বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৩ আশ্বিন ১৪৩২

তোফায়েল-আমু-কাদের-শামীম ওসমানের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর-আগুন

তোফায়েল আহমেদের ভোলার গাজিপুর রোডের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ০০:০৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ০০:০৩

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস পূর্তি ছিল গত বুধবার। সেদিনই নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের ঘোষণা দেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়ায় আবারও ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে বুধবার রাতে প্রথমে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর গুঁড়িয়ে দেয় তারা। সে রাতে ভাষণও দেন ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা। এতে ক্ষোভের মাত্রা এত বেশি ছিল যে ধানমণ্ডিতে শেখ হাসিনার স্বামীর বাড়ি ‘সুধা সদন’ হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। এরপর এই ক্ষোভ ও প্রতিহিংসার কারণে সারা দেশে আওয়ামী লীগের আলোচিত নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বাড়িতে একের পর এক হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে থাকে। গত বুধবার রাতেই ভোলায় আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদের বাড়িতে, বরিশালে দলটির আরেক বর্ষীয়ান নেতা ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমুর বাড়িতে, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে, নারায়ণগঞ্জে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পৈতৃক বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। এছাড়াও নওগাঁয় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদারের বাড়ি, রাজশাহীতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাড়িতেও হামলা, বাঙচুর ও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও আগুন এবং দলটির অনেক নেতার বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর, আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

তোফায়েল আহমেদের ভোলার বাসায় ভাঙচুর, আগুন

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদের ভোলার দোতলা বাসভবনে ভাঙচুরের পর আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল বুধবার রাতে শহরের গাজীপুর রোডের ‘প্রিয় কুটির’ নামের বাসভবনে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়।

এ সময় তোফায়েল আহমেদের বাড়িতে একটি ক্রেন ও একটি এক্সকাভেটর আনা হয়। তবে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা ফায়ার সার্ভিসের কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি।

স্থানীয় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রাত ১টার দিকে দুই-তিন শ বিক্ষুব্ধ জনতা তোফায়েল আহমেদের বাসায় ভাঙচুর চালায়। বিক্ষুব্ধ জনতা বাসার ভেতরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র বাইরে বের করে সড়কে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। একই সঙ্গে বাসায় দোতলা ও নিচতলায় আগুন দেয় তারা। পরে তাদের মধ্য থেকে একটি দল সড়কে হ্যান্ডমাইকে জয়বাংলার গান বাজিয়ে নাচতে থাকে ও গানের তালে তালে জয়বাংলা স্লোগান দিতে থাকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বাসার ভেতরে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর আর ভোলায় আসেননি অসুস্থ তোফায়েল। বাসাটিতে তার ছেলে থাকতেন বলে জানা গেছে।

ভোলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. লিটন আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, তারা কোনো অগ্নিকাণ্ডের খবর পাননি।

বরিশালে আমুর বাড়ি গুড়িয়ে দিয়ে আগুন

বরিশাল নগরীতে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমুর বাসভবন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে জনতা। গত বুধবার রাত ২টার দিকে সিটি করপোরেশনের বুলডোজার দিয়ে নগরীর বগুড়া রোডের বাড়িটিতে ভাঙচুর শুরু করা হয়। রাত ৩টার দিকে ভাঙচুর শেষে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও জনতা নগরীর কালীবাড়ী রোডে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাত ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বাড়িটিও বুলডোজার চালিয়ে গুড়িয়ে দেয়। তারপর সেখানেও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত ১১টার দিকে কালীবাড়ী রোডে এসে পুলিশ অবস্থান নেয়। রাত ১২টার দিকে সেনাবাহিনীরি সদস্যরাও সেখানে আসেন। একই সময় ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে কালীবাড়ি রোডের ‘সেরনিয়াবাত ভবন’ এর দিকে এগোয়। এ সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সড়কের দুইপাশ থেকেই প্রবেশে বাধা দেয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে জড়ো হয় এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে ভবনের ভেতর প্রবেশ করে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিনেও এ ভবনটিতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা।

নোয়াখালীতে ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে ভাঙচুর-আগুন

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১টার দিকে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাজাপুর গ্রামের বাড়িটিতে এ হামলা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা উপজেলার বসুরহাট বাজার থেকে মিছিল বের করে। মিছিলটি বসুরহাট বাসস্ট্যান্ড হয়ে ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে থাকা ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার দোতালা ভবন হাতুড়ি, শাবল দিয়ে ভাঙা হয়। পরে ভাঙচুর করা হয় তার ছোট ভাই শাহাদাত মির্জার ভবনও।

এর আগে ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের দিন বিকালে ওই বাড়ির পাঁচটি বসতঘর এবং দুটি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। সেদিন বাড়িটির বেশ কিছু আসবাব লুটপাটও হয়।

নাজিম উদ্দিন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ৫ আগস্টের কিছুদিন পর কাদের মির্জা ভবনটি সংস্কার করেছিলেন। দ্বিতীয় দফায় কাদেরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হল। তবে হামলা-ভাঙচুরের সময় তাদের পরিবারের কেউ ছিলেন না। কাদেরের পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে রয়েছেন।

ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা শাখার সমন্বয়ক মো. আরিফুল ইসলাম।

গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শামীম ওসমানের পৈতৃক বাড়ি

নারায়ণগঞ্জে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পৈতৃক বাড়ি ‘বায়তুল আমান’ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়। তার আগে বহু লোকজন বাড়িতে প্রবেশ করে ভাঙচুর শুরু করে। ভবনটি ভাঙার কাজ চলার সময় সেখানে বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও উৎসুক জনতাকে উল্লাস করতে দেখা যায়৷

