বাড়ির আঙিনা ঘেঁষে পাহাড়ের ঢালে ১০ একর জমি। সুশান্ত ভাবলেন, সেই জমিতে ধান, গম চাষ না করে বরং ফলের চাষ করবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। জমিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফলের গাছ একসঙ্গে লাগিয়ে দিলেন তিনি। আজ ছয় বছর পর নানা ধরনের ফলের ভারে অবনত তার বাগানের প্রতিটি গাছ। সেই সঙ্গে আছে নানা ধরনের সবজি। এসব ফল আর সবজি বিক্রি করেই তিনি আয় করছেন লাখ লাখ টাকা।
রাঙামাটি সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সোনারাম কারবারিপাড়ার বাসিন্দা সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা। ২০১৬ সালে নিজের বাড়ির আঙিনায় ২০ প্রজাতির গাছ দিয়ে মিশ্র ফলের বাগান শুরু করেন তিনি। চার বছরের মাথায় বিভিন্ন গাছে ফল ধরা শুরু হয়। এরপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একবারের বিনিয়োগে দীর্ঘদিনের উপার্জনের পথ খুলে গেল। তিনি এখন এলাকায় একজন সফল চাষি হিসেবে পরিচিত।
সরেজমিনে তার মিশ্র ফল বাগান পরিদর্শন করে দেখা গেছে, গাছে গাছে ঝুলছে মাল্টা, পেঁপে আর ড্রাগন ফ্রুট। এ ছাড়া রয়েছে আম, কাঁঠাল, লটকন, লিচু, আমলকী, তেঁতুল, লেবু, বেল, নারকেল, সুপারি, রাম্বুটানসহ অন্যান্য বারোমাসি ফল। সেই সঙ্গে রয়েছে নানা ধরনের শীতকালীন সবজি।
সুশান্ত বলেন, ‘এবার বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। তার পরও ড্রাগন ও মাল্টা বারি-১-এর ফলন বেশ ভালো হয়েছে। কিছুদিন পরই বরইয়ের সিজন আসবে। বার্ষিক ১০ লাখ টাকার ফল, সবজি বিক্রি করি। কীটনাশক, ওষুধ, আনুষঙ্গিক খরচ ও শ্রমিকের মজুরি মেটানোর পরও ৩-৪ লাখ টাকার মতো থাকে। তা দিয়েই আমার সংসার খরচ চলে যায়।’
তিনি আরও বলেন, তাকে দেখেই অনেক যুবক মিশ্র ফল ও সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তোলার উৎসাহ পেয়েছেন। এতে পাহাড়ে বৈচিত্র্যময় কৃষিপণ্যের আবাদ হচ্ছে। পাশাপাশি পাহাড়ের মানুষও ভেজালমুক্ত (ফরমালিন) ফল, শাকসবজি পাচ্ছেন।
সুশান্তকে দেখে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন সোনারাম কারবারিপাড়ার বাসিন্দা জয়মঙ্গল চাকমা। জয়মঙ্গল চাকমা রাঙামাটি সরকারি কলেজে স্নাতকে অধ্যয়নরত। তিনি বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি গ্রামে ছাত্র পড়িয়ে নিজের হাতখরচ জোগাড় করি। তবে এতে ভালো আয় হচ্ছে না। তা ছাড়া গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই দরিদ্র। তাই আমিও সুশান্ত দাদার মতো সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তোলার কথা ভাবছি।’
স্থানীয় শ্যামল চাকমা বলেন, ‘সুশান্তের বাগান পরিচর্যা এবং ফল ও সবজি বাজারজাত করার কাজ করছেন স্থানীয় অনেক নারী-পুরুষ। এতে গ্রামের দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানও হচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটি অঞ্চলের উপপরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, ‘সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তুলে সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা পুরস্কৃত হয়েছেন। তার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আরও অনেকেই কৃষিকাজে মনোযোগ দিয়েছেন। কৃষি উদ্যোক্তা হতে কেউ যদি আগ্রহ প্রকাশ করে এগিয়ে আসেন, আমরা কৃষি বিভাগ থেকে তাদের পরামর্শ, উপকরণসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পানি সংকটসহ নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। ডাক্তার এবং জনবল সংকটের অজুহাতে রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে হাসপাতালের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখা যায়।
মাগুরা সদর উপজেলার জাগলা বাটিকাবাড়ি গ্রাম থেকে গত বুধবার মাথার যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হওয়া নুরজাহান বেগম অভিযোগ করেন, বুধবার রাত থেকেই হাসপাতালের চতুর্থ তলাসহ সবখানেই ছিল পানি সংকট। বাইরে থেকে পানি কিনে এনে খাবার এবং টয়লেটের কাজ সারতে হচ্ছে। টানা চার দিন হাসপাতালে পানি না থাকায় রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ওয়ার্ডের নার্স এবং ওয়ার্ডবয়দের মাধ্যমে জানা গেছে পানির লাইনের কাজ শুরু হলেও মধ্যে ঠিক হতে কিছু সময় লাগবে।
একই ফ্লোরে ভর্তি হওয়া আরেক রোগী সুমাইয়া জানান, বাথরুমে পানি না থাকায় বাইরে থেকে পানি কিনে আনতে হচ্ছে। হাসপাতালের ভেতরে নোংরা পরিবেশ, দুর্গন্ধ, মশা, মাছি এবং তেলাপোকার অত্যাচার নিত্যদিনের। ফ্লোরে রোগীদের আরো বেশি সমস্যা। ডেঙ্গু রোগী, শিশু, নারী-পুরুষ একই ওয়ার্ড গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। কিছু জায়গায় ফ্যান, লাইট না থাকায় গরমে কষ্ট করতে হচ্ছে।
পানি না থাকার বিষয়টি কয়েকটি বাথরুমে যেয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন ফ্লোরে রোগীদের বেডের আশেপাশে মশা মাছি এবং তেলাপোকার অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
