মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫
২০ কার্তিক ১৪৩২

রাজশাহীতে মদ্যপানে ৪ জনের মৃত্যু

প্রতীকী ছবি
ইউএনবি
প্রকাশিত
ইউএনবি
প্রকাশিত : ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১৬:২০

রাজশাহীতে মদ্যপানে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও চারজন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মোহনপুর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। অসুস্থ চারজনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

নিহতরা হলেন, মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের সোলেমান আলীর ছেলে মন্তাজ আলী, ময়েজ মন্ডলের ছেলে টুটুল, মোংলার ছেলে একদিল ও করিষা গ্রামের তুজাম্মেলের ছেলে জুয়েল।

রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, দুর্গাপুর গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে পিন্টু, মৃত জাহান আলীর ছেলে আকবর, সাঈদ আলীর ছেলে মোনা ও আফসার আলীর ছেলে ফিরোজ হোসেন।

রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র সংকর কে বিশ্বাস বলেন, ‘তার সবাই মদ্যপান করে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। যাদের মধ্যে হাসপাতালে দুজন মারা যান। আর হাসপাতালে পৌঁছার আগে দুজন মারা যান।’

জাহানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, ‘উপজেলা ধোরর্সা গ্রামের হান্নান দেশীয় মদ পটেনসি (কট) ব্যবসায়ী। তার কাছ থেকে মদ কিনে মন্তাজের বাড়িতে বসে মদ্যপান করে তারা।’

‘এরপর তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের রামেকে পাঠানো হয়। যাদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে পৌছার আগে ও দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পুলিশের অনুমতিতে চারজনের লাশ দাফন করা হয়েছে।’

রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আকতার বলেন, এ ঘটনায় নিহত মন্তাজের ছেলে মাসুম রানা বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন। এর পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। এরা হলেন, উপজেলার মতিহার গ্রামের মহিরের ছেলে মুকুল ও ধোপাঘাটা গ্রামের গফুরের ছেলে জনি। জড়িতদের খুঁজে বের করতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।


কাউখালীতে কঠিন চীবর দানোৎসব পালিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি

রাঙামাটি জেলার কাউখালি উপজেলার বেতবুনিয়ায় অবস্থিত বেণুবন উত্তমানন্দ ধর্মবন বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দানোৎসব। মঙ্গলবার দুপুরে বিহার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত কঠিন চীবর দানোৎসব ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পশ্চিম সোনাইছড়ি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত নাইন্দাবাসা মহাথেরো।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকারবিষয়ক উপপরিচালক মো. মোবারক হোসেন। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল বড়ুয়া মিলন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক জুই চাকমা এবং কাউখালী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি পাইচিং মং মারমা।

কঠিন চীবর দানোৎসবে প্রধান সদ্ধর্মদেশক ছিলেন গজালিয়া জোতিবন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত রত্নপ্রিয় মহাথেরো এবং বিশেষ সদ্ধর্মদেশক ছিলেন শীলছড়ি অরণ্য ভাবনা কুঠিরের অধ্যক্ষ ভদন্ত সাধনানন্দ মহাথেরো। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রবাসী রিপন বড়ুয়া এবং উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জীবন বড়ুয়া। এর আগে সকালে অষ্টপরিস্কার, সংঘদান ও সদ্ধর্ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান সদ্ধর্মদেশক ছিলেন বেতাগী সার্বজনীন রত্নাকুর বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ইদ্দিপিঞ্ঞা মহাথেরো।

অনুষ্ঠানে এলাকার কৃতি সন্তান প্রকৌশলী পবন বড়ুয়া নিশানকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে এলাকার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।

আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি মো. মোবারক হোসেন বলেন, ‘জীবে প্রেম করে যে জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। জীব হত্যা মহাপাপ। সৃষ্টিকে ভালোবাসা এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভক্তিই মানুষের প্রকৃত ধর্ম। আমরা যদি প্রেম, সম্মান ও শান্তির পথ অনুসরণ করি, তাহলে সমাজ, দেশ ও বিশ্ব উপকৃত হবে।’

পরে ভিক্ষু সংঘের উদ্দেশে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি এবং পুণ্যার্থীরা চীবর দান করেন। এ সময় ‘সাধু, সাধু, সাধু’ ধ্বনিতে পুরো বিহার প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে।


কমলনগরে আশঙ্কাজনক বাড়ছে চুরি-ডাকাতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রামগতি-কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় ব্যাপকহারে বেড়েছে চুরি-ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা। রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহ উৎপাত। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে। বাড়ছে চুরি-ডাকাতি, ধর্ষণ, মাদক ও ইভটিজিং সহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড। গত এক বছর ধরে একের পর এক অপরাধ কর্মকাণ্ড যেন বেড়েই চলেছে। কোনভাবেই থামানো যাচ্ছেনা চুরি ডাকাতি। প্রতিরাতে উপজেলার কোথাও না কোথাও চুরি-ডাকাতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এলাকাবাসী।

