বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
চাঁদপুরে ৭ খুন

ক্ষোভে প্রথমে জাহাজের মাস্টারকে, ধরা পড়ার ভয়ে সহকর্মীদের হত্যা

ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৯:৩৮

চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে সারবহনকারী এমভি আল বাখেরা জাহাজে ৭ জন খুনের ঘটনায় তদন্তের ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।

এ ঘটনায় আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান (২৬) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি সুকানির সঙ্গে ইঞ্জিন রুমে কাজ করতেন। গতকাল মঙ্গলবার বাগেরহাটের চিতলমারি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১।

তার কাছ থেকে ১টি হ্যান্ড গ্লাভস, ১টি লোটো ব্যাগ, ঘুমের ঔষধের খালি পাতা, নিহতদের ব্যবহৃত ৫টি ও আকাশের নিজের ২টিসহ ৭টি মোবাইল ফোন এবং বিভিন্ন জায়গায় রক্ত মাখানো নীল রংয়ের ১টি জিন্স প্যান্ট উদ্ধার করা হয়।

কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান, দীর্ঘ ৮ মাস ধরে বেতন ভাতা না পাওয়া ও দুর্ব্যবহারের ক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান প্রথমে জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে ধরা পড়ার ভয়ে একে একে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বরাতে তিনি জানান, আকাশ প্রায় ৮ মাস ধরে এমভি-আল বাখেরা জাহাজে চাকরি করছে। জাহাজের কর্মচারীরা ছুটি ও বেতন-বোনাস সময় মতো পেতো না এবং বিভিন্ন ধরনের বিল কর্মচারীদের না দিয়ে জাহাজের মাস্টার একাই ভোগ করতেন বলে জানিয়েছেন গ্রেপ্তার আকাশ।

আকাশ আরও জানায়, জাহাজের মাস্টার সব কর্মচারীর উপর বিনা কারণে রাগারাগি করতো এবং কারোর উপর নাখোশ হলে তাকে কোন বিচার বিবেচনা ছাড়াই জাহাজ থেকে নামিয়ে দিতো। এমনকি তাদের বকেয়া বেতনও দিতো না। এ বিষয়ে গ্রেপ্তার আকাশ জাহাজের সবাইকে প্রতিবাদ করতে বললে কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করতো না। মাস্টারের এসব কার্যকলাপের কারণে আকাশের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই ক্ষোভ থেকে তাকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি।

গত ১৮ ডিসেম্বর জাহাজের বাজার করার জন্য ইরফান পাবনার একটি বাজারে নেমেছিলেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি সেখান থেকে তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কিনে নিজের কাছে রাখেন। এছাড়া যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সেটি নিরাপত্তার জন্য আগেই জাহাজে রাখা ছিল। আগের দিন রাতের খাবার রান্নার সময় আকাশ জাহাজের বাবুর্চির অগোচরে খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। সুকানি জুয়েল এবং গ্রেপ্তার আকাশ ছাড়া সবাই রাতের খাবার খেয়ে নিজেদের কেবিনে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে সাহারা বিকন এলাকায় আরও ৮-১০টি জাহাজের সঙ্গে সুকানি জুয়েল এবং গ্রেপ্তার আকাশ তাদের জাহাজটি নোঙ্গর করেন। পরবর্তীতে সুকানি জুয়েল রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পরিকল্পনা অনুযায়ী আকাশ রাত ৩টার দিকে প্রথমে মাস্টার কিবরিয়াকে চাইনিজ কোড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। ঘটনা যাতে জানাজানি না হয় সে জন্য তিনি একে একে সবাইকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন।

পরবর্তীতে আনুমানিক ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সব জাহাজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলে আকাশ নিজে জাহাজ চালাতে থাকেন। এক পর্যায়ে মাঝিরচর নামক এলাকায় জাহাজটি আটকা পড়লে পাশ দিয়ে যাওয়া ট্রলারে বাজার করার কথা বলে উঠে পালিয়ে যান। তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে বাগেরহাটে চিতলমারি এলাকায় আত্মগোপনে চলে যান।

এর আগে গত সোমবার চাঁদপুরের মেঘনা নদীর হাইমচর এলাকায় সারবাহী জাহাজ এমভি আল-বাখেরা থেকে ৫ জনকে মৃত ও ৩ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে ২ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এমভি-আল বাখেরা জাহাজে খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, কিবরিয়া (৫৬), সবুজ (২৭), সজীবুল ইসলাম (২৯), মাজেদুল ইসলাম মজিব (১৬), আমিনুর মুন্সি (৪২), সালাউদ্দিন মিয়া (৪১), ও রানা। আর জুয়েল নামে একজন গুরুতর জখম হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

এদিকে এমভি আল বাখেরা জাহাজে ৭ জন খুনের ঘটনায় জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ মঙ্গলবার রাতে হাইমচর থানায় মামলা করেন। অজ্ঞাতনামা ডাকাত দলকে মামলায় আসামি করা হয়।

ইতোমধ্যে জাহাজে হতাহতের ঘটনা তদন্তে শিল্প মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আলাদা কমিটি করা হয়েছে। আর খুন ও ডাকাতির অভিযোগে ১০ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার রাতে মামলা করেন মালিকপক্ষের মাহাবুব মুর্শেদ।

প্রসঙ্গত, মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের জাহাজ এমভি আল বাখেরা গত রোববার সকাল ৮টার দিকে চট্টগ্রামের কাফকো সার কারখানার ঘাট থেকে যাত্রা শুরু করে। পরে কোম্পানির মালিক শিপন জাহাজে ফোন করে কাউকে পায়নি। এতে সন্দেহ হলে মালিকপক্ষ জাহাজের অবস্থান এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে কোম্পানির অন্য জাহাজ মুগনি-৩ কে যোগাযোগ করতে বলে। মুগনি-৩ জাহাজটি মাওয়া থেকে যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে এম ভি আল বাখেরা জাহাজটিকে ইঞ্জিন বন্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তারা জাহাজে উঠে সবাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দেন। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জাহাজ থেকে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে।


