ঢাকার সাভারে ১২ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী শিশুর পরিচয়সহ আসামির ছবি সাভার মডেল থানার ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। তারা এও মন্তব্য করেছেন ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিচয় প্রকাশ ও প্রচার করা আইনত অপরাধ।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাভার মডেল থানার ফেসবুক পেজে ছবি দুটি প্রকাশ করা হয়। পরে সমালোচনার মুখে ৩৬ মিনিট পর তা সরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু অভিযুক্ত বাবার ছবিটি এখনও দৃশ্যমান।
এদিকে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তের ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশের পরে নেটিজেনরা কমেন্ট করে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানান। এ সময় অনেকেই ওই ছবি ফেসবুক থেকে সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অনুরোধ করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ভুক্তভোগী শিশুটির মা বাদী হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মেয়েকে ধর্ষণের মামলা করেন। পরে সাভার মডেল থানার পুলিশ দুপুরে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) শিকদার হারুন উর রশিদ বলেন, ধর্ষণ মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুক্তভোগী ও তার বাবার ছবি প্রকাশের বিষয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়টি আসলে থানার কম্পিউটার অপারেটর আনিস দেখেন। এটি আমার জানা নেই। তবে ভুক্তভোগীর ছবি তো দেয়া যাবে না। অভিযুক্তের ছবি প্রকাশ করা যায়।’
এ বিষয়ে একাধিকবার সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কোরবানি ঈদ উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে পঞ্চগড়ের চতুর্দেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তবে এ সময়েও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বৈধ পাসপোর্টধারী যাত্রীদের পারাপার ছিল স্বাভাবিক। ঈদের ছুটিতেও যাত্রী চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহীন জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গত ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে ১৪ জুন (শনিবার) পর্যন্ত স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল।% আজ রবিবার থেকে আবারও স্বাভাবিক নিয়মে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে বন্দরে ফের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সংশ্লিষ্ট কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টদের আগেই এ বিষয়ে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছিল।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের ছুটিতে ১০ দিন স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছিল। আজ থেকে চার দেশের মধ্যে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হয়েছে।
ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ কবীর জানান, বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ঈদের ছুটিতে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক ছিল। এতে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
কক্সবাজারের চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের চকরিয়া অংশে গাছ ফেলে পর্যটকের লাশ আনতে যাওয়া স্বজনবোঝাই অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ডাকাতদলের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ সময় অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে থাকা যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, কয়েকটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ডাকাতেরা। তবে পুলিশ দাবি করছে- এটি নিছক ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল।
শনিবার আনুমানিক ভোর সাড়ে ৪টার দিকে চকরিয়া থেকে আলীকদম গিয়ে পর্যটকের লাশ আনতে যাওয়ার পথে আলোচিত করইল্যারশিয়া এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি ডাকাতের কবলে পড়ে।
