মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশের সার্ভিস সড়ক থেকে গুলিতে নিহত এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। পরে তার পরিচয়ও নিশ্চিত করে পুলিশ। ওই তরুণীর নাম সাহেদা আক্তার (২২) ওরফে সাহিদা বেগম। মরদেহটি উদ্ধারের সময় এর পাশে কয়েকটি গুলির খোসা পড়ে ছিল। তাকে ওই মহাসড়কে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে নাকি আশেপাশে কোথাও হত্যা করে সেখানে লাশ ফেলা হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে তথ্য সংগ্রহ কছে পুলিশ।
নিহদ সাহেদা ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার বেগুনবাড়ির বরিবয়ান এলাকার আবদুল মোতালেবের মেয়ে। তিনি ঢাকার ওয়ারী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) ফিরোজ কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মহাসড়কের সমসপুর এলাকার দোগাছি সার্ভিস সড়ক থেকে ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, সাহিদা রাজধানীর ওয়ারীতে তার ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন, কাজ করতেন একটি ডে-কেয়ার সেন্টারে।
একটি ফোন কলের সূত্র ধরে তরুণীর পরিচয় শনাক্তের কথা জানিয়ে ফিরোজ কবীর বলেন, 'ফিঙ্গারপ্রিন্টে তার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।'
স্থানীয়রা জানান, ভোরে ওই তরুণীকে এক যুবকের সঙ্গে মহাসড়কে হাঁটতে দেখা গেছে। তার এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর তরুণীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ মহাসড়কে পড়ে থাকতে দেখতে পান পথচারীরা। তরুণীর সঙ্গে থাকা ওই যুবককে স্থানীয়রা চিনতে পারেনি। তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল কিনা তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহতের পিঠে একাধিক গুলির চিহ্ন ছিল। লাশের পাশে কয়েকটি গুলির খোসা পড়ে ছিল। পরে তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান।
তবে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তারা এটাও ধারণা করছেন, গুলি করে ওই তরুণীকে হত্যার পর চলন্ত গাড়ি থেকে মরদেহ এক্সপ্রেসওয়েতে ফেলে গেছে কেউ।
পুলিশ জানিয়েছে, সকাল আটটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে পিবিআই, ডিবি পুলিশের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে যান। সেখানে সাহেদার হাতের আঙুলের চিহ্ন নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। দুপুর ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে শ্রীনগর থানায় নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিকেলে তার মাকে খবর দিলে তিনি থানায় এসে লাশ শনাক্ত করেন।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ সকালেই ঘটনাস্থলে যায়। বিকেলে ওই তরুণীর নাম-পরিচয় শনাক্ত করা হয়। আশপাশের ফুটেজ সংগ্রহ করে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) আনিছুর রহমান নিহত তরুণীর মায়ের বরাত দিয়ে জানান, রাজধানীর একটি বাড়িতে বাচ্চা পালনের কাজ করতেন সাহেদা। গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে তিনি ওয়ারীর বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তাঁর মুঠোফোন বন্ধ ছিল। আজ দুপুরের পরে তাঁর মা জানতে পারেন, মেয়ে গুলিতে মারা গেছেন। তবে কার সঙ্গে, কেন সাহেদা শ্রীনগরের দোগাছি এলাকায় এসেছিলেন, সেটি তাঁরা জানেন না। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে।
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় ঘাগড়াপাড়া গ্রামের যুবক আনারুল ইসলাম (২৮) প্রায় এক মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। গত বুধবার তার শশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা এলাকা থেকে নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মিলছে না।
পরিবার জানায়, নিখোঁজের সময় আনারুলের পরনে ছিল নেভি রঙের ফুলহাতা শার্ট ও লুঙ্গি। মানসিকভাবে তিনি কিছুটা অস্থির প্রকৃতির ছিলেন বলেও পরিবারের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার পর আনারুলের ছোট ভাই মো. নাজমুল ধর্মপাশা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরিবার ও স্বজনরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুঁজি করলেও কোথাও আনারুলের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিবার জানায়, আনারুল ২২ অক্টোবর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার রাজধরপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যান। গত বুধবার তার স্ত্রী পরিবারের সদস্যদের জানান যে তারা মোহনগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেনে করে আনারুলকে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরও তিনি বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সন্দেহ দেখা দেয়। পরে যোগাযোগ করা হলে স্ত্রী জানান, তারা নাকি আনারুলকে নেত্রকোনা রেলস্টেশনে নামিয়ে দিয়ে গেছেন। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় শুক্রবার দুপুর ১২টায় নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আনারুল ইসলামের পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে তারা প্রভাবশালী মহল, স্থানীয় প্রশাসন, গণমাধ্যম কর্মী ও সাধারণ মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি আনারুল ইসলামের সন্ধান পান বা তার অবস্থান সম্পর্কে তথ্য জানেন, তাহলে অনুগ্রহ করে ০১৮৬৭-২২৮৩১৯ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হচ্ছে। নিখোঁজ যুবকের নিরাপদ ও দ্রুত ফিরে আসার জন্য পরিবার সকলের দোয়া ও আন্তরিক সহায়তা কামনা করেছে।
রাঙামাটি জেলার স্থানীয় সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী ‘ডিজিটাল মিডিয়া বিষয়ক প্রশিক্ষণ’-এর সমাপনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে রাঙামাটি প্রেসক্লাব মিলনায়তনে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এই সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এবারের প্রশিক্ষণে জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মোট ৩৫ জন সাংবাদিক অংশ নেন। প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল সংবাদ সংগ্রহ, তথ্য যাচাই (ফ্যাক্ট-চেকিং), মোবাইল জার্নালিজম, এআই ব্যবহারের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নৈতিকতা ও নিরাপত্তা-এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরানুল হক ভূইয়া, পিআইবির সিনিয়র প্রশিক্ষক গোলাম মোর্শেদ, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ার আল হক, সিনিয়র সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস, সাবেক সভাপতি ও প্রবীণ সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে সহ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য সাংবাদিকরা।
সমপনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, ‘ডিজিটাল যুগে সাংবাদিকতাকে আরও গতিশীল ও দায়িত্বশীল করতে এ ধরণের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল টুল ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধি পেলে সংবাদ হবে আরও নির্ভুল, সময়োপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন।’
অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকরা জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা, কনটেন্ট তৈরি ও মোবাইল রিপোর্টিংয়ের হাতে–কলমে অনুশীলন তাদের পেশাগত কাজে নতুন মাত্রা যোগ করবে। শেষে অতিথিরা অংশগ্রহণকারীদের হাতে প্রশিক্ষণের সনদপত্র তুলে দেন।
কুষ্টিয়ায় গত ১ বছরে (অক্টোবর ২০২৪ থেকে অক্টোবর ২০২৫) পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় পরিচালিত বিভিন্ন অভিযানে ১০৮ কোটি টাকার মাদক ও চোরাচালানী পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় ৬টি ভারতীয় অটোমেটিক পিস্তল উদ্ধারসহ ৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযানের সময় ৭৩ কোটি ৯৪ লাখ ৫৫ হাজার ২২ টাকা মূল্যের মাদকদ্রব্য এবং ৩৪ কোটি ৩৯ লাখ ৮ হাজার ৯১ টাকার চোরাচালানী পণ্যসহ মোট ১০৮ কোটি ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ১১৪ টাকার অবৈধ দ্রব্য জব্দ করা হয়।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের আগস্ট–অক্টোবর তিন মাসে ২১ কোটি ৭৩ লাখ ৮ হাজার ৭৫০ টাকার মাদকদ্রব্য ও ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৭৮ হাজার ৫০৫ টাকার চোরাচালানী পণ্যসহ মোট ২৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৫ টাকার সিজার সম্পন্ন করে ২৩ জন আসামিকে আটক করা হয়েছিল।
অন্যদিকে, চলতি বছরের একই সময় (আগস্ট–অক্টোবর ২০২৫) ১২ কোটি ২ লাখ ১৩ হাজার ৫৩০ টাকার মাদক এবং ১৫ কোটি ৮৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৯২ টাকার চোরাচালানী পণ্যসহ মোট ২৭ কোটি ৮৫ লাখ ৩৮ হাজার ৩২২ টাকার সিজার সম্পন্ন করে ৩৯ জন আসামিকে আটক করেছে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি।
চলতি বছরে পরিচালিত যৌথ টাস্কফোর্স অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক ও চোরাচালানী দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে, ফেন্সিডিল: ৭৯৯ বোতল, ইয়াবা: ২২,৭২৮ পিস, এলএসডি: ৪৫ বোতল, নকল বিড়ি/ সিগারেট: ১,৭৭,৫১৪ প্যাকেট, বেহুন্দী ও চায়না দোয়ারী জাল: ১,৮৪,৯৬২ কেজি। উদ্ধারকৃত এসব দ্রব্যের বাজারমূল্য প্রায় ৬২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এ সময় ৬টি ভারতীয় অটোমেটিক পিস্তল উদ্ধারসহ ৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, কোটা আন্দোলনে নিহত ও আহত ১০টি পরিবারকে মোট ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। একজন দৃষ্টিহীন বৃদ্ধকে উন্নত চিকিৎসা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান। ৪২টি হতদরিদ্র্য পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী এবং একজন এতিম কিশোরকে গবাদি পশু প্রদান।