হিলি সীমান্তে ধানখেত থেকে ড্রোন উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ঘাসুড়িয়া সীমান্তে ধানখেত থেকে একটি ড্রোন উদ্ধার করা হয়েছে। ড্রোনটি পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে সীমান্তবাসীরা আতঙ্কে রয়েছেন।

উপজেলার ঘাসুড়িয়া আদিবাসীপাড়ার প্রফুল্ল টপ্প বলেন, ‘বুধবার (১৪ মে) দুপুরের দিকে সীমান্তবর্তী একটি ধানখেতে ধান কাটার কাজ করছিলেন। এ সময় খেতের মাঝখানে একটি কালো রঙের মাকড়সার মতো বস্তু পড়ে থাকতে দেখে সহকর্মীদের জানাই। পরে তারা কাছে এসে বলেন এটি ড্রোন। তারা ড্রোনটি তার বাড়িতে রাখার কথা বলেন। কাজ শেষ করে ড্রোনটি বাড়িতে নিয়ে যান তিনি।’

উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, ‘সীমান্তের ২৮৭/২১ নম্বর সাব সীমানা পিলার সংলগ্ন ঘাসুড়িয়া গ্রামের মিরাজুল ইসলামের জমিতে এককদল শ্রমিক ধান কাটছিলেন। এক পর্যায়ে শ্রমিক প্রফুল্ল টপ্প ড্রোনটি দেখতে পেয়ে সবাইকে জানান।’

‘তারা প্রফুল্ল টপ্পকে তার কাছে ড্রোনটি রাখার কথা বলতে প্রফুল্ল ড্রোনটি বাড়িতে নিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা মংলা বিজিবি ক্যাম্পে ও থানায় খবর দিলে তারা ড্রোনটি উদ্ধার করে নিয়ে যান।’

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গতকাল বুধবার দুপুরে ঘাসুড়িয়া সীমান্তের ৪০০ গজ বাংলাদেশ অভ্যন্তরে ধানখেতে স্থানীয় শ্রমিক প্রফুল্ল টপ্প পড়ে থাকা একটি ড্রোন ক্যামেরা দেখতে পান। বিষয়টি লোকজনকে জানালে তারা এসে ড্রোন ক্যামেরাটি উদ্ধার করে থানায় খবর দেয়। পরে ওইদিন রাত ১০টার দিকে পুলিশ ড্রোন ক্যামেরাটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বর্তমানে সেটি থানা হেফাজতে রয়েছে।

দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন বলেন, ‘ঘাসুড়িয়া সীমান্তের একটি ধানখেত থেকে উদ্ধার হওয়া ড্রোন ক্যামেরাটি ভারত থেকে উড়ে আসা বলে তিনি প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছেন। ড্রোনটিতে ৫টি ক্যামেরার লেন্স রয়েছে।’

তবে ড্রোনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে এবং আরও তথ্য উৎঘাটনে অনুসন্ধান চলছে বলেও জানান তিনি।


কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

নারায়ণগঞ্জে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনাল।

কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- শামিম হোসেন,নাজমুল ও জিলকদ।

আজ ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো. গোলাম কবির এই রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।জরিমানা অনাদায়ে তাদের ছয় মাসের কারাভোগ করতে হবে।

ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাজ্জাত হোসেন সবুজ বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী নারায়ণগঞ্জের একটি কলেজ এলাকায় লেখাপড়া করতেন। আসামি মো. শামিম হোসেন কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ওই ছাত্রীকে নিয়মিত প্রেমের প্রস্তাব দিতেন ও নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করতেন। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

২০১৬ সালের ১৫ মার্চ সকালে প্রাইভেট পড়তে বাড়ি থেকে বের হন ভুক্তভোগী। আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে কলেজের মেইন গেটের সামনে পৌঁছালে মো. শামিম, তার সহযোগী মো. নাজমুল, মো. জিলকদ এবং আরও এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে। এরপর তারা পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় একই বছরের ১৭ মার্চ ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচার চলাকালে আটজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।


চরফ্যাশন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগী

স্যালাইন সংকটে সেবা ব্যাহত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

তীব্র গরমে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। শিশু, কিশোর, প্রাপ্তবয়স্ক ও বৃদ্ধরাও আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। এদিকে হাসপাতালে স্যালাইন সংকটের কারণেহাসপাতালের বাহির থেকে খাবার স্যালাইন এবং কলেরা স্যালাইন কিনে আনতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগী ও তার স্বজনরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১ মে থেকে বুধবার ১৪ মে পর্যন্ত ১৪ দিনে শিশু, কিশোর ও বৃদ্ধসহ ১৬৩ জন রোগী ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এদের মধ্যে ১৫৮ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। বুধবার সকালে ভর্তি হয়ে ৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।

বুধবার দুপুরে চরফ্যাশন উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।

শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার চরমানিকা ইউনিয়ন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অহিদ পাতলা পায়খানা হওয়ায় তার ৪ বছর বয়সের বাচ্চাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। তিনি জানান, স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়েছিলাম, তবে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার সকালে আমার সন্তানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। এখনও তার ছেলেকে নার্সেরা দেখতে আসেনি।

উপজেলার নীলকমল ইউনিয়ন ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফারজানা বেগম বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত তার ১ বছর বয়সী শিশু বাচ্চাকে বুধবার সকালে ভর্তি করেন। এরপর নার্সদের পরামর্শে হাসপাতালের বাহির থেকে স্যালাইন সেট, ক্যানেলা ও কলেরা স্যালাইন এবং খাবার কিনে আনতে হয়েছে। হাসপাতাল থেকে কিছুই দেওয়া হয়নি। সরকারী হাসপাতাল হলেও সরকারী কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে রোগীদের প্রয়োজনে হাসপাতালে চিকিৎসক তো দূরের কথা, কোনো নার্সকেও তারা ডেকে পান না। হাসপাতাল থেকে তেমন কোনো ওষুধও সরবরাহ করা হয় না।

নার্সরা স্লিপ ধরিয়ে দেন, তা দেখে বাইরে থেকে ওষুধ, স্যালাইন, ক্যানুলাসহ যাবতীয় সামগ্রী কিনে আনতে হচ্ছে। নামেই শুধু সরকারি হাসপাতাল। সবই কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। হাসপাতালে খাবার স্যালাইন থাকা সত্বেও রোগীদের স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে না।