তবে ডাকাত দলে থাকা আরাফাত নামের এক ডাকাত ঘটনার সময় লুট করে নেওয়া একটি মোবাইল সরিয়ে জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে রাখে। ওই মোবাইল খুঁজতে সকালে ফের ঘটনাস্থলে যায় আরাফাত। এ সময় স্থানীয় জনগণের সন্দেহ হলে তাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটুনি দিতে থাকে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ সময় অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে আরাফাত নিজেসহ বেশ কয়েকজন অংশ নেয় বলে স্বীকার করে এবং তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে।
আরাফাতের দেওয়া তথ্যানুযায়ী অ্যাম্বুলেন্স ডাকাতিতে আরও যারা অংশ নেয় তারা হলেন- ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছড়ারকূলের ছাদেক, উচিতার বিলের ফারুক, আরিফ, সাগর ছাড়াও বেশ কয়েকজন।
গ্রেফতার আরাফাত (২৮) চকরিয়া পৌরসভার সাত নাম্বার ওয়ার্ডের মোহাম্মদীয়াপাড়ার আবুল কালামের ছেলে।
চকরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের চকরিয়া অংশে অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি নয়, ছিনতাই হয়েছিল। সেই ঘটনায় স্থানীয় জনতার সহায়তায় আটককৃত একজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে দুটি মোবাইল। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণসহ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ছয় যানবাহনের সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।
শনিবার (১৪ জুন) দিবাগত রাতে আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপীনাথপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের সহকারী ট্রাফিক সাব-ইন্সপেক্টর রফিকুজ্জামান এবং খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার দেবেনবাবু রোডের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ ব্যাপারীর ছেলে ও আরমান পরিবহনের হেলপার সেলিম হোসেন ব্যাপারী।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী আরমান পরিবহনের একটি বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় যাত্রীদের উদ্ধারকালে দ্রুতগতিতে আসা আরও তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেটকারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
রাত আড়াইটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলা এই সিরিজ সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই এটিএসআই রফিকুজ্জামান ও হেলপার সেলিম হোসেন ব্যাপারী প্রাণ হারান।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে। আহতদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরে দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহনগুলো সরিয়ে নিলে প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ‘ভূমিহীনদের বন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত হলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ।
শনিবার উপজেলার ভূমিহীন পরিবার আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাকে এ উপাধি দেওয়া হয়।
হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘ভূমিহীন পরিবারের নতুন ভোর ও একটি স্বপ্নের যাত্রা’ শীর্ষক সভায় সভাপতিত্ব করেন ওই কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মো. মফিজ উদ্দিন।
অধ্যাপক মফিজ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, “স্বাধীনতার পর এই প্রথম আবদুল হান্নান মাসুদ দ্বীপের অবহেলিত ভূমিহীন পরিবারের জীবনে নতুন ভোর এনে দিয়েছেন। এই স্বপ্নযাত্রার সম্মাননা ও স্বীকৃতি হিসেবে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ভূমিহীনদের বন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়েছে।”
সংবর্ধনার জবাবে আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘হাতিয়ার ইতিহাস বহু পুরোনো। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও দ্বীপে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। গত ১৭ বছরে এখনাে শুধু লুটপাট হয়েছে। আমি সবাইকে নিয়ে দ্বীপের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। তবে এখনো পতিত স্বৈরাচারদের প্রেতাত্মারা সক্রিয়। জনগণের কল্যাণে কাজ করতে গেলেই তারা পদে পদে বাধার সৃষ্টি করে।’
তিনি বলেন, ‘হাতিয়ার উন্নয়নের কথা বললেই ওই সিন্ডিকেটের গায়ে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়। যেমন, ফেরির ব্যবস্থা করতে চাইলে স্পিডবোট-ট্রলার মালিকরা, ভূমিহীনদের ভূমি বুঝিয়ে দিতে চাইলে ভূমিদস্যুরা, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করতে চাইলে অপরাজনীতির হোতারা বাধার কারণ হয়ে আসছে।’