এই মানবিক উদ্যোগগুলো বিজিবি ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে আস্থা, সহযোগিতা ও সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করেছে বলে জানিয়েছেন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক।
তিনি ভবিষ্যৎ অঙ্গীকার করে বলেন, কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) তাদের এই অব্যাহত প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ শুধু দেশের সীমান্তই নয়, মানুষের হৃদয়ের সীমান্তও রক্ষা করে। ভবিষ্যতেও সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি মানবিক কল্যাণে নিজেদের নিবেদিত রাখবে ৪৭ বিজিবি।
দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন সম্ভাবনাময় একটি ফসল রোজেল যা বাংলায় চুকোর বা টক গাছ নামে পরিচিত। বীজ বপনের ২২০ দিন পর গাছ প্রতি গড়ে ৫শ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত কাঁচা ফল এবং ১৫০ থেকে ৪শ গ্রাম বৃতির ফলন পাওয়া যায়। এছাড়া হেক্টর প্রতি তিন থেকে সাত টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এই ফল এবং মাংসল বৃতি থেকে জ্যাম, জেলী, চা, আচার, চাটনী, জুসসহ বিভিন্ন পানীয় উৎপাদন করা যায় ও রান্নাতেও ব্যবহার করা যায়। শুক্রবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে আয়োজিত রোজেল নিয়ে এক প্রদর্শনীতে এসব তথ্য জানান বিভাগটির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও ‘রোজেল উদ্ভিদের পাতা ও বৃতি উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ ও ব্যবহারের কলা-কৌশল’ প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির।
এসময় তিনি রোজেলের উৎপাদন, চাষ পদ্ধতি, খাদ্যে ব্যবহার, ঔষধি ব্যবহার, পশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহার সম্পর্কে জানান।
অধ্যাপক বলেন, এই উদ্ভিদটি পতিত জমিতে চাষাবাদ করা যায়। এটি আমাদের দেশে অপ্রচলিত একটি উদ্ভিদ। আমার লক্ষ্য কোনো জমি যাতে পতিত না থাকে। এ কারণেই আমি পতিত জমিতে চাষাবাদ উপযোগী অপ্রচলিত কিন্তু ব্যাপক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন উদ্ভিদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা পরিচালনা করে আসছি।
তিনি বলেন, রোজেল খাদ্য হিসাবে স্বাদে ও ভেষজ গুনে অনন্য। বাড়ীর আশে-পাশে রৌদ্রময় বা আংশিক ছায়াযুক্ত উঁচু জায়গাতে চার থেকে পাঁচটি রোজেল উদ্ভিদ থাকলে একটি পরিবারের জন্য চা, জ্যাম, জুস, আচার ইত্যাদির পারিবারিক চাহিদা মেটানো সম্ভব। শুধু তাই নয় রোজেল ভিত্তিক খাদ্য ও পানীয় ছোট-মাঝারি আকারের শিল্পের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
রোজেলের পুষ্টিগুণ নিয়ে তিনি বলেন, জাত অনুসারে লাল ও সবুজ রোজেল পাওয়া যায়। তবে লাল রোজেলে এ্যান্থোসায়ানিন, ফ্লাভনয়েড, ক্যারোটিনসহ অন্যান্য অ্যান্টিএক্সিডেন্ট ও আমিষ, চর্বি বিদ্যমান যা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগ উপসম করে বলে গবেষণায় জানা গিয়েছে। মৌলিক পুষ্টি উপাদান বিশ্লেষণে দেখা যায় পাতায় ও বৃতিতে প্রোটিন, চর্বি, ফাইবার ও মিনারেলস থাকে। রোজেল বৃতিতে ৩-৪ গ্রাম প্রতি লিটার টোটাল অরগ্যানিক এসিড থাকে। এই অর্গানিক এসিডের উপস্থিতিতে বৃতি ও পাতা টক স্বাদ হয়। এই উদ্ভিদের শুকনা পাতা ও বৃতিতে সহজে ছত্রাক বা জীবাণু আক্রমণ করে না ফলে এটা ছত্রাক-ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধকারী। রোজেল সেবনের নির্দিষ্ট কোনো মাত্রা নেই কারণ এর পুরোটাই প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদান সম্পন্ন। তাই এর তেমন কোনো প্বার্শ প্রতিক্রিয়া নেই।
এছাড়া রোজেলের অন্যান্য ব্যবহারের মধ্যে আশ উৎপাদন, পশুখাদ্য ও বায়োমাস হিসেবে ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রোজেলের কান্ড ও শাখা থেকে পাটের মত আঁশ উৎপাদন ও ব্যবহার করা যায়। এ গোত্রীয় মেস্তা পাট আঁশের জন্য উৎপাদন ও ব্যবহার হয়ে আসছে। পরিপক্ক রোজেল বীজে প্রায় ২০ শতাংশ আমিষ ও ২০ শতাংশ চর্বি আছে যা প্রক্রিয়াকরণের পর পশুখাদ্য হিসাবে ব্যবহারের প্রচলন আফ্রিকা মহাদেশ থেকে জানা যায়। ফসল ক্ষেতের বেড়া-উদ্ভিদ হিসাবে রোজেল খুবই কার্যকর। ফসল কর্তনের পর উদ্ভিজ্জ বায়োমাস খড়ি হিসাবে ব্যবহার করা যায়। সুদৃশ্য সবুজ বা লালচে উদ্ভিদ শোভা বর্ধনকারী হিসাবে সুপরিচিত।
