুতি হিসেবে শীত আসার দুয়েক মাসের আগে থেকেই কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় কারিগরদের। এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানে শীতের কাপড় আনতে শুরু করেছেন। শীতের আগেই শীতের কাপড় এবং লেপ-তোশক তৈরি করে আগাম প্রস্তুতি নিতে দেখা যায় অনেককে।

শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের পরিচালক রাজিউর রহমান জানান, শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। লোকবল, চিকিৎসকসহ জায়গার অভাবে শিশুদের মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করে চিকিৎসা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, এই দুই মাস তাপমাত্রা কমতে থাকবে। রয়েছে মৃদু এবং মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস। তাপমাত্রা দাঁড়াবে এক অঙ্কের ঘরে। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে গিয়ে দেখা দেবে শৈত্যপ্রবাহ। চলতি মাসে একাধিক মৃদু এবং মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।

জেলায় ভারী কোনো শিল্প-কারখানা না থাকায় পাথর শ্রমিকসহ নদীকেন্দ্রিক মানুষের কাজের ক্ষেত্র করে গেছে। মহানন্দা নদীর হিম জলরাশি থেকে কষ্ট করে পাথর সংগ্রহ করছে শ্রমজীবী মানুষ।

জেলা প্রশাসক মো. সাবেদ আলী দৈনিক বাংলাকে জানান, শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। শীত মোকাবিলা করতে আগাম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে পাঁচ উপজেলায় দুই হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত বরাদ্দসহ খাদ্য সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।


সিলেটে বিমানের সিটের নিচ থেকে আবারও স্বর্ণ জব্দ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিলেট ব্যুরো

দুই দিনের ব্যবধানে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা একটি ফ্লাইট থেকে আবারও ১ কেজির বেশি স্বর্ণালংকার জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বিজি-২৪৮ থেকে স্বর্ণগুলো জব্দ করা হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।

সিলেট বিমানবন্দর ও এয়ারফ্রেইট বিভাগের সহকারী কমিশনার মো. সোহানুর রহমান বলেন, স্বর্ণালংকারগুলো যাত্রীবিহীন অবস্থায় বিমানের ২৬ সি নং সিটের নিচে কালো মোড়ক দিয়ে আবৃত ছিল।

তিনি আরও বলেন, জব্দ করা স্বর্ণের মধ্যে ১৮টি চুড়ি ও তিনটি চেইন রয়েছে। স্বর্ণের ওজন এক কেজি ১৬৬ গ্রাম। এর বাজার মূল্য প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ টাকা।

সোহানুর রহমান আরও বলেন, চোরাচালানে জড়িত যাত্রী কাস্টমস কর্মকর্তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে স্বর্ণ ফেলে রাখে। ওই ঘটনায় কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। সিলেটের কাস্টমস কমিশনার মো. তাসনিমুর রহমানের নির্দেশনায় বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এ অভিযান চালিয়েছে জানিয়ে সোহানুর রহমান বলেন, স্বর্ণ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা করা হবে।

এর আগে গত বুধবার বাংলাদেশের বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে ১ কেজি ২৮৩ গ্রাম ওজনের ১১টি স্বর্ণের বার জব্দ করেছিল ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।


বগুড়ায় কারা হেফাজতে আ.লীগ নেতার মৃত্যু 

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়া কারাগারে অসুস্থ হয়ে আব্দুল মতিন মিঠু (৬৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আব্দুল মতিন মিঠু বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বৈইঠা দক্ষিণপাড়া এলাকার মোজাহার আলীর ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং দুর্গাহাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন।

বগুড়া জেল সুপার ফারুক আহমেদ জানান, সদর থানায় দায়ের করা মামলায় গত ৩ নভেম্বর বগুড়া জেলা কারাগারে আনা হয় তাকে। রোববার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করলে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে সেখানেই মারা যান তিনি।


সড়ক দুর্ঘটনায় উপ-সচিব নিহত

নিহত ড. মো. ফরহাদ হোসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১) উপ-সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল ব্যুরো

বরিশালের মুলাদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মুলাদী উপজেলার প্যাদারহাট সংলগ্ন এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ড. মো. ফরহাদ হোসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১) উপ-সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মুলাদী থানার ওসি জহিরুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহত ফরহাদ হোসেন মুলাদী সদর ইউনিয়নের চর লক্ষীপুর এলাকায় মাওলানা আব্দুল কাদেরের ছেলে।