হাসপাতালের নার্স ইনচার্জ অপরাজিতা জানান, রোগীরা নার্সদের ডাকলে নার্সরা আসেনা এই কথাটা সম্পূন্ন মিথ্যা, রোগীদের সেবায় ১৭ জন নার্স সর্বদা নিয়োজিত রয়েছেন। ডায়রিয়া রোগীদের খাবার স্যালাইন ও কলেরা স্যালাইন হাসপাতালে নাই বলে বাহির থেকে আনার জন্য স্লিপ ধরিয়ে দেন এ বিষয় প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, গত ১৪ দিনে চরফ্যাশন হাসপাতালে ১৬৩ জন ডায়রিয়ায় (কলেরা) আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে স্যালাইন সেট, বাচ্চাদের ক্যানেলা, কলেরা স্যালাইন, এন্টিবায়োটিক, মাইক্র বুলেট, জিং সিরাপ না থাকায় ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দানে কিছুটা বিঘ্ন হচ্ছে। তাই রোগীদেরকে বাহির থেকে আনতে বলা হয়। যার ফলে রোগীরা এই অভিযোগগুলো তুলছেন।

চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোভন কুমার বশাককে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাকলুকুর রহমান বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় সীমিত সংখ্যাক কলেরা স্যালাইন সরবরাহ পাওয়ায় কোনো রকমে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে রোগীদের বাহির থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে জেলা সিভিলা সার্জন বরাবর ডায়রিয়া রোগীদের স্যালাইনসহ বিভিন্ন ওধুধের চাহিদা পাঠানো হয়েছে, আশা করি এর দ্রুত সমাধান হবে।’


খুলনায় ৮৫ শতাংশ টিউবওয়েলে মিলছে না পানি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আওয়াল শেখ, খুলনা

ভোর হয়নি তখনো। কিন্তু খুলনার বটিয়াঘাটার গ্রামে ব্যস্ততা। কারো হাতে কলস, কারো কাঁধে বালতি। পায়ে ছোপ ছোপ ধুলা, মুখে নীরব প্রার্থনা- দ্রুত একটু পানি মিলবে তো?

এটা কোনো উৎসব নয়, বেঁচে থাকার সম্বল পানির জন্য এক কঠিন প্রতিযোগিতা। সেখানের নিমাই চন্দ্র রায়ের বাড়ির উঠোনটা যেন হয়ে উঠেছিল গ্রামের জীবনধারণের কেন্দ্র। ২০০৪ সালে নিজের খরচে বসানো ডিপ টিউবওয়েল তখন স্বপ্ন দেখাতো- যেন এই পানির ধারা কখনো শুকাবে না।

প্রতিদিন ফজরের আজানের আগেই জড়ো হতেন আশপাশের দুই ডজন পরিবারের মানুষ। নারীর কণ্ঠে প্রার্থনা, শিশুর ক্লান্তি, পুরুষের ব্যস্ত মুখ- সব মিলিয়ে একটা জলের মহাযজ্ঞ।

কিন্তু এ বছরের মার্চে সেই উৎসও যেন নীরব অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। যতই চাপ দেওয়া হোক, টিউবওয়েল এখন বোবা। মোটর লাগানো হয়েছে, সেই আশাও নিঃশেষ।

নিমাই বলেন, ‘আগে ১৫-২০ মিনিট চাপ দিলে একটু পানি আসত। এখন তো আর কিছুই আসে না।’ এই শূন্যতা শুধু তার একার নয়। পুরো খুলনা ও পার্শ্ববর্তী জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে পানিশূন্যতার দীর্ঘশ্বাস।

নিমাইয়ের বাড়ির মতো খুলনা ও আশপাশের জেলাগুলোতে এখন লক্ষাধিক হ্যান্ড-পাম্প টিউবওয়েল অচল হয়ে গেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) তথ্য অনুযায়ী, খুলনা বিভাগে থাকা ১,০১,৩৫০টি হ্যান্ড-পাম্পের ৮৫ শতাংশই এখন পানিশূন্য। খুলনা জেলাতেই রয়েছে ২৮,৪৫২টি, যার অধিকাংশই অকার্যকর।

বটিয়াঘাটায় ৪,১৮৫টি ডিপ টিউবওয়েলের মধ্যে ৮০ শতাংশেই এখন আর পানি ওঠে না। যশোরেও দুই-তৃতীয়াংশ ২৪,৩০৩টি টিউবওয়েল শুকিয়ে গেছে।

ডিপিএইচই এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হ্যান্ড-পাম্প টিউবওয়েল ২৬ ফুটের নিচে পানি থাকলে তা তুলতে পারে না। মোটর পাম্পও ব্যর্থ হয় যদি পানি স্তর ৩০-৩৫ ফুটের নিচে নামে। কেবল সাবমার্সিবল পাম্পই সেই গভীরতা থেকে পানি তুলতে পারে। অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন, জলাশয়ের ঘাটতি এবং অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনাই এই সংকটের মূল কারণ।

নিমাইয়ের প্রতিবেশী গুরুদাসী বৈরাগী এখন প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অপেক্ষা করেন কাচারিবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র কার্যকর টিউবওয়েলে। ‘২০ লিটারের কলসি ভরতে ১৮০-১৯০ বার চাপ দিতে হয়। প্রতিদিন এখানে ৩০০-৩৫০ জন আসে।’ বলেন তিনি।

তিনি জানান, তার গ্রামে ৫-৬ বছর আগেও অধিকাংশ হ্যান্ড-পাম্প ঠিকঠাক কাজ করত। একই সুরে বটিয়াঘাটা সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান পল্লব বিশ্বাস বলেন, ইউনিয়নের ১৮টি গ্রামের মধ্যে ৯০ শতাংশ টিউবওয়েল এখন অচল।