হান্নান মাসউদ বলেন, ‘এই এলাকার ভূমিহীনদের মুলা ঝুলিয়ে রাজনৈতিক নেতারা যুগ যুগ ধরে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। তাদের কষ্টের কথা মিডিয়ায় আসে না, সুশীল সমাজের চোখে পড়ে না, প্রশাসনের দৃষ্টিতে আসে না। অসহায় এসব মানুষের কী অবস্থা সেটি দেখার মতো কোনো লোক পাওয়া যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাতিয়ায় নদীভাঙন রোধে গত ৫০ বছরে কেউ একটি জিও ব্যাগও ফেলতে পারেনি। আমি গত ১০ মাসে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করেছি। এখন হাতিয়ার জনগণ চাইলে স্থায়ী ব্লক বাঁধের ব্যবস্থাও করা হবে।’
স্থানীয় ভূমিহীন পরিবারের সদস্য মো. শরিফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হাতিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফিরোজ উদ্দিন, জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠক মো. ইউসুফ, হাতিয়া নিউ মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের প্রমুখ।
চট্টগ্রামে নতুন করে আরো একজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয় দিনে মোট ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা) ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ৪০ বছর বয়সী আক্রান্ত ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি শুক্রবার নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা করান। সেখানেই তার শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়।
এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত নয়জনের মধ্যে পুরুষ ৫ জন এবং নারী ৪ জন। এদের মধ্যে ৭ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার বাসিন্দা।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে করোনা শনাক্তকরণের পরীক্ষা চালু আছে। তবে শিগগিরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) আরটি–পিসিআর পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোগীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে গিয়ে হাসপাতালের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা ছুটে আসে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আহতরা হলেন ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৪জুন) বেলা ১১টায় দাউদকান্দি উপজেলা গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় ষ্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে হাসাপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের এবং বহিঃবিভাগে চিকিৎসা সেবা প্রায় দুই ঘন্টা বন্ধ থাকে৷ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১১ টার দিকে হাসপাতালের তিনতলার ষ্টোর রুমে আগুনের ধোয়া দেখা যায়। ধোয়া দেখে পাশের ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন ও নার্সরা আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করে। এ সময় হাসপাতালে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পল্লী বিদ্যু ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা নামে তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মোঃ ইদ্রিস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসার পর স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রাথমিক ধারনা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত, পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে মূল কারণ জানা যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ৩য় তলায় ডেঙ্গু রোগীদের ওয়ার্ডের পাশের কক্ষে ষ্টোর রুমে ঔষধসহ রোগীদের সেবার কাজে ব্যবহৃত সব ধরনের মালামালের সাথে কিছু দামী সরঞ্জামও ছিল। ওই কক্ষে আগুনে অধিকাংশ মালামালই পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু মালামাল বের করতে পারলেও তা ভালো আছে কিনা পরবর্তীতে যাচাই করে বলেতে পারবো । আগুনে ক্ষতির পরিমান এখন নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আর আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং মালামাল বিশেষ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার বের করতে গিয়ে আমাদের আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা তিনজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা মহাসড়কে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদফেরত যাত্রীরা।