উপজেলার চরলক্ষীপুর নন্দীরবাজার মাহফিল আয়োজক কমিটির সদস্য জয়নুল আবেদীন জানান, শুক্রবার নন্দীর বাজারে একটি মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন উপ-সচিব ড. ফরহাদ। মাহফিলে অংশ নিতে তিনি ঢাকা থেকে বরিশালে আসেন তিনি। বিকেলে মীরগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে একটি থ্রি-হুইলারের (আলফা-মাহিন্দ্রা) যাত্রী হয়ে মুলাদী সদরে চরলক্ষীপুরে যাচ্ছিলেন ফরহাদ হোসেন। পথে থ্রি হুইলারটি প্যাদারহাট পার হয়ে হাওলাদার ব্রিজের কাছে এলে হঠাৎ একটি কুকুর সামনে এসে পড়ে। তখন চালক ব্রেক করলে থ্রি হুইলারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়।

ওসি বলেন, চালকের যে পাশে ফরহাদ হোসেন বসা ছিলেন মাহিন্দ্রাটি সেই পাশেই উল্টে যায়। এতে ফরহাদ হোসেন মাথায় গুরুত্বর আঘাতপ্রাপ্ত হন। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে দুর্ঘটনায় থ্রি-হুইলার চালক ও অন্য যাত্রীরা তেমন আহত হয়নি।

মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান জানান, হাসপাতালে আসার আগেই ড. ফরহাদ হোসেনের মৃত্যু হয়।


পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশির মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। তার নাম আনোয়ার হোসেন (৪০)।

শুক্রবার ভোরে উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিনপাড়া ও ভারতের শিংপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫১-এর ৮-৯ নম্বর সাব পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আনোয়ারের বাড়ি জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের দেবনগড় ইউনিয়নের আমজুয়ানী এলাকায়।

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে কয়েকজন বাংলাদেশিসহ ভারতে গরু আনতে যান আনোয়ার হোসেন। পরে ভোরের দিকে গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফ ৯৩ ব্যাটালিয়নের চানাকিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে। বিএসএফের দাবি ওই বাংলাদেশিরা তাদের ওপর দেশীয় দা ও বাঁশের লাঠি দিয়ে হামলা করতে গেলে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। এ সময় ঘটনাস্থলে নিহত হন আনোয়ার। পরে তার মরদেহ নিয়ে যায় বিএসএফ সদস্যরা। সেই সঙ্গে চোরাচালানের দুটি গরুও জব্দ করে বিএসএফ সদস্যরা।

এদিকে গুলির শব্দ পেয়ে চোরাকারবারীদের প্রতিহত করার জন্য আটটি ফাঁকা গুলি করেন ঘাগড়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহতের মরদেহ ফেরত আনা ও এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা। ঘটনার পরে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাচালানের একটি গরু জব্দ করেছে বিজিবি।


ভারতের অপতথ্য প্রচারে আমাদের ক্ষতি নেই: ড. এম সাখাওয়াত 

বেনাপোল বন্দর পরিদর্শনে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় গণমাধ্যম যে অপতথ্য প্রচার করছে তাতে বাংলাদেশের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।’

আজ শুক্রবার যশোরের বেনাপোল কার্গো ইয়ার্ড ও ইমিগ্রেশন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ভারতের অপতথ্য প্রচারে আমাদের কোনো ক্ষতি নেই, আমাদের এখানে চিকিৎসা ও বাজার সবই আছে।’

তিনি বলেন, ‘সমস্ত পৃথিবী থেকে ভারতে ভ্রমণকারীর সংখ্যার মধ্যে বাংলাদেশিদের অবস্থান দ্বিতীয় বৃহত্তম। এ খাত থেকে অর্থনৈতিকভাবে প্রতিবেশী দেশটি বিশাল লাভবান হয়। তারা বাংলাদেশিদের ভারতে যেতে না বললে বাংলাদেশিরাও ভারতে যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে মেজরিটি-মাইনরিটি কোনো বিভাজন নেই। এখানে আমরা সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করি।’ কোনো ধরনের উসকানিতে কান না দিতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি গতবার কার্গো ভেহিকল টার্মিনাল উদ্বোধন করে গিয়েছিলাম। কিন্তু বন্দরের কিছু সমস্যা ছিল যেমন- স্ক্যানার মেরামত করতে বলেছিলাম এবং আরও অন্যান্য বিষয়ের কাজ দিয়েছিলাম। তাই সেগুলো সচল আছে কি না এবং বন্দরের বাণিজ্য বন্ধ আছে কি না ও সার্বিক প্রস্তুতি ঘুরে দেখলাম।’