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে শহরের মিশনপাড়া এলাকা থেকে মহানগর বিএনপির একটি মিছিল বের হয়। তাতে নেতৃত্ব দেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু। মিছিলটি শহরের চাষাঢ়ায় বায়তুল আমানের সামনে এসে পৌঁছালে শুরুতে বড় আকারের হাতুড়ি দিয়ে ভবনটির দেয়াল ভাঙতে শুরু করেন লোকজন। পরে একটি বুলডোজার দিয়ে ভবনটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়৷ ভবনটির ভেতরের একটি অংশেও দেওয়া হয় আগুন।

ঘটনাস্থলে থাকা বিএনপি নেতা আবু আল ইউসুফ খান টিপু সাংবাদিকদের বলেন, “খুনি হাসিনা ও তার ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বছরের পর বছর মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। শামীম ওসমান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী অসংখ্য গুম, খুন করেছে। ওসমান বাহিনীর প্রতি মানুষের যে ক্ষোভ, এই ভবনটি ভাঙার মধ্য দিয়ে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে৷”

এর আগে বেলা ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের বেশ কয়েকটি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এ সময়ও নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপির ওই দুই নেতা। সেখানেই দুপুরে ঘোষণা দেওয়া হয় সন্ধ্যার পর বায়তুল আমান ভবনটিও ভেঙে ফেলার।

খুলনায় ‘শেখ বাড়ি’ এখন ধ্বংসস্তূপ

খুলনায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঁচ চাচাতো ভাইয়ের ‘শেখ বাড়িতে’ গত বুধবার রাতে অগ্নিসংযোগ ও বুলডোজার দিয়ে ভাঙচুরের পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাড়ির ইট ও রড খুলে নিয়ে গেছে লোকজন। প্রায় দেড় দশক খুলনায় ‘ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু’ থাকা ভাঙা বাড়িটি দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।

এদিন দুপুরে নগরীর শেরে বাংলা রোডে গিয়ে দেখা যায়, ‘শেখ বাড়ি’ এখন পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপ। অসংখ্য মানুষ হাতুড়ি দিয়ে ইট খুলে রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইকে করে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ যন্ত্রপাতি দিয়ে রড কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ ইট ও রড খুলে ওই বাড়ির সামনে বিক্রি করছে। ভোর থেকে এই কর্মকাণ্ড চলছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। বিকেলে বাড়িটির সামনে গিয়েও দেখা গেছে একই চিত্র।

বাড়ির চত্বরে ডিজিটাল দাঁড়িপাল্লা দিয়ে ওজন করে রড কিনছিলেন শেখপাড়া এলাকার এক ভাঙাড়ির দোকানি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দোকানি বলেন, এখানে সস্তায় কিনতে পারছি, সে কারণে এখানে এসেছি।

রিকশায় করে ইট নিয়ে যাওয়ার সময় চালক সোলায়মান হোসেন বলেন, ‌‘১৫ বছর আওয়ামী লীগের লোকজন লুট করেছে। সে কারণে এখন তাদের ইট-রড খুলে নিয়ে যাচ্ছি। এই বাড়ির লোকজন খুলনার মানুষের ওপর অনেক নিপীড়ন চালিয়েছে।’

এর আগে বুধবার রাত ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা শেখ বাড়ির সামনে জড়ো হয়। তারা সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় ছাত্র-জনতা স্লোগান দিতে থাকে ‘শেখ বাড়ির আস্তানা ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’, স্বৈরাচারের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’। রাত ৯টা থেকে ৩টি বুলডোজার দিয়ে বাড়ির গেট ও দোতলা বাড়ির অর্ধেক অংশ গুঁড়িয়ে দেয়। এছাড়া বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় উৎসুক অসংখ্য মানুষ সেখানে ভিড় করেন।

বাড়িটি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই ও সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, যুবলীগ নেতা শেখ সোহেল, শেখ জালাল উদ্দিন রুবেল ও শেখ বাবুর। এই বাড়ি থেকে নিয়ন্ত্রিত হতো খুলনায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি, ব্যবসা, ঠিকাদারি, নিয়োগ, বদলি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ অনেক কিছু। এর আগে ৪ ও ৫ আগস্ট এই বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও সবচেয়ে বেশি ভাঙচুর চালিয়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান বিক্ষুব্ধ লোকজন। তবে সেদিন শেখ পরিবারের কেউ বাড়িটিতে ছিলেন না।

খুবিতে মুর‌্যালসহ ৫ স্থানে ভাঙচুর

এদিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুরসহ পাঁচটি স্থানে ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা নগরীর দৌলতপুরে সরকারি বিএল কলেজে শেখ মুজিবুর রহমানের মুর‌্যাল ভাঙচুর করে। বেলা ১১টার দিকে নগরীর গল্লামারী এলাকায় লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে শেখ মুজিবুর রহমানের মুর‌্যাল ভাঙচুর করা হয়।

এর আগে বুধবার রাতে শিক্ষার্থীরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ‘কালজয়ী মুজিব’ ম্যুরাল ভাঙচুর করে। রাতে নগরীর দোলখোলা এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলোর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ভেঙে দেওয়া হয় তার বিলাসবহুল গাড়ি। আগুন দেওয়ার পর ৫ তলা বাড়ির লোকজন আতঙ্কে ছাদে উঠে যায়। পরে ফায়ারা সার্ভিসের দু’টি গাড়ি গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়া নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লাপাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা আইয়ুব আলীর বাড়ি ভাঙচুর করে লোকজন।