রোজেলের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, লাল রোজেলের বৃতির রঙ জৈব খাদ্য রঙ হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। বিদেশে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করলে জৈব খাদ্য রঙ বিদেশে রপ্তানি করার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
অধ্যাপক আরও বলেন, রোজেল ক্যাফেইনমুক্ত। ১:৪, ১:৩ ও ১:২ বিভিন্ন অনুপাতে চায়ের সাথে রোজেল মিশানো হয়েছে। তবে সার্ভেতে অংশ নেয়া প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ চা দিয়ে মেশানো ছাড়া শুধু রোজেল পছন্দ করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমার এই গবেষণায় আমার স্ত্রী রাকেয়া তৌফিকা নাজনীন রেসিপি প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়াজাতকরণে সাহায্য করেছে। এছাড়া বিভাগটির অধ্যাপক ড. নেছার উদ্দীন, অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন, অধ্যাপক ড. সবিবুল হক এবং উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন যুক্ত ছিলেন।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর পশ্চিম পাড়ে দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবনে চলছে ৪নং নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম। বহু পুরোনো আধাপাকা এই টিনশেড ভবনে ইউপির কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে ধীরে ধীরে স্থবির হয়ে পড়েছে সার্বিক কর্মকাণ্ড। ফলে ইউনিয়নের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ নিয়মিত নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, আর ত্রাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন জনপ্রতিনিধিরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেটে যাওয়া ইটের দেয়াল, মরিচা ধরা টিনের চালা ও পলেস্তরা খসে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ এই ঘরেই চলছে ইউনিয়ন পরিষদের নানা কার্যক্রম। বৃষ্টির সময় ছাদ ও চালার অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে পানি পড়ে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ভিজে যাওয়া এখন নিত্যদিনের ঘটনা। ভবনের ভেতরে ১০-১৫ জনের বেশি বসার জায়গা না থাকায় অনেককে রোদ-বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে সেবা নিতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সামিউল ইসলাম বলেন, “জোরে বাতাস উঠলেই আতঙ্কে থাকি। কখন টিন উড়ে যায় আর দেয়াল ভেঙে পড়ে, বলা মুশকিল। এমন ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় কিভাবে এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয় বুঝি না।”
এমন দুরাবস্থার মধ্যেই চলছে গ্রাম আদালত, চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের বৈঠক, ইউপি সচিবের দাপ্তরিক কাজ এবং ডিজিটাল সেন্টারের সেবা। একটি কাজ করতে গিয়ে অন্যটি বন্ধ রাখতে হয়, ফলে গুরুতরভাবে ব্যাহত হচ্ছে সেবা প্রদান। ভবনের অভাবে সরকারি ত্রাণ, কম্পিউটার ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি যত্রতত্র রাখা হচ্ছে—যা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি চুরির ঝুঁকিতেও রয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শরীফ আল ফায়েদ জানান, “বৃষ্টি হলেই ভেতরে পানি ঢুকে কোনো কাগজপত্রই নিরাপদ থাকে না। একটি ইউনিয়নের সব কাজ এক ছাদের নিচে করতে গিয়ে আমরা বিপাকে পড়ছি।”
ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান বলেন, “ত্রাণ বিতরণ থেকে শুরু করে দৈনন্দিন দাপ্তরিক কাজ—সবকিছুই এই জরাজীর্ণ ভবনে অত্যন্ত কষ্টে করতে হয়। বৈঠক বা গ্রাম আদালত পরিচালনার মতো পরিবেশও নেই।”
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি জানান, নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ভবনের অবস্থা সম্পর্কে তারা অবগত। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সারাদেশে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ শুরু হলে নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদও নতুন কমপ্লেক্স পাবে।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের আগেই নির্মিত এই ভবনটিতে ১৯৮৩ সাল থেকে নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর আগে রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়া ইউনিয়ন ও নয়াবিল ইউনিয়ন যৌথ পরিষদ হিসেবেও এখানে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো।
নদী বাঁচাও, দেশ বাঁচাও, শীতলক্ষ্যা বাঁচাও, আমাদের বাঁচাও স্লোগানে সকাল সকাল মুখরিত রূপগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীর।
