রোববার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
৫ পৌষ ১৪৩২

পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে

ছবি: সংগৃহীত
হোসেন রায়হান, পঞ্চগড়
প্রকাশিত
হোসেন রায়হান, পঞ্চগড়
প্রকাশিত : ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২১:৩০

ফজরের নামাজ পড়ে শুক্রবার অটোভ্যান নিয়ে শহরে আসেন পঞ্চগড়ের মীরগড় গ্রামের নুরুল্লাহ। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কোনো ভাড়া পাননি। এর মধ্যে হঠাৎ এদিন থেকে বেড়েছে কুয়াশা, সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া। বিপর্যস্ত এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হতাশ তিনি। কারণ এক দিন পর ঋণের আড়াই হাজার টাকা জোগাড় করতে আরও ১৩০০ টাকা দরকার তার।

একই রকম সমস্যা ফুলতলা গ্রামের আকবর আলী, শরিফুল আলম ও মিজানুর রহমানের। ভোর থেকেই শহরের সিনেমা রোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে কাজের সন্ধান করছেন তারা। ডিসেম্বর থেকে শীত-কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় কাজ একেবারেই কমে গেছে তাদের। আগে নদীর পাথর তুলে সংসার চালালেও ঠাণ্ডা পানিতে পাথর সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়ায় অন্য কাজের সন্ধ্যান করছেন তারা।

বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এভাবেই সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকায় টান পড়েছে। গত ২ সপ্তাহ ধরে পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ১০ থেকে ১২ ডিগ্রির ঘরে।

বিকেল থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ঠাণ্ডা বাতাস, সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শিশির কণা জেলার শীত কবলিত মানুষের জীবনে পরিবর্তন এনেছে। দিনভর সূর্যের আলো থাকলেও তেমন তেজ নেই। রয়েছে খণ্ড খণ্ড মেঘের মেলা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে হালকা বৃষ্টির আভাস রয়েছে। ডিসেম্বরে তাপমাত্রা এক অঙ্কের ঘরে নেমে যাবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস রয়েছে।

অব্যাহতভাবে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা কমতে থাকায় শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। রাতে তাপমাত্রা কমতে থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। দিনের তাপমাত্রাও থাকছে ২৮-২৯ ডিগ্রির ঘরে। গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজারে সন্ধ্যার পর লোক সমাগম কমছে। শহরের মানুষও তাড়াতাড়ি ঘরমুখী হচ্ছেন। তবে পাড়া-মহল্লা এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে শীতের নানা রকমারি পিঠা-পুলির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে।

শুক্রবার সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কার্যালয়। সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোরের সূর্য উঠলেও কুয়াশা ঝরা প্রকৃতি। সবুজ ঘাসের ডগায় টলমল করছে ভোরের শুভ্র শিশির। বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝরছে শিশির কণা। শিশির মাড়িয়ে কাজে যেতে দেখা যায় চাষিদের। শীত ঘিরে বাংলার ঘরে ঘরে চলছে নবান্নের আয়োজন।

উত্তরের এ জেলা বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার বিধৌত এলাকা হওয়ায় অন্যান্য জেলার আগেই শীতের আগমন হয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে। তবে নভেম্বর থেকেই শুরু হয় শীতের আমেজ। শীতকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে থাকে তেঁতুলিয়ায়। এ সময় আকাশ কিছুটা পরিষ্কার থাকায় দেখা মেলে শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার বর্ণালি লাবণ্য।

এদিকে শীতকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোশক কারিগরদের। বিক্রি বেড়েছে মৌসুমি শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে। শীতের প্রস্তুতি হিসেবে শীত আসার দুয়েক মাসের আগে থেকেই কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় কারিগরদের। এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানে শীতের কাপড় আনতে শুরু করেছেন। শীতের আগেই শীতের কাপড় এবং লেপ-তোশক তৈরি করে আগাম প্রস্তুতি নিতে দেখা যায় অনেককে।

শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের পরিচালক রাজিউর রহমান জানান, শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। লোকবল, চিকিৎসকসহ জায়গার অভাবে শিশুদের মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করে চিকিৎসা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, এই দুই মাস তাপমাত্রা কমতে থাকবে। রয়েছে মৃদু এবং মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস। তাপমাত্রা দাঁড়াবে এক অঙ্কের ঘরে। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে গিয়ে দেখা দেবে শৈত্যপ্রবাহ। চলতি মাসে একাধিক মৃদু এবং মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।

জেলায় ভারী কোনো শিল্প-কারখানা না থাকায় পাথর শ্রমিকসহ নদীকেন্দ্রিক মানুষের কাজের ক্ষেত্র করে গেছে। মহানন্দা নদীর হিম জলরাশি থেকে কষ্ট করে পাথর সংগ্রহ করছে শ্রমজীবী মানুষ।

জেলা প্রশাসক মো. সাবেদ আলী দৈনিক বাংলাকে জানান, শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। শীত মোকাবিলা করতে আগাম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে পাঁচ উপজেলায় দুই হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত বরাদ্দসহ খাদ্য সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।


বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
  নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের ১০১ সদস্য বিশিষ্ট গঠন করা হয়েছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি স্থানীয় হোটেলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ২০২৬-২০২৭ ও ২০২৭-২০২৮ সালের জন্য দ্বিবার্ষিক এই কমিটি নির্বাচিত করা হয়।

কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) জনাব খন্দকার শফিকুল হাসান রতন এবং মহাসচিব পদে নির্বাচিত হয়েছেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম এনাম। কমিটির প্রধান পৃষ্ঠোপোষক নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল পাশা। সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ আব্দুল্লাহ মৃধা। ১নং যুগ্ম-মহাসচিব পদে নির্বাচিত হয়েছেন কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার জনাব খন্দকার নাজমুল হাসান। সাংগঠনিক পদে নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোঃ রেজাউর রহমান মিয়া রাজু।

বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা হল ৫৯টি, এ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসারদের নিয়ে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের ১০১ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়।


লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার বাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে মরল শিশু 

অগ্নিসংযোগকারীদের শাস্তির দাবি মির্জা ফখরুলের
আপডেটেড ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৪১
নিজস্ব প্রতিবেদক

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের সুতারগোপ্তা এলাকায় ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বেলাল হোসেনের বসতবাড়িতে গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) গভীর রাতে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগে তার ৮ বছর বয়সের শিশু কন্যা মোসা. আয়শা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বেলাল হোসেনসহ তার অন্য দুই কন্যা বীথি আক্তার ও স্মৃতি আক্তার আগুনে গুরুতর আহত হয়েছে। ইতোমধ্যে আহত দুই কন্যাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাদের পিতা বেলাল হোসেন বর্তমানে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুর্বৃত্তদের কর্তৃক সংঘটিত এই কাপুরুষোচিত ও নৃশংস।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুর্বৃত্তদের কর্তৃক অগ্নিসন্ত্রাসে শিশু মোসাঃ আয়শা আক্তারের অকাল মৃত্যু এবং অপর দুইবোন সহ বেলাল হোসেনের গুরুতর আহত হওয়ার নির্মম ঘটনায় শোক জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। এটি একটি জঘন্য, অমানবিক ও কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলা যা দেশব্যাপী বিরোধী রাজনৈতিক মত দমনের ধারাবাহিকতারই বহি:প্রকাশ। এ ধরণের ঘটনায় প্রমাণ হয় যে, দেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে এবং রাজনৈতিক সহিংসতা ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে।’

বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে এই পৈশাচিক ঘটনার সাথে জড়িত দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান। দুর্বৃত্তদের লাগানো আগুনে নিহত নিষ্পাপ শিশু মোসা. আয়শা আক্তারের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। পাশাপাশি আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।


দিপু দাসকে পিটিয়ে হত্যা, চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল র‌্যাব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে হত্যার আগে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করেন কারখানার ফ্লোর ম্যানেজার। এরপর তাকে উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০ জনের তথ্য সাংবাদিকদের অবহিত করতে গিয়ে র‌্যাব-১৪ এর পরিচালক নাইমুল হাসান এই চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন।

এরমধ্যে পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কোম্পানির ফ্লোর ম্যানেজার আলমগীর হোসেনকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছেন কারখানার কোয়ালিটি ইনচার্জ এবং মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা নাইমুল হাসান বলেন, ‘ঘটনার সূত্রপাত হয় ওইদিন বিকেল ৪টার সময়। ফ্যাক্টরির ফ্লোর ইনচার্জ তাকে (দিপুকে) ইস্তফা দিতে বাধ্য করে। ইস্তফা দেওয়ার পর উত্তেজিত জনতার কাছে সে (ফ্লোর ম্যানেজার) হ্যান্ডওভার করে দেয়।

পুলিশের কাছে কেন দেয়নি, তার নিরাপত্তা কেন নিশ্চিত করেননি সেজন্য পাইওনিয়ার কারখানার দুজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।’

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বারবার চেষ্টা করেছি, কাকে বলেছে, কী বলেছে, এটা কিন্তু কেউ বলতে পারেনি। আমার মনে হয়, উত্তেজিত জনতা কিংবা পূর্বের কোনো শত্রুতা ছিল কিনা সেটাও তদন্ত করে দেখব। একটা লোককে এই অভিযোগে মেরে ফেলা এবং গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে তাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা কোনোভাবেই আইনে কভার করে না এবং সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এটাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে না।’

মামলা যেহেতু থানায় হয়েছে, ফলে থানা এই মামলা তদন্ত করবে। পাশাপাশি র‌্যাবের ‘ছায়া-তদন্তের’ কথাও জানান পরিচালক নাইমুল হাসান।

গ্রেপ্তার অন্য আটজন হলেন- তারেক হোসেন (১৯), লিমন সরকার, মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিঝুম উদ্দিন (২০), আজমল হাসান সগীর (২৬), শাহিন মিয়া (১৯) এবং মো. নাজমুল। এরমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

র‌্যাব-১৪- এর পরিচালক নাঈমুল হাসান বলেন, এরা কেউ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকা উপজেলায় ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে যুবক দিপু চন্দ্র দাসকে (২৮) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার লাশে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং অর্ধপোড়া লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করেন।


বগুড়ায় সরকারি আজিজুল হক কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীদের পূর্ণমিলনী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বগুড়া প্রতিনিধি

