শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টান্ত স্থাপন সিলেটের

ইউএনবি
প্রকাশিত
ইউএনবি
প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১২:১০

বাংলাদেশে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত নগরায়ণ, শিল্পায়ন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দৈনন্দিন বাড়তি বর্জ‍্যের পরিমাণ চ্যালেঞ্জকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে পরিবেশ দূষণ, জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি ও অপরিকল্পিত বর্জ্য ডাম্পিং রোধে কার্যকর, টেকসই ও বিজ্ঞানসম্মত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। উন্নত দেশগুলো যখন এই বর্জ্যকে সম্পদে রুপান্তর করছে—আমরা তখন সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে হিমশিম খাচ্ছি।

এশিয়া ইউরোপ ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি ১৫ বছরে এর শহুরে বর্জ‍্যের পরিমাণ দ্বিগুন হচ্ছে। বাংলাদেশে ৯০’র দশকে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৬ টন মিউনিসিপ্যাল সলিড ওয়েস্ট তৈরি হতো, যা ২০১৯ সালের রিপোর্ট অনুসারে ২৫ হাজার টন ছাড়িয়ে গেছে। সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভাগুলোর জন্য এই বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই যখন সামগ্রিক চিত্র, তখন টেকসই উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অনন্য এক উদাহরণ তৈরি করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। দেশের প্রথম এবং একমাত্র সিটি করপোরেশন হিসেবে বর্জ‍্যের টেকসই ব্যবস্থাপনায় কর্তৃপক্ষ লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করেছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির একটি ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি। এই ফ্যাসিলিটি স্থাপনে এবং বর্জ‍্যের টেকসই সমাধানে সিলেট সিটি করপোরেশন পাশে পেয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশকে। একটি প্লাস্টিক ও পলিথিন মুক্ত শহর সিলেটবাসীকে উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করছে তারা।

সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩৭৫ টন বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য তৈরি হয়, যার একমাত্র ঠিকানা লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ড। বাসা-বাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এই বর্জ্যগুলো নির্দিষ্ট স্থান থেকে সংগ্রহ করেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। সংগ্রহের পর কিছু রিসাইক্লেবল পণ্য তারা আলাদা করেন এবং বিক্রি করেন। বাকী সকল অপচনশীল বর্জ্য নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে নিয়ে আসা হয় এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে যার আয়তন প্রায় ৮ একর যেখানে ডাম্প করা রয়েছে আনুমানিক ৮ লাখ টন বর্জ্য। এই বর্জ‍্যের টেকসই সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছিল সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।

সিলেট সিটি করপোরেশন এর প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ একলীম আবদীন এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতীতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কার্যকরী কোনো সমাধান আসেনি।

বাংলাদেশে একমাত্র লাফার্জহোলসিম’র ছাতক প্ল্যান্টে আমদানি বিকল্প পণ্য ক্লিংকার উৎপাদন হয়। ক্লিংকার তৈরির সুবিধা থাকায় এই প্ল্যান্টে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুযোগ রয়েছে। এর সুবিধার নাম জিওসাইকেল।

বাংলাদেশে জিওসাইকেলের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক লতিফুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সিলেট সিটি করপোরেশনের সঙ্গে টেকসই উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। এরপর শুরু হয় সিলেটে লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি বসানোর কাজ। ফ্যাসিলিটি বসানোর পর তা উদ্বোধন করা হয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এবং এখান থেকে বর্জ্য নেওয়া শুরু হয় ২০২৪ সালের মে মাসের ১৪ তারিখে।

লতিফুর রহমান আরও জানান, প্রতিদিন গড়ে ৬০ টনেরও বেশি বর্জ্য এই ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে ছাতকে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের সিমেন্ট প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। আগামীতে এর পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির। এই ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে বিভিন্ন ধরনের অপচনশীল দ্রব্য বিশেষ করে প্লাস্টিক ও পলিথিন পৃথক করা হয় এই ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে। তারপর কোম্পানির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তা নিয়ে যাওয়া হয় সিমেন্ট প্ল্যান্টে।

এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সকল বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করতে সাত থেকে আট বছর সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।

সিমেন্ট প্ল্যান্টে এই বর্জ্যগুলো নিয়ে তা সিমেন্ট কিল্নে প্রেরণের উপযোগী করে তোলা হয়। এরপর তা বিশেষ একটি ফিডারের মাধ্যমে সিমেন্ট কিলনে পাঠানো হয়। এই কিলনে ক্লিংকার তৈরির জন্য প্রয়োজন ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রায় সমস্ত বর্জ্য কো-প্রসেস হয়ে যায় যার কোনো অবশিষ্ট পরিবেশে ফেরত আসে না। বর্তমানে জিওসাইকেল প্রযুক্তির মাধ্যমে বছরে প্রায় এক লাখ টন বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব। এর সক্ষমতা বাড়াতে এরই মধ্যে পরিকল্পনা নিয়েছে কোম্পানিটি।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘লাফার্জহোলসিম জিওসাইকেল প্রযুক্তির মাধ্যমে যে সেবা দিচ্ছে তা প্রশংসার দাবিদার। সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্জ্যবিহীন একটি সবুজ নগরী উপহার দেওয়ার যে লক্ষ্য রয়েছে, তা অর্জনে লাফার্জহোলসিম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘লাফার্জহোলসিম সবসময়ই টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাস করে। কোম্পানির টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সমাধান জিওসাইকেল পরিবেশ অধিদপ্তর অনুমোদিত এধরনের একমাত্র পদ্ধতি। এর মাধ্যমে আমরা দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধা দিয়ে আসছি। আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি বর্জ্যবিহীন দেশ উপহার দেওয়া।’