সারা দেশে হামলা ভাঙচুরের আরও কিছু ঘটনা

সিলেটে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ম্যুরাল। গত বুধবার রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত ম্যুরালটির অবশিষ্ট অংশ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে মুসলিম জনতার ব্যানারে ম্যুরালটিতে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বক্তৃতা প্রচারকে কেন্দ্র করে গতকাল রাতে চট্টগ্রামে মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। পরে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে গিয়ে পুরোনো একাডেমিক ভবনের সামনে থাকা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করেন। পরে সেখান থেকে তারা জামালখান মোড়ের দেয়ালে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেন। এর আগে বিক্ষুব্ধরা একটি মশাল মিছিল বের করেন।

কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুবউল-আলম হানিফের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে একটি দল। গতকাল রাত ১০টার দিকে এক্সক্যাভেটর নিয়ে তারা বাড়ির সামনের কিছু অংশ ভেঙে ফেলে। প্রায় আধা ঘণ্টা পর দলটি চলে যায়। স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর ওই বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ পরিবারের সদস্য ও জাতীয় চার নেতার একজনের নামে থাকা সব স্থাপনার নামফলক, গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন মুছে দিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রাত ৯টার দিকে বিক্ষোভ শেষে মিছিল নিয়ে চারটি আবাসিক হল ও একটি স্কুলের নামফলক ভেঙে নতুন নাম দেন। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিজয়-২৪ হল’, নির্মাণাধীন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হলের পরিবর্তে ‘শহীদ আলী রায়হান হল’, শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে ‘ফাতিমা আল-ফাহরিয়া হল’ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের পরিবর্তে ‘নবাব ফয়জুন নেসা চৌধুরানী’ ও শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে ‘রিয়া গোপ মডেল স্কুল’ নাম দিয়ে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকে শেখ হাসিনার ঘৃণাসূচক ছবি টানিয়ে গণজুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনার প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ করে তাঁর ফেসবুক লাইভে আসার প্রতিবাদ জানান।

নাটোরে সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের পোড়া বাড়ি আলোচিত ‘জান্নাতি প্যালেসে’ আবারও আগুন দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বুধবার রাতে শিক্ষার্থীরা শহরের কান্দিভিটা এলাকায় সাবেক আগুন দেন। এসময় মাইক বাজিয়ে মিছিল নিয়ে কান্দিভিটাস্থ শিমুলের জান্নাতি প্যালেসে যান এবং আগুন দেন। প্রায় এক ঘণ্টা পোড়া বাড়ির ভেতরে ছিলেন ছাত্ররা।


দৌলতপুরে বন্যা দুর্গতদের মাঝে বিজিপির ত্রাণ বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের উদয়নগর এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ১১৫টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করেছে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি)। গত বুধবার বিকেলে এই সহায়তা প্রদান করা হয়। প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পদ্মা নদীর প্রবল ভাঙনে উদয়নগর বিওপির দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা, ফসলি জমি ও বহু বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে অবশিষ্ট অংশটিও নদীতে তলিয়ে যায়।

ঝুঁকি বিবেচনায় বিজিবির সদর দপ্তরের নির্দেশে ১৩, ১৪ ও ১৫ আগস্ট তারিখে উদয়নগর বিওপির অধিকাংশ স্থানান্তরযোগ্য সরঞ্জাম পাশ্ববর্তী চরচিলমারী বিওপিতে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১১ সেপ্টেম্বর ভোরে অবশিষ্ট অস্ত্র, গোলাবারুদ, অফিসিয়াল নথিপত্র, যানবাহন ও জনবল নৌকা, ট্রলার ও স্পিডবোটের মাধ্যমে নিরাপদে স্থানান্তর করা হয়।

বর্তমানে উদয়নগর বিওপির সকল সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ কন্ট্রোল আইটেম নিরাপদে রয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছে।

বিজিবি আরও জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও সীমান্ত সুরক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে এবং কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সবসময় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন বলে বিজিবি কর্তৃক জানিয়েছেন।

সীমান্ত সুরক্ষার স্বার্থে উদয়নগর বিওপি সংলগ্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছেন। বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা, স্পিডবোট ও রেসকিউ বোটের মাধ্যমে টহল আরও জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া, পূর্ববর্তী অবস্থানের নিকটবর্তী এলাকায় একটি নতুন ও উন্নত মানের বিওপি নির্মাণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মোর্শেদ রহমান জানান, ‘বিজিবি দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় সবসময় অটল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অবকাঠামো নষ্ট করতে পারে, কিন্তু আমাদের মনোবল বা দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার কখনোই দুর্বল করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। সীমান্ত নিরাপত্তা, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং জনগণের স্বার্থে বিজিবি আগের মতোই নিরলসভাবে কাজ করে যাবেন বলে তিনি জানান।


কিশোরগঞ্জে ৭ হাজার ৮৫১ কেজি সরকারি চাল জব্দ, আটক ৩

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ইটনায় কালোবাজারে বিক্রির চেষ্টাকালে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৭ হাজার ৮৫১ কেজি চাল জব্দ করেছে পুলিশ। গত বুধবার দুপুরে উপজেলার বাদলা বাজার থেকে ৩ হাজার ৬০০ কেজি ও মৃগা পূর্বপাড়া এলাকা থেকে ৪ হাজার ২৫১ কেজি চাল জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ট্রলারসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃতরা হলেন আজহারুল ইসলাম লেলিন (৪০), নিয়ামুল মিয়া (২৪) ও সাইদুল মিয়া (১৯)। তারা মৃগা এলাকার বাসিন্দা।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. বাবুল আকরাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মৃগা গ্রামের ডিলার জানু মিয়ার নামে ১০ হাজার ৮৩০ কেজি বরাদ্দ দেওয়া হয়। তিনি সেগুলো সংগ্রহ করে কালোবাজারে বিক্রির চেষ্টাকালে পৃথক দুটি স্থান থেকে ৭ হাজার ৮৫১ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে।