মাগুরা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহেদ হাসান টগর অভিযোগ করেন, পানি সংকট ছাড়াও দুটি লিফট অধিকাংশ সময়ই থাকে নষ্ট। রোগী ও স্বজনরা সিঁড়ি বেয়ে উঠানামা করতে হয়। ডাক্তার এবং জনবল সংকটের দোহাই দিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নিজেদের দায় এড়িয়ে চলেন। ডাক্তার এবং নার্সদের আন্তরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ সাধারণ রোগীদের। অধিকাংশ ইমারজেন্সি রোগীদের ভর্তির পর পরই ফরিদপুর এবং ঢাকা রেফার করা হয়। সরকারি বিনামূল্যের ওষুধ রোগীদের নামমাত্র দেওয়া হলেও বাইরে থেকেই কিনতে হয় বেশি।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায় মো. মোহসিন উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি নিজে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে আরএমওর সাথে কথা বলতে বলেন।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মামুন-উর-রশিদ বলেন, পানির দুটি পুরাতন মোটর রয়েছে যা প্রায় নষ্ট হয়। গত বৃহস্পতিবার গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের বাথরুমের পানির ট্যাবগুলো বিভিন্ন সময় চুরি হয়ে যাওয়ায় ট্যাংকির পানি শেষ হয়ে যায়। ফলে রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। বাড়তি রোগীর চাপে ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খেতে হয়। ডাক্তার এবং জনবল সংকট দীর্ঘদিনের। খাতা-কলমে আড়াইশ বেড হলেও একশত বেডের জনবল এবং জিনিসপত্র দিয়ে প্রায় ৩৫০ জন রোগীকে আবাসিক চিকিৎসা দিতে হয়।
এছাড়া আউটডোরে প্রতিদিন সাত থেকে আটশ রুগীর সেবা দিতে হয়। গত এক বছর আউট
সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগকৃত পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে। ফলে তাদের দিয়ে কাজ করানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ পারভেজ জানান, শুক্রবার দোকানপাট বন্ধ থাকায় পানির লাইনের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে কাজ সম্পন্ন হয় নাই যা শিগগিরই সম্পন্ন হবে। হাসপাতালের ৫৬টি সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও পানির ট্যাপ প্রায় চুরি হচ্ছে এটা কর্তৃপক্ষের সচেতন হওয়া উচিত।
আজ রোববার থেকে ঢাকের বাদ্যের সঙ্গে উলুধ্বনিতে ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে।
এদিকে সারাদেশের ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন প্রশাসন। গত বছর সারাদেশের ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ৮৯৪টি দুর্গাপূজা বেশি হচ্ছে।
দৈনিক বাংলার ব্যুরো, জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
আহসান হাবিবুল আলম, চট্টগ্রাম: ঢাকের বাদ্যের সঙ্গে উলুধ্বনিতে ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আজ থেকে। ধূপ-ধুনুচি, পঞ্চপ্রদীপ, উলুধ্বনি, শাঁখের আওয়াজ আর ঢাকের তালে মুখরিত হয়ে উঠেছে পূজামণ্ডপগুলো। গত ২১ সেপ্টেম্বর রোববার ছিল শুভ মহালয়া। মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের শুরু হয়। পঞ্চমীর দিনে মণ্ডপে মণ্ডপে ছিল দেবীর বরণ ও চণ্ডীপাঠ। দুর্গাতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। আজ থেকে ষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হলো মূল উৎসব। গত বছরের চেয়ে ১৯টি বেড়ে চট্টগ্রাম জেলায় ও নগরে এবার সর্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপের সংখ্যা ১ হাজার ৯০৬টি। যার মধ্যে জেলায় ১ হাজার ৬১৪টি ও নগরীতে ২৯২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি দুর্গাপূজা হচ্ছে বেশ কিছু পারিবারিক মণ্ডপেও।
দুর্গাপূজা উদযাপনকে নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি। চট্টগ্রামের প্রতিটি পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের জন্য প্রশাসন, পুলিশ, রাজনৈতিক দলের নেতা এবং পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্যদের নিয়ে এরই মধ্যে প্রস্তুতিমূলক সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা বিবেচনায় এবার পূজামণ্ডপকে তিনভাগে ভাগ করে অধিক গুরুত্বপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৪০টি পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। বাকিগুলোতেও কঠোর নজরদারি রাখা হবে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় ১৭ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৩২০-১০৮৩৯৮ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহ্যের এক অনন্য প্রতীক। পূজা উদযাপন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন করার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় মজুমদার দোলন বলেন, ‘এবার জেলায় সর্বজনীন মণ্ডপের সংখ্যা ১৯টি বেড়ে ১ হাজার ৬১৪টি হয়েছে। পূজা উদযাপনের সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, সুন্দরভাবে পূজা সম্পন্ন হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথ জানান, এবার সর্বজনীন পূজামণ্ডপের সংখ্যা ২৯২টি। আমরা ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, সিএমপি কমিশনার, জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মিটিং করেছি। সেখানে সুন্দরভাবে দুর্গোৎসব ও প্রতিমা বিসর্জনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
আগামী ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি হবে।