একই পদ্ধতিতে দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনগুলোকে সহযোগিতা করতেও কোম্পানিটি আগ্রহী বলে জানান তিনি।

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের একটি প্রতিনিধি দল সিলেট সিটি করপোরেশনের ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি ও ছাতকে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের সিমেন্ট প্ল্যান্টে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি ঘুরে দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করার পাশাপাশি একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনে এই ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন তৎকালীন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি জানান, ‘অতীতে অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করলেও সফলতা আসেনি। লাফার্জহোলসিমের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিটি বাস্তবসম্মত এবং এর মাধ্যমে উভয়েই লাভবান হচ্ছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের এই উদ্যোগ দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনগুলোর জন্য উদাহরণ হতে পারে।’

এই প্ল্যান্টের কার্যক্রম সচল রাখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষণও করেন তিনি।

এশিয়া ইউরোপ ফাউন্ডেশনের এক গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে যে পরিমাণ বর্জ্য প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে— তার শতকরা ৫৫ ভাগ যেখানে সেখানে ফেলা হয়। আর যতটুকু সংগ্রহ করা হয়, তার বড় একটা অংশ মাটিতে স্তুপ করে রাখা হয় কিংবা পুড়িয়ে ফেলা হয়—যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। এর নেতিবাচক ফলাফল আমরা ভোগ করছি প্রতিদিন। যার অন্যতম উদাহরণ হতে পারে জলাবদ্ধতা। শহরগুলোর খাল, ডোবা এবং ড্রেন দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে না, অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় হলো—সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টেকসই উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।

ইউএনএফপিএ'র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই অবস্থার জন্য প্রধান কারণ হলো দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিলে এই সমস্যাটি বাড়তে থাকবে।


ভুয়া পাসপোর্টে বিদেশে নারী পাচার

বিএমইটির ৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভুয়া পাসপোর্ট ও কাগজপত্র তৈরি করে নারীদের বিদেশে পাচারের অভিযোগে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক স্বপন কুমার রায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- বিএমইটি'র উপপরিচালক (বহির্গমন) মো. সাজ্জাদ হোসেন সরকার, সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন উল্লাহ আকন্দ, জনশক্তি জরিপ কর্মকর্তা মো. নিজামউদ্দিন পাটোয়ারি, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আজাদ হোসেন, এইচ. এ. ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং পার্টনার, মো. আনোয়ার হোসেন, কে. এইচ. ওভারসিজের ম্যানেজিং পার্টনার মো. সালাউদ্দিন, মক্কা ওভারসিজের মালিক মো. জামাল হোসেন, ম্যানেজিং পার্টনারের তাসনিম ওভারসিজ মো. আনোয়ার হোসেন ভূঞা এবং এস. এম. ম্যানপাওয়ারের পার্টনার একরামুল হক।

এর আগে বৃহস্পতিবা কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও বিভিন্ন এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে দুদক।

দুদক সূত্র জানা যায়, বিভিন্ন এজেন্সি পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে গমনেচ্ছু নারীদের ‘প্রত্যাগত’ হিসেবে দেখানোর জন্য ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে। প্রকৃত আবেদনকারীর পরিবর্তে অন্য ব্যক্তির পাসপোর্ট নম্বর রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে আবেদন দাখিল করা হয়। এসব জাল পাসপোর্টকে আসল হিসেবে উপস্থাপন করে বিএমইটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের সংরক্ষিত ডাটাবেজ যাচাই না করে, এজেন্সিগুলোর সঙ্গে যোগসাজশে, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশে ৯ জন জাল পাসপোর্টধারী নারীকে ছাড়পত্র প্রদানে অনুমোদনের জন্য নোট উপস্থাপন করেন।

সূত্র আরও জানায়, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র লঙ্ঘন করে ২৫ বছরের কম বয়সি ৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীকে ছাড়পত্র প্রদানে অনুমোদনের জন্য নোট উপস্থাপন করা হয়। এই কার্যকলাপে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে জালিয়াতি ও নিয়মবহির্ভূতভাবে ছাড়পত্র গ্রহণে সহায়তা করা হয়।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।


স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন আবারও চালু করল যুক্তরাষ্ট্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা হাজারো শিক্ষার্থীর জন্য আশার আলো জ্বালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের ছাত্র ভিসার আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে। এ উপলক্ষে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি মুখপাত্র মিগনন হিউস্টন এক কঠোর বার্তা দিয়েছেন—এই ভিসার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন। খবর এনডিটিভির।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের ভিসানীতিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিই জাতীয় নিরাপত্তাকে। কোনো শিক্ষার্থী যদি ভিসার অপব্যবহার করে, ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বা পড়াশোনার নামে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে আসে, তাহলে তা আমরা বরদাশত করব না।