এ ছাড়া গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের ঝরভাঙা গ্রামের মিলন কান্তি মণ্ডল ১৯৮৯ সালে একটি ডিপ টিউবওয়েল বসিয়েছিলেন। কয়েক বছর আগে সেটিও নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তিনি প্রতিদিন দুই কিলোমিটার হাঁটেন পানির সন্ধানে। আমার গ্রামে ১৮টির মধ্যে মাত্র একটি টিউবওয়েল কাজ করে। প্রায় ৩০০ পরিবার এখন পানির অভাবে দিন কাটাচ্ছে- জানান তিনি।

গঙ্গারামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আসলাম হালদার বলেন, ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামের মধ্যে ২৫টিতেই এখন পানি সংকট চলছে। কিছু এলাকায় এমনকি ১,২০০ ফুট গভীরতায়ও পানি মিলছে না

ডিপিএইচই জানায়, ২০১৫-১৬ সালে খুলনা অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ছিল ১৮ থেকে ২২ ফুট। বর্তমানে তা নেমে গেছে ২৪ থেকে ৩২ ফুটে।

এই সংকট মোকাবেলায় ডিপিএইচই সাবমার্সিবল পাম্প বসানো, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে উৎসাহ দেওয়া ও সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প স্থাপন শুরু করেছে।

যশোরে ডিপিএইচই নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ পারভেজ জানান, জেলার সদর, বাঘারপাড়া, ঝিকরগাছা ও শার্শার অনেক জায়গায় পানির স্তর ৩০-৩৫ ফুটের বেশি নিচে নেমে গেছে। ১২,৫০০ সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। পাশাপাশি ‘তারা নম্বর ৬’ টিউবওয়েল ও সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প বসানো হচ্ছে।

ডিপিএইচইর খুলনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জামানুর রহমান বলেন, উপকূলীয় খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তিনি বলেন, ‘গত দুই বছরে আমরা ‘তারা নম্বর ৬’ টিউবওয়েল বসাচ্ছি, যা ৬০-৭০ ফুট গভীর থেকে পানি তুলতে পারে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের হার পুনঃভরণ হারের চেয়ে বেশি হওয়ায় পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, লবণাক্ততার বিস্তার ও বৃষ্টিপাতের ঘাটতিও এই সংকট বাড়াচ্ছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, ‘যতটা পানি উত্তোলন হচ্ছে, ততটা ফিরে আসছে না। তাই টিউবওয়েলগুলো অচল হয়ে পড়েছে।’


বেনাপোল কাস্টমস হাউজে দ্বিতীয় দিনের মত চলছে কলম বিরতি

আমদানি-রপ্তানি চলছে স্বাভাবিক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

দ্বিতীয় দিনের মত এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কলম বিরতিতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজস্ব আদায়কারি প্রতিষ্ঠান বেনাপোল কাস্টমস হাউজে চলছে ‘কলম বিরতি’।

কলম বিরতিতে রাজস্ব আয়রণের কাজ বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক আছে দু'দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার ও আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য। আমদানি রপ্তানিতে তেমন কোন প্রভাব না পড়লেও বিঘ্নিত হচ্ছে রাজস্ব আদায়। বুধবার কলম বিরতি সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত থাকলেও আজ বৃহস্পতিবার সেটা বাড়িয়ে তিনটা পর্যন্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কলম বিরতির সময় কাস্টমস হাউজে কোন কাজ হচ্ছে না বলে নিশ্চিত করেছেন একজন রাজস্ব কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই রাজস্ব কর্মকর্তা বলেন, “অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আমরা আছি এবং আমাদের পূর্ণাঙ্গ সমর্থন আছে।”

সরেজমিনে দেখা গেছে,কাস্টমস হাউজ খোলা আছে তবে অধিকাংশ টেবিলই খালি।কর্মকর্তারা বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন।কিছু কর্মকর্তা আসনে থাকলেও কোন কাজ করছেন না।বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে।কলম বিরতির কারণে নতুন করে কোন পণ্যের আইজিএম ইস্যু করা হচ্ছে না। আগের ইস্যু করা আইজিএমের পণ্য আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে।বেলা ৩টা পর্যন্ত কলম বিরতি চলবে। তারপর কাস্টমস হাউজে কাজ শুরু হবে বলে ওই রাজস্ব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বেনাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, কাস্টমসের কলম বিরতির কারণে সকাল ১০টা থেকে হাউজে কোন ফাইলে কাজ হয়নি। তবে ৩টার পর কাজ শুরু হবে বলে কাস্টমস থেকে জানতে পেরেছি। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইব্রাহিম আহমেদ জানান কাস্টমসের কলম বিরতি চললেও বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দু দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক আছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন,কাস্টমস হাউসের কলম বিরতি সত্বেও বেনাপোল বন্দর দিয়ে দু'দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে।বুধবার ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর ৩০৬ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে।এসময় ভারতে রপ্তানি হয়েছে ১৭৪ ট্রাক পণ্য। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত ২৫ গাড়ি পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয়েছে এবং বাংলাদেশ থেকে ১১ ট্রাক পন্য ভারতের রপ্তানি হয়েছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ এর খসড়া কর্মকর্তাদের মতামত প্রতিফলিত হয়নি। বিভাগ দুটিতে কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের জন্য পদ সংরক্ষিত না রেখে রাজস্বের কাজে অভিজ্ঞতা নেই এমন কর্মকর্তা পদায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে একদিকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কাজে অভিজ্ঞ নয় এমন কর্মকর্তা পদায়নের মাধ্যমে রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা, গতিশীলতা এবং কার্যকারিতা বিঘ্নিত হবে, অন্যদিকে এনবিআরে কর্মরত দুটি ক্যাডারের কাজের ক্ষেত্র ও পদোন্নতির সুযোগ মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব খাতকে দুটি পৃথক বিভাগে ভাগ করার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।


রাজশাহীতে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

রাজশাহীর পুঠিয়ায় আধিপত্য বিস্তার এবং স্থানীয় পুকুরের টেন্ডার নিয়েই সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিএনপির দুই গ্রুপ। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৪ মে) রাতে পুঠিয়া উপজেলা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় স্থানীয় বিএনপির কার্যালয় এবং তিনটি মোটরসাইকেল।