পূজার কেনাকাটায় জমজমাট চট্টগ্রামের মার্কেট: দুর্গাপূজা উপলক্ষে কেনাকাটায় জমে উঠেছে চট্টগ্রামে চট্টগ্রামের মার্কেটগুলো। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন বিপণিবিতান, বাজার ও শপিংমলে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। ক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এবার পণ্যের দাম বেশি হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম গত বছরের মতোই রয়েছে। কিছু কিছু পণ্যে দাম বেড়েছে। অনেকে এবার ভারতীয় কাপড় চাইছেন, যার দাম স্থানীয় কাপড়ের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই বেশি।
পূজার কেনাকাটায় জামা-কাপড় ও অলংকারে আগ্রহ বেশি ক্রেতাদের। কিশোরী ও তরুণীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে নতুন ডিজাইনের শাড়ি, থ্রি-পিস ও গয়না। পুরুষদের পাঞ্জাবি, শার্ট, জিন্স ও ফ্যাশনেবল জুতো বিক্রি হচ্ছে ব্যাপকহারে। নগরীর নিউমার্কেট, টেরিবাজার, মিমি সুপার মার্কেট, আফমী প্লাজা, সানমার ওশান সিটি ও রিয়াজ উদ্দিন বাজারে ক্রেতাদের ভিড় তুলনামূলক বেশি লক্ষ্য করা গেছে। পূজা উপলক্ষে বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
জানা গেছে, পূজামণ্ডপগুলোতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সার্বক্ষণিক মণ্ডপগুলোর খোঁজ-খবর নিচ্ছেন পুলিশ। এছাড়া প্রতিটি পূজামণ্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে কাজ করেছেন উপজেলা প্রশাসন। একই সাথে প্রতিদিন একজন করে সরকারি কর্মকর্তা এসব মণ্ডপগুলো মনিটরিং করার কথা রয়েছে।
এ বছর ফুলবাড়িয়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় ৬৫টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। স্বাচ্ছন্দ্যে পূজা পালনের জন্য পুলিশ মণ্ডপগুলোকে সাধারণ, গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক গুরুত্বপূর্ণ তিনটি স্তরে ভাগ করে নিরাপত্তার চাদরে ডেকে রেখেছেন। অধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সার্বক্ষণিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া পুলিশের মোবাইল টিম আছে তারাও নিয়মিত তদারকি করবেন। একই সাথে প্রতিটি মণ্ডপে ৬ জন করে আনসার সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।
নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় সৈয়দ হারুন ফাউন্ডেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘মেধা উৎসব ২০২৫’। গতকাল শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সেনবাগ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ২০২৫ সালের এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ (A+) প্রাপ্ত ৯৮ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও টপস্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন সৈয়দ হারুন এমজেএফ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মিজানুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার বোরহান উদ্দিন এবং সৈয়দ রুহুল আমিন স্মৃতি একাডেমির সিইও মোঃ আবদুস ছাত্তার (বিএসসি, এলএলবি, এমএড)।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বাতাকান্দি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি সৈয়দা শারমিন আক্তার, বীজবাগ নবকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আমিন উল্যাহ বিএসসি, নবীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মুরশিদ হোসাইন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মনিরুল ইসলাম, উপজেলা মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিরুজ্জামান, ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ইমরান হোসেনসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ গড় নম্বর অর্জনকারী দুই শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়। বাকি ৯৬ জন শিক্ষার্থীকে নগদ অর্থ ও সম্মাননা সনদ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে উপজেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ (A+) অর্জনের জন্য বীজবাগ নবকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়কে সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সম্মাননা প্রদান করা হয়। সর্বোচ্চ পাসের হার অর্জন করে সেনবাগ উপজেলায় সেরা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি পায় নবীপুর উচ্চ বিদ্যালয়। মাদ্রাসা পর্যায়ে কল্যান্দী ফয়জুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে এবং ভোকেশনাল পর্যায়ে সেরা প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয় হোসনা হোসাইন টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, “এই মেধাবী প্রজন্মই আগামীর আলোকবর্তিকা।” তারা আরও উল্লেখ করেন, শুধু ভালো ফল নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধ, সততা, দায়িত্বশীলতা ও দেশপ্রেম ধারণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সমাজ ও দেশের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। অতিথিরা কৃতী শিক্ষার্থীদের অধ্যবসায় এবং অভিভাবক ও শিক্ষকদের ত্যাগ ও অবদানকেও স্বীকৃতি জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথি ও অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, এ ধরনের উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের আরও অনুপ্রাণিত করবে এবং ভবিষ্যতে বড় লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে তারা সেনবাগের শিক্ষা অঙ্গনে সৈয়দ হারুন ফাউন্ডেশনের ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এ ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