হিউস্টন মনে করিয়ে দেন, ভিসা শুধু যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের টিকিট নয়, বরং এটি আচরণ, উদ্দেশ্য ও সৎ প্রয়াসেরও প্রতীক। তিনি বলেন, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যেন পড়াশোনা করতে আসে, শিখে ফিরে যায়, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা সহিংসতার অংশ না হয়। আমরা অন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং একটি গঠনমূলক শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে চাই।

এই বক্তব্য স্পষ্টতই প্রমাণ করে, যুক্তরাষ্ট্র এখন শুধু মেধা খুঁজছে না, খুঁজছে নৈতিক দায়বদ্ধতা। মিগনন হিউস্টনের বক্তব্যের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সম্পর্ক। তার কথায়, ভারত শুধু বাণিজ্যিক অংশীদার নয়, এটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় স্তম্ভ। কোয়াড ও সামগ্রিক আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় ভারতের ভূমিকা অপরিহার্য।

তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র এমন বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় যা ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক।

মঙ্গলবার (০১ জুলাই) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমার বিশ্বাস, আমরা ভারতের সঙ্গে শিগগির একটি নতুন ধরনের চুক্তি করতে যাচ্ছি। এখন ভারত মার্কিন কোম্পানিকে যথাযথ প্রবেশাধিকার দেয় না। আমি মনে করি তারা তা দেবে, এবং তাতে কম ট্যারিফে ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি সম্ভব হবে।

এ বক্তব্যে স্পষ্ট, চুক্তি শুধু অর্থনৈতিক নয়—এটি একটি কূটনৈতিক ও কৌশলগত অগ্রগতি হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

এনডিটিভি বলছে, একদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য দরজা খুলে দিচ্ছে, অন্যদিকে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে চলেছে। ভিসা, বাণিজ্য, এবং কৌশলগত অংশীদারত্ব—সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের গতি দ্রুততর এবং বহুমাত্রিক।


ঘুরে দাঁড়াবে ফেনী কর্মসূচির সমাপ্তি 

বন্যা পুনর্বাসনে অর্ধ কোটি টাকার ঘর নির্মাণ-মেরামত 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আবু তাহের ভূঁইয়া ফেনী

ফেনীর বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘ঘুরে দাঁড়াবে ফেনী’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় শহরের এক রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে সফল সমাপ্তি টানা হয়। গত ১০ মাসে এ কর্মসূচির আওতায় গৃহনির্মাণ ও মেরামতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। যা বেসরকারি উদ্যোগে বেশ বড় কার্যক্রম। এরমধ্যে নতুন ঘর নির্মাণ করা হয়েছে ২০ টি, মেরামত হয়েছে ২৫ টি ঘর। এরমধ্যে দুটি মাদ্রাসা ভবন রয়েছে। এছাড়াও ২৫টি পরিবারকে ২ বান্ডেল করে টিন ও নগদ ২০ হাজার করে দেয় হয়েছে নিজ নিজ ঘর মেরামতের জন্য। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এমন ১০ জনকে দেয়া হয় ক্ষুদ্র ব্যবসার পুঁজি। চিকিৎসা অনুদান দেয়া হয়েছে আরও ২০ জনকে।

এ উদ্যোগের অন্যতম সমন্বয়ক শরিফুল ইসলাম অপুর পরিচালনায় পুরো প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন সমন্বয়ক ও সংবাদকর্মী আসাদুজ্জামান দারা। এ সময়ে অর্থ সহায়তা প্রদানকারি ১৯ টি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

দীর্ঘ ১০ মাসব্যাপী জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে বেসরকারি উদ্যোগে এ বিশাল কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে বলে উপস্থিত সংবাদকর্মীরা মতামত দেন। সাংবাদিকদের মধ্যে থেকে মতামত ব্যক্ত করেন শাহজালাল ভুইয়া, আরিফুর রহমান, সফিউল্লাহ রিপন, কপিল মাহমুদ, এম এ আকাশ। ঘর গ্রহণকারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ছাগলনাইয়া লাংগল মোড়া গ্রামের জাহিদ হাসান।

ঘুরে দাঁড়াবে ফেনীর সমন্বয়কদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন নাসির উদ্দিন সাইমুম ও জালাল উদ্দিন বাবলু৷ এছাড়াও সমন্বয়কদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহিবুল হক রাসেল, হারুন উর রশিদ, শান্তি চৌধুরী, মুহাম্মদ আবু তাহের ভুইয়া, ইমন উল হক, রিয়াজ উদ্দিন রবিন, কামরুল হাসান রানা, ওসমান গনি রাসেল ও মোহাইমিন তাজিম।


চট্টগ্রামের প্রবীণ আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা কছির উদ্দিন আহমেদ মারা গেছেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল সাতটায় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির এই প্রবীণ সদস্যের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।