বাদলা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আব্দুস সামাদ জানান, কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশে একটি ট্রলারে করে তাড়াইল নিয়ে যাওয়ার সময় ৭২ বস্তা চালসহ তিনজনকে আটক করা হয়। সরকারি বস্তা পরিবর্তন করে সাধারণ বস্তায় ভরে চালগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

ইটনা থানার উপপরিদর্শক ফাহিম ফয়সাল জানান, বাদলা থেকে ৭২ বস্তা চাল উদ্ধারের পর ডিলার জানু মিয়ার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তার বাড়ি থেকে আরও ৮৫ বস্তা চাল জব্দ করা হয়।

তিনি জানান, চালগুলো আত্মসাতের উদ্দেশে নির্ধারিত স্থানে না রেখে অন্যত্র রেখেছিলেন ডিলার জানু মিয়া তার ছেলে দেলোয়ার হোসেন। ওই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।


মানুষকে বঞ্চিত করে উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার অধিকার কারো নেই -ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, অতীতে আমরা দেখে এসেছি মন্ত্রীর এলাকায় প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত উন্নয়ন বরাদ্দ হয়, যাতে উক্ত জেলার অন্যান্য উপজেলা বঞ্চিত হয়। মানুষকে বঞ্চিত করে উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার অধিকার কারো নেই। তাই এ ধরনের প্রাকটিস থেকে সরে আসুন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বিবেচনায় সকল গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সম্পৃক্ত করে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করার প্রস্তুতি নিন। পাশাপাশি পল্লী বিদ্যুৎকে জেলার সকল অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশনা দেন। শিল্প মালিকরা যেন বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে হয়রানি না হয় সে বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে আন্তরিক হ‌ওয়ার অনুরোধ করেন বিশেষ সহকারী। এর বাইরে

গোমতীতে আগামী শীতে ম্যারাথন আয়োজনের নির্দেশনা দেন তিনি।

সভায় জেলার এমপিওভুক্ত স্কুলের ইনস্পেকশন দ্রুত শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়।

সভায় জেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি, অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হয়। পাশাপাশি জেলায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ সময়মতো বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আসন্ন দূর্গাপূজা উদযাপন যেন নির্বিঘ্ন হয় সে বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছারের সভাপতিত্বে সভায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহ আলম, আইসিটি বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সাইফুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধান, কুমিল্লার সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ স্থানীয় সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


ঠাকুরগাঁওয়ে কারাম উৎসবে মেতেছে ওড়াঁও সম্প্রদায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সোহেল রানা, ঠাকুরগাঁও

হলদে রঙের শাড়ি, খোপায় সাদা কাঠগোলাপ, পায়ে আলতা, নুপুর সাজে সেজেছে ওড়াঁও সম্প্রদায়ের নারীরা। পুরুষের ঢোল ও মন্দিরার তালে নেচে গেয়ে নিজেদের বড় ধর্মীয় আয়োজন কারাম পূজা ও সামাজিক উৎসবের আমেজে মাতোয়ারা হয়ে উঠে ঠাকুরগাঁওয়ের ওড়াঁও সম্প্রদায়ের মানুষ।
আয়োজকরা জানান, বাংলা খ্রিষ্টাব্দের ভাদ্র মাসের শেষ রাত বুধবার থেকে তাদের পূজা আর্চনা শুরু হয়ে পরদিন পহেলা আশ্বিন বৃহস্পতিবার দুপর পর্যন্ত চলে আনন্দ উৎসব। এ সময় নিজ ধর্মীয় বিশ্বাসের আলোকে কারাম গাছের ডাল এনে পূজা আর্চনা ও নাচগানে মাতোয়ারা থাকে এ সম্প্রদায়ের আদিবাসী মানুষরা।
সদর উপজেলার সালন্দর পাঁচপীর ডাঙ্গা গ্রামে উৎসবের রাতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন আয়োজন। ওড়াঁও সম্প্রদায়ের ধর্মীয় এ উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম। এসময় বিভিন্ন ধর্মের রাজনীতিক নেতা, সমাজ ওসাংস্কৃতিক কর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষও আমন্ত্রিত ছিলেন।
এছাড়াও গ্রামের সকল ধর্মের মানুষ এই কারাম উৎসব দেখতে আসেন। এদিন সম্প্রিতির বন্ধনে আরও একবার আবদ্ধ হন গ্রামের মানুষ।
শুরুতেই আমন্ত্রিত অতিথিদের নাচ ও গানের তালে তালে বরণ করে নেন ওড়াঁও সম্প্রদায়ের মানুষ। পরে ফুল দিয়ে সকল ধর্মের মানুষদের বরণ করেন তারা। এরপর নাচ ও গান পরিবেশন করেন অতিথিদের সামনে। পরে উৎসবের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য করেন আয়োজকরা এবয় নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার উপদেষ্টা আইনজীবী ইমরান হোসেন চৌধুরী বলেন, কারাম উৎসব দুই রকম ভাবে উদযাপন করা হয়। একটি নিজ কারাম ও অপরটি দশ কারাম। নিজ কারাম হলো যারা একটু স্বচ্ছল তারা নিজেদের বাড়িতে এ উৎসবের আয়োজন করে থাকে। আর দশ কারাম হলো যেখানে সবার সহযোগিতায় একখানে এ উৎসবের আয়োজন করা হয় এবং তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস মতে কারাম গাছের পূজা করা হয়। ওড়াঁও সম্প্রদায়ের মানুষ বিশ্বাস করে কারাম গাছ প্রাকৃতিক নানা রকম দূর্যোগ মোকাবিলায় তাদের সহযোগিতা করেছে। এ গাছের ডালকে আঁকড়ে ধরে তারা যুগ যুগ ধরে বেঁচে ছিলো।
কারাম উৎসবে এসে নিজের অনুভূতির কথা জানিয়ে জসিম উদ্দীন বলেন, এ সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন যাপন খুব সহজ সরল। তারা অনেক পরিশ্রমী। তাদের উৎসবের আমেজ অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। আমি দারুন উপভোগ করছি। তাদের সরল আতিথিয়েতা আমাকে খুব আপন করে নেয় তাদের।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলাম উৎসবমুখোর পরিবেশ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, ওড়াঁও সম্প্রদায় একটি অনন্য জাতিসত্তা। তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও সৃষ্টি কালচার রয়েছে। তাদের ধর্মীয় উৎসব চমৎকার। তাদের নিজস্ব সত্তা যেন কালের বিবর্তনে হারিয়ে না যায়। যেন সহস্র বছর ধরে তারা টিকে থাকে এবং স্বাবলম্বী হতে পারে এর জন্য প্রশামনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে।