স্থানীয়রা জানান, ওই দিন বিকালে টেন্ডার নিয়ে শুরু হওয়া উত্তেজনা রাত পর্যন্ত গড়ায়। একপর্যায়ে পুঠিয়া বাজারে দুপক্ষ দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়ায়। দীর্ঘ সময় ধরে চলে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষ।

এক পর্যায়ে স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ এসে শুরুতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। পরে সেনা সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতরা চিকিৎসা নিয়েছেন পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

পুলিশ জানান, দীর্ঘদিন ধরে পুঠিয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ চলছিল। একপক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল মামুন খানের অনুসারীরা এবং অপরপক্ষের নেতৃত্বে আছেন বিএনপি নেতা ফারুক রায়হানের অনুসারীরা।

তারা আরও জানান, পুকুর টেন্ডার ঘিরেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। বিকালের পর থেকেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে, সন্ধ্যার দিকে দুই পক্ষই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিছিল ও মহড়া শুরু করে, যা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হন।

পুঠিয়া বাজারের ব্যবসায়ী আজিজুল হক বলেন, ‘সন্ধ্যার পরে হঠাৎ দেখি দুই দিক থেকে লোকজন লাঠিসোটা, রড, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসছে। বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। কেউ কেউ আমাদের দোকানে আশ্রয় নেয়। দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মারামারি চলে। পরে সেনা সদস্য এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে বিএনপির পার্টি অফিসের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এর আগে পার্টি অফিসের আসবাবপত্র পুড়ে যায়।’

স্থানীয় বাসিন্দা রোকেয়া বেগম জানান, আমার ছেলে মোটরসাইকেল নিয়ে দোকানে যাচ্ছিল, ওর মোটরসাইকেলটা আগুনে পুড়ে গেছে। পুরো এলাকা এখন আতঙ্কে আছে।’

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’


বজ্রপাত নিয়ে সতর্কবার্তা দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

দেশের বিভিন্ন জেলায় বজ্রপাতের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আজ বুধবার (১৪ মে) সকাল ৮টা ৪৫ থেকে পরবর্তী ২-৩ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি ও বজ্রপাত হতে পারে।

এছাড়া, প্রতি ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বা তার অধিক গতিবেগে এই দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া হতে পারে বলে সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।

সতর্কবার্তায় পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলাকে বজ্রপাতের এলাকা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

এ সময়ে বজ্রপাত থেকে রক্ষায় বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে বলা হয়েছে, বজ্রপাত হলে ঘরের মধ্যে থাকতে হবে। জানালা ও দরজা বন্ধ রাখতে হবে। সম্ভব হলে যাত্রা এড়িয়ে চলতে হবে। বজ্রপাত হলে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে হবে।

তবে গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া যাবে না বলে সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, কংক্রিটের মেঝেতে শোয়া যাবে না এবং কংক্রিটের দেয়ালে হেলান দেওয়াও যাবে না। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের প্লাগ খুলে রাখতে হবে।

কেউ জলাশয়ে থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে উঠে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বিদ্যুৎ পরিবাহক বস্তু থেকে দূরে থাকুন। শিলা বৃষ্টির সময় ঘরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।


কুষ্টিয়ায় ২ লক্ষাধিক কোরবানীর পশু প্রস্তুত, লাভের আশায় খামারীরা

সাদিপুরের একটি খামার। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কোরবানীর পশুরহাটে কুষ্টিয়ার গরুর বাড়তি চাহিদা রয়েছে। আর এ চাহিদার যোগান দিতে জেলায় এ বছর ২ লক্ষধিক কোরবারীর পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে ও দেশীয় পদ্ধতিতে গরু লালন-পালন এবং মোটাতাজা করেছে জেলার খামারীরা। লাভের আশায় শেষ মুহুর্তে পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। গরু পালন কুষ্টিয়ার ঐতিহ্য পেশা। আর এ ঐতিহ্যের প্রসার ঘটাতে এ বছরও জেলায় প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার খামার ও কৃষকের বাড়িতে ২ লক্ষাধিক গরু-মহিষসহ বিভিন্ন প্রজাতির কোরবানীর পশু মোটাতাজা বা হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হবে।

বিভিন্ন খামারী ও পশু পালনকারী কৃষকরা বলছেন, পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে, তাই বাড়তি দামে পশু বিক্রয় করতে না পারলে লোকসান গুণতে হবে, হারাতে হবে পুঁজিও। জেলায় সবচেয়ে বেশি কোরবানীর পশু প্রস্তুত করা হয়েছে সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলায়। এ উপজেলায় অর্ধলক্ষ গরু ও ছাগল প্রস্তুত করেছেন খামারীরা। এ উপজেলার সাদীপুর গ্রামের খামারী জিয়াউল ইসলাম জানান, পশু খাদ্যের দাম বাড়ায় গরু লালন পালনে খরচ বেড়েছে। তাই ন্যায্য মূল্য না পেলে লোকসান গুণতে হবে। তবে তিনি লাভের আশা করছেন। আবার পশুর খামারে কাজ করে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। দিন-রাত পরিচর্যা করে কোরবানীর পশুর হাটে পশুগুলি তুলতে শেষ মুহুর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারাও। কোন ক্ষতিকর ও ভেজাল খাদ্য ছাড়া দেশীয় পদ্ধতিতে খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা বা হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে।

খামারীদের পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আল মামুন হোসেন মন্ডল। কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ছোট বড় বা ক্ষুদ্র খামারীরা পশু পালন করে থাকেন। দিন-রাত পরিশ্রম ও পরম যত্নে লালন পালন করা পশুটি বিক্রয়ে লোকসান হলে পরবর্তীতে পশু পালনে আগ্রহ হারাবেন- এমনটি জানিয়েছেন তারা।


রূপগঞ্জে গাড়ি চালকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় বাড়ছে দুর্ঘটনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, ঢাকা বাইপাস সড়কসহ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কে ট্রাকসহ যানবাহনের চালকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় দুর্ঘটনা বাড়ছে। এতে দীর্ঘ হচ্ছে সড়কে মৃত্যুর মিছিলও। পঙ্গুত্ব নিয়ে জীবনযাপন করছেন অনেকে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা, শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতিতে যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জণসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি এই দুর্ঘটনা ও যানজটের প্রধান কারণ। সড়কে স্পিড ব্রেকার ও রোড ডিভাইডার না থাকায়ও দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তায় চালকদের অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর প্রতিযোগিতায়ও ঘটছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা।