সুত্র জানায়, উপজেলার চরকাদিরা, হাজিরহাট, চরফলকন, পাটারিরহাট, চরকালকিনি, চরমার্টিন, সাহেবেরহাট ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে চলছে একের পর এক চুরি ডাকাতি ও ধর্ষণের মত ঘটনা।

গত এক বছরে বেশ কিছু গণধর্ষণ, ধর্ষণ, ধর্ষণ চেষ্টা, কিশোরগ্যাং, চুরি ও ডাকাতির পাশাপাশি গরু চুরি, মানুষের বসত বাড়িতে চুরি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। বসতবাড়ির পানির কল, মটর, শাড়ি কাপড় কোন কিছুই বাদ যাচ্ছেনা চোরের হাত থেকে। জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও চলছে কিশোরগ্যাংয়ের মহড়া।

উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৮১টি ওয়ার্ডের অলিগলিতে বেপরোয়া হয়ে উঠছে কিশোরগ্যাংচক্র। এরা সংঘবদ্ধ হয়ে গভীর রাতে মানুষের গরু চুরি থেকে শুরু করে বসতবাড়িতে হানা দিচ্ছে, ঘটছে ধর্ষণের মত ভয়াবহ ঘটনা। এসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ হলেও পুলিশ ধর্ষণে অভিযুক্তদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও বেশীরভাগ রয়েছে অধরা। চুরি ডাকাতির মামলায় আসামি গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ। এতে দিন দিন মানুষের মধ্যে আতংক ও উৎকন্ঠা বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ৮১টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও রয়েছে উদ্বেগ উৎকন্ঠায়। অন্যদিকে কমলনগর থানায় দালালের উৎপাদও বেড়ে গেছে।

সুত্রমতে: ২৯ অক্টোবর রাতে উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নে এক স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। ১১ অক্টোবর চরকাদিরা ইউনিয়নের চরবসু এলাকায় চিপসের প্রলোভন দিয়ে ৫ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করেন বশির সর্দার নামে এক ব্যক্তি। গত বছর ৯ ডিসেম্বর রাতে চরকাদিরা ইউনিয়নের বটতলী এলাকায় ফিল্মি স্টাইলে মাকে বেঁধে এক তরুণীকে ৪ জন মিলে ধর্ষণ করে। ১৫ অক্টোবর চরমার্টিন ইউনিয়নে খালা শাশুড়ীর সাথে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

এছাড়া ২৯ অক্টোবর চরমার্টিন ইউনিয়নের আবুধাবি প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসময় ওই বাড়ি থেকে ১৬ লাখ টাকার মালামাল ও ১৪ ভরি স্বর্ণ লুট করা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে চরফলকন গ্রামে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে পরিবারের ১২ জনকে অচেতন করে ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়। ২ এপ্রিল চরলরেন্স ইউনিয়নের বাঁশতলা এলাকায় দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। চরকাদিরা ইউনিয়নের চরবসু এলাকা থেকে কয়েকটি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। ৪ এপ্রিল তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের চরপাগলা গ্রামে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ১৯ ডিসেম্বর হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালিয়া গ্রামে সৌদি প্রবাসীর বাড়ীতে পরিবারের সবাইকে হাত পাঁ বেঁধে ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়। ১২ আগস্ট চরলরেন্স ইউনিয়নের করইতলা এলাকায় আরেক প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ১৭ অক্টোবর রাতে হাজিরহাট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ডাকাতি হয়। এসময় ডাকাতদল নগদ ৫ লাখ টাকা সহ ৮ ভরি স্বর্ণ অলংকার লুট করে। হাজিরহাট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ইয়াসিন আরাফাতের বাড়িতেও চুরি হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ওয়ালি উদ্দীন মাসুদের বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। এভাবে প্রতিদিন উপজেলার কোথাও না কোথাও চলছে চুরি ডাকাতির ঘটনা। এসব ঘটনায় পুলিশ অপরাধী ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় জনমনে পুলিশ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।

চরমার্টিন ইউনিয়নের বাসিন্দা খবিরুল হক বলেন, মানুষের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই, যেভাবে গণহারে চুরি ডাকাতি হচ্ছে-থানা পুলিশকে জানিয়েও কোন লাভ হচ্ছেনা। চুরি ডাকাতির পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনাও শুনতেছি। আমরা মেয়েদের নিয়ে চিন্তিত রয়েছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা গ্রাম পুলিশ দিয়ে নিয়মিত পাহারা দিচ্ছি। চুরি ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা সভায় বার বার বলেছি। এরপরেও কোন ভাবেই চুরি ডাকাতি বন্ধ করা যাচ্ছে না। মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশকে আরও সতর্ক হওয়া উচিত।

কমলনগর থানার ওসি মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কিছু চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ সাথে সাথে ব্যবস্থাও নিচ্ছে। থানায় আসা অভিযোগগুলো গ্রহন করে বেশ কিছু অপরাধী গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য অপরাধী ধরতে পুলিশ কাজ করছে।


৩৬ জুলাইয়ের পর রংপুরে প্রশাসনের নতুন দিগন্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রংপুর সংবাদদাতা

বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘৩৬ জুলাই’-একটি স্মরণীয় দিন। রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা আর অনিশ্চয়তার ঘনঘটায় যখন দেশের মানুষ আতঙ্কিত, ঠিক সেই সময় রংপুরে এসে দায়িত্ব নেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি প্রমাণ করেছেন-সত্যিকারের প্রশাসনিক নেতৃত্ব মানে শুধু অফিসের চেয়ারে বসে নির্দেশ দেওয়া নয়, বরং মাঠে নেমে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

নিয়মিত পরিদর্শন, কঠোর শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে তিনি রংপুর জেলা প্রশাসনকে এনে দিয়েছেন এক নতুন রূপে।

সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে যেখানে আগে ছিল জটিলতা ও বিলম্ব সেখানে এখন গতিশীলতা ও দ্রুত সেবাদান নিশ্চিত হয়েছে। জেলা প্রশাসকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নাগরিক সেবা কার্যক্রমে এসেছে গতি; ভূমি, সমাজসেবা, খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবায় যুক্ত হয়েছে নতুন আস্থা।

প্রতিটি সরকারি কর্মসূচিতে তিনি কেবল সভাপতির আসনে বসেন না, মাঠে গিয়েও বাস্তবতা যাচাই করেন। তিস্তা পাড়ের নদীভাঙন, দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনাকে দমন, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা কার্যক্রম- সব ক্ষেত্রেই ডিসি রবিউল ফয়সাল আছেন সক্রিয়।

সাধারণ মানুষরা বলেন, ডিসি স্যার আসার পর আমরা সরকারের উপস্থিতি টের পাই। রংপুর সদর উপজেলার এক শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম বলেন, আগে অভিযোগ জানালে মাসের পর মাস কোনো সাড়া পেতাম না। এখন ডিসি স্যারের নির্দেশে দুদিনেই ব্যবস্থা হয়। এটা আমাদের কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা।

রবিউল ফয়সালের মূলনীতি, ‘জনগণের প্রতি জবাবদিহি’। অভিযোগ পেলে তিনি শুধু দাপ্তরিকভাবে নয়, সরেজমিনে যাচাই করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেন। গণমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া বা সরাসরি ফোনে পাওয়া অভিযোগ তিনি নিজে মনিটর করেন। এই দায়িত্ববোধ ও মানবিক মনোভাবের কারণেই এখন রংপুরের মানুষ বলেন, ডিসি স্যার আছে বলেই, আমরা শান্তির ঘুম ঘুমাতে পারছি। ৩৬ জুলাইয়ের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত ভিশন বাস্তবায়নে তিনি রংপুরকে মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছেন। দুর্নীতি, অনিয়ম ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রশাসন গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছেন তিনি।

ভূমিহীনদের পুনর্বাসন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ নিয়োগ, বন্যা ও ত্রাণ কার্যক্রমে ন্যায়সংগত বিতরণ-সব ক্ষেত্রে তার দৃঢ় নেতৃত্বে এসেছে দৃশ্যমান সাফল্য।

শিক্ষার্থী মাহবুবা আখতার বলেন, স্কুল ও কলেজ পরিদর্শন, শিক্ষার মান উন্নয়নের উদ্যোগ, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথোপকথন-এসবই দেখিয়ে দিয়েছে ডিসি স্যারের মানবিক মনোভাব।

স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্প পরিদর্শনে তার উপস্থিতি, সমস্যার সমাধানের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া-সবই প্রতীয়মান করে যে, প্রশাসন শুধু বেসরকরি হিসাব নয়, জনসেবায় নিবেদিত।

রংপুরের জেলার সাংবাদিকরা বলেন, ডিসি স্যার আছে বলেই প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা এসেছে। তার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে।

ডিসি রবিউল ফয়সাল বলেন, রংপুরের মানুষের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনা, সরকারি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া-এটাই আমার মূল লক্ষ্য। প্রশাসন হবে মানুষের, মানুষের কল্যাণে। ‘৩৬ জুলাই’ পরবর্তী প্রশাসনিক পরিবর্তনের ধারায় ডিসি রবিউল ফয়সালের নেতৃত্ব এখন রংপুরবাসীর আস্থার প্রতীক। তিনি হয়তো একদিন অন্য জেলায় বদলি হবেন, কিন্তু রংপুরের মানুষের মনে থেকে যাবে তার কর্মের স্বাক্ষর- একজন সৎ, মানবিক ও দৃঢ় জেলা প্রশাসকের প্রতিচ্ছবি হিসেবে।


তারাকান্দায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ময়মনসিংহ ব্যুরো

ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার পাথারিয়া গ্রামে অবস্থিত ভাষা সৈনিক শামছুল হক কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ করেছেন কলেজটির একাধিক শিক্ষক, প্রতিষ্ঠাতা, জমিদাতা ও কয়েকজন কর্মচারি। অভিযোগকারীদের দাবি, অধ্যক্ষ নিজের ইচ্ছায় টাকার বিনিময়ে শিক্ষক-কর্মচারি নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে অধ্যক্ষS স্বেচ্ছাচারি আচরণ করেন।