১৭ বিয়ে, রাতের আঁধারে পালানোর সময় আটক সেই বন কর্মকর্তা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তারিকুল ইসলাম তুহিন, বরিশাল

সাময়িক বরখাস্তের পর রাতের আঁধারে কোয়ার্টার থেকে পিকআপযোগে নিজস্ব ও সরকারি মালামাল সরানোর সময় ১৭ বিয়ে কান্ডের সেই বরখাস্তকৃত বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কবির হোসেন পাটোয়ারীকে আটক করেছে স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে বরিশাল বিমানবন্দর থানা পুলিশ জনরোষ থেকে তাকে (কবির) বুধবার দিবাগত রাতে নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় বন বিভাগের কোস্টাল সার্কেল কার্যালয়ের সামনে থেকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যান। পরবর্তীতে বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে পুলিশ রাতেই তাকে ছেড়ে দিয়েছেন। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দর থানার ওসি মো. আল-মামুন উল ইসলাম।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন-১৭ বিয়ে কান্ডের ঘটনায় সাময়িক বরখাস্তের পর গত বুধবার রাত নয়টার দিকে কোয়ার্টার থেকে পিকআপযোগে নিজস্ব ও সরকারি মালামাল নিয়ে কবির হোসেন পালানোর চেষ্টা করছিলেন। পরে এলাকাবাসী তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
বরিশাল সদর উপজেলা বন কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান সাকিব বলেন, দায়িত্বে থাকাবস্থায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কবির হোসেন পাটোয়ারী বিভিন্ন সময় ধার বাবদ আমার কাছ থেকে ছয় লাখ ৯৬ হাজার টাকা নিয়েছেন। এছাড়া স্থানীয়দের কাছ থেকেও সে বিভিন্ন সময় টাকা নিয়ে আর পরিশোধ করেনি। হঠাৎ করেই বুধবার রাতে সরকারি বাংলো থেকে মালামাল নিয়ে তিনি চলে যাচ্ছিলেন। খবর পেয়ে আমিসহ অন্য পাওনাদাররা এসে তাকে আটক করেছি। তাছাড়া তিনি পিকআপযোগে যে মালামাল নিচ্ছিলেন তার মধ্যে সরকারি কিছু মালামালও রয়েছে। সেগুলো আমি নামিয়ে রেখেছি।
বরিশাল বিমানবন্দর থানা পুলিশ জানায়, সদর উপজেলা বন কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন বাংলো থেকে সরকারি মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন বরখাস্তকৃত বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কবির হোসেন পাটোয়ারী। এছাড়া তিনি ওই কর্মকর্তার কাছে টাকা পাবেন। এলাকার বেশ কিছু মানুষও তার কাছে টাকা পাবে বলে আটকে রেখেছেন।
আরও জানন, উল্লেখিত অভিযোগের ভিত্তিত্বে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই বন কর্মকর্তাকে স্থানীয়দের কাছ থেকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে আনেন। তবে পালিয়ে যাবার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাময়িক বরখাস্তকৃত বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কবির হোসেন পাটোয়ারী। এ বিষয়ে তিনি বক্তব্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে উল্টো সাংবাদিকদের অভিশাপ এবং হুমকি দেন।
বরিশাল বিমানবন্দর থানার ওসি মো. আল-মামুন উল ইসলাম বলেন, বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে রাতেই তাকে (কবির) ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে নানা প্রলোভনে ১৭ বিয়ে করে দেশব্যাপী আলোচনার সৃষ্টি করা বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কবির হোসেন পাটোয়ারীকে ১৬ সেপ্টেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জানা গেছে, চলতি বছরের ৯ এপ্রিল বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কবির হোসেন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে বিয়ের নামে প্রতারণা, যৌতুক দাবি এবং নির্যাতনের অভিযোগ এনে বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন খুলনা জেলার সোনাডাঙা এলাকার বাসিন্দা খাদিজা আকতার। তার আগে ২০১৯ সালে কবির হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন তার (কবির) আরেক স্ত্রী বাগেরহাটের মোংলা এলাকার নাসরিন আকতার দোলন। সেই মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে। সবশেষ গত ৯ এপ্রিল দেয়া স্ত্রীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১১ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাইদুর রহমান বরিশালে সরেজমিন তদন্তে আসেন। নগরীর কাশিপুরে কোস্টাল সার্কেলে বসে অভিযোগকারী দুই স্ত্রী, তাদের স্বজন এবং বন কর্মকর্তাদের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করেন।
ওইদিনই বিয়েপাগল বন কর্মকর্তার বিচার দাবিতে বন বিভাগের কোস্টাল সার্কেল অফিসের সামনে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী স্ত্রী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে প্রাথমিক শাস্তির অংশ হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সূত্রমতে, চাঁদপুর জেলার তুষপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেন পাটোয়ারীর ছেলে কবির হোসেন এর আগে ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত ছিলেন। বন বিভাগের উচ্চ পদ ব্যবহার করে ফাঁদে ফেলেন অনেক নারীকে। এ কারণে একই অভিযোগে পূর্বে আরও দুইবার সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন বন কর্মকর্তা কবির হোসেন। তবে পতিত আওয়ামী সরকারের সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রী দীপু মনির সুপারিশে তিনি চাকরিতে পুনর্বহাল হন।
অপরদিকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ছাড়াও ১৬ সেপ্টেম্বর বরিশাল মহানগর আদালতে কবির হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফিজ আহমেদ বাবলু। আদালতের বিচারক মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।