শনিবার (১৪ জুন) সকাল থেকে এ যানজটের সৃষ্টি হয়।
যমুনা সেতুর পশ্চিম প্রান্তের গোলচত্বর থেকে কড্ডা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এবং সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই যানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, যমুনা সেতুর ওপর একটি পিকআপ ও ট্রাকের সংঘর্ষ এবং মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে আরও তিনটি যানবাহন বিকলের কারণে এই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।
ঈদ শেষে ঢাকামুখী মানুষের চাপের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
এদিকে, শনিবার সকালে কামারখন্দ উপজেলার বাগবাড়ি এলাকায় এনডিপি অফিসের কাছে যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কে দুইটি ট্রাকের সংঘর্ষের ফলে ওই স্থানে গাড়ির চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়, যা যানজটকে আরও দীর্ঘতর করে তোলে।
তবে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী লেনে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে, যদিও গাড়ির চাপ অনেক বেশি বলে জানান ওসি।
সকাল থেকেই আমাদের পুলিশ সদস্যরা মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা আশা করছি শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।
এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ভোর থেকে যমুনা সেতু থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ঢাকা-মুখী লেনে গাড়ির চাপ থাকলেও ঢাকা থেকে সেতু-মুখী লেনে কোনো যানজট নেই।
তিনি আরও জানান, হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। শিগগিরই যানজট নিরসন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সিলেটে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেছেন পাথর শ্রমিকরা।
শনিবার দুপুরে সিলেটের জাফলং পর্যটন এলাকা পরিদর্শন করেন অন্তর্বতী সরকারের এই দুই উপদেষ্টা। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে দুই উপদেষ্টাই জানান, সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো আর খুলে দেয়া হবে না। তাদের এই বক্তব্যের পরপরই পাথর শ্রমিকরা জড়ো হয়ে তাদের গাড়ি আটকিয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় উপদেষ্টাদের গাড়ি প্রায় ১০ মিনিট আটকে রাখেন শ্রমিকরা। এসময় পুলিশের সাথে হাতাহাতি হয় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের। কিছুক্ষণ পর পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন দুই উপদেষ্টা।
বিক্ষোভ প্রসঙ্গে জাফলংয়ের পাথর শ্রমিক আশরাফ হোসেন বলেন, পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় লাখো শ্রমিক বেকার হয়ে আছে। ফলে তাদের সবাই মনেই ক্ষোচ বিরাজ করছে। আজকে এই ক্ষোভের প্রকাশ ঘটেছে।
তিনি বলেন, জাফলংয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও লুটপাট বন্ধ নেই। লুটপাটকারীদের সুযোগ করে দিতেই বৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধ রেখেছে সরকার।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ বলেন, আকস্মিকভাবে কিছু লোক উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে মিছিল করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ দ্রুত তাদের সরিয়ে দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে।
গোয়াইনঘাট উপজেলার ইউএনও রতন কুমার অধিকারী বলেন, উপাদেষ্টাদের গাড়ি নিরাপাদে জাফলং ছেড়ে চলে গেছে। তারা এখন হরিপুর গেস্ট হাউসে আছেন।
এর আগে জাফলং পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে জাফলং ও এর আশেপাশের এলাকার পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। জাফলং এর অবৈধ পাথর ক্রাশারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
আর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সিলেটের আর কোন পাথর কোয়ারি খুলে দিবে না সরকার।
তিনি বলেন, জাফলং পর্যটন কেন্দ্রকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এমটটি হলে এ অঞ্চলের পাথর শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, জাফলং ইসিএ এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এরকম অবৈধ কার্যক্রমের সাথে কেউ জড়ালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেঘনা নদীর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের প্রান্তে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতুর পিলারে ধাক্কা লেগে নদীর স্রোতে তলিয়ে গেছে বালু বোঝাই একটি বাল্কহেড।