পুন্ড্র সভ্যতার ঐতিহ্যবাহী বগুড়ায় সরকারি আজিজুল হক কলেজের ইতিহাস বিভাগের ২০০৩-০৪ স্নাতক সম্মান শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ১ম পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) উক্ত কলেজের হলরুমে অনুষ্ঠিত পূর্ণমিলণীতে অত্র বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের স্মৃতি রোমন্থন করেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে বক্তব্য রাখেন, সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অত্র কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসার মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ সরকার, প্রফেসর মোঃ শাহজাহান আলী, শিক্ষকদের মধ্যে মোঃ ফিরোজ আল রেজা, সরোয়ার মোসেদ, মোঃ আসলাম মিয়া, মোঃ দেলোয়ার হোসেন।

পুর্ণমিলনী অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির মোঃ রেজাউল করিম, আহসান হাবীব সেলিম, সাইফুল ইসলাম, তরুন অধিকারী, কে এম ইফরেখার ববি, কোহিনুর আক্তার, জান্নাতুল ফেরদৌস, ফারুক আরাফাত, রানী, রেজাউল লিটনসহ সকল শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


আড়াই বছরের প্রকল্প ৪ বছরেও হয়েছে অর্ধেক কাজ

*প্রকল্পে ২৪টি কালভার্টের মধ্যে কাজ শেষ হয়েছে ২২টি * কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট ৪ লেন প্রকল্প
আপডেটেড ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২০:০১
সিলেট প্রতিনিধি

সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট চার লেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি কচ্ছপ গতির কবলে পড়েছে। ২০২২ সালে শুরু হওয়া আড়াই বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের কাজ চার বছর পেরিয়ে গেলেও অগ্রগতি মাত্র ৫০-৬০ শতাংশ। জমি অধিগ্রহণ জটিলতা ও মামলার পাহাড় ডিঙাতে না পেরে প্রকল্পের মেয়াদ এখন ২০২৬ সালের জুন ছাড়িয়ে আরও দুই বছর বাড়ানোর তোড়জোড় চলছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৬ কিলোমিটার জমি অধিগ্রহণের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো জমি অধিগ্রহণ হয়নি। এ অবস্থায় প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয় চিঠি পাঠানো হয়েছে। সড়কের যেসব জমি অধিগ্রহণে জটিলতা রয়েছে, সেসব জমি অধিগ্রহণ না করেই বিকল্প জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। জমি অধিগ্রহণ শেষ হয়ে গেলে কাজ শেষ করতে ছয় মাস সময় লাগবে। এজন্য প্রকল্পের মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় আরও দুই বছর বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, সিলেট নগরীর ভেতর দিয়ে প্রতিদিন শত শত পাথর বোঝাই ভারি ট্রাক চলাচল করে। এতে প্রায় সময় ট্রাক চাপায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ অবস্থায় দুর্ঘটনা ও মৃত্যু ঝুঁকি এড়াতে নগরীর ভেতর দিয়ে ট্রাক চলাচলের চাপ কমাতে কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়ক নির্মাণের দাবি ওঠে। অবশেষে সিলেটবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২-২০১৪ দুই অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়কটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে সড়কটি চারলেনে উন্নীত করার দাবি তোলেন সিলেটবাসী।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। পরের বছর চার লেন সড়কের সঙ্গে দুটি সার্ভিস লেন যুক্ত করে তৈরি করা হয় সংশোধিত প্রস্তাবনা। ২০১৯ সালের দিকে শুধু চারলেনের প্রস্তাবনা জমা পড়ে মন্ত্রণালয়ে। অবশেষে জটিলতা কাটিয়ে ২০২২ সালে কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট চারলেন সড়কের উদ্বোধন করেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।

তথ্যমতে, প্রায় ৭২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের আওতায় মাটির কাজসহ ১১.৮৭১ কিলোমিটার (চার লেন) সড়ক হবে রিজিড পেভমেন্টের। আর ০.৭০০ কিলোমিটার হবে ফ্লেক্সিবল পেভমেন্টের। এছাড়া দুটি পিসি গার্ডার সেতু, ২৪টি ছোট আরসিসি কালভার্ট, দুটি লিংক রোড, ছয়টি বাস-বে, আরসিসি ড্রেনসহ ফুটপাত, সিগন্যাল স্থাপন ও সড়ক রক্ষা ব্যবস্থা ছিল প্রকল্পটিতে।

সওজ’র তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ হবে ৩১.৮২ একর। এতে ব্যয় ধরা হয় ২৪২ কোটি ১২ লাখ টাকা। ১ দশমিক ২ মিটার ডিভাইডার এবং দুই পাশে ৭ দশমিক ৯ মিটার করে ১৫ দশমিক ৮ মিটার প্রশস্ত চারলেন বিশিষ্ট এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২৭ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। অর্থাৎ সড়কটিতে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৫৭ কোটি টাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমারগাঁও থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার সম্মুখ পর্যন্ত রাস্তার নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া সড়কের পাশ দিয়ে ড্রেনেজ নির্মাণও সম্পন্ন হয়েছে এ অংশে। তবে নির্মাণাধীন জায়গায় নয়াবাজার-বাদাঘাট রোড মসজিদ ও সোনাতলা বাজারে একটি পারিবারিক কবরস্থান রয়েছে। এসব জায়গায় স্থানীয়দের বাঁধায় কাজ বন্ধ রয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্টা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, প্রকল্পের আওতায় মোট ১২ কিলোমিটার রাস্তা ছিল। এরমধ্যে ৪ কিলোমিটার রাস্তা ছিলো যেখানে কোনো জমি অধিগ্রহণ করা লাগেনি। সে অংশে প্রায় সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৮ কিলোমিটার রাস্তার কাজ আমরা জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই কাজ শুরু করি।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর কুমারগাঁও-বাঘাটাদের একটি স্থানে কবরস্থানের কিছু অংশ থাকায় সেখানে কিছু কাজ বাকি রয়েছে।