জেনেনিন সঠিক নিয়মে খাওয়ার উপকারিতা

আপডেটেড ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৪:১৭
ওসমান গনি, দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অনেকে মনে করেন ভাত খেলেই ওজন বেড়ে যায়, বাড়ে ভুঁড়ি। তাই অনেকেই ভাত খাওয়া কমিয়ে দেন বা একেবারেই ছেড়ে দেন। অথচ পুষ্টিবিদরা বলছেন, ভাতেরও রয়েছে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ—যা শরীরের জন্য অপরিহার্য।

ভারতীয় পুষ্টিবিদ সুরভি আগরওয়াল জানান, ভাত ভিটামিন বি, ফলিক অ্যাসিড ও ম্যাগনেশিয়ামের ভালো উৎস। এটি অন্ত্র ও ত্বকের জন্য উপকারী। কালো চাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, বাদামি চাল ফাইবারে ভরপুর এবং লাল চাল প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। নিয়ম মেনে খেলে ভাত এমনকি ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়ক হতে পারে।

অন্য পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী বলেন, ভাতে কার্বোহাইড্রেট ও স্টার্চ বেশি থাকায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) উঁচু হয়, ফলে ওজন ও রক্তে শর্করা বাড়তে পারে। তবে রান্নার পদ্ধতি ও খাবারের সঙ্গে মিশ্রণে এ প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

রান্নার সঠিক নিয়ম

চাল আধ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে নতুন পানিতে ভাত রান্না করুন।

মাড় গালা ভাত খেলে স্টার্চ কমে যায়, ফলে কার্বোহাইড্রেটও কমবে।

কতটুকু খাবেন?

দিনে ৩০ গ্রাম চাল দিয়ে রান্না করা এক কাপ ভাত যথেষ্ট (১৫০–১৭০ ক্যালোরি)।

ভাতের সঙ্গে সবজি, মাছ, সালাদ খেলে ওজন বাড়ে না।

কখন খাবেন?

দিনে ভাত খাওয়া নিরাপদ, কারণ নড়াচড়া বেশি হয়।

রাতে ভাত না খেয়ে হালকা খাবার খাওয়াই ভালো।

ভাত খাওয়ার পর করণীয়

ভাত খাওয়ার পর ভাতঘুম নয়, বরং হালকা হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করুন।

চাইলে গ্রিন টি পান করতে পারেন, এতে হজমে সহায়তা হয়।


কেশবপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন হবে দুর্গাপূজা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের কেশবপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টম্বর) বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কেশবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ওই প্রস্তুতিমূলক সভার আয়োজন করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রেকসোনা খাতুনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ নেওয়াজ, সেনাবাহি-নীর ওয়ারেন্ট অফিসার ফখরুল ইসলাম, কেশবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খান শরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাষ্টার রফিকুল ইসলাম, পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির প্রভাষক জাকির হোসেন, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দীন আলা,উপজেলা এনসিপির সমন্বয়ক সম্রাট হোসেন, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল চন্দ্র সাহা, উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ ঘোষ প্রমুখ । অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা বিমল কুমার কুন্ডু। সভায় কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৯৭টি মন্দিরে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন আলোচনা করেন বক্তারা। এবার কেশবপুর উপজেলার যে সকল এলাকায় পূজা উদযাপন হবে। ১নং ত্রিমোহিনী ইউনিয়নে একটি,২নং সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নে ১৩ টি, ৩ নং মজিদপুর ইউনিয়নে ৬টি, ৪ নং বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নে ৫ টি, ৫নং মঙ্গলকোট ইউনিয়নে ৫ টি, ৬ নং সদর ইউনিয়নে ৭ টি, ৭ নং পাঁজিয়া ইউনিয়নে ৮ টি, ৮নং সুপলাকাটি ইউনিয়নে ১২ টি, ৯নং গৌরিঘোনা ইউনিয়নে ১৩ টি, ১০ নং সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে ১২ টি, ১১ নং হাসানপুর ইউনিয়নে ০৮ টি, কেশবপুর পৌর সভায় ৭টি সহ সর্বমোট ৯৭ টি পূজা মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন পূজা উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহ রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সুন্দর ভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুষ্ঠান টি উদযাপনের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রেকসোনা খাতুন বলেন কেও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাইনোর চেষ্টা করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।