শীতলক্ষ্যা নদী বাঁচাতে ছয় দফা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নারায়ণগঞ্জ- ১ (রূপগঞ্জ) আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে ‘সেভ দ্যা শীতলক্ষ্যা’ নামে র্যালী কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার মুড়াপাড়া কলেজ থেকে রান উইথ আনোয়ার হোসেন মোল্লা টু সেভ দ্যা শীতলক্ষ্যা ব্যানারে র্যালীটি শুরু হয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর দিয়ে ৩ কিলোমিটার সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাটাব বাজারে গিয়ে শেষ হয়।
নারায়ণগঞ্জ -১ (রূপগঞ্জ) আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত র্যালীতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান হাফিজ।
র্যালী শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফিজুর রহমান বলেন, এই শীতলক্ষা হচ্ছে রূপগঞ্জের প্রাণ। শীতলক্ষ্যা কে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে শিল্প কারখানার প্রসার ঘটেছিল। এই শীতলক্ষ্যার স্বচ্ছ পানি ছিল নাব্যতা ছিল। এই শীতলক্ষ্যা ধ্বংস হয়েছে অসৎ দুর্নীতিবাজ চাঁদাবাজ নেতৃত্ব আর সুবিধাবাদী ব্যবসায়ীদের কারণে। আসুন আগামীতে শুধু শীতলক্ষ্যা নয় গোটা বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য আমরা শপথ গ্রহণ করি। সৎ নেতৃত্বের সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলি। সমাবেশে র্যালির মূল প্রতিপাদ্য তুলে ধরে বক্তব্য, রাখেন আনোয়ার হোসেন মোল্লা।
তার দেওয়া অঙ্গীকার গুলো হচ্ছে: ১। নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি, ২। নদীর দুই পাড়ে সবুজ বেষ্টনী, ৩। নদীর পানি পরিষ্কার ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ, ৪। আধুনিক ওয়াকওয়ে, লাইটিং, বিনোদন ক্ষেত্র, ৫। পরিবেশবান্ধব নদী পরিবহন ব্যবস্থা ও ৬। নদীভিত্তিক নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী খাঁন, জেলা আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইসরাফিল, জেলা শিবির সভাপতি আকরাম হোসেন, রূপগঞ্জ উত্তর ও পশ্চিম আমীর আবদুল মজিদ, ও মাওলানা ফারুক আহমাদ, দক্ষিণ, উত্তর ও পশ্চিম সেক্রেটারি, আনিসুর রহমান, খাইরুল ইসলাম, মোহাম্মদ হানিফ ভূঁঞা প্রমুখ।
‘নিয়মিত ব্যায়াম, পরিমিত আহার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে মাগুরার শরীরচর্চাবিষয়ক সংগঠন সুপ্রভাত বাংলাদেশ-এর একযুগ পূর্তি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় ব্যায়ামপ্রেমী এই সংগঠনের শতাধিক সদস্য অংশ নেন। পরে অনুষ্ঠিত হয় স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা। সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। বক্তারা সংগঠনের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, গত ১২ বছরের অর্জন ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম, পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন এবং স্বাস্থ্যসচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও তুলে ধরা হয়। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সুস্থ শরীর ও মানসিক সতেজতা ধরে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম, হাঁটাচলা ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের কোনো বিকল্প নেই। সমাজব্যাপী স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি করতে এ ধরনের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।
আলোচনা সভা শেষে কেক কাটার মধ্য দিয়ে সুপ্রভাত বাংলাদেশ, মাগুরার একযুগ পূর্তি অনুষ্ঠান শেষ হয়।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ হাত্তরজুড়ে ফুটে থাকা লাল শাপলার অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ছুটে আসছেন দেশের নানা প্রান্তের পর্যটকরা। ভোরের প্রথম আলোয় যখন হাজারো লাল শাপলা একসঙ্গে ফুটে ওঠে, তখন পুরো বিলজুড়ে সৃষ্টি হয় রঙিন ও মনোমুগ্ধকর এক আবহ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে শ্রীমঙ্গলের এই নব-পর্যটনকেন্দ্র ‘লাল শাপলা বিল’।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাল শাপলার মনোরম দৃশ্য ভাইরাল হওয়ায় দর্শনার্থীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শাপলা মূলত ভোরে ফোটে এবং সকালে সূর্যের আলোয় পুরোপুরি বিকশিত হয়—যা দেখতে সত্যিই মনোমুগ্ধকর। দুপুরে কিছুটা নিস্তেজ মনে হলেও বিকেলে আবারও সৌন্দর্য ছড়িয়ে দেয় চারদিকে।
ঘুরতে আসা কলেজছাত্রী দিবান্বিতা দাশগুপ্তা বলেন, ‘এত লাল শাপলা আমি আগে কখনও দেখিনি। বান্ধবীদের সঙ্গে এসেছি। হাজার হাজার শাপলা যেন পুরো প্রকৃতিকে নতুন সাজে সাজিয়েছে দেখতে সত্যিই দারুণ লাগছে।
দর্শনার্থী ফাহিম আহমদ বলেন, ‘আগে এখানে তেমন কেউ আসত না। এখন মানুষ দূরদূরান্ত থেকে শুধু লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখতে আসছে। বিনোদনের জন্য সুন্দর একটি জায়গা তৈরি হয়েছে। এখানে এসে আমরা বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও দেখেছি।