শনিবার (১৪ জুন) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ প্রান্তে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সীমান্ত এলাকা সুনামগঞ্জ থেকে বালু বোঝাই করে ঢাকায় যাওয়ার পথে মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ প্রান্তে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতুর পিলারে ধাক্কা লেগে বাল্কহেডটি মুহূর্তের মধ্যে তলিয়ে যায়। এসময় বাল্কহেডে থাকা সুকানিসহ ৬ জন সাঁতরিয়ে পাড়ে উঠে জীবন রক্ষা করেন। পরবর্তীতে খবর পেয়ে ভৈরব নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য ও বিআইডব্লিউটিএর একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
প্রত্যক্ষ্যদর্শী এমভি মেমোরি ৩৪ জাহাজের মাস্টার ইয়াকুব আলী বলেন, সকাল পৌনে ছয়টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখি একটি বাল্কহেড ব্রিজের পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাঝখানে ফেটে তলিয়ে গেছে। এসময় বাল্কহেডে থাকা ৩ জন ব্রিজের পিলারে ওঠেন, বাকি ৩ জন সাঁতরিয়ে নদীর পাড়ে উঠে প্রাণ রক্ষা করেন।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী এমভি মেঘনা জাহাজের সুকানি নুর নবী বলেন, বিকট শব্দ শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি একটি বাল্কহেড সেতুর পিলারের কাছে ডুবে যাচ্ছে। পরে প্রবল স্রোতে পানিতে তলিয়ে যায় বাল্কহেডটি।
এ বিষয়ে ভৈরব নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. মোবারক বলেন, সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে বাল্কহেড ডুবে যাওয়ার সত্যতা জানতে পারি। তবে পানিতে পুরো বাল্কহেডটি তলিয়ে যাওয়ায় কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের কোনো লোকজন পাওয়া যায়নি। এটি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
সাতক্ষীরা, সুন্দরবন, খোলপেটুয়া, কপোতাক্ষ, গাবুরা, হরিনগর, কৈখালী নদীতে অবাধে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে নদী থেকে আহরণ করা হচ্ছে চিংড়ির রেণু পোনা। এতে মারা যাচ্ছে শত প্রজাতির মাছের পোনাসহ জলজ প্রাণী। নদী থেকে আহরণ নিষিদ্ধ এসব রেণু পোনা রাতের আঁধারে নেয়া হচ্ছে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা। বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে অভিযোগ মৎস্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। তবে মৎস্য বিভাগ জানায়, রেণু পোনা আহরণ বন্ধে অভিযান চালালেও শতভাগ সফল নন তারা।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রকাশ্যে খোলপেটুয়া, কপোতাক্ষ, হরিনগর, নদীতে রেণু পোনা আহরণ করছেন হাজার হাজার স্থানীয় অধিবাসীরা। নিষিদ্ধ জাল দিয়ে আহরণ করা এসব রেণু পোনা তীরে বসে আরেক দল পোনা এবং জলজ প্রাণী গুনে আলাদা করছে। এতে মারা যাচ্ছে শত প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাতের আঁধারে এসব পোনা বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার মৎস্য হ্যাচারিতে। স্থানীয়রা জানায়, অবৈধভাবে রেণু পোনা আহরণ বন্ধ না করা হলে নদীর জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের। পাশাপাশি কমবে মাছের উৎপাদন।
খোলপেটুয়া নদীতে রেণু পোনা আহরণ কারী একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন শুধু মাত্র গাবুরা ইউনিয়ন, বুড়িগোয়ালীনি এলাকা ও আটুলিয়া ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে কয়েক কোটি পোনা আহরণ করা হয়। বাকি গাবুরা ও কপোতাক্ষ নদীতেও এমনভাবেই রেনু পোনা আহরণ করা হয়। যা স্থানীয় পাইকারের কাছে এক একটি রেণু পোনা এক টাকা মূল্যে বিক্রি করেন তারা। পরে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা নিয়ে পাইকাররা তা বিভিন্ন মূল্যে বিক্রি করা হয়। আর এজন্য পাইকাররা বিভিন্ন স্থানে মাসোয়ারা দেন বলেও জানা যায়।