এসময় বেনাপোল চেকপোস্ট পরিবহন ব্যবসায়ীরা উপদেষ্টার কাছে পুরাতন বাস টার্মিনাল চালুর কথা জানালে ১৯টি পরিবহনের কার্যক্রম চালানোর আশ্বাস দেন তিনি। পরে স্থলবন্দরের সার্বিক বিষয় নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। সবশেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান উপদেষ্টা। এ সময় আব্দুল্লাহর মা-বাবা এবং পরিবারের খোঁজ-খবর নেন ও তার কবর জিয়ারত করে যশোরের উদ্দেশ্য রওনা দেন। আগামীকাল শনিবার ভোমরা স্থলবন্দর পরিদর্শনের জন্য তিনি সাতক্ষীরা যাবেন।

বেনাপোল বন্দর পরিদর্শনকালে যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামসহ পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আইনজীবী আলিফ হত্যা, প্রধান আসামি চন্দন ভৈরবে গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো ও ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আসামী চন্দন (৩৮) গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিনে নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত চন্দন ট্রেন থেকে নেমে ভৈরবের মেথরপট্টিতে অবস্থিত তার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলার ১নং আসামি বলে জানায় পুলিশ।

এদিকে চন্দনকে গ্রেপ্তারের পর কোতোয়ালি থানার নিকট চন্দকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর রুবেল আফরাদের নিকট তাকে হস্তান্তর করা হয়।

ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিন মিয়া জানান, ভৈরব থানার একটি বিশেষ টিম রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চট্রগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত আসামী চন্দনকে গ্রেপ্তার করার পর সকালের দিকে কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর রুবেল আফরাদ এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।জানা যায়, প্রধান আসামি চন্দনকে ধরতে চট্টগ্রাম ডিবি গত দুদিন ধরে ভৈরবে অবস্থান করছিল। ডিবি জানতে পারে আসামি চন্দনের শ্বশুরবাড়ি ভৈরব এলাকায়। কিন্তু ডিবি তার খোঁজ পাচ্ছিল না। বুধবার তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে তিনি ভৈরবে অবস্থান করছেন। পরে এ খবর ভৈরব পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ সন্ধ্যার পর থেকে ভৈরব রেলস্টেশনে অবস্থান নেয়। বুধবার রাত ১১টার দিকে ওসি শাহিন মিয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে রেলস্টেশন এলাকা থেকে আটক করা হয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ জানায়, গ্রেপ্তার চন্দন দাস বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির মেথরপট্টি এলাকার মৃত ধারীর ছেলে।

গ্রেপ্তারের বিষয়ে এডিসি কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, রেলওয়ে স্টেশনে ঘোরাঘুরি করা অবস্থায় চন্দনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে তিনি ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে রওনা হয়ে বুধবার সন্ধ্যা রাড়ে ৭টার দিকে ভৈরব রেলস্টেশনে পৌঁছান। তার শ্বশুরবাড়ি ভৈরবের মেথরপট্টিতে।

গত ২৯ নভেম্বর আলিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত অন্তত ১৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়। মামলা করেন আলিফের বাবা জামাল উদ্দীন। গত ২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত ৯ আসামিকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়েছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন- কোতোয়ালি থানা এলাকার বান্ডেল রোড সেবক কলোনি এলাকার বাসিন্দা চন্দন, আমান দাস, শুভ কান্তি দাস, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত, রুমিত দাশ, নয়ন দাস, গগন দাস, বিশাল দাস, ওমকার দাস, বিশাল, রাজকাপুর, লালা, সামির, সোহেল দাস, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, দুর্লভ দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য্য।

গত ২৬ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করার পর কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এসময় তার অনুসারীরা বিক্ষোভ করলে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে এদিন বিকেলে রঙ্গম কমিউনিটি হল সংলগ্ন এলাকায় কুপিয়ে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।