সড়ক বিভাগ সিলেটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সালাহ্‌উদ্দিন সোহাগ বলেন, এখানে চারটি মৌজার জায়গা নিয়ে কিছু জটিলতা এখনো রয়েছে। তবে শীগ্রই তা সমাধান হবে। তাছাড়া অন্যান্য জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা সমাধান হয়েছে এবং সেসব অংশে কাজ চলমান রয়েছে।

সালাহ্‌উদ্দিন সোহাগ বলেন, প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি না হলেও নতুন করে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে, আমরা এই প্রকল্পের জন্য আরও দুই বছর সময় চাইব। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৩০ হেক্টরের মতো জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

আমরা আশা করছি, আগামী এক বছরের মধ্যে রাস্তা চালু করে দিতে পারবো। জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ৭৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মধ্যে ২৪টি কালভার্ট করার কথা রয়েছে, এরমধ্যে ২২টি কালভার্ট করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

সিলেটের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, ধুপনিখলা মৌজা ১.৫ কিলোমিটারের জায়গা নিয়ে স্থানীয়রা কাজে বাঁধা দেওয়ায় জমি অধিগ্রহণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে থানায় জিডিও করা হয়েছে।


সারিয়াকান্দির চরে উৎপাদন হচ্ছে হরেক রকম অর্থনৈতিক ফসল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি

সারিয়াকান্দির যমুনা চরাঞ্চল এখন ফসল উৎপাদনের হিমাগার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। এখানে মরিচ, মিষ্টি কুমড়া ভুট্টাসহ নানা ধরনের ফসলে ভরপুর হয়ে উঠেছে। একসময়ের পতিত জমিতে ফসল ফলিয়ে তারা লাভবান হচ্ছেন এবং তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। জমিতে নিরানি, পরিপক্ব ফসল উত্তোলন বা নতুন ফসল আবাদ করতে কৃষক ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সরেজমিনে দেখাগেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার উপর দিয়ে যমুনা, বাঙালি, সুখদহ নদী বয়ে গেছে। ফলে এ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় চরাভূমি রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই এসব চরণ ভূমিতে পানিসেচ দেয়ার সুবিধা না থাকায় এসব জমি পতিত হয়ে থাকতো। কিন্তু গত কয়েকবছর আগে থেকে কৃষকেরা মাটিতে বোরিং করে ইঞ্জিন চালিত শ্যালো মেশিনের সাহায্যে পানি উত্তোলন করছেন এবং পলিথিন পাইপের সাহায্য উচুঁ নিচু জমিতে তা সরবরাহ করে সেচ সুবিধা চালু করেছেন। ফলে নদীর মাধ্যমে উজান থেকে বয়ে আসা উর্বর পলিমাটিতে প্রচুর পরিমানে ফসল ফলছে। সেখানকার মাটি উর্বর হওয়ায় বসতবাড়ির আঙিনায় উচ্চ ফলনশিল হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষ করছেন।

উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, সেখানে ধান, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টাসহ নানা ধরনের ফসলে ভরপুর হয়ে উঠেছে। কৃষকেরা এখন এসব ফসলের পরিচর্যা করতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। কেউবা জমিতে নিরানি দিচ্ছেন, কেউবা পানিসেচ দিতে ব্যস্ত রয়েছেন, কেউবা সদ্য পরিপক্ব হওয়া উচ্চ ফলনশীল জাতের কাঁচা মরিচ উত্তোলন করছেন, কেউবা বড়বড় মিষ্টি কুমড়া উত্তোলন করছেন, কেউবা উত্তোলিত ফসল ঘোড়ার গাড়িতে পরিবহন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চরাঞ্চলে উৎপাদিত ফসল কৃষকরা বাজারজাত করে ভালো দাম পাচ্ছেন। ফলে তারা লাভবান হচ্ছেন এবং তাদের মুখে হাসি ফুটেছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে উপজেলায় ২৬৭০ হেক্টর জমিতে মরিচ, ৬৫২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা, ১৩০০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান, ১১০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া, ৬০৫ হেক্টর জমিতে আলু, ৩১৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা, ৭৩৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, ৪৮৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু, ১২৬৫ হেক্টর জমিতে পিঁয়াজসহ রসুন, গম, মাসকলাই, বিভিন্ন প্রজাতির ডাল, তিল, তিসি, চিনাবাদাম, আখ, নেপিয়ার ঘাসসহ নানা ধরনের ফসলের আবাদ হয়েছে।

উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের কৃষক আবু সাঈদ বলেন, চরের বিশালাকার জমিগুলো আগে পতিত হয়েই থাকতো। পানিসেচের অভাবে সেখানে বাদাম, কাউন, খেরাচি ছাড়া কোনও আবাদ হতো না। কিন্তু প্লাস্টিকের পাইপের সাহায্যে এসব জমিগুলোতে তারা এখন সোনার ফসল ফলাচ্ছেন। গত বছর ১৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা, ১০ বিঘা জমিতে মরিচ, ৫ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করে বেশ লাভবান হয়েছেন। এসব দু'ফসলি জমিতে পাটেরও বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছরও মরিচ, ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, বাদামসহ বেশকিছু ফসলের আবাদ করেছেন তিনি।

কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের শোনপচা চরের মহব্বত হোসেন জানান, সেখানকার মাটি উর্বর হওয়ায় ধান, মরিচ, ভূট্টা চাষে তারা লাভবান হচ্ছেন। তবে এবছর বন‍্যার পানি জমিতে না উঠায় ফসল উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে কৃষকেরা আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। এখানে অনেক বেকার যুবকরা কৃষিকাজের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছেন এবং তাদের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। একসময়ের পতিত চরাঞ্চল এখন নানা ধরনের ফসলে ভরপুর হয়ে উঠেছে এবং চরাঞ্চল অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে আশীর্বাদে পরিণত হয়েছে।


ইলেকট্রিক শক দিয়ে পদ্মায় মাছ শিকার, জনতার হাতে আটক ৩

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ শিকারের অপরাধে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর আন্ধারমানিক মাছের আড়ত থেকে তিনজনকে আটক করেছে স্থানীয়রা। আটকের পর উপজেলা মৎস্য অফিসের নিকট হস্তান্তর করলে প্রশাসন দুজনকে ৭ দিন করে জেল, একজনকে অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

আটককৃতরা হলেন, গোয়লন্দ উপজেলার রাখালগাছি গ্রামের ইব্রাহিম শেখ ও সাইফুল শেখ এবং পাবনা জেলার আমিনপুর থানা ডালারচর গ্রামের কাউছার সরদার। এ সময় মাছ শিকারের সরঞ্জাম হিসেবে একটি ইলেকট্রিক ছুবনি/ছিপি, ১২ ভোল্টের তিনটি ব্যাটারি, ২৬,৮০,০০০ ওয়াটের একটি ইনভার্টার/আইপিএস, ২টি ফগ লাইট জব্দ করে থানার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। ইঞ্জিনচালিত ট্রলারটি ভাড়ায় চালিত হওয়ায় সেটি জব্দ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে ব্যাটারি, ইনভার্টারের সাহায্যে হাই ভোল্টেজ তৈরি করে ইলেকট্রিক ছুবনি/ছিপি দিয়ে নিয়মিত মাছ শিকার করে আসছিল বেশ কিছু জেলে। এ কারণে মাছ মরে ভেসে উঠার পর বড়, মাঝারি, ছোট মাছগুলোকে তুলে উপজেলার বিভিন্ন আড়ত, বাজারে বিক্রি করা হয়। আন্ধারমানিক পদ্মা নদীর পাড়ে মৎস্য আড়তে ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছগুলো বিক্রির সময় স্থানীয়রা মাছ ও নৌকা দেখে চারজনকে ধাওয়া করে। একজন পালিয়ে গেলেও তিনজনকে আটক করে।

হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য অফিসের ইলিশ প্রকল্পের ক্ষেত্র সহকারী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ ধরার ঘটনায় স্থানীয়রা তিনজনকে আটক করে আমাদের কাছে দিয়েছে। এ রকম নিয়মিত অভিযান অব্যহত থাকবে।’ অবৈধ মৎস্য শিকারিদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

হরিরামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাইজা বিসরাত হোসেন জানান, স্থানীয় জনতা কর্তৃক আটককৃত তিনজনের দুজনকে ৭ দিন করে জেল দেওয়া হয়েছে। আর একজন অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় মুচলেকা দিয়ে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জব্দ তালিকায় ইলেকট্রিক শকার, ব্যাটারি, জালসহ যাবতীয় সরঞ্জামাদি পুলিশের জিম্মায় দিয়েছি।


নওগাঁয় হাদির গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির গায়েবানা জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ২টা ৩০ মিনিটের দিকে শহরের নওজোয়ান মাঠে এই জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজ পরিচালনা করেন মাজলিসুল মোফাচ্ছেরিন নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী।

জানাজা নামাজে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, বিএনপি, জামায়াত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, হেফাজতে ইসলাম, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

জানাজা নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন, বিএনপি মনোনীত নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জাহিদুল ইসলাম ধলু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন, জেলা জামায়াতের আমির খন্দকার আব্দুর রাকিব, জেলা জামায়াতের সেক্রটারি আ স ম সায়েম, নওগাঁ-৩ (বদলগাছী ও মহাদেবপুর) আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী মাওলানা মাহফুজুর রহমান, নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামুইরহাট) আসনের জামায়াতের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের জামায়াতের প্রার্থী খবিরুল ইসলাম, নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের এবি পার্টির প্রার্থী কাজী আতিকুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নওগাঁয় নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী আরমান হোসেন, তানজিম বিন বারী, ফজলে রাব্বি, সাদনান সাকিবসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, ওসমান হাদি বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক চক্র মিলে তাকে হত্যা করেছে। হাদি দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় হাদির অনেক বড় প্রয়োজন ছিল। হাদি ভাইকে আমরা কেউ দেখিনি কিন্তু তার বক্তব্য, তার দেশপ্রেম, তার যুক্তির কাছে সকল ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদ পরাজিত হয়েছিল। এটা বুঝতে পেরেই তারা হাদি ভাইকে হত্যার জন্য গুলি করেছে। কিন্তু তারা এক হাদিকে শহীদ করেছে এখন আমাদের হৃদয়ে লক্ষ্য কোটি হাদি জেগে উঠেছে। আমরা আজকে জানাজা থেকে শপথ নিচ্ছি আমরা সকলেই একেকটা হাদি হব এবং বাংলাদেশকে আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করে ছাড়ব। আমরা ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।

নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওসমান হাদী হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। অতীতে নওগাঁতে যারা মানুষের উপর জুলুম করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সকলকে সাথে নিয়ে নওগাঁর শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা হবে।


বারদী হাইস্কুলের ১২৫ বছর পূর্তিতে সাবেক শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বারদী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে সাবেক শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়। ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য ও পেট্রোবাংলার পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান।

বারদী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও মাইটিভির সিনিয়র সাংবাদিক ইউসুফ আলীর সভাপতিত্বে এবং রোকনুজ্জমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আবু জাফর, বারদী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব ইব্রাহিম আদহাম, মুখ্য সমন্বয়ক দেওয়ান ফজলুর রহমান, লায়ন তোফাজ্জল হোসেন, প্রধান উপদেষ্টা হাজী মুজিবুর রহমান, বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আজগরসহ সাবেক শিক্ষার্থীরা।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, শিশু সাহিত্যিক শাহআলম, দেওয়ান হাবিবুর রহমান, প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন, বারদী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মোস্তফা, সোনারগাঁ থানা মহিলা দলের সভানেত্রী সালমা আক্তার, সোনালী ব্যাংকের এজিএম দেওয়ান মতিউর রহমান, ব্যাংকার মনির হোসেন, প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান, অধ্যাপক মোস্তফা কামাল প্রমুখ।

এদিকে সকালে পিঠা পুলি আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। দিনভর সাবেক শিক্ষার্থীদের আড্ডা ও স্মৃতিচারণে মুখরিত হয়ে ওঠে শিক্ষাঙ্গণ। অনুষ্ঠানে দেশ, জাতি ও প্রয়াত শিক্ষকদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণাঢ্য আয়োজন থাকলেও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়।


কুমিল্লায় ধারাবাহিক অভিযানে উদ্ধার হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র, জনমনে স্বস্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

সম্প্রতি কুমিল্লা জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে সন্ত্রাসী ও তাদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।

গত কিছুদিনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত ওসমান হাদীসহ একাধিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও তৎপর হয়ে ওঠে।

এরই অংশ হিসেবে গেল দুদিনে কুমিল্লায় র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১১-এর একটি বিশেষ অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, একটি দেশীয় এলজি ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা শহরতলীর সংরাইশ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হলে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ অবৈধ এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের আশঙ্কা ছিল বলে জানায় র‌্যাব।

এছাড়া শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ভোরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার জাঙ্গালিয়া এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৩ বীর ও র‌্যাব-১১ (সিপিসি-২)-এর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অপরাধমূলক সরঞ্জাম উদ্ধারসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসী মো. নজমুল ইসলাম শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০ ডিসেম্বর ভোর ২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত পরিচালিত এ অভিযানে শামীমের নিজ বাসভবন থেকে তিনটি স্থানীয়ভাবে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র (পাইপগান), ৬০ রাউন্ড শটগান কার্তুজ, ১৮ রাউন্ড মেশিনগান গোলাবারুদ, বিভিন্ন ধরনের গুলি, ছুরি, চাপাতি ও চাইনিজ কুড়ালসহ মোট ১০টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়া দুটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও জব্দ করা হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত শামীম জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডের সহসভাপতি হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং পূর্বে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন। একাধিক সূত্রে তাকে কুমিল্লা শহরের চিহ্নিত চাঁদাবাজ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, যত বেশি অস্ত্র ও সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হবে, জনমনে তত বেশি স্বস্তি ফিরবে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কয়েকটি সিন্ডিকেট বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ আনার পরিকল্পনা করছে।

কুমিল্লা র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক মেজর সাদমান ইবনে আলম জানান, অপরাধ নির্মূলে র‌্যাব নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে এবং অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এদিকে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মু. আনিসুজ্জামান জানান, অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারসহ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সর্বাত্মক প্রস্তুত রয়েছে।


টেকনাফ গহীন পাহাড় থেকে বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

বিজিবির বিশেষ অভিযান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী পাহাড়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ, মর্টারের শেল, বোমা তৈরির উপকরণ ও হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ডাকাতদলটি গুলি ছোড়লে আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উখিয়া (৬৪) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

বিজিবি জানায়, হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী পাহাড় ও বাহাড়ছড়া ইউনিয়নের মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন পাহাড় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি সশস্ত্র ডাকাত চক্র অস্থায়ী ঘাঁটি গড়ে তুলে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের অপহরণ, গুম, খুন এবং মানবপাচারের মতো অপরাধে জড়িত ছিল। এসব চক্র সীমান্ত এলাকায় মাদক ও চোরাচালান কার্যক্রমেও সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে।