অ্যাডভোকেট মির্জা কছির উদ্দিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর চট্টগ্রাম আইন কলেজ থেকে এলএলবি পাস করে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে আমৃত্যু তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও দুই কন্যা রেখে গেছেন। তার তিন ছেলে-মেয়েই আইনপেশায় নিয়োজিত। বড় ছেলে সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মির্জা শোয়েব মুহিত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। সাতকানিয়ার প্রয়াত চিকিৎসক মোহাম্মদ আবুল ফয়েজ মরহুমের বড় ভাই। দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সম্পাদক হোসাইন তৌফিক ইফতিখার তার ভাতিজা।

চট্টগ্রাম আদালত ভবনে মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বেলা সাড়ে ১২টায়। এতে অংশ নেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম ও মহানগর দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম। আরও অংশ নেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা, জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম জামায়াতে মহানগরের আমির নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।

মরহুমের গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়ার উপজেলার মাদার্শার দেওদীঘি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাকে রাষ্ট্রীয় মার্যাদায় পুলিশের একটি চৌকস দল ‘গার্ড অফ অনার’ প্রদান করে। এতে উপস্থিত ছিলেন সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস, সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম, উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিস্তা করিম, সাতকানিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ।

বিকালে তৃতীয় ও শেষ জানাজার পর মাদার্শা বুড়িপুকুর মসজিদের পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

বিভিন্ন মহলের শোক

অ্যাডভোকেট মির্জা কছির উদ্দিনের মৃত্যুতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও শোক জানিয়েছে— সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি, সাতকানিয়া উপজেলা আইনজীবী সমিতি, সাতকানিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ-চট্টগ্রাম, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সাংবাদিক ফোরাম, চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ, সাতকানিয়া ল’ইয়ার্স সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এএসএম বজলুর রশিদ মিন্টু।

এছাড়া সাতকানিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে সুকান্ত বিকাশ ধর, দিদারুল আলম, জাহেদ হোসাইন, হারুনর রশিদ, ইকবাল মুন্না, তারেক হোসাইন, সাইফুল ইসলাম, মিনহাজ বাঙালি, মো.আরিফুল ইসলাম, মামুনুল হক, মোহাম্মদ হোছাইন, মাসুদুল করিম, টিআই খাইরু,লোহাগাড়ার তাজউদ্দীন, দেলোয়ার হোসেন রশিদীসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন গভীর শোক জানিয়েছে।


ভাতের পাতে স্বস্তির দাবিতে চট্টগ্রামে ক্যাবের মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চালের ক্রমাগত অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তায় ঝুঁকি বাড়ার কারণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা। অবিলম্বে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা। তাদের ভাষ্য, প্রতি সপ্তাহেচালরে দাম ২-৫ টাকা করে বাড়িয়ে সর্বশেষ ভরামৌসুমে ৮-১০ টাকা বাড়ার কারণে সাধারণ মানুয়েরখাদ্য নিরাপত্তা হুমকরি মুখে পড়েছে। সরকার নিত্যপণ্যের বাজার তদারকিতে কিছু উদ্যোগথাকলেও চালে বাজার নিয়ন্ত্রণে সেধরণের দৃশ্যমান উদ্যোগ না থাকায় চালের অসাধু ব্যবসায়ীরাতাদের ইচ্ছা মতো দাম বাড়ায় ও কমায়। আবার খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) ও টিসিবিরফ্যামিলি র্কাড র্কাযক্রমও সক্রিয় নয়। সেকারণে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে জনজীবনে তীব্রসংকট নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) নগরীর জামালখান প্রেসক্লাব চত্ত্বরে “ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও” স্লোগান নিয়ে আয়োজিত প্রতিবাদী মানববন্ধনে বিভিন্ন বক্তারা উপরোক্ত দাবি জানান।

যুব ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরেরসভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), কনজ্যুমারস অ্যাসোসয়িশেন অব বাংলাদশে (ক্যাব) চট্টগ্রাম, প্রাণ ও আইএসডইি বাংলাদেশ এর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংহতি জানিয়ে বক্তব্যরাখনে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, এডাব চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতিও বিশিষ্ট নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু ও বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিবঅ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসানসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

সমাবেশে চালের মূল্য ও সার্বিক মুল্যস্ফীতির নয়িন্ত্রণেসংকটপূর্ণ অবস্থা নিরসনে তারা কৃষকের কাছ থেকে সরকারের সরাসরি চাল ক্রয়ের আওতা বৃদ্ধি, দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং ব্যবস্থাচালু, বাজার, উৎপাদন, মূল্য নির্ধারণ এবং ভোগের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকের স্বার্থ রক্ষায়পদক্ষেপ গ্রহণ, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তার সহায়তায়টিসিবি এবং ওএমএস কর্মসূচির আওতাবৃদ্ধির মাধ্যমে প্রয়োজনভিত্তিক সহায়তার উদ্যোগ ও মিল, করপোরেট গ্রুপসহ চালের বাজার যথাযথমনিটরিং এবং সিন্ডিকেট এর অপতৎপরতা রোধ করার মাধ্যমে দ্রুত বাজার পরিস্থিতিনিয়ন্ত্রণ করে চালের মূল্য ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আনার দাবি জানান।