আরেক দর্শনার্থী আরোফিন হোসেন জানান, ‘বউকে নিয়ে এসেছি লাল শাপলা দেখতে। অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল আজ সেই ইচ্ছে পূরণ হলো। ভোরের আলোয় শাপলার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সত্যিই মনকে প্রফুল্ল করে। পাখির কিচিরমিচির ডাকও অত্যন্ত ভালো লেগেছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মির্জাপুরের লাল শাপলা এখন দেশ-বিদেশের মানুষের আকর্ষণ। প্রতিদিন এখানে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। শ্রীমঙ্গলের মতো মির্জাপুরও ধীরে ধীরে পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।
তরুণ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগমুখি লাভজনক খাত হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কৃষিকাজ। অল্পদিনেই গড়ছেন সাফল্যের নজির। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার এক উদ্যমী উদ্যোক্তা মুঈদ আশিক চিশতী। পেশায় ব্যবসায়ী হলেও দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গরুর খামার করে আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। তার কাজে উৎসাহী হয়ে আত্মকর্মী হয়ে উঠছে আশপাশের অনেক তরুণ যুবক। তিনি এখন সফল খামারি হিসেবে দেশবিদেশে পরিচিত। মুঈদ আশিক চিশতী উপজেলার কমলগঞ্জ পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) এর একমাত্র ছেলে।
আজ সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন মুঈদ আশিক চিশতী, একজন উদ্যমী ও পরিশ্রমী মানুষ। নিজ এলাকার কৃষি ও পশুপালন খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে গড়ে তুলেছেন একটি খামার। তার খামারটি এখন শুধু তার নিজ পরিবারকেই নয়, পুরো এলাকার মানুষের জীবিকা ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অল্পদিনের বাণিজ্যিক সম্ভাবনায় বেড়েছে বিনিয়োগ। বেড়েছে খামারের পরিধি।
নিজ গ্রামে ২০০৭ সালে চিশতি এই সাফল্যের শুরু হয় ছোট পরিসরে। নিজের বাড়ির পাশেই গরু ও মুরগি পালন শুরু করেন। প্রথম দিকে নানা সমস্যার মুখোমুখি হলেও তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও ধৈর্য তাকে এগিয়ে নিতে থাকে। খামার পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, সঠিক পরিকল্পনা এবং স্থানীয় কৃষি ও পশুপালন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে তিনি ধীরে ধীরে খামারকে বড় পরিসরে সম্প্রসারণ করেন। বর্তমানে তিনি মহিষ ও দুগ্ধ খামার গড়ে তুলেছেন। সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে খামার ও ৫০ বিঘা জমিতে গবাদিপশুর খাদ্য সাইলেজ উৎপাদন করছেন এবং ৪০ বিঘা জমিতে ৮টি পুকুরে মৎস চাষ করছেন।
চিশতির খামারে দেশি গরুসহ বিভিন্ন জাতের গরু আছে যেমন- আরসিসি, মিরকাদিম, ফিজিয়ান ইত্যাদি। এখন প্রায় ১০০ টিরও বেশি গরু রয়েছে। এবং দেশি মহিষসহ বিদেশি জাতের যেমন: মুররা, এলবিনো, নিলিরাভি মহিষ রয়েছে। এখন ২৪টি মহিষ রয়েছে। এছাড়াও খামারের আশেপাশের জমিতে ফসল উৎপাদন করে তিনি একধরনের ‘মিশ্র কৃষি’ চালু করেছেন, যা তার খামারের আয়কে আরও বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে। তার খামার থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার খামারিরা গবাদিপশুর খাদ্য সাইলেজ ক্রয় করে থাকেন।
স্থানীয়রা ছোট ছোট খামারিরা জানান, ‘কমলগঞ্জ উপজেলায় একজন সফল উদ্যোক্তা ও খামারি হিসেবে পরিচিত কমলগঞ্জের চিশতী। তিনি তার দৃঢ় মনোভাব, উদ্ভাবনী চিন্তা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে শখের খামারকে একটি লাভজনক উদ্যোগে পরিণত করেছেন। তার সফলতার গল্প শুধু কৃষি খাতের জন্যই নয়, বরং সারাদেশের উদ্যোক্তাদের জন্যও এক মহান অনুপ্রেরণা।’
উদ্যোক্তা মুঈদ আশিক চিশতী বলেন, ‘প্রথমে অনেকে আমার পরিকল্পনাকে অবিশ্বাস করেছিল, তবে আমি বিশ্বাস করেছি আমার স্বপ্নের ওপর। আজ আমার খামার শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, সামাজিকভাবেও একটি মডেল হিসেবে দাঁড়িয়েছে। চিশতীর এই খামার শুধু তার নিজের আয় বৃদ্ধি করেনি, বরং এলাকার অনেক বেকার যুবককে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। খামারে কাজ করে তারাও স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তার খামারে ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক দৈনিক মুজুরি ও মাসিক বেতন হিসেবে কাজ করছেন।