অভিযোগকারীদের আরও দাবি, গত মে মাস থেকে তিনি কলেজ ক্যাম্পাসে না এসে পৃথম স্থানে একটি টিনের ঘর তৈরি করে কলেজ পরিচালনা করছেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনেকেই অধ্যক্ষের তৈরি করা নতুন ঘরে ক্লাস করছে আবার অনেকেই মূল ভবনের কাজ করছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীা বিপাকে পড়েছে। কলেজটির ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গত সোমবার সরেজমিনে ভাষা সৈনিক শামছুল হক কলেজে গিয়ে দুটি ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষক-কর্মচারিদের সঙ্গে কথা হয়। জানা যায়, ২০১৪ সালে পাথারিয়া গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় ভাষা সৈনিক শামছুল হক হক। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে এমপিও ভুক্ত হয়। এনটিআরসিএ এর নিয়ম অনুযায়ী ২০১৫ সালের পর থেকে এমপিওভুক্ত কলেজে শিক্ষক পদে কলেজ কতৃপক্ষের নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তবে কর্মচারি নিয়োগ দিতে পারবে। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠার পরপর কেবল একবারই ভাষা সৈনিক শামছুল হক কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষক দেয়। কলেজটিতে বানিজ্য বিভাগ না থাকায় ওই সময় এ বিভাগের কোন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে ২০২৩ সালে এমপিও ভুক্ত হওয়ার পর জানা যায়, বানিজ্য বিভাগের কোন শিক্ষার্থী না থাকালেও এ বিভাগের তিনজন প্রভাষক এমপিওভুক্ত করা হয়। তাদের নিয়োগ দেখানো হয়েছে ২০১৫ সালে। এছাড়া বেসরকারি কলেজে নিয়ম অনুযায়ী দুইজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও নিয়ম ভেঙে অধ্যক্ষ আরও একজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। এসব নিয়োগের বিনিময়ে অধ্যক্ষ মো. মনিরুজ্জামান টাকা নিয়েছেন বলে একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ। সম্প্রতি কলেজের পৌরনীতির শিক্ষক মোখলেছুর রহমান সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। আহত অবস্থায়তেও তিনি কলেজে যান প্রতিদিন। কিন্তু অধ্যক্ষের প্রতিষ্ঠিত টিনের ভবনে না যাওয়ার কারণে মোখলেছুর রহমানকে অনুপস্থিত দেখিয়ে তার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নতুন ভবনে না যাওয়ার কারণে একাধিক শিক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক নিয়োগে অর্থ আত্নসাৎ ও স্বেচ্ছাচারি আচরণের বিষয়টি উল্লেখ করে কলেজের শিক্ষকদের একাংশের পক্ষ থেকে এবং দুইজন কর্মচারি তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া নিয়ম ভেঙে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে তৃতীয় একজনকে নিয়োগ দেওয়া আদালতে মামলা করেছেন প্রথমে নিয়োগ পাওয়া দুইজন অফিস সহকারী ও কাম কম্পিউটার অপারেটর মাসুদ রানা ও এমরান হোসেন।

কলেজটির পৌরনীতি বিভাগের শিক্ষক মোখলেছুর রহমান বলেন, আমি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পরও নিয়মিত কলেজে গিয়েছি। অথচ অধ্যক্ষ আমার বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন। অসুস্থ অবস্থায় বেতন বন্ধ থাকায় আমি অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছি।

কলেজের নিয়োগ বোর্ডের সদস্য শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ২০১৫ সালের নিয়োগ বোর্ডের আমি একজন সদস্য। বোর্ডের নিয়োগের বাইরে তিনি একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারি নিয়োগ দিয়েছেন টাকার বিনিময়ে। আমরা এসবের প্রতিবাদ করলে তিনি কলেজের মূল ক্যাম্পাস ছেড়ে নিজের পছন্দমত ঘর তৈরি করে কলেজ পরিচালনা করছেন। এটি কোন ভাবেই বৈধ না।

অধ্যক্ষ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ৫ আগস্টের পর আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে সাজানো মানববন্ধন করা হয়েছে। এরপর আমিসহ বেশির ভাগ শিক্ষককে কলেজে না যেতে হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাতে আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করে পৃথক স্থানে ভবন নির্মাণ করে কলেজের পাঠদান করে আসছি। বিষয়টি আমি স্থানীয় প্রশাসনকে প্রথমে মৌখিকভাবে এবং পরে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ সত্য নয়।

তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসাইন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। সমস্যাটি সমাধানের জন্য আমি উদ্যোগ নিয়েছি।


রূপগঞ্জে সেনাবাহিনীর অভিযানে বিপুল অস্ত্র-মাদক উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী রবিন মিয়া (৩৫)-কে গ্রেপ্তার করে পূর্বাচল আর্মি ক্যাম্পের আভিযানিক দল।

সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পূর্বাচল আর্মি ক্যাম্পের একটি চৌকস দল গত রবিবার গভীর রাতে এই অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলভার, একটি দুই নলা বন্দুক, একটি ডামি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, দেশীয় ধারালো অস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য- যার মধ্যে রয়েছে হেরোইন ২২২ গ্রাম, ইয়াবা ১৫৩ পিস ও গাঁজা ৫০০ গ্রাম।

অভিযান শেষে গত সোমবার রাতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পূর্বাচল আর্মি ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়সাল ইশতিয়াক।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়সাল ইশতিয়াক বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছে। রূপগঞ্জে পরিচালিত এ অভিযানে একটি বড় অস্ত্র ও মাদক চক্রের সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। আটক রবিন মিয়ার বিরুদ্ধে আগে থেকেই ছয়টি মামলা রয়েছে। আমাদের কাছে রাজনৈতিক পরিচয় নয়, অপরাধই আসল পরিচয়। সন্ত্রাসী মানে সন্ত্রাসী এটাই মূল বিষয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, সন্ত্রাস দমন ও মাদক নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি তারিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনীর হাতে আটক রবিন মিয়াকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য জব্দ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।


নেত্রকোনায় ‘আমার চোখে জুলাই বিপ্লব’ শিরোনামে প্রকাশনা উৎসব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এ বি চৌধুরী নাদিম, নেত্রকোনা

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং জেলা পরিষদের তত্বাবধানে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জুলাই গণঅভ্যূত্থান স্মরণে আইডিয়া প্রতিযোগিতা বাস্তবায়ন পরবর্তী ‘আমার চোখে জুলাই বিপ্লব’ শিরোনামে প্রতিবেদনের প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে ‘আমার চোখে জুলাই বিপ্লব’ প্রকাশনার উন্মোচন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. কামরুল হুদা, পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও পৌর প্রশাসক মো. আরিফুল ইসলাম সরদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসমা বিনতে রফিক, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান নুরু এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী মুহাম্মদ আব্দুর রহিম রুহীসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা


মাদারীপুরে রেইজ প্রকল্পের ‘কমিউনিটি আউটরিচ সভা’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাদারীপুর প্রতিনিধি

পল্লীকর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন ‘রেইজ’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে মাদারীপুরে এক বর্ণাঢ্য ‘কমিউনিটি আউটরিচ সভা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা অংকুর পল্লী উন্নয়ন কেন্দ্র (এনজিও) এর উদ্যোগে আয়োজিত এই সভাটি মঙ্গলবার মাদারীপুর জেলা স্টেডিয়ামের মূল ফটকের সামনে অনুষ্ঠিত হয়।

‘রেইজ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, ঋণ সহায়তা প্রদান, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্য নিয়ে শহর ও উপ-শহর এলাকায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সভায় বক্তারা ‘রেইজ’ প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এ প্রকল্পটি তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে নিজস্ব উদ্যোগ গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করছে। এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হচ্ছে এবং কর্মসংস্থানের নতুন দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরো নতুন-নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওই এনজিও এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর তাপস কুমার সরকার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জ্যেষ্ঠ হিসাবরক্ষণ কো-অর্ডিনেটর মো. ইখতিয়ার হোসেন ও রেইজ প্রকল্পের ফোকাল পারসন লাভলী খানম, মাদারীপুর সদর মডেল থানা পুলিশের এ.এস.আই মো. শাফিনুর রহমান প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এরিয়া ম্যানেজার মো. মনিরুল হোসেন, শাখা ব্যবস্থাপক মো. সোহেল রানা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এবং বিভিন্ন পেশার শতাধিক অংশগ্রহণকারী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ওই এনজিও এর কর্মকর্তারা ও সুধীজনেরা ‘রেইজ’ প্রকল্পের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এর সফল বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।


পাহাড়ে পাচারের উদ্দেশে বন্দি, নারী-শিশুসহ উদ্ধার ২৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফে নৌপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশে অপহরণ করে বন্দি রাখা নারী-শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের যৌথ দল। গত সোমবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের জুম্মা পাড়া গহীন পাহাড় থেকে এসব ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। তবে এ সময় পাচারকারীদের কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানায় কোস্টগার্ড।

কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নৌপথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশে নারী ও শিশুসহ বেশ কিছু ব্যক্তিকে টেকনাফের বাহারছড়ার জুম্মা পাড়া পাহাড়ে পাচারকারীদের আস্তানায় বন্দি করে রাখা হয়েছে।

এ সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার রাত ১১টায় কোস্ট গার্ড এবং নৌবাহিনীর একটি যৌথ দল পাহাড়ে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় পাহাড়ে পাচারকারীদের গোপন আস্তানা থেকে পাচারের উদ্দেশে বন্দি থাকা নারী ও শিশুসহ ২৫ জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে।

তিনি আরও জানান, অভিযান চলাকালীন যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তাদের আটকের নিমিত্তে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান চলমান রয়েছে।


ভিন্নমতের কারণেই আমরা বারবার নির্যাতনের শিকার: এনসিপি নেতা সৈয়দ ইমরান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