চবি ক্যাম্পাসে বন্যপ্রাণী হত্যা বেড়েই চলছে

ধরাছোঁয়ার বাইরে অপরাধীরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রেফায়েত উল্যাহ রুপক, চবি

সবুজ অরণ্য, পাহাড়, ঝর্ণার বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) যেমন সৌন্দর্যের স্বর্গভূমি তেমনি অসংখ্য বন্যপ্রাণী, পাখির আবাসস্থল। তবে এখানে অবাধেই চলছে বন্যপ্রাণী হত্যা। শাস্তির আওতায়ও আসছে না অপরাধীরা। ২০১২ সালে দেশের জীববৈচিত্র্য, বন ও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছিল বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন। যেখানে বন্যপ্রাণী শিকার, হত্যা, কেনাবেচা, বা এদের আবাসস্থল ধ্বংস নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া এই আইন লঙ্ঘনের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে জরিমানা, কারাদণ্ড। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদেও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। তবে এই আইনের কার্যকর প্রয়োগ নেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। মায়া হরিণ, শূকর, বন মোরগ, অজগরসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণীর এই আবাস্থলে নিয়মিতই হচ্ছে প্রাণী হত্যা। এসব প্রাণী হত্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের। বিশেষজ্ঞরাও জানাচ্ছেন শঙ্কার কথা। গত ২৪ জুন চবির ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক মো. নুরুল হামিদ কানন একটি মৃত শূকরের ৪১ সেকেন্ডের ভিডিও পোস্ট করে লিখেন, ‘শূকর পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছে না আপনাদের হাত থেকে। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ব্যাংকের উত্তর পাশের ব্রিজের নিচে একটি বন্য শূকরকে মাথায় আঘাত করে রাতে মেরে ফেলা হয়েছে। যারা এমন গর্হিত কাজ করেন তারা পরিবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর।’ বুধবার (০২ জুলাই) সালমান শাহরিয়ার নামের এক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘বুধবার (০২ জুলাই) রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাটা পাহাড় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় একটি চিতা বিড়ালের মৃত্যু হয়। চিতা বিড়াল বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে লাল তালিকায় আছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চিতা বিড়ালের উপস্থিতি আছে জানা ছিল না। অজগর, মায়া হরিণ, বন্য শূকর, শিয়াল এসবের কথাই আগে জানা ছিল। তবে এই চিতা বিড়ালটির মৃত্যু কয়েকটি ভাবনার জন্ম দিয়েছে। ’

তিনি আরও লিখেন, ‘আজকের চবি যেখানে প্রতিষ্ঠিত এটা মূলত বন্য প্রাণীদেরই এলাকা। আমরা তাদের এলাকা দখল করেই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছি। যেহেতু এখানে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা হয় সেহেতু এখানে বসবাসরত প্রাণীগুলোর প্রতিও আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। তাদের নিরাপদ, ঝঞ্ঝাটহীন জীবনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কিছু ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

শিক্ষার্থীদের মতে, ‘ মধ্যরাতে প্রাণীদের চলাচল ও খাবার সন্ধানের সময়। এই সময়ে যানবাহনের চলাচল সীমিত করা দরকার। উচ্চগতিতে গাড়ি চালানোও বন্ধ করে দেওয়া উচিত। প্রাণীর নিরাপদ আবাস গড়তে ক্যাম্পাসের ভেতরে গাড়ি চালকদেরও কিছু নির্দেশনা জানানো উচিত। তা ছাড়া জরিপ করে বন্যপ্রাণীদের বাসস্থান সংরক্ষণ ও জীবনযাপনের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিশেষজ্ঞ শিক্ষক, গবেষকদের মতামত নিয়ে এই কাজগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত।’

জানতে চাইলে প্রাণীবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, ‘বন্যপ্রাণীগুলো যখন রাতে চলাচল করে তখন এগুলোর চোখে লাইট পড়লে তারা দেখতে পায় না। তখন গাড়ি চালকরা হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবেই তাদের মেরে দেয়। আমাদের এখানে যখন রাস্তা দিয়ে প্রাণীগুলো চলাচল করে, তখন তাদের রক্ষা করার চেয়ে মেরে ফেলার মানসিকতাই বেশি কাজ করে। আমি বিদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে দেখেছি বন্যপ্রাণী রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আমাদের এখানে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। বিলবোর্ড, প্লেকার্ড , কিংবা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য যা যা প্রয়োজন তা আমরা করব। এনিয়ে আমরা প্রশাসনেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কমিটি আছে। আমাদের ক্যাম্পাস অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা। এখানে অনেক বন্যপ্রাণীর বসবাস আছে। এগুলো সচরাচর দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমরা পরিবেশ আইন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন মেনে চলি। এর আগেও বন্যপ্রাণী হত্যার দায়ে অনেককে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বন্যপ্রাণী হত্যার যে ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এছাড়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং কমিটিকে আমরা নির্দেশনা দিব।


জাল সনদে চাকরি করার অভিযোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আবু সাঈদ, সাতক্ষীরা  