সেনবাগ উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়, যেখানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বালুচর এলাকা থেকে একটি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
আজ শনিবার দুপুরে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেনেডটি উদ্ধার করে মতলব উত্তর থানা পুলিশ। পরে সেটি নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করা হয়। সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিটের মাধ্যমে আগামীকাল এটি নিস্ক্রিয় করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরে এক শিশু নদীর পাড় থেকে গ্রেনেডটি পেয়ে সারাদিন সেটি নিয়ে খেলাধুলা করে। বিষয়টি নজরে আসলে তারা জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গ্রেনেডটি উদ্ধার করে।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হক বলেন, স্থানীয়রা গ্রেনেডে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। সেনা সদস্যরা গ্রেনেডটি উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নেওয়ার ব্যবস্থা করে।
চাঁদপুরে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান বলেন, খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রেনেড উদ্ধার করেছে। ইতোমধ্যে বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে জানানো হয়েছে। আগামীকাল গ্রেনেডটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করা হবে।
খাগড়াছড়িতে স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের মধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছেন জেলা প্রশাসন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
খাগড়াছড়ির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আদেশ দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং জনগণের জান ও মালের ক্ষতিসাধনের আশঙ্কা রয়েছে। তাই ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারির আদেশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আজ দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় এই আদেশ জারি করা হয়। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
১৪৪ ধারা জারির ফলে খাগড়াছড়ি সদর ও পৌর এলাকায় চার বা ততোধিক মানুষের জমায়েত, মিছিল, সমাবেশ, মাইকিং ও অস্ত্র বহনসহ যেকোনো ধরণের উস্কানিমূলক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
এ দিকে, স্কুলশিক্ষার্থীকে ধর্ষণে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকে খাগড়াছড়িতে চলছে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ। শনিবার সকাল থেকে অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ির সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও গাড়ি চলাচল করছে না।
জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে টায়ার পুড়িয়ে, গাছ কেটে ব্যারিকেড করেছেন অবরোধকারীরা। আলুটিলায় একটি এ্যাম্বুলেন্স ভাংচুরের শিকার হয়।
এ ছাড়া, খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সাথে দীঘিনালা, পানছড়ি, রামগড়, মহালছড়িসহ ৯ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এ দিকে, এ দিন দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙ্গালীদের দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এর আগে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়ি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সিঙ্গিনালায় প্রাইভেট পড়া শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে তিনজন বাঙালি যুবক কর্তৃক সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রী।
উক্ত ঘটনায় শয়ন শীল (১৯) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও বাকি ২ জন এখনো পলাতক রয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র জনতা ২৪ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে এবং পরদিন (২৫ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ি জেলায় আধাবেলা অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।