শুধুমাত্র ভিন্নমতের কারণেই আমরা বারবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার নবঘোষিত সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী সৈয়দ ইমরান। মঙ্গলবার একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি ও আমার পরিবার গত ১০ বছর ধরে আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করে আসছি। একের পর এক হয়রানি, হুমকি, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি আমরা। এমনকি পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও গায়েবি মামলা ও মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে- যার মধ্যে হত্যা মামলার মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, আমাদের দীর্ঘদিনের পৈতৃক বসতভিটাও জোরপূর্বক দখল করে নেওয়া হয়েছে। তবুও আমরা ন্যায়ের প্রতি আস্থা হারাইনি। আমি পূর্বেই প্রমাণসহ জানিয়েছি- আমার বিরুদ্ধে প্রচারিত বিভ্রান্তিকর সংবাদগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

গণতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাস রেখে এনসিপি নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মতের অমিলের কারণে কারও মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। আইনি ও গণতান্ত্রিক উপায়ে আমরা এই অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। সত্যের জয় হবেই, জনগণই হবে চূড়ান্ত বিজয়ী।’ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সৈয়দ ইমরান বলেন, দলের আস্থা ও দায়িত্বের মর্যাদা রক্ষা করে আমি সকল সহযোদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর এনসিপি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে ৩৭ সদস্যের সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করে। এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আকতার হোসেন এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

আইনজীবী, ব্যবসায়ী, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করে গঠিত এই কমিটিকে তিন মাসের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ঘোষিত কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী করা হয়েছে মুহাম্মদ হাসান আলীকে। যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অ্যাডভোকেট মো. মিরাজ মিয়া, সৈয়দ ইমরান, মো. সাজ্জাদ হোসাইন, মাহবুবে আবেদীর, প্রফেসর ড. মহিউদ্দীন, সিফাত হোসাইন, মো. মাশফিকুর রহমান চৌধুরী মিশকাত, উম্মে হানি জেরিন, প্রকৌশলী মো. হাবিব উল্লাহ ও আবদুল্লাহ আর হাসান। এছাড়া ২৬ জনকে সদস্য করা হয়েছে এ সমন্বয় কমিটিতে।


মাগুরা জেলা প্রশাসক বরাবরে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি প্রদান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাগুরা প্রতিনিধি

মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ২৭ অক্টোবর দিবা শাখার প্রাত্যহিক সমাবেশে জেলা জামায়াতের মাগুরা ১ ও ২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থীরা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলামের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালান। একজন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে তার এ ধরনের কর্মকাণ্ড সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষ চরিত্রের পরিপন্থী বলে অভিযোগ করে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

এর প্রেক্ষিতে গত সোমবার সকাল ১১ টায় জেলা প্রশাসক বরাবর শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি প্রদান করে। পরে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে ক্লাস বর্জন সহ প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানায়।

এ সময় সকল ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলীর নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়।

এর পাশাপাশি অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রবাল মন্ডল, বিদ্বান বিশ্বাস ও অনুরাগ রায় অভিযোগ করে বলেন, ক্লাস শেষে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত ক্লাস নিতে চাপ প্রয়োগ করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মাসিক অতিরিক্ত ২ হাজার টাকা নেওয়ার কথা জানান ভুক্তভোগী এ শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি মনে করি বিষয়টি সঠিক হয়নি? এর জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। অতিরিক্ত ক্লাস ফি নেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃত্তি পরীক্ষার শিক্ষার্থীদের তিন মাসের ক্লাসের জন্য অতিরিক্ত মাসিক ১ হাজার ৩ শত টাকা করে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে তিনি আরও বলেন, ছাত্ররা আমাকে না চাইলে আমি পদত্যাগ করব।


হাজারো মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাঁকো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ও কাঁঠাল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম একটি বাঁশের সাঁকো। উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত পাগারিয়া নদীর ওপর নির্মিত এই সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন শিক্ষার্থী, কৃষক ও সাধারণ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করেন। দুর্ঘটনা ঘটলেও বছরের পর বছর কোনো স্থায়ী সেতু নির্মিত হয়নি।

রামপুর ইউনিয়নের কাকচর উত্তরপাড়া গ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত পাগারিয়া নদীর এই বাঁশের সাঁকোটি ব্যবহার করেন কাকচর, দরিল্লা, কাঁঠাল তেতুলিয়াপাড়া, বালিয়ারপাড় ও কানিহারী ইউনিয়নের প্রায় বিশ হাজার মানুষ। স্থানীয়ভাবে ‘জাহেদের ঘাট’ নামে পরিচিত এই স্থানে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী পার হয়ে পাশের ইউনিয়নের স্কুল–কলেজে যাতায়াত করে।