সাতক্ষীরা নবারুণ উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে জাল সনদ এবং ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে পদ গ্রহণসহ তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে দশ কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। গত ২৯ জুন ২০২৫ তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকার শিক্ষা কর্মকর্তা (মাধ্যমিক-১) মো. নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত স্মারকে এ তথ্য ওঠে এসেছে। এতে বলা হয়, সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলাধীন নবারুণ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে জাল সনদ এবং ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে পদ গ্রহণ ও বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে আনীত অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। এ অবস্থায় তদন্ত প্রতিবেদনের মতামতের আলোকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর প্রমাণিত হওয়ায় জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর ১৮.১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে মর্মে পত্র প্রাপ্তির দশ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব প্রেরণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।


সখীপুরে মায়ের লাশ রেখে পরীক্ষা দিলেন ২ শিক্ষার্থী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোস্তফা কামাল, সখীপুর  (টাঙ্গাইল) 

পুরো বাড়িতে শোকের মাতম। শোকে স্বজনেরা লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন অবস্থায় মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন দুই শিক্ষার্থী। পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে মায়ের লাশ দাফনে অংশ নেবে তারাও। হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন এবং সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ নাছির উদ্দিন বিষয় দুটি নিশ্চিত করেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায়। উপজেলার হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার এবং সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষার্থী লাবনী আক্তারের মা মারা গেছেন।

মা হারানো সায়মা আক্তার সখীপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এবং লাবনী আক্তার সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ কেন্দ্রে থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার আগে অশ্রুসিক্ত চোখে কেন্দ্রে আসেন তারা।

স্থানীয় লোকজন জানায়, উপজেলার হতেয়া গ্রামের মো. রায়হান মিয়ার মেয়ে সায়মা আক্তারের-মা শিল্পী আক্তার (৪০) কিডনীজনিত সমস্যার কারণে ২ জুলাই রাত ৩টার দিকে নিজ বাড়িতেই মারা যান। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। অন্যদিকে উপজেলার কচুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নান মিয়ার মেয়ে লাবনী আক্তার। তার মা সফিরন (৪৫) বুধবার (০২ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান। তিনি তিন মেয়ে ও এক ছেলের জননী ছিলেন। উভয়ে পরিবারের ছোট সন্তান।

লাবনীর মায়ের জানাজা সকাল সাড়ে ১১টার অনুষ্ঠিত হয় অন্যদিকে সায়মার মায়ের জানাজা বাদ যোহর অনুষ্ঠিত হয়।

হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন বলেন, সায়মা মেধাবী শিক্ষার্থী। তবে মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে আসা সত্যি কষ্টদায়ক। আল্লাহ যেন তার সহায় হোন।


নীলফামারীতে ভুয়া খতিয়ান তৈরি করে কারাগারে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারী ল্যান্ড সার্ভে আদালতে ভুয়া খতিয়ান ও জাল দলিল তৈরি করে মামলা দায়েরের অভিযোগে প্রতারক মো. মতিয়ার রহমান শাহ্ (৫৮) নামে এক ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (০২ জুলাই) প্রতারক মতিয়ার রহমান আদালতে উপস্থিত হলে সদর আমলী আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। মতিয়ার সদর উপজেলার নগর দারোয়ানী এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

জানা যায়, ল্যান্ড সার্ভে ১৭৮/২০ নং মামলায় মতিয়ার রহমান জাল দলিল ও ভুয়া খতিয়ান (ডিপি ১৯৩) তৈরি করে আদালতে উপস্থাপন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী শামিমা পারভীন আদালতে মোকাবেলা করেন এবং আদালতে প্রমাণিত হয় যে উক্ত খতিয়ানটি ভুয়া। পরে আদালত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং সি.আর ২১৪/২৪ মামলাটি খারিজ করে প্রতারকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৫(সি) ধারায় ব্যবস্থা নিতে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আদেশ প্রদান করেন।

বাদী পক্ষের অ্যাড. রাজীব ও শফিকুল ইসলাম সোহাগ, ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে নীলফামারী আমলী আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তিনি গত পাঁচ মাস ধরে পলাতক ছিলেন। একসঙ্গে, সি.আর ১০৯/২৫ নং মামলায় দণ্ডবিধির ৪৬৭/৪৬৮/৫০৬(২)/৩৪ ধারায় আরও একটি মামলা চলমান রয়েছে, সেখানেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে দলিল জালিয়াতির।