জয়পুরহাটে জেলা দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি 

জয়পুরহাটে অনতিবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ভুক্তভোগীদের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে জেলা দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম)। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের পাঁচুর মোড় জিরো পয়েন্টে বিডিইআরএম ও নাগরিক উদ্যোগের যৌথ আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

তাদের দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধার ও হস্তান্তর, ভুক্তভোগী রবিদাস পরিবার উচ্ছেদ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের পাশাপাশি বসতবাড়ি পুনর্নির্মাণে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব গ্রহণ এবং ভুক্তভোগীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

এসময় জেলা দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের (বিডিইআরএম) আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট বাবুল রবিদাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস, আদিবাসী সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এ এইচ আল মুরাদ (দোয়েল), জেলা রবিদাস ফোরামের সভাপতি মনিলাল রবিদাস, জেলা সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক ওবায়দুল্লাহ মুসা এবং জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কোষাধ্যক্ষ সুধীর তিরকি প্রমুখ।


কুড়িগ্রামে কৃষক সংলাপ অনুষ্ঠিত 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি 

জলবায়ু পরিবর্তন : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি বিষয়ক কুড়িগ্রামে কৃষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বেসরকারি সংস্থা আফাদ এর মিলনায়তনে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় নারী পক্ষ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন,জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন,জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পদোন্নতি পাওয়া অতিরিক্ত উপপরিচালক মো: আসাদুজ্জামান, সদর উপজেলা উপসহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা খান,জেলা মৎস্য জরিপ কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ফিল্ড সুপারভাইজার মাইদুল ইসলাম, আফাদ এর নির্বাহী পরিচালক সাইদা ইয়াসমিন প্রমুখ।

ইউএনওমেন এর অর্থায়নে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে জলবায়ু সহিষ্ণু সমাজের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন,ফেইস প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

দিনব্যাপী কৃষক সংলাপ সদর উপজেলাসহ রাজারহাট, চিলমারী, উলিপুর, ফুলবাড়ি,নাগেশ্বরী এবং ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ৫০জন কৃষক- কৃষাণীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করেন।

দিনব্যাপি কৃষক সংলাপে নারী নেতৃত্বাধীন সুশীল সমাজ সংগঠনের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে নেটওয়ার্ক গঠন,সভা, পরামর্শ সভা এবং ডায়লোগ সেশন আয়োজন করা,স্থানীয় প্রশাসন, সুশীল সমাজের কর্মীদের ও কমিউনিটির সক্ষমতা বৃদ্ধি করা,কমিউনিটি পর্যায়ের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্যাম্পেইন এর মূলক উপকরণ তৈরি,জেন্ডার সংবেদনশ প্রণোদনা প্রয়োশে মাধ্যমে কমিউনিটিকে সহায়তা করাসহ আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে জলবায়ুর সাথে খাপ খাইয়ে মৎস্য, কৃষি, প্রাণী সম্পদ বৃদ্ধির জন্য করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।


নুরাল পাগলার দরবার থেকে জেনারেটর নিয়ে যাওয়া যুবক গ্রেফতার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মইনুল হক মৃধা, গোয়ালন্দ,রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার ভক্ত রাসেল মোল্লা হত্যা মামলায় নুরাল পাগলার দরাবার থেকে জেনারেটর চুরির দায়ে মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত মিজানুর রহমান রাজবাড়ীর লক্ষীকোল সোনাকান্দা এলাকার হারুনার রশিদ এর ছেলে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে জেলা গোয়েন্দা ডিবি ও গোয়ালন্দ থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে জেনারেটর সহ গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব।

তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে ও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে মিজানুর রহমান নুরাল পাগলার দরবার থেকে একটি জেনারেটর নিয়ে যাচ্ছে। ফুটেজের উপর ভিত্তি করে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাকে নুরাল পাগলার দরবারের ভক্ত রাসেলের পিতা আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় গুরুতর জখম, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, কবর থেকে লাশ উত্তোলন, পোড়ানো মামলায় গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত নজরুল ইসলামকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, দুটি মামলায় এ পর্যন্ত মোট ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জন আসামিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।


বিসিএস প্রিলিমিনারিতে অংশ নিতে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বাস 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাকৃবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বাস সেবা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলজারুল আজিজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের যথাসময়ে পৌঁছে দিতে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে জব্বারের মোড় থেকে দুটি বাস টাউন হলের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। পরীক্ষা শেষে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে একই স্থান থেকে বাসগুলো শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনবে।

পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলজারুল আজিজ জানান, উপাচার্যের নির্দেশে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থবির পরিস্থিতির কারণে প্রথমে বাস চালুর পরিকল্পনা না থাকলেও পরে উপাচার্যের নির্দেশে সার্ভিসটি চালু করা হয়।


ঠাকুরগাঁওয়ে কারাম পূজার উৎসবে নাচে গানে মেতেছে ওড়াওঁ সম্প্রদায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

হলদে রঙের শাড়ি, খোপায় সাদা কাঠগোলাপ, পায়ে আলতা, নুপুর সাজে সেজেছে ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের নারীরা। পুরুষের ঢোল ও মন্দিরার তালে নেচে গেয়ে নিজেদের বড় ধর্মীয় আয়োজন কারাম পূজা ও সামাজিক উৎসবের আমেজে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের মানুষ।