টেকনাফে জুবায়ের হত্যা: সঠিক তদন্ত চান মামলার প্রধান আসামী

আটককৃত আসামীর জবানবন্দিতে নাম উঠে আসেনি এনামের * তদন্তের ভার ডিবির কাছে * প্রধান আসামীর সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আবেদন
নিহত জুবায়ের। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৯:৪৭
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার টেকনাফের আলোচিত জুবায়ের হত্যাকাণ্ড মামলার অধিক তদন্তের স্বার্থে চট্টগ্রাম ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ ও কক্সবাজার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহর কাছে আবেদন করেছে মামলার প্রধান আসামী স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হক এনাম।

আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্রগ্রাম ডিআইজি রেঞ্জ থেকে ১২,৫৫৮ স্মারকমূল্যে আবেদনের বর্ণিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি প্রদান করা হয় এবং মামলার আটক দুই আসামীর ১৬৪ ধারা জবানবন্দি ও পত্র-পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য পর্যালোচনা করে মামলাটি কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা শাখায় হস্তান্তর করার নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে জুবায়ের হত্যা মামলা কক্সবাজার জেলা ডিবির কাছে তদন্তাধিন রয়েছে বলে জানা গেছে ।

ঘটনায় জানা যায়, টেকনাফের নাজির পাড়ার বাসিন্দা জোবায়ের ও নজুমউদ্দিন। দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। গত ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় রমজান মাসের ঠিক ইফতারের পর পাওনা টাকার জের ধরে নজুমদ্দিনের নেতৃত্ব ফিরোজ, কায়েস,মাসুদ,মাছনসহ বেশ কয়েকজন মিলে ফিল্মি স্টাইলে ঘরে ডুকে জুবায়েরকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে চট্রগ্রাম নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায় জুবায়ের। সে দিনের ঘটনার আদ্যপান্ত জানিয়েছেন জুবায়ের পরিবারের সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ঘটনার দিনে নিহত জুবায়েরের মা, ভাই, ভাইয়ের ছেলে ও প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্যে মাত্র ৮০০ টাকার জন্য বন্ধুর গুলিতে বন্ধু নিহত এই শিরোনামে পুরো দেশের পত্রপত্রিকায় সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে আসে কে বা কারা জুবায়েরকে গুলি করে হত্যা করেছে। কিন্তু ঘটনার দুইদিন পরে নিহত জুবায়ের এর মা বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে টেকনাফ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং ০২.জি আর ১৮০/২৪, মামলার এজাহার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হককে প্রধান আসামী করা হয়।

ঘটনার পরপরই তৎকালীন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসমান গণির নেতৃত্বে শুরু হয় পুলিশি অভিযান। জুবায়ের হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অপরাধে ঘাতক নজুম উদ্দিনের আপন মামাতো ভাই মাসুদ এবং মো. হোছেনকে আটক করে টেকনাফ থানা পুলিশ। তাদের দুজনকে আদালতে সৌপর্দ করার পর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় মাসুদ ও হোছেন।

এদিকে আদালতের ১৬৪ ধারার জবানবন্দির দুটি নথি আসে এই প্রতিবেদকের কাছে। যেখানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, ২৯ মার্চ ইফতারের পর নজুমদ্দিন ও ফিরোজ মাসুদের বাড়িতে এসে মাসুদের চাচা কায়েসের সঙ্গে কথা বলে মাসুদের হাতে তুলে দেয় ধারালো অস্ত্র এবং নজুমদ্দিন ও ফিরোজের হাতে দুটি পিস্তল ছিলো বলে জবানবন্দি দেয় মাসুদ। এরপর কায়েস হাতে লাঠি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে তারা। মাঝপথে যুক্ত হয় হোছনসহ মোট ৫ জন।

নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নিহত জুবায়েরের সঙ্গে কায়েসের পূর্ব শত্রুতা থাকায় প্রতিশোধ নিতে তাদের গন্তব্য জুবায়ের বাড়ির দিকে। এরপর ফিরোজ জুবায়ের বাড়ির সামনে ফাঁকা গুলি ছুড়ে। নজুমদ্দিন, কায়েস, ফিরোজ, হোছেন, জুবায়েরদের বাড়িতে ডুকে বেরিয়ে এসে নজুমদ্দিন বলে জুবায়েরকে শেষ করে দিয়েছি। মো. হোছনও আদালতে ১৬৪ জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডে কতজন জড়িত ছিল স্বীকার করে এবং নজুম উদ্দিনের গুলিতে নিহত হয়েছে বলেও তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করে। জুবায়ের হত্যা মামলার পিছনের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বেড়িয়ে এলো আরও চাঞ্চল্যকর একটি তথ্য।