খেয়ে না খেয়ে, দুঃখ-দুর্দশায় জুলাই যুদ্ধে নিহত বাবুর পরিবার

আপডেটেড ৩ জুলাই, ২০২৫ ২১:০৫
নাব্বির আল নাফিজ, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর শালদাহর মৃত নওশেরের ছেলে সুরুজ আলী বাবু (৪১)। পেশায় স্বর্ণকার। টানা পোরানের সংসার। কোনো রকম বিধবা মা স্ত্রী আর তিন ছেলেমেয়ে অভাবের সংসারের মধ্যেই সুখেই দিন কাটছিল। মেয়ে সুমাইয়া খাতুন (১৭) এবার এসএসসির পরীক্ষার্থী। ছেলে ফয়সালকে (১০) হাফেজ করার প্রবল ইচ্ছায় ভর্তি করেছিল মাদ্রাসায় আর ছোট মেয়ে রুবাইায়াকে (৭) সবেমাত্র প্লে গ্রুপে ভর্তি করেছিল। কিন্তু মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ঘাতক বুলেটের আঘাতে নিহত হয় বাবু। চোখের পলকে একটি স্বপ্নের ইতি হয়ে যায়। একমাত্র উপার্জন করা মানুষকে হারিয়ে দিশে হারা হয়ে পড়েছে তার পরিবার। অনিশ্চিত হয়ে গেছে তিন ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ ও লেখাপড়া। স্থানীয় ও স্বজনদের সাহয্য সহযোগিতা নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে বাবুর পরিবার। ঘটনার ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও শোকের ছায়া ঘিরে রেখেছে বাবুর পরিবারকে। সুরুজ আলী বাবুর বৃদ্ধা মা রাহেলা খাতুনের (৭০) কান্না এখনও থামছে না। তৎকালীন সময়ের কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশের এসআই সাহেব আলীর গুলিতে সুরুজ আলী বাবু নিহত হয়েছে বলে দাবি করে তার (সাহেব আলীর) বিচারের দাবি করেছেন তার স্ত্রী ফাহিমা খাতুন। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুথানে বীরত্বের সঙ্গে ছাত্র-জনতার প্রথম সারিতে থেকে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল সুরুজ আলী বাবু। পুলিশের এলোপাথারি গুলিকে উপেক্ষা করে দৃড়ভাবে অবস্থান করেন কুষ্টিয়ার থানা মোড়ে। স্বৈরশাসক হাসিনার পদত্যাগের পর ৩টার দিকে গুলিবিদ্ধ হলে দ্রুত উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বজনরা জানান, বাবু খুব কষ্ট করে সংসার চালাত। স্বর্ণের দোকানে কাজ করে যতটুকু ইনকাম করত তা তিন ছেলেমেয়ের পেছনে খরচ করত। ছেলে আর মেয়েতে নিয়ে তার স্বপ্নের তাজমহল গড়ে তুলেছিল। কিন্তু দেশ ও দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে শহীদ হয়। জেলা জামায়াতের থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছিল। কিন্তু সরকারি ভাবে এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা পায়নি। তারা আরও জানান, সুরুজ আলী বাবুর ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। তার ছেলেমেয়েরা যেন ঠিকমতো লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে সেজন্য আমরা সরকারের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি। অশ্রুসিক্ত নয়নে মা রাহেলা খাতুন বলেন, আমার ছেলে দেশের জন্য শহীদ হয়েছে। আমার ছেলেকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে তার বিচার চায়। আমার নাতি নাতনির লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আয় করার মানুষ নেই। সরকার সাহায্য না করলে আমরা না খেয়ে মারা যাব। আব্বু মারা যায়নি আমার বিশ্বাস হয়না এমন মন্তব্য করে সুরুজ আলী বাবুর ছেলে ফয়সাল জানান, আমি মাদ্রাসায় ছিলাম। আমার বন্ধু কয় ‘তোর আব্বা মরে গেছে’ আমি বিশ্বাস করিনি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমার আব্বু গুলিতে মারা গেছে। আমার আব্বু নেই আমাদের এখন কেউ ভালোবাসে না। আমার আব্বুকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার চায়। কান্নাজড়িত কন্ঠে স্বামী হত্যাকারির বিচার চেয়ে ফাহিমা খাতুন জানান, মৃত্যুর আধা ঘণ্টা আগে আমার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। আমি বাবার বাড়িতে গিয়েছিলাম। পরে শুনি তার গায়ে এসআই সাহেব আলী গুলি করেছে। খবর শুনে ৩টার দিকে হাসপাতালে যেয়ে শুনি আমার স্বামী মারা গেছে। আমি আমার তিন ছেলেমেয়েকে কিভাবে মানুষ করব।

তিনি বলেন, আত্মীয়স্বজনরা বাজার করে দিয়েছিল তাই আমরা খাচ্ছি। আমার শাশুড়ি সেও খুব অসুস্থ তার ওষুধ কিনে দেয়ার সামর্থন নেই। কেউ সাহায্য না করলে না খেয়ে থাকতে হয়। অল্প কিছু আর্থিক সাহায্য পেয়েছিলাম। আমার স্বামীর কিছু দেনা ছিল। সেই টাকা দিয়ে কিছু দেনা শোধ করেছি। এখন সরকার সাহয্য না করলে ছেলেমেয়ে নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। তিনি আরও জানান, আমি আমার স্বামি হত্যার বিচার চায়। এসআই সাহেব আলী গুলি করে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি তার ফাঁসি চায়। আমি স্বামী হত্যার মামলা করতে পারিনি। ভিনদেশি এক ছেলে বাদী হয়ে মামলা করেছে। আমি তাকে চিনি না।


নো হেলমেট, নো ফুয়েল নির্দেশনা মানছেন না

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হারুনার রশীদ বুলবুল, কেশবপুর (যশোর)

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ‘নো হেলমেট নো ফুয়েল’ নির্দেশনা মানছেন না কেশবপুরের ফিলিং স্টেশনের মালিকরা। সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে গত বছরের ২০ মে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন (বিআরটিএ) কর্তৃপক্ষ দেশব্যাপী ওই নির্দেশনা জারি করে।