চিশতী জানান, খামার চালাতে গিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিশেষ করে পশুপালনের জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন ও খাদ্য সরবরাহে সমস্যা ছিল। সরকারিভাবে কোন ধরনের সহযোগীতা পান না বললেই চলে। তবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও তিনি আজ সফল। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে তার খামারকে সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা করছেন এবং স্থানীয়দের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করারও ইচ্ছা রয়েছে।
তিনি ইতোমধ্যে ‘কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে atiah deponkor University of science & technology’ দিয়ে ‘কৃষি উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০২২’ সম্মাননা পেয়েছেন। প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ এ মৌলভীবাজার জেলাতে মহিষ উৎপাদনে প্রথম হয়েছেন।
এদিকে বুধবার কমলগঞ্জে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত গরু ও মহিষ মোটাতাজাকরণ ২য়, ছাগল পালনে ৩য় ও দুগ্ধ ক্যাটাগরিতে ৩য় পুরস্কার ও সনদপত্র গ্রহণ করেন।
কমলগঞ্জ প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রমা পদ দে, বলেন, ‘কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্য থাকলে জীবনে সফলতা আসে, মুঈদ আশিক চিশতীই তার অনন্য উদাহরণ।’
তিনি বলেন, মুঈদ আশিক চিশতী কমলগঞ্জের একজন সত্যিকার উদাহরণ, যিনি প্রতিকূলতার মধ্যেও সাফল্যের মুখ দেখেছেন। তার খামার আজ অনেকের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা কমলগঞ্জের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে ২৫ নভেম্বরের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মুহূর্তের মধ্যে শত শত পরিবার ঘরবাড়ি ও সম্পদ হারিয়ে মারাত্মক মানবিক সংকটে পড়ে। পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক গুরুত্ব অনুধাবন করে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে আজ ২৮ নভেম্বর বস্তির অভ্যন্তরে একটি মানবিক সেবাকেন্দ্র চালু করেছে। মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদের নির্দেশনায় আজ দুপুর ২ টায়, এ সেবাকেন্দ্রটির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।
মহাপরিচালক বলেন, “এই সেবাকেন্দ্রের লক্ষ্য হলো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে প্রাথমিক মানবিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে জরুরি খাদ্য, পানি ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে তাদের জীবনের নিরাপত্তা সহায়তা ও কিছুটা স্বস্তি নিশ্চিত করা।” উদ্যোগটি সাহায্যকারী বাহিনীর পক্ষ হতে জরুরি মানবিক সহায়তা ব্যবস্থায় একটি কার্যকর সংযোজন হিসেবে বিবেচিত।
২৫ নভেম্বর বিকেল ৫টার দিকে অগ্নিকাণ্ড দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ঘনবসতিপূর্ণ বস্তির শতাধিক ঘর অল্প সময়েই পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে এবং অসংখ্য পরিবার সম্পূর্ণভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়ে।
মানবিক সেবাকেন্দ্রটি প্রতিদিন দুই বেলা প্রায় দুই হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করবে, যা আজ থেকে শুরু করে পাঁচ দিন অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি নিরাপদ পানির চাহিদা পূরণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেবাকেন্দ্র এলাকায় নলকূপ স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যাতে বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা যায়। এই ব্যবস্থা পানীয়জল সংকট কমানোর পাশাপাশি পানিবাহীত রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে।
সেবাকেন্দ্র চালুর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ দ্রুত খাদ্য সহায়তা পেয়ে নতুন করে আশার আলো দেখছে। খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী পেয়ে অনেক পরিবার স্বস্তি প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে শিশু, নারী ও প্রবীণদের কাছে দ্রুত মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক বার্তা হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছে। ঢাকা মহানগর আনসারের পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান গনী এই মহতী কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
“মানুষ মানুষের জন্য”—এই মানবিক অঙ্গীকার নিয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ভবিষ্যতেও সকল সংকটময় মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থেকে সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
ডব্লিউএফপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ শুক্রবার জানানো হয়, গত ২৫ নভেম্বরের এই অগ্নিকাণ্ডের পরে পার্শ্ববর্তী বিটিসিএল গার্লস হাই স্কুলে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর মাঝে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর (ডিডিএম), ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)-এর সহযোগিতায় ১ হাজার ৯শ’ পরিবারকে হাই এনার্জি বিস্কুট (এইচইবি) বিতরণ করেছে ডব্লিউএফপি।