প্রায় পাঁচ বছর আগে একই গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী দুখুনি এই সাঁকো থেকে পা পিছলে নদীতে পড়ে মারা যায়। সেসময়ের কথা স্মরণ করে গ্রামের বয়োবৃদ্ধ আমিরুল হক বলেন, ‘ইস্কুল যাইতে গিয়া সাওক্কা (সাঁকো) থেইক্যা (থেকে) পইড়া মাইয়াটা মরল। এর পর পরিবারডাও গেরাম ছারলো। মেলা পোলাপান ইস্কুল যাইবার গিয়া পইড়া হাত-পা ভাঙ্গে। নেতা-ফেতাগরে কতো কইলাম, একটা বিরিজ কইরা দেন, কিন্তু কেউ দিল না। মানুষ মরলেও বিরিজ করার খবর নাই।’

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফজাল হোসেনও গত বছর এই সাঁকো থেকে পড়ে হাত ভেঙেছেন। আফজালের বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘খালি আমার ছেলে না, প্রায়ই পোলাপান পড়ে গিয়া হাত-পা ভাঙে। একটা সেতু অইলে আর এমন কষ্ট করতে হইতো না।’

স্থানীয়রা জানান, এই সাঁকো দিয়ে রামপুর, কাঁঠাল ও কানিহারী ইউনিয়নের মানুষ নিয়মিত চলাচল করেন। কৃষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী- সবাই ঝুঁকি নিয়ে পার হন। বিশেষ করে বর্ষাকালে সাঁকো পিচ্ছিল হয়ে পড়ে, তখন দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।

কলেজ শিক্ষার্থী সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাছে হওয়ায় আমরা প্রতিদিন এই সাঁকো পার হই। মাঝেমধ্যে সাঁকো ভেঙে যায়, কিন্তু বিকল্প কোনো পথ নাই।’

কাকচর গ্রামের আজিজুল হক বলেন, ‘গ্রামের চারটি ওয়ার্ডসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে আছে। বয়স্ক আর শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। বহুবার অভিযোগ করেও কাজ হয় নাই।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলিম উদ্দিন বলেন, ‘এই সাঁকো দিয়ে কয়েক গ্রামের শতশত মানুষ চলাচল করে। এখানে একটি স্থায়ী কংক্রিটের সেতু খুবই জরুরি। অতীতে সাঁকো থেকে পড়ে এক শিশু মারা গেছে, আহতও হয়েছে অনেকেই। গণমাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল বাকিউল বারী পাগারিয়া নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের প্রাথমিক সমীক্ষা ও ওই স্থান পরিদর্শন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহানো এলাকার মানুষ এখন দ্রুত একটি স্থায়ী কংক্রিটের সেতু নির্মাণের প্রত্যাশায় দিন গুনছে।’


জয়পুরহাটে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের এ বছর ক্ষতি ৩০০ কোটি টাকা

*হিমাগার থেকে আলু তুলতে আগ্রহী নন কৃষক-ব্যবসায়ীরা *জেলার ২১ হিমাগারে মজুত রয়েছে ১৩ লাখ ৮০ হাজার বস্তা আলু
হিমাগারে পঁচা ও নষ্ট আলু বাছাই করছেন নারী শ্রমিকরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট

আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা জয়পুরহাট। এ জেলার আলুর গুণগত মান ভালো হওয়ায় দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হয় বিদেশে। তবে, এবার জেলায় আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় ও আলুর দাম না থাকায় ব্যাপক লোকসান গুনছেন কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা। ফলে আলু চাষি ও ব্যবসায়ীরা এবারের মৌসুমে মারাত্মক আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। ভালো দামের আশায় হিমাগারে সংরক্ষিত আলু এখন তাদের জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, এখন পর্যন্ত হিমাগারে ১৩ লাখ ৮০ হাজার ৬৫০ বস্তা আলু মজুত রয়েছে। প্রতি বস্তায় গড়ে ৮৫০ টাকা লোকসান ধরলে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১২০ কোটি টাকা। এছাড়া পূর্বে হিমাগার গেট থেকে আলু বিক্রি হয়েছে ২০ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৬ বস্তা। যার ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮০ কোটি টাকা। আলু বিক্রি বাবদ ও আলু বিক্রি না হওয়ায় মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, সরকারিভাবে আলু কেনার কোনো উদ্যোগ না থাকায় তারা চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন। এতে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। আবার বাজারে আলুর দাম না বাড়া ও ক্রেতা সংকটের কারণে হিমাগারে জমে থাকা আলু বিক্রি করতে না পেরে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গত মৌসুমে জেলায় ৪৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০ লাখ ৬১ হাজার ৭৪ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছিল। এরমধ্যে ২ লাখ ৬ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন বা ৩৪ লাখ ৪৫ হাজার ২৬৬ বস্তা আলু ২১টি হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়। বর্তমানে ৮২ হাজার ৮৩৯ মেট্রিক টন বা ১৩ লাখ ৮০ হাজার ৬৫০ বস্তা আলু এখনো হিমাগারে পড়ে আছে।