জানা যায়, যশোরের কেশবপুর পৌর সদরের থানার ৬০ ফুট দূরে অবস্থিত মেসার্স এম ভি ফিলিং স্টেশন। এছাড়া মধ্যকুল এলাকায় কেশবপুর ফিলিং স্টেশন ও কেশবপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজের সামনে যমুনা ফিলিং স্টেশনসহ ৫টি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। অন্য দুইটি সগরদাঁড়ি ও মির্জানগরে গ্রামে অবস্থিত। এসব পাম্পে হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেলে অবাদে প্রেট্রোল ও অকটেন বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া ওই পাম্পগুলোতে প্রতি লিটারে ১০০ গ্রাম করে তেল কম দেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সূত্র জানায়, প্যাম্পের মালিকরা বেশি মোনাফা করতে দেশের বিভিন্ন তেল ডিপো থেকে গভীর রাতে পচা ও বাদ দেয়া তেল আমদানি করে তা প্রেট্রোল ও অকটেনের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করে আসছে। ওই তেল ব্যবহারের অযোগ্য বলে একাধিক মোটরসাইকেল মিস্ত্রি এই প্রতিনিধিকে জানান। এতে যানবাহনের ইঞ্জিন বিকলসহ নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এদিকে সারাদেশে অল্প বয়সি তরুণরা মহাসড়ক ও দুরপাল্লার সড়কে দ্রুত গতিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে মোটরসাইকেল চালাচ্ছে। যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এমনকি মোটরসাইকেল চালানোকালে তারা হেলমেটসহ নিরাপত্তার সরঞ্জাম ব্যবহার করছে না। এতে সড়কে মৃত্যুর হার বাড়ছে একারনে সরকার সড়ক ও পরিবহন আইন ২০১৮ ধারা ৪৯ এর উপধারা-১, (চ) এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা ২০২২ বিধি- ১৩৬, (২) অনুযায়ী মোটরসাইকেল চালক ও তার সহযাত্রীদের অবশ্যই বিএসটিআই কর্তৃক নির্দেশনা অনুযায়ী হেরমেট ব্যবহার বধ্যতা মূলক করেছে।

কেশবপুরের মোটরসাইকেল চালক আকরাম আলি, সাগর এবং নিছার আলি বলেন, পৌর শহরে অবস্থিত মেসার্স এমভি ফিলিং স্টেশন, কেশবপুর ফিলিং স্টেশন এবং যমুনা ফিলিং স্টেশনে পেট্রোল ও অর্কটেন আনতে গেলে অধিকাংশ সময় লিটারে প্রায় ১০০ গ্রাম তেল কমদেয় এবং পচা দুর্গন্ধ জাতীয় তেল সরবরহ করে। এর প্রতিবাদ করলে তারা তাদের ওপর চড়াওসহ বিভিন্ন হুমকি দেয়। ভুক্তভোগীরা কেশবপুরের তেল পাম্প গুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

কেশবপুর মেসার্স এমভি ফিলিং স্টেশনের মালিক সুনিল কুমার ঘোষ বলেন, এলাকার অধিকাংশ মোটরসাইকেল চালক হেলমেট ব্যবহার করেনা। তাই হেলমেট ছাড়াই তেল দেয়া হয়। এছাড়া গাড়ি থেকে তেল দিতে গেলে অনেক সময় যান্ত্রীক ত্রুটির কারনে তেল কম যায় এবং মাঝেমধ্যে ডিপো থেকে দুর্গন্ধ জাতীয় তেল সরবরহ করা হয়। আমাদের বাধ্য হয়ে গ্রাহকদের কাছে ওই তেল সরবরাহ করতে হয়।


­­ ভোলায় চাঁদা না পেয়ে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

আপডেটেড ৩ জুলাই, ২০২৫ ১৮:৩২
ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে আটকে রেখে মারধর করে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মুল আসামি আলাউদ্দিন সহ আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন যুবদল কর্মী মো. আলাউদ্দিন ও শ্রমিক দল নেতা মো. ফরিদ উদ্দিন। তারা ওই মামলার এজাহার নামীয় ১ ও ২ নম্বর আসামি।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) মধ্যরাতে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া থেকে আলাউদ্দিন এবং ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা থেকে ফরিদ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে, বুধবার (০২ জুলাই) দুপুরে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকা থেকে মামলার ৫ নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। এছাড়াও, ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগীর সতিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ নিয়ে এই মামলার ৭ আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহব্বত খান জানান, রাতে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি আলাউদ্দিন ও ফরিদ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে, বুধবার (০২ জুলাই) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ভোলার পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক। তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে বলেন, “কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।

বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) বিকাল ৩ টায় জেলা পুলিশ সংবাদ সম্মেলনে জানায়, এখন পর্যন্ত এই মামলায় এজহারনামীয় ৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, সোমবার (৩০ জুন) রাতে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মোল্লার পুকুর পাড় এলাকায় চাঁদার দাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে মারধর করে তার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্তরা স্থানীয় শ্রমিকদল, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।


খাদ্যের সন্ধানে এলাকা ছাড়ছে কালোমুখো হনুমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।

জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।

উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।

কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।


banner close