একদিকে আলোচিত জুবায়ের হত্যাকাণ্ডে সরাসরি কারা জড়িত তা নিয়ে আটক আসামীরা আদালতে দিয়েছিল ১৬৪ ধারার জবানবন্দি, অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধামে প্রত্যক্ষদর্শীদের মুখেও উঠে এসেছিল কে বা কারা গুলি করে হত্যা করেছে জুবায়েরকে। এই ঘটনায় আলোচনায় না থাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হককে করা হয় জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের ১নং আসামী। কিন্তু আদালতে দুই আসামীর ১৬৪ ধারা জবানবন্দি এবং সে দিনের প্রত্যক্ষদর্শীদের মুখেই ছিলো না এই ইউপি সদস্যের নাম। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর জুবায়ের হত্যা মামলার রহস্য।

নজুম উদ্দিনের গুলিতে নিহত জুবায়ের এর মা এবং মার্কিন হত্যাকারী ছিদ্দিকের আত্মীয় হয়। আত্মীয়তা নিশ্চিত করেন নাজির পাড়ার প্রবীন মুরব্বি আবুল কাসেম। কথা হয় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। আবুল কাসেম জানান, জুবায়ের এর মা মাবিয়া খাতুন ও ছিদ্দিক তারা আপন মামাতো ফুপাতো ভাই বোন।

ছিদ্দিক ২০১৫ সালের আলোচিত মার্কিন হত্যার ৩ নাম্বার আসামী, নিহত আজিজুল হক মার্কিনের আপন ছোট ভাই এনাম মেম্বার, ছিদ্দিক ও এনাম মেম্বারের মধ্যে দীর্ঘদিনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকায় জুবায়ের হত্যা মামলাতে অভিযুক্ত করেছে বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

টেকনাফ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উসমান গণির সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ছিল ছিদ্দিকের। অভিযোগ আছে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে নিহত জুবায়ের এর মাকে রাজি করিয়ে এনাম মেম্বারসহ আরও কয়েকজন নিরপরাধ ব্যক্তিদের আসামী করেছে এই ছিদ্দিক।

মামলার প্রধান আসামী এনামুল হক এনাম জানান, ঘটনায় আমাকে পরিকল্পিতভাবে আসামী করা হয়েছে। ঘটনার পরে জোবায়ের এর মা-ভাই সবার জবানবন্দী ছিল অন্যরকম। সেখানে আমার কোন নাম ছিল না। আমাকে জড়ানো হয়নি। কিন্তু মামলায় এসে আমাকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত আশা করছি।

হাফেজ জসিম জানান, বর্তমান টেকনাফ থানা থেকে কক্সবাজার এসপির অধীনে উক্ত আলোচিত মামলার তদন্ত হওয়ায় অত্র এলাকার মানুষ প্রত্যাশা করছে নিহত জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার পাবে। হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন অনেকেই।

এদিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানান, যেহেতেু হত্যাকাণ্ডটি আমি আসার আগে হয়েছে, তাই আমার এই বিষয়ে জানা নেই। যিনি মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা রয়েছেন তিনি জানতে পারবেন ।

গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তদন্তে থাকা কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জোবায়ের হত্যা মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা তদন্ত চলমান রেখেছি। মূল অপরাধিদের ছাড় দেওয়া হবে না।


ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে সেন্টমার্টিনে গেল জাহাজ

কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে রোববার সকালে জাহাজটি ছেড়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

নানা জটিলতা কাটিয়ে দেশে প্রথমবারের মতো ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে চলতি মৌসুমে ৬৫৩ জন পর্যটক নিয়ে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন গেছে এমভি বারো আউলিয়া। রোববার সকাল ১০টায় কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজটি ছেড়ে যায়। জাহাজটি বিকেল নাগাদ দ্বীপে পৌঁছেছে।

গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। ওইদিন কেয়ারী সিন্দাবাদ নামের একটি জাহাজ পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার কথা থাকলেও পর্যটক সংকটের কারণে যাত্রা বাতিল করে। ফলে এমভি বারো আউলিয়ায় কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে ৯ মাস পর প্রথম যাত্রা শুরু হলো। এমভি বার আউলিয়ার পরিচালক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রোববার তিনটি জাহাজ ছাড়ার পরিকল্পনা থাকলেও ছেড়েছে কেবল এমভি বার আউলিয়া। জাহাজটিতে ৮৫০ জন যাত্রীর ধারণ ক্ষমতা থাকলেও গেছেন ৬৫৩ জন।

এদিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার পর্যন্ত এই রুটে কেয়ারী সিন্দাবাদ ও এমভি বার আউলিয়া ছাড়াও কর্ণফুলী এক্সপ্রেস নামে আরেকটি যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। তবে যাত্রী সংকটের কারণে বার আউলিয়া ছাড়া অপর দুটি জাহাজ গতকাল সেন্টমার্টিন যায়নি। সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনকে নিয়ন্ত্রণে আনাসহ জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ নিয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়। এ কমিটির আহ্বায়ক এবং কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া নির্দেশনা মেনে পর্যটকেরা আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন। দৈনিক দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। গতকাল বারো আউলিয়ার প্রথম যাত্রায় যাত্রী হিসেবে ছিলেন ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার ওবায়দুর রহমান। সপরিবারে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করছেন তিনি। জাহাজে ওঠার আগে তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, দ্বীপে দুই দিন থাকার পরিকল্পনা নিয়ে যাচ্ছি। ট্রাভেল পাস জোগাড়ে একটু জটিলতা হলেও দ্বীপে সব কিছু নিয়ন্ত্রণে থাকবে, জটিলতা থাকবে না, আরামে ঘোরা যাবে-এসব আনন্দের। এ সময় এ প্রতিনিধির কথা হয় আরও কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে। প্রায় সবাই সেন্টমার্টিনে দু-একদিন থাকার প্রস্তুতি নিয়েই যাচ্ছেন বলে জানান।

এদিকে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সেন্টমার্টিনে পলিথিন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বহন করা নিষিদ্ধ। এ নিয়মটি যাত্রীদের মানাতে জেটিতে জাহাজে ওঠার সিঁড়িতে পর্যটকদের হাতে পলিথিন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক আছে কি না তা তদারকি করতে দেখা যায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের। পর্যটকরা যাতে জাহাজে পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জমির উদ্দিন। তিনি বলেন, পর্যটকদের পলিথিন ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। জাহাজে যাতে কোনোভাবে পলিথিন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে কঠোর থাকবে পরিবেশ অধিদপ্তর। গতকাল সকালে পর্যটকবাহী জাহাজ পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক ভ্রমণ এবং জাহাজ চলাচলের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে কক্সবাজার শহর থেকে জাহাজ চলাচলের ঘাট নির্ধারণ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা কার্যকর করতে এ সংক্রান্তে গঠিত কমিটি কাজ করবে। প্রসঙ্গত গত ১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজ নিয়ন্ত্রণে যৌথ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আদেশে বলা হয়, সেন্টমার্টিনে যেতে হলে পর্যটকদের নিবন্ধনসহ নানা বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। ওই মন্ত্রণালয়ের গঠন করা যৌথ কমিটি এসব বিষয় দেখভাল করবে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কক্সবাজার সদর ও টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও)। পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালককে করা হয়েছে সদস্য সচিব।

গত ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতের কারণে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটনের জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ইনানি সৈকতে স্থাপিত নৌ-জেটি ব্যবহার করে সেন্টমার্টিনে পর্যটক পরিবহন হতো। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ইনানি জেটিও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখান থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে।