প্রতিটি পরিবার একটি পাঁচ কেজি ওজনের এইচইবি কার্টন পেয়েছে। রান্না বা পানির প্রয়োজন হয় না বলে জরুরি পরিস্থিতিতে এই বিস্কুট অত্যন্ত কার্যকর।
প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ এইচইবি আগামি কয়েক দিনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে।
ডব্লিউএফপি বাংলাদেশে ১৯৭৪ সাল থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জরুরি সহায়তা, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি এবং দুর্যোগ-পরবর্তী পুনরুদ্ধারসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে লাখো মানুষকে সহায়তা দিয়ে আসছে জাতিসংঘের এ সংস্থাটি।
শুধু ২০২৪ সালেই ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও একাধিক বন্যার পর ২৮ লাখ মানুষের কাছে খাদ্য, নগদ অর্থ ও পুনরুদ্ধার সহায়তা পৌঁছে দেয় ডব্লিউএফপি।
ডব্লিউএফপির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর সিমোন পার্চমেন্ট বলেন, ‘আজকের বিতরণের পরও আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও মানবিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে ডব্লিউএফপি অতিরিক্ত সহায়তা দিতেও প্রস্তুত। সূত্র: বাসস
কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ১৬৬ কেজি ওজনের বিরল আকৃতির একটি ভোল মাছ ধরা পড়েছে; যেটি এক লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার শাপলাপুর বাহারছড়ার বাসিন্দা সাইফুল ইসলামের জালে মাছটি ধরা পড়ে বলে জানান টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন।
নৌকার মালিক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনের মত সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে হঠাৎ জালে বিশাল ভোল মাছটি ধরা পড়ে। নৌকা থেকে ঘাটে মাছটি নামলে উৎসুক জনতা দেখতে ভিড় করেন।
‘এত বড় মাছ তুলতে আমাদের যথেষ্ট কষ্ট হয়েছে। জীবনে কখনো এত বড় মাছ দেখিনি, তুলতেই হিমশিম খেতে হয়েছে’, বলেন তিনি।
লামার বাজার আড়তে মাছটি তুলে দাম দুই লাখ টাকা চাওয়া হলেও পরে তা বাহারছড়ার ব্যবসায়ী করিম সওদাগর এক লাখ ৮০ হাজার টাকায় কিনে নেন বলে জানান সাইফুল ইসলাম।
মাছটি ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ী করিম সওদাগর।
স্থানীয় জেলে নুর মোহাম্মদ বলেন, এত বড় ভোল মাছ বহু বছর ধরে তাদের জালে ধরা পড়ে না। বিরল এ মাছটি ধরা পড়ায় এলাকায় উৎসাহ ও কৌতুহল ছড়িয়ে পড়েছে।
মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, শীত মৌসুমে পাঁচ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত ভোল মাছ জেলেদের জালে আটকা পড়ে। এই মাছ সাধারণত ৪০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, সাগরে মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে পালন হওয়ায় মাছ বড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এতে জেলেরাও ভালো দাম পাচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল ঢাকার হাতিরঝিল ও বেগুনবাড়ি খাল উন্নয়ন প্রকল্প। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটায় হংকংয়ের সিআইসি-জিরো কার্বন পার্কে আয়োজিত এশিয়ান টাউনস্কেপ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ লিমিটেডের নকশা করা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রকল্প ‘ইন্টিগ্রেটেড ডেভলপমেন্ট অব হাতিরঝিল এরিয়া ও বেগুনবাড়ি খাল’ পুরস্কৃত হয়েছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে এশিয়ার হেবিটেট সোসাইটির চেয়ারম্যান প্যাট্রিক লাউ সিংয়ের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল ইসলাম ও স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ লিমিটেডের পরিচালক স্থপতি ইকবাল হাবিব এবং স্থপতি ইসতিয়াক জহির।
হাতিরঝিল প্রকল্পটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার নগর কাঠামো, জনসেবামূলক ব্যবহার, জলাধার পুনরুদ্ধার এবং জনবিনোদনমূলক অবকাঠামো উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের স্থাপত্য ও নগর উন্নয়নক্ষেত্রে একটি তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন।
আয়োজিত এশিয়ার টাউনশিপ অ্যাওয়ার্ড যৌথভাবে আয়োজন করেছে ইউএন-হেবিটেট রিজিওনাল অফিস ফর এশিয়া এন্ড দ্য প্যাসিফিক (এএইচএস), ফুকুওকা এশিয়ার আরবান রিসার্চ সেন্টার (ইউআরসি) এবং এশিয়া টাউনশিপ ডিজাইন সোসাইটি এ বছর বিশ্বব্যাপী শহুরে পরিবেশ, জনজীবন, নান্দনিকতা এবং প্রতিবেশগত স্থিতিশীলতায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে এমন ৭২টি প্রকল্প থেকে ১১টি প্রকল্পকে এই পুরস্কার দেয় হয়েছে।