উখিয়া (৬৪) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উখিয়া ব্যাটালিয়নের (৬৪ বিজিবি) একটি দল তিন স্তরের কৌশলে অভিযান শুরু করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে রঙ্গীখালী পাহাড়ে সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করা হলে এলাকা ঘিরে ফেলে বিজিবির সদস্যরা। এ সময় ডাকাত দলটি গুলি ছোড়লে আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে ডাকাতরা তাদের অস্থায়ী ঘাঁটি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে পালিয়ে যায়।

অভিযান শেষে পরিত্যক্ত ঘাঁটি থেকে একটি জি-৩ রাইফেল, রাইফেলের বিভিন্ন অংশ ও ম্যাগাজিন, ওয়ান শুটার গান, এলজি শুটার গান, এমএ-১ (এমকে-২ ভ্যারিয়েন্ট), একনলা গাদা বন্দুক, সিলিং, তিনটি আরজিএস হ্যান্ড গ্রেনেড, একটি মর্টারের গোলা, ১৭ কেজি গান পাউডার, হাতবোমা তৈরির উপকরণ, দেশীয় অস্ত্রসহ মোট ৩০২ রাউন্ড গুলি ও ব্যবহৃত খালি খোসা উদ্ধার করা হয়।

বিজিবির প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, এসব অস্ত্র ব্যবহার করেই ডাকাত দলটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৬৪ বিজিবি সর্বদা সতর্ক রয়েছে। ভবিষ্যতেও গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক ও সমন্বিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।


সেন্ট্রাল পিভটের যুগে দেশ, বদলে যাচ্ছে সেচব্যবস্থা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আধুনিক সেচব্যবস্থা ‘ভ্যালি ইরিগেশন সেন্ট্রাল পিভট’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। অস্ট্রিয়ার আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে এই অত্যাধুনিক সেচ প্রকল্প। এটি স্থাপন করা হবে নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের কৃষি খামারে।

বিএডিসি জানায়, বিশ্বের উন্নত কৃষি ব্যবস্থায় বহুল ব্যবহৃত সেন্ট্রাল পিভট ইরিগেশন প্রযুক্তি এবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে স্থাপন হতে যাচ্ছে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে নিচ থেকে নয়, পাইপের সঙ্গে যুক্ত স্প্রিংকলারের মাধ্যমে ওপর থেকে জমিতে পানি ছিটানো হবে। বড় আকারের কৃষিজমিকে কম সময় ও কম পানি ব্যবহার করে সেচ দেওয়ার এই আধুনিক ব্যবস্থা দেশের কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ভবানীপুর কৃষি খামারে পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটি চালু হলে বিভিন্ন খামার ও বেসরকারি উদ্যোগেও এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা। এতে একই জমিতে একাধিক ফসল ফলানো, চাষের সময় কমানো এবং পানির সাশ্রয় সম্ভব হবে। ফলে খামারের আবাদযোগ্য জমির পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে এবং আখসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

বিএডিসির বড়াইগ্রাম জোনের সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউল হক বলেন, আধুনিক কৃষিতে পানি ব্যবস্থাপনা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সেন্ট্রাল পিভট প্রযুক্তি সেচ ব্যবস্থাকে দ্রুত, স্বয়ংক্রিয় ও সাশ্রয়ী করবে। এই প্রকল্প সফল হলে দেশের বৃহৎ কৃষিখাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের মহাব্যবস্থাপক (খামার) মো. বাকি বিল্লাহ বলেন, ‘দেশে প্রথমবারের মতো এই আধুনিক সেচ ব্যবস্থা আমাদের খামারে স্থাপন হচ্ছে। এটা শুধু মিলের জন্য নয়, এ অঞ্চলের কৃষির জন্যও বড় অর্জন। আমরা আশা করছি, সেন্ট্রাল পিভট প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা সময়, শ্রম এবং পানি- তিনটিই সাশ্রয় করতে পারবো। আগে যেখানে সেচ দিতে দুদিন লাগত, সেন্ট্রাল পিভট সেটিতে কয়েক ঘণ্টায় কাজ শেষ করবে। এর ফলে আমরা একই জমিতে আখের সাথে একাধিক সাথী ফসল ফলাতে পারবো।’


বিদ্যুতের লাইনের নিরাপত্তায় ৫ শতাধিক তালগাছ ন্যাড়া

ক্ষোভে ফুঁসছে নওগাঁর মানুষ, প্রশ্নের মুখে বিদ্যুৎ বিভাগ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁ বাইপাস সড়কের দুই পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি প্রায় ৫শতাধিক তালগাছের ডালপালা কেটে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। এসব তালগাছের ওপর দিয়ে বিদ্যুতের সরবরাহ লাইনের সুরক্ষা দিতে গাছগুলোর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) অফিসের কর্মীরা। বিদ্যুৎ বিভাগের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মীরা।