জানা যায়, খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদীর রেণু পোনার সবচেয়ে বড় পাইকার বুড়িগোয়ালীনি। এখানে বসেই কয়েকজন মিলে নিয়ন্ত্রণ করে এ অঞ্চলের রেণু পোনা। এদের ছত্র ছায়ায় গাবুরা নদী, খোলপেটুয়া, হরিনগর, কালমেঘা, কাকচিড়া এলাকায় বেশ কিছু পাইকার রয়েছে। এসব পাইকারদের মধ্যে অধিকাংশ পাইকার সোনারমোড় পাইকারদের থেকে দাদন নিয়ে রেণু সংগ্রহ করে আসছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই রেণু পোনা নিয়ন্ত্রণ করত সাবেক এমপি জগলুল হায়দার একান্ত সহচর ভবতোশ কালামসহ কয়েকজন আ. লীগের নেতারা। বর্তমানে তা স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে বলেও জানা যায়।
গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপির নেতা মাসুদুল আলম জানান, রেণু পোনা শিকারে কারনে নদীতে মাছের পরিমাণ কমে গেছে। খোলপেটুয়া নদীর তীরবর্তী সোনারমোড় মৎস্য ঘাটে তেমন মাছের দেখা মিলে না। এখানে আগে টনকে টন মাছ কেনাবেচা হতো।
বুড়িগোয়ালীনি মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল হালিম জানান, অবৈধ জাল দিয়ে মৎস্য শিকার কিছুতেই থামছে না। এর মধ্যে খোলপেটুয়া নদীগুলোতে যেন রেণু পোনা আহরণের মহোৎসব চলছে। এগুলো এখনি বন্ধ না করলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি মাছের উৎপাদন ধংস হয়ে যাবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
সাতক্ষীরা স্টেশন কোস্ট গার্ড কপোতাক্ষ স্টেশন সুত্রে জানা যায়, গত মাসে অভিযান চালিয়ে তার প্রায় ২০ লাখ চিংড়ি রেণু পোনা ও ১৫ লাখ মিটার অবৈধ নেট জাল জব্দ করেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা । কিন্তু এ বিষয়ে কাউকে আটক করতে পারেনি তারা।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নদী থেকে নিষিদ্ধ রেণু পোনা আহরণ করায় ভীষণ হুমকিতে পড়েছে মৎস্য সম্পদ। রেণু আহরণ বন্ধে নিয়মিত অভিযান চললেও শতভাগ সফল নন তারা। কেননা অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর কিশোরী ও অধিকাংশ নারীরা ঝুঁকি নিয়ে পোনা আহরণ করছে। কম জনবল নিয়ে একদিক থেকে অভিযান চালালে অপর দিক থেকে অভিযান বুঝতে পেরে পালিয়ে যায় তারা।
কুষ্টিয়ার মিরপুরে চলন্ত একটি অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে ইটবোঝাই ট্রলির সংঘর্ষে অনিক নামে এক হেলপার নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার সময় অ্যাম্বুলেন্স চালক গাড়ির ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলেন এবং হেলপার অনিক গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৭টার দিকে মিরপুর উপজেলার কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কের সদরপুর ইউনিয়নের সদরপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদরাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত অনিক (১৮) ওই উপজেলার তালবাড়িয়া ইউনিয়নের চারুলিয়া এলাকার হাফিজুর রহমানের ছেলে। তিনি কুষ্টিয়ার একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের হেলপার হিসেবে কাজ করতেন।
কাকিলাদহ পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দিন জানান, আজ (শনিবার) সকাল ৭টার দিকে মেহেরপুরগামী একটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সামনের চাকা ফেটে যায় এবং গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইটবোঝাই ট্রলিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই হেলপার অনিকের মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার সময় অ্যাম্বুলেন্সে চালক ছাড়া অন্য কোনো যাত্রী ছিল না। নিহত অনিক অ্যাম্বুলেন্সটির হেলপার ছিলেন। চালক গাড়ির ভেতরেই ঘুমিয়ে ছিলেন এবং অনিক অ্যাম্বুলেন্সটি চালিয়ে মেহেরপুর যাচ্ছিলেন।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়েছে।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে নাবিল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় পাঁচ বাসযাত্রী যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন।
শনিবার (১৪ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঘোড়াঘাট উপজেলার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের নূরজাহানপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম- ঠিকানা জানা যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হক জানান, দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের নূরজাহানপুর এলাকায় আমবাহী কয়েকটি ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী নাবিল পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পেছন থেকে ট্রাকটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই বাসের পাঁচ যাত্রী নিহত হন।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে উদ্ধার কার্যক্রম চালায়। এরপর আহত অন্তত ১৫ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