অবরোধে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সাজেকে প্রায় ২ হাজার এবং রাঙামাটি শহরে সহশ্রাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, পেশাজীবীদের মধ্যে সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি নীতি সচেতন। না হলে এই সমাজ টিকে থাকবে না। সাংবাদিকরা অসীম চাপের মধ্যে দিয়ে অসীম বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে জাতির সামনে সত্যটা তুলে ধরে। শনিবার কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের সভা কক্ষে কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) এ সাধারণ সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের প্রকৃত স্বাধীনতা বলতে কিছু নেই। খুব কম প্রতিষ্ঠানেই এটি আছে তবে আমার জানা নেই। সাংবাদিকতার মূল ভিত্তি হচ্ছে সততা। একজন ভালো সাংবাদিক কখনো মিথ্যা বা পক্ষ তুষ্ট খবর প্রচার করে না। সত্য তথ্য যাচাই করে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে খবর পরিবেশন করাই হচ্ছে একজন সাংবাদিকের মূল কাজ। এর বাইরে যারা করে তারা কোন অর্থে সাংবাদিকের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, একটি নিউজ যেমন দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিতে পারে তেমনি সর্বনাশ ও করতে পারে। এক্ষেত্রে সংবাদ পরিবেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ, সত্যনিষ্ঠ খবর সমাজে শান্তি আনে। আর মিথ্যা খবর সমাজে শৃংখলাকে ধ্বংস করে।
কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন ও প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।
কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামিম উল হাসান অপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, দপ্তর সম্পাদক মো. আবু বকর।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, কুষ্টিয়া এডিটর ফোরামের সভাপতি মজিবুল শেখ, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকা'র সভাপতি আবু বকর সিদ্দিকসহ আরও অনেকে।
সভায় কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যসহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। সভায় কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের তারিখ ও নিবার্চন পরিচালনা কমিটির কমিশনারদের নাম ঘোষণা করা হয়।
কারিগরি শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের লক্ষ্যে ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন ২০২৫-এর প্রাতিষ্ঠানিক পর্বের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার প্রতিষ্ঠানটির ০৬টি টেকনোলজি থেকে মোট ২০টি উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এতে প্রথম স্থান অর্জন করে এ মাল্টি লেভেল ব্রিজ ডেট কন্টেইস রেলওয়ে অ্যান্ড রোডওয়ে( A Multi-level Bridge that Contains Railway and a Roadway), দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে রভো গার্ড স্মার্ট ভেহিক্যাল সেফটি সিস্টেম ( Robo Guard Smart Vehicle safety system) এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করে ফ্লটিং হাউজ (Floating house) শীর্ষক উদ্ভাবন।
কম্পিটিশনে তিন সদস্য বিশিষ্ট বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর অধ্যক্ষ মো: রেজাউল করিম, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন পাঠান, সহকারী কমিশনার (শিক্ষা) মোঃ মনিরুজ্জামান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন
Accelerating and Strengthening Skills for Economic Transformation (ASSET) প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত উদ্ভাবনী চিন্তা ও সৃজনশীল কার্যক্রমের অনন্য এ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে
প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালী বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শোয়াইব আহমাদ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়ের আঞ্চলিক পরিদর্শক মুহাম্মদ ছাদেকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো: রেজাউল করিম।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শোয়াইব আহমাদ খান বলেন, কারিগরি শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন উদ্ভাবন ও আবিষ্কার সবার সামনে তুলে ধরার অনন্য এ প্রতিযোগিতাটি দেশব্যাপী সরকারি- বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ মোট ২২৭টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে
অনুষ্ঠিত হয়। এর অংশ হিসেবে ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কারিগরি শিক্ষাঙ্গণের সর্ববৃহৎ এ প্রতিযোগিতা আয়োজন করে।
সবার জন্য উন্মুক্ত এ প্রতিযোগিতায় ফেনীর স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, কলকারখানা ও সুশীলসমাজের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যম কর্মীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন ২০২৫-এর আঞ্চলিক পর্ব আগামী অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এবং জাতীয় পর্বের প্রতিযোগিতা ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী তিনটি উদ্ভাবনী প্রকল্পের উদ্ভাবকদের প্রদান করা হবে আকর্ষণীয় পুরস্কার।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের এক শিক্ষার্থী জার্মানির Technische Hochschule Mittelhessen (THM), University of Applied Science Mittlehessen–এ তিন মাস মেয়াদি Erasmus+ MSc Exchange Program-এ অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। তিনি ২০১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মোস্তাকিম মুসুল্লী পিয়াস। তিনি ইউরোপে এ প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া আইসিটি বিভাগের প্রথম শিক্ষার্থী। শনিবার তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ দপ্তর বরাত এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। আগামী মাসের ২ তারিখ রাতে রওয়ানা দিবেন তিনি। তিন মাস পর ২২ তারিখ দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, Erasmus+ MSc Exchange Program ইউরোপীয় ইউনিয়নের KA171 উদ্যোগ-এর আওতায় পরিচালিত হয়। এর মাধ্যমে অংশীদার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা বিদেশে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়ন ও গবেষণার সুযোগ পান। অংশগ্রহণকারীরা মাসিক অনুদান-সহ আর্থিক সহায়তা পান, যা বিদেশে অবস্থানকালীন জীবিকা নির্বাহে সহায়ক হয়।