সড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচলেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা ও বায়ুদূষণ দুই ক্ষেত্রেই ফিটনেসবিহীন গাড়ি দায়ী। ঈদ এলেই ভাঙাচোরা, ফিটনেসবিহীন লক্কর-ঝক্কর ও পুরোনো পরিবহনের মেরামত কাজ চলে। পরিবহনে রং দিয়ে নতুন করে সাজানো হয়। এসব দিয়েই চলছে পরিবহন খাত। চলাচলে অনুপযোগী পরিবহন দুর্ঘটনার ঝুঁকি যেমন বেড়ে যায়, আবার সড়কের মধ্যে বিকল হয়ে পড়ায় অসহনীয় যানজটের দুর্বিষহ ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা।

মেঘলা পরিবহনের হেলপার রাকিবুল আলম বলেন, যাত্রীরা এখন শৌখিন। রং না করলে বাসে কেউ উঠতে চায় না। তাই রং দিয়ে গাড়ি ঝকঝকে করা হয়। ভুলতা গাউছিয়া এলাকার এনজিও কর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, চালকদের সচেতন করে তুলতে হবে। ট্রাফিক আইন মানার প্রবণতা সৃষ্টি করতে হবে। দুর্ঘটনা বন্ধে রাস্তায় অসম ও অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে। তবেই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমে আসবে।

মুড়াপাড়া বানিয়াদী এলাকার কামাল হোসেন বলেন, ‘পঙ্গুত্ব নিয়ে কে বাঁচতে চায়। তবুও আজ ভয় হয় রাস্তায় চলতে। সড়কে গাড়ি চালকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় ঘটছে দুর্ঘটনা। তাতে বেড়েই চলছে প্রাণহানি।’

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম চলমান আছে। অভিযুক্ত গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।


সেতু পারাপারে দুর্ভোগে ছয় গ্রামের মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আবু কোরাইশ আপেল, দাউদকান্দি (কুমিল্লা)

বিগত দশ বছরেও সংস্কার না হওয়ায় কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মুকুন্দি গ্রামের সেতু পারাপারে আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। ৩০ বছর আগে নির্মিত সেতুটির দুটি অংশ ধসে পড়ে ২০১৫ সালে। ভেঙে যায় রেলিং। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে সেতুটি। সেতুটি সংস্কারে অদ্যাবদি নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ।

মুকুন্দি সেতু দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে কাউয়াদি, ভবানীপুর, তুলাতলী, সাধারদিয়া, নতুন বাজারসহ ছয় গ্রামের বাসিন্দারা। সেতু চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বেড়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড়োসড়ো দুর্ঘটনা। ব্রিজটি দিয়ে আশপাশের বেশ কয়েকটি স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ভাঙা ব্রিজটি দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা।

ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা আসাদ মিয়া বলেন, ‘ব্রিজটি সংস্কার বা নতুন ব্রিজ নির্মাণ না করায় আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাই সরকারের কাছে ব্রিজটি দ্রুত পুনর্নির্মাণের আহ্বান জানাচ্ছি।

সাধারদিয়া গ্রামের ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘এ সড়কে নিয়মিত যাত্রীসহ মালামাল আনা-নেওয়া করতাম। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে যাত্রীদেরও কষ্ট বেড়েছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা জাকির মিয়া বলেন, ‘আমাদের গ্রামসহ আশপাশের গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থী প্রতিদিন এ ব্রিজ দিয়ে চলাচল করে। আমরা সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকি- কখন ব্রিজটি ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটে! ব্রিজটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

কৃষক জায়েদ আলী বলেন, ‘প্রায় ৩০ বছর আগে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এরপর আর কোনো সংস্কার করা হয়নি। ২০১৫ সালের দিকে ব্রিজটির ওপরের অংশের আস্তরণ খসে পড়া শুরু হয়। গ্রামবাসী মিলে একবার মসজিদের দানের টাকা দিয়ে সংস্কার করেছিলাম।’

মুকুন্দি গ্রামের বাসিন্দা মোশাররফ পাটোয়ারী বলেন, ‘এ ব্রিজ দিয়ে কৃষকরা ঝুঁকি নিয়ে বাজারে তাদের পণ্য আনা-নেওয়া করেন। বর্তমানে ব্রিজটি দিয়ে হাঁটাও কষ্টসাধ্য। পাঁচ বছর পর পর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এলে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা ব্রিজটি সংস্কার অথবা পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত কেউ সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেননি। এতে আমাদের গ্রামসহ ও আশপাশের ৬টি গ্রামের বাসিন্দাদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে প্রতিদিন।’

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহিদ হাসান বলেন, এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু। সেতুটি পুনরায় নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


রাজশাহীর বোরো চাষিদের মুখে হাসি

বরেন্দ্র অঞ্চলসহ রাজশাহীর সর্বত্রই শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার মৌসুম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাজশাহীর কৃষকদের মুখে এখন হাসি। শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার মৌসুম। মাঠে মিলছে ভালো ফলন, আর বাজারেও মিলছে ভালো দাম। বরেন্দ্র অঞ্চলসহ জেলার সর্বত্রই চাষিরা ধান বিক্রি করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬৮ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে মাঠে ফলন হচ্ছে আশানুরূপ। কৃষকরা গড়ে প্রতি বিঘায় পাচ্ছেন ২৪ থেকে ২৫ মণ ধান। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় বেশ লাভজনক।

কৃষকরা এখন উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদি জাত ‘বিআর-২৮’ ও স্থানীয় ‘জিরা’ কাটছে। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে অন্যান্য জাতের ধানও কাটতে শুরু করবে।