গুলি করে নারীকে হত্যা: মামলার পর প্রেমিককে খুঁজছে পুলিশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০০:১৬
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের দোগাছি এলাকার সার্ভিস সড়কে গুলি করে সাহিদা ইসলাম রাফা (২৪) নামে এক তরুণীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের মা। হত্যা মামলাটিতে ওই নারীর কথিত প্রেমিক তৌহিদ শেখ তন্ময়কে (২৮) প্রধান আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ওই যুবককে খুঁজছে পুলিশ। শ্রীনগর থানার ওসি কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শ্রীনগর থানা সূত্র জানায়, রোববার সকাল ১০টায় শ্রীনগর থানায় নিহত তরুণীর মা জরিনা খাতুন বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওই নারীর কথিত প্রেমিক তৌহিদ শেখ তন্ময়কে প্রধান আসামি করার পাশাপাশি অজ্ঞাত একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে নিহত সাহিদা ইসলাম সাফার সঙ্গে তৌহিদ শেখ তন্ময় নামে ওই যুবকের প্রেম ও দ্বন্দ্বের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে, এদিন দুপুরে ওই নারীর মরদেহ ২৫০ শয্যা মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়েছে। পরে সেটি নিয়ে যাওয়া হয় ময়মনসিংহের বেগুনবাড়িতে। গতকাল শনিবার ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের দোগাছি এলাকায় শরীরে ৫ জায়গায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের পাশ থেকে পাওয়া যায় ৫ রাউন্ড গুলির খোসা।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, ভোরে ওই নারীকে পদ্মা সেতু উত্তর থানা সংলগ্ন খান বাড়ি সিএনজি স্ট্যান্ড এলাকা থেকে মুখে দাড়িওয়ালা এক যুবকের সঙ্গে মহাসড়কের সার্ভিস লেনে হেঁটে যেতে দেখা যায়। এর আগে সেখানে তর্কে জড়ান তারা। সে সময় চড়-থাপ্পড় দিতে দেখা যায় নারীকে। তবে গুলি করতে দেখেননি কেউ।

থানা সূত্র জানায়, বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে মরদেহের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিকালে নিহত নারীর সঙ্গে থাকা মোবাইলের সিমের সূত্র ধরে ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করে থানা পুলিশ। পরে খবর পেয়ে ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা।

পরিবার সদস্যরা জানান, নিহত সাহিদা রাজধানী ঢাকার ওয়ারিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন ও নারিন্দা এলাকার বলধা গার্ডেন সংলগ্ন জনৈক কামাল মিয়ার বাড়িতে তার শিশুদের দেখাশোনার (ডে-কেয়ার) কাজ করতেন। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি গ্রামের মৃত মো. মোতালেবের মেয়ে তিনি। তারা ২ ভাই ও ৩ বোন। তাছাড়া ৭-৮ বছর আগে সাহিদার বিয়েও হয়েছিল। পরে সেই সম্পর্ক টেকেনি।

নিহতের মা জরিনা খাতুন বলেন, ‘মুখে দাড়িওয়ালা তৌহিদ নামের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের সূত্রে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করত সাহিদা। তবে তাদের মধ্যে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই মারামারি হতো। এমনকি আমি নিজেও ওই যুবকের হাতে মারধরের শিকার হয়েছি বেশ কয়েকবার।’

তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে আমি তাদের প্রেমের বিষয়টি মেনেও নিই। কিন্তু ছেলের পরিবার মানতে চাইত না। আমার কাছে ছেলের মা বিয়ে বাবদ ১০ লাখ টাকাও চায়। আমি বাসা-বাড়ির কাজ করে খাই। ১০ লাখ টাকা কোথা থেকে দেব! কয়েক মাস আগে চাঁদপুরে গিয়ে আপত্তিকর অবস্থায় তৌহিদ-সাহিদা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। থানা থেকে আমাকে খবর দেওয়া হলে আমি রাগে-ক্ষোভে যাইনি। পরে ছেলের পরিবারের সদস্যরা গিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে দুজনকে। তবে আমার ছেলেটাকে সুবিধার মনে হতো না। শুনেছি সে গাঁজার ব্যবসা করে। আমি প্রায়ই আমার মেয়েকে বলতাম, এই ছেলের সঙ্গে এভাবে যেখানে-সেখানে ঘোরাঘুরি না করতে। কিন্তু আমার কথা শুনত না আমার মেয়ে রাফা।’

নিহতের মা জরিনা আরও বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে সাহিদা আমাদের সঙ্গে বাসায়ই ছিল। এমন সময় ফোনে ডেকে নেওয়া হয় সাহিদাকে। পরে শনিবার দুপুরে আমার মেয়েকে গুলি করে হত্যার খবর পাই পুলিশের কাছ থেকে। আমি শুনেছিলাম ছেলের বাড়ি বিক্রমপুর। মনে হয় ওই ছেলেই আমার মেয়েকে এখানে নিয়ে এসে হত্যা করেছে।’

মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ ফিরোজ কবির বলেন, ‘কথিত প্রেমিকের সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়গুলো সামনে রেখে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। শিগগিরই ঘটনা উদ্ঘাটন হবে ও খুনি ধরা পড়বে।’


banner close