আয়োজকরা জানান, বাংলা খ্রিষ্টাব্দের ভাদ্র মাসের শেষ রাত বুধবার থেকে তাদের পূজা আর্চনা শুরু হয়ে পরদিন পহেলা আশ্বিন বৃহস্পতিবার দুপর পর্যন্ত চলে আনন্দ উৎসব। এ সময় নিজ ধর্মীয় বিশ্বাসের আলোকে কারাম গাছের ডাল এনে পূজা আর্চনা ও নাচগানে মাতোয়ারা থাকে এ সম্প্রদায়ের আদিবাসী মানুষরা।

সদর উপজেলার সালন্দর পাঁচপীর ডাঙ্গা গ্রামে উৎসবের রাতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন আয়োজন।

ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় এ উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা। বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো: খাইরুল ইসলাম। বিভিন্ন ধর্মের রাজনীতিক নেতা, সমাজ ওসাংস্কৃতিক কর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষও আমন্ত্রিত ছিলেন।

এছাড়াও গ্রামের সকল ধর্মের মানুষ এই কারাম উৎসব দেখতে আসেন। এদিন সম্প্রিতির বন্ধনে আরও একবার আবদ্ধ হন গ্রামের মানুষ।

শুরুতেই আমন্ত্রিত অতিথিদের নাচ ও গানের তালে তালে বরণ করে নেন ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের মানুষ। পরে ফুল দিয়ে সকল ধর্মের মানুষদের বরণ করেন তারা। এরপর নাচ ও গান পরিবেশন করেন অতিথিদের সামনে। পরে উৎসবের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য করেন আয়োজকরা এবয় নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার উপদেষ্টা আইনজীবী ইমরান হোসেন চৌধুরী বলেন, কারাম উৎসব দুই রকম ভাবে উদযাপন করা হয়। একটি নিজ কারাম ও অপরটি দশ কারাম। নিজ কারাম হলো যারা একটু স্বচ্ছল তারা নিজেদের বাড়িতে এ উৎসবের আয়োজন করে থাকে। আর দশ কারাম হলো যেখানে সবার সহযোগিতায় একখানে এ উৎসবের আয়োজন করা হয় এবং তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস মতে কারাম গাছের পূজা করা হয়। ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের মানুষ বিশ্বাস করে কারাম গাছ প্রাকৃতিক নানা রকম দূর্যোগ মোকাবেলায় তাদের সহযোগিতা করেছে। এ গাছের ডালকে আঁকড়ে ধরে তারা যুগ যুগ ধরে বেঁচে ছিলো। তিনি বলেন, এটি ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বড় উৎসব হলেও এইখানে গ্রামের সকল ধর্মের মানুষ আসেন। সম্প্রীতির মিলবন্ধনে আবদ্ধ হয়। এ সময় তিনি এখানকার আদিবাসীদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য সরকার সহ সকলের এগিয়ে আসার আহ্বান করেন।

কারাম উৎসবে এসে নিজের অনুভূতির কথা জানিয়েছেন মো: জসিম উদ্দীন। বলেন, এ সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন যাপন খুব সহজ সরল। তারা অনেক পরিশ্রমী। তাদের উৎসবের আমেজ অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। আমি দারুন উপভোগ করছি। তাদের সরল আতিথিয়েতা আমাকে খুব আপন করে নেয় তাদের।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মো: খাইরুল ইসলাম উৎসবমুখোর পরিবেশ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, ওড়াওঁ সম্প্রদায় একটি অনন্য জাতিসত্ত্বা। তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও সৃষ্টি কালচার রয়েছে। তাদের ধর্মীয় উৎসব চমৎকার। তাদের নিজস্ব সত্ত্বা যেন কালের বিবর্তনে হারিয়ে না যায়। যেন সহস্র বছর ধরে তারা টিকে থাকে এবং স্বাবলম্বী হতে পারে এর জন্য প্রশামনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে।


কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করেছে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি)

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুষ্টিয়া (দৌলতপুর) প্রতিনিধি

বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে এই সহায়তা প্রদান করা হয়। প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পদ্মা নদীর প্রবল ভাঙনে উদয়নগর বিওপির দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা, ফসলি জমি ও বহু বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে অবশিষ্ট অংশটিও নদীতে তলিয়ে যায়।

ঝুঁকি বিবেচনায় বিজিবির সদর দপ্তরের নির্দেশে ১৩, ১৪ ও ১৫ আগস্ট তারিখে উদয়নগর বিওপির অধিকাংশ স্থানান্তরযোগ্য সরঞ্জাম পাশ্ববর্তী চরচিলমারী বিওপিতে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১১ সেপ্টেম্বর ভোরে অবশিষ্ট অস্ত্র, গোলাবারুদ, অফিসিয়াল নথিপত্র, যানবাহন ও জনবল নৌকা, ট্রলার ও স্পিডবোটের মাধ্যমে নিরাপদে স্থানান্তর করা হয়।

বর্তমানে উদয়নগর বিওপির সকল সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ কন্ট্রোল আইটেম নিরাপদে রয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছে।

বিজিবি আরও জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও সীমান্ত সুরক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে এবং কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সবসময় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

সীমান্ত সুরক্ষার স্বার্থে উদয়নগর বিওপি সংলগ্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা, স্পিডবোট ও রেসকিউ বোটের মাধ্যমে টহল আরও জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া, পূর্ববর্তী অবস্থানের নিকটবর্তী এলাকায় একটি নতুন ও উন্নত মানের বিওপি নির্মাণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মোর্শেদ রহমান জানান, “বিজিবি দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় সবসময় অটল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অবকাঠামো নষ্ট করতে পারে, কিন্তু আমাদের মনোবল বা দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার কখনোই দুর্বল করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। সীমান্ত নিরাপত্তা, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং জনগণের স্বার্থে বিজিবি আগের মতোই নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।”


banner close