পরিবেশকর্মীরা বলছেন, সরকার যখন পরিবেশ রক্ষা ও বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে তালগাছ রোপণের উদ্যোগ নিচ্ছে, সেখানে গাছগুলো এইভাবে ডালপালা কেটে ন্যাড়া করা ঠিক হয়নি। এতে হুমকির মুখে পড়বে পরিবেশের ভারসাম্য। বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেই বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব ছিল। এতে গাছও বাঁচত, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পেত। নওগাঁতে গত কয়েক বছরে সরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে সড়কের দুই ধারে হাজারো তালগাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। এর মধ্যেই নওগাঁ পৌরশহরের বাইপাস সড়কের তালগাছের পাতা কেটে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সড়কের দুইপাশে বেড়ে ওঠা এসব তালগাছের বয়স প্রায় ২০-৩০ বছর। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বিভিন্ন এলাকা থেকে তালের বীজ সংগ্রহ করে সড়কের দুইপাশে রোপণ করে। এখন এসব তাল গাছগুলোর কারনে সড়কটি সৌন্দর্যবর্ধন হয়ে উঠে। গাছগুলোর ডালপালা ছেঁটে ন্যাড়া করে ফেলার কারণে ধীরে ধীরে মরে যেতে পারে গাছগুলো। এর আগেও ডাল কেটে ফেলার কারণে কিছু গাছ মরে গেছে। গাছগুলো বাঁচাতে কারও কোনো উদ্যোগ নেই। এর আগেও সড়ক সংস্কারের নামে নির্বিচারে কাটা হয় গাছ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নওগাঁ বাইপাস সড়কের রামভদ্রপুর থেকে বটতলী বোয়ালিয়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটারে থাকা কয়েক হাজার তালগাছ। এসব গাছের উচ্চতা ১০-১২ ফুট। তালগাছের সামান্য দূরত্বে বিদ্যুতের খুঁটি। এরমধ্যে দুইপাশে থাকা প্রায় ৫শতাধিক তালগাছ মাথা ন্যাড়া অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি এসব গাছে ন্যাড়া করে ফেলায় সড়কটি সৌন্দর্য হারিয়ে গেছে।

নওগাঁ পৌরসভার বোয়ালিয়া এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, নব্বইয়ের দশকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নওগাঁ-সান্তাহার বাইপাস সড়কের দুই পাশে তালগাছগুলো রোপণ করা হয়। সেই তালগাছগুলো বড় হয়ে বছরের পর বছর ধরে শোভা ছড়াচ্ছে। বছরে দুবার বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন এসে সড়কের এক পাশের তালগাছের পাতা ছেঁটে দেন। আর এবার একদম মাথা মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, ‘এভাবে তালগাছগুলোর মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া ঠিক হয়নি বিদ্যুৎ অফিসের লোকদের। এর আগেও কিছু গাছ ন্যাড়া করে দেওয়ায় মরে গেছে। আমরা প্রতিবাদ করলেও তারা শুনে না। প্রশাসনের লোকজন সাথে নিয়ে কাটে। শুধু এখানে নয়, গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের লাইনের জন্য গাছ কাটা পড়ে।’

আরেক বাসিন্দা মুনছুর রহমান বলেন, ‘দিন দিন তালগাছ হারিয়ে যাচ্ছে। এই গাছগুলো একদিনে বড় হয়নি? বিদ্যুতের লাইন পরিষ্কারে নামে বিদ্যুতের লোকজন এসে সমানে ডালপালা কেটে একেবারে মাথা ন্যাড়া করে ফেলেছে। তালগাছের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের খুঁটিগুলো দুই-তিন হাত সরিয়ে নেওয়া যেত। কিন্তু তারা সেটি না করে গাছগুলোর ক্ষতি করলেন। মনে হচ্ছে তালগাছগুলো পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলার চিন্তা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ অফিসের লোকদের আরো ভেবেচিন্তে কাজ করা উচিত ছিল।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) নওগাঁ কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এভাবে গাছ কাটা উচিত নয়। কারণ, গাছ আমাদের জীবন বাঁচায়। কিন্তু ওনারা (বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন) কোনো কথা শোনেন না। শুধু এখানে নয়, বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের লাইনের জন্য গাছ কাটা পড়ে। গাছ না কেটে বিদ্যুতের খুঁটি একটু সরিয়ে বসালেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।’

স্থানীয় পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী নাইস পারভীন বলেন, ‘নওগাঁতে প্রতিবছর বজ্রপাতের অনেক মানুষ মারা যায়। সেখানে বজ্রপাত রোধে তালগাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব গাছ না থাকলে আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। যেখানে সরকার গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিচ্ছে সেখানে গাছগুলো ন্যাড়া করে দিয়ে নেসকো পরিবেশ বিধ্বংসী আচরণ করলো। প্রাকৃতিক বিপর্যয় কখনোই আমাদের কাছে কাঙ্খিত নয়। এমন কর্মকান্ড বন্ধ না হলে আন্দোলনের হুশিঁয়ারি দেন এই পরিবেশকর্মী।’

এ সম্পর্কে নেসকোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ কালামের তার ধারণা, তালগাছগুলো লাইন বসানোর পর লাগানো হয়েছে। তিনি বলেন, লাইন সরাতে হলে অন্যের জমির ওপর দিয়ে যাবে হয়তো, তখন আবার স্থানীয় ব্যক্তিরা বাধা দেবেন। লাইন স্থানান্তরের খরচও আছে। বিদ্যুৎ বিভাগের প্রয়োজনে লাইন সরালে বিদ্যুৎ বিভাগ খরচ বহন করে আর স্থানীয় ব্যক্তিদের প্রয়োজনে সরাতে হলে তাদের খরচ বহন করতে হয়।


banner close