মোস্তাকিম মুসুল্লী পিয়াস বলেন, ‘আমি ২ তারিখ রওনা দিচ্ছি এবং তিন মাস পর যথারীতি দেশে ফিরবো। অনেকে এ সুযোগে বাহিরে থেকে যায়। কিন্তু দেশের স্বার্থে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রাম শেষ করতে আবারও ফিরবো। আমার থিসিস ফিল্ড হচ্ছে ‘সাইবার সিকিউরিটি’ নিয়ে কাজ করা।’
এই সাফল্য আইসিটি বিভাগ তথা পুরো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সংযোগকে আরও শক্তিশালী করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ভিশনের পথে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন আইসিটি বিভাগ।
পিরোজপুরে টাইফয়েড টিকা প্রদানের বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিস গণযোগাযোগ অধিদপ্তর এ কর্মশালার আয়োজন করে।
“শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এবং ইউনিসেফের আর্থিক সহায়তায় কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে পিরোজপুরের বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খানের সভাপতিত্ত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন - গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফায়জুল হক,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন -পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. মতিউর রহমান।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা তথ্য অফিসের উপ পরিচালক পরীক্ষিত চৌধুরী।
এসময় পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম রেজাউল ইসলাম শামীম, সাধারণ সম্পাদক এস এম তানভীর আহম্মেদ, জেলা প্রেসক্লাব, পিরোজপুরের সভাপতি এম এ জলিল, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর মুক্তবার্তার(সম্পাদক) এস এম সোহেল বিল্লাহ (কাজল) সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু জাফর সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, টাইফয়েড একটি সংক্রামক রোগ। টিকা গ্রহণের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনকে সফল করতে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টিকাদান কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণকে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে সংবাদকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন রেজিঃ নং বি- ২১৪০ কে শ্রম অধিদপ্তরের ট্রেড ইউনিয়ন শাখা কর্তৃক (সিবিএ) ঘোষণা করায় কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিকে ফরিদপুর সার্কেল থেকে সংবর্ধনা প্রদানের লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট ওজোপাডিকো বিদ্যুৎ ভবনের ৩য় তলায় কনফারেন্স রুমে এ সভার আয়োজন করা হয়। পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি খন্দকার আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাজিম হোসেনের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন টিটু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী, গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আশরাফ হোসেন সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান, মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি মোঃ আনোয়ার জাহিদ, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল, শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি সালেহ মুন্সি, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, মশিউর রহমান, আব্দুল হাকিম, মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সহ প্রস্তুতি সভায় ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার এবং ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলার বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন।
ফরিদপুর জেলার সভাপতি খন্দকার আব্দুল আউয়াল জানান, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শ্রম কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম অধিদপ্তর থেকে (সিবিএ) হিসেবে আমরা ডিক্লিয়ারেশন পেয়েছি। ওজোপাডিকোতে বিদ্যুৎ শ্রমিকদের নিয়ে একটি মাত্র সংগঠন পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন যারা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে কাজ করে।
তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে শুধু আমাদের প্রতিষ্ঠান নয় সারা বাংলাদেশের কোন প্রতিষ্ঠানেই শ্রমিক কর্মচারীরা ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারে নাই। সাধারণ শ্রমিক কর্মচারীরা আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের দাবি তুলে ধরতে পারে নাই সেটাও শেখ হাসিনার সরকার বন্ধু করে দিয়েছিল। বিগত ৫ আগস্টের পরে ট্রেড ইউনিয়ন করার মত একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে এবং সেই পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে আমরা শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করছি। বর্তমানে পশ্চিমাঞ্চলের ২১ টি জেলায় কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান তাদের নেতৃত্বে এই সংগঠনটি সুশৃংখলভাবে শ্রমিক কর্মচারীদের সুবিধার জন্য কাজ করে এগিয়ে যাচ্ছে।
বরিশালে এ বছর রূপালী ইলিশের ভরা মৌসুম শেষ হতে চলেছে, কিন্তু নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ দেখা মেলেনি। মা ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম রক্ষার জন্য আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সরকারি ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই সময়ে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।
বরিশালের উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলী সুজা জানিয়েছেন, সরকারিভাবে নির্ধারিত এই নিষেধাজ্ঞা শতভাগ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও তালিকাভুক্ত জেলেদের সঙ্গে ইতোমধ্যেই বৈঠক করা হয়েছে।
মেঘনা নদী বেষ্টিত হিজলা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম জানিয়েছেন, গত বছর সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এ বছর পূর্ণিমা ও আমাবস্যার হিসাব অনুযায়ী ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ধার্য করা হয়েছে।
বরিশালের পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে দেখা গেছে, মৌসুম শেষ হতে মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও ইলিশের সরবরাহ কম এবং দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মোকামের আড়তদার নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, শনিবার মোট দেড়শ’ মনের মতো ইলিশ মোকামে উঠেছে, যেখানে এর আগের দিন ছিল আড়াইশ’ মণ। দামও বেড়েছে- এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১৭৫ টাকায়, এলসি সাইজের (৭০০-৯০০ গ্রাম) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯০০ টাকায় এবং ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৫০০ টাকায়।’
মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নদীতে ইলিশ কমে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে জলবায়ুর পরিবর্তন, পানি সংকট, ডুবোচর, নাব্য সংকট এবং অবৈধ কারেন্ট জাল ব্যবহারের বৃদ্ধি। সাগরের উপর জেলেদের নির্ভরতা বাড়লেও, সেখান থেকেও মোট মাছের ৬০ ভাগ আসে, বাকি ৪০ ভাগ নদী ও অন্যান্য উৎস থেকে আসে। এ কারণে নদীর ৪০ ভাগ ইলিশ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
বরিশাল মেহেন্দীগঞ্জের উলানিয়া এলাকার জেলে তোফায়েল হোসেন বলেন, ‘নদীতে ইলিশ এখন কিছুটা মিলছে, তবে আসন্ন ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় এই সময়ের আয় অনেকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম আকন্দও জানিয়েছেন, ইলিশ আহরণ কমার কারণে দামও কমছে না এবং চলতি বছরের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় আরও কম হতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব আসম হান্নান শাহের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার বাদ আছর হান্নান শাহের ঘাগটিয়াস্থ নিজ বাড়ি আঙ্গিনায় আলোচনা সভা, কোরআন খানি, কবর জিয়ারত, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রয়াত নেতা হান্নান শাহের সুযোগ্য উত্তরসূরী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নান।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার পরিচালনায় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রবীণ নেতা আব্দুল করিম বেপারী, জেলা ও উপজেলা বিএনপি নেতা আফজাল হোসাইন, আজগর হোসেন খান, জেলা মহিলা দলের সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব ফকির ইস্কান্দার আলম জানু, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য ও কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফরিদুল আলম বুলু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোঃ ফরিদ শেখ, সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ইমরান হোসেন শিশির, উপজেলা শ্রমিকদলের আহ্বায়ক মোশারফ হোসেন মেম্বার, সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম মেম্বার, উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক মজিবুর রহমান টিক্কা, সদস্য সচিব মুকুল ফকির প্রমুখ। এছাড়া উপজেলার বিএনপির ১১টি ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজের নেতৃত্বে প্রয়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহের কবরে দলীয় নেতৃবৃন্দ ফাতেহাপাঠ এবং ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