হিমাগার ঘুরে জানা যায়, নভেম্বর-ডিসেম্বরে নতুন মৌসুমে আলু রোপণের সময় ঘনিয়ে এলেও পুরনো আলু এখনো হিমাগারে পড়ে আছে। হিমাগারের বেঁধে দেয়ার সময় ১৫ নভেম্বর মধ্যে হিমাগার খালি না করলে সংরক্ষণের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু বর্তমান বাজারদরে আলু বিক্রি করলে প্রতিটি বস্তায় অন্তত ১০৫০-১০৭০ টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে, ফলে কেউই আলু তুলতে আগ্রহী নন।

সদর উপজেলার সোটাহার ধারকী গ্রামের কৃষক ফেরদৌস মোল্লা বলেন, সার সিন্ডিকেটের কারণে সার পায় না। আবার বস্তাপ্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা বেশি দিয়ে সার কিনে যদিও বা ফসল রোপন করি। কিছুদিন পরেই পড়ে সেচ সিন্ডিকেটের পাল্লায়। ঋণ করে সমস্ত টাকা দিয়ে ফসল ফলায় কিন্তু ফসলের ন্যায্য দাম পাই না। আবার এরকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো লেগেই থাকে।

কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের সুড়াইল গ্রামের আলু ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম আকন্দ বলেন, ভালো দামের আশায় আমি ৪ হাজার বস্তা আলু ৫৬ লাখ টাকায় কিনে হিমাগারে রেখেছিলাম। কিন্তু এখন দামের পতনে মাত্র ৫ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। প্রায় ৫১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে, আমার সব সঞ্চয় শেষ।

জেলার প্রতিটি হিমাগারেই একই চিত্র। কালাই পৌর শহরের এম ইসরাত হিমাগারে কৃষক ও ব্যবসায়ী মিলে ৫ হাজার ২৬০ জন আলু সংরক্ষণ করেছিলেন। শুধু এই হিমাগারেই লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ কোটি টাকা।

কালাই পৌর শহরের শিমুলতলী এলাকার আর বি স্পেশালাইজড কোল্ড স্টোরেজের মালিক প্রদীপ কুমার প্রসাদ বলেন, আমাদের হিমাগারে দুই লাখ ৬০ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষিত ছিল। দেড় মাস আগেই এগুলো বের করার কথা ছিল, কিন্তু কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তুলছেন না। আলু তুললেই বড় ক্ষতি নিশ্চিত, তাই সবাই দ্বিধায় আছেন।

ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকার আলু ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান মিলন বলেন, উৎপাদন থেকে হিমাগারে সংরক্ষণ পর্যন্ত প্রতি কেজি খরচ পড়েছে ২৪-২৫ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৯-১০ টাকায়। এতে প্রতি কেজিতে ১৬ টাকা পর্যন্ত লোকসান হচ্ছে।

কালাই পৌরশহরের সড়াইল এলাকার এম ইশরাত কোল্ড হিমাগার লিমিটেডের ব্যবস্থাপক রায়হান আলম বলেন, সরকার আলুর ন্যূনতম দাম কেজিপ্রতি ২২ টাকা নির্ধারণ করলেও বাজারে তা কার্যকর হয়নি। প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় দাম কমছেই। বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশ আলু হিমাগারে পড়ে আছে। এতে কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।

জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ এ কে এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর আলুর চাহিদার চেয়েও উৎপাদন হয়েছে বেশি, তাই দামও কমেছে। সরকার ২২ টাকা কেজি দরে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করেছে, তবে বাজারে তা এখনো কার্যকর হয়নি। কার্যকর হলে কৃষকদের লোকসানের পরিমাণ কিছুটা কমতো।

জয়পুরহাট কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। সরকারিভাবে আলু কেনার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্ত হলেও এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। রপ্তানি ও বিকল্প বাজার তৈরির চেষ্টা চলছে।


সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে নাগরিক সেবার মানোন্নয়নের তাগিদ ডিএসসিসির নতুন প্রশাসকের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে নাগরিক সেবার মানোন্নয়নের তাগিদ প্রদান করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নবনিযুক্ত প্রশাসক মোঃ মাহমুদুল হাসান এনডিসি। আজ মঙ্গলবার নগর ভবনে ডিএসসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রশাসক এ মন্তব্য করেন।

স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ধারা ২৫ ক এর উপধারা (১) এর অনুবৃত্তিক্রমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান কে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে ডিএসসিসির প্রশাসক নিয়োগ প্রদান করে ০২ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ধারা ২৫ ক এর উপধারা (৩) অনুযায়ী প্রশাসক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র এর ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করবেন।

মতবিনিময় সভায় ডিএসসিসির প্রশাসক বলেন, "সিটি কর্পোরেশন নাগরিক সেবা প্রদানের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে সব শ্রেণির নাগরিক জীবনকে প্রভাবিত করে।" রাজধানী শহরের অংশ হিসেবে কাজের গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে জনগণের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ গ্রহণ করতে হবে। এ সময় তিনি জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে জনসম্পৃক্ততা ও জনমত যাচাইয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

মতবিনিময় সভায় ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, সকল বিভাগীয় প্রধান, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীবৃন্দ এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।


banner close