বাঙ্গালী জাতি সত্তা তথা আমাদের বাঙ্গালী জীবন সংগ্রামের সাথে অতি নিবির ভাবে জড়িয়ে আছে দেশীয় লোকজ সংস্কৃতি। মানুষ তার নিজস্ব সংস্কৃতি পরিমন্ডলের ভেতরেই প্রতিনিয়ত বেড়ে উঠার ফলে লোকজ সংস্কৃতিকে বলা হয় বাঙ্গালীর সংস্কৃতির এক অমুল্য সম্পদ।
আমাদের বাঙ্গালীপনা মনোভাব, স্বভাব চরিত্র, আচার আচরন, কৃষ্টি কালচারের মূল শেকর অনুসন্ধান করতে গেলে আমাদের জীবনে লোক সংস্কৃতির এক সুদূর প্রসারী প্রভাব লক্ষ করা যায়। সেই সংস্কৃতির বড় অংশ জুড়ে রয়েছে খেলাধুলা। যার মধ্যে গ্রামগঞ্জের অন্যতম কৌশলী ও জনপ্রিয় একটি খেলা হলো লাঠি খেলা।
যা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর প্রায় দেড়’শ বছরের ঐতিহ্য।
কালের গর্বে প্রায় বিলিনের পথে পুরনো এই লাঠি খেলাকে উজ্জীবিত করার প্রয়াসে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিকেলে ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে আখালিয়ায় ও খিরু নদের পাড়ে স্থানীয় অনির্বাণ ছাত্র সংঘের একযুগ প‚র্তিতে লাঠি খেলার আয়োজন করেন। গ্রামীন জনপদের লোকজন চিত্ত বিনোদনের ধারক হিসেবে বেছে নিয়েছে এই লাঠি খেলা।
খেলায় সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষনা প্রতিষ্ঠানের উপ- পরিচালক ড. এ কে এম নজরুল ইসলাম। উদ্বোধন করেন, ইউপি সদস্য আমিনুল এহসান। খেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ তার টেলিফোন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার জয়নাল আবদীন।
লাঠি খেলা জানা থাকলে জীবনে নানা বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। খেলার কৌশল জানা থাকলে শত্রু পক্ষের হাত থেকে বেচে আসা যায়।
এমনই এক লাঠিয়ালদের ওস্তাদের খোজ মিলে, উপজেলার রাঙামাটি ইউনিয়নের আনুহাদি গ্রামের বাড়িতে শামছুল হক সরকার (৬৫) যিনি ১৩ বছর বয়স থেকে লাঠি খেলা খেলে থাকেন। এর আগে তার বাপ দাদা এমনকি দাদার দাদারাও এ খেলা খেলেছে। দেখাযায় তাদের বংশ পরম্পরায় শেষ বংধর হিসেবে শামছুল এই বৃদ্ধ বয়সেও লাঠি খেলাটি ধরে রেখেছে। শামছুল হকের রয়েছে ৩০ সদস্যে একটি লাঠিয়াল দল। দলটির ওস্তাদ সে নিজেই।
এ খেলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে শামছুল ওস্তাদ জানায়,এখলায় ৩০ থেকে ৪০ সদস্য বিশিষ্ট দক্ষ লাঠিয়া খেলোয়ারের প্রয়োজন হয়। খেলা শুরুতে সংগীতের মাধ্যমে খেলাটির স‚চনা হয়। মুলত ৯ টি ধাপে খেলাটি ভাগ করা হয়ে থাকে বলে শামছুল জানায়। খেলার প্রথম ধাপ হলো, দু’জন খেলোয়ার ( এক গ্রুপ) আড়াই হাত লম্বা একটি করে লাঠি নিয়ে খেলে। দ্বিতীয় ধাপে দু’জন খেলোয়ার একই মাপের লাঠি প্রতি খেলোয়ার ৫টি করে লাঠি নিয়ে খেলা দেখায়। তৃতীয় ধাপে ৪জন (২গ্রুপ) একটি করে লাঠি হাতে নিয়ে খেলা দেখায়। ৪র্থ ধাপে চার থেকে সাড়ে ৪হাত লম্বা লাঠি একটি করে দুই গ্রুপের ৪ জনকে খেলতে হয়। ৫ম ধাপের খেলায় একই লাঠি প্রতি খেলোয়ার দু’হাতে দুটি করে লাঠি নিয়ে বিভিন্ন অংগ ভঙ্গিমায় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খেলা দেখায়। লাঠি খেলায় বিশেষ আকর্ষন থাকে ৬ষ্ট ধাপে। একজন খেলোয়ার দু’হাতে দুটি ধারালো রাম-দা নিয়ে নিজ শরীরের চারপাশে এলোপাথাড়ী ঘোরাতে থাকে। একই খেলোয়ারের আরো একটি খেলা দেখায় চরকা বানডি, যে খানে ৪টি ধারালো চাকু কাঠির সাহায্যে বেধে একই ভঙ্গিমায় ঘোরাতে থাকে। সর্বশেষ ধাপে সকল লাঠিয়ালরা একত্র হয়ে বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নৃত্যের মাধ্যমে যে যার মতো করে খেলা প্রদর্শন করে লাঠি খেলার সমাপ্ত ঘটায়। খেলা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাজানো দুর্লভ বাদ্যযন্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে, বোম, কাড়া, জয়ঢাক, কনেট ও পাতার বাশি।
খেলায় অংশ নেওয়া খেলোয়াড়দের দাবী সরকারী বা বেসরকারী ভাবে যদি এ লাঠি খেলা বেশি বেশি করে আয়োজন করে তবে এ খেলা ফুলবাড়িয়ার গুন্ডি পেরিয়ে পাশ্ববতী উপজেলা বা জেলা শহরে এ খেলার ব্যাপক বিস্তার লাভ করবে। যার মধ্যে দিয়ে বাংলার হারানো সেই গ্রমীন সংস্কৃতিক ঐতিহ্য পূনরায় টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।