তানোর উপজেলার ধানতৈড় গ্রামের কৃষক আফসা আলী (৪৮) জানান, ‘আমি দুই বিঘা জমি থেকে ৪০ মণ ধান পেয়েছি। নিজের জমিতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা, আর বর্গা জমিতে ২৫ হাজার।’ তিনি আরও জানান, সেচের ব্যবস্থা না থাকলে খরচ বেড়ে যায়।

আরেক কৃষক আবদুস সালাম বলেন, ‘এক বিঘা থেকে ২৫ মণ ধান পেয়েছি। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি ফলন। আগামী তিন দিনের মধ্যে আরও সাত বিঘার ধান কাটব।’ তিনি আরও জানান, পাইকারি বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজা ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।

গোদাগাড়ী, পবা ও বাঘা উপজেলার চরের জমিতেও এবার বোরো চাষ হয়েছে। মোট ১ হাজার ৭৬২ হেক্টর চরের জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। ফলন হয়েছে আশানুরূপ।

পবা উপজেলার চরখিদিরপুর গ্রামের মিরশাদ আলী বলেন, ‘চরের মাটিতে আলাদাভাবে সার দিতে হয়নি। তাই খরচও কমেছে।’

চর আষাড়িয়াদহ গ্রামের ইসমান গণি বলেন, ‘চরের জমিতে এবার বোরোর ফলন বেশি হয়েছে। অনেক কৃষক লাভবান হয়েছেন।’

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার বলেন, ‘আবহাওয়া ও সরকারি সহায়তার কারণে এবার ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা সন্তুষ্ট।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে সালমা শুক্রবার বাসসকে জানান, ৮ মে পর্যন্ত জেলার ২৫ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের কৃষক সামাদুল ইসলাম ব্রি-৯২ জাতের ধান চাষ করে প্রতি হেক্টরে ৮.৮ টন ধান পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটা স্থানীয় জাতের তুলনায় অনেক ভালো ফলন।’

একই উপজেলার হাতিবান্ধা গ্রামের জাকির হোসেন জানান, সরকারি ক্রয় কার্যক্রমের কারণে আগের মৌসুমগুলোতে দাম ভালো পেয়েছেন। এ জন্য এবার অনেকে বেশি জমিতে বোরো চাষ করেছেন।

তানোর উপজেলার গুবিরপাড়া গ্রামের আবু রহমান বলেন, ‘গতবার আমন-এ ভালো দাম পেয়েছিলাম। এবার ১০ বিঘা জমিতে বোরো করেছি। ফলন ও দাম দুটোই ভালো।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন-অর-রশিদ জানান, রাজশাহীর জন্য উপযোগী ১৪টি বোরো জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি-৫০ রপ্তানিযোগ্য উন্নত জাত, ব্রি-৫৮ উচ্চ ফলনশীল এবং ব্রি-৮৪ আয়রন ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ।

তিনি বলেন, ‘আধুনিক জাতের ধানের প্রতি কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। এটি ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’

সূত্র: বাসস


রাজবাড়ীতে ফসলি জমিতে অবৈধভাবে ইটভাটা নির্মাণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জহুরুল হক, রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে ফসলি জমিতে ইটভাটার কার্যক্রম শুরু করেছে প্রভাবশালী চক্র। এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো মাথা ব্যথা নেই। এরই মধ্যে শুক্রবার বিকেলে ইটভাটার মাটি টানা ট্রাক্টরের চাপায় প্রাণ হারিয়েছে মোটরসাইকেল আরোহী এক কলেজ ছাত্র। এ ঘটনায় কৃষকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গত শনিবার দুপুরে সরেজমিনে জামালপুর-কোলারহাট সড়কের বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নলিয়া বৃমাগুরা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশেই ইটভাটার অফিস ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। কয়েকজন মিস্ত্রি ঘর নির্মাণ কাজে ব্যস্ত। বিভিন্ন ফসলের মধ্যে ইট ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মাটি সংগ্রহ করে ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন দেশি তৈরি যানবাহনে করে এনে স্তূপ তৈরি করা হচ্ছে। ওই এলাকার সড়কে এখন ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, ফসলি জমিতে ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রভাবশালীদের চাপাচাপির কারণে অনেক জমির মালিক লিজ দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে ওই এলাকার সব ফসলের মাঠের ক্ষতি হবে। এরই মধ্যে শুক্রবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার সময় উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের লক্ষণদিয়া গ্রামের পরিতোষ সরকরের ছেলে কলেজ ছাত্র সজীব সরকার প্রণয় তার কাকা রমা প্রসাদ সরকারের বৌভাত অনুষ্ঠানের প্লাস্টিকের গ্লাস আনার জন্য বাড়ি থেকে জামালপুর বাজারে যাচ্ছিলেন। নলিয়া মেলার সামনে পৌঁছালে নির্মাণাধীন ওই ইট ভাটার মাটি বোঝাই ট্রাক্টর বৃমাগুরা নতুন ভাটায় মাটি নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী সজীব সরকার প্রণয় ঘটনাস্থলেই মারা যান। এতে লাশ ফেলেই যেন ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হলো। দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।

ইটভাটার কাজে থাকা মিস্ত্রিরা বলেন, এই ইটভাটাটি করছেন বালিয়াকান্দির আব্দুল জলিল।

জলিলের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘এখনো ইটভাটার কার্যক্রম শুরু করি নাই। অফিস ঘর নির্মাণ ও মাটি আনা হচ্ছে।’ ফসলি জমিতে ইটভাটা করার কোনো অনুমতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি অফিসে খোঁজ নিতে বলে ফোন কেটে দেন।

বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, মাটি টানা ট্রাক্টরের চাপায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, ইটভাটা নির্মাণের ক্ষেত্রে কৃষি অফিসের তদন্ত রিপোর্ট প্রয়োজন হয়। এ বিষয়ে কেউ কোনো আবেদন করেনি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফসলী জমিতে ইটভাটা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রাজবাড়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হারুন-অর রশীদ বলেন, ইটভাটা নির্মাণকারী কেউ আমাদের কাছে আবেদন করেনি। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আশাশুনিতে কুদ্দুস ও মিনু বাহিনীর অপকর্মে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে জমি দখল, লুটপাট ও চাঁদাবাজিতে অন্যতম অবস্থানে রুহুল কুদ্দুস ও মিনু বাহিনী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন তেলবাজি, দালালি করত বিএনপি নেতা বনে যাওয়া রুহুল কুদ্দুস। চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ও তার আপন সহোদর আমিনুর রহমান মিনুর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। অভিযোগ আছে, ওই চক্রটির বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই বেধড়ক মারপিট, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি এমনকি তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে থাকে। রুহুল কুদ্দুস ও আমিনুর রহমান মিনু বাহিনীর রয়েছে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি সক্রিয় সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা দুইজন, এদের মধ্যে একজন আশাশুনি আনুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস এবং অপর ব্যক্তি রুহুল কুদ্দুসের আপন ভাই কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-যোগাযোগ সম্পাদক আমিনুর রহমান মিনু।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে রুহুল কুদ্দুস আমিনুর রহমান মিনু, মমিনুর রহমান মন্টু, খোরশেদ আলম, মফিজুল ইসলাম, শামীম মোস্তফা শুভসহ তাদের সঙ্গপাঙ্গদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে এখন নিঃস্ব। আশাশুনি উপজেলার ৯ নং আনুলিয়া ইউনিয়নের মাধ্যম একসরা গ্রামের প্রয়াত আবু দাউদ সানার ছেলে সাদ্দাম সানা বলেন, ‘৫ আগস্টের পরের দিন ৬ আগস্ট রাতে আনুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ও তার বাহিনী আমার মৎস্য ঘেরে সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালায়।’ ভুক্তভোগী সাদ্দাম সানা বলেন, ‘রুহুল কুদ্দুস চেয়ারম্যানের ঘেরের পাশে আমার মৎস্য ঘের। রুহুল কুদ্দুস দাঁড়িয়ে থেকে তার পোষ্য বাহিনী দিয়ে আমার ঘেরের ভেড়ি কেটে দিয়ে দখলে নেয়।’

সাদ্দাম সানা বলেন, রুহুল কুদ্দুস ও তার ভাই আমিনুর রহমান মিনুকে অনেক অনুনয়-বিনয় করেও আমার মৎস্য ঘের ফেরত পাইনি। আমার রেকর্ডীয় ৫ বিঘা ১০ কাঠা জমি অবৈধভাবে ভোগ দখল করছে রহুল কুদ্দুস চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় প্রশাসনের সহযোগিতাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ নাংলা গ্রামের মো. আব্দুল সানার ছেলে আকবর সানা মাঝি বলেন, ৫ আগস্টের পর রুহুল কুদ্দুস ও মিনু বাহিনীর ইন্ধনে তাদের সন্ত্রাসী গ্রুপ আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে তাণ্ডব চালায়। এ সময় দোকানের তালা ভেঙে আনুমানিক ৩ লাখ টাকার শ্যালো মেশিনসহ মেশিনের পার্টসের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। একই সময় আমার ভাই আক্তার সানার দোকানে ভাঙচুর চালিয়ে আড়াই লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।

আশাশুনি, আনুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ একসরা গ্রামের রোকনুজ্জামান মোল্যা বলেন, ‘আনুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে মান্নান মোল্যা, সুমন মোল্যা, খোরশেদ শিকারীসহ সন্ত্রাসী বাহিনী জোর করে মৎস্য ঘেরে লুটপাট চালিয়ে ৩ লাখ টাকার মাছ ধরে নেয়। ভুক্তভোগী রোকনুজ্জামান মোল্যা জানান, আশাশুনি থানাধীন একসরা মৌজায় জেএল নং-১৪১, সাবেক ৫১ নং, হাল ৬৩, এসএ দাগ ১৫৫৩/১৫৯৫ নং ও আমার ডিসিআর ২২/৮৫, আরএস ২৮৪১, ২৮৪২, ২৮৪৩, ২৮৪৪ ও ২৮৪৫ দাগে আমার ডিসিআরকৃত ০.৮৮ একর এবং রেকর্ডীয় ১.৪২ একর সর্বমোট ২.৩০ একর জমির একটি মৎস্য ঘের ছিল। যা আমি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করার একপর্যায়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ২৫ তারিখ সকাল ৯টায় রুহুল কুদ্দুস ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা আমার মৎস্য ঘেরে প্রবেশ করে জোর করে মাছ লুটপাট করে এবং আমার জমি দখলে নেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রোকনুজ্জামান মোল্যা গত ২০ এপ্রিল ২৫ তারিখ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার, খুলনা বিভাগের ডিআইজি, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, সাতক্ষীরা সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পসহ সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এদিকে ৫ জানুয়ারি ২০২২ সালে আশাশুনি ৯ নং আনুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন রুহুল কুদ্দুস। তৎকালীন সময় রুহুল কুদ্দুস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়ার সুবাদে জনসম্মুখে একটি ভাষণ দেন। সেই ভাষণের একটি ভিডিওতে রুহুল কুদ্দুসকে বলতে শোনা যায়, এই নৌকা বঙ্গবন্ধুর নৌকা, এই নৌকা শেখ হাসিনার নৌকা, স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতীক নৌকা। এর আগে রুহুল কুদ্দুস ও আমিনুর রহমান মিনু বাহিনীর ভয়াবহ সন্ত্রাসী তাণ্ডবের শিকার হন ভুক্তভোগী আনুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা রফি মেম্বারসহ একাধিক ব্যক্তি। ৫ আগস্টের পর রফি মেম্বারের দুটি মৎস্য ঘের লুটপাট ও দখল করার ঘটনায় বিভিন্ন মিডিয়ায় কুদ্দুস ও মিনু বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উন্মোচন করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কুদ্দুস ও মিনু বাহিনীর সন্ত্রাসীরা রফি মেম্বারকে বেধড়ক মারপিট করে। আশাশুনি উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, রহুল কুদ্দুস একজন সুবিধাবাদী ব্যক্তি। নিজ স্বার্থ ও চরিতার্থ হাসিলের জন্য সে যা খুশি তাই করে থাকে।

ফোনে আলাপকালে রুহুল কুদ্দুস তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-যোগাযোগ সম্পাদক আমিনুর রহমান মিনু বলেন, এসব ঘটনার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।


banner close