উল্লেখ্য, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ১/১১ এর প্রথম প্রতিবাদী কন্ঠস্বর প্রয়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ্ ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের র্যাফেলস হার্ট সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর আর ১১ অক্টোবর ১৯৪১ সালে গাজীপুরের কাপাসিয়ার ঘাগটিয়া ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন জানাতে শুক্রবার নিউইয়র্কে তাঁর হোটেল স্যুইটে একত্রিত হন বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতা।
তাঁরা বাংলাদেশকে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সহযোগিতা ও গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিজামি গঞ্জাভি আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের (এনজিআইসি) সহ-সভাপতি ভাইরা ভিকে-ফ্রেইবারগার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এনজিআইসি’র নামকরণ করা হয়েছে খ্যাতনামা একাদশ শতকের পারস্য কবি নিজামি গঞ্জাভির নামে।
উচ্চপর্যায়ের এই দলে ছিলেন স্লোভেনিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বরুত পাহোর, সার্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বোরিস তাদিচ, লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এগিলস লেভিটস, ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বেলজিয়ামের সাবেক প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল, গ্রিসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জর্জ পাপান্দ্রেউ, বুলগেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট রোসেন প্লেভনেলিভ ও পেতার স্তোইয়ানোভ, ক্রোয়েশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো যোসিপোভিচ, বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সাবেক রপ্রেসিডেন্ট ম্লাদেন ইভানিচ এবং মরিশাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট আমিনা গুরিব-ফাকিম।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কমনওয়েলথের সাবেক মহাসচিব, জর্জিয়ার সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চারজন সাবেক সভাপতি, একাধিক সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিশ্বব্যাংকের সাবেক সহ-সভাপতি ও এনজিআইসি’র সহ-সভাপতি ইসমাইল সেরাগেলদিন, মানবাধিকার সংগঠন রবার্ট এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস-এর প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এবং জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি-এর ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা।
নেতৃবৃন্দ অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্ব ও আজীবন দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদানের প্রশংসা করেন। তাঁরা বলেন, ‘আমরা আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন জানাতে এসেছি। আমরা আপনার পাশে আছি।’
তাঁরা উল্লেখ করেন, প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে দীর্ঘ ১৬ বছরের দুর্নীতি, শোষণ ও কু-শাসনের কারণে দেশটি এখন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
বিভিন্ন নেতা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দেশ পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। তাঁদের একজন বলেন, ‘আমরা আপনার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। যে কোনো পরামর্শ বা সহায়তা প্রয়োজন হলে জানাবেন।’
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সফরকারী কেরি কেনেডি দেশের মানবাধিকার অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, ‘মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আপনাদের অর্জন অসাধারণ।’
জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির নির্বাহী পরিচালক মেলান ভারভিয়ার জানান, তাঁদের প্রতিষ্ঠান শিগগিরই বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবের প্রতি আনুষ্ঠানিক সমর্থন ঘোষণা করবে। এনজিআইসি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসমাইল সেরাগেলদিন বলেন, ‘আপনাদের প্রয়োজন হলে আমরা আছি।’
সম্মেলনে প্রফেসর ইউনূস এভাবে অপ্রত্যাশিত সমর্থন পেয়ে গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত। আপনাদের একসঙ্গে আমাদের সমর্থনে দাঁড়ানো সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমি একেবারেই মুগ্ধ।’
তিনি বাংলাদেশের অবস্থা তুলনা করেন একটি বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বেঁচে ফেরার সঙ্গে। তাঁর ভাষায়, ‘দেশটি গত ১৬ বছর ধরে একটি ভূমিকম্পের মধ্যে ছিল। এর মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৯।’
প্রফেসর ইউনূস আরও বলেন, সীমিত সম্পদের কারণে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ‘মানুষ তাৎক্ষণিক পরিবর্তন দেখতে চায়। কিন্তু আমাদের অবশ্যই তরুণদের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে—তারা একটি নতুন বাংলাদেশ খুঁজছে।’
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সমর্থন করার আহ্বান জানান। প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আমাদের দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। আপনাদের পরামর্শ, সহযোগিতা ও নৈতিক শক্তি আমাদের জন্য অমূল্য।’
সভায় এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।